Thursday, July 11, 2019

চেতনার ওপারে - Altered State of consciousness

সারা পৃথিবীতে প্যাগান বিলিফ সিস্টেমের পুনর্জাগরন আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অবস্থা মূলত এ মুহূর্তে প্রয়োজন সাধারন মানুষকে কুফরে আকবরের দিকে নেওয়ার জন্য, শয়তানের আনুগত্য এমনকি পূজার জন্য। এজন্য আজকে প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির দিকে সারা পৃথিবীকে ঝুকে পড়তে দেখা যাচ্ছে। আমেরিকায় ওয়াননেসের(ওয়াহদাতুল উজুদ) আহব্বান/ইনফিনিট লাভ রিলিজিয়নের ছড়াছড়ি। এমনকি নায়ক-নায়িকা গায়ক-গায়িকারা থেকে শুরু করে ফিজিসিস্ট সকলেই এ পথে আহব্বান করে। তাদের বিশ্বাস ব্যবস্থার সত্যতার সবচেয়ে বড় দলিল হচ্ছে 'চেতনার ওপারের' অভিজ্ঞতা অথবা অল্টার্ড স্টেইট অব কনসাসনেস[১৮]। এটা সেই মিস্টিক্যাল অনুভূতি যার জন্য অনেক সংগঠন ধ্যান-যোগসাধনা এবং প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির দিকে আহব্বান করে।


চেতনার অপরদিকের অভিজ্ঞতা লাভের পর অজস্র হার্ডকোর নাস্তিকও থেইজমে ফিরে আসার নজির আছে। এটা এমন এক অভিজ্ঞতা যেটা অর্জনের পর প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির সত্যতাকে অস্বীকার করা কষ্টকর হয়ে যায়। এ অভিজ্ঞতা লাভের পথ অনেক। গভীর ধ্যান সবচেয়ে সস্তা পথ। একটু খরচার পথও খোলা আছে। বিভিন্ন সাইকাডেলিক ড্রাগ(এলএসডি/ফিলোসাইবিন/ডিএমটি/সাইকাডেলিক ম্যাজিক মাশরুম/আয়োহুয়াস্তকা ইত্যাদি) খুব সহজেই এই অভিজ্ঞতার দ্বারে নিয়ে যাবে। আরো ব্যায়বহুল পথও আছে। সেন্সরি ডিপ্রাইভেশন চেম্বার[১১] বা আইসোলেশন চেম্বার। ১২ ইঞ্চি লবন পানির স্তরের অন্ধকার চেম্বারে শুয়ে থাকলেই হবে। সাব্জেক্ট কয়েক মিনিটের মধ্যেই সমস্ত সচেতন অনুভূতিগুলো অচেতন হয়ে যাবে এবং অজানা জগতে প্রবেশ করবে। অনেকে বিষাক্ত প্রানীর বিষের(যেমন জেলিফিশ) প্রভাবেও ওই অনুভূতি লাভ করেছে শোনা যায়। এটা কাউকে NDE[১৯] এর অভিজ্ঞতা দান করে। পশ্চিমাদের মুখে Astral Projection,Outer body experience, clairvoyance ইত্যাদি যত শব্দই শোনেন না কেন, প্রায় তার সবই 'চেতনার ওপারের' ভিন্ন ভিন্নমাত্রার অভিজ্ঞতা। অল্টার্ড স্টেইট অব কনসাসনেসে সবাই যে একই রকম অভিজ্ঞতা লাভ করবে,তেমনি নয়। সবচেয়ে সাধারন(কমন) অভিজ্ঞতা হচ্ছে একটা স্বপ্নিল ঘোরে পৌঁছানো, যেটা আলো দ্বারা পরিপূর্ন। সমস্ত বস্তুর রঙ খুব উজ্জ্বল এবং মনে হয় সেসব থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে। সমস্ত বস্তুকে যেন ভেদ করে যাওয়া যায়। অর্থাৎ সমস্ত বস্তুই যেন ননসলিড পেনেট্রেবল এনার্জি।
অসংখ্য স্পাইরাল,ফ্র‍্যাক্টাল ইনফিনিট প্যাটার্ন,বিভিন্ন জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার ইত্যাদি। এই অভিজ্ঞতা লাভকারী সমস্ত বস্তু এবং নিজের ব্যক্তি স্বত্ত্বার মধ্যে একটা বন্ধন অনুভব করে, যেটা মহাবিশ্বের সর্বত্র বিস্তৃত। একধরনের অকৃত্রিম ভালবাসার যেন সমস্ত বস্তুকে ছেয়ে আছে। এরকম অবস্থায় গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্তকিছুকে সচেতন বলে মনে হয়। অর্থাৎ যেন সব কিছুর জীবন আছে। নিজেকে মহাবিশ্বের একপ্রাণ বা একস্বত্ত্বার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে হয়। এক পিউর ওয়াননেসের(ওয়াহদাতুল উজুদ) অনুভূতি। এ অনুভূতি ওই অভিজ্ঞতালাভকারী ব্যক্তি স্বত্ত্বাকে এই সৃষ্টিজগতের Co-Creator(সহযোগী স্রষ্টা) বা নিজেকে ডিভাইন বা সরাসরি সৃষ্টিকর্তা ভাবতে বাধ্যকরে। এজন্য এদের মুখে I Am অনুভূতির কথা শুনবেন।এমনও হয়েছে যে কোন সাইকাডেলিক ড্রাগ গ্রহণকারী এমন দেখেছে যে গাছপালা যেন তার সাথে কথা বলছে[১৭]। অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে আশির্বাদ করছে। মিস্টিক/অকাল্টিস্টদের ভাষায় এই অভিজ্ঞতার জগত হচ্ছে ইনার স্পেস বা স্পিরিচুয়াল রেল্ম। অনেকে এটাকে হায়ার ডাইমেনশনাল জার্নি, সাইক্যাডেলিট ট্রিপ বলে।

