Monday, December 10, 2018

এলিয়েন নাকি শয়তান জ্বীন?




Extraterrestrial নাকি interdimensional?
কথিত Aliens এবং কাল্পনিক Outer space

যখন থেকে ক্যাথলিক জেসুইট সারা বিশ্বে জোড় করে জিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমিকে বইপুস্তক থেকে বিদায় দিয়ে যাদুকর ও সূর্যপুজারীদের হেলিওসেন্ট্রিক প্যান্থিয়নকে মেইনস্ট্রিম এস্ট্রোনমিতে স্থান দেওয়া হয়, তখন থেকে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল এর অস্তিত্ব নিয়ে মানুষকে কল্পনা করতে দেওয়া হয়। সেই সাথে আউটার স্পেসের মনগড়া তত্ত্বকেও স্থান দিয়ে এস্ট্রোনমি ও মেটাফিজিক্সকে নতুন করে সাজানো হয়। ইনফিনিট স্পেস আর অগণিত গ্রহ,গ্যালাক্সি,নিহারিকার কনসেপ্টটি প্রি সক্রেটিক প্যাগান যাদুকর-দার্শনিক এন্যাক্সিম্যান্ডারের প্লুরালিজমকে নতুন করে জাগিয়ে দেয়[১]। এরপরে শুরু হয় বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীদের নিয়ে ফ্যান্টাসি। অজস্র বই,গল্প,উপন্যাস,পত্রিকা ম্যাগাজিন এই প্লটের উপর লেখা হয়। পাঠকদের অধিকাংশই এসকল সায়েন্স ফিকশনকে উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা/কল্পনা মনে করে সমর্থন দিতে শুরু করে। টেলিভিশন ছড়িয়ে পড়বার পর ব্রেইনওয়াশিং এবং মাইন্ডকন্ট্রোল এর আওতা আরো বেড়ে গেল। সেই নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে আজ পর্যন্ত ম্যাসনিক হলিউড; স্পেস আর এলিয়েন প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। যতগুলো সায়েন্সফিকশন সিনেমা নির্মান করছে তার সবই আউটারস্পেস এর কন্সেপ্ট ভিত্তিক। আর স্পেস থাকা মানেই স্পেস ট্রাভেল,এলিয়েন থাকবে। এরপরে যে সিনেমা গুলো বের হতে শুরু করে তার অধিকাংশ হয় এলিয়েন ইনভ্যাশন নিয়ে। বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীরা উন্নত প্রযুক্তিসমেত পৃথিবীতে হামলা করেছে, সমস্ত দেশগুলো এক হয়ে প্রতিরোধ করছে ইত্যাদি, ইত্যাদি।
[২]
এখনকার ফিল্মগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মেটাফিজিক্যাল ব্যপার গুলোয় এলিয়েন হস্তক্ষেপ দেখিয়ে। ওরা দেখাচ্ছে মানুষের অস্তিত্বটাই এলিয়েনদের দান। মানুষের ডিএনএ'তে এলিয়েন ডিএনএ মিশে আছে। ওরা আমাদের ইঞ্জিনিয়ার। প্রমিথিউজ,ট্রান্সফরমার এই ম্যাসেজগুলোই দিচ্ছে। অন্যদিকে এসবে আছে সায়েন্টিফিক কমিউনিটির সমর্থন [৩]। মিডিয়ায় হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি ও এলিয়েনের অস্তিত্বের প্রমোশন পাবার সাথে সাথে মানুষও Unidentified flying object(UFO) এবং Unidentified submerged object(USO) দেখা শুরু করে। মেক্সিকো আমেরিকায় বিষয়টা এমন স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে ওটা খুবই সাধারন বিষয়। এ বিষয়গুলোর সূত্রপাত খুজতে গিয়ে মেলে জগদ্বিখ্যাত যাদুকর এ্যালিস্টার ক্রোওলির ১৯১৮ সালে করা 'অমলন্ত্র' রিচুয়াল(amalantra working)[৪]। ক্রোওলি Lam নামের এক এলিয়েন এন্টিন্টির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত। তিব্বতীয় ল্যাম শব্দের অর্থ পথ অথবা পথদাতা। ল্যাম দেখতে অনেকটা গ্রে এলিয়েন যেমনি দেখতে, তেমনি। অধিকন্তু, ল্যাম হচ্ছে মূলচক্রের একটি মন্ত্রও(ধ্যানের ষড়চক্রের একদম নিন্মে অবস্থিত)। বলা হয় ক্রোওলির এই রিচুয়ালের উদ্দেশ্য ছিল এলিয়েন এন্টিটির জন্য ইন্টারডাইমেনশনাল পোর্টাল[২২] খুলে দেওয়া যাতে তারা ইচ্ছেমত আমাদের ডাইমেনশনে প্রবেশ কর‍তে পারে। এরপরে ১৯৪৬ সালে আরেকটি বড় পরিসরের ম্যাজিক্যাল রিচুয়াল পালিত হয়। এর নাম দেওয়া হয় "Babalon Working"[২৬]। এতে এবার ক্রোওলির সাথে যোগ দেয় বর্তমান স্পেস এজেন্সি নাসা এবং সাইন্টোলজি কমিউনিটির ফোরফাদারগন। সেটাতেও সিরিমোনিয়াল এবং সেক্স ম্যাজিক্যাল রিচুয়াল পালিত হয় অমলন্ত্রের মত। সমস্ত অকাল্ট কমিউনিটির মধ্যে এ কথা প্রচলিত আছে যে এ রিচুয়াল দ্বারা আগের ডাইমেনশনাল গেইটওয়ে এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল এন্টিটির জন্য আরো প্রশস্ত করা হয়। এ ঘটনার পর দিয়ে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ইউএফও সাইটিং শুরু হয় ব্যাপকহারে। এলিয়েনদের দ্বারা অপহরণ, এমনকি সেনাবাহিনীরাও আক্রান্ত হবার ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছিল।
মিডিয়া সবই ওদের। বেঞ্জামিন ফ্যাঙ্কলিন, জর্জ ওয়াশিংটনও এমনকি ম্যাসন। এরা এক চক্ষুবিশিষ্ট পিরামিডের নিচে লেখে "ইন গড উই স্ট্রাস্ট" যা প্রত্যেক ডলার বিলে আজও আছে। সবার একক লক্ষ্য, একচক্ষুবিশিষ্ট মহান নেতার হাতে এক সরকার বিশিষ্ট শাসন ব্যবস্থা।
.
এদিকে জেট প্রপালশান ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা তথা ফাদার অব স্পেস এজ জ্যাক পার্সন যিনি কিনা ব্যবিলন ওয়ার্কিংয়ে ক্রোওলির সাথে ছিলেন, তিনি স্বপ্নে এক মহান ব্যক্তিকে দেখেন; যিনি তাকে অনুপ্রাণিত করছিলেন তার উদ্ভাবনী চেতনাকে,যিনি তাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন অপবিজ্ঞান ও যাদুবিদ্যাকে মিলিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য। এই মহান ব্যক্তির কথা তিনি তার লিখিত কিতাবেও উল্লেখ করেন। তিনি তাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তার নাম উল্লেখ করেন "বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল"।
যেমনটা উইকিপিডিয়াতেও এসেছেঃ
"Parsons professed to embody an entity named Belarion Armillus Al Dajjal, the Antichrist "[উইকিপিডিয়া]
.
জ্যাক পার্সন যাদুচর্চা ও চ্যানেলিং এর মাত্রা এত বাড়িয়ে ছিলেন যে তার বাসাতেই কথিত এলিয়েনের উৎপাত শুরু হয়। এমনকি বাসাও ছাড়তে বাধ্য হয়। তিনিই সর্বপ্রথম রকেটসাইন্টিস্ট যিনি 'dajjal' নামের কারো অনুপ্রেরণা ও শিক্ষার দ্বারা রকেট আবিষ্কার করেন এবং কথিত মহাকাশ বিজয়ের পথ উন্মোচন করে ফাদার অব স্পেস এজ খেতাব অর্জন করেন। এরপরে চন্দ্রবিজয়ের ইতিহাস রচিত হয়,যদিও নাসার কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা বলেন তারা এখন পর্যন্ত আসমানের ভ্যান এ্যালেন বেল্ট(১২০০ মাইল) পার হন নি[৮]। আর চাদে যাবার প্রযুক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন, ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে এখন আর নতুন করেও বানাতে পারছেন না কারন খুবই পেইনফুল প্রসেস। অনেক কঠিন![৯]
.
এ্যালিস্টার ক্রোওলির সাথে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং সাইন্টোলজির প্রতিষ্ঠাতার ল্যাম বা গ্রে এলিয়েন বিংদের আহব্বান এবং পরবর্তীতে অগনিত ইউএফও/ইউএপির উপদ্রব, সেই সাথে জেট প্রপালশান ল্যাবের রকেট আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের মনে একটা ধারনাকে গেঁথে দেওয়া হয়। সেটা হচ্ছে Outer Space(মহাশূন্য)! অর্থাৎ উপর থেকে বহির্জাগতিক প্রানীরা আসতে পারে আর আমরাও উপরে(আসমানে) যানবাহন বহির্বিশ্বে পাঠাতে পারি। এর মাধ্যমে সকল রিলিজিয়াস কমিউনিটির সিংহভাগ লোক প্রাচীন জিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমির উপর আস্থা পূর্নরূপে হারায়। তারা এবার তাদের প্রাচীন রিলিজিয়াস টেক্সটগুলোকে দাজ্জাল নামের কোন এক এন্টিটি ডিরাইভড নলেজের সাথে খাপ খাইয়ে প্রচার শুরু করে, যার ক্রমধারা আজও চলমান।
.
যাহোক, হঠাৎ করে ইউএস প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘে বললেন, " হয়ত আমাদের কোন একটা সার্বজনীন বহির্জাগতিক হুমকির প্রয়োজন যা আমাদের মধ্যকার সাধারন ঐক্যকে জাগ্রত করবে, আমি মাঝেমধ্যে ভাবি কতটা দ্রুত আমাদের মধ্যকার এই (জাতিগত) ভেদাভেদ চলে হয়ে যাবে, যদি আমরা কোন ধরনের এলিয়েনদের হুমকির মুখোমুখি হই।" [৫]
.
১৯৯৪ সালে জার্নালিস্ট এবং কন্সপাইরেসি থিওরিস্ট সার্জ মোনাস্ত নাসার প্রজেক্ট ব্লুবিম[৬] নিয়ে কথা তোলেন। এ নিয়ে একটি বইও পাব্লিশ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। এতে দাবি করা হয় নাসা বিশ্বের মোড়লদের পাশে দাঁড়িয়ে একটা ফেইক এলিয়েন ইনভ্যাশন ঘটাতে চায় যার মাধ্যমে গোটা বিশ্বের জাতি,ধর্ম,বর্নের ভেদাভেদ ভেঙে এক সরকারবিশিষ্ট বিশ্বব্যবস্থা গঠন করা যায়।
মোনাস্তের কথা অনেকে একদম কন্সপাইরেসি থিওরি বলে উড়িয়ে দিতে চায় কিন্তু স্যাটানিস্ট ক্রোওলির ল্যামের সাথে কন্টাক, ইনভোকেশন এবং ম্যাজিক্যাল ডাইমেনশনাল রিফট তৈরি, হঠাৎ ইউএফও সাইটিং শুরু এবং আশংকাজনক বৃদ্ধি, রোনাল্ড রিগ্যানের কথা, এবং হলিউডের প্রোপাগান্ডা মেলালে অনেকগুলো ডটের আনক্যানি মেলবন্ধন দেখা যায়। এটা আরো প্রগাঢ় হয় আজকের সাইন্টিফিক কমিউনিটি থেকে সমর্থন পাওয়া যায়।
পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের এলিয়েন থ্রেট দিয়ে ন্যাশনাল ব্যারিয়ার ভেঙ্গে সমগ্র দেশ গুলো এক করার বক্তব্যকে পূর্ন সমর্থন দিয়ে তিনি এলিয়েন ইনভ্যাশনের আশংকা করেন[৭]।
.
এলিয়েন নিয়ে ফ্যান্টাসি এখানেই সমাপ্ত না, বেশ কিছু ধর্মও তৈরি হয়েছে[২১]। যেমন রায়েলিজম, হ্যাভেন্স গেইট,ব্রহ্মকুমারী ইত্যাদি আরো অনেক। এসকল নতুন ধর্মগুলো এলিয়েনের হস্তক্ষেপকে হলিউডের ফিল্মের ন্যায় মানবজাতির সৃষ্টি ও ক্রমবিকাশ এবং বিবর্তনের কারন হিসেবে মানে। আমাদের দেশেও রায়েলিজমের অনুসারী রয়েছে অনেক। এরা এলিয়েনদেরকে 'এলোহিম' শব্দ দ্বারা বোঝায়, যার জন্য ইজরাইলের টেম্পল তৈরির জন্যও তাগিদ দিয়েছে।
তারা শীঘ্রই আসছেন! রায়েলিজমের শাখা বাংলাদেশেও আছে।
"Raëlians believe that scientifically advanced extraterrestrials, known as theElohim, created life on Earth through genetic engineering, and that a combination of human cloning and "mind transfer" can ultimately provide eternal life."(উইকিপিডিয়া)
.
আরেকটি ইউএফও রিলিজিয়ন ইথারিয়াস,যেটার ফাউন্ডার ইথারিয়াস নামের এক এলিয়েনের সাথে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের পরে প্রতিষ্ঠা করেন।
.
The Aetherius Society was founded in theUnited Kingdom in 1955. Its founder, George King, claimed to have been contacted telepathically by an alien intelligence called Aetherius, who represented an "Interplanetary Parliament.
(উইকিপিডিয়া)
ব্যবিলন প্রজেক্টের পরের বছরেই রাজওয়েলে ইউএফওর ক্রাশ ঘটে ; যার ধ্বংসবশেষ এরিয়া ৫১ তে পাঠানো হয়। এভাবে হাজারো ফ্লাইং ডিস্ক এবং বিচিত্র মডেলের আকাশযানের ছবি ও ভিডিও পৃথিবী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাইরাল হতে লাগলো। ৫০০ বছর আগে যখন জিওসেন্ট্রিক ফ্ল্যাট ষ্টেশনারী পৃথিবীর মডেলটি ভ্যালিড ছিল তখন এই ইউএফওর উপদ্রব একদম অচেনা ছিল। সাধারণ কেউ এসব ফ্ল্যাইং ডিস্ক কল্পনাও করতে পারতো না। কেউ কথিত 'এলিয়েন এবডাক্সনের' স্বীকারও হত না। কিন্তু জ্বীনদের দ্বারা লুকিয়ে ফেলা বা নিয়ে যাবার ঘটনা জানাশোনা ছিল। ইতোপূর্বে ফ্রিম্যাসনিক অকাল্ট নেটওয়ার্ক পৃথিবীর সকল পরাশক্তি মাথায় নিজেদের গোড়া শক্ত করে নেয়। অর্থনীতি ব্যবসা-বানিজ্য,

আশা করি বুঝতে পারছেন, রোনাল্ড রিগ্যান একদম উড়িয়ে দেওয়ার মত কিছু বলেন নি। গ্রে এলিয়েন বা ব্যবিলন ওয়ার্কিং এর দ্বারা ইনভোক করা ল্যামের বাহিনী কারা এর ব্যপারে অনকেই বুঝে গেছেন। । এরপরেও আরো স্বচ্ছ ধারনা প্রয়োজন।
.
ইউএফওলজিস্ট জ্যাকুয়েস ভ্যালি সর্বপ্রথম ইউএফও ফেনোমেননগুলোকে ইন্টারডাইমেনশনাল এন্টিটির কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। পরে এ সপক্ষে John Ankerberg এবং John Weldonও বক্তব্য রয়েছে। তারা বলেনঃ""the UFO phenomenon simply does not behave like extraterrestrial visitors."
অর্থাৎ কথিত স্পেসক্রাফট ও এলিয়েনগন এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের মত আচরণ করে না। অন্যান্য যুক্তির দিক দিয়ে ইউএফও ফেনোমেনন এর ব্যাখ্যা Interdimensional hypothesis এর দিকেই যায়। একারনে অনেক ইউএফলজিস্টরা ETH এর চেয়ে IDH কে বেশি যুক্তিযুক্ত মনে করেন।তাদের কেউ কেউ এগুলোকেই প্রাচীনকাল থেকে প্যারানরমাল/সুপারন্যাচারাল ঘটনাগুলোর ভিন্নধর্মী ম্যানিফেস্টেশন বলে মনে করেন। যেমন ইউএফওলজিস্ট জন কিল UFO গুলোকে Ghost/spirit/demon এর ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করেন।[১১]
.
২১ শতকে জিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমির বিপ্লব সৃষ্টিকারী প্যাগান এরিক দুবেঈ বলেন, "
আজকে যেমনি বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্লাইং সসার দেখা যায় যাকে আমরা ইউএফও বলে অভিহিত করি, একই জিনিস সেই হাজার বছর আগে থেকে আজ পর্যন্ত আমাজন জঙ্গলের মানুষগুলো যারা আইয়োহুয়াস্কা, পাইয়োডি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সাইকাডেলিক উপাদান গুলো সেবন করে, তারাও ঠিক একই জিনিসের ব্যপারে বলে এবং যেগুলো দেখতে এলিয়েন ও ফ্লাইং সসারগুলোর মত। যারা সেসব ক্র‍্যাফট থেকে বের হয়ে তাদেরকে বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দেয়। এরা মূলত ইন্টারডাইমেনশনাল জীব। আর সবচেয়ে শক্তিশালী সাইকাডেলিক উৎপন্ন করে আমাদের ঘুমন্ত মস্তিষ্কের পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড যাকে থার্ড আই বলা হয়। এজন্য স্বপ্ন হচ্ছে এরই একটা প্রোডাক্ট।
ঘুমন্ত অবস্থায় অনেকে এমন এলিয়েন এবডাকশনের স্বপ্ন দেখে যা তাদের কাছে খুবই সত্য বলে মনে হয়। হয়ত তখন তার মস্তিষ্কে অন্ডিজেনাস ডিএমটি সাইকাডেলিক ড্রাগের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সাইকাডেলিক ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করত মিথ্রাইক কাল্টে। আদিম সভ্যতাগুলো নিজেদেরকে নক্ষত্রের বংশোদ্ভূত বলত। তারা মূলত ইন্টার ডাইমেনশনাল রেল্মে ঘুরে বেড়াতো , অথচ আজকে ফেইক কস্মোলজি শেখানো হয়, এলিয়েনদের অস্তিত্বের জন্য ভ্রান্ত আউটার স্পেস কন্সেপ্ট নিয়ে আসা হয়েছে।"
.
বিখ্যাত গাঁজাখোর গবেষক ট্যারেন্স ম্যাকেনা বলেন, "আমি মনে করি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালদের সাথে যোগাযোগ এর আসল কাজ হচ্ছে এটা জানা যে আপনার সাথেই একজন রয়েছে। এটা একদমই বোকামি যে একটা রেডিও ব্যবহারকারী সভ্যতাকে খুজতে রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে ছায়াপথে খুজে বেড়ানো।"
.
তিনি মনে করে সাইকাডেলিক মাশরুম গুলোই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ এর একটা মাধ্যম[১৩]। তাছাড়া ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করে হাজারো কথিত এলিয়েনদের[১৭] সাথে যোগাযোগ এর রিপোর্ট পাওয়া যায়। অবশ্য প্রাচীনকাল থেকে জঙ্গলের বিভিন্ন প্যাগান সভ্যতার মাঝে এই জিনিস ব্যবহার চলত। তারা অবশ্য স্পিরিট/এ্যান্সেস্টর ইত্যাদি শব্দ দ্বারা অভিহিত করতো
[১২]।
.
আশাকরি এবার বুঝতেপারছেন স্পষ্টভাবে এলিয়েন শুধুই একটা নতুন টার্ম। নতুন কস্মোলজি দিয়ে ভিন্ন নামে নতুন চেহারায়(গ্রে এলিয়েন(১৬)) শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হচ্ছে। প্রাচীন মিশরীয় হাইরোগ্লিফিকে যে আনুনাকিদের দেখা যায় এরা এই একই ইন্টারডাইমেনশনাল এলিয়েন(কথিত) রেস[১৫]। এরা যে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নয় মোটেই সেটা তারা নিজেরাই স্বীকার করে। উপরের হিস্টোরি চ্যানেলের ডকুমেন্টারির ভিডিও অংশটিতে স্পষ্ট দেখতে পারছেন। ওরা ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি/ডাইমেনশনে হাজার হাজার বছর ধরে আমাদেরই সহবস্থানে আছে।[১৪]

