10 বছর আগেরও আজকের মত ইসলাম বিদ্বেষ কোথাও দেখা যায় নি। আজ যা হচ্ছে তা 20 বছর আগে বললে অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করতে চাইত না।
طوبى للغرباء
10 বছর আগেরও আজকের মত ইসলাম বিদ্বেষ কোথাও দেখা যায় নি। আজ যা হচ্ছে তা 20 বছর আগে বললে অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করতে চাইত না।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার যে প্রক্রিয়া চলছে এটা মূলত কুফরি মানবরচিত সংবিধানেরই আসল রূপ। এটা এমন একটা সংবিধান যেখানে প্রণেতা ইচ্ছা করলো একটা আইন তৈরি করলো, আবার মন চাইলো, একটা আইন বাদ দিলো। এখানে নিকৃষ্ট কুকর্মকেও নীতিসিদ্ধ করা যায় আবার ভাল কাজকেও নিষিদ্ধ করা যায়।
আজ যারা রাষ্ট্রধর্ম সংবিধান থেকে বাদ দেয়ার ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ করছে তারা এরকম প্রতিবাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মানবরচিত কুফরি সংবিধানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করছে।ব্যপারটা এরকম-'যতদিন কুফরি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ছিল ততদিন কুফরি সংবিধানের অনুগত ছিলাম,এখন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানাচ্ছি, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখুন তাহলে আবারো কুফরি কন্সটিটিউশানের অনুগত হয়ে থাকব।'
এরকম চিন্তাধারা কতটা নির্বুদ্ধিতার সেটা একটা উদাহরণে স্পষ্ট হয়ঃ ধরুন, মদের বোতলে যদি বিসমিল্লাহ্ কিংবা হালাল শব্দ লেখা থাকে এবং পরবর্তীতে মদ কোম্পানি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ঐ হালাল বা বিসমিল্লাহ সিল বাদ দিয়ে দিবে, এতে মদ প্রস্তুরকারক কোম্পানি মূলত খারাপ কিছু করছেনা বরং এর দ্বারা মদের আসল পরিচয়ের ব্যপারে তৈরি করা মিথ্যা ইসলামাইজেশন এর ইল্যুশন তুলে ফেলছে।মদের বোতলে ইসলামিক টার্ম ব্যবহার করে যে অবমাননা করে আসছিল সেটাকে বন্ধ করতে যাচ্ছে। সুতরাং মুরতাদ মুরাদ টাকলাদের এরকম সিদ্ধান্ত বা কথার বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল না করে তাগুতি সংবিধানের বিরুদ্ধে ই'দাদ গ্রহন সমীচীন এবং বুদ্ধিমানের কাজ। তারা কুফরি সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিচ্ছে। ধরে নিন একদল যাদুকর কাফির তাদের কুফরি কালাম থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিচ্ছে। ইতোপূর্বে সংবিধানের ১৫ তম সংশোধনীতে "আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের" স্থলে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' মূলনীতি প্রতিস্থাপন করে। তারা বলছে এর মাধ্যমে তারা ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফেরত যাচ্ছে। এখানে প্রশ্ন আসে, পাকিস্তান এর বিরুদ্ধে ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধটি কি তাহলে ধর্মহীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য হয়েছিল?? উত্তর পাবেন নিচে প্রদত্ত ভিডিওতে। আমি অনুরোধ করব সিরিজের সবগুলো ভিডিও দেখার জন্য।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার ইস্যুটি ক্ষমতাসীন তাগুত সরকারের ইসলামবিদ্বেষী সেন্টিমেন্ট থেকেই এসেছে। সুতরাং সকল দাঈ,আলিম এবং অনলাইনে ইসলামিক ভিডিও নির্মাতাদের উচিত ইস্যুটাকে তুলে ধরে তাগুতের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবকে তুলে ধরে এদেরকে হটানোর জন্য ই'দাদ ওয়াল জিহাদের জরুরত বুঝিয়ে দাওয়াহ অব্যাহত রাখা।
৯/১১ হামলা: ষড়যন্ত্র তত্ত্বসমূহের প্রকৃত বাস্তবতা
(পর্ব ১)
.
৯/১১ এর পেরিয়ে গিয়েছে ২০ বছর। আ&ল কা%য়ে*দা এই হামলার দায় স্বীকার করে বিভিন্ন সময়ে বহু বক্তব্য দিয়েছে। কিন্তু হামলার ঠিক পরপরই ৯/১১ নিয়ে যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছিল , ২০ বছরের মাথায় এসে এখনো অনেকেই তা বিশ্বাস করে। অনেকেই বিশ্বাস করে ৯/১১ আমেরিকার সাজানো নাটক বা ইহুদিরাই এ কাজ করেছে। এই লেখায় ৯/১১ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া জনপ্রিয় কয়েকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্বের পেছনের বাস্তবতা তুলে আনা হবে।
.
১) আমেরিকা পূর্ব থেকেই ৯/১১ হামলার কথা জানত। আফগানিস্তান আক্রমণের অজুহাত হিসেবে দাড় করানোর জন্য তারা আ&ল কা%য়ে*দা কে হামলা চালাতে দিয়েছে।
.
অনেকে এমনও বলে আমেরিকা নিজেই এই হামলা চালিয়েছে। মুসলিমদের মধ্যে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি নিয়ে আলোচনার পূর্বে দেখা যাক ৯/১১ হামলায় আমেরিকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ:
প্রাণহানি, চরম নিরাপত্তা ভীতি ইত্যাদি বিষয় এড়িয়ে শুধু আমেরিকার অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া যাক। ৯/১১ এর সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমেরিকার অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়। হামলার তাৎক্ষনিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার , এর মধ্যে ৮০০ কোটি ডলার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার পুনর্গঠনে ব্যয় করা হয়েছে। পেন্টাগন সংস্কার বাবত ১০০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে।.
২০১০ সাল অবধি প্রত্যক্ষভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। যার মধ্যে শুধুমাত্র বিমান সংস্থাগুলো ৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হারায়। হামলা চালানোর মাত্র চার দিনের মাথায় বিমান ইন্ডাস্ট্রি ১৪০ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হামলায় ব্যবহৃত চারটি বিমানের মূল্য ছিল সাড়ে ৩৮ কোটি ডলার।
.
হামলা পরবর্তী দশ বছরে, হোটেল ব্যবসা ৬ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদি এই হামলাটি না হতো, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সময়ের মধ্যে ৭ কোটি ৮০ লাখ পর্যটক পেত। এর মাধ্যমে তারা ৬০ কোটি ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারত। এই সময়ের মধ্যে পরিসেবা খাত থেকে ৮৩,০০০ চাকরি হারিয়ে যায় অথবা বলা যায় বেতন হিসেবে ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়। নিরাপত্তা খাতে ব্যয় হয় ৫৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ভবিষ্যতে প্রায় সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে ইরাক ও আফগান যুদ্ধের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের চিকিৎসা ও জীবন বীমাতে।
.
আফগানিস্তান আক্রমণ বা মুসলিমদের নির্যাতন করার জন্য আমেরিকা কেন এতো ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে যাবে? আমেরিকা ইচ্ছা করলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নারী স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে মুসলিমদের নির্যাতন, শোষণ বা তার পছন্দমতো যে কোনো দেশে আক্রমণ করতে পারে। চাপ প্রয়োগ, অর্থনৈতিক অবরোধ বা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবাধ্য সরকারকে সরিয়ে গোলাম সরকারকে ক্ষমতায় আনতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা বা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সে এমনটা করতেই অভ্যস্ত। আমেরিকা চাইলেই এই অজুহাতসমূহ উপস্থাপন করে আফগানিস্তান আক্রমণ করতে পারত। জাতিসংঘ বা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে সে তেমন কোনো বাধার মুখোমুখি হতো না। যেমন ইরাক। কিন্তু সে তা না করে কেন আ&ল কা%য়ে*দা কে ৯/১১ ঘটাতে দিবে? বা নিজেই ৯/১১ এর নাটক সাজাবে? যেখানে ৯/১১ তার জন্য চরমতম এক বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভূত হবে।
.
২) ইসরায়েলের পরিকল্পনায় এই হামলা হয়েছে। আমেরিকা আর মুসলিমদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে।
.
মুসলিমদের মধ্যে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর সঙ্গে আরও দুইটি বিষয় এই দাবীকে শক্তিশালী করে। আর তা হলো ৪ হাজার ইহুদী টুইন টাওয়ারে কাজ করত। হামলার দিন তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিল। হামলায় একজন ইহুদীও নিহত হয়নি। এবং হামলার পরপর কয়েকজন ইহুদীকে গ্রেফতার করে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
.
প্রথমত, টুইন টাওয়ারে কর্মরত ৪ হাজার জন ইহুদীর অনুপস্থিতির বিষয়টি পুরোটাই গুজব। সে সময় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিল- হামলার সময় শহরে ৪ হাজারের মতো ইসরায়েলি রয়েছে। কিন্তু এটিকেই পরিবর্তন করে বলা হয় টুইন টাওয়ারে কর্মরত ৪ হাজার ইহুদী সেদিন অনুপস্থিত ছিল। লেবাননের ‘হিজবুল্লাহ’ সমর্থিত ‘আল-মানার’ নামের এক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল সর্বপ্রথম এই সংবাদ প্রকাশ করে সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখে। অন্যদিকে হামলায় নিহত প্রতি ১০ জন ব্যক্তির মধ্যে ১ জন ছিল ইহুদী।
.
হামলার ৪ ঘণ্টা পর ৫ জন ইহুদীকে এফবিআই গ্রেফতার করে। তারা একটি গাড়ির উপরে উঠে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় হামলার দৃশ্য ভিডিও করছিল। কিন্তু পরে তদন্তে প্রমাণিত হয় যে হামলার ব্যাপকতা বা অগ্রিম তথ্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিলনা।
.
মুসলিমদের সাথে আমেরিকার সুসম্পর্ক থাকলে তবেই সুসম্পর্ক নষ্টের ব্যাপার আসে। ৯/১১ এর অনেক পূর্ব থেকেই আমেরিকা মুসলিমদের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালায়। বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের উপর অনুগত স্বৈরশাসক চাপিয়ে দেয়। আমেরিকা প্রতিটি ক্ষেত্রে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গিয়ে ইহুদীদের সাহায্য করে। তাদের প্রত্যক্ষ সাহায্যেই ইসরায়েল মুসলিমদের ভূমি ফিলিস্তিন দখল করে নেয়। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে লাখ লাখ মুসলিমদের হত্যা করে। শুধুমাত্র উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ই আমেরিকার অবরোধের কারণে খাদ্য এবং চিকিৎসার অভাবে মারা যায় ৫ লাখ ইরাকী শিশু। উ%সা*মা বি#ন লা&দে^ন, ৯/১১ হামলার কারণ হিসেবে আমেরিকার এ জুলুমগুলোর কথা বার বার উল্লেখ করেছেন। মুসলিমদের সাথে আমেরিকার সুসম্পর্ক ছিল না। এবং বরাবর আমেরিকা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গিয়ে ইহুদীদের পক্ষে ছিল। কাজেই, আমেরিকার সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক নষ্ট করে ফায়দা লোটার জন্য ইহুদীরা এই হামলা চালিয়েছে এমন দাবী অযৌক্তিক।
৩) দাবী করা হয় বিমান বিধ্বস্ত হবার ফলে হাইজ্যাকারদের সবাই নিহত হয়েছে। অথচ তাদের অনেককেই পরবর্তীতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। কাজেই ৯/১১ একটি সাজানো নাটক মাত্র।
.