এ অভিজ্ঞতা গভীর প্রকৃতিবাদ এবং সর্বেশ্বরবাদের দিকে নিয়ে যায়। এ বিশ্বাস বা আকিদা হৃদয়ে গভীরভাবে প্রোথিত হয়। আব্রাহামিক ধর্মের কোন টিতে থাকলে সেটার উপর আর বিশ্বাস থাকে না। কারন তারা নিজেদের অভিজ্ঞতায় বিপরীত মতাদর্শের সত্যতাকে চোখে দেখে। এ অভিজ্ঞতা যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক মিথ্যা কুফরি আকিদাকে অনেক শক্ত করে। যাদুকররা এ অভিজ্ঞতা লাভের দরুন বলত, স্রষ্টার সাথে এক(সংযোগ/সান্নিধ্য) হতে কোন ধর্ম লাগে না। খ্রিষ্টান ইহুদী কিংবা মুসলিম হবার কোন প্রয়োজন নেই।
খ্রিষ্টান ডমিনেটেড শতকে খ্রিষ্টানরা যখন এরূপ ধর্মদ্রোহীতামূলক কথা যাদুকরদের থেকে শুনলো, তাদেরকে ধরে ধরে কচুকাটা করতে লাগলো। হাজারো ডাকিনী বিদ্যা চর্চাকারীদেরকে পুড়িয়ে মারারও ঘটনা বিগত হয়েছে।

এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতাকে গ্রীক সর্বেশ্বরবাদী দর্শন থেকে আসা সুফিবাদে ফানাফিল্লাহ বলা হয়। সুফিদের ভাষায় ওই মেডিটেটিভ স্তরে গিয়ে সুফিসাধক আল্লাহর সাথে একাকার(ফানা) হয়ে যায়। সালাফি অনেক আলিম বলেন ওটা ফানাফিল্লাহ নয় বরং ফানাফিশাইত্বন(অর্থাৎ শয়তানের সাথে একাকার হওয়া।) এ ব্যপারে সালাফি আলিমগনের অবস্থান শুদ্ধ। এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা আরবি শব্দানুসারে   আল আকিদাতুল ওয়াহদাতুল উজুদ-হুলুল ওয়াল ইত্তেহাদের বিশ্বাস হৃদয়ে সৃষ্টি করে। আহমাদ রেজা বেরেলভী সাহেবের অনুসারী সকল বুজুর্গগন এজন্য মেডিটেইশনে গুরুত্বারোপ করেন। তাদের অভিধানে সমস্ত প্যাগান কার্যক্রমের আরবি ভার্শণ আছে। আছে ষড়চক্র বা লাতাইফের যিকির, প্রনয়ানম, দমের সাধনা,মোরাকাবা ইত্যাদি। এগুলো তারা মারেফাত এর ইল্মের স্তরে রেখেছে। অর্থাৎ ইল্মে মারেফাতুল্লাহর(আল্লাহর পরিচয়) নামে শয়তানের পরিচয়/দীদার লাভের শিক্ষা দিচ্ছে। বেরেলভী কারা যারা বোঝেন না তাদের বুঝতে সুবিধা হবে, যদি বলি মেইনস্ট্রিম পীর-মুরিদগনের নেটওয়ার্ক।

যাহোক, অর্ল্টার্ড স্টেইট অব কনসাস্নেস শুধু সুডোসায়েন্টেফিক পরিমণ্ডলেই ছেয়ে আছে এমনটি নয়। আইজ্যাক নিউটন থেকে আইনস্টাইন প্রত্যেকেই চেতনার এই স্তরে পৌছতেন, যাতে নতুন থিওরি প্রসব কর‍তে পারেন। আইনস্টাইন চেতনার ওপারে যাবার প্রক্রিয়াকে নাম দিয়েছেন মাইন্ড এক্সারসাইজ! যখনই ওই স্তরে পৌছতেন, ফিরে আসতেন নতুন কোন থিওরি বা ইক্যুয়েশন নিয়ে। ম্যাটারকে ভাইব্রেটরি এনার্জেটিক ফিল্ডের তত্ত্বটিও এই হ্যালুসিনোজেনিক এক্সপেরিয়েন্স থেকেই এসেছে। এর প্রেক্ষাপটে আজ পদার্থবিজ্ঞানীগন বলছেন,Everything physical is really non physical!

এবার আসি,চেতনার ওপারে এমন কি হয় যার দরুন এরূপ মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়!?

