কিছুদিন আগে জনৈক বন্ধু ম্যাসেজ করে। একটি ফেসবুক লিংক দেয়। আর অভিযোগের সুরে বলে, যেন গিয়ে দেখি সেখানে কিভাবে নবী(স) কে অপমান করছে।
তো সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ওটা মুসলিম নামধারী আইডি। পোস্টটিতে বলা এরূপ বলা হচ্ছে "জঙ্গি নবী মুহাম্মদ"। কমেন্টে ইসলামী অনুভূতিযুক্ত ফাসেকরা আইডিটিকে অকথ্য গালি দিয়ে তার গোষ্ঠী উদ্ধার করছে। শীতল চোখে দেখছিলাম আর মনে মনে বলছিলাম, কাফেররা মাঝেমধ্যে ওদের কাছে অপছন্দনীয় সত্যটা বুঝতে পেরে সেটার বিরুদ্ধে বিদ্রুপাত্বক লেখনী লেখে।
'জঙ্গি' শব্দটি এমন একটি নেতিবাচক শব্দে রুপান্তর করা হয়েছে যার ব্যবহারগত ভাবার্থ এখন আক্ষরিক শাব্দিক অর্থের চেয়েও বেশি কিছু বোঝানো হয়। কাফেরগোষ্ঠী শব্দটা একটি বিশেষ আদর্শের মানুষদেরকে এমনভাবে 'জঙ্গী' শব্দদিয়ে ট্যাগ দিয়েছে যেন তারা সাধারন মানুষের পর্যায়ভুক্ত নয়। এমনভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালায় যেন (জঙ্গীরা)তারা হিউম্যানয়েড জন্তুজানোয়ার সদৃশ কিছু অথবা ক্যানিব্যালিস্টিক হিলবিলি জংলি(মানুষখেকো জংলি বা জম্বি ঘরানার কিছু), যাদেরকে দেখা মাত্র হত্যা করতে হয়। আর একাজে সহায়তা করাও পূন্যের কাজ! ভাবগত অর্থে জঙ্গি বলতে ওদের মিডিয়া তাদেরকে দেশদ্রোহী, অরাজকতা-অশান্তি সৃষ্টিকারী, দুধর্ষ সন্ত্রাসী বলে প্রচার করে। এছাড়া তাদের আদর্শ ও লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নিয়েও বিদ্রুপ তাচ্ছিল্য এবং অচল বলে হেয় করে প্রচার করে। এসব মিডিয়া কখনোই তাদের ব্যপারে নিরপেক্ষ তথ্য দেবে না। সামরিক ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাহীন দুটি ভিন্ন আদর্শবাদীপক্ষের মধ্যে একটি আদর্শগত দ্বন্দ্ব সবসময়ই চলমান আছে।
ফার্সী শব্দ 'জঙ্গি' এর অর্থ 'যোদ্ধা'। আর 'জঙ্গ' অর্থ যুদ্ধ।'জঙ্গিবিমান' বোধকরি সুপরিচিত শব্দ। ইসলামি আদর্শের উপরে থাকা যুদ্ধকে শার'য়ী পরিভাষায় জিহাদ বলা হয়, তেমনি জিহাদকারী 'যোদ্ধা'দের কে ইসলামী পরিভাষায় মুজাহিদ বলে। সে অনুযায়ী নবী(সাঃ) সাহাবা এবং সালাফগন সকলেই সুপার পাওয়ার জঙ্গিবাহিনীর অন্তর্গত। এর প্রধান নেতা হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) সর্বযুগে শ্রেষ্ঠ হয়ে আছেন। আর সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন জঙ্গের মূল নির্দেশদাতা। তাছাড়া তিনিই সবচেয়ে বড় উৎসাহদানকারী। তিনি পবিত্র কুরআনে মূল লক্ষ্য হিসেবে তার বিধান বাস্তবায়নে আমরণ জঙ্গিবাদে তথা কিত্বালে(যুদ্ধে) লিপ্ত থাকার জন্য উৎসাহিত করেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কুরআন মূলত একটি শ্রেষ্ঠ সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী কিত্বালপন্থী(জঙ্গিবাদী) কিতাব (আমি বুঝতে পারছি 'জঙ্গি' শব্দগুলোর এরূপ ব্যবহার আপনাকে বিব্রত করছে আপনার ব্রেইনওয়াসড হবার এর মাত্রা অনুযায়ী।
