Tuesday, May 28, 2019

এ্যাডভান্স হাইপারডাইমেনশনাল ফিজিক্সে এ্যাস্ট্রোলজিক্যাল ইমপ্লিকেশন

মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান সরাসরিভাবে জ্যোতিষশাস্ত্রকে অপবিজ্ঞানের কাতারে ফেলতে চায়। যদিও এটা ৩০০ বছর আগেও মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান ছিল। কিন্তু আজকের পদার্থবিজ্ঞান যেসমস্ত মেকানিক্সের শিক্ষা দেয় সেগুলোর খুবই এ্যাডভান্স স্তরে গিয়ে এস্ট্রলজিক্যাল ইমপ্লিকেশন সরাসরি পাওয়া যায়। অর্থাৎ বিজ্ঞান বাহ্যিকভাবে এর স্বীকৃতি দেওয়া থেকে দূরে থাকতে চাইলেও এর মূল শিক্ষা শেষ হয় সেটার মাধ্যমে। এটা বুঝতে হলে হাইপারডাইমেনশনাল ফিজিক্স ভাল করে বুঝতে হবে। যেখানে সবকিছুই সবকিছুর অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে দেখানো হয়, এজন্য এস্ট্রলজিকে প্রাচীন ভিত্তিহীন বিজ্ঞান বললে ভুল হবে। আমার কাছে এরূপ লাগে যে বাবেল শহরে জন্মানো এই বিদ্যা প্রাচীন যুগেই আসা এ্যাডভান্স মেটাফিজিক্যাল সিনপ্সিস। আজকের বিজ্ঞান শুধুই সেই জ্ঞানকে ডিকোড করছে, এরজন্য কিছুকাল সেটা থেকে আলাদা থাকা আরকি। উদাহরণস্বরূপ,প্রাচীন যুগে কোন লোক এক সম্প্রদায়কে একটা বিমানের এর চিত্র একে দেখালো, সবাই সেটাকে অনুকরণ করে অঙ্কন করতে লাগলো, কিন্তু ঐলোক বিমানের মেকানিজম সম্পর্কে কিছুই জানায়নি। দুইতিনশত বছর পর সে চিত্রকে একদল নীতিনির্ধারক কল্পনা বলে এ্যাবান্ডন করে ধীরে ধীরে জ্ঞান বিজ্ঞানের অনুসরন করে একসময় বিমানই তৈরি করে ফেলল। তখনকার লোক প্রাচীন ছবি দেখে বলতে লাগলো, এই বিদ্যা তো সেদিনই আবিষ্কার হলো। এতো এ্যাডভান্স নলেজ প্রাচীন লোকদের মধ্যেও তবে ছিল!

একইভাবে এস্ট্রলজি আবারো বৈজ্ঞানিক সমর্থন পেতে যাচ্ছে। এরজন্য আমরা কোয়ান্টাম এবং ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্স রিকনসাইল করার প্রচেষ্টায় থাকা বিজ্ঞানীগন এস্ট্রলজিকে আড়ালে আবডালে প্রচার করে তাদের প্রপাগান্ডা ডকুমেন্টারিতে।

জিনিসগুলোকে ইনশাআল্লাহ সবই খুলে খুলে বর্ননা করব , এবং সেটা করতেই হবে। নতুবা কোন তত্ত্বকে কুফর সাব্যস্ত করলে যাদের জ্ঞানই নাই তারা আমাকে তো পথচ্যুত মনে করেই, পাশাপাশি স্যাটানিক থিওলজিতে সমর্থনে গোঁড়ামিও বেড়ে যায়। যাদেরকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা রক্ষা করেছেন, তাদের কথা ভিন্ন।

যে বিষয়টা আমাকে অবাক করে, একটা সময় ছিল খুজতাম আল্লাহর রাসূল(সাঃ) আজকের বিচিত্র কুফরি তত্ত্বের ব্যপারে কিছু বলেছিলেন কিনা। কিন্তু কিছুই পেতাম নাহ। কিন্তু আজ দেখতে পাচ্ছি , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা, রাসূল(সাঃ) এর মাধ্যমে একদম সাপের মাথার ব্যপারেই সতর্ক করেছিলেন। সুবহানআল্লাহ, এই সেই জ্যোতিষবিজ্ঞান।এটা সুপারন্যাচারাল ম্যাজিকেরই একটা শক্তিশালী শাখা। এই শাখার শেকড় আজকের বিভিন্ন থিওরি আর 'ল এর ব্যপারে বিদ্যা। কাব্বালিস্ট র‍্যবাইদের কাছে থেকে শুনুন, এটা কিরূপ বিদ্যা! যেখানে সাপের মাথার ব্যপারেই সতর্ক করা হয়েছে সুতরাং এর লেজ কিংবা উদরের ব্যপারে সতর্ক করা নিষ্প্রোয়োজন।

Hashem Al Ghaili - সারাবিশ্বে Occult worldview প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেলিব্রেটি মুর্তাদদের অনন্য প্রয়াস

এক দ্বীনি সেলিব্রেটি ভাইকে দেখেছিলাম "হাশেম আল ঘাইলি"র কোন একটা ভিডিও শেয়ার করেছেন। আমি জানিনা মূর্খতার কোন পর্যায়ে আমরা! এরাবিক/ইসলামিক নাম দেখলেই ঝাপ দেই! আর ওদের শয়তানি আকিদার ডেপিকশন গুলো নিয়ে ইসলামাইজেশন! এগুলো কিনা কিছু লোকের রিলিজিওসিটি ইনহ্যাঞ্চ করে! (প্রদত্ত ছবিতে)এরা সুস্পষ্টভাবে শয়তানের চেহারাতেই দেখিয়ে সৃষ্টিকর্তার আসনে রিপ্লেস করছে। হাশেম সাবের বিশ্বাস শুনবেন?
এক সাক্ষাৎকারে তাকে [সুডো]সায়েন্স এবং নাস্তিকতা একে অন্যের সাথে জড়িত কিনা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা হয়।তিনি উত্তরে বলেন,
“The way I see it, science and atheism are interconnected. To believe in all science, you must first give up any concept that contradicts with science. You can’t just choose to believe in some science and ignore some parts of it because the same scientific method is always followed in generating this whole body of scientific knowledge. It’s either to accept in the whole package or to reject it once and for all. What makes religions weak is that the beliefs they promote are well preserved, unchangeable over centuries and not allowed to be questioned by their followers. However, you don’t have to be an atheist to become a scientist, you can still believe in religion and in science at the same time but then your rational scientific mind won’t be able to accommodate both.”
 

এতে কোন সন্দেহ নেই যে বৃহদাকারে রিপ্যাকেজড স্যাটানিজম, এবং মালাউন সর্সারারদের যাদুশাস্ত্র ডিরাইভড শয়তানি আকিদাকে জগতে ছড়িয়ে দিতে দুজন মুসলিম পরিবারের সন্তানকে শয়তান বেছে নিয়েছে। এর একজন হাশেম সাব। আরেকজন যেকোন সময়ে নোবেল পাবেন। উনি কাব্বালাকেও ফিজিক্সের পরিভাষায় ডিকোড করে ফেলেছেন (তাকে নিয়ে অন্যদিন লিখব) । ব্যপারটা আইরনিক্যাল। কাটা দিয়ে কাটা তুলবার মত কাজ।
.
আমার সত্যিই সন্দেহ হয় এবং আশংকা হয় এই ভেবে যে, আরিফ আজাদসহ আরো অনেক মর্ডানিস্ট অথোরস কাদের হয়ে কাজ করছেন? 
তারা যা করছেন সেব্যপারে কি তারা কন্সাস? নাকি শ্রেফ মূর্খতার দরুন এরূপ করছেন?
.
সর্তক করে যদি কিছু বলতে যাই, উলটা আমারেই তাকফির করে! একটা আইডিও রিপোর্ট করে বন্ধ করতে বাদ রাখেনি। আল্লাহই সবার অন্তরের ব্যপারে ভাল জানেন। তবে আমি আমার কাজ করে যাব, শয়তানি সমস্ত ডেটাবেজ যা আমার কাছে আছে ধীরে ধীরে আনভেইল করতে থাকব, যার ভাল লাগবে তা মানবে, যার ভাল না লাগবে ইবলিসের পথকে বেছে নেবে। দ্বীনের ব্যপারে তো কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আমার খুব খারাপ লাগে কারন এসব আমি সমূলে বুঝি এবং ভয়াবহতা উপলব্ধি করি। কিন্তু আমার দ্বীনিভায়েদেরই এসবে বিশ্বাস করতে দেখি। সাধারন মানুষ করবে কি!?
গতকাল আরেক দ্বীনি ভাই দেখি মালাউন কার্ল সেগানের ভিডিও শেয়ার করতে। এতে তার ফলোয়াররা শেয়ার্ড লিংকের নিচে 'সুবহানআল্লাহ' লিখছিলো।  
আসলে এজন্য একটা বিষয় অনুভব করি, ignorance is bliss। মানে, 
"if one is unaware of an unpleasant fact or situation one cannot be troubled by it." এ বিষয় গুলোতে সবার মত অচেতন থাকলে,আজ এগুলো দেখলে রাগান্বিত হতে হত না, সবার সাথে আমিও "আমিন" কিংবা "সুবহানআল্লাহ" বলতাম। 
.
[সংযুক্ত ছবির বিষয় বস্তু স্যাটানিক এন্টিটির ডিভিনিটি নিয়ে, যদি "স্যাটানিক" টার্মটি আপনার মর্ডান সেন্সিবিলিটিতে আঘাত হানে, তাহলে "এলিয়েন" দিয়ে রিপ্লেস করলেই হলো। তবে কনভেনশনাল আউটার স্পেসের এলিয়েন নিয়ে নয়, এরা ডিল করছে ইনারস্পেসের এলিয়েন নিয়ে। ঐন্দ্রজালিক উচ্চমাত্রার বুদ্ধিমান স্বত্ত্বাদের ঐশ্বরিকতা নিয়ে। এটাই সাইন্স  ইউ হ্যাভ টু মানতে হবে 
বিস্তারিতঃ 
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html

এবং বছর খানেক আগে লেখা অসম্পূর্ণ ডকুমেন্টারির খন্ডাংশ- 
https://aadiaat.blogspot.com/2018/04/blog-post_42.html



যেটা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম... 
হাশিম আল ঘাইলি, আপনাদের প্রিয় সায়েন্স এন্থুজিয়াস্ট(আপনাদের দৃষ্টিতে মুসলিম,আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী না তাতে কি, আল হাইয়্যান, ইবনে সিনাদের মত উনিও উম্মাহর জ্ঞানের গর্ব। বিখ্যাত সায়েন্সবোদ্ধা।আপনারা তো নাস্তিকদের বানানো ভিডু শেয়ার দেন না, উনার ভিডিও আর্টিকেল যেহেতু শেয়ার হয়, পেইজে লাইক আছে সুতরাং উনার ব্যপারটা একটু আলাদা। আল্লাহকে অবিশ্বাস করলেও তাকে কাফের বলা ঠিক হবে না, তাইনা?) এর খ্যাতি জগতজোড়া। ফেসবুকেই ২১ মিলিয়ন ফলোয়ার! ভিডিও সম্পাদনায় অসাধারণ। ৬ বিলিয়ন অর্গানিক ভিউয়ার। এ নৈপুণ্য দিয়ে কি বানাচ্ছেন জানেন? তিনি (সুডো)সায়েন্স ফিকশন ফিল্ম তৈরি করছেন। তিনি দেখাবেন, যে মৃত্যুর পর পরকাল বলে কিছু নেই বরং উচ্চতর মাত্রায় ট্রান্সেন্ডেন্সের সম্ভাবনা। এবং আমাদের দেখা মহাবিশ্ব এবং সমগ্র সৃষ্টিজগত শয়তান জ্বীনদের তৈরি। তারাই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা! আর এই জগৎ হলোগ্র‍্যাফিক ইল্যুসিভ সিমুলেশন। এই আকিদার গ্রেসিয়-ব্যবিলনিয়ান (পিথাগোরিয়ান) যাদুকরকেন্দ্রিক অরিজিন নিয়ে বছর খানেক আগে লিখেছিলাম। একদেড়শ বছর আগেও হিপ্পি-মিস্টিকদের মধ্যে এই আকিদা প্রচলিত ছিল। কিন্তু এখন একদম মেইনস্ট্রিম সায়েন্সবাদি পাবলিক ফিগার এর প্রচার করছে(পেছনে বাঘা বাঘা ফিজিসিস্টরা আছেন,ওনারা তো নিরীহ(!), ওনাদের মুসলিমদের মধ্যে পরিচিতি কম তাই এখানে না টানি) । আর এমন একজন যার ফলোয়ারের আনুমানিক কয়েক মিলিয়ন ইসলামি নামধারী। হয়ত লাখখানেক তাওহীদবাদি মুসলিম আছে। আমার আইডিতে মিচুয়াল ফ্রেন্ডদের মধ্যে অনেক ফলোয়ারস ছিল। অনেকে তার দুর্দান্ত ভিডিও গুলো শেয়ার করত! এই বিখ্যাত বিজ্ঞানমনা ফেসবুকার খুব শীঘ্রই গনহারে মুশরিক মালাউন বানানোর উদ্দেশ্যে ফিল্ম রিলিজ করবেন। এর ট্রেইলারেই শয়তানের চেহারা রেখেছেন(ছবিটা অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া)। এরাই "ক্রিয়েটরস"!!! এরাই সবকিছুর নিয়ত্বা ও কোঅর্ডিনেটর। [নাউজুবিল্লাহ]
.
কি ব্যপার, শেয়ার করবেন না ভিডিও টা? জুনের মধ্যেই পুরোপুরি কাজ শেষ হবার কথা। তো তাওহীদবাদী প্রিয় ভাইবোনেরা, শয়তানকে ইলাহ হিসেবে গ্রহনের আহব্বানের যুগান্তকারী ভিডিওখানা শেয়ার করবেন তো? 
.
আমি তো কতকিছুই বলি, আমার কথার কোন ভ্যালু আছে নাকি! পুরা সায়েন্সকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার ধৃষ্টতা দেখাই! যেখানে আলিমদের প্রায় সবই এগুলো গ্রহন করে নিয়েছে, সায়েন্টিফিক্যালি জাস্টিফাইয়েবল থিওলজিকাল লেকচার দিয়ে ঘর্মাক্ত হন(প্রাইডের জন্য), সেখানে (সাহাবীদের বলা)প্রিমিটিভ কস্মোজেনেসিসের দিকে আহব্বানকারী জেনারেলে পড়া ফ্যানাটিক বিগটের কথা মানবেন কেন! দ্বীন নিয়ে কথা বলার মিনিমাম যোগ্যতা আছে! ইসলাম তো প্রগতিশীল,শান্তির ধর্ম। আর এগুলো এ্যাডভ্যান্স ফিজিক্সেরই এক্সপ্ল্যানেইশন, সবকিছুর ম্যাথম্যাটিক্যালি ও জিওম্যাট্রিক্যালি ১০০% বিশুদ্ধ। অতএব 'সাইন্স উইথআউট রিলিজিয়ন ইজ লেইম, রিলিজিয়ন উইথআউট সাইন্স ইজ ব্লাইন্ড'। ঠিকাছে?

ভারতীয় দর্শনের সাথে বর্তমান বিজ্ঞানের এত সখ্যতা কেন!

এক ভাই প্রশ্ন করেছেন,
"বর্তমানের কসমোলজিস্টরা হিন্দু কসমোলজির এতো প্রসংসা করে কেন(?) ,আর গুরুদের সাথে সাইন্টিস্টদের এতো ভালো সম্পর্ক কেন!"

শুধু হিন্দুত্ববাদী বৈদিক শাস্ত্রই না, ওরা বৌদ্ধধর্মকেও এস্ট্রোফিজিক্সের আইডিয়াল স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে দেখে। কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর প্রায় পুরোটাই হিন্দু শাস্ত্র থেকে নেওয়া। এর কারন কি? 
কারন কোনদিনই কেউ বুঝবে না যদি সে অকাল্ট ফিলসফি/মিস্টিসিজম এর ব্যপারে কিছুই না জানে। আর সে যদি না জানে এই সায়েন্সের অরিজিন কি, কি ছিল আর কি হয়েছে তাহলেও বুঝতে পারবে না। 

হিন্দু পৌত্তলিকতা আসলে পূর্বাঞ্চলীয় রহস্যবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা পৌত্তলিকতার ধর্ম। মক্কায় ইসলাম অবতীর্ণ হবার সময় পূর্ব অবস্থাকে দ্য ম্যাসেজ ফিল্মে দেখানো হয়। সেখানে কোন এক বিদ্বান পৌত্তলিককে মূর্তি পূজার কারন জিজ্ঞেসা করলে সে উত্তরে বলে, আমরা আসলে একটা প্রতীকি রূপ দিয়ে পূজা করি যা শক্তির আধার। 

একই ধারনা ভারতীয় মুশরিকদের। নিন্ম বর্নের নমঃশূদ্ররা হয়ত বিভিন্ন মূর্তিদেরকে কোনরূপ পার্সোনিফিকেশন ছাড়াই পূজা করে, কিন্তু একটু জ্ঞানী শিক্ষিত মুশরিকরা মূর্তিদেরকে পার্সোনিফাইড ন্যাচারাল ফোর্সেস বা 'ল হিসেবে দেখে। একই দৃষ্টিভঙ্গি বিজ্ঞানীদেরও ওদের কস্মোজেনেসিসে(সৃষ্টিতত্ত্বে) ব্রহ্ম, বিষ্ণু,শিবের ভূমিকা আরো উচু স্তরের কুফরি আকিদার বার্তারই এক্সোটেরিক রিলিজিয়াস ভার্সন। যখন বিষ্ণু ঘুমিয়ে পড়ে, তার নাভি দিয়ে ব্রহ্মার জন্ম হয়। বিষ্ণুর স্বপ্নীল মায়াজালই হচ্ছে আমাদের রিয়ালিটি। আর যখন বিষ্ণুর ঘুম ভাঙ্গে, তার স্বপ্নও ভাঙ্গে, আমাদের ইউনিভার্সও ধ্বংস হয় শিবের ধ্বংস নৃত্যে। আবারো ব্রহ্মা আসে সৃষ্টির পুনঃজন্মের জন্য, এভাবেই অনন্তকাল চলতে থাকবে(ইনফিনিট লুপ)। ফিজিসিস্টগন মেটাফোরিক্যাল অকাল্ট মিনিংটাই নিয়েছেন। তারা লার্জ হাইড্রন কোলাইডারে পার্টিকেলকে ভাঙতে ভাঙ্গতে শেষ সীমানায় নিয়ে যান, এই উদ্দেশ্যে যে তারা হয়ত ব্রহ্মাকে পাবে, যে পুনঃসৃষ্টির কাজ করবে। এজন্যই শিবমূর্তিকে রিসার্চ ল্যাবের সামনে সসম্মানে রাখা আছে। তারা শিব-ব্রহ্মার ইন্ট্যার‍্যাকশ্যন মাইক্রোস্কোপিক এবং ম্যাক্রোস্কোপিক উভয় পার্স্পেক্টিভেই দেখেন।