ব্যপারটা বোঝা খুবই সহজ। এসকল ড্রাগের প্রভাবে অথবা মেডিটেটিভ স্তরের (অল্টার্ড)মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা শয়তান জ্বীনদের একটা দরজা তৈরি করে দেয় Enlightenment seeker'দের মস্তিষ্কের উপর[২০]। শয়তান চাইলে ওদের জগতের সাথে মানব চেতনার সংযোগ ঘটাতে পারে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রনহীনতার সময়ে শয়তান পুরোপুরি মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়।
তখন শয়তানের ইচ্ছেমত স্বপ্নীল ঘোর সৃষ্টি করে যা ইচ্ছা দেখায়, অকৃত্রিম অনুভূতি সৃষ্টি করে। শয়তান জ্বীনদের ফিজিক্যাল ডাইমেনশন যেরূপ দেখতে সেইরূপ প্রজেকশন তৈরি করে মাথায়, অথবা সরাসরি জ্বীনদের চোখে ওদের জগত যেরূপ, সেটাই মানব মস্তিষ্কে দেখায়। মেডিটেশনের মাধ্যমে একবারেই ওই পর্যায়ে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য। মেডিটেশন বা যোগ ধ্যানে এজন্য ধীরে ধীরে ওই অবস্থায় যাওয়া হয়। ইয়োগা প্র‍্যাক্টিশনাররা ধ্যানের এক এক ধাপকে চক্র বা এনার্জি এক্সেস পয়েন্ট সক্রিয় করা বলে।
তারা কুণ্ডলিনী এনার্জিও বলে যা কিনা মানুষের গোপনাঙ্গের দিকে সুপ্তাবস্থায় থাকে, সেই এনার্জিকে ধীরে ধীরে জাগ্রত করে পেট,এরপরে বুক এরপরে গলা এবং সবশেষে মাথা পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হয়। মস্তিষ্কে সে এনার্জি পৌছানো তথা তাদের ভাষায় ক্রাউন চক্রকে সক্রিয়করনের দ্বারা যোগী আত্মউপলব্ধি লাভ করে বা সিদ্ধিলাভ করে। অর্থাৎ সে 'চেতনার ওপারে' পৌছে ইনফিনিট ওয়াননেস অনুভব করে। ওয়াহদাতুল উজুদ বা Monism এর আকিদা হৃদয়ে প্রোথিত হয়। ইতোপূর্বে থার্ড আই, ধ্যান নিয়ে আলোচনা করেছিলাম তাই আবারো একই কথায় ফিরতে চাই না[১]। যাইহোক,পরিষ্কার দেখছেন ধ্যানযোগে চেতনার ওপারে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য বিষয় কিন্তু hallucinogenic drugs/সাউন্ড ওয়েভ বা বাইনিউরাল বিটস[১৫] দিয়ে খুব সহজেই পৌছানো যায়। ধ্যানের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের আসল অস্তিত্বের প্যান্থেইস্টিক স্বরূপ অনুভব করতে সক্ষম হয়, সেই লোক Know Thyself এর আসল হাকিকত বুঝতে পারলো। ঐ লোককে তখন এনলাইটেন্ড বলা হয়। আত্মসিদ্ধি লাভ করেছে।
সুফিদের এক গুরু ওই অনুভূতি লাভ করেই আনাল হাক্ক(আমিই সত্য/আল্লাহ্) বলত। একইভাবে হিন্দু যোগীরা নিজেকেই পরমাত্মা বলে। আমার কাছে একজন বাবা লোকনাথের ব্যপারে কিছু তথ্য দিয়ে তার কথার ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। তিনি খুব সম্ভবত ঈমানি ব্যপারে সন্দেহে নিপতিত হয়েছিলেন। লোকনাথ নিজেকে পরমাত্মা দাবি করত, তাছাড়া অনন্ত অসীম,সর্বত্রব্যাপী সৃষ্টিকর্তাও বলত এমনকি রনে বনে জঙ্গলে বিপদে পড়লে তাকে স্মরণ করার কথাও বলতেন(উইকিপিডিয়া)। তার এরূপ কথার ব্যাখ্যা আশা করি বুঝতে পারছেন। ওই চেতনার ওই স্তরে পৌছে তার মধ্যে প্যান্থেইস্টিক ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য নিজেকে পরমাত্মা, সর্বত্রবিরাজমান ঈশ্বর দাবি করে। তার এরূপ দাবি শুনে খুব বেশি অবাক হবার কিছু নেই।

আমাদের দেশের কোয়ান্টাম ম্যাথড চেতনার ওই স্তরে নিয়ে "গড রিয়েলাইজেশন" এর কোর্স করায় বলে জানিয়েছিল Law of attraction[২] এর প্রচার কারী এক শয়তান। যারা কোয়ান্টাম ম্যাথডের সাথে সম্পৃক্ত তারা "কমান্ড সেন্টার" টার্মের সাথে খুব পরিচিত। তিনি প্রথমে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে বলেন এক ব্যক্তিকে, পরবর্তীতে আপনাআপনিই ধ্যানের মধ্যে এক লোক হাজির হয় যাবতীয় দিক নির্দেশনার জন্য। হয়ত এটাই সক্রেটিসের বলা Daemon! এসব ব্যপারে ওদের অফিশিয়াল কিতাবেই বিস্তারিত আছে।

প্রাচীন জংলি শামানরা গাছগাছড়া এবং মাশরুম দিয়ে চেতনার ওপারে যেত ওদের পূর্বপুরুষদের কথিত আত্মাদের সাথে যোগাযোগ এর জন্য। এই বিষয়টিকেই সুন্দরভাবে দেখিয়েছে ব্ল্যাক প্যান্থার মুভিতে। ফিল্মের নায়ককে একরকমের লতানো উদ্ভিদ পিষে খাওয়ানো হয় ঐতিহ্যগত কারনে মৃত পূর্বপুরুষের সাথে দেখা করার জন্য। ম্যাট্রিক্স ফিল্মেও শামানদের চিন্তাধারার প্রতিফলন রয়েছে। থাকাটাই স্বাভাবিক, কারন নির্মাতার পিতা একজন শামানিস্ট।