৯/১১ হামলায় বিশ্ববাসী বিহ্বল হয়ে পড়ে। আক্রমণের পরের সময়গুলো ছিল বিশ্ববাসীর জন্য প্রচণ্ড বিস্ময়, বিভ্রান্তির। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো একেবারেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। এই বিশৃঙ্খল, অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে বিবিসি সম্ভাব্য আক্রমণকারীদের নামের তালিকা এবং পরিচয় প্রকাশ করে। ৯/১১ এর হামলার ধরণ ছিল আত্মঘাতী। কাজেই কোনো আক্রমণকারী জীবিত থাকবে এমন বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এই তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের অনেককেই পরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেখা যায় । এর উপর ভিত্তি করে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীরা দাবী করে ৯/১১ সাজানো নাটক।
.
পরবর্তীতে বিবিসি ব্যাখ্যা করে- আক্রমণকারীদের নামের তালিকায় তাদের ভুল করার কারণ হচ্ছে নামগুলোর সবই ছিল খুবই প্রচলিত ইসলামি এবং আরবি নাম। অনেক মানুষেরই এধরণের নাম আছে। বিবিসি এফবিআইকে (FBI) অনুরোধ করলে তারা জানায়- বিবিসির নামের তালিকায় ভুল ছিল। এফবিআই নিশ্চিতভাবে আক্রমণকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলো তাদের তালিকার ব্যাপারে কোনো আপত্তি তোলেনি। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ও জানায় বিবিসি নামের তালিকা প্রকাশ করতে ভুল করেছে।
.
হামলাকারীদের অধিকাংশ ছিল সৌদি আরবের নাগরিক। সৌদি আরবের ‘আরব নিউজের’ সম্পাদক জন ব্র্যাডলি (John Bradley) বিবিসির এই ভুলের ব্যাপারে নিজের বক্তব্য দিয়েছে। সে জানায়- আক্রমণের পরের কয়েকটি দিন প্রচণ্ড বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে কারণেই আক্রমণকারীদের নামের তালিকার ভুল হয়েছে। কিন্তু এরপর খুব দ্রুতই প্রকৃত আক্রমণকারীদের শনাক্ত করে তালিকা সংশোধন করে নেওয়া হয়।
.
রেফারেন্সঃ
[১] How much did the September 11 terrorist attack cost America?- https://tinyurl.com/
br8uemps
[২]One 9/11 Tally: $3.3 Trillion - https://
tinyurl.com/krd974wd
[৩]The cost of 9/11 - in dollars- https://
tinyurl.com/mpcjz3ts
[৪]Paying the Price: Killing the Children of Iraq-
https://tinyurl.com/349n3r54
[৫]Madeleine Albright: “500,000 Dead Iraqi Children Was Worth it” - https://tinyurl.com/
y2dja7ew
[৬]The 4,000 Jews Rumor- Rumor surrounding Sept. 11th proved untrue- https://tinyurl.com/
4mrw24r6
[৭]Were Israelis Detained on Sept. 11 Spies?-
https://tinyurl.com/3fjf97u7
[৮]9/11 conspiracy theory, BBC- https://
tinyurl.com/2xmja589
[৯] Panoply of the Absurd- https://tinyurl.com/
2x79fwbw
[১০] AFTER THE ATTACKS: MISSED CUES; Saudi May Have Been Suspected in Error, Officials Say-
https://tinyurl.com/euexv5k2
~ ৯/১১ হামলা: ষড়যন্ত্র তত্ত্বসমূহের প্রকৃত বাস্তবতা (পর্ব ২) ~
.
৯/১১ এর পর পেরিয়ে গিয়েছে ২০ বছর। আ&ল কা%য়ে*দা এই হামলার দায় স্বীকার করে বিভিন্ন সময়ে বহু বক্তব্য দিয়েছে। কিন্তু হামলার ঠিক পরপরই ৯/১১ নিয়ে যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছিল, ২০ বছরের মাথায় এসে এখনো অনেকেই তা বিশ্বাস করে। অনেকেই বিশ্বাস করে ৯/১১ আমেরিকার সাজানো নাটক বা ইহুদিরাই এ কাজ করেছে। এই সিরিজে ৯/১১ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া জনপ্রিয় কয়েকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্বের পেছনের বাস্তবতা তুলে আনা হয়েছে। সিরিজের প্রথম পর্বের লিংক কমেন্টে।
.
৫) ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছে
.
টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার সময় রহস্যময় ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হয়েছিল। এই ধোঁয়াকে প্রমাণ হিসেবে দেখিয়ে দাবী করা হয় -বিমানের আঘাতে নয়, বরং ভেতর থেকে ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছে। বিস্ফোরক পদার্থসমূহ ৯/১১ এর পূর্বেই টাওয়ারের কলামগুলোতে ড্রিল করে রাখা হয়।
.
এই দাবীতে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে।
প্রথমত, টুইন টাওয়ারের আকৃতি অত্যন্ত বিশাল এবং এখানে অনেক সংস্থার অফিস রয়েছে। এতো বিশাল আকৃতির, ব্যস্ত টুইন টাওয়ারের কলামগুলোতে ৯/১১ এর পূর্বের সপ্তাহে ড্রিল করে বিস্ফোরক পদার্থ রাখা হবে আর তা একজন ব্যক্তিরও চোখে পড়বে না – এটি একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার।
.
দ্বিতীয়ত, এভাবে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিল্ডিং ধ্বংস করার ক্ষেত্রে নিচের ফ্লোরগুলো সবার আগে ধসে পড়ে। এরপর উপরের ফ্লোরগুলো ধসে পড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে টুইন টাওয়ারের ক্ষেত্রে উপরের ফ্লোরগুলো আগে ধ্বংস হয়েছে, নিচেরগুলো পরে। ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ হলে এমনটি হতো না।
.
টুইন টাওয়ারের অভ্যন্তরে প্রচুর বাতাস ছিল। একটা ফ্লোর ধসে নিচের ফ্লোরের উপর পড়ার সময় ধসে যাওয়া ফ্লোরের বাতাস কোথাও যাবার রাস্তা পাচ্ছিল না। প্রচণ্ড বাতাসের চাপ সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড চাপবিশিষ্ট বাতাস চূর্ণ-বিচূর্ণ কংক্রিটের সাথে মিশে প্রচণ্ড গতিতে বাহিরে বের হয়ে আসে। যেটা দেখে মনে হয় সেখানে বিস্ফোরণ ঘটছে।
.
৬) বিমানের আঘাতে এতো ক্ষয়ক্ষতি কেন হল?
.
এটাও বেশ প্রচলিত একটি দাবী। প্রথম বিমান ‘টুইন টাওয়ারের’ দুই টাওয়ারের একটি, উত্তর টাওয়ারের ৯৮ থেকে ৯৪ তলার মধ্যে আঘাত হানে। দ্বিতীয় বিমান আঘাত হানে দক্ষিণ টাওয়ারের ৮৪ থেকে ৭৮ তলার মধ্যে। বিমান এতো উঁচুতে আঘাত করলেও নিচতলার লবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কীভাবে এটা সম্ভব? তারমানে বোঝা যাচ্ছে বিমান যখন আঘাত হেনেছিল তখন নিচের ফ্লোরগুলোতেও বিস্ফোরক পদার্থের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।
.
আমেরিকার সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেকনোলোজি (National Institute of Standards and Technology –NIST) অনুসন্ধান থেকে দেখা যায়- বিমান টাওয়ারগুলোতে প্রবেশ করার কারণে টাওয়ারের ইউটিলিটি শ্যাফট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে বিমানের জ্বালানি লিফটের শ্যাফটে ঢুকে পড়ে এবং ভয়াবহ আকারের অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি করে। লিফটের ক্যাবল ছিঁড়ে যায়, ব্রেকিং সিস্টেম অচল হয়ে পড়ে। লিফটগুলো নিচের ফ্লোরগুলোর উপর প্রচণ্ড গতিতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে থাকে। নিচের ফ্লোরের লবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রচণ্ড ধাক্কায় লবির দরজা উড়ে গিয়ে বিমানের জ্বালানি ছড়িয়ে দেবার সুযোগ করে দেয়। এই জ্বালানির কারণে সেখানেও ভয়াবহ আকারে আগুন লাগে। অনেক মানুষের গায়ে আগুন ধরে। জুলস নডেট (Jules Naudet) নামের একজন ক্যামেরা ম্যান হামলার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সে লবিতে এভাবে আগুন লাগার ঘটনা নিজের চোখে দেখেছে।
.
৭) বিমানের জ্বলন্ত জ্বালানির তাপমাত্রা ৪২৬-৮১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে স্টিলের গলনাঙ্ক ১৫১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিমানের জ্বালানি টুইন টাওয়ারের স্টিলের কাঠামো গলানোর জন্য যথেষ্ট না। তাহলে টুইন টাওয়ার কেন ধসে পড়ল?
.
এটা সত্য যে শুধুমাত্র বিমানের জ্বালানিতে আগুন লাগার ফলে যে তাপের সৃষ্টি হয়েছিল তা স্টিল গলানোর জন্য যথেষ্ট না। বিমানের জ্বালানিতে আগুন লাগার পর সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে টাওয়ারের আসবাবপত্র, চেয়ার, টেবিল পর্দা, কম্পিউটারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ইত্যাদিতে। সেই সাথে টুইন টাওয়ারে বিভিন্ন সংস্থার অফিস হবার কারণে সেখানে প্রচুর কাগজ ছিল। এই কাগজেও আগুন লেগে যায়। NIST এর মতে, এই সম্মিলিত আগুনের ফলে তাপমাত্রা কোথাও কোথাও প্রায় ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। ৫৯৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্টিল ৫০ ভাগ শক্তি হারিয়ে ফেলে। ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্টিল হারায় ৯০ ভাগ শক্তি। কাজেই তাপমাত্রা ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে টাওয়ারের স্টিলের কাঠামো মারাত্মক দুর্বল হয়ে বিল্ডিং এর ভার বহনের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে। বালুর প্রাসাদের মতোই ধসে পড়ে টুইন টাওয়ার।
.
৮) টুইন টাওয়ারের নিকটবর্তী বিল্ডিং ৭ কেন ধসে পড়ল? সেটাতে তো বিমান আঘাত করেনি? অর্থাৎ ৯/১১ একটি সাজানো নাটক ছিল
.
.
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বিল্ডিং ৭ ছিল ৪৭ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার ১ ঘণ্টার মাথায় এটাও ধসে পড়ে। বিল্ডিং ৭ এ কোনো বিমান আঘাত করেছিল না। বিল্ডিং এর অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটালে তা যেভাবে ধসে পড়ে, বিল্ডিং ৭ সেভাবেই ধসে পড়েছিল। এ ব্যাপারটিও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীরা ফলাও করে প্রচার করে।
.
