Monday, December 10, 2018

সুফিবাদ এবং কোয়ান্টাম স্পিরিচুয়ালিটি

ওয়ান আই এজেন্ডার লক্ষ্য বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চেষ্টা হচ্ছে সকল ধর্ম এবং আদর্শগত দর্শনসমূহকে একিভূত করা। এজন্য তাদের প্র‍য়োজন ছিল একটি কমনগ্রাউন্ড প্রতিষ্ঠা। এজন্য তারা পূর্বে হিউম্যানিজম বা মানবধর্মকে এথিস্টিক প্লটে প্রচার করত। একই ভাবে হিউম্যানিজম এর অপর পিঠে স্পিরিচুয়ালিজম/স্পিরিটিজমের প্রচার করে থেইস্টিক প্লটে।

এদের উভয়ের বক্তব্য একই। ওরা বলে 'সবার উপর মানব সত্য তাহার উপর নাই'!
এ কথা হিউম্যানিজমের ম্যাটেরিয়ালিস্টিক ডক্ট্রিনের সাচে বসে গেছে। আবার একইভাবে স্পিরিচুয়াল মিনিংয়েও দেহতাত্ত্বিক দর্শনের দ্বারা 'মানুষ'কেই স্রষ্টার আসনে বসিয়ে একই দর্শন প্রচার করছে।ওরাও নিজেদেরকে হিউম্যানিস্ট বলে প্রচার করছে।

রিলিজিয়াস সেক্টরে স্পিরিচুয়ালিস্টিক অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউ প্রতিষ্ঠা করতে ধর্মগুলো থেকে অর্থোডক্স ডগমাগুলো মুছে ফেলতে হবে। এজন্য সব ধর্মের প্রাচীন হেরেটিক মিস্টিক্যাল স্থান গুলোকে প্রমোট করে ধর্মগুলোর অর্থোডক্স রূপটাকে পূর্নভাবে উৎখাত করার কাজ চলছে। আর সে দায়িত্বটা নিয়েছে কাব্বালিস্ট,নস্টিক,সুফিস্টরা। যখন ধর্মগুলো পুরোপুরি মিস্টিক্যাল ডক্ট্রিন দিয়ে করাপ্ট হবে, তখন কোন এক গ্লোবাল রিলিজিয়াস মার্জার এসে সব ধর্মগুলোকে একসুতোয় গেঁথে ফেলবে।

একত্ববাদী(তাওহীদের) দ্বীন ইসলামে আউটসাইডার ভাইরাস সর্বেশ্বরবাদী(মনিজম-ওয়াহদাতুল উজুদ/ইত্তেহাদ) আকিদার সুফিবাদ(মিস্টিক্যাল স্কুল) এখন সরকারি বেসরকারি সর্বত্রই পরম পূজনীয়। ইলেক্ট্রনিক বলুন আর প্রিন্ট মিডিয়া বলুন সর্বত্রই এর খুব ফোকাস করা হচ্ছে। আর একত্ববাদ তথা তাওহীদকে আইসোলেটে করে দিতে পরোক্ষভাবে বলা হচ্ছে একত্ববাদী চেতনা মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক চেতনা বহন করে। কারন তাওহীদের প্রথম শর্তই(রোকন) কুফর বিত তাগুত। অর্থাৎ তাগুতের সাথে কুফরি। আর তাগুতকে কুফর করলে তারা আপনাকে জঙ্গী বলবেই। সন্দেহহীন।।

সুফি মিষ্টিসিজম এজন্যই কাফেরদের কাছে ভাল, কারন কোন মানুষ যখন সর্বেশ্বরবাদী এই আকিদা অন্তরে লালন করে তখন যেকোন নোংরা অথবা অনৈতিক কাজকেও তেমনকিছু মনে করবে না। কারন, তাদের চিন্তা অনুযায়ী সবই সৃষ্টিকর্তার অংশ অতএব, যে যাই করুক না কেন তাতে কোন সমস্যা নেই। স্রষ্টাই করছেন।সবকিছুই ডিভাইন। এদের মধ্যে একারনে পবিত্রতা-অপবিত্রতার কোন ব্যারিয়ার নেই।  মনে নেই? যখন পীর সাহেব পতিতালয়ে সুন্দরী পতিতার সাথে সাক্ষাতের ইচ্ছা পোষন করেন তখন ঐ নারী ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের জন্য অসম্মত হয়, তখন পীরছাহেব ঐ নারীর লজ্জা ভাঙ্গতে তার পতিতাবৃত্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন 'করনে ওয়ালা কন আর করানে ওয়ালা কন....' এজন্যই সকল কুফরি কাজ, পাপাচারীতা ও কুফরি আকিদার ব্যপারে এরা মৌন অবস্থানে থাকে, এর কোন বিরোধিতা করে না।সকল ধর্মের বিশ্বাসের ব্যপারে সহনশীল থাকে।  আর এটাই তাগুত শাসকগোষ্ঠী চায়। ওয়াহদাতুল উজুদ বা এক অস্তিত্বের বিশ্বাসে ধর্মগুলোর সাম্প্রদায়িকতা/অসহিষ্ণুতা নিতান্তই অবান্তর। এজন্য ওরাও কঠোর জঙ্গী/মৌলবাদবিরোধী। এরা শরী'আকে ঘৃনা করে নিয়মনীতি বিধিনিষেধের জন্য। এজন্য শয়তানি চিন্তা ও আকিদাকে মারেফতের জ্ঞান বলে চালাচ্ছে।

একচক্ষুবিশিষ্ট ঐ নেতার(দাজ্জাল) আগমনের অপেক্ষমানদের আশা, একদিন একত্ববাদীদের একঘরে করে দেওয়া হবে।তার পরে তাদের এ্যনিহিলেট করে ওমঃশান্তি প্রতিষ্ঠায় একোনমিক্যাল মুভমেন্ট এর আদলে ইউনাইটেড রিলিজিয়ন প্রতিষ্ঠা করবে ইউনাইটেড ন্যাশনের ছত্রছায়ায়। ওদের প্ল্যানমাফিক এখন পর্যন্ত সাফল্য দেখা যাচ্ছে। তাওহীদপন্থীদের জঙ্গী নাম দিয়ে একঘরে করা হয়েছে। এখন তাদের কাউকে হত্যা করলে অন্য কথিত মুসলিমরাও 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে!

আপনারা কি টেলিভিশন এর সব চ্যানেলে বাউলদের রিভাইভ্যাল দেখছেন না? এদের প্রোমোট করার কারন স্পিরিচুয়াল-এসোটেরিক শয়তানি দর্শন। ওরা নিজেদেরকে মানবধর্মাবলম্বী দাবি করে। শুধু তাই না একই দাবী করে প্রজ্ঞাবান বেরেলভীস্টরাও। দেওবন্দের এক বিরাট মুজাদ্দিদ খ্যাত জনৈক ছাহেবের গ্রান্ডসনও এ দাবি করতে ছাড়েননি।

  মেডিটেশন, রেইকি, বাই নিউর‍্যাল বিট, তৃতীয় নয়ন জাগরন ইত্যাদি এখন এনলাইটমেন্ট এর রাস্তা! এগুলো নাকি সাইকিক এ্যবিলিটি তৈরি করে! বিজ্ঞাপনগুলোও এসবে উৎসাহ দিচ্ছে। শিক্ষিত কর্পোরেট ব্রো-সিসরা এখন এটাকে ট্রেন্ড/ফ্যাশন আর আধুনিকতা হিসেবে দেখছে। ইয়োগা কোর্স করছে, এগুলো তাদের সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেসমুক্ত করছে।সেদিন মোবাইল অপারেটর গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপনেও দেখলাম ইয়োগাকে প্রমোট করছে।  কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এর কথা কি আর বলব! মহাজাতক সাহেব প্রকাশ্যে ফ্রিকিক দিয়েই যাচ্ছেন। সারিকার মত অভিনেত্রীরাও সেখানে গিয়ে বলছে কোয়ান্টাম ম্যাথড আমার আস্তানা! একটি রেডিও চ্যানেল আগে চেপে চেপে প্রোগ্রামে এই গ্লোবাল মতাদর্শ নিয়ে প্রচার করত। এখন শুনলাম ৫০০ টাকা টিকিটে রেইকি ট্রেনিং ক্যাম্পিং শুরু করেছে।

জাতিসংঘ এত দিন চুপিচুপি গ্লোবাল স্পিরিচুয়াল এয়োয়াকেনিংয়ের ফান্ডিং করে যাচ্ছিল। এবার শুধুই প্রতীক্ষা... কবে যেন ইউনাইটেড ন্যাশনের ন্যায় ইউনাইটেড রিলিজিয়নের জন্য বিশ্ববাসীকে আহব্বান করা হয়। হয়ত একচোখ ওয়ালা গুরু বের হবার পরে নিজেকে মা'বুদ দাবীর পরে। অবশ্য মিলিয়ন-বিলিয়ন লোক  এখনই তাকে প্রকাশ্যে পূজো দিচ্ছে। ফাইনাল অবতার আসছে। বেঞ্জামিন ক্রিম, এলিস বেইলি, হেলেনা ব্লাভাস্তস্কিদের দেখেন নি, ওয়ার্ল্ড টিচারের আগমনের প্রতীক্ষার বিষয়টি বলতে?

ইল্যুমিনাতি আপনার আমার পাশেই

Illuminati প্রধান লক্ষ্য 'নোভাস অর্দো সেকলোরাম'(ডলার বিলের উপরে আই অব প্রভিডেন্স বা ওয়ান আই এর নিচে দেখুন) অর্থাৎ নতুন ধর্মনিরপেক্ষ(সেকুলার) আইন(নতুন মেসিয়্যানিক যুগের আইনও বলা হয়) এর ছায়াতলে ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট গঠন। ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট বলতে বোঝায় সারা পৃথিবীর সকল দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙ্গে সীমানা একাকার করে সারা বিশ্বকে একটি সরকার ব্যবস্থার কর্তৃত্বে আসা। এ মহান লক্ষ্যটাকেই নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বলে। এ মহাপরিপল্পনার কথা মার্কিনপ্রেসিডেন্টদের মুখেই একাধিকবার বেশ গর্বের সাথে এসেছে। এর বাস্তব ভিডিও প্রমানও রয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ গঠন এ উদ্দেশ্যেই হয়েছিল বিল্ডারবার্গ ফ্যামিলি কর্তৃক। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় আঞ্চলিক সরকার ব্যবস্থা,স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থা, চাকুরী, ব্যবসায়-বানিজ্য,ধর্মসহ অন্যান্য প্রতিটা ক্ষেত্রকে এক চোখের ছায়াতলে আনবার কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে বহু আগে থেকেই। প্রায় প্রত্যেক সেক্টর 'নতুন ধর্মনিরপেক্ষ নীতি'র নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছে। এই লক্ষ্যে হাজারও প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে কাজ করছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘকে প্রি নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বলা যেতে পারে। আর জাতি সংঘের অঙ্গ সংগঠন গুলো তো আছেই। খুব জোড় গতিতে আগুয়ান একটি অর্গানাইজেশন এর নাম 'এজেন্ডা ২১' সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল(goal)।

 আমাদের দেশে আঞ্চলিক নাম ভিশন ২১। এজেন্ডা একুশের একুশ শতকের চেতনা সরকারি খাত সমূহে ডিসিশনাল ইন্টারফেয়ার করবার ক্ষমতা রাখে।এর কারন সকল পলিটিক্যাল ম্যানিপুলেশন এদের থেকেই ফিল্টার্ড হয়ে আসে। অর্থনীতি, খাদ্য, চিকিৎসা,জনসংখ্যা খাতে এজেন্ডা ২১ এর স্পেশাল কন্সেন্ট্রেশন। হাইব্রিড জেনেটিক মডিফাইড বীজের সরবরাহ,টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা বা ফ্যামিলি প্ল্যানিং,ফ্লোরাইডেশন,এনজিও সহ জানা অজানা অনেক খাত সর্বত্র এজেন্ডা ২১ এর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ভিশন ২১ বা এজেন্ডা ২১ এর মৌলিক লক্ষ্য হচ্ছে sustainable goal. সেই গোল হচ্ছে জনসংখ্যা ৯০% এর উপরে ইলিমিনেট করে একটি স্বপ্নরাজ্য বা ইউটোপিয়া প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করা। যেটাকে ভেনাস প্রজেক্ট বলে। ভেনাস প্রজেক্টের জন্য কর্মরত আছে zeitgeist movement। রিসেন্টলি তারা আত্মপ্রকাশ করেছে। এজেন্ডা ২১ সংগঠনটি ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ একটি হলুদ বইতে প্রস্তাবনা রিলিজ করার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করায়। এজেন্ডা একুশের সাথে সম্পৃক্ত CNN এর মালিক টেড টার্নারকে একবার সাক্ষাতকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন ৯০% এর বেশি গ্লোবাল পপুলেশন ইলিমিনেট(বাদ দেওয়া) করার চিন্তা করা হয়, তাতে তিনি রেগে উত্তর দেন আমাদের(পৃথিবীর) জনসংখ্যা অতিরিক্ত।

