Showing posts with label বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান. Show all posts
Showing posts with label বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান. Show all posts

Wednesday, September 20, 2023

"All Time" exists all the time


 
"All Time" exist all the time ,এমন কথা ইহুদিপুত্র আইনস্টাইনের সময়ের ব্যাখ্যায় বলেছিল, সকল সময় সব সময় বর্তমান। সময়ের অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ এগুলো ইলুশ্যন। এ নিয়ে বেশ কিছু বিখ্যাত উক্তিও আছে তার। সময়ের এই তত্ত্বই পরবর্তীতে মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

Friday, November 13, 2020

বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?[PDF]



আলহামদুলিল্লাহ। পিডিএফ কপি তৈরির কাজ আল্লাহর ইচ্ছায় সম্পন্ন হয়েছে।  ফরম্যাটিং ভাল করবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। পিডিএফে অনেক আর্টিকেল পর্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে,অনেক কিছু সংশোধিত হয়েছে।

এরপরেও সময়ের অভাবে  অনেকগুলো আর্টিকেল রিভিউ ছাড়াই ফাইনালভাবে পিডিএফ করে ফেলেছি। আমি সবাইকে অনলাইনের খণ্ডিত আর্টিকেল গুলো পাঠে নিরুৎসাহিত করি, কারন তাতে অনেক ত্রুটি আছে যা আমার বর্তমান অবসরহীন মুহুর্তে ফিক্স করা অসম্ভব। আমি এ আর্টিকেল গুলো আগে প্রচারে নিরুৎসাহ করতাম অপূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্ট ও আকিদা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ের জন্য। কিন্তু পিডিএফ কপি প্রস্তুতের পর এ বিষয়ে কিছুটা শৈথিল্য আনছি। একান্ত শেয়ার করতে
চাইলে পিডিএফ এর লিংক দিয়ে দেবেন। এরপরেও দুর্বল চিত্তের ও দুর্বল ঈমানের লোকেদেরকে এই পিডিএফ না দেয়াই ভাল। যারা হার্ডকপি পছন্দ করেন তারা চাইলে এই পিডিএফ ডকুমেন্টটিকে অবিকৃত অবস্থায় কোন অংশ বাদ না দিয়ে প্রিন্ট করে নিতে পারেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এতে কোন আপত্তি নেই। এই পিডিএফ দিয়ে বা প্রিন্টেড হার্ডকপি দিয়ে অনলাইন কিংবা অফলাইনে "যেকোন ধরনের" অর্থনৈতিক লাভবান হবার উদ্দেশ্যে ব্যবহারকে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। আমি যেখানে বিনামূল্যেই পুরোটা দিচ্ছি,সেখানে এরকম চেষ্টা অত্যন্ত নিন্দনীয় কর্ম হবে। সেই সাথে এই ডকুমেন্ট কন্টেন্টকে কোনভাবে বিকৃত/পরিবর্তন করে প্রচারকেও কঠোরভাবে নিষেধ করি। আমি জানিনা একে ভবিষ্যতে কখনো হার্ডকপি বই আকারে প্রকাশ করব কিনা। করলেও এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক স্বার্থকে উপেক্ষা করা হবে,বিইযনিল্লাহ। আমি জ্ঞানগত বিষয় নিয়ে ব্যবসা করা বা কমার্শিয়াল উদ্দেশ্য সাধনকে ঘৃণা করি। এটা আমার ব্যক্তিগত চিন্তাধারা। 


এই পিডিএফটির[2nd edition] পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮৬৩। সাইজঃ ৪০ এম্বি। এর ফর্ম্যাটিং এমন রাখা হয়েছে যাতে করে ৩.৫ ইঞ্চির ডিসপ্লের স্মার্টফোনেও সহজে পড়া যায়। আল্লাহ আযযা ওয়াযালের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি যাবতীয় ভুলের জন্য। এ ডকুমেন্টটি যেহেতু রিভিউ ছাড়াই প্রকাশ করেছি এতে টাইপিং এ অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুলভ্রান্তি থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আল্লাহ চাইলে সেসব পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করা হবে। বিইযনিল্লাহ। প্রথমবারে আপলোড করা আগের ফাইলটিতে কিছু ইস্যু ছিল,এজন্য আগের ফাইলটি মুছে আপডেটেড ফাইল ডাউনলোড করে রাখার অনুরোধ করি। 


ডাউনলোড লিংকঃ

https://u.pcloud.link/publink/show?code=XZX0BRXZ6hG2jFtNfx4vL6AGGJuQuJ6SyvXy




যদি না হয় তাহলেঃ

https://www.dropbox.com/s/qndktkq4qpc4kkb/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF%20%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%202nd%20edition.pdf?dl=0




যদি না হয় তাহলেঃ

https://archive.org/details/20201113_20201113_0927

অথবা 

https://archive.org/download/20201113_20201113_0927/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF%20%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%202nd%20edition.pdf




যদি ডাউনলোড না হয় তাহলেঃ

https://www72.zippyshare.com/v/EIKT6ctP/file.html




যদি ডাউনলোড না হয় তাহলেঃ

https://drive.google.com/file/d/1-ghlR2B0BY7tdJPRyk3qLnMbix74RUau/view?usp=drivesdk



আশা করি ডাউনলোড হয়ে গেছে। এরপরেও যদি ব্যর্থ হন আমাদের ফেসবুক গ্রুপের ফাইলের মধ্যেও এটাকে পাবেন ইনশাআল্লাহ। অথবা এডমিনগন সাহায্য করবেন। আমার জন্য দু'আর দরখাস্ত রইলো। আল্লাহ হাফেজ। আসসালামু আলাইকুম। 

Sunday, November 8, 2020

বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান [Alpha & Omega]


আলহামদুলিল্লাহ। শেষ হলো "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?" আর্টিকেল সিরিজ। ২০১৭ সালের শুরু করা এই আর্টিকেলটা দুনিয়ামুখী ব্যস্ততার জন্য মনে হচ্ছিল শেষ করতে আরো এক বছর লাগবে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ২০২০'এ-ই শেষ হলো।  এর ২য় ও শেষ পর্বে পুরাতন লেখাগুলোকে সংযোগ ঘটানো হয়েছে, তাছাড়া অনেক কিছু যোগ করা হয়েছে। ২য় পর্বটিতে "সবকিছুর শুরু" নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা যোগ করা আছে।

২য় পর্বের লিংকঃ https://aadiaat.blogspot.com/2018/04/blog-post_42.html?m=1

২৩তম পর্বঃ https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_25.html 


অনলাইনের আর্টিকেল গুলো বিভিন্ন কারনে  অসংশোধিত অবস্থায় প্রকাশ করা হয়েছে তাই তুলনামূলক সংশোধিত কপির জন্য অপেক্ষা করতে হবে পিডিএফ এর জন্য। আমার জন্য দু'আ করবেন। আসসালামু আলাইকুম। 

Saturday, November 7, 2020

২৩.বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?

শয়তানের প্রতিশ্রুতি কি সত্য?


 


 


   ২য় পর্বে শয়তানের চার প্রতিশ্রতি নিয়ে লিখেছিলাম। সর্বপ্রথম পিতা আদম(আ) ও মা হাওয়া(আ) কে শয়তান নিষিদ্ধ বৃক্ষের ব্যপারে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। সে আদমকে(আ) বলে,আমি কি তোমাকে বলে দিব (Tree of life)চিরঞ্জীব হবার বৃক্ষের (شَجَرَةِ الْخُلْدِ) কথা(?)। সে তাদের প্ররোচিত করে এই বলে যে, তারা যদি এই সাজারাতুল খুলদের(Tree of life) ফল গ্রহন করে তাহলে তারা চিরঞ্জীব(immortal) হয়ে যাবে, Angelic being এ ascend করবে এবং এক চিরস্থায়ী স্বর্গরাজ্য(utopia) লাভ করবে যেখান থেকে কখনো বের হতে হবে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
 فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى 
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা? 
[আত ত্বোয়া হা ১২০]
 فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَاتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَـذِهِ الشَّجَرَةِ إِلاَّ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ 
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী 
[আরাফ: ২০] 

এর পরবর্তী ঘটনা জানেন। আদম-হাওয়াকে(আ) জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। শয়তান ওই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সে আদম সন্তানদেরকে পথভ্রষ্ট করার পিছনে লেগে আছে। সে গোটা সৃষ্টিতত্ত্ব, মেটাফিজিক্স (Origins of existence) এমনভাবে সাজিয়েছে যাতে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ধারনাকেই একদম বাদ দেওয়া যায়। যাতে আদম-হাওয়া(আ) এর ঘটনাকে রূপক পৌরাণিক কল্পকথায় স্থান দেওয়া যায়। ইবলিস ও তার সহযোগীদের বানানো এই বিকল্প তত্ত্ব ও বিদ্যাকে প্রাচীনকাল থেকেই একদল লোক অনুসরন করত। এদের মধ্যে যারা মূর্খ তারা সরাসরি পৌত্তলিকতাকে(idolatry) বেছে নেয়। আর বিদ্বান বা ধূর্তরা সরাসরি প্রকৃতিপূজা, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং যাদুবিদ্যাকে দ্বীন রূপে গ্রহন করে। এরা তারা,যারা সব সময় নবী-রাসূলগনের(আঃ) দাওয়াত অস্বীকার করত। ইবলিস জান্নাতুল আদনের সেই পুরোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে দুনিয়াতে এ সকল নিকৃষ্ট কাফিরদের মধ্যে মেটাফোরিক্যালি চালিত রেখেছে[৯]। Tree of life এর সেই সুস্পষ্ট ধোঁকার জাল সে যাদুবিদ্যার মধ্যে বিছিয়ে দিয়েছে। প্রাচীন ব্যবিলনের[নেবুচাদনেজারের শাসনামলে বন্দী] ইহুদীদের কাছে শয়তান সাজারাতুল খুলদের প্রতিশ্রুতিকে যাদুবিদ্যার ভেতর রূপকভাবে ঢুকিয়ে প্রকাশ করে। আজকে ইহুদীরা একে কাব্বালাহ নাম দিয়েছে।আপনারা জানেন, কাব্বালিস্টিক অকাল্ট ট্রেডিশনে Tree of life(شَجَرَةِ الْخُلْدِ) একদমই প্রাথমিক ও মৌলিক বিদ্যা। 

Tree of life এ বিভিন্ন প্লেইন অব এক্সিস্টেন্স কুফরি শিক্ষা রয়েছে। এ কুফরি জ্ঞান লাভ করার মাধ্যমে কাব্বালিস্টরা শয়তানের প্রতিশ্রুত immortality(অনন্ত জীবন) এর বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে পারে। তাদেরকে শেখানো হয় মানুষের আত্মার মৃত্যু নেই। এটা বার বার রিইনকারনেট(পুনঃজন্ম) লাভ করতে থাকে।কাব্বালার ট্রি অব লাইফ শেখায় কিভাবে এই মৃত্যুহীন আত্মাকে বিকশিত(evolve) করতে করতে রক্তমাংসের শরীরসহ এঞ্জেলিক লাইট বিং এ রূপান্তর করে Rebirth বিহীন স্থির Eternal life পেতে পারে চিরস্থায়ী হায়ার ডাইমেনশনের স্বর্গরাজ্যে। হায়ার ডাইমেনশনাল সেই স্বর্গরাজ্যে প্রত্যেকেই হবে অমর আর উজ্জ্বল আলোকময় শরীরের এনলাইটেন্ড বিং। সে এক অবিনশ্বর জীবন ও রাজত্বের প্রতিশ্রুতি। সেখানে কাব্বালিস্টরা নাকি সৃষ্টিকর্তার সাথে তাদের অস্তিত্বগত পার্থক্যহীনতা অনুভব করবে[১০]! এ কাব্বালিস্টিক এ্যাপ্রোচ পূর্বে বাহ্যিক পৃথিবীতে আলকেমিক্যাল প্র‍্যাক্টিসের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কথিত অপবিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও অমরত্বের সন্ধানে জীবনটাকে আলকেমিক্যাল-কাব্বালিস্টিক স্ক্রিপচারগুলো ঘাটাঘাটি করে জীবন পার করেন। এমন কি তার মৃত্যুর পরে মৃতদেহে মাত্রাতিরিক্ত সীসা পাওয়া যায়, যা ছিল অমরত্বের সন্ধানে নিজের উপর করা আলকেমিক্যাল পরীক্ষার ফল। পদার্থবিদ মিচিও কাকুও নিউটনের কাব্বালার মধ্যে ডুবে থাকার বিষয়টির স্বীকৃতি দেন। যাদুবিদ্যার অস্তিত্ব ব্যবিলনিয়ান সভ্যতা পূর্বে থাকলেও, নমরুদের যুগ থেকে ব্যবিলন থেকে এর রিভাইভ্যাল ঘটে। সেখান থেকে যাদুবিদ্যা পৃথিবীর চার দিকে ছড়িয়ে শুরু করে।সে অঞ্চল হয়ে যায় - ল্যান্ড অব ম্যাজাই। যাদুকর পিথাগোরাস এখান থেকেই যাবতীয় বিদ্যা নিয়ে গ্রিসে ফিরে নিজস্ব মিস্ট্রিস্কুল খোলেন। এরপরে প্লেটো তার শয়তানি বিদ্যাগুলোকে গভীরভাবে গ্রহন করে এবং আরো এক্সপাউন্ড করে প্রচার শুরু করেন। প্লেটোনিক অকাল্ট ফিলসফি, জুডিও ব্যবিলনিয়ান মিস্টিসিজমের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত[৮]। প্লেটো সরাসরি ইহুদীদের থেকে কাব্বালিস্টিক শাস্ত্র নিয়ে সেগুলোকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। এজন্য তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা ইহুদী কাব্বালিস্টরাও সম্মানের সাথে স্মরন করে। তার নামে (কাব্বালিস্টিক) অকাল্টিজম যেভাবে সারা পৃথিবীতে সমাদৃত এরূপ ২য় দার্শনিক পাওয়া যায় না। তার মেটাফিজিক্সই আজকের ফিজিক্সের ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরির অনিবার্য ভবিষ্যৎ। আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন যে আজকের জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীগন বলছেন আজকের ফিজিক্স ও এস্ট্রনমি কাব্বালাহ এরই প্রতিফলন। এসব বিষয় বিগত পর্বগুলোয় বিস্তারিত আলোচনা পাবেন[১]। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এইসকল এডভান্স অকাল্ট ন্যাচারাল ফিলসফির[অপবিজ্ঞান] উদ্দেশ্য কি? সহজ উত্তর হচ্ছে শয়তানের সেই প্রতিশ্রুতিকে পূরন যেখানে সে Tree of life বা সাজারাতুল খুলদের দ্বারা এক অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।

 প্রায় ২৪০০ বছর আগে প্লেটো কাব্বালিস্টিক শাস্ত্র পাঠ করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থার(রিপাব্লিক) কথা উল্লেখ করেন। যে কিতাবে এ বিষয়ে বর্ননা করেন সেখানে সবার আগে কুফরি মেটাফিজিক্স(থিওরি অব ফর্ম),পুনর্জন্মবাদ ও আত্মার অমরত্বের(immortality of soul) ব্যপারে উল্লেখ করেন।তার বর্নিত পলিটিকাল থিওরিটি অনেকটা কম্যুনিজম ভিত্তিক টোটালেটেরিয়ান ওয়ানওয়ার্ল্ড ইউটোপিয়া। শাসক হবে চুজেন পিপলস যাদেরকে গার্ডিয়ান বলা হয়(ইহুদীরা?)। সেখানে একজন ফিলসফার রাজা[ইহুদীদের মসীহ?] থাকবেন। অঞ্চলগুলোকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করা হবে, সেখানে ধর্ম,বিয়েশাদি,পরিবার কোন কিছুই থাকবেনা। বংশবিস্তার পদ্ধতি স্টেট কর্তৃক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নির্ধারনকৃত নির্দিষ্ট সময়ে শারীরিকভাবে সুস্থ ও বলিষ্ঠ নারী পুরুষদেরকে ইচ্ছেমত ফিজিক্যাল ইন্টিমেসির সুযোগ দেওয়া হবে। আর সন্তনদের কোন পিতৃপরিচয় থাকবে না। শারীরিক ত্রুটিপূর্ণ সন্তানদেরকে হত্যা করা হবে। সকল মানুষকে পেশা অনুযায়ী কতগুলো শ্রেনীতে ভাগে বিভক্ত করা হবে। পেশাগত স্বাধীনতা থাকবে না। হিসেবে সাধারন মানুষগুলো অনেকটা ভেড়ার পালের মত দেখা হবে। তার এ বইয়ে চারটি অকেজো শাসন ব্যবস্থার নাম উল্লেখ করেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে গনতন্ত্র।[১১] গত দু হাজার বছর ধরে প্লেটোর এই পলিটিক্যাল থিওরি পাঠ করে যুগে যুগে বহু দার্শনিক, সমালোচক, সাহিত্যিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রোমাঞ্চিত হয়েছেন। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের Earth summit এ ৪০ টি চ্যাপ্টারে বিভক্ত ৩৫০ টি পেইজের হলুদ রঙের একটা বই উপস্থাপন করে Agenda 21[২] নামে। এটা ইউএন এর Sustainable development এর এ্যাকশন প্ল্যান! এতে বর্ননা আছে কিভাবে পৃথিবীকে দারিদ্র্য, ক্ষুধা, জনসংখ্যা সমস্যা,বৃক্ষনিধন নিরসন এবং উন্নত প্রযুক্তি, ক্লিন ও চিপ এনার্জি(পরিবেশবান্ধব পাওয়ার-ইলেক্ট্রিসিটি),শিক্ষা,নারী পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে একটা সাজানো গোছানো বিশ্বব্যবস্থা নির্মাণ(শুনতে খুব ভাল মনে হচ্ছে, তাই না?) করা যায়। ইউএন[United Nation] ইহুদীদের কথিত মসীহের নেতৃত্বে ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট সৃষ্টির জন্য শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের এই সাস্টেইনেবিলিটির স্বরূপ বোঝা যায় ইউএন এর পরিবেশ সংক্রান্ত পরবর্তী অফিশিয়াল ডকুমেন্ট গুলোয়। এগুলোয় টোটালেটেরিয়ান টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়ার মহাপরিকল্পনা বিস্তারিত আছে। এরা সাস্টেইনেবল গৌলে পৌছতে জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে ফেলার পরিকল্পনাও করেছে। বেশ কিছু অদ্ভুতুড়ে শর্ট প্রোপাগান্ডা ভিডিও নির্মান করেছে[৩]। এজন্য ভ্যাকসিন,ইউজেনিক্স, জিএমও ফুডের কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তো ভ্যাকসিনকে স্বাস্থ্যরক্ষার বিশাল উপাদান বলে দেখি। আর জিএমও ফুডকে এখন পুষ্টি চাল নামে বাংলাদেশেই চলে এসেছে। অনেক পুষ্টি ওতে!!

হলিউডের ডিস্টোপিয়ান ফিল্ম Allegiant ভ্যাকসিনেশনের উদ্দেশ্যকে সুন্দরভাবে দেখিয়েছে। ওরা দরিদ্র একটা অঞ্চল থেকে বাচ্চাদেরকে কিডন্যাপ করত। স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলত। কিন্তু পরবর্তীতে আসল উদ্দেশ্য দেখায়, ভ্যাকসিন দিলে শিশুটা তার অতীতের স্মৃতি ভুলে যায়, ফলে তাকে জন্তুজানোয়ারের মত নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ওদের চিন্তাধারায় বড় করা যায়। UN এর প্রকাশিত আরেকটি বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে বিশ্ব ব্যবস্থার ধরন। তাতে বলা হয়, পৃথিবীর অধিকাংশ স্থলভাগই কোর উইল্ডারনেস এরিয়ায় পরিনত করা হবে। উত্তর আমেরিকার ৫০% অঞ্চলজুড়েই কৃত্রিম বনভূমি সৃষ্টি করা হবে। এভাবে পৃথিবীর সকল স্থলভাগ গুলোর অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে কৃত্রিম উপবন তৈরি করা হবে যেগুলো একটি অন্যটির সাথে কোরিডোর দ্বারা সংযুক্ত থাকবে। আর এর চারদিকে buffer Zone থাকবে, যেখানে বাচিয়ে রাখা অবশিষ্ট নির্বাচিত মানুষের নিয়ন্ত্রিত বসতির ব্যবস্থা করা হবে। বিস্তারিত দেখুনঃ https://m.youtube.com/watch?v=0d5H6-M1kx

২০১৫ সালে ১৭ টি লক্ষ্য তৈরি করে ইউএন 'এজেন্ডা ৩০'[২০] নামে আরেকটি প্রজেক্ট হাতে নেয়। এদের নিয়ন্ত্রনে বিশ্বের সকল দেশগুলোয় স্টেট ও ননস্টেট(এনজিও) অর্গানাইজেশন গুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে ভিশন ২১ এর নাম শুনেছেন(?)। প্রায় এক যুগ আগে এজেন্ডা ২১ ; দেশের গুটিকয়েক উচ্চপদস্থ প্রথম শ্রেনীর সরকারী আমলাদের নিয়ে তাদের লক্ষ্যে কাজ করানোর জন্য সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় প্রশিক্ষণ দিতো,সভা সেমিনার আয়োজন করত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই কর্মকর্তাদের একজন হলেন আমার পিতা। আমাদের দেশের যাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাদের আসল পরিচয়ও জানেনা। অজ্ঞতার কারনে তারা শুধুই ধর্মনিরপেক্ষতার দৃষ্টিতে বাহ্যত শুনতে কল্যাণমূলক কথা ও নির্দেশগুলোকে গভীর চিন্তা ছাড়াই গ্রহন করে। 


১৭ জুলাই ২০১৬ সালে জ্যাক ফ্রেস্কো নামের এক বৃদ্ধ জাতিসংঘ থেকে বিশেষ এওয়ার্ড লাভ করেন "ভেনাস প্রজেক্ট" নামের ইউটোপিয়ান ফিউচারিস্টিক এ্যাবান্ডেন্ট বিশ্বব্যবস্থার ডিজাইন করার জন্য।তাকে ইউনাইটেড ন্যাশনের জেনারেল এসেম্বলি হল থেকেই সম্মাননা দেওয়া হয়।সম্মেলনের নাম ছিল 'নোভাস'। শব্দটাকে ওরা ডলার বিলের উপরেও রাখে[নোভাস অর্ডো সেকলোরাম],সেটার অর্থও ইউটোপিয়ান স্বপ্ন কেন্দ্রিক। মূলত, গোটা বিশ্বকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দ্বারা সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এ ট্রান্সফর্মেশনের পথ দেখানোর জন্য ফ্রেস্কোকে এওয়ার্ড দেওয়া হয়[৪]। জোসেফের এ ইউটোপিয়ান প্রকল্পটিকে Arthur C. clerk সাহেবও প্রশংসা করেন। 


ভেনাস প্রজেক্টই হচ্ছে সেই আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নরাজ্যের ব্লু্প্রিন্ট। ফ্রেস্কো জীবনের প্রথম দিকে কম্যুনিস্ট ছিলেন। তার এ চিন্তাধারা আসে সেই জুডিও-ব্যবিলনিয়ান অপবিদ্যার ধারক প্লেটো। তার Beyond Utopia বইতে তিনি প্লেটোর রিপাবলিকের প্রশংসা করেন,এছাড়া কার্ল মার্ক্স,এইচ জি ওয়েলস, এমনকি ফ্রিম্যাসনারিরও প্রশংসা করতে দেখা যায়। তার এ প্রজেক্টটি জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর প্ল্যানকে আরো স্পষ্টভাবে তুলে ধরে[৫]। তার সিটি ডিজাইনগুলো দেখলে হলিউডের তৈরি দ্যা গিভার, হাঙ্গার গেমস, ঈয়ন ফ্লাক্স, ইকুইলিব্রিয়াম,টুমোরোল্যান্ড, ডাইভারজেন্ট, ইনসারজেন্ট ইত্যাদি অসংখ্য টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়ান ফিল্ম গুলোকে মনে পড়ে যাবে। নিচের ভেনাস প্রজেক্টের শহরের ডিজাইনের ছবিতে ইজরাইলের পতাকার কথিত স্টার অব ডেভিডের প্রতিকটা বেশ স্পষ্ট!
 