উত্তর টাওয়ার ধসে পড়ার সময় বিপুল সংখ্যক ধ্বংসাবশেষ প্রচণ্ড গতিতে বিল্ডিং ৭ এর দক্ষিণ পাশে এসে আঘাত করে। বিল্ডিং ৭ এর প্রায় এক চতুর্থাংশ; নিচতলা থেকে দশ তলা পর্যন্ত ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এর ফলে ভবনটির কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের অনেক জায়গায় আগুন ধরে যায়। পঞ্চম তলার আগুন এক নাগাড়ে ৭ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকে। টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার সময় ধ্বংসস্তূপের আঘাত এবং দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে থাকা আগুনের ফলে বিল্ডিং ৭ এর স্টিলের কাঠামো অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেকনোলোজি (National Institute of Standards and Technology –NIST) এর মতে, বিল্ডিং এর ডিজাইনেও কিছু দুর্বলতা ছিল। এ বিষয়গুলোর কারণে বিমান আঘাত না হানার পরেও একসময় বিল্ডিং ৭ ধসে পড়ে।
.
বিল্ডিং ৭ ধসে পড়ার দৃশ্য দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে এটা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে। বিল্ডিং ৭ এর অভ্যন্তরে আগুন নেভানোর জন্য অনেক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী কাজ করছিল। ভবনটির মালিক এই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের উপর ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা করে। সে তাদের তৎক্ষণাৎ ফিরিয়ে আনতে (Pull It) বলে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তার এই বাক্যটির ব্যাখ্যা করে এভাবে – সে আসলে এই বাক্যের (Pull It) মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণের আদেশ দিয়েছে।
.
NIST তিন বছর ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে মত দেয়- বিল্ডিং ধসে পড়ার প্রধান কারণ আগুন। ভেতর থেকে বিস্ফোরকের মাধ্যমে বিল্ডিং ৭ ধ্বংস করলে যে পরিমাণ শব্দ হবার কথা বা যতদূর থেকে শব্দ শুনতে পাবার কথা এক্ষেত্রে তা একদমই হয়নি। কোনো প্রত্যক্ষদর্শী এমন শব্দের কথা বলেনি বা কোনো ভিডিওতে এমন কিছু ধরা পড়েনি।
.
প্রকৃতপক্ষে, বিল্ডিং ৭ এর পূর্ব এবং পশ্চিম দিকের কিছু অংশ বিল্ডিং এর মধ্যবর্তী অংশে ধসে পড়ে। এর ফলে ‘অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পুরো বিল্ডিং একসাথে মাটিতে ধসে যায়। যা দেখে মনে হয় যে বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিল্ডিং ৭ কে ধ্বংস করা হয়েছে।
রেফারেন্স:
[১] World Trade Center Investigation- https://
tinyurl.com/vzw6m3w4
[২] Debunking 9/11 Myths: About the Airplanes -
https://tinyurl.com/27fej344
[৩]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report - The World Trade Center- https://
tinyurl.com/y9jcv2ub
[৪]The biggest 9/11 conspiracy theories debunked- https://tinyurl.com/ypdru9dc
[৫] NIST Video: Why the Building (WTC7) Fell-
https://tinyurl.com/3xd6yxhv
[৬]9/11 conspiracy theories debunked- https://
tinyurl.com/4fe8h7ac
[৭] September 11 Attacks- https://tinyurl.com/
432jrjae
~ ৯/১১ হামলা: ষড়যন্ত্র তত্ত্বসমূহের প্রকৃত বাস্তবতা (পর্ব ৩) ~
.
৯/১১ নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অভাব নেই। হামলাকারী আ%ল কা@য়ে(দা দায় স্বীকার করে বহু বিবৃতি দিয়েছে। ৯/১১ এর হামলা এবং হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে আমেরিকা। বহু বছর ধরে চলে আসা মার্কিন সাম্রাজ্যের পতনের শুরু হয়। সামরিক, রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রেই বিশ্ব দরবারে আমেরিকার প্রভাব প্রতিপত্তি দুর্বল হয়ে যায়। এক মেরু কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা থেকে বহু মেরু কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার আবির্ভাব ঘটে। রাশিয়া, চীন, তুরস্ক বা হালের ইসলামিক ইমারত অফ আফগানিস্তানের মতো নতুন শক্তির উত্থান ঘটে। এই আমেরিকাও বারবার জানিয়েছে এই হামলা করেছে আ*ল কা^য়ে)দা। কিন্তু ৯/১১ হামলায় চোখের জল নাকের জল এক হয়ে যাওয়া আমেরিকাকেই এই হামলার জন্য দায়ী করা মানুষের অভাব নেই। ৯/১১ হামলা আমেরিকা বা ইহুদীদের ষড়যন্ত্র – অনেক মানুষই এমন বিশ্বাস রাখেন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রকৃত বাস্তবতা তুলে ধরা হচ্ছে আমাদের এই সিরিজে। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে দুটি পর্ব। প্রথম দুটি পর্বের লিংক কমেন্টে।
.
৯) পেন্টাগনে কী মিসাইল হামলা হয়েছিল?
.
পেন্টাগনে (আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হেড অফিস) যে বিমান ( ফ্লাইট ৭৭) আঘাত করে তার দৈর্ঘ্য ছিল ১২৫ ফিট, প্রস্থ ১৫৫ ফিট। কিন্তু এই বিমান পেন্টাগনের সামনের দিকে (প্রবেশের সময়) মাত্র ১৬ ফিট চওড়া গর্ত তৈরি করে। এবং দেয়ালের অপর পাশে (বের হবার সময়) ১২ ফিট চওড়া গর্ত করে। এটা কীভাবে সম্ভব? এই যুক্তি দেখিয়ে অনেকেই দাবী করে পেন্টাগনে আসলে বিমান হামলা হয়নি বরং, স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত মিসাইলের মাধ্যমে মার্কিন সেনাবাহিনী পেন্টাগনে, সেনাবাহিনীর অন্য সদস্যদের (তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী) উপর হামলা চালায়। অর্থাৎ আমেরিকা নিজেই এই হামলা চালিয়েছে।
.
ASCE পেন্টাগন বিল্ডিং পারফর্মেন্স (ASCE Pentagon Building Performance) এর অফিশিয়াল রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে- পেন্টাগনের কংক্রিট দেয়ালের বাহিরের ‘E’ রিং এ ১৬ ফিট নয় বরং ৭৫ ফিট চওড়া গর্তের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই ভুল তথ্যটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
.
তাহলে ‘ফ্লাইট ৭৭’ বিল্ডিং এ বিমান আকৃতির ১২৫ ফিট গর্ত কেন করল না ? কেন ৭৫ ফিট গর্তের সৃষ্টি হলো?
.
এর কারণ হচ্ছে বিমানের একটি পাখা পেন্টাগনকে আঘাত করার পূর্বেই মাটিতে আঘাত করেছিল । এবং অন্য পাখাটি রিইনফোরসড কংক্রিটের দেয়ালে গভীর গর্ত তৈরি করার মতো যথেষ্ট ভারী ছিল না। ASCE এর মতে - পেন্টাগনের দেয়ালের ‘C’ রিং এ ১২ ফিট গর্ত তৈরি হয় বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের আঘাতে। বিমানের পাখা বা কাঠামোর আঘাতে নয়।
.
এছাড়া, অসংখ্য লোক পেন্টাগনে আঘাত হানার পূর্বে বিমানটিকে আকাশে চক্কর দিতে দেখেছে। অনেকেই ছবি তুলেছে। অর্থাৎ মিসাইলের মাধ্যমে নয়, বিমানের আঘাতেই পেন্টাগনে ক্ষয়ক্ষতি হয়।
১০) পেন্টাগনে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ কোথায়?
.
কোথাও বিমান বিধ্বস্ত হলে আশেপাশে প্রচুর ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকে। ‘ফ্লাইট ৭৭’ বেশ বড় বাণিজ্যিক বিমান ছিল। কিন্তু তারপরেও কেন এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি? ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীদের এটিও বেশ প্রিয় একটি যুক্তি।
.
পেন্টাগন হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরাই এই দাবীর ভ্রান্ততা নিশ্চিত করেছে। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীই বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হল অ্যালেন ই কিলশেইমার (Allyn E. Kilsheimer)। ওয়াশিংটনে অবস্থিত KCE স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স (KCE Structural Engineers) এর প্রধান নির্বাহী ছিল অ্যালেন ই কিলশেইমার । পেন্টাগন হামলার পরপরই সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স তার হাত ধরেই উদ্ধার হয়। সে জানাচ্ছে, ‘নিঃসন্দেহে এটা একটা বিমান ছিল। ভবনে বিমানের পাখার আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। আমি বিমানের লেজ নিজ হাতে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলেছি। বিমানের ব্ল্যাকবক্সও আমি উদ্ধার করেছি। বিমান ক্রুদের ইউনিফর্মের টুকরা বা লাশের কিছু অংশও আমি নিজ হাতে উদ্ধার করেছি’।
.
এই স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের দাবী মিথ্যা ছিল না। পেন্টাগনের ভেতরে এবং বাহিরে ধ্বংসস্তূপের অনেক ছবি তার দাবীর সত্যায়ন করে। এখানে আর একটি বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ। বিধ্বস্ত বিমানের বেশীরভাগ অংশ ভবনের ভেতরে ছিল, বাহিরে নয়। এ কারণেও অনেকের মাঝে এই ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়।
.
১১) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে, নির্ধারিত গতিপথ ত্যাগ করে অন্য পথে কোনো বিমান চলতে শুরু করলে সাধারণত সেই বিমানকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য যুদ্ধ বিমান পাঠানো হয়। কিন্তু ৯/১১ এর ক্ষেত্রে এমন করা হয়নি। অর্থাৎ এটা ছিল আমেরিকার নিজস্ব কাজ।
.
ষড়যন্ত্রকারীরা দাবী করে- ৯/১১ হামলার জন্য ৪ টি বিমান হাইজ্যাক করা হয়। এই বিমানগুলোর কাছাকাছি মার্কিন বিমান বাহিনীর ২৮ টি বিমান ঘাটি ছিল। সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে ২ স্কোয়াড্রনকে ওয়াশিংটন ডি.সি’র আকাশের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নিযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। এ থেকে ষড়যন্ত্রকারীরা উপসংহার টানে- বিমান বাহিনীকে সেদিন চুপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ আমেরিকা নিজেই এই হামলা করেছে।
.
দাবীর অসারতা: প্রকৃতপক্ষে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে ১৪ টি বিমান ৪৮ টি প্রদেশের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। নর্থ অ্যামেরিকান এয়ার ডিফেন্স কমান্ড (North American Air Defense Command- NORAD) কোনো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা বা এলার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে নিখোঁজ বিমান সম্পর্কে সতর্ক সংকেত পায়নি। সিভিলিয়ান এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (Civilian Air Traffic Control –ATC) ফোন করে তাদের নিখোঁজ বিমান সম্পর্কে জানায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ATC বেশ কয়েকটি ভুল করে।
.
