Wednesday, March 31, 2021

মোদি বিরোধী আন্দোলন এবং বাস্তবতা

এটা সুপ্রচলিত কথা, মু'মিনরা একই গর্তে দুইবার পা ফেলে দংশিত হয়না, ন্যাড়া বেল তলায় একবারই যায়। ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের গনহত্যার দ্বারাই শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন ছিল হেফাজতের ছায়াতলে থাকা বাংলাদেশে কওমী আলিম উলামা ত্বলিবুল ইল্মদের কর্মপন্থাকে পুনর্বিবেচনা করে পরিবর্তন করে ইদাদ ও জিহাদের নববী মানহাজের দিকে আসা। কিন্তু তারা সেই আগের অবস্থানে থেকে ছোট শয়তানের কাছে বড় শয়তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল হরতাল করে। ছোট শয়তান জবাবে তাদের স্বভাবসুলভ আচরণই করে ১৭ টি প্রাণকে দুনিয়া থেকে বিদায় দিয়ে। তারা এবার রাবার বুলেট কিংবা টিয়ারশেল না, সরাসরি শটগান, একে৪৭ ব্যবহার করে নিরস্ত্র আলিম উলামাদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের ক্যাডাররাও সামরিক বাহিনীর মতই শটগান নিয়ে আলিম উলামাদের উপর বর্বর হামলা চালায়। 


মামুনুল হক সাহেবগনের দ্বীন প্রতিষ্ঠার কর্মপন্থা এরকম যে তারা এক্সিস্টিং শাসকদেরকে মানবরচিত সংবিধান- জুমহুরিয়া দ্বারা শাসনের জন্য তাকফির করে না। এই কারনে তারা তাদের উপর শারঈ একাডেমিক কোন নীতির অনুসরণ করেনা। বরং তারা এই প্রতিষ্ঠিত জাহেলি শাসন ব্যবস্থার উপর সন্তুষ্ট থেকে তাদের থেকে নানান সুযোগ সুবিধার আশা এবং দাবিদাওয়া আদায়ের আশা করে। শাপলাচত্বরে যে মহাসমাবেশ হয়েছিল সেটাও সরকার পতনের বা তাদেরকে তাগুত সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ছিল না। বরং উদ্দেশ্য ছিল কুফরি সংবিধানের অধীনে ইসলামবান্ধব কিছু দাবিদাওয়া আদায়ে এত এত দফা।  তাদের দাবিদাওয়া বরাবরেই কুফরি ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা পরিপন্থী তাই এক্সিস্টিং কন্সটিটিউশনে এ্যাপ্লাই করা বেশ প্রব্লেমেটিক। মূল সমস্যা হচ্ছে ঈমান এবং কুফর কখনো একসাথে হয়না। এখানেও তাই। হেফাজতের কর্মপন্থা হচ্ছে কুফরের অধীনে তাগুতকে কুফর না করে ঈমানের নূর প্রোজ্জ্বলনের চেষ্টা। 


কিছুদিন আগে মূর্তি স্থাপন নিয়ে হওয়া প্রতিবাদ আন্দোলনে মামুনুল হক সাহেব একভিডিওতে সরাসরি বলেন, দেশের সংবিধানের সাথে তাদের কোন শত্রুতা বা বিদ্বেষ নেই। আরেক বয়ানে শেখ হাসিনাকে তোষামোদ করে বলেন, 'আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে আপনার সাথে আন্তরিকতা রাখতে বলেছেন, এটা আমার ঈমান যে আমি আপনার সাথে আন্তরিকতা রাখব।'

আমরা যেটা শুনছি - তিনি বলছেন, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাগুতের সাথে আন্তরিকতা রাখতে বলেছেন। এটা তার ঈমানী কাজ!!! 


মোটকথা হচ্ছে তারা তাগুতকে তাগুত বলে স্বীকার করেন না এবং যাবতীয় গণতান্ত্রিক জাহেলি নীতিকে তারা মান্য করেই সব আন্দোলন করে। যেমন, হরতাল,বিক্ষোভ মিছিল ইত্যাদি। তারা শাপলাচত্বরে যে উদ্দেশ্য এবং কর্মপন্থার উপর দাঁড়িয়ে মহাসমাবেশ করে সেটাই বাতিল। সেখানে গিয়ে জীবনকে বিপন্ন করাও নিস্ফল কর্ম বা অরণ্যেরোদন। যদি সবাই তাওহিদ প্রতিষ্ঠার চেতনা থেকে তাগুতের বিরুদ্ধে এক হয়েও মাঠে  নামত, তাতেও গ্রহণযোগ্যতা ছিল যদিও আসলিহাত এবং প্রস্তুতি ছাড়াই ময়দানে নামা সুন্নাহ পরিপন্থী। 


একইভাবে মালাউন মোদি দেশে এসেছে। মোদির নিয়ন্ত্রনেই সারাদেশ। এই সরকার মোদিরই সেবাদাস। বাংলাদেশ আজ ভারতের আনঅফিশিয়াল স্টেইট। এই ক্ষমতাসীন সরকারই হিন্দুত্ববাদকে দেশে শক্তিশালী করেছে, এমতাবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদেশে ওদের গুরু প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমন খুব স্বাভাবিক, যেখানে তাগুত ক্ষমতার আসনে বসা। বড় শয়তান তুল্য মোদির আগমনের বিরোধিতা করে ছোট শয়তান তুল্য সরকারের সামনে বিক্ষোভ করলে স্বভাবতই আপনাকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লিকুইডেট করবে। করেছেও। তাগুতের কর্ম এবং প্রতিক্রিয়া বুঝে কর্মপন্থাকে সাজানো হিকমাহ'র পরিচয়। কিন্তু আফসোসের বিষয় হেফাজত ও কওমী আলিম উলামাদের রাহবারগন এই শাসকদেরকে তাগুত বলেই মনে করেন না। এজন্য অজস্র নিরীহ, নিরস্ত্র আলেম, ইয়াতিম অসহায় তালিবুলইলম তাদের বিক্ষেভের ডাকে মাঠে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভুল মানহাজে উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রাণ দেয়। তাগুতবাহিনীগুলো এদের উপর পাখির মত গুলি চালিয়ে শহীদ করেছে, আহত করেছে অগণিত মুসলিমদের। হেফাজতে ইসলাম এবং আলিম উলামাদের রাহবারদের দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে চলমান কর্মপন্থার উদাহরণ অনেকটা এরূপ যে, তারা একটা ট্রাকের উপর উঠে ট্রাকের সামনের অংশকে হাত পা দিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঠেলছে,কিন্তু ট্রাক এক ইঞ্চিও আগাচ্ছেনা। একইভাবে তারা এক্সিস্টিং অর্ডারের ভেতরে দাঁড়িয়ে পরিবর্তন কামনা করে। আপনাকে অবশ্যই সিস্টেমকে করাপ্টেড স্বীকৃতি দিয়ে বাহিরে আসতে হবে। প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থাকে কুফরি সাব্যস্ত করে তাগুতকে বর্জন করতে হবে। নতুবা তারা আজীবন ইসলাম বিরোধী ইস্যুকে কেন্দ্র করে কয়দিন পর পর : আন্দোলন > বিক্ষোভ মিছিল > গুলি > আহত নিহত > রাহবারদের সংবাদ সম্মেলনে তীব্র নিন্দা এবং দু চারটাকা ক্ষতিপূরনের দাবি > হরতাল > তাগুতের দমন পীড়নে চুপ......আবারো কয়দিন পর নতুন ইস্যুতে আন্দোলন > বিক্ষোভ মিছিল > গুলি………… এর সাইকেলে/ চক্রে মধ্যে আটকে থাকবে। বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে। 


আশার বিষয় যে, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি একটা মাদ্রাসা থেকে সরকারি তাগুত বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন সরকারকে তাকফির করেছে। তবে, আক্রান্ত হবার দরুন রাগ ও আবেগের বশবর্তী হয়ে বলার স্থলে শারঈ একাডেমিক্যালি ইরতিদাদের বিষয়টি স্পষ্টীকরণই ইল্মের পরিচয় বলে গণ্য হবে। 


কিছু ভাই ইতোমধ্যে আবেগ অথবা অন্য কারনে লেখা শুরু করেছেন, এখনই বায়াহ নিয়ে একটা জামায়াত বা তানজিম তৈরি করে দেশকে দারুল হরব ঘোষনা করে সরকারকে তাকফির করে জিহাদের দিকে চলে যেতে। এ মর্মে বেশ কিছু দফার প্রস্তাবনা তারা করেছে দেখেছি। 


এই দফাগুলো কার্যকর করা অনেক প্রয়োজনীয় হলেও এমুহুর্তে একদম আনওয়াইজ থিংকিং হবে, যেহেতু প্রথম দফা(মুজাহিদ জামায়াত গঠন ও বায়াহ) কার্যকরের সাথে সাথেই মাদ্রাসার ছাত্রদের এক্টিভ জঙ্গীগোষ্ঠী সাব্যাস্ত করা হবে এবং যৌথ অভিযানে হত্যা - আক্রমণ করা হবে গনহারে।এদিকে প্রতিরোধের জন্য আসলিহাতের কোন কিছুই নেই। আমাদের বাংলাদেশের ল্যান্ডম্যাসের বিচারে ভাল আনসারের অভাব আছে। এবং মাদ্রাসাগুলো শহরের ভেতরে মানে তাগুতের নিয়ন্ত্রিত এলাকাতেই আছে। সুতরাং একদমই অনুপযোগী স্থান। যদি এমন হত মাদ্রাসাগুলো সুন্দরবন ঘেষা অঞ্চলে অথবা পাহাড়িয়া অঞ্চলে কিংবা নিঝুম ,মহেশখালী ,সেন্টমার্টিনের মত বিচ্ছিন্ন স্থানে হত তবে এমন প্রস্তাবনা কার্যকর করার চিন্তা করা যেত।তারা যে পরিকল্পনার কথা বলছে সেটা অব্জেক্টিভবিহীন গনশাহাদাত হাসিলের জন্য ভাল। এবং সেটা হবে অল্প সময়ের কর্মপন্থা। হুজিদের মত কিছুদিন পরেই তাদের পাওয়া যাবেনা। এটা মাদ্রাসা শিক্ষাকেই হুমকিতে ফেলবে। বিদেশী প্রভুদের চোখে আনার মাধ্যমে এদেশে ইসলামই বিপন্ন অবস্থায় পড়বে। বর্তমান অবস্থা বিচারে কওমী তোলাবাদের পুলিশদের মোকাবেলারই শক্তি নেই। শাইখুল হাদিস আবু ইমরান হাফিজাহুল্লাহ  বলেন, "দুনিয়াটা দারুল আসবাব"। অর্থাৎ আপনাকে দুনিয়াতে উপকরণ গ্রহন করতে হবে। সব কিছু গায়েবী মদদে হবে এমন আশা করে কর্মবিমুখ হওয়া সুন্নাহ না। এখানে পুলিশের পর র‍্যাব, বিজিবি,সেনাবাহিনীসহ অনেক জুন্দুশশাইত্বন আছেন। বিদেশী প্রভুদের ডাক দিকে দৌড়ে চলে আসবে। জাতিসংঘ নামের তাগুত সংঘ যদি ভারতকে নিয়ন্ত্রনের হুকুম দেয় তখন মালাউনদের সেনায় দেশ ভরে যাবে। ওদের অস্ত্রসস্ত্রের সামনে স্টিক্স ফ্লেশ এন্ড ব্লাড দিয়ে সামনে যাওয়া অনুর্বর মস্তিষ্কের আত্মঘাতী কল্পনা। তাই হিকমাহপূর্ন চিন্তা হবে, পাব্লিকলি এসব না করে ইন্টারনালভাবে দাওয়াহ ইদাদ চালানো। অনেকে সরকারকে প্রকাশ্যে তাকফির করে ইজমার দাবি করছে,এটাও মাদ্রাসার আলিম তোলাবাদের বিপদে ফেলবে। আপনারা জানেন তারা কতটা ডিপেন্ডেন্ট সরকারী সিস্টেমের উপর। বি.বাড়িয়াতে কয়েকদিন বিদ্যুৎ গ্যাস বন্ধ করে রেখেছিল তাগুত, এতেই অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। এজন্য আপাতত বাহ্যিকভাবে কোন কিছু প্রকাশ না করা উত্তম,যেটা তাদেরকে সংকটে ফেলে। উচিত হবে উলামাদের রাহবারদের মধ্যে গুপ্ত আলোচনায় ভেতরে ভেতরে অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা। তাগুতকে বর্জন করে নববী মানহাজের দিকে আসার পথে তাদের ইনফ্রাশস্ট্রাকচার কে ভেতর থেকে ঢেলে সাজানো। আফগানি দেওবন্দী মুজাহিদ উলামা এবং আফগানী ইমারার সাথে অফিশিয়াল গুপ্ত সম্পর্ক তৈরি করা এবং তাদের এদেশীয় উমারাহ এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সেই সাথে উচিত মানহাজগত পরিবর্তন আনার পর, এই ধরনের সুপারফিশিয়াল বিক্ষোভ হরতাল না করা। দুএক মাস ধুপধাপ "কিছু একটা করার নাম " জিহাদ না। এভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবে আলহামদুলিল্লাহ চলমান ইস্যুতে সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে সরকারে প্রতি যারা নিউট্রাল ছিল তারাও একটা অবস্থানে পৌছেছে। আমি মাদ্রাসার ত্বালিবুল ইলমদের কখনো প্রকাশ্যে সরকারকে তাগুত বলতে শুনিনি। এবার বলেছে। এটা বিশাল অর্জন। এই অর্জনটাকে আবেগ ছাড়া কাজে লাগাতে হবে। যদি তাদের রাহবারগন এই ইস্যুতেও শিক্ষা গ্রহন না করে পূর্বের ভুল পথে অটল থাকেন, তবে সমজদার আলিম এবং তালিবুলইলম ভাইদের উচিত হবে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আফগানী ইমারাহ এর বঙ্গভারতীয় শাখার উমারাহর সাথে নিজেদেরকে গোপনে গনহারে যোগ করা। এবং ইমারাহ নির্দেশিত কর্মপন্থার ইত্তেবা করা। সেখানকার উলামা-মাশায়েখের নির্দেশনা মান্য করা। 


অনলাইনে যেসব সেলিব্রেটি দাঈ ভাইয়েরা আবেগের ফলে ময়দানের হেফাজতি কওমি আলিম উলামাদেরকে তাগুতের বিরুদ্ধে আরো ভয়াবহ ক্ল্যাশের দিকে যাবার জন্য একরকমের উস্কে দিচ্ছেন, তাদের কথা পড়ে একটা জিনিস মনে হয়; জিহাদ সংক্রান্ত কোন কিছুই অনলাইন সেলিব্রেটিদের থেকে শোনা উচিত না। কারন এরা নিজেরা মূলের সাথে সম্পর্কহীন। এদের যাবতীয় কথা,বার্তা, প্রস্তাবনা সবই নিজেদের অর্জিত দ্বীনি জ্ঞান এবং বিবেক বুদ্ধির উপরে। তারা কোন আমিরের নির্দেশনার আনুগত্য করে লেখে না, যারা বাস্তব ময়দানের অবস্থার সমুদয় অবস্থাকে অফলাইনে প্র‍্যাক্টিক্যালি ডিল করে হিকমাহপূর্ন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করেন। এরা নিজেরা যা বোঝে,সেটাই অনলাইনে ঘরে বসে বসে লেখে, কনটেক্সট - কন্সিকোয়েন্সের ব্যপারে ভাবেনা। এরা নিজেরাই কোন তানজিমের সাথে অফিশিয়ালি যুক্ত না,অথচ আলিম এবং মাদ্রাসা ছাত্র ভাইদের তানজিম বানিয়ে বাইয়্যাত করে ধুমধাড়াক্কা কিত্বাল শুরু করবার তাগাদা দেয়(যেটার লংটার্ম ফলাফল নেগেটিভ)। অনলাইন দ্বীনি সেলিব্রেটিজম নিয়ে আরেকটা আলাদা আর্টিকেলই লিখতে হবে। 



সর্বোপরি আমরা এদেশের ইসলামের দুর্গ কওমি মাদ্রাসার আলিম ও ত্বালিবুলইল্মদের কল্যাণ কামনা করি। আমরা চাই তাদেরকে যদি আল্লাহর পথে নামতেই হয় সেটা যেন সঠিক মানহাজেই হয়। আমরা চাইনা তারা এমন কোন ফুলিশ এ্যাটেম্প নিক বা ফুলিশ কর্মপন্থার চক্রে আটকে থাকুক যেটা তাদেরকে অব্জেক্টিভবিহীন ব্লাডশেডিং ছাড়া কিছুই দেয় না। 

Friday, March 26, 2021

স্যাটেলাইট

স্যাটেলাইটের ব্যপারে অনেক ভাইয়েরা নানামুখী প্রশ্ন করেন। আমি পূর্বে এই যন্ত্রের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতাম না, কারন এটার ব্যপারে যেসব তথ্য প্রচলিত আছে, তা এর অস্তিত্বকে অসত্য বলতে বাধ্য করে। যেমন ধরুন এর trajectory altitude। বলা হয় এটা থার্মোস্ফিয়ারে অবস্থান করে যেখানে প্রচলিত বিজ্ঞান অনুযায়ী তাপমাত্রা এত বেশি যে লোহা,স্বর্ন এমনকি টাইটানিয়ামকেও গলিয়ে দেবে। স্যাটেলাইট যে সব মেটাল দিয়ে তৈরি তাতে সেখানে দিব্যি টিকে থাকার কথা না। এজন্য হয় প্রদত্ত অফিশিয়াল ডেটা গুলো গোঁজামিলপূর্ণ এবং স্যাটেলাইট আছে অথবা সেসব তথ্য সত্য এবং স্যাটেলাইট এর অস্তিত্ব নেই। 

যদি ধরা হয় স্যাটেলাইট আছে, তবে তা পৃথিবীর এমন কোন শক্তিকে ব্যবহার করে যেটা আমাদের নিকট অপর্যবেক্ষণযোগ্য। আপনারা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ব্যপারে জানেন। এটা চুম্বক, মেকানিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টস এমনকি স্মার্টফোনের কম্পাস সেন্সরেই ডিটেক্টেবল। সুতরাং পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে এরকম ফোর্সফিল্ডের অস্তিত্ব থাকাটা স্বাভাবিক। এরূপও হতে পারে এই ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড উৎসারিত কোন প্রাকৃতিক শক্তি বা অবস্থাকে ব্যবহার করে স্যাটেলাইট গুলো একটা ট্রাজেক্টরি বানিয়ে তাতে সন্তরণ করে। অথবা এমন অন্য কোন অজানা উপায়ে কাজ করে। 


স্যাটেলাইটকে বাদ দিলেও সারাবিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা অটুট থাকে,বিশ্বের প্রায় সকল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সমুদ্রের তলদেশে ক্যাবলের দ্বারা হয়। এই ক্যাবলের সাথেই সব দেশ একে অপরের সাথে যুক্ত। ইন্টারনেট থেকে শুরু করে অধিকাংশ সেবা এর থেকেই আসে। সুতরাং স্যাটেলাইট এর বিষয়টি সুনিশ্চিত ভাবে আমরা বলতে পারিনা। 


স্যাটেলাইট যদি থাকে তবে তা কিভাবে কাজ করে? এ নিয়ে মুহতারাম ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলম ভাই একটা হাইপোথেটিক্যাল থিওরির প্রস্তাবনা করেছেন। তার লেখাটি হুবহু নিচে তুলে ধরছি। পাঠকদের মনে এ নিয়ে কোন প্রশ্ন উদয় হলে সরাসরি তার সাথে যোগাযোগ করে  করবেন। তিনি আমাদের ফেসবুক গ্রুপের এডমিন প্যানেলে আছেন। তার লেখাটি - 



**স্যাটেলাইট থিওরি**


মডার্ন সাইন্স প্রতিষ্ঠিতই থিওরির উপর। বিগ ব্যাং থিওরি, থিওরি অব ইভিলিউশন, থিওরি অব গ্রাভিটি, রিলেটিভিটি থিওরি, কোয়ান্টাম থিওরি, এটমিক থিওরি ইত্যাদি ইত্যাদি। এই থিওরি রাজ্যে স্যাটেলাইট থিওরিরও জায়গা পাবে।


তরল ও বায়বীয় মিডিয়ামে বস্তুর প্লবতা নির্ভর করে মিডিয়াম সাপেক্ষে তার ডেনসিটির উপর। মিডিয়াম থেকে অবজেক্টের আয়তন বাড়া সাথে সাথে ঘনত্ব যত কমতে থাকবে প্লবতা তত বেশি হতে থাকবে। মার্কারির চেয়ে লোহার Density কম বলে লোহা মার্কারিতে ভাসে[5]। আবার বায়ুর চেয়ে H, He-র ঘনত্ব কম বলে H, He ভর্তি বেলুন উপরে উঠে। সবচেয়ে কম মানে zero density হলো ভ্যাকুয়াম। ফুলানো অবস্থায় যদি বেলুনের ভিতর ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি করা যায় তাহলে  এর density সর্বোচ্চ হবে। অনেকে হয়তো ভাবছেন, ফুলানো অবস্থায় আবার ভিতরে zero density বা ভ্যাকুয়াম কিভাবে তৈরী সম্ভব! একটু explain করলেই বুঝে আসবে। 


