Sunday, February 14, 2021

সিহর এবং অকাল্ট - টেকনোলজিক্যাল এ্যাম্বিগুইটি

সিহর কি? সিহর বা যাদু হচ্ছে সেই ব্যাখ্যাতীত অদ্ভুত ঘটনা যার কার্যকরণ গুপ্ত বা অজ্ঞাত। এটা বলে সাধারণ মানুষ যারা সিহরের অস্তিত্ব এবং প্রভাবকে অনুভব করে। কিন্তু একজন যাদুকরের নিকট সিহরের সংজ্ঞা একদমই ভিন্ন। তার কাছে যাদু বা সিহর হচ্ছে এমন এক ক্র‍্যাফট যার দ্বারা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নীতিকে পালটে ফেলা হয়, বিকৃত করা হয়,ভেঙ্গে ফেলা হয়, পরিবর্তন করা হয়। অর্থাৎ তাদের নিকট witchcraft/magick/sorcery মানেই manipulating, perverting,distorting, twisting, changing the law of nature/creation।  বৈদিক এবং কাব্বালিস্টিক অর্থাৎ যাদুর ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন উভয় ট্রেডিশনের কার্যপদ্ধতি ভিন্ন তবে লক্ষ্য তাদের অভিন্ন। আল্লাহর সৃষ্টির সোর্সকোড সম্পর্কে জানার চেষ্টা এবং যতটুকু জানা যায় কিংবা যতটুকু ক্ষমতা আছে সেই জ্ঞান/বিদ্যা দ্বারা পরিবর্তন ঘটিয়ে উদ্দেশ্যসাধন/লক্ষ্য অর্জন। বৈদিক মতানুযায়ী you cannot beat a river into submission,you have to surrender to its current and use its power as your own, therefore silence your ego and your power will rise!  অন্যদিকে কাব্বালিস্ট র‍্যাবাঈদের মত হচ্ছে you can beat a river into submission, therefore you need to raise your ego at highest level and your power will rise! এখানে নদীর স্রোত হচ্ছে ন্যাচারাল ল' & অর্ডারের ফ্লো এর এ্যালিগোরি। যারা বোঝেন নি, বোঝার প্রয়োজন নেই। এই কথাগুলো বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান আর্টিকেল সিরিজেও পাবেন। 

যাইহোক, বৈদিক কিংবা কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রে যে শিক্ষা দেয়া হয় তা মূলত আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টিকে করাপ্ট করার শিক্ষা। যখন কোন ন্যাচারাল অর্ডার বা নীতিকে করাপ্ট করার চেষ্টা করা হয়, সেটা ততক্ষণ পর্যন্ত বিকৃত হয় না যতক্ষণ না এর সৃষ্টিকর্তার থেকে পারমিশন/অনুমোদন আসে। এজন্য আমরা সূরা বাকারার ১০২ নং এ দেখি وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ । উদাহরণ স্বরুপ ধরুন, একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের এমডির কাছে থেকে যেকোন নীতি কিংবা দুর্নীতির জন্য সাক্ষর গ্রহণ করে অনুমতিগ্রহন করে করতে হয়। কোন প্রোডাক্ট ঢুকলে বা বের হলেও তার সাক্ষর গ্রহন লাগে। উনি যদি কাগজে অবৈধভাবে দুর্নীতি ঘটবার জন্য সাক্ষর বা অনুমতি না দেন তাহলে হাজার কিছু করলেও অবৈধভাবে অর্থলাভ হবেনা। ধরুন অফিসের একদল লোক দুর্নীতি করে অর্থলাভের উপায় বের করলো, তারা পাবলিকভাবে এমন এমন মিথ্যা বিশ্বাস প্রচার করলো যার ফলে মনে হয়, এই লোকগুলো সত্য বলছে, ভাল কাজই করতেছে। কিন্তু সুক্ষ্ম দুর্নীতি এমডি ঠিকই বুঝে গেছেন। এখন অনুমতি চাইতে সাক্ষর নিতে গেলে তিনি সাক্ষর করলেন ঠিকই কিন্তু মনে মনে বলেন, এদের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ,এ বছর  আরো করো,বছর শেষে ছাটাই করা হবে। যখন অবৈধভাবে কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলো বের করা হবে তখনও এমডির কাছে পারমিশন রিকোয়েস্ট গিয়েছে যার এ্যাপ্রোভাল পেয়েই কাজটি ঘটেছে। 


দৃশ্যকল্পটি বুঝে থাকলে উপরোল্লিখিত কথার তাৎপর্য বোঝা সহজ হবে। যাদুকররা যে ট্রেডিশনেরই হোক না কেন এরা যা প্র‍্যাক্টিস করে যেটা ঘটে এটা আল্লাহর অনুমোদনের বাহিরে হয়না, কিন্তু এরা তাদের কাজকে ঘিরে অনেক মনগড়া কুফরি আকিদা বিশ্বাস তৈরি করে যা মাঝেমধ্যে সত্যিকারের কস্মোজেনেসিসকে রিরাইট করে। কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তনের অনুমোদন আল্লাহর থেকে পায় কিন্তু বিনিময়ে অর্থাৎ যাদুর বিনিময়ে পরপারে এদের আর কোন অংশই অবশিষ্ট থাকেনা।  

সুতরাং বৈদিক কিংবা কাব্বালিস্টিক ট্রেডিশনে যে বিদ্যা শেখানো হয় তা সৃষ্টির নীতিকে পরিবর্তন করার অপবিদ্যা ছাড়া আর কিছুই না যা আল্লাহর অনুমতিতেই কাজ করে। এমতাবস্থায়, সেই বেদান্তবাদ বা কাব্বালাহ এর বিদ্যা দ্বারার মেক্যানাইজেশন অর্থাৎ এর বিদ্যার উপর যদি কোন প্রযুক্তি নির্মাণ করা হয় তবে তা কখনোই আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী হালাল হিসেবে গন্য করা সমীচীন হবেনা। উদাহরণস্বরূপ বেদান্তশাস্ত্রে বিশ্বাসী শ্রোডিঞ্জার,হাইজেনবার্গদের বানানো বেদান্ত মেকানিক্স  দুঃখিত ;কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর উপর বানানো কোয়ান্টাম প্রসেসর। এর রহস্যময় কার্যনীতি এর উদ্ভাবকরাও বোঝেনা। সিহরের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর কার্যনীতি বা মেকানিকস কখনোই মানুষের কাছে পুরোপুরি বোধগম্য হবেনা। সাধারন মানুষের কাছে যেমন মিস্টিক্যাল, যাদুকরদের কাছেও তেমন মিস্টিক্যাল। পার্থক্য হচ্ছে যাদুকররা মনগড়া কিছু বলে ইন্টারপ্রেট করার চেষ্টা করে। এর মেকানিক্স নূহের [আঃ] যুগেও মানুষ যেমন বুঝতো না এখনো বোঝেনা। প্রথমেই বলেছিলাম, সিহর বা যাদু হচ্ছে সেই ব্যাখ্যাতীত অদ্ভুত ঘটনা যার কার্যকরণ গুপ্ত বা অজ্ঞাত। এখন যদি কোন ব্যক্তি এমন কোন উসূলের ডেভেলপ করে যাতে বলা হয় প্রযুক্তিগত সবকিছু, নো ম্যাটার এটার ডেভেলপমেন্ট এর সূত্র যাদুশাস্ত্র থেকে নেয়া বা না নেয়া, সেটার কার্যনীতি আজ না বোঝা গেলেও সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ঠিকই বোঝা যাবে, প্রযুক্তির কার্যনীতির বোধগম্যতা সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। অর্থাৎ যাদুকরদের মৌলিক কার্য তথা ন্যাচারাল 'ল বিকৃতকারী বিদ্যার মেক্যানাইজেশনকে হালাল ভাবে নিয়ে সভ্যতার এ্যাডভান্সমেন্টের সাথে কিংবা সময়ের এর আন্ডারস্ট্যান্ডিং জুড়ে দেয়ার উসূল ত্রুটিযুক্ত এবং সমর্থনযোগ্য নয়। এর দ্বারা একরকম মু'তাযিলাদের উসূলকে ধারন করা হয়, মু'তাযিলারা যাদুবলে কিছুকে স্বীকার করেনা, তারা সিহরকে বিদ্যা বিজ্ঞান প্রযুক্তির ডোমেইনে ফেলে। যাইহোক, এমন উসূল তৈরির একটি কারন হতে পারে গোটা বিষয়ে পুওর আন্ডারস্ট্যান্ডিং অথবা সার্বিকভাবে এমন উসূলে চলা যেটায় শারঈ সমস্ত বিধানগুলোর ব্যপারে বুঝ গলার নিচে যেতে দেয় না। 


★এমন কখনো হয়না যে আপনি এমন কোন কিছু গনহারে বানাতে পারেন যার কার্যনীতি সম্পর্কে অজ্ঞাত। আপনি যদি কোন ম্যাথম্যাটিক্যাল প্রবলেম সলভের ব্যপারে পুরোপুরি জ্ঞান না রাখেন, তাহলে ম্যাথ কখনোই সলভ করতে পারবেন না। যদি গোঁজামিল দিতে দিতে করেও ফেলেন,সেটা কিভাবে হলো সে ব্যপারে রিফ্লেক্ট করলে অবশ্যই বুঝতে সমর্থ হবেন। সে ম্যাথের ব্যপারে যদি ভাল করে জানেন অবশ্যই একটু চেঞ্জ করে দিলেও সলভ করতে পারবেন। প্রযুক্তিগত জিনিসগুলো এমনই, এসবের কার্যনীতির রহস্য উদ্ভাবকের কাছে দুর্বোধ্য অবস্থায় থাকেনা। অপর দিকে সিহর সবসময়ই দুর্বোধ্য। এটাকে মেকানাইজড করা হলে,একে ব্যাখ্যা করতে চাইলে আনঅবজারভেবল ফিলসফিক্যাল বিলিফের দিকে যেতে হবে। প্রযুক্তিগত ডিভাইস খুব কমই পাবেন যা সরাসরি সিহরের ইল্মের উপর তৈরি। যা আজ সিহর তা হাজার বছর আগেও সিহর হিসেবেই ছিল। 


★সাধারন প্রযুক্তিগত জিনিস আল্লাহর সৃষ্টিজগতের স্বাভাবিক নীতিরই অনুসরণ করে। এরা 'ল ভায়োলেট করে না। কিন্তু প্রত্যেক যাদুকর জানে he is twisting things out of its proper shape, সে জানে সে ন্যাচারাল 'ল বিকৃত করতে চাচ্ছে। কিভাবে হয় তা কেউ(মনুষ্যজাতি) জানে না। সেটা হতে দেয়া বা না দেয়াটা আল্লাহর হাতে। এমতাবস্থায় বৈদিক কিংবা কাব্বালিস্টিক শাস্ত্র উদ্ভূত প্রযুক্তি আল্লাহর সৃষ্ট জগতের স্বাভাবিক নীতিতে কাজ করবেনা বরং সেটা ল' ভায়োলেট করেই অনবরত আল্লাহর অনুমতিতেই কাজ করবে। সুতরাং কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে বৈধ স্বাভাবিক প্রযুক্তির তালিকাভুক্তির উসূলটির গ্রহণযোগ্যতা - শূন্য। 


হয়ত কিছুকাল পর জিরো পয়েন্ট এনার্জির ডিভাইস চলে আসবে। এটা যদি যাদুকরদের বিশ্বাস অনুযায়ী প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল এনার্জি রিসোর্স ব্যবহার করে, যাকে তারা ইথার কিংবা কোন্টায়াম ফিল্ড/কোয়ান্টাম ফোম/পাইলট ওয়েভ প্রভৃতি শব্দ দ্বারা বোঝায়, এটা কি আল্লাহর সৃষ্টিজগতের নীতিকে ডিফেন্ড করবে নাকি বিকৃত করেই এনার্জি আউটপুট দেবে! আমি অনুভব করি এমন কিছু যদি সফল বাস্তবায়ন ঘটে এবং তা যদি ম্যাসিভ স্কেলে ব্যবহার করে তবে তা প্রকৃতি এবং আশপাশের বস্তু জগতে চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটা প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল বিল্ডিং ব্লক বিকৃত করে ফেলবে। ইন্টুইটিভ -সাইকোম্যাট্রিক এম্প্যাথরা সহজে বুঝবে যে, এটা বস্তু / প্রানীর ফিজিক্যাল এনার্জি রিসোর্স এক্সস্ট করতে থাকবে,দেখা যাবে বিল্ডিং, বৃক্ষ সমস্ত সলিড অব্জেক্টের রিজিডিটি কমে গেছে ,  সুতরাং সিহর স্বল্পমেয়াদী লাভ তৈরি করলেও তা দীর্ঘমেয়াদে কখনোই কল্যাণকর না। কিছুদিন আগে জিম্বাবুয়ের ম্যাক্সওয়েল চিকম্বুৎসুর ফ্রি এনার্জি ডিভাইস তৈরি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। পরবর্তীতে তার সাথে অনেক বার্তা বিনিময়ের পর বুঝতে পারি তার জিপিএম মেশিনগুলো রেডিও সিগ্নালকে ইলেক্ট্রিসিটিতে কনভার্ট করে। অর্থাৎ এটা বেতার তরঙ্গকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর কৌশল। এটা আদৌ যাদুকরদের প্রকৃতির ল' অল্টারিং বা পার্ভাশনের চিন্তার ডোমেইনে পরে না। উদাহরণস্বরূপ, আপনি খাদ্য গ্রহন করছেন,আর আপনার শরীর সেই খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করছে।এজন্য দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া ম্যাক্সওয়েলকে বলেছি সে যেন গরীব আফ্রিকানদেরকে এর দ্বারা উন্নয়ন ঘটায়। 


★অতএব এটা বোঝা সহজ যে ম্যাজিক্যাল অকাল্ট স্ক্রিপচার আশ্রিত বিদ্যার উপর সরাসরি ভিত্তি করে প্রযুক্তি নির্মান করা হলে তা শুধুমাত্র এজন্যই পরিত্যাজ্য নয় যে, সেটাকে আশ্রয় করে কাফিররা বিভিন্ন তাওহীদ বিদ্বেষী আকিদা বানিয়ে প্রচার করে, বা তা দ্বারা তারা তাদের কুফরি আকিদার সত্যায়ন করে বরং মূল সমস্যা হচ্ছে এই বিদ্যার মূল শিক্ষাই হচ্ছে সৃষ্টিকে বিকৃত করার জন্য আনঅথোরাইজড ইন্টারভেনশান। এবং এটাই করে থাকে। এটা সফলভাবে কাজ করছে এটা দেখার মানে এই নয় যে আল্লাহ আযযা ওয়াযাল এর উপর সন্তুষ্ট,এও না যে তা আল্লাহর বেধে দেয়া স্বাভাবিক নিজামের অধীনে কাজ করছে। বরং আউটপুট আসছে আল্লাহর অনুমতিতে তার সৃষ্টিকে বিকৃত করার মাধ্যমে। এই যাদু করা মূলত শয়তানেরই কাজ। এর শিক্ষক মূলত শয়তান। শয়তান আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তনের আদেশ দেয়। আল্লাহ শয়তানের এ শিক্ষার ব্যপারে বলেনঃ 

....فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ.... 

....তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব.....।

(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ১১৯)



অর্থাৎ এদিক থেকে দেখা যায় যাদু বা সিহর শয়তানের শিক্ষা। ইহুদিরা যে কাব্বালাহকে ধরে বসে আছে সেটা শয়তানেরই শিক্ষা। আল্লাহ বলেনঃ....وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ....

অর্থঃ... সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত....।

(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১০২)



এজন্য সরাসরি কাব্বালিস্টিক কিংবা বেদান্তবাদের উসূল ব্যবহার করে প্রযুক্তিতে রূপ দিলে তা কস্মিনকালেও বৈধ ব্যবহার্য বস্তু হিসেবে স্বীকৃতি পাবেনা। এই বৈধ অবৈধতা সাব্যস্ত করনের উসূল কোন নির্দিষ্ট সময়কেন্দ্রিক নয় বরং সকল যুগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি কেউ একে বৈধতা দিতে চেষ্টা করে তবে হয় তার সিহরের সংজ্ঞায়নের প্রকৃতি মু'তাযিলা অনুরূপ অথবা তাদের শারঈ অন্যসব উসূল ও আন্ডারস্ট্যান্ডিং এমন যেরূপ হলে ইল্ম গলার নিচে প্রবিষ্ট হয়না বলে হাদিসে এসেছে। বৈধতাদান কারীদের উসূলকে গ্রহন করলে কাব্বালাহ কিংবা বেদান্তশাস্ত্রে এমন কোন সিহর শিক্ষার কিছু নেই যা ন্যাচারাল 'ল করাপ্ট করতে শেখায়, যা কিছু আছে সবই আল্লাহর নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী হয়। সেই বিধান মোতাবেক কোয়ান্টাম প্রসেসর বানানো হচ্ছে। অর্থাৎ তাহলে আর রাযি.র মতানুযায়ী রিয়ালিটি পার্ভার্শনের কিছু নেই। যাদুকররা যা করে একটা লোককে অসুস্থ করে দেয়, সেটাও প্রকৃতির 'স্বাভাবিক' নীতি!!! আচ্ছা, তাহলে আল্লাহর অনুমতিতে হবার প্রয়োজন কি!? ডিজেল দিয়ে যেভাবে ইঞ্জিন চালানো যায় এটাও এরকমই ব্যাপার। সবই হালাল ইল্ম। সবই টেকনোলজি, সবই সায়েন্টিফিক নলেজ। কিয়ামত পর্যন্ত টেকনলজিক্যাল সব হালাল নো ম্যাটার সেটা যাদুবিদ্যার নীতিতে চলছে অথবা সেটা ছাড়া সাধারন নীতিতে!!! 


ইখতেলাফ কিংবা ভিন্ন উসূল প্রতিষ্ঠা নিষিদ্ধ কিছু নয়। বরং মাঝেমধ্যে তা কল্যাণকর। তাই বলে আমাদের এমন কিছু বলার ব্যপারে সাবধান থাকতে হবে যা পেছনের জ্ঞান কিংবা মৌলিক চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিকতা তৈরি করে। আমি এ যাবৎকাল পর্যন্ত যা লিখেছি,যার পেছনে আমার কোন ইল্মী ব্যাকআপ নেই,সেসমস্ত উসূলী(নীতিগত) বিষয়ে এমনটা দাবি করিনা যে তার সবটাই ১০০ ভাগ শুদ্ধ। এমনও হতে পারে এমন কোন উসূল প্রতিষ্ঠিত হল যা আমার চেয়ে বিশুদ্ধ এবং শারঈ দিক দিয়ে বিশুদ্ধ। এমতাবস্থায় সেটাকে অনুসরণই কল্যাণকর হবে। 




ওয়া আল্লাহু তা'আলা আ'লাম।

যা কিছু লিখেছি এর মধ্যে যা কল্যাণকর তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। যা কিছু অকল্যাণকর তা আমার এবং শয়তানের পক্ষ থেকে। 


سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ



 

7 Comments:

  1. ভাই জংগি উপাখ্যান এ আমি কমেন্ট করেছিলাম উওর দিলেন না যে ? আবার দেখুন

    ReplyDelete
  2. ভাই একটা নাস্তিকের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখলাম সে লিখেছে আমাদের নবির উপর নাকি প্যাগান ধর্মের প্রভাব আছে। নাস্তিকের দাবি আল কুরআনের বিভিন্ন সূরা যেমন সূরা নসর এর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলে নসর নাকি প্যাগানদের একটি দেবতার নাম। এছাড়া ইসলামের প্রতিক বাকানো চাঁদ এনে বলে এটি নাকি প্যাগান ধর্মের প্রতিক। এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?

    ReplyDelete
    Replies
    1. আখ্যি নাস্তিকদের কথা শোনা তাদের গ্রুপ না ঘেষাই উত্তম। ব্যক্তিভেদে এগুলো ওয়াসওয়াসার কারন হয়। শব্দের উচ্চারনে মিল থাকলেই সেটা ওই অর্থ প্রকাশ করে ভাবলে সেটা বোকামি। যেমন বাংলা উচ্চারনের অনেক অশালীন শব্দ আরবিতে পাবেন। সেসবের উচ্চারনে মিল থাকার মানে সেটা বোঝায়না। নাস্তিক মুলহিদরা সবসময়ই মিথ্যাবাদী। বাকা চাদের প্রতীকটা আসলেই প্যাগান এমব্লেম বলা যায়। এই পতাকা কখনই ইসলামের দলিলসিদ্ধ পতাকা নয়। এটা ব্যবহার শুরু হয় কোন এক খলিফার স্বপ্নে এই পতাকাকে দেখার মাধ্যমে। সুতরাং এটাকে ইসলামি পতাকা বলে প্রচার ভুল। বলা যায় মুসলিমরা এটাকে ব্যবহার করে। মুসলিমরা তো অনেক সেক্রিড জিওমেট্রিক প্রতীক কুরআনের মধ্যেও ব্যবহার করে। বায়তুল্লাহর সামনেও নকশায় ব্যবহার শুরু করেছে। এগুলো কোন দলিলসিদ্ধ কিছু না। তাই এগুলোকে ইসলামিক বলাও ভুল এগুলো দেখে ইসলামকেই প্যাগান দ্বীন বলা চূড়ান্ত রকমের ভন্ডামি।

      Delete
  3. মুহতারাম, মেশিন লার্নিং/ডিপ লার্নিং এবং সার্বিকভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি সিহরের অন্তর্ভুক্ত? এর দ্বারা তৈরি প্রযুক্তিগুলো কি শরিয়াসম্মত?

