Monday, December 10, 2018

শিক্ষা নয়, বরং মূর্খতা ও অপবিদ্যা

শিক্ষাব্যবস্থা এবং অর্থনৈতিক কাঠামো কুফফাররা এমনভাবে নির্মান করে সকলকে আটকে ফেলেছে, যে তা থেকে বেরোনোর সহজ রাস্তা নেই। একজন শিক্ষার্থী ১ম থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত কি শিখছে?
উচ্চমাধ্যমিকে কি শিখছে? স্নাতক নিচ্ছে কিসের উপর? যা দীর্ঘ চারবছর গিলছে তাতে আছে কি? আগের নীতি ছিল বিরাট প্রশ্ন মুখস্ত করো, এরপরে পরীক্ষার খাতায় কলম দিয়ে বমি করো। এখন অবশ্য আরো এডভ্যান্স - সৃজনশীল এসে গেছে।


নিরক্ষররা মনে করে 'শিক্ষিত'রা জানি কত কি জানে! কিন্তু আসলে যে বিদ্যা এতদিন গিলেছে তা এমনই অপ্রয়োজনীয় বাতিল বিষয় যার মাঝে কোন কল্যান নেই। কোন শিক্ষাও নেই। কোন কবি সাহিত্যিক কি লিখেছেন, কবে লিখেছেন, কবে মরেছেন এসব জেনে কি লাভ? /! এসব অচল বিষয়বস্তু কোন কাজেই লাগে না। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে অনেক কিছুই গিলছে কিন্তু এর কত% প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জন করছে! ইতিহাস বিভাগেও আবর্জনাময় ইতিহাস গিলছে, এরকম প্রায় সকল বিভাগে। ওই শিক্ষাব্যবস্থা নেই যা কর্মমুখী। আপনাকে কর্মমুখী হবার পূর্বে আরেকবার আবর্জনা খেতে হবে। মানে চাকুরী অন্বেষনে। হাজার হাজার আজেবাজে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন মুখস্ত করুন, দু চার দশটি এরকম আবর্জনা বিষয়বস্তুতে বোঝাই জিনিস দ্বারা মাথা পূর্ন করুন। এরপরে আপনার লাখ-কোটি ভাইবোনদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে যদি চাকরি মেলে, ঘুষ-সুপারিশ বাদ দিলাম। আপনাকে 'মেধায়' এগিয়ে যেতে হলে যা করতে হচ্ছে তা বললাম। আবর্জনাপূর্ণ মস্তিষ্কই হচ্ছে মেধা! জ্বি, একেকজন বিসিএস ক্যাডারগন এর ব্যতিক্রম নয়। তিনিও রামায়ন মহাভার‍তের লেখক কে, বাপের নাম কি, কোথায় থাকতেন,চর্যাপদ কোথায় কবে কে আবিষ্কার করেছেন, এর কবিরা কারা লুইপা কুক্কুরিপা কাহ্নপাগণ কে কতটি কে সর্বাধিক পদ - চরণ লিখেছেন  ইত্যাদি আবর্জনা দ্বারা মাথাকে পূর্ন করে ক্যাডার সেজেছেন। এমন কিছু শিখে মোটা অঙ্কের টাকা কামাচ্ছে যার বাস্তব জীবনে কোন ভিত্তি নেই, কোন প্রায়োগিক অংশ নেই। নেই কোন কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষা। ইংরেজি ভাষায় যাকে বলে "Bullshit"। বিসিএস ক্যাডারগন যে মাম্বোজাম্বো জিনিস মুখস্ত করে ক্যাডার হয়ে কাজ করছেন তা কতটুকুন তার পেশায় কাজে লাগছে! ওনার গোটা এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড এবং কর্মক্ষেত্র পুরোটাই তো ফ্রডুলেন্ট! শিক্ষাগত স্ট্যান্ডপয়েন্টে দেখলে ওনার চেয়ারে একজন সাধারণ লোক বসলেও দায়িত্ব পালন করতে পারে। কি মূল্য এর!! গোটা দেশের প্রায় সব কিছুই চলছে এরকম মূল্যহীন আবর্জনার উপর, যাকে মেধা বলা হয়। মেধার এই সুরতের জন্য আবর্জনা খাওয়া সোকল্ড মেধাবীদের দ্বারা চাকরি খাত পূর্ন হলে সত্যিকারের  মেধাধারীরা থাকে বেকার। কারন শিক্ষাটা ছিলনা কর্মমুখী, ছিলনা কোন কারগরি জ্ঞান। আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকে একরকম নির্ভরশীলতার নীতির ফাদে আটকে দেওয়া হয়েছে। এমন এক ম্যাট্রিক্স যার বাহিরে যাবার সুযোগও নেই। যুগ যুগ চলতে থাকবে। আর ওই মানুষরূপী ক্যাটলগুলোকে(গবাদি পশু) মেধা টাইটেলে স্কুল কলেজের খোয়াড়ে আটকে রেখে মেধার নামে আজীবন ক্যাটল বানিয়ে রাখছে। এর বাহিরে চিন্তা করার সুযোগ নেই।