 



আপনার কখনো মনে হয়, কেন হলিউড এই ধরনের ইউটোপিয়ান/ডিস্টোপিয়ান থিম দিয়ে ফিল্ম তৈরি করে(?)। এটা শুধুই আপনার কাছে ইবলিস অরিজিনেটেড অবিনশ্বর রাজ্যের কন্সেপ্টটিকে সহজ(নর্মালাইজ) করার জন্য। Aeon flux ফিল্মের অফিসিয়াল পোস্টারে Eye of providence এর ছবিটা অসাধারণ।


নিচে Allegiant film এ দেখানো ফিউচারিস্টিক ইউটোপিয়ার স্ক্রিনশট দেওয়া হলোঃ


Tomorrowland:

Aeon Flux:

The Giver[2014]


Equilibrium

 Cloud Atlas:
 


 
জ্যাক ফ্রেস্কোর সাথে ফ্রিম্যাসনিক নেটওয়ার্ক এর সম্পর্ক নিয়ে Ernst Fischer বলেনঃ "the Venus Project's "solution is Communism re-packaged to rope in the 21st century truth seeker." Here is a detailed comparison of the Zeitgeist philosophy and Communism.Fischer Continues: "Fresco spoke at the 10th anniversary of the UN's Earth charter last year and subsequently attended Mikael Gorbachevs congress, which you will find on thevenusproject.com hidden away in the Netherlands section. Hell even if for some reason you think rubbing shoulders with those mid level elites is okay, what about frescos co-speaker Ervin Laszlo, (who he "spent time with") who FOUNDED the Club of Budapest, with Aurelio Peccei, founder of the CLUB OF ROME, full of lovely Illuminati globalists, who want a one world order, unified, worshiping the earth, under a new age religion. What about him being invited to dinner in the Dutch queen's palace? As in Queen Beatrix.... of Bilderberg. Fresco, former member of the Communist party, wrote a book with Ken Keyes a while back. You don't just write a book with someone you barely know, so I might go so far as to say his good friend and colleague Keyes wrote a charming book called Planethood, go look it up. The book speaks not only of how the UN will fix the planet, but how they will install a One World Government "for the earth" Um, no thanks, what about the people? Or does Skynet just see us as more resources in the resource management program?"



এরপরে ২০০৭ সালে পিটার জোসেফ(ছদ্মনাম) নামের এক লোক হঠাৎ ইউটিউবে Zeitgeist addendum নামের ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রকাশ করে। এতে সকল কন্সপাইরেসি থিওরিস্টদের আকর্ষন করবার মত করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ধর্মগুলোর ব্যপারে কম্যুনিস্টদের ধারনা প্রচার করতে গিয়ে বলে ঈসা(আ) বলে কেউ ছিলই না! সবই মানুষের মনগড়া মিথ! এরাও আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা দেখাতে গিয়ে টেকনোলোজি বেজড আর্থ প্যারাডাইসের(টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়া) রূপরেখা উপস্থাপন করে। নানান যুক্তি দিয়ে ওদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তাকে ম্যাগ্নিফাই করা হয়। ফিল্মটা ব্যাপক সাড়া ফেলে। সেটা লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখে। সমর্থকদের নিয়ে পিটার জোসেফ zeitgeist movement নামের অর্গানাইজেশন তৈরি করে। এরপরে ২০১১ সাল পর্যন্ত মুভিং ফরওয়ার্ডসহ আরো একাধিক ফিল্ম তৈরি করে[১৩]। zeitgeist নামের অর্থটাও শয়তানী। জার্মান zeit= সময়, geist= ভূত/জ্বীন/শয়তান অর্থাৎ শয়তানের যুগ, সুন্দরভাবে বললে এজ অব স্পিরিট এন্টিটি। পিটার জোসেফ বলেন, “Zeitgeist is the activist arm of the Venus Project"। তার প্রব্লেম রিয়্যাকশন সল্যুশন দেওয়া ফিল্মে জ্যাক ফ্রেস্কোকেও সল্যুশন এর স্থানে নিয়ে আসেন। অর্থাৎ zeitgeist এর পিছনে ভেনাস প্রজেক্ট, আর ভেনাস প্রজেক্টের পিছনে ইউএন, ইউএন এর পিছনে ক্ষমতার হায়ারার্কির শীর্ষে আছেন ইয়াহুদা মসীহ আদ্ দাজ্জাল যিনি আসছেন শয়তানের অবিনশ্বর স্বর্গ বা জান্নাতের প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবায়নের আশা নিয়ে । ভেনাস প্রজেক্ট আর zeitgeist মুভমেন্টই শেষ নয়। মিকাইল টেলিঙ্গারের উবুন্টু প্লানেট[১৪] এবং পরবর্তীতে আসা ফস্টার গ্যাম্বেলের থ্রাইভ মুভমেন্টটাও এই অভিন্ন লক্ষ্যের প্রচারক। থ্রাইভ তো পুরোপুরি অকাল্ট সায়েন্সের প্রচারক। সকল নিউএজ মিস্টিকদের প্রমোট করে। তাদের ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রায় 1 বিলিয়ন মানুষ দেখেছে। এই সংগঠন কাজ করছে কাব্বালাহ এর উপর গড়া নাসিম হারামাইনের ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরি নিয়ে, যে অকাল্ট বিদ্যা দ্বারা পৃথিবীকে আলোকিত(অন্ধকার) করার স্বপ্ন দেখে। এর ফেসবুক পেজের প্রোফাইল ছবিটার ডান চক্ষু ঢাকা[১৫]।অর্থাৎ এরা একচোখওয়ালা আপকামিং তাগুতেরই প্রতিনিধি। এরা সকলেই টেকনোলোজি বেজড স্বর্গরাজ্য বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে। সেখানে মুদ্রা ব্যবস্থাকে রহিত করা হবে। তৈরি হবে রিসোর্স বেজড ইকোনমি। সবকিছুই হবে এডভান্স এআই ভিত্তিক। আর ট্র‍্যান্সহিউম্যানিস্টিক প্রচেষ্টার দ্বারা অর্জন করা হবে বহু আকাঙ্ক্ষিত ইম্মর্টালিটি। অর্থাৎ শয়তানের শাস্ত্রের[যাদুবিদ্যা কাব্বালাহ] ট্রি অব লাইফের দ্বারা অবিনশ্বর রাজত্ব এবং অমরত্ব উভয় প্রতিশ্রুতিই কাফিররা অর্জনের আশা করে। নিউটন বিফল হলেও এরা আজ বেশ আত্মবিশ্বাসী। আজকে ট্রানসহিউম্যানিস্টিক এজেন্ডা খুবই সক্রিয়। হিউমেই, হিউম্যান ২.০ সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সহিউম্যানিজমের সপক্ষে কাজ করছে। সেদিন দেখলাম স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মিডিয়া প্লাটিপাস ইন্সটিটিউটের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার Amy Kruse এর হিউম্যান ২.০ এর ব্যপারে বলা প্রেজেন্টেশন প্রচার করছে। তিনি বলছেন তারা এমন ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে যেটা বর্তমান হিউম্যান ১.০ ভার্সন থেকে ২.০ তে ট্রান্সফর্ম করবে[২৩]। তাদের ভ্যাকসিন বায়োলজিক্যাল মিউটেশন ঘটাবে। শুনতে অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত লাগছে, তাই না [?]। হলিউডও থেমে নেই। Beyond ফিল্মটিতে হিউম্যান ২.০ কে স্পেসে পাঠাতে সক্ষম হয়েছে দেখিয়েছিল। ট্রান্সহিউম্যান[১২] হচ্ছে মানব শরীরের সাথে রোবটিক্স এর ইন্টিগ্রেশন,মানব ব্রেইনকে পুরোপুরি রোবটিক শরীরে প্রতিস্থাপন এমনকি Mind uploading এর দ্বারা মনকে ডিজিটাল ডিভাইসে আপলোড করা। ট্রান্সেন্ডেন্স ফিল্মে দেখেন নি[?], জনি ডিপ তার চেতনাকে কম্পিউটারে আপলোড করে কত কিছু করে! এখন পর্যন্ত বাস্তবজীবনে এ কাজে আংশিক সফল এবং অধিকাংশ চিন্তাই শুধুই সায়েন্স ফিকশন[পূর্ন সফলতা কখনোই আসবেনা,বিইযনিল্লাহ]। এরপরেও ট্রান্সহিউম্যনিস্ট অপবিজ্ঞানীরা খুব কনফিডেন্সের সাথেই অমরত্ব অর্জনের সম্ভাবনার কথা বলছেন। সেটা আবার বিবিসি প্রচার করছে। অথচ সামান্য কয়েক বছর আগে এসব শুধু কন্সপাইরেসি থিওরির আওতায় ছিল! দেখুনঃ https://m.youtube.com/watch?v=STsTUEOqP-g দেখলেন[?], সায়েন্টিস্টদের কাছে এজিং এবং ডেথ হচ্ছে একপ্রকার রোগ! এটার কিওর খুব শীঘ্রই পাবার আশা করেন।

2006 সালের The Fountain নামের পুনর্জন্মবাদ কেন্দ্রিক শয়তানি ফিল্মটিতে নায়ক হিউ জ্যাকম্যান একই কথা বলেঃ"মৃত্যু হলো একটি রোগ, অন্য সব রোগের ন্যায়,এবং এর একটি ওষুধ, আমি সেই পথ্য খুঁজে বের করব"[২৪]। ফিল্মটি শুরু হয় জেনেসিসের ৩:২৪ নম্বর ভার্স দেখিয়ে। মাথায় শিং ওয়ালা(symbolized Satan) এক লোককে দেখা যায় ধ্যানরত হিউ জ্যাকম্যানকে সিজদা করে। এরপরে আসমানে অর্গানিক স্পেস শীপে রওনা দেয় সাজারাতুল খুলদের সন্ধানে[৬]। 
দ্য ফাউন্টেন মূলত কাব্বালিস্টিক তাৎপর্যে ভরা gnostic ফিল্ম। উইকিপিডিয়াতে আছে, In The Fountain, the Tree of Life was a central design and part of the film's three periods. The tree was based on Kabbalah's Sefirot, which depicts a "map" of creation to understand the nature of God [উইকিপিডিয়া] ট্র‍্যান্সহিউম্যানিজম,সাইবর্গ এজেন্ডাকে বাহ্যিকভাবে সলিড ইনোসেন্ট সায়েন্স ও টেকনোলোজির কারসাজি মনে হলেও এগুলো সেই স্যাটানিক নস্টিক ডিরাইভড কন্সেপ্ট। আগের রাসায়নিক আলকেমিক্যাল প্রসেস ছেড়ে এই পদ্ধতিতে হাত বদল হয়েছে মাত্র। অনেক সেকুলার সমালোচক এটাকে নিও নস্টিসিজম(কাব্বালিস্টিক প্র‍্যাক্টিস) হিসেবে অভিহিত করেন[21]। এটা উইকিপিডিয়াতেও আছে:
Transhumanism and its presumed intellectual progenitors have also been described as neo-gnostic by non-Christian and secular commentators.[78][79] 
(উইকিপিডিয়া) 

এক ইহুদী কাব্বালিস্টকে দেখলাম মৃত্যুকে ট্রান্সেন্ড করে অমরত্বের শিক্ষা দিচ্ছে কাব্বালার রেফারেন্সে। শেষ দিকে অমরত্বের বাহ্যত প্রায়োগিক দিক বোঝাতে সে বলল, "আজকের সায়েন্স এই প্রিন্সিপ্যাল গুলো ধরেই আগাচ্ছে। আজ থেকে আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিজ্ঞানীরা মৃত্যু এবং রোগকে অতিক্রম করতে পারবে। এ নিয়ে সামনের (কাব্বালিস্টিক এ্যানালোজির)পর্বে আরো গভীর আলোচনা হবে" [৭]। আপনার কি মনে হয়, Advance AI(artificial intelligence) এর গবেষণাগুলোতে ওদের কোন হাত নেই? AI কে স্বাধীন চেতনা দেওয়ার জন্য আজকে Science & NonDuality নাম দিয়েই বাতেনি শয়তানি বিদ্যাকে মেকানিক্যাল টেকনোলোজিতে রূপায়নের কাজ প্রকাশ্যেই চলছে। কর্মরত সায়েন্টিস্টগন সরাসরি নিজেদের মিস্টিক বলে পরিচয় দেন[২২]।

 
এটা বস্তুত প্রত্যাশিত, কারন আধুনিক মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের থিওরেটিকাল নলেজের সিংহভাগই কাব্বালাহর প্রতিফলন। আমার কথা নয়, বিজ্ঞানীদেরই কথা। আর ইহুদীরা বলেন এই কাব্বালাহ অর্জন হয়েছে বাবেল শহর থেকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা ইহুদী যাদুবিদ্যার উৎস সমূহকেও স্পষ্ট করে দিয়েছেনঃ"তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। … তারা মানুষকে যাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।…"
[সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১০২]

দুনিয়ায় সেই সুস্পষ্ট শয়তানি বিদ্যাকে জেনেবুঝে একমাত্র কাফির যাদুকর এবং তাদের দর্শনে(ওয়ার্ল্ডভিউ) বিশ্বাসী ছাড়া আর কেউই গ্রহন করে না। সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত। আপনার কি মনে হয়, জ্যাক ফ্রেস্কো, মিকাঈল টেলিঙ্গার, পিটার জোসেফেরা নিজেরাই হঠাৎ করে এসকল আইডিয়া প্রজেক্ট করছে আর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাচ্ছে, এমনিতেই বড় বড় মুভমেন্ট তৈরি হয়ে যাচ্ছে?! একদমই না, এদের পিছনেও গ্লোবাল গভার্মেন্ট[ইউএন], এজেন্ডা২১,৩০ রয়েছে। ওরাই এদেরকে ব্যবহার করছে মিডিয়া হিসেবে এবং বিষয় গুলোকে জনসাধারণের মধ্যে গ্রহণযোগ্য করবার জন্য। এই লোকগুলো প্রত্যেকেই টোটালেটেরিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্টের স্বপ্ন দেখে। যেখানে Religion কে উৎখাত করা হবে উবুন্টুর(ইউনাইটিং হিউম্যানিটি) জন্য। অন্য দিকে প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটিকে প্রোমোট করবে। ওদের পরিকল্পনা- এই স্বর্গরাজ্যের রাজা করা হবে কাব্বালিস্ট ইহুদীদের প্রতীক্ষিত মিথ্যা মসীহকে। ওদের স্বপ্ন, সেখানে কাব্বালিস্টিক ট্রি অব লাইফের বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে সর্সারিকে মেকানাইজেশনের(টেকনোলোজি) দ্বারা করে অনন্ত জীবন[ট্রান্সহিউম্যান] লাভ করবে। সেই ব্যবিলনিয়ান কবি গিলগেমিশের মহাকাব্যের নায়কের অনন্ত জীবনের খোজা থেকে ২০০৬ এর দ্যা ফাউন্টেন ফিল্মের নায়ক হিউ জ্যাকম্যানের "মৃত্যুরোগের কিওর অন্বেষণ"! এ সব চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে স্বয়ং ইবলিস। সে এখন এ অনুযায়ী কাজও করাচ্ছে অনুসারীদের দিয়ে। একদল লোকতো অমরত্বের আশায় নিজেদের শরীরকে সেচ্ছায় নাইট্রোজেন গ্যাসে ফ্রিজড অবস্থায় রাখছে[১৬]। ওরা আশা করে কোন একদিন তাদের মৃতদেহকে কেউ জাগিয়ে তুলতে পারবে। ইবলিস প্রদত্ত অপবিদ্যার(নস্টিসিজম/কাব্বালা) আনএ্যাপোলোজেটিক অনুসারীদেরকে[mystic/spiritualists] ইবলিস আজ আরো বড় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। যারাই (রূপকার্থে) কাব্বালিস্টিক ট্রি অব লাইফের ফল(অপবিদ্যা) খাবে, তাদেরকে খুব দ্রুত এঞ্জেলিক লাইট বিং[নূর দ্বারা তৈরি দেহে] এ ফিজিক্যালি ট্রান্সফর্ম হয়ে উচ্চতর ডাইমেনশনের রিয়ালিটিতে[4D/5D] শিফট করবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সে স্বর্গরাজ্যে তারা অনন্তকাল
থাকবে। এই একই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শয়তান আমাদের পিতামাতাকেও(আ) দিয়েছিল। আজকে বলা হচ্ছে সেই ইটারনাল লাইফ ও ইউটোপিয়ান কিংডমে শিফট হবার মাহেন্দ্রক্ষণ খুব নিকটে। খুব শীঘ্রই 5D এর নতুন পার্থিব স্বর্গে Ascend করার সময় আসছে। এজন্য স্বাম্ভালার রাজা আসছেন যার জন্য অনেকে হাতের রক্ত কাগজে ফেলে শপথও[blood over intent ritual] করছে অনেকে[১৭]। উনিই হয়ত অনুসারীদেরকে স্বর্গে প্রবেশ করাবেন। ওদের মতে আমরা আছি 3D তে। চতুর্থ মাত্রা হচ্ছে সময়। ওরা এরকমও বলে থাকে কাব্বালিস্টিক ও তান্ত্রিক বিদ্যার অনুসরনে আপনিও আত্নউন্নয়নের দ্বারা evolve হতে হতে উচ্চতর ডাইমেনশনে ফিজিক্যাল[light body] পরিবর্তনসহ ascend করতে পারবেন! আপনি ইউটিউব বা গুগলে 5D new earth ascension লিখে সার্চ দিলে হাজারো ডকুমেন্ট পাবেন। কাব্বালিস্টিক মিস্টিসিজমের অনুসারী প্যাগান স্পিরিচুয়ালিস্টরা এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে। ওদের অনেকে বলছে তাদের অনেকে নাকি ৫ডি তে স্বপ্নে ভ্রমন করেও এসেছে। অনেকে সাইকাডেলিক ড্রাগ নিয়ে, চেতনার ওপারে[২য় পর্বে বিস্তারিত] গিয়ে সেই (শয়তানের) জগৎ দিয়ে ঘুরে আসে। সাম্বালার রাজা কল্কি অবতার খুব নিকটে। ওনাকে Lord Melchizedek নামেও ডাকা হয়।উনি নাকি আসমান জমিন,আলোর জগতের প্রভু! দাঊদ আলাইহিসালাম এর বংশের বলে ওরা দাবি করে[১৮]। ইহুদীরাও Davidic king এরই প্রতীক্ষায়...।[১৯] তাগুত দাজ্জালের ব্যপারে আসা সে হাদিসের কথা কি মনে আছে(?), সে হাতে জান্নাত জাহান্নাম দেখিয়ে তাতে লোকেদের আহব্বান করবে? আমরা নিশ্চিত জানি না, এটাই কি দাজ্জালের দেখানো জান্নাত কিনা। কিন্তু সেটার সাথে অনেক সাদৃশ্যতা রয়েছে। তবে এতটুকুন নিশ্চিত যে এটা ইবলিসেরই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। ইবলিস আদম-হাওয়া(আ) দেরকে ট্রি অব লাইফের দিকে হাতছানি দিয়ে ডেকে সত্যিকারের জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছিল। আজ তাদের সন্তানদেরকেও একইভাবে ট্রি অব লাইফের দিকে ডেকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে ডাকছে।
কাফিরদের প্রতি ইবলিসের প্রতিশ্রুত স্বর্গলোকঃ

ইবলিসের দেওয়া আরেক প্রতিশ্রুতিঃ
Light Being এ transformation:

আমরা Tree of life এর দিকে শয়তানের (UN কর্তৃক) মেকানিক্যাল ও (অকাল্ট ফিলসফিক্যাল)স্পিরিচুয়াল আহব্বানের উভয় প্রচেষ্টা কে দেখতে পাচ্ছি। যে বৈদিক - কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে আজকের অপবিজ্ঞান নির্মিত হয়েছে সেটা মূলত শয়তানের প্রতিশ্রুতি পূরণের পথেরই পাথেয়। যাদুশাস্ত্র ভিত্তিক এসমস্ত ফিজিক্যাল/মেটাফিজিক্যাল ও কস্মোলজিক্যাল তত্ত্বগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে সেটা অনিবার্যভাবে আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করিয়ে বিকল্প সৃষ্টিতত্ত্বকে দেখিয়ে দেয়। আল্লাহর অস্তিত্বকে যৌক্তিকভাবে নিষ্প্রয়োজন করে, সৃষ্টিজগতকে আপনাআপনি অস্তিত্বে আসার কুফরি আকিদার শিক্ষা দেয়। কুফরের কিতাব কুফরের দিকেই চালিত করবে এটাই স্বাভাবিক। আধুনিক [অপ]বিজ্ঞান তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহর আকিদাকে ধ্বংস করার জন্য নির্মিত। এমতাবস্থায় একে গুরুত্ব না দিয়ে তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ কিংবা হাকিমিয়্যাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকার উদাহরণ অনেকটা এরকম যে তিনতলাবিশিষ্ট একটি জাহাজের নিচের তলায় ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকছে,অথচ সমস্ত লোকগুলো সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে দ্বিতীয় ও ৩য় তলায় যার যার কাজে ব্যস্ত আছে।তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহর আকিদাকে ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র উলুহিয়্যাহ নিয়ে পড়ে থাকলে কোন লাভ নেই, রব হিসেবে আল্লাহর অস্তিত্বের স্বীকৃতির তথা ঈমানের জরুরত সবকিছুর চেয়ে বেশি। সর্বাধিক মৌলিক। তাওহীদূর রুবুবিয়্যাত হচ্ছে রব হিসেবে আল্লাহর অস্তিত্বগত মৌলিক স্বীকৃতির বিশ্বাস। এটা ঈমানের একদম মৌলিক বিশ্বাস। এতে বিশ্বাস রাখা এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, এটায় অবিশ্বাস করে যত আমল করা হোক না কেন কোন লাভ নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তার পবিত্র কালামে মাজীদে আসমান জমিন সৃষ্টির ব্যপারে বার বার বর্ননা করেছেন, এগুলো আল্লাহর ওয়াহদানিয়াতের সাক্ষ্য দেয়। এগুলো আল্লাহর অস্তিত্ব এবং রুবুবিয়্যাতের সাক্ষী দেয়। এজন্য মক্কার মুশরিকদেরকে আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যপারে বলতে গিয়ে আসমান যমীনের স্রষ্টা কে প্রশ্ন করেছেন, প্রশ্ন করেছেন বৃষ্টিধারা নাযিলকারী কে প্রশ্ন করেছেন। আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে অনেক আয়াতে চাঁদ সূর্য নক্ষত্র আসমান ও যমীনকে তার নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন। এগুলো আপনারাও জানেন।

নমরুদের ধর্মযাজক দার্শনিক পুরোহিতদের থেকে আজ থেকে আনুমানিক চার থেকে পাচ হাজার বছর আগে বাবেল শহরে যাদুবিদ্যার একটি শাখা গড়ে ওঠে যাকে আমরা আজ জ্যোতিষশাস্ত্র বলে চিনি। এর উপর ভিত্তি করে যাদুকর এবং শয়তানের সহযোগীতায় গড়ে ওঠে Alternative Cosmogony যেটা এমন আসমান ও যমীন এবং সর্বোপরি সৃষ্টিতত্ত্বের ধারনা দেয় যা আল্লাহর অস্তিত্বের নূন্যতম স্বীকৃতি দেওয়ার বিপরীত দিকে চালিত করবার জন্য নির্মিত। এটা ব্যাখ্যা করে কিভাবে সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই এমনি এমনিতেই সৃষ্টিজগৎ বিবর্তিত বিবর্ধিত(cosmological evolution) হয়েছে। এটা শিক্ষা দেয় প্রতিটি অনুপরমানুই self-sufficient, প্রত্যেকেই নিজেই নিজের ইলাহ(ওয়াহদাতুল উজুদ/আল ইত্তেহাদ/monism)। শুধু জ্যোতিষশাস্ত্র না, এই অল্টারনেটিভ বিশ্বাসব্যবস্থাকে আরো বেশি পোলিশ করেছে হার্মেটিক,কাব্বালা,বৈদিকসহ বিভিন্ন অকাল্ট(যাদুবিদ্যার) ট্রেডিশান। দীর্ঘকাল লুকিয়ে রাখা এ বিদ্যা এবং বিশ্বাসগুলোকে শয়তানের সহযোগীতায় দাজ্জালের আগমনের পূর্বে আজ পূর্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাব্বালিস্ট ইহাহুদীরা তো গর্বের সাথে বলে এটা মসীহের আগমনের লক্ষণ, যেহেতু তাদের বাতেনি ইল্ম আজ আজ জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অন্যদিকে আল্লাহ কুরআনে আমাদেরকে জানিয়েই দিয়েছিলেন ইহুদীদের আবৃত্ত শাস্ত্রের যাদুবিদ্যাসংক্রান্ত অরিজিন্স(২:১০২)। তারাও অস্বীকার করে না, গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে বলে তাদের এই ইল্মের উৎস প্রাচীন ব্যাবিলনীয়া। আমরা ইজরাইলের সবচেয়ে বড় কাব্বালার ইন্সটিটিউট বেনেঈ বারুচের চেয়ারম্যানের মুখেই একথা শুনেছি। তিনি সেই সাথে তাদের এই বিদ্যাকে গর্বের সাথে সায়েন্স বলছিলেন।

*প্রথমত, এই কস্মোলজি[মহাকাশবিজ্ঞান]এবং কস্মোজেনেসিসের[সৃষ্টিতত্ত্ব] উৎস হচ্ছে অকাল্ট স্ক্রিপচার, খাটিবাংলায় উচ্চমার্গীয় যাদু শিক্ষার কিতাব। এগুলো প্রচলিত তাবিজ কবচ আর জ্বীন চালনার সোকল্ড যাদু না।
*দ্বিতীয়ত, একে প্রতিষ্ঠা করা হয় তাওহিদুর রুবুবিয়্যাতের কন্সেপ্টটির বিকল্প কিছুকে প্রতিষ্ঠার জন্য। সেটাকে কুফর করবার জন্য। সহজ ভাষায়, উদ্দেশ্য তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহকে ধ্বংস করার জন্য। 
 
আফসোসের বিষয় হচ্ছে উম্মাহ আজ এই ফিতনাতেই ভালভাবে গ্রহন করেছে। একে দ্বীনের সাথে সমন্বয় করেছে, যতভাবে করা যায়। আজ সতর্ক করা হলে মূর্খের মত বলছে এসব নিয়ে আলোচনা ফিতনাহ, অমুক আলিমও বিশ্বাস করত, এগুলো আকিদার বিষয় নয়, এগুলোয় ইয়াক্বিন করলে আল্লাহ আপনাকে কিছুই বলবে না। মা'আযাল্লাহ! 

