Monday, December 10, 2018

অকাল্ট প্যাগান থিওলজি এবং সুফিজম





অকাল্ট মিস্টিক্যাল ডক্ট্রিনগুলো হঠাৎ করে এত জনপ্রিয়তার পেছনে কাজ করছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন এজেন্ডা।এই গ্লোবাল এসোটেরিক এজেন্ডা মিথ্যা মসীহের ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্বাসগত মতপার্থক্যরোধে ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন তৈরির লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে সারাবিশ্বে নানা নামে আম্ব্রেলা সংগঠনরূপে কাজ করে যাচ্ছে। আমি পূর্বেও আলোচনা করেছি,এরা প্রাচীন প্যাগানিজমকে পুনরুজ্জীবিত করছে যা খ্রিষ্টানদের তোপে কিছু শতাব্দী লুকায়িত ছিল। ওই বিশেষ শ্রেণীর কাফেররা প্রাচীন গ্রীক-ইজিপশিয়ান ও ব্যবিলনিয়ান যাদুকর-জ্যোতিষীদের যাদুবিদ্যাকেন্দ্রিক প্যাগান অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউ বা দর্শনকে পছন্দ করে।

 যেমন প্লেটোনিক মতবাদ, এখন নিওপ্লেটোনিজম চালু হয়েছে, পিথাগোরিয়ান অকাল্টিজম, ওই সময়কার হারম্যাটিসিজম,হেলেনিজম,স্টয়িসিজম ইত্যাদি। জুডিও ব্যবিলনিয়ান অশ্লীল কিতাব জোহার বেজড কাব্বালাও সিমিলার মতাদর্শ ক্যারি করে, যার জন্য সকল মিস্টিক্সরা একে অন্যের প্রতি অত্যন্ত সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল এবং পরিবারস্বরূপ। বর্তমান প্রতিষ্ঠিত এস্ট্রোনোমিকাল মডেল, এমনকি পৃথিবীর স্ফেরিক্যাল মডেল প্রাচীন প্যাগান বিখ্যাত গ্রীক মিস্টিক মনীষীদের চিন্তা থেকেই আসে।তখনকার মেইনস্ট্রিম কসমো ছিল জিওসেন্ট্রিক জিওস্টেশনারী ফ্ল্যাট আর্থবেজড,সারা পৃথিবীতে যাদুকরদের আনিত ওই তত্ত্ব ছিল হেরেটিক। কিন্তু পিথাগোরাস, প্লেটোর অনুসরনে ও প্রভাবে অন্যান্য এস্ট্রোনমাররা এর ব্যপারে ভাবতে শুরু করে।

 খ্রিষ্টান শক্তি তাদের এই স্ফেরিক্যাল থিওরিকে প্যাগান থিওরি বলে রিজেক্ট করে,যেহেতু গ্রীক মনীষীরা আগে থেকেই কুফরি মতবাদ আর জাদুবিদ্যার ধারক-বাহক ছিল। প্রত্যেক গ্রীক মিস্টিক-মনীষীরাই ছিলেন জাদুবিদ্যার কারিগর। তারা ইউনিভার্সের সিক্রেট জানার ব্যপারে অবসেসড ছিলেন, যা তাদেরকে জাদুবিজ্ঞানের দিকে হাটায়। তাদের মতবাদভিত্তিক অপবিজ্ঞান ছিল  যাদুর গুহ্য মেকানিজম। এস্ট্রলজি-আলকেমিতে ছিল সিদ্ধহস্ত।ওটাই ছিল সমুচ্চ জ্ঞান এবং বিজ্ঞান।

গ্রীক মিস্টিসিজম গুলোর কমন গ্রাউন্ড ছিল মনিজম অথবা নন ডুয়ালিজম আরবিতে ওয়াহদাতুল উজুদ, বাংলায় 'স্রষ্টা সৃষ্টির এক অস্তিত্ব' । এটা হচ্ছে ওদের বিলিফ সিস্টেমের কার্নেল। আপনি নন ডুয়ালিস্ট না হয়ে হয়ত সর্সারিকর্মে সফল হবেন না।এসকল মতবাদে বিশ্বাসী উইচদের হাতে পেলেই খ্রিষ্টান ক্ষমতাসীন সমাজে রাজারা কঠিন শাস্তি দিত, সেই সাথে ওদের এসোটেরিক ডগমাও উৎপাটিত হত। আরবরা অনেক দেরীতে গ্রীক ফিলসফি হাতে পায় এবং নিছক কৌতূহলপ্রবন হয়ে সেসবকে আরবিভাষায় অনুবাদ করে, ফলে আরবরা তথা মুসলিম বিশ্বে আলকেমির ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। ওয়াহদাতুল উজুদের জন্ম হয়, জন্ম হয় সুফি অকাল্টিজম বা ইসলামিক মিস্টিসিজম!