প্রথমত, ৮ টা ৩৭ মিনিটে তারা জানায় ‘ফ্লাইট ১১’ হাইজ্যাক করা হয়েছে। বিমানের সম্ভাব্য গতিপথ নির্ণয় করতে তারা সময় নেয় এবং ভুল করে। ৯ টা ২১ মিনিটে আবার ফোন করে বলে ‘ফ্লাইট ১১’ ওয়াশিংটন ডিসির দিকে রওয়ানা দিয়েছে। অথচ ফ্লাইট ১১ এর ৩৫ মিনিট আগেই টুইন টাওয়ারের উত্তর টাওয়ারে আঘাত হানে।
.
৯ টা ৩ মিনিটে নিউইয়র্কের ATC আবার ফোন করে NORAD কে। ‘ফ্লাইট ১৭৫’ হাইজ্যাকের ব্যাপারে রিপোর্ট করে। কিন্তু ততক্ষণে দেরী হয়ে যায়। ঠিক সেই সময়েই দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে ‘ফ্লাইট ১৭৫’। NORAD কে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আকাশে উঠে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ বিমান। কিন্তু তাদের আর কিছুই করার ছিল না।
.
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়- কেন ATC বা NORAD ছিনতাইকৃত বিমান শনাক্ত করতে এতো সময় নিল বা ব্যর্থ হলো এটা কি ইচ্ছাকৃত? ষড়যন্ত্রের একটি অংশ?
.
আসলে ছিনতাইকৃত বিমান যখন ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করে দেয় তখন ATC গভীর সাগরে পড়ে যায়। খড়ের গাদা থেকে সূচ খুঁজে বের করার অবস্থা হয় তাদের। আমেরিকার ব্যস্ততম এয়ার ট্রাফিক রুট থেকে ৪ হাজার ৫০০ রাডার ব্লিপ ক্রসচেক করে বিমান শনাক্ত করা ছাড়া তাদের হাতে কোনো উপায় থাকে না। অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ কাজ এটি। ভুল হবার সম্ভাবনাও প্রচুর।
.
NORAD এর রাডার অত্যাধুনিক হলেও সেগুলো নিযুক্ত ছিল আমেরিকার বাহিরের সম্ভাব্য হুমকি শনাক্ত করার কাজে। আমেরিকার অভ্যন্তরে নয়। ৯/১১ এর পূর্বে আমেরিকা কখনো চিন্তাও করতে পারেনি তাদের দেশের কোনো বিমান ছিনতাই করে তাদের দেশের অভ্যন্তরেই কেউ হামলা চালাতে পারে। একারণে ৯/১১ এর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কীভাবে সামলাতে হবে সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধরণের প্রস্তুতি ছিল না।
.
১২) ছিনতাইকৃত বিমান থেকে যাত্রীরা তাদের আপনজনের নিকট ফোন দেয়। বেটি অং (Betty Ong) নামের একজন বিমানবালা আমেরিকান এয়ারলাইন্সের রিজার্ভেশন ডেস্কে ফোন করে। বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল তাতে সেখানে থেকে ফোন করা সম্ভব নয়। ফোন কলের এ বিষয়টিই কি প্রমাণ করে না যে ৯/১১ আমেরিকা বা ইহুদীদের সাজানো নাটক?
.
বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল সেখান থেকে আসলে বাজারে প্রচলিত সাধারণ মোবাইল সেট ব্যবহার করে ফোন দেওয়া সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারীদের এই দাবী সঠিক। তবে বিমানের যাত্রী বা বিমানবালা সাধারণ মোবাইল দিয়ে কল করেনি। তারা ফোন করেছিল বিমানে রক্ষিত স্যাটেলাইট মোবাইল দিয়ে। এবং স্যাটেলাইট মোবাইল দিয়ে বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল সে উচ্চতা থেকে ফোন করা সম্ভব।
রেফারেন্স:
[১] World Trade Center Investigation- https://
tinyurl.com/vzw6m3w4
[২] Debunking 9/11 Myths: About the Airplanes -
https://tinyurl.com/27fej344
[৩]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report - The World Trade Center- https://
tinyurl.com/y9jcv2ub
[৪]The biggest 9/11 conspiracy theories debunked- https://tinyurl.com/ypdru9dc
[৫]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report - The World Trade Center- https://
tinyurl.com/y9jcv2ub
[৬]Myths About the 9/11 Pentagon Attack: Debunked- https://tinyurl.com/25e86k9r
[৭] Debunking Myths About United Flight 93-
https://tinyurl.com/ypz6jtcm
৯/১১ হামলা: ষড়যন্ত্র তত্ত্বসমূহের প্রকৃত বাস্তবতা (শেষ পর্ব) ~
.
১৩) টুইন টাওয়ারে আঘাতকারী বাণিজ্যিক বিমানের কেন জানালা ছিল না?
.
বাণিজ্যিক বিমানের জানালা থাকে। দাবী করা হয় টুইন টাওয়ারে হামলাকারী বিমান ছিল বাণিজ্যিক বিমান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আক্রমণকারী বিমানের কোনো জানালা দেখা যায়নি। অর্থাৎ সামরিক কার্গো বিমান অথবা জ্বালানী ট্যাংকার বিমানের মাধ্যমে টুইন টাওয়ারে আমেরিকা নিজ থেকেই হামলা চালিয়েছে। এমন দাবী প্রথম করে ফক্স নিউজের কর্মী মার্ক বায়ার্নবাক (Marc Birnbach)। হামলার পরপরই সরাসরি সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে সে দাবী করে- এটা কোনোমতেই বাণিজ্যিক বিমান হতে পারে না। আমি বিমানের কোনো পাশেই জানালা দেখিনি।
.
হামলাকারী বিমানের লো রেজুলেশনের কয়েকটি ছবি এবং ভিডিওতেও জানালা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এই বিষয়টিও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারীরা রেফারেন্স হিসেবে উপস্থাপন করে।
.
প্রকৃতপক্ষে মার্ক ছিল একজন ফ্রি ল্যান্সার ভিডিওগ্রাফার। হামলার সময় সে ফক্স নিউজের হয়ে কাজ করছিল। সে নিজেই পরে স্বীকার করেছে ‘হামলার সময় আমি টুইন টাওয়ার থেকে ২ মাইল দূরে ছিলাম। খুব অল্প সময়ের জন্য বিমান উড়ে যেতে দেখেছি। এবং দক্ষিণ টাওয়ারে বিমান আঘাতের দৃশ্যও আমি দেখিনি। আমি শুধু আওয়াজ শুনেছিলাম’।
.
হামলার পরপরই ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি ( Federal Emergency Management Agency -FEMA) টুইন টাওয়ারের ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করতে যায়। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম, কন্সট্রাকশন টেকনোলজি ল্যাবরেটোরিজ, কনসাল্টিং ফার্ম ইত্যাদির বিশেষজ্ঞদের একটি দল ধ্বংসস্তূপের ছবি তুলতে থাকে। তারা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের কাঠামোর কিছু অংশ খুঁজে পায়। সেখানে আরোহীদের জন্য বরাদ্দকৃত জানালা ছিল। বিশেষজ্ঞদের এই দল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়- বাণিজ্যিক বিমানই আঘাত হেনেছিল দক্ষিণ টাওয়ারে। ABC নিউজের ধারণকৃত হামলার একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই বিশেষজ্ঞ দল বিমানের যে অংশ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছিল সেটি যে আসলেই হামলাকারী বিমানের ছিল- তা নিশ্চিত করে।
.
১৪) টুইন টাওয়ারে কি বিমানের সাহায্যে বোমা হামলা করা হয়?
.
ফ্লাইট ১৭৫ টুইন টাওয়ারে আঘাত হানার পূর্বমুহূর্তের বিভিন্ন ভিডিও এবং ছবি থেকে দেখা গিয়েছে বিমানের ডান পাখার গোঁড়ায়, কাঠামোর নিচে রহস্যময় একটি বস্তু উপস্থিত। বাণিজ্যিক বোয়িং ৭৬৭ মডেলের বিমানে সাধারণত এমন কিছু থাকে না। এ থেকে প্রমাণ হয় এই রহস্যময় বস্তুটি মিসাইল অথবা বোমা। অর্থাৎ আল-কায়েদা নয়, বরং প্রেসিডেন্ট বুশের পৃষ্ঠপোষকতায় আমেরিকা নিজে থেকেই এই হামলা চালিয়েছে।
.
ফটোগ্রাফার রব হাওয়ার্ড (Rob Howard) এর তোলা ফ্লাইট ১৭৫ এর একটি ছবি নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। সর্বাধিক প্রচারিত এই ছবিতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বিমান দেখা যায়। এই ছবিতে বিমানের পাখার নিচের রহস্যময় বস্তুটি দেখা যায়, যেটাকে ষড়যন্ত্র প্রচারকারীরা মিসাইল হিসেবে দাবী করে।
.
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্পেইস ফটোগ্রাফি ল্যাবরেটোরি (Space Photography Laboratory)- এর পরিচালক রোনাল্ড গ্রিলি (Ronald Greeley) এর নিকট এই ছবি পাঠানো হয়। ছবি বিশ্লেষণ করে, আলো ছায়ার প্রভাবের উপর ভিত্তি করে ছবির সেই বস্তুতে প্রকৃতপক্ষে কি কি উপাদান উপস্থিত বা তার আকার আকৃতি কেমন তা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সে একজন বিশেষজ্ঞ। হাই রেজুলেশনের ছবি বিশ্লেষণ করে এবং Boeing 767-200ER's মডেলের বিমানের কাঠামোর সাথে তুলনা করে সে ফ্লাইট ১৭৫ বিমানে মিসাইলের উপস্থিতির দাবী বাতিল করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে রব হাওয়ার্ড এর ছবিতে ডান পাখার গোঁড়ার দিকের একটি অংশ- যেখানে ল্যান্ডিং গিয়ার থাকে –তা দেখা যাচ্ছিল। সূর্যের আলো বিমানে প্রতিফলিত হবার কারণে সেটাকে মিসাইলের মতো লাগছিল।
.
ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির এরোনেটিক্সের প্রফেসর ফ্রেড ই. কালিক ( Fred E. Culick) কে বেসামরিক বিমান ফ্লাইট ১৭৫ এ মিসাইল যুক্ত করার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। অত্যন্ত জোর দিয়ে সে বলে,‘ এটা একেবারেই অসম্ভব। তারা (ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারী) আসলেই খুব বাড়াবাড়ি করছে’।
********
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয় আমেরিকা। আরেক সুপার পাওয়ার সোভিয়েত ইউনিয়ন দীর্ঘ দিন পর্যন্ত আমেরিকার সাথে ক্ষমতার লড়াই চালিয়ে যায়। কিন্তু ৯০ দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে একচ্ছত্রভাবে আধিপত্য কায়েম করে আমেরিকা। এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থায় আমেরিকা অত্যন্ত সফলতার সাথে মিডিয়া মেশিনের মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালায়। হলিউড, সাহিত্য, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ইত্যাদির সুচতুর ব্যবহারের মাধ্যমে আমেরিকা নিজেকে উপস্থাপন করে অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য এক শক্তি হিসেবে। এই পৃথিবীর একক মালিকানা দাবী করে বসে আমেরিকা। এবং যেহেতু সে এই পৃথিবীর মালিক তাই যে কোনোকিছু করার অধিকার তার রয়েছে। সবকিছু করার লাইসেন্স পেয়ে মানবাধিকার, নারী স্বাধীনতা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে বিশ্বব্যাপী রক্তপাত আর ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠে আমেরিকা।
.
