Friday, November 17, 2017

আমাদের অস্তিত্ব ও উদ্দেশ্য


একদিন ভোরে, পূর্বদিগন্তে উদিত শুক্র'গ্রহ'কে দেখছিলাম। ফোনের দুর্বল ক্যামেরা দিয়ে ৪এক্স জুম+ইনফিনিটি ফোকাস মোডে ধারন করলাম।খালি চোখেও স্পষ্ট দেখা যায় 'গ্রহের কম্পন'! "মিটিমিটি তারা" এ দেশীয় কমন শব্দ।
খালি চোখেও আমরা মিটমিট করে জ্বলতেই দেখি। কিন্তু কোপার্নিকান এস্ট্রোনমিতে এই তারকা গুলোরই কিছু তারকা হচ্ছে সলিড শক্ত গ্রহ।আর কিছু হচ্ছে সূর্য্যের ন্যায় বস্তু যা অন্যগ্রহ জগতের সূর্য। তাদের দেখানো টিভিমুভির ছবিতে আমরা গোলাকৃতি সলিড বস্তুকে দেখি।মহাকাশ বিজ্ঞানীগন সেসব সলিড শক্ত ভূমির গোলাকৃতি তারকা(!) গুলোর বিচিত্র আয়তন ব্যাসার্ধও তারা আমাদের শেখান। মঙ্গল,শুক্র,বুধ সব গুলোর বিচিত্র পরিধি ব্যাসার্ধ আমাদেরকে দেখানো হয়। এখানেই ক্ষান্ত নয়, মঙ্গলে প্রানের অস্তিত্ব খুজতেও অভিযান পরিচালনা করছেন। তারা রোবটও পাঠাচ্ছেন মঙ্গলে। আমাদেরকে বলেন যে কোটি বিলিয়ন মিলিয়ন গ্রহ আছে এরকম। সেসবে অবশ্যই কোথাও না কোথাও বুদ্ধিমান প্রানী আছে। ওরা এলিয়েন রূপে যেকোন সময়ে আমাদের 'গ্রহে' হানাও দিতে পারে।এজন্য তারা বিষয়টা বোঝাতে শতশত এলিয়েনেটিক মুভিও দেখাচ্ছে। আমরাও তেমনি পেপারে পৃথিবী সদৃশ গ্রহ আবিষ্কারের খবর পড়ে রোমাঞ্চিত হই।

অথচ বাস্তবতা উল্টো।একদম ভিন্ন। আমরা খালি চোখেই সব গ্রহনক্ষত্রকে মিটিমিটি জ্বলতে দেখি। সেসব গ্রহনক্ষত্র আগুনের মত নন সলিড কম্পনশীল এণ্টীটী।কেউ কি বিশ্বাস করবে আগুনের শিখার মত নন সলিড কিছু বসবাসযোগ্য? আপনি বিশ্বাস করেন মোমবাতির যে প্রজ্বলিত শিখা সলিড ভূমিরূপ বসবাসের উপযোগী কোন স্থান হতে পারে?!

অতএব, কথিত গ্রহ(আসলে সবই নক্ষত্র) বসবাসযোগ্য কিছু নয়।সেসব ঠিক তেমমি যেমনি আমরা খালি চোখে মিটিমিটি জ্বলতে দেখি। হয়ত বিশ্বাস হচ্ছে না। দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=AJJ_z6pwUrE

জ্বী বাস্তবতা একদম বিপরীত যা দ্বারা এত দিন টিভি মুভি দিয়ে ব্রেইনওয়াশিং করা হয়েছে।
আরো শকিং সত্য হচ্ছে পৃথিবীর কোন কার্ভ নেই। এখন পর্যন্ত কোন কোন প্রমান নেই পৃথিবীর গোলক বাকের। ৩ লক্ষ ফুট উপরে গিয়েও কোন কার্ভ দেখা যায় নি। হোরাইজন সব সময় আই লেভেলে। একদম ফ্ল্যাট। অর্থাৎ এজ ফ্ল্যাট এজ প্যানকেইক। কিন্তু খাতা কলমে হিসাব আছে প্রতি মাইলে ৮ বর্গইঞ্চি কার্ভ। টিভি মুভির পৃথিবী চিত্র কম্পিউটার এনিমেশন আর গ্রাফিক্সের কারসাজি। ক্যামেরার ফিস আইলেন্স আর গো প্রো ক্যামেরাও ভুয়া কার্ভ তৈরি করে। ফিস আই লেন্স ব্যবহার করলে পাচ তলা বিল্ডিং এর ছাদে গেলেই ক্যামেরায় পৃথিবী গোলক বৃত্তের ভুয়া কার্ভ দেখাবে। ক্যামেরা ঘোরালে অবশ্য কনকেভ কনভেক্সও হয়ে যাবে। হাহা।

