Monday, April 18, 2022

ইসলামফোবিয়া এবং আমাদের কিছু করণীয়

 10 বছর আগেরও আজকের মত ইসলাম বিদ্বেষ কোথাও দেখা যায় নি। আজ যা হচ্ছে তা 20 বছর আগে বললে অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করতে চাইত না।

 তবে আমরা আরো 8 বছর আগে থেকেই মুসলিমদের বর্তমানে হতে থাকা দুর্গতির ব্যপারে সতর্ক করে আসছি, তখন আমাদের কথা অবিশ্বাস্য বাড়াবাড়ি মনে হত অনেকের, কিন্তু এখন এটাই বাস্তবতা। ফ্রান্সে সরকারিভাবে আল্লাহর রাসূল (স) কে কটাক্ষ করা, চীনে মুসলিম নিধন, ভারতে হিজাব বোরকা নিষিদ্ধ করে গনহত্যার হুমকি, বাংলাদেশে হিজাবের উপর হিন্দু শিক্ষকের আক্রমণ আজকের বাস্তবতা। 5 দিন আগে দেখলাম বাগেরহাটে আল্লাহর রাসূলকে (স) নিয়ে কোন এক মালাউনের কটূক্তি -


 গতকাল দেখলাম সুইডেনে পুলিশের অনুমতিতে কুরআন পোড়ানোর আয়োজন করা হচ্ছে।   

 আজ খবর পেলাম সাতক্ষীরায় নামাজের মধ্যে এক মালউন ইমামকে উপরে তুলে হরে রাম স্লোগান তুলে মুসলিমদের ধ্বংসের হুমকি দেয়।

 অর্থাৎ দিন যত গড়াচ্ছে ততই ইসলামফোবিয়া বাড়ছে।  ভারত বর্ষে ইসলামি শাসন শুরু হয় সেই 1192 সালে। আর 1858 সালে মুঘল এম্পায়ার এর পতন ঘটে। অর্থাৎ 600 বছরের বেশি সময় শাসন করেছিল মুসলিমরা। আজ মুশরিকরা আমাদের সাথে যে আচরন করছে সেটা মুসলিম শাসনামলে করা হলে আজ একটা হিন্দুকেও খুজে পাওয়া যেত না।কিন্তু আজকে মুশরিক হিন্দুদের মাঝে এই কৃতজ্ঞতাটুকুও নেই। শুনলাম সামনে ক্ষমতায় আসতে পারে আদিত্য যোগী যে কিনা নরেন্দ্র মোদীর চেয়েও বেশি ইসলাম বিদ্বেষী। এর পরে শোনা যাচ্ছে ফ্রান্সে ক্ষমতায় আসতে পারেন এক ডানপন্থী মহিলা যে কিনা ম্যাখোর চেয়েও অনেক গুন বেশি ইসলাম বিদ্বেষী, এর জন্য এখনই মুসলিমরা ফ্রান্স ত্যাগ শুরু করেছে।

 



সুতরাং দিন যত গড়াচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষ আরো বাড়ছে। আসলে এটা কোন নতুন ঘটনা নাহ। আল্লাহ যাদের কে দুনিয়াতে মনোনীত করেছেন সে সম্প্রদায় যখন আল্লাহর পথকে ভুলে অন্য দিকে চলতে থাকে তখনই আল্লাহ কাফিরদের কে দিয়ে মনোনীত সম্প্রদায় কে লাঞ্চিত করেন আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনার জন্য, এমনটাই ঘটেছিল বনী ইসরাইলিদের সাথেও। আল্লাহর এই সুন্নাহ দেখা যায় ইহুদিদের সাথে নেবুচাদনেজারের আচরনে। আজ মুসলিমরা যেভাবে তাদের আসল পরিচয় ভুলে বিজাতীয় তন্ত্র মন্ত্র কুফরি চিন্তাধারা এবং জীবন ব্যবস্থাকে গ্রহন করছে , তাদেরকে পুনরায় সরল পথে ফিরিয়ে আনতে কাফিরদের দ্বারাই লাঞ্চিত করছেন। আমরা এক হাদিসে এরকমটাই দেখি -

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، ح وحَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ مُسَافِرٍ التِّنِّيسِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَحْيَى الْبُرُلُّسِيُّ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، عَنْ إِسْحَاقَ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سُلَيْمَانُ: عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْخُرَاسَانِيِّ، أَنَّ عَطَاءً الْخُرَاسَانِيَّ، حَدَّثَهُ أَنَّ نَافِعًا حَدَّثَهُ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِذَا تَبَايَعْتُمْ بِالْعِينَةِ، وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ، وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ، وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ، سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا لَا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ، قَالَ أَبُو دَاوُدَ: الْإِخْبَارُ لِجَعْفَرٍ وَهَذَا لَفْظُهُ



ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা ঈনা[1] পদ্ধতিতে ব্যবসা করবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজেই সন্তুষ্ট থাকবে এবং জিহাদ ছেড়ে দিবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্ছনা ও অপমান চাপিয়ে দিবেন। তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদেরকে এই অপমান থেকে মুক্তি দিবেন না।[2]
[1]. ঈনাঃ প্রকত মূল্যের চেয়ে ধারে অধিক মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা। যেমন কেউ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দশ টাকায় কিছু বিক্রি করলো এবং ঐ সময় শেষ হওয়ার পর তা আট টাকায় কিনে নিলো।

[2]. সহীহঃ সহীহাহ (১১)।






সুতরাং মুসলিমদের বর্তমান দুরবস্থা দেখে বিচলিত হবার কিছু নেই। এ অবস্থার কথাই আল্লাহর রাসূল(স) আরো বহু আগে বলে গেছেন। আগামীতে এই দুরবস্থা আরো বাড়বে । হক বাতিলের সংঘাত আরো স্পষ্ট হবে। মুনাফিক মু'মিন আলাদা হবে। নিষ্ক্রিয় সেকুলার আধা সেকুলার ঘুমন্ত নামে মুসলিমদের মধ্যেও সাম্প্রদায়িকতা চলে আসবে। হয় তারা কুফরের শিবিরকে পছন্দ করবে অথবা ঈমানের শিবিরকে। এখন আমাদের যেটা করণীয়- বর্তমানে চলমান ইসলাম বিদ্বেষী বিশ্বব্যাপী সকল কার্যক্রমের খবর রাখা । এরকম খবর পাওয়া মাত্রই সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া। আত্মীয় বন্ধুর মাঝে লিংক শেয়ার করা। এতে করে তাদের মাঝেও সাম্প্রদায়িকতা তৈরি হবে। কাফিরদের প্রতি ঘৃণা তৈরি হবে। এটা জাগ্রত করবে আল ওয়ালা আল বারা'র চেতনা।আল্লাহর ইচ্ছায় এটা এখন ক্রমেই বাড়ছে। যেসকল সোস্যাল মিডিয়া মুসলিমদের খবরাখবর প্রচার করে যেমন রিয়ালিটি চেক বিডি, উম্মাহ নেটওয়ার্ক / নিউজ , এএফএন রেডিও ,এদের প্রকাশিত ভিডিও লিংক প্রচার করা খুবই কার্যকর দাওয়াহ।






ওয়াল্লাহু তা'যালা আ'লাম

3 Comments:

  1. আপনার কর্মকান্ডের কারণে আপনার উপর কালজাদু করে না?

    ReplyDelete
  2. আখি আপনার লেখাগুলো কপি করে আপনার ক্রেডিট দিয়ে প্রচার করব?

    ReplyDelete