আম্রিকান হিপ্পিদের মধ্যে প্যাগান আধ্যাত্মিকতার বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি কারন ওদের কাছে ড্রাগ ডালভাত। অনেক হতাশাগ্রস্ত বিষন্ন মাদকাসক্ত সাইকাডেলিক পান করে জীবনকে নতুন আঙ্গিকে দেখতে শুরু করে। এদের মধ্যেই এখন আধ্যাত্মিকতা বেশি। ওরা যে মেডিটেশনে যে থার্ড আই এ্যাক্টিভেশনের কথা বলে সে অবস্থায় পৌছবার আগেই 'চেতনার ওপারে' যেতে হয়। এ গোটা ব্যপারটি যে স্যাটানিক এতে কোন সন্দেহ নেই কারন বহু নিউএজার মেডিটেশন প্র‍্যাক্টিশনার ধ্যানের ঘোড়ে শয়তান জ্বীনদের ভয়ংকর চেহারাতেই দেখেছে। কেউ বা শয়তানের আক্রমনের স্বীকারও হয়েছে!

অসাধারন একটি টেস্টিমোনি দেখুন, যেখানে এক স্পিরিচুয়ালিস্ট চেতনার ওপার ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বলছে সাইকাডেলিক ব্যবহারের পর,তিনি সেখানে অসংখ্য এলিয়েনদেরকে দেখে[৪]।তারা নাকি মানুষের উপকারী বন্ধু। এলিয়েন নিয়েও ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি[৩]।

DMT[৫] কে স্পিরিচুয়াল কমিউনিটিতে Spirit Molecule বলেও ডাকা হয়। ওরাই বলে এটা নাকি সহজে স্পিরিটদের জগতে যাবার দরজার মত[২০]। ডিএমটিকে বলা হয় Dimethyltryptamine। এটা সবচেয়ে শক্তিশালী ড্রাগ যেটা গভীরভাবে চেতনাকে আচ্ছন্ন করে। মানুষ,কিছু প্রানী এবং কিছু গাছপালায় এই উপাদান পাওয়া যায়। ডিএমটি অন্য যেকোন হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগের চেয়ে শক্তিশালী। এক ম্যাথম্যাটিশিয়ান তার ডিএমটি ট্রিপ নিয়ে বলেন, ডিএমটি পান করে তিনি মাতাল অবস্থায় এমন এক জগতে পৌছান যেখানে শুধুই ফ্র‍্যাক্টাল কম্পিউটার গ্র‍্যাফিক্সের মত কিছু দেখতে পান। সেগুলো খুবই দ্রুতগতির ছিল। অর্থাৎ তার অস্তিত্বগত চেতনা ওইরকম জগতে যায়। তার মনে হয়েছে কোন ইন্টেলিজেন্স এন্টিটির ধারাবাহিক স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সব হয়। অর্থাৎ হলোগ্রাফিক ভিজুয়ালাইজেশনের মত যা দেখেন তা যেন কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আশপাশটা জীবন্ত প্রানী জাতীয় কিছু দ্বারা পরিপূর্ন। এরপরে বললেন, ম্যাজিক মাশ্রুম খুব গভীর কিছু দেখায় না, সেগুলো আমাদের অর্ডিনারি রিয়ালিটিকেই স্বাভাবিকভাবে দেখায়, পার্থক্য হচ্ছে সমস্ত বস্তুকে ভাইব্রেটরি এনার্জি মনে হয়। এলএসডি ব্যবহারে তিনি অনেক জিওমেট্রিক প্যাটার্ন দেখেন, যেগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলো কিছুটা ইউক্লিডীয়ান জিওমেট্রি[৬]।
সুতরাং আজ আমরা যে ফ্রাক্টাল ম্যান্ডেলব্রটের ইনফিনিট এ্যানিমেশন/ম্যাথম্যাটিকস দেখতে পাই সেটা অরিজিন কি সেটা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে। সেদিন কম্পিউটারে লিনাক্স মিন্ট ইন্সটল করে অবাক হই, ওরা প্রোগ্রাম তালিকায় এটাকে ডিফল্টভাবে দিয়েছে।