বাস্তবিক আকাশ বিজ্ঞান নিয়ে ভাবলে পুঙ্খানুপুঙ্খ মিলে যায় কুরআন আর হাদিসের সাথে। মোডারেটদের দ্বারা এযুগে যেসব লেখা দেখেন এযুগের এস্ট্রোনমি কুরআনকে মিলিয়ে, সেসব একদমই যুক্তি নির্ভর দূরবর্তী ভুল ব্যাখ্যা।আর মাত্র ৫০০ বছর আগের‍ যেকোন আলেম মুহাদ্দিস মুফাসসিরের লেখা মহাবিশ্বের বর্ননা এযুগের উলটো। মনে রাখতে হবে সেযুগের আলেমদের চিন্তা এক এক করে সর্বশেষে নবী(সা) পর্যন্ত পৌছেছে। তখনকার জামানার এস্ট্রোনমির ধারনায় খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। গ্রীক এস্ট্রনমির প্রভাব পড়েছিল বটে। তবে সেটার ধারনা কুরআন সুন্নাহ থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না। শুধু মাত্র ৫০০ বছর আগেই বিরাটকার পরিবর্তন আসে।একদম পুরো ধারনা পালটে দেয়।আমি লক্ষ্য করেছি, হয়ত এরূপ পরিবর্তন ধর্মকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে বের করে আনবার জন্য হয়েছিল।তখনই চলছিল রেস্টোরেশন এজ। রেনেসাঁ বা রেস্টোরেশনের মূল প্রতিপাদ্য থিমই ছিল ধর্মভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে ধর্মবিরোধী সমাজের রিবার্থ ঘটানো। ইংরেজি সাহিত্যের সাথে যুক্ত যারা তারা বিষয়টা বুঝবেন।পৃথিবী গোল বানানো মানে আসমানি কিতাবগুলোর কাউন্টারে চলে যাওয়া। কারন শুধু কুরআন নাহ, তাওরাত, আর খ্রিষ্টানদের দেওয়া গ্রন্থেও একই ধরনের বর্ননা।
এরই ধারাবাহিকতায় এখন গ্লোবিউলার আর্থের থিওরি সুপ্রতিষ্ঠা লাভের পরে বিজ্ঞানপন্থি ধর্মহীন(নাস্তিক)রা কুরআনিক ভার্স নিয়ে অনেক হাসি তামাশা করছে।

চমৎকার বিষয় হচ্ছে কতটা নিম্নমানের আর সস্তা হলে একজন মুসলিম দাবীকারি ওই কাফেরদের তত্ত্বকে গ্রহন করে বুকে আঁকড়ে ধরে, আর সেই তত্ত্বকে কেন্দ্র করে রহমানের কথার উল্টো ব্যাখ্যা করে!! ওরা জিল্লতীকেই মেনে নিয়েছে, এখন কাফেরদের বাধানো ঘাটে, ওদের পানি খেয়েই, পানির গুণকীর্তন করে।আর বলে রহমান ঠিক এই পানির পান করবার কথাই বলেছেন!! সুতরাং আশা করি বুঝতে পারছেন, তারা কতটা জ্ঞানী। তাদের সাহসের তারিফ করতে হয় যারা এ যুগে এসে একদম কাফেরদের তত্ত্ববিরোধী কথা বলেন। মানে সৌদিআরবের অধিকাংশ আলেমদের কথা বলছি। আমরা কতই না এস্মার্ট মোজলেম, তাদের কথা নিয়েও হাসিতামাশা করি!

গ্রহ বলে কিছু নেই সবই তারকা।কিছু চলমান কিছু স্থির, আর তারকাগুলো সূর্যের ন্যায় কিছু নয়। সূর্য চাঁদ নক্ষত্রের প্রকার থেকে একদম ভিন্ন। পৃথিবী সমতল আর আবদ্ধ(গাশিয়াহ ২০,আর রহমান ৩৩)।আকাশটা শুন্য নয় বরং সলিড। আকাশটা পানির বিরাট আধার। এর উপরে সাত স্তরের আকাশ।

আমাদের চেনা পৃথিবী একটি সমতল জমিন। এর নিচে স্তরে স্তরে মোট সাতটি।আমরা মানুষরা মোট ১৪ স্তরের একদম মাঝে। বৃষ্টির পানিটা একদম ফ্রেশ ও intact। ধারনা করি নিচের জমিনের পানি গুলো আমাদের ইউজড,তবে পিউরিফাইড।
পৃথিবীর প্রান্তের ব্যপারে কেউ এখনো কিছু জানেনা।অনেক হাইপোথেসিস আছে এ নিয়ে।যাহোক, সমুদয় বিষয় একটা বিষয়কে স্পষ্ট করে, যে আপনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি অনেক মানুষের মধ্যে। আল্লাহ এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা। এই কসমোজনিতে আল্লাহকে অস্বীকারকারীরা চরম স্টুপিড অথবা পাগল।আর আল্লাহ আমাকে-আপনাকে বিশেষ উদ্দেশ্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। অকারনে বা উদ্দেশ্য বিনা নয়।আপনি ইউজলেস নন। কিন্তু নাস্তিকতার বিজ্ঞান আপনাকে নিজেকে তুচ্ছ, উদ্দেশ্যহীন ইউজলেস ক্রিয়েচার ভাবতে শেখাবে। উপরে ছবিগুলো দেখুন। ওরা আপনাকে শেখাবে ইউ আর ইনরমাসলি ইন্সিগনিফিক্যাণ্ট! জ্বী, স্রষ্টাহীন মহাবিশ্বের কোটি কোটি গ্রহের একটির কোন প্রান্তে আগাছার মত আপনি একা একাই গজিয়ে উঠেছেন। কোন দাম নেই আপনার! তাই সফল সে-ই, যে বেচে থাকা অবস্থায় প্রতিযোগিতায় সম্পত্তি আর খ্যাতি কামিয়ে যত বেশি উপভোগ করতে পেরেছে। সে-ই সিগনিফিক্যান্ট। অতএব, ওরা শেখাচ্ছে সাফল্যের মানদণ্ড ভোগেই!
তাই বুঝতে পারছেন এই সমাজ সত্য থেকে কত দূরে।

