Tuesday, January 15, 2019

যাদুবিদ্যায় শয়তান জ্বীনের ভূমিকা ২

তখন হয়ত ২য় শ্রেণীতে পড়ি, ইসলাম শিক্ষার ক্লাসটা হবেনা, ক্লাস ছুটিও দেয়নি। সবাইকে হিন্দুধর্মের ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে বলা হলো। বিভা ম্যাডাম হিন্দুধর্মের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওদের কারও মাঝে বর্তমান সময়টার মত উগ্র হিন্দুত্ববাদী চেতনা ছিল না। কিছুটা অসাম্প্রদায়িক।  ম্যাডাম সবাইকে উদ্দেশ্য করে বইয়ে উল্লিখিত কোন একটা মন্ত্র শেখাচ্ছিলেন, "ঔঁ ক্রিং গ্রিং.... স্বাহা" এরকম কিছু। এর দ্বারা কি কি হয় সেসবও কিছু বলছিলেন।


দুচারদিন আগে একটা ব্লগে প্রবেশ করলাম, সেখানে কোন যাদুকর কালো যাদু, স্পেল-ইনক্যান্টেশন প্রভৃতি জিনিস শেখায়। অবাক হলাম সেই হিন্দুধর্মের স্পেলটা এই ব্ল্যাকম্যাজিয়ানও ব্যবহার করা শেখাচ্ছে দেখে। এর জন্যই বলি, হিন্দু-বৌদ্ধ-বৈষ্ণব-নাথ-বিশেষিকা ইত্যাদি সবই পূর্বাঞ্চলীয় যাদুবিদ্যাকেন্দ্রিক স্যাটানিক দর্শন ছাড়া কিছু না। এজন্যই sect of horned god এর স্যাটানিস্ট Thomas LeRoy হিন্দুধর্মকে বামপথের আদর্শ রাস্তা বলে ভূয়সী প্রশংসা করেন। হিন্দু ধর্মের প্রতিটা বিষয়ই এস্ট্রলজিকে ঘিরে। ওদের মুনী ঋষিদের কাছে প্রতিমাগুলোর ব্যাখ্যা ভিন্ন। সেসব ন্যাচারাল ফোর্স ও 'ল এবং কুফরি মেটাফিজিক্সেরই(Origin of existence) পার্সোনিফিকেশন। একদমই প্যান্থেইস্টিক। এজন্য মূর্খ নমঃশুদ্ররা ম্যাটেরিয়াল মূর্তি পূজা করলেও জ্ঞানীরা কাল্পনিক রিবার্থ এড়িয়ে মুক্তির জন্য ধ্যান তপস্ব্যায় শয়তানের সাথে নিজেদের যোগ করে। এসব আকিদা হলিউড ফাউন্টেইন, আই অরিজিন ইত্যাদি ফিল্ম দিয়ে বহুবার প্রমোট করেছে।

তো ওই ব্লগের কালোযাদুর উস্তাদের অন্যান্য মন্ত্রগুলোর কন্টেন্ট শুনলে অবাক হবেন। সরাসরি ইবলিসের পুরাতন নাম 'আযাযিলের' দোহাই দিয়ে এটা ওটা করে দেওয়ার জন্য আকুল আর্তি। সেই সাথে পাশাপাশি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালাকে অকথ্য ভাষায় গালি,অসম্মানজনক কিছু বলে বিদ্রোহ। অর্থাৎ সুস্পষ্ট কুফর। আবার কিছু স্পেলে শয়তানি কন্ডিশনাল বাক্য। যেমন কবিতার ছন্দে লেখা, যদি এই স্পেল না কাজ করে,তাহলে আল্লাহ অমুকের তুল্য [নাউজুবিল্লাহ]। অর্থাৎ যাদুকররা খুব ভাল করেই জানে, সব ক্ষমতার মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা। ওরা ভাল করেই জানে আল্লাহর আদেশ ছাড়া কারওই অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ বলেনঃ"..তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না..।[২:১০২]"
 ওরা শুধুই দুনিয়ার তুচ্ছ কিছু লাভের জন্য পরকালকে বিক্রি করে দেয়। কুফরি কথা বলে, বা এমন কন্ডিশনাল বাক্য বলে যাতে আল্লাহ ওদেরকে পরকালের(ইচ্ছাকৃতভাবে কুফরি করে ঈমান ত্যাগের জন্য) বিনিময়ে নগদে ফলাফল দিয়ে দেন। কিন্তু ওরা এর বিনিময়ে পরকালের সব হারায়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন,
" তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।"

পাশ্চাত্যেও উইক্কানরা বিচিত্র দেবতা,দেবীর(শয়তান) নামে মন্ত্র পড়ে রিচুয়াল গুলো করে। এগুলো যাদুর একটা বিশেষ শাখা যেখানে, শয়তানকে ইনভোক করা হয়, আর আল্লাহর নামে কুফরি কিছু বলা হয়, কার্যসিদ্ধির জন্য। শয়তানের নিজের ঐ ক্ষমতা নেই যে তার হুকুমে বস্তুর পরিবর্তন ঘটবে। আল্লাহই সব পরিবর্তন ঘটান।