যে বিষয় আকিদার 'আ'কেও মুছে দেয় সেটা আকিদা পরিপন্থী বিষয় নয়(!), সেগুলো গ্রহন করলে আল্লাহ কিছুই বলবে না, অমুক আলিম এই ভুল করেছে তাই আমার কর‍তে দোষ নেই, এগুলো মোটেও ম্যাটার অব কনসার্ন নয়! (আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে বিকৃত ধারনার অপরাধটি নাহয় বাদই দিলাম)যাদুবিদ্যা তো কুফর কিন্তু কুফর ভিত্তিক বিশ্বাসব্যবস্থাকে কুফর সাব্যস্ত করা যাবে নাহ!!?

এই যদি হয় বিশ্বাসের অবস্থা, তাহলে বানর থেকে মানুষ হবার গল্পকে গ্রহন করে নিতে কি দোষ ছিল? 
এই সাধারন উপলব্ধি বা বোধ যদি আমাদের না থাকে,  তাহলে আমরা কি ধরনের আল্লাহ আযযা ওয়াযালের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বকারী জাতি হলাম!? এরকম জাহালতের জন্য উম্মাহর দিনকেদিন অধঃপতন, এজন্যই আজ আমরা সুদ খেয়ে সেটাকে বৈধতা দিতে সুদ স্বীকৃতি দিতে চাই না। সুদকে নাম দেই "মুনাফা"! ইহুদীরা এই কাজ গুলো করে অভিশপ্ত। আমরা কেন ওদের অনুসরন করছি! এসব বলে লাভ নেই। আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বহু আগেই কিবলাধারী ইয়াহুদীদের কথা বলে গেছেন, পদে পদে ওদের অনুসরণের কথা বলেছেন। আজ সবক্ষেত্রে সেটা প্রতিভাত হচ্ছে।

আজকের দৃশ্যমান অধিকাংশ দ্বীনি ব্যক্তিত্ব, দাঈগনদের অবস্থা এরকমঃ
★সর্সারি, উইচক্র্যাফট হারাম.. কুফর, কিন্তু সর্সারির উপর তৈরি ওয়ার্ল্ডভিউ,Cosmogony এবং যাবতীয় ইল্ম ১০০% হালাল!
★তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ না মানলে কাফির কিন্তু তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত কে ধ্বংসকারী ইল্ম আহরণ এবং এর উপর ইয়াক্বীন করা ১০০% হালাল!!


একটা বিষয় অবশ্যই স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, আমরা বিগত পর্বে আলোচিত ফিজিক্সের অনেক বিষয়বস্তুকে যাদুসাব্যস্তকরনের অর্থ এই নয় যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যা বা জ্ঞানটি মিথ্যা, অস্তিত্বহীন কিংবা ভুল। আমি কখনোই এমনটা বলি না যে অনু পরমাণুর অস্তিত্ব নেই বা মিথ্যা। বরং মিথ্যা এই সমস্ত প্রমাণযোগ্য ফিজিক্যাল বিষয় আশ্রিত গায়েবী মেটাফিজিক্যাল ব্যাখ্যাসমূহ, অদেখা জগতের স্বরূপ প্রকৃতি নিয়ে বলা কথাসমূহ, সমগ্র অস্তিত্বের ধরন ও উৎস সংক্রান্ত আকিদা সমূহ। শয়তান মানুষকে সামান্য কিছু সত্যের সাথে অনেকগুলো মিথ্যা যোগ করে বিপথগামী করে। একই কাজ গনক-জ্যোতিষীদের সাথেও করে বলে হাদিসে উল্লেখ পাবেন। নিঃসন্দেহে জ্বীন জাতি ত্রিমাত্রিক জগতের উর্দ্ধে বাস করে। শয়তান বহুমাত্রিক জগতের[হাইপারডাইমেনশন] বিষয় মানুষকে শেখায়, সে নিজেদেরকে মনুষ্যজাতির বসবাসের রেল্মের তুলনায় উচ্চতর অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে পায়, প্রত্যেক পদার্থ যে এনার্জি ফ্রিকোয়েন্সির সমন্বয়ে তৈরি; সেটা আমাদের জ্ঞান ও অনুধাবনের বাহিরে হলেও জ্বীন জাতি অনবরত এই বিষয়গুলোর সাথে ইন্টার‍্যাক্ট করে। তারা এসব অদেখা জগত নিজেদের চোখেই দেখতে পায়। এদের মধ্যে শয়তানের অনুসারী কাফিররা নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে সমন্বয় করে আল্লাহকে অস্বীকারে সহায়ক বিশ্বাসব্যবস্থা বা অলটারনেটিভ মেটাফিজিক্স নির্মাণ করে, যা মানুষের মধ্যেও চালিত করে। সুতরাং এডভান্স আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্স আজ যে কুফরি আকিদার শিক্ষা দেয় সেসব মূলত ভিত্তিহীন শয়তানের মনগড়া শয়তানি চিন্তা। 

আমরা পদার্থবিজ্ঞানের পরিক্ষিত সকল সিদ্ধান্তকে মিথ্যা বা অসত্য দাবি করিনা।কেননা যাদুবিদ্যার অস্তিত্ব সত্য। আধুনিক বিজ্ঞানী নামের অকাল্ট ফিলসফারগন  বাস্তবজগত অপারেট হবার কার্যনীতি - প্রকৃতির কথা বলে তার অনেক কিছুই সঠিক হওয়াটা স্বাভাবিক। ধরুন কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুযায়ী সৃষ্টিজগতের সবকিছু আনঅব্জার্ভড অবস্থায় ননলোকাল কোয়ান্টাম এনার্জি ফিল্ড। বাস্তবতা এরূকম কিছু হওয়া অসম্ভব কিছু না, কারন এর উপর ভিত্তি করেই অকাল্টিস্টরা কাজ করে। এটা যাদুর কজ এ্যান্ড ইফেক্টের হিডেন মেকানিক্স। যাদুর মূল টেকনিক্যাল সংজ্ঞা এটাই যে, এমন কোন কার্য সম্পাদন, যার কারন এর গুপ্ত অবস্থায় থাকে। এই মেকানিক্সের অস্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ এবং স্বীয় স্বার্থে ব্যবহারের মাধ্যমেই যাদু সংঘটিত হয়। এজন্য এ সমস্ত বিদ্যা বা জ্ঞান নিষিদ্ধ বিদ্যার শ্রেনীতে পড়ে। ধরুন, জ্যোতিষশাস্ত্র বা এ্যাস্ট্রলজি, এটা একটা বিশেষ বিদ্যা বা প্রাচীন সায়েন্স। আল্লাহর রাসূল[সাঃ] এই সায়েন্সকে সরাসরি যাদুবিদ্যার অংশ বলে আখ্যায়িত করেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি জ্যোতিষ বিদ্যার কিছু অংশ শিক্ষা করল, সে আসলে যাদু বিদ্যার একটি অংশ শিক্ষা করল। বিধায় জ্যোতিষ বিদ্যা যত বেশী পরিমাণে শিক্ষা করবে, অত বেশী পরিমাণে তার যাদু বিদ্যা বেড়ে যাবে।’’

[আবূ দাঊদ বিশুদ্ধ সূত্রে]  (আবূ দাউদ ৩৯০৫,
ইবনু মাজাহ ৩৭২৬, আহমাদ ২০০১, ২৮৩৬) 
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৬৮০
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

সুতরাং যাদুবিদ্যা বলতে শুধু এমন কিছুকে বোঝায় না যে, শয়তানকে পূজা দিয়ে সন্তুষ্ট করে কাজ করিয়ে নেয়া,বরং এটা একটা বিশেষ বিদ্যা, মেকানিক্স। সেহেতু, কাব্বালাহ এবং এর ভিত্তিতে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠিত সায়েন্টিফিক মতবাদ তত্ত্বসমূহ[i.e: Quantum mechanics, Unified Field theory] যাদুশাস্ত্রীয় শাখা। আমরা বলিনা যে এসবের অস্তিত্ব নেই, এসব মিথ্যা.. বরং মিথ্যা বলি এসব বিদ্যা আশ্রিত আল্টিমেট মেটাফিজিক্যাল কনক্লুশন। উদাহরণ স্বরূপ মহাবিশ্ব সম্পর্কে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, শ্রোডিঞ্জার, বোর আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্স ভিত্তিক যে আকিদার কথা বলে, তা মিথ্যা। যদি ধরা হয় শয়তান রিয়ালিটির মেকানিক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সত্য শিক্ষা এনেছে, এরপরেও তারা বিকল্প কুফরি বিশ্বাস ব্যবস্থাকে নির্মাণের জন্য তাদের চোখে দেখা প্রকৃতির নীতি প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আল্টিমেট মেটাফিজিক্যাল রিয়ালিটি বা সমস্ত অস্তিত্বের অরিজিনের ব্যপারে আল্লাহর ওয়াহদানিয়্যাতের সাথে সাংঘর্ষিক কুফরি বিশ্বাসের জন্ম দেয়। এসব বস্তুত শয়তানের প্রতিশ্রুতির অন্তর্গত বিষয়।

 আধুনিক মুসলিম-ইমাম-দাঈ-রাক্কী এদের মূল সমস্যা হচ্ছে অকাল্ট কি সেটাই না বোঝা। এদের কাছে যাদু মানেই শয়তানের অর্চনা। তবে আলহামদুলিল্লাহ, এই নিও-মুতাজিলাইট চিন্তাধারার বিরুদ্ধে লেখা শুরু করবার পর দেখি ; অধিকাংশই এ সংক্রান্ত বিষয় শুধরে নেয়ার চেষ্টা করেছে। আপনি যদি যাদুবিদ্যাকে শুধুই জ্বীনের সাহায্যে বিরক্ত করাকে বোঝান এবং সুপারন্যাচারাল সর্সারিকে রিজেক্ট করেন, তাহলে যাবতীয় অকাল্ট স্ক্রিপচার তথা শাস্ত্র সমূহ হালাল বিদ্যার কাতারে ফেলতে পারবেন। এ বিষয়টিই ঘটেছে প্রচলিত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। এখন আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি পদার্থবিজ্ঞানীদের বৈদিক কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের অভিমুখিতা। এরা স্পষ্টভাষায় বিজ্ঞানকে বলছে কাব্বালার ফসল। কিন্তু মুসলিম কমিউনিটিতে এসবে কোন ইম্প্যাক্ট নেই। কারন এরা উইচক্র্যাফটের ব্যপারে সাহাবিয়্যাতের মানহাজ অনুসরন করছেনা। এগুলো তাদের কাছে সায়েন্স! 

আমাদেরকে অনেক নিন্মমানের সংকীর্ণচেতা লোকেরা বিদ্রুপ করে বলে, আমরা নাকি আধুনিক প্রযুক্তির সবকিছুকে উইচক্র্যাফট বলি! আমার মনে হয় না গত ২২ পর্বে প্রযুক্তি নিয়ে কোন কিছু লিখেছি কিনা। আমি সামগ্রিকভাবে বিজ্ঞানের অন্তর্গত ফিজিক্স এ্যাস্ট্রনমি শাখাদ্বয়ের থিওরেটিকাল বিষয়গুলোকে সমস্ত আলোচনা করেছি। প্রযুক্তি সংক্রান্ত যে জিনিসের মেকানিজম অবজারভেবল। বস্তুটি কিভাবে অপারেট হচ্ছে সে বিষয়টা পর্যবেক্ষণযোগ্য, এমন নয় যে তা বোধগম্যতার বাহিরে, এজন্য তাকে অকাল্টের আওতায় ফেলি না। উদাহরণস্বরূপঃ মোবাইলফোন, একটি নষ্ট
ফোনকে অশিক্ষিত লোককেও মেরামত করতে দেখা যায়। যন্ত্রটার কার্যনীতি অপ্রকাশিত, দুর্বোধ্য নয়। কিন্তু যে বস্তুকে সিহরের শাস্ত্র সমূহের ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে এবং যার কার্যনীতি গুপ্ত বা কেউ সঠিকভাবে জানে না, সেটা সিহর, সেটা টেকনোলজি তথ্যা প্রযুক্তিগত জিনিস হলেও তা যাদুর অন্তর্ভূক্ত। উদাহরণস্বরূপ আসন্ন কোয়ান্টাম প্রসেসরগুলো সিহরের আওতায় পড়ে যায়। প্রথমত, কোয়ান্টাম প্রসেসর গুলো কাজ করবে কোয়ান্টাম মেকানিক্স তথা বেদান্তমেকানিক্সের উপর ভিত্তি করে। দ্বিতীয়ত,এর কার্যনীতির ব্যপারে এর নির্মাতারাও রহস্যের বেড়াজালে আটকে আছে। কারন কোয়ান্টাম তত্ত্বের ব্যপারে পদার্থবিজ্ঞানীরাও কনফিউজড। এটা বুঝতে বেদান্তশাস্ত্রকে আয়ত্ত করবার পরামর্শ তারা দেয়। তেমনি আর্ক নামের আরেকটি হলিস্টিক যন্ত্র নির্মাণ করেছেন কাব্বালার অনুসারী পদার্থবিজ্ঞানী নাসিম হারামাইন। এটিও যাদু। সুতরাং বুঝতেই পারছেন সিহরের ডেফিনিশন আন্ডারস্ট্যান্ডিং এই মূল সমস্যাটা। এ নিয়ে ২য় পর্বে ইবনু কাসিরের রেফারেন্সে বিস্তারিত পাবেন। 

মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা সমূহ অত বেশি কলুষিত না হলেও শয়তানের আধিপত্যের বাহিরে নয়। অন্যান্য ডিসিপ্লিনেও এমন অনেক বিষয়ের চর্চা হয় যা মূলত শয়তানের কাজ। যেমন ধরুন, এখন জেনেটিক্স এর মডিফিকেশনের মাধ্যমে কোন প্রাণী বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য পালটে ফেলা হচ্ছে। বংশবিস্তারের স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতিকে পালটে ফেলা হচ্ছে। মানুষের উপরেও এই বিষয়গুলো এ্যাপ্লাই করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাছাড়া জেন্ডার ট্রান্সফর্মেশনের মাধ্যমে পুরষ থেকে নারী এবং নারী থেকে পুরুষে রূপান্তরের কাজগুলোও সুস্পষ্ট শয়তানের কাজ। শয়তান মানুষকে সৃষ্টিকে পরিবর্তনের আদেশ দেয়। আল্লাহ বলেনঃ"যার প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। শয়তান বললঃ আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট অংশ গ্রহন করব। তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব;তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়।
(আন নিসা ১১৮-১১৯)


যাদুশাস্ত্রেরও মূল শিক্ষা হলো আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টিকে ম্যানিপুলেট করা, প্রকৃতির কার্যনীতির ব্যপারে জ্ঞান লাভ করে তার উপর প্রভাব বিস্তার ও পালটে ফেলার চেষ্টা। এরা অদেখা জগতের ব্যপারে ফিলসফিক্যাল এবং ফিজিক্যাল রিয়ালিটিতে মেকানিক্যাল পরিবর্তন সাধনের শিক্ষা দেয়। এগুলো সবই মূলত শয়তানের অবিনশ্বর রাজ্যের প্রতিশ্রুতি পূরণের উপাদান। এই "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?" আর্টিকেল সিরিজে আলোচ্য সমস্ত বিষয়গুলো শয়তানের প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাসকে সত্য করবার প্রয়াসেরই অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। নিশ্চয়ই শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা মরীচিকা। আল্লাহ বলেন,
يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيهِمْ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلاَّ غُرُورًا  
 সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদেরকে আশ্বাস দেয়। শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সব প্রতারণা বৈ নয়।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ১২০)

তুই সত্যচ্যুত করে তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস স্বীয় আওয়াজ দ্বারা, স্বীয় অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে তাদেরকে আক্রমণ কর, তাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যা এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দে। ছলনা ছাড়া শয়তান তাদেরকে কোন প্রতিশ্রুতি দেয় না।
(সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ৬৪)

নিশ্চয় যারা সোজা পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তৎপ্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, শয়তান তাদের জন্যে তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়।
(সূরাঃ মুহাম্মদ, আয়াতঃ ২৫)

শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে আহবান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৬)

 وَقَالَ الشَّيْطَانُ لَمَّا قُضِيَ الأَمْرُ إِنَّ اللّهَ وَعَدَكُمْ وَعْدَ الْحَقِّ وَوَعَدتُّكُمْ فَأَخْلَفْتُكُمْ وَمَا كَانَ لِيَ عَلَيْكُم مِّن سُلْطَانٍ إِلاَّ أَن دَعَوْتُكُمْ فَاسْتَجَبْتُمْ لِي فَلاَ تَلُومُونِي وَلُومُواْ أَنفُسَكُم مَّا أَنَاْ بِمُصْرِخِكُمْ وَمَا أَنتُمْ بِمُصْرِخِيَّ إِنِّي كَفَرْتُ بِمَآ أَشْرَكْتُمُونِ مِن قَبْلُ إِنَّ الظَّالِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।[১৪:২২]


আজ বিশ্বের সমস্ত কাফির শক্তি শয়তানের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে তা প্রতিষ্ঠার জন্য একযোগে কাজ করছে। ওদের সমগ্র জ্ঞান-বিজ্ঞান-বিদ্যা এই প্রতিশ্রুতি পূরণের হাতিয়ার। ওরা শয়তানের প্রতিনিধি[খলিফা]। সকলেই ইহুদীদের যাদুশাস্ত্রের[কাব্বালাহ] সাজারাতুল খুলদের ফল[জ্ঞান] আহরণ করে অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যে ফেরেশতাদের অনুরূপ উন্নততর দেহরূপ লাভ করে অমর হয়ে বেচে থাকার আশায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করছে। এর শেষ হবে ইহুদী [মিথ্যা]মসিহের আগমনের মাধ্যমে। অন্যদিকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা মুসলিমদেরকে তার প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মুসলিমরা আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করবে। এ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,"আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি...."
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৩০)

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদের কে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু।
(সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১৬৫)

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি করেছেন। অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৩৯)

প্রতিনিধি বা খলিফা থেকেই খিলাফত/খিলাফা শব্দ এসেছে। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়ন মনুষ্যজাতিকে সৃষ্টির পেছনের উদ্দেশ্য। এটা অন্য সকল ব্যক্তিগত আমলের চেয়েও মৌলিক কার্য।সাহাবীগন(রাযিঃ) ও তাদের পরবর্তীতে লম্বা একটা সময় পর্যন্ত সে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করা হয়। কিন্তু আজ? আজকে একদমই উলটো চিত্র। আজকে উম্মাহকে নিশ্চিহ্ন করার মিশনে কাফিররা থাকলেও,মুসলিমদের ভূমির যে অংশ এখনো আক্রান্ত হয়নি সে অংশের মুসলিমরা বড্ড নিশ্চিন্ত। যেন কিছুই হয় নি। ভাবখানা এমন, যেন দ্বীন প্রতিষ্ঠিত আছে। দুনিয়াতে প্রতিনিধিত্ব কায়েম করে ফেলেছে মুসলিমরা। যেন ভবিষ্যতেও তাদের কিছুই হবে না। সবাই যার যার দুনিয়াবি ক্যারিয়ার গড়ায় ব্যস্ত। আজকে অধিকাংশ আলিমসমাজও কেমন যেন কাফিরদের সাথে আপোষ করে চলতে আগ্রহী। এদের কেউ কেউ আবার কথিত সহীহ আকিদা প্রচার করে। কাফিরদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তারা এত রাগান্বিত হন যে, তাদের থেকে
খাওয়ারিজ ঘোষনা শোনা যায়! এত কিছুর পরেও কাফিরদের এসব হীন প্রচেষ্টাকে একদল মানুষ কোনভাবে মান্য করে না। এরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কর্তৃক নির্বাচিত বান্দা। শয়তানের এজেন্ডাগুলোর তাদের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এরা সকল তাগুত এজেন্ট - শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত, এমনকি যুদ্ধ করে,মারে এবং মরে। এদের একমাত্র লক্ষ্য: আল্লাহর দ্বীনকে যমীনে প্রতিষ্ঠা করা। এদেরকে সেই মহাপরিকল্পনাকারী এজেন্ডা এবং সেটাকে বাস্তবায়নে সহায়ক সকল অনুচরবৃন্দ পথভ্রষ্ট(Divergent) মনে করে। আজ ওরা তাদেরকে সন্ত্রাসী, জঙ্গি ইত্যাদি শব্দে আখ্যায়িত করে জিরো টলারেন্সের আওতায় রাখে। যখনই তাদেরকে হাতের নাগালে পায়, ক্রসফায়ারে হত্যা ছাড়া ভিন্ন কিছু সহজে ভাবে না। কারন তাগুতের পক্ষাবলম্বীরা ভাল করেই জানে তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার সৈনিক। এরাও টোটালেটেরিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্টের
স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সেটা হবে খিলাফা আ'লা মিনহাজিন নাব্যুওয়াহ। সেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার নির্দেশিত শরী'আর শাসন। সুতরাং, সুনিশ্চিত সম্ভাবনা থাকেই যে, কথিত পথভ্রষ্ট সন্ত্রাসী জঙ্গিরা সবার প্রথমে ইবলিসের ট্রি অব লাইফের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি অনুসারী ও প্রতিনিধিদেরকে সমূলে উৎপাটন করবে। এজন্য পথের কাঁটা কোন ক্রমেই বাচিয়ে রাখা যায় না। এদেরকে বাধা দেওয়ার জন্য দ্বীনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনকারী মোডারেট ও নিও মুতাযিলা আলিমও তৈরি করে নিচ্ছে। কাফিরগোষ্ঠীর প্রস্তুতকৃত এই আলিমদের এজেন্ট আমাদের দেশে মহাসম্মানজনক নাম দিয়ে দল তৈরি করে প্রচারকার্য চালাচ্ছে। সেটাই নাকি আজ সহীহ আকিদা! মা'আযাল্লাহ!! তাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র বিপ্লব সন্ত্রাসবাদ-জংগীবাদ,এজন্য তারা সেসকল কথিত সন্ত্রাসীদেরকে খারেজি বলে ডাকে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তারা এই তিরস্কারকারীর তিরস্কারের পরোয়া করে না। আল্লাহ বলেন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ يَخَافُونَ لَوْمَةَ لآئِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ 
''হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।
(সূরা মায়িদাহঃ৫৪) 

তারা আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা কখনোই সমগ্র জমিনে শয়তানের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না। এরা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে। তাদের পথই আমাদের পথ। নিশ্চয়ই শয়তানের পরিকল্পনা একান্তই দুর্বল। আল্লাহ বলেন:
الَّذِينَ آمَنُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُواْ أَوْلِيَاء الشَّيْطَانِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا '
'যারা ঈমানদার তারা যে, যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা যুদ্ধ করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল''। [আন নিসাঃ৭৬]

নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদাহ সত্য এবং শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা। আল্লাহ বলেন,"যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।"
(সূরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ৮-৯)

হে মানুষ, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে প্রতারণা না করে। এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৫)

"জান্নাতীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের সাথে আমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আমরা সত্য পেয়েছি? অতএব, তোমরাও কি তোমাদের প্রতিপালকের ওয়াদা সত্য পেয়েছ? তারা বলবেঃ হ্যাঁ। অতঃপর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবেঃ আল্লাহর অভিসম্পাত জালেমদের উপর।
(সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ৪৪)


إِنَّ اللَّهَ اشْتَرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوٰلَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ  ۚ يُقٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ  ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِى التَّوْرٰىةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْءَانِ  ۚ وَمَنْ أَوْفٰى بِعَهْدِهِۦ مِنَ اللَّهِ  ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِى بَايَعْتُمْ بِهِۦ  ۚ وَذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

"নিশ্চয় আল্লাহ মু’মিনদের কাছ থেকে তাদের জান আর মাল কিনে নিয়েছেন কারণ তাদের জন্য (বিনিময়ে) আছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। অতঃপর (দুশমনদের) হত্যা করে এবং (নিজেরা) নিহত হয়। এ ওয়া‘দা তাঁর উপর অবশ্যই পালনীয় যা আছে তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে। আল্লাহর চেয়ে আর কে বেশী নিজ ওয়া‘দা পালনকারী? কাজেই তোমরা যে ক্রয় বিক্রয় সম্পন্ন করেছ তার জন্য আনন্দিত হও, আর এটাই হল মহান সফলতা।"
(At-Tawbah 9: Verse 111)








ওয়া আল্লাহু আ'লাম





وما توفيقي الا بالله







Sources:
২)https//en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_21
https/en.m.wikipedia.org/wiki/The_Venus_Project
১১)https/en.m.wikipedia.org/wiki/Republic_(Plato)
https/en.m.wikipedia.org/wiki/Immortality
https/en.m.wikipedia.org/wiki/Transhumanism 
২০)https/en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_2030

বিগত পর্বগুলোর লিংক:

https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html





সমাপ্ত
 
 
 

Thursday, October 15, 2020

২২.বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?