তাদের স্বপ্ন রাজ্য এরূপ যে তা বিরাট এলাকাজুড়ে ১১ টি ডিস্ট্রিক্ট এ বিভক্ত,সে ল্যন্ড অত্যন্ত সিকিউরড বেষ্টনীতে ঘেরা। এর ভেতর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে স্বপ্নময় জগৎ যেখানে প্রাকৃতিক রিসোর্সের কৃত্রিম ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রযুক্তিভিত্তিক রাজ্যেকে বোঝাতে জাইকাইস্ট মুভমেন্ট টেক্নোক্রেসি শব্দ ব্যবহার করত। আর অবিনশ্বর জীবনের কামনায় চীর অমরত্ব দিতে কাজ করছে অনেক গুলো ট্রান্সহিউম্যানিস্টিক অর্গানাইজেশন। ট্রান্সহিউম্যানিজম হচ্ছে হিউম্যান এবং টেক্নোলজির কম্বিনেশন ঘটিয়ে শারীরিক সীমাবদ্ধতা দূরকরনের প্র‍য়াস। ওদের লক্ষ্য সিঙ্গুলারিটিতে পৌছানো। এখন পর্যন্ত ছোট খাট অর্গানে ম্যান-মেশিন কম্বাইন করার দাবি পাওয়া গেছে। নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারে বিশ্বশাসন ব্যাবস্থার কন্সটিটিউশন বা সংবিধান হচ্ছে প্লেটোর আদর্শ পরিবার দর্শন এবং কমিউনিস্ট সোশ্যালিজম এর কম্বাইন্ড সংবিধান। দুটি শ্রেনী থাকবে। মানুষের মধ্যে দু শ্রেনী থাকবে। এর একটি এলিটদের যারা শুধু কমান্ড এবং ভোগ করবে। আরেকটা শ্রেনী শ্রমিক-পরীক্ষাগারের গিনিপিগ ইত্যাদি অবস্থায় থাকবে।তো এই ধর্ম নিরপেক্ষ আইন ব্যবস্থায় প্রধান ও শীর্ষে থাকবে একজন মহামান্য ওয়ার্ল্ড লিডার। তিনি জিউইস মিসায়াহ, মুসলিমরা দাজ্জাল বলে, এন্টি ক্রাইস্ট বলে খ্রিষ্টানরা, হিন্দুদের কল্কিগুরু, বৈষ্ণব ধর্মের ইস্কনের(ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস) লর্ড কৃষ্ণ, বৌদ্ধদের মৈত্রেয় বুদ্ধ,তিব্বতীয় বৌদ্ধদের রুদ্রচক্রী,থিওসফিস্ট/মিস্টিক্স/স্পিরিচুয়ালিস্টদের ওয়ার্ল্ড টিচার বা এসেন্ডেড মাস্টার। দ্য আই অব প্রভিডেন্স বা ডলারের পিরামিডের উপর এক চক্ষু যার উপর লেখা 'ইন গড উই ট্রাস্ট' সে গডের একচোখ দ্বারা দাজ্জালকে সিম্বলিক্যাললি সিগনিফাই করা হয়। পিরামিড ক্ষমতার হায়ারার্কির তাৎপর্য বহন করে। ক্ষমতার সবচেয়ে নীচে আছে সরকার ও তার মাঠপর্যায়ের কর্মী সমর্থক এবং নানান এঞ্জিও কর্মীরা যাদের সংখ্যা অনেক। এজন্য ক্ষমতার চেইনে সবচেয়ে নীচে এবং বড় সংখ্যা বা পোক্ত শিকড় বোঝাতে পিরামিড এর নিচটা সবচেয়ে মোটা। যত উপরে তত পিরামিড সরু হয়, মানে ক্ষমতার চেইন অল্প কিছু মানুষের মধ্যে কেন্দ্রিভূত এবং সবার উপরে একচোখ দ্বারা দাজ্জালকে সর্বময় ক্ষমতার শীর্ষে বোঝানো হয়। ব্যাংক ও অর্থনীতি ব্যবস্থা এই অল সিইং আই দ্বারা যে গডকে বোঝায় তার উপর বিশ্বাস করে অর্থাৎ রব হিসেবে স্বীকার করে, তাই ডলার বিলে এমনটা দেখছেন।

সারাপৃথিবীর সকল দেশের সরকার এই একচোখের প্রভূত্ব মেনে নিয়েছে। কিছু দেশ উপরে উপরে ভাল সেজে ওদের গোলামী করেও উপরে উপরে ভাল সাজবার জন্য নাটক বিভিন্ন নাটক করে। মূলত জাতিসংঘের সকল সদস্যই দাজ্জালের প্রভুত্ব নিয়ে নিয়েছে। আর অন্তিম মুহূর্তে ইল্যুমিনাতির এজেন্ডা ২১ এর প্রিফার্ড রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতার চেয়ারে বসানো হয়েছে কন্ডিশনিং এর জন্য। যারা যতই ধর্মনিরপেক্ষ(secularist) ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে তারা ততই Novus ordo seculorum প্রতিষ্ঠায় বেশি কার্যকর। এজন্য দেশে দেশে পলিটিকাল ফিল্ডে সেকুলারিস্ট পার্টির জয়জয়কার। আমাদের দেশে কারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বলে?

দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশে ইল্যুমিনাতির মিশন বাস্তবায়নে প্রকাশ্যে কাজ করে যাচ্ছে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এজন্য আমরা সে মহামিশন বাস্তবায়নে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার মুখে ভিশন টুয়েন্টি ওয়ানেরও(Agenda 21) কথা শুনি।

ধর্মবিশ্বাস দাজ্জালের চেতনা বাস্তবায়নে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আর এর মধ্যে প্রধান অন্তরায় ইসলাম। অন্য ধর্মগুলোকে কোন না কোন ভাবে দাজ্জালের দিকে ডাইভার্ট করা গেলেও ইসলাম এ ব্যপারে ঘাড়ত্যাড়া। এ সমস্যা সমাধানে ইসলামের মধ্যে অনেক আগে থেকেই ডিভাইড এন্ড রূল ট্র‍্যাটেজি পালন করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। সেই সাথে র‍্যান্ড কর্পোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত ইসলামিক মডারেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেটা একটা ডিজবিলিভার কম্প্রোমাইজড ইজলাম। ইয়ে মানে মোডারেট মোজলেম। তারা তাগুত বায়াস্ট সহীহ আকিদা প্রচারের দ্বারা মোডারেট বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে। এছাড়াও সুফিপন্থী(মিস্টিক্স/মিস্টিসিজম) মতাদর্শগুলোও সরকার ও তাগুত বান্ধব করা হয়েছে। মোডারেট স্কলার মোজাফফর বিন মুহসীন বলেছিলেন দেশরত্ন মাইজভাণ্ডারী পীরের মুরিদ। মোডারেটরা সুফিদের বিরুদ্ধে লেগে থেকে ডিভাইড এন্ড রুল স্ট্র‍্যাটেজির বাস্তবতা দেখিয়ে দিয়েছে। আর সহিহ কম্প্রোমাইজড মোজলেম এবং সুফি mysticism এর সাথে থাকা সকল বিদাতিরা একযোগে কুফফারদের সাথে গলা মিলিয়ে অর্থোডক্স ইসলামিস্টদের বলছে টেরিরিস্ট। অথচ এরাই নবী(সা) এর পূর্ন অনুসরন করছে। কিন্তু মোডারেটদের কাছে এরা ঢালাও খারেজী। আমি সব মোডারেটদের কাফেরদের দালাল বলছিনা কিন্তু তারা অনেকেই নিজেদের অজান্তেই কাফেরদের বানানো ফাদে পড়ে আছে। নিজেদের অজান্তেই ওদের দালালি করছে। কাফেরদের কাজ সহজ করে দিচ্ছে।আর সরলপথের বান্দাদেরকে আইসোলেট করে দেওয়া হচ্ছে সব স্থান থেকে।

ইল্যুমিনাতির আল্টিমেট ধর্ম বিরোধী ফাদ হচ্ছে স্পিরিচুয়ালিজমের নামে সব ধর্মগুলোকে একিভূত করা। দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আধ্যাত্মবাদ আর অকাল্ট মিস্টিসিজম এর বিরুদ্ধে কারও লেখনী পাই নি। কাফেররা ইস্টার্ন মিস্টিসিজমকে পছন্দ করেছে। অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদী আধ্যাত্মিকতা যার জন্য ইল্যুমিনাতি আর্টিস্ট রে অব লাইট ম্যাডোনার মিউজিক ভিডিওতে তার হাতে 'ঔঁ 'কে কালজাদুবিদ্যার মূল ফাউন্ডেশন হিসেবে বুঝিয়েছে। থিওসফিস্টরাও এ ব্যপারে একমত। সেই সাথে নিউ এজ মুভমেন্ট। আমাদের দেশে সাফল্যের সাথে কোয়ান্টাম ম্যাথড কাজ করে চলছে, তাদেরই শাখা হিসেবে। সুফিবাদও প্রোমোট হচ্ছে সরকারের ছত্রছায়ায়। আধ্যাত্মবাদের প্রসারে জাতিসংঘ প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিছু ইয়োগা প্রতিষ্ঠানকে এমনকি আর্থিক সাহায্যও করে যাচ্ছে বলে অনেক তথ্যপ্রমাণ আছে। URI, একোনমিক্যাল মুভমেন্ট সহ অনেক ভাবে চলছে ধর্মের বেড়াজাল ভেঙ্গে ওয়াহদাতুল উজুদের(Monism) দ্বারা একাকার করে দেওয়ার। আর আধ্যাত্মিক মহান নেতার অপেক্ষা করা হচ্ছে। তিনি ওই একচোখওয়ালা গুরু ছাড়া আর কেউ নন। সম্প্রতি এবিসি রেডিওতে কিব্রিয়া সরকার এবং রেজা সাহেব নামের দুজন স্পিরিচুয়াল এয়োয়াকেনিং এর জন্য কাজ করে চলছেন অজানা স্পিরিচুয়াল ব্রাঞ্চের উপর ডিপেন্ড করে। এখন এদেশে এডভারটাইজ গুলোও ইয়োগা মেডিটেশনকে আধুনিক প্রাকটিস হিসেবে দেখাচ্ছে।

এভাবেই আমাদের আশেপাশে দাজ্জালের অনুসারীরা রয়েছে এবং নির্বিঘ্নে কাজ করে যাচ্ছে।। ওদের কার্যক্রমের উদাহরণ এরূপ যে কোন এক রাজনৈতিক নেতার আবির্ভাব হবে বলে কোন এক এলাকার সমর্থক পক্ষ তাকে বরন করে নেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্টেজ, প্যান্ডেল, ব্যান্ডবাদক, ফুল দ্বারা বরনের নানা আয়োজন। এখানে ওই রাজনৈতিক নেতাকে দাজ্জাল হিসেবে ধরুন এবং তার বরন আয়োজকরা তার আবির্ভাবের পরিবেশ সৃষ্টিকারী অনুসারী।

ইসলামও নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার ঘটাবে-
শুধু এক সরকারি কেন্দ্রিক বিশ্ব শাসনব্যবস্থা যে শুধু দাজ্জাল করতে চাচ্ছে তা না, সেটা আল্লাহরও সর্বকালীন নির্দেশ।। আল্লাহ বলেন।

"আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা যালেম (তাদের ব্যাপারে আলাদা"[২:১৯৩]

আর এই মহিমান্বিত হুকুম পালন করে যাচ্ছে একদল মুজাহিদ যারা সর্বযুগেই বিদ্যমান।
মুগীরা ইব্‌ন শু’বাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী থাকবে। এমনকি যখন ক্বিয়ামত আসবে তখনও তারা বিজয়ী থাকবে। (৭৩১১, ৭৪৫৯, মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১৯২১) (আ.প্র. ৩৩৬৯, ই.ফা. ৩৩৭৬)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৬৪০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

এ দলটি আজও আছে যাদের আমরা জঙ্গী নামে জানি। কাফেরদের মিডিয়া আমাদেরকে তাদের সন্ত্রাসী ডাকতে শেখায়।।এই দলটি ঈমাম মাহদী এবং অবশেষে ঈসা (আ) এর সাথে যুক্ত হয়ে দ্বীনকে বিজিত করবে এবং ওই আয়াতের হুকুমের পরিপূর্নতা দান করবে।এবং ইসলামের দ্বারাই ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট গঠিত হবে যা হবে শান্তির। তখনই মানুষ জানবে ইসলাম মানে সত্যিই শান্তি। দাজ্জাল লাঞ্ছনাজনক ভাবে খুন হবে ঈসা রুহুল্লাহর বর্শার আঘাতে। তাগুতি নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার পরাভূত হবে। বিইযনিল্লাহ
...........................................................................
সুতরাং সকল তন্ত্র মন্ত্র ভুলে আসুন তাওহীদের কাল পতাকার ছায়াতলে। গুরাবাদের সাথী হউন।

'ল অব এট্র‍্যাকশ্যন: Law of attraction

'ল অব এট্র‍্যাকশ্যন: Law of attraction

অনিবার্যভাবে আজ একটা বৈপ্লবিক চেতনার ব্যপারে আলোচনা করতে হচ্ছে। সারা পৃথিবীর সক্রিয় এসোটেরিক এজেন্ডা(বাতেনীয়্যাহ গোষ্ঠী) বর্তমান সময়ে একটি আকিদা বা বিশ্বাসকে অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে মাঠে নিয়ে নেমেছে। যার নাম দিয়েছে 'ল অব এট্রাকশন' বা আকর্ষনের নীতি। মানুষ এসময়টাতে স্রোতের মত এই মতাদর্শকে গ্রহন করে নিচ্ছে। কেউ বা কৌতূহল প্রবন হয়ে এই ফাদে পা দেয় এবং নিজেদের অজান্তেই সবচেয়ে দামী জিনিসঃ ঈমানকে হারায়।

সকল মিস্টিক্যাল/মেটাফিজিক্যাল ও প্যাগান ফিলোসফিগুলো এই নীতির সাথে একদম মানিয়ে নিয়েছে যার জন্য এটা সকল মিস্টিসিস্টদের কাছেই পরম পূজনীয়। এই ল অব এট্র‍্যাকশন এর আদর্শ তাদের দ্বারাই পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত এবং প্রচারিত যারা দাজ্জালের আবির্ভাবের প্রতীক্ষারত,যারা দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বেই তাকে রব হিসেবে গ্রহন করে নিয়েছে।

আমাদের দেশে মিস্টিসিজম(কালোজাদু,উইচক্রাফটের বাম রাস্তায় হাটার বিশ্বাসগত মাজহাব বা পথ) যখন প্রকাশ্যে প্রচার পেতে শুরু করে তখন এই অজানা শব্দগুচ্ছ প্রায়ই কৌতূহল জাগায়। Law of attraction এর ডক্ট্রিনের সর্বপ্রথম কথক হলেন ফিনিয়াস কুইম্বি, তিনি একজন বিখ্যাত সম্মোহনকারী ছিলেন। তিনি একটি অপ্রকাশিত আর্টিকেলে বলেন, শরীরের রোগের সূত্রপাত ঘটায় সর্বপ্রথম মন। মন যখন একটি বিশেষ রোগে রোগাক্রান্ত হবার কথা চিন্তা করতে থাকে তখন সেটা শরীরে বাসা বাধে। কুইম্বির এই চিন্তাকে পুজি করে স্পিরিচুয়ালিস্টরা ইন্টারন্যাশনাল নিউ থট এলাইয়েন্স(INTA) গঠন করে। তারা প্রচার করতে থাকে চিন্তার এই আকর্ষনের নীতি অন্য সকল ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ওরা বিষয়টিকে আরো সুসংহত ও ব্যাপকতা দিয়ে একে সংজ্ঞায়িত করে। একে ওরা নিউ থট নামে প্রচার করতে থাকে। নিউ থটের প্রচারকের ভূমিকায় থাকে এই INTA আম্ব্রেলা সংগঠন। এর ছত্রছায়ায় বিচিত্র নামে আরো অনেক সংগঠন কাজ করতে থাকে। International New Thought alliance এর new thought এর বিশ্বাসগত অন্যান্য বিষয়বস্তু গুলো হচ্ছেঃ
সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি সব কিছুই একক অস্তিত্ব। সৃষ্টিকর্তা সর্বত্র এবং তিনিই সবকিছু (সর্বেশ্বরবাদ/নন ডুয়ালিজম/মনিজম/প্যান্থেইজম) প্রত্যেক মানুষ একেকটি ডিভাইন অর্গানিজম। আর তার মধ্যে ক্ষমতার সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে। মহাবিশ্ব হচ্ছে মহাজ্ঞানের আধার যা থেকে একজন ব্যক্তি সীমাহীন জ্ঞান আহরন করতে পারে।
The chief tenets of New Thought are:

Infinite Intelligence or God is omnipotent and omnipresent.Spirit is the ultimate reality.True human self-hood is divine.Divinely attuned thought is a positive force for good.All disease is mental in origin.Right thinking has a healing effect.