আজকে যারা বিভিন্ন মিস্ট্রি প্যাগান এস্ট্রোথিওলজিতে বিশ্বাস করে এরা আজ বিচিত্র পদ্ধতি শেখায় এই হায়ার ডাইমেনশনাল রেস তথা শয়তানের সাথে যোগাযোগের।[১৮]
। বৈদিক এস্ট্রলজির বিদ্যা দিয়েও নাকি এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব[২০]
। এক ডিএমটি সেবকের ডিএমটি গ্রহনের পরে কথিত এলিয়েনদের সাথে দেখা করার বর্ননাটি শুনুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc
.
সকল থিওসফিস্ট(প্যাগান) বিশ্বাস করেন পৃথিবীর দায়িত্বে থাকা সকল স্পিরিচুয়াল এন্টিটির রাজা সনৎ কুমার হচ্ছে এলিয়েন বিং। আর বেঞ্জামিন ফ্র‍্যাঙ্কলিন বিশ্বাস করতেন সনৎ কুমারের আদি নিবাস-শুক্র গ্রহের সাথে তার দুনিয়ার রাজ্য শাম্বালায় ফ্লাইং সসারের ট্রাফিক রয়েছে। আর এই ফ্লাইং সসারগুলোই ক্রপসার্কেল গুলোর জন্য দায়ী। উইকিপিডিয়াতেও আছে।
"It is also believed by the Theosophists in general as well as Creme in particular that the governing deity of Earth, Sanat Kumara (who is believed to live in a city called Shamballa located above the Gobi desert on the etheric plane of Earth), is a Nordic alien who originally came from Venus 18,500,000 years ago.[20] The followers of Benjamin Creme believe there is regular flying saucer traffic between Venus and Shamballah and that crop circles are mostly caused by flying saucers.
"(উইকিপিডিয়া)
.
সনৎ কুমারকে 'Satan kumar' বলতে শুনি কিছু খ্রিষ্টান প্রিস্টদের। কুম্বেইর যুক্তি, সনৎ কুমার যেহেতু ভেনাসের চির কুমার, সেহেতু শুক্রের আদি গ্রীক নাম লুফিফারই হচ্ছে এই সনৎ কুমার। অর্থাৎ sanat kumar=satan kumar!
"Bailey goes on to explain that Sanat Kumara is the "life and the forming intelligence", presiding over the Council of Shamballa [the Heaven of Earth according to New Age doctrine]. (The New Age Dictionary, p. 172) Further, Sanat Kumara is "the eternal youth from the Planet Venus". The name Lucifer is one of the ancient Greek names for Venus. Therefore, according to Cumbey, Sanat Kumara is merely another name for Satan or Lucifer. (Cumbey, Hidden Dangers of the Rainbow) "[Wikipedia]
.
এদিকে কল্কি অবতারের অপেক্ষায় থাকা হিন্দুর কল্কিঅবতারের সাথে এলিয়েন ও ইউএফওর মেলবন্ধনটা ছিল দেখার মতন।
https://m.youtube.com/watch?v=OfhxEYb2XQk
.
তার মানে বুঝতে পারছেন(?) এই এলিয়েন শব্দ দিয়ে যাদেরকে বোঝানো হয় তারা এ দুনিয়ায় ১৯,২০ শতকের নতুন আগন্তুক কেউ নয় বরং মানব সভ্যতারও আগে থেকেই এখানে আছে। থিওসফিস্ট, যারা কিনা শয়তানেরই থেইস্টিক পূজারী এদের সাথেও এদের সম্পৃক্ততা রয়েছে! প্রাচীন বৈদিক যুগের 'বিমান'গুলো এদেরই। সর্বশেষ অবতার কল্কি কে তার ব্যপারে আগেই একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম[২৩]। এর সাথে শয়তানজ্বীনদের অন্তর্ভুক্তি খুবই স্বাভাবিক। এ বিষয়টা প্রজেক্ট ব্লুবিম এর সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয় যার ইঙ্গিত রোনাল্ড রিগ্যান, মিচিও কাকু দিয়েছিলেন। আমরা জানি দাজ্জাল ব্যাপকভাবে শয়তান জ্বীনদের সাহায্য নিয়ে মানুষকে কুফরের দিকে আহব্বান করবে। শয়তান জ্বীনরা এমনকি মৃত মানুষের আকৃতিও ধারন করে কুফরের দিকে ধাবিত করবে।
.
এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আজ ওপেন সিক্রেট ; যে শয়তানের সাথে মানুষ এক হয়ে এরিয়া ৫১ তে কাজ করছে। এফবিআইও এখন এ কথা এখন বলে[১৯]। সুতরাং আন্দাজ করুন, কতটা ভয়াবহ বিষয়গুলোকেই আজকে নর্মালাইজ করা হয়েছে। আজকের শেখানো কস্মোলজি ওই ডায়াবোলিক্যাল এন্টিটিদেরই শেখানো[২৫]। এটাকে ওদের সহজ এবং গ্রহণযোগ্য এ্যাক্সেসের জন্যই একে এভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। সৃষ্টিতত্ত্বকে পালটে ওদের উপর বিশ্বাসকে একটা স্বতন্ত্র দ্বীনের পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য গড়া হয়েছে[২৭]। আজ এই শয়তান জ্বীনদের এলিয়েন সাজিয়ে হাজার মুভি তৈরি করা হচ্ছে মনোরঞ্জনের জন্য। বিজ্ঞ সাইন্টিস্টগন এদেরই অস্তিত্ব এবং এ্যারাইভালের সম্ভাবনা জোড় দিয়ে বলেন। এদেরকে আহব্বান করেই, ক্রোওলির সাথে মিলে বিচিত্র রিচুয়াল পালন করে রকেটের আবিষ্কারক এবং space(কাল্পনিক) age এর পিতা। আজকের নাসার কার্যক্রম কতটা বিস্তৃত, অথচ এদের গোটা প্লটটাই শয়তানের পরিকল্পনার উপর দাঁড়িয়ে। স্বপ্নে স্পেস এজের পিতাকেই যাদুকরী শয়তানি অপবিজ্ঞানকে আরো বিস্তৃত করার সরাসরি উৎসাহ দিয়েছিলেন দাজ্জ্বাল নামের ওই মহান এন্টিটি। এরই ধারাবাহিকতায় তার হাতে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং পরে নাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং গোটা স্পেস/হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি(প্যান্থিয়ন)/স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেটারি নোশন /বিগব্যাং/এলিয়েন প্রভৃতি সবকিছুর মূলে আছেন বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল[২৮]। তার জন্যই যতসব প্রস্তুতি।
.
আজকের মোডারেট এবং মু'তাযিলারা এই দাজ্জালাইত সাইন্টোলজি দ্বারা একদম অন্ধ। এদের কাছে সব কিছু তুলে ধরলেও তাদের কাছে দাজ্জালের বিদ্যাকেই পছন্দনীয় মনে হয়। আর আমাদের আলিমগন? তাদের অনেকেই এই এলিয়েন কন্সেপ্টকেও সবুজ বাতি দেখিয়ে গ্রহন করেছে অনেক আগেই। কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি গ্রহনে যেখানে সমস্যা নেই, সেখানে এলিয়েনদের অস্তিত্ব গ্রহনে কিসের সমস্যা!? কুরআনের আয়াত ব্যবহার করেই অনেককে দেখি; এদের অস্তিত্বের বিষয়টিকে ইতিবাচক উপস্থাপন করে ইসলামিক বই,প্রবন্ধ, নিবন্ধ লেখে! সেদিন মার্সিফুল সার্ভেন্ট চ্যানেলটিকেও দেখলাম সরাসরি না বললেও ইউএফও, এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের ব্যপারে ইতিবাচক ভিডিও বানিয়েছে। মা'আযাল্লাহ! ওটা দেখলে যে কেউ এদের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে শুরু করবে।
.
জিওসেন্ট্রিক এনক্লোজড কস্মোলজিতে মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান এলিয়েনদের দ্বারা যা বোঝায় সে ধারনাটি সম্পূর্ন বাতিল[২৪]। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউই দুর্ভেদ্য আসমান ভেদ করতে সক্ষম নয়। এমতাবস্থায় ফেক এলিয়েন ইনভ্যাশনের অবস্থা তৈরি করতে শয়তান জ্বীন এবং হলোগ্র‍্যাফিক প্রজেকশন, ইএলএফ সাউন্ড ব্যবহারের বিকল্প নেই। ইসলামে পৃথিবীর বাহিরে প্রানীর অস্তিত্বের ব্যপারে নিশ্চিত দলিল আছে কিন্তু এর দ্বারা কখনোই লাগামহীন এলিয়েন আর তাদের স্পেসশিপদের বোঝায় না যা আজকে দাজ্জালের অনুপ্রেরণায় সর্বত্র শেখানো হচ্ছে। ইমাম ফখরুদ্দীন রাযির(রঃ) সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত এর ব্যাখ্যা, সূরা তালাক্কের শেষ আয়াত, সাত জমিনসংক্রান্ত হাদিস, আসমান সংক্রান্ত হাদিস গুলো পৃথিবীর বাহিরের অজস্র প্রানীর অস্তিত্বের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু সেসব আদৌ গ্রেএলিয়েন নয়। সেসব কুরসির ভেতরে থাকা জগত গুলোয় বিদ্যমান। আদৌ এন্যাক্সিম্যান্ডারের প্লুরালিজম, ইনফিনিট ভ্যাকুয়াম স্পেসে ফ্লোটিং স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেট এর মত কিছুতে নয়। রিগ্যান-কাকুদের কথার মত তারা কখনো আমাদের এ জগতে আসবে না। সেটা সাধ্যেরও অতীত। অন্যদিকে এদেরকে ক্রোওলি,জ্যাক পার্সন, হাব্বার্ডের শয়তানি রিচুয়াল দ্বারা ডাকলে শুধু শয়তান জ্বীনেরাই শুনবে কখনো ওরা শুনবে না।
.
ওয়াআল্লাহু আ'লাম

Ref:
১)
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=465081517282379&substory_index=0&id=282165055574027

২)
https://www.youtube.com/watch?time_continue=333&v=ss7QT6uCZdU

৩)
https://www.express.co.uk/news/science/777627/alien-dna-message-human
https://www.gaia.com/article/are-humans-actually-aliens-on-earth
https://www.sciencemag.org/news/2016/03/our-ancestors-may-have-mated-more-once-mysterious-ancient-humans

৪)
http://www.boudillion.com/lam/lam.htm
https://www.vice.com/amp/en_us/article/mvpvyn/magickal-stories-lam
https://m.youtube.com/watch?v=yUs0KF2QTaU

৫)
https://m.youtube.com/watch?v=iQxzWpy7PKg
https://m.youtube.com/watch?v=nYi5h5Gvdz8

৬)
https://m.youtube.com/watch?v=peUkPNx9DSU
https://m.youtube.com/watch?v=k-Gr7-RQ4-U

৭)
https://m.youtube.com/watch?v=-NOZWlmGrsY

৮)
https://m.youtube.com/watch?v=FmoiwjXepHM

৯)
https://m.youtube.com/watch?v=16MMZJlp_0Y

১০)
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Interdimensional_hypothesis

১১)
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Interdimensional_hypothesis

১২)
http://www.evolveandascend.com/2017/02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extraterrestrials/

১৩)
https://m.youtube.com/watch?v=ljy3TH1T0jk

১৪)
https://m.youtube.com/watch?v=jjFYo-mLn08

১৫)
https://m.youtube.com/watch?v=K3MM3vu9hOc

১৬)
https://m.youtube.com/watch?v=slYRx3vk6OM

১৭)
https://m.youtube.com/watch?v=pL1QI0_3HiI

১৮)
https://m.youtube.com/watch?v=uMPyI08JWvQ

১৯)
https://m.youtube.com/watch?v=WFRwvXEXOxo

২০)
https://m.youtube.com/watch?v=aM8P6f-m3Xg

২১)
https/en.m.wikipedia.org/wiki/UFO_religion

২২)
https://m.youtube.com/watch?v=q1Y3pVy8HME

২৩)
দাজ্জালের অনুসারীরা আপনার পাশেই অপেক্ষা করছেঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_20.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_73.html

২৪)
https://m.youtube.com/watch?v=aFFM3YJAs4Q

২৫)
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=564102404046956&id=282165055574027

২৬) https/en.m.wikipedia.org/wiki/Babalon_Working

২৭)
https://m.youtube.com/watch?v=HBDNZpnYvts

২৮)
https://www.bibliotecapleyades.net/bb/babalon004.htm

https://www.classifiedufo.com/jack-parsons-jpl.html

www.sacred-magick.com/dictionary/magdic17.html
_____________________________________________
নিচের লিংকে দেওয়া বইটি পড়া যেতে পারেঃ
http://www.pdf-archive.com/2014/09/29/bt-dajjal/bt-dajjal.pdf

দাজ্জ্বালের আত্মপ্রকাশের পর '৪০ দিন' এর অপব্যাখ্যা

হাদিসে এ ব্যপারে স্পষ্ট আছে যে দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের পর দুনিয়াতে ৪০ দিন অবস্থান করবে।
.
حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ صَالِحٍ الدِّمَشْقِيُّ الْمُؤَذِّنُ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ جَابِرٍ الطَّائِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ الْكِلاَبِيِّ، قَالَ ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الدَّجَّالَ فَقَالَ ‏"‏ إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ وَاللَّهُ خَلِيفَتِي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فَمَنْ أَدْرَكَهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ فَوَاتِحَ سُورَةِ الْكَهْفِ فَإِنَّهَا جِوَارُكُمْ مِنْ فِتْنَتِهِ ‏"‏ ‏.‏ قُلْنَا وَمَا لُبْثُهُ فِي الأَرْضِ قَالَ ‏"‏ أَرْبَعُونَ يَوْمًا يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا الْيَوْمُ الَّذِي كَسَنَةٍ أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلاَةُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ قَالَ ‏"‏ لاَ اقْدُرُوا لَهُ قَدْرَهُ ثُمَّ يَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ شَرْقِيَّ دِمَشْقَ فَيُدْرِكُهُ عِنْدَ بَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلُهُ ‏"‏ ‏.‏

আন-নাওয়াস ইবনু সাম‘আন আল-কিলাবী (রাঃ)

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকতে যদি সে আবির্ভূত হয় তবে তোমাদের পক্ষ হতে আমিই তার প্রতিপক্ষ হবো। আর আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান না থাকা অবস্থায় যদি সে আবির্ভূত হয় তবে প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজেই তার প্রতিপক্ষ হতে হবে। আর আল্লাহ হবেন প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার পক্ষের দায়িত্বশীল। তোমাদের মাঝে যে কেউ তাকে পাবে, সে যেন সূরাহ আল-কাহ্‌ফের প্রথম কয়েকটি আয়াত পাঠ করে; কেননা এটাই হবে ফিত্বনাহ থেকে তার নিরাপত্তার প্রধান উপায়। আমরা বললাম, সে পৃথিবীতে কতদিন থাকবে? তিনি বললেনঃ চল্লিশ দিন। একদিন হবে এক বছরের সমান, একদিন হবে এক মাসের সমান ও একদিন হবে এক সপ্তাহের সমান, আর বাকি দিনগুলো হবে তোমাদের সাধারণ দিনগুলোর সমান। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! যে দিনটি এক বছরের সমান হবে, সে দিনে এক দিন ও এক রাতের সলাত কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, তোমরা অনুমান করে দিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে (সলাত পড়বে)। অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) দামেশকের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং ‘লুদ্দ’ নামক স্থানের দ্বারপ্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং হত্যা করবেন।
.