কিন্তু বিষয়টি নর্মালাইজেশনে নিয়ে আসবার সময় এসেছে, নতুবা কুফর আর হক্ক এর মধ্যে ধোয়াশা কাটবেনা)।যাকে ঘিরে সমস্ত দ্বীনি কিতাব রচিত। এজন্যই সালমান রুশদীর মত ইসলামবিদ্বেষী কাফেরদের যারা কুরআন পড়ে তারা বলে কুরআন শ্রেষ্ঠ জঙ্গিবাদী গ্রন্থ।
এই কাফেরগুলো কুরআনের সারবস্তু হালকা হলেও ধরতে পারে বলেই, ইসলাম ধবংসের জন্য ঐক্যবদ্ধ।
তারা ভাল করেই জানে, হক্ক ও বাতিলের সহাবস্থান বেশিক্ষণ চলেনা। সত্য অসত্যকে দূরীভূত করে।
শুধু নবী(স) একাই জঙ্গি ছিলেন না বরং অন্যান্য পূর্বসূরি নবীগনও এ জঙ্গিবাদের নির্দেশ পেয়েছিলেন। জাতির পিতা ইব্রাহীম আলাইহিসালাম একাই মালাউনদের মূর্তিগুলোতে একাই দুধর্ষ জঙ্গিহামলা পরিচালনা করেন।এবং মূর্তিগুলোকে লাঞ্ছিত অবস্থায় ফেলে আসেন যা মূর্তিপূজকদের অপদস্থ করে। এটাই মিল্লাতে ইব্রাহীম এর আদর্শ। আর মহান রব ইসমাঈল(আ) এর সন্তানদেরকে ঐ মহান উদ্দেশ্য পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রেরন করেছেন, যেটা থেকে আজ উম্মাহর অধিকাংশই অনেক অনেক দূরে।
মূসা কালিমুল্লাহ (আ) বনী ইসরাইলদের নিয়ে জঙ্গিতৎপরতা চালিয়ে গিয়েছেন কুফফারদের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে তারা জঙ্গিবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তাদের কথাও কুরআনে বর্ননা দিয়েছেন,যেটা আমাদেরকে জিহাদে আল্লাহর আদেশ পালনে অটলতার শিক্ষা দেয়।
এভাবে ঈসা(আ),দাঊদ(আ),সুলাইমান(আ),তালূত(আ) প্রত্যেকেই কাফেরদের বিরুদ্ধে উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিতৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন।যার বর্ননা কুরআনেও উল্লেখ এসেছে যেন আমরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারি।অথচ সেগুলো এখন মজার কিচ্ছাকাহিনীতে রূপান্তর করা হয়েছে।আমরাই নবীগনের সুন্নাহ থেকে ফিরে এসেছি।
পুরো কুরআনের সূরাগুলোতে শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীনের শ্রেষ্ঠত্ব ও একে বিজয় করবার নির্দেশের ছত্রছায়ায় অন্যান্য ইসলামী আদর্শ বজায়ের নির্দেশ, আদেশ ও উপদেশ ও পূর্ববতী কওম ও নবীগনের ঘটনা এসেছে। তবে মুখ্য লক্ষ্য মহান প্রতিপালকের দ্বীনের শ্রেষ্ঠত্বকে বাস্তবায়ন এর নির্দেশ এসেছে,যে লক্ষ্যে দুনিয়াতে তিনি মানুষকে তার প্রতিনিধিরূপে পাঠিয়েছিলেন।এজন্য সাধারণ বর্ননার মাঝে মাঝেই হঠাৎ করেই জিহাদের নির্দেশ,অথচ আমরা সেসব নিয়ে চিন্তা করিনা। এমনকি আল্লাহ বনী ইসরাইলের অবাধ্যতার ঘটনা ও পরিণাম উল্লেখ করেও জিহাদে উদ্দীপিত করেছেন।