এই অকাল্ট কস্মোজেনেসিস একেক ট্রেডিশনে একেকরকম। প্রাচীন ইজিপ্ট/গ্রীক/ব্যবিলন সব জায়গায় একই রকম ছিল ভিন্ন ভিন্ন কন্টেক্সট আর সেটিংএ। হিন্দু ধর্মের এসব এসোটেরিক ম্যাসেজ অনেক পুরাতন আর কালারফুল,কনভিন্সিং। অর্থাৎ সায়েন্স তথা ন্যাচারাল ফিলসফি যে ম্যাসেজ ক্যারি করে সেটা হিন্দুধর্মে অক্ষত অবস্থায় বিদ্যমান। এজন্য বিজ্ঞানীদের কাছে ইস্টার্ন মিস্টিসিজম এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কিতাবাদি বাইবেলস্বরূপ। হিন্দুত্ববাদ-বৌদ্ধ ইত্যাদি আস্তিক নাস্তিক স্কুল অব থট দর্শন ছাড়া কিছুই নয়। আরো অনেক দর্শনের শ্রেণীবিভাগ ছিল সেসবের অনেকগুলোই কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। বিশেষিকা ট্রেডিশান তো অনু পরমানু পরমমহান পরমআত্মা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলত। সেসব অবশ্য হিন্দু স্ক্রিপচারগুলোয়ও আছে। সুতরাং মূল বিষয় হচ্ছে একটা মিস্ট্রি স্কুল(Science) যদি অন্য আরেক প্রাচীন মিস্ট্রি স্কুলের প্রতি বিমুগ্ধতায় ভোগে তাহলে এতে খুব বেশি বিস্মিত হবার কিছু দেখি না। মিস্টিসিজম স্যাটানিক চ্যান্টিং ছাড়া আর কিছু না। এখানে যা আছে সেটা হচ্ছে ইব্রাহীমের(আঃ) দ্বীনের সবকিছুর বিপরীত কুফরভিত্তিক বিকল্পপথ। কস্মোলজি থেকে শুরু করে সবকিছুরই এক্সপ্ল্যানেশন আর অলটারনেটিভ অরিজিন আছে। এস্ট্রোলজিক্যাল নলেজ হচ্ছে এমন একটি মিস্টিক্যাল সায়েন্স যেটা সকল অকাল্ট ফিলসফিরই কোর টেনেট। হিন্দুত্ববাদ সম্পূর্ণভাবে এর উপর নির্ভরশীল। অথচ আমাদের আব্রাহামিক[আদম-মুহম্মদ(স)] রিলিজিয়াস ট্রেডিশনে এটা শয়তানি কাজ এবং নিষিদ্ধ যাদুবিদ্যারই শাখা।

অর্থাৎ একটা স্রোত গিয়েছে একত্ববাদের দিকে। আরেকটা স্রোত গিয়েছে বহুত্ববাদী পৌত্তলিকতার দিকে। এই পলিথেইস্টিক স্ট্রিমে পৌত্তলিকতা থেকে শুরু করে প্রকৃতিপূজা, আত্মপূজা, শয়তানের পূজা সবকিছু একাকার হয়ে আছে। ইসলামের মাঝে যারা সেই একই মিস্টিক্যাল কুফরি আকিদা ইসলামাইজ করে ঢুকিয়েছে এরা হচ্ছে শিয়া এবং সুফিরা। আজকের পীরদের অধিকাংশই মালাউন। কিন্তু অন্ধ অনুসারীদের অধিকাংশকে তাকফির করা যায় না। সবচেয়ে বড় আইরোনিক্যাল ব্যপার হচ্ছে সহীহ আকিদার দাবিদার প্রায় সবাই কোন না কোন ভাবে মেইনস্ট্রিম স্যাটানিক অলটারনেটিভ কস্মোলজি এবং কস্মোজেনেসিসে বিশ্বাসী। এদের মধ্যে আবার কতক উচ্চ শিক্ষিত। এদেরকে দেখলেই সবচেয়ে বেশি বিচলিত হই। এদের মধ্যে অনেক বড় বড় দাঈ আছেন যারা এসবই ইসলামাইজ করে কিতাব প্রকাশ করেন। তাদের কাছে কোন ব্যাখ্যাই নেই যে কেন এরকম করছে। হয়ত ইগো এখানে অনেক বড় একটা ব্যপার। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।

৯.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[নক্ষত্রমালা ও ছায়াপথ]

পর্ব-৯

নক্ষত্রমালা


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তারকারাজি সৃষ্টি করেছেন একদম ছয়দিনের শেষ প্রহরে শুক্রবারে।অথচ প্রচলিত বিজ্ঞান আমাদের শেখায় তারকা, গ্রহ(কথিত) সবকিছু এলোমেলোভাবে সৃষ্টি হয় বিগব্যাং এর দ্বারা। ওরা এক স্থানে বলে প্রথম তারকাটির জন্ম ১০০মিলিয়ন বছর পূর্বে। ওরা সূর্যকেও ওদের বিলিয়ন মিলিয়ন তারকার একটি হিসেবে বিবেচনা করে। এই তারকা সৃষ্টি হয়েছিল পৃথিবী তথা কথিত গ্রহ সৃষ্টিরও অনেক আগে। তাদের ভাষায় এটা হচ্ছে কস্মোলজিক্যাল এভ্যুল্যুশন[১]।

কাফিরদের একটা বাংলা ওয়েবে তারকা এবং গ্রহ সৃষ্টির মেইনষ্ট্রিম সায়েন্স স্বীকৃত প্রক্রিয়া  লিখেছেঃ
"গ্রহ বা গ্রহানু সৃষ্টিতত্ত্ব জানার আগে সূর্য কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল তা জেনে রাখা ভালো। আমাদের সূর্য সৃষ্টি হয় সৌর নেবুলা থেকে। আর সৌর নেবুলা সৃষ্টি হয় সুপারনোভা বিস্ফোরণ মাধ্যমে।

সূর্যের চেয়ে তিন গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রসমূহের অভ্যন্তরে হাইড্রোজেনের সংযোজন বিক্রিয়ায় তৈরি হয় হিলিয়াম, হিলিয়ামের সংযোজনে তৈরি হয় কার্বন এবং সেই কার্বনের সংযোজনে তৈরি হয় লোহা। লোহা তৈরির মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীণ বিক্রিয়াসমূহের পরম্পরার পরিসমাপ্তি ঘটে, কারণ এর পরের বিক্রিয়াটি তাপশোষী। এমনই এক সময়ে নক্ষত্রের অভ্যন্তরস্থ বহির্মুখী চাপ যথেষ্ট পরিমাণ কমে যাওয়ায় এটি আর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে না, ফলে নক্ষত্রে ঘটে এক প্রচণ্ড অন্তস্ফোটন (Implosion)। নক্ষত্রটির বেশিরভাগ ভরই এর কেন্দ্রে সংকুচিত হয়ে পড়ে, আর গ্যাসীয় বাতাবরণটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবলবেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাই সুপারনোভা বিস্ফোরণ হিসেবে পরিচিত। এই ধরনের বিস্ফোরণে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় এবং সংশ্লিষ্ট নক্ষত্রটি সাময়িকভাবে পুরো ছায়াপথের চেয়েও বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কেন্দ্র ছাড়া অবশিষ্ট অংশটুকু বা আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলাকণার মেঘ অর্থাৎ যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তা নেবুলায় পরিণত হয়।

একইভাবে সৌর নেবুলা সৃষ্টি হয়েছিল। যা প্রায় ১ আলোকবর্ষ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। এরপর এই বিশাল আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলাকণার মেঘের ঘূর্ণনবেগ বাড়ার সাথে সাথে এটি সংকুচিত হতে শুরু করলো। ফলে আস্তে আস্তে মেঘের আকৃতি ছোট হতে থাকে । এটি চ্যাপ্টা আকৃতির সাথে সাথে প্রায় ১০০ জ্যোতির্বিদ্যার একক (১ জ্যোতির্বিদ্যার একক= ১৪৯৬০০০০০ কি.মি) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হয়ে যায়।

নীহারিকার মেঘের কেন্দ্র আশেপাশের অন্য অংশ হতে বেশি ঘনত্বপূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে খুব দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে। সেখানেই তৈরি হয়ে থাকে আমাদের প্রোটোসূর্য। ধীরে ধীরে এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এটি হতে দৃশ্যমান আলো নির্গত হতে থাকে । এরপরে তাপমাত্রা আরও অনেক বাড়ার পর নিউক্লিয় বিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। সৃষ্টি হয়ে যায় আমাদের সূর্য । আমাদের সূর্য মেঘটির কেন্দ্রের স্থান দখল করে ছিল। এরপর আশেপাশের সকল বস্তু চাকতির ন্যায় আকৃতি ধারণ করতে শুরু করে। আশেপাশের সকল বস্তু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে শুরু করে। তখন অনুবীক্ষণিক ধূলিকণার বস্তুগুলো একে অপরকে আরও বেশি আকর্ষণ করতে শুরু করে।
স্বল্প ভররের বস্তু হতে অধিক ভরের বস্তুর সৃষ্টি হতে থাকে। আস্তে আস্তে বস্তুগুলো বড় হতে হতে একসময় গ্রহাণুতে রূপান্তর হয়ে পড়ে। এর থেকেও বড়গুলো গ্রহে পরিণত হয়। আমাদের পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলো ঠিক এভাবেই সৃষ্টি হয়।"[২]

সুতরাং শয়তানের সৃষ্টিতত্ত্ব অনুযায়ী সর্বপ্রথম তারকার সৃষ্টি হয় অতঃপর অনেকপরে কথিত গ্রহ-উপগ্রহ। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সর্বপ্রথম পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন,সাতটি পৃথিবী একের উপর আরেকটি সমতল দ্বীপ সদৃশ। এরপর আমাদের উপরে গম্বুজাকৃতির আসমান এবং এভাবে মোট সপ্ত আসমান, অতঃপর শুক্রবার শেষ প্রহরে চাঁদ সূর্য,তারকারাজি সৃষ্টি করেন। তারকারাজিকে দুনিয়ার নিকটতম আকাশে গেঁথে দেন।

I was told by Musa b. Harun-'Amr b. Hammad-Asbat-al-Suddi-Abu Malik and Abu SalihIbn 'Abbas. Also (al-Suddi)-Murrah al-Hamdani-'Abdallah b. Masud and some (other) companions of the Prophet ( comment?ing on): "Then[....]Friday. Friday-yawm al-jum'ah -is thus called because on it, God
put together fl-m-) the creation of the heavens and the earth and "revealed in every heaven its command."375 He continued: In every heaven, He created its (special) angels as well as its (special) oceans, the mountains with hail,376 and what (man) does not know.377 He then adorned the lower heaven with the stars and made them an ornament and guard to guard against the Satans.378 [....]
[ইবনে জারির তাবারির ইতিহাস]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاء أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা
[৪১:১২]

সুতরাং দেখতেই পাচ্ছেন, শরীআতের দলিল অপবৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার একেবারেই বিপরীতের। শুধু তাই না, এই বিজ্ঞান সূর্যকে নক্ষত্র মনে করে। অন্যদিকে কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী নক্ষত্র ও সূর্য সম্পূর্ন ভিন্ন সৃষ্টি। আল্লাহ তারকারাজিকে সম্পূর্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য এবং বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তারকারাজি সৃষ্টি করেছেন তিনটি উদ্দেশ্যেঃ
১.আসমানের সৌন্দর্যের জন্য।
২.আসমানের তারকা দেখে যমীনের উপর পথ চেনার নির্দেশক হিসেবে এবং
৩.বিতাড়িত শয়তানের থেকে আকাশকে সুরক্ষিত রাখার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপনাস্ত্ররূপে।

এর বাহিরে তারকারাজির অন্য কোন কাজ নেই। বর্তমান বিজ্ঞান নক্ষত্রের ব্যপারে যা বলে, তা সুস্পষ্ট মিথ্যা ছাড়া আর কিছু না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ النُّجُومَ لِتَهْتَدُواْ بِهَا فِي ظُلُمَاتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ قَدْ فَصَّلْنَا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও। নিশ্চয় যারা জ্ঞানী তাদের জন্যে আমি নির্দেশনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে দিয়েছি
[আনআমঃ৯৭]
এর ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ

অন্যত্র বলেনঃ
وَعَلامَاتٍ وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُونَ
এবং তিনি পথ নির্ণয়ক বহু চিহ্ন সৃষ্টি করেছেন, এবং তারকা দ্বারা ও মানুষ পথের নির্দেশ পায়[নাহলঃ১৬]

আল্লাহ বলেনঃ
وَالسَّمَاء ذَاتِ الْبُرُوجِ
শপথ নক্ষত্র শোভিত আকাশের[বুরুজঃ১]
إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ
নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি।
وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ
لَا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَى وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ
دُحُورًا وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ
إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ
এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয়। ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি। তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে
[আস ছফফাতঃ৬-১০]




আল্লাহ সূরা ফুরকানে বলেনঃ
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا
কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র
[২৫:৬১]


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সূরা হিজরে ইরশাদ করেনঃ
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ
নিশ্চয় আমি আকাশে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছি এবং তাকে দর্শকদের জন্যে সুশোভিত করে দিয়েছি।

وَحَفِظْنَاهَا مِن كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
إِلاَّ مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُّبِينٌ
আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি।
কিন্তু যে চুরি করে শুনে পালায়, তার পশ্চাদ্ধাবন করে উজ্জ্বল উল্কাপিন্ড
[১৫:১৬-১৮]

মাত্র তিনটি উদ্দেশ্যে আল্লাহ নক্ষত্রদের সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু আজকের কল্পনাভিত্তিক কস্মোলজিক্যাল মিস্টিসিজমে নক্ষত্রের এসকল কাজ নেই। তাদের কাছে তারকাদের ভূমিকা আরো অনেক কিছু।  এরা কখনো স্বীকৃতি দেয় না যে, নক্ষত্র শয়তানের বিরুদ্ধে উল্কা নিক্ষেপক হিসেবে কাজ করে, এরা তো উল্কা বলতে নক্ষত্রের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট কিছুকেই বোঝায় না। দ্বিতীয়ত, হেলিওসেন্ট্রিক এভার এক্সপ্যান্ডিং ইউনিভার্সে যেখানে সকল তারকা এদিক ওদিক ধাবমান, সেখানে তারকা দেখে পথ চেনার কথা কল্পনাও করা যায় না। কারন, এই কস্মোলজি অনুযায়ী প্রতিনিয়ত তারকারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে। এক শতাব্দী পর এক তারকা সম্পূর্ন হারিয়ে যাবে আবার নতুন কোন অজানা অচেনা তারকার উদয় ঘটবে। অথচ বাস্তবতা ঠিক তাই,যা রহমান আল্লাহ বলেছেন। মানব সভ্যতার আদি থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত তারকাদের অবস্থান/কক্ষপথ অপরিবর্তিত আছে। চলমান তারকারা সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত একই দূরত্ব ও অবস্থানে থেকে পৃথিবীকে আবর্তন করছে। এটা প্রমান করে আল্লাহর কথাই সন্দেহাতীতভাবে সত্য। আল্লাহ কখনোই পরিবর্তনশীল কোন কিছুকে পথের দিশা রূপে সৃষ্টি করতেন না যদি নক্ষত্ররা সত্যিই অবস্থান পরিবর্তন করত(যেমনটা আজকের বিজ্ঞান বলে)।
আজকের বিজ্ঞান অনুযায়ী, নক্ষত্ররা হচ্ছে একেকটি সূর্য, এদের প্রত্যেকের চারদিকে পৃথিবীর মত কিন্তু গোলাকার কিছু মাটি/পাথরের দলা ঘুরতে থাকে, তাদের পরিভাষায় সেসব হচ্ছে গ্রহ। সূর্য তথা প্রত্যেক নক্ষত্রের কাজ হচ্ছে, তাদের চারপাশের গ্রহ গুলোয় আলোদান।এরা হচ্ছে একেকটা জগতের সকল শক্তির উৎস! আমাদের উপর চক্রশীল সূর্যও নাকি একটা নক্ষত্র। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা চাদঁ সূর্যকে তারকাদের থেকে আলাদা উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ সূর্যকে সৃষ্টি করেছেন সময়ের হিসাবের জন্য এবং একটি নিদর্শন হিসেবে, এটা আদৌ কোন নক্ষত্র নয়। অন্যদিকে নক্ষত্রদেরকে আল্লাহ ভিন্ন উদ্দেশ্য ও কাজ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন,আমরা উপরে তা আলোচনা করেছি। আল্লাহ যখন ইউসুফ(আঃ) এর স্বপ্নের বর্ননা দিলেন তখন চাঁদ-সূর্যের কথা নক্ষত্রদের থেকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেছেন। নক্ষত্ররা আসমানের সমুদ্রের কক্ষপথে সন্তরনরত চাঁদ সূর্যের তুলনায় অনেক ক্ষুদ্র এবং অল্প আলোযুক্ত প্রদীপমালা।
আল্লাহ বলেনঃ
إِذْ قَالَ يُوسُفُ لِأَبِيهِ يَا أَبتِ إِنِّي رَأَيْتُ أَحَدَ عَشَرَ كَوْكَبًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ رَأَيْتُهُمْ لِي سَاجِدِينَ
যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি
[ইউসুফঃ৪]

আধুনিক অপবিজ্ঞান দৃশ্যমান নক্ষত্রসমূহকে গ্রহ বা প্ল্যানেট বানিয়েছে। এরা গ্রহ বলতে বোঝায় পৃথিবীর মত জগৎ। মঙ্গল,বুধ,শুক্র,শনি,বৃহস্পতি প্রভৃতি নক্ষত্রগুলোকে গ্রহ বানিয়েছে, এমনকি সেখানে যাবার মিথ্যা দাবী আর কল্পনায় জনগনকে ডুবিয়ে রেখেছে। তাদের মতে এরকম আরো বিলিয়ন মিলিয়ন গ্রহ সমগ্র মহাকাশে বিরাজমান। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এসব গ্রহের অস্তিত্ব শুধু কল্পনাতেই। ওরা যাদেরকে গ্রহ বলে, তারা মূলত চলমান নক্ষত্র। এ কথা হাদিসেও আছে। আলি(রাঃ) একদিন আল্লাহর রাসূল(সাঃ) কে প্রশ্ন করেন ঐ সমস্ত তারকাদের ব্যপারে, কুরআনে যাদের শপথ আল্লাহ করেছেন। যাদেরকে আল্লাহ খুন্নাস বলেছেন। খুন্নাসের ব্যপারে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বলেন সেসব হচ্ছে ৫টি 'তারকা'। সেগুলো হলো, বৃহস্পতি, শনি,বুধ,মঙ্গল,শুক্র। আমাদেরকে আজকে বিজ্ঞান এদেরকে 'গ্রহ' বলতে শেখায় অথচ নবী(সাঃ) শিখিয়েছেন তারকা। এই পাচঁঁটি এমনই তারকা যারা চাঁদ সূর্যের ন্যায় উদিত হয় এবং অস্ত যায়। এরা ছাড়া বাকি তারকারা আসমানে চক্রাকারে ঘুরছে। এদের এই ঘূর্ননই হচ্ছে আল্লাহর প্রার্থনা।


Ibn 'Abbas said that 'Ali b. Abi Talib said to the Messenger of God: You are like my father and my mother! You have mentioned the course of the retrograde stars (al-khunnas) by which God swears in the Qur'an,449 together with the sun and the moon, and the rest. Now, what are al-khunnas? The Prophet replied: 'Ali, they are five stars: Jupiter (al-birjis), Saturn (zuhal), Mercury ('utarid), Mars (bahram), and Venus (al-zuhrah). These five stars [661
rise and run like the sun and the moon and race with them together. All the other stars are suspended from heaven as lamps are from mosques, and circulate together with heaven praising and sanctifying God with prayer. The Prophet then said: If you wish to have this made clear, look to the circulation of the sphere alternately here and there. It is the circulation of heaven and the circulation of all the stars together with it except those five. Their's'
circulation today is what you see, and that is their prayer. Their circulation to the Day of Resurrection is as quick as the circulation of a mill because of the dangers and tremors of the Day of Resurrection. This is (meant by) God's word: "On a day when the
heaven sways to and fro and the mountains move. Woe on that day
unto those who declare false (the Prophet's divine message). 11453
[History of Tabari]