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৩২১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
.
এত স্পষ্টতার পরেও আজকে একদল মুসলিম ভাইদেরকে পাওয়া যায় যারা এই ৪০ দিনের মেটাফোরিক্যাল ব্যাখ্যাদানের চেষ্টা চালায়। তারা আপনাকে বলবে, প্রথম যে দিনটি ছিল এক বছরের সমান সেটা মূলত ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থা। এরপরে যে দিনটি একমাসের সময়, সেটা দ্বারা বোঝানো হয় আমেরিকার নিয়ন্ত্রনে শাসন ব্যবস্থা। এক সপ্তাহের দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট দিন = ভবিষ্যতে ইজরাইলের নিয়ন্ত্রনে বিশ্বব্যবস্থা। এরপরের স্বাভাবিক দিনগুলোর দৈর্ঘ্যে পৌছবার পরে দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ ঘটবে।
.
তাদের এই ব্যাখ্যা একদমই নব উদ্ভাবিত ব্যাখ্যা যার সাথে সালাফের কোন সম্পর্কই নেই। তাদের এরকম নব্য উদ্ভাবনের কারন হতে পারে দিবসের দৈর্ঘ্যের বর্ননাকে সাধারন দিবসের কথিত ইউনিভার্সালিটির সাথে এ্যাডজাস্ট করা। র‍্যাশোনাল করা। নতুন কিছুর প্রচার করে ইন্টেলেকচুয়ালি সাপ্রেস করা(নতুন বিদ্যাকে জাহির করা)। অথবা শুধুই অন্ধ অনুসরন। এই অপব্যাখ্যার মূলে গিয়ে পাবেন ত্রিনিদাদে অবস্থানরত আলিম শাইখ ইমরান নযর হোসেন সাহেবকে[১]। তার এদেশীয় অনুসারীই এই বিষয়টির প্রচার করে। এটা ভাল দিক যে, ইমরান নযর হোসেন সাহেব আজকের অধিকাংশ আলিমদের তুলনায় বহির্বিশ্বের ব্যপারে অনেক সচেতন। তিনি শেষ জামানার ব্যপারেও অনেকের চেয়ে বেশি কনসার্নড। তিনি হয়ত কাফিরদের ফিতনার জালগুলোর ব্যপারে উম্মাহকে অবহিত করতে চান। যেমন, চলমান মুদ্রাব্যবস্থার ব্যপারে তার সুক্ষ্ম বিশ্লেষণ। কিন্তু সেসবের সাথে তিনি একদমই মনগড়া কিছু চিন্তাধারা অথবা ব্যাখ্যাকে মিলিয়ে এমনভাবে প্রচার করেন যেন তিনি একদম সঠিকই বলছেন,অথচ সেসব সালাফের চিন্তাধারার বিপরীতে চলে যায়। এর একটি হচ্ছে দাজ্জালের প্রকাশকালের ব্যাপ্তি ৪০ দিনের ব্যপারে। তিনি মূলত তরুন মুসলিম সমাজকে সুফিবাদের দিকে উৎসাহিত করেন। বাতেনি ইল্মচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এদেশীয় তার অনুসারীরা এ সময়টাতে দাজ্জাল সম্পর্কিত কিছু লিখতে গেলে এর প্রতিই খুব গুরুত্ব দেয় যেটা একদমই সাহাবীদের জামা'আতের বাহিরের চিন্তাধারা প্রকাশ করে। এটা উপরে দেওয়া হাদিসটিতেও পাওয়া যায়। উপরে বর্নিত আছে,"..আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! যে দিনটি এক বছরের সমান হবে, সে দিনে এক দিন ও এক রাতের সলাত কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, তোমরা অনুমান করে দিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে (সলাত পড়বে).."। অর্থাৎ ইমরান নযর হোসেনের অনুসারীরা যেভাবে বলে যে এই এক বছর একটা শাসনামল বা শাসন কাল বোঝায় সেরকম মোটেই না। নতুবা কখনোই অনুমান করে সালাত আদায়ের কথা বলতেন না। আমি জানি সাধারণভাবে এই দলিলের বর্ননাকে তারা অন্যভাবে ঘুরিয়ে দেবেন নিজেদের অনুকূলে। কিন্তু খুব বেশি লাভ নেই।
অন্যান্য হাদিসগুলো এ ব্যপারটিকে বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ স্পষ্ট করে। এর মধ্যে একটি হাদিস নিচে তুলে ধরছি। এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমান করে ৪০ দিনের ব্যাপ্তিকাল এর বিবরণে কোন মেটাফোরিক্যাল/এ্যালিগোরিক্যাল ব্যাপার বলে কিছু নেই। বরং আক্ষরিকভাবেই দিবসের ব্যাপ্তিকাল একবছর/মাস ও সপ্তাহের ন্যায় হবে। আমাদের কাছে আল্লাহর রাসূল(স) দ্বীনের খুঁটিনাটি খুব সরলভাবে উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কুরআনকেও সহজ করেছেন। কিন্তু এসব সরল বর্ননায় সাধারনভাবে বাতেনিয়্যাহপন্থীদেরকে বক্রতা তালাশ করতে দেখা যায়।
.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“দাজ্জালের গাধার (বাহনের) মাঝে চল্লিশ গজের দূরত্ব থাকবে এবং এক একটি পদক্ষেপ তিনদিনের ভ্রমণের সমান হবে। সে তার গাধার পিঠে আরোহণ করে সমুদ্রে এমনভাবে ঢুকে যাবে, যেমন তোমরা ঘোড়ার পিঠে চড়ে পানির ছোট নালায় ঢুকে থাক (এবং নালা পার হয়ে থাক)। সে দাবি করবে, আমি বিশ্বজগতের রব এবং সূর্যটা আমার কথা মত চলছে। তোমরা কি চাচ্ছ যে আমি একে থামিয়ে দেই? তার কথায় সূর্য থেমে যাবে। এমনকি একটি দিন মাস ও সপ্তাহের সমান হয়ে যাবে। এবার সে বলবে, তোমরা কি চাচ্ছ, আমি এটিকে আবার চালিয়ে দেই? লোকেরা বলবে, হ্যাঁ দিন। তখন দিন ঘণ্টার সমান হয়ে যাবে।
তার কাছে এক মহিলা আসবে এবং বলবে, হে আমার রব, আপনি আমার পুত্র এবং স্বামীকে জীবিত করে দিন। তখন শয়তানরা মহিলার পুত্র ও স্বামীর আকৃতিতে এসে হাজির হবে। মহিলা শয়তানকে গলায় জড়িয়ে ধরবে এবং তার সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হবে। মানুষের ঘরগুলো শয়তানদের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।
এক গ্রাম্যলোক দাজ্জালের নিকট আসবে এবং বলবে, হে আমাদের রব, আপনি আমাদের জন্য আমাদের উট ও বকরিগুলোকে জীবিত করে দিন। দাজ্জাল তাদেরকে উট-বকরির আকৃতিতে কতগুলো শয়তান দিয়ে দেবে। এই পশুগুলো ঠিক সেই বয়স ও সেই শরীর স্বাস্থ্যের হবে, যেমনটি তাদের মৃত উট বকরিগুলো ছিল। এসব দেখে গ্রামের অধিবাসীরা বলবে, ইনি যদি আমাদের রব না হতেন, তাহলে আমাদের মৃত উট বকরিগুলোকে কোনক্রমেই জীবিত করতে পারতেন না।...."
(আল ফিতান, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৪৩)
.
সুতরাং নিজেকে সৃষ্টিকর্তা প্রমানের জন্য বাহ্যিকভাবে দাজ্জালের কথায় (যাদুবিদ্যার কার্যক্ষমতাও আল্লাহর ইচ্ছাধীন) সূর্য থেমে যাবে। এমতাবস্থায় একদিন=মাস/সপ্তাহের সমান হয়ে যাবে। এভাবে প্রথমদিনটি ১ বছরের সমান দীর্ঘ হয়ে যাবে। পরের দিন মাস, পরের দিন সপ্তাহের সমান...। এজন্যই আল্লাহর রাসূল(সাঃ) অনুমান করে স্বালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। এটা আদৌ ব্রিটিশ,ইউএস বা ভবিষ্যতে ইজরাইলাইত শাসনকালকে বোঝায় না। এবার আশা করি বুঝতে পারছেন তাদের এ নতুন ব্যাখ্যাটি কতটা ভ্রান্ত। সালাফের চিন্তা/ব্যাখ্যা/বোধের বাহিরে কুরআন সুন্নাহর কোন নতুন (তাদের সাথে)সাদৃশ্যহীন যে ব্যাখ্যাই আনা হোক না কেন না অবশ্যই বর্জনীয়।
.
উইকিপিডিয়া থেকে সম্ভবত সরিয়ে ফেলা হয়েছে যে, শিখধর্ম গুরুগোবিন্দের একটা বিখ্যাত কিতাবে উল্লেখ করেছেন মাহদী নামের লোকের শত্রুঃ শেষ অবতার- কল্কি বের হবার পরে সূর্য থেমে যাবে এবং ১২ ঘন্টা পর পর একটু করে সরবে!
.
আমি এ বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই কাউকে শত্রুতার জের ধরে, অপমান করে, কিংবা ছোট করে লিখছি না। শুধুই তাদের কল্যানের জন্যই দলিলগুলো সরলভাবে উপস্থাপন করা। ইমরান নযর হোসেন সাহেবের সুন্নাহ ও সালাফের বোধ পরিপন্থী এই ব্যাখ্যাটিই বেশি বেশি অনলাইনে প্রচার করা হয়, মানুষ এতে দ্রুত আকৃষ্টও হয়। এজন্যই এটা নিয়ে কিছু কথা লেখা। সামনে তার অন্যান্য ভুল ব্যাখ্যাগুলোকেও দলিল প্রমানের সাথে উপস্থাপন করব যদি সেসব এর ন্যায় ছড়াতে দেখি, বিইযনিল্লাহ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।
_________________________________________________
Ref:
১.https://youtu.be/Q6Ur8HMN4Yc

নাস্তিকতা এবং তাদের সাথে বিতর্ককারী মুসলিমদের চিন্তার বিকৃতি

এ সময়টাতে নাস্তিকতা আশংকাজনকভাবে বাড়ছে। আল্লাহর নির্দেশে 'কলম' সব কিছু এভাবেই লিখেছিল সৃষ্টিজগতের সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর আগে। তবে এ অবস্থার বাহ্যিক কারন হিসেবে প্রথমেই রয়েছে, mainstream scientific doctrine(Natural philosophy)! আমরা আগেই দেখিয়েছিলাম ন্যাচারাল ফিলসফিই ১৯ শতকের পরে ফ্রিম্যাসন এর Royal society দ্বারা 'philosophy of science' এবং পরিশেষে 'সাইন্সের' নামে (জেসুইট)ক্যাথলিকদের সহায়তায় সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য মতাদর্শ হিসেবে সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ গোড়া থেকেই এটা একটি স্বতন্ত্র দ্বীন বা মতাদর্শ বা দর্শন(ফিলসফি)। এই 'লা ইলাহার'(There is no deity) বিশ্বাসটি বিজ্ঞানের কর্ণধার সকল বিজ্ঞানীদের মধ্যে গভীরভাবে প্রোথিত। শুরু হয় বাবেল শহর থেকে মিশর,গ্রীস,ভারত। এরপরে সেখানকার অবিশ্বাসের জ্ঞান আরবে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে পাশ্চাত্য এসব গ্রহন করে এবং আজকে পর্যন্ত এর বিকাশ অব্যাহত রেখেছে। কেউ মন্তব্য করতে যাবেন না যে, আইনস্টাইন সাহেব সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। আজকের মোডারেট মুসলিমরা ইসলাম প্রচারের সময় তার কুফরি কথার মিসইউজ করে। তিনি যে সৃষ্টিকর্তার কথা বলেন সেটা মূলত 'god of Spinoza'(রেফারেন্স চাই?)! অতএব সেই পিথাগোরাস,এম্পিডোক্লিস থেকে স্টিফেন হকিং- বিল ডকিন্স পর্যন্ত প্রত্যেকেই প্রায় একই ফিলসফিক্যাল গিল্ডে রয়েছেন। বাবেল শহর ভ্রমন করে আসা ডেমোক্রিটাসের ম্যাটেরিয়ালিস্টিক রিয়েলিজম(প্লেটোনিক আইডিয়ালিজম আরো খারাপ) কথিত (অপ)বিজ্ঞান এত দিন বহন করে এসেছে। আর এটাকে 'নোভাস অর্দো সেকলোরাম'(অর্ডার অব এজ) বা 'নিউ সেকুলার অর্ডার' প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষাব্যবস্থা, গনমাধ্যম থেকে শুরু করে সারাবিশ্বের তৃনমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। একারনে অপবিজ্ঞানের এথেইস্টিক মতাদর্শ এত বেশি প্রোমোটেড এবং ছড়িয়ে পড়েছে। স্টিফেন হকিংসগন তো সরাসরি নাস্তিক্যবাদের কথা সাইন্টিফিক্যালি জোড় দিয়ে বলেন। তার quotes দেব নাকি দু চার‍টা? গোটা সৃষ্টিতত্ত্বকে পালটে 'Cosmological Evolution'(বিগব্যাং) শেখাচ্ছে। ফ্রিম্যাসন ইর‍্যাসমাস ডরউইন বাবেল শহরের শয়তানের আবৃত্ত(বিষয়ের অংশ) বিবর্তনবাদের 'দর্শন' গ্রহন করেছিলেন, যা তার নাতি চার্লস ডরউইন গ্রহন করে কথিত বিজ্ঞানে ঢুকিয়েই দিয়েছেন। অপবিজ্ঞানের মূল বক্তব্যই 'লা ইলাহা' বা কোন ইলাহের অস্তিত্ব নেই। হিরাক্লিটাস এই (পরজীবনের শাস্তি থেকে)অভয়ই দিতেন। ওরা শেখাচ্ছেই Materialistic Monism! জ্বি, এই অপবিজ্ঞান অনুযায়ী চণ্ডীদাসের 'সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই' বাক্যটি সত্য। মানুষকেই ডিভিনিটি দিয়ে দেওয়া হয়, এজন্য বিজ্ঞানবাদী নাস্তিকগন নিজেদেরকে মানবধর্মের অনুসারী বলে। কারন, এই 'হিউম্যানিজম'ই সাইন্টিজমের কোর টিচিং। এই নাস্তিক্যবাদ এমনই নিকৃষ্ট চিন্তাধারা যার এরূপ ব্যাপক প্রসার পূর্বে হয়েছিল বলে দলিল পাওয়া যায় না। প্রাচীন কাফির-মুশরিকরাও আল্লাহর অস্তিত্বের অস্বীকার করত না। এমনকি মক্কার মুশরিকেরাও নাহ! আল্লাহ বলেনঃ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ
.
"আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ"(আয যুখরুফ ০৯)
সুতরাং এই pseudo-science এর নিকৃষ্টতা বুঝতে পারছেন।
.
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই কুফরের স্রোতে তাল মিলিয়ে চলতে একশ্রেনীর মুসলিম সারাজীবন তাদের মেধা খরচ করে যাচ্ছে। তারা কাফিরদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্যও ইসলামকে কুফরের সাথে খাপ খাইয়ে উপস্থাপন করে। ওদের আশা: হয়ত মেইনস্ট্রিমের কুফরের স্রোতে ভাসা কাফেররা সেই কুফরের সাথে (বানোয়াট) সাদৃশ্যতা দেখে সহজেই গ্রহন করবে। অনেক ক্ষেত্রে কাজও হয় সত্যিই গ্রহন করে কিন্তু এদের অবস্থা ভাসমান খড়ের গাদার ন্যায়। সংখ্যা বাড়বে কিন্তু কোন কাজের নয়(সমাজে আমূল পরিবর্তনসৃষ্টিকারী নয়)। কারন তাদের থট প্যাটার্ন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরিবর্তিতই থাকে। কম্প্যাটিবল উইথ কুফর!
.
যারা অপবিজ্ঞানকে ইসলামাইজড করছে,তারা ঠিক তাদের ন্যায় একই চিন্তাধারা বহন করে যারা সুদি ব্যাংকের ইসলামিক বৈধতা দিতে চেষ্টা করে, তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ বাদ দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকে,শরীয়তের অনেক বিধানকে obsolete মনে করে....।
.
তো, ইসলামিক মর্ডানাইজেশনের সাথে যুক্ত এ শ্রেণীর মুসলিমগন যখন আজ নাস্তিক্যবাদের বৃদ্ধি দেখছে, তখন সোস্যাল নেটওয়ার্কে হাজারো গ্রুপ খুলে ওদের সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে তারা মহৎ কাজ করছে। তারা বিতর্কে জিততে সবকিছুকে হিউম্যান পার্সেপশনের সীমাবদ্ধতায় বিচার করা শুরু করেছে। কেননা নাস্তিকরা আল্লাহ,আরশ,কুরসি,জান্নাত, জাহান্নাম, মিরাজ ইত্যাদি গায়েবের ব্যাপারে প্রশ্ন করে,যেগুলোর অপবিজ্ঞানের ম্যাটেরিয়ালিস্টিক সেন্সে ব্যাখায় হয় না। তখন এ বিশেষ শ্রেনীর মুসলিমগন নিজের চিন্তার সীমাবদ্ধতা,যুক্তি এবং অপবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছে। স্বভাবতই, অপবিজ্ঞানের সাথে আল কুরআনের সামঞ্জস্য থাকবে না, এমতাবস্থায় নাস্তিকরা সাংঘর্ষিকতা নিয়ে অভিনব প্রশ্ন করছে আর এ মূর্খ শ্রেনী সাংঘর্ষিকতা নিরসনে মূল বক্তব্যকেই বাদ দিচ্ছে বা গোপন করছে, সেই অপবিজ্ঞান ঘেষা যুক্তিকেন্দ্রিক জবাব তৈরি করে দিচ্ছে।
.
চিন্তা করুন, এই অপবিজ্ঞানের কোর টিচিংই হচ্ছ নাস্তিকতা। সেকুলার সভ্যতার সাথে তাল মেলাতে এশ্রেণীর মুসলিমরাই এই (অপ)বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করে ইসলামের সাথে মানিয়ে নিয়েছে , এই অপবিজ্ঞান নিঃসৃত 'কুফরের' আকিদা যখন তাদের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে গিয়ে সর্বত্র নাস্তিকতার প্রসার ঘটায়,তখন এর প্রশমনে,ইসলামকে সেই অপবিজ্ঞান দ্বারাই খাপ খাইয়ে (pseudo)সাইন্টিফিক রিলিজিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠার সেকি প্রচেষ্টা তাদের!! এর চেয়ে বড় মূর্খতা আর কি হতে পারে!!?
অথচ কোন যুক্তি আর অবজারভেশন নয়, আল্লাহ কুরআনকে তাদের জন্যই নাযিল করেছে যারা অদেখা বিষয়ে ঈমান আনে।সাহাবিগন(রা) এবং সকল নবীগনের অনুসারীগন কোন যুক্তি,প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করতেন। কুরআনের শুরুতেই রহমান আল্লাহ বলেনঃ
ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
.
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,
.
الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
.
যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে
.
والَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
.
এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। (সূরাতুল বাকারা:২-৪)
.
ওই বিশেষ শ্রেনীর মুসলিমদের উদাহরণ এরূপ যে, একটি জমির নাম 'অপবিজ্ঞান'! সেখানকার বাসিন্দারা হিউম্যানিস্ট atheist । এখন বাহির থেকে কিছু মুসলিম নামের লোক জোর করে সে জমিতে প্রবেশ করে এবং তাতে থাকতে এবং চাষাবাদ করতে চায়,বাহিরের অনুপ্রবেশকারী বিধায় তাদেরকে অপবিজ্ঞানের জমিতে মানিয়ে নিতে হচ্ছে, এবার সেই Atheist গনের সাথে বিরোধ শুরু হলো। atheist গন তাদের স্বীয় অপবিজ্ঞানের জমিতে মুসলিমদেরকে চাষাবাদ করতে দিতে চায় না, ওরা চায়, হয় তাদেরকে atheist হতে হবে, নয়ত সাংঘর্ষিক চিন্তাধারা গুলো তারা(atheist) প্রকাশ করে বার বার আক্রমন করা হবে। এবার মুসলিম নামধারী গন ভাবলেন, আপোষে আসতে হবে, সাংঘর্ষিকতা থাকে না এমন মতাদর্শের দাবি করতে হবে তবেই অপবিজ্ঞানের ভূমিতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ এবং দিনাতিপাত করা যাবে, অন্তত অপবিজ্ঞানের ভৎসনা শুনতে হবে না, তাদের কর্তৃত্ব মেনে সুখেই থাকা যাবে।
.
আরেকটি দৃশ্যকল্পের অবতারনা করা যাক, ধরুন পৃথিবীব্যাপী বৌদ্ধধর্মের ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। সভ্যতা বলতে যেন বৌদ্ধধর্মেই বিদ্যমান। মানুষ গনহারে বৌদ্ধমত গ্রহন করছে। অনেক মুসলিম মুর্তাদ হয়ে যাচ্ছে। এবার কিছু মুসলিম অবস্থা ঠেকাতে ভাবলো, বৌদ্ধমত এবং ইসলামের মধ্যে সাংঘর্ষিকতা গুলো বাদ দিয়ে দ্বীন প্রচার করতে হবে। মুর্তাদদের দেখাতে হবে, দেখো! বৌদ্ধধর্মে যা আছে, তা আমাদের এ ইসলামেও আছে। অমুক আয়াতের অমুক শব্দের বুৎপত্তিগত শব্দের সংস্কৃত অনুবাদ গুলো যেন কালচক্র তন্ত্রের কথাই বলছে। দেখলে! কতটা আধুনিক!! আধুনিক বৌদ্ধ সভ্যতার সাথে ইসলাম ১০০% সাদৃশ্যপূর্ণ! মূল বৌদ্ধমতই ইসলাম বহন করে। বৌদ্ধদর্শনময় ইসলাম। মহাগুরু গৌতম বুদ্ধ বলেন, বুদ্ধিজম উইথআউট রিলিজিয়ন ইজ লেইম,..... ইজ ব্লাইন্ড! (লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ)
[এলিগোরিক্যালি বুঝানো হয়েছে, কিন্তু এখানে যা বলা হয়েছে, সেটা কিন্তু বাস্তবেও ঘটছে। সেই প্রাচীন যুগ থেকেই প্রচলিত অপবিজ্ঞান বেদান্তবাদ, বৌদ্ধমতকেই র‍্যাশোনালাইজ এবং সাইন্টিফিক করেছে,সেখান থেকেই দর্শনগুলো গ্রহন করে সাইন্স বানিয়েছে। আইনস্টাইনও বৌদ্ধমতের স্তুতি গাওয়া থেকে বিরত থাকে নি।যাহোক,এটা আরেক লম্বা আলোচনা]
.
অপবিজ্ঞান যখন মুসলিমদের তাওহীদ প্রতিষ্ঠায় ঔদাসীন্যতার দরুন সেকুলার সভ্যতা সংস্কৃতির সত্য মিথ্যার মানদন্ডে এলো তখন ইসলামের বিভিন্ন হুকুম আহকামকে কাফেররা প্রশ্ন বিদ্ধ করলো। যেমন ধরুন, সেকুলাজিমে জিহাদ সন্ত্রাসবাদ, দাসদাসী প্রথা,শরীয়তের শাস্তিগুলো সেকেলে বর্বর বিধান প্রভৃতি।। এসবের জবাবে, সেই মুসলিমরা সেকুলারিজমে গ্রহণযোগ্যতা পায় এমন উত্তর প্রস্তুত করে প্রচার করছে। এটাই চিন্তার দূষন! এ ব্যপারে বিস্তারিত শাইখ তামিম আল আদনানীর মুখে শুনুনঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=129365794406346&id=106276653381927
ওরাও(বিশেষ এ শ্রেনীর মুসলিম) আজ কাফেরদের সাথে তাল মিলিয়ে কিত্বালকে সন্ত্রাসবাদ উগ্রবাদ বলছে। ওরাও কাফেরদের সাথে গলা মিলিয়ে বলছে মৌলবাদী,গোড়া মুসলিমদের জন্য আজ ইসলামের এ দুর্দশা। ওদের অন্তর ফেড়ে যেন বের হতে চায় 'Be a secular muslim(!),Be one of us'। মৌলবাদী মুসলিমদের প্রতি তাদের এও বলতে দেখেছি, (নাস্তিকদের দাওয়াত দেওয়ার মত মহান কাজ তোমাদের দ্বারা হয় না), তোমরা বেশি বেশি করে যিকির করে জান্নাতে যাও, যদি যিকর করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাও হাতে গুড় লাগিয়ে নিও,আপনাদের উগ্র মৌলবাদীদের জন্যই আজ মুসলিম জাতি এত পিছিয়ে/এ করুন দশা'।
.
এই শ্রেনীর মুসলিমগন নাস্তিকদের প্রতি সহিষ্ণু! তারা আল্লাহ ও তার রাসূলকে(সা)উদ্দেশ্য করে করা ওই নিকৃষ্ট জীব নাস্তিকদের গালমন্দ গুলো সহ্য করে। তারা সেসব কাফির যিন্দিকদের প্রতি কঠোর আচরন কারী মুসলিমদের ঘৃনার চোখে দেখে, ওরা বলে নাস্তিকদের কাছে ইসলামকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি তাই আজ তারা নাস্তিক, মুর্তাদ। অথচ আপনি দেখবেন সেসব নাস্তিকদের মূল বিদ্বেষ গুলো ইসলামের মৌলিক আকিদা এবং হুকুম আহকামকে ঘিরে, ওরা রাসূল(সা) এর পবিত্র চরিত্র নিয়ে কটুক্তি করে, সরাসরি তাকেই সন্ত্রাসী- জঙ্গী বলে। শুনুনঃ https://youtu.be/AF_LBe7wfio
.
অতএব, কাফেররা সব জেনেই কুফরি করে, সুতরাং যাদের থেকে রহমান আলো তুলে নেন, আপনি সে আলো প্রদানকারীর কে?? আপনি বিতর্ক করছেন!(?) অথচ দিন শেষে ওরা ওদের কুফরিতেই অটল থাকে। অতএব তাদের সাথে বিতর্ক বা আলোচনা করে ওদের মুখ থেকে এমন কিছু কেন বের করছেন, যা আল্লাহ ও তার রাসূল(স) এর জন্য কষ্টকর!?
আল্লাহ বলেনঃ
وَمَا أَنتَ بِهَادِي الْعُمْيِ عَن ضَلَالَتِهِمْ إِن تُسْمِعُ إِلَّا مَن يُؤْمِنُ بِآيَاتِنَا فَهُم مُّسْلِمُونَ
.
"আপনি অন্ধদেরকে তাদের পথভ্রষ্টতা থেকে ফিরিয়ে সৎপথে আনতে পারবেন না। আপনি কেবল তাদেরকে শোনাতে পারবেন, যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে। অতএব, তারাই আজ্ঞাবহ"
.
وَمَا أَنتَ بِهَادِي الْعُمْيِ عَن ضَلَالَتِهِمْ إِن تُسْمِعُ إِلَّا مَن يُؤْمِنُ بِآيَاتِنَا فَهُم مُّسْلِمُونَ
.
আপনি অন্ধদেরও তাদের পথভ্রষ্টতা থেকে পথ দেখাতে পারবেন না। আপনি কেবল তাদেরই শোনাতে পারবেন, যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে। কারন তারা মুসলমান(আর রূমঃ৫৩)
.
وَمَن يَهْدِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّضِلٍّ أَلَيْسَ اللَّهُ بِعَزِيزٍ ذِي انتِقَامٍ
.
আর আল্লাহ যাকে পথপ্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্টকারী কেউ নেই। আল্লাহ কি পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী নন?(আয যুমার-৩৭)
.
আপনারা কি জানতে ইচ্ছুক ওই বিশেষ শ্রেনীর মুসলিম কারা!?
.
তারা মোডারেট মুসলিম। তাদের মধ্যে মুরজিয়া আছে, আছে সালাফি দাবিদার মাদখালি(ফেক সালাফি),সামান্য সংখ্যক হানাফি এবং বিরাট সংখ্যক জ্ঞানহীন মুসলিম, আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের বিশুদ্ধ আকিদা রাখে এরকম মুসলিমরাও রয়েছে যারা পরিস্থিতির জন্য বা তথ্যগত সীমাবদ্ধতার জন্য অপবিজ্ঞান অনুসরন করেন(তাদেরকে আমরা মুর্জিয়া বা মোডারেট বলিনা)। স্বল্প জ্ঞানী মুসলিমদের সামনে সত্যমিথ্যা উপস্থাপন করলে তারা সত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করে, কিন্তু বাকিরা অধিকাংশই তাদের বিকৃত নীতিবোধে অটল থাকে।
কাফেরপ্রিয় মোডারেট মুসলিমদের ব্যপারে হালকা জানুনঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1982828705367095&id=1918704388446194
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1992911857692113&id=1918704388446194