"আমরা বায়ুর সমুদ্রে ডুবে আছি" ছোট বেলায় এটা আমরা সকলেই পড়েছি। সী লেভেলে এয়ার পেশার 14.70kg/inch^2 [1] যা বাস্তবিক ভাবেই অনেকটা চাপ। এই চাপে বেলুনের মত হালকা বস্তুর ভিতরটা ভ্যাকুয়াম করা খুবই দুরুহ ব্যাপার। কিন্তু যদি কোন শক্ত স্ট্রাকচার তৈরী করে বেলুনের ভিতর রাখা যায় যা একই সাথে হালকা ও এয়ার পেশার সহ্য করতে পাড়বে তাহলে অলমোস্ট জিরো ডেনসিটির জন্য তা কোন রকম জ্বালানি ছাড়া উড়তে থাকবে। আগেই বলেছি অবজেক্টের ঘনত্ব যত কমবে এবং এরিয়া যত বাড়বে buoyancy ততো বাড়বে। একটা ১০*১০*১০ মিটার অবজেক্টকে ভ্যাকুয়াম করলে নির্দ্বিধায় বাস বা হাতি উড়িয়ে নিতে সক্ষম।


এখন লার্জ রেঞ্জে চিন্তা করুন। একটা শক্তপোক্ত হালকা অবজেক্ট নির্বাচন করে সেটা দিয়ে একটা নিশ্ছিদ্র, ফাপা স্ট্রাকচার তৈরী করে অবজেক্টের ভিতকার সব বায়ু সড়িয়ে ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি করা হলে তা বায়ু ভেদ করে উপরের উটে বায়ু স্তরে ভেসে থাকবে। সমুদ্রর বাতাস ভর্তি বোতল ছেড়ে দিলে যেভাবে ভেসে উঠে অনেকটা তেমন।


এখন হয়তো অনেকেই চিন্তা করছে শক্তপোক্ত তবে হালকা অবজেক্ট আদৌ আছে তো? সমুদ্র তলে বায়ুর চাপ অত্যাধিক বেশি হওয়ায় কাঠামো ঠিক রেখে ভিতরে ভ্যাকুয়াম বজায় রাখা বেশ কঠিন। কিন্তু যদি একটা কৃত্রিম ভ্যাকুয়াম চেম্বারে[2] উক্ত অবজেক্ট তৈরী করা হয় তাহলে অবজেক্টটিকে বায়ুর 14.70kg/inch^2 পেশার সহ্য করতে হবে না।

 

সী লেভেলের যত উপরে উঠা হয় ততোই বায়ু চাপ কমতে থাকে।[3] অবজেক্টটিকে তার সারভাইভাল এনভায়রনমেন্টে(হাই অ্যাটিটিউড) ছেড়ে দিলে তা বিনা জ্বালানি খরচ করে চির দিন(ড্যামেজ না হওয়া পর্যন্ত) ভাসতে থাকবে। যেভাবে সমুদ্রে কোন ভাসমাস বস্তু ভাসে।

 


কথিত স্যাটেলাইটকেও একই পন্থায় অসীম সময় পর্যন্ত ভাসিয়ে রাখা সম্ভব। যদিও কমিউনিকেশনে প্রকৃত পক্ষে স্যাটেলাইটের কোন ইউজই নেই।[4] এসব কথিত স্যাটেলাইট আই ওয়াস মাত্র যাতে মানুষকে দিয়ে কাল্পনিক গ্লোব সাপোর্ট করানো যায়।

বর্তমানে শোনা যায়, স্টারলিংক স্যাটেলাইটসহ আরো কিছু স্যাটেলাইটের মত স্ট্রাকচারকে মানুষ ক্যামেরায় ধারন করেছে বা এর অস্তিত্ব সত্য বলে দাবি করছে। যদি মানুষকে হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রনমি ধরে রেখে কোটি টাকা ব্ল্যাক বাজেটে চালানের জন্য স্যাটেলাইট খাত করে সত্যিই এমন কিছুকে উড়ায়, তবে আসমানি ছাদের নিচে উহা উপরিউক্ত পন্থায় ভাসাবে। এতে হেলিওসেন্ট্রিক গ্লোব তত্ত্বের বায়ুমন্ডলের স্তর এবং জিরো গ্র‍্যাভিটিকে সত্যায়নের প্রয়োজন নেই। 


Ref: 

[1]. https://bit.ly/3bVsgg3

[2]. https://bit.ly/2WZ5lwh

[3]. https://bit.ly/2TA9tkd

[4]. https://bit.ly/2LSlBZs

[5]. https://bit.ly/2ZuFRZc

Thursday, March 25, 2021

তাগুতের মানবরচিত সংবিধানে দুঃশাসন এবং সীমাহীন দরিদ্রতা

২০১৬ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অনুযায়ী এদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রায় ১৫%। অর্থাৎ প্রায় ২৭০০০০০০ জন মানুষ। যার মাঝে ৩১% হতদরিদ্র। অর্থাৎ হতদরিদ্রদের সংখ্যা আনুমানিক ৮৩৭০০০০ জন। বাস্তব সংখ্যাটা আরো বেশি। 


আমাদের দেশে তাগুতি শাসন টিকে আছে এদের সামরিক বাহিনীর অস্ত্রের জোড়ে। সামরিক - আধা সামরিক বাহিনী গুলোর সংখ্যা পুলিশসহ আনুমানিক ৭ লাখের উপরে। এরা আল্লাহর কালাম অনুযায়ী জুন্দুশশাঈত্বন। এরা শয়তানের শাসনের অতন্দ্র প্রহরী। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বাধাদানকারী। এজন্য আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী বর্তমান সামরিক বাহিনীতে  চাকুরী ব্যাংকে চাকর খাটার অনুরূপ। আপনার কি কোন ধারনা আছে, এই শয়তানের গোলামগুলোকে কি পরিমান  খাদ্যসামগ্রী রেশনের নামে বেতনের পাশাপাশি দেয়া হয়??


আমার কিছু আত্মীয়দের যারা শয়তানের চাকর হিসেবে কাজ করে এরা প্রতিমাসে যে পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী পায় তার প্রায় ৬০%+ ই বিক্রি করে দেয়। কারন এত বেশি কোন পরিবারই খায় না। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি দেয়া হয়। একদিকে এদের আছে দুর্নীতি ঘুষের সুবিধা। এর উপর আছে মাসিক বেতন। এর উপর আছে মাসিক বরাদ্দখাদ্য। হঠাৎ করে ভাবছিলাম এই শয়তানের গোলাম গুলোকে কত খাবার ফ্রি ফ্রি দেয়া হচ্ছে বেতন দেয়ার পরেও অথচ এদেশে লাখ লাখ মানুষ এক বেলা দুবেলা না খেয়ে থাকে। কি ইনসাফ!! অভাব এদেশে কিরূপ সেটা আমার বাস্তবে দেখা কাহিনীতে বলিঃ ক'দিন আগে বাসার ধারে এক অচেনা লোককে এলাকার লোকজন খোন্তাকুড়াল হাতে ঘুরতে দেখে। সম্ভবত দিনমজুর।  কিছুক্ষণ এদিক ওদিক হেটে লোকটি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে। এলাকাবাসী এসে পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরায়, লোকটা জানায় সে দুদিন অনাহারে আছে। দিনমজুরের কাজটাও পায়নি। গ্রামের বাড়িতে অসহায় স্ত্রী সন্তান অনাহারে রেখে এসেছে। তাকে খেতে দেয়া হলেও লম্বা সময় অনাহারে থাকায় খেতে পারছিল না। সে জানায় তার বড় ছেলে অনাহারে থাকার কষ্ট সহ্য না করতে পেরে  আত্মহত্যা করে বহু আগে। এলাকার লোকজন সবাই মিলে তাকে কাপড় আর সাধ্যমত যে যার মত টাকা দিয়ে বিদায় করে। 


এটা কেবল একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা বাংলাদেশের ১৫% জনগণের নিত্যদিনের বাস্তব চিত্র। একে তো পুঁজিবাদি সুদি অর্থব্যবস্থা গরীবকে শোষণ এবং ধনীকে অর্থের পাহাড় তৈরি করে দিচ্ছে তার উপর তাগুতের দুর্নীতি ভরা শয়তানি শাসন, যেখানে যাকাত আদায় হয়ে গেছে ব্যক্তিগত ঐচ্ছিক বিষয়। দেশের উন্নয়নের এবং ইন্ডিভিজ্যুয়াল দরিদ্রের অভাব মোচনের যে আশ্বাস দেয়া হয় সেটা শয়তানের প্রতারণাপূর্ণ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই নয়। 


মূলত মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর এই অবস্থার কারন হচ্ছে হাকিমিয়্যাহর ক্ষেত্রে শয়তানের প্রভুত্ব গ্রহন এবং বাস্তবায়ন এবং এক্ষেত্রে আল্লাহর প্রভুত্ব ত্যাগ। আজ কয়জন আলিম তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর কথা বলে? এটাকে একরকমের মুসলিমের আকিদা থেকেই মুছে ফেলা হয়েছে, ফলে জায়গা করে দেয়া হয়েছে গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র সহ বহুত আবর্জনার তন্ত্রমন্ত্র। 

মুসলিমরা যেদিন থেকে হাকিমিয়্যাহ থেকে সরে এসেছে এবং কুরআনিক ডোমিনিয়ন থেকে বের হয়ে আল্লাহদ্রোহী শয়তানি সংবিধানকে পছন্দ করেছে, দ্বীন প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং কিত্বাল/জিহাদকে ভুলে গেছে সেদিন থেকে আল্লাহ লাঞ্ছনা চাপিয়েছেন। এই ডিগ্রেডেশান শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনেরও বহু আগে থেকে। এটা করে হয়ত আপনার দাদাদের দাদারা। এই হেরেডিটেরি গিল্ট আমরা আজও বহন করছি। যারা একসময় শাসক লেবাসে ছিল এদেরকে এখন অনেকটাই সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেনের চোখে দেখা হয়। তাদের শিক্ষালয়(মাদ্রাসা) গুলোকে বলা হয় ব্যাঙের ছাতার মত আগাছা। এদেরকে যখন তখন গুলি করে হত্যা করেও দেয়া যায়। এদের কোন অভিভাবক নেই। তাই যা-তা করা যায়।  আমরা এই জিল্লতিকে বেশ আন্তরিকতার সাথেই গ্রহন করে নিয়েছি। এর থেকে বের হবার সহজসাধ্য উপায় নেই, তাই পোস্ট মর্ডানিস্ট স্টাইলে অনেকে ধরেছে চাষাবাদ, অনেকে ধরেছে সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরগিরি, অনেকে বিদেশে গিয়ে হয়েছে কাফিরদের সেবাদাস।  অনেক দ্বীনদার ধরেছে আতর খেজুর মধু কাপড় মেসওয়াকের ব্যবসা। কি আর করার! বেচে তো থাকতে হবে! এগুলো সবই গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে থাকা। এগুলো সবই জিল্লতি। আপনি যদি কালেক্টিভলি উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোন চেষ্টা না করে এসবে ডুবে থাকেন তাহলে ভাই জিল্লতির কালোমেঘ দিনদিন বাড়তেই থাকবে। আল্লাহকে সাহায্য না করলে তিনিও আমাদেরকে সাহায্য করবেন না। সুদি ব্যবসা এবং গরুর লেজ ধরে সন্তুষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা আল্লাহর রাসূল দেড় হাজার বছর আগে বলে গিয়েছেন। এগুলো কোন নতুন কথা নয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়ও বলেছেনঃ "যখন মানুষ দিনার এবং দিরহামের মধ্যে ডুবে যাবে, এবং যখন ঈনা নামক (সুদী) ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাবে, আর গরুর লেজ-এ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দিবেন, তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনে ফিরত না যাবে।’

[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ (২/২৮), তাবরানী (১২/৪৩৩), বায়হাকী (শুয়াবুল ঈমান ৭/৪৩৪), আবু ইয়ালা (১০/২৯)]

Monday, March 22, 2021

আমরা কি সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্বাসকে আকিদার অংশ দাবি করি?

 জ্বীনা, আমরা কখনোই শারঈ একাডেমিক লেভেলে মুহাক্কিক আলিমদের দ্বারা নির্ধারিত আকিদার পয়েন্টগুলোর মধ্যে সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট আছে বলে দাবি করিনি। বিরুদ্ধবাদী বিশ্বাসের ধারকদের তাকফিরও করিনি। এও বলিনা যে এগুলো ট্রেডিশনাল ইসলামে আকিদার বিষয়। একাডেমিকভাবে এরূপ বলবার জন্য যে কাউকে নুন্যতম মুজতাহিদ হবার জরুরত আছে। সুতরাং যারা বলে যে আমরা একে আকিদার অংশ বলে দাবি করি,তাকফির করি তারা হয় আন্দাজে বলে মিথ্যাচার করছে অথবা স্বপ্ন দেখেছে অথবা আমার কথা ভুল বুঝেছে। আল্লাহই ভাল জানেন। 


আমি সকল লেখনীতে প্রায়শই "আকিদা" শব্দটিকে উল্লেখ করি। এর দ্বারা উলামা স্বীকৃত মৌলিক আকিদাকে বোঝাই না। বরং একে ব্যবহার করি "বিশ্বাসের" এরাবিক প্রতিশব্দ রূপে। যেমন ধরুন, "প্লেটোর আকিদা,ইয়াহুদীদের আকিদা,পিথাগোরাসের আকিদা"। এর দ্বারা কি আপনারা ওই ইমাম ত্বাহাবী, ইমাম ইবনে তাইমিয়া প্রমুখ কর্তৃক লিখিত আকিদার পয়েন্টস গুলো বোঝেন!!??


যদি এটাই বুঝে থাকেন এবং বলেন আমি আকিদা টার্মটি উল্লেখের দ্বারা যাবতীয় বিষয়গুলোকে আকিদার বিষয়ে সাব্যস্ত করেছি,তবে আমার কিছুই বলার নেই। 


আসলে যারা সৃষ্টিতত্ত্ব সংশ্লিষ্ট শারঈ দলিলগুলোকে আকিদা সংশ্লিষ্ট নয় বলে 'এড়াতে চায়' বা এর প্রতি শিথিলতা আরোপ করে এরা মূলত সৃষ্টিতত্ত্বের বিষয়ে হিপোক্রেটিক বিলিফের জন্য এমনটা করে। এরা আন্তরিকভাবে অপবৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলোকে বিশ্বাস করে,যাদুশাস্ত্র উৎসারিত কাফিরদের কথায় ইয়াক্বিন করে। নিজের আইডেন্টিটির সাথে এমন হিপোক্রেটিক অবস্থানকে যথার্থ(জাস্টিফিকেশন) এবং গ্রহনযোগ্য করার জন্য এরা বলেঃ এটা আকিদা সংশ্লিষ্ট নয়,সুতরাং ইহা না মানলে কোন সমস্যা নেই। 


অথচ গভীরভাবে ভাবলে দেখা যায় এই বিষয়গুলো এত সেন্সেটিভ যে কোন মুজতাহিদ আলিম চাইলেই বিষয়গুলোকে আকিদা সংশ্লিষ্ট করতে পারেন। এ সংক্রান্ত এ্যাবান্ডেন্ট শার'ঈ দলিল মওজুদ আছে। এজন্য আমরা দেখতে পাই যে, সৌদি আরবীয় সালাফি আলিমগন কাফিরদের আকিদার এস্ট্রোনোমিকাল মডেলে বিশ্বাসের জন্য তাকফির করেছেন। বিষয়টা গভীরভাবে দেখলে আসলেই সেন্সেটিভ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কুরআনে আসমানের সংখ্যা  বলেছেন ৭ টি। আপনি কোনভাবে ৮টি বা ৯টি বলে তাবিল করতে পারেন না,যদি করেন তবে সেটা যেরূপ গর্হিত কাজ অনুরূপভাবে আপনি যদি যমীনকে মুসাত্ত্বাহা না বলে বলেন কুরউইইয়্যা যেখানে আল্লাহ সূরাতুল গাশিয়্যাহ তে স্পষ্টভাবে গোটা আর্দকে সুতিহাত  বলেছেন। যমীনকে বর্তুলাকার দাবি সর্বপ্রথম পাওয়া যায় ইহুদীদের যাদুশাস্ত্র কাব্বালাহ তে। আজ উম্মাহ যাদুশাস্ত্রকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে বলছে, সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে আসা শারঈ দলিল গুলো দেখে বলছে, উহা আকিদার বিষয় না,যার জন্য আমি উহা না মানলে কাফির হব না!!


একইভাবে যদি বলেন আসমান বলতে সলিড স্ট্রাকচার বোঝায় না বরং অন্তহীন আউটার স্পেস বুঝায় অথবা কাফিরদের আকিদার সাথে আপোষ করে বলেন আসমান মানে আউটার স্পেস বটে, তবে তার সীমানা কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে সলিড অবস্থায় থাকতেও পারে, এমনটা গর্হিত বিশ্বাস হবে। কারন যেখানে উমার(রাঃ),ইবনে মাসউদ(রাঃ) সহ আরো কয়েকজন সাহাবিগন একে যমীনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ বলেছেন, হাদিসে এর সীমাকে বলা হয়েছে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সূরাতুল মুলকের ৩ নং আয়াতে দৃষ্টিসীমানার মধ্যেই আছে বলেছেন। 


আনঅব্জারভেবল অদেখা জগতের ব্যপারে সাহাবী আজমাঈনগন যেভাবে যা বিশ্বাস করতেন সেটাই আপনার আমার বিশ্বাস হওয়া উচিত। অথচ আমরা দেখতে পাই আজকের মুসলিমরা এই বিষয়গুলোতে নফসের গোলামি করে, হিপোক্রেটিক বিশ্বাস রাখে। যেখানে আল্লাহ সূরা ফাতিরে আসমান যমীনকে স্থির বলেছেন,উমার ইবনুল খাত্তাব(রাযি.) আল্লাহর শপথ করে যমীনকে স্থির নিশ্চল বলতেন, সেখানে আজকের উম্মাহ বলে যে বর্তুলাকার যমীন লাটিমের মত করে প্রচণ্ড গতিতে ঘুরছে!! এগুলো কি হিপোক্রেটিক বিলিফ নয়??


কাফিরদের মনগড়া ও যাদুশাস্ত্রীয় বিশ্বাস/তত্ত্বের চেয়ে কি সাহাবীদের কথা(কওল) বেশি গ্রহণযোগ্যতা রাখে না?

আমরা আল্লাহর রাসূলের সিরাত সংক্রান্ত যাবতীয় ইতিহাস/ঘটনাবলি যা চোখ বুজে বিশ্বাস করি তা মূলত অথেনটিসিটির দিক দিয়ে হাদিসের চেয়ে এক ডিগ্রি নিচের মানের। আমরা এগুলো বিশ্বাসে কোনরূপ দ্বিধা করিনা কিন্তু তার সাহাবীদের কথা(কওল) মানতে আমাদের অনেক সমস্যা। অথচ কওল কুরআন সুন্নাহ বহির্ভূত শিক্ষাদেয় না। 


সাহাবিয়্যাতের সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিশ্বাসকে অস্বীকারকারী মুসলিমরা এও বলে যে তাদের যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। তারা যেটা আসমান যমীনের প্রকৃতির ব্যপারে অজ্ঞ ছিল,আল্লাহর রাসূল(স) এগুলো জানতেন না! 

এরকম কথার দ্বারা এরা মূলত আল্লাহর রাসূলকে (স) ছোট করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তাকে মিরাজে সাত আসমান ভ্রমণ করিয়েছেন, তিনি অবশ্যই সৃষ্টিজগতের প্রকৃতির ব্যপারে অবগত ছিলেন। তিনি আসমান যমীনের ব্যপারে অনেক বর্ননা করেন সাহাবীদের কাছে,সেসব তার মনগড়া ধারনা ছিল না বরং সরাসরি আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন। এজন্য এরকম কথা যে কত জঘন্য হিপোক্রেটিক তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহ সাহাবাদের জীবনের প্রতিটি ঘটনা ও কথাকে গুরুত্ব - তাৎপর্য ছাড়াই এমনি এমনি ঘটাননি বরং তাদের প্রতিটা কাজ ও কথা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আল্লাহ একে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আদর্শ ও শিক্ষণীয় অবস্থায় রেখেছেন। আল্লাহ এসময় সাহাবীদের দ্বারা ঘটা ভুল গুলো দ্বারাও শিক্ষা দিয়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ উহুদ যুদ্ধের ঘটনা। তারা কোন কিছুতে ভুল করলে সরাসরি তৎক্ষণাৎ শুদ্ধ করা হত। সুতরাং সাহাবাদের সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ের কথাগুলোকে "ভুল" বলা অনেক বড় রকমের ধৃষ্টতা। 


সাহাবীগন এস্ট্রোনোমিকাল সাব্জেক্টে কতটা সিরিয়াস ছিলেন সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়, যখন এক সাহাবি অপর একজনকে আসমান ঘূর্ণনশীল বলতে শোনেন,তখন জিজ্ঞেসা করেন তিনি এই আকিদা(বিশ্বাস) রাখেন কিনা। উত্তরে নিরপেক্ষ জবাব পেলে তিনি তাকে আসমানকে স্থির বলে দলিল হিসেবে সূরা ফাতিরের ঐ আয়াত পাঠ করে শোনান, যেখানে আল্লাহ আসমান ও যমীন উভয়কেই স্থির বলেছেন। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে এস্ট্রোনমিক্যাল বিষয়ে সামান্য বিচ্যুতির ব্যপারেও কতটা সিরিয়াস ছিলেন। সুতরাং এই সাব্জেক্ট এমন না যে মনে চাইলো আর কিছু একটা বিশ্বাস করলাম। 


একদল মানছে যে কুরআন সুন্নাহ এক্সট্র‍্যাক্টেড এস্ট্রোনোমিকাল ডেপিকশান একদম ঠিক তাই যা আমরা বলি, কিন্তু তাদের নফস সেটাকে মানতে চায় না, যার ফলে অজুহাত হিসেবে দেখায় এটা আকিদার কিতাবে নেই, এটা আকিদার অংশ না, সুতরাং না মানলেও সমস্যা নেই। আখ্যি গনতন্ত্র সমাজতন্ত্র মানলে কুফরি হবে সেটা কোথাও উল্লেখ নেই। তাহলে এটাকে কুফরি বলেন কেন আখ্যি। এরকম লেইম এক্সকিউজ দিয়ে লাভ কি! 