আমেরিকার মিডিয়া মেশিনে মগজ ধোলাই বিশ্ববাসীর অধিকাংশ ব্যক্তিরাই আমেরিকার এই জুলুমের প্রকৃত বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে না। যারা পারে তাদের বেশীরভাগই আমেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ভয় পায়। আমেরিকার অনিঃশেষ সামরিক শক্তি আর অপরাজেয় ভাবমূর্তি তাদের স্বাভাবিক বুদ্ধি বিবেচনা লোপ করে দেয়। তারা বিশ্বাস করে নেয় কেউ কখনো আমেরিকার গায়ে হাত দিতে পারবে না। মিডিয়া প্রোপাগান্ডায় মগজ ধোলাই এর শিকার, আমেরিকাকে খোদার আসনে বসানো এই মানুষগুলোকে কিছুতেই বোঝানো সম্ভব নয় – আমেরিকাকেও আঘাত হানা যায়, আমেরিকাকেও পরাজিত করা সম্ভব। পূর্বের সব সুপার পাওয়ারের মতো আমেরিকারও এক সময় পতন ঘটবে। অস্ত যাবে মার্কিন সাম্রাজ্যের সূর্য। আ ~ল কা৳য়ে*দার বহুবার দায় স্বীকার, আমেরিকার অসংখ্যবার অফিশিয়াল বিবৃতিসহ সব তথ্য প্রমাণ পাবার পরেও তাই তাদের অবিশ্বাসী মন বারবার আশ্রয় নেয় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বে।
.
৯/১১ এর মাধ্যমে মার্কিন সাম্রাজ্যের পতনের যে সূচনা হয়েছিল, ৯/১১ এর ২০ বছরের মাথায় এসে তা অত্যন্ত দ্রুতগতি লাভ করেছে। ২০ বছর যুদ্ধের পরেও আফগানিস্তানে সুপার পাওয়ার আমেরিকার লজ্জাজনক পরাজয়, আমেরিকার ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি থেকে এটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে- আমেরিকার পতন সন্নিকটে।
(সংগৃহীত ও ঈষৎ পরিমার্জিত)
রেফারেন্স:
[১] World Trade Center Investigation- https://
tinyurl.com/vzw6m3w4
[২] Debunking 9/11 Myths: About the Airplanes -
https://tinyurl.com/27fej344
[৩]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report - The World Trade Center- https://
tinyurl.com/y9jcv2ub
[৪]The biggest 9/11 conspiracy theories debunked- https://tinyurl.com/ypdru9dc
[৫]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report - The World Trade Center- https://
tinyurl.com/y9jcv2ub
[৬]Myths About the 9/11 Pentagon Attack: Debunked- https://tinyurl.com/25e86k9r
সংগৃহীত
ডকুমেন্ট সোর্সঃ
Reality Check BD
Facebook page:
https://m.facebook.com/RealityCheckBD1
Youtube:
আদর্শহীন জীবন অনেকটাই এ্যানিম্যালিস্টিক জীবন। বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট। সমস্ত এ্যানিম্যাল বিয়িং তাদের জন্য নির্দিষ্ট দ্বীন অনুযায়ী চলে। মানুষ যখন তার জন্য নির্দিষ্ট দ্বীন(ইডিওলজি) এর অনুসরণ করে তখন তাকে সেটা সকল জীব জগতের হায়ারার্কির সর্বোচ্চে নিয়ে যায়। একইভাবে সেই নির্ধারিত ইডিওলজি রিজেকশনের ফলাফল জন্তুজানোয়ারের চেয়েও নিচু স্তরে চলে যাওয়া। ফিজিক্যাল কিংবা ইন্টেলেকচুয়াল সুপেরিয়রটি মূলত শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড নয়। জ্বীন জাতি প্রযুক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে মানুষের চেয়েও এ্যাডভান্স। এমনকি তাদের তাদের ফিজিক্যাল স্ট্যাচার মানুষ অপেক্ষা উন্নত। চতুষ্পদ জন্তুদের অধিকাংশই মানব অপেক্ষা ক্ষিপ্রগতি সম্পন্ন, অধিকতর শক্তিশালী এবং কষ্টসহিষ্ণু। এমন অনেক প্রানী আছে যার চোখের সংখ্যা,হার্ট মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যার, এরপরেও সেসব প্রানী শ্রেষ্ঠত্বের দিক দিয়ে মানুষের ধারে কাছেও নেই। অর্থাৎ শ্রেষ্ঠত্বের মান এখানে অনেকটাই এ্যাবস্ট্রাক্ট।
এমতাবস্থায় দুনিয়ার হায়াতের এই টেম্পরাল ম্যাটেরিয়ালিস্টিক গেইনিংকে যদি শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি বানানো হয় তবে সেটা স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তির আত্মপ্রবঞ্চনাময় ভাবনা ছাড়া আর কিছু না। এরকম চিন্তা করে তারা, যারা আল্লাহ প্রদত্ত ইডিওলজিকে অস্বীকার করে[কাফির]। আজকে আল্লাহর দ্বীনধারনকারী[মোডারেট মুসলিমস] দাবিদাররাও এমনটা ভাবে যে প্রযুক্তিগত ম্যাটেরিয়ালিস্টিক উৎকর্ষতাই শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি, এরা কাফিরদের সুপেরিয়রটির ডেফিনিশনকে গ্রহন করে ওদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে আহবান করে।
শুধু এরাই না, আল্লাহর দ্বীনকে গ্রহন করেছে এমন হাজারো দাবিদার আছে, যাদের নামটা শুনলে মনে হয় সে আল্লাহর পথের এবং মতের, অথচ অন্তরের ভেতরে মোটেও তা নয়। অনেক পীর সুফি থেকে শুরু করে অনেক আলিম কামিল এমনকি সহিহ আকিদাধারীদেরকেও পাবেন যারা দ্বীনকে বাহ্যিকভাবেই মানে বলে প্রকাশ করে, কিন্তু দ্বীন তাদের অন্তর পর্যন্ত পৌছায়না। আল্লাহর নির্ধারিত ইডিওলজি তাদের বেসিক ইডিওলজি না। বরং বেসিক ইডিওলজি সামথিং এলস। বেসিক ইডিওলজি হচ্ছে তাদের নফস। ইসলামিক ইডিওলজিটা যাস্ট তাদের সামাজিক পরিচয়ের জন্য। ওটা শুধুই লেবাস! যার জন্য এরা আল্লাহর পথ এত কাছে পেয়েও পায়না। নফস এবং কাফিরদের সাথে সবসময় আপোষ করে চলে এরা। এরা আল্লাহকে মান্য করার বেসিক শর্তগুলোই মানে না! আপনি এরকম বুজুর্গ লোক খুব কমই খুঁজে পাবেন যিনি তাগুত কি, তা জানে এবং তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর উপর ঈমান রাখেন। সবার অবস্থা হচ্ছে তাগুতের বশ্যতা স্বীকার করে আল্লাহ প্রদত্ত ইডিওলজিকে মেনেছি বলে সাক্ষ্যদান। এরা প্রত্যেকেই আদর্শহীন, পরিচয়হীন। ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহর দ্বীনকে অন্তরে ধারন করার ব্যপারে গাফিলতি করা ও এড়িয়ে চলা লোকেদের অবস্থা অনেকটা দ্বিপদী জন্তুর মতই। এরা জানেনা দুনিয়াতে কেন এসেছে, প্রকৃত সাফল্য কি, এদের নেই কোন আদর্শ। এরা পারিপার্শ্বিক অবস্থার স্রোতে চলে। নফসের অনুকূলতা বিচার করে চলে। বিপরীতভাবে, যারা আন্তরিকভাবে ইসলামকে ডিফল্ট ইডিওলজি বা কগনিশন হিসেবে সিলেক্ট করে তারা জীবনের অর্থ,প্রকৃত সাফল্য, লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন থাকে। এরা খেয়ালিপনা করে জীবনকে চালায়না। আশপাশের সামাজিক অসামাজিক ট্রেন্ড দ্বারা এরা আনএ্যাফেক্টেড থাকে। এরা যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন ইসলামিক মানদণ্ডের বাহিরে গিয়ে অন্য কোন স্ট্যান্ডার্ডকে গ্রহন করেনা। ইসলামই হয় এদের একমাত্র মটো। কাফিরদের পরিবেশেও এদের অন্তরে ঈমানের নূর সর্বাবস্থায় প্রজ্জলিত থাকে, কখনোই কুফরের সাথে আপোষ করে চলার কথা ভাবেনা। এরা প্রতিষ্ঠিত কুফরি শাসনব্যবস্থার ইত্তেবা করেনা বরং তারা আল্লাহর যমীনে তার শাসন প্রতিষ্ঠার নববী পন্থার অনুসরণ করে। এই শ্রেনীটাই প্রকৃত শ্রেষ্ঠ ইডিওলজির ধারক, এরাই প্রকৃত এবং শ্রেষ্ঠ মানুষ।
দ্বীন ইসলামকে নিয়ে সর্বত্র করাপশন চলছে। প্রত্যেকেই যে যার মত করে কবি সাহিত্যিক আর দার্শনিকদের মত ইসলাম নিয়ে নিয়ে লিখছে। হাজারো বই ছাপছে, পত্রিকায় কলামিস্টরাও পিছিয়ে নেই,আর সোস্যাল নেটওয়ার্ক-ব্লগ-অনলাইনে তো আরো কঠিন অবস্থা!বিশেষত ফেসবুক! এখানে একেকজন বিরাট শাইখুল ইসলাম। এখানে কেউ পশ্চিমা সভ্যতাকে বানাচ্ছে ইয়াজুজ-মাজুজ, কেউ বলছে আদম আলাইহিসালাম প্রথম মানুষ নয়, কেউ 'ট্রু ইসলাম' প্রিচ করছে হাদিসকে রিজেক্ট করে, নিজের হাতে দ্বীনের সমস্ত কার্যাবলী রচনা করে ট্রুথ সিকারদের আহব্বান করছে,কেউ বা প্রমান করছে ইসলামী শরীয়ত স্ট্যাবলিস বলতে শুধু হাতে গোনা কিছু ল প্রতিষ্ঠা বোঝায় আর যা কিছু নৈতিক তাই হালাল!!, কেউ প্রচার করছে ছহীহ আকিদা যদিও কাফেরদের আনুগত্য ফরজ বলে এবং কাফেরদের সাথে আপোষে চলতে বলে, কেউ প্রমান করছে পীরদের এবং কবরকে সেজদা দেওয়া জায়েজ, তাবিজ কবচ হালাল, পীরের কাছে বায়াত ফরজ,কেউ বা কুরআন কে মহাবৈজ্ঞানিক বুক প্রামানে ব্যস্ত এবং দাবি করছে শয়তানের পূজক কথিত সাইন্টিস্টরা যা বলেছে সেসব কুরআনেও আল্লাহ বলেছেন....এরকম হাজারো মতাদর্শের প্রচার আর ছড়াছড়ি ফেসবুকে। সবার হাতে ফেসবুক আসলে যা হয়। সবাই কিন্তু কুরআন ব্যবহার করেই বিচিত্র দর্শন প্রচার করছে। সবাই প্রমান হিসেবে নানা কায়দায় আয়াত গুলোকে সাজিয়ে প্রমান করছে।দিনদিন এ ফিতনা প্রকট হচ্ছে। এমতাবস্থায় কিছু শ্রেনীর লোকরা ফেসবুক থেকে দ্বীনী ইলম তালাশ করতে গিয়ে ফাদে পড়ছে অথবা একরকমের এনিগমার মধ্যে পড়ছে।
একদম খালি মস্তকে দ্বীনী ইলম অর্জন করার জন্য ফেসবুক একদম খারাপ স্থান। কারন খালি ব্রেইনে যে যা ইচ্ছা প্রোগ্রাম ইন্সটল আনইন্সটল করে বিভ্রান্তিতে ফেলবে। আর বাতিলের দৌরাত্ম্যই বেশি। এজন্য বিশুদ্ধ তাওহীদের জ্ঞান অর্জন সবার আগে প্রয়োজন। কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন কিছুর সত্য মিথ্যা পরখকরনে পরিপূর্ণ তাওহীদের উপর জ্ঞান সার্বজনীন শক্তিশালী মাপকাঠি। তার যত বাতিল পথ আছে কোনটিই তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত নয়। আর সত্যিকারের একত্ববাদী হন,তাগুতকে বর্জন করে আল্লাহর উপর ইমান আনুন, হাতে অস্ত্র থাকতে হবে না, মানুষ এমনিতেই জঙ্গী বলবে! বিগত অগণিত সভ্যতায়ও এরকমটিই ছিল। আর নবী রাসূলগনদের যুগে যুগে এজন্যই প্রেরন করা হয়েছে, যেন মানুষ তাগুত থেকে নিরাপদে থাকে এবং আল্লাহর ইবাদত করে[১]।.
