Thursday, April 2, 2020

১৬.বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?

পর্ব-১৬






সেই প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক ও যাদুহত্তপ্সর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত যাদুরবিদ্যা ও যাদুশাস্ত্রের বিবর্ধন এবং রূপান্তরের সুবিস্তৃত ইতিহাসকে কালানুক্রমে আজকের আলোচ্য বিষয় মহাকাশবিজ্ঞান। আপনি যেরূপ পৃথিবী ও আকাশের ব্যপারে জানছেন এবং সারাবিশ্বে এসংক্রান্ত তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত রূপে দেখছেন, মাত্র ৫০০ বছর আগেই এসবের কিছুই সাধারন মানুষের বিশ্বাসের জায়গায় ছিল না। ১৫০০ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজিক্যাল অর্ডারে পৃথিবী ছিল সমতল। আউটার স্পেস বলে কিছুর অস্তিত্ব কল্পনাতেই ছিল না জনসাধারনের। আজকের মহাবিশ্বের স্বরূপ প্রকৃতিগত ধারনা ও সৃষ্টিতত্ত্ব এর অস্তিত্ব হাজার বছর আগেও ছিল। কিন্তু সেটা ছিল শুধু যাদুশাস্ত্র এবং এর অনুসারী যাদুকর/দার্শনিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তারা গোপনে এই আকিদা রাখতো যে, পৃথিবী গোলাকার বলের ন্যায় যা শূন্যে ভেসে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাকাশ অনন্ত বিস্তৃত। ব্যবিলনীয়ান যাদুশাস্ত্রের অনুসারী  পিথাগোরাস- হাইপাথিয়াদের নিয়ে লেখা পর্বে এ নিয়ে উল্লেখ করেছিলাম। বাবেল শহরে জন্মানো ইহুদিদের যাদুশাস্ত্র কাব্বালায় তো হাজার হাজার বছর আগে পৃথিবীর বর্তুলাকারের ব্যপারে সরাসরি উল্লেখ আছে। মনে করতে সমস্যা হলে আপনাকে পুনরায় ২য় পর্বে ফিরে যেতে হবে।

গত ৫০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত বিকৃত শয়তানি আকিদা ছড়ায় নি এইজন্যে যে, তখন পর্যন্ত খ্রিস্টান এবং পরবর্তী মুসলিম শাসনের দ্বারা যাদুকররা নিষ্পেষিত ছিল। কিন্তু ৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে আরবে গ্রেসিয়-ব্যবিলনিয়ান অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউ ঢুকলে অনেক নামধারী মুসলিমরাই সেসবকে গ্রহন করতে শুরু করে। অনেক আলিম নবাগত কস্মোলজি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সেসবের পক্ষে ফতওয়া দিতে শুরু করেন। অনেক আলিম গ্রীক ফিলসফিরই বিরোধিতা করতেন! কিন্তু ironical ব্যপার হচ্ছে তাদের অনেকে গ্রীক কস্মোলজিক্যাল আইডিয়া গ্রহন করে নিয়েছিলেন। গ্রীক ফিলসফি আসার আগের  জিওসেন্ট্রিক সমতল বিশ্বব্যবস্থার ধারনায় ফাটল এখান থেকেই শুরু। এজন্য সাহাবীদের কস্মোলজিক্যাল আইডিয়া, তাদের থেকে আসা হাদিসসমূহ আজকের প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজির বিপরীত ধারনা দেয়। কুরআন সুন্নাহ আর মেইনস্ট্রিম মহাকাশ তত্ত্বের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। এজন্য অনেক দুর্বল বিশ্বাসীদের মনে কস্মোলজিক্যাল কনফ্লিক্ট এর বিষয়টি গভীরভাবে দাগ কাটে,অতঃপর দ্বীন ত্যাগের দিকে ধাবিত করে। আবার অনেক মুসলিম আজকের যুগে এসে দুই মেরুর(তাওহীদ ও ইত্তেহাদের) সাংঘর্ষিক  বিদ্যাকে একীভূত করতে চেষ্টা করেন আপোষ ও সমন্বয়ের দ্বারা। ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা ইতোপূর্বে শেষ হয়েছে[৫]। আরবের গ্রীক দর্শনকে গ্রহন অকাল্টিজমের(যাদুশাস্ত্রের) প্রসারের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়,কেননা ওই সময় গোটা বিশ্বের শাসনে মুসলিমদেরই সিংহভাগ কর্তৃত্ব ছিল। পরবর্তীতে আরবদের থেকে পাশ্চাত্যে অকাল্ট ফিলসফি পৌছায় এবং কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে সেসবই বিজ্ঞান নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।

রেনেসাঁ পিরিয়ডে আরব থেকে গ্রেসিয়-ব্যবিলনিয়ান আলকেমিক্যাল-কাব্বালিস্টিক কিতাবাদী পাশ্চাত্যে পৌছালে যাদুশাস্ত্রের এর নবজাগরণ ঘটে। মূলত এজন্যই ওই যুগকে রেনেসাঁ বা পূনর্জন্মের যুগ বলা হয়।অকাল্ট কস্মোলজিক্যাল ওয়ার্ল্ডভিউ তখনও রাতারাতি মেইনস্ট্রিমে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা(royal singular) বিগত পর্বে আলোচনা করেছি আইনস্টাইন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কদের অপবিদ্যার জ্ঞানগত প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের জন্য রয়্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে যাদুকরদের গুপ্তসংগঠন ফ্রিম্যাসন। আলকেমিস্ট নিউটন থেকে ফ্রান্সিস বেকন সকলেই ছিল ফ্রিম্যাসন এবং রয়্যাল সোসাইটির আদি প্রতিষ্ঠাতা। রাজনৈতিকভাবে সর্বময় কর্তৃত্ব তখনও তাদের হাতে ছিল না। রাজনৈতিকভাবে তাদের যাদুশাস্ত্রের অনুসরণকে রাষ্ট্রীয় এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার জন্য ১৫৪০ সালে ইগনেসিয়াস লয়োলা নামের এক crypto jew এর হাত ধরে গঠন করা হয় অর্ডার অব জেসুইট। জেসুইটরা ধর্মান্ধ খ্রিষ্টানদের মধ্যে কাব্বালিস্টিক অকাল্টিজম প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যাথলিকদের দ্বারা অর্ডার অব জেসুইট গঠিত হয় এবং সমগ্র পৃথিবীতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। এরাই সর্বপ্রথম এতকাল যাবৎ অকাল্টিস্টদের কাছে লুক্কায়িত হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি সারাবিশ্বব্যাপী প্রসার শুরু করে। এদিক দিয়ে দেখা যায়, আজ যারা হেলিওসেন্ট্রিক স্ফেরিক্যাল আর্থ বেজড কস্মোলজিতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এরা শুধু যাদুকরদের কুফরি আকিদাই গ্রহন করেনি, ক্যাথলিক মিশনারীর প্রচারণা দ্বারাও প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত। আইরনি হচ্ছে,নিজেরাই খ্রিস্টানদের প্রচারিত আকিদা বা বিশ্বাসের ফাঁদে পা দিয়ে উল্টো সমতল বিশ্বব্যবস্থার (জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি) কথাকে খ্রিস্টানদের চিন্তাধারা বলে নিন্দা করে! জেসুইটের মূল স্বপ্নই ছিল একটি অভিন্ন কস্মোলজিক্যাল আইডিয়ার উপর ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়নের প্রতিষ্ঠাকাজে সহায়তা করা,এবং সায়েন্টিফিক(ন্যাচারাল ফিলসফির) নলেজের প্রসারের মাধ্যমে যেকোন ডিভাইন বিলিভকে মুছে ফেলা। জেসুইট প্রিস্ট আলবের্তো রিভেরা অকপটে স্বীকার করেন। এ কাজে জেসুইট খুব সফল হয়, তাদের প্রচারনায় খুব দ্রুতই সমতল বিশ্বব্যবস্থার কস্মোলজিকে বিদায় জানানো হয়। চীন নাছোড়বান্দা হয়ে ১৭০০ সাল পর্যন্ত সমতল পৃথিবীর কস্মোলজি ধারন করলেও শেষ পর্যন্ত আর টিকে থাকতে পারেনি জেসুইটের চাপে। এভাবে মেইনস্ট্রিম থেকে জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিকে বিদায় দেওয়া হয়। সেই সাথে ধর্মবিমুখ  নাস্তিক্যবাদী চিন্তা দিনদিন বাড়তে থাকে। ফ্রিম্যাসন এবং হার্মেটিক ফিলসফার জোহানেস কেপলার ১৬৩৪ সালে চন্দ্রগমন নিয়ে সমনিয়ান(অর্থ স্বপ্ন) নামের একটি বই পাবলিশ করেন। সেই থেকে সাধারন জনগনের মধ্যে চন্দ্রগমনের ফ্যান্টাসি শুরু হয়। কেপলারের ব্যপারে বিগত পর্বে বিস্তারিত উল্লেখ করেছিলাম। কেপলার ছিল মিশরীয় হার্মেটিক যাদুশাস্ত্রের অনুসারী, তিনি তার বইয়ে হার্মিসের কথাকে সূর্যকেন্দ্রিক আকাশব্যবস্থায় বিশ্বাসের দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে আবারও সামনে উল্লেখ করব।

কোপার্নিকাসের চন্দ্র ভ্রমণের কল্পনা ও অকাল্ট বাসনাকে প্রকাশ করে লেখা বইয়ের পর ১৬৩৮ সালে ফ্রান্সিস গডউইন "দ্য ম্যান ইন দ্য মুন" প্রকাশ করেন। একই বছরে The discovery of a world in the moone নামের বইটি পাবলিশ করেন জন উইল্কান।এটি ইংল্যান্ডে নতুন এস্ট্রনমিক্যাল মডেলের ব্যপারে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর থেকে একে একে নতুন কস্মোলজিক্যাল অর্ডারের উপর লেখা বই বের হতে থাকে। মানুষও ব্রেইনওয়াশড হতে থাকে।
অতঃপর ১৯০২ সালে সর্বপ্রথম মুভি বের হয়,"A trip to the moon" । ব্যস এরপর থেকে একে একে ফিল্ম বের হওয়া শুরু হয় স্ফেরিক্যাল আর্থ/মুন ল্যান্ডিং নিয়ে। ১৯১২ সালে ইউনিভার্সাল পিকচার, নামের কোম্পানি ফিল্ম তৈরি শুরু করে যার শুরুতেই বর্তুলাকার পৃথিবীর এনিমেশন দেখানো হয়। পৃথিবীর আকৃতি কল্পিত স্পেসে গিয়ে ছবি তোলার কাহিনী বানিয়ে  অফিশিয়ালভাবে প্রকাশ করার প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে থেকেই তারা বর্তুলাকার(গ্লোব) পৃথিবীর প্রোপাগাণ্ডা শুরু করে। হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি ভিত্তিক ফিল্ম বার বার দেখানো হয়, এতে করে সবার অবচেতনে নতুন কস্মোলজি স্বাভাবিক হয়ে মাথায় গেঁথে যায়। এর ফলে যখন এই এজেন্ডার বৈজ্ঞানিক পরিষদ অফিশিয়ালভাবে ফিল্মে দেখানো ছবিকে বাস্তব বলে ঘোষণা দিলো, পুরোপুরি ব্রেইনওয়াশড হয়ে মেনে নিতে কারো আপত্তি থাকল না।  উপরন্তু সকলে আউটার স্পেস,চন্দ্র অভিযানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ১৯৩০ থেকে সাইন্সফিকশন কমিক বের হতে থাকে। এরপর ১৯৪৬ সালে এডমিরাল রিচার্ড ই বার্ডের নেতৃত্বে আমেরিকা এন্টার্কটিকায় অভিযান চালায় মিলিটারি বেজ স্থাপন করে গবেষণা ও তাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পরীক্ষানিরীক্ষার নাম করে। এর নাম দেয় অপারেশন হাইজাম্প। ফিরে এসে এডমিরাল বার্ড এক সাক্ষাৎকারে  বলেন, দক্ষিন মেরুতে আমেরিকার মত বিশাল অদেখা ভূখণ্ড আছে। সে ইন্টারভিউ এখনও অনলাইনে রয়েছে। ১৯৫৫ সালে আবারো একই উদ্দেশ্যে ২য় বারের মত দক্ষিনমেরুতে অভিযানে যায়, এর নাম দেয় 'অপারেশন ডিপফ্রিজ'। নাসা প্রতিষ্ঠিত হবার ঠিক তিন বছর আগেই ১৯৫৫ সালে Walt Disney স্পেস নিয়ে প্রপাগাণ্ডা ফিল্ম প্রকাশ করে Man in Space নামে[১]। এতে বলা একটি বাক্য এরূপ- স্পেসে অন্যান্য জগতে যাওয়া মানুষের প্রাচীনতম স্বপ্ন, যা কিছুদিন আগেও অসম্ভব মনে হত। কিন্তু নতুন আবিষ্কার স্পেস ট্রাভেলের নতুন ফ্রন্টিয়ারে পৌছে দিচ্ছে। সেই প্রোপাগাণ্ডা ফিল্মে হাতে রকেটের প্রতিকৃতি নিয়ে মানুষকে আরো কল্পনার সাগরে ভাসানো হয়। ঠিক তিন বছর পরে ১৯৫৮ সালে মহাকাশ সংস্থা নাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।ঠিক ঐ বছরেই ইউএস মিলিটারি, জেট প্রপালশন ল্যাব-JPL নাসায় নিয়ে আসে।জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক পার্সন্সকে নিয়ে লিখতে গেলে আইজ্যাক নিউটনের মত আলাদা আর্টিকেল করতে হয়।যাহোক,  খুব সংক্ষেপে লিখতে চাই। জেট প্রপালশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক পার্সন্স ছিলেন স্বঘোষিত শয়তানের পূজারী এবং এ্যালিস্টার ক্রোওলির ঘনিষ্ঠ সহচর। তিনি অর্ডো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস নামের আরেকটি অকাল্টিস্টদের সিক্রেট সোসাইটিতে যুক্ত ছিলেন। তার আসল পরিচয় হলো একজন স্যাটানিস্ট এবং উচুমানের অকাল্টিস্ট(যাদুকর)। তাকে শুধুমাত্র সাধারন মিস্টিক বা ফিলসফার বললে ভুল হবে।আকাশে রকেট চালনার প্রপালশন সিস্টেমের আবিষ্কারক তিনিই।যাদুচর্চা, শয়তানের আরাধনা ছিল জ্যাক পারসনের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার। জীবনের শুরু থেকেই তার যাদুবিদ্যা ও শয়তানের পূজার দিকে খুব ঝোক ছিল।১৯২৮ সালে তিনি সর্বপ্রথম নিজের বেডরুমে শয়তানকে আসার আহব্বান করে রিচুয়াল শুরু করেন। তিনি এতে সফল হন। তিনি শয়তানকে তার রুমে আসতে দেখে ঘাবড়ে যান, এরপর এ কাজ থেকে বিরত থাকেন। উইকিপিডিয়ায় এসেছেঃ"Parsons had also begun to investigate occultism, and performed a ritual intended to invoke the Devil into his bedroom; he worried that the invocation was successful and was frightened into ceasing these activities."[উইকিপিডিয়া]

পরে দীর্ঘ সময় পর এলিস্টার ক্রোওলির সাথে সম্পর্ক হয়।  শয়তানের পূজারী এলিস্টার ক্রোওলি মিশর গিয়ে আইওয়াশ নামের এক শয়তানের থেকে দীক্ষা লাভ করে লিখে ফেলেন বুক অব 'ল। সেটা থেকেই ১৯০৪ সালে থেলেমা নামের শয়তানের পূজা এবং যাদুবিদ্যার ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে। জ্যাক পার্সন্স এলিস্টার ক্রোওলির শয়তানি ধর্মকে গ্রহন করে সবসময় পাশে থাকতে শুরু করেন। থেলেমাইক অর্দো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস গঠন করা হলে পার্সন্স তার স্ত্রী হেলেনকেও যাদুবিদ্যা শয়তানের অর্চনায় উৎসাহ করতে থাকে। তারা থেলেমাইক লজে যেতেন। পার্সন্সের পরকীয়ার জন্য তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে যায়। এরপর পার্সন্স নিয়মিত ব্যভিচার, কোকেন, মারিজুয়ানার মধ্যে ডুবে যান। পারসন্স তার আয়ের প্রায় সবটাই ক্রোওলিকে দিতে শুরু করেন। দুজন মিলে সবধরনের যাদুবিদ্যার চর্চা করতেন। এতে থাকতো বিচিত্র রিচুয়াল। যেমন সেক্স রিচুয়াল। একবার এক ১৬ বছর বয়সী কিশোর অভিযোগ করে যে তার সাথে O.T.O লজের সবাই জোরপূর্বক সমকামিতায় লিপ্ত হয়। এক গর্ভবর্তী  মহিলাকে নগ্নাবস্থায় আগুনে ফেলার অভিযোগে পুলিশি ঝামেলায় জড়ান। পার্সন্স বিশ্বাস করতেন থেলেমাইক যাদুবিদ্যাকে কোয়ান্টাম ফিজিক্স দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব[৪০]।তার এ চিন্তা আসলে মোটেও অমূলক নয়, কেননা কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিজেই সরাসরি অকাল্টের বৈজ্ঞানিক সংস্করণ,বিস্তারিত ১৭ ও ১৮নং পর্বে আলোচনা হয়েছে। পার্সন্স থেলেমার সব ধরনের শয়তানি অর্চনার পাশাপাশি কাব্বালার সংখ্যাতত্ত্বেরও চর্চা করতেন।

জ্যাক এবং এ্যালিস্টার ক্রোওলি মিলে "অমলন্ত্র রিচুয়ালের" মাধ্যমে ইন্টারডাইমেনশনাল পোর্টাল খুলবার শক্ত দাবি পাওয়া যায়। অর্থাৎ ত্রিমাত্রিক জগতে শয়তানের অবাধ বিচরনের জন্য কথিত আছে যে, দুই জগতের মধ্যবর্তী দুয়ার খুলে দেওয়া হয়, পরবর্তীতে  ইউএফও/ফ্লাইং সসারের আনাগোনা ব্যপক হারে বৃদ্ধি পায়। এ দাবি Kenneth Grant থেকেও আছে। কথিত এ দুই ডাইমেনশনের দুয়ার উন্মুক্ত করার স্যাটানিক অর্চনার রিচুয়ালকে তারা নাম দেয় "ব্যাবিলন ওয়ার্কিং[৪২]"! ক্রোওলি এবং পার্সন্স প্যান ও ল্যাম নামের দুই শয়তান জ্বীনের সাথে যোগাযোগ করে। এই শয়তানি রিচুয়াল তথা শয়তানদেরকে ত্রিমাত্রিক জগতে আহব্বানের কাজে পাশে ছিলেন চার্চ অব সায়েন্টলজির প্রতিষ্ঠাতা এল.রন হাবার্ড। যদিও এগুলো শয়তানের পূজা,যাদুবিদ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট দেখা যাচ্ছে তবুও এই মহান বিজ্ঞানীদের সম্মানে আমাদেরকে তাদের কাজকে সায়েন্টিফিক এক্সপেরিমেন্ট হিসেবেই দেখা উচিত। তার ব্যপারে জ্যাক পার্সন্স ক্রোওলিকে লেখেন,"যদিও হাব্বার্ডের যাদুবিদ্যায় কোন ফর্মাল প্রশিক্ষণ নেই তার এ ক্ষেত্রে অসাধারণ রকমের অভিজ্ঞতা এবং বোধ রয়েছে।তার কিছু অভিজ্ঞায় আমি অনুমান করছি তিনি হায়ার ইন্টেলিজেন্স সম্ভবত গার্ডিয়ান এঞ্জেল দ্বারা সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। তিনিই হলেন সবচেয়ে বড় থেলেমাইক লোক যাকে সবচেয়ে আমাদের নীতিতে নিষ্ঠাবান হিসেবে পেয়েছি।"

পার্সন্স রাজনৈতিক দিক দিয়ে মার্ক্সবাদী ছিলেন। এলিস্টার ক্রোওলির সাথে যোগ দেয়ার আগে প্রথমদিকে হেলেনা ব্লাভাস্তস্কির থিওসফিক্যাল সোসাইটির বেশ সখ্যতা ছিল। প্রায়ই জিদ্দুকৃষ্ণমূর্তির বক্তৃতা শুনতে থিওসফিক্যাল সোসাইটিতে যেতেন। এরপরেই এগ্যাপি নামের নিউইয়র্কের একটি থেলেমা ধর্মের লজে যোগ দেন। তিনি এত বেশি যাদুচর্চা করতেন যে, তাতে লজে জ্বীন শয়তানদের উপদ্রব বাড়তে থাকে। সেসব শয়তান অন্য সদস্যদের ক্ষতি করে কিনা এই আশংকায় ছিল তারা।Jane Wolfe নামের এক O.T.O মেম্বার ক্রোওলিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন,"আমাদের জ্যাক Witchcraft,  houmfort, voodoo প্রভৃতি চর্চায় মোহিত হয়ে আছে।শুরু থেকেই তিনি কিছু একটাকে আহব্বান(ডাকছেন) করছেন- সেটা যাই হোক, আমি ততদিন পর্যন্ত চিন্তিত হয়ে থাকব যতদিন না তিনি কোন ফলাফল পান।"[৩৯]।জ্যাক পার্সন্সের অন্য এক সতীর্থ ক্যামেরন বলেছেন যে তিনি পার্সন্সের কাছে ইউএফও দেখেছেন[৪১]। এলিয়েন নিয়ে সামনে বিস্তারিত আসছে।

