Monday, December 10, 2018

Occultism(গুপ্তবাদ)

অকাল্ট শব্দের অর্থ গুপ্ত/গোপন। যাদু বিদ্যা এবং ম্যাজিক্যাল ওয়ার্ল্ডভিউকেও অকাল্টিজম বলে। প্রাচীন যুগের যাদুকর/বামপন্থীরা খ্রিষ্টান শাসকদের অত্যাচারে নিজেদেরকে এবং তাদের অপবিদ্যাগুলোকে লুকিয়ে রাখত। তখন থেকে সেসব বিদ্যাকে অকাল্ট নলেজ(গুপ্তজ্ঞান) বলে ক্যাটাগরাইজড হয়। spiritism,spiritualism(আধ্যাত্মবাদ) , mysticism(রহস্যবাদ), Mormonism(মরমিবাদ), সুফি(ইসলামে আক্রান্ত),কাব্বালাহ(ইহুদিদের),নস্টিসিজম(খ্রিষ্টানদের),ইস্টার্ন মেটাফিজিক্যাল স্পিরিচুয়ালিটি(হিন্দু,বৌদ্ধ,জৈন,বৈষ্ণব ইত্যাদি),হেলেনিজম,থিওসফি ইত্যাদি সবই অঞ্চলভিত্তিক যাদুবিদ্যাকেন্দ্রিক দর্শনের নাম। সবই একই গাছের বিভিন্ন শাখার মত। এদের সবাই গুপ্তজ্ঞানের দ্বারা নিজেদেরকে আলোকিত করতে চায়।আর জ্ঞান চর্চার পন্থা একই।
এসব গুপ্তজ্ঞান বলতে শয়তানের কাছে মজুদ কুফরি বিদ্যা বা যাদু বিদ্যা, নবী সুলাইমান (আ) এর সময়কার শয়তানদের জাদুবিদ্যা যা নবীর সিংহাসনের নিচে পুতে রাখা হয়েছিল এবং বাবেল শহরে হারুত মারুতের থেকে আসা নিষিদ্ধ বিদ্যা।
ইমাম রাযী(র) এর বর্নিত ৮ প্রকারের জাদুর ২য় প্রকারের শিক্ষা বা চর্চা এ গুপ্তসাধনার সবচেয়ে বেশি করা হয়। আর ইসলামে সুফিবাদ এর পীররা মারেফাত এর নামে এসব চর্চা ধারন করে আছে। ওরা একে বাতেনি ইলম বলে যা বিভিন্ন তরিক্কায় অর্জন করতে হয়।

এই পথের সকলের মৌলিক আকিদা প্রায় একই, যার কুফরির(অবাধ্যতার) মাত্রা ফেরাউন, নমরুদদেরকেও হার মানায়! প্রায় সকল প্রকার নিষিদ্ধ কাল্ট/রিচুয়াল এ পথে বৈধ। পৌত্তলিকতা, জাদুচর্চা, জ্যোতিষশাস্ত্র খুবই সাধারন পালনীয় বিষয়, এদের কিছু কিছু গ্রুপ শয়তানকে সরাসরি নাম ধরে গ্লোরিফাই করে অন্যদিকে আল্লাহকে অভিশাপ দেয় ও হেয় করে বা স্বকীয় অস্তিত্বের স্বীকৃতিই দেয় না। তাদের মধ্যে সৃষ্টি শুরুর রহস্যটা স্পষ্ট নয়, একেক জনের একেক রকমের মনগড়া বিশ্বাস। এই ফিলোসফিক্যাল অকাল্ট ট্রেডিশনগুলোর মৌলিক বিশ্বাস সকলেরই অভিন্ন। আর সেটা হচ্ছে, সর্বেশ্বরবাদ(প্যান্থেইজম/মনিজম)।