আর্টিকেলটা কাউকে খোঁচা দিয়ে করা নয়। ইতোপূর্বেও এসব নিয়ে লিখতাম এখনো লিখি, সামনেও লিখব। যারা সত্যকে ভুল জানে আর ভুলকে সত্য জানে(জাহেলে মোরাক্কাব), তারা হয়ত উপকৃত হবে। প্রথম দিককার বক্তব্য সবার বোধগম্য হবে না। নিচের লিংক গুলো তাদের জন্য সহজ করবে, আশা করি।

বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞানঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html

অসমর্থ লোকদের জন্য কোন অপরাধ নেই, যখন তারা মনের দিক থেকে পবিত্র হবে আল্লাহ ও রসূলের সাথে

একটা সময় ছিল যখন আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া কিংবা না বের হওয়াটা ছিল ঈমান ও নিফাকের মাঝে পার্থক্যকারী। নেহাৎ মুনাফিক ছাড়া কেউ না যাবার জন্য সহজে ওযর পেশ করত না। সেসময় মুনাফিকরাও নামাজ রোযা যাকাত আদায় কর‍ত, মুসলিমদের সাথে মিশে থাকত। কিন্তু তাদের অন্তরের রোগ, বক্রতা, কুটিলতা প্রকাশ পেত তখন,যখন জিহাদের নির্দেশ আসত। ওরা আল্লাহর রাসূলের(সা) নিকট জিহাদে যাওয়ায় থেকে নিষ্কৃতি পাবার জন্য আল্লাহর শপথ করে কাকুতিমিনতি করত। আল্লাহর রাসূলের(সাঃ) হৃদয় এতে কখনো বিগলিত হত। কিন্তু তাদের অন্তরের ব্যপারে আল্লাহই ভাল করে জানতেন। আমরা হয়ত এদেরকে সর্বোচ্চ মুনাফিক, মুর্জিয়া, ফাসেক পর্যন্ত বলে শেষ করতাম বা আজও করি কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা? যার কাছে তো কোন কিছুই অসচ্ছ নয়। তিনি তো এদেরকে তাকফির পর্যন্ত করেছেন। পড়ুন, আল্লাহ বলছেনঃ
.
وَجَاء الْمُعَذِّرُونَ مِنَ الأَعْرَابِ لِيُؤْذَنَ لَهُمْ وَقَعَدَ الَّذِينَ كَذَبُواْ اللّهَ وَرَسُولَهُ سَيُصِيبُ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِنْهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
_
আর ছলনাকারী বেদুঈন লোকেরা এলো, যাতে তাদের অব্যাহতি লাভ হতে পারে এবং নিবৃত্ত থাকতে পারে তাদেরই যারা আল্লাহ ও রসূলের সাথে মিথ্যা বলে ছিল। এবার তাদের উপর শীগ্রই আসবে বেদনাদায়ক আযাব যারা কাফের।

.
يَعْتَذِرُونَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْ قُل لاَّ تَعْتَذِرُواْ لَن نُّؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا اللّهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْ وَسَيَرَى اللّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
_

তুমি যখন তাদের কাছে ফিরে আসবে, তখন তারা তোমাদের নিকট ছল-ছুতা নিয়ে উপস্থিত হবে; তুমি বলো, ছল কারো না, আমি কখনো তোমাদের কথা শুনব না; আমাকে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে দিয়েছেন। আর এখন তোমাদের কর্ম আল্লাহই দেখবেন এবং তাঁর রসূল। তারপর তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে সেই গোপন ও আগোপন বিষয়ে অবগত সত্তার নিকট। তিনিই তোমাদের বাতলে দেবেন যা তোমরা করছিলে।
.
سَيَحْلِفُونَ بِاللّهِ لَكُمْ إِذَا انقَلَبْتُمْ إِلَيْهِمْ لِتُعْرِضُواْ عَنْهُمْ فَأَعْرِضُواْ عَنْهُمْ إِنَّهُمْ رِجْسٌ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ جَزَاء بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
_
এখন তারা তোমার সামনে আল্লাহর কসম খাবে, যখন তুমি তাদের কাছে ফিরে যাবে, যেন তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা কর-নিঃসন্দেহে এরা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসাবে তাদের ঠিকানা হলো দোযখ।
.
এই বিশেষ শ্রেণীর লোকেদের বর্তমান ভার্সন আজকের সমাজেও মওজুদ আছে। সমস্ত যুগেই ছিল তবে আজকের অবস্থাটা একটু ক্রিটিক্যাল। সাহাবীদের যুগে আলিমদেরকে পাওয়া যাবে না যারা এরূপ ছিল কিন্তু আজকে আলিমদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি বিদ্যমান। এরা নিজেরা তো কখনোই আল্লাহর পথে মৃত্যুর জন্য চলবে না, উপরন্তু সাধারন মানুষও যেন না চলে এবং যেন তাদের ভ্রষ্টতার ব্যপারে না বোঝে, সেজন্য এই বিষয় সংক্রান্ত ধারনাটাকেই উল্টিয়ে দিচ্ছে। এ চিন্তাধারা প্রকট মাত্রায় আছে কথিত আহলে হাদিস(মাদখালি) সংগঠনটির আলিমদের মধ্যে। এরা আসলে ফেক সালাফি। আলিয়া তো ব্রিটিশ কুফফারদের ইন্টারভেনশনে প্রতিষ্ঠা পায়,এ ব্যপারে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। নতুনভাবে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে দেওবন্দীদের মধ্যে। মেইনস্ট্রিম কওমিদের বিশাল আলিম নেটওয়ার্ক নির্বিকার ও নিষ্ক্রিয় অবস্থানে আছে। এদেশীয় সরকারি সালাফিদের কথাগুলো কোট করতে ইচ্ছে করে। এরাই আবার সহীহ আকিদার প্রচারক। এরা এমনই কথার প্রচার করে এবং আহব্বান করে যেদিকে প্রজ্জলিত শিখা ছাড়া আর কিছুই নেই। এরা নিজেরা সেদিকে যায় এবং অন্যদের আহব্বান করে। জাহাঙ্গীর সাহেবরা কাফিরদের সাথে গলা মিলিয়ে মুজাহিদীনদের সন্ত্রাসী বলে। এদেশের মানুষের মুখে মুখে যখন শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহর নাম শোনা যাচ্ছিল, যখন সবাই মুজাহিদীনদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব এতটাই বিরক্ত হন যে তার শশুরকে বলেন, "আমি আর ওয়াজ টোয়াজ করব না"। অর্থাৎ এটা কেমন যেন এরকম যে, আমি তো জিহাদে নেই-ই , আমি চাই যে তোরাও থাকবি না, যারা সেটা করে তাদের প্রশংসা/দুয়াও করতে পারবি না। তার মতে জঙ্গীদের পিছনে নাকি ইহুদি খ্রিষ্টানরা রয়েছে, তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ নাকি খ্রিষ্টানদের কথা, কোন বড় ঘটনা ঘটলে হাদিসে আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে মিলছে কিনা খোজ রাখাও নাকি ইহুদি খ্রিষ্টানদের কাজ! তার এক বক্তব্যে আজ বলতে শুনলাম, তাকে একজন সিরিয়ায় হিজরতে যাবার এবং শহীদী তামান্নার কথা শায়খকে জানাচ্ছিলেন। তখন জাহাঙ্গীর সাহেব বুঝালেন এই বলে যে, "আমাদের দেশে ভাল মানুষ কম, খারাপ মানুষ বেশি, ৯৮% প্রায় খারাপ। তোমরা কিছু ভাল মানুষ আছো। সারা বাংলাদেশে ২ লাখ ভাল মানুষ আছে। এরা সবাই সিরিয়া গিয়ে শহীদ হতে গেল,তাহলে বাংলাদেশ কাদের জন্য থাকে!(?) কি মনে হয় তোমাদের(?) এরপরে, কে বলেছে নিজের দেশে দ্বীনি দাওয়াত না করে অন্যের দেশে জিহাদ কইরতে হবে?, এটা তোমাকে কেউ বলেনি, জেহাদ যদি ফরজ হয় তাদের দেশে হবে, আলেমরা বলে, সে দেশের লোক না পারলে পাশের দেশ(এর মুসলিমদের উপর দায়িত্ব বর্তাবে), পাশের দেশ,পাশের দেশ, এগুলো কোন কুরআন হাদিসের কথা না, আমরা এত দূর থেকে এত আবেগী হয়ে লাভ নেই। এরকমভাবে অনেক হয়েছে, রক্ত ঝরানো ছাড়া কোন ফায়দা নেই। আফগানিস্তানের জিহাদ, শরীয়া সম্মত জিহাদ, উলামারা সমর্থন করেছে, কিন্তু দ্বীনের কি পরিবর্তন এনেছে?, ঠিক আছে না??....."!
.
আমি বিস্মিত হই এটা দেখে যে এগুলোও কোন আলিমের কথা!! তাও আবার যেই সেই লোকের নয়। দেশজুড়ে তার ব্যাপক সুখ্যাতি। মা'আযাল্লাহ। তারও ইল্মের সনদ আছে!
.
কোন প্রক্রিয়ায়,কি বলে জিহাদবিমুখ করা যায় তার যেন শুধু এ একটাই চেষ্টা,'ঠিকাছে না(?)' তোমরা কয়েকজন শহীদ হলে কি সমস্যা, আল্লাহর দ্বীন কি কারো মুখাপেক্ষী? সাহাবীদের কেউ কি এ চিন্তা করে ঝাঁপিয়ে পড়তো যে তারা সকলে মারা গেলে তাদের দেশটা কাদের জন্য থাকবে(?)! শাইখুল হাদিস আবু ইমরান(হাফিঃ) ভাইকে মনে পড়ছে। জাহাঙ্গীর ছাহেব কাফেরদের আঁকানো বর্ডারের মধ্যে আটকা পড়েছে, তার চিন্তাধারাও। এজন্য বললেন, "কে বলেছে নিজের দেশে দ্বীনি দাওয়াত না করে অন্যের দেশে জিহাদ কইরতে হবে?, এটা তোমাকে কেউ বলেনি, জেহাদ যদি ফরজ হয় তাদের দেশে হবে, আলেমরা বলে, সে দেশের লোক না পারলে পাশের দেশ(এর মুসলিমদের উপর দায়িত্ব বর্তাবে), পাশের দেশ,পাশের দেশ, এগুলো কোন কুরআন হাদিসের কথা না, আমরা এত দূর থেকে এত আবেগী হয়ে লাভ নেই। এরকমভাবে অনেক হয়েছে, রক্ত ঝরানো ছাড়া কোন ফায়দা নেই।"। আসলে, সোজা কথা বাবারা তোরা জিহাদ করবি কেন! এটারে ডায়্রেক্ট হারাম কতি পারিনা। কিন্তু না কয়েও থাকতি পারি না। উফফ...দুনিয়াতে ব্যাটা ভাল থাকবি খাবিদাবি, ঘুরবি,তাগুতের(তাগুত না বললিই হলো) আনুগত্য করবি, আর শান্তিশান্তি করবি, রক্তারক্তিতে যাবি ক্যান! "আফগানিস্তানের জিহাদ, শরীয়া সম্মত জিহাদ, উলামারা সমর্থন করেছে, কিন্তু দ্বীনের কি পরিবর্তন এনেছে?, ঠিক আছে না??....."! এজন্য বাবারা জিহাদ জিহাদ করিস না। এসব কইরা লাভ নাই। এসবের যুগ আর নাই। ইসলামে জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদের স্থান নেই। এগুলো ইহুদী খ্রিষ্টানদের সৃষ্টি। ঠিকাছে? প্রশংসা করি আল্লাহর যিনি শায়খ আব্দুল্লাহ আজ্জাম(রহঃ) এর মত আলিমের কথা গুলো আমাদের কাছে পৌছেছেন, আর চিনিয়েছেন তাদেরকে যারা বিচিত্র বক্রতা আর অজুহাত দেখিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে রাখতে চায়। ওরা আল্লাহর পথ থেকে নিজেদেরকে নিবৃত্ত রাখে, অন্যদেরকেও রেখে আনন্দিত হয়। আল্লাহ বলেন,
.
إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ وَهُمْ أَغْنِيَاء رَضُواْ بِأَن يَكُونُواْ مَعَ الْخَوَالِفِ وَطَبَعَ اللّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
_
অভিযোগের পথ তো তাদের ব্যাপারে রয়েছে, যারা তোমার নিকট অব্যাহতি কামনা করে অথচ তারা সম্পদশালী। যারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে থাকতে পেরে আনন্দিত হয়েছে। আর আল্লাহ মোহর এঁটে দিয়েছেন তাদের অন্তরসমূহে। বস্তুতঃ তারা জানতেও পারেনি।
.
আরেক ছ্বহীহ শায়খকে এক ছেলে প্রশ্ন করে,' ইমাম মাহদি আসলে যোগ দিতে হবে না(?)' উত্তরে বলেন, 'আপনি কি জন্যে যোগ দিবেন, আপনার কোন প্রস্তুতিরই দরকার নাই, আপনি আপনার কাজ করেন, ঈমান আমল নিয়ে খুশি থাকেন, মাহদির কাজ মাহদি করব, আমার কাজ আমি করব। মাহদির সাথে জিহাদের প্রস্তুতির দরকার নাই, মাহদিকে আল্লাহ এমনিই খেলাফত দান করবে। খেলাফত জিহাদ করে কায়েম হয় না। খেলাফত কায়েমের পদ্ধতি মানুষ মারা সন্ত্রাস করা, জঙ্গিবাদ করা, এগুলা খেলাফত কায়েমের পদ্ধতি না ....'
.
অত'এব এটা খুবই স্পষ্ট যে তারা চরম 'প্র‍্যাক্টিক্যাল জিহাদ' বিরোধী। যেখানে কিত্বালের তামান্না না করে মৃত্যুটাও মুনাফিকের মৃত্যু, সেখানে এদের অবস্থা কোথায়! আউজুবিল্লাহ! অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এই পথে চলতেই উৎসাহিত করেছেন রাসূল(সা) কে ,তিনি বলেনঃ
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُواْ مِئَتَيْنِ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّئَةٌ يَغْلِبُواْ أَلْفًا مِّنَ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لاَّ يَفْقَهُونَ
_
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জিহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন।(আনফাল ৬৫)
.
আজকের এসব আম্বিয়াদের ওয়ারিশগন উৎসাহ দেওয়া তো দূরে থাক, কি বললে উম্মাহ সেদিক থেকে দূরে থাকবে সে চিন্তা করে। ইন্না লিল্লাহ! মাঝেমধ্যে মনে প্রশ্ন জাগে, এরা কি আল্লাহকে ভয় করে না !! এরা আল্লাহর পথের লোকেদেরকে জাহান্নামের কুকুর বলতেও ভয় পায় না, এরাও জান্নাতের ব্যপারে আশাবাদী এবং মানুষকেও আশান্বিত করে। অথচ আল্লাহ বলেনঃ
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ
وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ 142
_
তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল
.
.
জিহাদ একটা ছাকনীর মতও বটে। এটা দিয়ে মানুষের অবস্থানকেও আল্লাহ যাচাই করে নেন। খুব স্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেনঃ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّى نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُم
_
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জিহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি।
.
সরকারি মুর্জিয়াদের অবস্থান নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সুস্পষ্ট। আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীররা মর্ত্যলোকের মানুষের কাছে খুবই প্রশংসিত, কি সুন্দর 'মনভুলানো হাসি'! কিন্তু, এদের ব্যপারে আল্লাহর কাছে আসল সনদ আছে। আল্লাহর নূর দ্বারা দেখে এমন কোন প্রখর ইনটুইটিভ দ্বীনদার বান্দাদের নিকট এদের ব্যপারে প্রশ্ন করুন, আপনি চোখ থাকতেও অন্ধ হতে পারেন, কিন্তু তারা নয়। আল্লাহ তাদের খুবভাল করেই চিনে নেবার জ্ঞান দিয়েছেন।
হযরত উমার (রাযি) তো এক x গনককে তার পূর্বের এস্ট্রলজিক্যাল পেশার ব্যপারে বলে দিয়েছিলেন, চেহারা দেখে। খিযির (আ) দুরাচারী শিশুকে ভাল করেই চিনে নিয়েছিলেন। এজন্য আল্লাহর রাসূল(সা) এই শ্রেণীর মু'মিনদের দৃষ্টির ব্যপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
.
একারনেই প্রায়ই বলি, আপনার জীবদ্দশায় আল্লাহর পথে যদি বের নাও হবার সুযোগ পান, এমন কারো বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না যাদেরকে আল্লাহ নির্বাচন করেছেন তার দ্বীনের কাজে, যারা তাদের জীবন ও অর্থ এই রিয়ালিটির আর্কিটেক্ট এর রাহে উৎসর্গ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিনিয়ত আপনার অবস্থান পরিষ্কারকরনের প্রক্রিয়া করছেন, অচিরেই "তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জিহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি।"
কিছু না করার না থাকলেও অন্তত মনের দিক থেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের(স) সাথে এ ব্যপারে পবিত্র থাকা উচিৎ। অপারগ লোক কম্বলের নিচে থেকেও যেন এ ব্যপারে পবিত্র থাকে। এটাই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্মরণ করুন ওই সাহাবীদেরকে(রাযি.) যারা আল্লাহর রাসূলের(সা) নিকট এসেছিলেন এই আশায় যে তিনি হয়ত তাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করে দেবেন, কিন্তু রাসূল(সাঃ) যখন অপারগ হলেন তখন ফিরে আসার সময় তাদের গাল গড়িয়ে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল এ ভাবনার দরুন যে, তাদের নিকট আল্লাহর পথে ব্যয় করার মতও কোন জিনিস ছিল না। এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের(রাযি.) প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট, তার কিতাবেই তাদের ব্যপারে বলেছেনঃ
لَّيْسَ عَلَى الضُّعَفَاء وَلاَ عَلَى الْمَرْضَى وَلاَ عَلَى الَّذِينَ لاَ يَجِدُونَ مَا يُنفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُواْ لِلّهِ وَرَسُولِهِ مَا عَلَى الْمُحْسِنِينَ مِن سَبِيلٍ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
_
"দূর্বল, রুগ্ন, ব্যয়ভার বহনে অসমর্থ লোকদের জন্য কোন অপরাধ নেই, যখন তারা মনের দিক থেকে পবিত্র হবে আল্লাহ ও রসূলের সাথে। নেককারদের উপর অভিযোগের কোন পথ নেই। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী দয়ালু। "
.
وَلاَ عَلَى الَّذِينَ إِذَا مَا أَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لاَ أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ تَوَلَّواْ وَّأَعْيُنُهُمْ تَفِيضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا أَلاَّ يَجِدُواْ مَا يُنفِقُونَ
_
"আর না আছে তাদের উপর যারা এসেছে তোমার নিকট যেন তুমি তাদের বাহন দান কর এবং তুমি বলেছ, আমার কাছে এমন কোন বস্তু নেই যে, তার উপর তোমাদের সওয়ার করাব তখন তারা ফিরে গেছে অথচ তখন তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু বইতেছিল এ দুঃখে যে, তারা এমন কোন বস্তু পাচ্ছে না যা ব্যয় করবে।"