আসমানে সৃষ্ট গতিশীল পানির কক্ষপথে চাঁদ-সূর্যের সাথে বুধ, শুক্র,শনি বৃহস্পতি, মঙ্গল তারকারা সন্তরন করে। সেসব চাঁদ সূর্যের মত ফালাকে আবর্তিত হয়ে অতঃপর অস্তগমন করে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এই পাঁঁচ তারকাদের ব্যপারে বলেনঃ
فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ
আমি শপথ করি যেসব নক্ষত্রগুলো পশ্চাতে সরে যায়।

الْجَوَارِ الْكُنَّسِ
চলমান হয় ও অদৃশ্য হয়[তাকভীরঃ১৫-১৬]

বড় আশ্চর্যের বিষয়,এ যুগের মুসলিমরা কাফিরদের বিকৃত শিক্ষার সাথে তাল মিলিয়ে এই তারকাদেরকে গ্রহ বলে মেনে নিয়েছে। আজ এরা বিশ্বাস করে এই পাচ তারকায় অবতরন করা যায়। কোন কোনটি তাদের কল্পনানুযায়ী বাসযোগ্য! ভবিষ্যতে সেখানে বসতি স্থাপনের স্বপ্ন দেখে! কাফিররা যেসব মিথ্যার প্রচার করে সেসবকে কুরআন সুন্নাহর মানদণ্ড দ্বারা যাচাই ছাড়াই বিশ্বাস স্থাপনের বিষয়টি যেকোন কালের চেয়ে এ যুগে মাত্রা ছাড়িয়েছে। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা যা বলেছেন সেটাই সত্য। জুমসেন্সড ক্যামেরা,টেলিস্কোপ দিয়ে কথিত গ্রহদেরকে তারকাদের মতই মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যায়। অন্য নক্ষত্রদের সাথে এসকল কাল্পনিক গ্রহদের খুব বেশি পার্থক্য নেই। আপনি বিশ্বাস করেন যে, কোন মানুষ জ্বলন্ত প্রদীপমালার উপর অবতরন করতে পারে,কিংবা বসবাসের চিন্তা করতে পারে! এই অসম্ভব চিন্তা/কল্পনার মধ্যেই কাফিররা আজ মানুষকে ডুবিয়ে রাখছে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তারকাদেরকে বিভিন্ন নামে উল্লেখ করেছেন। কখনো কাওকাব,নজম,বুরুজ,খুন্নাস,তারিক্ক,সাকিব ইত্যাদি। হয়ত আল্লাহ এদের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নামে সম্বোধন করেছেন। কোন তারকা উজ্জ্বল, কোনটি চক্রশীল ওয়ান্ডারিং স্টার,কোনটা রেট্রোগ্রেডিং স্টার,কোনটা স্থির,কোন কোন তারকা আসমানের প্রহরীস্বরূপ,কোনটা দিনের বেলায় লুকিয়ে যায়, রাতে প্রকাশ করে। অন্তরে ব্যাধিগ্রস্ত বিজ্ঞানপন্থী মুসলিমদের অধিকাংশ এসব বিভিন্ন নামের পার্থক্যের সুযোগ ব্যবহার করে সেগুলোকে প্ল্যানেট বা গ্রহ বলে ব্যাখ্যা করে। অনেক আলিম/দাঈরাও এটা বলতে চায় যে কাওকাব মানে হচ্ছে গ্রহ। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে কাওয়াকিব(কাওকাব) শব্দটি সূরা ইউসূফের ৪ নং আয়াতে ব্যবহার করেছেন। সংশ্লিষ্ট আয়াতের ব্যপারে আসা হাদিসে জনৈক ইহুদী আল্লাহর রাসূল(সাঃ) কে ইউসুফ(আঃ) কে সিজদা করা 'নক্ষত্রদের' নাম জিজ্ঞেসা করেন। ওই হাদিসে আদৌ সেসব নক্ষত্রদের দ্বারা গ্রহ বোঝানো হয়নি(হাদিসটি উপরে সূরা ইউসুফের ৪নং আয়াতের নিচে দেয়া আছে)। বরং স্পষ্টভাবে নক্ষত্রের কথা বলা হয়েছে। হিব্রু ও আরবি ভাষায় কাওকাব মানে তারকা বা নক্ষত্র। এর দ্বারা বিশেষ স্থির heavenly bodies-ও বোঝায়। সকল প্রকার তারকা বা নক্ষত্রই নুজুম কিন্তু সকল নুজুমকে কাওকাব/কাওয়াকিব বলা যায় না। সকল তারকাকে নুজুম বলা যায় কিন্তু সকল তারকা তারিক/শিহাব/সাকিব/বুরুজ নয়। সৃষ্টিকর্তা কোন কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে নক্ষত্রদেরকে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শব্দে বলেছেন, সেটা একমাত্র তিনিই জানেন। কোন মানুষ সুস্পষ্টভাবে সুনিশ্চিতভাবে আকলী জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে কিছুই বলতে পারবে না। কেননা প্রত্যেক নক্ষত্রের আচরণ-বৈশিষ্ট্যের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহরই জানা আছে। আজকে যারা মর্ডান সুডো সায়েন্সের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আল্লাহর বলা শব্দ গুলোকে কাফিরদের চিন্তাধারার সাথে মেলায়, তারা অবশ্যই ভুল করছে। একলোক শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদকে(হাফিঃ) নজম ও কাওকাবের ব্যপারে প্রশ্ন করেন। শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ(হাফিঃ) উত্তরে কাফিরদের কাছে থেকে আসা প্ল্যানেটারি নোশনের সাথে কুরআনের মধ্যস্থতা করলেন। এমনভাবে উত্তর করলেন যাতে সায়েন্টিফিক কমিউনিটিও না কষ্ট পায়, আবার রিলিজিয়াস কমিউনিটিও কষ্ট না পায়। এজন্য একদিকে বললেনঃ
"As for limiting the word “najm” and using it only to refer to huge heavenly  bodies that have fixed locations in the sky, are burning and emit light by themselves, such as the sun, and using the word “kawkab” to refer to solid heavenly bodies that are not burning, such as the planets of the solar system, this is modern astronomical terminology. There is nothing wrong with adopting and using this terminology, as there is no problem with the terminology itself, but it is wrong to judge the language of the Holy Quran by the terminology of later eras. Rather what we must do is understand the Holy Quran in accordance with the Arabic language, because that is the language in which the Quran was revealed. Whoever disagrees with that is like one who understands the word sayyaarah in the verse “And there came a caravan of travellers [sayyaarah]; they sent their water-drawer” [Yoosuf 12:20] as referring to the vehicle that is known nowadays in which people ride and travel by mechanical means [sayyaarah in modern Arabic means “car”] then raises an objection against the Quran by saying that cars were not invented at the time of Yoosuf (peace be upon him), so how can cars be mentioned here?! "[৩]

তার কথা হচ্ছে, আধুনিক বৈজ্ঞানিক শিক্ষা অনুযায়ী তথ্য/পরিভাষাকে গ্রহন করায় কোন দোষ নেই(!), কিন্তু কুরআনকে বুঝতে হবে কুরআন নাযিলের সময়ের প্রেক্ষাপটে যা বুঝানো হয়েছে আরবি ভাষায়, তার উপর। তিনি আরবি শব্দের 'গাড়ি'র উদাহরন দিয়েছেন। ১৪০০ বছর আগে যেই মেকানিক্যাল চাকাওয়ালা বাহন ছিল সেটাকে যে শব্দে ডাকা হত, সে শব্দ দ্বারাই আজ গাড়িকে ডাকা হয়। মানুষ প্রাচীন শব্দকে আধুনিক সৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। এমতাবস্থায় তার মতে কোনভাবেই কাউকে বলা উচিত না যে, কুরআনে কেন গাড়ির কথা আসল, গাড়ি তো ১৪০০ বছর আগে আবিষ্কৃত হয় নি!

তিনি চমৎকারভাবে সমন্বয় করলেন বৈজ্ঞানিক শব্দ গ্রহন এবং ইসলামের মধ্যে। কাফিরদের থেকে আসা বিশ্বাসগত শিক্ষা বা পরিভাষাকে গ্রহন করাতে দোষ নেই, কিন্তু কুরআনকে বুঝবার জন্য ওই নবোদ্ভাবিত বিদ্যা বা শিক্ষাকে ব্যবহার করা যাবে না! অদ্ভুত প্যারাডক্সিক্যাল কথা!

বিজ্ঞানপন্থীদের আরেক মিথ্যা দাবী হচ্ছে ,বিলিয়ন ট্রিলিয়ন (কাল্পনিক)গ্রহ-নক্ষত্র কাল্পনিক সীমাহীন মহাশূন্যের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সমস্ত নক্ষত্রদের দ্বারা শুধু প্রথম আসমানকে সুশোভিত করেছেন। অর্থাৎ কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী তারকারা শুধুই নিকটবর্তী আসমানে তথা প্রথম আসমানে এর বাইরে নয়। গ্রহ বলে আলাদা কিছুর অস্তিত্ব নেই। আমরা রাতের আসমানে মিটমিট করে যাদের জ্বলতে দেখি, তাদের সবাই  প্রথম আসমানে ভাসমান নক্ষত্র।
আল্লাহ তাবারাকা তা'য়ালা সূরা মুলকে ইরশাদ করেনঃ
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি
[৬৭:০৫]

আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ
নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি[ছফফাতঃ৬]


সুতরাং, আশা করি দেখতে পাচ্ছেন আজকের কাল্পনিক বিজ্ঞান আর আমাদের শাশ্বত সত্য ইসলামের সৃষ্টিতত্ত্বের মধ্যে বৈপরীত্য এবং সাংঘর্ষিকতা। দুয়ের মধ্যে জ্ঞানগত ব্যবধান আকাশ পাতালের।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তারকারাজির পতনের স্থানের(অস্তাচল) কথা বলেছেন। আধুনিক অপবিজ্ঞানকে গ্রহণকারী মুসলিমরা আনন্দের সাথে বলছে এটাই ব্ল্যাকহোল। কুরআন বিজ্ঞানময়! কুরআনে ১৪০০ বছর আগে ব্ল্যাকহোলের কথা বলা হয়েছে যা হাবল টেলিস্কোপে এখন দেখানো হচ্ছে(৪)। অথচ সত্য হচ্ছে এসব ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব কম্পিউটার এনিমেশন, বই পুস্তক আর কল্পনার বাইরে নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কি ব্ল্যাক হোলের কথাই বলেছেন?! কখনোই না।

আল্লাহ এর দ্বারা খুন্নাস তারকাদের কথা বলেছেন যারা উদিত ও এবং অস্ত যায়। আল্লাহ ওদের অস্তাচলের শপথ করেছেন।
আল্লাহ বলেনঃ
وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَى
নক্ষত্রের কসম, যখন অস্তমিত হয়[আন নাজমঃ-১]




সুতরাং এই আয়াতটি নিচের আয়াতের মতই সমার্থক(ইমাম ইবনে কাসিরও তাই বলেছেন) যে আয়াত দ্বারা আজকের বিকৃত চিন্তার মুসলিমরা ব্ল্যাকহোল বুঝিয়ে থাকে।
فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ
অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি[ওয়াক্বিয়াহ-৭৫]




কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সকল নক্ষত্রদেরকে নির্বাপিত করবেন,সেগুলো ঝরে পড়বে আসমান গা থেকে।
আল্লাহ বলেনঃ
فَإِذَا النُّجُومُ طُمِسَتْ
অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে[মুরসালাতঃ৮]

وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ
যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,[ইনফিতারঃ২]

وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ
যখন নক্ষত্ররাজি খসে পড়বে(তাকভীর:২)

উপরে দেখতে পাচ্ছেন হাদিসটি, যেখানে ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন, সূর্যকে নিষ্প্রভ করে উপুর করে মাটিতে নিক্ষেপ করা হবে। নক্ষত্রদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হবে। এর দ্বারা প্রমান হয়,আমাদের পৃথিবী সম্পর্কে অপবিজ্ঞান যা বলে তা মিথ্যা। সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্র বিজ্ঞান অনুযায়ী পৃথিবীর তুলনায় বিলিয়ন মিলিয়ন গুন বড়। এত বড় যে পৃথিবীকে নক্ষত্রদের সামনে একটা বিন্দুর সমতুল্যও মনে হবে না।এদেরকে পৃথিবীর উপর পতনের কথা কল্পনাও করা যায় না। এর সমপর্যায়ের ভাবনা এরূপ যে কোন এক বিন্দু বালির উপর গোটা পৃথিবীকে ফেলার কথা বলা। কিন্তু সাহাবীদের(রাঃ) আকিদা এটাই যে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন এদেরকে পৃথিবীর ভূমিতে ফেলে দেবেন। সকল নক্ষত্রদেরকে সমুদ্রে ফেলে নিষ্প্রভ করবেন। এটা প্রমান করে সত্যিকারের সৃষ্টিজগতের প্রকৃতি। এটা সাহাবীদের আকিদা যে, নূনের পৃষ্ঠদেশে সমতলভাবে বিছানো যমীনের বিশালতার তুলনায় চাঁদ সূর্য, নক্ষত্ররা অনেক অনেক ছোট। এদের প্রত্যেককে একত্রে সমুদ্রে নিক্ষেপ সম্ভব। আল্লাহ স্বয়ং এদের খসে/ঝড়ে পড়ার কথা বলেছেন।

Source:Al Bidaya Wan Nihaya






ছায়াপথ-আকাশগঙ্গা




ছায়াপথের ব্যপারে কাফির মুশরিকদের শেখানো আকিদা হচ্ছে সেটা হচ্ছে লক্ষকোটি তারকা গ্রহ-নক্ষত্র সমস্তকিছুর ধারক। এটা ধূলিকণা, গ্যাস,প্লাজমা,কৃষ্ণবস্তু দ্বারা গঠিত। এগুলো হাজার হাজার আলোকবর্ষের দৈর্ঘ্যপ্রস্ত বিশিষ্ট হয়ে থাকে। সমগ্র মহাকাশে এরকম বিলিয়ন মিলিয়ন ছায়াপথ আছে। প্রতিটা ছায়াপথ আবার মিলিয়ন বিলিয়ন ট্রিলিয়ন গ্রহ-নক্ষত্র ধারন করে। প্রত্যেক ছায়াপথ সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্র নিয়ে প্রচন্ড গতিতে(ঘন্টায় মিলিয়ন বিলিয়ন কিলোমিটার) মহাশূন্যের অজানা গন্তব্যে এদিক ওদিক ছুটে চলছে[৫]।

অথচ ছায়াপথের ব্যপারে ইসলামের শিক্ষা সম্পূর্ন ভিন্ন।ছায়াপথ হচ্ছে আসমানের একটি দরজা। কিয়ামতের সময় এই দরজা থেকেই বিদীর্ণ হওয়া শুরু হবে।

সুতরাং সুস্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, আজকের উম্মাহ কতটা জঘন্যভাবে নব্যুয়তের শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কাফিরদের কাল্পনিক অসত্য শিক্ষাকে গ্রহন করে নিয়েছে! বর্তমান যুগের আলিম, দাঈ এবং গায়রে আলিম সমস্ত মুসলিমের কাছে প্রশ্ন, কাফিরদের শিক্ষার কোন বিষয়টা তাদের নিকট নব্যুয়তের শিক্ষার চেয়ে অধিকতর গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, চাকচিক্যপূর্ন এবং উত্তম বলে মনে হয়েছে, যার দরুন তারা কাফির-মুশরিকদের ভ্রান্ত আকিদা ও শিক্ষাকে গ্রহন করে নিয়েছে?!

আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তীদের পন্থা পুরোপুরি অনুসরন করবে, প্রতি বিঘতে বিঘতে এবং প্রতি গজে গজে। এমনকি তারা যদি সাপের গর্তেও ঢুকে, তবে তোমরাও তাতে ঢুকবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি ইয়াহুদী ও নাসারাদের কথা বলছেন? নবী (সাঃ) বললেন, তবে আর কার কথা?’’ 
বুখারী ৩৪৫৬; মুসলিম ৬৬৭৪-(৬/২৬৬৯)

‘’ইয়াহুদি ও নাসারারা তোমার প্রতি রাজী হবে না যে পর্যন্ত না তুমি তাদের ধর্মের আদর্শ গ্রহন করো। বল- আল্লাহর দেখানো পথই সুপথ এবং তুমি যদি জ্ঞান আসার পরেও ওদের ইচ্ছা অনুযায়ী চল, তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর ক্রোধ হতে রক্ষা করার মতো কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী থাকবে না’’ 
[বাকারাহ ২/১২০]


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার প্রশংসা ও তার প্রতি কৃতজ্ঞতা, যে তিনি আমাদের মত অতি স্বল্পসংখ্যক অধমকে হক্ককে চেনার এবং মান্য করার তাওফিক দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ। ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।



ওয়া আল্লাহু আ'লাম



[চলবে ইনশাআল্লাহ...]




