২০১৬ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অনুযায়ী এদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রায় ১৫%। অর্থাৎ প্রায় ২৭০০০০০০ জন মানুষ। যার মাঝে ৩১% হতদরিদ্র। অর্থাৎ হতদরিদ্রদের সংখ্যা আনুমানিক ৮৩৭০০০০ জন। বাস্তব সংখ্যাটা আরো বেশি।
আমাদের দেশে তাগুতি শাসন টিকে আছে এদের সামরিক বাহিনীর অস্ত্রের জোড়ে। সামরিক - আধা সামরিক বাহিনী গুলোর সংখ্যা পুলিশসহ আনুমানিক ৭ লাখের উপরে। এরা আল্লাহর কালাম অনুযায়ী জুন্দুশশাঈত্বন। এরা শয়তানের শাসনের অতন্দ্র প্রহরী। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বাধাদানকারী। এজন্য আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী বর্তমান সামরিক বাহিনীতে চাকুরী ব্যাংকে চাকর খাটার অনুরূপ। আপনার কি কোন ধারনা আছে, এই শয়তানের গোলামগুলোকে কি পরিমান খাদ্যসামগ্রী রেশনের নামে বেতনের পাশাপাশি দেয়া হয়??
এটা কেবল একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা বাংলাদেশের ১৫% জনগণের নিত্যদিনের বাস্তব চিত্র। একে তো পুঁজিবাদি সুদি অর্থব্যবস্থা গরীবকে শোষণ এবং ধনীকে অর্থের পাহাড় তৈরি করে দিচ্ছে তার উপর তাগুতের দুর্নীতি ভরা শয়তানি শাসন, যেখানে যাকাত আদায় হয়ে গেছে ব্যক্তিগত ঐচ্ছিক বিষয়। দেশের উন্নয়নের এবং ইন্ডিভিজ্যুয়াল দরিদ্রের অভাব মোচনের যে আশ্বাস দেয়া হয় সেটা শয়তানের প্রতারণাপূর্ণ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই নয়।
মূলত মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর এই অবস্থার কারন হচ্ছে হাকিমিয়্যাহর ক্ষেত্রে শয়তানের প্রভুত্ব গ্রহন এবং বাস্তবায়ন এবং এক্ষেত্রে আল্লাহর প্রভুত্ব ত্যাগ। আজ কয়জন আলিম তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর কথা বলে? এটাকে একরকমের মুসলিমের আকিদা থেকেই মুছে ফেলা হয়েছে, ফলে জায়গা করে দেয়া হয়েছে গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র সহ বহুত আবর্জনার তন্ত্রমন্ত্র।
মুসলিমরা যেদিন থেকে হাকিমিয়্যাহ থেকে সরে এসেছে এবং কুরআনিক ডোমিনিয়ন থেকে বের হয়ে আল্লাহদ্রোহী শয়তানি সংবিধানকে পছন্দ করেছে, দ্বীন প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং কিত্বাল/জিহাদকে ভুলে গেছে সেদিন থেকে আল্লাহ লাঞ্ছনা চাপিয়েছেন। এই ডিগ্রেডেশান শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনেরও বহু আগে থেকে। এটা করে হয়ত আপনার দাদাদের দাদারা। এই হেরেডিটেরি গিল্ট আমরা আজও বহন করছি। যারা একসময় শাসক লেবাসে ছিল এদেরকে এখন অনেকটাই সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেনের চোখে দেখা হয়। তাদের শিক্ষালয়(মাদ্রাসা) গুলোকে বলা হয় ব্যাঙের ছাতার মত আগাছা। এদেরকে যখন তখন গুলি করে হত্যা করেও দেয়া যায়। এদের কোন অভিভাবক নেই। তাই যা-তা করা যায়। আমরা এই জিল্লতিকে বেশ আন্তরিকতার সাথেই গ্রহন করে নিয়েছি। এর থেকে বের হবার সহজসাধ্য উপায় নেই, তাই পোস্ট মর্ডানিস্ট স্টাইলে অনেকে ধরেছে চাষাবাদ, অনেকে ধরেছে সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরগিরি, অনেকে বিদেশে গিয়ে হয়েছে কাফিরদের সেবাদাস। অনেক দ্বীনদার ধরেছে আতর খেজুর মধু কাপড় মেসওয়াকের ব্যবসা। কি আর করার! বেচে তো থাকতে হবে! এগুলো সবই গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে থাকা। এগুলো সবই জিল্লতি। আপনি যদি কালেক্টিভলি উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোন চেষ্টা না করে এসবে ডুবে থাকেন তাহলে ভাই জিল্লতির কালোমেঘ দিনদিন বাড়তেই থাকবে। আল্লাহকে সাহায্য না করলে তিনিও আমাদেরকে সাহায্য করবেন না। সুদি ব্যবসা এবং গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা আল্লাহর রাসূল দেড় হাজার বছর আগে বলে গিয়েছেন। এগুলো কোন নতুন কথা নয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়ও বলেছেনঃ "যখন মানুষ দিনার এবং দিরহামের মধ্যে ডুবে যাবে, এবং যখন ঈনা নামক (সুদী) ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাবে, আর গরুর লেজ-এ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দিবেন, তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনে ফিরত না যাবে।’
[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ (২/২৮), তাবরানী (১২/৪৩৩), বায়হাকী (শুয়াবুল ঈমান ৭/৪৩৪), আবু ইয়ালা (১০/২৯)]
ভাই আমাদের জ্ঞ্যানের সল্পতার কারণে আজ আমরা সব কিছুই হারিয়েছি। আমাদের এখন কি করা উচিৎ?
ReplyDelete