.
এজন্য আল্লাহর পথের ব্যপারে আন্তরিক পবিত্রতা অনেক বড় বিষয়। তেমনি ওই ব্যক্তিও সফল হবেনা যে লোক দেখানো কর্ম প্রদর্শন করে, অথচ অন্তরের দিক দিয়ে তার কর্মের ব্যপারে একদমই সততা নেই। আল্লাহ প্রত্যেকের অন্তরের অবস্থাসমূহ দেখেন। আল্লাহ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরদের মত নিজের প্রতি জুলমকারী আলিম এবং তাদের অনুসারীদের অন্তরের ব্যপারে সম্যক অবগত। এদের অবস্থানও আল্লাহর কাছে স্পষ্ট।
.
আল্লাহর রাসূলের(সা) জামানায় মুসলিমবেশধারী এরূপ কেউ ছিল না যারা প্রকাশ্যে জিহাদের ব্যপারে উলটো প্রচারণা চালায়, কাফিরদের পক্ষে গলা মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদ সাব্যস্ত করে। কিন্তু আজকের ইল্মের খেয়ানতকারী আলিম নামধারী জালিমরা অনায়াসে তা করছেন। এদের ফিতনাহ থেকে রহমান আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। অতিসত্বর আল্লাহ এদের পাওনা মিটিয়ে দেবেন। খুব শীঘ্রই জানিয়ে দেবেন, যা এরা বলত।

Digital Painting(?)

কম্পিউটারের পেইন্ট সফটওয়্যার দিয়ে আমার তোলা একটা (প্রাকৃতিক)ছবিকে চালু করেছিলাম। অবাক হয়েছিলাম এটা দেখে যে ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলো মিলিয়ন রঙের কম্পোজিট ছাড়া আর কিছু নয়। অর্থাৎ প্রাচীনকালে কারো বা কিছুর ছবি পেতে হলে ঘন্টার পর ঘন্টা তার সামনে বসে রঙ তুলি দিয়ে আকঁতে হত। কিন্তু টেকনোলজি দৌরাত্ম্যে এখন আর সেটা করতে হয় না, এখন ০.৫ সেকেন্ডের ব্যপার। রঙ তুলির বদলে ক্যামেরা বা হাতের ফোনই Digitally নিখুঁতভাবে 'এঁকে' দেয়! আগেরকার এনালগ পদ্ধতিতে ভাল আর্টিস্ট ছাড়া হুবহু অঙ্কন সহজ ছিল না। এবং তাদেরও ত্রুটি থাকতো। কিন্তু এখনকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাউকে তেমন শৈল্পিক দক্ষতা অর্জন করতে হয়না।সবাই মুহুর্তের মধ্যেই হুবহু জীবন্ত ছবি করে ফেলে। তবুও ভাল ছবি তুলতে ফটোগ্রাফিতেও দক্ষতা লাগে।
.
সুতরাং প্রাচীন নীতিতে ছবি করতে রঙ তুলির প্রয়োজন ছিল। আর আজকের ডিজিটাল জগতে মুঠোফোনই রঙ-তুলির দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ কাজটি মুহুর্তে করে দেয়,অর্থাৎ ডিজিটাল পেইন্টিং।
.
আমরা যারা বিচিত্র Animated creature এর ছবি তুলতে অভ্যস্ত, এবং সর্বোপরি নিজেদের ছবিই সানন্দে 'সেলফি' শব্দের দ্বারা করে থাকি, সতর্ক হওয়া উচিৎ। আমি দ্বীনদার ভাইদেরকেই এর মাঝে পাই,যা সত্যিই আফসোস ও উদ্বেগের বিষয়।
.
ক্যামেরার ছবি= ডিজিটাল পেইন্টিং,এর বোধোদয় যখন ঘটে তখন আলেমদের থেকে ক্যামেরা দ্বারা ছবি তুলবার হুকুমের ব্যপারে অজ্ঞ ছিলাম। কিন্তু আলেম উলামাদের এ ব্যপারে স্বীকৃতি না পেলেও সন্দেহ ছিল না যে এটা হারাম কাজ। ছবি 'তৈরিকারীর' ব্যপারে হাদিসেই সুস্পষ্টভাবে এসেছে। দেখতে পারেনঃ https://islamqa.info/en/365
.
আজ ক্যামেরার ঝলকানিতে এ্যানিমেটেড প্রানীর ছবি তৈরি করছেন, যেদিন তাতে প্রান সঞ্চার করতে বলা হবে এবং না করা পর্যন্ত নিরন্তর শাস্তি চলতে থাকবে, সেদিন সত্যিই উহা পারবেন কি?
.
মা'আযাল্লাহ।

Moderate & liberal Apologetics: মুরজিয়া

নাস্তিক মুর্তাদরা ইসলামের যে বিষয়গুলোতে আঙ্গুল তুলেছে আমরা সেসব ছেড়ে দিয়েছি। আর জাহেল মুর্জিয়া মোডারেট গুলো বলছে, ইসলামের প্রতি নাস্তিকদের বিদ্বেষের কারন মুসলিমরাই। ইসলাম নাকি সঠিকভাবে তাদের কাছে রিপ্রেজেন্ট করা হয় নি। এজন্য ওরা নাস্তিকদের দাওয়াত দিতে উঠেপড়ে লেগে যায়, ঘন্টার পর ঘন্টা বিতর্ক করতে থাকে। কিন্তু ফলাফলে ওদের পক্ষ থেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের(স) এর প্রতি কিছু গালি আর কটূক্তি ছাড়া আর কিছুই আসেনা। আর ওইসব এপোলোজেটিকরা ইসলামকে মুনাফিক মুর্তাদদের কাছে acceptable বানাতে দ্বীনকে কাটছাট করা শুরু করে দেয়। এর ফলে সোকল্ড বার্বারিক কিত্বাল বা জিহাদ সবার আগে লিস্ট থেকে কাটা পড়ে। এরকমভাবে সব কিছু।
.
যখন নাস্তিকরা বলে তোমাদের ইসলাম বলে দাসদাসী হালালের কথা। মোডারেট এপোলোজেটিক বলে 'ছিঃ ছিঃ সেটা পুরাতন ট্রেডিশন ছিল এখন এসব ইসলামে নেই'।
.
যখন নাস্তিকগুলো বলে,তোমাদের কুরআনে মানুষ মারার কথা বলে, তখন মোডারেট মুরজিয়াগুলো বলে, 'আপনি ভুল বলছেন ইসলাম শান্তির ধর্ম, কুরআন নাযিলের সময়ের ইতিহাস বলছেন বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে অনেক কিছু ঘটেছিল। সেসব এযুগে applicable নাহ।
ইসলামে কোন জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদের স্থান নেই।"
.
যখন বলে , তোমাদের কুরআন বলে পৃথিবী ফ্ল্যাট, সূর্য ডোবে, আকাশটা ছাদের মত। হেহেহেহে... দেখুন আয়াত নাম্বার এত এত... কিন্তু আদুনিক বিজ্ঞ্যান আজ বলছে ওমুক ওমুক। ছ্যাঃ ছ্যাঃ ছ্যাঃ এসব তো আদি অন্ধকারাচ্ছন্ন নিরক্ষরদের প্রাচীন বিশ্বাস, এত্ত অবৈজ্ঞানিক ইসলাম!"
শুনে মডারেট মুরজিয়া বলে, 'না না না, আমাদের কুরআনে ১০০% বিজ্ঞান সম্মত, এবং আধুনিক, বিগব্যাং, এভ্যুলুশন, হেলিওসেন্ট্রিসিজম, স্ফেরিক্যাল আর্থ থেকে শুরু করে এমনকি দেখেন টুইনটাওয়ার ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বানীও আছে! এই যে দেখুন উটপাখি ডিম, অমুক শব্দটির বুৎপত্তিগত দূরবর্তী সমার্থক শব্দ অমুক, সুতরাং কুরআন আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত। ভাবুন কি করে ১৪০০ আগে বিজ্ঞান এত কিছু বলে যা আজ বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতেছে ওফফফফ!!"
.
এভাবেই একটা দল কাফেরদের কাছে গ্রহণযোগ্য দ্বীন বানাতে গিয়ে কুফফারদের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যপারকে কাটছাঁট করে ইসলামের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।
.
কাফেররা সব জেনেই কুফরি করে, সুতরাং যাদের থেকে রহমান আলো তুলে নেন, আপনি সে আলো প্রদানকারীর কে?? কেন কাফেরগুলোর সাথে বিতর্ক করে সময় নষ্ট করছেন এবং তাদের মুখ থেকে এমন কিছু বের করছেন যা আল্লাহ ও তার রাসূল(স) এর জন্য কষ্টকর!?
.
শুনুন কিছুটা প্রাসঙ্গিক চমৎকার লেকচারঃhttps://youtu.be/AF_LBe7wfio

গনতন্ত্র- স্বতন্ত্র শিরকী দ্বীন

Democracy:A Polytheistic Creed 

Manly p. Hall
স্বীয় দ্বীন থেকে বিচ্যুত মুসলিম জাতি ডেমোক্রেসি বা জুমহুরিয়াকে উত্তমরূপে গ্রহন করে নিয়েছে। এতে তারা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে যার জন্য তারা এর বিকল্পে অন্য কিছুকে ভাবেনা। এমনটিও দেখা যায় যে অনেক মুসলিম নামধারী বান্দা নিজেকে ডেমোক্রেটিক মোজলেম পরিচয় দিয়েও গর্ববোধ করছে। ফেসবুকের পলিটিকাল ভিউতে তারা ডেমোক্রেসিকে সদর্পে লিখে রেখেছে। এমনকি আলেমসমাজের বড় একটা সংখ্যা গনতন্ত্রকে হালাল ও গ্রহন-অনুসরনযোগ্য বলে প্রচার করছে। এদেশের কথিত 'সহীহ আকিদাওয়ালা' আহলে হাদিসের আলেমগনকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিতেও দেখা গেছে।
এবার আসুন ইসলামের আলোকে গনতন্ত্রকেএকটু সুক্ষভাবে বিচার করা যাক।
চমৎকার এক অভ্রান্ত দলিলের দ্বারা গনতন্ত্রের স্বরূপকে স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে।
.
একদিন রাসূল(সাঃ) আদী ইবনে হাতিম (রাঃ) এর কাছে দেখা করতে যান। আদী ইবনে হাতিম(রাঃ) খ্রিষ্টান ছিলেন। সাক্ষাৎকালে তার গলায় রৌপ্য নির্মিত ক্রুশ ঝুলছিল। রাসূল(সা) তার সামনে তিলাওয়াত করছিলেন-
اتَّخَذُواْ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ اللّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُواْ إِلاَّ لِيَعْبُدُواْ إِلَـهًا وَاحِدًا لاَّ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ
আয়াতটি। যার অর্থঃ
'তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদিগকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ ব্যতীত এবং মরিয়মের পুত্রকেও। অথচ তারা আদিষ্ট ছিল একমাত্র মাবুদের এবাদতের জন্য। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তারা তাঁর শরীক সাব্যস্ত করে, তার থেকে তিনি পবিত্র'[৯:৩১]।
.
এটা শুনে ইবনে হাতিম (রা) তখন বলেন 'ইহুদী-খ্রিষ্টানরা তো তাদের দরবেশ-আলেমদের উপাসনা করেনি'। তখন নবী(সা) বলেন, "তাহলে শোনো, তারা তাদের দরবেশ ও আলেমদের হারামকৃত বস্তুকে হারাম বলে মেনে নেয় এবং হালালকৃত বিষয়কে হালাল বলে স্বীকার করে নেয়।এটাই তাদেরকে তাদের উপাসনা করার শামিল।" এরপরে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) আদী (রাঃ) কে কিছু হৃদয়স্পর্শী বাক্য দ্বারা তাওহীদের দাওয়াত দেন। সাহাবী আদী ইবনে হাতিম(রাঃ) তখনই ইসলাম গ্রহন করেন। এ ঘটনা নবী(সা) এর পবিত্র চেহারা মোবারক খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
.
হুযাইফা ইবনে ইয়ামান(রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ) থেকে ৯:৩১ এর তাফসীরে এরূপই বর্নিত আছে যে, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে হালাল হারামের মাস'য়ালায় আলেম ও ইমামদের কথার অন্ধ অনুকরণ। সুদ্দি(রঃ) বলেন, তারা তাদের বুযুর্গদের কথা মানতে শুরু করে এবং আল্লাহর কিতাবকে একদিকে সরিয়ে দেয়।
.
অতএব, এটা সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, যারা আল্লাহর বিধান বাদ দেয় এবং নিজ হাতে বিধান রচনা করে তারা নিজেদেরকে রবের আসনে বসায়। সুতরাং সেসব ব্যক্তিদের আনুগত্য = তাদের উপাসনা করার শামিল। এটাই ৯:৩১ এর মূল বক্তব্য যার দলিল সরাসরি হাদিস ও সাহাবীদের তাফসির থেকে পাওয়া যায়। সেসব উপরেই উল্লেখ করেছি।
এবার ভাবুন..যে পার্লামেন্ট-আইন প্রণয়নকারী পরিষদ নিজেদের হাতে আইন তৈরি করে এবং যারা(ভোটদানকারী জনগন) তাদেরকে রবের আসনে বসানোর কাজে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত করে, এরা সবাই আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে নব্য বিধান তৈরির মাধ্যমে কি নিজেদেরকে সৃষ্টিকর্তার আসনে বসায় নি??
এবং আপামর মূর্খ জনগোষ্ঠী কি ওই সকল ব্যক্তিদের(যারা নিজেদেরকে স্রষ্টার আসনে বসিয়েছে তাদের) বিধিবিধানের আনুগত্য করার মাধ্যমে তাদের ইবাদত করছে না??
.
একটু সুক্ষ্মদর্শী হঊন। মনে করুন আপনি একটি গণতান্ত্রিক দলকে ভোট দিয়ে এসেছেন যে দলটি নির্বাচিত হয়ে নিজেদের তৈরি বিধান প্রনয়ন করবে। এর অর্থ আপনি নিজেকে পরোক্ষভাবে ইলাহ বানিয়েছেন। আর পরবর্তীতে ইলেক্টেড গণতান্ত্রিক দলটির বিধিবিধান ও গণতান্ত্রিক চেতনা আপনি আন্তরিকভাবে পালন করবেন। অর্থাৎ যারা প্রত্যক্ষভাবে নিজেদেরকে আইনদাতা হিসেবে মিথ্যা মা'বুদ রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে, আপনি তাদেরকেই মান্য করে তাদের উপাসনাই করছেন যেমনটি আল্লাহ আহলে কিতাবের আইনরক্ষাকারী আলেম ও পন্ডিতগনের ব্যপারে ৯:৩১ আয়াতে বর্ননা করেছেন। এর অর্থ আপনি স্পষ্টভাবে শিরক করে মুশরিক হয়ে গেলেন।
.
আশা করি বুঝতে পারছেন, ডেমোক্রেসি কিরূপ massive polytheistic trap! অনেক মানুষ জেনেও শিরকের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। আহলে কিতাবিরা ওদের পন্ডিত/আলেমদের কথার অন্ধ অনুসরন করত। ওরা ছিল রিলিজিয়াস ফিগার যার জন্য তারা যদি দ্বীনি লেবাসে ধোকা দিত সেটা বোঝাটা তাদের মান্যকারীদের(উপাসনাকারী) পক্ষে আজকের অপেক্ষা দুরূহ ছিল। অথচ আজকে বিষয়টা অপেক্ষাকৃত অনেক অনেক স্পষ্ট। যারা মানবরচিত আইনপ্রনেতা তাদের সাথে ইসলামের কোন নূন্যতম সম্পর্কও নেই। অথচ এরাই দিবালোকে জনগনকে শিরকে ডুবিয়ে রেখেছে।।কতটা নিকৃষ্ট অবস্থা আজ আমাদের! আমরা সুস্পষ্ট বিষয়েও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ঘুরছি।
আর আলেমসমাজ?? তারা ওই বাতিল বিধানের দাতা শাসক তথা বাতিল মা'বুদদের আনুগত্যের নির্দেশ দেয়! লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!
.
এ ব্যপারে সকল হক্কপন্থী শ্রেষ্ঠ আলেমগন একমত যে শয়তান,মূর্তি, আল্লাহর আইন(হালাল হারাম) বদলকারী, নিজ হাতে বিধান রচনাকারীরা হচ্ছে তাগুত। আর তাওহীদের দুই রোকনের প্রথমটিই হচ্ছে কুফর বিত তাগুত। অর্থাৎ তাগুতকে অস্বীকার করা। অতএব ডেমোক্রেটিক বা ম্যানমেড ল ইউজারদের মান্য করা না করা সরাসরি তাওহীদের সাক্ষ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আমাদের দায়িত্ব শুধু পৌছানো, মানা না মানা পাঠকদের নিজের উপর নির্ভর করে।
আমি এখানে গণতান্ত্রিক আইনব্যবস্থায় সাংবিধানিক আইনি ধারার সাথে ইসলামের কন্ট্রাডিকশন গুলো পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন করিনি বরং গোটা মানবরচিত গণতান্ত্রিক সিস্টেমের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছি।
.
শয়তান চায় মানুষ মূর্তিপূজা ও যেকোনো পলিথেইস্টিক ক্রীডের দিকে স্থায়ীভাবে ধাবিত হোক। ম্যাস ইন্ডকট্রিনেশনের উদ্দেশ্য নিয়ে ওরা সর্বপ্রথম বিশ্বব্যাপী কট্টর সমাজতন্ত্র/কমিউনিজম এর উত্থান ঘটায়। শয়তানের এজেন্ডা আগেই জানত যে ওদের চরমপন্থার এথিস্টিক ফিলসফির গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা। এজন্য গনতন্ত্রকে দেখিয়ে দিল। এজন্য সেটা ছিল একটা প্রকারের নাটক।এটা বুঝতে কল্পনা করুন, কোন ব্যক্তি অপর একজনকে ধারালো ছুরি দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল, পরক্ষনে সে ছুরি বাদ দিয়ে লাঠি দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে, এমতাবস্থায় ভিক্টিম ছুরির স্থানে লাঠি দেখে খানিকটা স্বস্তিবোধ করবে। সমাজতন্ত্র ও গনতন্ত্র এর ক্ষেত্রেও এই খেল খেলেছে তাগুতের প্রতিনিধিরা। ওরা কট্টর কমিউনিজম এর পতন ঘটিয়ে স্বাধীন অধিকারের(বাই দ্যা পিপল, ফর দ্য পিপল, অফ দ্য পিপলের) গনতন্ত্রের প্রশস্ততা দেখিয়ে সেটাকে গ্রহন করিয়েছে। যার ফলে মানুষ স্বেচ্ছায় গনহারে গণতান্ত্রিক আদর্শকে নিজ করে নিয়েছে এমনকি এটা রক্ষায় জীবনও উৎসর্গ করছে! অর্থাৎ শয়তান সুশীল সভ্যতার চাকচিক্যের পিছনে জনগনকে গনহারে মুশরিক বানাচ্ছে।
এই গনতন্ত্রই সকল দেশব্যপী আজ কথিত 'শান্তি' প্রতিষ্ঠার চালিকাশক্তি রূপে দণ্ডায়মান। তারা 'কাফেরজাতিসংঘের' ছায়াতলে একচোখ যুক্ত মসীহের নেতৃত্বে ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট গঠনের আশা রাখে।
.
স্যাটানিস্ট/ফ্রিম্যাসনিস্ট/অকাল্টিস্টদের দৃষ্টিতে গণতন্ত্রঃ
_________________________________________________
৩৩ ডিগ্রি ফ্রিম্যাসনিস্ট ম্যানলি পি হল তার সিক্রেট ডেস্টিনি অব আমেরিকা নামের প্রকাশনায় বলেনঃ 'World democracy was the secret dream of the great classical philosophers.."
"The brilliant plan of the ancients has survived to our time.."
"..and it will continue to function until the great work is accomplished.. "
.
রিসার্চারদের অভিমত এই যে, তাদের ওই এন্সিয়েন্ট প্ল্যান হচ্ছে সারাপৃথিবীতে গত শতকে আম্রিকা কর্তৃক বিগ্রহ ঘটিয়ে বিশ্বব্যাপী ডেমোক্রেসি প্রতিষ্ঠা,যার জন্য এখনো যুদ্ধে লিপ্ত আছে। ২০০৫ এ প্রেসিডেন্ট বুশ এক ভাষনে বলেনঃ ' what our founder declare the new order of ages(নোভাস অর্দো সেকলোরামের অন্যতম অনুবাদ), they are acting on an ancient hope, that meant to be fulfilled'
.
ডঃ স্ট্যানলি মন্টেত্থ এক সাক্ষাতকারে বলেনঃ "অকাল্ট এজেন্ডা ইউএসএর মিলিটারি ও ফিনান্সিয়াল শক্তি ব্যবহার করে সমাজের সর্বোচ্চ স্তরে কাজ করে যাচ্ছে শুধু মাত্র ওয়ানওয়ার্ল্ড স্টেট গঠনের জন্য, এ ব্যপারে প্রেসিডেন্ট বুশ খুব খোলামেলাভাবেই বলেছেন, আমেরিকার কিরূপ উদ্দেশ্য রয়েছে সারাপৃথিবীর জাতিগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার মধ্যে.. এটা বুঝতে আপনাকে ম্যানলি পি হলের লেখনী গুলো পড়তে হবে, সেখানে ডিটেইলস বলা হয়েছে গুপ্তসংগঠনগুলো ৩০০০ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী গনতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার লক্ষে কাজ করেছে। আপনারা জর্জ বুশের স্পীচ পড়েছেন যেটা ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেসির পূর্বে দিয়েছেন সেখানে তিনি বলেন ২৫০০ বছর ধরে মানুষ বিশ্বব্যাপী গনতন্ত্র আনয়নের লক্ষে কাজ করেছে। "
.
ডঃ ওবাইদা হ্যারিস বলেনঃ গনতন্ত্র পার্ফেক্টেড জনগনদের দ্বারা মান্য করা সম্ভব যারা মানুষের আনুগত্য করবে, এটা সম্ভব হবে প্লেটোর দর্শন অনুযায়ী পার্ফেক্ট লিডারশীপের দ্বারা যার জ্ঞান ও ক্ষমতা উভয়ই থাকবে। গনতন্ত্রের অকাল্ট প্রমিস হচ্ছে একটি ফেয়ার ওয়ার্ল্ড প্রতিষ্ঠা, আর এই প্রমিস হচ্ছে গুপ্ত ও অপ্রকাশিত।
.
পূর্বেই উল্লেখ করেছি ইবলিস ভাল করেই জানে কোন পন্থায় মানুষকে সহজেভাবে শিরক করিয়ে গনহারে মুশরিক বানানো যাবে। সে লক্ষ্যেই হাজার হাজার বছর সময় ধরে এই পলিথেইস্টিক দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছে।
তো, এরপরও গনতন্ত্রকে মান্য করবেন....?