অর্থাৎ নিউথট প্রধানত স্পিরিটিজম ও নন ডুয়ালিস্টিক স্পিরিচুয়ালিজমেরই মডিফাইড ভার্সন। এই নিউথট থেকে বেশ কিছু অর্গানাইজেশনের উৎপত্তি ঘটেছে এর মধ্যে ইউনিটি চার্চ,ডিভাইন সাইন্স,রিলিজিয়াস সাইন্স অন্যতম।একই ধ্যানধারণা রাখে Jewish Science, Centers for Spiritual Living , Unity, Father Divine,thought network ইত্যাদি অর্গানাইজেশন। আর্নেস্ট হোল্মেস রিলিজিয়াস সাইন্স অর্গানাইজেশন এর প্রতিষ্ঠাতা যার আন্ডারে আরো অসংখ্য অর্গানাইজেশন কাজ করছে। আর্নেস্ট স্পিরিচুয়ালিস্টদের কাছে বিখ্যাত বই লেখেন যার নাম The science of mind।
নিউ থট মুভমেন্ট স্বামী বিবেকানন্দের কথা প্রচার করে এবং এদের সম্মেলনে দালাইলামার মত ব্যক্তিত্বরাও অংশ গ্রহন করে।

ল অব এট্রাকশ্যনের বিশ্বাসগত সারবস্তুঃ
এ বিলিফ আপনাকে শেখাবে যে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ত্ত্বা মূলত আপনিই। আপনি যা চিন্তা করতে থাকেন সেই থট ফ্রিকোয়েন্সি প্রকৃতিতে ভাসতে থাকে, এবং কোন কিছুর ব্যপারে যা এক্সপেক্ট করেন সেই পরিবেশ আপনাকে এট্রাক্ট করে নিয়ে নেবে। কারন আপনার শরীরও সাবএটোমিক লেভেলে বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সির কম্পনশীল এনার্জি। তাই আপনার চিন্তা আকাঙ্খিত পরিবেশকে আকৃষ্ট করে। উদাহরণ স্বরূপ- কোন এক ব্যক্তি কোন এক পন্যের ব্যবসায় শুরু করল কিন্তু সেটা কোনভাবেই সাফল্যের মুখ দেখছেনা। তিনি এবার 'এট্রাকশ্যনের নীতি' মেনে কল্পনা করতে লাগলেন যে তার পন্য কিনতে লোকে ভীড় করছে। তিনি যোগান দিয়ে কুলিয়ে উঠছেন না এতই চাহিদা তৈরি হয়েছে.. ! (এ কল্পনার প্রক্রিয়াকে আমাদের দেশের অকাল্ট অর্গানাইজেশন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নাম দিয়েছে মনছবি) এর পরেই ওই লোক দেখলো সত্যিই বাস্তব জীবনেও তার ব্যবসায়ের বিক্রি বেড়ে গেছে। Esoteric occultist টা এটাকে এভাবে ব্যাখ্যা করে যে যখন ওই লোক পন্য বিক্রি বৃদ্ধির কল্পনা শুরু করে তখন তাদের মস্তিষ্ক একধরনের বেতার তরঙ্গ উৎপন্ন করে তারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, এবং আকাঙ্ক্ষার বস্তুকে প্রভাবিত করতে থাকে যেহেতু প্রত্যেকটা বস্তুই বিভিন্ন ওয়েভলেন্থের স্বতন্ত্র ফ্রিকোয়েন্সিতে থাকা এনার্জি ভাইব্রেশন। তাই সব এন্টিটি আপনার চাহিদামোতাবেক মাত্রায় ম্যানিপুলেট হবে।

একটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার যে, ল অব এট্র‍্যাকশ্যন বিশ্বাস করে সৃষ্টিজগত ও স্রষ্টা=এক অস্তিত্ব! অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা বলে আলাদা কেউ নেই! সবকিছুই সৃষ্টি আবার সব কিছুই স্রষ্টা! একে বলে ননডুয়ালিজম অথবা মনিজম(এসেন্সঃসর্বেশ্বরবাদ)। আর সমস্ত অস্তিত্বটা এনার্জি ফ্রিকোয়েন্সি আর ভাইব্রেশনে প্রতিষ্ঠিত। যা প্রকৃতিতে আছে তার সব কিছুই এনার্জি। প্রত্যেক বস্তুই বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে ভাইব্রেশনরত এনার্জি। এনার্জি ভাইব্রেশনের তারতম্যের জন্য প্রত্যেক বস্তুর সলিডনেস একেক রকম। এজন্য দেওয়াল ভেদ করা দুরূহ, পাথর আরো কঠিন আবার পানি বায়ুসহ অনেক সহজভেদ্য জিনিস আছে। আর এম্পটি স্পেস বলে কিছুই নেই, দৃশ্যমান ফাকা স্থান বলে কিছু নেই।ফাকা স্থানগুলোতে জুড়ে আছে ইথার! এই ইথার ফিল্ডটিই ম্যানিপুলেটযোগ্য। এই কাজটি দূর থেকেই করতে পারে আমাদের থট এনার্জি/ব্রেইনওয়েভ! ওদের তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের চিন্তাগুলোও এনার্জি ভাইব্রেশন ব্রেইন থেকে বিভিন্ন ওয়েভলেন্থের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভে ভাসতে থাকে। এজন্য আপনি শুধু চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দূরবর্তী বস্তুকে নড়াতে পারবেন যাকে টেলিকেনেসিস বলে। যেহেতু প্রত্যেক এনটিটি এনার্জি, আপনার কনসাসনেসকে ব্যবহার করে অবজেক্টের উপর ইন্টারফেয়ারেন্স ঘটাতে পারবেন। সুতরাং এ উপায়ে আশপাশের রিয়েলিটিও একজন এনলাইটেন্ড পার্সন ইচ্ছেমত ম্যানিপুলেট করতে পারবেন! আপনি যা চান সেটা বারবার কল্পনা(কোয়ান্টাম ম্যাথডের ভাষায় মনছবি তৈরি) করতে থাকলে আপনার থট এনার্জি ভাইব্রেশন ওই কাল্পনিক রিয়েলিটি বাস্তবায়িত করতে নিষ্ক্রিয় পারিপার্শ্বিক এনার্জিফিল্ডকে আকর্ষন করে এবং ডিজায়ার অনুযায়ী বাস্তবায়িত করে।এটাই আকর্ষনের নীতির গুহ্য বিলিফ।

ল অব এট্র‍্যাকশন যে ফিলসফি বেজড সেটাকে বলে monism, এর আরো ভেতরে প্রবেশ করলে বেরিয়ে আসবে প্যান্থেইজম(তাওহীদের বিপরীত)। এজন্য এ তত্ত্বকে পছন্দ ও বিশ্বাস করে একটু শিক্ষিত হিন্দু,থিওসফিস্ট, New age movement এর সকল সদস্যরা এবং একই চিন্তাধারার স্পিরিচুয়ালিস্টিক ডক্ট্রিনগুলো এবং অনেক অখ্যাত মিস্ট্রি রিলিজিয়ন,অকাল্টিস্ট,মিস্টিসিজম(যেমনঃ কোয়ান্টাম মিস্টিসিজম, জিউইশ, নস্টিক ইত্যাদি)...। এরা রিয়েলিটিকে নিজেদের কব্জাবদ্ধ করতে চায়।
ল অব এট্রাকশ্যন সফলায়নে যে কল্পনা করা হয় মিস্টিকরা তাকে বলে ক্রিয়েটিভ ভিজুয়ালাইজেশন(মনছবি)। কোয়ান্টাম ম্যাথডে কোর্স করলে আপনাকে মন ছবি শব্দ দ্বারা পরিচয় করাবে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Creative_visualization

ল এব এট্রাকশন সরাসরি মিস্টিসিজমে সর্বপ্রথম প্রবেশ করে ১৮৭৭ সালে থিওসফির জননী ও অঘোষিত স্যাটানিস্ট ম্যাডাম হেলেনা পেত্রোভনা ব্লাভাস্তস্কির বইয়ের মাধ্যমে।এর পরে থেকে সকল স্পিরিচুয়ালিস্টরা একে একে সমর্থন দিতে থাকে। তারা বলতে থাকে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যখাতেই না বরং সকল ক্ষেত্রেই আকর্ষনের নীতি কাজ করবে।

ল অব এট্রাকশন মেইনস্ট্রিমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করে ২০০৬ সালে রন্ডা বাইরনের দ্য সিক্রেট মুভিটি রিলিজের মাধ্যমে।
মুভিঃদ্যা সিক্রেট
https://m.youtube.com/watch?v=EC_YmdPy2h0

মিস্টিকরা বলতে থাকে আকর্ষনের নীতি কাজ করে প্রেম জাতীয় রিলেশনশিপ সফল করনে, ব্যবসায়ে সাফল্য, স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে। নিচে দেখুনঃ
চাইবে যা পাইবে তা!!ঃ
https://m.youtube.com/watch?v=5INlyzP8UIc

চমকে দেওয়ার মত খবর হচ্ছে আমাদের দেশেও এই নিউ থটের প্যান্থেইস্টিক আকর্ষনের নীতি প্রচার প্রসারের কাজ বহু আগেই শুরু হয়েছে। এজন্য ঘুরে আসুন বাংলাভাষায় ল অব এট্রাকশনের পেজটিঃ https://m.facebook.com/LawOfAttractionBangla
পেজটির এডমিনবর্গ ইসলামিক টার্ম ব্যবহার করে তাদের পোস্টে যেমন 'সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ' ইত্যাদি। এটা মূর্খদের ডিসিভিং এ সাহায্য করছে।
যতদূর বোঝা যায় এর পেছনে এদেশীয় কোয়ান্টাম মিস্টিকদের শাখা কোয়ান্টাম ম্যাথড হয়ত কাজ করছে।এদেশীয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মতাদর্শ স্পিরিচুয়ালিজম/স্পিরিটিজম থেকে খুব বেশি দূরবর্তী নয় বরং ওরা সবাই এক ঘাটেরই মাঝি। তাই এতে অবাক হবার কিছু নেই।

ল অব এট্রাকশ্যনে বিশ্বাস করতে হলে আপনাকে প্রথমে বিলিফটাকে রিডিজাইন করতে হবে। নন ডুয়ালিজমে(এক অস্তিত্ব) নিয়ে যেতে হবে।এটা কোন মনোথেইস্টিক আকিদার কিছু নয়।।
বরং একদম বিপরীত মেরুর।
এবার আসুন দেখা যাক এই নীতি কতটা শরী'য়া সম্মত।আকর্ষনের নীতি অনুযায়ী আপনি নিজেই নিজের রিয়েলিটি সৃষ্টিকারী, এখানে আল্লাহর কোন ইণ্টারভেনশন নেই! আপনার অসুস্থতায় আপনিই আপনাকে সুস্থ করছেন,ব্যবসায়ে সাফল্য আনছেন, সুতরাং সৃষ্টিকর্তার প্রতি ডিপেন্ডেন্সি থাকলো না যেটা মুসলিমরা সব ক্ষেত্রে করে থাকে। নিজেকে রবের আসনে বসানো শিরক। তাকদীরের বিশ্বাসটাকেই সম্পূর্নভাবে কবর দিতে হবে যদি একে কেউ চর্চা করতে চায়। ওদের কথানুযায়ী আপনিই সব নির্ধারণ করছেন, আল্লাহ নয়! আপনার রিযিকদাতা আপনি নিজেই!! এরকম ভয়াবহ বিষয় গুলি চলে আসবে। সর্বোপরি, এই নীতি যে আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত সেটাই তাওহীদের(একেশ্বরবাদের) বিপরীত মেরুর।