ডাকোটা নামের জনৈক স্পিরিচুয়ালিস্ট(সাবেক নাস্তিক) সরাসরি ওই জগতে দেখা প্রানী বা ইন্টেলিজেন্ট বিংদেরকে সরাসরি Demon(শয়তান) বলেন। তার পরামর্শ হচ্ছে চেতনার ওই পর্যায়ে পৌছে তাদের কাছে নিজেকে সমার্পন করতে হবে, কমপ্লিট সাবমিশন অর্থাৎ পুরোপুরি আত্মসমার্পণ। ইগো বলে কোন কিছুই রাখা যাবেনা। তিনি বলেন, যারাই সাইকাডেলিক ট্রিপে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা লাভ করে তারা নিজেদেরকে সমার্পন করেনি ওই spirit being দের কাছে। তার এক বন্ধু আত্মসমার্পন না করায় মনে হয়েছে জাহান্নামের মধ্যে আটকে গেছে, পাজল্ড লুপের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। ডিএমটি পান করে ডাকোটা অজস্র এলিয়েন বিংদের দেখেছে, তিনি বলেন এই ডিএমটি বিংদের সাক্ষাৎ লাভ খুবই একটা সাধারন ব্যপার।
অনেকে এদেরকে স্পিরিট গাইড, এলিয়েন,elf, elves ইত্যাদি অনেক নামেই ডাকে। তিনি ওই অবস্থায় কিছু সর্পিল প্রানীদেরকে দেখেন যারা নাকি তার পেটেও প্রবেশ করে! তার মতে এই স্বত্ত্বারাই আমাদের ত্রিমাত্রিক জগতে ভূত বা শয়তান হিসেবে ম্যানিফেস্ট করে, শুধু মাত্র আমাদের ইগোর জন্য। এই বিং বা সত্ত্বা গুলো আমাদের অস্তিত্বের মতই সত্য। আমরা তাদের ভয় পাই বলে আমাদের নেগেটিভ ইন্টেনশন ওরা গ্রহন করে শক্তি পায় এবং পজেস করে। এদেরকে ভয় করা যাবে না, বরং গোটা রিয়ালিটি কিরূপ তা জানতে হবে নিজের অস্তিত্বের ব্যপারে আসলটা জানতে হবে, যখন নিজেদের ইগো থেকে সম্পূর্ন মুক্ত হওয়া যাবে তখন অশুভ বলে কোন কিছুই থাকবে না। তখন এই এলিয়েন বা স্পিরিট বিংদের কাছেও নিজেদের সমার্পনের মাধ্যমে তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার ধারনা থেকে বের হওয়া যাবে। আমরা যে ত্রিমাত্রিক সলিড রিয়ালিটি এবং বস্তু দেখি, সেসব আসলে মিথ্যা।
এগুলো শুধুই মেন্টাল প্রজেকশন। রিয়ালিটির এই স্ট্যান্ডার্ড শুধুই মানব মস্তিস্কের ট্রান্সলেশনের ফল।গাছপালা, পশুপাখি, জড়বস্তু সমস্তকিছুর থেকে নিজের সত্ত্বাকে আলাদা মনে হয় বাহির থেকে, কিন্তু আসলে সবকিছু এক। এক অস্তিত্ব(ওয়াহদাতুল উজুদ)। এই ডিএমটি বিংরাই হচ্ছে বাইবেলে উল্লিখিত ডিমন(শয়তান)। আমরাই এই পার্থক্য এবং ভাল মন্দের,ঘৃনা ভালবাসার পার্থক্য তৈরি করছি ইগোর কারনে। আসলে ওই এলিয়েন বা স্পিরিট বিং আমার আপনারই অংশ। তাদেরকে মন্দভাবে ধরলে তারা আপনার কাছে মন্দভাবেই ধরা দেবে। খ্রিষ্টান ধর্ম এই ইগোই জাগ্রত করে। এই ইগোর মৃত্যু সম্ভব আত্মসমার্পনের মাধ্যমে [৭]। রিয়ালিটি আমাদের চোখের দেখা দৃশ্যের মত সলিড না বরং সব কিছু নন ফিজিক্যাল এনার্জেটিক। এই ত্রিমাত্রিক ম্যাটেরিয়াল জগতে যেরূপ সবকিছু আলাদা,আসল জগতে সব কিছু ইন্টারকানেক্টেড, এর থেকে অদ্ভুত এক ওয়াননেসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। আমরা আছি একরকমের সিমুলেশনের মধ্যে[১৪]। তার মতে এই অভিজ্ঞতা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত কারন এটা সমস্ত ধর্মীয় মতবাদগত পার্থক্যকে ধবংস করে মানবতাকে এক করে। সবাইকে একক সত্যের(ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদার) দিকে নিয়ে যায়।[৮]

সুতরাং আশাকরি পাঠকরা বুঝতে পারছেন সায়েন্টিফিক, ফিলোসফিক্যাল ফাউন্ডেশন কোথা থেকে এসেছে, কোথা থেকে ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা এসেছে, যেটায় আজ দেওবন্দি/কওমী আলিমরা পর্যন্ত বিশ্বাস করে। একদম খাটি স্যাটানিক এক্সপেরিয়েন্স থেকে এসব আকিদা ও বিশ্বাসব্যবস্থার উন্মেষ।

ট্যারেন্স ম্যাকানার ডিএমটি ট্রিপে সার্পেন্ট/রেপ্টিলিয়ান এবং টিকটিকি সদৃশ কিছু প্রানীদেরও দেখা হয়, এদের কেউ কেউ অসমম্ভব উন্নত সভ্যতা/প্রযুক্তির ধারক।ভিডিওতে সরাসরি শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হয়েছে[৯]। ম্যাকান্না খুব হতাশ এ ব্যপারে যে মানুষ কোটিটাকা খরচ করে এলিয়েনদের দেখা পেতে বর্হিজগতে খুজছে, অথচ এই জগতে দাড়িয়েই এলিয়েনদের দেখা পাওয়া যায়। আউটার স্পেস বাদ দিয়ে ইনার হায়ার ডিমেনশনাল স্পেস নিয়ে গবেষনা করা উচিত।

একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই আউটার স্পেস ও এলিয়েন কন্সেপ্ট হয়ত এই ইনার ডিমেনশনাল স্পেস থেকেই এসেছে। সাতটি ইউনিভারসাল হার্মেটিক প্রিন্সিপ্যাল এর একটি হচ্ছে As Above so below। অর্থাৎ ভেতর যা বাহির তাই, বাহির যা ভেতরও তাই। সে অনুযায়ী প্রাচীন প্যাগান ফিলসফাররা যখন এই স্পিরিচুয়াল রেল্ম ভ্রমন করে তখন তাদের মনে ম্যাক্রো পর্যায়েও একই কল্পনার অবতারণা ঘটায়। একইভাবে আউটার স্পেসে এলিয়েন ফ্যাণ্টাসিও একইভাবে আছে। ট্রান্সেনশন হাইপোথেসিস[১০] অনুযায়ী, এখন আর এলিয়েনদের খুজে না পাওয়ার কারন, তারা উন্নত হতে হতে এখন আউটার স্পেসে এক্সিস্ট করা বাদ দিয়ে ইনার স্পেসে চলে গেছে। সুতরাং সাইকাডেলিক[১২] জার্নিতে দেখা শয়তানদেরকে এলিয়েন বললেও সমস্যা নেই।

শয়তান এর থেকে আসা অভিজ্ঞতাই আজকের জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু এবং উৎস। হিন্দু বৌদ্ধ বৈষ্ণব(ধর্মচক্র) এবং সিক্রেট সোসাইটিগুলোর নিগূঢ় তত্ত্বের মূলভিত্তি[১৩]। সমগ্র বাতেনিয়্যাহ সম্প্রদায়গুলোর মূল ভিত্তি। আপনার কি মনে হয়, আজকে যে সিমুলেশন হাইপোথেসিস জেগে উঠেছে, হাশেম আল ঘাইলির মত সেলিব্রেটি বিজ্ঞানবোদ্ধারা ভিডিও ফিল্ম বানাচ্ছে, এসবের ভিত্তি কি[১৬]?