পর্ব-২২


Alternative cosmogony - The ultimate disbelief 





কখনো কি এরকম অনুভব হয়েছে যে, কোন একটি অচেনা এলাকায় বেড়াতে গিয়ে মনে হয়,সে জায়গাটি যেন অনেক চেনা। যেন এখানে হাজার বার এসেছেন। প্রতিটি পদক্ষেপ যেন অনেকবার হয়েছে। অথচ আপনি সচেতনভাবে জানেন, আপনি এখানে এই প্রথমবার এসেছেন। কখনো এরকম কোন সুর কিংবা কথা শুনে মনে হয় এটা আগেও হাজার বার শুনেছেন। অথচ চিরচেনা এ সুর কিংবা এই ভঙ্গিতে বলা কথা এই প্রথম শুনছেন। পাশ্চাত্যে একে বলা হয় Déjà vu[ডেজা ভু]। 

হলিউডের ট্রায়াঙ্গল ফিল্মটিতে দেখানো হয়, টমির মা জেস তার বন্ধুদের সাথে প্রমোদতরীতে ওঠে, কিন্তু ঝড়ের প্রকোপে তরী ডুবে যাবার পর ম্যাজিক্যালি Aeolus নামের এক জনমানবশূন্য জাহাজ চলে আসে,জেস ও তার বন্ধুরা তাতে উঠলে, জেস এর জাহাজের প্রতি করিডোরে হাটার সময় ডেজা-ভু ফিল হতে থাকে। জেস তার মৃত সন্তান টমিকে ফিরে পেতে প্রতিবারই একই ঘটনার জন্মমৃত্যুর চক্রের মধ্য দিয়ে বার বার আসতে থাকে। একই ঘটনা বার বার হতে থাকে। সবকিছুই এন্ডলেস লুপের মধ্যে চলছে। ট্রায়াঙ্গল ফিল্মের এই টাইমলুপের ধারনাটি এসেছে মহাবিশ্বের অস্তিত্বের অরিজিনের ব্যপারে প্রাচীন যাদুকরদের কুফরি আকিদা Eternal Recurrence/Eternal Return বা চিরন্তন পুনরাবৃত্তি/প্রত্যাবর্তনের বিশ্বাস থেকে[১]। এ ফিল্মে দেখানো জাহাজের নাম Aeolus। এওলাসের পরিচয়ও সামান্য দেয়া হয় ফিল্মের মধ্যে। গ্রীকপুরাণে সিসিপাস হলেন রাজা এওলাসের পুত্র। সিসিপাস মৃত্যুর সাথে প্রতারণা করার অপরাধে দেবতা জিউস পাতালে এমন এক সীমাহীন শাস্তি দেন যেখানে, সিসিপাস অনন্তকাল ধরে একটি পাথরের চাঁইকে গড়িয়ে পাহাড়ের উপরের দিকে নিয়ে যেতে থাকে, যখনই পাথরটি পাহাড়ের একদম চূড়ার কাছে পৌছে যায়, সাথে সাথে সেটা গড়িয়ে মাটিতে পড়ে, এভাবে অনন্তকাল ধরে উঠাতে থাকে। দার্শনিক ও লেখক Albert Camus ইটারনাল রিটার্ন তথা অনন্ত/চিরন্তন প্রত্যাবর্তনের ধারনাটি নিয়ে লিখেন "The Myth of Sisyphus", এতে তিনি পুনরাবৃত্তি চক্রের এই মহাজাগতিক সাইক্লিক্যাল অস্তিত্বের চক্রটি জীবনের অর্থহীনতাকে প্রকাশ করেন,যেভাবে বার বার একই পাথরকে পাহাড়ের চূড়ায় ঠেলে তোলা একদমই অর্থহীন নিরাশাপূর্ণ কাজ।

 

ইটারনাল রিকারেন্সকে Time Loops দ্বারাও প্রকাশ করা হয়। হলিউডে আজ পর্যন্ত অজস্র ফিল্ম টাইম লুপকে ভিত্তি করে তৈরি করেছে[২]। প্রতিটিতেই অকাল্ট/যাদুশাস্ত্র এবং শয়তানের একটা প্রত্যক্ষ যোগসূত্র রেখেছে। যেমনঃ স্যাটানিক, লর্ডির ডার্ক ফ্লোরস,ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইত্যাদি। মূলত এই প্রাচীন আকিদা বা বিশ্বাসটি বর্তমানে সরাসরি থেইস্টিক স্যাটানিস্টদের মধ্যে বেশি পাওয়া যায়। অনেকসময় একে একরকমের শাস্তি হিসেবেও দেখা হয়। পৌত্তলিক ধর্মগুলোয় সাইকেল অব টাইম বা কালচক্রে বার বার অস্তিত্বের পুনরাবৃত্তি একধরণের শাস্তি।

 

চিরন্তন প্রত্যাবর্তন বা পুনরাবৃত্তির এই প্রাচীন তত্ত্ব দ্বারা বোঝায় যা কিছু ঘটছে তা আবারো ঘটবে, আবারো.... এভাবে অনন্তবার অতীতে ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। অর্থাৎ গোটা মহাবিশ্ব এবং এর সমগ্র ইতিহাস বার বার রিপিট তথা পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকবে। অতীতে অনন্ত অসীম সংখ্যকবার বিগব্যাং ঘটে আমাদের মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছিল, আমাদের বর্তমানটি এই সিকোয়েন্সেরই একটি। ভবিষ্যতে বিগ ক্রাঞ্চের মাধ্যমে মহাজাগতিক কলাপ্সের পর আবারো বিগব্যাং ঘটবে এবং সবকিছু আবারো ফিরে আসবে। সবকিছু পুনরায় ঘটবে। অর্থাৎ সূর্যের নিচে এ জগৎসংসারে যাই ঘটছে, কোন কিছুই নতুন নয়,What has happened will eventually happen!  যাদুশাস্ত্রের অনুসারীদের বিশ্বাস ডেজা ভু এর আসল রহস্য এটাই। অতীতের ঘটা ঘটনার বিস্মৃত স্মৃতির রিকারেন্সের ফসল ডেজা ভু! টাইম লুপ্স, ইটারনাল রিটার্ন সংক্রান্ত হলিউড ফিল্ম গুলোর কোর ম্যাসেজ এটাই। আমার মনে পরে DUST নামের শর্ট সায়েন্সফিকশন ফিল্ম মেকারদেরও এ সংক্রান্ত একটা ফিল্ম ছিল। পাঠকদের মনে প্রশ্ন জাগছে এই যাদুশাস্ত্রীয় কুফরি আকিদার সাথে সায়েন্সের সম্পর্ক কি! প্রিয় পাঠক এটাই বিজ্ঞান!! বিগব্যাং এর ব্যাপারে আপনি কিরূপ ধারনা রাখেন? মূলত, বিগব্যাং হচ্ছে প্রাচীন অকাল্ট ফিলসফির নতুন সায়েন্টিফিক ভার্সন। অপবিজ্ঞানীরা শুধুমাত্র বিগব্যাং দ্বারা মহাবিশ্বের সৃষ্টির প্রক্রিয়ার মাত্র ৫০% প্রকাশ করে কিন্তু আরো ৫০% অপ্রকাশিত রাখে।বিগব্যাং, কিভাবে ইউনিভার্স অস্তিত্বে এসেছে তা বলে, কিন্তু এর আগে কি ছিল তা বলে না। 

 

বিগব্যাং তত্ত্ব এককভাবে সবকিছুর ব্যাখ্যা দেয় না। বিগব্যাং তত্ত্বটি প্রাচীন ব্যাবিলন-মিশরীয় যাদুকর ও শয়তান জ্বীনদের এক চূড়ান্ত পূর্নাঙ্গ কুফরি আকিদারই অংশবিশেষ। সহজ করে বললে ১০০% কুফরি আকিদার ৫০% আছে বিগব্যাং এ। বাকি ৫০% নিয়ে খুব বেশি আলোচনা না হলেও সেটা অনেকের সুপরিচিত বিষয়।এবং পূর্ণাঙ্গ ১০০% কুফরি বিশ্বাসটি তাত্ত্বিকভাবে সাধারন মানুষের মধ্যে খুব বেশি পরিচিত না হলেও ধীরে ধীরে বিজ্ঞানীগন একে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং এখনও করছেন। সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো অকাল্ট সৃষ্টিতত্ত্বের ১০০ শতাংশের অবিচ্ছেদ্য অর্ধাংশ বৈজ্ঞানিকভাবে এবং জনমনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বিগব্যাং এর নামে। তবে এর আসল পরিচয় এবং এই তত্ত্বের তাৎপর্যের ব্যপারে অধিকাংশই অজ্ঞ। এ নিয়েই আজকের আলোচনা। 

 

চিরন্তন পুনরাবৃত্তির[Eternal Recurrence/Return] অকাল্ট তত্ত্বকে পাওয়া যায় প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক শাস্ত্র,মিশরীয় যাদুশাস্ত্র এবং ইহুদী যাদুশাস্ত্রে। এখান থেকেই পিথাগোরাস ও স্টোয়িক্স এই যাদুশাস্ত্রীয় আকিদা বা কুফরি বিশ্বাসটিকে গ্রহন করেছে। খ্রিস্ট ও ইসলামী শাসনের আধিপত্যের দরুন এই আকিদাটি শতাব্দীর পর শতাব্দী লুকায়িত অবস্থায় থাকে। অবশেষে একে সর্বপ্রথম পুর্নাঙ্গরূপে আলোয় নিয়ে আসেন ১৯ শতকের মহান দার্শনিক Friedrich Nietzsche। তিনি এই বিশ্বাসের সাথে আরো অনেক চিন্তাধারার সমন্বয় ঘটান।

 

 চিরন্তন পুনরাবৃত্তির তত্ত্বটি যার উপর দাঁড়িয়ে আছে তাকে বলে সময় বা কালের চক্র।এ ব্যপারে সবচেয়ে স্পষ্ট বর্ননা মেলে ভারতীয় পৌত্তলিকদের ধর্মচক্রীয়[শিখ, জৈন, হিন্দু ও বৌদ্ধ] বিচিত্র কুফরি শাস্ত্রের বর্ননায়।মহাযান বৌদ্ধমতের মধ্যমকে সময়ের অনন্ত পুনরাবৃত্তির চক্র তথা কালচক্রের দ্বারা সমগ্র অস্তিত্ব ও জ্ঞানের অসীম চক্রকে প্রকাশ করে[৩]।তিব্বতীয় তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মে কালচক্রের ব্যপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কালচক্র এমনকি একটা তান্ত্রিক শাস্ত্রীয় শাখার নাম। এই কালচক্রতন্ত্রেই ভবিষ্যতের মাহদি নামের মুসলিমদের নেতা ও গোটা মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে সর্বশেষ কল্কি অবতারের[দাজ্জালের] চূড়ান্ত যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। অতএব বুঝতেই পারছেন কালচক্রীয় সকল জ্ঞান সরাসরি কোথা থেকে এসেছে। মায়ান ও আজটেক সভ্যতারও মধ্যেও কালচক্রের বিশ্বাসটি প্রচলিত ছিল।

 

বৌদ্ধ দর্শনে সংসার বা সমসার শব্দ দ্বারা জীবন ও অস্তিত্বের এক অসীম আবর্তনশীল চক্রকে বোঝায়। আমাদের বাংলা ভাষা সংস্কৃত ভিত্তিক হবার কারনে আমরা সাধারনভাবে অনেক কুফরি আকিদাবাহী ও অশ্লীল শব্দই ব্যবহার করে থাকি, যার অর্থ সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখিনা। 'সংসার'ও তেমনই একই শব্দ। সর্বপ্রথম একে অর্থবাচকহীনভাবে সাথে শব্দটি পাওয়া যায় ঋগ্বেদে। কিন্তু পরবর্তী বৈদিক শাস্ত্র সমূহে কর্মফল ও পুনর্জন্মবাদী পুনরাবৃত্তিকারী অসীম অস্তিত্বের জন্ম-পুনর্জন্মের আবর্তনচক্রের দ্বারা সংসার/সমসারকে ব্যাখ্যা করা হয়। ভবচক্রের দ্বারাও একই কথা বোঝায়[৪]।

 

মহাজাগতিক অস্তিত্বের অসীম পুনরাবৃত্তি চক্রকে 'পুনর্জন্ম'[Rebirth] শব্দ দ্বারাও বৈদিক ট্রেডিশনে বোঝানো হয়। মহাবিশ্ব(ব্রহ্মা) অনন্তকাল ধরে অসীম সংখ্যকবার জন্ম মৃত্যু এবং পুনর্জন্মলাভ করছে। এই অকাল্ট সৃষ্টিতত্ত্বকে সংক্ষেপে cyclical universe বা oscillating universe বলে। সমস্ত যাদুশাস্ত্রের অনুসারীরা এই কুফরি মেটাফিজিক্যাল ইন্টারপ্রেটেশনে বিশ্বাস রাখে। এতে বলা হয়, ব্রহ্মাণ্ড এক সংকুচিত বিন্দুর ন্যায় অবস্থা থেকে মহাবিস্ফোরণের দ্বারা অস্তিত্বে আসে। পরে ক্রমাগত সম্প্রসারিত হতে থাকে। এই সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া একসময় থেমে আবারো সংকুচিত হতে থাকে অবশেষে আবারো ঘনবিন্দুতে পৌছে আবারো বিস্ফোরণের দ্বারা সম্প্রসারণ শুরু করে। এভাবেই ইনফিনিট অসোলেশন চলতে থাকে। এই যাদুশাস্ত্রীয় মহাজাগতিক আকৃতি ডোনাট বা ত্রিমাত্রিক টোরাস এর ন্যায়। অর্থাৎ দেখতে কিছুটা আপেল বা কমলার মত যার একদিকে ব্ল্যাকহোল আরেকদিকে হোয়াইটহোল, যার মধ্য দিয়ে এনার্জি ও স্পেসের অসোলেশন ঘটতে থাকে। এখানে কোন শুরু বা শেষ নেই। অর্থাৎ মহাবিশ্বকে কেউ সৃষ্টি বা শুরু করেনি, এর কোন অন্ত বা শেষও নেই। এই পুনর্জন্মবাদ ও পুনরাবৃত্তির চক্রের আদি শেকড় ইতিহাসে মেলে খ্রিষ্টপূর্ব ১ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যে প্রাচীন গ্রীক ও ভারতীয় শাস্ত্রে। ঋগ্বেদে সাইক্লিক্যাল অসোলেটিং ইউনিভার্সের কথা আছে, যাতে বলা হয়েছে এক অস্তিত্বের সাইকেল বা চক্রের দৈর্ঘ্য ৩১১ ট্রিলিয়ন বর্ষ এবং এক মহাবিশ্বের জীবন প্রায় ৮ বিলিয়ন বর্ষ। 

 

আমি বিগত পর্বগুলোয় দেখিয়েছি হিন্দু শাস্ত্র সমূহে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের অনেক বিষয় যেমন পরমাণুতত্ত্ব,মহাকর্ষতত্ত্ব ও পৃথিবীর স্ফেরিক্যাল আকৃতির ব্যপারে বিশদ বর্ননা রয়েছে। একইভাবে অসোলেটিং সাইক্লিক্যাল ইউনিভার্সের ব্যপারেও বিশদ আলোচনা আছে বৈদিক শাস্ত্রে। দেবতাদের রূপক দ্বারা বোঝানো  বেদান্তশাস্ত্রের এ সৃষ্টিতত্ত্বে ব্রক্ষ্মা শ্রীবিষ্ণু হতে উদ্ভূত,জড় জগতে ভগবানের তিনটি পুরুষাবতার বিষ্ণুরূপ প্রকাশিতঃ প্রথম পুরুষাবতারঃ কারণোদকশায়ী বিষ্ণু বা মহাবিষ্ণু। কারণ উদক সাগরে (কার্যকারণ মহাসাগর) শায়িত এই মহাবিষ্ণুর বিরাট শরীর থেকে কোটি কোটি ব্রক্ষ্মান্ড [universes এর ক্লাস্টার-কস্মিক প্লুরালিজম]প্রকাশিত হয়, মহাপ্রলয়ে(অবলুপ্তি সমস্ত জড় ব্রক্ষ্মান্ডগুলি ধ্বংস হয়ে সূক্ষ্ম জড় উপাদনরূপে তাঁর দিব্য শরীরে বিলীন হয়।দ্বিতীয় পুরুষাবতারঃ গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু মহাবিষ্ণু নিজেকে কোটি কোটি রূপে বিস্তার করে প্রতিটি ব্রক্ষ্মান্ডে প্রবেশ করে ব্রক্ষ্মান্ডের গর্ভোদকে শয়ন করেন। তারপর ব্রক্ষ্মাকে সৃষ্টি করেন। ব্রক্ষ্মার মাধ্যমে সূর্য ও চতুর্দশ ভুবন বা গ্রহলোকসমূহ সৃষ্টি করেন। তৃতীয় পুরুষাবতারঃ ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু প্রতি ব্রক্ষ্মান্ডে শ্রীবিষ্ণু নিজেকে অসংখ্য রূপে বিস্তার করে করে জীবসত্তাকে ভগবদধামে ফিরে আসতে সাহায্য করার জন্য প্রত্যেক জীব হৃদয়ে পরমাত্মারূপে অবস্থান করেন। এইভাবে, কোটি কোটি, অসংখ্য অনন্তরূপে ভগবান নিজেকে বিস্তার করেন, কিন্তু তিনি 'অদ্বৈতম' (অ দ্বৈত) তিনি এক ও অভিন্ন এবং সকল রূপের পরম উৎস শ্রীকৃষ্ণ[বিষ্ণুর অন্যনাম] স্বরূপ, এটিই বৈদিক শাস্ত্রের সিধান্ত। ব্রক্ষ্মসংহিতায় বলা হয়েছে [৫/৩৩]: অদ্বৈতম-অচ্যুতম-অনাদিম-অনন্তরূপম ,আদ্যং পুরাণপুরুষং নবযৌবনঞ্চ। বেদেষু দুর্লভম-অদুর্লভম-আত্মভক্তৌ ,গোবিন্দম-আদি পুরুষং তমহং ভজামি .. 

অর্থঃ "যিনি অদ্বৈত, অচ্যুত, অনাদি, অনন্তরূপ সম্পন্ন, আদি পুরাণ পুরুষ হয়েও নিত্যনবন বায়মান যৌবন সম্পন্ন সুন্দর পুরুষ, বেদাদি শাস্ত্র পাঠে দুর্লভ কিন্তু শুদ্ধ আত্মভক্তির লভ্য, সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।"

বেদে সর্বদেবতার উপাস্য ভগবান রূপে শ্রীবিষ্ণুকে স্তুতি করা হয়েছে, যেমন ঋগবেদে (১/২২/২০) বলা হয়েছে: ওঁ তদবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা ,পশ্যন্তি সূরয়ো দিবীব চক্ষুরাততম. ,তদবিপ্রাসো বিপন্যবো জাগৃবাংষঃ ,সমিন্ধতে বিষ্ণোর্যৎ পরমং পদম 

"পরমেশ্বর বিষ্ণুই হচ্ছেন পরম সত্য. সুরগন তাঁর পাদপদ্ম দর্শনে সর্বদাই উদগ্রীব. সূর্যের মতোই ভগবান তাঁর শক্তিরশ্মির বিস্তার করে সর্বত্র ব্যাপ্ত আছেন। "

ঋগবেদে ১/২২/১৭, ১/২২/১৮, ১/১৫৪/১, ১/১৫২/২, ১/১৫৪/৩, ১/১৫৪/৪, ১/১৫৪/৬ নং মন্ত্রে বিষ্ণুর কথা বলা হয়েছে। অথর্ববেদে বলা হয়েছে, 

যো ব্রক্ষ্মাণং বিদধাতি পূর্বং যো বৈ বেদাংশ্চ গাপয়তি স্ম কৃষ্ণঃ। অর্থাৎ "ব্রক্ষ্মা, যিনি পূর্বকালে জগতে বৈদিক জ্ঞান প্রদান করেন, সেই জ্ঞান তিনি সৃষ্টির আদিতে যাঁর কাছ থেকে প্রাপ্ত হন তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ[বিষ্ণু]।"

 শ্রীবিষ্ণু শ্রীকৃষ্ণেরই প্রকাশ বা বিস্তার, শাস্ত্রের সিধান্ত, যেমন সকল বেদ উপনিষদের সার গীতোপনিষদ, ভগবদগীতায় শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণু বলে সম্বোধন করা হয়েছে শমং চ বিষ্ণো (১১/২৪), প্রতপন্তি বিষ্ণো (১১/৩০), আদিত্যানাম অহং বিষ্ণু(১০/২১) ইত্যাদি।[৫]

অর্থাৎ বিষ্ণুই হচ্ছে সবকিছুর ধারক। ভাগবতপুরাণ অনুযায়ী ক্ষীরসমুদ্রে বিষ্ণু নিদ্রায় শায়িত হলে পদ্মস্বপ্ন দর্শন শুরু করে। স্বপ্নে তার নাভি থেকে পদ্ম উদগত হয়ে ব্রহ্মার জন্ম হয়, ব্রহ্মা মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করে। বিষ্ণুর স্বপ্ন ভঙ্গ হয় নটরাজ শিবের ধ্বংস নৃত্যের মাধ্যমে। বিষ্ণুর স্বপ্ন ভঙ্গ হবার সাথে সাথে তার স্বপ্নীল মহাবিশ্বেরও ধবংস ঘটে। আবারো বিষ্ণু বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের নিদ্রাহীন স্বপ্নে শায়িত হন, এরপরে আবারো মহাজাগতিক স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পর শিবের দ্বারা ব্রহ্মার সৃষ্টির বিনাশ ঘটে। এভাবেই অসীম সংখ্যকবার মহাবিশ্বের জন্ম পুনরর্জন্ম ঘটে আসছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটতে থাকবে।

 

মহাজাগতিক সৃষ্টির এই জন্ম ও পুনর্জন্মের আবর্তনচক্র তথা কালচক্রের এক একটি চক্রের শুরুতে বিষ্ণুর স্বপ্নের শুরুর মাধ্যমে বিগব্যাং সংঘটিত হয়,একইভাবে স্বপ্নভঙ্গের সময় বিগক্রাঞ্চ ঘটে। অর্থাৎ এই বৈদিক শাস্ত্র অনুসারে এই সাইক্লিক্যাল মহাবিশ্ব অনবরত বিগব্যাং ও বিগক্রাঞ্চের মাধ্যমে স্বীয় অস্তিত্বের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে থাকে। হিন্দু শাস্ত্রে বিগব্যাং এর ব্যপারে স্পষ্ট বর্ননা আছে। কথা উপনিষদ এর ২:২০ এ বলা হয়েছে, সবকিছুই ব্রহ্মার থেকে সৃষ্ট "যা পরমাণুর চেয়েও ক্ষুদ্র ছিল এবং সেটা মহানের চেয়েও মহান।" একইভাবে Nasadiya Sukta এবং ঋগ্বেদের ১০:১২৯ এ বর্নিত আছে যে মহাবিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে প্রচণ্ড উত্তপ্ত বিন্দু থেকে। এটাই আজকের বিজ্ঞান!

 

যাইহোক,এই বৈষ্ণবীয় স্বপ্নের থেকেই মূলত মায়াবাদ ও হলোগ্রাফিক সিমুলেশন তত্ত্বের জন্ম, যা ইতোপূর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। একইভাবে আজকের এই বিগব্যাং-বিগক্রাঞ্চ তত্ত্বের অরিজিনও এই occult cosmogony! আমি ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি যে এসকল দেবতাদের বর্ননা সবই রূপক। এটা পদার্থবিদগনও বলেন। এসব দেবতারা প্রাকৃতিক নীতির পার্সোনিফাইড ম্যানিফ্যাস্টেইশান। এ সমস্ত দেবতাদের রূপক বর্ননার দ্বারা বৈদিক সৃষ্টিতত্ত্ব বিগব্যাং ও বিগক্রাঞ্চের ইনফিনিট অসোলেশনের শিক্ষা দেয়।

 

সাইক্লিক্যাল চিরন্তন পুনরাবৃত্তির প্যাগান সৃষ্টিতত্ত্বের আদি উৎস খুঁজতে গিয়ে আমাদেরকে ভারতের পর পৌছতে হয় গ্রীসে। উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী প্রাচীন গ্রীসে ইটারনাল রিকারেন্সের সাথে পরিচিত ছিলেন Empedocles,  Citium এর Zeno ও Stoics (ekpyrosis,  palingenesis)।Virgil এর ষষ্ঠ বই Aeneid কবিতার ৭২৪ থেকে ৭৫১ লাইনেও এই আকিদার কথা উল্লেখ আছে। এরও বহু আগে এই অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউয়ের দেখা মেলে যাদুশাস্ত্রের স্বর্গভূমি প্রাচীন মিশরে। মিশরের প্যাগানদের দেবতা বন্দনার অকাল্ট শাস্ত্রে উল্লেখ আছেঃ"If you believe in the gods, then you believe in the cycle of time that we are all playing our parts in a story that is told again and again, and again throughout eternity."