তাই সর্বপ্রথম সে আদর্শকে গ্রহন করার জন্য তাওহীদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে! তবে আমাদের দেশে প্রথমে চালাকি করে ইসলামিক টার্মগুলো দিয়ে টোপ দেওয়া হয়, কারন সব বলে দিলে কোন মুসলিমই আসবেনা। ধীরে ধীরে ননডুয়ালিজমের দিকে টানা হয় । সেটাও বলা হয় না বরং বুঝে নিতে হয় গড রিয়েলাইজেশন কোর্স থেকে। তো ল অব এট্রাকশন এর মেকানিজম জেনে ফলো করতে হলে আপনাকে আগে আল্লাহ ডিপেন্ডেন্ট রিয়েলিটির বিশ্বাসকে ত্যাগ করতে হবে। আপনাকে ভাবতে হবে সকল পার্টিকেলই স্রষ্টার অংশ এমনকি আপনিও, সবকিছু মিলিয়ে ঈশ্বর, আপনি ডিভাইন বিং এজন্য আপনার সে সক্ষমতা আছে যে আপনি আপনার আশপাশটাকে প্রভাবিত করতে পারবেন ইচ্ছানুযায়ী। স্ট্রিং থিওরির ন্যায় যেহেতু সব ম্যাটারই বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির ভাইব্রেটিং এনার্জি, আপনার কনসাস্নেসের এম্বিশন পারিপার্শ্বিক পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারবে। সুতরাং এ এক আকিদাগত সুবিশাল ডিসটর্শন। সজ্ঞানে কোন মুসলিম এর অনুসারী হতে পারেনা। ওই বিশ্বাস হচ্ছে আধুনিক প্যান্থেইজম। এর অনুসরণ যেকোন মু'মিনকে মুশরিক ও খাটি কাফের করে ফেলবে। পড়ে আসুন শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদের পেইজ থেকেঃ https://islamqa.info/en/112043 তিনিও আমার ন্যায় একই কথাই বলেছেন।

সম্ভবত এর চর্চাকারীরা কিছুক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে বিধায় এর এত জনপ্রিয়তা। এ নীতির সফলতার ক্ষেত্রে এক শ্রেনীর সর্সারি(যাদু) এবং জ্বীনদের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে।যাদুর বিষয়টা ম্যাজিক্যাল থিংকিং ঘরানার কিছু হতে পারে, এসব ব্যপারে আল্লাহ ভাল জানেন। তবে যাদু জাতীয় হলে অবশ্যই কুফরি। স্মরন করা যেতে পারে ওই স্ত্রীলোকের ঘটনাকে যা নবী(স) ওফাতের পরে ঘটেছিল, যেটা মা আয়েশা(রা)সহ অনেক সাহাবীরাই দেখেছিল। সে হাদিস দ্বারা যাদু অথবা কুফরির এক্সট্রেম লেভেল সম্পর্কে জানা যায়, যে অবস্থায় আল্লাহ ঈমানকে উঠিয়ে নেন এবং অভিশপ্ত অবস্থায় দুনিয়াতেই যা চায় তা দিয়ে দেন। ঐ স্ত্রীলোকটি কোন ম্যাটারকে যা আদেশ করত, সেটা তাই হয়ে যেত।।
Evil Eye(বদ নজর)এর ক্ষেত্রে যে মেকানিজম , হতে পারে আকর্ষনের নীতিও কাছাকাছি কোন ফিল্ড ব্যবহার করে, খুব সম্ভবত সেটা ম্যাজিক-সর্সারির মধ্যেই পড়বে এবং এর প্রাকটিসিং কুফর ও শিরকেরই আওতাভুক্ত। সত্য হচ্ছে কাফেররা যাই বলে বা করে তাতে মিথ্যার ভাগই বেশি থাকে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই(৯৫% ক্ষেত্রেই) কাফেররা কোইন্সিডেন্টকে তাদের ওই আকিদা ও চিন্তার খাপে ফেলে দেয়। আর ক্বারিন জ্বীনদের ইন্টারভেনশনও এরকম ফেনোমেনা তৈরি করতে সক্ষম। যেমন ধরুন,কোন এরূপ বিশ্বাসী ব্যক্তি লোকসান হতে থাকা ব্যবসায় লাভের জন্য নিয়মিত কল্পনা(ভিজ্যুয়ালাইজেশন) করতে থাক, পরে দেখলো, হঠাৎ বিক্রি বেড়ে গেল এবং ব্যবসায় সবুজ বাতি জ্বলতে দেখে সে লোক ভাবতে লাগলো ল অব এট্রাকশনই ঠিক! আল্লাহর উপর ভরসা করে লাভ নাই(নাউজুবিল্লাহ)! জ্বীনরা এভাবে চূড়ান্ত গোমরাহ করনে এভাবে কাজ করতে পারে যে,ক্রেতাসাধারণের অন্তরে ওই লোকের ব্যবসায়ের জিনিস ক্রয়ের জন্য অন্তরে ওয়াসওয়াসা দিয়ে ধাবিত করলো, এবং পরিশেষে গনহারে ওই পন্য কিনলো যা ওই ব্যবসায়ে সাফল্য এনে দিলো। উল্লেখ্য, শয়তানের ওয়াসওয়াসা এরূপ মনেহয় যে, ওই ব্যক্তিবিশেষের চিন্তা তার একান্তই নিজের। এজন্য কুচিন্তার জন্য কোন কোন মানুষ ভুল করে নিজেকেই দোষারোপ করে যদিও সেসব শয়তানের, অথচ সে জানেনা। তাই জ্বীনদের ইন্টারভেনশনের সম্ভাবনাই সর্বোচ্চ।।

যখন এদেশীয় ল অব এট্রাকশনের পেজটিতে গিয়ে মন্তব্য করা শুরু করি, তখন এডমিন খুবই বিরক্ত হন।আমার কমেন্ট গুলি হয়ত মুছে দেওয়া হয়েছিল।এর কিছু পরেই ম্যাসেজ পাই এডমিন এর কাছে থেকে। তারা আমার পরিচয় জানতে চায় এবং জানতে চায় কেন আমি তাদের ডিসিটফুল কার্যে বাধ সাধছি!

কোয়ান্টাম ম্যাথড


আমরা অনেকে মনে করি বাংলাদেশের প্রচলিত কোয়ান্টাম ম্যাথড হয়ত কোয়ান্টাম ফিজিক্সের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসায় করছে। আমরা মনে করি এর সাথে সাইন্সের এই এডভান্স মেকানিক্সের কোন সম্পর্ক নেই। যারা এরকমটা ভাবেন, তারা ঐভাবে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ব্যপারে জানেন না যেসব বিজ্ঞানীদের হাত ধরে এর আগমন এবং যাদের দ্বারা এই ফিজিক্সের প্রতিষ্ঠা। তারা এর অরিজিনের ব্যপারে একদমই অজ্ঞ। অন্ধভাবে একে পবিত্র জ্ঞান হিসেবেই শ্রদ্ধা করে। এমনও দেখেছি এদের কতক ইসলামের সাথেও এই ফিজিক্সকে কম্প্যাটিবল করতে চেষ্টা করে। 

কোয়ান্টাম ম্যাথড এসেছে কোয়ান্টাম মিস্টিসিজম থেকে। https/en.m.wikipedia.org/wiki/Quantum_mysticism 

যাহোক, আজ কোয়ান্টাম ম্যাথড তথা কোয়ান্টাম মিস্টিসিজমে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ধারনা সম্পর্কে লিখব। 

সাব এটমিক লেভেলে সবকিছুই এনার্জি ফ্রিকোয়েন্সি আর ভাইব্রেশন।সব কিছুই ননলোকাল। ম্যাটারের অস্তিত্ব নেই।কোয়ান্টামের জনক ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক তাই বলতেন।এই কন্সেপ্ট এসেছে বৌদ্ধ ও হিন্দু শাস্ত্র থেকে যে রিয়েলিটি হলো মায়া বা ইল্যুশন। এজন্য সাবএটমিক লেভেলে সবাই এক(ননলোকাল)। মিস্টিকদের ভাষায় সব কিছু এক ভালবাসার ডোরে বাধা। এজন্য আধ্যাত্মবাদীরা প্রশ্ন তোলে 'এক অস্তিত্বের মধ্যে কেন এত সংঘাত'(?)! 

এজন্য সংঘাতের মূলে থাকা সকল ধর্ম বিশ্বাসের শিকল ভেঙ্গে ইনফিনিট কনসাসনেসের(চেতনার) সাথে নিজেকে একাকার করে প্রকৃতির অপার ভালবাসা অনুভব করতে ধ্যান ও যোগ সাধনা করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। হিউম্যান কনসাসনেস এর মৃত্যু নেই,মৃত্যুর পরে পুনর্জন্ম রিইনকারনেশন হয়। 

কোয়ান্টাম তত্ত্বানুযায়ী সৃষ্টি ও স্রষ্টার অস্তিত্ব এক। আমরাই ঈশ্বর। রিয়েলিটির কোক্রিয়েটর আমরা এবং কস্মিক কনসাসনেস নিজেই। 'আল্লাহ' বলে বাইরের কেউ নেই। সোজা কথা- সর্বেশ্বরবাদ বা প্যান্থেইজম। এজন্য কোয়ান্টাম ম্যাথডে ট্রেন্সেন্ডেন্টাল ধ্যানের সময় নিজেকে অসীম শক্তির আধার ভাবতে বলা হয়। ধ্যানের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। একে বলা হয় অল্টারড স্টেট অব কনসাসনেস। পশ্চিমে বিভিন্ন সাইকাডেলিক ড্রাগও এই স্বর্গীয় অনুভূতির জন্য ব্যবহার করা হয়। চেতনার এই পর্যায়ে মানুষ ভিন্ন ডাইমেনশনে ভ্রমন করে, সেখানে স্পিরিট বিং(ইসলামে শয়তান জ্বীন বলে) দের সাক্ষাৎ ও অশির্বাদও গ্রহন করে ইয়োগীরা। 
কোয়ান্টাম ম্যাথডের মহাজাতক শহীদ আল বোখারী এই স্পিরিট এন্টিটি তথা শয়তানকে নাম দিয়েছে 'অন্তগুরু'। তাদের প্রকাশিত সাফল্যের চাবিকাঠি বইতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে এই উপদেষ্টা আধ্যাত্মিক গুরুর সাথে সাক্ষাৎ লাভের বিষয় নিয়ে। নিচে স্ক্রিনশটে পড়ুনঃ



অবাক হই এটা দেখে যে এরা শয়তানকে গুরু বানায় আর মুসলিমরা এরই দর্শন লাভের জন্য জ্যোতিষী যাদুকরদের কাছে যায়।

সার্নের ফিজিসিস্ট জন হাগেলিনও বর্তমানে এই মতাদর্শকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ এবং পালন করেন। তিনি এখন মহাঋষি মহাযোগী প্রতিষ্ঠানে ব্যস্ত। 

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় অকাল্ট(যাদুবিদ্যা) মতবাদ বা মিস্টিসিজমকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে, কোথাও রেইকি, কোথাও ইয়োগা, কোথাও কোয়ান্টাম ম্যাথড, কোথাও ইস্কন, আনন্দমর্গ,ব্রহ্মকুমারী,নিউএজ ইত্যাদি। একটি গ্লোবাল ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন তৈরি করার মিশন নিয়ে পথ চলা। পুরাতন ধর্মগুলোকে শুধুমাত্র টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেমনঃ খ্রিষ্টান, ইসলাম। বিভিন্ন সংগঠন ইসলামিক চিন্তাধারাকে ব্যবহার করছে টোপ হিসেবে, যাতে সরল সোজা মুসলিমরা না জেনেই ধ্যান যোগের ধর্মে পা বাড়ায়। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বা কোয়ান্টাম ম্যাথডে সেকাজটাই নিপুনতার সাথে করছে মহাজাতকরা। তারা ইসলামিক টার্ম ব্যবহার করে, যাতে মুসলিমরা ভাবে এসব বৈধ বা হালাল চর্চা। 

প্রাচীনকালে এই ধ্যান-যোগের আধ্যাত্মিকতার সর্বেশ্বেরবাদী দর্শন গুলো যাদুকরদের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। খ্রিষ্টান সভ্যতা একে প্যাগানিজম বলত। ইসলামেও একই ভাবে দেখা হত। আজ এই গুপ্তবাদই গ্লোবাল রিলিজিয়নে শিফট করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এই নতুন দ্বীনকে প্রমোটিংএর মহান দায়িত্ব পালন করছে 'কোয়ান্টাম ম্যাথড, বা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন '। উচ্চপর্যায়ের মহাজাতক এবং প্র‍্যাক্টিশনারগন এই ব্যপারগুলো ভালভাবেই জানেন। তারা ভাল করেই জানেন কিভাবে ইসলামকে ইউজ করে মুসলিমদেরকে অকাল্টিজমের দিকে ধাবিত করতে স্লো ইঞ্জেকশন দিতে হবে। তারা কখনই ভেতরের কথা স্বীকার করবে না নবাগত কোন ইয়োগীর কাছে।
আজ মেডিটেশনের বিপ্লব এজন্যই চলছে। 

 কোয়ান্টাম ম্যাথড ও অন্যান্য আধ্যাত্মবাদী সংগঠন এবং ম্যাজিক্যাল ট্রেডিশনগুলোর প্রধান আকিদাগত ভিত্তি হচ্ছে সর্বেশ্বরবাদ বা Monism। এটা এসেছে ব্যবিলনিয়ান এস্ট্রোলজি। এ্যাস্ট্রোলজি অকাল্টিজমেরই একটা মৌলিক শাখা অর্থাৎ যদুবিদ্যারই অংশ। এ কথা আল্লাহর রাসূলও(সাঃ) বলেছেনঃ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُسَدَّدٌ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنِ اقْتَبَسَ عِلْمًا مِنَ النُّجُومِ اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ ‏"‏ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

এজন্য আপনি যদি একটু খোজ নেন, আমাদের দেশের কোয়ান্টাম ম্যাথডের প্রতিষ্ঠাতার অতীতকে জ্যোতিষ শাস্ত্রের চর্চাকারীদের একজন হিসেবেও পাবেন। ৯০ দশকের পত্রপত্রিকায় রাশিফল ও অন্যান্য এস্ট্রোলজিক্যাল বিষয় নিয়ে লিখতেন। আজ তিনি যা প্রচার করছেন,সেটা এই জুডিও ব্যবিলনিয়ান এস্ট্রলজির উদ্ভুত এ্যাডভান্স সংস্করণঃ এ্যাস্ট্রোথিওলজি। তিনি যে অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউয়ের প্রচার করছে সেটা তার ওয়েবসাইটেও আছেঃ