“ট্রায়াল অ্যান্ড এররের মাধ্যমে শতাব্দীর পর শতাব্দী চেষ্টার পর যে রাষ্ট্রব্যবস্থার [উদারনৈতিক গণতন্ত্র] একটি কার্যকরী রূপ আমরা পশ্চিমে তৈরি করেছি, আমরা চাচ্ছি মুসলিম বিশ্বে রাতারাতি সেটা বাস্তবায়ন করে ফেলতে। এটা তো এমন না যে আপনি একটা পিসি থেকে পেনড্রাইভে কিছু ফাইল নিলেন, আর আরেকটা পিসিতে পেনড্রাইভটা লাগিয়ে ফাইলগুলো কপি-পেস্ট করে দিলেন।
পশ্চিমে যে গনতান্ত্রিক ধারা গড়ে উঠেছে, তা একদিনে হয় নি। পশ্চিমা মানুষের মনস্তত্ত্ব, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মনোভাব সবকিছু বিবেচনা করে, সব কিছুর সাথে তাল মিলিয়েই ধীরে ধীরে এ ব্যবস্থা আমাদের এখানে সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর এমনতো না যে আমাদের এখানেও কেউ গণতন্ত্র কিংবা সেক্যুলারিযমের বিরোধিতা করেনি। সেক্যুলারিযম আর গণতন্ত্রের বিরোধিতা তো খোদ পশ্চিমেই হয়েছে। আর আমরা ভাবছি মুসলিমরা এটা চুপচাপ মেনে নেবে?
অথচ তাদের ধর্ম তাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের আছে এক হাজার বছরের বেশি ইসলামি রাষ্ট্রের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কোন গণতন্ত্র, কোন সেক্যুলারিযম ছাড়াই এক হাজার বছরের বেশি সময় মুসলিমরা পৃথিবী শাসন করেছে। যে সিস্টেম আমরা তাদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছি, সেটা সরাসরি তাদের ধর্ম, তাদের নৈতিকতার কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক। তারা এটা কেন মেনে নেবে? পশ্চিমা নীতি নির্ধারকদের এটা বোঝা উচিৎ যে মুসলিমরা কখনই গণতন্ত্রকে, যেভাবে আমরা গণতন্ত্রকে বুঝি - তা মেনে নেবে না। মুসলিমরা ইসলাম চায়।“
.
ওপরের কথাগুলো সাবেক CIA- কর্মকর্তা মইকেল শ’ইয়ারের। একজন কাফির হয়ে এ সত্য যতোটা পরিষ্কারভাবে সে বুঝেছে, দুঃখজনকভাবে মুসলিম রাজনীতিবিদ আর উঠতি মুজাদ্দিদরা সেটা বুঝতে পারছেন না।

أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ
50
তারা কি জাহেলিয়াত আমলের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে?

কুরআনিয়্যাহ/আহলে কুরআন/কুরানিস্ট/ কুরআন অনলি/সাবমিটার্স/কালো কাতো

 আব্বাসিয়া খিলাফতের সময় ইব্রাহীম আন নাজ্জাম নামের একজন মুতাজিলা কবি প্রথম এরূপ চিন্তার অবতারণা করেন।মানে নবী (সা) এর কোন কথা মানবেন না। অর্থাৎ হাদিস অস্বীকার। শুধুমাত্র কুরআন! একটি মাজহাবও গড়েন নাজ্জামিয়্যাহ নামে। কন্টেম্পোরারী ইমাম শাফীঈ(রহ.) তার মতবাদকে রিফিউট করে একদম পর্যুদস্ত করেন। একটি কিতাবও লেখেন ডিবাঙ্ক করে।আরো কিছু স্কলার ইব্রাহীম নাজ্জামের বিরুদ্ধে কথা বলেন। যেহেতু সাহাবী তাবে তাবেইনের যুগের একদম কাছে ছিল তাই এ ফের্কা সুবিধা করতে পারেনি। এরপরে নতুন করে ১৯ শতকে আহলে কুরআন নামে পাকিস্তানে আব্দুল্লাহ চক্রলভীর দ্বারা অর্গানাইজড হয়। এর মাঝে রাশাদ খলিফা আমেরিকায় পড়াশুনা করবার মধ্যে কুরআন নিয়ে গবেষনা করতে করতে তিনিও একই মতবাদ চালু করেন সাবমিটার্স নামে।তিনিই সর্বপ্রথম ৭৯:৩০ এর অনুবাদে উটপাখির ডিমের মত পৃথিবীর আকারের তত্ত্ব চালু করেন।আজ যেটা মডারেটদের ভোতা অস্ত্র।এরপরে তিনি, একটি সূরা থেকে কিছু আয়াত বাদ দিয়ে নিজের মত কুরআনকে মডিফাই করেন ১৯ সংখ্যার মাঝে মিরাকুলাস কিছু আছে বলে দ্বার জন্য। কুরআনকে ঘিরে একধরনের নিউমেরলজি শুরু করেন।এক পর্যায়ে নিজেকে নবী দাবি করেন। ফলে ১৯৯০ সালে অনিবার্যভাবে পটল তুলতে হয় জামাত আল ফুকরার কিছু সদস্যের ছুরিকাঘাতে। কথিত এই টেররিস্ট অর্গানাইজেশনের সদস্যদের দ্বারা কাদিয়ানী ধর্মের এক লিডারও অক্কা পায়।
.
কিন্তু তার অনুসারীরা নিরবে নিভৃতে তার মতবাদ প্রচার করতে থাকে। নাইজেরিয়ায় কুরানিস্ট দল কালো কাতোর জন্ম হয়।এভাবে দাওয়াতি কাজের দ্বারা আস্তে আস্তে নতুন এই দ্বীনটিতে গোমরাহদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পাশ্চাত্যে নও মুসলিমদেরও অনেকে কুরানিজমের ফাদে পড়ছে বা কুরানিজম ধর্ম প্রচারের জন্য অনেকেই অনলাইনে কাজ করছে। এরা তাদের ওয়েবসাইটে কিছু ডোমেইনে Real, True islam, pure islam ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে।এতে করে নিয়মিত ট্রুথ ছিকার ইউটিউবার, একটু পণ্ডিত গোছের ছেলেপেলে নিজেই নিজের ব্রেইনওয়াস করে নিজের পায়ে কুড়াল মারছে। এ নয়া ধর্মটিতে যেহেতু হাদিসকে মান্য করা হয় না, তাই অনেক জিনিসের ন্যায় নামাজ নিয়েও চিন্তায় পড়ে সবাই। তাই এরা নিজেরা কুরআন নিয়ে নিউমেরিক্যাল -বাতেনি-জাহেরি অনেকরকম যুক্তি নির্ভর গবেষনা করে তিন ওয়াক্ত 'প্রার্থনা' উদ্ভাবন করেছে।আর সেটা সাধারন মুসলিমদের থেকেও একদম ভিন্ন। দেখুন- https://m.youtube.com/watch?v=KQYPY-zNPlk
.
হাসবেন্না কিন্তু!�
যাহোক এদেশেও চিপাচাপায় এ দ্বীনের প্রচারকার্য চলছে।এটা সিম্পলি বাহাউল্লাহর বাহাই,বাবিজম,কাদিয়ানীর আহমাদিয়ার মত স্বতন্ত্র ধর্ম।
.
তারা তাদের মতবাদ দাড় করাতে আয়াতের কিছু শব্দের ভ্রান্ত অনুবাদ করে আবার সুবিধামত অনুবাদ করে, যাতে করে হাদিসকে কোন ভাবে বাদ দেওয়া যায়। যতটুকুন ওদের আদর্শে সংঘর্ষ করে সেটুকুন যুক্তি দিয়ে মানে না বা চোখ বুজেই মানেনা। ওদের আদর্শে সমস্যা হতে পারে যেসব প্রমান তা নিয়ে ওরা আলাদা গবেষনা করে উত্তর তৈরি করে রেখেছে।যদিও কুরআনের অনেক আয়াত আছে যা তাদের দ্বীনিকে ভ্রান্ত প্রমান করে দেয়।ওদের বেশির ভাগই কাফেরদের সাথে ফ্রেন্ডলি আচরন করে। আর ওদের মধ্যে উগ্রতা আর ঔদ্ধত্য লক্ষণীয়। আফ্রিকানদের মধ্যে কুরআনিস্টদের দেখেছি এরা নবী(সা) কে শ্রদ্ধা বা মান্য করাকেও শিরক বলে। ওদের ভাষ্য আল্লাহ আর কুরআন ছাড়া সব বাতিল।এমনকি যার উপর তা নাযিল হয়েছে সেও। ইদানীং এদেশে দিনে দিনে কুরানিজম ধর্ম জনপ্রিয় হচ্ছে। ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।https://m.youtube.com/watch?v=6Fzh6nlrOHw ভিডিওটায় একটা টাকলু কে দেখবেন। অনলাইনে ভালই এ দ্বীনের দাওয়াতি কাজ চালাচ্ছে স্লোলি।
.
চমৎকার বিষয় হচ্ছে যার উপর কুরআন এসেছে এদের কেউ তাকে অস্বীকার করে, যারা হাদিসের বর্ননা কারী তাদের কথা গুলোকে অস্বীকার করে, অথচ তারাই কুরআনের সংকলক ও লিপিবদ্ধকারী।এরকম হাজারো paradox আছে এ নয়া ধর্মে। আর ওরা যতই লজিক দেখাক না কেন। হিস্টোরিক্যাললি ওদের হাদিস রিজেকশ্যনের আদর্শ ধোপে টেকেনা। একেক যামানার হক্কপন্থী শ্রেষ্ঠ আলেমদের হাদিসের ব্যপারে দৃষ্টিভঙ্গি চেইনের ন্যায় একজনের সাথে আরেকজন যুক্ত,যা তাদের লিখে যাওয়া কিতাবেও স্পষ্ট। একজনের পূর্বে আরেকজনের হায়ারার্কির একদম উপরে সাহাবীগন ও সবশেষে নবী(সা) কে পর্যন্ত স্পর্শ করবে। তাই হাদিসের ব্যপারে গ্রহণযোগ্যর প্রশ্ন উঠেছে অথবা কোন ধরনের বিকৃতি কস্মিনকালেও কেউই প্রমান করতে পারবে না। এমতাবস্থায় এই আকিদাগত চ্যুতির অভিযোগ একদম নবী(সা) পর্যন্ত পৌছে যাবে। ফলে কুরানিস্টদের মধ্যেই নবী(সা) এর নবুয়্যতের গ্রহণযোগ্যতায় সংশয় সৃষ্টি হবে।যা কুরআনকেও তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই অবশেষে হয় সে এথিস্ট/এগনস্টিক হবে না হলে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করবে। এজন্য হাদিস অস্বীকার করার ফল একদমই ভাল নয়। তবে স্টুপিডদের কথা আলাদা, যাদের প্রুডেনশিয়াল সেন্স নাই, তাই বাতিল চিন্তায় অটল থাকে। এ ফিতনার ব্যপারে সতর্কতা আবশ্যক।

যাদুবিদ্যা সংক্রান্ত সুবিশাল ভ্রান্তি এবং নিওমু'তাযিলা চিন্তাধারা

IndraJala
যাদুবিদ্যা সম্পর্কে একটা সুবিশাল ভ্রান্তি মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে প্রচলিত আছে। আমি মনে করি এই ভুল ধারনা একদিক থেকে অনেক ভাল যা মানুষ এ অপবিদ্যার থেকে দূরে রাখে।কিন্তু খারাপ দিকটিও অত্যন্ত ব্যাপক। দুঃখের বিষয় যে এই জ্ঞানগত সীমাবদ্ধতা আলিমগনের মধ্যেও বিরাজমান। এটা এই যে, যাদু শয়তান এর দ্বারা হয়ে থাকে বা শয়তান সংঘটিত করে বা শয়তান জ্বীন এ কাজের জন্য দায়ী। যাদুবিদ্যার সমস্ত দায়ভার এভাবে শয়তানের উপর দেওয়ার পরে অন্য সবকিছুকে আর নিষিদ্ধ আর্টের আওতায় ফেলা হয় না। এজন্য আগের যুগের আলিমগনকে আলকেমিক্যাল প্রাকটিসকে যাদুবিদ্যায় অন্তর্ভুক্ত করতে দেখলেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে কিছুতেই যাদুশাস্ত্রের আওতায় ফেলতে দেখবেন না। সেটা পবিত্র বিজ্ঞান!