অথচ মহান রব এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। অবশ্যই ক্রিড়াচ্ছলে নয়। আপনি আমিও একদমই উদ্দেশ্যহীন নই। আমাদের উদ্দেশ্যটাকে শুধু মাত্র ব্রেইনওয়াশিং ব্যবহার করে ঘুরিয়ে ম্যাটেরিয়ালিজমের দিকে নিতে সক্ষম হয়েছে।মহান সৃষ্টিকর্তা আপনাকে দুনিয়াতে তার প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন(২:৩০)। তিনি আপনাকে প্রথম জমিনে রেখেছেন সম্মান দিয়ে। সম্মান দিয়েছেন আশরাফুল মাখলুকাতের। কাজ হচ্ছে ইবাদত করা। তার প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নে আমরন কাজ করা যদি তা প্রতিষ্ঠিত না থাকে। এ উদ্দেশ্য দিয়েই প্রায় দেড় লাখ নবী,রাসূল পাঠিয়েছেন(৯:৩৩)। প্রতিনিধির আরবি হচ্ছে খলিফা। আর প্রতিনিধিত্ব=খিলাফত। মহান রব সেটা প্রতিষ্ঠিত করনে প্র‍য়োজনে যুদ্ধ করতে বলেছেন (২:১৯৩),এটা ইউনিভারসাল ওয়ার,যতক্ষন না দ্বীন(আইডিওলজি/মতবাদ/আদর্শ/ধর্ম) এক আল্লাহর প্রতিষ্ঠিত হয়।আর যারা একাজে মৃত্যু বরন করে তারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূরন করল(৩৩:২৩)। ওরাই চীরসাফল্য অর্জন করল(৯:১১১)। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি।

এসমাজ ব্যবস্থা এমন করেই ডিজাইনড যে আজ মুসলিম তাওহীদের পূর্ন স্বীকৃতি দিতে জানেনা।কালেমার অর্থটাও পূর্নভাবে জানেনা। শুনুন- https://ia600807.us.archive.org/17/items/BanglaIslamicBestLecturesbooks/LaIlahaIllallah-ItsMeaning_ExplanationAndImplementation.Part-01.mp3

আজ আল্লাহর পছন্দকৃত শেষ জাতি মুসলিমরা নিজেকে চেনেনা, সৃষ্টিজগতকে চেনে না, তার উদ্দেশ্যকেও জানে না। যার জন্য হয়ত দ্বীন পালন করতে শুরু করলেও তার স্থায়িত্ব অল্প দিনের।কিছুদিন পরে আবারো জাহেলিয়াতের জীবনে ফিরে যায়। হে প্রিয় ভাই, দুনিয়ার ফায়দা সীমিত।আখিরাত অসীম। তাই কুফফারদের বাধানো স্রোতে নিজেকে এলিয়ে দেবেন না। যদি সে স্রোতের বিপরীতে চলার মধ্যে সত্য থাকে, তবে সেটাই উত্তম।দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন। আসুন মহাসাফল্যের পথে। যে পথ সরল পথ। স্বয়ং আল্লাহই বলে দিয়েছেন যে পথে চলার মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়।

দুনিয়াটা শুধুমাত্র পরীক্ষা ক্ষেত্র। এই পরীক্ষার ভূমিতে পিছিয়ে থাকবেন নাহ।
"আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জেহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি।"
_________________________সূরা মুহম্মদ-৩১
https://video-sjc2-1.xx.fbcdn.net/v/t42.3356-2/18911211_790955977741067_2690605502647238656_n.mp4/video-1496444016.mp4?vabr=60204&oh=f405be9d81999d61e9bf05d274d71d76&oe=5934D1DB&dl=1

লেখকঃ Al Imran

1 Comments:

  1. ভাই বলচিলাম যে biggan naki apobiggan a pdf a ki sab kichu ace apni ja bigato article likhecen , geosentric cosmplogy , ai sob please bolben ?

    ReplyDelete