হাদিসে অনেক স্পেসিফিক ভাবে বলা হলেও অনেকে অস্বীকার করে কারন ইসনাদ বিশুদ্ধ না।  আখ্যি কওলসহ সর্বত্র সর্বত্রই অসাংঘর্ষিক অভিন্ন কস্মোলজির শিক্ষাদেয়। তাবে তাবেঈনদের কেউ এসব নিয়ে ইন্ডালজ ছিলেন না কেন? এটা তো খুব সাধারন আন্ডারস্ট্যান্ডিং। ধরুন করোনা ভাইরাস ৫০ বছর আগে ছিল না। তখন করোনা ভ্যাকসিন কি তৈরি করে বসে ছিল? করোনা ভ্যাকসিন কবে বের হবে, এ নিয়ে কেউ জিজ্ঞেসা করত? করোনার নামই তো কেউ নিত না। অর্থাৎ একটা সমস্যা তৈরি না হলে সেটা সমাধান বা প্রতিষেধক নিয়ে কথা বলার আশা করা অর্থহীন।  যতদিন  গ্রেসিয়ান টলেমিয়ান-পিথাগোরিয়ান ভাইরাস আরবে আসে নি ততদিন এসব নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠেনি। জিওস্টেশনারী এনক্লোজড কস্মোলজি ছিল আরবে টোটালেটেরিয়ান বিলিফ। যখন দুই ধরনের বিশ্বাস আসতে শুরু হলো তখনই ফিতনাহ শুরু হলো। 


সেই প্রাচীনকাল থেকেই কাফির যাদুকর মালাউনরা চাইত ডিভাইন ডমিনিয়নকে অগ্রাহ্য করা যায় এমন একটা ফিলসফিক্যাল-মেটাফিজিক্যাল বিলিফ প্রতিষ্ঠা করতে, যেখানে মহাবিশ্ব অমুখাপেক্ষী স্বাধীন সেল্ফ ডিপেন্ডেন্ট কনসাস স্বত্ত্বা(ব্রহ্মা), এর দ্বারা সফলভাবে তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহর আকিদাকে যৌক্তিকভাবে অস্বীকার(কুফর) করা যায়। বিগব্যাং -বিগবাউন্স থেকে নির্ভর হেলিওসেণ্ট্রিক কস্মোলজিকে সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠা হচ্ছে সেই লং চেরিস্ট প্রিস্টিন ড্রিমের ফসল। আজকে মুসলিমরা তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ বিধ্বংসী এই সৃষ্টিতত্ত্বকেই নির্দোষ বিশ্বাস হিসেবে গ্রহন করছে এবং সাহাবাদের চিন্তাধারাকে অস্বীকার করার জন্য বলছে, ইহা আকিদার বিষয় নয়। লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!


হে আমার ভাই আমরা কি অদেখা জগতের ব্যপারে কুরআন সুন্নাহর উপর নির্ভর করছি নাকি কাফিরদের বিচিত্র কুফরি তত্ত্বের উপর?


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তার সৃষ্টি জগত নিয়ে ফিকির করতে বলেছেন[আত্ব তাফাক্কুর ফি খলকিল্লাহ]। তিনি কি এসবের ব্যপারে কাফির ও যাদুশাস্ত্রীয় কুফরি ব্যাখ্যার অনুসরণ করতে বলেছেন নাকি আল্লাহ ও তার রাসূল এবং সাহাবীদের? 



আমি আগেও কখনো দাবি করিনি যে এগুলো আকিদার অংশ,এখনো দাবি করছিনা। তবে বলছি সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়টি আকিদার কিতাবে এনলিস্টেড হোক বা না হোক, সাহাবিয়্যাতের বিশ্বাস হিসেবে একে গ্রহন করা ঈমানের দাবি। "হিপোক্রেসি" শব্দটাকে পড়ে কাল প্রচার কইরেন না যে আমি সবাইকে মুনাফিক বলছি। হিপোক্রেসি দ্বারা দ্বিমুখী নীতিকে বুঝিয়েছি। কে ঈমানদার, কে মুনাফিক সেটা যার নিকট হিসাব দিতে হবে তার সাথে সতর্কতার সাথে সৎ হবার মাঝে কল্যাণ আছে। 

এই আর্টিকেলটাকে পড়ে উলটা বুঝবেন না, সারাংশটা আবারো বলছি, আমরা সৃষ্টিতত্ত্ব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্বাসকে একাডেমিকভাবে আকিদার অংশ দাবি করিনা। তবে যারা একে "আকিদার অংশ নয়" অজুহাত দিয়ে অস্বীকার করে অপবৈজ্ঞানিক যাদুশাস্ত্রে ইয়াক্বীন করে তাদেরকে তিরস্কার করি, যেহেতু এতে বিশ্বাস আমার আপনার ঈমানের দাবি। 

মা'আসসালাম। 


Wednesday, March 10, 2021

কস্মোলজিক্যাল[সৃষ্টিতত্ত্বীয়] সাবজেক্টে আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উসূল

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

إِنَّ الْحَمْدَ لِلّٰهِ 

نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ، وَنَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنْ شُرُوْرِ أنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا

مَنْ يَّهْدِهِ اللّٰهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ، وَمَنْ يُّضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَه

اللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

اللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُوْرُ

رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُوْرُ

رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُوْرُ

اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُه



আশা করি রব্বে ক্বারীমের অনুগ্রহে সকলে ভাল আছেন। আজ সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে বেশ কিছু নীতিমালাকে উল্লেখ করব, যা পাঠ করলে নতুন পুরাতন সকল পাঠক চিন্তার একটা ছক ও সীমারেখা খুঁজে পাবেন। 


উসূল ১:

-আমাদের জিওসেন্ট্রিক মডেল টলেমিয়ান জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি নয়-

কিছু কিছু স্বল্পজ্ঞানসম্পন্ন পাঠক হঠাৎ করে দুই চারটা আর্টিকেল পরে দ্রুত আমাদেরকে টলেমিয়ান জিওসেন্ট্রিক মডেলের প্রিচার বলে ক্ল্যাসিফাই করে থাকেন। টলেমিয়ান জিওসেন্ট্রিক মডেলে দুনিয়া স্ফেরিক্যাল এবং অনেক কিছুই হেলিওসেন্ট্রিক ডক্ট্রিনের সাথে কম্প্যাটিবল। আমরা যখন "জিওসেন্ট্রিক" শব্দটাকে আওড়াই, তা দ্বারা কোনভাবেই টলেমির চিন্তাধারার সামান্যভাগও প্রকাশ করিনা। আমরা "জিওসেন্ট্রিক" শব্দটাকে আক্ষরিকভাবে ব্যবহার করি সূর্য ও চাঁদের পৃথিবীকেন্দ্রিক আবর্তনের জন্য। একইভাবে আমরা "জিওস্টেশনারি" শব্দকে ব্যবহার করি পৃথিবীর স্থবিরতার জন্য। মাঝেমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হেলিওসেন্ট্রিক আইডিয়ার বিরোধীতার জন্য একটা একাডেমিক ডোমেইনের প্রিভিলেজ নিতে শব্দগুলোকে ব্যবহার করে থাকি, তাই বলে এর দ্বারা কাফিরদের মডেলগুলোকে বোঝাই না। আমাদের এই সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত ধারনাগত বিষয়ের দালিলিক কার্নেল হলো কুরআন - সুন্নাহ, সাহাবাদের কথা ও বিশ্বাস, যাদের উপর স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সন্তুষ্ট। কুরআন সুন্নাহর যাবতীয় দলিল আমাদের এমন এ্যাস্ট্রনমিক্যাল মডেলের বর্ননা দেয় যা পিথাগোরাস, টলেমি কিংবা কোপার্নিকাস কারও কথার সাথেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সাহাবাগন প্রকৃতির প্রায় প্রতিটি ফেনোমেনার ব্যপারে কথা বলেছেন, এসবের বিস্তর বর্ননা দিয়েছেন যার সবটাই কুরআন সুন্নাহভিত্তিক এবং সবকিছুর বর্ননাকে এক করে নিলে গ্র‍্যান্ড স্কেইলে যে চিত্র পাওয়া যায় সেটা কাফিরদের থেকে আসা কোন এস্ট্রোনোমিক্যাল স্ট্যান্ডার্ডের সাথেই মেলেনা। এজন্য আমি আবারো আলাদাভাবে বলছি যে আমাদের এস্ট্রোনোমিক্যাল মডেল কাফিরদের কারো সাথেই সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। 



উসূল ২:

-একাধিক এস্ট্রোনোমিক্যাল আইডিয়ার সংমিশ্রিত চিন্তা পরিত্যাগের নীতি- 

কুরআন সুন্নাহ যেই সৃষ্টিজগতের বর্ণনা দেয়, সেটা স্ট্যাবলিশড হেলিওসেন্ট্রিক ডক্ট্রিনের সাথে কোন ধরনের মিল নেই। আপনি হেলিওসেন্ট্রিক যে বিলিফ রাখতেন সেটা রিয়ালিটি নয়, ওটা ফ্যান্টাসি[কল্পনা]! বাস্তব আসমান - যমীন, চাঁদ - সূর্য, নক্ষত্রদের কাজ - বিহেভিয়ার কোন কিছুই এই এস্ট্রনমির সাথে সামঞ্জস্য রাখে না। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন জগত। এ জগতে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে পূর্বের সকল শিক্ষাকে বাদ দিয়ে আসতে হবে, পূর্বের শিক্ষা আশ্রিত প্রশ্নও এখানে একেবারে অগ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ যে faq আমরা সাধারণত পেয়ে থাকিঃ সূর্য তো ২৪ ঘন্টাই আলো দিবে যমীনের উপর, সারা পৃথিবীতে ২৪ ঘন্টাই দিন থাকার কথা।

এর উত্তর হলো- প্রশ্নকারী স্বতঃসিদ্ধ সত্য বলে বিশ্বাস করেন যে সূর্য দুনিয়া থেকে ১৩ লক্ষ গুন বড় এবং ৯৩ মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ পূর্বের ৯০% হেলিওসেন্ট্রিক বিলিফ সত্য হিসেবে ধরে রেখেই জিওস্টেশনারী কস্মোলজির শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রশ্নকারী আউটার স্পেসও বিশ্বাস করেন, স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেটারি নোশন অপরিবর্তিত রেখে যমীন কেন মুসাত্ত্বাহা সেটা নিয়ে হাসছে! অর্থাৎ তিনি বিশ্বাস করেন "সকল গ্রহ বর্তুলাকার এবং তা অবতরণযোগ্য আবাসভূমি বিশেষ", তাহলে যমীন কেন সমতলে বিস্তৃত হতে যাবে! 

অর্থাৎ সেই জগাখিচুড়ি পাকানো প্রশ্ন। হেলিওসেন্ট্রিক ডক্ট্রিন আর জিওস্টেশনারী সিস্টেমের সেটিং ও ফাংশন সম্পূর্ন আলাদা। আপনি ১% হেলিওসেন্ট্রিক ইডিওলজি নিয়েও যদি জিওসেন্ট্রিসিটির কোন বিষয়ে প্রশ্ন করেন তবে সেটা শুনতে খুবই বোকাবোকা লাগে। হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমিতে আসমান মানে ইনফিনিট ভ্যাকুয়াম আউটার স্পেস। পৃথিবী হলো বিলিয়ন ট্রিলিয়ন গ্রহের একটি। আমরা কুরআন হাদিস অনুযায়ী আসমানকে সলিড ফার্মামেন্ট হিসেবে দেখি, আউটার স্পেস বলে কিছু নেই, পৃথিবী বা দুনিয়া হচ্ছে একটা রেল্ম। আসমানও তদ্রুপ রেল্ম/আলাম। সত্যিকারের এস্ট্রনমিক্যাল মডেলে হেলিওসেন্ট্রিক মডেলের সবকিছুই অচেনা। একটার সাথে আরেকটা সংমিশ্রণ করে প্রশ্ন বা চিন্তাভাবনা অগ্রহণযোগ্য।  


উসূল- ৩

-প্রচলিত এস্ট্রোনোমিক্যাল অর্ডারের বিরোধিতার ক্ষেত্রে গৃহীত উসূল-

আমরা অসত্য, কুরআন সুন্নাহ বিরোধী এস্ট্রনমিক্যাল মডেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য প্রমাণ স্বরূপ এমন কোন অবজারভেবল আকলি প্রমাণ দ্বার করানোর ব্যপারে সবাইকে নিরুৎসাহিত করি যা ফলসিফাইয়েবল।মূলত আপনি যত ধরনের এভিডেন্স দিবেন, হেলিওসেন্ট্রিক মডেলের পেইড এজেন্টদের কাছে সবই ভুল প্রমাণ যোগ্য। সবকিছুর কাউন্টার দেয়া সম্ভব। আপনাকে বুঝতে হবে সবচেয়ে বড় সত্য- আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে যেখানে কাফিররা এ্যান্টাগনিস্টিক লজিক দ্বার করাতে পারে, সেখানে কস্মলজি কিছুই না। এস্ট্রনমিক্যাল কিছুক্ষেত্রে দেখা যায় সত্য পক্ষ দুর্বল দলিল দ্বার করায় সেগুলোর বিরুদ্ধে মিথ্যা এভিডেন্স এমনভাবে দ্বার করানো হয়, যেন তা আনব্রেইকেবল। আবার দেখা যায় মিথ্যাপক্ষ সঠিক দলিল প্রমান ভুল ধরিয়ে দেয়, যেই ভুল এভিডেন্স গুলো সত্য পক্ষ অবলম্বন করত। দেখা যায়, তাদের দেয়া আকলি বিরোধী লজিকের রিফিউট করার কিছুকাল পর তারা আরেকটা কাউন্টার লজিক দ্বার করায়। এভাবে সত্য মিথ্যার রাইভাল অন্তহীনভাবে চলতে থাকে। এগুলো একে তো সময়সাপেক্ষ কাজ। দেখা যায়, সারাজীবন ব্যয় করতে হবে এর পিছনে। একজন মুসলিমের মূলত এই সময় নেই। তাই আমরা আমাদের মতাদর্শের বিরোধী কোন ডকুমেন্টসের ব্যপারে কর্ণপাত করিনা। সেসব পড়েও দেখিনা। এজন্য আমাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন আকলি- অবজারভেবল দলিল পেশ করলেও সেসবের ব্যপারে নির্বিকার থাকি,মোটেও পরোয়া করিনা। প্রতিষ্ঠিত এস্ট্রোনোমিকাল মডেলকে ডিফেন্ড করতে কাফিররা অনেক অর্থ ব্যয় করে। কাউন্টার পয়েন্ট দ্বার করানোর জন্য ওদের আছে বিপুল অর্থ এবং জনবল। গোটা বিশ্বই ওদের হাতে। তাই ওদের পক্ষে ইচ্ছামত দুর্বল অংশ ফিগারআউট করে আক্রমণ করা সহজ, যদিও তারা মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা করতেই এটা করে। 


পক্ষান্তরে ওরা যেভাবে সব তথ্যের নির্ভুলতা আর যাচাই করতে পারে, বিদেশী কাফির জিওসেন্ট্রিক প্রিচারগন তা পারেনা। কাফির হেলিওসেন্ট্রিক প্রিচারগন চাইলেই যখন তখন হেলিকপ্টারে চেপে হিসাবকিতাব করে জিওসেন্ট্রিক প্রিচারদের অবজারভেবল এভিডেন্সের ভুল ধরে ফলাও কে  প্রচার করতে পারে। সে ফিনান্সিয়াল ও জিওপলিটিক্যাল ব্যাকাপ কাফির জিওসেন্ট্রিকপন্থীদের তো নেই-ই, আমাদেরও নেই। এজন্য মুসলিম হিসবে আমাদের হাতে দলিল হিসবে প্রথমে থাকবে নস[কুরআন সুন্নাহ]। মূলত এর জন্যই লিখেছিলাম "ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব" নামের সুবিশাল আর্টিকেল সিরিজ। পর্যবেক্ষনযোগ্য আকলি তথ্যপ্রমানগুলোও আমরা সত্যমিথ্যা প্রমানের মানদন্ড বানাব না। তবে কেউ যদি আকলি দলিল প্রমাণগুলো নিয়ে লেখালিখি করে তাদের বিরোধিতা করিনা। আমি নিজেও "জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি" এন্টাইটেল্ড একটা আর্টিকেল সিরিজ লিখেছিলাম, সেটাকে কখনোই প্রোমোট করতে দেখবেন না। তখন বিশেষ পরিস্থিতিতে সাধারন মানুষের চিন্তার খোরাকি হিসেবে লিখেছিলাম। আমি প্রায়ই ভাবি এটাকে আনপাবলিশ বা মুছে ফেলতে কিন্তু অনেকেই নিষেধ করেন তাই করিনা। 


২য় দলিল হিসেবে আছে, এই বিজ্ঞান এর অকাল্ট অরিজিনের ইতিহাসভিত্তিক আলোচনা,যা মুসলিমদের কাছে প্রতিষ্ঠিত অকাল্ট নির্ভর এস্ট্রোনোমিক্যাল মডেলের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে এবং পরবর্তীতে অগ্রহণযোগ্য বাতিল সাব্যস্ত করবে। আমাদের হাতিয়ার এই দুইটিঃ

১.কুরআন সুন্নাহ/সাহাবাদের কথা/বিশ্বাস/প্রাচীন মুফাসসিরীনদের কুরআন সুন্নাহ নির্ভর ব্যাখ্যা, বিভিন্ন কওল, এমনকি ঐসব ঈসরাইলীয় বর্ননা যেগুলো সাহাবীগন[রাযি.] গ্রহন করেছিলেন।

২.আধুনিক ফিজিক্স ও এস্ট্রনমির অকাল্ট অরিজিন্সের ইতিহাসভিত্তিক পর্যালোচনা। 



আমাদের স্ট্যান্স এমন না হয় যে, কাতার থেকে লস এঞ্জেলসের ফ্লাইট অমুক অমুক টাইম রুট তাই যমীনের আকৃতি বা মডেল এইরূপ এইরূপ, বরং তাগুতি শিক্ষার বর্জনের জন্য আমরা ধরি পিথাগোরাসদের, ওদের বিশ্বাসের যাদুশাস্ত্রীয় অরিজিনকে। এবং বর্তমান পর্যন্ত অকাল্ট অরিজিন্সকে দেখিয়ে দেয় এমন সব ডকুমেন্টস যার উপর "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান" নামের আরেকটা আর্টিকেল সিরিজ লিখেছি। [এটা একরকমের কুফর বিত তাগুত বলা যেতে পারে। মূলত তা-ই, কারন যাদুশাস্ত্রীয় আকিদা নির্ভর মডার্ন কস্মোজেনেসিস প্রত্যেক ব্যক্তিকে ইলাহ ভাবতে শেখায় অর্থাৎ তাগুত হবারই পথ দেখায়। আর কুরআন সুন্নাহর দলিল গুলো হচ্ছে আল ঈমান বিল্লাহ। সহজ করে বললে মহাকাশ তত্ত্বের যাদুশাস্ত্র নির্ভর  উৎসের বিষয়ে ধারনা লাভ আপনাকে তাগুতি শিক্ষাকে  বর্জন করতে শেখাবে এবং কুরআন সুন্নাহর সৃষ্টিতত্ত্বীয় দলিল আপনাকে সত্যিকারের কস্মোলজিক্যাল-এ্যাস্ট্রনমিক্যাল নোশনকে পরিপূর্নভাবে বিশ্বাসের দলিল দেবে।]


আমরা নিন্মবর্নিত নীতি গুলোর যেকোন একটি অবলম্বন করেই মেইনস্ট্রিম ভুয়া এস্ট্রোনোমিকাল আইডিয়াকে বাতিল সাব্যস্ত করনের জন্য ব্যবহার করতে পারিঃ

১.প্রতিষ্ঠিত কস্মলজিক্যাল আইডিয়া কুরআন সুন্নাহ পরিপন্থী এবং এর দলিল বিপরীত ধরনের এস্ট্রনমির বর্ননা দেয়, তাই মেইনস্ট্রিম এস্ট্রোনোমিকাল স্ট্যান্ডার্ড বাতিল।