পরিশেষে শুধু এটাই বলব যে, যে ব্যক্তি কোয়ান্টাম ম্যাথড বা কোয়ান্টাম অকাল্টিজমের দিকে পা বাড়ায়, সে বস্তুত পৌত্তলিকতার চেয়েও নিকৃষ্ট কোন ধর্মের দিকে পা বাড়ায়। আর এটা এমন কিছু যা খ্রিষ্টান বা ইহুদীদের চেয়েও নিকৃষ্ট। এই ব্যাপারটিই খুলে খুলে ঐতিহাসিক দলিল সন্নিবেশ করে ধীরে ধীরে প্রকাশ করা হচ্ছে এবং হবে এই আর্টিকেল সিরিজেঃ 
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html

ইনশাআল্লাহ।      


(সংক্ষেপিত)

Sunday, December 9, 2018

Flat earth Mysticism এবং নব্য শয়তানের পূজারীরা


২০১০/১১ এর দিকে এরিক দুবেঈ নামের এক মুশরিক খুব চেষ্টা করে জিওস্টেশনারী সমতল জমিন ভিত্তিক প্রাচীন কস্মোলজিকে পুনরুজ্জীবিত করতে। আমেরিকাসহ সারা পৃথিবীতেই রাতারাতি খুব জনপ্রিয় হয়ে যায়। সে গ্লোবিউলার মডেলের ত্রুটিগুলো নিয়ে বেশ কিছু ডকুমেন্টারি ফিল্মও বানিয়েছে। এর অনেক দিন পরে তার আসল রূপ পাওয়া যায়। উনি ইউনাইটেড ন্যাশন এর পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত ওই প্রাচীন প্যাগান স্পিরিচুয়ালিজমে বিশ্বাসী,যেটা দ্বারা তারা ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। সহজ ভাষায় এরিক স্পিরিচুয়াল এন্টিটি বা শয়তানের পূজারী। কাব্বালা, নস্টিসিজম, হার্মেটিজম, ভারতীয় দর্শন(পৌত্তলিক ধর্মসব),তন্ত্র, সেল্টিক মিস্ট্রি, মিথ্রাইজম প্রভৃতি নিয়ে প্রায়শ লিখি, এগুলো সবই বিভিন্ন ভাষা ও শব্দে একই কথার বিচিত্র রূপ। অর্থাৎ একই শয়তানি দর্শনের বিচিত্র মাজহাব। এরিক বৌদ্ধধর্মের(Eastern mysticism) প্রতি ছিল খুবই ডিভাউট। এর পরে ওকে একাই পাওয়া যায় না। আরো শত শত জিওসেন্ট্রিসিটির প্রচারকদের মিডিয়া দেখায় যায় যারা সবাই একই ধরনের mystic। আমেরিকায় একে নিউএজ প্যাগানিজম বলে। এদের আকিদা ও মতাদর্শ আরো স্পেসিফিকভাবে Astrotheology। এস্ট্রলজি বা জ্যোতিষশাস্ত্রের বিশ্বাস গুলোকে ধর্মীয় বিশ্বাসে শিফট করা আরকি। শয়তানি লেফট হ্যান্ড ফেইথগুলোর একটা সুন্দর প্যাকেজ। নিউ এজারদের মূল কথাও 'সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই'। এক দিক দিয়ে এরা Atheist আবার অন্যদিক দিয়ে (Pan)theist। শয়তান জ্বীনদেরকে এরা Higher Being, Enlightened being, Ascended Masters, Spirit Guide, Angelic Being, Light Entity,Et being,grey aliens ইত্যাদি বিচিত্র নামে ডাকে। এদের সাথে যোগাযোগ এর মাধ্যম হচ্ছে ধ্যান ও বিচিত্র সাইকাডেলিক ড্রাগ(এলএসডি, ডিএমটি,আইয়োহুয়াস্তকা,সাইকাডেলিক মাশরুম ইত্যাদি)। এরা শয়তানের থেকে যা শেখে এবং যা দেখায় তাই বিশ্বাস করে এবং প্রচার করে। নিউএজার মালাউনরা ইস্টার্ন, ওয়েস্টার্ন বা ব্যবিলনিয়ান যেকোন একটা অকাল্ট ট্রেডিশন ফলো করে। যারা ইস্টার্নপন্থী এরা ভারতে গিয়ে নমঃ নমঃ করে, যেগুলো ওয়েস্টার্ন সেগুলো আলকেমিক্যাল হার্মেটিক অথবা Celtic বা Norse প্যাগানিজমের ফলো করে। যেগুলো জুডিও ব্যাবিলনিয়ান ট্রেডিশনের ফলোয়ার সেগুলো Kabbalah,Qabalah নিয়ে পড়ে থাকে। আপনার এগুলো বুঝতে কষ্ট হয় তাহলে আরো সহজ করে বলি, এগুলো হচ্ছে সবই যাদুকরদের বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক বিশ্বাসব্যবস্থা,মেটাফিজিক্স, আকিদা,দর্শন বা বিশ্বাস। এদের অনেকে নিজেদের লেফটিস্ট বা বামপন্থীও বলে পরিচয় দিতে দেখেছি। যাদুশিক্ষা,চর্চা সে অনুযায়ী জীবনকে সাজানো ইত্যাদি ওদের লক্ষ্য। ওদের অনেকে(অধিকাংশই) এপোলোজেটিক অর্থাৎ নিজেদেরকে যাদুকর, ডাইনী ইত্যাদি বলতে অপছন্দ করে,ঘুরিয়ে ঘারিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসব্যবস্থা বলে পরিচয় দেয়। আমাদের দেশে কোয়ান্টাম ম্যাথড আছে। আবার কেউ কেউ সরাসরি নিজেদের যাদুকর/উইচ পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করে। যাহোক, এদের সবার মৌলিক আকিদা বা বিশ্বাস একই। যেমনঃ পুনর্জন্মবাদ, সর্বেশ্বরবাদ,আত্মিক উন্নয়ন ইত্যাদি। প্রত্যেকের মেটাফিজিক্সও একই। এডভান্স পর্যায়ে রেট্রোকজ্যুয়ালিটি টাইমলুপ্স -ইটার্নাল রিকারেন্সেও বিশ্বাস আছে। এগুলো কুফরি আকিদাগুলোর একদম তলানির বিষয়। এত ভেতরে আপাতত না যাই। নতুবা পোস্ট আর সাধারণের বোধগম্য থাকবে না। অর্থাৎ মূল কথা সবার একই।
কিছুটা প্রাচীন জিওস্টেশনারী কস্মোলজির কল্যানে এই শয়তানের পূজারী কাফিররা ছাড়া(কারন ওদের ফিজিক্স/মেটাফিজিক্সকে শয়তান এমনভাবে ডিজাইন করেছে যাতে আল্লাহর অস্তিত্বের কথা টানাই লাগেনা) কেউই আল্লাহকে(অস্তিত্বের) অস্বীকার করত না। এক দেড় হাজার বছর আগের মুশরিক পৌত্তলিকরাও আল্লাহর অস্তিত্বকে মানত। এ কথা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালাও বলেছেনঃ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ فَأَنَّى يُؤْفَكُونَ
.
যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। তাহলে তারা কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে?(আনকাবুত ৬১)
.
বর্তমানে আম্রিকান ওইসব mystic নিউ এজারদের মালুদের সবাই যাকে একযোগে গুরু বলে মান্য করে, যার কিতাবাদি পড়ে এ পথে উৎসাহিত হয়েছে তিনি হলেন ম্যাডাম হেলেনা ব্লাভাস্তকি নামের এক শয়তানের পূজারি। তার পর এলিস বেইলি, বেঞ্জামিন ক্রিমও ছিল। তবে উনিই সবচেয়ে বেশি ইনফ্লুয়েন্সিয়াল। HP Blavatsky এর কাছে স্বয়ং শয়তান মানব রূপে হাজির হয়ে বিভিন্ন অকাল্ট ও ভুয়া মেটাফিজিক্সের শিক্ষা দিত। উনি ভারতসহ নানা দেশ সফর করতেন সব যাদুশাস্ত্রের বিশ্বাসগুলোর পুনঃজাগরনের উদ্দেশ্যে। তাকে নিয়ে লিখতে গেলে আরেকটা ডকুমেন্টারি নোট পাব্লিশ করা লাগে। যাহোক, ওনার সমস্ত শয়তানি বিদ্যাই আজকে স্পিরিচুয়ালিজমের নামে বিশ্বে প্রবহমান। জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজির সাথে এসব অকাল্টিজমের কোন কানেকশন নেই। স্ফেরিক্যাল আর্থ মডেলটি পুরোটাই কাব্বালিস্টিক কস্মোলজির। আর এই নব্য প্যাগানরা Hollow Earth theory নাম দিয়ে আধ্যাত্মিকতায় এটাকে ২য় বার সংযোগ ঘটিয়েছে। হয়ত জিওসেন্ট্রিক ফ্ল্যাট এনক্লোজড টেরাফার্মার এদিকটাতেও শয়তান ফাদ পাতার উদ্দেশ্যে ওদেরকে নিয়ে আসে। একারনে Flat Earth model এর অনেক ভুয়া মিস্টিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন আসছে(উপরে ছবিতেও দিয়েছি)। অকাল্ট সাইন্টিস্ট নিকোলা টেসলাকে হিরো বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার সব কিছুকে ফ্রিকোয়েন্সি এনার্জি ভাইব্রেশন দিয়ে ব্যাখ্যা করো....! একটা সময়ে ইউটিউবের ৯০% ভিডিও ই এদের দখলে ছিল। ৮/৯% অর্থোডক্স খ্রিষ্টানদের। Flat Earth Paradise নামের একটা জনপ্রিয় চ্যানেল আছে। ওখানে দেখানো হয় সাম্ভালার রাজা আসছেন দুনিয়ায় সাম্ভালা রচনা করতে। টেস্লার কিছু অকাল্ট বাক্যগুলোকে(সেসব নিষিদ্ধ বিদ্যা) ধরে মানুষকে উচ্চতর ডাইমেনশনে এ্যাসেন্ড করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এজন্য আবার হাতের রক্ত দিয়ে কাগজে শপথ লিখতে হবে যে, 'আমি দুনিয়ায় স্বর্গরাজ্য চাই' এ জাতীয় কথা।
.
এসোটেরিক ফ্ল্যাট আর্থার দাদাদের অধিকাংশ কথাগুলোই দলিল ছাড়া ট্রোল। ওরা বলবে, দুনিয়ার মোড়লরা আমাদেরকে আসল কস্মলজি থেকে দূরে রাখছে যাতে আমরা আর ইভলভ না হই, আমরা যেন ওদের গোলাম হয়ে থাকি, আমরা যেন সিদ্ধিলাভ না করতে পারি। ওরা চায় না আমরাও কাব্বালার ট্রি অব লাইফের ফ্রুট অব লাইফ(স্যাক্রিড জিওম্যাট্রির) খেয়ে(এ্যালিগোরিক্যালি) হায়ার ডাইমেনশনে এঞ্জেলিক রেসে রুপান্তর হয়ে অমরত্ব লাভ করি!!! এজন্য ফেক কস্মোলজি শিখিয়েছে.... এরকম আরো অনেক ট্রোল। মানে অন্যভাবে আপনাকে কাব্বালিস্টিক স্যাটানিজমের দিকেই ডাকবে। ফ্ল্যাট আর্থকে শুধুই একটা মাধ্যম রূপে ব্যবহার হচ্ছে। এজন্য প্রথম থেকেই নব্য শয়তানের পূজারীদের ব্যপারে সাবধান করছি। এরা আসলে জিওস্টেশনারী সমতল জমিনভিত্তিক কস্মোলজিকে কলঙ্কিত করেছে। এই স্যাটানিস্ট গুলো পিউর লাভ, পজেটিভ ভাইব, ব্লেসিং,কম্প্যাশনসহ অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবে। অথচ এরা সবগুলোই দুরাত্মা,দুরাচার। সবগুলোই মানব শয়তান।শয়তানের পূজা যাদুবিদ্যার দিকে ওরা ছাড়া আর কারা যায় বলুন! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা মানুষের বাহ্যিক অবয়ব দেখে ভেতরের অবস্থা জানার সামান্য জ্ঞান(ফিরসাহ) দিয়েছেন বলে অধিকাংশ মানুষকে এক পলক দেখেই অনেক কিছু আল্লাহর ইচ্ছায় বুঝতে পারি বলে ওদের পরিচয় বুঝতে কষ্ট হয়না।
.
এই মিস্টিক মালাউনগুলো নাকি এখন বিবর্তনের পরবর্তী স্টেপের জন্য ওয়েট করতেছে। ওরা নাকি খুব শীঘ্রই ৫ডিতে প্রবেশ করবে। আর আমরা নাকি থ্রিডিতে থেকে যাব। 5D new earth লিখে সার্চ দিলে হাজারো ইনফো পাবেন। এগুলা শয়তানের মিথ্যা ওয়াদা। এবং কিছুটা মনগড়া ট্রোল। দাজ্জালের হাতে কথিত হ্যাভেনে শিফট হলে আর বুঝতে অসুবিধা নাই। এগুলোকে র‍্যাশোনাল করার জন্য সেই টেসলার অকাল্ট সায়েন্সের কিছু Quote ব্যবহার করে ডাইমেনশনের লেয়ার বোঝাতে আর সম্ভাবনা বোঝাতে। ওরা এও বলে ধ্যান করতে করতে আপনার আত্মার এনার্জি ফিল্ডের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াতে বাড়াতে ৫ডিতে চলে যেতে পারেন। এইসব কন্সেপ্টের আগা গোড়া সবই ওই একই শয়তানি মিস্টিসিজম। একে সলিপসিজম, আইডিয়ালিজমের এডভান্স সংস্করণ বলা যেতে পারে। ওরা শয়তানের পূজা, দেহের পূজা করে শয়তানের সাহায্য নিয়ে সর্বোচ্চ শয়তানের রেল্মে শিফট হতে পারে। ওটাই সর্বোচ্চ। ওরা সে প্রতিশ্রুতিকেই সব বানিয়ে নিয়েছে। আফসোস এই শয়তানি বিষয়গুলোর প্যাকেজ আমরা বাংলা ভাষাতেই দেশীয় ফ্ল্যাট আর্থ কস্মোলজির বিভ্রান্ত প্রচারকারী Bd Flat Earth Society নামের পেইজটিতে দেখছি। আজ দেখলাম একজন মেয়েকে খুব কনভিন্স করছে এসব স্পিরিচুয়াল স্যাটানিক গার্বেজের প্যকেজ। । একদম য্যোগধ্যান,শয়তানের পূজা,5D New Earth ascension, অকাল্ট ফিজিক্স কোনটার বাদ নাই। সাইডে মার্শাল ভিয়্যান নামের মালুকে নবী রূপে উপস্থাপন! ওই আপাও খুব ভক্তির সাথে সেসব শুনছেন আর এ্যাপ্রেশিয়েট করছেন। উনি এও জানালেন তিনিও এই পথেই হাটার ইচ্ছা পোষন করেন বহুদিন ধরে! এই পোস্টটা নোট আকারে দিলে স্ক্রিনশটও দেওয়া যেত ধারাবাহিকভাবে।
.
আমি জানিনা মানুষ এতটা ঘিলুবিহীন মূর্খ হয় কিভাবে। জন্ম সূত্রে মুসলিম পরিবার পেয়েছে, কিন্তু সে সেটা প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর সত্য পথ ছেড়ে শয়তানের হাতছানিতে সাড়া দিতে উদ্যত। ওই পেইজটা নিয়ে আগে থেকেই সাবধান করেছি এডমিন গুলো যিন্দিক এবং নব্য শয়তানের ভক্ত। ওনারা তাদের গ্রে এলিয়েন বলে তাদের। তাদের বিশ্বাস 'সব শয়তানই খ্রাপ নয়, কিছু শয়তান ভালও আছে'! আমি এলিয়েন টার্মটা শয়তান দ্বারা রিপ্লেস করেছি কারন আপনারা জানেন ওরা কারা। না জানলে আবারো পড়ুনঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html