আমরা আজমী হওয়ায় আরবি না বোঝায় কুরআনের নির্দেশ অন্তঃকরণে পৌছায় না,আর অনুবাদের জানবার প্রতিও আগ্রহ কম, এজন্য উপমহাদেশীয় অধিকাংশ মুসলিমই কুরআনের অনুবাদে কি আছে বা আল্লাহ কি নির্দেশ দিয়েছেন সে ব্যাপারে ইচ্ছাকৃত গাফেল হয়ে আছে। আরবি দেখে তিলাওয়াত আর বিদাতী সুবিধাবাদী পেটপূজারী আলেমদের ওয়াজের এর বাইরে আমাদের অঞ্চলের মানুষ বেশি দূর যায় না। মোডারেটগনের অধিকাংশই আয়াত বাছাই করে অনুবাদটা কোথাও দেখে। ধারাবাহিকভাবে যদি অর্থটা পড়েও তবে সেটা তাদের মতে 'রাসূল (স) এর জীবদ্দশায় শুধু প্রযোজ্য ছিল'! কেউ বলে এযুগে কোন কিত্বাল নেই,কেউ বানিয়ে নিয়েছে নফসের জিহাদ,কেউ বা বানিয়েছে গণতান্ত্রিক জিহাদ। বস্তুত আল্লাহই সত্য বলেছেন-
"তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।২:২১৬)"
আমরা যদি তলোয়ার হাতে নেওয়াটা পাপের মনে করি, তবে সুনিশ্চিতভাবে আমরা নবী(স) এর সুন্নাহ এর উপরে নেই।তিনি কি বলেননি যে "আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য তরবারি দিয়ে প্রেরন করা হয়েছে"!!
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু দাওয়াত দেনেওয়ালা নবী নন, তিনি ছিলেন"নবীউস সাইফ তথা তরবারি ওয়ালা নবী।"
[দলিল- আস শিফা, পৃষ্ঠা ১৪৮;
ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৭৪, আহমদ ২/১৪৭]
তিনি শুধু তরবারিওয়ালা নবীই নন,তিনি নিজেকে জঙ্গসমূহের(যুদ্ধ) নবীও বলেছেন।
তিনি বলেছিলেন আনা"নবীউল মালাহিম তথা যুদ্ধসমূহের নবী।"
[দলিল- শরহুশ সুন্নাহ, ১৩/২১৩;
শামায়েলে তিরমিযী, পৃষ্ঠা ২৫]
বর্তমানে ইসলামি আদর্শের উপরে থাকা কথিত সন্ত্রাসীদের তথা মুজাহিদকেই বাংলাভাষায় 'জঙ্গি' ট্যাগ দিয়ে সর্বত্র প্রচার প্রচারনা চলছে। ইংরেজিতে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড 'টেররিস্ট' হিসেবে পরিচিত। এটা একটি দল বা মতবাদ কে সমাজ থেকে আইসোলেট করবার বুদ্ধিদীপ্ত প্রসেস।শাসকগোষ্ঠীরা সাধারনত জনগণের উপর বিভিন্নভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করে তাদের ইচ্ছামত পরিচালনার জন্য,এর সপক্ষে অসংখ্য থিঙ্ক ট্যাংক তাদের জন্য কাজ করে। এটিও সেরূপ প্রোপাগান্ডার অন্তর্গত বিষয়।
কিছু দরবারী নামধারী ইরজাগ্রস্ত ফন্দিবাজ ব্যাধিগ্রস্ত আলেমগন সাফল্যের সাথে ইসলামে যুদ্ধটাকে সন্ত্রাসবাদ তথা জঙ্গিবাদ ও জিহাদ শব্দগুলোকে ভাবগত ও আক্ষরিক অর্থেই আলাদা করে দিয়েছে, যার দরুন এই কাদিয়ানীপন্থী নামে মাত্র মহানবী (স) এর কথিত অনুসারী আলেমগন জিহাদের নতুন ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে হক্ক ও বাতিলের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকরে জনগনকে বানাচ্ছে জাহেলে মোরাক্কাব!