অর্থঃ"তুমি যদি দেবতাদের বিশ্বাস করো, তাহলে তুমি অবশ্যই কালচক্রে[cycle of time] বিশ্বাস করো, যেখানে আমরা প্রত্যেকেই একটি গল্পের মধ্যে আমাদের নিজ নিজ চরিত্রে অভিনয় করছি, যেটি বারং বার এমনকি সীমাহীন বার বলা হবে।"

 [Hymn to Sekhmet ]



আপনারা দেখতে পারছেন এখানে প্যাগানিজমের সাথে এই কুফরি আকিদার সম্পর্ককে আলাদাভাবে দেখানো হচ্ছে। পিথাগোরাস প্রায় ২২ বছর অতিবাহিত করে মিশরীয় যাদুকরদের থেকে জ্ঞান আহরণের জন্য। সুতরাং আশা করি বুঝতে পারছেন পিথাগোরিয়ান গিল্ডে এই অকাল্ট শিক্ষার অনুপ্রবেশ কিভাবে হয়েছে। এবার প্রশ্ন আসতে পারে মিশরে সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত এই কুফরি আকিদা কোথা থেকে এলো। সহজ উত্তর বাবেল শহর। এবার আমাদেরকে এর সবচেয়ে প্রাচীন উৎস খুঁজতে; ফিরে যেতে হবে যাদুশাস্ত্রীয় জ্ঞানের প্রাচীন ভূমি ব্যবিলনে। আপনারা জানেন একসময়কার সারা পৃথিবীর একক বাদশাহ বাবেলসম্রাট নেবুচাদনেজার ইহুদিদেরকে বন্দি করে ব্যবিলনে নিয়ে যায়। সেখানকার বন্দিদশা থেকে মুক্তির একটা উপায় হিসেবে তারা তাওরাতকে ছুড়ে ফেলে গ্রহন করে যাদুবিদ্যাকে। ইহুদীদের হিব্রু শাস্ত্র Ecclesiastes এ ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন বর্ননা পাওয়া যায় সেই চিরন্তন পুনরাবৃত্তির[সিক্লিক্যাল লুপ] কুফরি আকিদার। এতে বলা হয়েছে,"What has been will be again, what has been done will be done again; there is nothing new under the sun.”

অর্থঃ"যা হয়েছে তা আবারো হবে, যা করা হয়েছে তা আবারো করা হবে;সূর্যের নিচে[জগৎসংসারে] কোন কিছুই নতুন নয়।"

(Ecclesiastes 1: 9)


সুতরাং এখন যা কিছু ঘটতে দেখছেন এটা পূর্বে হয়েছে। আবারো হবে। দুনিয়াতে নতুন বলে কোন কিছুই নেই। এ কিতাবের আসল লেখকের নাম অজানা। এর ন্যারেটর বা বর্ণনাকারী হিসেবে Qoheleth শব্দের অজ্ঞাত কাউকে পাওয়া যায় যার অর্থ শিক্ষক। তালমুদ ও কাব্বালিস্ট ইহুদীরা এক্লেসিয়াস্টিসের ব্যপারে দাবি করে যে, এটা সোলাইমান [আ:] নিজে লিখেছেন। কিন্তু সমস্যার বিষয় হলো এর কথা গুলো ওল্ড টেস্টামেন্টের সাথেই সাংঘর্ষিক। সাংঘর্ষিকতা কমানোর জন্য র‍্যাবাইদেরকে সেন্সরিং এর জন্যও বলা হয়েছে। উইকিপিডিয়া অনুসারে,".....contradict other portions of the Old Testament, and even itself. The Talmud even suggests that the rabbis considered censoring Ecclesiastes due to its seeming contradictions."

তাছাড়া আরো বড় সমস্যা হলো এই রহস্যময় কিতাব মানুষকে বর্তমান সময়টাকে ইচ্ছেমত উপভোগের জন্য উপদেশ দেয়। যখনই সুযোগ পায় যেভাবেই হোক মানুষ  যেন সময়টাকে সর্বোচ্চ উপভোগ করে। মানুষের কর্মের কোন মূল্য নেই। অর্থাৎ এটা অনেকটা কার্পিডিয়েম থিওরির শিক্ষা দেয়, যেটা মূলত শয়তানের কথার সাথে মেলে। সম্ভবত, এজন্যই চিরন্তন পুনরাবৃত্তির কুফরি আকিদার উল্লেখ পাওয়া যায়। এক্লেসিয়াস্টিস ২৪ টি হিব্রু তানাখের একটি। সম্ভবত এটা সেই কিতাবেরই অন্তর্গত, যেটা ইহুদীরা মুখ বাঁকিয়ে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) এর সম্মুখে পাঠ করতো এবং আল্লাহর রাসূল(সাঃ) সেসবের সাথে কুরআনের আল্লাহর বানীর কোন সঙ্গতি খুঁজে পেতেন না। আল্লাহ বলেন,

وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُم بِالْكِتَابِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتَابِ وَمَا هُوَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِندِ اللّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِندِ اللّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ

"আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা মনে কর যে, তার কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে।"

[আল ইমরান ৭৮]


আপনারা জানেন, বাবেল শহরে শয়তানের আবৃত্ত যাদুশাস্ত্রসমূহকে যখন বাদশাহ সোলাইমান ইবনে দাউদ আলাইহিসালাম একত্রিত করে তার নিজের সিংহাসনের নিচে পুঁতে রাখে, ইহুদীরা শয়তানের প্ররোচনায় সোলাইমান[আ:] এর পরলোকগমনের পর যাদুশাস্ত্র সমূহকে খুঁড়ে বের করে এবং সেসব শাস্ত্রকে সোলাইমান[আঃ] এর লেখা বলে দাবি করে, তাকেই যাদুকর বলতে শুরু করে। অর্থাৎ এরা শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র সমূহকে সোলাইমান[আঃ] উপর আরোপ করে[২২] এবং নিজেরাও এর অনুসরন করে। আল্লাহ এসব ইহুদীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন,"তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।"[আল বাকারা - ১০২]

ইহুদীরা আজও এক্সপ্যানশন ও কন্ট্রাকশনের কুফরি সৃষ্টিতত্ত্বকে শেখায়। Mrs shimona tzukernik হেসিডিক ট্রেডিশনের উপর ভর করে এই মহাবিশ্বের অরিজিন্সের ব্যপারে শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন, সৃষ্টিকর্তা কোন কিছুই নতুন করে সৃষ্টি করেন নি বরং তিনি তার অস্তিত্বকে কিছুটা contract বা সংকুচিত করে তারই অস্তিত্বকে সৃষ্টিজগত হিসেবে প্রকাশ করেন[সর্বেশ্বরবাদ]! নিঃসন্দেহে এসব শয়তানেরই শিক্ষা। সুতরাং, বাবেল শহরের স্যাটানিক চ্যান্টিং থেকেই এক্সপ্যানশন-কন্ট্রাকশনভিত্তিক সাইক্লিক্যাল অরোবোরিক ইউনিভার্সের তত্ত্বটি এসেছে।

 

অকাল্ট সিম্বল অরোবোরাস দ্বারা যাদুকররা জন্ম,মৃত্যু,জীবন এবং বৃহত্তর পরিসরে মহাবিশ্বের চিরন্তন অসীম সাইক্লিক তথা আবর্তনচক্র বা পুনরাবৃত্তিকে প্রকাশ করে[তথ্যসূত্রঃউইকিপিডিয়া]।স্ট্রোল[২০০৪] অরোবোরাসের চিত্র দ্বারা জগৎ সংসার/সমসারের আবর্তনচক্রকে বুঝিয়েছে। এটাই সকল অকাল্ট ফিলসফার তথা যাদুশাস্ত্রের অনুসারীদের বিশ্বাস[২০]। নস্টিসিজমে [Gnosticism], সর্পের নিজের লেজকে নিজে গ্রাস করার প্রতীক দ্বারা পার্থিব চৈতন্যের অসীম চীরঞ্জীব অস্তিত্বকে বোঝানো হয়। মিশরীয় আইকনোগ্রাফিতে দেখানো নিজের লেজকে গিলতে থাকা সর্পের প্রতীক তথা ouroboros পাশ্চাত্যে প্রবেশ করে গ্রীক ম্যাজিক্যাল ট্রেডিশনের হাত ধরে। এ যাদুশাস্ত্রীয় তাৎপর্যবাহী প্রতীক নস্টিসিজম, হার্মেটিসিজম ও আলকেমিতেও খুব বেশি ব্যবহার হয়।

অকাল্ট ফিলসফার Carl jung বলেন,"আলকেমিস্টরা তাদের নিজেদের পন্থায় প্রকৃতির স্বাতন্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার ব্যপারে আমাদের চেয়ে ভাল জানেন,তারা এ সংক্রান্ত প্যারাডক্স অরোবোরাসের প্রতীক দ্বারা বোঝায়,যাতে দেখানো হয় একটি সর্প তার নিজের লেজ গ্রাস করছে। অরোবোরাসের একটি অর্থ হচ্ছে ইনফিনিটি বা অসীমতা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা। এ প্রাচীন প্রতীকে একটি জিনিস নিজেকেই গ্রাস করানোকে দেখায়, এবং নিজেকে চক্রাকার প্রক্রিয়ায় আবদ্ধ করে।.... এই ফিডব্যাক প্রক্রিয়া একই সাথে অমরত্বের প্রতীক। যেহেতু অরোবোরাসে দেখানো হয় যে এটা নিজেকেই হত্যা করছে এবং নিজেকেই জীবনে ফিরিয়ে আনছে। নিজে নিজেই উর্বর করছে একাএকাই জন্ম দিচ্ছে।...."

Martin Rees অরোবোরাসকে ব্যবহার করেন ইউনিভার্সের বিভিন্ন স্কেলকে বোঝানোর জন্য।  ১০-২০cm[সাবএ্যাটমিক] লেজ থেকে ১০২৫cm মাথা[সুপারগ্যালাক্টিক] পর্যন্ত। রিজ বলেন,"মাইক্রো ওয়ার্ল্ড ও কস্মোর সাথে আন্তঃসম্পর্ক অরোবোরাসের দ্বারা বোঝানো যায়।"যেহেতু মাথা ও লেজ একত্রিত হয়ে চক্রটিকে পূর্ণ করে।

খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ থেকে ১ অব্দের বৈদিক শাস্ত্র ঐতেরয় ব্রাহ্মনে বৈদিক রিচুয়ালগুলোকে তুলনা করা হয়েছে "সর্পের নিজের লেজ নিজে গ্রাস করার"[সাইক্লিক] মত করে। কুণ্ডলিনীকে বোঝাতেও অরোবোরাসকে ব্যবহার হয়। মধ্যযুগীয় যোগ-কুণ্ডলিনী উপনিষদে আছে, "কুণ্ডলিনী শক্তি কচি পদ্মের ডগার ন্যায় দ্যুতি ছড়ায়,অনেকটা একটা সর্পের মতো, যেটা নিজের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তার লেজকে তার মুখের মধ্যে গ্রাস করিয়ে তন্দ্রায় শুয়ে আছে"। [১.৮২]

 

 

সুতরাং বুঝতে পারছেন অরোবোরাসের অরিজিন্স কত পুরোনো। বৈদিক এ শাস্ত্রে শয়তানি শক্তিকে অরোবোরাসের সাথে তুলনা করা হয়েছে। জার্মান অর্গ্যানিক কেমিস্ট August Kekulé তার জীবনের একটি ইউরেকা মুহুর্তের বর্ননা করেছেন যখন সে অরোবোরাসের স্বপ্নময় কল্পনাচিত্র দেখে বেনজিনের স্ট্রাকচারকে বুঝতে পেরেছেনঃ "I was sitting, writing at my text-book; but the work did not progress; my thoughts were elsewhere. I turned my chair to the fire and dozed. Again the atoms were gamboling before my eyes. This time the smaller groups kept modestly in the background. My mental eye, rendered more acute by the repeated visions of the kind, could now distinguish larger structures of manifold conformation: long rows, sometimes more closely fitted together; all twining and twisting in snake-like motion. But look! What was that? One of the snakes had seized hold of its own tail, and the form whirled mockingly before my eyes. As if by a flash of lightning I awoke; and this time also I spent the rest of the night in working out the consequences of the hypothesis."

অর্থাৎ তিনি সেই কুণ্ডলিনী শক্তির থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে বেনজিনের স্ট্রাকচার বুঝতে পেরেছেন। অরোবোরাস[৬] এর মূল তাৎপর্য যেটা সেটা হলো, এর দ্বারা এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আদি-অন্তবিহীন, সেল্ফ অর্গ্যানাইজড মহাবিশ্বকে বোঝানো হয় যার শেষ মানেই আরেকটি শুরু। সেল্ফ সাস্টেইন্ড, সেল্ফ ডিপেন্ডেন্ট, সেল্ফ অর্গ্যানাইজড ইউনিভার্স নিজেই নিজের সৃষ্টি ঘটায় এবং অসীম সংখ্যকবার ধ্বংস সৃষ্টির সাইকেলের মধ্যে চালিত হয়।এটা যাদুকরদের পুনর্জন্ম ও অস্তিত্বের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে অসীমতা ও অমরত্বের আকিদার তাৎপর্যও বহন করে। এ Ouroboric ইমপ্লিকেশন পাওয়া যায় মিশরীয় দেবতা-বন্দনা গাঁথায়ঃ "I am the Phoenix, the fiery Sun, consuming and resuming myself." অর্থ: "আমি ফিনিক্স, জ্বলন্ত সূর্য, নিজে নিজেই নিঃশেষিত ও পুনরাবির্ভাব ঘটাচ্ছি। 

— Hymn to Sekhmet 



অরোবোরাসের ন্যায় আরেকটি অকাল্ট তাৎপর্যবাহী জিনিস হলো অন্তহীন গিঁট[endless knot]। তিব্বতীয় বৌদ্ধমতে ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ইন্দু সভ্যতার মাটির শিলালিপিতে আবিষ্কৃত এই অন্তহীন গিঁটের[৭]  দ্বারাও সাইক্লিক্যাল সংসার বা নিরন্তর আবর্তন চক্রকে বোঝায়। উইকিপিডিয়ায় অনুযায়ী,The endless knot iconography symbolised Samsara i.e., the endless cycle of suffering or birth, death and rebirth within Tibetan Buddhism.

[উইকিপিডিয়া]

 

রেনেসাঁর পর পিথাগোরিয়ান গ্রীক যাদুশাস্ত্রের হাত ধরে পাশ্চাত্যে সাইক্লিক্যাল ইটারনাল অসোলেটিং ইউনিভার্সের অনুপ্রবেশ ঘটে। কিন্তু যাদুশাস্ত্রের অনুসারীরা প্রথম থেকেই বিশ্বব্যাপী কস্মোলজিক্যাল আইডিয়ার মৌলিক বিষয়গুলোকে পরিবর্তনের মাধ্যমে যাদুশাস্ত্রীয় তত্ত্বের অভিমুখী করতে মনস্থ হয়। এজন্য সাইক্লিক্যাল কস্মোলজির মত এত গভীর মেটাফিজিক্যাল আইডিয়ার দিকে রিরাইট করার পরিবর্তে আব্রাহামিক থিওলজির সাথে প্রকাশ্য সংঘর্ষে থাকা ছোট বিষয়গুলোর দিকে বেশি মনোযোগ দেয়া হয়। যেমন স্পেস,হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি, প্ল্যানেটারি নোশন, পৃথিবীর স্ফেরিক্যাল আকার ইত্যাদি। এসমস্ত বিষয়গুলো যখন মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় তখন থেকে মেটাফিজিক্সের আল্টিমেট প্রশ্নোত্তরের দিকে যাওয়া শুরু হয়। এর মূল যাত্রা শুরু হয় ব্ল্যানকুই ও নীটসের মত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের হাত ধরে। ১৮৭১ সালে Louis Auguste Blanqui একটি নিউটনিয়ান কস্মোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ডকে কল্পনা করে, যেখানে স্থান ও কাল অনন্ত।তিনি ইটারনাল রিকারেন্সকে গাণিতিকভাবে নিশ্চিত সত্য বলে প্রমাণ করার দাবি করেন[৮]।

 

ব্ল্যাংকুইর পাশে ছিলেন ফ্রেডরিক নীটসে। এটাই নীটসে[Friedrich Nietzsche] লেখালিখির কেন্দ্রীয় বিষয়ে ছিল। হাইডেগার তার লেকচারেও নীটসের প্রসঙ্গে এটা বলেন। নীটসের এ সংক্রান্ত প্রথম পাওয়া যায় The Gay Science এর aphorism 341("The Greatest Weight") এ। তিনি তাতে প্রারম্ভিক ভাবে এটাকে সরাসরি বাস্তব অবস্থা হিসেবে না উপস্থাপন করে একে হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। হাইডেগারের মতে, নীটসে ইটারনাল রিকারেন্সের[চিরন্তন প্রত্যাবর্তন/পুনরাবৃত্তি] বিষয়টিকে সত্য বা মিথ্যা তা না বলে, এ সংক্রান্ত প্রশ্নের বোঝা চাপিয়ে দেন। তিনি এর সাথে আরো কিছু চিন্তাধারার সমন্বয় করেন, এর একটি হচ্ছে amor fati। আমোর ফাতি শব্দের Amor অর্থ ভালবাসা, fati অর্থ fate বা ভাগ্য। এর অর্থ ভাগ্যবরণ বা ভাগ্যকে ভালবাসা। অর্থাৎ যা কিছু হচ্ছে সবকিছুকে চোখ বুজে সন্তুষ্টি সাথে বরণ করা, মেনে নেয়া, ভাগ্য বা অবস্থার পরিবর্তনের ব্যপারে হতাশা। ইহুদী শাস্ত্র এক্লেসিয়াস্টিসেও একই রকম পেসিমিস্টিক চিন্তাধারা পাওয়া যায়। 

 

ইটারনাল রিকারেন্সের বিষয়টি নীটসে[Nietzsche] "দ্য গে সায়েন্স" বইয়ের ২৮৫ ও ৩৪১ নং সেকশনে পাওয়া যায়। এই কন্সেপ্টটির বিশদ বর্ননা আছে ২০০৭ সালে Søren Kierkegaard এর সাথে প্রকাশিত এক নোটে। নীটসে সবচেয়ে সংক্ষেপে এবং পরিষ্কারভাবে এই চিন্তাধারার প্রকাশ করেন যখন তিনি বলেন,"সবকিছুই ফিরে এসেছে। লুব্ধক তারকা, এবং মাকড়শা এবং তোমার এই মুহুর্তের চিন্তাগুলো, এবং তোমার এই সর্বশেষ চিন্তাটি যে সবকিছুই ফিরে এসেছে।" 

 

Lou Andreas-Salomé দেখিয়েছেন যে, নীটসে তার এ তত্ত্বকে উপস্থাপনের সময় প্রাচীনকালের সময়ের সাইক্লিক্যাল কন্সেপ্ট তথা কালচক্রের সাথে সংযোগ ঘটিয়েছেন; বিশেষ করে পিথাগোরিয়ানদের সাথে এবং অবশেষে ধ্যানযোগের সাথে। নীটসের সমসাময়িক Henri Lichtenberger এবং Charles Andler তাদের লিখিত তিনটি কিতাবে নীটসের অনুরূপ একই ইটারনাল রিকারেন্স হাইপোথেসিসের নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। নীটসে এই কন্সেপ্ট পিথাগোরিয়ানদের থেকে যেভাবে গ্রহন করেছেন, একইভাবে তিনি এই বিষয়ে সরাসরি শয়তান দ্বারাও প্রভাবিত ছিলেন। শয়তানই সরাসরি তাকে এই কুফরি আকিদার মধ্যে গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে।এর প্রমাণ তিনি নিজের লেখাতেই দিয়েছেন।Nietzsche লিখেছেনঃ"কেমন হবে যদি কোন এক দিন বা রাত্রে একটা শয়তান[ডিমন] আপনার একাকীত্বে ভরা সময়ে আপনার পিছনে লুকিয়ে থাকে এবং বলে,"এই জীবন যাতে তুমি এখন বেচে আছো, এটাতে তুমি এই [জীবনের]আগেও বেচে থেকে পার করেছো, এবং ভবিষ্যতেও আবারো অসংখ্যবার পার করবে; এবং এতে কোন নতুনত্বের কিছুই নেই; প্রত্যেক সুখ, দুঃখ,আনন্দ, প্রত্যেক চিন্তা, দীর্ঘশ্বাস এবং জীবনের সমগ্র অব্যক্ত ক্ষুদ্র বা বৃহৎ সবকিছুর পুনরাবৃত্তি বা প্রত্যাবর্তন ঘটবে হবে,সবই অপরিবর্তিত সাক্সেসন ও সিকোয়েন্সে ঘটবে? -- এমনকি এই মাকড়শা এবং এই গাছের ভেতরে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো, এমনকি এই মুহুর্তটি আমিও। অনন্ত সময়কাচের এই অস্তিত্বটি বার বার উলটে যেতে থাকে,এবং তুমিও ওই বালু কণার মত[উলটে গিয়ে বার বার প্রত্যাবর্তন করতে থাক]!"