২.এগুলোর অরিজিন্স বা উৎস কুফরি যাদুশাস্ত্র। এসব সুস্পষ্ট কুফরি আকিদার উপর গড়ে উঠেছে, তাই বাতিল।

৩.এগুলোর(হেলিওসেন্ট্রিক থিওরির) সাথে বাস্তবতার মিল নেই, বা বাস্তবে এরকমটা দেখা যায়, তাই বাতিল।


৩য়পয়েন্টে আমরা অবজারভেবল তথ্য প্রমান গুলো এনে থাকি আমরা যার মধ্যে দুর্বলতা আছে। এগুলো যে ভুল প্রমাণ যোগ্য সেটা প্রথমেই আলোচনা করেছি কিন্তু প্রথম দুইটার মধ্যে দুর্বলতা নাই। এজন্য আমরা ওদের বিরোধিতায় প্রথম দুই নীতির উপরে চলব। 



অনেক মানুষ এরকম যে সবকিছুর অবজারভেবল আকলি ব্যাখ্যা না পেলে তাতে বিশ্বাস করতে পারেন না। তাদের জন্য আবারো একই কথাই বলব,আমাদের হাতে সে সময় ও সুযোগ নেই যে সারাদিন এস্ট্রোনমির মধ্যে ডুবে থাকব। সাহাবি আজমাঈনরা কেউ কি বলেছেন, যমীনের প্রান্তসীমানায় কি আছে ,সূর্য যমীনের উপর কত কিলোমিটার উপরে....এগুলোর উত্তর না দিলে আমি মানব না!? এসব প্রশ্নের উত্তর কি খুব গুরুত্বপূর্ণ? আমার তো কখনো এই সব প্রশ্ন মনে জাগেওনা, সংশয়ো হয়না। সাহাবিদের কওলে প্রতিটি বিষয়ের যে ব্যাখ্যা তা কি যথেষ্ট নয়! যাদের এরপরেও কৌতূহল কাজ করে, তারা বিদেশি বহু এসংক্রান্ত সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে যুক্ত হতে পারেন। তারা নিজেরাও এসব নিয়ে গবেষণা করতে পারেন, একাজে আমরা বাধা দেইনা। 



উসূল-৪

-বিশ্বের অন্যান্য জিওসেন্ট্রিক মতাবলম্বী এবং আমাদের অবস্থানগত নীতি-

বর্তমানে কাফিরদের মধ্যেও অনেক ধরনের জিওস্টেশনারী কস্মলজির মডেল এবং ম্যাপ দেখা যায়। এদের পরস্পরের মধ্যে মতানৈক্য সূর্য-চন্দ্রের কক্ষপথ এবং আসমানের আকৃতি,ম্যাপের প্রকৃতি। চাঁদ সূর্যের ব্যপারে স্পিরিচুয়ালিস্ট ট্রেডিশনের জিওসেন্ট্রিক মতাবলম্বীদের কনসেনসাস হচ্ছে চাঁদ সূর্য ঘড়ির কাটার মত যমীনের উপর চক্রাকারে ঘুরছে। অর্থাৎ সূর্যোদয়-চন্দ্রোদয় পুরোটাই ইল্যুশন, বাস্তবে ঘটে না। স্পিরিচুয়ালিস্ট কারা এ নিয়ে বিশদ লেখালিখি করেছি ব্লগে। সহজ ভাষায় জ্বীন শয়তানের পূজারী। এটা অর্থোডক্স খ্রিষ্টানরা অনুসরণ করেনা। ইউটিউবে যাদের ভিডিও দেখেন বিশেষ করে এ বিষয়ে সেলিব্রেটি পর্যায়ের অর্থোডক্স খ্রিষ্টানদের সাথে একটা সময় আমার যোগাযোগ ছিল। আমি খুব ভালভাবে অবগত যে ঘড়ির কাটার মত চক্রশীল মডেলের অরিজিন খ্রিষ্টানরা নয় বরং আধ্যাত্মবাদী মালাউনরা। সুতরাং ওটাকে খ্রিষ্টান মডেল বলা সঠিক না। আমাদের কুরআন সুন্নাহ চাঁদ সূর্যের কক্ষপথের ব্যপারে একদম স্পষ্ট বর্ননা দেয়।আল্লাহ আযযা ওয়াযাল কুরআনেই কর্দমাক্ত জলাশয়ে ফিজিক্যালি সেট হবার কথা সূরা কাহাফে বর্ননা দেন। এর ব্যাখ্যায় সাহাবীরা স্পষ্টভাবে এটাই বলেন। অনেক গুলো বর্ননা আছে। প্রাচীন মুফাসসিরীনগন এটাকে গ্রহন করেছেন। একাধিক সহীহ হাদিসও এই বিষয়ে আছে। যেমনঃআবু যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি একটি গাধার ওপর নবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে ছিলাম। তখন তার উপর একটি পাড়যুক্ত চাদর ছিল। তিনি বলেনঃ এটা ছিল সূর্যাস্তের সময়, তিনি আমাকে বলেনঃ “হে আবু যর তুমি জান এটা কোথায় অস্ত যায়?” তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ আল্লাহ এবং তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বলেনঃ সূর্যাস্ত যায় একটি কর্দমাক্ত ঝর্ণায়, সে চলতে থাকে অবশেষে আরশের নিচে তার রবের জন্য সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, যখন বের হওয়ার সময় আল্লাহ তাকে অনুমতি দেন, ফলে সে বের হয় ও উদিত হয়। তিনি যখন তাকে যেখানে অস্ত গিয়েছে সেখান থেকে উদিত করার ইচ্ছা করবেন আটকে দিবেন, সে বলবেঃ হে আমার রব আমার পথ তো দীর্ঘ, আল্লাহ বলবেনঃ যেখান থেকে ডুবেছে সেখান থেকেই উদিত হও, এটাই সে সময় যখন ব্যক্তিকে তার ঈমান উপকার করবে না” । [আহমদ]


সহিহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নং ১৬১

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস



আকল ও নফসের গোলাম কাফিররা তাদের আকলি অবজারভেশন অনুযায়ী সূর্যাস্তের বিষয়টি মানতে পারেনা তারা এজন্য বিশ্বাস করে এটা চক্রাকারে ঘোরে। ওদের কাছে কোন অমোঘ সত্য দলিলও নেই যেমনটা আমাদের হাতে আছে। আমাদের অবস্থান হচ্ছে সাহাবীয়্যাতের বিশ্বাসের অনুরূপ। আর তা হলো, কুরআনের বর্নিত উদয়াচল ও অস্তাচলের অস্তিত্ব সত্য। সূরা কাহাফের আল্লাহর কথা সত্য। হাদিসের কথা সত্য। সাহাবীদের এই সংক্রান্ত বিষয়ে হওয়া কথোপকথনটি সত্য। প্রত্যেক বর্ননাই একে অন্যের সাথে শতভাগ সঙ্গতিপূর্ণ এবং তা অভিন্ন সত্যের বর্ননা দেয়, আর তা এই যে সূর্য ফিজিক্যালি অস্তমিত হয়। 


আমরা আকলের অনুসারী নই। বরং সাহাবাদের আকিদা বিশ্বাসের অন্ধ অনুসারী। আকল ও নাকলের ব্যপারে আমাদের উসূল হচ্ছে-

★ যদি কোন বিষয়ের ব্যাখ্যায় শারঈ দলিল এক্সিস্ট করে, তখন আকল নির্ভর কনক্লুশন যতই সুন্দর হোক না কেন, যতই "লজিক্যাল" হোক না কেন আমরা সজ্ঞানে তা বাতিল সাব্যস্ত করি। দলিলের কঠোর অনুসরণের উদাহরণে আমরা বলতে পারি, যদি আমরা চোখে কোন জিনিসকে বামদিকে যেতে দেখি, কিন্তু শারঈ দলিল সে জিনিসকে ডানদিকে যাবার কথা বলা হয় তবে আমরা চোখ বুজে বলব, আমরা ভুল দেখছি কিংবা আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভুল, কুরআন সুন্নাহর দলিলে যেটা আছে সেটাই হক্ক। কিভাবে হচ্ছে সে ব্যপারে লা মালুম, কিন্তু দলিলে যেটা বলা আছে সেটাই হক্ক। 

****************************************************************************

এ্যাজ আ বিলিভার, ইসলামে এক্সিস্টিং দলিল এর ইত্তেবা করা বাঞ্ছনীয়। কস্মোলজিক্যাল সাব্জেক্টে আমাদের উসূল হলো, 

★যদি কোন বিষয়ে কাফিরদের বলা তত্ত্বের বিপরীতে কুরআন হাদিস,হতে পারে একদম জঈফ হাদিস-আসার, হতে পারে কওল কিংবা এমন কোন ইজরাঈলি বর্ননা যা সাহাবিগন গ্রহন করেছিলেন,যা কুরআন সুন্নাহ অন্যকোন দলিলকে রদ করে না বা সাংঘর্ষিকতা তৈরি করে না। বরং অতিরিক্ত জ্ঞান দান করে। আমরা আকলি সিদ্ধান্তের বদলে  সেসবকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা দলিল হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহন করব। আমরা কাফিরদের কথার বিপরীতে এইসব দলিলগুলোকে সত্য হিসেবে উপস্থাপন করি, এইসমস্ত বর্ননাগুলো কাফিরদের কথা কিংবা নিজেদের মনগড়া আকলি ব্যাখ্যার চেয়ে আমাদের কাছে অধিকতর বেশি গ্রহণযোগ্য। একজন সত্যিকারের সালাফের অনুসারী কখনোই আকলি বুঝকে এক্সিস্টিং সুস্পষ্ট শারঈ দলিলের উপরে প্রাধান্য দেয়না। আল্লাহ আমাদের এরকম বিভ্রান্তি থেকে হেফাজত করুন। আমিন। সেসমস্ত শারঈ দলিল অনুসরনে আমাদের নীতি হচ্ছে আমরা আসমান যমীনের অদেখা জগতের ব্যপারে কুরআন সুন্নাহ বা সালাফের থেকে শুনলাম এবং মানলাম।  

★আমরা সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে দুর্বল হাদিস/আসার/কওল সমূহকেও এজন্যই গুরুত্ব দিচ্ছি যে,অদেখা জগত সমূহের ব্যপারে কাফিরদের মনগড়া তত্ত্ব এবং যাদুশাস্ত্র আশ্রিত বিশ্বাসভিত্তিক যে অসত্য তথ্য বা জ্ঞানগত ব্যাপকতা রয়েছে এর বিপরীতে আকলি চিন্তার বদলে দলিলের অনুসরনকে অধিকতর কল্যাণকর মনে করি। অদেখা জগতের বিষয়ে যথাসম্ভব বেশি পরিমাণে দলিলভিত্তিক বর্ণনার অন্বেষণ করি। যদি শুধুমাত্র সহিহ ইসনাদকে গ্রহন করা হয়,এবং সহিহ ব্যতিত সবকিছুকে বর্জন করা হয়, তবে যৎসামান্য জ্ঞান ছাড়া অধিকাংশ বিষয়ই অমিমাংসিত থাকবে। তখন সাধারন মানুষ আকলনির্ভর ত্রুটিপূর্ণ চিন্তা শুরু করবে যেটা দলিলের অনুসরণের চেয়ে নিকৃষ্ট। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে আলিমগন আজকে মনগড়া, যাদু ও দর্শনভিত্তিক বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বীয় জ্ঞানকে গ্রহনকে মোটেও অপরাধ মনে করেন না,আমরা মনে করি দুর্বল দলিলসমূহকে গুরুত্ব দেয়া ও গ্রহন করা কাফিরদের কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কথা গ্রহনের তুলনায় শত সহস্রগুন উত্তম। হাদিস দুর্বলতা রাবী বা বর্ননাকারী এবং এর তাহকিককারীর উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। দেখা যায় একাধিক অভিন্ন বক্তব্যের হাদিসের মধ্যে একটি জঈফ আরেকটি সহিহ! এও দেখা যায়, একজন আলিম একটি হাদিসকে দুর্বল বলে বাদ দিচ্ছেন,  অন্য আরেক আলিম সেটাকে গ্রহণযোগ্য বলছেন। এজন্য সৃষ্টিতত্ত্বীয় বিষয়ে যুক্তি-বিবেক বুদ্ধি ব্যবহারের চেয়ে দুর্বল বর্ননা কিংবা কওল সমূহকে পছন্দ করি। 

★এই বিষয়ে আমাদের কাছে প্রাচীন মুফাসসীরীন, মুহাদ্দীসীন ইমামদের কুরআন হাদিসের বক্তব্য, মন্তব্য ও ব্যাখ্যার বিশেষ গ্রহনযোগ্যতা ও গুরুত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের নীতি হলো, একাধিক আলিমের মধ্যে কুরআন হাদিস ও সাহাবীদের বিশ্বাস/কথোপকথনের দলিলের অপেক্ষাকৃত অধিকতর নিকটবর্তী মতকে গ্রহন। উদাহরণস্বরূপ ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ রহঃ বলতেন চাঁদের নিজস্ব আলো আছে, অন্যদিকে ইমাম ইবনু কাসির বলতেন চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। এক্ষেত্রে ইবনে তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ দলিলের অধিকতর নিকটবর্তী, তাই তার এ বক্তব্যকে আলিমদের পক্ষ থেকে আমাদের স্বপক্ষীয় মতামত হিসেবে তুলে ধরব। তাকে এক্ষেত্রে গ্রহন করবার কারন তিনি কুরআন হাদিস/আসারের অধিকতর নিকটবর্তী। একইভাবে ইমাম কুরতুবি (রহঃ),সুয়ুতী(রহঃ) প্রমুখ যমীনকে মুসাত্ত্বাহা বলতেন অন্য দিকে ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ), ইবনে হাযম (রহঃ) বলতেন কুরউইয়্যাহ। দলিলের অধিকতর নিকটবর্তী ইমাম কুরতুবি (রহঃ), সুয়ূতী (রহঃ)। সুতরাং আমরা আমাদের যাবতীয় লেখনীতে কুরতুবি, সুয়ুতি,ইবনে জারির প্রমুখ আলিমদের রেফারেন্স গ্রহন করব। এখানে সালাফের থেকে আসা যাবতীয় দলিলের প্রক্সিমিটিই বা নৈকট্যের ভিত্তিতেই নেয়া হচ্ছে। যেসব আলিম কাফিরদের সোকল্ড বিজ্ঞান ও গ্রীক কালামি হেলেনিস্টিক এ্যাস্ট্রনমি ঘেষা বক্তব্য দেন তাদেরকে আমরা অসম্মান করিনা বা বিদ্বেষ পোষণ করিনা।  

★আমরা যদি কখনো আকলি ব্যাখ্যা দেইও সেটা অবশ্যই নসের ভায়োলেশনে হবেনা। বরং কুরআন সুন্নাহর বক্তব্যের অনুকূলে সেটাকে আরো শক্তিশালী করার জন্য করা হবে। 

★আমরা কাফিরদের বলা ও তৈরিকৃত বিভিন্ন ডকুমেন্ট,অইসলামিক ননরিলিজিয়াস সেকুলার সোর্সকে একমাত্র তখনই গ্রহন করি যখন তা পুরোপুরি ইসলামের দলিলের অনুকূলে থাকে এবং শারঈ ঐ দলিল গুলোর ব্যপারে আওয়ামের মধ্যে আকলি বুঝ তৈরিতে এবং ইয়াক্বিন তৈরিতে সাহায্য করে। অর্থাৎ আমাদের মাকসাদ হচ্ছে আল্লাহ ও তার রাসূল(সা) ও তার সাথীদের থেকে আসা যাবতীয় চিন্তাধারা ও বিশ্বাসকে ডিফেন্ড করা, পুনরুজ্জীবিত করা, শক্তিশালী করা। এক্ষেত্রে আমরা নসের সাথে সংগতিপূর্ন তথ্যকে গ্রহন এবং যতটুকু অসংগতিপূর্ন ততটুকুন বাতিল সাব্যস্ত করি। তবে এই সোর্স থেকে গ্রহন শুধুমাত্র আওয়াম সাধারনের মনের সংশয় প্রশমনের জন্য।

★যেহেতু কাফিরদের মনগড়া ব্যাখ্যার বিপরীতে ব্যাখ্যার দরকার হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করব ব্যাখ্যা গুলো নস থেকে নেয়ার। আকলি যুক্তিকেন্দ্রিক ব্যাখ্যা ঠিক তখন প্রয়োগ করব, যখন কুরআন হাদিস/আসার/কওল বা সালাফের সব ধরনের সোর্সের কোন স্থানেই কোন উত্তর না পাওয়া যাবে। তবে এটাকে আমরা পছন্দ করিনা। আমরা বলতে পছন্দ করিঃ "ওয়া আল্লাহু তা'য়ালা আ'লাম"।

★এই নীতি শুধুমাত্র কস্মোলজি/এস্ট্রনমিক্যাল সাবজেক্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 

এবার আপনারা মিলিয়ে দেখুন, "ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব" এবং "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান" এই উসূল গুলোকে মেনেই লিখিত হয়েছে। আমার মনে পড়ে ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্বের ভূমিকাতেই এই বিষয়টি অন্যভাবে সংক্ষেপে লিখেছিলাম। 

****************************************************************************


এবার আসি উসূল অনুযায়ী সূর্যাস্তের 'দলিল আশ্রিত' আকলি ব্যাখ্যায়। আমরা সূর্যকে সরল রেখায় পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে গমনকারী বলি, এটা যমীনের পূর্বপ্রান্তের উদয়াচলে উদিত হয়ে পশ্চিমের অস্তাচলের দিকে যেতে থাকে। পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যভাগ অর্থাৎ কারেন্ট স্ফেরিক্যাল ম্যাপের নিরক্ষরেখার অঞ্চল গুলোয় যখন সূর্যকে উদিত ও অস্ত  হতে দেখা যায় সেটা মূলত পার্স্পেক্টিভের জন্য হয় কিন্তু আপনার অবস্থান যতই পূর্বদিকে হবে ততই বাস্তব উদয়ের কাছে থাকবেন,তেমনি যতই পশ্চিম দিকে থাকবেন ততই বাস্তব অস্তগমনের কাছে থাকবেন। একদম পশ্চিম প্রান্তের আশপাশে যে অস্ত দেখা যায় সেটা বাস্তবিক অস্তগমন। এজন্য ধরুন কুয়েতে যখন সূর্যাস্ত দেখা যায় সেটাকে বাস্তব সূর্যাস্ত বলা যায়না, সেটা পার্স্পেক্টিভের জন্য হয়, এজন্য সেখানে যখন রাত, তার সম্মুখ পশ্চিম ভাগের ভূমিতে বসবাসকারীদের সূর্যকে মাথার উপর দেখে। এভাবে এক পর্যায়ে সর্বপশ্চিমে আর অস্তগমনের বিষয়টি পার্স্পেক্টিভ ইস্যু হয়ে থাকেনা। বরং তখন ফিজিক্যালি সেট হয়। সূর্য শীত গ্রীষ্মে কক্ষপথ পালটায়। সাহাবিদের কথায় জানা যায় উদয় ও অস্তাচলে মোট ১৮০*২=৩৬০ টি আলাদা আলাদা জলাধার আছে। হয়ত এটাই শীত গ্রীষ্মের উদয় অস্তের সময় বাড়া কমার জন্য দায়ী। যদি অস্তাচলের মধ্যে এমন কোন কিছুকে আল্লাহ প্রস্তুত করে রাখেন যা মানব আকলে অজানা, যা কিনা সূর্যকে মুহুর্তের মধ্যে পূর্বে নিয়ে উদিত করে। আর ওই চোখের পলকের মুহুর্তে সূর্যের অস্তগমনের পর সিজদাহ ও অনুমতিগ্রহনের কাজ হয়ে যায় তবে, যমীনের উপর মানব জাতি সর্বক্ষন সূর্যকে কোন না কোন স্থানে দেখতে পাবে।