 যারাই কৌতূহল নিয়ে এতে একবার ঢোকে, নিকৃষ্ট কাফের হয়ে বের হয়, ওই মানের কুফরি ও শিরকি আকিদা, যা ফেরাউনও করেনি। মুসলিম এস্ট্রোনমারগন গ্রীক কস্মোলজিকে জ্ঞানের উৎস মনে করে গ্রহন করতে শুরু করে, ইসলামে সর্বপ্রথম স্ফেরিক্যাল আর্থ ঢুকে পড়ে। তখনও সেটা প্রতিষ্ঠিত নয়। ততদিনে রিফর্মেশন এজ চলে আসে, এই রেনেসাঁর যুগে খ্রিষ্টান মৌলবাদীদের এক অংশ দুর্বল হয়ে পড়ে, যান্ত্রিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে চার্চ আর শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীভূত হয় এবং সেকুলারিজমের উন্মেষ ঘটে। সেইসাথে পশ্চিমে নেতিয়ে পড়া প্রাচীন প্যাগানিজম আবারো জাগ্রত হয়। উইচক্রাফট, সর্সারি, স্যাটানিজম বাড়তে থাকে, জেসুইট অর্ডার কস্মোলজিকে পাল্টে দেয়। জাদুবিদ্যার ধর্ম অর্থাৎ প্যাগান আধ্যাত্মবাদ আস্তে আস্তে আবারো শক্তি ফিরে পায়, এস্ট্রলজির প্রসার সমাজে বাড়তে থাকে।শয়তানের পূজারীরা বিভিন্ন নামে বিভিন্ন দেশে সেসব অকাল্ট মিস্টিসিজম এর প্রসার শুরু করে। পশ্চিমারা  ইস্টার্ন মিস্টিসিজমকে সমৃদ্ধ আর প্রাচীন হিসেবে দেখে সেটাকেই গ্রীকের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় যার প্রভাবে ম্যাডাম হেলেনার থিওসফি গঠিত হয়, পরবর্তীতে ফ্রিম্যাসন, গোল্ডেন ডন, অর্দো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস চলে আসে। এই প্যাগান শাখা প্রশাখা বেড়ে আজ নিউএজ মুভমেন্ট-কোয়ান্টাম মিস্টিসিজম(কোয়ান্টাম ম্যাথড বাংলাদেশে) পর্যন্ত এসেছে। ইস্কনরাও সাথে আছে। এদের কমন কাল্ট রিচুয়ালের একটি হচ্ছে যোগধ্যান যা ওই গ্রীক প্যাগানিজমসহ সকল প্যাগান ডক্ট্রিনে ছিল।

এখন মোটামুটি ধর্মগুলোকে একীভূতকরনের সময় এসেছে, তাই কমনগ্রাউন্ড মেডিটেশনে সব মানুষকে ডাইভার্টের চেষ্টায় আছে এলিটরা। বাংলাদেশে এরই প্রেক্ষাপটে একবার যোগধ্যানের উপর ট্যাক্স আরোপ করেছিল সরকার,যাতে কুফরের জাহাজ কোয়ান্টাম ম্যাথড,ইস্কনরা আন্দোলনে নামে এবং জনগনের দৃষ্টি মেডিটেশন এর উপর পড়ে এবং এর ব্যপারে ভাবে। তখনই আমি প্রেডিক্ট করেছিলাম সরকারীভাবে খুব শীঘ্রই মেডিটেশন প্রচারের জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেটাই সত্য হলো।তাগুত সরকারের বিটিভি যোগধ্যানের প্রোগ্রাম চালু করেছে।
দেখুনঃ http://banglamail71.info/archives/5320