[Gay Science 341]


Walter Kaufmann বলেন যে Nietzsche সম্ভবত Heinrich Heine এর লেখা থেকে এ তত্ত্বকে গ্রহন করেছেন, যিনি লিখেছিলেন:"সময় অনন্ত,কিন্তু সময়ের মধ্যে থাকা বস্তুজগত সসীম। তারা হয়ত ছোট ছোট পার্টিকেলে বিভাজ্য;কিন্তু এই পার্টিকেলগুলো, পরমাণুগুলোর সংখ্যা নির্দিষ্ট। এবং তাদের কনফিগারেশনের বস্তুও নির্দিষ্ট সংখ্যক।এখন হয়ত লম্বা একটা সময় পেরিয়ে গেছে সমন্বিত অসীম পুনরাবৃত্তি প্রক্রিয়ার শাশ্বত নীতির, সকল কনফিগারেশনসমূহ যা জগতে আগে ছিল, তা পরস্পর সামনে আবারো সাক্ষাত করবে,আকর্ষন করবে,বিকর্ষন করবে।"[৯]

 

Henri Poincaré তার “recurrence theorem” এর দ্বারা ১৮৯০ সালে প্রমান করেনঃ আবদ্ধ আবর্তন চক্রের[পার্টিকেল অসীমতার দিকে ছুটতে পারেনা] একটা মেকানিক্যাল সিস্টেমের মধ্যে,যেকোন অবস্থায় যার মাধ্যমে এই সিস্টেমটি অতিক্রম করে, সেটি ভবিষ্যতে অসীম সংখ্যকবার আরবিট্রারি এ্যাকুরেসিতে অভিগমন করবে। পইনকেয়ারের রিকারেন্স থিওরাম Nietzsche'র 'সমকামি বিজ্ঞান'[দ্য গে সায়েন্স] কিতাবে ইটারনাল রিকারেন্সের ব্যপারে করা প্রশ্নের আট বছর পর প্রমাণিত হয়। ব্ল্যাঙ্কুই দাবি করেন তিনি পইনকেয়ারের রিকারেন্স থিওরামে উপনীত হয়েছিলেন প্রায় একযুগেরও বেশি সময় ধরে। Nietzsche ইটারনাল রিকারেন্সকে সাধারন থট এক্সপেরিমেন্ট হিসাবে উপস্থাপন করেন নি বরং একে জেনুইন কস্মোলজিক্যাল মেটাফিজিক্যাল এক্সপ্ল্যানেশন হিসাবে উপস্থাপন করেছেন। তার বলা ইটারনাল রিকারেন্সের সাথে তার সমকালীন পদার্থবিজ্ঞানী Ludwig Boltzmann এর কথার কোন তফাৎ ছিল না। 

 

 

যেহেতু আমাদের বাসস্থান অস্তিত্বের প্রকৃতি সংক্রান্ত বিষয়ে যাদুশাস্ত্রীয় বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়ে গিয়েছিল আউটার স্পেস ভিত্তিক হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রনমি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এবার বিবর্তনবাদকে বায়োলজির বাহিরে কস্মোলজিক্যাল স্কেলে নিয়ে আসা শুরু হলো যাতে করে সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজনীয়তাবিহীন এক সৃষ্টিতত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করা যায়। সুতরাং ১৯২০ সালে বিগব্যাং নামে একটা চমৎকার কস্মোলজিক্যাল এভ্যুলুশনের তত্ত্ব নিয়ে আসলেন বেলজিয়ান ক্যাথলিক পাদ্রী Georges Henri Joseph Édouard Lemaître। 

এতে লেমাইত্রে বৈদিক অকাল্ট শাস্ত্রের অনুরূপ বললেন মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে পরমাণুর মত বিন্দু থেকে। কিন্তু তার বিগব্যাং তত্ত্বটি পূর্নাঙ্গ অকাল্ট মেটাফিজিক্সের অর্ধেক। এতে করে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়না। আপনার কাছে যদি এমন এক মহাবিশ্বের ধারনা থাকে যার শুরু আছে, এটা শুরু হয়েছে কেন, এর অস্তিত্বের শুরুর অবস্থা নিয়ে ব্যাখ্যা করতে আপনার খুব কষ্ট হবে। আপনার কাছে যদি ইউনিভার্সের সাইক্লিক্যাল মডেল থাকে,তবে এর কোন শুরু বা শেষকে ব্যাখ্যা করতে হবেনা, কারন এটা হবে অনন্ত অসীম। অপবিজ্ঞানীরাও বোকা না, এরা পুরো ডোজ একবারে দেয় না। এরা ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে যাদুশাস্ত্রভিত্তিক আকিদাকে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকে। এমনভাবে একটার পর একটা তত্ত্ব আনতে থাকে যাতে করে শয়তানি তত্ত্ব একটার পর আরেকটা আনা অনিবার্যভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে পরে।

এরই ধারাবাহিকতায় বৈদিক শাস্ত্রের বিন্দু থেকে আসা মহাবিশ্বের তত্ত্ব তথা কস্মোলজিক্যাল ইভোলিউশনঃ বিগব্যাং এর পূর্ণরূপকে অপবিজ্ঞান মহলে আনার মহান দায়িত্ব হাতে নেন সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ ইহুদী অপবিজ্ঞানী জনাব এলবার্ট আইনস্টাইন। ১৯২০ সালের দিকে পদার্থবিজ্ঞানীরা, বিশেষ করে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন মহাবিশ্বের জন্য একটি চক্রশীল মডেলকে[cyclic model] সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের মডেলের চিরস্থায়ী বিকল্প মডেল হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। ১৯৩০ সালে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন অসিলেটিং ইউনিভার্স তত্ত্বটি দ্বারা মহাবিশ্বকে একটি চিরন্তন ধারাবাহিক সাইক্লিক্যাল পুনরাবৃত্তিশীল প্রক্রিয়া হিসেবে প্রস্তাব করেন,এতে প্রত্যেকবার বিগ ব্যাং দিয়ে শুরু হয় এবং একটি বিগ ক্রঞ্চের সাথে শেষ হয়; মধ্যবর্তী সময়ে মহাবিশ্বের কিছু সময়ের জন্য এটির প্রসার ঘটবে, পদার্থের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এর পিছনে ভেঙে পড়বে এবং একটি বাউন্স ঘটাবে[বিগবাউন্স]। ১৯৩১ সালে এলবার্ট আইনস্টাইন সাইক্লিক ইউনিভার্সের ব্যপারে সর্বপ্রথম উত্থাপন করেন।এতে বলা হয় বিগব্যাং এর আগে আমাদের ন্যায় আগে একটি ইউনিভার্স ছিল, সেটা সম্প্রসারনের পর সংকুচিত হয় যাকে বিগ ক্রাঞ্চ বলে। এটা আরেকটা বিগব্যাং এর জন্ম দেয় যার ফলে আমাদের মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়।আইনস্টাইনিয়ান চিরন্তন পুনরাবৃত্তিশীল এই সাইক্লিক্যাল মডেলের পাশে ছিলেন Alexander Friedmann, Georges Lemaître এবং Richard Tolman। তাদের মত  Edgar Allan Poe এবং Friedrich Nietzsche উভয়েরই ইউনিভার্সের ব্যপারে সাইক্লিক মডেল ছিল।

 

প্রথম পর্বেই দীর্ঘ আলোচনা করেছিলাম যে জনাব আইনস্টাইন ইহুদী হয়েও ভারতীয় বৈদিক কুফরি শাস্ত্রের অনুরক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন ভগবতগীতার ভক্ত। সুতরাং এতে সন্দেহ নেই যে তিনি ওই বৈদিক অকাল্ট অসীম মহাজাগতিক জন্ম পুনর্জন্মের আবর্তনচক্রের কুফরি আকিদাকে অপবৈজ্ঞানিক পরিমণ্ডলে নিয়ে আসা শুরু করেন যাতে করে সৃষ্টিকর্তাকে শতভাগ নিষ্প্রয়োজন করা যায়। 

 

ভারতীয় উপমহাদেশের জুন্দুল্লাহদের আমির জনাব আস্বেম ওমরের[হাফি.] মতে ইহুদি অপবিজ্ঞানী আইনস্টাইন তাত্ত্বিকভাবে ইহুদীদের আসন্ন মসীহের থেকে যাবতীয় জ্ঞান আহরণ করে প্রচার করেন[বিস্তারিত পাবেন ২১তম পর্বে]। সুতরাং সন্দেহ নেই যে এটা সেখান থেকে আসা জ্ঞানগুলোরই একটি, তদ্রুপ বৈদিক সাইক্লিক্যাল অসিলেটিং ইউনিভার্স মডেলের অন্তর্নিহিত তত্ত্বঃ কন্ট্র‍্যাকশানের[বিগক্রাঞ্চ] অনুরূপ এক্সপ্যানশন তথা বিগব্যাং এর যে থিওরি প্রচলিত আছে সেটাও মসিহের থেকেই অনুমোদিত বিশুদ্ধ কুফরি আকিদা। বিগব্যাং তথা ইউনিভার্সাল এক্সপ্যানশন পূর্নাঙ্গ সাইক্লিক্যাল অকাল্ট কস্মোগনিরই ৫০%,যেটাকে এতকাল আলাদা করে নিষ্পাপ চেহারায় প্রচার হয়েছে। বাকি ৫০% তত্ত্ব বিগক্রাঞ্চ তথা ইউনিভার্সাল কন্ট্রাকশন। পূর্নাঙ্গভাবে সাইক্লিক্যাল অসিলেটিং মডেল বা বিগবাউন্স। এজন্যই প্রথমদিকে বলেছিলাম, বিগব্যাং কোন নিষ্পাপ তত্ত্ব নয় বরং যাদুশাস্ত্রভিত্তিক কুফরি সৃষ্টিতত্ত্বেরই অর্ধাংশ। 

 

অপবিজ্ঞানীরা সবসময়ই একটা বিশেষ আকিদাগত ধারাকে প্রমোট করতে থাকে, একটু ব্যতিক্রম কিংবা প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিংবা অভীষ্ট লক্ষ্যে[থিওরি অব এভ্রিথিং(কুফর)] পৌছতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, এমন কোন কথাকে অপবিজ্ঞানমহল সহ্য করবেনা। উদাহরণস্বরূপ এখন ম্যাটেরিয়ালিস্টিক ফিজিক্সের পতনের পরবর্তী যুগ এবং আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্সের যুগ,এ সময়টাতে রিডাকশনিজমের পক্ষে কেউ যতই দলিল প্রমাণ আনুক না কেন কোন গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা। প্রাচীন অকাল্ট শাস্ত্রভিত্তিক জ্ঞানই আজকের ফিজিক্স। যেহেতু বাংলাদেশে সমস্ত কিছু দেরীতে আপডেট হয়,সেহেতু এখনো প্রাতিষ্ঠানিক ফিজিক্স সংক্রান্ত শিক্ষার ৫০-৬০ বছর আগের কনক্লুশন নিয়ে পড়ে আছে, এরা শ্রোডিঞ্জার-নিলস বোরের প্যারাডাইমের অনুসরণ করে না, আইডিয়ালিস্টিক মেকানিকসের ব্যপারে অজ্ঞ।

 

যেহেতু, অপবিজ্ঞানমহল একদিকে যেমন তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যের বাহিরের কোন কিছুকে সহ্য করে না, তেমনিভাবে তারা সেই লক্ষ্যকে পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে, সেখানে পৌঁছানোর পূর্বের থিওরেটিকাল সিড়িগুলোকে ম্যাথম্যাটিক্যালি নির্ভুল করতে থাকে। মাঝেমধ্যে প্রব্লেম রিয়্যাকশন সল্যুশনের নীতিও অনুসরণ করে, কখনো বা লক্ষ্যের থেকে বিচ্যুত কোন তত্ত্বে সাময়িকভাবে স্থির হয়; আকাঙ্ক্ষিত থিওরিকে আরও নিপুণভাবে ডেভেলপড হবার জন্য। সাইক্লিক্যাল ইউনিভার্স মডেল এমনই একটি অভীষ্ট লক্ষ্য। আইনস্টাইনিয়ান সাইক্লিক্যাল মডেলের পক্ষে প্রথম দিকে অনেক ফিজিসিস্ট কাজ করেন। যেমন আলেকজান্ডার ফ্রাইডম্যান, কর্নেলিয়াস ল্যাঙ্কজোস, উইলিয়াম ডি সিটার প্রমুখ। ফ্রাইডম্যান আইনস্টাইনের পাশাপাশি ১৯২২ সালে অসিলেটিং ইউনিভার্সের পক্ষে ব্যাপক গবেষণা চালায়। কিন্তু পরবর্তীতে আইনস্টাইনিয়ান সাইক্লিক্যাল মডেলে টাইম স্কেল প্রব্লেমের দরুন অনেক বিজ্ঞানীরা এর থেকে দূরে থাকেন। ১৯৩০ সালে জাপানের পদার্থবিজ্ঞানী Tokio Takeuchi সাইক্লিক্যাল কন্সেপ্টের সপক্ষে কাজ করেন। মজার বিষয় হলো,শুরু থেকে দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত সাইক্লিক্যাল অসিলেটিং ইউনিভার্সের[অনন্ত পুনরাবৃত্তিশীল চক্র] সপক্ষে ছিলেন বিগব্যাং তত্ত্বের প্রবক্তা ক্যাথলিক পাদ্রী জর্জ লেমাইত্রে[১০]! মাঝেমধ্যে সপক্ষে বলেছেন। বস্তুত, তার বিগব্যাং তত্ত্বের উৎস সাইক্লিক্যাল ইউনিভার্স মডেল, যেখান থেকে মাত্র অর্ধেকটার প্রচার করেন। তবে, তিনি পাদ্রী হবার দরুন কখনো মুখ ফুটে এই কালচক্রীয় মডেলে বিশ্বাসের টেস্টিমনি দেন নি, কারন এটা বললে তার প্রিস্টগিরি তো যাবেই,এমনকি খ্রিষ্টান পরিচয় হারিয়ে নাস্তিক, প্যাগান বলে ভৎসনা পাবে। কারন এই সাইক্লিক্যাল মহাজাগতিক ব্যাখ্যা সৃষ্টিকর্তা/পরকাল/শুরু/শেষ সহ সমস্ত আব্রাহামিক ধারণাকে অস্বীকার করে। এটা সম্পূর্ন বিপরীত মেরুর।



যাইহোক,১৯৪০ সালের দিকে সাইক্লিক্যাল মডেলের প্রচারকের দায়িত্ব পালন করেন George Gamow,Ralph Alpher এবং Robert Herman।১৯৫০ সালের পর রেলেটিভিস্টিক সাইক্লিক্যাল মডেলের প্রচার করেন ইংল্যান্ডের William Bowen Bonnor এবং নেদারল্যান্ডের Herman Zanstra। ১৯৮০ সালের ইনফ্ল্যাশন থিওরির হোরাইজন প্রব্লেমের সমাধান হিসেবে আসবার পরে বিগবাউন্স থিওরি সকলের গভীর পর্যালোচনায় আসে যা ইউনিভার্সের বৃহত্তর স্ট্রাকচারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিগবাউন্সকে সহজে বোঝাতে এভাবে বলা যায় যে, বিগবাউন্স=বিগব্যাং+বিগক্রাঞ্চ। সাইক্লিক্যাল মডেলের অন্য আরেক নাম হচ্ছে এই বিগবাউন্স । "বিগ বাউন্স" শব্দটি বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে 1987-এ প্রকাশিত হয়েছিল, এটি প্রথমে ওল্ফগ্যাং প্রিস্টার এবং হান্স-জোয়াচিম ব্লোমের স্টার্ন আন্ড ওয়েলট্রামের এক জোড়া নিবন্ধের (জার্মান ভাষায়) শিরোনামে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি ১৯৮৮ সালে আইওসিফ রোজেন্টালের বিগ ব্যাং, বিগ বাউন্স, একটি রাশিয়ান ভাষার বইয়ের (একটি ভিন্ন শিরোনামের) সংশোধিত ইংরেজি ভাষার অনুবাদে এবং ১৯৯১ সালে প্রিস্টার এবং ব্লোম ইন অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের একটি নিবন্ধে (ইংরেজিতে) প্রকাশিত হয়েছিল[১৯৬৫ সালে পেনজিয়াস এবং উইলসনের কস্মিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড সন্ধানের সাথে বিগ ব্যাং মডেল সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার পরে ১৯৬৯ সালে এলমোর লিওনার্ডের একটি উপন্যাসের শিরোনাম হিসাবে এই বাক্যটি স্পষ্টভাবে ছিল।]।Carl Friedrich von Weizsäcker, George McVittie প্রমুখ বিজ্ঞানীরা বিগবাউন্স মডেলকে সমর্থন করতেন।

 

১৯৮০ এর শুরুতে গবেষণায় ধরা পড়ে ইউনিভার্সের লার্জ স্কেলে স্ট্রাকচার ফ্ল্যাট,হোমোজিনিয়াস এবং আইসোট্রপিক। পরবর্তীতে ৩০০ আলোকবর্ষ দূরত্ব ব্যাপী একটা পরীক্ষনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যাতে করে দেখা যায় মহাবিশ্বের কত দূরত্ব পর্যন্ত একই রকমের পদার্থগত বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে তৈরি। তখন ইনফ্লেশন তত্ত্বের বিভিন্ন সূত্র এবং তাদের বিস্তারিত তাৎপর্য দ্রুত তাত্ত্বিক অধ্যয়নের বিষয় হয়ে উঠেছিল।ইনফ্লেশন তত্ত্বটি কোন বিকল্পের তত্ত্বের অভাবে, হোরাইজন সমস্যার প্রধান সমাধান হয়ে উঠেছিল। ২০০০ এর দশকের গোড়ার দিকে, কিছু বিজ্ঞানী ইনফ্লেশন তত্ত্বকে সমস্যাযুক্ত এবং অযোগ্য বলে প্রমাণিত করেন, কারন এর বিভিন্ন প্যারামিটারগুলো যে কোনও পর্যবেক্ষণের সাথে সামঞ্জস্য করতে পারে, এটাকে ফাইন টিউনিং প্রবলেম বলা হয়। বিগ বাউন্স এদিক দিয়ে একটা অলটারনেটিভ কন্সেপ্ট, যেটা প্রেডিক্টিভ এবং হোরাইজন প্রবলেমের সম্ভাব্য ফলসিফাইয়েবল সমাধান। এজন্য এটাকে নিয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গভীর গবেষণার আওতায় রাখা হয়।[উইকিপিডিয়া]

 

১৯৮০ সালে বিজ্ঞানী কার্ল সেগান টেলিভিশন ডকুমেন্টারি ভিডিও Cosmos: A Personal Voyage এ সাইক্লিক্যাল অসিলেটিং ইউনিভার্সের কথা বলেন বৈদিক প্যাগান সৃষ্টিতত্ত্বের রেফারেন্সে। তিনি হিন্দুদের সাইক্লিক্যাল কস্মোলজির ভূয়সী প্রশংসা করে একে সবচেয়ে বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব বলে স্বীকৃতি দেন। তিনি বলেন, "হিন্দু ধর্মই একমাত্র পৃথিবীর মহান ধর্ম যেটা মহাবিশ্বের ব্যপারে বলে যে এটা অনন্তবার ধ্বংস ও পুনর্জন্মের চক্রের মধ্যে রয়েছে। এটার সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে আধুনিক মহাকাশবিজ্ঞানের সম্পর্কযুক্ত। এটা সাধারন দিবারাত্রির কথা বলে যেটা ব্রহ্মার ক্ষেত্রে ৮.৬৪ বিলিয়ন বছরে এক চক্র পূর্ণ হবার কথা বলে, যেটার বয়স পৃথিবী ও সূর্যের চেয়ে বেশি এবং বিগব্যাং এর থেকে অর্ধেক। একটা ধারনা প্রচলিত আছে যে, এ মহাবিশ্বটি দেবতার কল্পনা, যিনি ১০০ ব্রহ্মবর্ষ পর এক স্বপ্নহীন নিদ্রায় নিমজ্জিত হয় তখন মহাবিশ্বও তার সাথে স্তিমিত হয়। এটা চলতে থাকে পরবর্তীতে তার আরেক ব্রহ্মশতাব্দী শুরুর আগ পর্যন্ত।

তিনি আবারো রিকম্পোজ করতে শুরু করেন এবং আবারো আরেকটি মহাজাগতিক পদ্মস্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এই সময়ে অন্যান্য জায়গায় অসীম সংখ্যক মহাবিশ্ব আছে যেখানে প্রতিটির জন্য আলাদা আলাদা দেবতা রয়েছে যারা মহাজাগতিক স্বপ্ন দেখছে। এই মহান বিশ্বাসটি অন্য আরেকটি বিশ্বাসের সাথে তালে লয়ে মিল আছে, সেটি হয়ত আরও বড় ধারনা, এটা হলো মানবজাতি হয়ত দেবতাদের স্বপ্ন নয়,বরং দেবতারাই মানুষের স্বপ্ন[মানে দেবতাদের রূপকার্থে বোঝানো হয়]।ভারতে অনেক দেবতা আছে, এবং একেক দেবতার একাধিক প্রতিরূপ আছে। এখানকার কলাব্রোঞ্জের এই দেবতাটি শিবের প্রতিরূপ। সবচেয়ে মহিমান্বিত অভিজাত ব্রোঞ্জমূর্তিটি সেটি, যেটি মহাজাগতিক চক্রের শুরুর সৃষ্টিপ্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করে। একে বলা হয় 'শিবের মহাজাগতিক নৃত্য'। এ দেবতার এই প্রতিমূর্তি কে বলা হয় নটরাজ, এ নৃত্যের রাজা দেবতার চারটি হাত রয়েছে। উপরের ডানদিকের হাতে আছে একটি ড্রাম, যেটা সৃষ্টির শব্দ করে। বায়ের হাতটি অগ্নিজিহ্বা, যেটা মহাবিশ্বের ব্যপারে স্মরণ করায় যে এই মহাবিশ্ব নতুন সৃষ্টি হয়েছে। এবং বিলিয়ন বছর পর ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।

সৃষ্টি এবং ধ্বংস। এই গভীর সুন্দর ধারনাটি হিন্দু বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। আমি ভাবতে ভালবাসি যে এটা আধুনিক মহাকাশবিষয়ক ধারনারই পূর্বানুমান। কোন সন্দেহ নেই এতে যে আমাদের মহাবিশ্ব বিগব্যাং এর পর থেকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু এটা পরিষ্কার না যে এই সম্প্রসারণ চিরকাল ধরে হতে থাকবে কিনা। নির্দিষ্ট পরিমানের পদার্থ যদি পরিমাণে অল্প হয়, তাহলে গ্যালাক্সিগুলোর মিচুয়াল গ্রাভিটেশন অপর্যাপ্ত হবে সম্প্রসারণ চালু রাখার জন্য, এটা মহাবিশ্বের অস্তিত্বের বিলোপ ঘটাবে। কিন্তু মহাবিশ্বে যদি আরো অনেক পদার্থ গুপ্ত অবস্থায় থাকে, যা আমাদের জানাশোনার বাহিরে, যেমন ধরেন ব্ল্যাকহোলের মধ্যে কিংবা গ্যালাক্সির মধ্যের অদৃশ্য উষ্ণ গ্যাসের মধ্যে, তাহলে মহাবিশ্ব সবকিছুকে ধরে রাখবে এবং ভারতীয় সংকোচন ও প্রসারণ চক্রের সেই ধারনার ন্যায় এক মহাজগত এর পর আরেক মহাজগত, এক মহাবিশ্বের পর আরেক মহাবিশ্ব, সীমাহীন মহাবিশ্ব তৈরি হতে থাকবে।যদি আমরা oscillating universe এ বাস করি, তাহলে বিগব্যাং মহাবিশ্বজগতের সৃষ্টির শুরু নয় বরং এটা হবে কেবলমাত্র আগের চক্রের পরিসমাপ্তি, গত মহাজাগতিক অবতারের ধ্বংস।"[১১]

 

বেদান্তশাস্ত্রীয় কুফরি মহাকাশতত্ত্বের ভক্ত কার্ল সেগান একা নন। তার পাশে আছেন,নিলস বোর, ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ,আরউইন শ্রোডিঞ্জার,রবার্ট ওপেনহেইমার,জর্জ সুদর্শন, ফ্রিতজফ কাপ্রা সহ অনেকেই। উইকিপিডিয়া বলে,Several prominent modern scientists have remarked that Hinduism (and also Buddhism and Jainism by extension as all three faiths share most of these philosophies) is the only religion (or civilization) in all of recorded history, that has timescales and theories in astronomy (cosmology), that appear to correspond to those of modern scientific cosmology, e.g. Carl Sagan,[21] Niels Bohr, Erwin Schrödinger, Werner Heisenberg,[22][23][24] Robert Oppenheimer,[25] George Sudarshan,[26] Fritjof Capra[27] etc.[১২]

(উইকিপিডিয়া)



সুতরাং এটা সুস্পষ্ট যে, বিগব্যাং বিগক্রাঞ্চসহ সমুদয় চিন্তা মূলত অপবিজ্ঞানীগন অকাল্ট টেক্সটগুলো থেকে ধার করেছে, এখন এই কুফরি আকিদাবাহি কস্মোলজিকে পুনরায় ভারতীয় অকাল্ট শাস্ত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ দেখে হিন্দুয়ানি মহাকাশ তত্ত্ব এবং হিন্দুদের আকিদার ব্রহ্মান্ড[কস্মিক এগ] সবচেয়ে সায়েন্টিফিক বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আগেই উল্লেখ করেছি যাদুশাস্ত্রীয় মহাবিশ্বের আকৃতি ত্রিমাত্রিক টোরাস বা ডোনাটের আকৃতির। বৈদিক ব্রহ্মাণ্ড বা কস্মিক এগ দ্বারা ক্রমাগত অসিলেশন প্রকাশ করা হয়।যাদুশাস্ত্রের অনুসারীরা বিশ্বাস করে টোরাস আকৃতির মহাবিশ্বকে ক্রমাগত সাইক্লিক্যাললি অসোলেট করতে থাকে। এটা বহুল প্রত্যাশিত বিষয় যে এটাও অপবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠা করবে।

 

Itzak Bentov এর A Brief Tour of HIgher Consciousness নামের শেষ বইটি তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, চেতনা সহ সমগ্র বাস্তব জগতকে টেরোডিয়াল ম্যানিফোল্ডে চিত্রিত করা যায়।তার ডায়াগ্রামে গ্যালাক্সিগুলোকে দেখানো হয় টরয়েডাল "হোয়াইট হোল" আকারে যেখান থেকে শক্তি নির্গত হয় এবং বিপরীত দিকে থাকা "ব্ল্যাক হোল" এটিকে আবার ভিতরে ফিরিয়ে নিয়েছে। বেল হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য বড় আবিষ্কারগুলির আবিষ্কারক Arthur Young  টরয়েডাল স্ট্রাকচারকে মহাবিশ্বের কস্মোলজিক্যাল মডেল হিসেবে ধরে এর ফাংশন নিয়ে গবেষণা করে  রিফ্লেক্সিভ ইউনিভার্স নামের একটি গ্রন্থ রচনা করেন।পৃথিবীর ক্ষেত্রের চিত্র, যাকে বিজ্ঞান ভ্যান অ্যালেন বেল্ট বলে সে ক্ষেত্রটি ডোনাট আকারের। এটিকে বিশুদ্ধ জ্যামিতিতে টিউব টোরাস বলা হয়। এটি এমন একটি জ্যামিতিক আকৃতি, যা প্রকৃতিতে প্রায়শই পাওয়া যায়।কণা পদার্থবিজ্ঞানে, ডোনাট[doughnut] শেইপটি পার্টিকেলকে ছোটানোর জন্য সর্বোত্তম পরিবেশ দেয়। তাছাড়া এটি অধিকতর কার্যকর পদ্ধতিতে এই জাতীয় মেশিনগুলির দ্বারা গঠিত প্লাজমা ধরে রাখতে এবং পরিচালনা করতে পারে। টরোইডাল জ্যামিতি স্পেসের ভ্যাকুয়াম শক্তি সঞ্চয়ের চৌম্বকগুলির জন্য আকর্ষণীয়, কারণ এটি বাহ্যিক চৌম্বকীয় ক্ষুদ্র ক্ষেত্র তৈরি করে। রাশিয়া এই ধারণাটি প্রথম প্রকাশ করেছিল Tokamak accelerator এর মাধ্যমে । ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি এই রাশিয়ান মডেলটির উন্নয়ন  করেছে এবং প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই নতুন ডিজাইনগুলো ব্যবহার করছে। এই ডিভাইসগুলি ফিউশনের নীতিতে কাজ করে।  যে কৌশলে সূর্য এবং নক্ষত্র  বিপুল পরিমাণে আলো এবং তাপ উৎপাদন করে। এই ধরনের অবিশ্বাস্য ডিভাইসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক কার্য হবে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন করা।