এবার আসুন উসূল অনুযায়ী সূর্যাস্তের ব্যপারে শারঈ দলিল গুলোকে আকলি বুঝে শক্তিশালীকরন এবং আওয়াম সাধারনের ইয়াক্বিন তৈরিতে ভূমিকার জন্য অইসলামিক সেকুলার,কাফিরদের সোর্স গুলোর দিকে যাওয়া যাক। যমীনকে একদল লোক স্কয়ার বিশ্বাস করে। তারা রেফারেন্স হিসেবে ইদ্রিস(আ) সূর্যকে যমীনের প্রান্তসীমায় একাধিক পোর্টাল থেকে উদিত ও অস্ত যেতে দেখেছেন বলে কিছু দলিল পেশ করে।কাফিরদের একদল এযিমুথাল ম্যাপ প্রজেকশনে কিছু ত্রুটি দেখতে পায় যেগুলোর একমাত্র সল্যুশন হয় স্কয়ার ম্যাপে। যমীনকে স্কয়ার বা চারকোনা করলে সূর্যকে বাধ্যতামূলকভাবে উদিত এবং অস্তমিত করতে হবে। তারাও অস্তাচল ও উদয়াচলে পোর্টাল জাতীয় কিছুর অস্তিত্বের কথা বিশ্বাস করে। পোর্টালের কাজ হলো সূর্যকে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে চোখের পলকে নিয়ে গিয়ে উদিত করা। তাদের এই ব্যাখ্যা সাহাবীদের সূর্যাস্ত ও উদিত হবার বিশ্বাসকে সত্যায়ন করে এবং আকলি আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরিতে সাহায্য করে। সুতরাং আমরা আকলি ব্যাখ্যা হিসেবে একে নসের সাথে সাংঘর্ষিকতা না করার শর্তে গ্রহন করতে পারি। আমাদের উদ্দেশ্য সাহাবিয়্যাতের আকিদা বিশ্বাসকে একমাত্র গ্রহণযোগ্য হক্ক আকিদা(বিশ্বাস) হিসেবে প্রতিষ্ঠা। আকলি বুঝকে প্রচার করা আমাদের মাকসাদ নাহ্। শুনেছি আকলকে দলিল হিসেবে মু'তাযিলা সম্প্রদায়রা গ্রহন করে। সুতরাং আকলকে সবার উপরে ধরে সুস্পষ্ট সহিহ হাদিসে কুদসির দলিলকে অস্বীকার অনেক বড় রকমের আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়। এই বিষয়গুলী আমি সংক্ষেপে ইসলামের দৃস্টিতে সৃষ্টিতত্ত্বেও আলোচনা করেছি। জানিনা ২/৩ বছর পর নতুন করে ফিতনাহ শুরুর কারন কি। 


ওয়াল্লাহু আ'লাম।





যা কিছু লিখলাম তার মধ্যে যা কিছু কল্যাণকর তা আল্লাহর পক্ষ থেকে, যা কিছু অকল্যাণকর তা আমার ও শয়তানের পক্ষ থেকে। 


سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لآ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ

Sunday, March 7, 2021

আত্ব তাক্বদীর




عَنْ عُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ ( قال: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللَّهُ الْقَلَمَ فَقَالَ لَهُ: اكْتُبْ، قَالَ: رَبِّ وَمَاذَا أَكْتُبُ؟ قَالَ: اكْتُبْ مَقَادِيرَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ». ( د, حم ) صحيح لغيره

উবাদাহ ইব্‌ন সামেত (রাঃ)

তিনি বলেনঃ “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ “আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম যা সৃষ্টি করেছেন কলম [১], তিনি বলেনঃ লেখ। সে বললঃ হে আমার রব, কি লিখব? তিনি বলেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জিনিসের তাকদির লিখ”। [আবু দাউদ ও আহমদ] হাদীসটি সহিহ লি গায়রিহি।

আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ১২৩
হাদিসের মান: সহিহ লিগাইরিহি
Source: ihadis.com




মুসলিম ইবনু ইয়াসার (রাঃ)
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) কে কুরআনের এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, ‘যখন তোমার প্রভু আদম সন্তানদের পিঠ হতে তাদের সমস্ত সন্তানকে বের করলেন’। ওমর (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, রাসূল  (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন। অতঃপর আপন ডান হাত দ্বারা তাঁর পিঠে বুলালেন এবং সেখান থেকে একদল সন্তান বের করলেন। অতঃপর বললেন, এদেরকে আমি জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি, জান্নাতের কাজই তারা করবে। এক সাহাবী প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাহলে আমল কেমন হবে? রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তা’আলা যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন তখন তার দ্বরা জান্নাতের কাজই করিয়ে নেন। অবশেষে জান্নাতীদের কোন কাজ করে মৃত্যুবরণ করে। আর আল্লাহ তা’য়ালা এর দ্বারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। অনুরূপভাবে আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেন, তার দ্বারা জাহান্নামের কাজই করিয়ে নেন। অবশেষে সে জাহান্নামীদের কোন কাজ করেই মৃত্যু বরণ করে এবং আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান।

তাহক্বীক্ব : যঈফ।

সহিহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নং ৯
হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস
Source: ihadis.com




عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ قَتَادَةَ السُّلَمِيِّ -رضي الله عنه- أَنَّهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: « إِنَّ اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ أَخَذَ الْخَلْقَ مِنْ ظَهْرِهِ وَقَالَ: هَؤُلَاءِ فِي الْجَنَّةِ وَلَا أُبَالِي، وَهَؤُلَاءِ فِي النَّارِ وَلَا أُبَالِي » . فَقَالَ قَائِلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَعَلَى مَاذَا نَعْمَلُ؟ قَالَ: « عَلَى مَوَاقِعِ الْقَدَرِ » . (حم) حسن

আব্দুর রহমান ইব্‌ন কাতাদা আসসুলামি

তিনি বলেছেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ “নিশ্চয় আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তার পিঠ থেকে মখলুক বের করেন ও বলেনঃ এরা জান্নাতি আমি কোন পরোয়া করি না, এরা জাহান্নামী আমি কোন পরোয়া করি না। তিনি বলেন এক ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহর রাসূল তাহলে কিসের ওপর আমল করব”? তিনি বললেনঃ “তাকদিরে নির্ধারিত স্থানে” [১]। [আহমদ]

আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ১৫৭
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
Source: ihadis.com




আবু খুযামা

আবু খুযামা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, আমি একদিন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞেস বরলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমরা যে মন্ত্র পাঠ করে থাকি এবং কোন ঔষধি দ্বারা ঔষধ করে থাকি অথবা কোন উপায় দ্বারা আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করি, তা কি তাক্বদীরের কিছু প্রতিরোধ করতে পারে? তিনি বললেন, তোমাদের এ সকল চেষ্টা তাক্বদীরের অন্তর্ভুক্ত।

তাহক্বীক : যঈফ।

মিশকাতে জয়িফ হাদিস, হাদিস নং ১০
হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস
Source: ihadis.com


সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৮৫। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) আমেরি ইবনু ওয়াসিলা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, হতভাগ্য সেই ব্যক্তি, যে তার মাতৃ উদর থেকে হতভাগ্য রুপে জন্ম-গ্রহণ করেছে। আর ভাগ্যবান ব্যক্তি সে, যে অন্যের কাছ থেকে নসীয়ত লাভ করে। এরপর তিনি (আমির ইবনু ওয়াসিলা (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবী হুযায়ফা ইবনু উসায়দ (রাঃ) -এর কাছে এলেন। তখন তিনি তার কাছে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) -এর উক্তি বর্ণনা করলেন এবং বললেন, আমল ব্যতীত একজন মানুষ কিভাবে গুনাহগার হতে পারে? এরপর তিনি (হুযায়ফা (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি এতে বিস্ময়বোধ করছ? আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ যখন শুক্রের উপর বিয়াল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় তখন আল্লাহ তাআলা একজন ফিরিশতা পাঠানা সে সেটিকে (শুক্রকে) একটি আকৃতি দান করে, তার কান, চোখ, চামড়া, গোশত ও হাড় সৃষ্টি করে দেয়। এরপর সে বলে, হে আমার প্রতিপালক! সে কি পুরুষ, না ন্ত্রীলোক হবে? তখন তোমার রব যা চান নির্দেশ দেন এবং ফিরিশতা নির্দেশ মুতাবিক লিপিবদ্ধ করেন। এরপর সে বলতে থাকে, হে আমার প্রতিপালক! তার বয়স কত হবে? তখন তোমার রব যা চান তাই বলেন এবং সেই মুতাবিক ফিরিশতা লিখেন। এরপর সে বলতে থাকে, হে আমার প্রতিপালক! তার জীবিকা কি হবে, তখন তোমার রব তার মর্জি মাফিক মীমাংসা করেন এবং ফিরিশতা তা লিপিবদ্ধ করেন। এরপর ফিরিশতা তাঁর হাতে একটি লিপি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। সে তাতে বাড়ায়ও না এবং কমায়ও না।






মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৭। আবূদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা লোক সকল জিজ্ঞেস করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ। আমরা যে আমল করছি এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? এটা কি নিষ্পন্ন হওয়া কোন বিষয়, না কি যা আমরা এখন শুরু থেকে করছি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং তা (আমল) নিষ্পন্ন হওয়া বিষয়ের ভিত্তিতে। তারা বললো, তাহলে কর্মের বিষয়টি কীভাবে (দেখা হবে)? ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, প্রত্যেক মানুষ প্রস্তুত (এমন কর্ম করার জন্য) যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (হাকিম ও তাবরানী। হাদীসটির পাশে সহীহ্ হবার প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে।)




মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৬। আবূল আসওয়াদ আদ্ দুয়ালী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা প্রত্যুষে ‘ইমরান ইবনুু্ হুসাইন (রাঃ) এর কাছে গমন করি। তিনি ‘ইয়া আবাল আসওয়াদ’ বলে আমাকে সম্বোধন করে তারপর (সেই) হাদীস বর্ণনা করেন। (একদা) জুহাইনা অথবা মুযাইনা গোত্রের জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সমীপে উপস্থিত হন এবং জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! মানুষ আজকের দিনে যে আমল করছে এবং তাকে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? অর্থাৎ এই আমল কি পূর্বে নির্ধারিত তাকদীরের ভিত্তিতে যা তাদের জন্য অতিবাহিত ও সম্পন্ন করা হয়েছে। নাকি তারা ভবিষ্যতে যা করবে তাই হবে এর ভিত্তিতে? (অর্থাৎ) যা তাঁদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য নিয়ে এসেছেন এবং যে বিষয়ের উপর তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্র“তি গ্রহণ করা হয়েছিল (আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘আমি কি তোমাদের প্রভু নই’ বিষয়ক) সেই ভিত্তিতে (আমল করবে এবং তদানুসারে ফলাফল ভোগ করবে)? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং যা তাদের জন্য বিগত ও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে সেই বিষয়ের উপর (বিশ্বাস রেখে কর্ম করবে)। প্রশ্নকারী বললেন, তা-ই যদি হয় তবে তারা কেন কর্ম বা আমল করবে, ইয়া রাসূলাল্লাহ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দু‘টি ঠিকানার (জান্নাত ও নরক) মধ্যে যাকে যেটির জন্য আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি করেছেন, তাকে সেটির জন্য কর্ম করার জন্য প্রস্তুত করে দেন। এ বিষয়টির সত্যয়ন রয়েছে আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে ( )(বুখারী, মুসলিম ও আবূ দাউদ)।



মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৫। ইমরান ইবনুু্ হুসাইন (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, (একদা) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করা হয় অথবা বলা হয়, জান্নাতবাসীগণের মধ্য থেকে নরকবাসীদের কি চিনা যায়? তিনি বললেন, হ্যাঁ। প্রশ্নকারী বললেন, তাহলে আমলদার লোকগণ কোন আমল করবেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রত্যেকে সেই আমলই করে, যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে অথবা যা তার জন্য সহজ করা হয়েছে। (বুখারী, মুসলিম ও আবূ দাউদ।)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর বিন আল’আস (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হলেন। তাঁর হাতে দুটি কিতাব। বললেন, তোমরা জান কি এ দু‘টো কিতাব কী? আমরা বললাম, জ্বি না, তবে আপনি যদি বলে দেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি তাঁর ডান হাতের কিতাব সম্পর্কে বললেন-এটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর পক্ষ থেকে, এতে লিপিবদ্ধ আছে জান্নাতবাসীগণের নাম, তাদের পিতার নাম এবং তাদের গোত্রের নাম। জান্নাতবাসী সর্বশেষ ব্যক্তির নামে (এই কিতাব) শেষ করা হয়েছে; এদের সংখ্যা আর কখনও বৃদ্ধি করা হবে না এবং হ্রাসও করা হবে না। এরপর তিনি (রাসূল) তাঁর বাম হাতে রক্ষিত কিতাব সম্পর্কে বললেন, এটি নরকবাসীদের কিতাব। এতে লিপিবদ্ধ আছে তাদের নাম, পিতার নাম ও গোত্রের নাম এমনিভাবে সর্বশেষ ব্যক্তির নাম দিয়ে (এই কিতাব) সমাপ্ত করা হয়েছে। এদের সংখ্যাও আর কখনও বৃদ্ধি করা হবে না এবং হ্রাস করা হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, বিষয়টি যদি এমনই নিষ্পত্তি (বা সম্পন্ন) হয়ে গিয়ে থাকে, তবে আর আমরা আমল করবো কিসের জন্য? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা দৃঢ় প্রত্যয় ও বাসনা নিয়ে কর্মে (আমল করতে) প্রবৃত্ত হও। (অর্থাৎ সৎকর্ম সম্পাদন করতে থাক)। কারণ, জান্নাতবাসীকে জান্নাতের কর্মের মাধ্যমে মৃত্যু দেওয়া হবে। যদিও সে অন্য কর্মও করে (অর্থাৎ কোন কোন সময় জান্নাতের পরিপন্থী কর্ম করলেও।) আর জাহান্নামবাসীকে নরকবাসীর কর্মের মাধ্যমে তুলে নেয়া হবে যদিও সে অন্য কর্মও করে থাকে। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে বললেন, তোমাদের মহাপ্রভু (আল্লাহ) বান্দাদের সম্পর্কে ফায়সালা চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। এরপর তাঁর ডান হাত সম্প্রসারিত করে বললেন, একদল প্রবেশ করবে জান্নাতে এবং বাম হাত সম্প্রসারিত করে বললেন অন্য একদল প্রবেশ করবে ‘সায়ীর’ জাহান্নামে। (বায্যার নাসাঈ, তিরমিযী। তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।)




মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩১। আবূ আবদুর রহমান আস-সুলামী, আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, একদা আল্লাহর রাসূল বসে আছেন, তাঁর হাতে ছিল একখন্ড কাষ্ঠ, যা দিয়ে মাটি পেটানো যায় (মুগুর ধরনের)। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি মস্তক উত্তোলণ করে ইরশাদ করলেন, তোমাদের প্রত্যেকের আত্মাকে জান্নাত অথবা দোযখে নিজ নিজ ঠিকানা অবগত করানো হয়েছে। হযরত আলী (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে আমরা আমল করবো কেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমল করে যাও, যাকে যে কর্মের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তা তার কাছে সহজ করা হয়েছে। (অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র কুরআনের এই আয়াত পাঠ করেন “অতএব, যে দান করে এবং আল্লাহকে ভয় করে এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে; আমি তাকে সুখের বিষয়ের জন্য সহজ পথ দান করবো; আর যে কৃপনতা করে ও বেপরওয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে; আমি তাকে কষ্টের বিষয়ের জন্য সহজ পথ দান করবো।” (সূরা আল-লায়ল, ৫-১০) (একই বর্ণনাকারী থেকে অপর বর্ণনায় আছে) আলী (রাঃ) বলেন, আমরা একদা ‘বাকীউল গারকাদ’ নামক একটি জানাযার সাথে ছিলাম। এমন সময় সেখানে আমাদের কাছে আল্লাহর রাসূল আগমন করলেন এবং বসলেন; আমরাও তাঁর চারপাশে বসে গেলাম। তাঁর সাথে ছিল একটি লাঠি যার উপর ভর করা যায়। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দৃষ্টি উত্তোলন করলেন এবং বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের আত্মার জন্য জান্নাত অথবা দোযখে তার ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে; আরও লিপিবদ্ধ করা হয়েছে-(প্রতিটি) আত্মার বদকার অথবা নেককার হওয়ার বিষয়। উপস্থিত জনতা বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাহলে আমরা কি আমাদের কিতাবের (তাক্দীর) উপর ভরসা করে আমল বা কর্ম পরিত্যাগ করব না? কারণ যে নেককার হবে, সে নেকীর (কল্যাণ) দিকে ধাবিত হবে এবং যে বদকার হবে, সে বদির (অকল্যান, অশুভ ও ভয়াবহতার) প্রতি ধাবিত হবে? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না তোমরা আমল করে যাও, প্রত্যেকেই সহজ পন্থা পাবে। সুতরাং যে বদকার হবে, তার জন্য অশুভ ও বদকাজ সহজ করা হবে; আর যে কল্যানকামী ও নেককার হবে, তার জন্য কল্যানময় কর্ম সহজ করা হবে। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ পাঠ করেন ( ) (বুখারী, মুসলিম, আবূ ইয়ালা।)



মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩০। জাবির ইবনুু্ আবদিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (একদা) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমরা কর্ম বা আমল করবো সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে এমন বিষয়ের ভিত্তিতে, নাকি যা আমরা নতুন করে শুরু করছি এমন বিশ্বাসের? তিনি উত্তরে বললেন-যা সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে (অর্থাৎ তাকদীরের বিশ্বাসের ভিত্তিতে)। সুরাকা বললেন, তাহলে আমলের তাৎপর্য কোথায়? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রত্যেক আমলকারীর জন্য তার আমল (কর্ম) সহজ হয়েছে। (অর্থাৎ যে কর্ম যার কাছে সহজ মনে হবে, ভাল হউক কিংবা মন্দ, তাকে সেই কর্মের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে।) (মুসলিম)




মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর২৮। উমর ইবনুল খাত্তার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, জুহাইনা অথবা মুযাইনা গোত্রের জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমরা কিসের ভিত্তিতে (বা বিশ্বাসে) আমল বা কর্ম করবো যা অতীত বিগত হয়ে গিয়েছে (তাকদীর), অথবা (নাকি) বর্তমান সময়ে শুরু হবে (কার্যকারণ) এর ভিত্তিতে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কর্ম করবে যা অতীত বা বিগত হয়েছে (তাকদীর) তার ভিত্তিতে। অতঃপর জনৈক ব্যক্তি অথবা কয়েকজন প্রশ্ন করল, তাহলে আমাদের আমলের তাৎপর্য বা উদ্দেশ্য কী, ইয়া রাসূলুল্লাহ? বললেন, জান্নাতবাসীগণের জন্য জান্নাতবাসীর (উপযুক্ত) কাজ সহজ করা হবে এবং দোযখবাসীদের জন্য দোযখবাসীর (উপযোগী) কাজ সহজ করা হবে। (এটি পূর্বের পরিচ্ছেদ বর্ণিত আবদুল্লাহ ইবনুু্ উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত সুদীর্ঘ হাদীসের একটি অংশ বিশেষ।)




মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর২৭। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমল কিসের ভিত্তিতে হবে যা বিগত হয়েছে অর্থাৎ তাকদীর অনুযায়ী, নাকি এখন (বর্তমান সময়ে) যা সৃষ্টি হচ্ছে (কার্যকরণ সম্পর্কের তার ভিত্তিতে?) তিনি বললেন, বরং যা সম্পন্ন হয়ে বিগত হয়েছে তার ভিত্তিতে, আমি বললাম, তাহলে আমল বা কর্মের তাৎপর্য কি, ইয়া রাসূলুল্লাহ? বললেন, যে কর্মের জন্য যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তা তার জন্য সহজ। (এতটুকু উপলব্দি করেই কর্মে প্রবৃত্ত হতে হবে)। (তিবরানী ও বায্যার)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর১৬। আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিনের জন্য আনন্দ সংবাদ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ তা’আলা তাঁর জন্য যা কিছুই লিপিবদ্ধ করুন না কেন তাতেই তার কল্যাণ। (সূয়ুতী, আবূ ইয়া’লা আবূ নাঈম, সুয়ূতী হাদীসটির পাশে হাসান হবার প্রতীক ব্যবহার করেছেন।)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৬। আনাস ইবনুু্ মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শেষ পরিণতি কী হয় তা না দেখে কারো সম্পর্কে তোমাদের পুলকিত কিংবা অবাক হওয়া উচিত নয়। কেননা, (এটা সত্য যে,) কোন আমলকারী তার জীবনের সুদীর্ঘকাল অথবা তার সময়কালের বিরাট অংশ নেক আমল করে কাটিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারতো। কিন্তু (পরবর্তীতে) সে উল্টে যায় এবং বদ আমল করতে থাকে। (অবশেষে তার পরিণতি হয় দোযখ), অপরদিকে (দেখা যায় যে,) আল্লাহর কোন বান্দা তার সময়কালের বিরাট অংশ বদ আমল করলো, যদি ঐ সময়ে তার মৃত্যু হতো, তবে সে দোযখে প্রবেশ করতো। (কিন্তু না) পরে সে প্রত্যাবর্তন করে এবং নেক আমল করতে থাকে এবং যখন আল্লাহ তা’আলা কোন বান্দার জন্য কল্যান চান তখন সেই বান্দাকে মৃত্যুর পূর্বে কল্যানে নিয়োজিত করবেন? সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কিভাবে তাকে কল্যাণে নিয়োজিত করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, তাকে সৎ কর্মের তওফিক দান করবেন। অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান। (তিরমিযী, এই হাদীসটিকে সহীহ্ বলেছেন। হাদীসটি আবূ ইয়ালা সাঈদ ইবনুু্ মানসূর, আব্দ ইবনুু্ হুমাইদ প্রমুখও বর্ণনা করেছেন।)



মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩। তা’উস ইবনুু্ য়ামানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের মধ্য থেকে বহু লোককে বলতে শুনেছি যে, প্রতিটি বস্তু (অস্তিত্ব লাভ করে) সুনির্দিষ্ট কদর (তাকদীর) নিয়ে। বর্ণনাকারী বলেন, আর আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনুু্ ‘উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, প্রতিটি বস্তু সুনির্দিষ্ট কদর (তাকদীর) এর সাথে যুক্ত। এমনকি অপারগতা ও সক্ষমতা (অর্থাৎ কোন কিছু করার শক্তি-সামর্থ এবং না পারার অপারগতাও তাকদীরের সাথে সংযুক্ত) (মুসলিম, মালিক)