আশা করি সামনে ক্যাম্পেইন শুরু করবে অফলাইনে..।
এই আধ্যাত্মবাদের অনেক প্রাচীন গোড়াযুক্ত। সেটা সারাপৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল শয়তানের। এ স্বপ্ন পূরন করছে দাজ্জালের মাধ্যমে। এখন এস্ট্রলজিক্যাল ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ্যাকুরিয়াস এজ চালু হয়েছে। এই গোল্ডেন এজই ইবলিসের মতাদর্শকে পূর্নতাদানের শতাব্দি। এই মতাদর্শের পূর্নতাদানের জন্য একজন মাস্টারের বা ওয়ার্ল্ড টিচারের অপেক্ষা করছে এসোটেরিক এজেন্ডা, যাকে আমরা বলি দাজ্জাল।
ইসলাম শুরু থেকেই এই মতবাদের ভাইরাসকে কঠোর হাতে দমন করত, অতীতে এক কাব্বালিস্ট যাজকও জোড়পূর্বক শাস্তির ভয়ে মুসলিম হতে বাধ্য হয়। মানসুর হাল্লাজের কি হয়েছিল তা আমরা সবাই জানি, ইবনে আরাবির ব্যপারে হক্কপন্থী উলামাগন ওই যুগেই কি বলতেন সেটা আমরা জানি। আজও ইসলামিক মিস্টিকদের(সুফিবাদিরা) কে, এর অনুসারীরা ছাড়া কেউই ভাল বলেনা। খ্রিষ্টান থেকে নস্টিসিস্টদের জন্ম। আর ক্যাথলিকরা এদের প্রতি সহনশীল, পশ্চিমে আজ খ্রিষ্টান ধর্মকেই বিভিন্নভাবে মডিফাই করে স্পিরিটিজমে ধাবিত করা হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ খ্রিষ্টানরা ইস্টার্ন মিস্টিসিজম গ্রহন করেছে। অনেক হাইব্রীড রিলিজিয়াস মুভমেন্ট গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ কাফের খ্রিষ্টানরা বড় কুফরিকে বেছে নিয়েছে এবং অপেক্ষা করছে ওদের শেষ বুদ্ধের!
.
আজ পৃথিবীর সর্বাধিক সমৃদ্ধ গুহ্যবাদ হচ্ছে ইস্টার্ন অকাল্টিজম বা ধর্মচক্রের রহস্যবাদ(যোগ-তন্ত্র), আমরা যারা এর ব্যাকগ্রাউন্ড খুব বেশি জানিনা তারা একে আপাতদৃষ্টিতে হিন্দুত্ববাদ বলে মনে করি। আসলটা সরাসরি শয়তান থেকে আসা। শুনলে অবাক হবেন, এল মোরিয়া আর খুতুমি নামের দুই শয়তান জ্বীন ম্যাডাম হেলেনার কাছে সর্বপ্রথম থিওসফিক্যাল(theo+Sophia= Divine/gods wisdom) ডক্ট্রিন নিয়ে আসে।

এখন বিশ্বব্যাপী রেজারেকশ্যনকে বাতিল করে রিইনকারনেশনকে প্রমোট করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে এটাই সবচেয়ে সাইন্টিফিক ভাবে ভ্যালিড। ডেভিয়েন্ট স্কলার ইমরান নযরও জানেন দাজ্জাল রিইনকারনেশনকে সত্যরূপে প্রতিষ্ঠিত করবে( তার এক লেকচারে শুনেছিলাম)। এ মুহূর্তে পিউর মনোথেইজম বা তাওহীদের ধর্ম 'ইসলাম' হচ্ছে কুফফার তাগুতদের মিশন বাস্তবায়নে কাটা। বিভিন্নভাবে মোডারেট ইসলামিস্ট ব্যবহারের দ্বারা জিহাদিদেরকে জঙ্গি সন্ত্রাসী সাব্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছে, এবার সুফি/বেলেরভী/শিয়াদের সহায়তায় রিইনকারনেশন বা পুনঃজন্মবাদকে এস্ট্যাবলিশের কাজ চলছে। এক বেলেরভীদের  সাক্ষাৎকারে দেখেছি তারা রিইনকারনেশনকে ইতোমধ্যে ইসলামের আঙ্গিকে দ্বারা ভ্যালিড করেছে!! আশা রাখব, সামনে বিটিভি সহ তাদের এল্যাইরা মাঠপর্যায়ে রিইনকারনেশনের ভ্যালিডিটি আনয়নের জন্য সুফি বেরেলভীস্টদের থেকে সাহায্য আসবে। সমস্যা নেই, অনেক আগে থেকেই ওয়াহদাতুল উজুদ, হুলুল, ইত্তেহাদের আকিদা অনেকের মাঝে বিদ্যমান, সেটা আকড়ে ধরতে কষ্ট হবেনা।
নয়ন চ্যাটার্জি কিছু লিখেছিলেনঃ
https://m.facebook.com/story.php…

একটা দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এখন পর্যন্ত আমি বাংলা ভাষায় কাউকেই মিস্টিসিজম/অকাল্টিজম নিয়ে এক্সপোজ করতে দেখিনি। গুহ্যজ্ঞানবাদ নিয়ে কেন জানি কাউকেই চিন্তিত দেখি না, অথচ এই বাতেনিয়্যাহরাই দাজ্জাল এর দ্বীনের প্রতিনিধিত্ব করছে। শয়তানের মতাদর্শকে প্রকাশ্যে প্রচার করছে যা তাওহীদের বিপরীত!

লেখকঃ Al Imran

0 Comments:

Post a Comment