শয়তানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গত কয়েকদিন আগে পাবলিশ করা নোটটাও গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্পর্কযুক্তঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_25.html

ধ্যান, থার্ড আই ওইসব স্যাটানিক ডক্ট্রিনগুলোর ব্যপারে আরো যদি কৌতূহল থাকেঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/chakra-third-eye-yoga_10.html

বিডি ফ্ল্যাট আর্থ সোসাইটির এডমিনরা মার্শাল সোমার্স ভিয়্যান নামের এক মালুকে নবী বলে প্রচার করে। তাই তাদের ব্যপারে আরো #সাবধান।
সমতল পৃথিবীর ব্যপারে এসোটেরিক ফাদ আছে এ নিয়ে কয়েক বছর আগেও দু একটা পোস্ট লিখেছিলাম। আইডি রিপোর্ট এর দরুন ডিজেবল্ড হওয়ায় আর পাওয়া যাচ্ছে না। আজকে পেজটিতে এসব প্রচারণা দেখে না লিখে পারলাম না। আজকের আগে হয়ত অনেক মূর্খ ভাবতো জিওস্টেশনারী এনক্লোজ কন্সমোলজি মানেই ওসব স্যাটানিক অর্চনাকেন্দ্রিক বিষয়। ওগুলোই এর কোর কন্সেপ্ট। বরং আসলে এটাকে শুধুই মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেকটা দা-বটির মত, তা দিয়ে ভাল কর্ম অপকর্ম দুইটাই করা যায়।প্রিমিটিভ এস্ট্রনমিক্যাল নোশন শুধুই তাওহীদের দিকে আহব্বান করে মৌলিকভাবে। কুরআনের ওইসব আয়াতের অসংখ্য, যেখানে আসমান জমিন চন্দ্র সূর্যের কথা উল্লেখ করে আল্লাহর সৃষ্টি নৈপুণ্য ও একত্ববাদের দিকে আহব্বান করা হয়েছে।
.
অত্র পোস্টটা কাউকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আক্রমণ করার জন্য করিনি। আজ এমনিই খালি হাতে একটানা লিখে গেছি। সামনে বিতর্কের সম্মুখীন হলে অবশ্যই কড়া ভাষার ডকুমেন্ট নোট পাব্লিশ করব। তাতে সব কিছুর রেফারেন্স সুবিন্যাস্ত থাকবে। বিইযনিল্লাহ।।
__________________
ওয়া আল্লাহু আ'লাম।।

Tuesday, November 27, 2018

৪.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[যমীনের প্রান্তসীমা]

পর্ব-৪

যমীনের প্রান্তসীমা-মানচিত্রের বাইরের অদেখা জগৎ




জমিনের প্রান্তসীমা নিয়ে অনেক কৌতূহল। অনেকেই প্রশ্ন করেন জমিনের প্রান্তভাগে কই(?), সেখান থেকে পানি পড়ে যায় না কেন। এ বিষয়টি নিয়েই হলিউড অনেকবার ব্যাঙ্গ করে ফিল্ম তৈরি করেছে[৭]। মেইনস্ট্রিম পপুলার এফই মডেল অনুযায়ী জমিনের প্রান্তভাগে চারদিকে সুউচ্চ বরফের প্রাচীর আছে। জমিনের প্রান্তভাগকে কেন্দ্র করে আরো কয়েকটা মডেল তৈরি হয়েছে। যেমন পন্ড আর্থ হাইপোথেসিস, ইনফিনিট প্লেইন ইত্যাদি। পপুলার ম্যাপ(এ্যায্যিমুথ্যাল একুইডিস্ট্যান্ট প্রজেকশন) অনুযায়ী সাউথ পোলই সারা পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। আমরা পূর্ববর্তী আর্টিকেলগুলোয় দেখিয়েছি এটা ত্রুটিপূর্ণ মডেল।





১৯৪৭ সালে অপারেশন হাইজাম্পে এডমিরাল রিচার্ড বার্ড মেরু অঞ্চল থেকে ফিরে এসে বলেন[৮], সেখানে তিনি সুবিশাল বিস্তীর্ণ ভূমি দেখতে পান। তিনি যতদূর দেখেছেন সেটা নাকি প্রায় আরেকটি আমেরিকার সমান। অন্যান্য বিমানের সাথে তার বিমানটি রওনা করলেও হঠাৎ করে রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
এডমিরাল বার্ড বরফ ঢাকা এলাকা পেরিয়ে নতুন বিস্তৃত ভূমি,জঙ্গল দেখতে পান। সেখান থেকে সূর্যকে আর দেখা যাচ্ছিল না। তাপমাত্রা প্রায় ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস,অর্থাৎ মেরু অঞ্চলের শীতের প্রকোপ নেই। নিচে হাতির ন্যায় কিছু প্রানী তার চোখে পড়ে পরে প্লেনের এ্যালটিটিউড কমিয়ে দেখেন সেগুলো ম্যামথের(অতিকায় হস্তিবিশেষ) দল। 
এরপরে আরো সামনে সুবিশাল 'সবুজ' রঙের পাহাড়ের সারি দেখতে পান। এরপরে হঠাৎ তিনি কিছু ডিস্ক এর মত আকৃতির এয়ারক্রাফটদের দেখতে পান, যারা তার সাথে চলছে। অর্থাৎ তিনি কথিত এলিয়েনদের[৯] কবলে পড়েন। এরমধ্যে সে তার বিমানের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। তারা সুবিশাল উন্নত শহরে প্রবেশ করে। তিনি ওদের মধ্যে স্বস্তিকা চিহ্নের ব্যবহার দেখেন। অবতরন করানোর পরে তাকে স্বর্ণকেশী একজন লোকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। উনি তাদের নেতা। তাকে নর্ডিক-জার্মাইক উচ্চারণে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তাকে বলা হয় তারা অনেক বছর যাবৎ মানবজাতিকে অবজার্ভ করছে। 
তারা পারমানবিক বোমার ব্যবহার দেখে শঙ্কিত। এবং কিছু করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়। বার্ড তার সাথেই কেন সাক্ষাৎ করছে জিজ্ঞেসা করলে তারা বলে এখানে শুধু তাকেই পছন্দ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে বার্ড ছিলেন একজন ফ্রিম্যাসন। অতএব কথিত এলিয়েন(শয়তানদের) পছন্দের হওয়াটাই স্বাভাবিক। এরপরে, আলাপন শেষে বার্ডকে বিদায় দেওয়া হয়। তিনি বিমানসহ সুস্থভাবে ফিরে আসে। এদিকে বেজ থেকে রেস্কিউ মিশন পরিচালনা শুরু হয়, কারন অপারেশন হাই জাম্পে অনেকেই হারিয়ে যায়। বার্ড যখন সতীর্থদের তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে, তারা তাকে এ বিষয়টি গোপন রাখতে বলে। কিন্তু তিনি তার ব্যক্তিগত ডায়েরীতে এসব ঘটনা লিখে যান[2]। ১৯৯৬ সালে ডায়েরীটা প্রকাশিত হয়। 
ঠিক একইভাবে তাকে এন্টার্কটিকায় অভিযানে প্রেরন করা হয়। তিনি জমিনের নিচের জগতে প্রবেশের কথা লেখেন। তার এই অভিজ্ঞতার বর্ননা 'হলো আর্থ থিওরির' সুবিশাল দলিলে পরিনত হয়। প্যাগান মিস্টিকরা একে আগার্থা, আগার্থি,সাম্বালা ইত্যাদি নাম দিয়েছে। উল্লেখ্য, কিছু হাদিসে নিচের জমিনগুলোয় জ্বীন জাতির বসবাসের বর্ননা পাওয়া যায়।বার্ডের এই অভিযান সবচেয়ে জনপ্রিয় সমতল জমিনের মডেলটির বিরুদ্ধে যায়। কেন না AE(Azimuthal Equidistant projection) অনুযায়ী নর্থপোল পৃথিবীর মাঝে অবস্থিত। অপরদিকে প্রতিষ্ঠিত গ্লোবিউলার আর্থ মডেলকেও ভুল প্রমান করে।
এটা সত্য যে এন্টার্কটিকায় এন্টার্কটিক ট্রিইটি নামের সামরিক সংগঠনটি অবস্থান করছে। অনুমতি বিনা সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। কেউ গেলে গ্রেফতার হবার অনেক রিপোর্ট রয়েছে। তাছাড়া সেটা নোফ্লাইং জোনের আওতাভুক্ত। মেইনস্ট্রিম এফইমডেল পন্থীরা বলে এন্টার্কটিক ট্রিইটি আরো অনেক স্থলভাগের অস্তিত্ব ম্যাপ থেকে আড়াল করে রেখেছে। এটা বিশ্বকে অনেক ছোট এবং সীমাবদ্ধ বলে প্রচার করার কাজে সাহায্য করছে।
নিচের চিত্রের মত প্রাচীন বৌদ্ধ মুশরিকদের থেকে সহস্র বছরের পুরোনো একটা ম্যাপ পাওয়া যায় যেটা সাতটি মহাদেশের বাইরেও আরো অনেকগুলো মহাদেশ মানচিত্রেদেখা যায়।


বৌদ্ধ,হিন্দু,তাও ইত্যাদি প্যাগান দর্শনপন্থীরা সাধারনত শয়তানের কাছে থেকেই এসব তথ্য পায় যা সত্যমিথ্যা মিশ্রিত অথবা অধিকাংশ সময়েই পুরোপুরিভাবে মিথ্যা। এরকম আরো প্রমানহীন ম্যাপ রয়েছে। সেসবে সূর্য চন্দ্রকে একাধিক পাওয়া যায়, তাছাড়া এর কক্ষপথটিরও কুরআন হাদিসে কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। নিচের এই ছবিটির ব্যপারে একটা সত্য তথ্য হচ্ছে এটাকে ফেসবুক থেকে দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে রাখে। কেউই এডিট না করে সরাসরি আপলোড করতে পারতো না।



ছয় মহাদেশ এর বাহিরে আরো অনেক ল্যান্ড ম্যাস আড়াল করে রাখার এই অভিযোগ আজকে অনেক বেশি আলোচিত। হয়ত এটা একদম অসত্য নয়। কেননা বাদশাহ যুলকারনাঈন উদয়াচল,অস্তাচলে পৌছেছিলেন। সেখানে তিনি অদ্ভুত কিছু মনুষ্য জাতির সাথে সাক্ষাতও করেছিলেন। এমনকি ইয়াজুজ ওয়া মাজুজ সম্প্রদায় অধ্যুষিত অঞ্চলের কাছেও পৌছেছিলেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তার পবিত্র কালামে মাজীদে ইরশাদ করেন, "
وَيَسْأَلُونَكَ عَن ذِي الْقَرْنَيْنِ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُم مِّنْهُ ذِكْرًا
إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ فِي الْأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِن كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا

فَأَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا قُلْنَا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا
قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَى رَبِّهِ فَيُعَذِّبُهُ عَذَابًا نُّكْرًا
وَأَمَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُ جَزَاء الْحُسْنَى وَسَنَقُولُ لَهُ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًا
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَى قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
كَذَلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًا
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا
قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَى أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا
قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا
آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا
فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا
قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِّن رَّبِّي فَإِذَا جَاء وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاء وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا
 وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا
"তারা আপনাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুনঃ আমি তোমাদের কাছে তাঁর কিছু অবস্থা বর্ণনা করব।আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম।
অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন। তিনি বললেনঃ যে কেউ সীমালঙ্ঘনকারী হবে আমি তাকে শাস্তি দেব। অতঃপর তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে ফিরে যাবেন। তিনি তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন।
এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেব। অতঃপর তিনি এক উপায় অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্নরক্ষার কোন আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। আবার তিনি এক পথ ধরলেন। অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রচীরের মধ্যস্থলে পৌছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না। তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন। 
তিনি বললেনঃ আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থø দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেব। তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। অবশেষে যখন তা আগুনে পরিণত হল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা গলিত তামা নিয়ে এস, আমি তা এর উপরে ঢেলে দেই। অতঃপর ইয়াজুজ ও মাজুজ তার উপরে আরোহণ করতে পারল না এবং তা ভেদ করতে ও সক্ষম হল না। যুলকারনাইন বললেনঃ এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। যখন আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত সময় আসবে, তখন তিনি একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুতি সত্য। আমি সেদিন তাদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।" [সূরা কাহফঃ৮৩-৯৯]