 

১৯৮৪ সালে মস্কোর Landau Institute এর Alexei Starobinsky এবং Yakov Borisovich Zel'dovich মহাবিশ্বের আকৃতিগত বিষয়ে three-Torus model কে প্রস্তাব করে। এই থিওরিতে মহাবিশ্বকে ত্রিমাত্রিক টোরাস আকৃতির বলে দাবি করা হয়[১৩]। ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডের কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির গ্লেন স্টার্কম্যান এবং তার সহকর্মীর কিছু আনুমানিক প্যাটার্নের অনুসন্ধান করেছিলেন, কিন্তু কিছুই পাননি।  স্টেইনার এবং তার সহকর্মীরা নাসার উইলকিনসন মাইক্রোওয়েভ অ্যানিসোট্রপি প্রোব ২০০৩-এর তথ্যাবলী পুনরায় বিশ্লেষণ করেছেন, '3-টোরাস' তথা ডোনাট ইউনিভার্সেরও সন্ধানে। স্টেইনার বলেন, আকর্ষণীয় ডাকনাম থাকা সত্ত্বেও এই আকৃতিটি কল্পনা করা শক্ত। 3-torus হলো পরিচিত ডোনাট আকৃতির একটি এক্সটেনশন এবং কাগজের একটি আয়তক্ষেত্রাকার টুকরো থেকেও এটি গঠিত হতে পারে। আকাশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার ওঠানামা কীভাবে অসীম মহাবিশ্ব এবং একটি ডোনাট মহাবিশ্ব উভয় ক্ষেত্রে  সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়া উচিত, সেটা খুঁজতে স্টেইনারের দল তিনটি পৃথক কৌশল ব্যবহার করেছিল। প্রত্যেকবারে, মহাবিশ্বের ডোনাট শেইপের ধারনার সাথে উইলকিনসন মাইক্রোওয়েভ অ্যানিসোট্রপি প্রোবের ডেটার সবচেয়ে ভাল মিল হয়েছিল। এ গবেষক দলটি এমনকি মহাবিশ্বের সম্ভাব্য আকার চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে, যার সীমা পার হতে প্রায় ৫৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ সময় লাগবে।

 

ফ্রান্সের প্যারিস অবজারভেটরির Jean-Pierre Luminet  ২০০৩ সালে ফুটবল আকারের মহাবিশ্বের প্রস্তাব করেছিলেন,তিনি স্টেইনারের ডোনাট ইউনিভার্স মডেল সক্রান্ত কাজ পছন্দ করেন। তিনি সম্মত হন যে তার বিশ্লেষণগুলো সঠিক হতে পারে।স্টেইনার বিশ্বাস করেন যে এই বছরের শেষের দিকে চালু হওয়া ইউরোপের প্ল্যাঙ্ক স্যাটেলাইট দ্বারা তৈরি করা  কস্মিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড এর আরো সুনির্দিষ্ট মেজারমেন্ট মহাবিশ্বের আকৃতির সঠিক উত্তর দিতে সহায়তা করবে। স্টেইনার বলেন,"দার্শনিকভাবে, আমি ধারণাটি পছন্দ করি যে মহাবিশ্ব সীমাবদ্ধ এবং একদিন আমরা এটির পুরোপুরি অন্বেষণ করতে এবং এটি সম্পর্কে সমস্ত কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হব। তবে যেহেতু পদার্থবিজ্ঞান এর সিদ্ধান্ত দর্শনের দ্বারা নেওয়া যায় না, তাই আশা করি প্লাঙ্ক স্যাটালাইট তার জবাব দেবে।"



একবিংশ শতাব্দীর গোড়ায় সদ্য আবিষ্কৃত ডার্ক এনার্জির উপাদানটি একটি ধারাবাহিক অনন্ত পুনরাবৃত্তিকারী চক্রশীল বিশ্বজগতের জন্য নতুন আশা জোগায়। একই সাথে ইনফ্লেশনারী তত্ত্বের সমস্যাগুলো আলোচনা হতে থাকে। পদার্থবিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বে ভবিষ্যত ভাগ্য নিয়ে অনেকগুলো ব্যাখ্যা দ্বার করান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে মহাবিশ্বের বর্তমান এক্সিলারেশন বা সম্প্রসারণ মহাজাগতিক মহাসংকোচন[বিগ ক্রাঞ্চ] এরই পূর্বাভাস। অর্থাৎ এক্সপ্যানসনের পরই আসবে কনট্র‍্যাকশন। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলবার্ট আইনস্টাইন প্রফেসর পদার্থবিজ্ঞানী পল স্টেইনহার্ট এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল টুরোকের মত হলো, হায়ার ডাইমেনশনের সংঘর্ষ হয়ত লোয়ার ডাইমেনশনে কন্ট্রাক্ট ঘটায়। ডার্ক এনার্জি বা ফ্যানটম এনার্জির জন্যও এটা ঘটতে পারে। বিগ ক্রাঞ্চ হয়ত নতুন পদার্থ ও রেডিয়েশন তৈরি করে আরেকটি বিগব্যাং ঘটাবে। প্রফেসর স্টেইনহার্ট বলেন, যাই ভবিষ্যতে ঘটবে, এটা হয়ত আমাদের অতীতেও ঘটেছিল। বিগব্যাং স্থানকালের শুরু নয় বরং এটা অতীতের মহাযুগের কন্ট্রাকশনেরই সংযোগস্থল। মহাবিশ্বের প্রকৃতি অনেকটা সাইক্লিক বা চক্রাকারে আবর্তনশীল যেটা বার বার এক্সপ্যানশন ও কন্ট্রাকশন[সংকোচন - প্রসারণ] এর মাধ্যমে বার বার অস্তিত্বে আসে। যদি এই থিওরি সঠিক হয়,এটা একটা কস্মোলজিক্যাল ধাঁধাঁর সমাধান দিতে পারে। যেটা হলো, কিভাবে গ্যালাক্সি,নক্ষত্র ও গ্রহ সমূহ অস্তিত্বে এলো। বিগক্রাঞ্চ ছাড়া শুধুমাত্র বিগব্যাং একটা বিরক্তিকর ফিচারবিহীন ইউনিভার্সের কথা বলে। মহাসংকোচন কালে মহাবিশ্বের র‍্যান্ডম কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশনই হয়ত পরবর্তী এক্সপ্যানসনের দ্বারা গ্যালাক্সি তথা মহাবিশ্বের অস্তিত্ব রচনা করে। পদার্থবিজ্ঞানীরা স্পেসের মধ্যে গ্রাভিটেশনাল ওয়েভকে খুঁজছেন।বিজ্ঞানী স্টেইনহার্ট বলেন এই ওয়েভ স্পেকট্রামই বলে দেবে বিগব্যাং এর আগে আরেকটি ইউনিভার্সের অস্তিত্ব ছিল কিনা। 

 

Brane cosmology model একটি নতুন ধরনের সাইক্লিক মডেল, এটি পূর্ববর্তী ekpyrotic model থেকে উদ্ভূত। ২০০১ সালে পল স্টেইনহার্ট এবং নীল টুরোক এটি প্রস্তাব করেছিলেন। তত্ত্বটি আমাদের মহাবিশ্বকে মাত্র একবার নয়, সময়ের সাথে সাথে বারবার বিস্ফোরিত হয়ে অস্তিত্বের আসবার বর্ণনা দেয়। থিওরিটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা করতে পারে যে মহাবিশ্বের প্রসারকে ত্বরান্বিতকারী মহাজাগতিক ধ্রুবক হিসাবে পরিচিত শক্তিটি কেন বিগ ব্যাং মডেল দ্বারা যা অনুমান করা হয়েছে, তার চেয়ে ছোট। Paul Steinhardt বলেন,"ইনফ্ল্যাশনারি তত্ত্বটি ব্যর্থ হয়েছে।যদি আমাদের অতীতে একটি বিগবাউন্স ঘটে থাকে, তবে এটা আরো অনেকবার হয়ে থাকবে না কেন?এ ক্ষেত্রে এটা বিশ্বাসযোগ্য যে আমাদের ভবিষ্যতেও একটা হবে। আমাদের সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব ভবিষ্যতে সংকোচন হওয়া শুরু করবে, এটা ঘন অবস্থায় পৌছাবে এবং আবারো বাউন্স সাইকেল[চক্র] শুরু করবে।"

ইনফ্ল্যাশন কনসেপ্টটি যাদের হাতে তৈরি হয়েছে তিনি তাদের একজন। কিন্তু তিনি এখন এটার ব্যপারে নিরাশ, এর চেয়েও ভাল তত্ত্ব খুজছেন।এজন্য তিনি নিয়ে এসেছেন বিগবাউন্স মডেল। স্টেইনহার্ট বলেন,"ইনফ্ল্যাশন বলে যে মাল্টিভার্স রয়েছে,এবং মহাবিশ্বের অসীম সংখ্যক উপায় আছে যার মাধ্যমে মহাবিশ্ব অস্তিত্বে এসেছে,এবং আমরা আছি মসৃন ও সমতল মহাবিশ্বে। এটা সম্ভব তবে এমন নয় যে এটাই হয়েছে। বিগ বাউন্স মডেল বলে এটাই সেই প্রক্রিয়া যার দ্বারা অবশ্যই মহাবিশ্ব অস্তিত্ব লাভ করে।" নীল টুরক এর মতে আমাদের ইউনিভার্সের মিরর ইউনিভার্স আছে। সেখানে আমাদের মতই সবকিছুর মিররভার্সন আছে। এটাকে বলা যায় এণ্টিম্যাটার ইউনিভার্স। ২০১১ সালে, পাঁচ বছর ধরে চলা ২,০০,০০০ ছায়াপথ ও ৭ বিলিয়ন মহাজাগতিক বছর দূরত্ব পর্যন্ত চালানো জরিপ নিশ্চিত করেছে যে "ডার্ক এনার্জি আমাদের মহাবিশ্বকে সম্প্রসারনের গতিকে ত্বরান্বিত করছে।" এজন্য মহাবিশ্বের অধিকাংশ এনার্জিই গ্রাভিটেশনালি রিপালসিভ ডার্ক এনার্জি হবে।প্রফেসর স্টেইনহার্ট বলেন এ ঘটনা দ্বারা বোঝা যায় যে এই মহাবিশ্ব তার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে[১৪]। 


২০০৩ সালে, Peter Lynds একটি নতুন অরোবোরিক[অরোবোরাস] ইউনিভার্স মডেল সামনে এনেছিলেন যাতে সময় চক্রযুক্ত[সাইক্লিক]। তাঁর তত্ত্বে আমাদের ইউনিভার্স অবশেষে প্রসারিত করা বন্ধ করবে এবং তারপরে সংকুচিত হতে শুরু করবে। হকিং এর ব্ল্যাকহোল তত্ত্বে অনুসারে সিঙ্গুলারিটিতে পরিনত হওয়ার আগে সংকুচিত মহাবিশ্ব লাফিয়ে প্রসারণ শুরু করবে। লিন্ডস দাবি করেছেন যে, সিঙ্গুলারিটি থার্মোডাইনামিকসের দ্বিতীয় নীতি লঙ্ঘন করে এবং এটি মহাবিশ্বকে সিঙ্গুলারিটির দ্বারা আবদ্ধ হয়ে থাকতে বাধা দেয়। লিন্ডস দাবি করেন যে মহাবিশ্বের একই ইতিহাস প্রতিটি সংকোচন প্রসরণের আবর্তন চক্রতে একটি চিরন্তন পুনরাবৃত্তিতে পুনরাবৃত্তি[Eternal Recurrence]  হতে থাকবে। লিন্ডসের তত্ত্বটি সেসময়ে তেমন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি এর পিছনে ভাল ম্যাথমেটিক্যাল মডেলের অভাবে।


সুইস এমেচার ফিজিসিস্ট নাসিম হারামাইন বিজ্ঞানযাত্রার প্রথম দিকে আরও অনেক ফিজিসিস্টদের সাথে বসে পদার্থবিজ্ঞানীদের প্রশ্ন করেন বর্তমান ইউনিভার্সের মডেল কিরূপ? সবাই সহজে উত্তর দেয়, এটা বেলুনের মত এক্সপ্যান্ড হচ্ছে। কিন্তু তিনি যখন এক্সপ্যানসনের পরের সৃষ্টিজগতের ভাগ্যের ব্যপারে প্রশ্ন করেন, বিজ্ঞানীগন নিরব হয়ে যান। নাসিম নিরবতা ভেঙ্গে ব্যাখ্যা করেব, নিউটনের তত্ত্ব মতে প্রতিটি কাজের অপোজিট বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে সুতরাং এক্সপ্যান্ডিং স্পেস কন্ট্র‍্যাক্ট করবে, ঠিক ওইভাবে যেভাবে বেলুনটি সর্বোচ্চমাত্রায় ফোলানোর পর কন্ট্রাক্ট করবে। নাসিমের দেখানো ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরিকে আমরা আগেই দেখিয়েছিলাম যে তিনি ব্ল্যাকহোলকে সবকিছুর মূলে রেখেছেন, এ্যাটম থেকে গ্যালাক্সি, ইউনিভার্স সবক্ষেত্রে। তার মহাবিশ্বের মডেল অনুযায়ী এই সৃষ্টিজগত অনবরত এক্সপ্যান্সন ও কন্ট্র‍্যাকশনের ফলে সৃষ্টি। অর্থাৎ একটা বৃহৎ ব্ল্যাকহোলের দুইপাশে বিপরীতমুখী দুটি পোলারাইজড ম্যাগনেটিক ফিল্ডের অনবরত গতিশীল সংকোচন ও প্রসারণ ঘটিয়ে মহাবিশ্বের জন্ম ও পুনর্জন্ম প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। ব্ল্যাকহোলের দুইপার্শ্বের পরস্পর বিপরীতমুখী ফোর্স্ফিল্ড ভারসাম্য সৃষ্টি করে যার এক পাশ পজেটিভ আরেক পাশ নেগেটিভ। আমাদের vantage point থেকে আমরা দেখি যে, আমরা ব্ল্যাকহোল বা ইকুইলিব্রিয়াম পয়েন্টের কাছাকাছি অবস্থান থেকে এক্সপ্যান্ড হচ্ছি, তাই মনে হয় যে এই মহাবিশ্ব প্রসারণশীল। কিন্তু এর বিপরীত অঞ্চলে ঠিকই ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে ভরটেক্সের মধ্যে চলে যাচ্ছে যেটা কিনা ওই অংশ থেকে মনে হবে মহাবিশ্ব ধ্বংস বা সংকোচনের দিকে যাচ্ছে। এটা অনেকটা নির্দিষ্ট সীমানাযুক্ত দ্বিমুখী টোরাস ফিল্ড। এক্সপ্যান্সন তথা প্রসরণের শুরুটা হচ্ছে বিগব্যাং। এবং সংকুচিত হয়ে আসা হচ্ছে বিগক্র‍্যাঞ্চ বা ধ্বংস। এই সৃষ্টি ও ধ্বংসের লুপড প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধতার মাঝে অসীমতার শিক্ষা দেয়।   টাইম ও স্পেস বারবার রিসাইকেল্ড হচ্ছে এজন্য স্থান-কাল অনন্ত, অসীম। এখন দুনিয়াতে যা কিছুই ঘটছে তার কোন কিছুই নতুন না। Nothing is new under the sun! সমস্ত জ্ঞান আগে থেকেই মহাবিশ্বে অস্তিত্বশীল, সময় সমস্ত বিদ্যা বা জ্ঞানকে সময় মত মানুষের নিকট রিলিজ করবার কাজটি করে। বার বার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে[২৩]।


মিচিও কাকুও সিক্লিক্যাল ইউনিভার্সে বিশ্বাসী। তিনি বলেন,"ব্যক্তিগতভাবে আমি কন্টিনিউয়াল জেনেসিসে বিশ্বাসী,যেটা হচ্ছে অনন্ত প্রক্রিয়া.."[১৫]। ২০০৭ সালে চ্যাপেল হিলের নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের Lauris Baum এবং Paul Frampton ফ্যান্টম এনার্জির [phantom energy] ধারণার উপর নির্ভর করে একটি ভিন্ন ধরনের সাইক্লিক মডেল প্রস্তাব করেছিলেন[১৬]। Dr Paul Frampton বলেন, "এই সাইকেলটি[মহাজাগতিক পুনরাবৃত্তি চক্র] অসীম সংখ্যকবার ঘটেছে, এভাবেই সময়ের কোন শুরু বা শেষের চিন্তাকে বাতিল করে দেয়।" অন্টারিওর Perimeter Institute for Theoretical Physics এর পরমপ্রীত সিং ফিজিক্স ওয়েবসাইট Phys.org তে বলেন,"এই [সাইক্লিক্যাল] ধারনার তাৎপর্য  হলো,এটি বিগব্যাং এর আগে কি ঘটেছিল, সে উত্তর দেয়। আমরা যদি বিগব্যাং এর আগের অবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারতাম তবে দেখতাম সবকিছুই[পার্থিব ও মহাজাগতিক ইতিহাস]একই অবস্থায় আছে, বিগ বাউন্সের পরবর্তী ইউনিভার্সের জেনারেল ফিচারস অপরিবর্তিত থাকবে। এটা একই ডাইনামিক্যাল ইক্যুয়েশন,আইনস্টাইনিয়ান ইক্যুয়েশন অনুসরন করবে যখন ইউনিভার্স খুব বৃহৎ আকারে পরিণত হবে। সমস্ত বস্তুগত পদার্থ অপরিবর্তিত থাকবে। এবং এটারও একই রকম বিবর্তন[evolution] হবে। যেহেতু বিগবাউন্সের আগের ইউনিভার্স কন্ট্রাক্ট বা সংকুচিত হতে থাকবে,এর সব কিছু এমন দেখতে লাগবে যেন আমরা সময়ের উলটো দিকে যাচ্ছি।" বিগ ক্রাঞ্চকে বলা হয় মহাবিশ্বের সংকোচনের পিরিয়ড যখন সর্বোচ্চ মাত্রায় মহাবিশ্ব প্রসারিত হয় তখন কন্ট্র‍্যাকশন শুরু হয়। মহাবিশ্বের সংকোচন ঘটবে অনেক গুলো ব্ল্যাক হোল সৃষ্টির মাধ্যমে যা একত্রিত হয়ে বৃহৎ এক ব্ল্যাল হোলের সৃষ্টি করবে। এই ব্ল্যাকহোল সবকিছুকে একবিন্দুতে সংকুচিত করবে যেখানে গ্রাভিটির কোয়ান্টাম ইফেক্ট খুব রিপালসিভ। সেখানে আরেকটি বিগব্যাং ঘটানোর জন্য যাবতীয় অবস্থা তৈরি করবে। এরপরে আরেকটি ইউনিভার্স সাইকেল শুরু হবে। এভাবে অসীম অনন্তকাল চলতে থাকবে। 

 

২০০৬ সালে অক্সফোর্ড এর [emeritus Rouse Ball professor] ম্যাথমেটিশিয়ান ও নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী স্যার রজার পেনরোজ একটি আপেক্ষিক তত্ত্ব ভিত্তিক একটি সাইক্লিক মহাজাগতিক তত্ত্বকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন, যাকে তিনি "কনফর্মাল সাইক্লিক কসমোলজি"[১৭] বলেন। পাশে ছিলেন Maciej Dunajski,Pawel Nurowski,prof. paul tod। এটা কনফরমাল জিওমেট্রির উপর নির্ভরশীল যা বিগব্যাং এর সিঙ্গুলারিটিকে অস্বীকার করে।প্রত্যেক ইউনিভার্সের সাইকেল একেকটি সিকোয়েন্সিয়াল ইয়ন্স। তত্ত্বটি এটা ব্যাখ্যা করে যে, মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হতে থাকবে যতক্ষণ না সমস্ত পদার্থ নিঃশেষ হয়ে যায় এবং আলোয় রূপান্তরিত হয়ে যায়। যেহেতু মহাবিশ্বের কোন কিছুরই সময় বা দূরত্ব থাকবে না, এটি বিগ ব্যাংয়ের সাথে অভিন্ন হয়ে ওঠে, ফলস্বরূপ এক ধরণের বিগ ক্রাঞ্চ তৈরি হয় যা পরবর্তী বিগ ব্যাং হয়ে যায়, এভাবে পরবর্তী অসীম চক্রসমূহ অসীমভাবে চলতে থাকে।পেনরোজ বলেন ,"আমি বরাবরই ইনফ্ল্যাশন তত্ত্বকে কৃত্রিমতাপূর্ন তত্ত্ব মনে করি। আমি যে দৃষ্টিভঙ্গি লালন করি সেটা হলো, [মহাবিশ্ব] বিগব্যাং এর দ্বারা শুরু হয়নি। আমরা আজ যা দেখছি তার সমন্বিত চিত্র এবং মহাবিশ্বের সমগ্র ইতিহাসকে আমি বলি অনেকগুলো aeon[যুগ/কাল] এর অনুক্রম বা পারম্পর্য রূপে আসে আরেকটি aeon।"

পেনরোজ মনে করেন সিএমবি[কস্মিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড] তে যথেষ্ট প্রমান আছে সিক্লিক্যাল মডেলের। এভাবে নেইল টুরক এবং স্টেইনহার্টের সাফল্যের পর পেনরোজও একটি সফল সাইক্লিক্যাল ইউনিভার্স মডেল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মূলত সরাসরি হিন্দুদের বৈদিক শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে এটা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজেই এ কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন,সাইক্লিক্যাল মডেলটি "অনেকটাই যেন হিন্দু দর্শন।" উইকিপিডিয়া অনুযায়ী: Sir Roger Penrose is among the present-day physicists that believe in a cyclical model for the Universe, wherein there are alternating cycles consisting of Big Bangs and Big Crunches, and he describes this model to be "a bit more like Hindu philosophy" as compared to the Abrahamic faiths.[উইকিপিডিয়া]

২০১০ এর দিকে পেনরোজের সাইক্লিক্যাল মডেল ব্যাপক পরিচিতি পায়, এরপরে ২০১১ সালে Nikodem Popławski দেখিয়েছেন যে Einstein-Cartan-Sciama-Kibble এর গ্র্যাভিটি তত্ত্ব অনুসারে প্রাকৃতিকভাবেই বিগ বাউন্স সংঘটিত হয়।২০১২ সালে, আইনস্টাইনের মাধ্যাকর্ষণ ফ্রেমের মধ্যেই বিগ বাউন্সের একটি নতুন তত্ত্ব সফলভাবে নির্মিত হয়েছে। এই তত্ত্বটি পদার্থের বাউন্স এবং একপাইরোটিক কসমোলজিকে[Ekpyrotic cosmology] একত্রিত করে। 

 

 