পার্সন্স যখন এক সময় বৈজ্ঞানিক ক্যারিয়ার গড়তে একটু অসুবিধায় পড়লেন এবং দাম্পত্যের টানাপোড়েনে পড়লেন, তিনি আবারো অকাল্টিজমে ফিরে গেলেন। এবার তিনি sex ritual পালন করতে শুরু করলেন থেলেমাইক মিস্টিসিজমে তথা সকল যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক দর্শনে উল্লিখিত ব্রহ্মচৈতন্যে বিলীন হবার জন্য। এ চেষ্টাকে তিনি বলেছেন, the Crossing of the Abyss"। এ কথা উইকিপিডিয়াতেও এসেছেঃUnable to pursue his scientific career, without his wife and devoid of friendship, Parsons decided to return to occultism and embarked on sexually based magical operations with prostitutes. He was intent, informally following the ritualistic practice of Thelemite organization the A∴A∴, on performing "the Crossing of the Abyss", attaining union with the universal consciousness, or "All" as understood in Thelemic mysticism, and becoming the "Master of the Temple".
[উইকিপিডিয়া]

জ্যাক পার্সন্স স্বপ্নে এক মহাশক্তিধর ব্যক্তিকে দেখেন; যিনি তাকে অনুপ্রাণিত করছিলেন তার উদ্ভাবনী চেতনাকে,যিনি তাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন অপবিজ্ঞান ও যাদুবিদ্যাকে মিলিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য। এই মহান ব্যক্তির কথা তিনি তার লিখিত কিতাবেও উল্লেখ করেন। তিনি তাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তার নাম উল্লেখ করেন "বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল"। পার্সন্স ছিলেন আব্রাহামিক ধর্মগুলোর চরম বিদ্বেষী। দাজ্জাল নামের পাশাপাশি বাবালন নামের আরেক শক্তিধর সত্তার কথা তিনি একটি বইয়ে উল্লেখ করেন যে তিনি পৃথিবীতে এসে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর কর্তৃত্ব রহিত করার পিছনে কাজ করবে । উইকিপিডিয়া যা সরাসরি উল্লিখিতঃAccompanying Parsons' "Oath of the Abyss" was his own "Oath of the AntiChrist", which was witnessed by Wilfred Talbot Smith. In this oath, Parsons professed to embody an entity named Belarion Armillus Al Dajjal, the Antichrist "who am come to fulfill the law of the Beast 666 [Aleister Crowley]".[131] Viewing these oaths as the completion of the Babalon Working, Parsons wrote an illeist autobiography titled Analysis by a Master of the Temple and an occult text titled The Book of AntiChrist. In the latter work, Parsons (writing as Belarion) prophesied that within nine years Babalon would manifest on Earth and supersede the dominance of the Abrahamic religions.
[উইকিপিডিয়া]

তিনিই সর্বপ্রথম রকেটসায়েন্টিস্ট। তার কথায় বোঝা যায় 'dajjal' নামের কারো অনুপ্রেরণা ও শিক্ষার দ্বারা রকেট আবিষ্কার করেন এবং কথিত মহাকাশ বিজয়ের পথ উন্মোচন করে ফাদার অব স্পেস এজ খেতাব অর্জন করেন।পার্সন্স পরবর্তীতে ইজরায়েলের রকেট রিসার্চ প্রোগ্রামে কাজ করতেন। পার্সন্স মাত্র ৩৭ বছর বয়সে রহস্যজনকভাবে মারা যায়। বিজ্ঞান তার ঋণ শোধ করতে পারবে না। তার সম্মানে চাঁদের একটি খাদের নাম তার নামে রাখা হয়েছে।

[তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া]

বিস্তারিতঃ
wikipedia.org/wiki/Jack_Parsons_(rocket_engineer)


মহান বিজ্ঞানীগন যাই করেন সেটাই সাইন্স! হোক সেটা যাদুচর্চা কিংবা শয়তান বা দাজ্জাল পূজা। পার্সন্সের স্পেস এইজ এর পিতা না বলে দাজ্জালি যুগের অন্যতম পিতা বললে বোধহয় সবচেয়ে ভাল হয়। বস্তুত, আউটার স্পেস এবং সর্বোপরি গোটা হেলিওসেন্ট্রিক  সৃষ্টিতত্ত্বই বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জালের জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যাইহোক, এবার সামনে যাওয়া যাক।    নাসা প্রতিষ্ঠার পরের বছর ১৯৫৯ সালে অ্যান্টার্কটিক ট্রিইটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়, ১৯৬১ সালে কার্যকর হয়। এই ট্রিইটির মূল উদ্দেশ্য ছিল, সাধারন জনগন যাতে অজানা কারনে কোন গাইড ছাড়া ওই স্থান না অতিক্রম করতে পারে। গাইড নিয়ে গেলেও যাতে তাদের ভ্রমন নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ এলাকার মধ্যে থাকে। ১৯৬২ সালে "অপারেশন ফিশবৌল" শুরু করে। হঠাৎ করে নিউক্লিয়ার অস্ত্রগুলো আকাশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। একই বছর জেএফকে ঘোষণা করেন,"We choose go to the moon"।জ্যাক পারসনস পৃথিবীর বাহিরে যাওয়া তথা কথিত স্পেস ট্রাভেলের সম্ভাবনার দরজা খুলে দেন রকেটের প্রপালশন সিস্টেম আবিষ্কার এর দ্বারা,এজন্য তাকে father of space Age বলে ডাকা হয়।
১৯৬৬ সালে "লুনার অর্বিটার ১" সর্বপ্রথম স্পেস থেকে পৃথিবীর প্রথম অফিশিয়াল ছবি প্রকাশ হয়(ডানের চারটি ছবির প্রথমটি)। এরপর ১৯৬৮ সালে এ্যাপোলো ৮ ২য় ছবিটি প্রকাশ করে। এরপরই ১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মত চন্দ্রগমনের নাটকটি করে। নাটক বলবার কারন শীঘ্রই বুঝবেন। এ্যাপোলো ১১ নভোযানে প্রথম চাঁদে মানুষের অবতরণের নাটকেও পৃথিবীর ছবি(৩য়টি) প্রকাশ হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, তাদের নাটকের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল গোলক পৃথিবীর বিশ্বাসকে প্রমাণ করা। সেই সাথে হেলিওসেন্ট্রিজম, আউটার স্পেসের চিন্তাকেও সত্য বলে প্রমাণ করা। অবশেষে, ১৯৭২ সালের শেষ চন্দ্রযাত্রায় নাসা চার নং ছবির blue marble টি প্রকাশ করে। ব্যস, পৃথিবী সমতল নয় বরং গোলাকার(প্রমাণিত)। যদিও দুঃখজনক সত্য যে আজ পর্যন্ত যমীনে কার্ভাচারের অস্তিত্বের প্রমাণ খুজে পাওয়া যায় নি। এর দ্বারা ১৯০০ সালের শুরু দিয়ে চলা ইউনিভার্সাল পিকচার ফিল্মের শুরুতে দেখানো ছবির অনুমানই সত্য,সমস্ত যাদুকরদের আকিদাগত অবস্থান সঠিক। বরং আসমানী কিতাবসমূহের অনুসারীদের অবস্থান ভুল। বিবর্তনবাদের বিরোধীদের বিশ্বাস ভুল। এরপর থেকে চাদে যাওয়া নিয়ে একে একে গল্পের বই বের হতে থাকে। মিউজিক ভিডিও গুলোতে স্পেস ট্রাভেল,চাদে গমন নিয়ে গান বাজতে থাকে। পত্র পত্রিকা, প্রাতিষ্ঠানিক বইপুস্তকে সায়েন্টিফিক নিউ ডিস্কোভারি সদর্পে প্রচার চলতে থাকে। এভাবেই পঞ্চাশ বছর যাবৎ চলছে। আজ আরো জটিল অবস্থা। হলিউডের অধিকাংশ ফিল্মের প্লট এলিয়েন ইনভ্যাশন আর স্পেস ট্রাভেল নিয়ে। মার্ভেল কমিকের সুপারহিরোদের ফিল্মগুলোও স্পেসবেজড।এভাবেই চলছে। আজ সকলের প্রশ্নাতীত বিশ্বাস- দুনিয়া বর্তুলাকার এবং সূর্যের চারপাশে সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার গতিতে ঘুরছে!!! মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল। এখনো সব কিছু অনন্তে ছুটে চলছে, এসব শুরু হয়েছিল বিগব্যাং এর পর দিয়ে। ওরাই তখন থেকে টিভিশোতে হাজার বার বলত,"Math, science , history, unraveling the mystery . That all started  with the big bang !"

ক্যাথলিক প্রিস্ট লেমাইত্রের বিগব্যাং থিওরিটি আরো বড় কুফরি আকিদার ভিত্তিমাত্র।এর উপরেই গোটা আউটার স্পেসবেজড বিবর্তনবাদী কস্মোলজিক্যাল মিস্টিসিজমের সূত্রপাত।আজকের প্রজন্ম শুধুমাত্র এজন্যই এসব বিশ্বাস করে যে, তারা শৈশব থেকে চোখের সামনে টিভি,পত্রিকা,বইপত্রে এসব দেখে ও পড়েই বড় হয়েছে। প্রকৃত সত্য এখন তাদের কানে পাগলাটে এবং উদ্ভট শোনায়। অর্থাৎ তারা ব্রেইনওয়াশড। যদিও ওরা যা বলে তার পর্যবেক্ষণযোগ্য প্রমান নেই এবং সেসব শয়তানি রিচুয়ালিস্টিক কাল্টের ফসল, এরপরেও তাতেই অধিকাংশ অন্ধ বিশ্বাস করে। যে আউটার স্পেস(অনন্ত মহাশূন্য) শব্দ ও ধারনাটি ১৮৭৫ সালের পূর্বে ছিলই না, সেটা আজকে চিন্তা গবেষণা,চিত্তবিনোদন ও শিক্ষার বিষয়! অথচ আপনি কি জানেন, ভ্যাকুয়াম আউটার স্পেস বা মহাশূন্যে রকেট আদৌ চলতে সক্ষম কিনা?
জ্বিনা,একদমই না। ভ্যাকুয়ামে রকেটের প্রপালশন সিস্টেম কাজ করে না। সুতরাং ওরা আজ যাই দেখায় সবই হাস্যকর পর্যায়ের মিথ্যাচার এবং ধোকা ছাড়া আর কিছুই না[৬]।সবচেয়ে অদ্ভুত এবং হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, আজকের দিনে এসে নাসার একাধিক এস্ট্রনমার বলছেন, তারা আজ পর্যন্ত লো আর্থ অর্বিটই অতিক্রম করেন নি! এক এ্যাস্ট্রনমার স্পেস স্টেশন(হলিউডের বেজমেন্ট) থেকে বলছিল, "এই মুহূর্তে আমরা শুধুমাত্র পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করতে পারি, এটাই সর্বোচ্চ সীমা যে পর্যন্ত আমরা যেতে পারি!" অপর আরেক এস্ট্রনমার তথা স্পেস অভিনেতা বলেন," বর্তমানে আমরা স্পেস স্টেশনে বসে যেসব প্রযুক্তির উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছি সেসব আমাদেরকে ভবিষ্যতে 'লো আর্থ অরবিট' অতিক্রমের লক্ষ্যকে পূরণ করবে। এবং আমি মনে করি এটা হবে মানবজাতির জন্য এক মহাসূচনা যে তারা লোআর্থ অর্বিট অতিক্রম করবে।"[৭]

এর মানে কি!!? অর্থাৎ, তারা কখনোই low earth orbit অতিক্রম করেনি! চাঁদে যেতে হলে অবশ্যই লো আর্ত অর্বিট অতিক্রম করতে হবে। তাহলে চন্দ্র অভিযানের নামে যা দেখানো হলো সেসব কি??
সোজা উত্তর হচ্ছে, নাটক! এ কথা রেখেই তারা সরাসরি গান বানিয়েছে আমজনতার এই হাস্যকর বিশ্বাসকে বিদ্রুপ করেঃ"Space may be the final frontier but it's made in a Hollywood basement .. "[৪]
অর্থাৎ এই স্পেস হয়ত (ধোকাঁর) শেষ সীমান্ত যা কিনা হলিউড বেইজমেন্টে তৈরি!
তার মানে চন্দ্র অভিযান ছিল শুধুই কেপলার,কোপার্নিকাস ও যাদুকরদের প্রাচীন স্বপ্নের উপর করা নাটক!এজন্যই এতক্ষন একে নাটক বলছি।আরেক নাসা এস্ট্রোনমার (ডন পেটিট) বলেন, তাদের কাছে অর্ধশতাধিক বছরের পুরোনো চাদে যাওয়ার প্রযুক্তি এখন আর নেই। আর এ যুগে সেটা পুনঃনির্মাণ খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়! আরেকজন বলছেন, চাদে গমনের কোন প্রকার তথ্য প্রমানই তাদের হাতে নেই!!! অ্যাস্ট্রোনমার ডন পেটিট বলেনঃ"আমি চাঁদে কয়েক ন্যানো সেকেন্ডে যেতে পারতাম, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের হাতে আর সেই প্রযুক্তি নেই যেটা আগে ছিল। আমরা সেটাকে ধ্বংস করে ফেলেছি।এবং এটা খুবই কঠিন কাজ পুনরায় তৈরি করা।"
নাসার হেডকোয়ার্টারের অপর এক এস্ট্রনমার বলেনঃ"আমি এখন আর ওই প্রযুক্তির কোন ডাটা খুজে পাই না, যা আগে ছিল। ওই যন্ত্রগুলো আর নেই, পুরনায় কাজ করার জন্য।"

আরেকজন বলেন, "আমি জানি না ওইসব নথি গুলো কই। এবং এও বলতে পারি না সেসব আদৌ আছে কিনা।"[৭]
এবার বুঝুন, এরা বলছে ৬০ -৭০ বছর আগের প্রযুক্তি আরো উন্নত ছিল যা এখন নেই!!!! সে যন্ত্রাংশ সংক্রান্ত কোন তথ্যই নাকি নেই। এগুলা পুনরায় তৈরি নাকি খুবই কষ্টের! আজ আমরা ২০২০ সালে দাড়িয়ে এ কথাগুলো শুনছি। তারা ওই সময়ের প্রযুক্তিকে আরো উন্নত বলছে যখন মোবাইল ফোনই ছিল না!! আমরা দেখছি দিন যতই সামনে আগাচ্ছে প্রযুক্তি ততই উন্নততর হচ্ছে। কিন্তু এরা বলছে উল্টোটা! এই উল্টো কথার ব্যাখ্যা হচ্ছে কেউই  কখনো লো আর্থ অর্বিটই অতিক্রম করেনি, যেমনটা নাসার এস্ট্রনমারগনকে বলতে দেখলেন, চাঁদে যাওয়া তো বহু দূরের হিসাব। নাসার এ্যাপোলো ১২ এর এ্যাস্ট্রোনট এ্যালান বিনকে ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট অতিক্রমের বিষয় প্রশ্ন করা হয়েছিল, যেহেতু চাঁদে যেতে সেটাকে অবশ্যই অতিক্রম করতে হয়ঃ
"প্রশ্নকর্তাঃ কোন ধরনের বাজে অনুভূতি হয়েছিল ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট অতিক্রমের সময়?
এ্যালান বিনঃ না, আমি নিশ্চিত নই যে আমরা অত দূর পর্যন্ত গিয়েছি যার জন্য ভ্যান এ্যালেন বেল্টকে অতিক্রম করতে হবে। হয়ত আমরা অতদূরই যাইনি। আমি এও জানিনা ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট এর দূরত্ব কোথায়।
প্রশ্নকর্তাঃ ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট পৃথিবীর উপরে ১০০০-২৫০০০ মাইল দূরত্বব্যাপী বিস্তৃত।
এ্যালেন বিনঃ (হেসে) ও আচ্ছা তাহলে আমরা এটাকে ভেদ করে গিয়েছি,কিন্তু কোনধরনের রেডিয়েশন টের পাইনি। কেউ হয়ত বলবে আমরা ভেতরে ছিলাম অথচ টের পাইনি কি করে! আমরা ভেতর থেকে রেডিয়েশন জাতীয় কিছুই টের পাইনি। আসলে আমাদের মিশনের সময় ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্টের অস্তিত্ব আবিষ্কৃতই হয়নি।"[৭]

দেখলেন, কিরূপ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য! একবার বলছে, আমরা অতদূর যাইইনি। তারা জানেই না ওরকম কোন রেডিয়েশনের অস্তিত্ব ওখানে ছিল। এরপর ডিস্টেন্স জেনে বলছে গিয়েছি কিন্তু কিছুই অনুভব হয়নি। তাদের সময় এসবের ব্যপারে কিছুই জানত না। হাস্যকর ব্যপার হচ্ছে নাসা এখনো ভ্যান এ্যালেন বেল্টকে ভেদ করতে সক্ষম নভোযান তৈরি করতে পারেনি, এখনো অরিয়ন নামের মহাকাশযান তৈরির কাজ চলছে, সেখানে ভাঙ্গাচোরা এ্যানালগ প্রযুক্তির যুগে তাদের নভোযান সেই রেডিয়েশন বেল্ট ভেদ করে গিয়েছিল,কেউ টেরও পায়নি!! তার দাবি অনেকটা এরকমঃ ধরুন, কেউ পাতলা টিন দিয়ে একটা গাড়ি তৈরি করলো,সেটায় কিছু যাত্রী এমন এক অন্ধকার পথে যাবে যার সামনে কি আছে বা না আছে কেউ কিছু জানে না। ওই পথে মোটা লোহার সুউচ্চ ব্যারিকেড ছিল। সেটাও গাড়ির নির্মাতা,চালক কেউই জানত না। এরপর তারা ওই অন্ধকার পথে রওনা করে, কিছু দিন পর ফিরে এসে দাবি করে, তারা গন্তব্য থেকে ঘুরে এসেছে কোন কিছুতে ধাক্কাও লাগেনি। কেউ কিছু অনুভব করে নি!! তখন জানানো হয় ওখানে লোহার মজবুত বেষ্টনী ছিল!

এবার বলুন, কেউ কি তাদের গন্তব্যে যাবার দাবি মেনে নেবে? চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় তারা কেউই যায়নি। যদি ভিডিও বা ছবিও দেখায় তবে তা বানোয়াট। এজন্যই এখন নাসা বলছে তাদের ওই বাহনের প্রযুক্তির কিছুই এখন নেই, নাসার নথিতে কোন তথ্যও নেই সেটার ব্যপারে! না থাকাটাই স্বাভাবিক, এল্যুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে লোহালক্কড় মুড়িয়ে, 'হলিউডের বেজমেন্টে' ভিডিও বানিয়ে প্রচার করলে সে যন্ত্র বা প্রযুক্তির কিছুরই ডকুমেন্টস থাকবে না। Outer space বা চন্দ্রভ্রমণের মিথ্যাচারীতা নিয়ে অনেক রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আছে, হাজারো প্রমাণ আছে, যেহেতু পৃথিবী ত্যাগের বা  আকাশের দরজাভেদের কথাই প্রমাণ করতে পারছে না, তাই সেসব হাজারো তথ্যপ্রমাণ উল্লেখের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।আসল বিষয় হলো আউটার স্পেস, চাদে-গ্রহে ভ্রমন শুধু হলিউড আর কল্পনাতেই সম্ভব, কেননা এসবের বাস্তব অস্তিত্ব আদৌ নেই। আউটার স্পেস,গ্র‍্যাভিটি, হেলিওসেন্ট্রিজম একদম মিথ্যা।  সত্যিকারের সৃষ্টি যাদুকরদের কল্পনার মত নয়। বরং ঐরূপ, যেমনটি আসমানি কিতাব সমূহে আছে।যাইহোক, এত সব নাটকের দ্বারা ওদের এক বড় উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে- সেটা হচ্ছে, Outer space, Heliocentric Astronomy এবং spherical earth(বর্তুলাকার পৃথিবী) তত্ত্বে সবাইকে কঠিনভাবে ব্রেইনওয়াশ। এখন আর কেউই সন্দেহ করেনা। অনেক অল্প খরচেই ছবি আর ভিডিও বানিয়েই এটা করতে সক্ষম হয়েছে।

যাইহোক, আপনি যদি একজন মেইনস্ট্রিম কস্মোলজিতে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তবে এটা অবশ্যই অপ্রিয় সত্য যে,আপনার এরূপ বিশ্বাসের দলিল হচ্ছে হলিউডের কিছু মুভি,যাদুকরদের প্রাচীন দর্শন, কেপলারের চাদে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে লেখা উপন্যাস এবং স্পেস নিয়ে লেখা অন্যান্যদের সায়েন্স ফিকশন গল্প,কমিক, মিউজিক ভিডিও, এনিমেশন এবং ফটোশপে তৈরি কিছু ছবি ইত্যাদি। কতটা হাস্যকর 'বিশ্বাস'!আজকে এই বিশ্বাসগত দীনতা নিয়ে মানুষ নিজেদের স্মার্ট ভাবে। অনেক জ্ঞানী মনে করে। অন্যদিকে অবজ্ঞা করে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার বলা সৃষ্টিতত্ত্বে।এরা আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে বিকৃত ধারনা রাখে। এরা যাদেরকে(স্পেস এজেন্সি) বিশ্বাস করে এরা মূলত ফ্রিম্যাসনিক অকাল্ট এজেন্সি! এসবের প্রত্যেক প্রবক্তারা ছিলেন যাদুকর, গুপ্তসংগঠনের শয়তান কিংবা দাজ্জালের উপাসক! স্পেস এজের জনক জ্যাক পার্সন্সই ছিলেন একজন শয়তানের উপাসক, যাদুকর। পৃথিবীর সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত এলিস্টার ক্রৌলির সতীর্থ। এরা যা বলে বা দেখায় তা বিজ্ঞান নয় বরং অপবিজ্ঞান।

আজকের মহাকাশতত্ত্ব প্রাচীন প্যাগান দ্বীনগুলোর একরকমের রূপক এম্বডিমেন্ট,যেগুলোয় সূর্যকে দেবতার আসনে রেখে পূজা করা হয়। এজন্যই আজ পাঠ্যপুস্তকে সমস্ত শক্তির মূল বা উৎস হিসেবে সূর্যকে লেখা হয়।'হেলিওসেন্ট্রিক' শব্দটাই মুশরিকদের আকিদা নির্ভর। যেখানে সানগড হেলিওর[২] অর্চনা করা হয়। বিভিন্ন রিলিজিয়াস ও স্পিরিচুয়াল ট্রেডিশনে সূর্যদেবের অবস্থান খুবই তাৎপর্যপূর্ন। প্রাচীন মিশরীয় পৌত্তলিকদের সানগড ছিল হোরাস। এসবের সাথে আজকের মাসূনীদের সংযোগ পাওয়া যায়। অর্থাৎ এগুলো পরিশেষে দাজ্জাল বা আসন্ন মিথ্যা মসীহের কাছে গিয়ে শেষ হয়। আপনি কি জানেন হেলিওসেন্ট্রিক মডেলের অন্যতম পথিকৃৎ কোপার্নিকাস সূর্যের ব্যাপারে কি ধারনা রাখতো? তিনি যাদুশাস্ত্রের হার্মেটিক ট্রেডিশনের অনুসারী ছিলেন।এজন্য তিনি সূর্যের অবস্থানের যথার্থতা আরোপের জন্য হার্মিস ট্রিস্মেজিস্টাসের রেফারেন্স দেন। তিনি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত তার এক গ্রন্থে বলেন, "সবার ঠিক মাঝখানে সিংহাসনে উপবিষ্ট সূর্য। সবচেয়ে সুন্দরতম মন্দিরে উপবিষ্ট সূর্যকে কি আমরা এরচেয়ে ভাল কোন স্থানে বসাতে পারি, যেখান থেকে সর্বদিকে আলো ছড়াবে? তাকে 'আলো,মন,মহাবিশ্বের শাসক' নাম গুলো দ্বারা সঠিকভাবেই ডাকা হয়। হার্মিস ট্রিসমাজিস্টাস সূর্যকে বলতেন 'দৃশ্যমান ঈশ্বর' সফোক্লিস -ইলেক্ট্রা একে বলতেন সর্বদ্রষ্টা'। তাই সূর্য তার রাজকীয় সিংহাসনে বসেন, সেখান থেকে তার সকল সন্তানঃ গ্রহদের শাসন করেন যারা তাকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে।"

আশা করি, মুশরিকদের হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিক্যাল আকিদা এখন আরো স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করছেন। 'হেলিও'সেন্ট্রিক স্ফেরিক্যাল আর্থ বেজড কস্মোলজি স্বতন্ত্র প্যাগান ধর্মেরই আংশিক বিশ্বাস। আজকে ওসব মুশরিক যাদুকর ও পৌত্তলিকদের বিশ্বাসটিই প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজি। এরা যে অসত্য শিরকি বিশ্বাসকেই জোর করে সত্য বলে প্রচারণা চালায়, এর প্রমান হচ্ছে ওদের নিজেদের প্রচারিত তত্ত্বগুলোর শুদ্ধতার প্রশ্নে বেপরোয়া ভাব। কোপার্নিকাস বলেন,"এই হাইপোথিসিস গুলো সত্য হতে হবে এমনকোন প্রয়োজনীয়তা নেই, প্রকৃতপক্ষে এমনকি সম্ভাব্য সত্য হবারও প্রয়োজন নেই "!

আচ্ছা! ভুয়াই যেহেতু, তাহলে এই ফিলোসফিক্যাল বিলিফ কি উদ্দেশ্যে বানানো!? পৌত্তলিকতার দিকে ধাবিত করার জন্য!? কুফরি মেটাফিজিক্স তৈরি করে কাফির ও মুশরিক বানানোর জন্য!?
নিঃসন্দেহে, হার্মেটিক কিংবা কাব্বালিস্টিক বিদ্যা যাদের থেকে এসেছে তাদের অধিকাংশই এটাই চায়।
কোপার্নিকাসদের কথা অনেকটা এরূপ যে, আমাদের তত্ত্ব সত্য হোক বা না হোক, সেদিকে কোন পরোয়া করিনা, বরং যেভাবেই হোক, সৃষ্টিতত্ত্বেও এটা প্রতিষ্ঠা করতে হবে যে সূর্যদেব জগৎ সমূহের মধ্যভাগে সিংহাসনে সমাসীন,যার চারদিকে সমস্তকিছু আবর্তিত হয়ে পূজা করে। আর সানগড হেলিও সবাইকে আলোকিত করেন এবং জীবনীশক্তি প্রদান করেন।


জেসুইট মিশনারী কেন হেলিও পূজার এ মতবাদ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছিল! আপনারা অনেকেই জানেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মটা প্রাচীন রোমান-গ্রীক পৌত্তলিকতা দ্বারা অনেক প্রভাবিত। ওদের ক্রিসমাস, ত্রিতত্ত্ব প্রভৃতি গ্রেসিয়ান-রোমান পৌত্তলিকদের থেকে গ্রহন করেছে। অর্থাৎ আজকের ক্যাথলিক মিশনারীরা প্রাচীন রোমান পৌত্তলিকদের আধুনিক ভার্সন।আপনারা কি প্যাগান ফিলসফার হাইপাথিয়াকে ভুলে গেছেন? তিনি কোপার্নিকাসেরও বহু আগে হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজির কথা বলে গেছেন। তারও আগে ঈসা আলাইহিসালাম এর জন্মের ৪'শ বছর পূর্বে যাদুকর অভিশপ্ত পিথাগোরিয়ানরা (এ্যারিস্টোরকাস, ফিলোলাউজ)। তারা পেয়েছেন ব্যবিলনিয়ান এস্ট্রলজি ও যাদুশাস্ত্র থেকে।
বর্তুলাকার পৃথিবীর বর্ননাও বাবেলে জন্মানো কাব্বালাতে সুস্পষ্টভাবে আছে(বিগত পর্বগুলোয় উল্লেখ করেছি)। সেখানে এই অপবিদ্যার ধারা কোথা এসেছে, তা বর্নিত আছে সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতে। সুতরাং সূর্য উপাসকদের ট্রেডিশনাল বিশ্বাসকে খুব সহজেই অন্যান্য কাল্ট রিচুয়ালের সাথে ক্যাথলিকরা গ্রহন করেছে। প্রাচীন প্যাগানিজম সারা বিশ্বে সুক্ষ্মভাবে ছড়ানোর জন্য জেসুইট মিশনারী অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছিল।এজন্যই জেসুইটের প্রতীকেই সূর্যদেব হেলিওর প্রতীক খচিত। খ্রিস্টান নামধারী মুশরিকগুলো পরোক্ষভাবে এরই উপাসনা করে। মুসলিমদের মধ্যেও এই কস্মোলজিক্যাল প্যাগানিজম সফলভাবে সঞ্চালিত। আজ অধিকাংশ মুসলিমদের অবস্থা এরকম যে, যখন এ ব্যপারে সতর্কও করা হয়, তারা মুশরিকদের এই শিরকযুক্ত বিশ্বাসকে রক্ষা করার জন্য যুক্তি উপস্থাপন করে। এরা কুরআন থেকেই রেফারেন্স দেয়। এমনকি সতর্ককারীকে তাকফির পর্যন্ত করে! ইন্না-লিল্লাহ!! হয়ত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা জ্ঞান ধীরে ধীরে উঠিয়ে নিচ্ছেন। অজ্ঞতা সর্বত্র গ্রাস করছে।

আপনি Neil DeGrasse Tyson কে দেখেছেন?  এর পরনের কাপড়েই সূর্যদেবের প্রতীক খচিত। এরাই আজকের মহান সায়েন্টিস্ট। এরা অবশ্যই সূর্যদেব হেলিও/এ্যাপোলো/হোরাস/জিউসের ব্যপারে ভালভাবেই জানেন। তাদের বলা মহাকাশ সংক্রান্ত সকল তথ্যেই কোন না কোন রিচুয়ালিস্টিক অকাল্ট ম্যাসেজ এনকোড করা। আলোর গতি 299 792 458 m / s। এটা জিপিএস কোঅর্ডিনেশনে পিরামিডের লোকেশন[৩]! সূর্যকে প্রদক্ষিনে পৃথিবীর গতি ৬৬৬,০০ mph!, প্রতি বর্গমাইলে . ৬৬৬ ফুট, পৃথিবী তীর্যকভাবে কাত হয়ে আছে ৬৬.৬ ডিগ্রিতে। দেখে মনে হয় ইচ্ছেকরেই স্যাটানিস্টদের প্রিয় ডিজিটের সাথে মিল রেখে প্রত্যেক জিনিসের হিসাব রাখা হয়েছে। সবকিছুই কেমন যেন এনকোডেড রিচুয়াল। এটা অসম্ভব নাহ।
ফ্রিম্যাসনের মত গুপ্ত সংগঠনগুলোর কর্মী-সদস্যদের কর্মপদ্ধতির একটি হচ্ছে সমস্তকিছুতে ওদের বিশেষ চিহ্নকে প্রকাশ্যে রাখা যার তাৎপর্য শুধুমাত্র অন্য সদস্যরাই জানবে। এটা তাদের ব্যবহৃত এক ধরনের ভাষা।কোপার্নিকাস,নিউটন, কেপলাররা খুবই সমাদৃত ফ্রিম্যাসন। এদিকে দাজ্জ্বালের স্বঘোষিত অনুসারী জ্যাক পারসনস এর চিন্তা ও বিদ্যাভিত্তিক গবেষণার বদৌলতে গজানো এই কস্মোলজিটিকে তারা অবশ্যই শয়তানের ইনভোকেশনে আনুকূল্যতা রেখেই ডিজাইন করবে, এমনটাই প্রত্যাশিত ।এজন্যই প্রত্যেক দেশের মহাকাশ সংস্থা তাদের অফিশিয়াল সিম্বলে ভেক্টর সিম্বল রেখেছে। আশ্চর্যজনক হলেও 7 এর ন্যায় প্রতীকটি প্রত্যেক স্পেস এজেন্সি যার যার প্রতীকরূপে রেখেছে[৮]। আপনি দেখলে অবাক হবেন যে, আমেরিকা, চায়না দেশগুলো বাহ্যত মাটির উপরে দা কুমড়া সম্পর্ক দেখালেও স্পেস স্টেশনে দহরমমহরম আন্তরিকতা! এটা প্রমান করে প্রত্যেক স্পেস এজেন্সি একে অপরের সাথে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এজন্য এরূপ চিন্তা করা একদমই অর্থহীন যে, 'মার্কিন নাসা মিথ্যাচার করলেও তো অন্যান্য সবাই মিথ্যাচার করবেনা'। বস্তুত, আজকের ইউএন এর গ্লোবাল গভার্মেন্টের আওতাধীন মানবরচিত সংবিধানে পরিচালিত দেশগুলোর ভেতরকার যে বাহ্যিক দ্বন্দ্ব আমরা দেখি, সেটা শুধুই বাহ্যিক। কাফিররা এক মিল্লাত।

প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের বিগব্যাং→ইনফিনিট স্পেস→ প্লানেটারি মোশন→ হেলিওসেন্ট্রিজম→বিবর্তনবাদ→ বিগক্রাঞ্চ ইত্যাদি সবই একই সুতোয় গাথাঁ স্বতন্ত্র বিশ্বাস ব্যবস্থা। একটি স্বতন্ত্র ধর্ম। এ ফিলোসফিক্যাল ধর্মের অনুসারীরা যদিও বাহ্যত হেলিওসেন্ট্রিক প্যাগানিজমের প্রচার করে, বিভিন্ন মিডিয়া প্রোগ্রামে লুক্কায়িত সত্যিকারের কস্মোলজিক্যাল অর্ডারকে বিদ্রুপ করে উপস্থাপন করে। এজন্য আজ পর্যন্ত অসংখ্য ফিল্ম,এ্যনিমেটেড শো,গান গুলোয় জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যাবস্থাকে তুলে ধরেছে, হয়ত এটা দর্শকদের জন্য একরকমের স্যাটায়ার বা বিদ্রুপ,এটা এজন্য যে তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য জানে[৯]।

একইভাবে চন্দ্র অভিযানের নাটক নিয়েও এরূপ satirical message ফিল্ম/কার্টুনগুলোয় অসংখ্যবার দেখানো হয়েছে[১০]।এরা একদিকে যেমন করে মেইনস্ট্রিমে হেলিওর প্যান্থিয়ন(সূর্যদেবের মন্দির) নির্মান করছে, তেমনিভাবে অন্যদিকে ওদের গোপন নথিগুলোয় সত্যিকারের কস্মোলজির উল্লেখ করে গোপন রাখছে। ওরা এমনকি বিমানের ডিজাইনের ডেটায় পৃথিবীকে ননরোটেটিং ফ্ল্যাট ফিক্সড আর্থ হিসেবে লিখছে! অর্থাৎ দুনিয়ার সবকিছুকেই সত্যিকারের কস্মোলজিতে কম্প্যাটিবল করে তৈরি করছে, অথচ মেইনস্ট্রিমে প্রচার করছে ভুয়া সূর্যপূজার কস্মোলজি। নিচের নাসার অফিশিয়াল ডকুমেন্টটি দেখুনঃ

শুধু নাসা নয়, ইউএস আর্মি ও সিআইএর অসংখ্য ডকুমেন্টে (নিচের কিছু ছবিতে দেওয়া হলো) সমতল পৃথিবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। অর্থাৎ ওদের সমস্ত রিসার্চ সমতল জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিকে ঘিরে যদিও উলটো অফিশিয়ালভাবে উল্টোটা প্রচার করে। ওরা খুব ভাল করেই জানে যে বিপদ বিপরীতটাই সত্য। সমতল জিওসেন্ট্রিক জিওস্টেশনারী বিশ্বব্যবস্থা যদি ভুলই হয়,তবে এটা নিয়ে তাদের এত মাথাঘামানো কেন! বছর দুয়েক আগের কথা। লিডিং মহাকাশ সংস্থা নাসার অফিশিয়াল পেইজে এমন কিছু লিখি, যার ফলে নাসার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার এলবার্ট কফ্রিন আমার কথার জবাব দিতে হাজির হন। এরপরে শুরু হলো লম্বা বিতর্ক। কিছুক্ষন পর দেখি, আরো অনেক আম্রিকান হাজির। এদেরকে দেখে পেইড মনে হলো, অধিকাংশই স্পেস এজেন্সির সাথে সম্পৃক্ত, কারও বা আইডির বন্ধুতালিকা শূন্য, কোন ব্যক্তিগত কিছুই নেই। অর্থাৎ কিছুলোককে প্রশ্নের জবাব /বিতর্কের জন্য ভাড়া করা। এরা অনেক যুক্তি দিয়ে দমাতে চেষ্টা করে বিফল হলো, অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছায় সবগুলোকে পালাতে বাধ্য করলাম। আর কেউ প্রশ্ন করা বা জবাব দেওয়ার জন্য আসলো না,সব গুলো নিশ্চুপ। কিন্তু দু মাস পরে সেই লিংকে গিয়ে দেখি আমার লেখাগুলি এবং গোটা তর্কবিতর্কের কমেন্টবক্স রিমুভ করে দেওয়া হয়েছে! টেক জায়ান্ট গুগলও জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিষয়টি সহ্য করতে পারে না। এজন্য তারা ইউটিউবে সার্চ কুয়েরি থেকে জিওসেন্ট্রিসিটির সমস্ত ডকুমেন্ট মুছে দিয়েছে, এবং বিপরীতে  রেখেছে এর বিরুদ্ধ যুক্তি এবং বিদ্রুপাত্মক ভিডিও। কেউ এখন জিওসেন্ট্রিক অ্যাস্ট্রোনমির কিছু লিখে সার্চ দিলে,রেজাল্টে আসবে এটাকে নিয়ে করা সবধরনের ট্রোল ভিডিও।এসব প্রমাণ করে কিছু একটাকে লুকিয়ে বা চেপে রাখার প্রচেষ্টা।

মূলত, এই এস্ট্রনমিক্যাল করাপশন ডিভাইন ডমিনিয়নের(আল্লাহর সর্বময় কর্তৃত্ব) ভয় থেকে সাধারন মানুষকে নিস্কৃতি দিয়েছে, এখন অধিকাংশ বিশ্বাস করে, সে অনন্ত মহাশূন্যের তুলনায় কোন এক ক্ষুদ্র এক প্ল্যানেটের উপর ধূলিকণার চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আর কিছু নয়। এরা আসমানবাসীদের রিলিজিয়াস পার্স্পেক্টিভে দেখছে না,বরং র্যাশোনাল পার্স্পেক্টিভে এলিয়েন তালাশ করছে। তারা একরকমের প্লুরালিস্টিক মিস্টিসিজমে ডুবে আছে। ধর্মীয় স্ক্রিপচারের কস্মোলজিক্যাল কন্সেপ্ট যেহেতু প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং ইনকম্প্যাটিবল সেহেতু, এগুলোকে তারা ত্রুটিপূর্ণ এবং মনগড়া বানোয়াট মনে করছে। যেহেতু পরস্পর সাংঘর্ষিক দুটি ভিন্ন স্ট্রিমের মেটাফিজিক্যাল - কস্মোলজিক্যাল বর্ননা দেখছে,সেহেতু তারা এ্যাগনস্টিক এবং পরবর্তীতে নাস্তিক-যিন্দিকে পরিনত হচ্ছে। এজন্য দেশবিদেশে এথিজম ও প্যান্থেইজমের দিকে মানুষ খুব বেশি ঝুকছে। এটা আসলে Satanic Cosmogony এরই স্বাভাবিক Consequence। যাদের(পিথাগোরিয়ান) থেকে এ ডক্ট্রিন এসেছে এরাও তো একই আকিদা বা বিশ্বাস হৃদয়ে ধারন করত। স্বাভাবিকভাবেই ওদের প্রবর্তিত চিন্তাধারা ওদের বিশ্বাসের দিকেই ধাবিত করবে। প্রাচীন কালের সাধারন কাফিররা আল্লাহর অস্তিত্বকে মানত, কিন্তু এরা পুনরুত্থান দিবসকে অবিশ্বাস করত। অন্যদিকে শুধুমাত্র  জ্যোতিষী-যাদুকরদের সিংহভাগ আল্লাহর সত্তাগত অস্তিত্বে অবিশ্বাস করত,যাদের হাতে আজকের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো লুক্কায়িত ছিল। আজকে সেই কস্মোলজিক্যাল প্যাগানিজম বিজ্ঞানের নামে প্রতিষ্ঠিত হবার পর যাদুকর-জ্যোতীষীদের অনূরূপ সাধারন মানুষও আল্লাহর অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা শুরু করে। মূলত এ কারনেই নিচের চিত্রের নাস্তিক আজ আমাদের দেশে তৈরি হয়েছে[এটা জাহিরি কারন,আসল কারন আল্লাহ তাদের থেকে হিদায়াতের আলো তুলে নিয়েছেন]। একটু ভাল করে দেখুন চিত্রে দেওয়া পোস্টগুলো কস্মোলজি/কস্মোজেনেসিস(সৃষ্টিতত্ত্ব)/মেটাফিজিক্স নিয়ে:

আজ এদের প্রতিরোধ করতে একদল তরুন দাঁড়িয়ে গেছে, যারা এদের মুখ বন্ধ করতে এদেরই শয়তানি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়ত বিতর্ক করতে থাকে, সেই সাথে "প্যারাডক্সিকাল সাজিদ" নামে সুডোসায়েন্টিফিক মিস্টিসিজম এর ইসলামাইজড ভার্সন প্রকাশ হতে থাকে। কিন্তু এর ফলাফল অস্থায়ী।কিছুদিনের মধ্যেই নাস্তিক কমিউনিটি থেকে সেসব কিতাবের "খন্ডন" বের হয়:


 

 এভাবেই ফিতনা চলতে থাকে। অনেক সাধারন মুসলিমরা এসব কিতাবাদি পড়ে কাফির হয়ে যাবার কথা শোনা যায়।


কাফিরদেরকে যুক্তি দিলেই তারা তা মান্য করবে না। তারা সেটাকে খন্ডন করতে চাইবে, প্রাচীন যুগগুলোয় কাফিররা অনেক অলৌকিক নিদর্শন চোখের সামনে দেখেও অস্বীকার করত। এরা মূলত জানলেও দ্বীন পালনের ব্যপারে কুফর করে যাবে। এরা এমন না যে দলিল প্রমান পেলেই মেনে নেবে। আর এই কুরআন যুক্তি প্রমান দেখে ঈমান আনয়নকারীদের প্রতিও নাযিল হয়নি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
" ﺍﻟﻢ
ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏُ ﻻَ ﺭَﻳْﺐَ ﻓِﻴﻪِ ﻫُﺪًﻯ ﻟِّﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟْﻐَﻴْﺐِ ﻭَﻳُﻘِﻴﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﻣِﻤَّﺎ ﺭَﺯَﻗْﻨَﺎﻫُﻢْ ﻳُﻨﻔِﻘُﻮﻥَ
ﻭﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﻭَﺑِﺎﻵﺧِﺮَﺓِ ﻫُﻢْ ﻳُﻮﻗِﻨُﻮﻥَ
ﺃُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻫُﺪًﻯ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻬِﻢْ ﻭَﺃُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﻔْﻠِﺤُﻮﻥَ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﺳَﻮَﺍﺀٌ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺃَﺃَﻧﺬَﺭْﺗَﻬُﻢْ ﺃَﻡْ ﻟَﻢْ ﺗُﻨﺬِﺭْﻫُﻢْ ﻻَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
ﺧَﺘَﻢَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬﻢْ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺳَﻤْﻌِﻬِﻢْ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻢْ ﻏِﺸَﺎﻭَﺓٌ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﻋﻈِﻴﻢٌ
ﻭَﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻣَﻦ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﺑِﺎﻟﻠّﻪِ ﻭَﺑِﺎﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻵﺧِﺮِ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻢ ﺑِﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ
ﻳُﺨَﺎﺩِﻋُﻮﻥَ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺨْﺪَﻋُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧﻔُﺴَﻬُﻢ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ
ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻢ ﻣَّﺮَﺽٌ ﻓَﺰَﺍﺩَﻫُﻢُ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻣَﺮَﺿﺎً ﻭَﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻜْﺬِﺑُﻮﻥَ

"আলিফ লাম মীম। এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখিরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম।নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদের কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না । আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়। তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না। তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন।[সূরা বাকারাঃ১-১০]

যারা আল্লাহ ও তার রাসূল(স) কে কটাক্ষ করে, তাদের শাস্তি একটাই, হত্যা। নিশ্চয়ই আল্লাহ নির্দিষ্ট সংখ্যক জ্বীন ও মানবকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এদের জন্য আজেবাজে যুক্তি দিয়ে শয়তানি অপবিজ্ঞানকে ইসলামাইজ করে মু'তাযিলাদের মত তর্ক করা বা সহিষ্ণুতা প্রদর্শন নির্বুদ্ধিতা এবং প্রহসন বৈ আর কিছু নয়।আমরা জানি, এমন কিছুর কথা আমরা বলছি, যা সত্যিই এ যুগে গ্রহন করা কষ্টসাধ্য। কিন্তু আমরাও অখন্ডনীয় দলিলের উপর প্রতিষ্ঠিত যার ব্যপারে বিরুদ্ধবাদীরা সত্যিই বিব্রত। আমরা দ্বীনের সাথে শয়তানি ন্যাচারাল ফিলোসফির সমন্বয় সাধনে বা আপোষে বিশ্বাসী নই, বরং যতটুকু মেশানো হয়েছে ততটুকু বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি মনযোগী। এজন্য কারো তিরস্কার, কটাক্ষের ব্যপারে একেবারেই বেপরোয়া। আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যা মূলত প্রাচীন জ্যোতিষবিদ্যারই আধুনিক সংস্করণ যেটা প্রাচীন পিথাগোরাস থেকে সর্বপ্রথম অফিশিয়ালি প্রচার শুরু হয়। ফ্রিম্যাসন সম্রাট অ্যালবার্ট পাইক বলেন,"পাইথাগোরাস ঋষির উপাধি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, যার(ঋষির) অর্থ যারা জানেন। তিনি আবিষ্কার করেছেন এবং নিজেকে দার্শনিক হিসাবে প্রয়োগ করেছেন, যিনি পছন্দ করেন গুপ্ত এবং অকাল্ট বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি যে জ্যোতির্বিদ্যার(মহাকাশতত্ত্ব) শিক্ষা দিয়েছিলেন তা ছিল জ্যোতিষশাস্ত্র: তাঁর সংখ্যার বিজ্ঞান কাব্বালার নীতিগুলির ভিত্তিতে ছিল। সমস্ত কিছু সংখ্যার পর্দা দ্বারা ঢাকা। "
[Morals and Dogma]

এবার চলুন দেখা যাক জ্যোতিষবিদ্যার ব্যপারে ইসলাম কি বলে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

সুতরাং আশা করি বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না যে, এই মহাকাশবিজ্ঞান যা বলে সেসব যাদুবিদ্যারই শাখাগত বিদ্যা বা যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক চিন্তাধারা।


এবার আসা যাক এলিয়েন প্রসঙ্গে।  যখন থেকে যাদুকরদের অকাল্ট ফিলসফির অন্তর্গত বিষয়ঃআউটার স্পেস তথা "মহাশূন্য"কে বিজ্ঞানে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, মানুষ কল্পনা প্রবণ হয় এতে ভ্রমণের ব্যপারে। পৃথিবীকে মহাশূন্যের অতিক্ষুদ্র কণার মত ঘুর্নায়মান বর্তুলাকার 'গ্রহ' হিসেবে প্রচার করা হয় এবং বলা হয় কোটি কোটি গ্রহ আছে, হাজারো গ্রহ হতে পারে বাসযোগ্য, অন্য গ্রহগুলোয় জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে রহস্যঘন কল্পনায় ডুবিয়ে রাখতে শুরু করে কথিত বিজ্ঞানী নামধারী অপবিজ্ঞানীরা। শুরু হয় ভীনগ্রহীদের নিয়ে কল্পনা জল্পনা। এখন শুধু পাশ্চাত্যে সীমাবদ্ধ নয়,সারা বিশ্বের মানুষদের এসব নিয়ে কল্পনায় ভাসানো হয়। বিজ্ঞানীরা বলতে শুরু করেন উন্নত বুদ্ধির প্রানীদের। শুরু হয় মানুষের চেয়েও উন্নত কোন সভ্যতার কল্পনা। শুরু হয় এলিয়েন ফ্যান্টাসি। বিজ্ঞানী থেকে রাজনীতি সবজায়গায়ই এলিয়েন রহস্য। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান মানুষকে এলিয়েন থ্রেটের কথা শোনায়। তিনি সরাসরি বলেন, এলিয়েনদের আগ্রাসন হয়ত ভবিষ্যতে মানবজাতির ধর্মবর্ণের বিভেদ ভুলে একজাতিতে পরিনত করবে।এরপর থেকে ঠিকই নিয়মিত অচেনা বিচিত্র আকৃতির নভোযান পৃথিবীর আকাশে ভাসতে দেখা যায়। সারাপৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এলিয়েনদের দ্বারা মানুষ অপহরণের ঘটনা ঘটতে শোনা যায়। এই এলিয়েনদের আসল পরিচয় কি??

ইনফিনিট স্পেস আর অগণিত গ্রহ,গ্যালাক্সি,নিহারিকার কনসেপ্টটি যাদুকর-দার্শনিক এন্যাক্সিম্যান্ডার, ডেমোক্রিটাস, এপিকিউরাস এবং ব্রুনোর কস্মিক প্লুরালিজমের প্রাচীন ধারনাকে নতুন করে জাগিয়ে দেয়[১১]। এরপরে শুরু হয় বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীদের নিয়ে ফ্যান্টাসি। অজস্র বই,গল্প,উপন্যাস
,পত্রিকা ম্যাগাজিন এই প্লটের উপর লেখা হয়। পাঠকদের অধিকাংশই এসকল সায়েন্স ফিকশনকে উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা/কল্পনা মনে করে সমর্থন দিতে শুরু করে। টেলিভিশন ছড়িয়ে পড়বার পর ব্রেইনওয়াশিং এবং মাইন্ডকন্ট্রোল এর আওতা আরো বেড়ে গেল। সেই নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে আজ পর্যন্ত ম্যাসনিক হলিউড; স্পেস আর এলিয়েন প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। যতগুলো সায়েন্সফিকশন সিনেমা নির্মান করছে তার সবই আউটারস্পেস এর কন্সেপ্ট ভিত্তিক। আর স্পেস থাকা মানেই স্পেস ট্রাভেল,এলিয়েন থাকবে। এরপরে যে সিনেমা গুলো বের হতে শুরু করে তার অধিকাংশ হয় এলিয়েন ইনভ্যাশন নিয়ে। বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীরা উন্নত প্রযুক্তিসমেত পৃথিবীতে হামলা করেছে, সমস্ত দেশগুলো এক হয়ে প্রতিরোধ করছে ইত্যাদি, ইত্যাদি।[১২] এখনকার ফিল্মগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, মেটাফিজিক্যাল(origins of existence) ব্যপার গুলোয় এলিয়েন হস্তক্ষেপ দেখিয়ে। ওরা দেখাচ্ছে মানুষের অস্তিত্বটাই এলিয়েনদের দান। মানুষের ডিএনএ'তে এলিয়েন ডিএনএ মিশে আছে। ওরা আমাদের ইঞ্জিনিয়ার। প্রমিথিউজ,ট্রান্সসফরমার এই ম্যাসেজগুলোই দিচ্ছে। অন্যদিকে এসবে আছে সায়েন্টিফিক কমিউনিটির সমর্থন [১৩]। মিডিয়ায় হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি ও এলিয়েনের অস্তিত্বের প্রমোশন পাবার সাথে সাথে মানুষও Unidentified flying object(UFO) এবং Unidentified submerged object(USO) দেখা শুরু করে। মেক্সিকো আমেরিকায় বিষয়টা এমন স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে ওটা খুবই সাধারন বিষয়। এ বিষয়গুলোর সূত্রপাত খুজতে গিয়ে মেলে জগদ্বিখ্যাত যাদুকর এ্যালিস্টার ক্রোওলির ১৯১৮ সালে করা 'অমলন্ত্র' রিচুয়াল(amalantra working)[১৪]। ক্রোওলি Lam নামের এক এলিয়েন এন্টিন্টির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত। তিব্বতীয় ল্যাম শব্দের অর্থ পথ অথবা পথদাতা। ল্যাম দেখতে অনেকটা গ্রে এলিয়েন যেমনি দেখতে, তেমনি। অধিকন্তু, ল্যাম হচ্ছে মূলচক্রের একটি মন্ত্র(যোগসাধনায় ষড়চক্রের একদম নিন্মে অবস্থিত)। বলা হয় ক্রোওলির এই রিচুয়ালের উদ্দেশ্য ছিল এলিয়েন এন্টিটির জন্য ইন্টারডাইমেনশনাল পোর্টাল[৩২] খুলে দেওয়া যাতে তারা ইচ্ছেমত আমাদের ডাইমেনশনে প্রবেশ করতে পারে। এরপরে ১৯৪৬ সালে আরেকটি বড় পরিসরের ম্যাজিক্যাল রিচুয়াল পালিত হয়। এর নাম দেওয়া হয় "Babalon Working"[৩৬]। এতে ক্রোওলির সাথে যোগ দেয় বর্তমান স্পেস এজেন্সি নাসা এবং সাইন্টোলজি কমিউনিটির ফোরফাদারগন। সেটাতেও সিরিমোনিয়াল এবং সেক্স রিচুয়াল পালিত হয় অমলন্ত্রের মত। সমস্ত অকাল্ট কমিউনিটির মধ্যে এ কথা প্রচলিত আছে যে এ রিচুয়াল দ্বারা আগের ডাইমেনশনাল গেইটওয়ে এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল এন্টিটির জন্য আরো প্রশস্ত করা হয়। এ ঘটনার পর দিয়ে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ইউএফও সাইটিং শুরু হয় ব্যাপকহারে। এলিয়েনদের দ্বারা অপহরণ, এমনকি সেনাবাহিনীরাও আক্রান্ত হবার ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছিল।

এ্যালিস্টার ক্রোওলির সাথে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং সাইন্টোলজির প্রতিষ্ঠাতার ল্যাম বা গ্রে এলিয়েন বিংদের আহব্বান এবং পরবর্তীতে অগনিত ইউএফও/ইউএপির উপদ্রব, সেই সাথে জেট প্রপালশান ল্যাবের রকেট আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের মনে একটা ধারনাকে গেঁথে দেওয়া হয়। সেটা হচ্ছে Outer Space(মহাশূন্য)! অর্থাৎ উপর থেকে বহির্জাগতিক প্রানীরা আসতে পারে আর আমরাও উপরে(আসমানে) যানবাহন বহির্বিশ্বে পাঠাতে পারি। "মহাশূন্যের" ধারনাকে মানুষ ইয়াক্বিন করে নেয়।যাহোক, হঠাৎ করে ইউএস প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘে বললেন, "হয়ত আমাদের কোন একটা সার্বজনীন বহির্জাগতিক হুমকির প্রয়োজন যা আমাদের মধ্যকার সাধারন ঐক্যকে জাগ্রত করবে, আমি মাঝেমধ্যে ভাবি কতটা দ্রুত আমাদের মধ্যকার এই (জাতিগত) ভেদাভেদ চলে হয়ে যাবে, যদি আমরা কোন ধরনের এলিয়েনদের হুমকির মুখোমুখি হই।" [১৫]

১৯৯৪ সালে জার্নালিস্ট এবং কন্সপিরেসি থিওরিস্ট সার্জ মোনাস্ত নাসার প্রজেক্ট ব্লুবিম[১৬] নিয়ে কথা তোলেন। এ নিয়ে একটি বইও পাব্লিশ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। এতে দাবি করা হয় নাসা বিশ্বের মোড়লদের পাশে দাঁড়িয়ে একটা ফেইক এলিয়েন ইনভ্যাশন ঘটাতে চায় যার মাধ্যমে গোটা বিশ্বের জাতি,ধর্ম,বর্নের ভেদাভেদ ভেঙে এক সরকারবিশিষ্ট বিশ্বব্যবস্থা গঠন করা যায়।
মোনাস্তের কথা অনেকে একদম কন্সপাইরেসি থিওরি বলে উড়িয়ে দিতে চায়, কিন্তু স্যাটানিস্ট ক্রোওলির ল্যামের সাথে কন্টাক, ইনভোকেশন এবং ম্যাজিক্যাল ডাইমেনশনাল রিফট তৈরি, হঠাৎ ইউএফও সাইটিং শুরু এবং আশংকাজনক বৃদ্ধি, রোনাল্ড রিগ্যানের আশংকার কথা, এবং হলিউডের প্রোপাগান্ডা মেলালে সেই কন্সপিরেসি থিওরিস্টের কথা সত্য হবার আশংকা চলে আসে। এটা আরো প্রগাঢ় হয় আজকের সাইন্টিফিক কমিউনিটি থেকে সমর্থন পাওয়া যায়।পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের এলিয়েন থ্রেট দিয়ে ন্যাশনাল ব্যারিয়ার ভেঙ্গে সমগ্র দেশ গুলো এক করার বক্তব্যকে পূর্ন সমর্থন দিয়ে তিনি এলিয়েন ইনভ্যাশনের আশংকা করেন[১৭]।

এলিয়েন নিয়ে ফ্যান্টাসি এখানেই সমাপ্ত না, বেশ কিছু ধর্মও তৈরি হয়েছে[৩১]। যেমন রায়েলিজম, হ্যাভেন্স গেইট,ব্রহ্মকুমারী ইত্যাদি আরো অনেক। এসকল নতুন ধর্মগুলো এলিয়েনের হস্তক্ষেপকে হলিউডের ফিল্মের ন্যায় মানবজাতির সৃষ্টি ও ক্রমবিকাশ এবং বিবর্তনের কারন হিসেবে মানে। আমাদের দেশেও রায়েলিজমের অনুসারী রয়েছে অনেক। এরা এলিয়েনদেরকে 'এলোহিম' শব্দ দ্বারা বোঝায়, যার জন্য ইজরাইলের টেম্পল তৈরির জন্যও তাগিদ দিয়েছে।তারা শীঘ্রই আসছেন! রায়েলিজমের শাখা বাংলাদেশেও আছে। উইকিপিডিয়া অনুসারে: "Raëlians believe that scientifically advanced extraterrestrials, known as theElohim, created life on Earth through genetic engineering, and that a combination of human cloning and "mind transfer" can ultimately provide eternal life."(উইকিপিডিয়া)

আরেকটি এলিয়েনবাদি ধর্ম, ইথারিয়াস। এর প্রতিষ্ঠাতা, ইথারিয়াস নামের এক এলিয়েনের সাথে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের পরে প্রতিষ্ঠা করেন। উইকিপিডিয়া অনুসারে: The Aetherius Society was founded in theUnited Kingdom in 1955. Its founder, George King, claimed to have been contacted telepathically by an alien intelligence called Aetherius, who represented an "Interplanetary Parliament. (উইকিপিডিয়া)

ব্যবিলন প্রজেক্টের পরের বছরেই রাজওয়েলে ইউএফওর ক্রাশ ঘটে ; যার ধ্বংসবশেষ এরিয়া ৫১ তে পাঠানো হয়। এভাবে হাজারো ফ্লাইং ডিস্ক এবং বিচিত্র মডেলের আকাশযানের ছবি ও ভিডিও পৃথিবী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাইরাল হতে লাগলো। হাজারো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হতে লাগলো। ৫০০ বছর আগে যখন জিওসেন্ট্রিক ফ্ল্যাট ষ্টেশনারী পৃথিবীর মডেলটি ভ্যালিড ছিল, তখন এই ইউএফওর উপদ্রব একদম অচেনা ছিল। সাধারণ কেউ এসব ফ্ল্যাইং ডিস্ক কল্পনাও করতে পারতো না। কেউ এলিয়েনদের দ্বারা অপহরনের স্বীকারও হত না। কিন্তু তখন জ্বীনদের দ্বারা কাউকে লুকিয়ে ফেলা বা নিয়ে যাবার ঘটনা জানাশোনা ছিল। ব্যবিলন ওয়ার্কিং এর দ্বারা আহব্বান করা ল্যামের গ্রে এলিয়েন বাহিনীর আসল পরিচয় অনেকেই বুঝে গেছেন। এরপরেও আরো স্বচ্ছ ধারনা প্রয়োজন।

ইউএফওলজিস্ট জ্যাকুয়েস ভ্যালি সর্বপ্রথম ইউএফও ফেনোমেননগুলোকে ইন্টারডাইমেনশনাল এন্টিটির কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। পরে এর সপক্ষে John Ankerberg এবং John Weldon এরও বক্তব্য রয়েছে। তারা বলেনঃ"the UFO phenomenon simply does not behave like extraterrestrial visitors." অর্থাৎ কথিত স্পেসক্রাফট ও এলিয়েনগন এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের মত আচরণ করে না। অন্যান্য যুক্তির দিক দিয়ে ইউএফও ফেনোমেনন এর ব্যাখ্যা Interdimensional hypothesis এর দিকেই যায়। একারনে অনেক ইউএফলজিস্টরা ETH এর চেয়ে IDH কে বেশি যুক্তিযুক্ত মনে করেন।তাদের কেউ কেউ এগুলোকেই প্রাচীনকাল থেকে প্যারানরমাল/সুপারন্যাচারাল ঘটনাগুলোর ভিন্নধর্মী ম্যানিফেস্টেশন বলে মনে করেন। যেমন ইউএফওলজিস্ট জন কিল UFO গুলোকে Ghost/spirit/demon এর ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করেন।[২১]

২১ শতকে জিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমির বিপ্লব সৃষ্টিকারী প্রকৃতিপূজারী প্যাগান এরিক দুবেঈ বলেন, "আজকে যেমনি বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্লাইং সসার দেখা যায় যাকে আমরা ইউএফও বলে অভিহিত করি, একই জিনিস সেই হাজার বছর আগে থেকে আজ পর্যন্ত আমাজন জঙ্গলের মানুষগুলো যারা আইয়োহুয়াস্কা, পাইয়োডি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সাইকাডেলিক উপাদান গুলো সেবন করে, তারাও ঠিক একই জিনিসের ব্যপারে বলে এবং যেগুলো দেখতে এলিয়েন ও ফ্লাইং সসারগুলোর মত। যারা সেসব ক্র্যাফট থেকে বের হয়ে তাদেরকে বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দেয়। এরা মূলত ইন্টারডাইমেনশনাল জীব। আর সবচেয়ে শক্তিশালী সাইকাডেলিক উৎপন্ন করে আমাদের ঘুমন্ত মস্তিষ্কের পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড যাকে থার্ড আই বলা হয়। এজন্য স্বপ্ন হচ্ছে এরই একটা প্রোডাক্ট।ঘুমন্ত অবস্থায় অনেকে এমন এলিয়েন এবডাকশনের স্বপ্ন দেখে যা তাদের কাছে খুবই সত্য বলে মনে হয়। হয়ত তখন তার মস্তিষ্কে অন্ডিজেনাস ডিএমটি সাইকাডেলিক ড্রাগের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সাইকাডেলিক ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করত মিথ্রাইক কাল্টে। আদিম সভ্যতাগুলো নিজেদেরকে নক্ষত্রের বংশোদ্ভূত বলত। তারা মূলত ইন্টার ডাইমেনশনাল রেল্মে ঘুরে বেড়াতো , অথচ আজকে ফেইক কস্মোলজি শেখানো হয়, এলিয়েনদের অস্তিত্বের জন্য ভ্রান্ত আউটার স্পেস কন্সেপ্ট নিয়ে আসা হয়েছে।"

বিখ্যাত স্পিরিচুয়ালিস্ট ট্যারেন্স ম্যাকেনা বলেন, "আমি মনে করি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালদের সাথে যোগাযোগের চেয়ে আসল কাজ হচ্ছে এটা জানা যে আপনার সাথেই একজন রয়েছে। এটা একদমই বোকামি যে একটা রেডিও ব্যবহারকারী সভ্যতাকে খুজতে রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে ছায়াপথে খুজে বেড়ানো।" তিনি মনে করে সাইকাডেলিক মাশরুম গুলোই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ এর একটা মাধ্যম[২৩]। তাছাড়া ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করে হাজারো কথিত এলিয়েনদের[২৭] সাথে যোগাযোগ এর রিপোর্ট পাওয়া যায়। অবশ্য প্রাচীনকাল থেকে জঙ্গলের বিভিন্ন প্যাগান সভ্যতার মাঝে এই জিনিস ব্যবহার চলত। তারা অবশ্য স্পিরিট/এ্যান্সেস্টর ইত্যাদি শব্দ দ্বারা অভিহিত করতো [২২]। ইউএফও সাইটিং এর পাশাপাশি আরেকটা বিষয় হঠাৎ খুব বেড়ে যায়। সেটা হচ্ছে, ক্রপ সার্কেল। অনেকে হয়ত এ ঘটনার সাথে পরিচিত নন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ক্রপসার্কেল হচ্ছে বিচিত্র জটিল জ্যামিতিক নকশা বা প্রতীক যা মাঝেমধ্যে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশগুলোর গ্রামগুলোর শস্যক্ষেতে দেখা যায়। হঠাৎ কৃষক জমিতে গিয়ে দেখেন ক্ষেতের মাঝে বিশাল অঞ্চল জুড়ে ফসল উপড়ে কিছু একটা করা হয়েছে। মাটিতে দাড়িয়ে কিছু বোঝা যায়না। কিন্তু উচু স্থান থেকে, বিমান বা হেলিকপ্টার থেকে পূর্নরূপ দৃশ্যমান হয়। ১৯৭০ সালের পর দিয়ে ক্রপসার্কেল এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এসবের কিছু মানবসৃষ্ট, কিছু আবার এক রাতে হয়ে যায়। অনেকে ক্রপসার্কেলের সাথে ইউএফওর সংশ্লিষ্টতা প্রত্যক্ষ করেছে। এজন্য সবার বদ্ধমূল ধারনা,এসব এলিয়েনদের স্পেসশিপ দিয়ে তৈরি। এটা সত্য যে অনেক জটিল জ্যামিতিক নকশা তৈরি করা রাতারাতি নিখুঁতভাবে মানুষের দ্বারা করা কঠিন। অধিকাংশই অকাল্টিস্টদের স্যাক্রিড জিওমেট্রিক নকশা! কখনো, কাব্বালার সাজারাতুল খুলদের নকশা,কখনো বা ফ্লাওয়ার অব লাইফ,কখনো গ্রে এলিয়েনদের ছবি, কখনো বা ডলারের উপরের পিরামিডের উপর এক চোখের নকশা। ১৯৯৭ সালের মে মাসে Barbury Castle এর শস্যক্ষেতে কাব্বালার ট্রি অব লাইফের ক্রপ সার্কেল পাওয়া যায়। বাবেল শহরের এই বিদ্যার নকশা কোন ধরনের বুদ্ধিমান প্রানীরা দেখাতে পারে? এরাই নিজেদের রূপকে(গ্রে এলিয়েন) ক্রপসার্কেলে দেখায়। বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ রাক্কী বিন হালিমা আব্দুর রউফ এক রুকইয়ার সময় রোগীর সাথের শয়তান জ্বীন তাকে জানায় এই ক্রপসার্কেল গুলো তাদের কাজ। একারনেই এলিস্টার ক্রোওলির শয়তান পূজার ধর্ম থেলেমার সিম্বল ক্রপসার্কেলে কথিত এলিয়েনগন অঙ্কন করে। 

আশাকরি এবার বুঝতে পারছেন, 'এলিয়েন' শুধুই একটা নতুন শব্দ। নতুন কস্মোলজি দিয়ে ভিন্ন নামে নতুন চেহারায়[গ্রে এলিয়েন(২৬)]শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হচ্ছে। প্রাচীন মিশরীয় হাইরোগ্লিফিকে যে আনুনাকিদের দেখা যায় এরা এই একই ইন্টারডাইমেনশনাল এলিয়েন(কথিত) রেস[২৫]। এরা যে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নয় মোটেই সেটা তারা নিজেরাই স্বীকার করে। হিস্টোরি চ্যানেলের এক ডকুমেন্টারিতে বলছিল ওরা ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি/ডাইমেনশনে হাজার হাজার বছর ধরে আমাদেরই সহবস্থানে আছে।[২৪]
আজকে যারা মিস্টিসিজম/ প্যাগান এস্ট্রোথিওলজিতে বিশ্বাস করে এরা আজ বিচিত্র পদ্ধতি শেখায় এই হায়ার ডাইমেনশনাল রেস তথা শয়তানের সাথে যোগাযোগের।[২৮]। বৈদিক এস্ট্রলজির বিদ্যা দিয়েও নাকি এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব[৩০]। এক ডিএমটি সেবকের ডিএমটি গ্রহনের পরে কথিত এলিয়েনদের সাথে দেখা করার বর্ননাটি শুনুন। সহজেই বুঝবেন, সে কাদের কথা বলছেঃhttps://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc

সকল থিওসফিস্ট(প্যাগান) বিশ্বাস করেন পৃথিবীর দায়িত্বে থাকা সকল স্পিরিচুয়াল এন্টিটির রাজা সনৎ কুমার হচ্ছে এলিয়েন বিং। আর বেঞ্জামিন ক্রিম বিশ্বাস করতেন সনৎ কুমারের আদি নিবাস-শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহের সাথে তার দুনিয়ার রাজ্য শাম্বালায় ফ্লাইং সসারের ট্রাফিক রয়েছে। ক্রিমও বিশ্বাস করতেন যে ইউএফও-ই ক্রপসার্কেল গুলোর জন্য দায়ী। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী, "It is also believed by the Theosophists in general as well as Creme in particular that the governing deity of Earth, Sanat Kumara (who is believed to live in a city called Shamballa located above the Gobi desert on the etheric plane of Earth), is a Nordic alien who originally came from Venus 18,500,000 years ago.[20] The followers of Benjamin Creme believe there is regular flying saucer traffic between Venus and Shamballah and that crop circles are mostly caused by flying saucers." 

(উইকিপিডিয়া)

সনৎ কুমারকে 'Satan kumar' বলতে শুনি কিছু খ্রিষ্টান প্রিস্টদের। কুম্বেইর যুক্তি, সনৎ কুমার যেহেতু ভেনাসের চির কুমার, সেহেতু শুক্রের আদি গ্রীক নাম লুফিফারই হচ্ছে এই সনৎ কুমার। অর্থাৎ sanat kumar=satan kumar!

"Bailey goes on to explain that Sanat Kumara is the "life and the forming intelligence", presiding over the Council of Shamballa [the Heaven of Earth according to New Age doctrine]. (The New Age Dictionary, p. 172) Further, Sanat Kumara is "the eternal youth from the Planet Venus". The name Lucifer is one of the ancient Greek names for Venus. Therefore, according to Cumbey, Sanat Kumara is merely another name for Satan or Lucifer. (Cumbey, Hidden Dangers of the Rainbow) "[Wikipedia]

এদিকে কল্কি অবতারের অপেক্ষায় থাকা হিন্দুর কল্কিঅবতারের সাথে এলিয়েন ও ইউএফওর মেলবন্ধনটা ছিল দেখার মতনঃ https://m.youtube.com/watch?v=OfhxEYb2XQk
তার মানে বুঝতে পারছেন(?) এই এলিয়েন শব্দ দিয়ে যাদেরকে বোঝানো হয় তারা এ দুনিয়ায় ১৯,২০ শতকের নতুন আগন্তুক কেউ নয় বরং মানব সভ্যতারও আগে থেকেই এখানে আছে। থিওসফিস্ট, যারা কিনা শয়তানেরই থেইস্টিক পূজারী এদের সাথেও এদের সম্পৃক্ততা রয়েছে! প্রাচীন বৈদিক যুগের 'বিমান'গুলো এদেরই। সর্বশেষ অবতার কল্কি কে তার ব্যপারে আগেই একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম[৩৩]। এর সাথে শয়তানজ্বীনদের অন্তর্ভুক্তি খুবই স্বাভাবিক। এ বিষয়টা প্রজেক্ট ব্লুবিম এর সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয় যার ইঙ্গিত রোনাল্ড রিগ্যান, মিচিও কাকু দিয়েছিলেন। আমরা জানি দাজ্জাল ব্যাপকভাবে শয়তান জ্বীনদের সাহায্য নিয়ে মানুষকে কুফরের দিকে আহব্বান করবে। শয়তান জ্বীনরা এমনকি মৃত মানুষের আকৃতি ধারন করে সাধারণ মানুষকে কুফরের দিকে ধাবিত করবে।

এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আজ ওপেন সিক্রেট ; যে শয়তানের সাথে মানুষ এক হয়ে এরিয়া ৫১ তে কাজ করছে। এফবিআইও এখন এ কথা স্বীকার[২৯]। সুতরাং আন্দাজ করুন, কতটা ভয়াবহ বিষয়গুলোকে আজকে স্বাভাবিক করা হয়েছে। আজকের শেখানো কস্মোলজি ওই ডায়াবোলিক্যাল এন্টিটিদেরই শেখানো[৩৫]। এই মহাকাশতত্ত্ব শয়তানদের জন্য মানুষের জগতে সহজ এবং গ্রহণযোগ্য প্রবেশাধিকার তৈরির জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। সৃষ্টিতত্ত্বকে পালটে ওদের উপর বিশ্বাসকে একটা স্বতন্ত্র দ্বীনের পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য গড়া হয়েছে[৩৭]। আজ এই শয়তান জ্বীনদের এলিয়েন সাজিয়ে হাজার মুভি তৈরি করা হচ্ছে মনোরঞ্জনের জন্য। বিজ্ঞ সাইন্টিস্টগন এদেরই অস্তিত্ব এবং এ্যারাইভালের সম্ভাবনা জোড় দিয়ে বলেন। ক্রোওলির সাথে মিলে বিচিত্র শয়তানি রিচুয়াল পালন করে এদেরকেই আহব্বান করে রকেটের আবিষ্কারক এবং space age এর পিতা জ্যাক পার্সন্স। আজকের নাসার কার্যক্রম কতটা বিস্তৃত, অথচ এদের গোটা প্লটটাই শয়তানের পরিকল্পনার উপর দাঁড়িয়ে। স্বপ্নযোগে স্পেস এজের পিতাকে যাদুশাস্ত্র উদ্ভূত   শয়তানি অপবিজ্ঞানকে আরো বিস্তৃত করার জন্য সরাসরি উৎসাহ দিয়েছিলেন দাজ্জ্বাল নামের ওই মহান এন্টিটি। এরই ধারাবাহিকতায় তার হাতে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং পরে নাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং গোটা আউটার স্পেস/হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি(প্যান্থিয়ন)/স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেটারি নোশন /বিগব্যাং/এলিয়েন প্রভৃতি সকল তত্ত্বের মূলে আছেন বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল[৩৮]। তার জন্যই যতসব প্রস্তুতি।

আজকের মোডারেট মুসলিম এবং মু'তাযিলারা এই দাজ্জালি সাইন্টোলজি দ্বারা একদম অন্ধ। এদের কাছে সব কিছু তুলে ধরলেও তাদের কাছে দাজ্জালের বিদ্যাকেই পছন্দনীয় মনে হয়। আর আমাদের আলিমগন? তাদের অনেকেই এই এলিয়েন কন্সেপ্টকেও সবুজ বাতি দেখিয়ে গ্রহন করেছে অনেক আগেই। কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি গ্রহনে যেখানে সমস্যা নেই, সেখানে এলিয়েনদের অস্তিত্ব গ্রহনে কিসের সমস্যা!? কুরআনের আয়াত ব্যবহার করেই অনেককে দেখি; এদের অস্তিত্বের বিষয়টিকে ইতিবাচক উপস্থাপন করে ইসলামিক বই,প্রবন্ধ, নিবন্ধ লেখে! সেদিন মার্সিফুল সার্ভেন্ট চ্যানেলটিকেও দেখলাম সরাসরি না বললেও ইউএফও, এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের ব্যপারে ইতিবাচক ভিডিও বানিয়েছে। মা'আযাল্লাহ! ওটা দেখলে যে কেউ এদের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে শুরু করবে।

কুরআন সুন্নাহর নির্ভর জিওসেন্ট্রিক এনক্লোজড কস্মোলজিতে মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান এলিয়েনদের দ্বারা যা বোঝায় সে ধারনাটি সম্পূর্ন বাতিল[৩৪]। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউই দুর্ভেদ্য আসমান ভেদ করতে সক্ষম নয়। এমতাবস্থায় যদি রোনাল্ড রিগ্যানের আশংকা সত্য করে সত্যিই ফেইক এলিয়েন ইনভ্যাশনের অবস্থা তৈরি করতে হয়, তবে শয়তান জ্বীন এবং হলোগ্র্যাফিক প্রজেকশন, ইএলএফ সাউন্ড ব্যবহারের বিকল্প নেই। ইসলামে পৃথিবীর বাহিরে প্রানীর অস্তিত্বের ব্যপারে নিশ্চিত দলিল আছে কিন্তু এর দ্বারা কখনোই লাগামহীন যত্রতত্র বিচরন করে বেড়ানো এলিয়েন আর তাদের স্পেসশিপদের বোঝায় না যা আজকে দাজ্জালের অনুপ্রেরণায় সর্বত্র শেখানো হচ্ছে। এরা মূলত শয়তানের দিকে মানুষকে আহব্বান করছে। সূরা তালাক্কের শেষ আয়াত, সাত জমিনসংক্রান্ত হাদিস, আসমান সংক্রান্ত হাদিস গুলো পৃথিবীর বাহিরের অজস্র প্রানীর অস্তিত্বের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু সেসব আদৌ গ্রেএলিয়েন নয়। সেসব প্রানী বা মাখলুক কুরসির ভেতরে থাকা যার যার জন্য নির্ধারিত জগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আদৌ এন্যাক্সিম্যান্ডারের প্লুরালিজম, ইনফিনিট ভ্যাকুয়াম স্পেসে ফ্লোটিং স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেট এর মত কিছুতে নয়। রিগ্যান-কাকুদের কথার মত তারা কখনো আমাদের এ জগতে আসবে না। সেটা সাধ্যেরও অতীত। অন্যদিকে এদেরকে ক্রোওলি,জ্যাক পার্সন, হাব্বার্ডের শয়তানি রিচুয়াল দ্বারা ডাকলে শুধু শয়তান জ্বীনেরাই সাড়া দেবে, অন্য কেউ নয়। এভাবেই আধুনিক বিজ্ঞান আধুনিক শব্দে পুরোনো জাতি শয়তানকে উপস্থাপন করছে। এরা আজ শেখাচ্ছে মানব জাতির ডিএনএ/আরএনএ ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন বটে তবে তা আল্লাহর সৃষ্টি নয় বরং সৃষ্টি ওইসব এলিয়েনদের। অর্থাৎ বলতে চাইছে শয়তানই আমাদের স্রষ্টা। মানব সৃষ্টির শুরু ব্যাখ্যায় বিখ্যাত পদার্থবিদ রিচার্ড ডকিন্সকে একবার প্রশ্ন করা হলো,"কে আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন?" উত্তরে তিনি রেগে গিয়ে বলেন,"আপনি এটা কেন জিজ্ঞেস করছেন যে, 'কে করেছে'!? না, আপনি প্রশ্নটিই করেছেন 'কে' শব্দটি দিয়ে।" প্রশ্নকর্তা নিজেকে সামলে বলেন,"আচ্ছা ঠিক আছে,সৃষ্টির শুরুটা কিভাবে হলো?" উত্তরে বলেন,"একটা ধীর প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি শুরু হয়,আমরা জানি না সেটা কিভাবে হয়েছিল, কিন্তু জানি কোন ধরনের প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছিল।এটা ছিল প্রথম স্বয়ংক্রিয় আত্ম পুনরাবৃত্তিকারী মলিকিউল দ্বারা।....হতে পারে যে এই মহাবিশ্বের একদম শুরুর দিকে কোন একটা সভ্যতা ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের অনুসারে বিবর্তিত হয়ে খুবই উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতায় পৌছায়, এবং হয়ত এই পৃথিবীতে এক ধরনের প্রাণের ডিজাইন করে যার মাঝে তাদের বীজ বপন করে। এটা(মানব সৃষ্টির ইতিহাসের) একটা ইনট্রিগিং সম্ভাবনা,  এবং আমি মনে করি এটা সত্যিই সম্ভাব্য ঘটনা কারন আপনি এর সপক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাবেন যদি আপনি বায়ো-ক্যামিস্ট্রি, মলিকিউলার বায়োলজিতে গভীরভাবে দেখেন, আপনি এক রকমের ডিজাইনারের সিগ্নেচার পাবেন। এবং এই ডিজাইনাররা হতে পারে মহাবিশ্বের অন্যকোন জগতের হায়ার ইন্টেলিজেন্স। এই উন্নত বুদ্ধিমত্তার প্রানীরা নিজেদের প্রকাশের একটি প্রক্রিয়া বজায় রাখে।এটা স্বতস্ফুর্তভাবে দ্রুততার সাথে নিজেদেরকে অস্তিত্বে নিয়ে আসে না।"

প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত কখনোই মানব জাতির বৃহত্তর জনগোষ্ঠী প্রকাশ্যে শয়তানকে ইলাহরূপে উপাসনা করেনি। পূজা করত অচল মূর্তির। কখনোই সৃষ্টিকর্তা বা মা'বুদ বলে শয়তান স্বীকৃতি পায়নি। কিন্তু আজকের কথিত বিজ্ঞানের কল্যানে সেটাই হতে যাচ্ছে। মানুষ যে উন্নত বুদ্ধিমত্তার সত্তা দ্বারা সৃষ্টি; সেটা মানতে বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্সের কোন আপত্তি নেই, ওই সত্তার স্থানে আল্লাহকে বসানোয় যত তার আপত্তি। এজন্য 'কে' শব্দটি দ্বারা আল্লাহকে নির্দেশ করে প্রশ্ন করায় রেগে যান। আল্লাহর স্থানে তিনি শয়তানদেরকে বসিয়েছেন। শয়তানদেরকে ইলাহ ভাবতে ভালবাসেন, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এরা আপাতত পদার্থবিজ্ঞানী,ফিল্মগুলোর মাধ্যমে দেখাচ্ছে এলিয়েন তথা শয়তানই মানুষের ইলাহ। মানুষের ডিজাইনার। ট্রান্সফরমার, প্রমিথিউজ ইত্যাদি ফিল্মের মূল বক্তব্য এটাই। এটাই science!! আধুনিক মহাকাশবিদ্যাটির সূচনা হয়েছিল শয়তানের বন্ধু যাদুকরদের হাতে,এর পরে সেই একই ব্যক্তিদের হাত ধরে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। নাসার অধিকাংশ কর্মচারী,নভোচারীরাই মাসূনী। এই শয়তানি মহাকাশতত্ত্বকে সত্যায়নে দেওয়া প্রযুক্তিগত সাপোর্টও আসে জ্যাক পার্সন্সের মত যাদুকর এবং শয়তানের পূজারীদের থেকে। অত:পর অবশেষে তাদের থেকে আসা সমস্ত গায়েবের জগতের ব্যপারে আসা তত্ত্বগুলোও শয়তানের নতুন নাম তথা এলিয়েনদেরকে মা'বুদের স্বীকৃতির দিকে নিয়ে গেছে। এবার বলুন এই কথিত বিদ্যা ও তত্ত্বগুলো কি আদৌ বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান!? এই মহাকাশবিদ্যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কতটা ইসলামসম্মত যেমনটা আধুনিক দায়ীরা বলে থাকেন!?

আজ দেখে অবাক হচ্ছেন; কিভাবে শয়তানকে ইলাহ বানিয়ে নেওয়া হচ্ছে,সামনের পর্বে দেখবেন পদার্থবিদগন বলছেন গোটা মহাবিশ্বটিও শয়তানের সৃষ্টি। লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!!






[চলবে ইনশাআল্লাহ...] 






বিগত পর্বগুলোঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html


টিকাঃ
১)https://m.youtube.com/watch?v=omWRxonewL4
https://m.youtube.com/watch?v=eXIDFx74aSY
https://m.youtube.com/watch?v=beofFQ
২)https://en.m.wikipedia.org/wiki/হেলিওস
৩)https://www.express.co.uk/news/science/960740/ancient-egypt-great-pyramid-giza-speed-of-light
৪)https://m.youtube.com/watch?v=zFuIEjX1oeM
৫)http://www.mediafire.com/file/rwc2xi5wn3uhbno/Islamer_dristite_sristitatta_2nd_Edition.pdf/file
৬)https://m.youtube.com/watch?v=S9i97_K9Sx8
৭)https://m.youtube.com/watch?v=FmoiwjXepHM
https://m.youtube.com/watch?v=ss7QT6uCZdU
৮)https://m.youtube.com/watch?v=379sQbvUg5kk
৯)https://m.youtube.com/watch?v=9jnseSHhEWQ
https://m.youtube.com/watch?v=3LxND8m9lDU
১০)https://m.youtube.com/watch?v=QM7ebcR3-xE
১১)https://m.facebook.com/story.php?story_
fbid=465081517282379&substory_
index=0&id=282165055574027
১২)https://www.youtube.com/watch?time_conti
nue=333&v=ss7QT6uCZdU
১৩)https://www.express.co.uk/news/science/
777627/alien-dna-message-human
https://www.gaia.com/article/are-humans-actually-aliens-on-earth
https://www.sciencemag.org/news/2016/03/
our-ancestors-may-have-mated-more-once-mysterious-ancient-humans
১৪)http://www.boudillion.com/lam/lam.htm
https://www.vice.com/amp/en_us/article/mvpvyn/magickal-stories-lam
https://m.youtube.com/watch?v=yUs0KF2Q
TaU
১৫)https://m.youtube.com/watch?v=iQxzWpy7
PKg
https://m.youtube.com/watch?v=nYi5h5Gvdz8
১৬)https://m.youtube.com/watch?v=peUkPNx9
DSU
https://m.youtube.com/watch?v=k-Gr7-RQ4-U
১৭)https://m.youtube.com/watch?v=-NOZWlmG
rsY
১৮)https://m.youtube.com/watch?v=FmoiwjXe
pHM
১৯)https://m.youtube.com/watch?v=16MMZJlp
_0Y
২০)https://en.m.wikipedia.org/wiki/
Interdimensional_hypothesis
২১)https://en.m.wikipedia.org/wiki/
Interdimensional_hypothesis
২২)http://www.evolveandascend.com/2017/
02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extrate
rrestrials/
২৩)https://m.youtube.com/watch?v=ljy3TH1T0jk
২৪)https://m.youtube.com/watch?v=jjFYo-mLn08
২৫)https://m.youtube.com/watch?v=K3MM3vu9
hOc
২৬)https://m.youtube.com/watch?v=slYRx3vk
6OM
২৭)https://m.youtube.com/watch?v=pL1QI0_3HiI
২৮)https://m.youtube.com/watch?v=uMPyI08J
WvQ
২৯)https://m.youtube.com/watch?v=WFRwvXEX
Oxo
৩০)https://m.youtube.com/watch?v=aM8P6f-m
3Xg
৩১)https/en.m.wikipedia.org/wiki/UFO_religion
৩২)https://m.youtube.com/watch?v=q1Y3pVy8
HME
৩৩)https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_20.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_73.html
৩৪)https://m.youtube.com/watch?v=aFFM3YJA
s4Q
৩৫)https://m.facebook.com/story.php?story_
fbid=564102404046956&id=282165055574027
৩৬) https/en.m.wikipedia.org/wiki/
Babalon_Working
৩৭)https://m.youtube.com/watch?v=HBDNZpnY
vts
৩৮)https://www.bibliotecapleyades.net/bb/
babalon004.htm
https://www.classifiedufo.com/jack-parsons-jpl.html
www.sacred-magick.com/dictionary/
magdic17.html
৩৯)Pendle 2005, pp. 257–262
৪০)Pendle 2005, p. 152
৪১)Carter 2004, p. 135
৪২)Carter 2004, pp. 107–108, 116–117, 119–128; Pendle 2005, pp. 259–260.

Friday, March 27, 2020

১৫.বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?

পর্ব-১৫





প্রাচীন যাদুকরদের সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে বিশ্বাস হচ্ছে মহাবিশ্বের সবকিছুই একক বস্তু থেকে একা একাই সৃষ্টি হয়েছে। সমস্ত বস্তু নিজে নিজেই ধীরে ধীরে উন্নততর হয়ে বহু প্রকার ও প্রজাতিতে বিভক্ত হয়ে গেছে। সমস্ত বস্তুই self sustained infinite চক্রে বন্দী। যাদুশাস্ত্রগুলো সমস্ত সৃষ্টিজগতকে মৌলিক একক অস্তিত্ব বলে, যার অন্তর্গত সমস্তকিছুই ক্রমাগত উন্নয়নঅভিমুখী। সবকিছুই একা একাই একক বস্তু থেকে তৈরি হয়ে ক্রমাগত উন্নয়ন ঘটিয়ে চরম উৎকর্ষের দিকে যাচ্ছে। এ সৃষ্টিজগতে বাহ্যিক কোন ঐশ্বরিক সত্তার হস্তক্ষেপের(Divine Intervention) প্রয়োজন নেই। মহাবিশ্ব সর্বপ্রথম নিজে নিজেই মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে অস্তিত্বে আসে। প্রথমদিকে বিশৃঙ্খল ছিল, ধীরে ধীরে শৃঙ্খলায় উন্নীত হয়। এরপরে নিজে নিজেই জীবজগত সৃষ্টি হয়। এককোষী থেকে বহুকোষী প্রানী, এরপরে জলজ প্রাণী, মৎস জাতীয় প্রানী, এরপরে অনেক জাত-প্রজাতিতে একাএকাই উন্নয়নের দ্বারা বিভক্ত হয়ে প্রানীজগত তৈরি হয়। স্তন্যপায়ী, উভচর, জলচর, সরীসৃপ প্রভৃতিতে ভাগ হয়।অবশেষে বানর থেকে হয় মানুষ। এই অকাল্ট বিশ্বাসকে বর্তমানে নাম দেওয়া হয়েছে বিবর্তনবাদ। প্রাচীন প্রকৃতি ও ব্রহ্মাণ্ডপূজারী যাদুকররা এই বিবর্তনবাদী ধারনা লাভ করে "চেতনার ওপার"[১](altered state of consciousness) থেকে। এ আলোচনা পরে আসছে।



সর্বাধিক প্রাচীন বিবর্তনবাদের চিহ্ন পাওয়া যায় বাবেল শহরের কবি গিলগেমিশের মহাকাব্যে, যেখানে তিনি মাছ থেকে মানুষ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছে। একইভাবে গ্রীক ন্যাচারাল ফিলসফার তথা যাদুকর
Anaximander (খ্রিষ্টপূর্ব ৬১০-৫৪৬) শিক্ষা দিতেন যে, মানবজাতি মাছের ন্যায় প্রানী থেকে আসে। এজন্য উনিশ শতকের শেষভাগে এ্যাণাক্সিম্যান্ডাকে প্রথম ডরউইনিস্ট হিসেবে সম্মান করা হত। উইকিপিডিয়া উল্লেখ আছে,
In the late nineteenth century, Anaximander was hailed as the "first Darwinist"[Wikipedia] 

আরেক বাবেলশহরের অপবিদ্যার অনুসারী, ডেমোক্রিটাস শেখাতেন যে, মানুষের ভাষা বিবর্তনের দ্বারাই ক্রমাগত ধ্বনি, শব্দ এবং পরবর্তীতে পরিপূর্ণ অর্থপূর্ণ ভাষায় রূপান্তরিত হয়।এম্পিডোক্লিস  (490 - 430 খ্রিস্টপূর্ব) যুক্তি দিয়েছিলেন যে আমরা প্রাণীদের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যুকে যা বলেছি তা হলো উপাদানগুলির মিশ্রণ এবং বিচ্ছেদ যা অগণিত "নশ্বর প্রজাতির উপজাতি" সৃষ্টি করে। বিশেষতঃ প্রথম যে প্রাণী এবং গাছপালা ছিল, আজ আমরা যেগুলি দেখতে পাই তার অংশবিহীন অংশগুলির মতো, যার মধ্যে কয়েকটি বিভিন্ন সংশ্লেষে যোগ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিল এবং তারপরে ভ্রূণের বিকাশের সময় আন্তঃসংযোগ ঘটে। গ্রীক এটোমিস্ট Epicurus (341–270BC) প্রচার করতেন যে, সৃষ্টিকর্তা বা দেবতাদের অস্তিত্বের প্রয়োজন নেই। সমস্ত জগত এবং প্রানীদের জন্ম হয়েছে স্বয়ংক্রিয়  অনু-পরমাণুর সঞ্চালনের দ্বারা। লুক্রেটিয়াসের কবিতা ডি রেরাম নাটুরা গ্রীক এপিকিউরিয়ান দার্শনিকদের ধারণার সর্বোত্তম ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। এটি সৃষ্টিতে অতিপ্রাকৃত শক্তি জড়িত থাকার কোনও উল্লেখ ছাড়াই বিশুদ্ধ প্রকৃতিবাদী মেকানিজমের মাধ্যমে বিশ্বজগত, পৃথিবী, জীবজন্তু এবং মানব সমাজের বিকাশের বর্ণনা দেয়। প্রাচীন যাদুকরদের বিবর্তনবাদী চিন্তাধারার বিষয়টি প্রথম ৫ পর্বের কোন একটিতে উল্লেখ করেছিলাম।

জলজ প্রানী তথা মাছ থেকে স্থলচর এবং পরিশেষে মনুষ্যজাতির সৃষ্টির তত্ত্ব প্রাচীন মিশর ও বাবেল থেকে গ্রীস, গ্রীস থেকে আরবে পৌছায় সমস্ত আলকেমিক্যাল-হার্মেটিক যাদুশাস্ত্রের পাশাপাশি। ইবনে খালদুনের নাম ইতিহাসের বিবর্তনবাদীদের পাশে এখনো উজ্জ্বলভাবে বর্তমান। আশআরি আকিদার ইবনে খালদুন ছিলেন আলকেমিস্ট। গ্রীক দর্শন অন্য সকলের ন্যায় আপন করে নেন। ব্যবিলনীয়ান যাদুশাস্ত্রের বিলুপ্তির জন্য তার খুব আফসোস ছিল। তিনি বলেনঃ "আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে যা পেয়েছি, অপ্রাপ্তির পরিমাণ তদপেক্ষা অনেক বেশি। পারস্যের সেই জ্ঞান কোথায়, যা পারস্য বিজয়কালে হজরত উমার(রাঃ) নিশ্চিহ্ন করে দিতে বলেছিলেন। কোথায় ক্যালাডিয়ান, সিরিয়া ও বাবেল বাসীর জ্ঞানের ঐতিহ্য! তাদের মধ্যে যে নিদর্শন বিদ্যমান ছিল, যে ফলশ্রুতি ঘটেছিল, তা কোথায় বিলুপ্ত হল। কোথায় গেল কিবতী ও তাদের পূর্ববতীদের জ্ঞানের ঐশ্বর্য! আমাদের নিকট শুধু একটি জাতির জ্ঞান-গুণই এসে পৌছেছে, তারা হলো গ্রিক। এটাও সম্ভব হয়েছে সম্রাট মামুনের জন্য।”
[আল মুকাদ্দিমাহ]


১৩৭৭ সালে তিনি আল মুকাদ্দিমাহ নামের গ্রন্থ লেখেন যেটাতে তিনি বলেন যে, মানবপ্রজাতি এসেছে,"বানরের জগত" থেকে এমন এক প্রক্রিয়ায় যার দ্বারা প্রানীপ্রজাতি অগণিত হয়ে যায়। তিনি বলেনঃ
"সৃষ্টির জগতের দিকে একবার নজর দেওয়া উচিত। এটি খনিজগুলি থেকে শুরু হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছিল উদ্ভিদ এবং প্রাণীগুলিতে (রূপান্তরের দ্বারা)। খনিজগুলির শেষ পর্যায়ে উদ্ভিদের প্রথম পর্যায়ে যেমন সংযুক্ত তেমনি বীজহীন উদ্ভিদের সাথে সংযুক্ত থাকে। পাম এবং লতা জাতীয় গাছের শেষ পর্যায়ের সাথে প্রাণীর প্রথম স্তরের সাথে যেমন শামুক এবং শেলফিসের সাথে সংযুক্ত থাকে, যা কেবল স্পর্শের শক্তি রাখে। এই তৈরি করা বিষয়গুলির সাথে 'সংযোগ' শব্দের অর্থ প্রতিটি গ্রুপের শেষ পর্যায়ে সম্পূর্ণ নতুন গ্রুপের প্রথম পর্যায়ে পরিণত হওয়ার জন্য প্রস্তুত (প্রক্রিয়া)। প্রাণীজগৎ তারপরে প্রশস্ত হয়, এর প্রজাতি অসংখ্য হয়ে যায় এবং ক্রমান্বয়ে সৃষ্টির ফলে এটি মানুষের(সৃষ্টির) দিকে নিয়ে যায়, যিনি ভাবতে ও চিন্তা  করতে সক্ষম। মানুষের এ পর্যায় সেই বানর জগত থেকে উন্নীত হয়েছে যে জগতে অনুভুতি ও উপলব্ধি একত্র হয়েছিল কিন্তু বাস্তব, মনন ও দর্শনে পৌছতে পারেনি। এরপর মানুষের প্রথম দিকের আরম্ভ এবং এটাই আমাদের অভিজ্ঞতার শেষ পর্যায়।
[আল মুকাদ্দিমাহ পৃঃ১৩৭-১৩৮][৮]

অন্যত্র বলেনঃ"গাছপালাগুলিতে প্রাণীদের মতো একই সূক্ষ্মতা এবং শক্তি থাকে না। সুতরাং, ঋষিরা খুব কমই তাদের দিকে ফিরেছিলেন। প্রাণী তিনটি অনুক্রমের শেষ এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খনিজগুলি উদ্ভিদে এবং উদ্ভিদ প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়, তবে প্রাণী নিজের চেয়ে ভাল কিছুতে পরিণত হতে পারে না"।[৭]


অতএব, বুঝতেই পারছেন বানর থেকে মানুষ সৃষ্টির তত্ত্বটি আদৌ উনিশ শতকের আধুনিক বৈজ্ঞানিক কোন তত্ত্ব নয়। বরং প্রাচীন যাদুশাস্ত্রের অকাল্ট বিশ্বাস। ইউরোপে যখন গ্রীক যাদুকরদের কুফরি আকিদা গুলো আরব হয়ে পৌছায়, অভিশপ্ত দার্শনিকরা গোপনে বিবর্তনের বিশ্বাসকে ধারন করতে শুরু করে। সেসময়ে বিবর্তনবাদের বিপরীতে থাকা 'ক্রিয়েশনিজমের' প্রতি জনসমর্থন বেশি থাকায় জনসমক্ষে প্রচার হত না। এসব বিদ্যা সীমাবদ্ধ থাকতো শুধুমাত্র অকাল্ট সার্কেলের মধ্যে,অর্থাৎ সিক্রেট সোসাইটি গুলোর মধ্যে। ইউরোপের অকাল্টিস্ট রয়্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে। বিগত পর্বগুলোয় এ ইতিহাস নিয়ে আলোচনা গত হয়েছে।১৬৬০ সালে রয়্যাল সোসাইটি ফ্রিম্যাসনদের হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠার পূর্বে ন্যাচারাল ফিলসফি এবং প্যাগান আধ্যাত্মিকতা একই সাথে যুক্ত ছিল।সাধারণ মানুষের কাছে প্যাগানিজম বা প্রকৃতিপূজা কেন্দ্রিক বিশ্বাসব্যাবস্থার গ্রহনযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্যাগান আধ্যাত্মিকতার অংশটি  রয়্যাল সোসাইটির সহযোগিতায় আলাদা করা হয়,রাখা হয় শুধুই আধ্যাত্মিক  দর্শনকেন্দ্রিক পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পর্যবেক্ষণ অযোগ্য বিদ্যাসমূহ। এই ফ্রিম্যাসনিক রয়্যালসোসাইটিই প্রাচীন যাদুকরদের অপর্যবেক্ষনযোগ্য বিশ্বাসের বিষয়, যেমনঃ হেলিওসেন্ট্রিসিটি,স্ফেরিক্যাল পৃথিবী এবং গ্রাভিটি তত্ত্বকে প্রমোট করে।অতঃপর বিবর্তনবাদকেও। রয়্যাল সোসাইটির সদস্যরা অর্থাৎ ফ্রিম্যাসনদের পরিচয় আপনারা জানেন, এরা অইহুদি হয়েও ইহুদিবাদী স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারা পৃথিবীতে অন্য সব গুপ্তসংগঠনের পাশাপাশি একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এরা সকলেই যাদুশাস্ত্র কাব্বালার অনুসারী।


র‍্যাসমাস ডারউইন নামের একজন কবি, ফিজিশিয়ান ছিলেন রয়াল সোসাইটির অন্যতম মেম্বার, তাছাড়া তিনি ছিলেন একজন স্বীকৃত ফ্রি ম্যাসন। তিনি ছিলেন স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে অবস্থিত 'ক্যানন গেইট লজ' এর মাস্টার ম্যাসন।তার সাথে জ্যাকোবিন ম্যাসনদের সাথেও গভীর সম্পর্ক ছিল যারা ফরাসী বিপ্লবের পিছনে কাজ করে। এছাড়াও র‍্যসমাস ডারউইন ছিলেন ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে লুনার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা।
তার পুত্রও একজন ম্যাসন ছিল।
র‍্যসমাস ডারউইন মাঝেমধ্যে কবিতা লিখতেন, তাতে প্রকৃতির ইতিহাসে বিবর্তনবাদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতেন। তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ (অপ)বৈজ্ঞানিক কর্ম ছিল Zoonomia (1794–1796) গ্রন্থটি।এতে প্যাথলজিক্যাল প্রক্রিয়া এবং "প্রজন্মের" অধ্যায় আছে। পরবর্তী চ্যাপ্টার গুলোয় তিনি Jean-Baptiste Lamarck এর চিন্তাধারাকে প্রকাশ করেন যেটা পরবর্তীকালে theory of evolution এ পরিনত হয়। র‍্যাসমাস ডারউইন তার গ্রন্থে বিবর্তনের ব্যপারে বলেনঃ
"মানবজাতির ইতিহাস শুরুর লক্ষ লক্ষ বছর আগে সম্ভবত পৃথিবীর অস্তিত্ব শুরু হয়েছিল, সেই সময়কালের বিশাল দৈর্ঘ্যে, এটি কল্পনা করা কি খুব সাহসিকতার কাজ হবে? এটা বলা কি খুব সাহসিকতাপূর্ণ হবে যে, একটি জীবন্ত ফিলামেন্ট থেকে উদ্ভূত হয়েছে সবধরনের উষ্ণরক্তের প্রানীর, যা সর্ব প্রথম প্রাণীর সাথে সংযুক্ত হয়েছিল, নতুন অংশগুলি অর্জন করার ক্ষমতা নিয়ে,তা নতুন প্রবণতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল যেমনঃ জ্বালা-যন্ত্রনা, সংবেদনশীলতা, সংযোজন এবং সংঘবদ্ধতা দ্বারা পরিচালিত; এবং এভাবে নিজস্ব অন্তর্নিহিত ক্রিয়াকলাপ দ্বারা উন্নয়ন অব্যাহত রাখার অনুষদের অধিকারী, এবং প্রজন্মের মাধ্যমে সেই উন্নয়নের ধারাগুলি তার পরবর্তী বংশধরদের পর্যন্ত পৌঁছে দেয়, সীমাহীন জগতে!"
[Erasmus Darwin, Zoonomia: Project Gutenberg text XXIX.4.8]

বিবর্তনবাদের "survival of the fittest" এর চিন্তাটি ফ্রিম্যাসনগুরু র‍্যাসমাসের Zoönomia তে ছিল,যাতে দেখানো হয় কিভাবে একটি প্রজাতির বংশ প্রসার করে। তিনি মনে করতেন, "সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সক্রিয় প্রাণীর প্রজাতির বংশবিস্তার করা উচিত, সেখান থেকে (প্রজাতি)উন্নত হবে।" এটাকে আজকে বলা হয় the theory of survival of the fittest। র‍্যাসমাস ডারউইনের সর্বশেষ কবিতা,"The Temple of nature" প্রকাশ হয় ১৮০৩ সালে। এটাকে বিবর্তনবাদের কাব্যিক উপস্থাপনের শ্রেষ্ঠ বই বলে মনে করা হয়।[৬]


র‍্যাসমাস ডারউইনই প্রথম ম্যাসন যিনি বিবর্তনবাদি আকিদার প্রকাশ করেন। তার ১৭৯৪ সালে লেখা Zoonomia গ্রন্থে তিনি সমস্ত প্রানীর এক ও অভিন্ন পূর্বসূরির কথা বলেন। ফ্রিম্যাসন র‍্যাসমাস ডারউইনের নাতি হলেন আজকের বহুল আলোচিত সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব জনাব চার্লস ডারউইন। তিনি তার দাদার লেখাগুলো পাঠ করেন এবং হৃদয়ে ধারন করেন। Erasmus Darwin এর "Temple of Nature" লেখাটি চার্লস ডারউইন পাঠ করেন,সেসবে তিনি মন্তব্যও করতেন। চার্লস ডারউইনও রয়্যাল সোসাইটির সদস্য ছিলেন। তিনি তার দাদার ফ্রিম্যাসনিক সৃষ্টিতত্ত্বকে সকলের সামনে আনেন। এরপরে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মোড়কে নিজের নামে প্রচার শুরু করেন। তার ১৮৫৯ এ প্রকাশিত অন দ্যা অরিজিন অব স্পিসিজ বিবর্তনবাদের বই হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। তিনিও সমস্ত প্রাচীন যাদুকরদের অনূরূপ প্রচার করেন,  একক কোষ বিবর্তিত হয়ে Invertebrate এ পরিনত হয় যেটা মেরুদণ্ডহীন জেলিফিশ জাতীয় প্রানী, যেটা পরে মাছ এরপরে এম্ফিবিয়ান এরপরে রেপটাইল অবশেষে ম্যামলস বা স্তন্যপায়ী প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়।