১৮:৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেন, "অবশেষে তিনি(যুলকারনাঈন) যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।"
কাব্বালিস্টিক বর্ননার পৃথিবীর গ্লোবিউলার মডেলে সূর্যের উদয়াচল অস্তাচলের চিন্তা একদমই অর্থহীন।

বরং সে অনুযায়ী সূর্য ৯৩ মিলিয়ন দূরে অবস্থান করছে যার চারদিকে দুনিয়া ঘুরপাক খায়!
একটি বিষয় হলো পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার এই দূরত্বের হিসাবটি বিভিন্ন যুগে পরিবর্তন হয়েছে।  এর দ্বারা প্রমান হয় হেলিওসেন্ট্রিক থিওরি অনুমান নির্ভর প্রমানহীন ধারনা বৈ কিছু নয়। অতএব, সত্য হচ্ছে সূর্য সত্যিই জমিনের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যায়[১], যেমনটা কুরআনেই আছে। ইবনে কাসির রহঃ বিশ্বাস করতেন সূর্য চতুর্থ আসমানে। এজন্য তার তাফসিরে গেলে সামান্য আপত্তি পেতে পারেন। কিন্তু তিনি তার আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে কুরআনের বর্ননানুযায়ী প্রথম আসমানে থাকবার সম্ভাবনাও উল্লেখ করেন। তাছাড়া সাহাবীদের কথা গুলো চতুর্থ আসমানে সূর্যের অবস্থানের মতামতের বিরুদ্ধে যায়। তারা স্পষ্টভাবে সূর্যের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তগমনের কথা বর্ননা করেছেন। আর এটা সমতল জমিন ছাড়া অসম্ভব।


অথচ আজকের অপবিজ্ঞান[১১] এবং অপবিদ্যা, যাদুশাস্ত্রের ভ্রান্ত মেটাফিজিক্স দ্বারা উম্মাহ এতটাই প্রভাবিত যে সেসবই আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে, এমনকি সেসবকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে। মা'আযাল্লাহ!নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন,আশা করি বুঝতে বাকি রইবে না যে ,এই পরিবর্তনশীল স্ফেরিক্যাল গ্লোব মডেলটি মূর্খ ছাড়া আর কারও বিশ্বাস করার কথা না। এটা কাফিরদের তামাশা আর ট্রোল ছাড়া কিছু না। ওদের গোলাকার পৃথিবী প্রতি বছর রূপ বদলায়।


অস্তাচলের নিকটে অবস্থানকারী সম্প্রদায়ের ব্যপারে ইবনে কাসির(রহ.) অসাধারণ কিছু আনেন যার অস্তিত্ব প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর ম্যাপ ও মডেলে অনুপস্থিত।

১৮:৯০,৯১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, "অবশেষে তিনি(যুলকারনাইন) যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্নরক্ষার কোন আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি"
 
প্রকৃত ঘটনা যে এমনই সেটা আমরা বিশ্বাস করি, কিন্তু আফসোস, আজকের মর্ডানিস্ট মুসলিমরা তা বিশ্বাস করে না। আজ এরা কাফিরদের মনগড়া ও যাদুশাস্ত্রের কুফরি কথা সমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আজ ওরা বিশ্বাস করে না জমিন সমতল এবং আসমান জমিনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ, যাদেরকে ছয় দিনে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর তাফসিরে কিছু অদ্ভুত মনুষ্যজাতির বর্ননা এসেছে যারা সূর্যের উদয়াচলে বাস করে। এদের শারীরিক গড়নের অস্বাভাবিকতার বর্ননা শুনে অনেকের কাছেই কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। আপনি এখনি গুগলে Ostrich people[১২] লিখে সার্চ দিন। এরা এখনো বসবাস করে।পা তিন আংগুল বিশিষ্ট উটপাখির মত। এছাড়া প্রাচীন ইতিহাসের অনেক জায়গায় কুকুরের মাথাবিশিষ্ট মানুষের বর্ননা পাওয়া যায় যাদেরকে Cynocephaly [১৩] বলা হয়। এছাড়া পিগমি বিশ্বের সবচেয়ে খর্বকায় জাতি। এসব আল্লাহরই বৈচিত্রময় সৃষ্টি। সুতরাং নিচের বর্ননা খুব বেশি অস্বাভাবিক লাগার কথা না।

আজকের কথিত বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগে বলা হয় স্ফেরিক্যাল(গোলাকৃতি) পৃথিবীর সর্বত্রই আজ হাতের মুঠোয়। গোটা পৃথিবীর ম্যাপ দেখানো হয়। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশাল জিওগ্রাফিক্যাল ম্যাপ টাঙানো হয়। ওদের দেখানো 'আংশিক' ম্যাপে উদয়াচল, অস্তাচলের অস্তিত্ব নেই। ইয়াজুজ ওয়া মাজুজদের দেশটাকেও পাওয়া যায় না, এজন্য কখনো ইহুদীদেরকে কখনো খ্রিষ্টানদেরকে,কখনো মোঙ্গলদেরকে ইয়াজুজ মাজুজ বানিয়ে ফেলা হয়। আর এডমিরাল বার্ডের দেখা আর্কটিকের ওপারে আমেরিকার চেয়েও বড় স্থলভাগ এবং সবুজ পর্বতসারি?!যেখানে সূর্যের উদয়াচল ও অস্তাচলেরই ম্যাপ নেই সেখানে ওটার প্রশ্ন করা অমূলক। সূরা তালাক্কের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু কাসির বিস্ময়কর এক হাদিস উল্লেখ করেনঃ


এবার বলুন পশ্চিমের ওই শুভ্র স্থলভাগের ম্যাপটি কি প্রতিষ্ঠিত ভ্রান্ত স্ফেরিক্যাল আর্থের দেখানো সীমাবদ্ধ ম্যাপ অনুযায়ী কোথাও রয়েছে যেখানে সূর্যের পথ চল্লিশ দিনের? এটা প্রমান করে আমাদের চেনাজানা প্রচলিত ম্যাপের বাইরে উত্তর, দক্ষিন, পূর্ব,পশ্চিমে আরো অনেক কিছুই আছে যার অনেককিছুই আল্লাহ যুলকারনাঈনকে দেখিয়েছিলেন।
জনপ্রিয় এ্যাযিমুথাল এক্যুইডিস্ট্যান্ট ম্যাপ অনুযায়ী চারদিকে বরফের সুউচ্চ দেওয়াল দিয়ে পৃথিবী ঘেরা। তাদের ম্যাপ অনুযায়ী জমিনের প্রান্তসীমার ব্যপারে স্পষ্ট কিছু পাওয়া যায় না। জমিনের প্রান্তভাগের বিষয়টিকে বিদ্রুপ করে অনেক ছবি ভিডিও অনলাইনে রয়েছে। আগে একটা সময়ে গুগলে সার্চ দিলে নিচের ছবির মত অনেক বিদ্রুপাত্মক ছবি আসতো।

আমেরিকার ৪২% জনসংখ্যা ক্রিয়েশনিজমে বিশ্বাসের পাশাপাশি এখন সমতল পৃথিবীতেও বিশ্বাস করা শুরু করেছে। এজন‌্য এখন সার্চ দিলে বিদ্রুপাত্মক ছবির জায়গায় নিচের ছবির মত আল বিরুনীর AE Model এর ছবি আসে।



মুসলিম মাত্রই প্রত্যেকেরই উচিত অদেখা জগতের ব্যপারে কুরআন ও হাদিসের উপর নির্ভর করা। হাদিসে এ ব্যপারে সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে। জমিনের প্রান্তসীমা ক্কাফ নামক সবুজ পাহাড়ের সারি দ্বারা বেষ্টিত। আসমান ওর উপরেই মিলিত হয়েছে। সুতরাং জ্বীন ও মানুষের মধ্যে কেউই জমিনের প্রান্তসীমা অতিক্রম করতে পারে না আল্লাহর সাহায্য ছাড়া।

ইমাম ইবনে জারীর তাবারি(রহ.) এ সম্পর্কে উল্লেখ করেন,
 "Allah created the mountain Qaf all around the Earth. It is called stake of the Earth, asit is said in the Quran, 'And the mountains as pegs?' This world is in the middle of the mountain of Qaf as the finger is in the middle of the ring. No man can reach there, for he needs to spend four months in the darkness, In this mountain there is no sun, no moon no stars and it is so blue that the azure colour of the sky is the brightness of the mountain Qaf that reflects on the sky, and it appears this colour, If this was not so, the sky would not be blue. All the mountains that are seen in this world are from the mountain Qaf. ..."[৪]

ইবনে আব্বাস(রাঃ) এর কথিত[৬] তাফসীরে সূরা ক্কাফের প্রথম আয়াতের ব্যখ্যায় বলা হয়ঃ


ইমাম ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ তার তাফসিরে সর্বত্র সমতল জমিনের সপক্ষে অবস্থান করলেও ক্কাফ পর্বতের বিষয়টিতে আসা হাদিসের মতনে তার সন্দেহ তৈরি হয়। এ ব্যপারের বর্ননাটি তার জ্ঞান ও বিবেক বিরোধী মনে হয়, এজন্য তার পূর্ববর্তী আলিমগন এ ব্যপারে আসা এ হাদিস ও ব্যাখ্যাকে গ্রহন করলেও তিনি সন্দেহ করেছেন। আমার কাছে এ হাদিস ও ব্যাখ্যাটিকে বর্তমান সময়ে সমতল জমিনের পক্ষে বলা কাফিরদের বরফের বেষ্টনীর ব্যাখ্যার চেয়ে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য,যৌক্তিক এবং নির্ভরযোগ্য মনে হয়। পূর্ববর্তী অসংখ্য আলিম,মুফাসসীরীন এর সপক্ষে বলেছেন।


ইবনে আবি আল দুনিয়া এবং আবু আল শাইখ, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেনঃ 
“Allah has created a mountain called Qaf which surrounds the world, and whose roots stem from the rock on which the earth rests. Whenever Allah wants to shake a town He orders that mountain to shake the root that belongs to that town. That is why earthquakes occur in some places exclusively of others.”


আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা থেকে ইবনে মুনাযির, আবু আল শাইখ, আজহামা,আল হাকিম, ইবনে মারদুআহ প্রত্যেকেই সূরাতুল ক্কাফের প্রথম(৫০:১) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ
“It is a mountain of emerald surrounding the world, on which rest the two sides of the sky.”

ইমাম সুয়ূতি(রহঃ) al-Durr al-Manthur এ বলেন মুজাহিদ(রঃ) থেকে আব্দুর রাজ্জাক বর্ননা করেন যে, “Qaf is a mountain surrounding the world.”

ইমাম বাগাভী(র) তার তাফসির মা'আলিম আল তানজিলে ইকরিমা ও যাহহাক (রঃ) থেকে বর্ননা করেন, 
Qaf is a mountain of green emerald surrounding the world the way a wall surrounds a garden. The sky’s sides rest over it, hence its blue color.”[৫]

অর্থাৎ, যেভাবে দেওয়াল বাগানকে চারদিকে ঘিরে রাখে, তেমনি ক্কাফ নামের সবুজ পর্বতসারি পৃথিবীর প্রান্তভাগকে ঘিরে রেখেছে। গম্বুজাকৃতির আসমানের দুই প্রান্তভাগ এর উপরিভাগে স্পর্শ করেছে। সুতরাং এই enclosed system থেকে বের হবার পথ নেই।
এত কিছু দেখবার পরেও আজকের মুসলিমরা অদেখা সৃষ্টির ব্যপারে কাফিরদের চিন্তাধারার ইত্তেবা করে। ওরা এ বিষয়গুলোকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে। জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে বিদ্রুপ করতে ভোলে না কিন্তু এদিকে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র[১০] নিঃসৃত অপবিদ্যায় নির্ভর করতে মোটেও লজ্জাবোধ করে না। এদের কতক আবার অনলাইনে বাহ্যত অনেক দ্বীনদার। কিন্তু এমন সব কথাও বলে ফেলে যেটা রাসূল(সাঃ) ও সাহাবীদের পর্যন্তও গড়ায়। বস্তুত, এই প্রবণতা মু'তাযিলা ও নিকৃষ্টতম মুরজিয়াদের মাঝেই পাওয়া যায়।
ওয়া আল্লাহু আ’লাম



রেফা:

Friday, June 29, 2018

আপনি কি শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রে বিশ্বাসী?

পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে আজকের বিজ্ঞান যা বলে তার শেকড় অনুসন্ধান করতে থাকলে অবশেষে প্রাচীন ব্যবিলনের নাম চলে আসে। আর সেখানে গজিয়ে ওঠা শাস্ত্রসমূহে কস্মোলজির ভিত্তিমূল পাওয়া যায়। সেটা পৃথিবীর স্ফেরসিটি বা গোলাকৃতির তত্ত্ব। এর সাথে বিগব্যাং, বিবর্তনবাদ,ইনফিনিটি,প্লুরালিটি প্রভৃতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। প্রাচীন বাবেল শহরের ইহুদীদের কাছে এ সকল শাস্ত্র গচ্ছিত ছিল।

ইজরাইলে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম কাব্বালা ইন্সটিটিউট এর চেয়ারম্যান র‍্যবাই মিকাঈল লেইটম্যানকে কাব্বালার অরিজিন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কাব্বালার জন্ম বাবেল শহরে। কাব্বালার ব্যপারে অনেক ভুল ধারনা প্রচলিত আছে, যেমনঃএটা যাদুশাস্ত্র। এটা ভুল ধারনা। অনেক বছর যাবৎ এটা লুকায়িত ছিল তাই এরূপ ধারনা হয়েছে। কাব্বালা হচ্ছে সাইন্স।....."

যাইহোক, পুনর্জন্মবাদী যাদুকর পিথাগোরাস ব্যবিলন সফরে গিয়ে গুপ্ত জ্ঞান লাভ করে ফেরেন। প্যাগান যাদুকর এবং ইহুদীদের থাকা পাওয়া অপবিদ্যা নিজের নামে দেশে ফিরে প্রচার শুরু করেন। ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাসও এমনকি একথা বলেন।
Hermippus পিথাগোরাস এর ব্যপারে বলতেন, "imitation of the doctrines of the Jews and the Thracians, which he transferred to his own philosophy."