রেফা:
১)
https://www.cfa.harvard.edu/~ejchaisson/cosmic_evolution/docs/splash.html
https://www.universetoday.com/54756/what-is-the-big-bang-theory/
https://www.space.com/13352-universe-history-future-cosmos-special-report.html
https://phys.org/news/2018-06-planet-formation-star-maturity.html
http://www.bigbangcentral.com/galaxy_page.html

২)
http://www.atheistbangla.com/2018/09/how-earth-created.html

৩)
https://islamqa.info/en/answers/243871/meteorites-and-shooting-stars-may-be-called-stars-nujoom-and-heavenly-bodies-kawaakib-in-arabic

৪)
https://m.somewhereinblog.net/mobile/blog/Mahfuzhappy/29261752

৫)
https://bn.m.wikipedia.org/wiki/ছায়াপথ

বিগত পর্বগুলোর লিংকঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/article-series_85.html

Monday, May 27, 2019

প্রভাত দিয়ে লেখার টিউটোরিয়াল

একসময় বাংলাদেশে কম্পিউটারে বাংলা লিখতে ব্যাপকভাবে বিজয় ব্যবহৃত হত। কিন্তু বিজয়ে কিছু মারাত্বক সমস্যা থাকার জন্য অনেকেই ইউনিকোড ভিত্তিক অভ্র ফোনেটিক ও প্রভাতের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। বিজয়ে পাইরেসির সমস্যার জন্য সেদিকে সময় না দেয়াই ভাল।
অভ্র ফোনেটিকে কী-স্ট্রোক বেশি থাকায় দ্রুতগতিতে বাংলা লেখা সম্ভব নয়। প্রভাতে নির্দিষ্ট লে-আউট থাকায় খুব দ্রুতগতিতে বাংলা লেখা যায়। ফলে অনেকেই (বিশেষত ব্লগাররা) প্রভাত ব্যবহার করছেন। প্রভাত শেখার সময় আমার যে কিঞ্চিৎ ভোগান্তি হয়েছে, অন্যদের যেন তা না হয়, তার জন্যই আমার এই টিউটোরিয়াল। প্রভাতে কোন কী-তে কোন বর্ণ তা নিচে দেয়া হল:

স্বরবর্ণ:

অ = A, আ = v, ই = I, ঈ = E, উ = U, ঊ = W, ঋ = V, এ = y, ঐ = Y, ও = o, ঔ = O

ব্যঞ্জনবর্ণ:

ক = k, খ = K, গ = g, ঘ = G, ঙ = M, চ = c, ছ = C, জ = j, ঝ = J, ঞ = & (& = shift+7), ট = t, ঠ = T, ড = d, ঢ = D, ণ = N, ত = f, থ = F, দ = q, ধ = Q, ন = n, প = p, ফ = P, ব = b, ভ = B, ম = m, য = Z, র = r, ল = l, শ = x, ষ = S, স = s, হ = h, ড় = R, ঢ় = X, য় = z, ৎ = * (* = shift+8), ং = L, ঃ = H, ঁ = >

কার:

া (আ-কার) = a, ি (ই-কার) = i, ী (ঈ-কার) = e, ু (উ-কার) = u, ূ (ঊ-কার) = w, ৃ (ঋ-কার) = <, ে (এ-কার) = [, ৈ (ঐ-কার) = {, ো (ও-কার) = ], ৌ (ঔ-কার) = }

ফলা:

্য (য-ফলা) = (যে বর্ণে য-ফলা দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে)/Z, যেমন: k/Z = ক্য
্ব (ব-ফলা) = (যে বর্ণে ব-ফলা দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে)/b, যেমন: k/b = ক্ব
্র (র-ফলা) = (যে বর্ণে র-ফলা দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে)/r, যেমন: k/r = ক্র
্ল (ল-ফলা) = (যে বর্ণে ল-ফলা দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে)/l, যেমন: k/l = ক্ল
্ম (ম-ফলা) = (যে বর্ণে ম-ফলা দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে)/m, যেমন: k/m = ক্ম
র্ (রেফ) = r/(যে বর্ণে রেফ দিতে চান সেটি এখানে বসাতে হবে), যেমন: r/k = র্ক
[বি.দ্র. রেফ (র্) মূলত ব্যঞ্জনধ্বনির অব্যবহিত আগে ব্যবহৃত হসন্ত 'র' ধ্বনি।]

যুক্তবর্ণ:

প্রভাতে যুক্তবর্ণ লেখার জন্য যুক্তবর্ণটি কোন কোন বর্ণের সমন্বয়ে গঠিত তা জানতে হয়। দুইটি বর্ণ যুক্ত করার জন্য তাদের মাঝে ইংরেজী কী-বোর্ডের / (স্ল্যাশ) টাইপ করতে হয় যেটা আসলে ্ দেখায়। নিচে কিছু যুক্তবর্ণ উদাহরণ হিসেবে দেয়া হল:
ক্ষ = ক+ষ = k/S
হ্ম = হ+ম = h/m
জ্ঞ = জ+ঞ = j/& (& = shift+7)
ঞ্জ = ঞ+জ = &/j (& = shift+7)
ঞ্চ = ঞ+চ = &/c (& = shift+7)
ঞ্ছ = ঞ+ছ = &/C (& = shift+7)
ষ্ণ = ষ+ণ = S/N
ত্ত = ত+ত = f/f
ত্র = ত+র = f/r
ত্থ = ত+থ = f/F
হ্ণ = হ+ণ = h/N
হ্ন = হ+ন = h/n
ণ্ড = ণ+ড = N/d
ঙ্ক = ঙ+ক = M/k
ঙ্গ = ঙ+গ = M/g
স্থ = স+থ = s/F
র‍্য = র+য = r`/Z ( ` চিহ্নটি tab কী'র উপরের কী'র সাহায্যে দেয়া যায়)

Saturday, May 25, 2019

৮.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[চন্দ্র-সূর্য]

পর্ব-৮



আধুনিক বিজ্ঞান বলে, সূর্য হচ্ছে অনন্ত অসীম স্পেসের মধ্যে ধাবমান অগনিত নক্ষত্রের একটি। আর চাঁদ হচ্ছে গোলাকৃতির কথিত পৃথিবী নামক গ্রহের একটি উপগ্রহ। চাঁদ ঘুরছে পৃথিবীর চারপাশে। আর পৃথিবী ঘুরছে সূর্যকে কেন্দ্র করে,চারপাশে। সূর্য কাউকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে না বরং সেটা দুনিয়া চাঁদ, কথিত অন্যসব গ্রহ নিয়ে মহাশূন্যের অজানা গন্তব্যের দিকে ছুটে চলছে। চাঁদের কোন আলো নেই, সে সূর্যের থেকে আলো ধার করে। চাঁদ পৃথিবীর মতই অবতরনযোগ্য ভূমিবিশেষ। সূর্যের আলো চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করে...।
কাফিররা এ শিক্ষাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি মুসলিমরাও কাফিরদের বলা অদেখা জগতের বর্ননাকে গ্রহন করেছে। শুধু তাই নয়, যেসব নিদর্শন চোখ দিয়েই যমীনে দাড়িয়ে দেখা যায় সেসবের ব্যপারেও কাফিরদের বিশ্বাসকে গ্রহন করে নিয়েছে।

আমরা আজ দেখব, আমাদের দ্বীন ইসলাম এসবের ব্যপারে কি শিক্ষা দেয়। বস্তুত, আমাদের দ্বীন এর অবস্থান কাফিরদের শয়তানি আকিদা ও শিক্ষার বিপরীত।  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছয়দিনে আসমান যমীন সৃষ্টির একদম শেষভাগে শুক্রবারে চাঁদ-সূর্যকে সৃষ্টি করেন।
That is because of the report told us by Hannad b. al-Sari, who also said that he read all
of the hadith382 -Abu Bakr b. 'Ayyash-Abu Said (!) al-Baggal-`Ikrimah-Ibn 'Abbas-the Prophet: On Thursday He created heaven. On Friday He created the stars, the sun, the moon, and the angels, until three hours remained of it. In the first of these three hours, He created the terms (of human life), who would live# and who would die. In the second, He cast harm upon everything that is useful for mankind. And in the third, He (created) Adam and had him dwell in Paradise. He commanded Iblis to prostrate himself (before Adam), and He drove Adam out of Paradise at the end of the hour.383
[ইবনে জারির তাবারির ইতিহাস:১ম খন্ড]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা চাঁদ ও সূর্যকে দুটি নিদর্শন এবং হিসাব রাখার জন্য সৃষ্টি করেছেন ।
আল্লাহ বলেন:
وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে দিবস, রজনী, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না; আল্লাহকে সেজদা কর, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তাঁরই এবাদত কর 
[হা মীম সিজদাহঃ৩৭]

فَالِقُ الإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক। তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটি পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানীর নির্ধারণ
[আনআমঃ৯৬]


তোমার নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে। বলে দাও যে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্বের সময় ঠিক করার মাধ্যম।
 [বাকারাঃ১৮৯]

আল্লাহ চাঁদ সূ্র্য উভয়কেই দুটি সূর্য(একজোড়া) হিসেবে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেন।  আজকের এই চাঁদ মূলত আরেকটি সূর্য ছিল। এটা সূর্যের ন্যয় কিরণ দিত।  পরবর্তীতে চাদের উপর কালিমা লেপন করে তার আলোর মাঝে স্নিগ্ধতা আনয়ন করা হয়,প্রখরতা কমিয়ে রাতের জন্য উপযুক্ত করা হয়। সূর্য আকারে চাদের চেয়ে বড় এবং এর আলোর প্রখরতাও বেশি।এ দুটি সূর্যকে যদি প্রথমাবস্থাতেই রাখা হত তাহলে দিন রাত্রির পার্থক্য করা মুশকিল হত। সূর্যকে আরশের আলো দ্বারা এবং চাঁদকে কুরসির আলো দ্বারা মুড়িয়ে দেওয়া হয়। সূর্য আদৌ কোন নক্ষত্র নয়, যেমনটা কাফিররা শেখায়। নক্ষত্র আল্লাহর সম্পূর্ন ভিন্ন সৃষ্টি। আল্লাহ কুরআনের সবস্থানে চাঁদ সূর্য ,দিন-রাত্রি এবং তারকারাজিকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেন। এরা প্রত্যেকেই স্বাধীন সৃষ্টি।

চাঁদ সূর্যের আলোর ব্যপারে আসা একাধিক হাদিস:
According to al-Qasim492 -al-Husayn-Hajjaj-Ibn Jurayj-Ibn 'Abbas: The moon used to give luminosity just as the sun does, with the moon being the sign of the night and the sun being the
sign of the day. "We have blotted out the sign of the night." (That is) the blackness in the moon

According to Bishr b. Mu'adh-Yazid b. Zuray-Sa'id (b. Abi 'Arubah)-Qatadah, commenting on God's word: "And We have made the night and the day two signs. We have blotted out thesign of the night": We used to be told 496 that the blotting of thesign of the night is the blackness that is in the moon. "And Wehave made the sign of the day something to see by": Giving light.God created the sun having more light and being larger than the moon.

According to Abu Kurayb-Talg478 -Za'idah479 -'Asim (b.Bahdalah)-'Ali b. Rabi'ah480 : Ibn al-Kawwa' asked what that blackness in the moon was, and `Ali replied: "We have blotted out the sign of the night, and We have made the sign of the day something to see by." That blackness is (a trace of) the blotting

Among the traditions transmitted from the Messenger of God on this subject is what I have been told by Muhammad b. Abi Mansur al-Amuli-Khalaf b. Wasi1428 -Abu Nuaym 'Umar b. Subh al-Balkhi429 -Mugatil b. I-iayyan43o -'Abd al-Rahman b. Abz4" -Abu Dharr al-Ghifari432 : I walked hand in hand with the Prophet around evening when the sun was about to set. We did not stop looking at it until it had set. He continued. I asked the Messenger of God: Where does it set? He replied: It sets in the heaven and is then raised from heaven to heaven until it is raised to the highest, seventh heaven. Eventually, when it is un?derneath the Throne, it falls down and prostrates itself, and theangels who are in charge of it prostrate themselves together with it. The sun then says: My Lord, whence do You command me to rise, from where I set or from where I rise? He continued. This is (meant by) God's word: "And the sun: It runs to a place where it is to reside (at night)"-where it is held underneath the Throne-"That is decreed by One Mighty and Knowing"4m -by "this" is meant the procedure of the "mighty" Lord in His royal authority, the Lord Who is "knowing" about His creation. He continued. (62) Gabriel brings to the sun a garment of luminosity from the light of the Throne, according to the measure of the hours of the day. It is longer in the summer and shorter in the winter, and of interme?diate length in autumn and spring. He continued. The sun puts on that garment, as one of you here puts on his garment. Then, it is set free to roam in the air of heaven until it rises whence it does. The Prophet said: It is as if it had been held for three nights. Then it will not be covered with luminosity and will be commanded to rise from where it sets. This is (meant by) God's word: "When the sun shall be rolled up."434 He continued. The same course is fol?lowed by the moon in its rising, its running on the horizon of the heaven, its setting, its rising to the highest, seventh heaven, its being held underneath the Throne, its prostration, and its asking for permission . But Gabriel brings it a garment from the light of the Footstool. He continued. This is (meant by) God's word: "He made the sun a luminosity and the moon a light."435 Abu Dharr concluded: Then I went away together with the Messenger of God, and we prayed the evening prayer. This report from the Messen?ger of God indicates that the only difference between the condi?tion of the sun and that of the moon is that the luminosity of the sun comes from the wrap of the luminosity of the Throne with which the sun was covered, while the light of the moon comes from a wrap of the light of the Footstool with which the moon was covered.

Hudhayfah b. al-Yaman4' now said: I and my family are your ransom, O Messenger of God, but may I ask how will they be when the Trumpet is blown? The Prophet replied: Hudhayfah! By Him Who holds the soul of Muhammad in His hand! Surely, the Hour will come and the Trumpet be blown while a man who just treated his water basin with clay will not (have time to) draw wa?ter from it. Surely, the Hour will come while two men holding a garment between them will not (have time to) fold it or sell it to one another. Surely, the Hour will come while a man, having lifted a morsel to his mouth, will not (have time to) eat it. Surely, the Hour will come while a man who leaves with the milk just# drawn from his camel will not (have time to) drink it. The Prophet then recited this verse of the Qur'an: "Surely, it will come upon them suddenly when they are unaware. "469 When the Trumpet is blown and the Hour comes and God distinguishes between the inhabitants of Paradise and the inhabi?tants of the Fire, who had not yet entered either, He will call for the sun and the moon. They are brought, black and rolled up,having fallen into quaking and confusion and being terribly
afraid because of the terror of that day and their fear of the Merciful One. Finally, when they are around the Throne, they will fall down and prostrate themselves before God, saying: Our God! You know our obedience and our continuous worship of You. You know how quickly we executed Your command in the days of this world. Thus, do not punish us because the poly?theists worshiped us. We did not call on them to worship us, nor did we neglect to worhip You. The Lord will say: You have spoken the truth. Now I have taken it upon Myself to begin and to restore.470 I am restoring you to where I had you begin, Thus, return to what you were created from! The sun and the moon said: Our God, what did You create us from? God said: I created you from the light of My Throne. Thus, return to it! He continued. There will come forth from each of the two a flash of lightning so brilliant that it almost blinds the eye with its light. It will mingle with the light of the Throne. This is (meant
by) God's word: "He begins and He restores. ,411 `Ikrimah said: I got up with the individuals who were told the story, and we went to Kab and informed him about Ibn 'Abbas' emotional outburst at (hearing) his story and about the story In 'Abbas had reported on the authority of the Messenger of God. Kab got up with us, and we went to Ibn 'Abbas. Kab said: I have learned about your emotional outburst at my story. I am asking God for forgiveness and I repent. I have told the story on the basis
of a well-worn book that has passed through many hands. I do not know what alterations made by the Jews it may have contained.Now you have told a story on the basis of a new book recently
revealed by the Merciful One and on the authority of the lord and best of the prophets. I would like you to tell it to me so that I can retain it in my memory as told on your authority. When I have been told it, it will replace my original story. 'Ikrimah said: Ibn 'Abbas repeated the story to Kab, while I followed it in my heart paragraph by paragraph . He neither added nor omitted anything, nor did he change the sequence in any way.This added to my desire ( to learn from) Ibn 'Abbas and to retain
the story in my memory.472


[ইমাম ইবনে জারীর তাবারীর ইতিহাস]


ইবনে জারীর তাবারির(রহ:) বলেনঃ
In our opinion, the correct statement on this subject is that God created the sun of the day and the moon of the night as two signs, then made the sign of the day, which is the sun, something to see by and blotted out the sign of the night,which is the moon, through the blackness in it.It is permissible (to say) that God created them as two suns from the light of His Throne and then blotted out the light of the moon in the night, as stated by some we have mentioned. This was the reason for the difference of the condition of the sun and the moon. It is (also) permissible (to say) that the sun receives its luminosity through the wrap of luminosity of the Throne, with which it is covered, and the moon receives its light from the wrap of light of the Footstool, with which it is covered.504 If the chain of transmitters of one of the two reports I have mentioned were sound, we would adopt that report, but the chains of transmitters of both reports are disputed. Thus, we have not considered it permissible to decide on the soundness of the contents of the reports as regards the difference of condition between the sun and the moon. We know for certain, however, that God differentiated between their capacities for giving light because He knew through His superior knowledge that the difference was best for the well-being of His creation. Thus, He made a distinction be?tween them and made the one something that gives light to see by, and the other something that has its luminosity blotted out.


সুতরাং এ হাদিস দ্বারা একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হয়। চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। যারা বিভিন্ন অসাড় যুক্তি দিয়ে কাফিরদের সাথে গলা মিলিয়ে বলতে চায় যে চাদের আলো নেই,তারা সুস্পষ্টভাবে মিথ্যাচারিতার আশ্রয় নিচ্ছে। এদের কাউকে সতর্ক করার পড়েও অন্তরে ব্যধিজনিত কারনে একই অবস্থানে আছে, কেউ বা না জেনে ভুল করছে। বিচার দিবসে চাঁদ সূর্যের মধ্যে যাকে যে আলো দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে তাকে তার দিকে ফেরত নেওয়া হবে।
চাঁদের আলোর ব্যাপারটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনেও উল্লেখ করেন:
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاء وَالْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُواْ عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ اللّهُ ذَلِكَ إِلاَّ بِالْحَقِّ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ

তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে
[ইউনূস-৫]
আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাসির(রহ:) বলেন:

ইমাম ইবনে কাসির এই আয়াতের ব্যাখ্যায় চাঁদের স্বীয় আলোর কথা ইঙ্গিত করলেও অন্যত্র চাঁদের আলোকে সূর্যের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। দুরকমের কথা উল্লেখের প্রকৃত কারন এক আল্লাহই ভাল জানেন। তবে তার সমসাময়িক সময়ে গ্রীক পিথারোরিয়ান/টলেমিয়ান এ্যস্ট্রোনমির প্রসিদ্ধি আর প্রভাব চারদিকে ছড়াচ্ছিল। এটা তিনি তার কিতাবাদিতে একাধিকবার উল্লেখ করেন। মাঝেমধ্যে এস্ট্রোনমারদের আকিদা কুরআন সুন্নাহ দ্বারা খন্ডনও করেছেন। এরূপ হতে পারে তিনি কিছু কিছু বিষয় গ্রীক এস্ট্রোনমি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। যেমন সূর্যের অবস্থানের ব্যপারে টলেমিয়ান জিওসেন্ট্রিক মডেলের অনুসরন। হতে পারে চাঁদের আলোর প্রশ্নে ওইরূপ কিছু হয়েছে। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।

আল্লাহ চাঁদের আলোর ব্যপারে আরও বলেনঃ
وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে।
[নূহ-১৬]
এর ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেন:

অর্থাৎ যে কথা বলছিলাম। ইবনে কাসির(রহঃ) এর যুগে গ্রীক জ্যোতির্বিদ্যার প্রভাবের কথা এখানেও উল্লেখ করেছেন। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়ায় উল্লেখ করেনঃ

আল্লাহ বলেনঃ
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا
কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র
[ফুরকানঃ৬১]

জ্যোতির্ময় চন্দ্রকে কিয়ামতের দিন জ্যোতিহীন করা হবে সূর্যের ন্যায়, চাঁদের যদি নিজস্ব আলো নাই থাকে, সেটাকে আলোকহীন করবার কথা বলার কোন মানে হয় না। এটা প্রমান করে চাঁদের আলো আছে। 
আল্লাহ বলেনঃ
إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ
যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে[৮১:১]
وَخَسَفَ الْقَمَرُ
চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে।[কিয়ামাহ:৮]

আজ যারা কাফিরদের কথিত বিজ্ঞানের মোহে পরে পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত শব্দ 'নূর','মুনীর' এর অপব্যাখ্যা করে বলছে এর অর্থ, ধার করা আলো, এরা সুস্পষ্ট মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে।  উপরিল্লিখিত হাদিসগুলোই তাদের অপব্যখ্যা আর মিথ্যাচারকে প্রকাশ করে দেয়। আরবি অভিধানে নূর অর্থ আলো বা জ্যোতি। ওরা যারা 'নূর' দ্বারা 'ধার করা আলো' বলতে চায়, তারা এই অপব্যখ্যা দিতে গিয়ে জঘন্য শিরকের দিকে হাটছে। আল্লাহ বলেন: 
اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ অর্থাৎ "আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি" এখানে নূর অর্থ ধার করা আলো বলা হলে কি জঘন্য শিরকই না হয়ে যায়! ওরা কি এখানেও বলবে আল্লাহর এ নূর ধার করা আলো!?(নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক)


একই ভাবে আল্লাহ সূরা আয যুমারে বলেন:
وَأَشْرَقَتِ الْأَرْضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ الْكِتَابُ وَجِيءَ بِالنَّبِيِّينَ وَالشُّهَدَاء وَقُضِيَ بَيْنَهُم بِالْحَقِّ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
পৃথিবী তার পালনকর্তার নূরে উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা স্থাপন করা হবে, পয়গম্বরগণ ও সাক্ষীগণকে আনা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায় বিচার করা হবে-তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না
[আয যুমার-৬৯]