যদিও ইসলামপন্থীদের নিন্দার্থে 'জঙ্গি' খেতাব দেওয়া হয়েছে,এটা নিয়ে হীনমন্যতার কিছু নেই। বরং এটা সম্মান সূচক শব্দও যেটা ব্যক্তিবিশেষের স্বীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও তার ব্যক্তিক গ্রহণযোগ্যতার উপর নির্ভর করে।জঙ্গিশব্দটিই সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ূবী রহিমাহুল্লাহর শিক্ষক সুলতান 'নুরুদ্দীন জঙ্গি' রহিমাহুল্লাহর নামেরই অংশ। যাকে মহান প্রতিপালক পছন্দ করেছিলেন নবী (স) এর দেহ মোবারককে কুফফারদের দ্বারা চুরি থেকে হেফাজতের জন্য। তিনিই সেই জঙ্গি যাকে আল্লাহ এজন্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন অতঃপর তিনি নবী (স) রওজামোবারক এর চারপাশে খনন করে সিসা গালা সুদৃঢ় বেষ্টনী নির্মান করে দেন। অতঃপর দুষ্কৃতকারীদের পাকড়াও করেন। অতএব নন্দিত জাতি নিন্দুক কর্তৃক নিন্দিত হলেও সেটা পরওয়া করা একেবারেই উচিৎ নয়।
আল্লাহ বলেছেন___ "হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী"[৫:৫৪]
তাদের দ্বারা প্রদত্ত এ সন্ত্রাসী লেবেলটির ব্যবহার মূলত আপেক্ষিক। কোন দেশের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী, আবার স্বাধীনতাকামীদের কাছে 'ভ্যালিয়েন্ট ফ্রিডম ফাইটার'।বীর যোদ্ধা। যারা এদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে তারা এখন বীরশ্রেষ্ঠ বীর উত্তম খেতাব পায়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানী সরকার তাদের সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী অপশক্তি হিসেবেই দেখত। মুজিব নিজেও এক ধরনের সশস্ত্র গুপ্ত রেবেল ফোর্সের ফান্ডিং এ যুক্ত ছিল। আগরতলা মামলা খেয়েছিল কেন! কিন্তু এখন ওটা হিরোইক চেষ্টা হিসেবেই দেখানো হয়। পাকিস্তানি বাহিনীদের কাছে ছিল দেশদ্রোহী ষঢ়যন্ত্রকারী,দেশ ও জাতির শত্রু। বর্তমানের মত মিডিয়া ব্যবস্থা এতটা শক্তিশালী ছিল না তাই, পাকিস্তানের স্বাধীনতা বিরোধী প্রচারনা জনমনে তেমন দাগ কাটে নি। এখন তো হলুদ মিডিয়াই বড় সন্ত্রাসীর কাজ করে দেয়। এরূপ ইন্টেলেকচুয়াল মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ দুটি পরস্পরবিরোধী আদর্শ ও চেতনার মাঝে সব ক্ষেত্রেই থাকবে। কিন্তু বর্তমান টেররিস্ট-সন্ত্রাসী খ্যাত জঙ্গি বা মুজাহিদদের ব্যপারটা কাফেরদের কাছে একটু ভারী এবং চিন্তনীয় বিষয়।