সুতরাং প্রত্যেকেরই ওইভাবে আল্লাহর কাছে আত্মসমার্পন করা উচিৎ যেভাবে সাহাবীগন নবী (সা) এর নির্দেশ মেনে করেছিলেন।
.
[১]وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلالَةُ فَسِيرُواْ فِي الأَرْضِ فَانظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
'আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়েত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেল। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে।'
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কিয়ামত দিবসের পূর্বে তরবারী হাতে এ উদ্দেশ্য প্রেরিত হয়েছি যে, কেবলমাত্র এক আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালারই) ইবাদত করা হবে, আর আমার রিযিক আসে আমার বর্শার ছায়া হতে, আর যারা আমার আদেশের বিরুদ্ধে যাবে তাদের জন্য অপমান (আর লাঞ্ছনা) তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে, আর যে কেউ তাদের অনুকরণ করে সে তাদেরই একজন”। মুসনাদে আহমান, ৪৮৬৯; সহীহ আল জামে’,২৮৩১.
হাদিসটা দেখলেন! কিয়ামত পর্যন্ত কিত্বাল চালু রাখবার আদেশ দিলেন তরবারিওয়ালা নবী(সাঃ)। আর রিযিক এর সন্ধান করতে বলেছেন কিত্বালের মাধ্যমে, হাল চাষ বা জীবিকার জন্য অন্য কাজ নয়। আর এভাবে ততদিন যতদিন না দ্বীন এক আল্লাহর হয়ে যায় দুনিয়াতে। আর বাতিল দ্বীন বিলুপ্ত হয় ।
ইবনে উমার কর্তৃক বর্ণিত আমি রাসূলুলাহ্ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “যদি তোমরা ইনাহ্ (এক ধরণের সুদ) করার এবং গরুর লেজ অনুসরন কর এবং কুষক হয়ে পরিতৃপ্ত— হয়ে যাও এবং জিহাদ প্রত্যাখ্যান কর আল্লাহ তায়ালা − তোমাদের উপর লাঞ্চনা অবতরন করবেন যা ততক্ষণ পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের ধর্মের দিকে প্রত্যাবর্তন কর।” (আবু দাউদ-সহীহ)
অর্থাৎ ইসলামধর্মই জিহাদভিত্তিক। ৫:৫৪ তেও আল্লাহ
জিহাদকে ছেড়ে দেওয়াকে ধর্ম থেকে ফিরে যাওয়াকে বুঝিয়েছেন! যতদিন না দ্বীন বিজয়ী হয়ে যায়, ততদিন অনবরত কিত্বাল ছাড়া আর কোন কাজ জীবিকাতে জড়ানোই মানে লাঞ্চনার দিকে হাটা। এটা আসলেই সত্য। এই দুনিয়াবি কাজে জড়ালে আস্তে আস্তে পুরো সমাজ জিহাদচ্যুত হয়ে যায়, এর পরে কয়েক প্রজন্ম গেলে ভুলেই যায় নিজেদের পরিচয়, তখনই কাফেরদের দ্বারা লাঞ্চনা শুরু।দফাও(প্রতিরক্ষাও) নাই, তাই রোহিঙ্গা হওয়া ছাড়া গতি নাই। এজন্য উমার (রাঃ) এক সাহাবীর ক্ষেতের ফসল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।আর আমরা তো অস্ত্র ছোয়াটাও এখন হারাম মনে করি। অথচ আল্লাহ বলেছেন "কাফেররা চায় তোমরা কোনরূপে অস্ত্রের ব্যপারে অসচেতন হয়ে পড়,আর সে সুযোগে তোমাদের উপড় একযোগে আক্রমণ করে!"‘যখন মানুষ দিনার এবং দিরহামের মধ্যে ডুবে যাবে, এবং যখন ঈনা নামক (সুদী) ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাবে, আর গরুর লেজ-এ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দিবেন, তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনে ফিরত না যাবে।’
[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ (২/২৮), তাবরানী (১২/৪৩৩), বায়হাকী (শুয়াবুল ঈমান ৭/৪৩৪), আবু ইয়ালা (১০/২৯)]
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শীঘ্রই মানুষ তোমাদেরকে আক্রমন করার জন্য আহবান করতে থাকবে, যেভাবে মানুষ তাদের সাথে খাবার খাওয়ার জন্য একে-অন্যকে আহবান করে।’
জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তখন কিআমরা সংখ্যায় কম হবো?’ তিনি বললেন, ‘না, বরং তোমরা সংখ্যায় হবে অগণিত কিন্তু তোমরা সমুদ্রের ফেনার মতো হবে, যাকে সহজেই সামুদ্রিক স্রোত বয়ে নিয়ে যায় এবং আল্লাহ তোমাদের শত্রুর অন্তর থেকে তোমাদের ভয় দূর করে দিবেন এবং তোমাদের অন্তরে আল-ওয়াহ্হান ঢুকিয়ে দিবেন।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আল–ওয়াহ্হান কি? ’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং ক্বিতালকে(যুদ্ধকে) অপছন্দ করা।’ (মুসনাদে আহমদ, খন্ডঃ ১৪, হাদিস নম্বরঃ ৮৭১৩, হাইসামী বলেছেনঃ হাদিটির সনদ ভালো, শুয়াইব আল আর নাউতের মতে হাদিসটি হাসান লি গাইরিহি)।
_বস্তুত এখন কিত্বাল(যুদ্ধ-জঙ্গিবাদ) ঘৃনার বিষয়,চরম ঘৃনার বিষয়।এর স্বরূপ বর্ননা কি দেব! হায় রে! আফসোস!!
অনেক সার্টিফিকেটওয়ালা শায়েখরা "কেতাল্পাট্টি" শব্দ দিয়েও ঘৃনাকে প্রকাশ করেন। সুবহানআল্লাহ!! তাদের মুখও আমরা দেখছি,যাদের ভয় রাসূল করেছেন দাজ্জালের চাইতেও বেশি!!!