আপনারা জানেন বর্তমান যুগ হচ্ছে আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্সের যুগ, কোয়ান্টাম বিপ্লবের যুগ। যদিও  পেনরোজ, স্টেইনহার্টরা রেলেটিভির ফ্রেইমওয়ার্কের ভেতরে সফল সাইক্লিক্যাল অসিলেটিং ইউনিভার্স মডেল তৈরি করতে সফল হয়েছে, এরপরেও স্বভাবতই আইডিলিস্টিক কোয়ান্টাম ফ্রেইমওয়ার্কের উপর তৈরিকৃত সাইক্লিক্যাল কস্মোলজি থাকবে গ্রহনযোগ্যতার শীর্ষে। এবং অনিবার্যভাবে এটাকেই প্রতিষ্ঠিত করা হবে। পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির Abhay Ashtekar, Tomasz Pawlowski এবং Parampreet Singh আইসোট্রপিক এবং সমজাতীয় মডেলগুলোর জন্য লুপ কোয়ান্টাম কস্মোলজির মধ্যে ২০০৬ সালে বিগ বাউন্স তত্ত্ব সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের Theoretical physicist Martin Bojowald থিওরি অব এভ্রিথিং ক্যান্ডিডেটঃ Loop quantum gravityএর উপর ভিত্তি করে গবেষণা করেন, যেটা ইউনিভার্সের আন্ডারলেইং এক্সিস্টেন্সের তথা মেটাফিজিক্যাল ব্যাখ্যা দেয়। তিনি ২০০৭ সালে লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটির সাথে বিগবাউন্স মডেলের প্রস্তাব করেন। ২০০৭ এর জুলাই মাসে একটি গবেষণা প্রকাশ করেছিলেন, এটা ছিল লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটি সম্পর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে, যা বিগব্যাং এর আগেরকার সময়ের ব্যপারে গাণিতিক সমাধান। মূলত মার্টিন বোজোওয়াল্ডের হাত ধরে ১৯৯৯ সালে লুপ কোয়ান্টাম কস্মোলজির যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটি ভিত্তিক গবেষণায় বিংশ শতাব্দীর বিগবাউন্স তত্ত্বটি পুনরায় ব্যাপকভাবে সমর্থন পেতে থাকে। এটা oscillatory universe তথা Big bounce থিওরিকে আবারো গ্রহণযোগ্যতার আসনে নিয়ে আসে। লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এ কস্মোলজিক্যাল তত্ত্বকে বলা হয় Loop quantum cosmology[LQC]। সাইক্লিক্যাল কন্সেপ্টবিহীন শুধু বিগব্যাং তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো, এটা দাবি করা হয় যে বিগ ব্যাংয়ের মুহুর্তে শূন্য ভলিউম এবং অসীম শক্তির এককতা ছিল। এটিকে জেনারেল থিওরি অব রেলেটিভিটি অনুযায়ী পদার্থবিজ্ঞানের শেষ হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এ কারণেই কেউ কেউ চাইবে, কোয়ান্টাম ইফেক্টগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক এবং সিঙ্গুলারিটিকে বর্জন করা হোক। বিগবাউন্স বলে, শূন্য বা অসীম ভলিউম নয় বরং সবকিছুর একটা মিনিমাম ও মেক্সিমাম ভলিউম আছে।লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটিও বলে সিঙ্গুলারিটির মাধ্যমে বিগব্যাং শুরু হয়নি যেটা কিনা অসীমরকম ঘন ও অসীম ক্ষুদ্রাকৃতির কারন লুপকোয়ান্টামগ্রাভিটি তত্ত্বানুযায়ী স্পেসের ক্ষুদ্রাকৃতির একটা লিমিট আছে, যেটা হচ্ছে 10⁻99cm2। এবং একইভাবে এতে ম্যাক্সিমাম ভলিউমের এনার্জি ডেন্সিটির তাৎপর্য রয়েছে। LQG অনুযায়ী যখনই ম্যাক্সিমাম ভলিউমের এনার্জি ডেন্সিটিতে রিচ করবে তখন এতে যোগ করা অতিরিক্ত এনার্জি ধাক্কা দিয়ে রিপেল করবে। এজন্য Loop Quantum Gravity বলে যে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে বিগবাউন্সের দ্বারা। আমাদের এ মহাবিশ্বের পূর্বে একইস্থানে আরেকটা মহাবিশ্ব ছিল, এটি ম্যাক্সিমাম আকার ধারন করে অতঃপর কন্ট্রাক্ট[সংকোচন] করতে শুরু করে অতঃপর সংকুচিত হয়ে সাথে সাথে আবারো বাউন্স ব্যাকের মাধ্যমে পূর্বাবস্থায়[expansion] নিয়ে আসে তথা মহাবিশ্ব পুনর্জন্মলাভ করে[১৮]। লুপ কোয়ান্টাম কসমোলজি একটি কোয়ান্টাম ব্রীজের কথা বলে যেটা কস্মোলজিক্যাল ব্রাঞ্চের সম্প্রসারণ ও সংকোচনের মাঝামাঝি অবস্থান করে।কোয়ান্টাম বাউন্স ঘটে যখন ইউনিভার্স সংকুচিত হয়ে কম্প্রেসড হয়ে যায়। স্থান কালের মাঝে কম্প্রেসনের একটা লিমিট আছে যাকে কোয়ান্টাম লুপ বলে। কম্প্রেসনের শেষ পর্যায়ে কোয়ান্টাম লুপের জন্য এক্সপ্যান্সন শুরু হয়। এই কম্প্রেসন ও এক্সপ্যান্সনকে বলা হয় কোয়ান্টাম বাউন্স। লুপ কোয়ান্টাম কসমোলজির গবেষণায় দেখা গেছে যে, পূর্বে বিদ্যমান মহাবিশ্বের সংকোচন ঘটেছিল, সিঙ্গুলারিটির বিন্দুতে নয়, বরং এর আগে এমন একটি বিন্দুতে যেখানে মহাকর্ষের কোয়ান্টাম ইফেক্টগুলো এত তীব্র রিপালসিভ হয় যে মহাবিশ্ব আগের অবস্থায় ফিরে আসে, এবং পুনরায় universe গঠন করে। এই কলাপ্স ও বাউন্স[সংকোচন ও প্রসারণ] এর বিবর্তনটি একক।

 

ফ্রান্সের[Marseilles] Center of Theoretical Physics এর কস্মোলজিস্ট Carlo Rovelli LQC[loop quantum cosmology] কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন যেটা বিগব্যাং এর অতীত নিয়ে গবেষণায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন। তিনিও এতে বিশ্বাস করেন।যদিও এখনো লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটি[loop quantum gravity] থেকে বিগবাউন্স এর অস্তিত্বকে প্রমাণ করে দেখানোর অনেক কিছুই আছে,তারপরেও যথাযথ ফলাফল এবং LQG এর উচ্চশক্তির কম্পিউটারে নিউমেরিক্যাল সিমুলেশনের গবেষণায় বিগবাউন্স তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য সমূহের বলিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়েছে। ২০১২ সালেও লুপকোয়ান্টাম কস্মোলজি ফিজিক্সের সক্রিয় শাখা হিসেবে দন্ডায়মান ছিল।এটা প্রায় ৩০০ গবেষণা পত্র প্রকাশ করে[১৯]। 

 

থিওরি অব এভ্রিথিং এর মর্যাদাপ্রার্থী লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটি ইনফিনিট লুপের[২১] মধ্যে থাকা পুনরাবৃত্তিকারী চক্রশীল ইউনিভার্সের শিক্ষা দেয়। শুধুই এক্সপ্যানশন[বিগব্যাং/ইনফ্লেশন] এবং কন্ট্র‍্যাকশন[বিগক্রাঞ্চ]। লেজকে গ্রাসকরা সর্পের লেজের শেষ যেখানে মুখের শুরু সেখানে। মহাবিশ্ব অনবরত নিজেই নিজের অস্তিত্ব দিচ্ছে এবং বিলোপ ঘটাচ্ছে। অতীতে অসীম সংখ্যকবার হয়েছে ভবিষ্যতেও অসীমবার হতে থাকবে। সেই সাথে বাবেল-মিশরের যাদুকর,পিথাগোরাস ও নীটসের কথার ন্যায় যা কিছু

ঘটছে তার অসীম সংখ্যকবার পুনরাবৃত্তি হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত কোয়ান্টাম গ্রাভিটি রিসার্চের প্রস্তাবিত থিওরি অব এভ্রিথিংঃ ইমার্জেন্স থিওরিটিও এই eternal cyclical recurrence এর শিক্ষা দেয়। এটা খুব স্বাভাবিক,কারন থিওরিটি দাড়িয়েই আছে কোয়ান্টাম গ্রাভিটির উপর। তাদের অফিসিয়াল ডকুমেন্টারি ফিল্ম What is reality এর একদম শেষভাগে উপস্থাপিকা ম্যারিয়ন কির বলেন, "যা এখন হতে পারে তা এমনকি ভবিষ্যতেও হবে।কারন মহাজাগতিক মহাচৈতন্যের শাশ্বত প্রক্রিয়াটি স্থান-কালের সম্মুখে এখনই আবির্ভূত হয়ে আছে, এটা শুধু সম্ভবই না বরং এটা অনিবার্য। প্রকৃতপক্ষে Retrocausality time loops এর এভিডেন্স অনুযায়ী, সেই অনিবার্য ভবিষ্যতটি আমাদের এই মুহুর্তে কো-ক্রিয়েট করছে, এবং একই ভাবে আমরাও একে কো-ক্রিয়েট করছি।" অর্থাৎ পার্ফেক্ট অরোবোরিক ইউনিভার্স! মহাবিশ্বই যেহেতু মহাচৈতন্য এই মহাচৈতন্যের টরোইডাল অসোলেশনের ফলে ভবিষ্যৎ অতীতকে নির্মাণ করে এবং অতীত ভবিষ্যতকে। আমি কোয়ান্টাম গ্রাভিটি রিসার্চে বার্তা পাঠিয়েছিলাম এই বলে যে, তারা যেন তাদের কুফরি আকিদার প্যাকেজকে পরিপূর্ণ এবং আরো স্পষ্ট করতে সাইক্লিক্যাল লুপ কোয়ান্টাম কস্মোলজির ইটারনাল লুপের বিষয়গুলোকে সংযুক্ত করে। তারা আমার বার্তাকে এ্যাপ্রেশিয়েট করে। 


আমি বিগত পর্বে উল্লেখ করেছিলাম যাদুকরদের অসীমতার সন্ধানের কথা। যাদুশাস্ত্র মহাজাগতিক অস্তিত্বের ব্যপারে এমন ইনফিনিটির প্রতিশ্রুতি ও শিক্ষা দেয় যাতে করে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বা ভূমিকাকে লজিক্যালি একদম নিষ্প্রয়োজন করা যায়। ওদের আকিদায় মহাবিশ্ব নিজেই মহাচৈতন্য বা ইউনিভার্সাল কালেক্টিভ কনসাসনেস বা কোয়ান্টাম মাইন্ড যার অন্ত:স্থিত সবকিছুই ঈশ্বর। যেহেতু সবকিছুই ঈশ্বর,সুতরাং এই মহাচৈতন্য কখনো শেষ হবে না,এটা সেল্ফ সাস্টেইন্ড - সেল্ফ অর্গানাইজড - সেল্ফ জেনারেটেড সিস্টেম হবে যার অস্তিত্বের শুরু বা শেষ নেই। এটা নিজেই নিজের জন্ম - বিনাশ ও পুনর্জন্ম ঘটাবে। এজন্য চূড়ান্ত অসীমতার জন্য কস্মোলজিক্যাল সাইকেল অনিবার্য। এখান থেকে যাদুকররা নিজেদের অস্তিত্বের ব্যপারে চূড়ান্ত অমর ঐশ্বরিকতার প্রতিশ্রুতি পায়। অর্থাৎ আলটিমেট ডিজবিলিফ। প্রচলিত বিজ্ঞান যেহেতু প্রাচীন অকাল্টের ফিলসফিরই আধুনিক ভার্সন, সেহেতু অপবিজ্ঞানীরা এই সাইক্লিক্যাল লুপের দিকে ফিরবে এটাই স্বাভাবিক। এই মহান প্রচেষ্টা শুরু করেছিল মালউন[অভিশপ্ত] ইহুদী আইনস্টাইন। আজকের প্রতিষ্ঠিত অকাল্ট কস্মোলজিক্যাল জেনেসিস তথা বিগব্যাং সম্পূর্ন বৈদিক কুফরি তত্ত্বের শিক্ষা যেটা সাইক্লিক্যাল কস্মোলজির এক্সপ্যান্সন কন্ট্রাকশন প্রসেসেরই মৌলিক অংশ। এখান থেকেই লেমাইত্রে নিয়েছিলেন। অপবিজ্ঞানীদের মতে বিগব্যাং হয় আজ থেকে 13.8 বিলিয়ন বছর পূর্বে, এর আগে আরেকটা মহাবিশ্ব ছিল। অপবিজ্ঞানীরা সকলে  হিস্টোরিক্যাল
রিকারেন্সের ব্যপারে একমত না হলেও এ ব্যপারে একমত যে এই বৈদিক ব্রহ্মাণ্ড অনবরত  মহাসংকোচন ও মহাপ্রসারণ ঘটিয়ে একের পর এক মহাবিশ্ব রচনা করছে। জন্ম-মৃত্যু-পুনর্জন্ম ঘটানোর আবর্তে সবকিছু অসীমভাবে চলছে। এতে করে অকাল্ট শাস্ত্রের অনুসারীরা সৃষ্টিকর্তাহীন বিশ্বজগতের ব্যপারে আশ্বস্ত হয় এবং কুফরিতে অটল থাকে, যেহেতু অস্তিত্বের এই আবর্তনচক্র সীমাহীন, সেহেতু পরকাল, বিচার দিবস, শাস্তি কোনকিছুরই ভয় নেই। এভাবেই অপবিজ্ঞানের দ্বারা শয়তান মানুষকে সীমাহীন কুফরের পথে আহব্বান করে, দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি করে। উপরোল্লিখিত এস্ট্রফিজিসিস্ট - কস্মোলজিস্ট কার্ল সেগানের কথাগুলোকে স্মরণ করুন। এরা মূলত কোন আকিদার[বিশ্বাস] দিকে আহব্বান করে!এই big bang ও big crunch এর infinite oscillating cycle এর কোথাও ইব্রাহীমের রবের অস্তিত্ব কিংবা ভূমিকা কিংবা আদৌ প্রয়োজনীয়তা আছে? পরকাল বলে কিছু আছে? এই জন্ম পুনর্জন্ম চক্রের বিশ্বাসের আদি শেকড় খুঁজলে গোড়ায় মিলবে বাবেল সম্রাট নমরুদের সময়টা।সম্ভবত তখনই এই প্রাচীন কুফরি আকিদার জন্ম হয়েছে,এ নিয়ে বিস্তারিত ২য় পর্বে সংযুক্ত করব।

 

আমি আশ্চর্য হই, যখন যমীনে আল্লাহর প্রতিনিধিদের [মুসলিম] দেখি আল্লাহর কালামকে ফেলে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, এমনকি তারা এ সংক্রান্ত সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে আল্লাহর কালামের অর্থ ও ব্যাখ্যাকে উলটে দেয়, সত্যের মাপকাঠি সাহাবি আজমাঈনদের[রাঃ] সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে বলা কথাগুলোকে অগ্রাহ্য করে। উলটো তারা মুসলিম আইডেন্টিটি ঠিক রেখে কাফিরদের সাথে তালমিলিয়ে স্মার্টনেস বজায় রাখতে ওইসব বিগব্যাং-বিগক্রাঞ্চ-ইনফ্লেশনের শয়তানি তত্ত্বের সাথে বিকৃত পন্থায় আল্লাহর কথার সমন্বয় ঘটায়, কুরআনের আয়াত দ্বারা কুফরি তত্ত্বকে জাস্টিফাই করে আবার,কুফরি তত্ত্ব পাঠ করে দাবি করে যে এটাই নাকি আল্লাহ বলেছেন। মা'আযাল্লাহ! 

 

শতসহস্র লেখা পাবেন যেখানে শয়তানি কুফরি আকিদাকে কুরআনের দলিল দ্বারা সত্য প্রমাণের নিকৃষ্ট চেষ্টা চালানো হয়েছে। আল্লাহ বলেন, "আমি আকাশ নির্মাণ করেছি আমার (নিজ) ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা সম্প্রসারণকারী।"[অনুবাদ-আহসানুল বায়ান। ৫১ঃ৪৭]

এ আয়াতকে দলিল হিসেবে ধরে আধুনিক মুসলিমরা দাবি করে,যে এখানে বিগক্রাঞ্চের পর ঘটা বিগব্যাং পরবর্তী cosmological inflation [এক্সপ্যানশন] তথা মহাসম্প্রসারণকে বোঝানো হয়েছে! লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ! এরকম বিকৃত ব্যাখ্যা দিতে আপনারাই হাজার বার দেখেছেন। অসংখ্য দ্বীনি বইপত্র, দ্বীনি ব্যক্তিত্ব, দাঈ, আলিমসহ সকল স্তরের মুসলিমরাই এই বিকৃত অভিশপ্ত কুফরি আকিদার ইসলামাইজেশনে লিপ্ত। আজকের আলোচ্য বিষয় বিগক্রাঞ্চকেও অনেক আলিম ও দাঈকে ইসলামাইজ করতে দেখেছি[২৪]। অথচ এটা কোথাকার থিওরি! এবং কতইনা নিকৃষ্ট আকিদার বার্তা দেয়! এদের অবস্থাটা এরকম যেন , পারলে শিব বিষ্ণু ব্রহ্মাকেও আল্লাহর সৃষ্ট বিশ্বজগত সৃষ্টি ও ধ্বংসকারী মাখলুক বলে বৈদিক দেবতাদেরকেও ইসলামাইজ করে নিতে পারে! আজ আস্বেম ওমর[হাফিঃ] এর মত একটা আলিমকেও খুজে পাওয়া যায়না, যিনি আইনস্টাইনদের সাথে ইহুদী মসীহের শিক্ষার যোগসূত্রের ব্যপারে উম্মাহকে সতর্ক করবেন। মিশর ও বাবেল শহর থেকে যাদুকরদের হাত ধরে আসা এই অপবৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বই কি প্রকৃত cosmogony? 

প্রকৃতপক্ষে ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্বই প্রকৃত সৃষ্টিতত্ত্ব, যেটা আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন, রাসূল[সাঃ] এবং সাহাবিদের[রাঃ] জানিয়েছেন। যে অভিন্ন কস্মোগনির বর্ননা সমস্ত আসমানী কিতাবে অভিন্ন। যে শিক্ষা সমস্ত নবী রাসূল(আ) অভিন্নভাবে দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটা আর্টিকেল সিরিজ ইতোমধ্যে pdf[২৫] আকারে প্রকাশ করেছি। আজকের এই ২২টি পর্ব লেখার উদ্দেশ্য - যাদুশাস্ত্রভিত্তিক শয়তানের শেখানো সৃষ্টিতত্ত্ব ও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার শেখানো সৃষ্টিতত্ত্বের মাঝে পার্থক্যের দেয়াল উত্তোলন এবং অভিশপ্ত কাফিরদের জ্ঞানবুহ্যে নগ্নভাবে আক্রমণ। বিগত পর্বগুলোয় আলোচিত বিষয়গুলো কাফিরদের সেইসমস্ত কুফরি জ্ঞান বা অপবিদ্যা যার বলে তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এবং পরকালকে অস্বীকার করে,শিরক ও কুফরের পথ নিয়ে অহংকার করে,এগুলো সেইসব শয়তানি প্রতিশ্রুতি ও বিদ্যা; যার উপর ভর করে কাফিররা প্রাচীনকাল থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সামরিক,বুদ্ধিবৃত্তিক,রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের আগ্রাসনে লিপ্ত। এসব সেসব শয়তানি ইল্ম ওয়াল আকিদা, যার দ্বারা আসন্ন মসিহ দাজ্জাল দুনিয়াতে রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। আমি খুলে খুলে বর্ণনা করেছি এসবের অরিজিন্স[উৎস/শেকড়] এবং এসবের আসল তাৎপর্য। হক্ক ও বাতিল এখন সুস্পষ্ট। ওয়াল্লাহি, এসব শয়তানের ও যাদুশাস্ত্রীয় শিক্ষা ছাড়া আর কিছু না। ব্যাধিগ্রস্ত বিভ্রান্ত বিকৃত চিন্তাধারার মুসলিমরা শতশত বছর ধরে শয়তান ও দাজ্জালের চালানো বুদ্ধিবৃত্তিক/আকিদা ও শিক্ষাগত আগ্রাসনে পা দিয়ে, কুফর ও ঈমানের সীমানাকে ভেঙ্গে একাকার করে দিয়েছে। এখনো অব্যাহত আছে। হয়ত এটা ইহুদীদের ত্রাণকর্তা দাজ্জালের এ্যারাইভালের আগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এই ইহুদীরাই আল্লাহর কালামের বিকৃত ব্যাখ্যাদানের মত জঘন্য অপকর্মের মাধ্যমে কাব্বালাহ তালমূদ সৃষ্টি করে অভিশপ্ত হয়েছে। মুসলিমরা অন্য সবকিছুর পাশাপাশি সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়েও এ পথে হাটা শুরু করেছে। আল্লাহর রাসূল[সাঃ] সত্য বলেছেনঃআবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (পথভ্রষ্ট হয়ে) তোমাদের পূর্ববতীদের রীতিনীতি অনুসরণ করবে বাহুতে বাহুতে, হাতে হাতে, বিঘতে বিঘতে। এমনটি তারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢোকে, তবে তোমরাও অবশ্যই তাতে ঢোকবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! (পূর্ববর্তীগণ কি) ইহুদী-খৃস্টান জাতি? তিনি বলেনঃ তবে আর কারা!


[৩৩২৬] সহীহুল বুখারী ৭৩১৯, আহমাদ ৮১০৯, 

৮১৪০, ৮২২৮, ৮৫৮৭, ২৭২২৭, ১০২৬৩, ১০৪৪৬। 

আয যিলাল ৭২, ৭৪, ৭৫। তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ ৩৮। 

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৯৯৪







[চলবে ইনশাআল্লাহ... ]






Sources:

[১]https://amp.theguardian.com/film/2009/oct/18/triangle-occult-thriller-philip-french

[২[http://www.tasteofcinema.com/2015/the-15-best-movies-influenced-by-nietzschean-philosophy/2

https://en.m.wikipedia.org/wiki/List_of_films_featuring_time_loops

[৩]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Wheel_of_time

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kalachakra

[৪]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Sa%E1%B9%83s%C4%81ra

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bhavacakra

[৫]http://sonatonvabona.blogspot.com/2019/05/blog-post_9.html

https://haribhakt.com/fake-big-bang-theories-problems-is-false/

https://www.youtube.com/watch?v=hEca1MiE4GA

[৬]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Ouroboros

http://transmissionsmedia.com/the-esoteric-ouroboros/

[৭]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Endless_knot

[৮]https://www.anthonypeake.com/eternal-return-louis-auguste-blanqui/

[৯]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Eternal_return

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Poincar%C3%A9_recurrence_theorem

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Recurrence_plot

https://aeon.co/amp/essays/is-time-a-linear-arrow-or-a-loopy-repeating-circle

https://www.preposterousuniverse.com/blog/2009/02/10/nietzsche-long-live-physics/

http://schwitzsplinters.blogspot.com/2012/10/nietzsches-eternal-recurrence-scrambled.html?m=1

[১০]https://www.cambridge.org/core/journals/science-in-context/article/continual-fascination-the-oscillating-universe-in-modern-cosmology/008B497D38AD577C1BBDF8E1D8801E35

[১১]https://medium.com/@p11deepakm/hinduism-and-the-universe-44d7c16b5376

[১২]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Religious_interpretations_of_the_Big_Bang_theory

[১৩]https://youtu.be/exc7TW8pSNM

https://youtu.be/awt-WPG0b4s

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Three-torus_model_of_the_universe

http://harmonicresolution.com/Toroidal%20Space.htm

https://www.nature.com/articles/news.2008.854

https://www.quantamagazine.org/what-is-the-geometry-of-the-universe-20200316/

[১৪]https://www.youtube.com/watch?v=cEijLstRLg8

https://www.youtube.com/watch?v=g9fyn0mZEnY

https://youtu.be/EyJzH6LY8bM

https://www.accessscience.com/content/cyclic-universe-theory/YB090037

https://physicsworld.com/a/cyclic-universe-could-explain-cosmological-constant/

https://skyandtelescope.org/astronomy-news/a-cyclic-universe/

https://medium.com/futuresin/the-oscillating-universe-d259ab408433

https://www.theguardian.com/education/2005/apr/14/research.highereducation1

https://www.salon.com/2014/07/13/the_universe_according_to_nietzsche_modern_cosmology_and_the_theory_of_eternal_recurrence

[১৫] https://www.youtube.com/watch?v=dEYDyPTZbGI

[১৬]https://www.bbc.com/future/article/20200117-what-if-the-universe-has-no-end

https://www.express.co.uk/news/science/831513/GROUNDHOG-DAY-infinite-universe-history-repeats

https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0370269319304393

https://www.researchgate.net/publication/231867856_Continual_Fascination_The_Oscillating_Universe_in_Modern_Cosmology

https://www.sciencedirect.com/science/article/abs/pii/0003491684900046

https://www.physicsforums.com/threads/can-the-universe-repeat-itself.118239/

https://www.youtube.com/watch?v=Ef0OKbT70bY

http://www.fractalfield.com/

https://youtu.be/N3bw0ksnDHg

[১৭]https://www.youtube.com/watch?v=FVDJJVoTx7s

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Conformal_cyclic_cosmology

[১৮]https://www.youtube.com/watch?v=dpmx8D5CXRA

https://www.youtube.com/watch?v=QMpkFde3euA

[১৯]https://en.m.wikipedia.org/wiki/Big_Bounce

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Loop_quantum_cosmology

[২০]https://youtu.be/ACKRZmy_yqY

https://www.thesectofthehornedgod.com/?p=2669 

https://yutani.studio/2018/02/07/alien-bible-the-cosmic-horror-of-eternal-return/

[২১] https://www.youtube.com/watch?v=E8sWTexhSN8

en.m.wikipedia.org/wiki/Infinite_loop

[২২]http://www.magicalkeysofsolomon.com/

[২৩]https://youtu.be/S0Ck707K6CA

https://youtu.be/K1jcGL74do8

[২৫] https://aadiaat.blogspot.com/2019/08/pdf.html





বিগত পর্ব সমূহের লিংক: