আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কিয়ামত দিবসের পূর্বে তরবারী হাতে এ উদ্দেশ্য প্রেরিত হয়েছি যে, কেবলমাত্র এক আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালারই) ইবাদত করা হবে, আর আমার রিযিক আসে আমার বর্শার ছায়া হতে, আর যারা আমার আদেশের বিরুদ্ধে যাবে তাদের জন্য অপমান (আর লাঞ্ছনা) তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে, আর যে কেউ তাদের অনুকরণ করে সে তাদেরই একজন”। মুসনাদে আহমান, ৪৮৬৯; সহীহ আল জামে’,২৮৩১.
হাদিসটা দেখলেন! কিয়ামত পর্যন্ত কিত্বাল চালু রাখবার আদেশ দিলেন তরবারিওয়ালা নবী(সাঃ)। আর রিযিক এর সন্ধান করতে বলেছেন কিত্বালের মাধ্যমে, হাল চাষ বা জীবিকার জন্য অন্য কাজ নয়। আর এভাবে ততদিন যতদিন না দ্বীন এক আল্লাহর হয়ে যায় দুনিয়াতে। আর বাতিল দ্বীন বিলুপ্ত হয় ।
ইবনে উমার কর্তৃক বর্ণিত আমি রাসূলুলাহ্ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “যদি তোমরা ইনাহ্ (এক ধরণের সুদ) করার এবং গরুর লেজ অনুসরন কর এবং কুষক হয়ে পরিতৃপ্ত— হয়ে যাও এবং জিহাদ প্রত্যাখ্যান কর আল্লাহ তায়ালা − তোমাদের উপর লাঞ্চনা অবতরন করবেন যা ততক্ষণ পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের ধর্মের দিকে প্রত্যাবর্তন কর।” (আবু দাউদ-সহীহ)
অর্থাৎ ইসলামধর্মই জিহাদভিত্তিক। ৫:৫৪ তেও আল্লাহ
জিহাদকে ছেড়ে দেওয়াকে ধর্ম থেকে ফিরে যাওয়াকে বুঝিয়েছেন! যতদিন না দ্বীন বিজয়ী হয়ে যায়, ততদিন অনবরত কিত্বাল ছাড়া আর কোন কাজ জীবিকাতে জড়ানোই মানে লাঞ্চনার দিকে হাটা। এটা আসলেই সত্য। এই দুনিয়াবি কাজে জড়ালে আস্তে আস্তে পুরো সমাজ জিহাদচ্যুত হয়ে যায়, এর পরে কয়েক প্রজন্ম গেলে ভুলেই যায় নিজেদের পরিচয়, তখনই কাফেরদের দ্বারা লাঞ্চনা শুরু।দফাও(প্রতিরক্ষাও) নাই, তাই রোহিঙ্গা হওয়া ছাড়া গতি নাই। এজন্য উমার (রাঃ) এক সাহাবীর ক্ষেতের ফসল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।আর আমরা তো অস্ত্র ছোয়াটাও এখন হারাম মনে করি। অথচ আল্লাহ বলেছেন "কাফেররা চায় তোমরা কোনরূপে অস্ত্রের ব্যপারে অসচেতন হয়ে পড়,আর সে সুযোগে তোমাদের উপড় একযোগে আক্রমণ করে!"‘যখন মানুষ দিনার এবং দিরহামের মধ্যে ডুবে যাবে, এবং যখন ঈনা নামক (সুদী) ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাবে, আর গরুর লেজ-এ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দিবেন, তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনে ফিরত না যাবে।’
[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ (২/২৮), তাবরানী (১২/৪৩৩), বায়হাকী (শুয়াবুল ঈমান ৭/৪৩৪), আবু ইয়ালা (১০/২৯)]
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শীঘ্রই মানুষ তোমাদেরকে আক্রমন করার জন্য আহবান করতে থাকবে, যেভাবে মানুষ তাদের সাথে খাবার খাওয়ার জন্য একে-অন্যকে আহবান করে।’
জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তখন কিআমরা সংখ্যায় কম হবো?’ তিনি বললেন, ‘না, বরং তোমরা সংখ্যায় হবে অগণিত কিন্তু তোমরা সমুদ্রের ফেনার মতো হবে, যাকে সহজেই সামুদ্রিক স্রোত বয়ে নিয়ে যায় এবং আল্লাহ তোমাদের শত্রুর অন্তর থেকে তোমাদের ভয় দূর করে দিবেন এবং তোমাদের অন্তরে আল-ওয়াহ্হান ঢুকিয়ে দিবেন।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আল–ওয়াহ্হান কি? ’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং ক্বিতালকে(যুদ্ধকে) অপছন্দ করা।’ (মুসনাদে আহমদ, খন্ডঃ ১৪, হাদিস নম্বরঃ ৮৭১৩, হাইসামী বলেছেনঃ হাদিটির সনদ ভালো, শুয়াইব আল আর নাউতের মতে হাদিসটি হাসান লি গাইরিহি)।
_বস্তুত এখন কিত্বাল(যুদ্ধ-জঙ্গিবাদ) ঘৃনার বিষয়,চরম ঘৃনার বিষয়।এর স্বরূপ বর্ননা কি দেব! হায় রে! আফসোস!!