অপব্যাখ্যাকারীদের কথা গ্রহন করলে এখানে অর্থ হবে "পৃথিবী তার পালনকর্তার ধার করা আলোয় উদ্ভাসিত হবে"(নাউজুবিল্লাহ)।  সুতরাং আশা করি বুঝতে পারছেন এদের অর্থবিকৃতি আর অপব্যখ্যা কতটা নিকৃষ্ট পর্যায়ের!  এরা হয়ত এখন বলবে তাদের অপব্যখ্যাটি শুধু চাদেঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারন তাদের মূল লক্ষ হচ্ছে যেকোন উপায়ে কাফিরদের সাথে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলো মেলানো। 

একইভাবে মুনীর শব্দের অর্থ প্রদীপ্ত, আলোকদীপ্ত, দীপ্তিময়,আলোকোজ্জ্বল। আল্লাহ অন্যত্র বলেন:
وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُّنِيرًا
এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং আলোকদীপ্ত প্রদীপরূপে।
[আল আহযাবঃ৪৬]
যারা বলে মুনীর মানেও ধার করা আলো, তারা কি বলতে চায় প্রদীপের আলো ধার করা হয়!? যে নূর দিয়ে রাসূল(সাঃ) কে প্রেরন করা হয়েছে ওটা ধার করা? আল্লাহর এক নামই তো নূর, আল্লাহই নূরের মালিক। ওরা কি বলতে চায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার এই নূর ধার করা বা রিফ্লেক্টেড!? (নাউজুবিল্লাহ)
আমি জামি না ওরা এসব উদ্ভট অনুবাদ কোথায় পায়।
আপনারা চাঁদের আলোর ব্যপারে আল্লাহর রাসূল(সা:) ও সাহাবিদের(রাঃ) বিশ্বাস কি ছিল,তা প্রথমেই পাঠ করেছেন। সুতরাং ১৩, ১৪'শত বছর পর যদি কোন অভিধান কাফিরদের কথিত অপবৈজ্ঞানিক চাকায় কুরআনকে ঘোরাতে গিয়ে শব্দের অর্থের বিকৃত করে, তাহলে তা কস্মিনকালেও গ্রহনযোগ্য না। যেকোন মতাদর্শকে কুরআন সুন্নাহর মাপকাঠি দ্বারা যাচাই করলেই হক্ক বা বাতিল স্পষ্ট হয়। 

এ বিষয়ে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ সত্য বলেছিলেন। তিনি বলেনঃ
The words diya’, noor and so on refer to something that produces light by itself, such as the sun and moon, and such as fire. Allah, may He be exalted, says (interpretation of the meaning):
“It is He Who made the sun a shining thing [diya’] and the moon as a light [noor]”
[Yoonus 10:5] ,
“And We have made (therein) a shining lamp (sun)”
[an-Naba’ 78:13] .
Allah, may He be glorified, calls the sun siraaj (lamp) and diya’ (light) because in addition to illuminating and shining, it produces heat and burning. So it is more akin to fire, unlike the moon, which illuminates without heat. Hence He says: “It is He Who made the sun a shining thing [diya’] and the moon as a light [noor]” [Yoonus 10:5] .
The point here is that the words diya’, noor and so on refer to something that shines and illuminates by itself, such as the sun, moon and fire. What it refers to is the rays that may be produced as a result of that in the air and on land. The latter (the rays) are transient and result from something else; they are not the item that produces it and are not an inherent characteristic of it – rather they are something that happens because of it.
End quote from Al-Jawaab as-Saheeh (4/368).

ইবনে তাইমিয়া(রহঃ) এ ব্যপারে ঠিক বলেছেন, চাদ ও সূর্যের আলোর উৎস তারা নিজেরাই। সূর্যের 'দিয়্যা' উত্তপ্ত আর অপরদিকে চাঁদের 'নূর' নিরুত্তাপ শীতল। আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে কাফিরদের বিকৃত ধারনার সাথে মুসলিমরা তাল মেলাতে শুরু করে তখন থেকে যখন থেকে গ্রীক দর্শন কালাম শাস্ত্রের নামে গ্রহন করতে শুরু করে। আজ ইসলামের অনেক বড় দাঈরা কাফিরদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পেতে আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে বিকৃত ব্যাখ্যা প্রচার করে।এরা কাফিরদের বিভিন্ন কাল্পনিক আবিষ্কারের রেফারেন্স টানতেও ভুল করেনি।যেমন দেখুনঃ
http://www.answering-christianity.com/ahmed_eldin/light_of_moon.htm

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা চাঁদের জন্য বিভিন্ন মঞ্জিল নির্ধারন করেছেন। সেটা ১৫ দিন অন্তর বিভিন্ন মঞ্জিলে পরিবর্তিত হয়ে পূর্নতা প্রাপ্ত হয়। আমরা ইতোমধ্যে হাদিসে চাঁদের স্বীয় আলোর উল্লেখ পেয়েছি। তাই এটা স্পষ্ট যে চাঁদের আলোর হ্রাস বা বৃদ্ধি চাঁদের সাথেই সংশ্লিষ্ট ,এতে হেলিওসেন্ট্রিক মিথ্যাচার অনুযায়ী সূর্য কিংবা পৃথিবীর সম্পৃক্ততা নেই। চাঁদের জন্য সৃষ্ট মঞ্জিলের ব্যপারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্বয়ং বলেন: 
وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتَّى عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ
চন্দ্রের জন্যে আমি বিভিন্ন মনযিল নির্ধারিত করেছি। অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়।
[সূরা ইয়াসিন:৩৯]

وَالْقَمَرِ إِذَا اتَّسَقَ
এবং চন্দ্রের, যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে[ইনশিকাকঃ১৮]

অতএব আল্লাহর নির্ধারন অনুযায়ী চাঁদ তার স্বীয় আলোর পরিবর্তন করে। কখনো তা একদম ছোট হয়ে যায়, কখনো বা পূর্নতাপ্রাপ্ত হয়। 

আধুনিক কাব্বালিস্টিক সুডো সায়েন্স আমাদেরকে বলে।  চাঁদ সূর্যের তুলনায় অতিশয় ক্ষু্দ্র। পৃথিবীর চেয়েই সূর্য ১৩ লক্ষগুন বড়! অথচ সত্য হচ্ছে আল্লাহ আযযা ওয়াযাল চাঁদ ও সূর্যকে সমান্তরাল কক্ষপথে রেখেছেন। চাঁদ সূর্য নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে একটির পিছনে আরেকটি আসমানি সমুদ্রের কক্ষপথে(ফালাকে) সন্তরনশীল। চাঁদ সূর্যকে স্পর্শ করতে পারে না, তেমনি সূর্য চাঁদকে ধরতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমনরত। এখানে 'প্রত্যেকে' দ্বারা আমি শুধু চাঁদ সূর্যের কথাই বলেছি। কিন্তু যারা আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে মিথ্যাচার করে তারা কুরআনের আয়াতে যখন 'প্রত্যেকে' শব্দটিকে পায় তারা এর দ্বারা বলতে চায়, এই 'প্রত্যেকের' মধ্যে যার উল্লেখ নেই, সেটাও অন্তর্ভু্ক্ত। অর্থাৎ চাঁদ,সূর্য,পৃথিবী সবকিছুই!!! এদের যুক্তি হচ্ছে, যদি প্রাচীনকালে সুস্পষ্টভাবে পৃথিবীর গতির কথা বলা হত ,তবে মুসলিমরা মুরতাদ হয়ে যেত! নাউজুবিল্লাহ!! দেখুন: http://www.peaceinislam.com/mahir/19321/
এখানে আরেক দ্বীনের দাঈ আধুনিক অপবিজ্ঞান আর কুরআন সুন্নাহকে এক করতে কতকিছু করলেন! নিউটনের মত সর্সারারের বিচিত্র থিওরি আনতেও ভুল করেননি! এরা যে কুরআন সুন্নাহর ব্যাখ্যা বুঝতে ও করতে কাফিরদের চশমা ব্যবহার করছে, সেটা খুবই স্পষ্ট। ইসলামকে অপবিজ্ঞানের চাকায় ঘুরিয়ে ব্যাখ্যাদানের এক মহাপ্রচেষ্টা। পড়ুনঃ 
https://response-to-anti-islam.com/show/%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%98%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A7%83%E0%A6%A5%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%98%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A7%87--%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%87--/189



আল্লাহ বলেন:
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।
[আম্বিয়াঃ৩৩]
আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেন:
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এ আয়াতে চাঁদ,সূর্য,দিন-রাত্রির বাইরে অন্য কিছুকে উল্লেখ করেননি। এখানে 'কুল্লুন' শব্দটি দ্বারা এই চারটি জিনিসের সবগুলোকে বোঝানো হয়েছে। এর বাহিরের কোন কিছুকে নয়। কোন মুফাসসীরও এমনটি বলেননি,উপরেই ইমাম ইবনে কাসিরের তাফসির উল্লেখ করেছি।
 কাফিরদের মনগড়া থিওরি গ্রহন করা ব্যধিগ্রস্ত মুসলিমরা এর মধ্যে পৃথিবীকেও অন্তর্ভু্ক্ত করে। এতে তাদের ফায়দা হলো, কাফির মুশরিকদের আকিদার সাথে নিজেদের সমন্বয়সাধন। ইসলাম ও বাতিলের মেলবন্ধন।
কুল্লুন শব্দটি শুধু এই আয়াতেই নয়, আরো অনেক আয়াতে রয়েছে।
আল্লাহ বলেনঃ
وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
لَا الشَّمْسُ يَنبَغِي لَهَا أَن تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ, আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ
সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে
[ইয়াসিন ৩৮,৪০]




অর্থাৎ চরকার ন্যায় অথবা যাঁতার পাটের লোহার মত ফালাকের কক্ষপথে চাঁদ সূর্য দিন রাত্রি আবর্তন করছে। এই কক্ষপথ পৃথিবীকেন্দ্রিক।১৪০০ বছর পর মোডারেট ও মর্ডানিস্ট মুসলিমদের নব:উদ্ভাবিত অপব্যাখ্যা অনুযায়ী আদৌ সূর্যোকেন্দ্রিক নয়,কাফিরদের আকিদানুযায়ী পৃথিবীও ফালাকের অন্তর্ভূক্ত নয়। চাঁদ,সূ্র্য,তারকা,দিন-রাত্রি শুধুমাত্র ফালাকে আবর্তনশীল,এর বাইরের অন্য কিছু নয়।
এ ফালাকে চাঁদ সূর্য,দিন রাত্রি সমান্তরালভাবে একের পিছনে অপরটি আবর্তন করে।। একটির পিছনে আরেকটি আবর্তন করে, কিন্তু কেউ কারো সাথে স্পর্শ করে না। গম্বুজাকৃতির আসমানকে প্রদক্ষিন করে চাঁদ,সূর্য সমতল যমীনের নিচ প্রদক্ষিন করে অপর প্রান্তে উদিত হয়। ওয়া আল্লাহু আ'লাম। "কুল্লুন" শব্দ যোগে আল্লাহ আরো একাধিক আয়াত নাযিল করেন, এর দ্বারা আয়াতে উল্লিখিত সেলেস্টিয়াল বডির বাইরে অন্য কিছুকে বোঝানো হয় নি। আল্লাহ বলেনঃ


يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِ مَا يَمْلِكُونَ مِن قِطْمِيرٍ
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। ইনি আল্লাহ; তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়
[ফাতিরঃ১৩]

خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى أَلَا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং তিনি সুর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিযুক্ত করেছেন প্রত্যেকেই বিচরণ করে নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত। জেনে রাখুন, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল
[যুমারঃ০৫]

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى وَأَنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন?
[লোকমান-২৯]


চাঁদ-সূর্যের প্যারালাল(সমান্তরাল) অবস্থানে আবর্তনের বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়, যখন আল্লাহ চন্দ্রকে সূর্যের পিছনে আসার কথা বলেন। আল্লাহ বলেন:
وَالْقَمَرِ إِذَا تَلَاهَا
শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে[শামসঃ২]

চাঁদ সূর্যকে অনুসরণ করছে, এমনটা নয় যে পৃথিবীকে সূর্য আর পৃথিবীসহ সকল আসমানি বস্তু সূর্যকে,যেমনটা প্রচলিত বিজ্ঞান আমাদেরকে শেখায়। আল্লাহ বলেনঃ
وَسَخَّر لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَآئِبَينَ
তিনি তোমাদের জন্য সূর্য ও চন্দ্রকে একে অপরের অনুগামীরূপে বানিয়েছেন।(১৪:৩৩)


এর দ্বারা প্রমান হয় চাঁদ-সূ্র্য হেলিওসেন্ট্রিক প্যগান কস্মোলজি অনুযায়ী সুবিশাল দূরত্বে অবস্থান করছে না, বরং তারা অনেক কাছাকাছি। এতে প্রমান হয় চাঁদ ও সূর্যের আকৃতিগত বৈষম্য এতটা বেশি নয় যেটা শেখানো হয়। বরং, তাদের মধ্যকার আকৃতিগত বৈষম্য অনেক কম। চাঁদ-সূর্য পরস্পর সন্নিকটস্থ, পৃথিবীরও অনেক নিকটবর্তী দূরত্বে এদের অবস্থান।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আরশের আলোকে সূর্যালোকের উৎস বানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত হাদিস চাঁদের আলোচনায় পূর্বেই উল্লেখ করেছি। সূর্য আকারে চাঁদের চেয়ে কিছুটা বড়, কিন্তু নূনের পৃষ্ঠে সমতলে বিছানো যমীনের তুলনায় অনেক ছোট।আল্লাহ এর জন্য একটি কক্ষপথ নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। সূর্য সত্যিই উদিত হয় এবং অস্ত যায়। এটা পার্স্পেক্টিভের ইল্যুশন না আদৌ, যেমনটা কাফিররা বলে থাকে। সারা আসমান একবার প্রদক্ষিন করে পশ্চিম দিকের কালো পানিতে সেটা অস্ত যায়। সূর্য ডুবে যাবার পর সেটা যমীনের তলদেশে চলে যায়।  অতঃপর, তা এক আসমান থেকে অপর আসমানে যেতে থাকে, এর পর সর্বোচ্চ আসমানে পৌছে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত অবস্থায় উদিত হবার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করতে থাকে। অতঃপর যমীনের বিপরীত পূর্বে গিয়ে উদিত হয়। হয়ত, পুরো বিষয়টা অনেক দ্রুত হয়, তাই আমরা একদিকে অস্ত অন্যদিকে উদীত হবার মাঝে সময়ের তেমন কোন পার্থক্য অনুভব করিনা। ওয়া আল্লাহু আ'লাম। যা উল্লেখ করলাম এসব কুরআন সু্ন্নাহ ভিত্তিক তথ্য, কোন কাফির মুশরিকদের মনগড়া বানীভিত্তিক কিছু নয়।

হয়ত,চাঁদ সূর্য আমাদের মাথার উপর প্রথম আসমানেই অবস্থান করে। প্রাচীন গ্রেসীয়ান টলেমিয়ান এস্ট্রোনমি অনুযায়ী সূর্য চতুর্থ স্তর উপরের কক্ষপথে, হয়ত এটা থেকে ইবনে কাসিরসহ প্রাচীন কিছু আলিম মনে করতেন যে সূর্য ৪র্থ আসমানে। তাদের মত সত্য হলে সাত আসমানের স্তরগুলো আমাদের দৃষ্টিসীমার মধ্যেই রয়েছে। এতে করে প্রচলিত বিজ্ঞানপন্থীরা অপব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আরও বিপদে পড়বে,কেননা তাদের মতে প্রথম আসমানের সীমানা এখনো সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে, ৪র্থ আসমানের কোনকিছু দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকার বিষয় তো অনেক দূরের কথা।

হয়ত সূর্য প্রথম আসমানেই অবস্থিত। এরূপ ধারনার কারন, কিছু হাদিসে প্রত্যেক আসমান তৈরির উপাদানের বর্ননা পাওয়া যায়, প্রথম আসমান পানির বা স্ফটিকের তৈরি, এজন্য স্বচ্ছ। কিন্তু এর উপরের গুলির বর্ননানুযায়ী, উর্দ্ধদেশের কিছুই দেখা সম্ভব না। এজন্য এরূপ হতে পারে যে সবকিছুই প্রথম আসমানে রয়েছে।তাছাড়া কিছু হাদিসেও প্রথম আসমানে চন্দ্র-সূর্য,তারকাদের ফালাকের অবস্থানের কথা এসেছে। বিপরীত মত(সূর্য ৪র্থ আসমানে) সত্য হলেও কোন আপত্তি নেই। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।

শাইখ সালিহ আল উসাইমিন(রহঃ),শাইখ ইবনে বাজ(রহঃ) প্রমুখ আলিমগন যখন কুরআন সুন্নাহর দলিলে জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজির প্রমান দেখিয়েছেন,তখন তারা আলোচিত দলিল সমূহে সূর্যের পৃথিবীকেন্দ‌্রিক আবর্তনকে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করেছেন। এ বিষয়ে তাদের অবস্থান সঠিক। কুরআন সুন্নাহর অসংখ্য প্রমান আছে যা স্পষ্টভাবে সূর্যের পৃথিবীকেন্দ্রিক আবর্তনকে প্রকাশ করে। নিচের হাদিসটিকে লক্ষ্য করুনঃ

এখানে আল্লাহ সূর্যকে যে স্থান থেকে এসেছে ,সেখানে ফিরে যাবার জন্য হুকুম করবেন। এর দ্বারা স্পষ্ট হয় সূর্যই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় এবং সূর্যকেন্দ্রিক মহাকাশ ব্যবস্থা সুস্পষ্ট মিথ্যাচার। হাদিসটি প্রমান করে সূর্যই প্রতিদিন যমীনের চারপাশে আবর্তনের পরে অস্তমিত হয়ে আরশের নিচে গিয়ে সিজদাহ করে।এমনটি নয় যে পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সূর্যাস্তের ইল্যুশন সৃষ্টি হয়। অধিকন্তু , গোলাকার পৃথিবীতে পশ্চিমে সূর্যোদয় ঘটাতে হলে পোল শিফটিংয়ের ঘটনা ঘটতে হবে,অর্থাৎ পৃথিবী উল্টে গিয়ে দক্ষিনমেরুকে  উত্তরমেরুর স্থানে এবং দক্ষিনমেরুকে উত্তরমেরুর স্থানে আসতে হবে। এরূপ হবার কথা হলে, হাদিসে সূর্যকে পশ্চিমদিক দিয়ে উদিত হতে হুকুম না দিয়ে পৃথিবীকেই উল্টে যেতে বলতেন। অতএব,এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমান করে সূর্যই প্রতিদিন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে,অস্তমিত যাচ্ছে এবং আরশের নিচে সিজদায় পড়ে প্রতিদিন উদিত হবার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে।

এরকম আরো কিছু হাদিসঃ
It is narrated on the authority of Abu Dharr that the Messenger of Allah (may peace be upon him) one day said: Do you know where the Sun goes? They replied: Allah and His Apostle know best. He (the Holy Prophet) observed: Verily it (the Sun) glides till it reaches its resting place under the Throne. Then it falls prostrate and remains there until it is asked: Rise up and go to the place whence you came, and it goes back and continues emerging out from its rising place and then glides till it reaches its place of rest under the Throne and falls prostrate and remains in that state until it is asked: Rise up and return to the place whence you came, and it returns and emerges out from it rising place and the it glides (in such a normal way) that the people do not discern anything (unusual in it) till it reaches its resting place under the Throne. Then it would be said to it: Rise up and emerge out from the place of your setting, and it will rise from the place of its setting. The Messenger of Allah (may peace be upon him) said. Do you know when it would happen? It would happen at the time when faith will not benefit one who has not previously believed or has derived no good from the faith.