সুতরাং,দেখতেই পারছেন, কোথাকার বিশ্বাস বা আকিদাকে আজ সায়েন্টফিক থিওরিতে রূপান্তর হয়েছে। ফ্রিম্যাসনিক বিলিভ সিস্টেইম! পার্থক্য হচ্ছে এই বিশ্বাস আগে লুক্কায়িত রাখা হত কিন্তু চার্লস ডারউইন প্রকাশ্যে প্রচার করেছেন। ডারউইনের উদ্যেগে যখন এই ফ্রিম্যাসনিক অকাল্ট ফিলসফি বিজ্ঞানে নিয়ে আসা হলো, সকল অপবিজ্ঞানীগন সাদরে গ্রহন শুরু করলেন। পাঠ্যপুস্তকসহ সমগ্র বিদ্যার ধারকবাহক সমূহ সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপের কথা পাল্টে বিবর্তনবাদী স্রষ্টাবিহীন সৃষ্টিতত্ত্বে পরিবর্তিত হতে থাকে। চার্লস ডারউইন বিবর্তনবাদের প্রচারণায় পাশে টমাস হেনরি হাক্সলিকে নেন। অতঃপর এই বিবর্তনবাদী অকাল্ট বিশ্বাসব্যবস্থা শুধুমাত্র বায়োলজিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, অন্য সকল দার্শনিক/বৈজ্ঞানিক শাখাতেও বিবর্তনবাদী চিন্তাকে নিয়ে আসা শুরু হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও ডারউইনিয়ান অকাল্ট ফিলসফিকে গ্রহন করতে শুরু করে। হিটলার এবং কার্ল মার্ক্স উভয়েরই বিবর্তনবাদের প্রতি আগ্রহ ছিল। T.H Huxley এর বিবর্তনবাদের উপর দেওয়া বক্তৃতা শ্রবণের উদ্দেশ্যে কার্ল মার্ক্স সরাসরি লন্ডনে অংশগ্রহন করেন।কমিউনিস্টদের শ্রেনীযুদ্ধের কন্সেপ্টের সাথে বিবর্তনবাদের ন্যাচারাল সিলেকশনের অদ্ভুত সাদৃশ্যতা দেখে কার্ল মার্ক্স ডারউইনকে ১৮৭৩ সালে
Das Kapital এর ২য় জার্মান সংস্করণ প্রেরণ করেন। টাইটেল পেইজে তিনি লেখেন,“Mr. Charles Darwin/On the part of his sincere admirer/[signed] Karl Marx, London 16 June 1873.” বিবর্তনবাদে মোহাবিষ্ট হয়ে তিনি ডারউইনকে তার পরের ভলিউম তার জন্য উৎসর্গ করার জন্য অনুমতি চায়! কার্ল মার্ক্সের বন্ধু এবং নিকটতম লেখক Friedrich Engels বলেন,"যেভাবে ডারউইন প্রানীজগতে বিবর্তনবাদের নীতি আবিষ্কার করেন, মার্ক্স ঠিক ওইভাবেই মানব ইতিহাসে বিবর্তনবাদকে আবিস্কার করেন। তিনি প্রজাতির মধ্যে টিকে থাকার লড়াইয়ের নীতির সাথে মানব ইতিহাসে শ্রেনীগোষ্ঠীর মধ্যে সংগ্রামের সামঞ্জস্যতা খুজে পান।"

বিংশ শতকে মার্ক্সবাদীরা সরকারকে বিবর্তনবাদি চিন্তার ফসলে সাধারন মানুষকে হত্যায় উৎসাহ দেয়। প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করা হয় যা ইতিহাসের যেকোন ধর্মযুদ্ধের চেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড। এডলফ হিটলারের জাতিবৈষম্য, আনফিটদেরকে হত্যা, আর্য অনার্য বিভেদের পিছনে এভ্যুলুশ্যনারী ন্যাচারাল সিলেকশন ও সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট তত্ত্বের চিন্তার প্রভাব বিশেষভাবে ছিল। Evolution and Ethics কিতাবে স্কটিশ এনাটমিস্ট ও অ্যান্থ্রোপোলজিস্ট স্যার আর্থার কিথ স্পষ্টভাবে বলেন, "আমি যেমনটা ধারাবাহিকভাবে বলে চলেছি, জার্মান ফুহার (হিটলার) একজন বিবর্তনবাদী; তিনি সচেতনভাবে জার্মানির অনুশীলনকে বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্য করার চেষ্টা করেছেন "
(Keith, Evolution and Ethics, 230)


বিবর্তনের এই বিশ্বাস ন্যাচারাল ফিলসফির শুধু বায়োলজি শাখাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, এই অকাল্ট ফিলসফি কস্মোলজিক্যাল স্কেলেও নিয়ে আসা হয়। হঠাৎ কথিত বিজ্ঞানীরা বলতে শুরু করলো, আমাদের গোটা সৃষ্টি জগতও বিবর্তন প্রক্রিয়ায় কোনরকমের সৃষ্টি কর্তার প্রয়োজন ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে। এক বিন্দু অস্তিত্বের মহাবিস্ফোরণ ও সম্প্রসারণের পর লক্ষ কোটি বিলিয়ন বছরের বিবর্তন প্রক্রিয়ায় সমস্ত বিশ্বজগত বিশৃঙ্খলা থেকে শৃঙ্খলায় ফেরে। এটাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ১৯২৭ সালের জর্জ লেমাইত্রের বিগব্যাং থিওরি মাধ্যমে। এটাই কস্মোলজিক্যাল এভ্যুলুশন!


লি স্মোলিনের কস্মোলজিক্যাল ন্যাচারাল সিলেকশন হাইপোথিসিস, যাকে ফেকুন্ড ইউনিভার্স তত্ত্বও বলা হয়,এতে একটি প্রক্রিয়া প্রস্তাব দেয় যে জৈবিক প্রাকৃতিক নির্বাচনের(ন্যাচারাল সিলেকশন) সাথে সমতুল্য  স্কেলগুলো বৃহত্তর পরিসরেও প্রযোজ্য। স্মোলিন এই ধারণাটি 1992 সালে প্রকাশ করেছিলেন এবং দ্য লাইফ অফ দ্য কসমোস নামে একটি বইয়ে। এরপর তৈরি হয় কোয়ান্টাম ডারউইনিজম। কোয়ান্টাম ডারউইনিজম হচ্ছে এমন এক থিওরি যাতে ব্যাখ্যা করা কিভাবে ডারউইনিয়ান ন্যাচারাল সিলেকশন প্রসেস ব্যবহার করে বস্তু জগত কোয়ান্টাম জগত বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুপরমানুর জগত থেকে ক্ল্যাসিক্যাল ওয়ার্ল্ডকে গঠন করে।এই থিওরিকে ২০০৩ সালে Wojciech Zurek তার একদল সহযোগী, যেমনঃ Ollivier, Poulin, Paz and Blume-Kohout প্রমুখের দ্বারা প্রস্তাবিত হয়।[৫]


অর্থাৎ দেখতে পারছেন সকল ক্ষেত্রেই স্রষ্টাবিহীন সৃষ্টিতত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। এরপর বলা হলো ডরউইনিয়ানের বিবর্তন সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ তত্ত্বকে বলা হলো "ইউনিভার্সাল ডারউইনিজম"। ইউনিভার্সাল ডারউইনবাদ (ডারউইনবাদি সর্বজনীন নির্বাচন তত্ত্ব বা ডারউইনীয় মেটাফিজিক্স হিসাবেও পরিচিত) বিভিন্ন পদ্ধতিকে বোঝায় যা ডারউইনবাদ তত্ত্বকে পৃথিবীর জৈবিক বিবর্তনের মূল ডোমেইনের বাইরেও প্রসারিত করে অন্য সকল ক্ষেত্রেও আরোপ করা হয় । ইউনিভার্সাল ডারউইনিজম, চার্লস ডারউইনের প্রস্তাবিত বিবর্তনের প্রক্রিয়াগুলির একটি সাধারণ সংস্করণ তৈরি করে, যার মাধ্যমে মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, চিকিৎসা, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞান সহ বিস্তৃত বিভিন্ন ডোমেইনে বিবর্তনকে ব্যাখ্যা করতে প্রয়োগ করা হয়।

রিচার্ড ডকিন্স ১৯৮৩ সালে প্রথম "সার্বজনীন ডারউইনবাদ" শব্দটি প্রবর্তন করেছিলেন। এর দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, সৌরজগতের বাইরের যে কোন সম্ভাব্য জীবন রূপ পৃথিবীর মতোই প্রাকৃতিক নির্বাচনের(ন্যাচারাল সিলেকশন) দ্বারা বিকশিত হবে। লেখক ডি.বি. কেলি সর্বজনীন ডারউইনবাদের সুপ্রশস্থ  পদ্ধতিগত রূপরেখা তৈরি করেছেন। তার 2013 সালের বই "দ্য অরিজিন অফ এভরিথিং"-এ তিনি দেখিছেন যে প্রাকৃতিক নির্বাচন জীবনের সংগ্রামে অনুকূল জাতিগুলির সংরক্ষণের সাথে শুধুমাত্র জড়িত নয়, যেমন ডারউইন দেখিয়েছেন, বরং অস্তিত্বের পক্ষে লড়াইয়ে সার্থক ব্যবস্থাকে সংরক্ষণ করাও ব্যাখ্যা করেছেন। এ জাতীয় সমস্ত সৃষ্টির স্থিতিশীলতা এবং বিবর্তনের পিছনে মৌলিক প্রক্রিয়াকে কেলি "survival of the fittest system" বলে বলে অভিহিত করেছেন। সমস্ত সিস্টেমগুলি চক্রাকার, তাই পুনরাবৃত্তি, প্রকরণ এবং নির্বাচনের ডারউইনীয় প্রক্রিয়া কেবল প্রজাতির মধ্যেই নয়, সমস্ত প্রাকৃতিক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কেলি ব্যাখ্যা করেন,বিশেষ করে বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্বটি একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে স্থিতিশীল শৃঙ্খল অবস্থায় বিবর্তিত হয়েছে,এটা সম্ভব হয়েছে ডরউইনিয়ান ন্যাচারাল সিলেকশনের দ্বারা।[৪]


চার্লস ডারউইন ছিলেন খ্রিষ্টধর্ম তথা আব্রাহামিক ট্রেডিশন বিদ্বেষী। তিনি প্রায়ই খ্রিষ্টানধর্মের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতেন। তিনি বলেনঃ
"যদিও আমি সকল বিষয়ে মুক্তচিন্তার পক্ষে শক্তিশালী সমর্থন দেই, তবুও এটা আমার কাছে (সঠিকভাবে বা ভুলভাবে মনে হয়) খ্রিস্ট ধর্ম ও আস্তিকতার বিরুদ্ধে সরাসরি যুক্তি জনসাধারণের উপর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে হয়না; এবং চিন্তার স্বাধীনতাকে ধীরে ধীরে প্রচার করা হয় লোকেদের মনকে আলোকিত করার দ্বারা, যা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা থেকে অনুসরণ করে।  সুতরাং আমার লক্ষ্য ছিল সর্বদা ধর্ম সম্পর্কে লেখা এড়ানো এবং আমি নিজেকে বিজ্ঞানের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছি, যাইহোক আমি যদি কোনওভাবে ধর্মের উপর সরাসরি আক্রমণ করতে সহায়তা করি, এ ব্যথার দ্বারা অযৌক্তিকভাবে দায়ী হয়ে থাকতে পারি,যেটা(ব্যাথা) আমার পরিবারের কিছু সদস্য পেয়ে থাকতে পারে।"
[উইকিপিডিয়া]

ডারউইন তার বিশ্বাসের ব্যপারে বলতেন যে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যপারে সন্দেহবাদী অথবা অজ্ঞেয়বাদী। যদি তিনি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাসীও ঘোষণা দিতেন সেটা অবশ্যই ইব্রাহীম(আ) এর মা'বুদ হবে না বরং সেটা হত ফ্রিম্যাসনের মা'বুদ, যেহেতু তার বাপ-দাদা সেই পথেরই এবং তার প্রচারিত তত্ত্বটিও ফ্রিম্যাসনেরই। আপনারা ইতোমধ্যে হয়ত বুঝতে পারছেন মাসূনীদের মা'বুদ কে। এ বিষয়টি 'আইজ্যাক নিউটনের' ব্যপারে করা পর্বটিতে গত হয়েছে।

ফ্রিম্যাসনে বিবর্তনবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুরস্কের ম্যাসনদের দ্বারা ছাপানো The Mason Magazine এ বিবর্তনবাদের তত্ত্বে বিশ্বাসের কারন ব্যাখ্যা করে বলা হয়ঃ"ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দেখিয়েছিল যে, প্রকৃতির অনেক ঘটনা সৃষ্টিকর্তার কাজ নয়। ফ্রিম্যাসনরা ডারউইনবাদকে একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ডারউইনবাদকে নাস্তিক্যবাদি ম্যাসোনিক শক্তিগুলো তাদের বিকৃত বিশ্বাস ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং মাসূনীরা এই তত্ত্বের প্রচারকে তাদের অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য(ম্যাসনিক ডিউটি) হিসাবে গ্রহণ করে।"[৯]

"ম্যাসন ম্যাগাজিন" “masonic duty” বলতে বোঝায়ঃ"আমাদের সকলেরই সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক এবং ম্যাসোনিক কর্তব্য হলো ইতিবাচক বিজ্ঞানকে ধরে রাখা, এই বিশ্বাসকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া এবং 'বিবর্তনবাদ সর্বোত্তম ও একমাত্র উপায়' এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে ইতিবাচক বিজ্ঞান [ডারউইনবাদ] দিয়ে তাদের শিক্ষিত করা।"[৯]

 মাসূনীদের এক বৈঠকে গৃহীত রেজোলিউশন ছিল একটি জলন্ত উদাহরণ, যা প্রমাণ করে যে ডারউইনবাদ হলো ফ্রিম্যাসনরির অন্যতম বৃহত্তম প্রতারণা। বিবর্তনবাদকে বিজ্ঞান হিসাবে প্রচার করার বিষয়টি, প্যারিসে মিজরাম ফ্রিম্যাসনরির ৩৩ডিগ্রি সুপ্রিম কাউন্সিল তার মিনিটসের মধ্যে প্রকাশ করেছে। তারা নিজেরাই তত্ত্বটি নিয়ে তামাশা করেছিল।মিনিটসে বলা হয়ঃ“[বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব] এই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের প্রেসের মাধ্যমে এই তত্ত্বগুলির প্রতি অন্ধ আস্থা জাগ্রত করি। বুদ্ধিজীবীরা তাদের জ্ঞান নিয়ে নিজেকে শেষ করে দেবে এবং তাদের কোনও যৌক্তিক যাচাইকরণ ছাড়াই বিজ্ঞানের কাছ থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্য কার্যকর করা হবে, যা আমাদের এজেন্ট বিশেষজ্ঞরা তাদের মনকে আমরা যেদিকে চাই, সে বিষয়ে শিক্ষার উদ্দেশ্যে চাতুরতার সাথে একত্রিত করেছেন। এক মুহুর্তের জন্য মনে করবেন না যে এই বিবৃতিগুলি খালি কথা: আমরা ডারউইনবাদের পক্ষে যে সাফল্যগাথা সাজিয়েছি সেগুলি সাবধানতার সাথে চিন্তা করুন..."[৯]


সুতরাং দেখতেই পারছেন, এ গুপ্তসংগঠনের অভিশপ্ত সদস্যরাও জানে যে বিবর্তনবাদ একটি অযৌক্তিক প্রতারণামূলক বিশ্বাস। ওরা ডারউইনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে স্রষ্টাদ্রোহী করে একরকমের বোকাই বানাচ্ছে। আজ এই বিবর্তনবাদ বায়োলজিকাল বিবর্তনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এখন আধ্যাত্মিক বিবর্তনের[১২] প্রচার শুরু করেছে। বলা হচ্ছে মানব জাতি এসেছে এককোষী প্রানী এরপর মাছ থেকে, এরপর শারীরিক উৎকর্ষ সাধিত হয়ে আজ আমরা হোমোস্যাপিয়েন্স। এবার স্পিরিচুয়াল এভ্যুলুশনের পালা। Psychic ability এর দ্বারা মানব হবে অতিমানব। ত্রিমাত্রিক জগতের রক্তমাংসের শরীর বিকশিত হয়ে যাত্রা শুরু করবে উপরের মাত্রায়। প্রত্যেকেই হবে চিরঞ্জীব গড-লাইক/ এ্যাঞ্জেলিক বিং(দৈবিক/ফেরেশতা অনুরূপ সত্তা)। বলা হচ্ছে এটাই এনলাইটেনমেন্ট এবং বিবর্তনের পরবর্তী ধাপ। এই আধ্যাত্মিক বিবর্তনের জন্য জানতে হবে আত্মাকে,রিয়ালিটিকে। যেতে হবে কাব্বালার সাজারাতুল খুলদের কাছে। কাব্বালিস্টিক যাদুশাস্ত্রের tree of life এর জ্ঞানই দেবে এই অমরত্ব এবং দৈবিক-এ্যাঞ্জেলিক সত্তায় বিবর্তনের পথের সন্ধান। এই ওয়াদা নতুন কিছু নয়। বরং ছয় হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। আমি এ আর্টিকেলের শুরুতেই উল্লেখ করেছি বিবর্তবাদের তত্ত্বটি প্রাচীন যাদুকররা চেতনার ওপার(Alterted state of consciousness) থেকে পায়। চেতনার ওপারে কার কাছ থেকে পায়? সহজ উত্তর হলোঃ শয়তান জ্বীন। এই আকিদা গ্রহন করা হয়েছে শয়তানের থেকে। এর শুরু খুজতে ফিরে যেতে হবে মানব জাতির আদি পিতামাতা আদম-হাওয়া (আঃ) এর আদি নিবাস জান্নাতে। শয়তান তাদেরকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। দেখিয়ে দেয় অনন্ত জীবন প্রদায়ী বৃক্ষের(Tree of life)। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা? 
[আত ত্বোয়া হা ১২০]

فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَاتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَـذِهِ الشَّجَرَةِ إِلاَّ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী।
 [আরাফ ২০]


এই প্রাচীন প্রতারণাপূর্ণ ওয়াদাকে শয়তান দুনিয়াতেও আবারও একই ট্রি অব লাইফের(সাজারাতুল খুলদ) নামেই নতুন মোড়কে মানুষের সামনে প্রকাশ করেছে[১]। মানুষকে ইভলভড হবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আধ্যাত্মিক বিবর্তনের ধারনাকে জনপ্রিয় করার কাজে আছে জাতিসংঘ সহ গোটা সায়েন্টিফিক প্যারাডাইম। গত পর্বে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আংশিক আলোচনা হয়েছিল যাতে দেখিয়েছি, কিভাবে যাদুবিদ্যা এবং অদ্বৈত ব্রহ্মতত্ত্বে বিশ্বাসের জন্য বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় প্লট তৈরি করেছে। এই গোটা অকাল্ট ফিলসফি এবং এর উপর দাড়ানো অপবিজ্ঞান সবকিছুই শয়তানের ওই বিবর্তনের ওয়াদার দিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পাশ্চাত্যে নিউএজ নামের বেদান্ত-বৌদ্ধমত ও যাদুশাস্ত্রের মিশ্রিত আদর্শের অনুসারী সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের কোয়ান্টাম ম্যাথড অভিন্ন পথের দিকে ডাকে।
শয়তানের প্রতিশ্রুতির দিকে। আধ্যাত্মিক বিবর্তনের ধারনাটিকে বিগত কয়েক দশকে জনপ্রিয় করনে কাজ করেছেন, Schelling, Hegel, Carl Jung ,Max Théon, Helena Petrovna Blavatsky, Henri Bergson, Rudolf Steiner, Sri Aurobindo,Jean Gebser, Pierre Teilhard de Chardin , Owen Barfield , Arthur M. Young, Edward Haskell ,E. F. Schumacher, Erich Jantsch,Clare W. Graves, Alfred North Whitehead , Terence McKenna, P. R. Sarkar ,William Irwin Thompson, Victor Skumin ,Ken Wilber ,Brian Swimme সহ অনেক আধুনিক দার্শনিক-অকাল্টিস্ট। সবার একই কথা, যাদুশাস্ত্রের অনুসরনের দ্বারা শয়তানের প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাস করিয়ে সে পথে পা বাড়ানো[১১]।আধ্যাত্মিক বিবর্তনের ব্যপারে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ লেখা হেলেনা ব্লাভাস্তস্কির। তিনি তার গ্রন্থে প্রাচীন বিবর্তনবাদী বিশ্বাসের বিষয়টিকে পরিপূর্ণভাবে বর্ননা করেন।তিনি এতে আর্যসহ একাধিক Root Race এ বিভক্ত করে মানব বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়কে উল্লেখ করেন।তিনি নিজেই দাবি করেছেন যে,তিনি সংক্রান্ত জ্ঞান লাভ করেন খুতুমি ও এল মোরিয়া নামের দুই মানুষের বেশধারী শয়তানের থেকে। [১০]

শয়তানের এই প্রাচীন প্রতিশ্রুতি মানুষকে দেওয়া হচ্ছে বাহ্যত দুইটি রাস্তায়।
১.Spiritual way
২.Biomechanical way.