শিক্ষাব্যবস্থার ডিজাইনারগনও ভালভাবে জানেন কি করে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো চ্যালেঞ্জিং-আরো বাহ্যিকভাবে ভারী দেখানো যায়। একটা ছাত্র ১০/১২ বছর ইংরেজি পড়ছে এরপরেও ইংরেজিতে শুদ্ধভাবে বলা- লেখা তো দূরের কথা উলটা ইংরেজি-ফোবিয়ায় ভুগছে! এর কারন ভাষা শিক্ষার নীতির ভন্ডামি। শেখাচ্ছে গ্রামার ট্রান্সলেশন- GTM ম্যাথড। আউটপুুট চাওয়া হচ্ছে Direct method বা natural approach এ শর বচ্চা ভীনদেশী ভাষা শিখছেই ব্যাকরণ দিয়ে স্টার্ট করে,যেখানে মানুষ মৌলিকভাবে ভাষায় পারদর্শী হয় ন্যাচারাল এপ্রোচ(DM) দ্বারা। এভাবেই প্রথম ল্যাঙ্গুয়েজ অর্জন করে। আপনি যখন বাংলা শিখেছেন আপনাকে কি প্রথমেই ব্যাকরণ খাওয়ানো হয়েছিল?!! অথচ জিটিএম ম্যাথড দিয়ে কম্পিটেন্স চাচ্ছে ন্যাচারাল এপ্রোচের। চাকুরী ক্ষেত্রেও তাই। এজন্য সারাজীবন ইংরেজি দেখলে কাপাকাপি/দাতের পাটি খুলে যাওয়া, হীনমন্যতা। দু একজনের LAD(language acquisition device) উন্নত হবার জন্য সেভাষার উৎকর্ষতা সেটা কখনোই আদর্শমান হতে পারে না, এবং সবার জন্য অনুকরণীয় হতে পারে না। উপায় নেই... সারাজীবন দৌড়াও, সংগ্রাম করো খাতা কলম আর বই নিয়ে। ৩০ বছর পার কর, অত:পর বিয়ে কর, বাচ্চা হলে তাকেও একই খোয়াড়ে পোড়ো, বাবা তোমাকেও বিরাট অফিসার হতে হবে, লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়ায় চলে সে...। সে বড় হতে হতে বৃদ্ধ হও এবং কবরে যাও। নো হায়ার পারপাজ।  চমৎকার ম্যাট্রিক্স, তাই না! কারা তৈরি করে দিয়েছে? 

এজন্য এখন যত উচ্চ শিক্ষিত দেখি তত বড় হিউম্যানয়েড গাধা দেখতে পাই। যত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তত বেশি অনুগত গবাদিপশু। খোয়াড়ের বাহিরে কোন চিন্তাই ছিল না বলে আজ সে মস্তিষ্কভর্তি গাঁদ নিয়ে এত বড় চেয়ারে বসে আছে।এর তুলনায় তাওহীদবাদি চা-ওয়ালা, শরবত ওয়ালারা আমার কাছে অনেক জ্ঞানী, অনেক বেশি সম্মানের। 

কুফফারদের উন্নত দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা দেখেছেন? কর্মমুখীতা বেশি। শিক্ষিত হওয়া মানে শিক্ষণীয় কিছু জানে যা বাস্তব জগতে প্রডাক্টিভ। আমাদের দেশের অমুকের জন্মসাল, কি বলেছে,করেছে সেসব নিয়ে সারাজীবন নষ্ট করায় না। যে কেউ যেকোন বিভাগে পড়াশুনা করে ইচ্ছামত ওয়ার্কস্ফিয়ারে যেতে পারে সেব্যপারে সর্বশেষ স্নাতকও নিতে পারে। এদেশের মত এমনটা নয় যে যে আপনাকে কমার্স পড়ে ব্যবসায়-বানিজ্য নিয়েই থাকতে হবে। ওরা নিজেদের বেলায় ঠিক রাখছে, কিন্তু যারা ওদের মত হতে চায় তাদেরকে একটা গ্যাড়াকলে আটকে দেয়। ওদের এজেন্টরাই লোকাল পর্যায়ে নীতিমালা বাস্তবায়ন করে।

বিঃদ্রঃ মনে করবেন না ইংরেজী ভাষার আগ্রাসনকে সমর্থন করি, ইংরেজীর আগ্রাসন কুফফারদের প্রভাব প্রতিপত্তিকেই সুস্পষ্ট করে। 

শিক্ষার সকল বিভাগের সকল বিক্ষিপ্ত অংশকেই রিজেক্ট করি না। গার্বেজের মাঝেও সামান্য প্রয়োজনীয় বিষয় আছে।

ব্যক্তিগত অব্জারভেশনে একটা গ্রন্থকেই কিতাবুন নূর রূপে পেয়েছি। সেটি আমাদের কুরআন। যাবতীয় শিক্ষা একে ঘিরেই হওয়াটা গ্রহনযোগ্য। বর্তমান প্রতিষ্ঠিত আর্থ-সামাজিক স্ট্রাকচার পরিবর্তন চাইলে সব কিছু ঢেলে সাজানো ছাড়া রাস্তা নেই। আর সেটা একটা কুরআনিক কন্সটিটিউশনে ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্টের দ্বারা সম্ভব। সেটা - খিলাফা আলা মিনহাজিন নাব্যুওয়্যাহ । কুফফারদের পক্ষ থেকেও ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডারের প্রস্তাব রয়েছে,ওদের প্রত্যাশা সেটা হবে দাজ্জালের নেতৃত্বে। আমরা যে সোস্যাল ইকোনমিক স্ট্রাকচারে বন্দী সেটা ওই ফলস মিসায়াহরই প্রতিনিধিদের গড়া।

0 Comments:

Post a Comment