ওই তান্ত্রিকের ব্লগের কতক স্পেলে আল্লাহর কাছেই আকুল ভাবে এটা সেটা চাওয়া, কোন শিরকি শব্দ নেই।
কিছু স্পেল  আবার সরাসরি ম্যাটারকে অমুক তমুক হয়ে যাবার জন্য  কমান্ড করা। কিছু স্পেল একদমই অর্থহীন ননসেন্স রাইম। এগুলো সবই যাদুর ভিন্ন ভিন্ন মাজহাব। পাশ্চাত্যে Sigil,Sympathetic,Chaos, Elemental,Knot,ভুডো ইত্যাদি সবই বিচিত্র পথ ও প্রক্রিয়া। এক কব্বালিস্ট র‍্যাবাই বলেন, কাব্বালা ন্যাচারের নীতি গুলোকে ডিফাইন করে, সেগুলোকে কিভাবে মানুষের কাজে লাগানো যায় সেসব সেখায়। তাদের কাছে এটা একটা বিশেষ জ্ঞান বা বিজ্ঞান। এলিস্টার ক্রোওলির কাছেও এটা আর্ট এ্যণ্ড সায়েন্স। রকেট উদ্ভাবক- যাদুকর জ্যাক পার্সন সবসময় কোয়ান্টাম মেকানিকস দিয়ে যাদুবিদ্যাকে ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করতেন। যাদুকর নিউটন এ্যাকশ্যন এ্যাট ডিস্ট্যান্স এর কারন খুজতে গিয়ে এর ব্যাখ্যায় ইথারের রিপ্লেসে গ্রাভিটি বসিয়ে অনেক দিন চুপচাপ থাকেন, এই ভয়ে লোকে আরেকটা যাদুর দিক বের করায় নিন্দা করবে। ক্রোওলি এ্যকশন এ্যট ডিস্টেন্স ডেমোন্সট্রেট করতে গিয়ে বন্ধুকে নিয়ে বাহিরে হাটার সময় দূরের লোককে নযর ও ইচ্ছার(ইন্টেন্ট) দ্বারা মাটিতে পর্যন্ত ফেলে দিয়েছিলেন।

আজকের আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্সে ব্যবিলনিয়ান মিস্ট্রি স্কুলের আকিদাগুলো ১০০% প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শয়তানি সমস্ত বিদ্যাকে গ্রীন সিগ্নাল দেওয়া হয়েছে। এসব বিদ্যাকে নতুন মোড়কে প্রকাশ করা হয়েছে। এজন্যই যাদুবিদ্যাভিত্তিক হিন্দু ধর্মের বেদ ফিজিসিস্টদের কাছে অগাধ জ্ঞানের সিন্ধু। বৌদ্ধ ধর্মই সবচেয়ে সায়েন্টিফিক দ্বীন আইনস্টাইনের চোখে।

শয়তান একটা বিরাট কাজ করতে সক্ষম হয়েছে। সেটা হচ্ছে ওদের যাদুবিদ্যাকেন্দ্রিক দর্শনগুলো থেকে সৃষ্টিকর্তার নিষ্প্রোয়জনীয়তা প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা বৈজ্ঞানিক রিডাকশনিজম থেকেই শুরু। অথচ মধ্যযুগীয় যাদুকররাও আল্লাহর হুকুমকে তাদের কারসাজির অনুমতিদাতা হিসেবে বিশ্বাস করত।আজ এরাই নিজেদেরকে রব মনে করে। প্রথমত এরা কোন কিছুর ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে সবর করে না, সরাসরি ফলাফল চায় এর উপর নিজেদেরকেই রব হিসেবে কল্পনা করে। আজকের কথিত (ব্যবিলনিয়ান) ফিজিক্স এই ইতিহাসের সর্বোনিকৃষ্টতম আকিদা ও কুফরের দিকেই উৎসাহিত করে। ওই দর্শন কেন্দ্রিক জীবনব্যবস্থাকেই সায়েন্টিফিক বলে। এজন্যই আজকে কোয়ান্টাম মিস্টিসিজমের বিপ্লব চলছে। মানুষ দলে দলে কোয়ান্টাম ম্যাথডে যোগ দিচ্ছে। কারন এটাই আজকে সায়েন্স অব লিভিং! এখনো বিষয় গুলো বোঝেন না?! প্রাচীন অকেজো বস্তুবাদী বিজ্ঞান থেকে বের হয়ে আসতে হবে, আপনাকে জানতে হবে কেন সার্নের ফিজিসিস্টরা নিজেদের এথিস্ট না বলে মহাঋষি মহাযোগী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটে যান। কেন, সার্ন ল্যাবের সামনেই নটরাজ শিবের মূর্তি! এগুলোই তো ছাইন্স!

1 Comments:

  1. ভাই র্সান গবেষণা সুইজারল্যান্ড আর নাসা গবেষণা আমেরিকা বিশেষ করে র্সান পজেক্ট নিয়ে আটিকেল লেখেন

    ReplyDelete