আধ্যাত্মিক পথটি হচ্ছে যাদুশাস্ত্রের অনুসরণ এবং সে অনুযায়ী আকিদা বিশ্বাস গঠন, সরাসরি যাদুচর্চার দ্বারা আধ্যাত্মিক সিদ্ধিলাভের প্রতিশ্রুতি। অপর পথটি হচ্ছে যাদুশাস্ত্রের অনুসরনে গড়া প্রযুক্তির দ্বারা শারীরিক ক্ষমতার বিবর্তন ও বিবর্ধন। শরীরের রক্তমাংসের অঙ্গ বাদ দিয়ে সেস্থলে ঐসব প্রযুক্তি নির্ভর  ইস্পাত-লৌহের
যান্ত্রিক (মেক্যানিক্যাল) অঙ্গ প্রতঙ্গের সমন্বয়। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ট্র‍্যান্সহিউম্যানিজম। বিবর্তনবাদীরা আশা করে এর দ্বারা শারীরিক শক্তির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে দৈবিক শক্তি অর্জনের পাশাপাশি অমরত্বলাভও সম্ভব। ইহুদিদের কাব্বালিস্টিক সাজারাতুল খুলদের জ্ঞানের স্ক্রিপচার অনুসরনে তৈরি অকাল্টপ্রযুক্তি ভবিষ্যতে অনন্ত স্বর্গরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবে। মূলত এটা শয়তানের ওই প্রাচীন প্রতিশ্রুতিরই বায়োমেক্যানিক্যাল মিনিং। এটা বুঝতে এবং এই প্রতিশ্রুতি পূরণে কারা কাজ করছে জানতে হলে আমাদেরকে যেতে হবে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রচারসঙ্গী টমাস হেনরি হাক্সলির পরিবারের নিকট।

টমাস হেনরি হাক্সলি ছিলেন একজন ফ্রিম্যাসন এবং র‍্যায়াল সোসাইটির সম্মানিত মেম্বার। ব্রিটিশ হাক্সলি পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্রিটেনের পাব্লিক সার্ভিসে সিনিয়র পদের কর্মকর্তা রূপে নিয়োজিত ছিলেন। হাক্সলির বড় ছেলে এল্ডস হাক্সলি Brave New World এবং ডোরজ অব পারসেপশান এর লেখক। তার বিবর্তনবাদী ভাই জুলিয়ান হাক্সলি ইউনেস্কোর প্রথম ডিরেক্টর অব জেনারেল।তার ভাই এন্ড্রু হাক্সলি নোবেল বিজয়ী ফিজিওলজিস্ট। ১৯৩২ তে প্রকাশিত ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ডে তিনি এমন এক ভবিষ্যৎকে উপস্থাপন করেছেন যেখানে মানুষ একটি ইউটোপিয়ান কিংডমে(স্বর্গীয় স্বপ্নরাজ্য) বাস করে, সেখানে আর মানুষ স্বাভাবিক প্রকৃতিতে জন্মগ্রহন করে না, সবাই ইনকিউবেটরে ক্লোনিং এর দ্বারা হয়। এতে তিনি উল্লেখ করেনঃ"প্রাচীন স্বৈরশাসকরা ব্যর্থ হয়েছেন, কারন তারা পর্যাপ্ত রুটি(খাদ্য), বিনোদন, আলৌকিকতা, রহস্য(মিস্টিসিজম) সরবরাহ করতে পারেনি। একটি 'বৈজ্ঞানিক স্বৈরশাসনের' দ্বারা (নির্মিত) শিক্ষাব্যবস্থা সত্যিই কাজ করবে, যেখানে প্রত্যেক মানব মানবী তাদের দাসত্ব ভালবাসবে। এবং কখনো বিপ্লবের চিন্তা করবে না। এমন 'বৈজ্ঞানিক স্বৈরশাসন' ধ্বংসের কোন ভাল প্রয়োজনীয়তাই ভবিষ্যতে হবে না।"

জুলিয়ান হাক্সলি ইউজেনিক্সের প্রমিনেন্ট অ্যাডভোকেট। ইউজেনিক্স হলো এমন এক বিজ্ঞান যার দ্বারা মানব প্রজাতির গঠন প্রকৃতির উন্নয়ন করা যায় আকাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যে নিয়ন্ত্রন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে। ধরুন জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে উচ্চতা গায়ের রং ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য ইচ্ছেমত পরিবর্তনের দ্বারা আকাঙ্ক্ষিত উন্নত প্রজাতির মানুষ সৃষ্টি। ১৯৩৩ এর the vital importance of eugenics এ বলেন,  ইউজেনিক্সের মূল লক্ষ্য হবে মানসিকভাবে ত্রুটিযুক্ত লোকেদের সন্তানধারনকে বন্ধ করা। তিনি বিবর্তনবাদের যোগ্য অযোগ্যের সংজ্ঞানুযায়ী অযোগ্যদের বিয়ে হ্রাস করা, অযোগ্যদের বন্ধ্যাকরণের পক্ষে বলেন।তিনি ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের থিংকট্যাঙ্ক ইউনেস্কোর প্রথম ডিরেক্টর অব জেনারেল হবার পর, Unesco- its purpose its philosophy নামে ইশতেহার প্রকাশ করেন। তাতে বলেন, ইউনেস্কোর উদ্দেশ্য পৃথিবীতে ভ্রাতৃত্ব, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানবকল্যান, এটি তখনই সম্ভব যখন প্রত্যেক মানুষ 'বিবর্তনবাদি লক্ষ্যে' এগিয়ে আসবে। তিনি ' ট্র‍্যান্সহিউম্যানিজম' শব্দটিও উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয় তার "New bottle for new wine" প্রবন্ধে তিনি বলেনঃ"আমি ট্রান্সহিউম্যানিজমে বিশ্বাস করি:যখন অনেক মানুষ এ কথাটি বলতে পারবে, মানবজাতি এক নতুন ধরনের অস্তিত্বের গন্তব্যে পৌছবে। তারা আমাদের থেকে ভিন্ন হবে...। এটা(ট্রান্সহিউম্যানিজম) অবশেষে  সচেতনভাবে হওয়া তাদের নিজেদের ভাগ্যের (শেষ) পরিনতি হিসেবে সত্য হবে।"

অতএব,আপনারা বুঝতে পারছেন, জাতিসংঘের মত বড় বড় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো কোন লক্ষ্যে কাদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করছে। এরা সকলেই ফ্রিম্যাসনিক কাব্বালিস্টিক ইউটোপিয়ার স্বপ্ন দেখে যেটায় ইহুদিদের মসীহ একচ্ছত্র আধিপত্য করবেন। মানুষকে সেখানে ইহুদি মাসূনীদের কাব্বালিস্টিক জ্ঞানের দ্বারা জেনেটিক প্রোগ্রামিং ক্লোনিং এবং ট্রান্সহিউম্যানিস্টিক প্রক্রিয়ায় সাজারাতুল খুলদের অমরত্ব দান এবং চিরস্থায়ী স্বর্গরাজ্য তৈরির স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। এক সাক্ষাৎকারে পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকুকে পদার্থবিদ নিল ডি গ্র‍্যাস টাইসন প্রশ্ন করেন,
"টাইসনঃফিউচার অব মাইন্ড টাইটেলের আপনার বইটিতে যাতে আপনি বলেছেন,"বৈজ্ঞানিক লক্ষ্যঃ মনকে বুঝতে শেখা, একে সম্প্রসারিত, শক্তিশালী করা"। কখন আমাদের মস্তিষ্ককে আপলোড করা বাস্তবে পরিনত হবে? 

মিচিও কাকুঃ ডিজিটাল অমরত্ব এখন থেকে শুরু হয়ে গেছে।টেলিপ্যাথি, টেলিকেনেসিস,স্মৃতিকে আপলোড করা, স্বপ্নকে রেকর্ড করা, এগুলো এখন আর সায়েন্সফিকশন নয়। আপনি যদি ফিজিক্স ল্যাবরেটরিতে যান, আপনি দেখবেন কিভাবে মানব মস্তিষ্ক থেকে ছবিগুলোকে আহরণ করা হয়। এটা কিভাবে এখন সম্ভব হচ্ছে? আমরা এখন প্রানী মস্তিষ্কে স্মৃতিকে আপলোড করতে পারি, স্মৃতিকে রেকর্ড করতে পারি, কারন পদার্থবিজ্ঞান এখন চিন্তায়(মনে) প্রবেশ করেছে।

টাইসনঃআপনি কি ঐ একই বিষয়কে বর্ননা করছেন যাকে চেতনা(consciousness) বলা হয়? যদি এটাই হয়, তাহলে বলতে পারি যে এটা শুধুমাত্র আমাদের চিন্তা(স্মৃতি) নয় বরং এটা আমাদের পরিচয়,আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের চেতনাগত অস্তিত্ব, যেটা চিরকাল বেচে থাকে। 

মিচিও কাকুঃ একটা থিওরি আছে, যেটা বলে যে আত্মা হলো ইনফরমেশন(তথ্য)। এটা বিরাট আকারের ইনফরমেশন। যদি এই ইনফরমেশনকে হলোগ্রাফিক ফর্মে রাখা হয়,যদি আপনি মৃত্যু বরণও করেন, মৃত্যুর পরেও এর কিছু একটা টিকে থাকবে।

অপর প্রশ্নকর্তাঃ তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে এটা অমরত্ব। আপনি একবার ওই পর্যায়ে গেলে আপনি চিরকাল বেচে থাকবেন। 

মিচিও কাকুঃ এটা কেন ডিজিটাল অমরত্ব হবে না? আপনি কি চাইবেন না আপনার নাতীর নাতীর নাতীর নাতীর নাতীদের সাথে কথা বলতে, যারা কিনা আবার নিজেদেরও নাতীর নাতীর নাতীর সাথে কথা বলতে চাইবে? 

টাইসনঃ এটা আপনাকে স্পেস টাইমের মধ্যে চলাচলের ক্ষমতা দেবে, সুতরাং এটা ঈশ্বরের সমতুল্যতা। 

মিচিও কাকুঃ জ্বি, এটার কথাই আমরা বলছি। Transcending human race!"


অতএব, এটা স্পষ্ট যে আজকের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাদীক্ষা সবকিছুই ঐ প্রাচীন লক্ষ্যের জন্য নকশা করা। এটা শয়তানের সেই প্রাচীন প্রতিশ্রুতির বায়ো-মেকানিক্যাল প্রক্রিয়া। মাসূনীরা বিবর্তনের ক্রমধারার সর্বোচ্চ লক্ষ্য তথা শয়তানের প্রতিশ্রুতির ব্যপারে খোলাখুলিভাবেই বলে। ইংরেজ লেখক এবং ফ্রিম্যাসন W.L. Wilmhurst বলেনঃ "...বিবর্তনের দ্বারা মানব থেকে অতিমানবে (superman/Superhuman) রূপান্তর - সর্বদা প্রাচীন রহস্যগুলির(ancient mystery-প্রাচীন যাদুকরদের বিশ্বাস বা মিস্টিসিজম) উদ্দেশ্য ছিল, এবং আধুনিক মাসূনীদের(ফ্রিম্যাসন) আসল উদ্দেশ্য এমন সামাজিক এবং দাতব্য উদ্দেশ্য নয়, যার প্রতি এত বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়, বরং যারা নিজেদেরকে আধ্যাত্মিক বিবর্তনের দ্বারা উৎকর্ষে পৌছানোর আকাঙ্ক্ষা করে, সেটা ত্বরান্বিত করা এবং তাদেরকে ঐশ্বরিক বা দৈবিক বৈশিষ্ট্যে নিয়ে যায়। এবং এটি একটি নির্দিষ্ট বিজ্ঞান, একটি রাজকীয় শিল্প, যা আমাদের প্রত্যেকের পক্ষে অনুশীলন করা সম্ভব .."[৩]
(The Meaning of Masonry, W.L. Wilmhurst, p. 47)


বিবর্তনবাদের চিন্তা যে ফ্রিম্যাসন বা যাদুকরদের কাছে শয়তানের থেকেই আসে, সেটা বোঝা যায় চার্চ অব শয়তানের প্রতিষ্ঠাতা শয়তানের পূজারী এন্টন লিভেই কথায়। তিনি বলেনঃ"শয়তানবাদ একটি নির্মম স্বার্থপর, নৃশংস ধর্ম। এটা এ বিশ্বাসের ভিত্তিতে গঠিত যে, মানুষ প্রকৃতিগতভাবে স্বার্থপর, হিংস্র প্রাণী,এই জীবন হলো ডরউইনিজমের সুযোগ্যের টিকে থাকার জন্য সংগ্রামের অনূরূপ। এটা এই যে এই পৃথিবী তাদের দ্বারা শাসিত হবে যারা এ জঙ্গলে অন্তহীন যুদ্ধে জয়লাভের জন্য লড়াইয়ে লিপ্ত হয়- শহুরে সমাজও এর অন্তর্ভুক্ত। এই স্কোরের উপর ভিত্তি করে চার্চ অফ শয়তানের সঙ্গত সমালোচনা করা যেতে পারে,যদিও এর সমালোচকদের স্বীকার করতে হবে যে এই দর্শন পৃথিবীতে বিদ্যমান যুক্তি এবং বাস্তব অবস্থার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। "


শয়তান মানুষকে অবজ্ঞা করে সাধারন চতুষ্পদ প্রানীর সাথে তুলনা করে। বিবর্তনের শিক্ষাদানের অন্যতম কারন এটিও যে মানুষের নিজের কাছে নিজেদের সম্মানের ব্যপারে দুর্বল ধারনা সৃষ্টি করা। শয়তানের পূজারী ও স্যাটানিক বাইবেলের লেখক এন্টন লাভেই বলেনঃ
"শয়তান মানুষকে অন্য একটি (সাধারণ) প্রাণী প্রজাতি হিসাবে তুলে ধরে, কখনও কখনও আরও উন্নত হয়, কখনো বা চারপায়ে চলাচলকারীদের চেয়ে আরও খারাপ, যারা তাঁর "দৈবিক আধ্যাত্মিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের কারণে" সকলের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য প্রাণী হয়ে উঠেছে।"
(Anton LaVey, The Satanic Bible (NewYork, Avon Books, 1969), p. 25.)

শয়তানের মানুষের প্রতি এরকম ঈর্ষায় ভরা ঘৃণার কারনটিও অনেক পুরোনো। যখন আদমকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করে আগুনের সৃষ্টি ইবলিশকে সিজদাহ করতে বলা হলো, শয়তান অহংকারবশত তা থেকে বিরত থাকলো, যার দরুন শয়তান অভিশপ্ত এবং বিতাড়িত হয়েছিল। আল্লাহ বলেনঃ
إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنْ الْكَافِرِينَ
 قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَن تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ الْعَالِينَ
قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ

কিন্তু ইবলীস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।
আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা, এখান থেকে। কারণ, তুই অভিশপ্ত।
[ছোয়াদঃ৭৪-৭৭]



বিবর্তনবাদে একটা সমস্যা হচ্ছে এত যে ট্রাঞ্জিশন কিন্তু ইটারমিডিয়েটরি প্রানীর অস্তিত্ব নেই। কেন বানররা এখনো বানর?এজন্য কার্ল লিনিয়াস যিনি ট্যাক্সোনমির (প্রানীর শ্রেনীবিভাজন বিদ্যা) জনক ক্রিয়েশনিজমে বিশ্বাস করতেন। আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখাকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন তা সৃষ্টিকর্তার কথার বিপরীত মেরুর। যে বিষয়ে কোন দলিল প্রমাণ নেই, সুস্পষ্ট মাসূনী অকাল্টিস্টদের মনগড়া কথা, সেটাও সায়েন্স! আকাশবিদ্যা থেকে শুরু করে পদার্থবিদ্যা,প্রানীবিদ্যা... সমস্ত শাখাগুলো প্রাচীন যাদুকরদের বিদ্যা এবং বিশ্বাসগুলোকে ঢোকানো হয়েছে। ১৭ ও ১৮তম পর্বে দেখাব কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের দ্বারা বিজ্ঞান ফিরে গেছে বাবেল শহরের আইডিয়ালিস্টিক দর্শনে। অদ্বৈত বেদান্তবাদের কুফরি যাদুমন্ত্রের বিশ্বাসব্যবস্থাকে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় রূপান্তর হয়েছে। আজ দেখলেন, যাদুকরদের গুপ্তসংগঠন ফ্রিম্যাসনদের যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক স্রষ্টাবিমুখ কুফরি সৃষ্টিতত্ত্বকে প্রানীবিদ্যা থেকে শুরু করে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।Oregon State University এর অধ্যাপক পদার্থবিদ Dr. Wolfgang Smith বলেন,"...বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে, ডারউইনবাদ অনেক আগেই বর্জন করা হত। মূল বক্তব্য হলো, বিবর্তনবাদটি বিশ্বে তার বৈজ্ঞানিক গুণাবলীর শক্তির উপর দিয়ে আসেনি, বরং নস্টিক(Gnostic) মিথ দ্বারা যথাযথভাবে তৈরি করেছে। এটি সত্যই প্রমাণ করে যে, জীবিত জিনিসগুলি নিজেরাই নিজেদের তৈরি করেছিল, যা প্রকৃতপক্ষে একটি মেটাফিজিক্যাল দাবী .... সুতরাং ... বিবর্তনবাদ একটি বৈজ্ঞানিক উপায়ে সাজানো একটি মেটাফিজিক্যাল মতবাদ .... এটি একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। এবং পৌরাণিক কাহিনীটি gnostic , কারণ এটি স্পষ্টতই প্রাণীসত্তার অলৌকিক উৎসকে অস্বীকার করে;.... ডারউইনবাদ তাই সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তাকে, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, অবজ্ঞার প্রাচীন জ্ঞানচর্চা অব্যাহত রেখেছে। এটি স্থির রাখে ... 'যিহোবা ব্যাশিং'(ঈশ্বরের বিশ্বাসকে প্রহারের) এর নস্টিক(যাদুবিশ্বাসের) ঐতিহ্যকে।"

(From Old Gnosticism to New Age I, Alan Morrison, SCP Journal Vol. 28:4-29:1, 2005, pp. 30-31)[২]

অতএব, আশাকরি কথিত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে পরিচিত Biological, Cosmological, Quantum তথা UNIVERSAL EVOLUTION এর উৎস এবং সারকথা বুঝতে পারছেন। ফ্রিম্যাসনিক এই বৈজ্ঞানিক তত্ত্বটি আসলে কতটুকু বৈজ্ঞানিক! প্রশ্ন থাকলো, ফ্রিম্যাসনিক প্রাচীন যাদুকরদের আকিদা-'বিবর্তনবাদ' এর উপর দাড়ানো এই প্রচলিত বিজ্ঞান কি আসলেই বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান!?


[চলবে ইনশাআল্লাহ]







ﻳَﻌِﺪُﻫُﻢْ ﻭَﻳُﻤَﻨِّﻴﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﻌِﺪُﻫُﻢُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺇِﻟَّﺎ ﻏُﺮُﻭﺭًﺍ






Ref:

[১]
http://www.kabbalahblog.info/2014/05/the-hidden-link-between-evolution-and-kabbalah/


[২]
http://www.soul-guidance.com/houseofthesun/esohist.htm&hl=en-US&f=1&tk=13341524048405849985&rqid=2OJ4Xp7GJJCA2Qasl7CgBA&pid=


[৩]
http://patriotsandliberty.com/lindas-latest/2013/12/10/the-ancient-myth-of-evolution-sumeria-to-darwin-and-occult-new-age


[৪]
wikipedia.org/wiki/Universal_Darwinism


[৫]
wikipedia.org/wiki/Quantum_Darwinism


[৬]
wikipedia.org/wiki/Erasmus_Darwin


[৭]
Khaldun, ibn. "The Muqaddimah" (PDF). Translated by Franz Rosenthal.Chapter6
wikipedia.org/wiki/Muqaddimah


[৮]
wikipedia.org/wiki/History_of_evolutionary_thought


[৯]
[John Daniel, Two Faces of Freemasonry, Day Publishing, 2007, p. 121
Mason Magazine, Issue: 25-26, p.14
Mimar Sinan Magazine, Issue 38, 1980, p. 18
Türk Mason Magazine, Issue:25-26, March 1977, p. 59]


[১০]
https://www.beliefnet.com/columnists/kingdomofpriests/2010/03/darwin-at-the-mountains-of-madness-evolution-the-occult.html


[১১]
https://m.youtube.com/watch?v=I5KHCRnSKf0
https://m.youtube.com/watch?v=dhG4oGeOxDs
https://m.youtube.com/watch?v=Z2HEV4CcdFM


[১২]
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Spiritual_evolution


বিগত পর্বসমূহের লিংকঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html