অনেক সার্টিফিকেটওয়ালা শায়েখরা "কেতাল্পাট্টি" শব্দ দিয়েও ঘৃনাকে প্রকাশ করেন। সুবহানআল্লাহ!! তাদের মুখও আমরা দেখছি,যাদের ভয় রাসূল করেছেন দাজ্জালের চাইতেও বেশি!!!
আবু হুরাইরাহ (রা.) বর্ননা করেন যে রাসূলুলাহ্ (সাঃ) বলেন “যে ব্যক্তি যুদ্ধ করেনি অথবা যুদ্ধের জন্য নিয়্যতের করেনি এমন ব্যক্তি মৃত্যু বরন করলে সে মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মুসলিম)
আবূ বাক্র ইবনু আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন,
তিনি বলেন, শত্রুর মোকাবিলায় আমি আমার বাবাকে (যুদ্ধক্ষেত্রে)বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তলোয়ারের ছায়াতলে জান্নাতের দরজাসমূহ। দলের উস্কখুস্ক একজন লোক বললেন, আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কি তা বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি তার সঙ্গীদের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন, আমি তোমাদের বিদায়ী সালাম জানাচ্ছি। এই বলে তিনি নিজ তলোয়ারের খাপ ভেঙ্গে ফেললেন এবং তলোয়ার দ্বারা (শত্রুর প্রতি) আঘাত হানতে থাকেন। অবশেষে তিনি নিহত হন। সহীহ্, ইরওয়া (৫/৭), মুসলিম
জামে আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৬৫৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
শায়েখগন বলেন এখন কোন হক্ক জিহাদ নেই।সব খাওয়ারিজ! নিচের হাদিসটির দিকে তাকালে মনে হয় তারা রাসূলের বিরুদ্ধেই নির্ভয়ে বলেন__
মুগীরা ইব্ন শু’বাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী থাকবে। এমনকি যখন ক্বিয়ামত আসবে তখনও তারা বিজয়ী থাকবে। (৭৩১১, ৭৪৫৯, মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১৯২১) (আ.প্র. ৩৩৬৯, ই.ফা. ৩৩৭৬)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৬৪০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সম্মানিত শায়েখগন বলেন ওরা যেটা করে সেটা জিহাদ নয়,জিহাদ হলে আমরাই প্রথম কাতারে থাকতাম। আসলে, রাসূল(স) এর যুগেও এ মতাদর্শের লোক ছিল, যুগেযুগে তাদের ক্যারেকটার একই। উহুদ যুদ্ধে তাদের ডাকা হয়েছিল, ওরা বলে এটাকে যুদ্ধ মনে করিনা, যদি এটা কিত্বাল ফি সাবিলিল্লাহ বা যুদ্ধ হত তবে আমরা সারির প্রথমে থাকতাম। অথচ তখন যুদ্ধে সেনাপ্রধান আমাদের নবী(স) ছিলেন। দেখুন ৩:১৬৭ তে।
এই বিশেষ মতাদর্শের লোকরা যখন দেখে কোন জঙ্গি নিহত হয় তখন এরূপ বলে যে কত করে বলতাম যাতে এসব ফালতু জঙ্গিদলে যাতে না যোগ দেয়, কত সাবধান করেছিলাম, এখন খারেজিগুলো মরেছে, পারত না শান্তিতে বসবাস করতে!! বিস্তারিত দেখুন ৩:১৬৮ তে।
এমতাদর্শের জনাব'দের কে আল্লাহ এ আয়াতগুলোতে ডায়্রেক্ট ট্যাগ দিয়েছেন । সেটা না হয় নাই উল্লেখ করলাম।
তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল(৩:১৪২)
আমাদের দায়িত্ব শুধু পৌছানো, মানা বা না মানবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সকলের আছে। আল্লাহ বলেনঃ
لَآ إِكْرَاهَ فِى الدِّينِ ۖ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَىِّ ۚ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطّٰغُوتِ وَيُؤْمِنۢ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى لَا انْفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
"দীনের মধ্যে জবরদস্তির অবকাশ নেই, নিশ্চয় হিদায়াত গোমরাহী হতে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই যে ব্যক্তি মিথ্যে মা’বুদদেরকে (তাগুতকে) অমান্য করল এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল, নিশ্চয়ই সে দৃঢ়তর রজ্জু ধারণ করল যা ছিন্ন হওয়ার নয়। আল্লাহ সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞাতা।"
(QS. Al-Baqarah 2: Verse 256)
ভাই চাঁদের কি নিজস্ব আলো আছে।
ReplyDeleteআমার জানা মতে চাঁদের নিজস্ব আলো আছে।
এই বিষয়ে কুরআন হাদিস কি বলে।
আখ্যি কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চাঁদের আলো আছে। ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব পিডিএফের চন্দ্র অধ্যায় পাঠের অনুরোধ করি। ওয়া আল্লাহু তা'য়ালা আ'লাম।
Deleteভাই আপনার লেখা কপি করা যায় না
ReplyDelete