এজন্যই তারা এখন গ্লোবাল টেররিস্ট। সমস্ত কাফেরশক্তি ইসলামিক টেররিস্টদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে এক হয়ে সকল মিডিয়ায় কুফরের পক্ষাবলম্বনের 'দাওয়াত' চালায়। এবং এখন পর্যন্ত খুবই সফল! রাসূল (স) সত্যই বলেছিলেন - "আল কুফরূ মিল্লাতুন ওয়াহেদা"! এই সংঘাত ১৪০০ বছর ধরেই চলছে। এখন কাফেরদের শেকড় সর্বত্র সর্বক্ষেত্রে গত ১৪০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পোক্ত এজন্য এত জোড়ে শোড়ে জঙ্গিবিরোধি প্রচারনা প্রকাশ্যে সফলতার সাথে চলছে। আর সেসব আমাদের কানে আসছে,টিভিতেও ভাসছে ,পত্রিকাতেও আসছে! এখানে যে আদর্শিক সংঘর্ষ চলছে সেটা সৃষ্টিকর্তারপক্ষাবলম্বী ও শয়তানেরপক্ষাবলম্বীদের মধ্যে অর্থাৎ হিজবুল্লাহ ও হিজবুশ শায়াত্বীন এর মধ্যে।যুগে যুগে সবসময়ই সংখ্যালঘিষ্ঠরা আল্লাহর পক্ষাবলম্বী ছিল। আর অধিকাংশই শয়তানের পক্ষাবলম্বী।
আল্লাহ তা'য়ালা তার পক্ষের স্বল্প দুর্বলদেরকে সবল কুফফারদের উপরে বিজয়ী করেছেন।এটা ভাবনার অবকাশ নেই যে আপনি নিরপেক্ষ। যারা নিরবে কুফরের বিরুদ্ধে চুপ করে আছে ও মেনে নিয়েছে তারাও শয়তানের পক্ষাবলম্বী,যেহেতু তারা অপকর্ম ও অসৎকর্মে বাধা দেয় নি। এ অবস্থান সামূদ গোত্রের ও বনী ইসরাইলের আয়লাবাসীদের নীরব দর্শকদের সাথে মিলিয়ে দেয় যারা আযাবে নিপতিত হয়েছিল, যেটা থেকে শিক্ষার নেওয়ার বিষয় বিদ্যমান। সাদা ও কালোর মধ্যে মাঝামাঝি গ্রে এরিয়া বলে কিছু নেই। হয় আপনি কাফেরদের পক্ষে নতুবা মুজাহিদদের পক্ষে। এ বিষয়টি জর্জ বুশ নিজেও পরিষ্কার করে দিয়েছিল।
সন্ত্রাসী জঙ্গি খেতাব পেয়ে হীনমন্যতায় ভোগবার কিছুই নেই। মহাবিশ্বপ্রতিপালক স্বয়ং আপনাকে কাফেরদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টির আদেশ করেছেন। ওদের সাথে যুদ্ধের জন্য সাধ্যমত সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে বলেছেন।ত্রাস সৃষ্টিকারীরাই সন্ত্রাসী!
আল্লাহ বলেছেন __" আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।"(৮:৬০)
আগেই বলেছিলাম বিষয়টির দৃষ্টিভঙ্গি দিক দিয়ে পক্ষভেদে আপেক্ষিক অবস্থানের, হক্ক ও বাতিলের মধ্যে একজন নিহত কারও কাছে শহীদ, কারো কাছে সন্ত্রাসী ও শত্রু। এর গ্রহণযোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্বের মানদণ্ড গ্রহণযোগ্য একমাত্র সেটাই যেটা মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক নির্দিষ্ট। বস্তুত মহান রব সরল পথ ও পথভ্রষ্টতার মানদণ্ড বাতলে দিয়েছেন। এমতাবস্থায় পুরো পৃথিবীর মানুষ একদিকে হলেও সরলপথে একা হলেও চলতে হবে।
"আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। "(২:১৯৩)
"তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।"(৩:১৪২)