Sahih Muslim 1:297

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ عِنْدَ غُرُوبِ الشَّمْسِ فَقَالَ ‏”‏ يَا أَبَا ذَرٍّ أَتَدْرِي أَيْنَ تَغْرُبُ الشَّمْسُ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى ‏{‏وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ‏}‏‏”‏
Abu Dharr said: Once I was with the Prophet (ﷺ) in the mosque at the time of sunset. The Prophet (ﷺ) said, “O Abu Dharr! Do you know where the sun sets?” I replied, “Allah and His Messenger know best.” He said, “It proceeds until it prostrates underneath Allah’s Throne. And that is Allah’s saying: ‘And the sun runs on its course to its settling place.'” (Quran 36:38) 
(Bukhari, 4802)


حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ ‏{‏وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا‏}‏ قَالَ ‏”‏ مُسْتَقَرُّهَا تَحْتَ الْعَرْشِ
Abu Dharr said: I asked the Prophet (ﷺ) regarding the verse, “And the sun runs on its course to its settling place.” (Quran 36:38) He said, “Its settling place is underneath Allah’s Throne.” 
(Bukhari 7433)

فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ، فَتَسْتَأْذِنَ فَيُؤْذَنَ لَهَا، وَيُوشِكُ أَنْ تَسْجُدَ فَلاَ يُقْبَلَ مِنْهَا، وَتَسْتَأْذِنَ فَلاَ يُؤْذَنَ لَهَا، يُقَالُ لَهَا ارْجِعِي مِنْ حَيْثُ جِئْتِ‏.‏ فَتَطْلُعُ مِنْ مَغْرِبِهَا
In another narration, the Messenger said: “The Sun proceeds until it prostrates itself under the Throne and seeks permission to rise again, and it is permitted. Then a time will come when it will be about to prostrate itself but its prostration will not be accepted, and it will ask permission to go on its course but it will not be permitted, but it will be ordered to return from where it has come and so it will rise in the West.” 
(Bukhari 3199)

এক জিহাদের অভিযানে হযরত ইউশা ইবনে নূন (আঃ) তার সেনাবাহিনী নিয়ে জেরুজালেমে প্রবেশ করছিলেন। তখন প্রায় আসরের সময় হয়ে গিয়েছিল। ঐ অবস্থায় তিনি সূর্য যেন ডুবে না যায়,সেজন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন। অতঃপর ,সূর্য থেমে গিয়েছিল।

إن الشمس لم تُحْبَسْ لبَشَرٍ إلا ليوشع لَيَاِلَي سافَرَ إلى بيت المقدس
From Abu Hurairah, the Prophet (ﷺ) said: “The Sun was not held back for any human being except Joshua (Yoosha’) as he was marching to Jerusalem.”
 (Ahmad in Al-Musnad 2/325, Al-Hākim 2/130 –
 the narration is authentic to the conditions of Bukhari)


فَغَزَا فَدَنَا مِنَ الْقَرْيَةِ صَلاَةَ الْعَصْرِ أَوْ قَرِيبًا مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ لِلشَّمْسِ إِنَّكِ مَأْمُورَةٌ وَأَنَا مَأْمُورٌ، اللَّهُمَّ احْبِسْهَا عَلَيْنَا ‏فَحُبِسَتْ، حَتَّى فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ
In a narration, the Messenger said: “The Prophet (Yoosha’ or Joshua) carried out a military expedition and when he reached the town at the time or nearly at the time of the ‘Asr prayer, he said to the Sun, “O Sun! You are under Allah’s command and I am under Allah’s command. O, Allah! Stop it from setting on us.” It was stopped until Allah made him victorious.” 
(Bukhari, 3124) 

হাদিসে লক্ষনীয় বিষয় যে এখানে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) সূর্যকে থেমে যাবার কথা বলেছেন। সূর্যাস্ত যদি পৃথিবীর ঘূর্ননের জন্য হত, তবে সূর্যের কথা না বলে পৃথিবীকে থামবার কথা বলতেন। এ হাদিস সত্যকে আরো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

হিব্রু বাইবেলেও একই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়:
12: Then Joshua spoke to the Lord in the day when the Lord delivered up the Amorites before the sons of Israel, and he said in the sight of Israel, “O sun, stand still at Gibeon, And O moon in the valley of Aijalon.” 13: So the sun stood still, and the moon stopped until the nation avenged themselves of their enemies.”
(Joshua 10:12-13)


কুরআন সুন্নাহে এরকম শত সহস্র দলিল আছে যা প্রমাণ করে সূর্যই পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে এবং যমীন সমতল।মেইনস্ট্রিম সমতল পৃথিবীর যে মডেল রয়েছে তাতে, সূর্য চক্রাকারে জমিনের উপরে ঘড়ির কাটার মত ঘুরতে থাকে। প্রচলিত ফ্ল্যাট আর্থ মডেলটি গ্লোবাল স্পিরিচুয়ালিস্ট
এজেন্ডা কর্তৃক সবচেয়ে বেশি প্রোমোটেড। এটা আধ্যাত্মবাদী চীনা তাওধর্মের ইং ইয়াং সিম্বল থেকে নেওয়া। তাওবাদীরা মনে করে ইং ইয়াং তথা চন্দ্র সূর্য্যের ঘড়ির কাটার মত সন্তরন দ্বারা আধ্যাত্মিক জ্ঞান পৃথিবীতে চড়ে বেড়ায় যা সাধনা দ্বারা ধারন কর‍তে হয়। সুতরাং এই ম্যাপটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া প্রচলিত এ ফ্ল্যাট আর্থ মডেলের ম্যাপগুলোর সাথে বাস্তবতার খুব বেশি মিল নেই। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাপটি গ্লোব মডেল একরকম, আর সমতল ম্যাপে অন্যরকম। সর্বোপরি মেইনস্ট্রিম ফ্ল্যাট আর্থ মডেল(এ্যাযিমুথাল এক্যুইডিস্ট্যান্ট প্রজেকশন) কুরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী। আল্লাহ তার পবিত্র কালামে মাজীদে বলেছেন সূর্য কর্দমাক্ত জলাশয়ে ফিজিক্যালি অস্তমিত হয়।এটা যেহেতু কুরআন ও সুন্নাহর অমোঘ সত্য দলিলগুলোকে লঙ্ঘন করে,সেজন্য আমরা এই মডেলকে ভুল মনে করি। কুরআন হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ননা পাওয়া যায় যে,কর্দমাক্ত জলাশয়ে সূর্যাস্ত ফিজিক্যালি ঘটে।

ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি গোটা আসমান যমীনের চারদিক সমুদ্রবেষ্টিত। আমাদের মাথার উপরের আসমানও একটি আবদ্ধ তরঙ্গের সমুদ্র, যার মধ্য দিয়ে কক্ষপথ নির্মিত আছে তারকা,চাঁদ-সূর্যের সঞ্চালনের জন্য।
We were told the same by al-Qasim b. al-Hasan-al-I;Iusayn b. Dawud-Hajjaj-Ibn Jurayj-Sa'id b. Jubayr-Ibn 'Abbas. He said288 : The heavens and the earth and everything in them are encompassed by the oceans, and all of that is encompassed by the haykal,289 and the haykal reportedly is encompassed by the Footstool.
[ইমাম ইবনে জারির তাবারির ইতিহাস]

সূর্য রোজ এই আসমানি সমুদ্রে সন্তরনের পর পশ্চিমের কর্দমাক্ত জলাধারে অস্তগমন করে সমতল যমীনের তলদেশে চলে যায়। পরবর্তী দিন আবার পূর্বদিক থেকে উদিত হয়।চন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এ ব্যপারে একটি সুস্পষ্ট হাদিস এসেছে যার ইসনাদ বিশুদ্ধ। আজকে কাফিরদের অপবিজ্ঞান গ্রহনকারী মুসলিমরা আজ এই দলিলকে এড়িয়ে যেতে অনেক চেষ্টা করে। 
English:
Ibn Abi Hatim recorded that Ibn ’Abbas said, “The sun is like flowing water, running in its course in the sky during the day. When it sets, it travels in its course beneath the earth until it rises in the east.” He said, “The same is true in the case of the moon.” 
Its chain of narration is Sahih.
[Tafsir ibn Kathir-31:29]
বিস্তারিত:

হাদিসটি প্রচলিত মহাকাশবিজ্ঞানের সম্পূর্ন বিপরীত। এ হাদিস ঠিক তাই বলে,যা আমরা প্রতিনিয়ত বলি। এটা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে পৃথিবী সমতল, সূর্য পৃথিবীর তুলনায় অনেক ছোট। সেটা অস্ত যায় যমীনের একদিকে,এরপর সেটা যমীনের তলদেশ দিয়ে পার হয়ে বিপরীত দিক থেকে উদিত হয়। হাদিসটি তাদের ভন্ডামি প্রকাশ করে দেয় যারা কাফির মুশরিকদের কাল্পনিক শয়তানি সৃষ্টিতত্ত্বকে ইসলামাইজ করে, ইসলামের সাথে সমন্বয় ঘটায় এবং শয়তানি কস্মোলজিকে গ্রহন করে নেয়। 
এই হাদিস যে মোডারেট, মর্ডানিস্ট মুসলিম মানতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। কারন মেইনস্ট্রীম বিজ্ঞানের সাথে একেবারেই ইনকম্প্যাটিবল। কোন কুযুক্তি দিয়েও মেলানো যায় না। এর উপর আরো বড় সমস্যা হচ্ছে এর ইসনাদ বিশুদ্ধ, একে কোনভাবে বর্ননায় ত্রুটি দেখিয়ে সরাসরি জঈফ বা মওযূ প্রমান করা যাচ্ছে না।এজন্য তাদের বিজ্ঞ আলিমগনের পরামর্শ হচ্ছে এটা নিয়ে মাথা না ঘামানো। এটা তাদের নিকট এজন্য অগ্রহনযোগ্য, কারনঃএটা সরাসরি আল্লাহর রাসূলের বানী নয়। বরং সাহাবীর।'এমনও হতে পারে যে', এটা কাব ইবনে আহবারের(রাঃ) থেকেও বর্নিত হতে পারে বলে "সন্দেহ"। 'এমনও হতে পারে যে',যে এটা ইজরাইলি বর্ননা। এজন্য এটাকে অথেনটিক হাদিস হিসেবে গ্রহন করছেন না।  তাই এটা নিয়ে মাথা ঘামাবারও প্রয়োজন নেই, আনসাইন্টেফিক কিনা সেটা ভাবনা তো দূরের কথা। মোট কথা, কাফিরদের কাল্পনিক বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে গেলেই বাতিল। সেটা যেভাবেই হোক। 
পড়ুনঃ


শুধু এ হাদিসই নয়, সূর্যাস্ত সংক্রান্ত সহীহ হাদিস গুলোকেও অগ্রহনযোগ্য বানানোর প্রানান্ত চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। এরা কেমন যেন শরীআতের দলিলের চেয়েও কাফিরদের বিকৃত শিক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। যেই হাদিস, সায়েন্টিফিক থিওরির প্রতিকূলে সেগুলো বাতিল। দলিল সহীহ হলেও, যেকোন উপায়ে অগ্রহনযোগ্য বানানো হয়।
নিচের হাদিসগুলো লক্ষ করুনঃ
حدثنا عثمان بن أبي شيبة، وعبيد الله بن عمر بن ميسرة، - المعنى - قالا حدثنا يزيد بن هارون، عن سفيان بن حسين، عن الحكم بن عتيبة، عن إبراهيم التيمي، عن أبيه، عن أبي ذر، قال كنت رديف رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو على حمار والشمس عند غروبها فقال ‏"‏ هل تدري أين تغرب هذه ‏"‏ ‏.‏ قلت الله ورسوله أعلم ‏.‏ قال ‏"‏ فإنها تغرب في عين حامية ‏"‏ ‏.‏

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে একই গাধার পিঠে বসা ছিলাম, তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল। তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি কি জানো, এটা কোথায় অস্তমিত হয়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেনঃ “এটা উষ্ণ পানির এক ঝর্ণায় অস্তমিত হয়” (সূরাহ কাহ্‌ফঃ ৮৬)। [৪০০২]

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪০০২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

عن أبي ذر -رضي الله عنه-  قال: كنت مع النبي صلى الله عليه وسلم على حمار وعليه برذعة أو قطيفة قال: فذاك عند غروب الشمس, فقال لي: «يا أبا ذر هل تدري أين تغيب هذه؟» قال: قلت: الله ورسوله أعلم. قال: «فإنها تغرب في عين حامئة تنطلق حتى تخر لربها -عز وجل- ساجدة تحت العرش فإذا حان خروجها أذن الله لها فتخرج فتطلع، فإذا أراد أن يطلعها من حيث تغرب حبسها فتقول: يا رب إن مسيري بعيد، فيقول لها: اطلعي من حيث غبت فذلك حين لا ينفع نفسا إيمانها ». ( حم ) صحيح


আবু যর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেনঃ আমি একটি গাধার ওপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ের সাথে ছিলাম। তখন তার উপর একটি পাড়যুক্ত চাদর ছিল। তিনি বলেনঃ এটা ছিল সূর্যাস্তের সময়, তিনি আমাকে বলেনঃ “হে আবু যর তুমি জান এটা কোথায় অস্ত যায়?” তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ আল্লাহ এবং তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বলেনঃ সূর্যাস্ত যায় একটি কর্দমাক্ত ঝর্ণায়, সে চলতে থাকে অবশেষে আরশের নিচে তার রবের জন্য সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, যখন বের হওয়ার সময় আল্লাহ তাকে অনুমতি দেন, ফলে সে বের হয় ও উদিত হয়। তিনি যখন তাকে যেখানে অস্ত গিয়েছে সেখান থেকে উদিত করার ইচ্ছা করবেন আটকে দিবেন, সে বলবেঃ হে আমার রব আমার পথ তো দীর্ঘ, আল্লাহ বলবেনঃ যেখান থেকে ডুবেছে সেখান থেকেই উদিত হও, এটাই সে সময় যখন ব্যক্তিকে তার ঈমান উপকার করবে না”। [আহমদ]

সহিহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নং ১৬১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


মুসানাদে আহমাদ,সুনানে আবু দাউদ, বুখারীসহ আরো অনেক জায়গায় এ বর্ননা রয়েছে। খুব স্বাভাবিক যে অপবিদ্যাকে আকঁড়ে ধরা মুসলিমরা একে সহ্য করে পারবে না। তাই এজন্য হাদিসগুলোর চেইন অব ন্যারেশনে খুঁত বের করার জন্য কি প্রচেষ্টা(!) দেখুন,


সূর্য কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তমিত হয়। এটা শুধু হাদিসেই নয়, কুরআনেও স্পষ্ট আছে। আল্লাহ বলেনঃ
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا قُلْنَا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا
قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَى رَبِّهِ فَيُعَذِّبُهُ عَذَابًا نُّكْرًا
وَأَمَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُ جَزَاء الْحُسْنَى وَسَنَقُولُ لَهُ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًا
অবশেষে তিনি(যুলকারনাইন) যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।
তিনি বললেনঃ যে কেউ সীমালঙ্ঘনকারী হবে আমি তাকে শাস্তি দেব। অতঃপর তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে ফিরে যাবেন। তিনি তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন।
এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেব।
[সূরা কাহাফঃ৮৬-৮৮]

আধুনিক (অপ)বিজ্ঞান অনুযায়ী যেহেতু সূর্য ৯৩মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থিত এবং পৃথিবী সূর্যের তুলনায় ১৩ লক্ষগুন ছোট ,তাই সূর্যের পক্ষে ১৩ লক্ষগুন ক্ষুদ্র যমীনে অস্তমিত হওয়া অসম্ভব ব্যপার। বিষয়টা একেবারেই কল্পনারও অযোগ্য ও অযৌক্তিক। এজন্য কাফিরদের সাথে সুর মেলানো মুসলিমরা বলে,এ আয়াতের দ্বারা অবজারভারের পার্স্পেক্টিভ থেকে সূর্যকে অস্ত হতে দেখার বিষয়টি এখানে বলা হয়েছে।কিন্তু সূর্য কখনোই ফিজিক্যালি অস্তমিত হয় না, সূর্য তার অবস্থানে স্থির রয়েছে। পৃথিবীই বরং ঘূর্ননের দরুন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের ইল্যুশন তৈরি করছে!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ যুগের মুসলিমরা যেভাবে নিজেদের মত ব্যাখ্যা তৈরি করে নিয়েছে , সাহাবীগন(রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় কি বলেছিলেন? নিশ্চয়ই সাহাবীরা(রাঃ) হচ্ছেন হক্কের মাপকাঠি। তাদের আকিদা ও ব্যাখ্যাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ এবং সত্য। এ আয়াতের ব্যাপারে সাহাবীদের কথোপকথন এবং ব্যাখ্যা সংক্রান্ত হাদিসটি নিম্নরূপঃ
English

ﺍﻟْﻘَﻮْﻝ ﻓِﻲ ﺗَﺄْﻭِﻳﻞ ﻗَﻮْﻟﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : } ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻎَ ﻣَﻐْﺮِﺏ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲ ﻭَﺟَﺪَﻫَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏ ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﻤِﺌَﺔ }
ﻳَﻘُﻮﻝ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺫِﻛْﺮﻩ : } ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻎَ { ﺫُﻭ ﺍﻟْﻘَﺮْﻧَﻴْﻦِ } ﻣَﻐْﺮِﺏ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲ ﻭَﺟَﺪَﻫَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏ ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﻤِﺌَﺔ { , ﻓَﺎﺧْﺘَﻠَﻔَﺖْ ﺍﻟْﻘُﺮَّﺍﺀ ﻓِﻲ ﻗِﺮَﺍﺀَﺓ ﺫَﻟِﻚَ , ﻓَﻘَﺮَﺃَﻩُ ﺑَﻌْﺾ ﻗُﺮَّﺍﺀ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔ ﻭَﺍﻟْﺒَﺼْﺮَﺓ : } ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﻤِﺌَﺔ { ﺑِﻤَﻌْﻨَﻰ : ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏ ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﻣَﺎﺀ ﺫَﺍﺕ ﺣَﻤْﺄَﺓ , ﻭَﻗَﺮَﺃَﺗْﻪُ ﺟَﻤَﺎﻋَﺔ ﻣِﻦْ ﻗُﺮَّﺍﺀ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔ , ﻭَﻋَﺎﻣَّﺔ ﻗُﺮَّﺍﺀ ﺍﻟْﻜُﻮﻓَﺔ : " ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﺎﻣِﻴَﺔ " ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏ ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﻣَﺎﺀ ﺣَﺎﺭَّﺓ . ﻭَﺍﺧْﺘَﻠَﻒَ ﺃَﻫْﻞ ﺍﻟﺘَّﺄْﻭِﻳﻞ ﻓِﻲ ﺗَﺄْﻭِﻳﻠﻬﻢْ ﺫَﻟِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻧَﺤْﻮ ﺍِﺧْﺘِﻠَﺎﻑ ﺍﻟْﻘُﺮَّﺍﺀ ﻓِﻲ ﻗِﺮَﺍﺀَﺗﻪ
The meaning of the Almighty’s saying, ‘Until he reached the place of the setting of the sun he found it set in a spring of murky water,’ is as follows:
When the Almighty says, ‘Until he reached,’ He is addressing Zul-Qarnain. Concerning the verse, ‘the place of the setting of the sun he found it set in a spring of murky water,’ the people differed on how to pronounce that verse. Some of the people of Madina and Basra read it as ‘Hami’a spring,’ meaning that the sun sets in a spring that contains mud. While a group of the people of Medina and the majority of the people of Kufa read it as, ‘Hamiya spring’ meaning that the sun sets in a spring of warm water. The people of commentary have differed on the meaning of this depending on the way they read the verse.

ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑْﻦ ﻋَﺒْﺪ ﺍﻟْﺄَﻋْﻠَﻰ , ﻗَﺎﻝَ : ﺛﻨﺎ ﻣَﺮْﻭَﺍﻥ ﺑْﻦ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔ , ﻋَﻦْ ﻭَﺭْﻗَﺎﺀ , ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖ ﺳَﻌِﻴﺪ ﺑْﻦ ﺟُﺒَﻴْﺮ ,
ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺍِﺑْﻦ ﻋَﺒَّﺎﺱ ﻳَﻘْﺮَﺃ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺮْﻑ } ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﻤِﺌَﺔ }
Muhammad bin 'Abd al-A'laa narrated and said: Marwan ibn Mu'awiya narrated from Warqa, he said: I heard Sa'id ibn Jubayr say: ibn 'Abbas read this letter "in a muddy spring"
ﻭَﻳَﻘُﻮﻝ : ﺣَﻤْﺄَﺓ ﺳَﻮْﺩَﺍﺀ ﺗَﻐْﺮُﺏ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲ
and he said: the sun sets in black mud.
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُﻭﻥَ : ﺑَﻞْ ﻫِﻲَ ﺗَﻐِﻴﺐ ﻓِﻲ ﻋَﻴْﻦ ﺣَﺎﺭَّﺓ
Others said: it disappears ( ﺗَﻐِﻴﺐ ) in a hot spring.
Tafsir al-Tabari for verse 18:86 .



The word "Hamiya" is derived from one of two pronunciations coming from the word "Hama’a" which is clay as Allah says, "I am creating people out of dirt and compact clay" ﺇِﻧِّﻲ ﺧَﺎﻟِﻖ ﺑَﺸَﺮًﺍ ﻣِﻦْ ﺻَﻠْﺼَﺎﻝ ﻣِﻦْ ﺣَﻤَﺈٍ ﻣَﺴْﻨُﻮﻥ which is smooth clay as has previously been shown. Ibn Jarir stated that it was narrated by Yunus, narrated by Ibn Wahb, narrated by Nafi’ Ibn Abu Na’im who heard Abdel Rahim Al’Araj say that Ibn Abbas used to speak about the muddy well and would pronounce the word as "Hama’a."
Nafi’ stated that Kab Al Ahbar was asked about it and he replied saying, "You are more learned in the Quran than I am, but I find it (the sun) in the Book (Torah) descending in black mud." It was similarly narrated by Ibn Abbas and Mujahid from others. Abu Dawud Al Tayalisi stated that it was narrated by Muhammad Ibn Dinar, narrated by Sa’ad Ibn Aws, Narrated by Misda’, narrated by Ibn Abbas, narrated by Abu Ibn Kab that the prophet –peace be upon him- made him read it as "Hami’a." Also, Ali Ibn Abu Talha narrated from Ibn Abbas that the sun DESCENDS in a "Hamiya" well , meaning warm water well. The same was also narrated by Al-Hassan Al Basri.

Ibn Jarir stated that the truth is that both pronunciations are correct and no matter which way a person may read it then, he is correct. I said that there is no contradiction between the two meanings, for it may be that the water in the well is warm because it faces the heat of the setting sun with no protection from its rays. The word "Hami’a" meaning water mixed with black clay is also possible as was narrated by Kab Al Ahbar and others. It was narrated by Jarir, narrated by Muhammad Ibn Al Mathny, narrated by Yazid Ibn Harun, narrated by Al-Awam, narrated by a servant of Abdullah Ibn Umar, narrated by Abdullah who stated that the prophet – peace be upon him – watched the sun while it was setting and said, "In Allah’s hot fire. If it wasn’t for Allah’s command, the sun would burn all those who are on earth." I said this was also narrated by imam Ahmad from Yazid Ibn Harun who elevated this hadith. It may be that this is the saying of Abdullah Ibn Umar and his companions whom he found during the battle of Yarmuk, and Allah knows best.

Ibn Abu Hatim stated that it was narrated by Hajjaj Ibn Hamza, narrated by Muhammad Ya’ny Ibn Bashir, narrated by Umar Ibn Maymun, narrated by Hadir Ibn Abbas who related that Mu’awiya Ibn Abu Sufyan read the verse in Surah of the Cave (Surah 18:86), "He found it set in a spring of murky water," and was told by Ibn Abbas that it was read and pronounced as "Hami’a." Mu’awiya then asked Abdullah Ibn Umar how he read it and was told, "We read it as you read it." Ibn Abbas told Mu’awiya, "That the Quranic verse was revealed in my house, so send for Kab Al-Ahbar." Ibn Abbas then asked Kab, " Where do you find the sun setting in the Torah? " He responded, "Ask the Arabian people for they are more learned about it. As for me, I find the sun setting in the Torah in water and mud," he then pointed towards the west.
Ibn Hadir stated to Ibn Abbas, "Had I been present earlier with you I would have informed you of something to enlighten you regarding the issue of what the warm well is." Ibn Abbas replied, "And what would that be?" He said, "Regarding what was mentioned of Zul-Qarnain following a path with knowledge, he traveled the earth both east and west seeking the reasons, being a command given by a wise guide. He then saw the sun at dusk DESCENDING IN A WELL that was ‘Khulb’ and ‘Thatin’ and ‘Harmad.’" Ibn Abbas asked, "What is Khulb?" He replied, "It is mud in their language." Ibn Abbas asked, "And what is Thatin?" He replied, "It is warmth." He was asked, "And what about Harmad?" He replied, "It means black." Ibn Abbas then asked for a male or a youth to be brought to him and said, "Write down what this man says."
Sa’id Ibn Jubair narrated that Ibn Abbas was reading Surah of the Cave (Surah 18:86) and read the verse, "He found it set in a spring of murky water (Hama’a)." Then Kab said, "I swear by Him who holds Kab’s soul in His hand, I have not heard anyone recite it the way it is revealed in the Torah other than Ibn Abbas. For we find it in the Torah descending in a black clod of mud."





 অতএব, সত্য হচ্ছে সূর্য সত্যিই জমিনের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যায়, যেমনটা আল্লাহ কুরআনে বলেছেন। ইবনে কাসির রহঃ বিশ্বাস করতেন সূর্য চতুর্থ আসমানে। এজন্য তার তাফসিরে গেলে সামান্য আপত্তি পেতে পারেন। সাহাবীদের কথা গুলো চতুর্থ আসমানে সূর্যের অবস্থানের মতামতের বিরুদ্ধে যায়(এ সংক্রান্ত আরো সুদীর্ঘ হাদিস সামনে আসছে,ইনশাআল্লাহ)। তারা স্পষ্টভাবে সূর্যের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তগমনের কথা বর্ননা করেছেন। আর এটা সমতল জমিন ছাড়া অসম্ভব।
অথচ আফসোসের বিষয়,আজকের অপবিজ্ঞান এবং অপবিদ্যা, যাদুশাস্ত্রের ভ্রান্ত মেটাফিজিক্স(Origin of existence) দ্বারা উম্মাহ এতটাই প্রভাবিত যে সেসবই আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে, এমনকি সেসবকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা ব্যাখ্যা করতে ও সমন্বয় করতে চেষ্টা করে!! আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পাশাপাশি এমন কিছু  দলিল আছে যা সন্দেহাতীতভাবে যমীনকে সমতল প্রমান করে:
Thauban reported that Allah’s Messenger (may peace be upon him) said: Allah drew the ends of the world near one another for my sake. And I have seen its eastern and western ends….
[Sahih Muslim 41:6904]


It was narrated from Sahl bin Sa’d As-Sa’idi that the Messenger of Allah said: “There is no (pilgrim) who recites the Talbiyah but that which is to his right and left also recites it, rocks and trees and hills, to the farthest ends of the earth in each direction, from here and from there.”
[Sunan Ibn Majah 4:25:2921]


সূর্যের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যাবার আরও সুস্পষ্ট তথ্যবহুল দলিল নিন্মোল্লিখিত হাদীসেঃ
Imam Tabari who cites traditions from Muhammad and his companions:
The other report, referring to a different concept, is what I was told by Muhammad b. Abi Mansur- Khalaf b. Wasil- Abu Nu'aym- Muqatil b. Hayyan- Ikrimah: One day when Ibn `Abbas was sitting (at home or in the mosque), a man came to him and said: Ibn `Abbas, I heard Ka'b, the Rabbi, tell a marvelous story about the sun and the moon. He continued. Ibn `Abbas who had been reclining sat up and asked what it was. The man said: He suggested that on the Day of Resurrection, the sun and the moon will be brought as if they were two hamstrung oxen, and flung into Hell. `Ikrimah continued. Ibn `Abbas became contorted with anger and exclaimed three times: Ka'b is lying! Ka'b is lying! Ka'b is lying! This is something Jewish he wants to inject into Islam. God is too majestic and noble to mete out punishment where there is obedience to Him. Have you not heard God's word: "And He subjected to you the sun and the moon, being constant" — referring to their constant obedience. How would He punish two servants that are praised for constant obedience? May God curse that rabbi and his rabbinate! How insolent is he toward God and what a tremendous fabrication has he told about those two servants that are obedient to God! He continued. Then he said several times: We return to God. He took a little piece of wood from the ground and started to hit the ground with it. He did that for some time, then lifting his head he threw away the little piece of wood and said: You want me to tell you what I heard the Messenger of God say about the sun and the moon and the beginning of their creation and how things went with them? We said: We would, indeed, May God show mercy unto you. He said: When the Messenger of God was asked about that ,
he replied : When God was done with His creation and only Adam remained to be created, He created two suns from the light of His Throne . His foreknowledge told Him that He would leave here one sun, so He created it as (large as) this world is from east to west. His foreknowledge also told Him that He would efface it and change it to a moon; so the moon is smaller in size than the sun. But both are seen as small because of the sun's altitude and remoteness from the earth.
He continued: If God had left the two suns as He created them in the beginning, night would not have been distinguishable from day. A hired man then would not know until when he should labor and when he should receive his wages. A person fasting would not know until when he must fast. A woman would not know how to reckon the period of her impurity. The Muslims would not know the time of the pilgrimage. Debtors would not know when their debts become due. People in general would not know when to work for a livelihood and when to stop for resting their bodies. The Lord was too concerned with His servants and too merciful to them (to do such a thing). He thus sent Gabriel to drag his wing three times over the face of the moon, which at the time was a sun. He effaced its luminosity and left the light in it. This is (meant by) God's word: "And We have made the night and the day two signs. We have blotted out the sign of the night, and We have made the sign of the day something to see by." He continued. The blackness you can see as lines on the moon is a trace of the blotting. God then created for the sun a chariot with 360 handholds from the luminosity of the light of the Throne and entrusted 360 of the angels inhabiting the lower heaven with the sun and its chariot, each of them gripping one of those handholds. He entrusted 360 of the angels inhabiting (the lower) heaven with the moon and its chariot, each of them gripping one of those handholds.
Then he said: For the sun and the moon,
He created easts and wests (positions to rise and set) on the two sides of the earth and the two rims of heaven, 180 SPRINGS IN THE WEST OF BLACK CLAY – THIS IS (MEANT BY) GOD'S WORD: " He found it setting in a muddy spring," meaning by "muddy (hami'ah)" black clay - and 180 springs IN THE EAST LIKEWISE OF BLACK CLAY, bubbling and boiling like a pot when it boiled furiously. He continued.
Every day and night, the sun has a new place where it rises and a new place where it sets . The interval between them from beginning to end is longest for the day in summer and shortest in winter. This is (meant by) God's word: "The Lord of the two easts and the Lord of the two wests," meaning the last (position) of the sun here and the last there. He omitted the positions in the east and the west (for the rising and setting of the sun) in between them. Then He referred to east and west in the plural, saying; "(By) the Lord of the easts and wests." He mentioned the number of all those springs (as above).
He continued. God created an ocean three
farsakhs (18 kilometers) removed from heaven. Waves contained, it stands in the air by the command of God. No drop of it is spilled. All the oceans are motionless, but that ocean flows at the rate of the speed of an arrow. It is set free to move in the air evenly, as if it were a rope stretched out in the area between east and west. The sun, the moon, and the retrograde stars RUN IN ITS DEEP SWELL .
THIS IS (MEANT BY) GOD'S WORD: " Each swims in a sphere ." "The sphere" is the circulation of the chariot IN THE DEEP SWELL OF THAT OCEAN . By Him Who holds the soul of Muhammad in His hand! If the sun WERE TO EMERGE FROM THAT OCEAN, it would burn everything on earth, including even rocks and stones, and if the moon were to emerge from it, it would afflict (by its heat) the inhabitants of the earth to such and extent that they would worship gods other than God . The exception would be those of God's friends whom He would want to keep free from sin.
[ইমাম ইবনে জারির তাবারির ইতিহাস]

উপরের এ হাদীসে অনেকগুলো আয়াতের ব্যাখ্যা মেলে। আল্লাহ চাঁদ সূর্য উভয়কেই সৃষ্টি করেন দুটি সূর্য হিসেবে। উভয়ের একই বৈশিষ্ট্যের ফলে রাত দিন আলাদা করা মুশকিল হয়ে ছিল। এজন্য জিব্রাইল(আঃ) এর দ্বারা চাঁদের উপর কালিমা লেপন করে আলো কমিয়ে রাতের উপযোগী করা হয়।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা নিম্নতম আসমানে চাঁদ ও সূর্যের জন্য কক্ষপথ নির্ধারন করেছেন। আসমানী সমুদ্রের কক্ষপথে চাঁদ ও সূর্যের জন্য ৩৬০ জন করে ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন যারা চাঁদ সূর্যকে টেনে নিয়ে যায়। আল্লাহ সমতল পৃথিবীর পূর্বে ও পশ্চিমে ১৮০টি করে উত্তপ্ত কালো পানির জলাশয় তৈরি করেছেন, চাঁদ সূর্য প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অস্তগমন করে, তেমনি ১৮০টির মধ্যে প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে উদিত হয়। শীত ও গ্রীষ্মে উদয়াচল ও অস্তাচলে সূর্যের উদয় অস্তের স্থান পরিবর্তন করে, এতে দিন রাত্রির দৈর্ঘ্য বাড়ে কমে। এজন্য আল্লাহ বলেনঃ
"তিনি দুই উদয়াচল ও দুই অস্তালয়ের মালিকl"
(আর রহমান; আয়াত ১৭)

"আমি শপথ করছি উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের পালনকর্তার, নিশ্চয় আমি সক্ষমl"
(আল মা'আরিজ; আয়াত ৪০)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আসমানে  পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত দড়ির ন্যায় পানির কক্ষপথ নির্মান করেন। এতে পানির গতি ধনুকের তীরের ন্যায় । চাঁদ-সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্রসমূহ এ কক্ষপথে সন্তরনশীল।


অপর এক হাদীসঃ
Ibn `Abbas said that `Ali b. Abi Talib said to the Messenger of God : You are like my father and my mother! You have mentioned the course of the retrograde stars ( al-khunnas ) by which God swears in the Qur'an, together with the sun and the moon, and the rest. Now, what are al-khunnas? The Prophet replied: `Ali, they are five stars: Jupiter ( al-birjis ), Saturn ( zuhal ), Mercury ( `utarid ), Mars ( bahram ), and Venus ( al-zuhrah ). These five stars rise and run like the sun and the moon and race with them together . All the other stars are suspended from heaven as lamps are from mosques, and circulate together with heaven praising and sanctifying God with prayer. The Prophet then said: If you wish to have this made clear, look to the circulation of the sphere alternately here and there. It is the circulation of heaven and the circulation of all the stars together with it except those five . Their circulation today is what you see, and that is their prayer. Their circulation to the Day of Resurrection is as quick as the circulation of a mill because of the dangers and tremors of the Day of resurrection. This is (meant by) God's word: "On a day when the heaven sways to and fro and the mountains move. Woe on that day unto those who declare false (the Prophet's divine message)."
He continued. When the sun rises, it rises upon its chariot FROM ONE OF THOSE SPRINGS accompanied by 360 angels with outspread wings . They draw it along the sphere, praising and sanctifying God with prayer, according to the extent of the hours of night and the hours of day, be it night or day. When God wishes to test the sun and the moon, showing His servants a sign and thereby asking them to stop disobeying Him and to start to obey, the sun tumbles from the chariot AND FALLS INTO THE DEEP OF THAT OCEAN, which is the sphere. When God wants to increase the significance of the sign and frighten His servants severely, all of the sun falls, and nothing of it remains upon the chariot.
That is a total eclipse of the sun, when the day darkens and the stars come out . When God wants to make a partial sign, half or a third or two-thirds of it fall into the water, while the rest remains upon the chariot,
this being a partial eclipse. It is a misfortune for the sun or for the moon. It frightens His servants and constitutes a request from the Lord (for them to repent). However this may be, the angels entrusted with the chariot of the sun divide into two groups, one that goes to the sun and pulls it toward the chariot, and another that goes to the chariot and pulls it toward the sun, while at the same time they keep it steady in the sphere, praising and sanctifying God with prayer, according to the extent of the hours of day or the hours of night, be it night or day, summer or winter, autumn or spring between summer and winter, lest the length of night and day be increased in any way. God has given them knowledge of that by inspiration and also the power for it. The gradual emergence of the sun or the moon FROM THE DEEP OF THAT OCEAN covering them which you observe after an eclipse (is accomplished by) all the angels together who, after having brought out all of it, carry it (back) and put it upon the chariot . They praise God that He gave them the power to do that. They grip the handholds of the chariot and draw it in the sphere, praising and sanctifying God with prayer.
Finally, they bring the sun to the west . Having done so; THEY PUT IT INTO THE SPRING, and the sun falls from the horizon of the sphere INTO THE SPRING .
Then the Prophet said, expressing wonder at God’s creation: How wonderful is the divine power with respect to something than which nothing more wonderful has ever been created!… By Him Who holds the soul of Muhammad in His hand! Were those people not so many and so noisy, all the inhabitants of this world would hear the loud crash made by the sun falling when it rises and when it sets … Whenever the sun sets, it is raised from heaven to heaven by the angels’ fast flight, until it is brought to the highest, seventh heaven, and eventually is underneath the Throne. It falls down in prostration, and the angels entrusted with it prostrate themselves together with it. Then it is brought down to heaven. When it reaches this heaven, dawn breaks. When it comes down FROM ONE OF THOSE SPRINGS, morning becomes luminous . And when it reaches this face of heaven, the day becomes luminous. 
( The History of Al-Tabari: General Introduction and From the Creation to the Flood , translated by Franz Rosenthal [State University of New York Press (SUNY), Albany, 1989], volume 1, pp. 232-238; bold and capital emphasis ours)