আবু হুরাইরাহ (রা.) বর্ননা করেন যে রাসূলুলাহ্ (সাঃ) বলেন “যে ব্যক্তি যুদ্ধ করেনি অথবা যুদ্ধের জন্য নিয়্যতের করেনি এমন ব্যক্তি মৃত্যু বরন করলে সে মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মুসলিম)
আবূ বাক্র ইবনু আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন,
তিনি বলেন, শত্রুর মোকাবিলায় আমি আমার বাবাকে (যুদ্ধক্ষেত্রে)বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তলোয়ারের ছায়াতলে জান্নাতের দরজাসমূহ। দলের উস্কখুস্ক একজন লোক বললেন, আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কি তা বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি তার সঙ্গীদের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন, আমি তোমাদের বিদায়ী সালাম জানাচ্ছি। এই বলে তিনি নিজ তলোয়ারের খাপ ভেঙ্গে ফেললেন এবং তলোয়ার দ্বারা (শত্রুর প্রতি) আঘাত হানতে থাকেন। অবশেষে তিনি নিহত হন। সহীহ্, ইরওয়া (৫/৭), মুসলিম
জামে আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৬৫৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
শায়েখগন বলেন এখন কোন হক্ক জিহাদ নেই।সব খাওয়ারিজ! নিচের হাদিসটির দিকে তাকালে মনে হয় তারা রাসূলের বিরুদ্ধেই নির্ভয়ে বলেন__
মুগীরা ইব্ন শু’বাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী থাকবে। এমনকি যখন ক্বিয়ামত আসবে তখনও তারা বিজয়ী থাকবে। (৭৩১১, ৭৪৫৯, মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১৯২১) (আ.প্র. ৩৩৬৯, ই.ফা. ৩৩৭৬)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৬৪০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সম্মানিত শায়েখগন বলেন ওরা যেটা করে সেটা জিহাদ নয়,জিহাদ হলে আমরাই প্রথম কাতারে থাকতাম। আসলে, রাসূল(স) এর যুগেও এ মতাদর্শের লোক ছিল, যুগেযুগে তাদের ক্যারেকটার একই। উহুদ যুদ্ধে তাদের ডাকা হয়েছিল, ওরা বলে এটাকে যুদ্ধ মনে করিনা, যদি এটা কিত্বাল ফি সাবিলিল্লাহ বা যুদ্ধ হত তবে আমরা সারির প্রথমে থাকতাম। অথচ তখন যুদ্ধে সেনাপ্রধান আমাদের নবী(স) ছিলেন। দেখুন ৩:১৬৭ তে।
এই বিশেষ মতাদর্শের লোকরা যখন দেখে কোন জঙ্গি নিহত হয় তখন এরূপ বলে যে কত করে বলতাম যাতে এসব ফালতু জঙ্গিদলে যাতে না যোগ দেয়, কত সাবধান করেছিলাম, এখন খারেজিগুলো মরেছে, পারত না শান্তিতে বসবাস করতে!! বিস্তারিত দেখুন ৩:১৬৮ তে।
এমতাদর্শের জনাব'দের কে আল্লাহ এ আয়াতগুলোতে ডায়্রেক্ট ট্যাগ দিয়েছেন । সেটা না হয় নাই উল্লেখ করলাম।
তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল(৩:১৪২)
আমাদের দায়িত্ব শুধু পৌছানো, মানা বা না মানবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সকলের আছে। আল্লাহ বলেনঃ
لَآ إِكْرَاهَ فِى الدِّينِ ۖ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَىِّ ۚ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطّٰغُوتِ وَيُؤْمِنۢ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى لَا انْفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
"দীনের মধ্যে জবরদস্তির অবকাশ নেই, নিশ্চয় হিদায়াত গোমরাহী হতে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই যে ব্যক্তি মিথ্যে মা’বুদদেরকে (তাগুতকে) অমান্য করল এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল, নিশ্চয়ই সে দৃঢ়তর রজ্জু ধারণ করল যা ছিন্ন হওয়ার নয়। আল্লাহ সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞাতা।"
(QS. Al-Baqarah 2: Verse 256)
মামুনুল হক সাহেবগনের দ্বীন প্রতিষ্ঠার কর্মপন্থা এরকম যে তারা এক্সিস্টিং শাসকদেরকে মানবরচিত সংবিধান- জুমহুরিয়া দ্বারা শাসনের জন্য তাকফির করে না। এই কারনে তারা তাদের উপর শারঈ একাডেমিক কোন নীতির অনুসরণ করেনা। বরং তারা এই প্রতিষ্ঠিত জাহেলি শাসন ব্যবস্থার উপর সন্তুষ্ট থেকে তাদের থেকে নানান সুযোগ সুবিধার আশা এবং দাবিদাওয়া আদায়ের আশা করে। শাপলাচত্বরে যে মহাসমাবেশ হয়েছিল সেটাও সরকার পতনের বা তাদেরকে তাগুত সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ছিল না। বরং উদ্দেশ্য ছিল কুফরি সংবিধানের অধীনে ইসলামবান্ধব কিছু দাবিদাওয়া আদায়ে এত এত দফা। তাদের দাবিদাওয়া বরাবরেই কুফরি ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা পরিপন্থী তাই এক্সিস্টিং কন্সটিটিউশনে এ্যাপ্লাই করা বেশ প্রব্লেমেটিক। মূল সমস্যা হচ্ছে ঈমান এবং কুফর কখনো একসাথে হয়না। এখানেও তাই। হেফাজতের কর্মপন্থা হচ্ছে কুফরের অধীনে তাগুতকে কুফর না করে ঈমানের নূর প্রোজ্জ্বলনের চেষ্টা।
কিছুদিন আগে মূর্তি স্থাপন নিয়ে হওয়া প্রতিবাদ আন্দোলনে মামুনুল হক সাহেব একভিডিওতে সরাসরি বলেন, দেশের সংবিধানের সাথে তাদের কোন শত্রুতা বা বিদ্বেষ নেই। আরেক বয়ানে শেখ হাসিনাকে তোষামোদ করে বলেন, 'আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে আপনার সাথে আন্তরিকতা রাখতে বলেছেন, এটা আমার ঈমান যে আমি আপনার সাথে আন্তরিকতা রাখব।'
আমরা যেটা শুনছি - তিনি বলছেন, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাগুতের সাথে আন্তরিকতা রাখতে বলেছেন। এটা তার ঈমানী কাজ!!!
মোটকথা হচ্ছে তারা তাগুতকে তাগুত বলে স্বীকার করেন না এবং যাবতীয় গণতান্ত্রিক জাহেলি নীতিকে তারা মান্য করেই সব আন্দোলন করে। যেমন, হরতাল,বিক্ষোভ মিছিল ইত্যাদি। তারা শাপলাচত্বরে যে উদ্দেশ্য এবং কর্মপন্থার উপর দাঁড়িয়ে মহাসমাবেশ করে সেটাই বাতিল। সেখানে গিয়ে জীবনকে বিপন্ন করাও নিস্ফল কর্ম বা অরণ্যেরোদন। যদি সবাই তাওহিদ প্রতিষ্ঠার চেতনা থেকে তাগুতের বিরুদ্ধে এক হয়েও মাঠে নামত, তাতেও গ্রহণযোগ্যতা ছিল যদিও আসলিহাত এবং প্রস্তুতি ছাড়াই ময়দানে নামা সুন্নাহ পরিপন্থী।
একইভাবে মালাউন মোদি দেশে এসেছে। মোদির নিয়ন্ত্রনেই সারাদেশ। এই সরকার মোদিরই সেবাদাস। বাংলাদেশ আজ ভারতের আনঅফিশিয়াল স্টেইট। এই ক্ষমতাসীন সরকারই হিন্দুত্ববাদকে দেশে শক্তিশালী করেছে, এমতাবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদেশে ওদের গুরু প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমন খুব স্বাভাবিক, যেখানে তাগুত ক্ষমতার আসনে বসা। বড় শয়তান তুল্য মোদির আগমনের বিরোধিতা করে ছোট শয়তান তুল্য সরকারের সামনে বিক্ষোভ করলে স্বভাবতই আপনাকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লিকুইডেট করবে। করেছেও। তাগুতের কর্ম এবং প্রতিক্রিয়া বুঝে কর্মপন্থাকে সাজানো হিকমাহ'র পরিচয়। কিন্তু আফসোসের বিষয় হেফাজত ও কওমী আলিম উলামাদের রাহবারগন এই শাসকদেরকে তাগুত বলেই মনে করেন না। এজন্য অজস্র নিরীহ, নিরস্ত্র আলেম, ইয়াতিম অসহায় তালিবুলইলম তাদের বিক্ষেভের ডাকে মাঠে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভুল মানহাজে উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রাণ দেয়। তাগুতবাহিনীগুলো এদের উপর পাখির মত গুলি চালিয়ে শহীদ করেছে, আহত করেছে অগণিত মুসলিমদের। হেফাজতে ইসলাম এবং আলিম উলামাদের রাহবারদের দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে চলমান কর্মপন্থার উদাহরণ অনেকটা এরূপ যে, তারা একটা ট্রাকের উপর উঠে ট্রাকের সামনের অংশকে হাত পা দিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঠেলছে,কিন্তু ট্রাক এক ইঞ্চিও আগাচ্ছেনা। একইভাবে তারা এক্সিস্টিং অর্ডারের ভেতরে দাঁড়িয়ে পরিবর্তন কামনা করে। আপনাকে অবশ্যই সিস্টেমকে করাপ্টেড স্বীকৃতি দিয়ে বাহিরে আসতে হবে। প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থাকে কুফরি সাব্যস্ত করে তাগুতকে বর্জন করতে হবে। নতুবা তারা আজীবন ইসলাম বিরোধী ইস্যুকে কেন্দ্র করে কয়দিন পর পর : আন্দোলন > বিক্ষোভ মিছিল > গুলি > আহত নিহত > রাহবারদের সংবাদ সম্মেলনে তীব্র নিন্দা এবং দু চারটাকা ক্ষতিপূরনের দাবি > হরতাল > তাগুতের দমন পীড়নে চুপ......আবারো কয়দিন পর নতুন ইস্যুতে আন্দোলন > বিক্ষোভ মিছিল > গুলি………… এর সাইকেলে/ চক্রে মধ্যে আটকে থাকবে। বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।
আশার বিষয় যে, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি একটা মাদ্রাসা থেকে সরকারি তাগুত বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন সরকারকে তাকফির করেছে। তবে, আক্রান্ত হবার দরুন রাগ ও আবেগের বশবর্তী হয়ে বলার স্থলে শারঈ একাডেমিক্যালি ইরতিদাদের বিষয়টি স্পষ্টীকরণই ইল্মের পরিচয় বলে গণ্য হবে।
কিছু ভাই ইতোমধ্যে আবেগ অথবা অন্য কারনে লেখা শুরু করেছেন, এখনই বায়াহ নিয়ে একটা জামায়াত বা তানজিম তৈরি করে দেশকে দারুল হরব ঘোষনা করে সরকারকে তাকফির করে জিহাদের দিকে চলে যেতে। এ মর্মে বেশ কিছু দফার প্রস্তাবনা তারা করেছে দেখেছি।