আপনি যদি কোন আলিমকে প্রশ্ন করেন কেন যাদুবিদ্যা নিষিদ্ধ ও কুফরি(?), তারা একরকমের মুখস্ত বলে দিবেন, যাদুকররা শয়তানের পূজা করে,শিরক করতে বাধ্য করে, আল্লাহ ও তার কালামকে অবমাননা করতে বলে যেন তারা তাদের বিভিন্ন দুঃসাধ্য কাজ গুলো তারা করে দেয়। এর বেশি তারা বলেন না। দেখে আসতে পারেনঃ https://islamqa.info/en/4010
তারা এমনকি স্পেলকেও 'শুধুমাত্র' শয়তান জ্বীনদের ইনভোকেশনের উপায় বলছে।
এরকম demoniac হস্তক্ষেপের সাথে যাদুকে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট করার জন্য যখন অধিকাংশ ভিন্ন মাজহাবের যাদুকে দেখা যায় তখন সাধারন মানুষ একে magick বলেই শনাক্ত করতে পারেনা।
অনেকে দেখি যাদুবিদ্যার দিকেই পা বাড়ায়, অথচ জানেই না যে এই আর্ট সর্সারি বৈ আর কিছু নয়।
.
তারা আরেকটা কথা বলেন যে, যাদু হচ্ছে শুধুই ধারনাগত পরিবর্তন ঘটায়, চোখকে সম্মোহিত করে,যেমনটা মূসা(আ) এর সামনে যাদুকররা করেছিল। তারা বাহ্যিক পরিবর্তন ঘটানোকে অস্বীকার করতে চান। মনে রাখবেন মুতাযিলা সম্প্রদায় যাদুর অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না। বস্তুত,যাদু বাহ্যিকভাবেও পরিবর্তন ঘটায়। একারনেই ইহুদীরা আল্লাহর রাসূলকে(স) যাদু করে অসুস্থ করে ফেলেছিল। আজকের এক শ্রেনীর আলিমদের যাদুর সজ্ঞায়ন অনুযায়ী ইহুদীরা আল্লাহর রাসূল(সাঃ) কে শয়তান জ্বীন ব্যবহার করে বিরক্ত করে বা শারীরিকভাবে কষ্ট দিয়ে অসুস্থ করবার কথা। কিছু দুর্বল হাদিসে যাদুর দ্বারা বস্তুর আকৃতির ফিজিক্যাল পরিবর্তন/ট্রান্সফর্মেশনও সম্ভব বলে পাওয়া যায়। বাবেল শহরে হারুত ও মারুত বিশেষ গুপ্ত নিষিদ্ধ বিদ্যা শেখাতো। তারা তো শয়তান জ্বীন ছিল না।
.
যাদুবিদ্যার অনেক শাখা বিদ্যমান এর মধ্যে একটা মাইনর ব্রাঞ্চ হচ্ছে জ্বীনের সাহায্যে অতিপ্রাকৃত বিষয় করে দেখানো(ডায়নামো)। একে বাহ্যিকভাবে যাদুর শাখায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও মূল যাদু নয় যেমনটা হাতের চালাকি দ্বারাও ম্যাজিশিয়ানরা যাদুর খেলা দেখিয়ে থাকে। মূল যাদুবিদ্যা স্বতন্ত্র বিষয়। আর এতে শয়তানের তুলনায় মানুষের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকে। কিছু যাদু(i.e:chaos magick) আছে যাতে জ্বীনদেরও সাহায্য লাগে না। যাদু সংঘটন কাজটি করে যাদুকরের ইন্টেনশন,অভিপ্রায়। শয়তান জ্বীনরা যাদুকরদের বাহ্যিক নিরাপত্তা, দিকনির্দেশনার কাজটি সামান্যভাবে করে থাকে। এজন্য পাশ্চাত্যে যাদুকররা শয়তান জ্বীনদেরকে বলে স্পিরিট গাইড, দেবী,দেবতা, হায়ার বিং প্রভৃতি। যাদুবিদ্যায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিচিত্র শিরকি কাজের হুকুম উইজার্ডদের পালন করতে হয়। এমনকি বিকৃত যৌনাচার পর্যন্ত। এ সকল রিচুয়াল কোন ম্যাজিক্যাল শক্তি জেনারেট করে না, শুধুই শয়তানের সাথে সখ্যতার জন্য করা হয়। কিন্তু আজকে আমাদেরকে শেখানো হয় যাদুর উৎস ওটাই!! আজকের প্যাগানিজমের নবজাগরনে উইচ/মিস্টিকরা সবচেয়ে বেশি যে ধরনের হেক্স/যাদু করে থাকে তার অধিকাংশই curse ভিত্তিক। সেখানে শয়তানের ভূমিকা গৌন। এক্ষেত্রে এসকল সম্মানিত আলিমগন কি বলবেন জানতে আগ্রহী। ইন্টেনশন এর শক্তিকে যাদুবিদ্যায় ব্যবহারের বিষয়টি ঠিক ওইরকম যেমনটা মানুষের ঈর্ষান্বিত চোখের নজর(evil eye) লাগে। মানুষের কথার(স্পেল/ইনক্যান্টেশনের) যে প্রভাব রয়েছে সেটা নজর ও অভিশাপের বিষয়টি দ্বারা বোঝা যায়। হয়ত জানেন যে, সলোমন দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীরা সুবিশাল গাছ কর্তন এর বিকল্প হিসেবে কার্স ব্যবহার করে।
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ كُنَّا نَرْقِي فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَرَى فِي ذَلِكَ فَقَالَ ‏ "‏ اعْرِضُوا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقَى مَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ شِرْكٌ ‏"‏ ‏.‏

‘আওফ ইবনু মালিক আশজা’ঈ (রাঃ)

তিনি বলেন, আমরা জাহিলী (মূর্খতার) যুগে (বিভিন্ন) মন্ত্র দিয়ে ঝাড়ফুঁক করতাম। এজন্যে আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আবেদন করলাম-হে আল্লাহর রসূল! এক্ষেত্রে আপনার মতামত কি? তিনি বললেন, তোমাদের মন্ত্রগুলো আমার নিকট উপস্থাপন করো, ঝাড়ফুঁকে কোন দোষ নেই-যদি তাতে কোন শিরক (জাতীয় কথা) না থাকে।
(ই.ফা. ৫৫৪৪, ই.সে. ৫৫৬৯)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৬২৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ عُمَيْرٍ، مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ قَالَ شَهِدْتُ خَيْبَرَ مَعَ سَادَتِي فَكَلَّمُوا فِيَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَعْلَمُوهُ أَنِّي مَمْلُوكٌ ‏.‏ قَالَ فَأَمَرَ بِي فَقُلِّدْتُ السَّيْفَ فَإِذَا أَنَا أَجُرُّهُ فَأَمَرَ لِي بِشَيْءٍ مِنْ خُرْثِيِّ الْمَتَاعِ وَعَرَضْتُ عَلَيْهِ رُقْيَةً كُنْتُ أَرْقِي بِهَا الْمَجَانِينَ فَأَمَرَنِي بِطَرْحِ بَعْضِهَا وَحَبْسِ بَعْضِهَا ‏.‏ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ‏.‏ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ يُسْهَمَ لِلْمَمْلُوكِ وَلَكِنْ يُرْضَخُ لَهُ بِشَيْءٍ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ ‏.‏

আবুল লাহমের মুক্তদাস উমাইর (রাঃ)

তিনি বলেন, আমি খাইবারের যুদ্ধে আমার মনিবদের সাথে অংশগ্রহন করি। তারা আমার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে কথা বললেন। তারা তাঁকে আরো জানান যে, আমি ক্রীতদাস। বর্ণনাকারী উমাইর (রাঃ) বলেন, আমার ব্যপারে তাঁর হুকুম মোতাবিক আমার গলায় তরবারি ঝুলিয়ে দেয়া হল। তরবারিটিকে আমি মাটিতে হেঁচড়িয়ে হেঁচড়িয়ে হাটছিলাম। তিনি গনিমতের মধ্য হতে কিছু তৈজসপত্র আমাকে দিতে বললেন। আমি তাঁকে কয়েকটি মন্ত্র শুনালাম, যেগুলো দিয়ে আমি পাগলদের ঝাড়ফুঁক করতাম। তিনি এর কিছু বাদ দেয়ার এবং কিছু রাখার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন।

সহীহ্‌, সহীহ আবূ দাঊদ (২৪৪০)

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৫৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، أَنَّ خَالِدَةَ بِنْتَ أَنَسٍ أُمَّ بَنِي حَزْمٍ السَّاعِدِيَّةَ، جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ الرُّقَى فَأَمَرَهَا بِهَا ‏.‏

আনাস এর কন্যা উম্মু বানী হাযম খালিদাহ আস-সাইদিয়্যাহ (রাঃ)

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসেন এবং ঝাড়ফুঁক করার মন্ত্র পেশ করেন। তিনি তাকে তা দ্বারা ঝাড়ফুঁক করার অনুমতি দেন। [৩৫১৪]

তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৫১৪
হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস
Source: ihadis.com
.
.
যাদুকরদের ইন্টেন্ট(অভিপ্রায়) কার্যক্ষম করাও সহজ বিষয় নয়। এর জন্য তাদের অনেক চর্চা করতে হয়। সৃষ্টিকর্তার থেকে সম্পূর্ন বিমুখ হয়ে সৃষ্টির কাছে নিজেকে বিলীন করতে হয়। অর্থাৎ কুফর করতেই হয়। সর্সারারদের আরেকটি হাতিয়ার হচ্ছে স্পেল বা মন্ত্র। মন্ত্রে শিরকি কথা থাকতেও পারে আবার শিরক বিহীনও হতে পারে। শিরক বিহীন স্পেল হলেও উহা নিষিদ্ধ। কথা কিভাবে বাহ্যিক পরিবেশে প্রভাব ফেলে সেটা বুঝাতে হলে 'occult physics' এর দিকে যেতে হবে, যেদিকে নিকোলা টেসলা হেটেছেন। এ জন্য প্রাচীন কাল থেকে প্রত্যেক যাদুকরই ছিল উচ্চস্তরের ন্যাচারাল ফিলসফার। আর এই ন্যাচারাল ফিলসফি থেকেই ফিজিক্স/ফিজিসিস্টদের উত্থান। কোয়ান্টাম ফিজিক্স সবচেয়ে এডভান্স থিওরেটিকাল মেকানিক্স।এজন্য আজকের শেষ যুগে পাশ্চাত্যের সর্সারারগন সবাই সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম ফিজিক্স স্টাডি করেন।এবং অন্যদেরকেও সেদিকে আহব্বান করে। যারা বলতে চায় 'কোয়ান্টাম মিস্টিসিজম' দুঃখিত পার্টিকেল ফিজিক্স একদম পবিত্র নিষ্কলুষ তাদেরকে প্রশ্ন করি কেন আল্লাহর রাসূল(সা) এস্ট্রলজিক্যাল সাইন্সকে যাদুর শাখাভুক্ত বলেছেন?
.
শায়খ বিন বাজ বলেন, যাদুর বিপরীতে রয়েছে তাওয়াক্কুল। অর্থাৎ যাদুকররা কখনো আল্লাহর উপর ভরসা করে না, তেমনটা চিন্তাও করে না। বরং তারা গুপ্ত Natural law গুলোকে নিজেদের হাতে তুলে নিতে চায়। যখন তারা অন্তর দ্বারা এবং মন্ত্র দ্বারা ক্ষতিসাধন/লাভবান হবার অভিপ্রায় করে তখন সংশ্লিষ্ট বস্তু তার স্রষ্টার কাছে ঘটবার অনুমতি প্রার্থনা করে। এজন্যই সমস্ত যাদু-ই নিস্ফল যদি আল্লাহর অনুমতি না প্রদান করেন। এজন্য আল্লাহ বলেন, " وَمَا هُم بِضَآرِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ " [২:১০২]
.
মধ্যযুগে মিস্টিকরা এটা বিশ্বাস করত যে সমস্ত যাদুর ফলাফল আল্লাহর ইচ্ছাধীন, কিন্তু আজকে একেও অস্বীকার করে সর্সারাররা। কাফির যাদুকররা যেমনি নিজে থেকে স্বার্থ হাসিলের প্রচেষ্টা করে, তেমনি আমাদের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা দু'আ/প্রার্থনা/সাহায্য চাওয়াকে(ডিপেন্ডেন্সি) পছন্দ করেন। ব্যপারটি এরূপ যে দুই ব্যক্তির একজন অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে খায়, অপরজন বৈধ পন্থায় উপার্জন করে খায়। আর আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সেটা না দিলেও তার মাঝে কল্যাণ নিহিত থাকে,যদিও আমরা তা বুঝি না।
.
আল্লাহ পছন্দ করেন তার উপর তাওয়াক্কুলকারীদেরকে এজন্য দেখা যায়ঃ ইমরান (রাঃ) বর্ননা করেছেন,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، - يَعْنِي ابْنَ سِيرِينَ - قَالَ حَدَّثَنِي عِمْرَانُ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا وَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَكْتَوُونَ وَلاَ يَسْتَرْقُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَامَ عُكَّاشَةُ فَقَالَ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْتَ مِنْهُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ ‏"‏ ‏.‏
.
আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, তারা কারা, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি বললেনঃ যারা ক্ষতস্থানে লোহা পুড়ে লাগায় না এবং (জাহিলী যুগের ন্যায়) ঝাড়ফুঁক বা মন্ত্রের দ্বারা চিকিৎসা কামনা করে না বরং তারা আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করে। এ সময় ‘উক্কাশাহ্‌ (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর নাবী! আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, তিনি আমাকেও যেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘উক্কাশাহ্ তোমার আগেই সে দলভুক্ত হয়ে গেছে। (ই.ফা. ৪১৭; ই.সে. ৪৩১)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪১২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সেসমস্ত কথামালা, যা আল্লাহর রাসূল(সা) শিখিয়েছেন এবং যে সমস্ত বানী দুনিয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা অবতীর্ণ করেছেন। জগতের নীতিগুলো ম্যানিপুলেট করার জন্য মানুষ ও শয়তানের বানানো বুলি বা মন্ত্রের তুলনায় জগৎসমূহের মালিকের শেখানো কথাগুলো অধিকতর এবং সর্বাধিক শক্তিশালী। এবং বিজয়ী।
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي السَّفَرِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ خَارِجَةَ بْنِ الصَّلْتِ، عَنْ عَمِّهِ، أَنَّهُ مَرَّ بِقَوْمٍ فَأَتَوْهُ فَقَالُوا إِنَّكَ جِئْتَ مِنْ عِنْدِ هَذَا الرَّجُلِ بِخَيْرٍ فَارْقِ لَنَا هَذَا الرَّجُلَ ‏.‏ فَأَتَوْهُ بِرَجُلٍ مَعْتُوهٍ فِي الْقُيُودِ فَرَقَاهُ بِأُمِّ الْقُرْآنِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ غُدْوَةً وَعَشِيَّةً كُلَّمَا خَتَمَهَا جَمَعَ بُزَاقَهُ ثُمَّ تَفَلَ فَكَأَنَّمَا أُنْشِطَ مِنْ عِقَالٍ فَأَعْطُوهُ شَيْئًا فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَهُ لَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ كُلْ فَلَعَمْرِي لَمَنْ أَكَلَ بِرُقْيَةٍ بَاطِلٍ لَقَدْ أَكَلْتَ بِرُقْيَةٍ حَقٍّ ‏"‏ ‏.

খারিজাহ ইবনুস সাল্‌ত (রহঃ) হতে তার চাচার সূত্র

তিনি একটি জনপদ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় সেখানকার কিছু লোক তার কাছে এসে বললো, আপনি এই ব্যক্তির [রাসূলুল্লাহ্‌র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] কাছ থেকে কল্যাণ নিয়ে এসেছেন। কাজেই আমাদের এই ব্যক্তিকে একটু ঝাড়ফুঁক করে দিন। এ বলে তারা একটি পাগলকে বাঁধা অবস্থায় তার কাছে আনলো। তিনি তিন দিন সকাল-বিকাল সূরাহ ফাতিহা পড়ে তাকে ঝাড়ফুঁক করলেন। তিনি যখনই পাঠ শেষ করতেন তখন থুথু জমা করে তার শরীরে নিক্ষেপ করতেন। অতঃপর লোকটি যেন বন্ধনমুক্ত হয়ে গেলো। তারা তাকে কিছু বিনিময় দিলো। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে ঘটনাটি জানালেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যা পেয়েছো তা খাও। আমার জীবনের শপথ! কিছু লোক তো বাতিল মন্ত্র দ্বারা উপার্জন করে খায়। আর তুমি উপার্জন করেছো সত্য মন্ত্র দ্বারা।

সহীহঃ সহীহাহ্ (২০২৭)

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৪২০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه أَنَّهُ قَالَ لِثَابِتٍ رَحِمَهُ اللهُ: أَلاَ أَرْقِيكَ بِرُقْيَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ قَالَ: بَلَى، قَالَ: اَللهم رَبَّ النَّاسِ، مُذْهِبَ البَأسِ، اِشْفِ أَنْتَ الشَّافِي، لاَ شَافِيَ إِلاَّ أنْتَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَماً . رواه البخاري

আনাস (রাঃ)

তিনি সাবেত (রাহিমাহুল্লাহ)কে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মন্ত্র দ্বারা ঝাড়ফুঁক করব না?’ সাবেত বললেন, ‘অবশ্যই।’ আনাস (রাঃ) এই দো‘আ পড়লেন, ‘‘আল্লাহুম্মা রাব্বান্না-স, মুযহিবাল বা’স, ইশফি আন্তাশ শা-ফী, লা শা-ফিয়া ইল্লা আন্ত্, শিফা-আল লা য়্যুগা-দিরু সাক্বামা।’’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক! তুমি কষ্ট দূর কর এবং আরোগ্য দান কর। (যেহেতু) তুমি রোগ আরোগ্যকারী। তুমি ছাড়া আরোগ্যকারী আর কেউ নেই। তুমি এমনভাবে রোগ নিরাময় কর, যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৯০৮
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
কাফির যাদুকরদের মধ্যে সাইকিক হিলাররা(physic healers) যেসব স্পেল ব্যবহার করে তার অধিকাংশই অথর্ব এবং শয়তানের আনুগত্যের একটা মাধ্যম মাত্র।

حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ مُحَمَّدٍ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا مُعَمَّرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بِشْرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ الْجَزَّارِ، عَنِ ابْنِ أُخْتِ، زَيْنَبَ امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ زَيْنَبَ، قَالَتْ كَانَتْ عَجُوزٌ تَدْخُلُ عَلَيْنَا تَرْقِي مِنَ الْحُمْرَةِ وَكَانَ لَنَا سَرِيرٌ طَوِيلُ الْقَوَائِمِ وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ إِذَا دَخَلَ تَنَحْنَحَ وَصَوَّتَ فَدَخَلَ يَوْمًا فَلَمَّا سَمِعَتْ صَوْتَهُ احْتَجَبَتْ مِنْهُ فَجَاءَ فَجَلَسَ إِلَى جَانِبِي فَمَسَّنِي فَوَجَدَ مَسَّ خَيْطٍ فَقَالَ مَا هَذَا فَقُلْتُ رُقًى لِي فِيهِ مِنَ الْحُمْرَةِ فَجَذَبَهُ وَقَطَعَهُ فَرَمَى بِهِ وَقَالَ لَقَدْ أَصْبَحَ آلُ عَبْدِ اللَّهِ أَغْنِيَاءَ عَنِ الشِّرْكِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏"‏ إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ فَإِنِّي خَرَجْتُ يَوْمًا فَأَبْصَرَنِي فُلاَنٌ فَدَمَعَتْ عَيْنِي الَّتِي تَلِيهِ فَإِذَا رَقَيْتُهَا سَكَنَتْ دَمْعَتُهَا وَإِذَا تَرَكْتُهَا دَمَعَتْ ‏.‏ قَالَ ذَاكِ الشَّيْطَانُ إِذَا أَطَعْتِيهِ تَرَكَكِ وَإِذَا عَصَيْتِيهِ طَعَنَ بِإِصْبَعِهِ فِي عَيْنِكِ وَلَكِنْ لَوْ فَعَلْتِ كَمَا فَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ خَيْرًا لَكِ وَأَجْدَرَ أَنْ تَشْفِينَ تَنْضَحِينَ فِي عَيْنِكِ الْمَاءَ وَتَقُولِينَ ‏"‏ أَذْهِبِ الْبَاسْ رَبَّ النَّاسْ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا ‏"‏ ‏.‏

যায়নাব (রাঃ) বর্ননা করেন,

এক বৃদ্ধা আমাদের এখানে আসতো এবং সে চর্মপ্রদাহের ঝাড়ফুঁক করতো। আমাদের একটি লম্বা পা-বিশিষ্ট খাট ছিল। আব্দুল্লাহ (রাঃ) ঘরে প্রবেশের সময় সশব্দে কাশি দিতেন। একদিন তিনি আমার নিকট প্রবেশ করলেন। সে তার গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে একটু আড়াল হলো। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন এবং আমাকে স্পর্শ করলে এক গাছি সুতার স্পর্শ পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি? আমি বললাম, চর্মপ্রদাহের জন্য সূতা পড়া বেঁধেছি। তিনি সেটা আমার গলা থেকে টেনে ছিঁড়ে ফেললেন এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললেন, আবদুল্লাহর পরিবার শিরকমুক্ত হলো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ “মন্ত্র, রক্ষাকবচ, গিটযুক্ত মন্ত্রপূত সূতা হলো শিরকের অন্তর্ভুক্ত”। আমি বললাম, আমি একদিন বাইরে যাচ্ছিলাম, তখন অমুক লোক আমাকে দেখে ফেললো। আমার যে চোখের দৃষ্টি তার উপর পড়লো তা দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো। আমি তার মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিলে তা থেকে পানি ঝরা বন্ধ হল এবং মন্ত্র পড়া বন্ধ করলেই আবার পানি পড়তে লাগলো। তিনি বলেন, এটা শয়তানের কাজ। তুমি শয়তানের আনুগত্য করলে সে তোমাকে রেহাই দেয় এবং তার আনুগত্য না করলে সে তোমার চোখে তার আঙ্গুলের খোঁচা মারে। কিন্তু তুমি যদি তাই করতে, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছিলেন, তবে তা তোমার জন্য উপকারী হতো এবং আরোগ্য লাভেও অধিক সহায়ক হতো। তুমি নিম্নোক্ত দুআ’ পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে তা তোমার চোখে ছিটিয়ে দাওঃ “আযহিবিল বা’স রব্বান নাস, ইশফি আনতাশ শাফী, লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামান” (হে মানুষের প্রভু! কষ্ট দুর করে দাও, আরোগ্য দান করো, তুমিই আরোগ্য দানকারী, তোমার আরোগ্যদান ছাড়া আরোগ্য লাভ করা যায় না, এমনভাবে আরোগ্য দান করো যা কোন রোগকে ছাড়ে না)।

তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৫৩০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com
.
যাদুবিদ্যাকে ইমাম রাযি(রঃ) এর আটভাগ অনেকটাই শুদ্ধ। তবে তার অনেক কথা বিতর্কিত। এসকল বিষয় ইমাম ইবনে কাসির(র) এবং ইমাম আবু জাফর ইবনে জারির তাবারি(রহ.) এর তাফসীর দেখতে পারেন।
.
পরবর্তী পোস্টে 'অকাল্ট ফিজিক্স এবং ননডুয়ালিজমের' উপর কিছু লিখবার ইচ্ছা আছে।ইনশাআল্লাহ

বাংলাদেশে One World Religion এর প্রসারে যোগসাধনায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা

অকাল্ট মিস্টিক্যাল ডক্ট্রিনগুলো হঠাৎ করে এত জনপ্রিয়তার পেছনে কাজ করছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন এজেন্ডা।এই গ্লোবাল এসোটেরিক এজেন্ডা মিথ্যা মসীহের ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্বাসগত মতপার্থক্যরোধে ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন তৈরির লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে সারাবিশ্বে নানা নামে আম্ব্রেলা সংগঠনরূপে কাজ করে যাচ্ছে। আমি পূর্বেও আলোচনা করেছি,এরা প্রাচীন প্যাগানিজমকে পুনরুজ্জীবিত করছে যা খ্রিষ্টান ও মুসলিমদের দীর্ঘকাল শাসনের তোপে কিছু শতাব্দী লুকায়িত ছিল। ওই বিশেষ কাফেররা প্রাচীন গ্রীক অকাল্ট ফিলসফারদের প্যাগান মতাদর্শকে পছন্দ করে, যেমন প্লেটোনিক মতবাদ, এখন নিওপ্লেটোনিজম চালু হয়েছে, পিথাগোরিয়ান অকাল্টিজম, ওই সময়কার হারম্যাটিসিজম,আলকেমিক্যাল প্র‍্যাক্টিস ,স্টয়িসিজম ইত্যাদি। জুডিও অশ্লীল কিতাব জোহার বেজড কাব্বালাও সিমিলার মতাদর্শ ক্যারি করে, যার জন্য সকল মিস্টিক্সরা একে অন্যের প্রতি অত্যন্ত সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল এবং পরিবারস্বরূপ। পৃথিবীর স্ফেরিক্যাল মডেল প্রাচীন প্যাগান বিখ্যাত গ্রীকান্ড অব ম্যাজাই) ম্যাজাইদের(যাদুকর) থেকে। তখনকার মেইনস্ট্রিম কসমোলজি ছিল জিওসেন্ট্রিক জিওস্টেশনারী ফ্ল্যাট আর্থবেজড,সারা পৃথিবীতে ওই তত্ত্ব ছিল হেরেটিক। কিন্তু পিথাগোরাস, প্লেটোর জ্ঞানের তারিফে এস্ট্রোনমাররা এর ব্যপারে ভাবতে শুরু করে। খ্রিষ্টান শক্তি তাদের এই স্ফেরিক্যাল থিওরিকে প্যাগান থিওরি বলে কিছু কাল রিজেক্ট করে,যেহেতু গ্রীক মনীষীরা আগে থেকেই কুফরি মতবাদ আর জাদুবিদ্যার জ্ঞানবাহক ছিল। প্রত্যেক গ্রীক মিস্টিক্স মনীষীরাই ছিলেন জাদুবিদ্যার কারিগর। তারা ইউনিভার্সের গুপ্ত রহস্য জানার ব্যপারে অবসেসড ছিলেন, যা তাদেরকে জাদুবিজ্ঞানের(অকাল্ট ফিজিক্স) দিকে হাটায়। তাদের মতবাদভিত্তিক বিজ্ঞান ছিল জাদুর গুহ্য মেকানিজম। হয়ত গ্রীক জাদুবিদ্যাগুলো স্যাটানিক বিংদের ইন্টারভেনশন ছাড়াই কাজ করত। এস্ট্রলজি-আলকেমিতে ছিল সিদ্ধহস্ত।ওটাই ছিল সমুচ্চ জ্ঞান এবং বিজ্ঞান।
.
গ্রীক মিস্টিসিজম গুলোর কমন গ্রাউন্ড ছিল মনিজম অথবা নন ডুয়ালিজম আরবিতে ওয়াহদাতুল উজুদ, বাংলায় 'স্রষ্টা সৃষ্টির এক অস্তিত্ব' । এটা হচ্ছে ওদের বিলিফ সিস্টেমের কার্নেল। আপনি নন ডুয়ালিস্ট না হয়ে হয়ত সর্সারিকর্মে সফল হবেন না। এ সকল মতবাদে বিশ্বাসী উইচদের হাতে পেলেই খ্রিষ্টান ক্ষমতাসীন সমাজে কঠিন শাস্তি দিত, সেই সাথে ওদের এসোটেরিক ডগমাও উৎপাটিত হত। আরবরা অনেক দেরীতে গ্রীক ফিলসফি হাতে পায় এবং নিছক কৌতূহলপ্রবন হয়ে সেসবকে আরবিভাষায় অনুবাদ করে, ফলে আরবরা তথা মুসলিম বিশ্বে আলকেমির ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। ওয়াহদাতুল উজুদের জন্ম হয়, জন্ম হয় সুফিবাদ বা ইসলামিক মিস্টিসিজম! যারাই কৌতূহল নিয়ে এতে একবার ঢোকে, নিকৃষ্ট কাফের হয়ে বের হয়, ওই মানের কুফরি যা ফেরাউনও করেনি। মুসলিম এস্ট্রোনমারগন গ্রীক কস্মোলজিকে জ্ঞানের উৎস মনে করে গ্রহন করতে শুরু করে, ইসলামে সর্বপ্রথম স্ফেরিক্যাল আর্থ ঢুকে পড়ে। তখনও সেটা প্রতিষ্ঠিত নয়। ততদিনে রিফর্মেশন এজ চলে আসে, এই রেনেসাঁর যুগে খ্রিষ্টান মৌলবাদীরা দুর্বল হয়ে পড়ে, যান্ত্রিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে চার্চ আর শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীভূত হয় এবং সেকুলারিজমের উন্মেষ
ঘটে। পশ্চিমে নেতিয়ে পড়া প্রাচীন প্যাগানিজম আবারো জাগ্রত হয়। উইচক্রাফট, সর্সারি, স্যাটানিজম বাড়তে থাকে, জেসুইট অর্ডার কস্মোলজিকে পাল্টে দেয়। জাদুবিদ্যার ধর্ম অর্থাৎ আধ্যাত্মবাদ আস্তে আস্তে আবারো শক্তি ফিরে পায়, এস্ট্রলজির প্রসার সমাজে বাড়তে থাকে। হঠাৎ করে যাদুকর/জ্যোতিষী এবং দার্শনিকগনদের যাদুশাস্ত্রগুলোকে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মর্যাদা দেওয়া হয়। এরপরে ফ্রিম্যাসনিক রয়্যাল সোসাইটি থেকে ফিলসফি অব সাইন্স এবং অবশেষে ন্যাচারাল ফিলসফিকে সাইন্স নামে ভূষিত হয়। শয়তানের পূজারীরা বিভিন্ন নামে বিভিন্ন দেশে ব্যবিলনিয়ান মিস্টিসিজম এর প্রসার শুরু করে। ইস্টার্ন মিস্টিসিজমকে সমৃদ্ধ আর প্রাচীন হিসেবে দেখে সেটাকেই গ্রীকের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় যার প্রভাবে ম্যাডাম হেলেনার থিওসফি গঠিত হয়, পরবর্তীতে হারমেটিক অর্ডার অব গোল্ডেন ডন, অর্দো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস চলে আসে। এই প্যাগান শাখা প্রশাখা বেড়ে আজ নিউএজ মুভমেন্ট-কোয়ান্টাম মিস্টিসিজম(কোয়ান্টাম ম্যাথড বাংলাদেশে) পর্যন্ত এসেছে। ইস্কনরাও সাথে আছে। এদের কমন কাল্ট রিচুয়ালের একটি হচ্ছে যোগধ্যান যা ওই গ্রীক প্যাগানিজমসহ সকল প্যাগান ডক্ট্রিনে ছিল। এখন মোটামুটি ধর্মগুলোকে একীভূতকরনের সময় এসেছে, তাই কমনগ্রাউন্ড মেডিটেশনে সব মানুষকে ডাইভার্টের চেষ্টায় আছে এলিটরা। বাংলাদেশে এরই প্রেক্ষাপটে একবার যোগধ্যানের উপর ট্যাক্স আরোপ করেছিল সরকার,যাতে কুফরের জাহাজ কোয়ান্টাম ম্যাথড,ইস্কনরা আন্দোলনে নামে এবং জনগনের দৃষ্টি মেডিটেশন এর উপর পড়ে এবং ভাবে। তখনই আমি প্রেডিক্ট করেছিলাম সরকারীভাবে খুব শীঘ্রই মেডিটেশন প্রচারের জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেটাই সত্য হলো।তাগুত সরকারের বিটিভি যোগধ্যানের প্রোগ্রাম চালু করেছে। দেখুনঃ http://banglamail71.info/archives/5320

স্টেডিয়ামেও বিশ্ব যোগ দিবসে একসাথে ৮০০০ যোগীরা আত্মপূজা ও শয়তানের(কারিন শয়তানের) পূজার আয়োজন করে।সেখানে বিনামূল্যে অংশগ্রহণ এবং ফ্রি উপহার সামগ্রীরও টোপ দেওয়া হয়েছে। এগুলোকে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্বামী শুভানন্দ, নামক এক ব্যক্তি।
যার সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বার্নিকাটের বিশেষ সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। (ছবি- ইনসেটে)
যে ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়েও প্যাগান মিস্ট্রি স্কুলের প্রচার শুরু করেছে। (http://bit.ly/2hKovju) এই কুফরি দ্বীনের প্রচারে মার্কিন সরকারের সহযোগিতা আছে, সহযোগিতা আছে ইজরাইলের, ভারতের এবং সর্বোপরি জাতিসংঘ। এদেশের প্রধান বিচারক এসকে সিনহাও ইসকনের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল। নিঃসন্দেহে এই প্যাগ্যান থিওলজি প্রসারে সংশ্লিষ্ট হায়ারার্কির সবার শীর্ষে ইবলিস ও দাজ্জালকে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন এর স্পন্সর্ড 'সুস্থ দেহ সুখী স্বদেশ' নামের প্রচারিত ইয়োগার অনুষ্ঠানটিতে কাজ করছে "এভারগ্রীন ইয়োগা" নামের একটা সংগঠন।
 একই নামে পেরুসহ বেশ কয়েকটিদেশে একই শিক্ষার যোগসাধনার সংগঠন এর কার্যক্রম দেখলাম।আর এভার গ্রীনেরই শাখা ভারত,আমেরিকা, ইউকে, জার্মানিসহ অনেক দেশে রয়েছে(ছবিতে দেখুন)।এভারগ্রীনে কোর্স শুরু করলে তারা 'সূর্য নমস্কার' নামের সূর্য পূজো করাও শেখায়(ছবিতে দেখুন)। এটা যে শিরক সেটা নিয়ে islamqa.info ওয়েবে সম্ভবত শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ কিছু বলেছিলেন। দেশীয় এ সংগঠনটির শেকড় তালাশ করলে কোয়ান্টাম ম্যাথডের সংশ্লিষ্টতাও অনিবার্যভাবে পাওয়া যাবে। যাহোক, এভারগ্রীন যোগের সাথে যুক্ত "সুপার মডেল বাংলাদেশ" নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। তারা কিছু তরুন তরুণীদের নায়ক নায়িকা বানানোর জন্য নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তৈরি করছে, যোগসাধনা তাদের শিক্ষা বা ফিটনেসের গুরুত্বপূর্ণ
অংশ। দেখুনঃ https://m.facebook.com/SuperModelBangladesh

https://m.facebook.com/evergreenyogabd


.
সারাবিশ্বব্যাপী প্যাগানিজম/প্রকৃতি পূজা প্রচলনের স্বপ্ন ছিল শয়তানের। এ স্বপ্ন পূরন করছে দাজ্জালের মাধ্যমে। এখন এস্ট্রলজিক্যাল ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ্যাকুরিয়াস এজ চালু হয়েছে। বলা হয়, এই গোল্ডেন এজই ইবলিসের মতাদর্শকে পূর্নতাদানের শতাব্দি। এই মতাদর্শের পূর্নতাদানের জন্য একজন মাস্টারের বা ওয়ার্ল্ড টিচারের অপেক্ষা করছে এসোটেরিক এজেন্ডা, যাকে আমরা বলি দাজ্জাল। ওরা কল্কি/মৈত্রেয় অবতার প্রভৃতি নামে অপেক্ষা করছে।
ইসলাম শুরু থেকেই এই মতবাদের ভাইরাসকে কঠোর হাতে দমন করত, অতীতে এক কাব্বালিস্ট যাজকও জোড়পূর্বক শাস্তির ভয়ে মুসলিম হতে বাধ্য হয়। মানসুর হাল্লাজের কি হয়েছিল তা আমরা সবাই জানি, ইবনে আরাবির ব্যপারে হক্কপন্থী উলামাগন ওই যুগেই কি বলতেন সেটা আমরা জানি। আজও ইসলামিক মিস্টিক্স(সুফিপন্থীরা) ছাড়া কেউই এদের ভাল বলেনা। খ্রিষ্টান থেকে নস্টিসিস্টদের জন্ম। আর ক্যাথলিকরা এদের প্রতি সহনশীল, পশ্চিমে আজ খ্রিষ্টান ধর্মকেই বিভিন্নভাবে মডিফাই করে স্পিরিটিজমে ধাবিত করা হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ খ্রিষ্টানরা ইস্টার্ন মিস্টিসিজম গ্রহন করেছে। অনেক হাইব্রীড রিলিজিয়াস মুভমেন্ট গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ কাফের খ্রিষ্টানরা বড় কুফরিকে বেছে নিয়েছে এবং অপেক্ষা করছে ওদের শেষ বুদ্ধের!
.
আজ পৃথিবীর সর্বাধিক সমৃদ্ধ গুহ্যবাদ হচ্ছে ইস্টার্ন অকাল্টিজম বা ধর্মচক্রের রহস্যবাদ(যোগ-তন্ত্র), আমরা সাধারণ মুসলিমরা ব্যাকগ্রাউন্ড খুব বেশি জানিনা তাই আপাতদৃষ্টিতে হিন্দুত্ববাদ মনে হয়। আসলটা সরাসরি শয়তান থেকে আসা। শুনলে অবাক হবেন, এল মোরিয়া আর খুতুমি নামের দুই শয়তান জ্বীন ম্যাডাম হেলেনার কাছে সর্বপ্রথম থিওসফিক্যাল(theo+Sophia= Divine/gods wisdom) ডক্ট্রিন নিয়ে আসে।
এখন বিশ্বব্যাপী রেজারেকশ্যনকে আনসাইন্টিফিক এবং ইল্লজিক্যাল সাব্যস্ত করে রিইনকারনেশনকে প্রমোট করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে এটাই সবচেয়ে সাইন্টিফিক ভাবে ভ্যালিড। চলে এসেছে বায়োসেন্ট্রিজম। ডেভিয়েন্ট স্কলার ইমরান নযরও জানেন দাজ্জাল রিইনকারনেশনকে সত্যরূপে প্রতিষ্ঠিত করবে( তার এক লেকচারে শুনেছিলাম)। এ মুহূর্তে পিউর মনোথেইজম বা তাওহীদের দ্বীন ইসলাম হচ্ছে কুফফার তাগুতদের মিশন বাস্তবায়নের পথের কাটা। বিভিন্নভাবে মোডারেট ইসলামিস্ট ব্যবহারের দ্বারা জিহাদিদেরকে জঙ্গি সন্ত্রাসী সাব্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছে, এবার সুফি/বেলেরভী/শিয়াদের সহায়তায় রিইনকারনেশন বা পুনঃজন্মবাদকে এস্ট্যাবলিশের কাজ চলছে। এক বেলেরভী সাক্ষাৎকারে দেখেছি তারা রিইনকারনেশনকে ইতোমধ্যে ইসলামের আঙ্গিকে ট্রোল করে ভ্যালিড করেছে!! আশা রাখব, সামনে বিটিভি সহ তাদের এল্যাইরা মাঠপর্যায়ে রিইনকারনেশনের ভ্যালিডিটি আনয়নের জন্য সুফি বেরেলভীস্টদের থেকে সাহায্য আসবে। লালন,বাউল,ফকিরদেরকে তো সরকার বহু আগে থেকেই প্রোমোট করে আসছে। মনপুরা চলচ্চিত্রও নির্মান করা হয়েছে। কোন সমস্যা নেই, অনেক আগে থেকেই ওয়াহদাতুল উজুদ, হুলুল, ইত্তেহাদের আকিদা অনেকের মাঝে বিদ্যমান, সেটা আকড়ে ধরতে কষ্ট হবেনা। এখন তো পদার্থবিদদের রেফারেন্সে এই প্যাগান থিওলজিকে প্রোমোট করা হয়। বাকি কিই বা আছে!?
.
আপনি কি জানেন ওরা যোগধ্যানে কি করে? ওরা আপনার মধ্যে ঘুমন্ত 'চেতনা' কে জাগানোর কথা বলবে। সেটা নাকি বিশেষ স্পিরিচুয়াল এনার্জি ফোর্স যা কি না, সাপের ন্যায় কুণ্ডলী পাকিয়ে আছে স্পাইনের মূলে। যোগসাধনার দ্বারা সে ঘুমন্ত স্পিরিচুয়াল এনার্জিকে জাগিয়ে আপনার সচেতন মনে প্রবেশাধিকার এবং নিয়ন্ত্রণভার দিয়ে দেওয়া হয়। যখন এই স্পিরিট এন্টিটিকে বা হায়ার সেল্ফকে নিজের মধ্যে জাগিয়ে দেওয়া হয় তখন যোগীরা বলবে 'ইউ আর এনলাইটেন্ড',ওরা বলবে আপনার তৃতীয় নেত্র খুলে গেছে। তখন অনেক অতিপ্রাকৃত ঘটনা আপনার দ্বারা ঘটতে দেখবেন। একটু খুলে বলি, ধ্যানের মাধ্যমে আপনার উপর, আপনার সাথে থাকা কারীন শয়তান জ্বীনকে(স্পিরিচুয়াল এনার্জি ফোর্স) আপনার চেতনায় পূর্ন নিয়ন্ত্রন দেওয়া হয়। তখন শয়তান জ্বীনের আপনার উপর পূর্ন অধিকারে কোন বাধা পায় না। তখন জ্বীনের দ্বারা অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটতে দেখবেন। যেমনঃ ক্ল্যারভয়েন্স,ক্ল্যারঅডিয়েন্স ইত্যাদি। ধীরে ধীরে ম্যাজিক্যাল ওয়ার্ল্ডভিউতে রপ্ত করানো হয় ।এভাবে তারা মেডিটেশন এর দ্বারা মানুষকে মানব শয়তানে রূপান্তর করছে।
.
একটা দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এখন পর্যন্ত আমি বাংলা ভাষায় কাউকেই মিস্টিসিজম/অকাল্টিজম নিয়ে এক্সপোজ করতে দেখিনি।(কোয়ান্টাম ম্যাথডের উপরে লেখা এক ভাইয়ের ব্লগে খুবই সামান্য কিছু পেয়েছিলাম)। গুহ্যজ্ঞানবাদ নিয়ে কেন জানি কাউকেই চিন্তিত দেখি না, অথচ এই বাতেনিয়্যাহরাই দাজ্জাল এর দ্বীনের প্রতিনিধিত্ব করছে। শয়তানের মতাদর্শকে প্রকাশ্যে প্রচার করছে যা তাওহীদের বিপরীত!
.
October 18, 2017 at 10:36 PM