সহীহ বুখারী (ইফাঃ), ৭০/ তাকদির৬১৬৪ মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূ-ল হাসান (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এইরুপ শপথ করতেনঃ শপথ অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী (আল্লাহর)।





সহীহ বুখারী (ইফাঃ), ৭০/ তাকদির৬১৫৯ মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ছোট গুনাহ সম্পর্কে যা বলেছেনঃ তার চেয়ে যথাযথ উপমা আমি দেখি না। (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) আল্লাহ আদম সন্তানের উপর যিনার কোন না কোন হিসসা লিখে দিয়েছেন; তা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চোখের যিনা হল (নিষিদ্ধদের প্রতি) নযর করা এবং জিহবার যিনা হল (যিনা সম্পর্কে) বলা। মন তার আকাঙ্ক্ষা ও কামনা করে, লজ্জাস্হান তাকে বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। শাবাবা (রহঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরুপ বর্ণনা করেছেন।









সহীহ বুখারী (ইফাঃ), ৭০/ তাকদির৬১৫৪ সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে থেকে যে সমস্ত মুসলমান যুদ্ধ করেছেন তাদের মাঝে একজন ছিল তীব্র আক্রমণকারী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে নযর করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামীকে দেখতে ইচ্ছা করে সে যেন এই লোকটির দিকে নযর করে। উপস্থিত লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি সেই লোকটির অনুসরন করল। আর সে তখন প্রচণ্ডভাবে মুশরিকদের সঙ্গে মুকাবিলা করছিল। এমন কি সে (এক পর্যায়ে) যখম হয়ে তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরণ করতে চাইল। সে তার তরবারীর তীক্ষ্ণ দিকটি তার বুকের উপর দাবিয়ে দিল। এমন কি দু-কাঁধের মাঝ দিয়ে তরবারী বক্ষ ভেদ করল। (এতদৃষ্টে) লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে দৌড়ে এসে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি সত্যই আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হল? লোকটি বলল, আপনি অমুক ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেনঃ “যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামী লোক দেখতে চায় সে যেন এ লোকটিকে দেখে নেয়। ” অথচ লোকটি অন্যান্য মূসলমানের তুলনায় অধিক রুপে আক্রমনকারী ছিল। সূতরাং আমার ধারণা ছিল এ লোকটির মৃত্যু এহেন অবস্হায় হবে না। যখন সে আঘাত প্রাপ্ত হল, তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল এবং আত্নহত্যা করে বসল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথা শুনে বললেনঃ নিশ্চয়ই কোন বান্দা জাহান্নামীদের আমল করেন মূলত সে জান্নাতী। আর কোন বান্দা জান্নাতী লোকের আমল করেন মুলত সে জাহান্নামী। নিশ্চয়ই আমলের ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার পারিণামের উপর।







সহীহ বুখারী (ইফাঃ), ৭০/ তাকদির৬১৪৭ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করে, তবে স্বভাবধর্মের (ইসলাম) ওপরই জন্মগ্রহন করে। কিন্তু তার পিতামাতা (পরবর্তীতে) তাকে ইয়াহুদি বা নাসারা বানিয়ে দেয়। যেমন কোন চতূস্পদ প্রাণী যখন বাচ্চা প্রদান করে তখন কি কানকাটা (ত্রুটিযুক্ত) দেখতে পাও? যতক্ষন তোমরা তার কানকেটে ক্রটিযুক্ত করে দাও। তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! নাবালিগ অবস্থায় যে মৃত্যুবরণ করে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা-আলা সর্বাধিক অবহিত।




সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৯৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) আবূল আসওয়াদ দায়লী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “ ইমরান ইবনু হুসায়ন (রহঃ) আমাকে বললেন, আজকাল লোকেরা যে সব আমল করে এবং যে কষ্ট করে, সে সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তা কি এমন কিছু যা তাদের উপর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং ভাগ্যলিপি দ্বারা তাদের উপর পূর্ব নির্ধারিত? নাকি ভবিষ্যতে তারা করবে যা তাদের কাছে তাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেন এবং যাদের উপর দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? তখন আমি বললাম, বরং ব্যাপারটি তো তাদের উপর অতীতে সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। রাবী বলেন, তখন তিনি বললেন, তাহলে তা কি যুলূম হবে না। তিনি বললেন, এতে আমি খুবই ঘাবড়ে গেলাম এবং বললাম, প্রতিটি বস্তুই আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর ক্ষমতাধীন। সুতরাং তিনি যা করেন, সে বিষয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না বরং তাদেরই জবাব দিহি করতে হবে। এরপর তিনি আমাকে বললেন, আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন। আমি আপনাকে প্রশ্ন করে আপনার উপলব্ধি অনুমান করতে চেয়েছিলাম। মূযায়না গোত্রের দুজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! লোকেরা বর্তমানে যে সব আমল করে এবং কষ্ট করে, সেগুলি কি তাদের জন্য ফয়সালা হয়ে গিয়েছে, আগেই তাকদীর দ্বারা নির্ধারিত, নাকি ভবিষ্যতে তারা সে সব আমল করবে, যা তাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে নিয়ে এসেছে এবং তাদের উপর দলীল প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ না বরং বিষয়টি তাদের জন্য ফয়সালা করা হয়েছে এবং পূর্ব থেকেই তাদের জন্য তা সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে? আল্লাহর কিতাবে তার প্রমাণঃ আর কসম মানুষের এবং তার, তিনি তাকে সূঠাম করেছেন, এরপর তাকে তিনি পাপ-পূণ্যের জ্ঞান দান করেছেন।”





সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রশ্ন করা না, ইয়া রাসুলুল্লাহ! জাহান্নামীদের থেকে জান্নাতীদের চিহ্নিত করা হয়ে গেছে কি? তিনি বললেন, হ্যা। রাবী বলেন জিজ্ঞাসা করা হল, তাহলে আমলকারী কিসের জন্য আমল করবে? তিনি বললেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সেই কাজই সহজ করে দেওয়া হবে, যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।





সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৯২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব, আবূ সাঈদ আশাজ্জ ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরাইব (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একখন্ড কাঠ হাতে নিয়ে উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি তা দ্বারা যমীনে টোকা দিচ্ছিলেন। এরপর তিনি তার মাথা উঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার জান্নাত ও জাহান্নামের ঠিকানা তিনি জানেন না। তারা বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তাহলে আমরা কাজ-কর্ম ছেড়ে কি ভরসা করে বসে থাকব না? তিনি বললেন, না, বরং আমল করতে থাক। যাকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তাই তার জন্য সহজ করা হয়েছে। এরপর তিনি তিলওয়াত করলেনঃ “সুতরাং যারা দান করল, পরহেযগারী ইখতিয়ার করল এবং যা ভাল তা গ্রহণ করল, কঠোর পরিণামের পথ সুগম করে দেব, পর্যন্ত। (সূরা আল লায়লঃ ৫-১০।)






সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৯০। উসমান ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বাকী গারকাদে একটি জানাযাতে ছিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এসে বসলেন এবং আমরাও তাঁর পাশে বসলাম। তার সংগে তাঁর ছড়িটিও ছিল। তিনি মাথা ঝুঁকিয়ে ছিলেন। সে সময় তিনি তার ছড়ি দ্বারা যমীনে টোকা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার ঠিকানা আল্লাহ তাআলা জান্নাতে ও জাহান্নামে নির্ধারণ করেননি এবং সে বদকার হবে ও পূণ্যবান হবে, তাও লিপিবদ্ধ করেননি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন জনৈক ব্যক্তি আরয করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ !আমরা কি আমাদের অদৃষ্ট লিপির উপর স্হির থেকে আমল ছেড়ে দেব না? তখন তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি নেককারদের অন্তর্ভুক্ত সে নেক্বকারদের আমলের দিকে পরিচালিত হবে। আর যে ব্যক্তি বদকারদের অন্তভুক্ত সে বদকারদের আমলের দিকে পরিচালিত হবে। এরপর বললেনঃ তোমরা আমল করে যাও। প্রত্যেকের পথ সুগম করে দেওয়া হয়েছে। নেক আমলকারীদের জন্য নেক আমল করা সহজ করে দেওয়া হবে। কিন্তু বদকারদের জন্য বদকারী আমল সহজ করে দেওয়া হবে। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ “সুতরাং যারা দান করল, পরহিযগারী ইখতিয়ার করল এবং যা উত্তম তা গ্রহন করল, আমি তাদের জন্য সুখকর পরিণামের পথ সুগম করে দেব এবং যারা কৃপণতা করল এবং নিজকে স্বয়ং সম্পূর্ণ মনে করল আর যা উত্তম তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, আমি তার জন্য কঠোর পরিণামের পথ সুগম করে দেব।” (সূরা আল লায়লঃ ৫-১০।)







সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৮৫। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) আমেরি ইবনু ওয়াসিলা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, হতভাগ্য সেই ব্যক্তি, যে তার মাতৃ উদর থেকে হতভাগ্য রুপে জন্ম-গ্রহণ করেছে। আর ভাগ্যবান ব্যক্তি সে, যে অন্যের কাছ থেকে নসীয়ত লাভ করে। এরপর তিনি (আমির ইবনু ওয়াসিলা (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবী হুযায়ফা ইবনু উসায়দ (রাঃ) -এর কাছে এলেন। তখন তিনি তার কাছে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) -এর উক্তি বর্ণনা করলেন এবং বললেন, আমল ব্যতীত একজন মানুষ কিভাবে গুনাহগার হতে পারে? এরপর তিনি (হুযায়ফা (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি এতে বিস্ময়বোধ করছ? আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ যখন শুক্রের উপর বিয়াল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় তখন আল্লাহ তাআলা একজন ফিরিশতা পাঠানা সে সেটিকে (শুক্রকে) একটি আকৃতি দান করে, তার কান, চোখ, চামড়া, গোশত ও হাড় সৃষ্টি করে দেয়। এরপর সে বলে, হে আমার প্রতিপালক! সে কি পুরুষ, না ন্ত্রীলোক হবে? তখন তোমার রব যা চান নির্দেশ দেন এবং ফিরিশতা নির্দেশ মুতাবিক লিপিবদ্ধ করেন। এরপর সে বলতে থাকে, হে আমার প্রতিপালক! তার বয়স কত হবে? তখন তোমার রব যা চান তাই বলেন এবং সেই মুতাবিক ফিরিশতা লিখেন। এরপর সে বলতে থাকে, হে আমার প্রতিপালক! তার জীবিকা কি হবে, তখন তোমার রব তার মর্জি মাফিক মীমাংসা করেন এবং ফিরিশতা তা লিপিবদ্ধ করেন। এরপর ফিরিশতা তাঁর হাতে একটি লিপি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। সে তাতে বাড়ায়ও না এবং কমায়ও না।









সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), ৪৭/ তাকদীর৬৪৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও যুবায়র ইবনু হারব (রহঃ) হুযায়ফ ইবনু উসায়দ (রহঃ) থেকে মারফূ সনদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জরায়ুতে চল্লিশ কিংবা পঁয়তাল্লিশ দিন শুক্র স্হির থাকার পর সেখানে ফিরিশতা প্রবেশ করে। এরপর সে বলতে থাকে, হে পরওয়ারদিগার! সে কি পানানা পূণ্যবান? তখন লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর সে বলতে থাকে, সে কি পুরুষ না স্ত্রীলোক? তখন নির্দেশ অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়। তার আমল, আচরণ, নিয়তি ও জীবিকা লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর ফলকটিকে ভাজ করে দেওয়া হয়। তাতে কোন সংযোজন করা হবে না এবং বিয়োজনও নয়।









আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ

مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

[سورة التغابن، الآية:11]

অর্থঃ ((আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন প্রকার বিপদ আসে না,এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে, আল্লাহ্ তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করবেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।)) [সূরা আত্-তাগাবুন, আয়াত-১১]






وَلَوْ شَاء اللّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلكِن يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ


আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে এক জাতি করে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে(নাহল৯৩)

[সুরা রাদ, সুরা নং-১৩, আয়াত নং-২৭]








وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاء اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

29

তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অভিপ্রায়ের বাইরে অন্য কিছুই ইচ্ছা করতে পার না।(তাকভির ২৯)
আয়াতেএ ব্যাখ্যায় ইবনে কাসিরে আবু জাহেলের আকিদার কথাও এসেছে, যে এরা নিজেদের আয়ত্ত্বে সৎ অসৎ পথে থাকার বিষয়টি মনে করে।




ইবনে আব্বাস

একদা এক ব্যক্তি কোন ব্যাপারে তাঁকে বলল, ‘আল্লাহ ও আপনি যা চেয়েছেন (তাই হয়েছে)।’ তা শুনে তিনি বললেন, “তুমি তো আল্লাহর সঙ্গে আমাকে শরীক (বা সমকক্ষ) করে ফেললে! না, বরং আল্লাহ একাই যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে।” (আহমদ ১৮৩৯, বুখারীর আদব ৭৮৩, ইবনে মাজাহ ২১১৭, বাইহাক্বী ৫৬০৩, সিঃ সহীহাহ ১৩৯নং)

বুলুগুল মারাম, হাদিস নং ১৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com





যেমন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ

إذا ذكر القدر فأمسكوا [رواه مسلم].

অর্থঃ ((যখন ভাগ্যের কথা স্বরণ হবে তখন তোমরা তা নিয়ে তর্ক বির্তকে লিপ্ত না হয়ে চুপ থাকবে।)) [মুসলিম]








Lo! This is an Admonishment, that whosoever will may choose a way unto his Lord. Yet ye will not, unless Allah willeth. Lo! Allah is Knower, Wise.” (দাহর: 29-30)


llah says,“Had Allah willed, He would have brought them all together to the guidance; if thy Lord had willed whoever is in the earth would have believed, all of them, all together.”(Yunus: 99)“Had Allah willed, they were not idolaters; and We have not appointed thee a watcher over them neither art thou their guardian.” (Al-An`am: 107

ief and disbelief. Allah Almighty says, “Say: The truth is from your Lord; so let whosoever will believe, and let whosoever will disbelieve.” (Al-Kahf: 29

says,“If you art ungrateful, Allah is independent of you. Yet He approves not ungratefulness in His servants; but if you are grateful, He will approve it in you.” (Az-Zumar: 7)”

https://archive.islamonline.net/?p=1317








Say, ‘Only what God has decreed will happen to us. He is our Master: let the believers put their trust in God.’” (9:51)






Allâh also says in the Qur’an :

﴿وَلَوْ شِئْنَا لَآتَيْنَا كُلّ نَفْسٍ هُدَاهَا وَلَكِنْ حَقّ الْقَوْلُ مِنِّي لَأَمْلَأَنّ جَهَنّمَ مِنَ الْجِنّةِ وَالنّاسِ أَجْمَعِينَ﴾

Which means: « if God wanted, He would have guided everyone [to Islam], but God wanted there to be humans and jinn entering Hell », [surat As-sajdah ‘Ayah 13]. God does what He wants, He is not questioned about what He does. Allâh says in the Qur’an:

﴿لاَ يُسْأَلُ عَمّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ﴾

Which means: « God is not questioned about what He does and the slaves will be questioned », [surat Al-‘Anbiyâ’ ‘Ayah 23].









The Prophet MuHammad Sallallâhu `alayhi wa sallam, said:

« اْلإِيمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الاخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ »

Which means: « Belief is to believe in Allah, His angels, His Books, His messengers, the Day of Judgment, and to believe in the qadar (destiny), both the good and the evil »





The Prophet MuHammad Salla lLâhu `alayhi wa sallam said: «There will be people from my community who will become disbelievers in Allah and in the Qur’an and they do not realize, I said O messenger of God, how do they say ? He said they believe in some of the predestination and they deny part of it, they say the good comes from God and the evil comes from the chaytan » related by Imam Al Bayhaqiyy with a chain of transmission according to Râfi` ibnou Khadîj the companion of the the Prophet







حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ جَاءَ سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكِ بْنِ جُعْشُمٍ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَيِّنْ لَنَا دِينَنَا كَأَنَّا خُلِقْنَا الآنَ فِيمَا الْعَمَلُ الْيَوْمَ أَفِيمَا جَفَّتْ بِهِ الأَقْلاَمُ وَجَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ أَمْ فِيمَا نَسْتَقْبِلُ قَالَ ‏"‏ لاَ ‏.‏ بَلْ فِيمَا جَفَّتْ بِهِ الأَقْلاَمُ وَجَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَفِيمَ الْعَمَلُ قَالَ زُهَيْرٌ ثُمَّ تَكَلَّمَ أَبُو الزُّبَيْرِ بِشَىْءٍ لَمْ أَفْهَمْهُ فَسَأَلْتُ مَا قَالَ فَقَالَ ‏"‏ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ‏"‏ ‏.‏

জাবির (রাঃ)

তিনি বলেন, সুরাকাহ্ ইবনু মালিক ইবনু জু‘শুম (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলেন, অতঃপর বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের সামনে আমাদের দ্বীন সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করুন, যেন আমরা এই মাত্র সৃষ্ট হয়েছি। আজকের ‘আমাল কি ঐ বিষয়ের উপর যার সম্পর্কে কলম লিখে শুকিয়ে গেছে এবং তাক্দীর তার উপর চলছে? নাকি আমরা ভবিষ্যতে তার সামনাসামনি হব? তিনি বললেন, না; বরং কলম যা কিছু লিখার লিখে শুকিয়ে গেছে ও সে অনুযায়ী তাকদীর জারী হয়ে গেছে। সুরাকাহ্ বললেন, তাহলে কিসের জন্য ‘আমাল করার প্রয়োজন?
যুহায়র বলেন, অতঃপর আবূ যুবায়র কিছু কথা বললেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। অতঃপর আমি (লোকেদের) প্রশ্ন করলাম, তিনি কি বললেন। জবাবে বললেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাকো; প্রত্যেকের জন্য সে পথ সহজ করা হয়েছে।
(ই.ফা. ৬৪৯৪, ই.সে. ৬৫৪৬)

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৬৬২৮
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رضي الله عنه- عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لَا يَأْتِ ابْنَ آدَمَ النَّذْرُ بِشَيْءٍ لَمْ يَكُنْ قَدْ قَدَّرْتُهُ, وَلَكِنْ يُلْقِيهِ الْقَدَرُ وَقَدْ قَدَّرْتُهُ لَهُ أَسْتَخْرِجُ بِهِ مِنْ الْبَخِيلِ » . ( خ, م ) صحيح

আবু হুরায়রা (রাঃ)

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “বনি আদমের নিকট মান্নত কোন জিনিস নিয়ে আসে না যা আমি তার জন্য নির্ধারণ করি নি, কিন্তু তাকদির তাকে পেয়ে বসে [১], আমি তার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছি এর দ্বারা কৃপণ থেকে সম্পদ বের করব”। [বুখারি ও মুসলিম]

সহিহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নং ১৬০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com








حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِيسَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ يَزِيدُ فِي الْعُمْرِ إِلاَّ الْبِرُّ وَلاَ يَرُدُّ الْقَدَرَ إِلاَّ الدُّعَاءُ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ لِلْخَطِيئَةِ يَعْمَلُهَا ‏"‏ ‏.‏

সাওবান (রাঃ)

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কেবল সৎ কর্মই আয়ু বৃদ্ধি করে এবং দু’আ ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর রদ হয় না। মানুষের অসৎ কর্মই তাকে রিয্‌ক বঞ্চিত করে। [৮৮]

তাহকীক আলবানীঃ (আরবী) কথাটি ছাড়া হাসান।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৯০
হাদিসের মান: অন্যান্য
Source: ihadis.com




حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنِي الْأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: إِذَا طَلَبَ أَحَدُكُمُ الْحَاجَةَ فَلْيَطْلُبْهَا طَلَبًا يَسِيرًا، فَإِنَّمَا لَهُ مَا قُدِّرَ لَهُ، وَلَا يَأْتِي أَحَدُكُمْ صَاحِبَهُ فَيَمْدَحَهُ، فَيَقْطَعَ ظَهْرَهُ

আবদুল্লাহ (রাঃ)

তোমাদের কেউ প্রয়োজনে কারো কাছে কিছু চাইলে যেন সহজভাবে চায় (বারংবার না চায়)। কেননা তার তাকদীরে যা নির্ধারিত চাছে তা সে পাবেই। তোমাদের কেউ যেন তার কোন সহযোগীর নিকট গিয়ে তার চাটুকারিতা না করে। তা করলে সে যেন তার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিলো।

আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৭৮৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ ابْنِ أَبِي خِزَامَةَ، عَنْ أَبِي خِزَامَةَ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَرَأَيْتَ أَدْوِيَةً نَتَدَاوَى بِهَا وَرُقًى نَسْتَرْقِي بِهَا وَتُقًى نَتَّقِيهَا هَلْ تَرُدُّ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ شَيْئًا قَالَ ‏ "‏ هِيَ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ ‏"‏ ‏.‏