এই দফাগুলো কার্যকর করা অনেক প্রয়োজনীয় হলেও এমুহুর্তে একদম আনওয়াইজ থিংকিং হবে, যেহেতু প্রথম দফা(মুজাহিদ জামায়াত গঠন ও বায়াহ) কার্যকরের সাথে সাথেই মাদ্রাসার ছাত্রদের এক্টিভ জঙ্গীগোষ্ঠী সাব্যাস্ত করা হবে এবং যৌথ অভিযানে হত্যা - আক্রমণ করা হবে গনহারে।এদিকে প্রতিরোধের জন্য আসলিহাতের কোন কিছুই নেই। আমাদের বাংলাদেশের ল্যান্ডম্যাসের বিচারে ভাল আনসারের অভাব আছে। এবং মাদ্রাসাগুলো শহরের ভেতরে মানে তাগুতের নিয়ন্ত্রিত এলাকাতেই আছে। সুতরাং একদমই অনুপযোগী স্থান। যদি এমন হত মাদ্রাসাগুলো সুন্দরবন ঘেষা অঞ্চলে অথবা পাহাড়িয়া অঞ্চলে কিংবা নিঝুম ,মহেশখালী ,সেন্টমার্টিনের মত বিচ্ছিন্ন স্থানে হত তবে এমন প্রস্তাবনা কার্যকর করার চিন্তা করা যেত।তারা যে পরিকল্পনার কথা বলছে সেটা অব্জেক্টিভবিহীন গনশাহাদাত হাসিলের জন্য ভাল। এবং সেটা হবে অল্প সময়ের কর্মপন্থা। হুজিদের মত কিছুদিন পরেই তাদের পাওয়া যাবেনা। এটা মাদ্রাসা শিক্ষাকেই হুমকিতে ফেলবে। বিদেশী প্রভুদের চোখে আনার মাধ্যমে এদেশে ইসলামই বিপন্ন অবস্থায় পড়বে। বর্তমান অবস্থা বিচারে কওমী তোলাবাদের পুলিশদের মোকাবেলারই শক্তি নেই। শাইখুল হাদিস আবু ইমরান হাফিজাহুল্লাহ বলেন, "দুনিয়াটা দারুল আসবাব"। অর্থাৎ আপনাকে দুনিয়াতে উপকরণ গ্রহন করতে হবে। সব কিছু গায়েবী মদদে হবে এমন আশা করে কর্মবিমুখ হওয়া সুন্নাহ না। এখানে পুলিশের পর র্যাব, বিজিবি,সেনাবাহিনীসহ অনেক জুন্দুশশাইত্বন আছেন। বিদেশী প্রভুদের ডাক দিকে দৌড়ে চলে আসবে। জাতিসংঘ নামের তাগুত সংঘ যদি ভারতকে নিয়ন্ত্রনের হুকুম দেয় তখন মালাউনদের সেনায় দেশ ভরে যাবে। ওদের অস্ত্রসস্ত্রের সামনে স্টিক্স ফ্লেশ এন্ড ব্লাড দিয়ে সামনে যাওয়া অনুর্বর মস্তিষ্কের আত্মঘাতী কল্পনা। তাই হিকমাহপূর্ন চিন্তা হবে, পাব্লিকলি এসব না করে ইন্টারনালভাবে দাওয়াহ ইদাদ চালানো। অনেকে সরকারকে প্রকাশ্যে তাকফির করে ইজমার দাবি করছে,এটাও মাদ্রাসার আলিম তোলাবাদের বিপদে ফেলবে। আপনারা জানেন তারা কতটা ডিপেন্ডেন্ট সরকারী সিস্টেমের উপর। বি.বাড়িয়াতে কয়েকদিন বিদ্যুৎ গ্যাস বন্ধ করে রেখেছিল তাগুত, এতেই অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। এজন্য আপাতত বাহ্যিকভাবে কোন কিছু প্রকাশ না করা উত্তম,যেটা তাদেরকে সংকটে ফেলে। উচিত হবে উলামাদের রাহবারদের মধ্যে গুপ্ত আলোচনায় ভেতরে ভেতরে অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা। তাগুতকে বর্জন করে নববী মানহাজের দিকে আসার পথে তাদের ইনফ্রাশস্ট্রাকচার কে ভেতর থেকে ঢেলে সাজানো। আফগানি দেওবন্দী মুজাহিদ উলামা এবং আফগানী ইমারার সাথে অফিশিয়াল গুপ্ত সম্পর্ক তৈরি করা এবং তাদের এদেশীয় উমারাহ এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সেই সাথে উচিত মানহাজগত পরিবর্তন আনার পর, এই ধরনের সুপারফিশিয়াল বিক্ষোভ হরতাল না করা। দুএক মাস ধুপধাপ "কিছু একটা করার নাম " জিহাদ না। এভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবে আলহামদুলিল্লাহ চলমান ইস্যুতে সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে সরকারে প্রতি যারা নিউট্রাল ছিল তারাও একটা অবস্থানে পৌছেছে। আমি মাদ্রাসার ত্বালিবুল ইলমদের কখনো প্রকাশ্যে সরকারকে তাগুত বলতে শুনিনি। এবার বলেছে। এটা বিশাল অর্জন। এই অর্জনটাকে আবেগ ছাড়া কাজে লাগাতে হবে। যদি তাদের রাহবারগন এই ইস্যুতেও শিক্ষা গ্রহন না করে পূর্বের ভুল পথে অটল থাকেন, তবে সমজদার আলিম এবং তালিবুলইলম ভাইদের উচিত হবে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আফগানী ইমারাহ এর বঙ্গভারতীয় শাখার উমারাহর সাথে নিজেদেরকে গোপনে গনহারে যোগ করা। এবং ইমারাহ নির্দেশিত কর্মপন্থার ইত্তেবা করা। সেখানকার উলামা-মাশায়েখের নির্দেশনা মান্য করা।
অনলাইনে যেসব সেলিব্রেটি দাঈ ভাইয়েরা আবেগের ফলে ময়দানের হেফাজতি কওমি আলিম উলামাদেরকে তাগুতের বিরুদ্ধে আরো ভয়াবহ ক্ল্যাশের দিকে যাবার জন্য একরকমের উস্কে দিচ্ছেন, তাদের কথা পড়ে একটা জিনিস মনে হয়; জিহাদ সংক্রান্ত কোন কিছুই অনলাইন সেলিব্রেটিদের থেকে শোনা উচিত না। কারন এরা নিজেরা মূলের সাথে সম্পর্কহীন। এদের যাবতীয় কথা,বার্তা, প্রস্তাবনা সবই নিজেদের অর্জিত দ্বীনি জ্ঞান এবং বিবেক বুদ্ধির উপরে। তারা কোন আমিরের নির্দেশনার আনুগত্য করে লেখে না, যারা বাস্তব ময়দানের অবস্থার সমুদয় অবস্থাকে অফলাইনে প্র্যাক্টিক্যালি ডিল করে হিকমাহপূর্ন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করেন। এরা নিজেরা যা বোঝে,সেটাই অনলাইনে ঘরে বসে বসে লেখে, কনটেক্সট - কন্সিকোয়েন্সের ব্যপারে ভাবেনা। এরা নিজেরাই কোন তানজিমের সাথে অফিশিয়ালি যুক্ত না,অথচ আলিম এবং মাদ্রাসা ছাত্র ভাইদের তানজিম বানিয়ে বাইয়্যাত করে ধুমধাড়াক্কা কিত্বাল শুরু করবার তাগাদা দেয়(যেটার লংটার্ম ফলাফল নেগেটিভ)। অনলাইন দ্বীনি সেলিব্রেটিজম নিয়ে আরেকটা আলাদা আর্টিকেলই লিখতে হবে।
সর্বোপরি আমরা এদেশের ইসলামের দুর্গ কওমি মাদ্রাসার আলিম ও ত্বালিবুলইল্মদের কল্যাণ কামনা করি। আমরা চাই তাদেরকে যদি আল্লাহর পথে নামতেই হয় সেটা যেন সঠিক মানহাজেই হয়। আমরা চাইনা তারা এমন কোন ফুলিশ এ্যাটেম্প নিক বা ফুলিশ কর্মপন্থার চক্রে আটকে থাকুক যেটা তাদেরকে অব্জেক্টিভবিহীন ব্লাডশেডিং ছাড়া কিছুই দেয় না।
২০১৬ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অনুযায়ী এদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রায় ১৫%। অর্থাৎ প্রায় ২৭০০০০০০ জন মানুষ। যার মাঝে ৩১% হতদরিদ্র। অর্থাৎ হতদরিদ্রদের সংখ্যা আনুমানিক ৮৩৭০০০০ জন। বাস্তব সংখ্যাটা আরো বেশি।
আমাদের দেশে তাগুতি শাসন টিকে আছে এদের সামরিক বাহিনীর অস্ত্রের জোড়ে। সামরিক - আধা সামরিক বাহিনী গুলোর সংখ্যা পুলিশসহ আনুমানিক ৭ লাখের উপরে। এরা আল্লাহর কালাম অনুযায়ী জুন্দুশশাঈত্বন। এরা শয়তানের শাসনের অতন্দ্র প্রহরী। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বাধাদানকারী। এজন্য আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী বর্তমান সামরিক বাহিনীতে চাকুরী ব্যাংকে চাকর খাটার অনুরূপ। আপনার কি কোন ধারনা আছে, এই শয়তানের গোলামগুলোকে কি পরিমান খাদ্যসামগ্রী রেশনের নামে বেতনের পাশাপাশি দেয়া হয়??
এটা কেবল একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা বাংলাদেশের ১৫% জনগণের নিত্যদিনের বাস্তব চিত্র। একে তো পুঁজিবাদি সুদি অর্থব্যবস্থা গরীবকে শোষণ এবং ধনীকে অর্থের পাহাড় তৈরি করে দিচ্ছে তার উপর তাগুতের দুর্নীতি ভরা শয়তানি শাসন, যেখানে যাকাত আদায় হয়ে গেছে ব্যক্তিগত ঐচ্ছিক বিষয়। দেশের উন্নয়নের এবং ইন্ডিভিজ্যুয়াল দরিদ্রের অভাব মোচনের যে আশ্বাস দেয়া হয় সেটা শয়তানের প্রতারণাপূর্ণ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই নয়।
মূলত মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর এই অবস্থার কারন হচ্ছে হাকিমিয়্যাহর ক্ষেত্রে শয়তানের প্রভুত্ব গ্রহন এবং বাস্তবায়ন এবং এক্ষেত্রে আল্লাহর প্রভুত্ব ত্যাগ। আজ কয়জন আলিম তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর কথা বলে? এটাকে একরকমের মুসলিমের আকিদা থেকেই মুছে ফেলা হয়েছে, ফলে জায়গা করে দেয়া হয়েছে গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র সহ বহুত আবর্জনার তন্ত্রমন্ত্র।
মুসলিমরা যেদিন থেকে হাকিমিয়্যাহ থেকে সরে এসেছে এবং কুরআনিক ডোমিনিয়ন থেকে বের হয়ে আল্লাহদ্রোহী শয়তানি সংবিধানকে পছন্দ করেছে, দ্বীন প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং কিত্বাল/জিহাদকে ভুলে গেছে সেদিন থেকে আল্লাহ লাঞ্ছনা চাপিয়েছেন। এই ডিগ্রেডেশান শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনেরও বহু আগে থেকে। এটা করে হয়ত আপনার দাদাদের দাদারা। এই হেরেডিটেরি গিল্ট আমরা আজও বহন করছি। যারা একসময় শাসক লেবাসে ছিল এদেরকে এখন অনেকটাই সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেনের চোখে দেখা হয়। তাদের শিক্ষালয়(মাদ্রাসা) গুলোকে বলা হয় ব্যাঙের ছাতার মত আগাছা। এদেরকে যখন তখন গুলি করে হত্যা করেও দেয়া যায়। এদের কোন অভিভাবক নেই। তাই যা-তা করা যায়। আমরা এই জিল্লতিকে বেশ আন্তরিকতার সাথেই গ্রহন করে নিয়েছি। এর থেকে বের হবার সহজসাধ্য উপায় নেই, তাই পোস্ট মর্ডানিস্ট স্টাইলে অনেকে ধরেছে চাষাবাদ, অনেকে ধরেছে সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরগিরি, অনেকে বিদেশে গিয়ে হয়েছে কাফিরদের সেবাদাস। অনেক দ্বীনদার ধরেছে আতর খেজুর মধু কাপড় মেসওয়াকের ব্যবসা। কি আর করার! বেচে তো থাকতে হবে! এগুলো সবই গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে থাকা। এগুলো সবই জিল্লতি। আপনি যদি কালেক্টিভলি উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোন চেষ্টা না করে এসবে ডুবে থাকেন তাহলে ভাই জিল্লতির কালোমেঘ দিনদিন বাড়তেই থাকবে। আল্লাহকে সাহায্য না করলে তিনিও আমাদেরকে সাহায্য করবেন না। সুদি ব্যবসা এবং গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা আল্লাহর রাসূল দেড় হাজার বছর আগে বলে গিয়েছেন। এগুলো কোন নতুন কথা নয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়ও বলেছেনঃ "যখন মানুষ দিনার এবং দিরহামের মধ্যে ডুবে যাবে, এবং যখন ঈনা নামক (সুদী) ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাবে, আর গরুর লেজ-এ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দিবেন, তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনে ফিরত না যাবে।’
[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ (২/২৮), তাবরানী (১২/৪৩৩), বায়হাকী (শুয়াবুল ঈমান ৭/৪৩৪), আবু ইয়ালা (১০/২৯)]