আমাদের দেশে এরূপ কুফরের পথে সবচেয়ে আগুয়ান যারা, তারা বাউল সম্প্রদায়, মারেফাত এর ফকিররা। এরা সকলেই ওয়াহদাতুল উজুদে(সর্বেশ্বরবাদ) বিশ্বাসী। এরূপ কুফরি আকিদা তাদেরকে তাকদীরের ব্যপারে বাড়াবাড়ি মাত্রায় চিন্তা করায়, ওদের মতে যেহেতু সৃষ্টি ও স্রষ্টার অস্তিত্ব একই(নন ডুয়ালিজম) সেহেতু সব কিছুই আল্লাহই করছেন। এজন্য যেকোন অপরাধ বা পাপ মানুষের দ্বারা হয় না, সেটা স্রষ্টাই প্রত্যক্ষভাবে করছেন। তারা সেজন্য কোন মাখলুখের দোষ বা শাস্তিকে স্বীকার করে না। এজন্য তাদের গানও আছে 'যেমন খুশি তেমন নাচাও পুতুলের কি দোষ' নিশ্চয়ই শুনেছেন। এজন্য তারা আল্লাহর নির্দেশ নিঃশর্তে মানতে নারাজ। আর এদের অধিকাংশই আল্লাহর অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে থাকে। এরা সরাসরি ইত্তেহাদে(সর্বেশ্বরবাদে) বিশ্বাসী। এজন্য তারা জ্বীনদের অর্চনা করে গুরু,মুর্শিদ, সাই,ফকিরের প্রভৃতি নামে। এবং তাদের(বিশ্বাস অনুযায়ী) দুনিয়াতে বিরাজমান গুরুজির আত্নাকে।
এ কুফরির ছোয়া বর্তমানে আহমদ রেজা বেলেরভির অনুসারীদের মাঝেও আছে (মাইজভাণ্ডারী, চিশতিয়া, কাদেরিয়া, নকশাবন্দী,মুজাদ্দেদিয়া....রা)। দেওবন্দের(কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক) কিছু গোমরাহ আলেমদের মধ্যে এ বিশ্বাস চাপা আছে। ওরা আবার এ বিশ্বাসগুলোকে শরী'য়াতে স্বীকৃত প্রমানের অপচেষ্টাও চালায়! আমরা এরূপ কুফরিকে সত্যায়নের চেষ্টা দেখি আহলে হক্ক মিডিয়াগুলোর মাঝে।

বর্তমান পৃথিবীতে এই প্যাগানিজমের ছড়াছড়ি। এর দিকে ধাবিতকরনের জন্য লক্ষ লক্ষ সংস্থা কাজ করছে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায়, রিলিজিয়াস কনফ্লিক্ট বন্ধ করতে একটা 'ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়নের স্বপ্ন দেখে 'ইউনাইটেড ন্যাশন' বা জাতিসংঘ। এ লক্ষ্যে তারা পেছনে থেকে কাজ করছে।

শিক্ষিতসমাজের মুসলমানদের সুফিবাদে বা একদম নগ্ন প্যাগানিজমে ভেড়ানো কঠিন যেহেতু তাদের কাছে এ পথ 'ক্ষ্যাত' মনে হয় তাই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, সাইন্স অব লিভিং,প্রজ্ঞা, রেইকি, ল অব এট্রাকশনের নামে বেশ আধুনিকতার আড়ালে এ প্যাগান কাল্টে আহব্বানের কাজ চলছে। তারা Esoteric wisdom প্রচার করছে আধুনিকতার চাকচিক্য দেখিয়ে। ওরা চাচ্ছে মানুষ এসবের চর্চার দ্বারা গদবাধা ধার্মিকতা ও ধর্মের বিশ্বাস থেকে মানুষদের দূরে নিয়ে সবাইকে একই আধ্যাত্মিকার আদর্শে দীক্ষিত করা। এই আধ্যাত্মবাদ নাস্তিকতারই রিলিজিয়াস ফ্লেভারযুক্ত ভার্সন। লক্ষ্য- একটি শক্তিশালী ধর্মহীন প্যাগান সেকুলার সমাজ গঠন যার শীর্ষে থাকবে আসন্ন আধ্যাত্মিক মহাশিক্ষক দাজ্জাল! বর্তমানের মেইনস্ট্রিম সাইন্স এসব প্যাগানিজমের সাথে ১০০% কম্প্যাটিবল, কারন এই সুডো সাইন্স এবং মিস্টিসিজমের শিকড় একই। কোয়ান্টাম ম্যাথড এসেছেই কোয়ান্টাম থিওরি(quantum mysticism) থেকে। কোয়ান্টাম ফিজিসিস্টগনও এক একজন মিস্টিক ছিলেন।

আমেরিকাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু গুরুদের প্রোমোটিং এর কারনে এখন 'নিউ এজ' নামের একটি স্পিরিচুয়ালিস্ট প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়ে গেছে, সেখানে আমাদের দেশের মুসলিমরা যেভাবে কোয়ান্টাম ম্যাথডে যোগ দিচ্ছে সেভাবে খ্রিষ্টান ও সেকুলার খ্রিষ্টানরাও জয়েন করছে মহামারী আকারে। এজন্য ওদের মধ্যে স্বল্প সংখ্যক ফান্ডামেন্টালিস্ট খ্রিষ্টান এর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে প্রচারনা চালাচ্ছে। ইংরেজিতে লিসেনিং স্কিল উচ্চমাত্রার না হলে দেখবেন না,মিউজিকের জন্য দুঃখিতঃ https://m.youtube.com/watch?v=NOCaYEV3jDc
.
https://m.youtube.com/watch?v=NbbBe9EKyPY
.
https://m.youtube.com/watch?v=SzzuQX3JUg8


একইভাবে আমাদের দেশে কোয়ান্টাম ম্যাথড নামে এই অভিন্ন চক্রই সাফল্যের সাথেই মহামারী ছড়াচ্ছে, আর আক্রান্ত হচ্ছে মুসলমান নাম ধারীসেকুলার-যিন্দিক। কিছু অবশ্য জাহেল মুসলিমও সেখানে পা ফেলছে।
কোয়ান্টাম ম্যাথড সরাসরি অকাল্টিজমের প্রচার করছে বলেই যাত্রা শুরু করে(উপরের ছবিতে দেখুন), এরপরেও আমাদের দেশের মূর্খ লোকগুলো এটা দেখেও তাতে দলে দলে যোগ দেয়! আর কোয়ান্টাম ম্যাথডের জ্যোতিষী মালাউনগুলোও অনেক চালাক। এরা ওদের কুফরি দর্শনগুলো ইসলামাইজড করে আহব্বান করছে কুফরে আকবরের দিকে। ওরা ইসলামিক শব্দ ব্যবহার করে শুধুই ফাঁদ হিসেবে। আর এই ফাদে পা দিচ্ছে জ্ঞানহীন নামধারী  মুসলিমগুলো। কোয়ান্টাম ম্যাথড জানে, ফেসবুকে ওদের অপকর্মের বিরুদ্ধে অনেক রকমের প্রচারণা চলে, এজন্য এখন ওদের ফলোয়ারদের ফেসবুক থেকে দূরে থাকার জন্য নির্দেশ দেয়।

অকাল্টিজমের হচ্ছে কিছু নিষিদ্ধ যাদুবিদ্যা কেন্দ্রিক শয়তানী দর্শন ও অপবিদ্যার সাগর, যা অল্প কথায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। আপনি যদি নিউএজ/কোয়ান্টাম ম্যাথড/থিওসফিক্যাল সোসাইটির ব্যপারে কিছু হিস্টোরিক্যাল ডেটা পেতে চান, তবে দেখুনঃ https://m.youtube.com/watch?v=mnNs3NJv_mM
.
February 28, 2017 at 2:32 AM

0 Comments:

Post a Comment