উপরের এ হাদিসে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহনের বিবরন দেওয়া হয়েছে। চাঁদ সূর্যের কক্ষপথে ফেরেশতারা যখন রথ থেকে চাঁদ সূর্যকে আসমানের অতল সমুদ্রের মধ্যে ফেলে দেয় তখন চন্দ্র বা সূর্যগ্রহন হয়। অর্ধাংশ ডুবিয়ে দিলে তখন অর্ধ চন্দ্র বা সূর্যগ্রহন হয়, তেমনি পূর্নরূপে ডুবিয়ে দিলে তখন পূর্ন চন্দ্র/সূর্য গ্রহন। দিনশেষে সারা আকাশ ঘুরে ফেরেশতারা সূর্যকে ১৮০টি কর্দমাক্ত জলাশয়ের যেকোন একটিতে ফেলে দেয়, অর্থাৎ তখন সূর্যাস্ত হয়। সূর্যাস্তের পর সূর্য একটির পর আরেকটি আসমান অতিক্রম করে সপ্তম আসমানে পৌছে আল্লাহর আরশের নিচে সিজদায় পড়ে। পরবর্তীতে উদয়ের অনুমতি নিয়ে পূর্বদিক দিয়ে উদিত হয়।

যমীনের এক প্রান্তে অস্তগমনের পর সিজদা,অনুমতি প্রার্থনা এবং অপর প্রান্তে পৌছে উদিত হতে সূর্য এত অল্প সময় ব্যয় করে যে, কখনো এমন হয় না যে যমীনের একদিকে সূর্যাস্তের পর অপর দিকে সূর্যোদয়ে বিলম্ব হয় বা অন্ধকার হয়ে থাকে। যে আল্লাহ মিরাজের রাতে নবী(সাঃ)কে সশরীরে সাত আসমান ভ্রমন করিয়ে আনেন কোনরূপ সময় ব্যয় ছাড়াই, তার পক্ষে বিনা কালক্ষেপনে বা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সূর্যকে যমীনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিয়ে যাওয়া খুবই সহজ।

একটা প্রশ্ন আসে, সূর্যের কক্ষপথ প্রথম অথবা চতুর্থ আসমানে হলে কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তগমনের পর যমীনের নিচে দিয়ে আরশের নিচে সিজদা দিতে কিভাবে যায়? আরশ তো সপ্তম আসমানের উপরে...।
এর উত্তর বেশ কিছু হাদিসে আলাদাভাবে দেওয়া আছে।
সাত আসমান ও যমীন কুরসির ভেতর। কুরসির উপর আরশ। আরশ সমস্ত সৃষ্টিকে বেষ্টন করে আছে। তাই যমীনের নিচে গেলেও সূর্য আরশের নিচেই আছে।হয়ত, আসমানের প্রান্তভাগ যমীনের নিচে এমনভাবে আছে যে সূর্যাস্তের সাথে সাথে সে একেক আসমানের স্তর ভ্রমন করতে থাকে। সেগুলো হয়ত এরূপ যে পরস্পরের মাঝে দূরত্ব কম।সূর্যাস্তের পর এরূপ সাত আসমান ভ্রমন করে আরশের নিচে যাবার কথা কিছু হাদীসে এসেছে। বিষয়টা আমরা যেভাবে বর্ননা করব সেরকম নাও হতে পারে, আমরা বিশ্বাস করি সব কিছুই হাদীসের বর্ননা অনুযায়ীই হয়, তবে সেটা আমাদের আকলী জ্ঞানের বাইরে। মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে কোন কিছু না বুঝে আসার মানে এই নয় যে ওটা ঐরূপ নয়। কুরআন সুন্নাহর ব্যপারে আমাদের উচিৎ এরূপ বিশ্বাস রাখা যে "শুনলাম এবং মানলাম"।  ওয়া আল্লাহু আ'লাম।


মানচিত্রের বাইরের দেশ-মহাদেশঃ আল ইয়াজুজ ওয়া মাজুজ-
অস্তাচলের নিকটে অবস্থানকারী সম্প্রদায়ের ব্যপারে ইবনে কাসির(রহ.) অসাধারণ কিছু আনেন যার অস্তিত্ব প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর ম্যাপ ও মডেলে অনুপস্থিত।


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কুরআনে শুধু অস্তাচলের বিবরণ নয়,উদয়াচলের বর্ননাও দিয়েছেন।
আল্লাহ বলেনঃ
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَى قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
كَذَلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًا
অতঃপর তিনি এক উপায় অবলম্বন করলেন।
অবশেষে তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্নরক্ষার কোন আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি।
প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। 
(১৮:৮৯-৯১)

প্রকৃত ঘটনা যে এমনই সেটা আমরা বিশ্বাস করি, কিন্তু আফসোসের বিষয়, আজকের মোডারেট ও মর্ডানিস্ট মুসলিমরা তা বিশ্বাস করে না। আজ এরা কাফিরদের মনগড়া ও যাদুশাস্ত্রের মিথ্যা বুলিসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আজ ওরা বিশ্বাস করে না জমিন সমতল এবং আসমান জমিনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ, যাদেরকে ছয় দিনে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর তাফসিরে কিছু অদ্ভুত মনুষ্যজাতির বর্ননা এসেছে যারা সূর্যের উদয়াচলে বাস করে।

এদের শারীরিক গড়নের অস্বাভাবিকতার বর্ননা শুনে অনেকের কাছেই কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। এসব আল্লাহরই বৈচিত্রময় সৃষ্টি। 


আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে জালালাঈনে এসেছেঃ
where it rises, he found it rising on a folk, namely, Negroes (zanj), for whom We had not provided against it, that is, [against] the sun, any [form of] cover, in the way of clothing or roofing, as their land could not support any structures; they had underground tunnels into which they would disappear at the rising of the sun and out of which they would emerge when it was at its highest point [in the sky until, when he reached the rising of the sun, the place]
(তাফসীর জালালাঈন-১৮ঃ৯০)


এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ

ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا
قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَى أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا

আবার তিনি এক পথ ধরলেন।
অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রচীরের মধ্যস্থলে পৌছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না।
তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন।
[কাহাফ:৯২-৯৪]

ইয়াজুজ মাজুজদের ভূখন্ড আজও একটি অমিমাংসিত রহস্য।  যেহেতু অধিকাংশ মানুষ কুরআন হাদীসের দলিল বাদ দিয়ে আকলি জ্ঞান ব্যবহার করে অদেখা জগতের ব্যপারে ব্যাখ্যার চেষ্টা করে,এজন্য এটাকে ঘিরে আরো বেশি কল্পনা এবং বিচিত্র মনগড়া তত্ত্ব গড়ে উঠছে। নিন্মোল্লিখিত সুদীর্ঘ হাদিসে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বর্ননার পাশাপাশি, ঐ অঞ্চলে বসবাসকারীদের কথা উল্লেখ এসেছে। উদয়াচলে বসবাসকারীরা হচ্ছে আদ জাতির অবশিষ্ট বেঁচে যাওয়া কওম,তাদের শহরের নাম ,জাবালাক। অস্তাচলের বাসিন্দারা হচ্ছে সামূদ জাতির মধ‌্যে বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট কওম যারা সালিহ(আঃ) এর উপর ঈমান এনেছিল।তাদের শহরের নাম ,জাবারস।
উভয় শহরের প্রবেশের জন্য দশ হাজার দরজা আছে,প্রত‌্যেক দরজায় ১০০০০ অস্ত্রসজ্জিত সৈন্যরা পাহাড়ারত আছে। এই শহরগুলোর পিছনে তাফিল,মানসাক ও তারিস নামের আরো তিন জাতি বসবাস করে। তাদের পূর্বে বসবাসকারী জাতি হচ্ছে ইয়াজুজ-মাজুজ। মিরাজের রাতে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) কে জীব্রাঈল(আঃ) উদয়াচল-অস্তাচলের শহর এবং ইয়াজুজ মাজুজসহ আরও তিন জাতির কাছে নিয়ে গিয়েছিল। আদ ও সামূদ জাতির অবশিষ্ট ওই কওম তাওহীদের আহব্বানে সাড়া দিয়েছিল।কিন্তু ইয়াজুজ মাজুজ এবং আরো তিন জাতি আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর ঈমান আনতে অস্বীকার করে। 
হাদিসটি নিম্নরূপ:
Abu Dharr said: I was sitting behind the Apostle of Allah who was riding a donkey while the sun was setting. He asked: Do you know where this sets? I replied: Allah and his Apostle know best. He said: It sets in a spring of warm water.
Then he said: For the sun and the moon, He created easts and wests (positions to rise and set) on the two sides of the earth and the two rims of heaven, 180 springs in the west of black clay – this is (meant by) God’s word: “He found it setting in a muddy spring,” meaning by “muddy (hami’ah)” black clay – and 180 springs in the east likewise of black clay, bubbling and boiling like a pot when it boiled furiously. He continued. Every day and night, the sun has a new place where it rises and a new place where it sets. The interval between them from beginning to end is longest for the day in summer and shortest in winter. This is (meant by) God’s word: “The Lord of the two easts and the Lord of the two wests,” meaning the last (position) of the sun here and the last there. He omitted the positions in the east and the west (for the rising and setting of the sun) in between them. Then He referred to east and west in the plural, saying; “(By) the Lord of the easts and wests.” He mentioned the number of all those springs (as above).

He continued. God created an ocean three farsakhs (18 kilometers) removed from heaven. Waves contained, it stands in the air by the command of God. No drop of it is spilled. All the oceans are motionless, but that ocean flows at the rate of the speed of an arrow. It is set free to move in the air evenly, as if it were a rope stretched out in the area between east and west. The sun, the moon, and the retrograde stars run in its deep swell. This is (meant by) God’s word: “Each swims in a sphere.” “The sphere” is the circulation of the chariot in the deep swell of that ocean. By Him Who holds the soul of Muhammad in His hand! If the sun were to emerge from that ocean, it would burn everything on earth, including even rocks and stones, and if the moon were to emerge from it, it would afflict (by its heat) the inhabitants of the earth to such an extent that they would worship gods other than God. The exception would be those of God’s friends whom He would want to keep free from sin. […]

He continued. When the sun rises, it rises upon its chariot from one of those springs accompanied by 360 angels with outspread wings. They draw it along the sphere, praising and sanctifying God with prayer, according to the extent of the hours of night and the hours of day, be it night or day. […] Finally, they bring the sun to the west. Having done so; they put it into the spring there, and the sun falls from the horizon of the sphere into the spring.

Then the Prophet said, expressing wonder at God’s creation: How wonderful is the divine power with respect to something than which nothing more wonderful has ever been created! This is (meant by) what Gabriel said to Sarah: “Do you wonder about God’s command?” It is as follows: God created two cities, one in the east, and the other in the west. The inhabitants of the (68]
city in the east belong to the remnants of the 'Ad and are descendants of those 'Ad who werebelievers, while the inhabitants ofthe city in the west belong to the remnants of the Thamud and are descendants of those who believed in Salih 456 The name of the city in the east is Margisiya in Syriac and jabalq in Arabic, and the name of the city in the west is Barjisiya in Syriac and jabars
in Arabic.457 Each city has ten thousand gates, each a farsakh (6 kilometers) distant from the other. Ten thousand guards equipped with weapons alternate each day as guards for each of these gates; after that (one day, those guards) will have no (more) guard duty until the day the Trumpet will be blown 458 By Him Who holds the soul of Muhammad in His hand! Were those people not so many and so noisy, all the inhabitants of this world would hear the loud crash made by the sun falling when it rises and when it sets. Behind them are three nations, Mansak, Tafil, and Taris, and before them are Yajuj and Majuj.459 Gabriel took me to them during my night journey from the Sacred Mosque to the Farthest Mosque.'I called on Yajuj and Majuj to worship God, but they refused to listen to me. Gabriel then took me to the inhabitants of the two cities. I called on them to follow the religion of God and to worship Him. They agreed and repented. They are our brothers in the (true) religion. Those of them who do good are together with those of you who do good, and those of them who do evil are together with those of you who do evil. Gabriel then took me to the three nations. I called on them to follow the religion of God and to worship Him. They disapproved of my doing so. They did not believe in God and considered His messengers liars. They are in the Fire together with Yajuj and Majuj and all those who were disobedient to God.
Whenever the sun sets, it is raised from heaven to heaven by the angels' fast flight, until it is brought to the highest, seventh heaven, and eventually is underneath the Throne. It falls down in prostration, and the angels entrusted with it prostrate themselves together with it. Then it is brought down from heaven to heaven. When it reaches this heaven, dawn breaks. When it comes down from one of those springs, morning becomes luminous. And when it reaches this face of heaven, the day becomes luminous.

[History of Imam Tabari]

ড্রোন আর কাল্পনিক স্যাটেলাইটের এই যুগে পৃথিবীকে বলা হয় হাতের মুঠোয়,ইন্টারনেটের ম্যাপে মুহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর অপর প্রান্তের ম্যাপ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু কোথাও ইয়াজুজ মাজুজ জাতির খোঁজ নেই। খুঁজে পাওয়া যায় না সেই লোহার প্রাচীর, যেটা যুলকারনাঈন নির্মান করেছিলেন। তাই কখনো রাশিয়া, কখনো উজবেকিস্তান, কখনো চীন,মোঙ্গলিয়া,তুরস্কে খুঁজে বেড়ানো....কখনো ইহুদী,কখনো তুর্কী কখনো মোঙ্গলদের ইয়াজুজ মাজুজ বানিয়ে দেওয়া! শেষমেশ এটাকে মিথলজির আওতায় ফেলা হয়েছে। কেউ কেউ এও ধারনা করে হয়ত এই জাতি গুহায় লুকিয়ে আছে,যারজন্য তাদের কাল্পনিক স্যাটেলাইট এবং ড্রোন খুজে পায় না। অথচ ইয়াজুজ মাজুজদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গোটা মানবজাতিকে দশভাগ করা হলে ইয়াজুজ মাজুজরাই নয়ভাগ! তাছাড়া এরা প্রত্যেকে হাজার সন্তান রেখে মারা যায়। কাতাদা (রঃ) বলেন, তারা পৃথিবীর ২৪০০০০ ফারসাখ অঞ্চলজুড়ে বসবাস করে যা কিনা তার সময়ের হিসাবে সাধারন মানবজাতির চেয়ে অনেক বেশি(প্রায় ১০গুন) আয়তনের এলাকা। ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন যমীনকে যদি ৬ ভাগে ভাগ করা হয় তবে ৫ ভাগই ইয়াজুজ মাজুুজদের দখলে!

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. বলেন- “দশ ভাগে আল্লাহ পাক সৃষ্টিকে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগে ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেছেন। বাকী একটি ভাগে অবশিষ্ট সকল সৃষ্টকে সৃষ্টি করেছেন। ফেরেশতাদের আবার দশটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগ দিন-রাত বিরামহীন আল্লাহর আদেশ মতে কাজ করে চলেছে। একটি ভাগ আল্লাহ পাক নবী রাসূলদের কাছে প্রেরণের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন। অতঃপর সাধারণ সৃষ্টিকে আবার দশটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগে জিন তৈরি করেছেন, একভাগে আদম সন্তান। অতঃপর আদম সন্তানকে আল্লাহ দশভাগে ভাগ করেছেন। তন্মধ্যে নয়ভাগে সৃষ্টি করেছেন ইয়াজূজ-মাজূজ, আর অবশিষ্ট একভাবে সকল মানুষ।” 
(মুস্তাদরাকে হাকিম)


হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রা. বলেন- আমি ইয়াজূজ-মাজূজ সম্পর্কে নবীজীকে জিজ্ঞেস করলে নবীজী বললেন- ইয়াজূজ এক জাতি আর মাজূজ আরেক জাতি। এদের প্রত্যেক জাতির ভেতরে-ও আবার চার লক্ষ জাতি বিদ্যমান। এদের একজন মারা যাওয়ার পূর্বে একহাজার সশস্ত্র ঔরস সন্তান রেখে যায়। বললাম- হে আল্লাহর রাসূল! এরা দেখতে কেমন? বললেন- তিন ধরনের মানুষ তাদের মধ্যে আছে। কিছু আছে আরুয বৃক্ষের মত লম্বা। (আরুয শামের প্রসিদ্ধ বৃক্ষ, স্বাভাবিকভাবে বৃক্ষটি একশ বিশ গজ লম্বা হয়) এদের বিরুদ্ধে কোন লৌহ/কৌশল কাজে আসে না। অপর দল, যারা এক কান মাটিয়ে বিছিয়ে এবং অপর কান গায়ে জড়িয়ে বিশ্রাম করে। হাতি, ঘোড়া, গাঁধা, উট, শুকর- যা-ই সামনে পায় খেয়ে ফেলে। এমনকি নিজেদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তাকেও খেয়ে ফেলে। তাদের সম্মুখদল শামে এবং পশ্চাতদল খোরাছানে থাকবে। টাইবেরিয়ান লেক সহ প্রাচ্যের সকল নদী তারা নিমিষেই চুষে ফেলবে।-” 
(তাবারানী)

খালেদ বিন আব্দুল্লাহ্‌ আপন খালা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- একদা নবী করীম (সা:) বিচ্ছু দংশনের ফলে মাথায় ব্যান্ডেজ বাধাবস্থায় ছিলেন। বললেন- তোমরা তো মনে কর যে, তোমাদের কোন শত্রু নেই! (অবশ্যই নয়; বরং শত্রু আছে এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে) তোমরা যদ্ধু করতে থাকবে। অবশেষে ইয়াজূজ-মাজূজের উদ্ভব হবে। প্রশস্ত চেহারা, ক্ষুদ্র চোখ, কৃষ্ণ চুলে আবছা রক্তিম। প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে তারা দ্রুত ছুটে আসবে। মনে হবে, তাদের চেহারা সুপরিসর বর্ম…
[মুসনাদে আহমদ, তাবারানী]


আব্দুল্লাহ্‌ বিন আমর (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা:) বলেন- ইয়াজূজ-মাজূজ আদম সন্তানেরই একটি সম্প্রদায়। তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হলে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলবে। তাদের একজন মারা যাওয়ার আগে এক হাজার বা এর চেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে যায়। তাদের পেছনে তিনটি জাতি আছে-তাউল, তারিছ এবং মাস্ক…
[তাবারানী]

ইয়াজুজ মাজুজদের নিয়ে আলোচিত সুপরিচিত হাদিস উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকছি। ইয়াজুজ মাজুজরা মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত হলেও এদের মধ্যকার জাতিভেদে বিভিন্ন আকারের ও বর্নের। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দেশ বা মহাদেশের কোন কিছুই আজকের আধুনিক যুগে এসে আমরা খুঁজে পাইনা। মানচিত্রে তাদের অবস্থান না পাওয়াটাই স্বাভাবিক, যেখানে সূর্যের উদয়াচল-অস্তাচলের স্থানগুলোকেই আড়ালে রাখা হয়েছে। ওরা তো সত্যকে বদলে দিয়ে একদমই বিকল্প হেলিওসেন্ট্রিক স্পেস বেজড সৃষ্টিতত্ত্ব রচনা করেছে! যেখানে আদ ও সামূদের কওমের ধ্বংসাবশেষ অধ্যুষিত শহরগুলোই মানচিত্রের বাহিরে রাখা হয়েছে সেখানে তাদের আশপাশে বসবাসকারী ইয়াজুজ মাজুজ ও আরও তিন জাতির অস্তিত্ব মানচিত্রে আশাই করা যায় না। অনেকের কাছে মানচিত্র থেকে মহাদেশ বাদ ফেলাটা খুব অসম্ভব মনে হয়, অথচ খুব সহজেই এটা করা যায়। মাত্র তিনটি মহাদেশ দিয়েও গোলাকার পৃথিবীর মডেলটিকে মুড়ে দেওয়া সম্ভব। দেখুনঃ https://www.youtube.com/watch?v=Mys2-94ySUI




ওয়া আল্লাহু আ'লাম

[চলবে ইনশাআল্লাহ...]



বিগত পর্বগুলোঃ