Josephus একথা জোর দিয়ে বলেন, "For it is truly affirmed of Pythagoras that he took a great many of the laws of the Jews into his own philosophy."

এরিস্টটলের শিষ্য এরিস্টোক্সাস বলেন, পিথাগোরাস তার মৌলিক জ্ঞান লাভ করেন 'পূর্বদিক'(ইরাকের বাবেল শহর) থেকে।
এছাড়াও এরিস্টোবুলাসসহ অনেকেই অভিন্ন তথ্য প্রদান করেন।

পিথাগোরাসকেই সর্বপ্রথম পৃথিবীর গোলাকার তত্ত্বের কথক ও প্রচারক বলা হয়।
ফ্রিম্যাসনের মহাগুরু এলবার্ট পাঈক বলেনঃ"পিথাগোরাস যে মহাকাশবিজ্ঞান শিখিয়েছে তা মূলত জ্যোতিষশাস্ত্র(এস্ট্রোলজি): তার সংখ্যাতত্ত্বের বিজ্ঞান কাব্বালার নীতিমালার উপরে প্রতিষ্ঠিত। সবকিছুই সংখ্যার পর্দা দ্বারা ঢাকা।"

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُسَدَّدٌ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنِ اقْتَبَسَ عِلْمًا مِنَ النُّجُومِ اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ ‏"‏ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

সুতরাং পিথাগোরাস বাবেল শহরের যাদুবিদ্যার একটি শাখাকে শিখিয়েছে astronomy এর নামে। অর্থাৎ পৃথিবীর আকার সংক্রান্ত বিষয়টি। এসব ছিল কাব্বালার নীতিমালার উপর প্রতিষ্ঠিত। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে বাবেল শহরে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র কাব্বালায় যে পৃথিবীর বিকৃত গোলাকৃতির ব্যপারটি ছিল। কাব্বালিস্টিক অরিজিনের সুস্পষ্ট দলিল আজও বিদ্যমান। কাব্বালা শিক্ষক র‍্যাবাই বিলি ফিলিপ্স বলেনঃ
'প্রাচীনকালে কাব্বালাকে বলা হত যাদুবিদ্যা।কাব্বালা এমন সব ধারনার ব্যপারে বলেছে যা শুধু কয়েক শতাব্দী বেশি এগিয়েই নয় বরং হাজার বছরের এগিয়ে, উদাহরণ স্বরূপ, জোহার(কাব্বালার কিতাব) ২০০০ বছর আগে বলেছে যা কিনা কলম্বাসের চেয়েও ১৫০০ বছর আগে, জোহার গোলাকৃতি(বর্তুলাকার) পৃথিবীর কথা বলেছেঃ
"গোটা দুনিয়াটা উদগত হয়েছে বলের ন্যায় গোলাকৃতিতে, এতে কিছু লোক উপরে এবং কিছু লোক নিচের দিকে রয়েছে।"
_জোহার
(কাব্বালা)'!!!

সরাসরি দলিলঃ
וּבְסִפְרָא דְּרַב הַמְנוּנָא סָבָא, פָּרִישׁ יַתִּיר, דְּהָא כָּל יִשׁוּבָא מִתְגַּלְגְּלָא בְּעִגוּלָא כַּכַּדּוּר, אִלֵּין לְתַתָּא, וְאִלֵּין לְעֵילָּא, וְכָל אִינּוּן בִּרְיָין מְשַׁנְיָין בְּחֶזְוַוְייהוּ מִשִׁנוּיָא דַּאֲוִירָא. כְּפוּם כָּל אֲתַר וַאֲתַר, וְקַיְימִין בְּקִיּוּמַיְיהוּ כִּשְׁאָר בְּנֵי נָשָׁא.

English: Rav Hamnuna Saba (the elder) explains further in his book that the entire inhabited land rolls around like a ball, so that some are up and some are down. TO WIT, THE CREATURES AROUND THE GLOBE ARE OPPOSITE EACH OTHER AND THE SEVEN SECTIONS OF THE GLOBE ARE SEVEN LANDS. (The Seven Continents) All of the creatures OF SIX OF THE LANDS are different in their appearance according to the difference in the atmosphere in each place, and they live like any other man.

[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 141]


וְעַל דָּא אִית אֲתַר בְּיִשּׁוּבָא, כַּד נָהִיר לְאִלֵּין, חָשִׁיךְ לְאִלֵּין, לְאִלֵּין יְמָמָא, וּלְאִלֵּין לֵילְיָא. וְאִית אֲתַר דְּכוּלֵיהּ יְמָמָא, וְלָא אִשְׁתְּכַח בֵּיהּ לֵילְיָא, בַּר בְּשַׁעֲתָא חֲדָא זְעֵירָא. וְהַאי דְּאָמַר בְּסִפְרֵי קַדְמָאֵי, וּבְסִפְרָא דְּאָדָם הָרִאשׁוֹן הָכִי הוּא.

English: There is an inhabited place, so that when there is light on some - ON THAT SIDE OF THE GLOBE - it is dark for others ON THE OTHER SIDE OF THE WORLD. THUS when it is day for one group, it is night for the others. There is an inhabited place where there is day only and no night, save for a little while. (Antarctica)[১]

[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 142]


" The world is as round as a ball. When the sun comes out in the east, it goes in a circle until it reaches below the earth, and then it becomes evening. At that time, it gradually descends by circles of certain steps, descending and circling the whole earth and the whole world.

 When the sun comes down and is covered by it, it grows dark upon us and lights up to those who are dwelling below us, those who are on the other side of the earth, below our feet. And so it grows dark on one side and shines on the other side, below it, following the world and circle of the earth, round and round.”[২]

[New zohar, beresheet:619-620]



“That the world is round, as it is said in the Jerusalem Talmud of Alexander of Macedon, who rose up and up until he saw the world as a ball and the sea as a bowl; ‘the sea’ is the ocean which surrounds the whole world.”[৩]

[Tosafot on tractate Avodah Zarah 41a, s.v.k’kadur]



অতএব, এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে আজকের এস্ট্রোনমি/এস্ট্রোফিজিক্স শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের বিকৃত কথা ছাড়া আর কিছু নয়। শয়তান সবসময় ফিতরাতকে বিকৃত করতে পছন্দ করে। আল্লাহ যা বলেন তার বিপরীতটাই বলবে। রাসূল(সাঃ) ও তার সাহাবাগন তাওহীদের(একত্ববাদ) কথা বললে, শয়তান শেখাবে ইত্তেহাদের কুফরি কথা।ও এমন এক কস্মোলজি আবৃত্তি করবে যা থেকে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব এবং অবশেষে তার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা যায়। সেই কুফরি শাস্ত্রেরই অনুসরন করে ব্যবিলনের ইহুদীরা। আল্লাহ আযযা ওয়াযাল বলেনঃ
"তারা(ইহুদীরা) ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত,সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না.... ।"[২:১০২]

সুতরাং বুঝতেই পারছেন শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকেই আজ সাইন্স বলে শেখানো হয়। জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু বলেন,"আমি একজন পদার্থবিজ্ঞানী। আমি এটা বলতে পছন্দ করি যে,আমি এলবার্ট আইনস্টাইন, নিলস বোরের মত দানবের(মহাবিজ্ঞানীদের) পদচিহ্নে হাটি। আমি কোন দার্শনিক নই। এটা বরং আশ্চর্যজনক যে, আধুনিক মহাকাশ বিজ্ঞান, যা আমরা স্যাটেলাইট দ্বারা পাই তা যেন জোহার এবং প্রাচীন কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের ভুতুড়ে প্রতিফলন।"

মা'আযাল্লাহ!! কাফিররা শয়তানি কুফরি শাস্ত্রকে বিজ্ঞানের মোড়কে শেখাচ্ছে, এর সকল প্রাচীন শিক্ষকরাই ছিল শয়তানের একান্ত অনুগত গোলাম। এরপরে আজ সেটাকে নাম(কাব্বালা) ধরেও জানিয়ে দিচ্ছে। এরপরেও কিছু মুসলিম জেনেশুনেও এই শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের অনুসরন করেই পছন্দ করে। তারা এমনকি যুক্তি দিয়ে বৈধ করতেও চেষ্টা করে। এরা কাফেরদের কুফরি শাস্ত্রের কথা গুলোকে রহমানের আয়াতগুলোকে অপব্যবহার করে সত্যায়ন করতেও চেষ্টা করে। ইন্না লিল্লাহ। এভাবে(রূপকার্থে) মদ ও মধুকে মিলিয়ে দাওয়াতি কাজও চালায়। দুটিকে একাকার করে দেয়! আমরা যখন ওদের সতর্ক করি, তখন জঙ্গী, কাফেরদের দালাল ট্যাগ সহ অনেক কিছুই লাভ করি। আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও রিপোর্ট করা হয়।

ওরা আমাদের কাছে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের বিপক্ষে সুস্পষ্ট সহীহ হাদিস বা কুরআনের আয়াতের দলিল চায়, নতুবা তারা এই অপবিদ্যার শাস্ত্রকে আঁকড়ে ধরে থাকবে,যেমনি ইহুদীরা করেছে। কিবলাধারী ইহুদী ছাড়া এরূপ চিন্তা আর কাদের হতে পারে! অথচ সুস্পষ্ট শয়তানি কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের বিপক্ষে একটিও যদি দলিল কুরআন সুন্নাহ এ না থাকে, এরপরেও সে শাস্ত্রের কোন কিছুই কস্মিনকালেও মুসলিমদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ কুরআন ও হাদিসের সমস্ত বর্ননা কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি ও কস্মোজেনেসিসের বিপরীতে। এবং এ ব্যপারে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে।

হক্কের মাপকাঠি তথা সাহাবীদের (রাযি.) জামাতের আকিদা ও শিক্ষাও ছিল কাব্বালিস্টিক ওয়ার্ল্ডভিউ বিপরীত মেরুর। আর সেসব ঠিক তাই যার ব্যপারে আমরা বলি। কিছু অন্তরে রোগগ্রস্ত লোক, বরেণ্য আলিম ও উলামাদের রেফারেন্স নিয়ে আসে, এই আশায় যদি কাব্বালিস্টিক কস্মোলজিকে সত্যায়ন করা যায়। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলি, প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত যত আলিমগন অসচেতনভাবে এর সপক্ষে কিছু বলেছেন আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সত্যিকারের আলিমরা সাধারনত তাদের ব্যক্তিগত মত প্রকাশের সাথে সাহাবাদের জামাতের অনুসরনের দিকে রিডায়্রেক্ট করতেন। ইমাম আবু হানিফাও(রহঃ) এরূপ করেছিলেন। অপবিজ্ঞানের সপক্ষে যায় এরূপ কারও কথা যদি আল্লাহ ও তার রাসূল(ﷺ) এবং সাহাবী (রাযিঃ) এর কথা ও বিশ্বাসের সাথে সংঘর্ষ তৈরি করে, তবে তা অনুসরণযোগ্যতা হারায়। যারা এরূপ বলতেন, তারা অধিকাংশই এসব ব্যপারে গভীরভাবে না জেনেই কুরআন-সুন্নাহর বাহিরে গিয়ে যাদুশাস্ত্রের সপক্ষে বলেন। কেউবা তৎকালীন পরিস্থিতির স্বীকার। কেউবা দাওয়াতের স্বার্থে হিকমাহ অবলম্বন করতে গিয়ে....! আল্লাহ তাদের ব্যপারে সর্বোত্তম জানেন। অতএব তাদের কোন ঐরূপ কোন বক্তব্য বা মতামত কোন কিছুই প্রমান করে না।এজন্য

আমাদের দ্বারা কাব্বালিস্টিক 'এস্ট্রলজি'কে প্রমোট করে এমন কোন কিছুরই নূন্যতম মূল্যায়নও করা হয়না।
কাব্বালিস্টিক এস্ট্রনমির পক্ষে তাদের কোন প্রকার যুক্তির কোনরূপ গ্রহণযোগ্যতা নেই। অধিকন্তু, গোল পৃথিবীবসহ অন্য সকল এস্ট্রোনমির নামে যা কাফেররা দেখায়, সেসবের অধিকাংশই মিথ্যা। অধিকাংশই কম্পিউটার জেনারেটেড এনিমেশন এবং ফটোশপ দ্বারা বানানো ছবি। সত্য তো ঠিক তাই যা আল্লাহ ও তার রাসূল(সাঃ) বলেছেন।
আল্লাহ আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। জমিনকে করেছেন শয্যাক্ষেত্র স্বরূপ এবং আসমানকে করেছেন জমিনের উপর গম্বুজের ন্যায় সুউচ্চ ছাদ।

Cosmological distortion কোন superficial ব্যপার নয়। বরং এর সাথে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। ওরা কুফফারদের কথা গুলো দ্বারা রহমানের আয়াতের সত্যায়নের হীন অপচেষ্টা চালায়। রহমানের পবিত্র আয়াতগুলো দ্বারা শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে সত্যায়ন করার হীন অপচেষ্টা চালায়। খুব শীঘ্রই অপবিজ্ঞানের কোন গ্রহণযোগ্যতাই থাকবে না(ইনশাআল্লাহ)। সত্য ও মিথ্যার মাঝামাঝি বলে কোন কিছু রাখা হবে না। বিইযনিল্লাহ। শুধু অপেক্ষা করুন।

পরিশেষে প্রশ্ন থাকলো,আপনি কি বাবেল শহরের শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে পছন্দ করেন, নাকি আল্লাহ ও রাসূল(ﷺ) এর নিদর্শন ও নির্দেশনাবলী সম্বলিত শাস্ত্রকে?


রেফাঃ
[১]https://kabbalah.com/en/master-kabbalists/the-land-is-a-ball

[২]http://www.kabbalah.info/eng/content/view/frame/86376?/eng/content/view/full/86376&main

[৩]http://daatemet.org.il/en/torah-science-ethics/scientific-errors-in-torah/what-the-sages-knew-about-the-shape-of-the-earth/