    এ বিদ্যার শেখর পর্যন্ত জানতে পারিনি। যদি সহায়তা করতেন

    ReplyDelete
    Replies
    1. আখ্যি,
      আমরা যে উসূলের[নীতি] অনুসরণ করি আগে সেটার সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে।মেশিন লার্নিং,এআই এসমস্ত বিষয় যদি এমন হয় যে তা প্রাচীন যাদুশাস্ত্রের কোন নীতিকে অনুসরণ করে যা সৃষ্টিজগতের কোন নীতিকে বিকৃত করে চালিত হয় এবং সেটার কার্যপ্রক্রিয়া উদ্ভাবকদের কাছেও ব্যাখ্যাতীত সেটাকে সিহরের ডোমেইনে ফেলাটা সঙ্গত হবে। কিন্ত আমি যতদূর জানি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং,মেশিন লার্নিং এর কোন কিছু যাদুশাস্ত্রকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট নয়, এবং এর ফাংশনালিটি ইনভেন্টরদের কাছে এ্যাম্বিগুয়াস কিংবা মিস্টেরিয়াস নয় বরং স্ট্রিক্ট লজিক্যাল ওয়েতে কাজ করে তাই একে আমি সিহরের ক্যাটাগরিতে ফেলতে পছন্দ করিনা। তবে বর্তমানে আমার ধারনার বিপরীতের এআই ডেভেলপ করা হলে তা সিহর হতে পারে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যতদিন না কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সাথে ইন্টিগ্রেট হবে ততদিন এর ফুল পটেনশিয়ালিটি পাওয়া যাবেনা। কোয়ান্টাম বিটের জিরো ওয়ানের নন লোকালিটি এআই'কে দুর্বোধ্য হিউম্যান লাইক করে ফেলতে পারে, এর মধ্যে সেল্ফ এ্যাওয়ারনেস তৈরি করতে পারে,যেমনটা ফিল্মগুলো এখন দেখায়। কিউবিটের নন লোকাল আচরণে এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। বেদান্তশাস্ত্রভিত্তিক এই মেকানিক্সের টেকনোলজির সাথে এআই এর ইন্টিগ্রেশন সিহরের কাতারে নিয়ে আসবে। কিন্তু যতদিন এটা হচ্ছে এআই কে সিহরের কাতারে ফেলা সমীচীন মনে করিনা। ওয়া আল্লাহু তা'য়ালা আ'লাম।

      Delete
    2. ভাই যারা স্কুল কলেজে physic বিষয়ের শিক্ষক তাদের পেশা কি হারাম??

      Delete
    3. জটিল সেন্সেটিভ প্রশ্ন। জবাব দেয়ার আগে কিছুক্ষণ ভাবতে হয়েছে। আসলে হারাম হালালের ব্যপারে বলার অধিকার রাখেন সম্মানিত আলিমগন। সমস্যা হচ্ছে আমি যেই স্ট্যান্ডার্ডে ভাবি সেই ফ্রিকোয়েন্সিতে ভাবেন এমন আলিম পাওয়া ভাড়। এরপরেও আমি হালাল হারাম বলার ধৃষ্টতা না দেখিয়ে "সমীচীন" "অসমীচীন" এর সীমানা টেনে বলতে পারি। আখ্যি, ফিজিক্সকে দুটি শাখায় ভাগ করা যায়। ১.আইডিয়ালিস্টিক
      ২.ম্যাটেরিয়ালিস্টিক
      আজ থেকে ৬০-৭০ বছর আগে ম্যাটেরিয়ালিস্টিক ফিজিক্সের ডমিনিয়ন ছিল। অনুন্নত বাংলাদেশে এখনো ম্যাটেরিয়ালিজমের উপরেই আমল করে। আইডিয়ালিজম অপেক্ষা ম্যাটেরিয়ালিস্টিক ফিজিক্স ঈমান আকিদার ক্ষেত্রে কম বিধ্বংসী। এজন্য শিক্ষকতার ক্ষেত্রে আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্সকে এড়িয়ে চলাই সমীচীন কেননা সিহর এর মধ্যেই রয়েছে। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত ফিজিক্সের ম্যাটেরিয়ালিস্টিক স্ট্রিম অতটা ভয়াবহ নয়।

      সমস্যা একটাই, ম্যাটেরিয়ালিস্টিক ফিজিক্স এথেইজমের দিকে ঠেলবে অন্যদিকে আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্স প্যান্থেইজমের দিকে চালিত করে। এদিক দিয়ে ভাবলেও সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে অস্বীকার করা সবকিছুতে ঐশ্বরিকতা আরোপ এবং স্বীয় সত্তাকে ঈশ্বর দাবি[তাগুত] অপেক্ষা লেস ডেস্ট্রাক্টিভ।

      Delete