আবূ খিযামাহ (রাঃ),

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, যে সকল ঔষধ দ্বারা আমরা চিকিৎসা করি, যে ঝাড়ফুঁক করি এবং যে সকল প্রতিরোধমূলক বা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি, সে সম্পর্কে আপনার মতামত কী? সেগুলো কি আল্লাহ নির্ধারিত তাকদীর কিছুমাত্র রদ করতে পারে? তিনি বলেনঃ সেগুলোও তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত। [৩৪৩৭]

তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৪৩৭
হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস
Source: ihadis.com






حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ مُسْلِمٍ الْخَفَّافُ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ سُرَاقَةَ بْنِ جُعْشُمٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ الْعَمَلُ فِيمَا جَفَّ بِهِ الْقَلَمُ وَجَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ أَوْ فِي أَمْرٍ مُسْتَقْبَلٍ قَالَ ‏ "‏ بَلْ فِيمَا جَفَّ بِهِ الْقَلَمُ وَجَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ وَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ ‏"‏ ‏.‏

সুরাকাহ বিন জু’শুম (রাঃ)

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কার্যকলাপ কি তাই যা পূর্বেই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং তদানুযায়ী তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে, না ভবিষ্যতে যা করা হবে তা? তিনি বলেন, বরং তাই যা পূর্বেই লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে এবং তদানুযায়ী তাকদীর নির্দিষ্ট হয়েছে। যাকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য তা সহজসাধ্য করা হয়েছে।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৯১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com




حَدَّثَنِي أَبُو خَيْثَمَةَ، زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ كَهْمَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، - وَهَذَا حَدِيثُهُ - حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسٌ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ قَالَ فِي الْقَدَرِ بِالْبَصْرَةِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَاجَّيْنِ أَوْ مُعْتَمِرَيْنِ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا يَقُولُ هَؤُلاَءِ فِي الْقَدَرِ فَوُفِّقَ لَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ دَاخِلاً الْمَسْجِدَ فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي أَحَدُنَا عَنْ يَمِينِهِ وَالآخَرُ عَنْ شِمَالِهِ فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ إِلَىَّ فَقُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّهُ قَدْ ظَهَرَ قِبَلَنَا نَاسٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَقَفَّرُونَ الْعِلْمَ - وَذَكَرَ مِنْ شَأْنِهِمْ - وَأَنَّهُمْ يَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَأَنَّ الأَمْرَ أُنُفٌ ‏.‏ قَالَ فَإِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي بَرِيءٌ مِنْهُمْ وَأَنَّهُمْ بُرَآءُ مِنِّي وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ لَوْ أَنَّ لأَحَدِهِمْ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فَأَنْفَقَهُ مَا قَبِلَ اللَّهُ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ ثُمَّ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعَرِ لاَ يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلاَ يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ حَتَّى جَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ الإِسْلاَمِ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏‏ الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ‏.‏ قَالَ صَدَقْتَ ‏.‏ قَالَ فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِيمَانِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ صَدَقْتَ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِحْسَانِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَتِهَا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْ تَلِدَ الأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ مَلِيًّا ثُمَّ قَالَ لِي ‏"‏ يَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنِ السَّائِلُ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ ‏"‏ ‏.‏"



It is narrated on the authority of Yahya b. Ya'mur that the first man who discussed qadr (Divine Decree) in Basra was Ma'bad al-Juhani. I along with Humaid b. 'Abdur-Rahman Himyari set out for pilgrimage or for 'Umrah and said:

Should it so happen that we come into contact with one of the Companions of the Messenger of Allah (ﷺ) we shall ask him about what is talked about
<i>taqdir</i> (Divine Decree). Accidentally we came across Abdullah ibn Umar ibn al-Khattab, while he was entering the mosque. My companion and I surrounded him. One of us (stood) on his right and the other stood on his left. I expected that my companion would authorize me to speak. I therefore said: Abu Abdur Rahman! There have appeared some people in our land who recite the Qur'an and pursue knowledge. And then after talking about their affairs, added: They (such people) claim that there is no such thing as Divine Decree and events are not predestined. He (Abdullah ibn Umar) said: When you happen to meet such people tell them that I have nothing to do with them and they have nothing to do with me. And verily they are in no way responsible for my (belief). Abdullah ibn Umar swore by Him (the Lord) (and said): If any one of them (who does not believe in the Divine Decree) had with him gold equal to the bulk of (the mountain) Uhud and spent it (in the way of Allah), Allah would not accept it unless he affirmed his faith in Divine Decree. He further said: My father, Umar ibn al-Khattab, told me: One day we were sitting in the company of Allah's Apostle (ﷺ) when there appeared before us a man dressed in pure white clothes, his hair extraordinarily black. There were no signs of travel on him. None amongst us recognized him. At last he sat with the Apostle (ﷺ) He knelt before him placed his palms on his thighs and said: Muhammad, inform me about al-Islam. The Messenger of Allah (ﷺ) said: Al-Islam implies that you testify that there is no god but Allah and that Muhammad is the messenger of Allah, and you establish prayer, pay Zakat, observe the fast of Ramadan, and perform pilgrimage to the (House) if you are solvent enough (to bear the expense of) the journey. He (the inquirer) said: You have told the truth. He (Umar ibn al-Khattab) said: It amazed us that he would put the question and then he would himself verify the truth. He (the inquirer) said: Inform me about Iman (faith). He (the Holy Prophet) replied: That you affirm your faith in Allah, in His angels, in His Books, in His Apostles, in the Day of Judgment, and you affirm your faith in the Divine Decree about good and evil. He (the inquirer) said: You have told the truth. He (the inquirer) again said: Inform me about al-Ihsan (performance of good deeds). He (the Holy Prophet) said: That you worship Allah as if you are seeing Him, for though you don't see Him, He, verily, sees you. He (the enquirer) again said: Inform me about the hour (of the Doom). He (the Holy Prophet) remarked: One who is asked knows no more than the one who is inquiring (about it). He (the inquirer) said: Tell me some of its indications. He (the Holy Prophet) said: That the slave-girl will give birth to her mistress and master, that you will find barefooted, destitute goat-herds vying with one another in the construction of magnificent buildings. He (the narrator, Umar ibn al-Khattab) said: Then he (the inquirer) went on his way but I stayed with him (the Holy Prophet) for a long while. He then, said to me: Umar, do you know who this inquirer was? I replied: Allah and His Apostle knows best. He (the Holy Prophet) remarked: He was Gabriel (the angel). He came to you in order to instruct you in matters of religion.



Sahih Muslim 8 a
In-book : Book 1, Hadith 1
USC-MSA web (English) : Book 1, Hadith 1  (deprecated)

Get Hadith Collection (All in one) App:https://goo.gl/8j06i9


৬১৪৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুশরিকদের (মৃত নাবালিগ) সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা সর্বাধিক অবহিত।


হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

পুনঃনিরীক্ষণঃ

বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)




৬১৪২। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদউল মালিক (রহঃ) ... আবদূলাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বিশ্বাসী ও বিশ্বস্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই আপন আপন মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত শুক্র বিন্দুরূপে জমা থাক। তারপর ঐরুপ চল্লিশ দিন রক্তপিণ্ড এবং এরপর ঐরুপ চল্লিশ দিন গোশত পিন্ডাকারে থাকে। তারপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরন করেন এবং তাকে বিযিক, মউত, দূর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য-এ চারটি ব্যাপার লিপিবদ্ধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে যে কেউ অথবা বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি জাহান্নামীদের আমল করতে থাকে।

এমন কি তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে তখন কেবলমাত্র একহাত বা এক গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর তখন সে জান্নাতীদের আমল করা শুরু করে দেয়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যাক্তি বেহেশতীদের আমল করতে থাকে। এমন কি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে কেবলমাত্র এক গজ বা দু-গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর অমনি সে জাহান্নামীদের আমল শুরু করে দেয়। ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন যে, আদম তার বর্ননায় শুধুমাত্র ذِرَاعٌ‏ (এক গজ) বলেছেন।


হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

পুনঃনিরীক্ষণঃ

বর্ণনাকারী রাবীঃ আবদুল্লাহ‌ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ)





• Abu Al Aswad Ad-Diyaly said: `Imran ibn Al Husayn said to me: Have you seen the actions which people do? Are they predestined on them or something that shall be written on them in the future and proofs were set against them? I said: It is something which Allah predestined on them in the past. He then said: Would not be oppression to them? I said: I got extremely frightened and said: Everything Allah has created and it belongs to Him, so He is not questioned about what He is doing but they are. He said: May Allah bestow mercy on you, I have not said that but to warn my mind not to question the matter. Two men from the tribe of Mazinah came to the Prophet (peace be upon him) and said: O Messenger of Allah, Have you seen the actions which people do? Are they predestined on them or something that shall be written on them in the future and proofs were set against them? The Prophet (peace be upon him) said: It is something which Allah predestined on them in the past. The confirmation of that is found in the Book of Allah: "And by Nafs (Adam or a person or a soul, etc.), and Him Who perfected him in proportion * Then He showed him what is wrong for him and what is right for him" [Surat Ash-Shams: 7 - 8][19]


 Reported by Imam Muslim in the book of destiny – 2650.



حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَلِيٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا فِي جَنَازَةٍ فِي بَقِيعِ الْغَرْقَدِ، فَأَتَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَعَدَ وَقَعَدْنَا حَوْلَهُ، وَمَعَهُ مِخْصَرَةٌ فَنَكَّسَ، فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِمِخْصَرَتِهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ، مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ إِلاَّ كُتِبَ مَكَانُهَا مِنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ، وَإِلاَّ قَدْ كُتِبَ شَقِيَّةً أَوْ سَعِيدَةً ‏"‏‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَفَلاَ نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ، فَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَسَيَصِيرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ، وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ فَسَيَصِيرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ قَالَ ‏"‏ أَمَّا أَهْلُ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُونَ لِعَمَلِ السَّعَادَةِ، وَأَمَّا أَهْلُ الشَّقَاوَةِ فَيُيَسَّرُونَ لِعَمَلِ الشَّقَاوَةِ ‏"‏، ثُمَّ قَرَأَ ‏{‏فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى‏}‏ الآيَةَ‏.‏

‘আলী (রাঃ)

তিনি বলেন, আমরা বাকী’উল গারক্বাদ (কবরস্থানে) এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। নবী  (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আগমন করলেন। তিনি উপবেশন করলে আমরাও তাঁর চারদিকে বসে পড়লাম। তাঁর হাতে একটি ছড়ি ছিল। তিনি নীচের দিকে তাকিয়ে তাঁর ছড়িটি দ্বারা মাটি খুঁড়তে লাগলেন। অতঃপর বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, অথবা বললেনঃ এমন কোন সৃষ্ট প্রাণী নেই, যার জন্য জান্নাত ও জাহান্নামে জায়গা নির্ধারিত করে দেয়া হয়নি আর এ কথা লিখে দেয়া হয়নি যে, সে দুর্ভাগা হবে কিংবা ভাগ্যবান। তখন এক ব্যক্তি আরয করল, হে আল্লাহর রসূল! তা হলে কি আমরা আমাদের ভাগ্যলিপির উপর ভরসা করে আমল করা ছেড়ে দিব না? কেননা, আমাদের মধ্যে যারা ভাগ্যবান তারা অচিরেই ভাগ্যবানদের আমলের দিকে ধাবিত হবে। আর যারা দুর্ভাগা তারা অচিরেই দুর্ভাগাদের আমলের দিকে ধাবিত হবে। তিনি বললেনঃ যারা ভাগ্যবান, তাদের জন্য সৌভাগ্যের আমল সহজ করে দেয়া হয় আর ভাগ্যাহতদের জন্য দুর্ভাগ্যের আমল সহজ করে দেয়া হয়। অতঃপর তিনি এ আয়াতে তিলাওয়াত করলেনঃ فَاَمَّا مَنْ اَعْطى – وَاتقى الاية “কাজেই যে দান করে এবং তাক্‌ওয়া অবলম্বন করে আর ভাল কথাকে সত্য বলে বুঝেছে” - (সূরা লাইলঃ ৫)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৩৬২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com




يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ قَالَ لَا اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى لا (6) فَسَنُيَسِّرُه” لِلْيُسْرٰى} إِلَى قَوْلِهِ {فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرٰى}.

‘আলী (রাঃ)

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার স্থান জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট হয়নি। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকব? তিনি বললেন, না তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, কাজেই কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৭৯, ই.ফা. ৪৫৮৪)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৯৪৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَعْمَشِ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ جَنَازَةٍ فَأَخَذَ شَيْئًا فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِهِ الْأَرْضَ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ قَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ أَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى} الْآيَةَ.

‘আলী (রাঃ)

তিনি বলেন, এক জানাযাহ্য় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি কিছু একটা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার স্থান হয় জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট করে রাখা হয়নি। এ কথা শুনে সবাই বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা তাহলে ‘আমাল বাদ দিয়ে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর কি ভরসা করব? উত্তরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক, কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। যে ব্যক্তি সৌভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য সৌভাগ্যের অধিকারী লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। আর যে দুর্ভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য দুর্ভাগা লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ। এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে  দেব কঠোর পরিণামের পথ)। (আ.প্র. ৪৫৮১, ই.ফা. ৪৫৮৬)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৯৪৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com




حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، أَنَّ عَبْدَ الْحَمِيدِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ، أَخْبَرَهُ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، سُئِلَ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ، ‏{‏ وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ‏}‏ قَالَ قَرَأَ الْقَعْنَبِيُّ الآيَةَ ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ بِيَمِينِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ يَعْمَلُونَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلنَّارِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ يَعْمَلُونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَفِيمَ الْعَمَلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلْجَنَّةِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُدْخِلَهُ بِهِ الْجَنَّةَ وَإِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ النَّارِ فَيُدْخِلَهُ بِهِ النَّارَ ‏"‏ ‏.

মুসলিম ইবনু ইয়াসার আল্‌-জুহানী (রহঃ)

একদা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) -কে এ আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলোঃ “যখন তোমার রব আদম সন্তানের পিঠ হতে তাদের সমস্ত সন্তানদেরকে বের করলেন...” (সূরাহ আল-আ’রাফঃ ১৭২)। বর্ণনাকারী বলেন, আল্‌-কা’নাবী এ আয়াত পড়েছিলেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করার পর স্বীয় ডান হাতে তাঁর পিঠ বুলিয়ে তা থেকে তাঁর একদল সন্তান বের করে বললেন, আমি এদেরকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং এরা জান্নাতবাসীর উপযোগী কাজই করবে। অতঃপর আবার তাঁর পিঠে হাত বুলিয়ে একদল সন্তান বের করিয়ে বললেন, এদেরকে আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং এরা জাহান্নামীদের উপযোগী কাজই করবে। একথা শুনে এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমলের কি মূল্য রইলো? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মহান আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন তখন তার দ্বারা জান্নাতীদের কাজই করিয়ে নেন। শেষে সে জান্নাতীদের কাজ করেই মারা যায়। আর আল্লাহ এর বিনিময়ে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর যখন তিনি কোন বান্দাকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেন, তখন তার দ্বারা জাহান্নামীদের কাজ করিয়ে নেন। অবশেষে সে জাহান্নামীদের কাজ করে মারা যায়। অতঃপর এজন্য তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান।

সহীহ, পিঠ বুলানো কথাটি বাদে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭০৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com






حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، سُئِلَ عَنْ هَذِهِ الآيَةِِ ‏(‏ وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ ‏)‏ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلُ عَنْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ بِيَمِينِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ يَعْمَلُونَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلنَّارِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ يَعْمَلُونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَفِيمَ الْعَمَلُ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلْجَنَّةِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُدْخِلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَإِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ النَّارِ فَيُدْخِلَهُ اللَّهُ النَّارَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏ وَمُسْلِمُ بْنُ يَسَارٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عُمَرَ وَقَدْ ذَكَرَ بَعْضُهُمْ فِي هَذَا الإِسْنَادِ بَيْنَ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ وَبَيْنَ عُمَرَ رَجُلاً مَجْهُولاً ‏.‏

মুসলিম ইবনু ইয়াসার আল-জুহানী (রহঃ)

তিনি বলেনঃ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ “যখন তোমার রব আদম সন্তানের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদের নিজেদের সম্পর্কে স্বীকারোক্তি করে প্রশ্ন করেনঃ ‘আমি কি তোমাদের রব নই!’ তারা বললঃ হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আমরা সাক্ষী রইলাম। তা এজন্য যে, তোমরা কিয়ামাতের দিন যেন না বল, আমরা তো এ ব্যাপারে বেখবর ছিলাম” (সূরাঃ আল- আ’রাফ- ১৭২)। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটও আমি এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে শুনেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তারপর আপন ডান হাত তাঁর পিঠে বুলালেন এবং তা থেকে তাঁর একদল (ভাবী) সন্তান বের করলেন। তিনি বললেন, এদের আমি জান্নাতের জন্য এবং জান্নাতীদের কাজ করতে সৃষ্টি করেছি। সুতরাং এরা জান্নাতীদের আমলই করবে। তিনি পুনরায় আদমের পিঠে হাত বুলালেন এবং সেখান থেকে তাঁর (অপর) একদল সন্তান বের করলেন। তিনি বললেন, এদের আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। জাহান্নামীদের মত কাজই তারা করবে। একজন বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তাহলে তদবির আর কিসের জন্য? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন, তখন তার দ্বারা জান্নাতীদের কাজই করিয়ে নেন। সে জান্নাতীদের যোগ্য কাজ করে ইন্তেকাল করে এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জান্নাতে পেশ করেন। অপরদিকে যখন আল্লাহ্ তা’আলা কোন বান্দাকে জাহান্নামের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেন, তার দ্বারা জাহান্নামীদের কাজ করিয়ে নেন। সে জাহান্নামীদের কাজ করেই মৃত্যুবরণ করে। শেষে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জাহান্নামে পেশ করেন।

দুর্বল, আয্ যিলাল (১৯৬), যঈফা (৩০৭১)

জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩০৭৫
হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস
Source: ihadis.com



وَعَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ إِنَّ رَجُلَيْنِ مِنْ مُزَيْنَةَ قَالَا يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ الْيَوْمَ وَيَكْدَحُونَ فِيهِ أَشَيْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضى فِيهِمْ مِنْ قَدَرٍ قَدْ سَبَقَ أَوْ فِيمَا يُسْتَقْبَلُونَ بِه مِمَّا أَتَاهُمْ بِه نَبِيُّهُمْ وَثَبَتَتْ الْحُجَّةُ عَلَيْهِمْ؟ فَقَالَ : لَا، بَلْ شَيْءٌ قُضِيَ عَلَيْهِمْ وَمَضى فِيهِمْ وَتَصْدِيقُ ذلِكَ فِي كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ : (وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا)

ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

মুযায়নাহ গোত্রের দুই লোক রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি মনে করেন, মানুষ এখন (দুনিয়াতে) যা ‘আমাল (ভাল-মন্দ) করছে এবং ‘আমাল করার চেষ্টায় রত আছে, তা আগেই তাদের জন্য তাকদীরে লিখে রাখা হয়েছিল ? নাকি পরে যখন তাদের নিকট তাদের নাবী শারী'আহ (দলীল-প্রমাণ) নিয়ে এসেছেন এবং তাদের নিকট তার দলীল-প্রমাণ প্রকটিত হয়েছে, তখন তারা তা করছে ? উত্তরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: না, বরং পূর্বেই তাদের জন্য তাক্বদীরে এসব নির্দিষ্ট করা হয়েছে ও ঠিক হয়ে রয়েছে। এ কথার সমর্থনে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেন (অনুবাদ): “প্রাণের কসম (মানুষের)! এবং যিনি তাকে সুন্দরভাবে গঠন করেছেন এবং তাকে (পূর্বেই) ভাল ও মন্দের জ্ঞান দিয়েছেন"- (সূরাহ আল লায়ল ৯২ঃ ৭-৮)।” [১]

ফুটনোটঃ
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬৫০, আহমাদ ১৯৯৩৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬১৮২।

মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৮৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD





৬৬৩২-(১০/২৬৫০) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) ..... আবুল আসওয়াদ আদ দিয়ালী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইমরান ইবনু হুসায়ন (রহঃ) আমাকে বললেন, আজকাল মানুষেরা যা আমাল করে এবং তাতে যা কষ্ট করে, সে ব্যাপারে আপনার মতামত কি? তা-কি এমন বিষয় যা তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীতে সাব্যস্ত হয়ে গেছে যা তাদের উপর পূর্ব নির্ধারিত? নাকি ভবিষ্যতে করা হবে যা তাদের নিকট তাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে আসছেন এবং যাদের উপর দলীল-প্রমাণ সাব্যস্ত হয়েছে? আমি বললাম, বরং বিষয়টি তো তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীত সাব্যস্ত হয়ে গেছে। তিনি (রাবী) বলেন, অতঃপর তিনি বললেন, তা কি যুলম হবে না? তিনি বললেন, এতে আমি অত্যন্ত ঘাবড়ে গেলাম এবং বললাম, প্রতিটি বিষয় আল্লাহর মাখলুক এবং তার আওতাধীন। সুতরাং তিনি যা করেন, সে বিষয়ে জবাবদিহিতা নেই অথবা তাদেরকে কৈফিয়ত দিতে হবে না। কিন্তু তারা যা করে সে বিষয়ে তাদের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে।

অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, আল্লাহ আপনার প্রতি দয়া করুন। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করে আপনার অনুভূতি অনুমান করতে চেয়েছিলাম। মুযাইনাহ্ গোত্রের দু' ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! লোকেরা আজকাল যেসব আমাল করে এবং পরিশ্রম করে, সেগুলো কি তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীত সাব্যস্ত হয়ে গেছে, আগে নির্দিষ্টতা থেকে? নাকি ভবিষ্যতে যে আমাল করা হবে, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট নিয়ে আসছেন এবং তাদের উপর দলীল প্রমাণ সাব্যস্ত আছে? জবাবে তিনি বললেন, না; বরং বিষয়টি তাদের উপর সিদ্ধান্ত করা হয়েছে এবং অতীতে সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে? আল্লাহর কিতাবে তার সত্যায়নঃ

"আর শপথ মানুষের এবং তার যিনি তাকে সম্পূর্ণ করেছেন, এরপর তার উপর তিনি পাপ-পুণ্যের জ্ঞান ঢেলে দিয়েছেন"- (সূরা আশ শামস ৯১ঃ ৭-৮)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৪৯৮, ইসলামিক সেন্টার ৬৫৪৯)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৪৭। তাকদীর (كتاب القدر)
হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩২










حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سِنَانٍ، عَنْ وَهْبِ بْنِ خَالِدٍ الْحِمْصِيِّ، عَنِ ابْنِ الدَّيْلَمِيِّ، قَالَ وَقَعَ فِي نَفْسِي شَىْءٌ مِنْ هَذَا الْقَدَرِ خَشِيتُ أَنْ يُفْسِدَ عَلَىَّ دِينِي وَأَمْرِي فَأَتَيْتُ أُبَىَّ بْنَ كَعْبٍ فَقَلْتُ أَبَا الْمُنْذِرِ إِنَّهُ قَدْ وَقَعَ فِي قَلْبِي شَىْءٌ مِنْ هَذَا الْقَدَرِ فَخَشِيتُ عَلَى دِينِي وَأَمْرِي فَحَدِّثْنِي مِنْ ذَلِكَ بِشَىْءٍ لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يَنْفَعَنِي بِهِ ‏.‏ فَقَالَ لَوْ أَنَّ اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ لَعَذَّبَهُمْ وَهُوَ غَيْرُ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ لَكَانَتْ رَحْمَتُهُ خَيْرًا لَهُمْ مِنْ أَعْمَالِهِمْ ‏.‏ وَلَوْ كَانَ لَكَ مِثْلُ جَبَلِ أُحُدٍ ذَهَبًا أَوْ مِثْلُ جَبَلِ أُحُدٍ تُنْفِقُهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قُبِلَ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ ‏.‏ فَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ ‏.‏ وَأَنَّكَ إِنْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا دَخَلْتَ النَّارَ وَلاَ عَلَيْكَ أَنْ تَأْتِيَ أَخِي عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ فَتَسْأَلَهُ ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ فَسَأَلْتُهُ فَذَكَرَ مِثْلَ مَا قَالَ أُبَىٌّ وَقَالَ لِي وَلاَ عَلَيْكَ أَنْ تَأْتِيَ حُذَيْفَةَ ‏.‏ فَأَتَيْتُ حُذَيْفَةَ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ مِثْلَ مَا قَالاَ وَقَالَ ائْتِ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَاسْأَلْهُ ‏.‏ فَأَتَيْتُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏ "‏ لَوْ أَنَّ اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ لَعَذَّبَهُمْ وَهُوَ غَيْرُ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ لَكَانَتْ رَحْمَتُهُ خَيْرًا لَهُمْ مِنْ أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ كَانَ لَكَ مِثْلُ أُحُدٍ ذَهَبًا أَوْ مِثْلُ جَبَلِ أُحُدٍ ذَهَبًا تُنْفِقُهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قَبِلَهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ كُلِّهِ فَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَمَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَأَنَّكَ إِنْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا دَخَلْتَ النَّارَ ‏"‏ ‏.‏

উবাই বিন কা’ব, আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ, হুযায়ফাহ ও যায়দ বিন সাবিত (রাঃ)

(ইবনুল দায়লামী) বলেন, আমার মনে এই তাকদীর সম্পর্কে কিছুটা সন্দেহ দানা বাঁধে। তাই আমি এই ভেবে শংকিত হই যে, তা আমার দ্বীন ও অন্যান্য কার্যক্রম নষ্ট করে দেয় কিনা। তাই আমি উবাই বিন কা’ব (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, হে আবুল মুনযির! আমার মনে এই তাকদীর সম্পর্কে কিছুটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে, তাই আমি এই ভেবে শংকিত হই যে, তা আমার দ্বীন ও অন্যান্য কার্যক্রমকে নষ্ট করে দেয় কিনা। অতএব এ সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। আশা করি আল্লাহ্‌ তা দ্বারা আমার উপকার করবেন। তিনি বলেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা ঊর্ধলোকের ও ইহলোকের সকলকে শাস্তি দিতে চাইলে তিনি অবশ্যই তাদের শাস্তি দিতে পারেন। তথাপি তিনি তাদের প্রতি যুলমকারী নন। আর তিনি তাদেরকে দয়া করতে চাইলে তাঁর দয়া তাদের জন্য তাদের কাজকর্মের চেয়ে কল্যাণময়। যদি তোমাদের নিকট উহূদ পাহাড় পরিমাণ বা উহূদ পাহাড়ের মত সোনা থাকতো এবং তুমি তা আল্লাহ্‌র রাস্তায় খরচ করতে থাকো, তবে তোমার সেই দান কবুল হবে না, যাবত না তুমি তাকদীরের উপর ঈমান আনো। অতএব তুমি জেনে রাখো! যা কিছু তোমার উপর আপতিত হয়েছে তা তোমার উপর আপতিত হতে কখনো ভুল হতো না এবং যা তোমার উপর আপতিত হওয়ার ছিল না তা ভুলেও কখনো তোমার উপর আপতিত হবে না। তুমি যদি এর বিপরীত বিশ্বাস নিয়ে মারা যাও তবে তুমি জাহান্নামে যাবে। আমি মনে করি তুমি আমার ভাই আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তোমার কোন ক্ষতি হবেনা। (ইবনুদ দাইলামী বলেন), অতঃপর আমি আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও উবাই (রাঃ)-এর অনুরূপ বললেন। তিনি আরো বললেন, তুমি হুযাইফাহ (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলে তোমার ক্ষতি নেই। অতঃপর আমি হুযাইফাহ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও তাদের দু’জনের অনুরূপ বলেন। তিনি আরও বলেন, তুমি যায়দ বিন সাবিত (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে তাকেও জিজ্ঞেস করো। অতএব আমি যায়দ বিন সাবিত (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ্‌ তা’আলা ঊর্ধলোক ও ইহলোকের সকল অধিবাসীকে শাস্তি দিতে চাইলে অবশ্যই তাদের শাস্তি দিতে পারবেন এবং তিনি তাদের প্রতি যুলমকারী নন। আর তিনি তাদের প্রতি দয়া করতে চাইলে তাঁর দয়া তাদের সমস্ত সৎ কাজের চাইতেও তাদের জন্য অধিক কল্যাণকর। তোমার নিকট উহূদ পাহাড় পরিমাণ সোনা থাকলেও এবং তুমি তা আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করলেও তিনি তা কবূল করবেন না, যাবত না তুমি সম্পূর্ণরূপে তাকদীরের উপর ঈমান আনো। অতএব তুমি জেনে রাখো! তোমার উপর যা কিছু আপতিত হওয়ার আছে তা তোমার উপর আপতিত হয়েছে, তা কখনো ভুলেও এড়িয়ে যেত না এবং যা তোমার উপর আপতিত হওয়ার ছিল না, তা তোমার উপর ভুলেও কখনো আপতিত হত না। তুমি যদি এর বিপরীত বিশ্বাস নিয়ে মারা যাও তাহলে তুমি জাহান্নামে যাবে। [৭৫]

জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৭৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com





হাদিসে কুদসিতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন :
“আমার ব্যাপারে আমার বান্দার ধারণা অনুযায়ী, আমি ব্যবহার করি।” বুখারী : ৬৭৫৬ মুসলিম : ৪৮২২




ইবনে দায়লামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উবাই ইবনে কাব রাদিআল্লাহু আনহুর নিকট আসেন এবং বলেন, আমার অন্তরে তাকদির সম্পর্কে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আমাকে কিছু বর্ণনা করে শোনান। হতে পারে আল্লাহ আমার অন্তর থেকে তা দূর করে দিবেন।

তিনি বলেন, আল্লাহ আসমান এবং জমিনবাসীদের শাস্তি দিলে, জালেম হিসেবে গণ্য হবেন না। আর তিনি তাদের সকলের উপর রহম করলে, তার রহম-ই তাদের আমলের তুলনায় বেশী হবে। তাকদিরের প্রতি ঈমান ব্যতীত ওহুদ পরিমান স্বর্ণ দান করলেও কবুল হবে না। স্মরণ রেখ, যা তোমার হস্তগত হওয়ার তা কোনভাবেই হস্তচ্যুত হওয়ার সাধ্য রাখে না। এতদ্ভিন্ন অন্য আকিদা নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে জাহান্নাম অবধারিত। তিনি বলেন, অতঃপর আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ এর কাছে আসি। তিনিও তদ্রূপ শোনালেন। হুযাইফাতুল য়ামান এর কাছে আসি, তিনিও তদ্রুপ বললেন। যায়েদ বিন ছাবেত এর কাছে আসি, তিনিও রসূলুল্লাহ সা. থেকে অনুরূপ বর্ণনা করে শোনালেন।”আবু দাউদ: ৪০৭৭, আহমাদ: ২০৬০৭





‘আলী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন

তিনি বলেন, আমরা বাকী‘ গারকাদে [৪] একটি জানাযা সলাতে উপস্থিত ছিলাম। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট এসে বসলেন এবং আমরাও তাঁর পাশাপাশি বসলাম। তাঁর সাথে ছিল একটি ছড়ি। তিনি মাথা নিচু করেছিলেন। সে সময় তিনি তাঁর ছড়ি দ্বারা জমিনে টোকা দিচ্ছিলেন। তারপর তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই, যার পরিণাম আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্ধারণ করেননি এবং সে দুর্ভাগ্যবান হবে বা সৌভাগ্যবান হবে, তা লিপিবদ্ধ করেননি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন জনৈক লোক আবেদন করল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা কি আমাদের ভাগ্যলিপির উপর অটুট থেকে ‘আমাল ত্যাগ করব না? তখন তিনি বললেন, যে লোক সৌভাগ্যবান সে সৌভাগ্যবানদের ‘আমালের দিকে ধাবিত হবে। যে হতভাগাদের অন্তর্ভূক্ত সে হতভাগার ‘আমালের প্রতি ধাবিত হবে। তারপর তিনি বললেন, তোমরা ‘আমাল করো। প্রত্যেকের পথ সহজ করে দেয়া হয়েছে। অবশ্যই সৌভাগ্যবান লোকদেরকে সৌভাগ্যের ‘আমাল করা সহজ করে দেয়া হচ্ছে। হতভাগ্যদেরকে হতভাগ্যের ‘আমাল সহজ করে দেয়া হচ্ছে। তাপর তিনি তিলাওয়াত করলেন, “সুতরাং যে দান করল, তাক্ওয়া অর্জন করল এবং যা উত্তম তা সত্যায়ন করল, আমি তাদের জন্যে সফলতার পথ সুগম করে দিব এবং যারা বখিলী করল এবং নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী মনে করল আর যা উত্তম তা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, আমি তার জন্যে কঠোর বিফল পথ সহজ করে দিব”- (সূরাহ্ আল লায়ল ৯২ : ৫-১০)। (ই.ফা. ৬৪৭৮, ই.সে. ৬৫৩০)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৬২৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন

তিনি বলেন, সাদিকুল মাসদূক (ন্যায়পরায়ণ ও ন্যায়নিষ্ঠরূপে প্রত্যায়িত) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তোমাদের প্রত্যেকের শুক্রকীট তার মায়ের গর্ভে চল্লিশ দিন একত্রিত করা হয়। তারপর হুবহু চল্লিশ দিনে তা একটি গোশত টুকরায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ্‌ তা ‘আলার পক্ষ থেকে একজন ফেরেশ্তাকে প্রেরণ করা হয়। সে তাতে রূহ্ ফুঁকে দেয়। আর তাঁকে চারটি কালিমা (বিষয়) লিপিবদ্ধ করার আদেশ করা হয়। রিয্ক, মৃত্যুক্ষণ, কর্ম, বদ্কার ও নেক্কার। সে সত্তার শপথ যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই! নিশ্চয়ই তোমাদের মাঝ হতে কেউ জান্নাতীদের ‘আমালের (আমলের)ন্যায় ‘আমাল (আমল) করতে থাকে। অবশেষে তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র একহাত দূরত্ব থাকে। অতঃপর ভাগ্যের লিখন তার উপর জয়ী হয়ে যায়। ফলে সে জাহান্নামীদের কর্ম শুরু করে। এরপর সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়। আর তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ-কর্ম করতে থাকে। ফলে জাহান্নামের মাঝে ও তার মাঝে মাত্র একহাত দূরত্ব থাকে। তারপর ভাগ্যলিপি তার উপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতীদের ন্যায় ‘আমাল করে। অবশেষে জান্নাতে প্রবিষ্ট হয়। (ই.ফা. ৬৪৮২, ই.সে. ৬৫৩৪)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৬১৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com







حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ إِنَّ مَجُوسَ هَذِهِ الأُمَّةِ الْمُكَذِّبُونَ بِأَقْدَارِ اللَّهِ إِنْ مَرِضُوا فَلاَ تَعُودُوهُمْ وَإِنْ مَاتُوا فَلاَ تَشْهَدُوهُمْ وَإِنْ لَقِيتُمُوهُمْ فَلاَ تُسَلِّمُوا عَلَيْهِمْ ‏"‏ ‏.‏

জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ)

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এ উম্মাতের তারা মাজুসী (অগ্নিপূজক) যারা আল্লাহ্‌র নির্ধারিত তাকদীরকে অস্বীকার করে। এরা রোগাক্রান্ত হলে তোমরা তাদের দেখতে যেও না। তারা মারা গেলে তোমরা তাদের জানাযাহয় হাজির হয়ো না। এদের সাথে তোমাদের সাক্ষাত হলে তোমরা এদের সালাম দিওনা।

তাহকীকঃ সালাম অংশ কথাটি ছাড়া হাসান।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৯২
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
Source: ihadis.com





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৪৫। মুহাম্মদ বিন-উবাইদ আল-মাক্কী আবদুল্লাহ ইবনুু্ আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। (একদা) ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলা হলো যে, আমাদের মাঝে জনৈক ব্যক্তির আগমন ঘটেছে, সে তাকদীরকে অস্বীকার করে থাকে। ইবনুু্ আব্বাস (রাঃ) বলেন, তোমরা আমাকে তার কাছে নিয়ে চলো, (তিনি একথা বলার কারণ) ঐ সময় তিনি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। লোকেরা বলল, ইয়া আবূ আব্বাস (রাঃ) আপনি তাকে পেয়ে কী করবেন? তিনি বললেন, সেই সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি তাকে বাগে পাই, তবে আমি অবশ্যই তার নাক কামড়ে কেটে ফেলবো। আর যদি তার গর্দান আমার হস্তগত হয়, তবে আমি অবশ্যই তা মটকে দেব। কারণ, আমি আল্লাহর রাসূল কে বলতে শুনেছি, আমি যেন বনী ফিহ্রের নারীদের দেখতে পাচ্ছি তারা তাদের পশ্চাৎ দেশ দুলিয়ে পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে খাযরাজে (স্থান) তাওয়াফ করছে (বা নাচানাচি করছে)। এরা মুশরিক। এটই হচ্ছে এই উম্মতের প্রথম শিরক্। আমার প্রাণ যে সত্তার হাতে, তাঁর শপথ! এদের এই ভ্রান্ত অভিমত (তাকদীরকে অস্বীকার করা) চূড়ান্তরূপ লাভ করবে তখনই, যখন তারা (সক্ষম হবে) আল্লাহ কল্যানের নির্ধারক এই বিশ্বাস থেকে আল্লাহকে সরিয়ে দেবে। যেমন তারা (ইতিমধ্যে) নিজেকে আল্লাহ অকল্যাণের নির্ধারক-এই বিশ্বাস থেকে সরিয়ে (বের করে) নিয়েছে। (এই কিতাব ভিন্ন অন্য কোথাও এ হাদীসটির সন্ধান পাওয়া যায়নি এবং এই হাদীস সম্পর্কে কিছু কথাবার্তা আছে।)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৪৩। উমর (রাঃ) নাবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তোমরা ‘আহলে কদর’ বা তাকদীর অস্বীকারকারীদের সাথে মেলামেশা করো না, এবং তাদের সাথে প্রথমে কথাবার্তায় লিপ্ত হয়ো না। আবূ আবদূর রহমান (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল এর কাছে আমিও একবার এরূপ শ্রবণ করেছি। (আবূ দাউদ, হাকিম। হাদীসটি সহীহ।)




মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৪২। ‘আমর ইবনু শু’আইব তাঁর পিতা থেকে, এবং তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন। একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসম্মুখে উপস্থিত হন। ঐ সময় লোকজন তাকদীর বিষয়ে কথাবার্তা (বা তর্ক-বিতর্ক) করছিল। বর্ণনাকারী বলেন, (লোকজনের কথাবার্তা শুনে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারকে ক্রোধের চিহ্ন ফুটে ওঠে। যেন তাঁর চেহারায় আনারের দানার ন্যায় বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখা যাচ্ছে। (এমতাবস্থায়) তিনি ইরশাদ করলেন, তোমাকে কী হলো যে, তোমরা আল্লাহর কিতাবের এক অংশকে অন্য অংশের দ্বারা ঘায়েল করার চেষ্টা করছো! তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এই (কাজ) করেই ধ্বংস হয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রাসূল কোন মজলিসে উপস্থিত আছেন, অথচ আমি সেখানে উপস্থিত হতে পারি নি এমন মজলিসের জন্য সর্বদা আমার আক্ষেপ হত, কিন্তু এই মজলিসের জন্য আক্ষেপ হয় নি। ইবনুু্ মাজাহ্ ও তিরমিযী। বুসরী বলেন, ইবনুু্ মাজাহর সনদ সহীহ।)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৪০। হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় প্রত্যেক উম্মতের মাজূস (বা অগ্নি উপাসক) বিদ্যমান। আর আমার উম্মতের মধ্যে মাজূস হচ্ছে যারা বলে, ‘তাকদীর নেই’। তাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে তোমরা তার পরিচর্যা করবে না এবং তাদের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার জানাযায়ও শরীক হবে না। এরা হচ্ছে দাজ্জালের অনুসারী। আল্লাহর দায়িত্ব হচ্ছে এদেরকে দাজ্জালের সাথে মিলিয়ে দেয়া (অর্থাৎ রোজ হাশরে এরা দাজ্জালের দলভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে।) (আবূ দাউদ, এ হাদীসের সনদে অপরিচিত এক রাবী আছে)





মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৯। আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে আরও বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল কে বলতে শুনেছি যে, এই উম্মতের মধ্যে অচিরেই মাস্খ (বা আকৃতিগত বিকৃতি) দেখা দিবে। সাবধান, জেনে রাখ, ওরা হচ্ছে তাকদীর অস্বীকারকারীর দল ও যিন্দীকের দল (যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না, অথবা বাহ্যত ঈমানদার বলে দাবী করলেও অন্তরে কুফর লালন করে।) (আবূ দাউদ ও তিরমিযী, তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ্, গরীব।)



মুসনাদে আহমেদ, ৩/ তাকদীর৩৮। আবদূল্লাহ ইবনুু্ উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে একদল ‘মাজূস’ বা (অগ্নি উপাসক) রয়েছে আমার উম্মতের মধ্যে ‘মাজূস’- হচ্ছে ঐসব লোক যারা বলে তাকে ‘তাকদীর নেই’। ঐ সব লোক পীড়িত হলে তোমরা দেখতে যাবে না। মৃত্যু হলে জানাযায় হাযির হবে না। (একই বর্ণনাকারী থেকে অন্যভাবে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রত্যেক উম্মতে অগ্নিপূজকদল রয়েছে, আমার উম্মতের অগ্নিপূজক হচ্ছে তাকদীরের অস্বীকারকারীর দল। এরা মৃত্যুমুখে পতিত হলে, তোমরা জানাযায় শরীক হবে না এবং পীড়িত হলে তাদের দেখতে যাবে না। অর্থাৎ অগ্নিপূজা বা সূর্য উপাসনা যেমন শিরকের মধ্যে অন্যতম নিকৃষ্ট বা গর্হিত কাজ, তাকদীর অস্বীকার করাও মূলত যারপর নাই গর্হিত কাজ ও বেঈমানীর প্রধান লক্ষণ।) (আবূ দাউদ, হাকিম, হাদীসটি সহীহ্)