যাদুবিদ্যা,যাদুকরদের সাথে সাইকাডেলিক এক্সপেরিয়েন্সের গভীর সখ্যতা আছে। তাদের কুফরি দর্শন,বিশ্বাস এবং কর্মের ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী এবং যাদুবিদ্যার কার্যনীতি বোঝার জন্য এই অভিজ্ঞতা লাভের বিকল্প নেই। শামান,উইক্কানরা স্পিরিট মলিকিউল বিভিন্ন গাছগাছড়া থেকে নিয়ে এরূপ হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগ তৈরি করে। এক হলিউড ফিল্মে চমৎকারভাবে দেখিয়েছিল এক লোকের মৃত স্ত্রীকে ফিরে পাবার জন্য এক ডাইনীর কাছে গিয়ে এরকম হ্যালুসিনোজেণীক ড্রাগ সেবন করে। একইভাবে "এ ডার্ক সং" ফিল্মে কাব্বালার চেয়েও ইন্টেন্স ম্যাজিক্যাল আর্ট ওয়ার্কের শরণাপন্ন হয় এক এক সন্তানহারা মা, সন্তানকে ফিরে পেতে। অবশেষে চেতনার ওপারে গিয়ে শয়তানের কাছে নিজেকে সমার্পন করে। চেতনার ওপারে গিয়ে উইচক্র‍্যাফট প্র‍্যাক্টিশনার রিয়ালিটিকে জ্বীন শায়াত্বীনের চোখে দেখতে পায়। শয়তান জ্বীনজাতির কাছে ম্যাটারের সলিডিটি বলে কিছু নেই। এদের কাছে সবকিছুই এনার্জি। একজন উইচ বা সর্সারার চেতনার ওই ঘোরে গিয়ে বস্তু/মানুষ এবং প্রকৃতির সমস্তকিছুর মধ্যে ইন্টারকানেকশন দেখতে পায়, বায়ুমণ্ডলের যে ভ্যাকুয়াম আমরা আশপাশে দেখি, ওই অবস্থায় সেটার অনুপস্থিতি নিজেকে সৃষ্টিজগতের মধ্যে সচেতন একক অভিন্ন স্বত্ত্বা ভাবায়। যেহেতু ইগো আমিত্বের বিশ্বাসকে ভেঙ্গে ফেলতে হয় এবং নিজের চেতনাকে সমগ্র এনার্জেটিক প্যাটার্নে দেখা সৃষ্টির চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাবতে বাধ্য করে, তখন নিজের ইন্টেনশান বা অভিপ্রায় ব্যবহার করে প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটানোর বিশ্বাস জন্মায়, তারা ন্যাচারকে হাইলি প্রোগ্রামেবল মনে করে। নিজেকে তখন ন্যাচারের পার্টিসিপেন্ট না রেখে নিজেই প্রকৃতিকে চালনা বা ম্যানিফেস্ট করবার সম্ভাবনা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়। অর্থাৎ প্রকৃতিতে প্রোগ্রাম হয়ে না থেকে নিজেই প্রোগ্রামার হয়ে প্রকৃতির নীতিতে হস্তক্ষেপ করে নিজের স্বার্থানুযায়ী কাজ করার বিশ্বাস তৈরি করে। তবে এসব অভিজ্ঞতা/অনুভূতির সবার আগে নিজেকে প্রকৃতি এবং শয়তান জ্বীনদের(DMT plasma being) কাছে আত্মসমার্পন করতে হবে। আমিত্ব বলে কিছু রাখা যাবে না, কোন ধর্ম বিশ্বাসে আবদ্ধ থাকা যাবে না। অর্থাৎ কাফির হতেই হবে। মারভেলের ডক্টর স্ট্রেঞ্জ মুভিতে সর্সারার সুপ্রীম ডক্টর স্টিভেন স্ট্রেঞ্জকে যাদুবিদ্যার প্রথমেই বলে, "আপনি নদীর স্রোতকে কিছুতেই পরাস্ত করতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই ওর স্রোতকে ব্যবহার করতে হবে নিজের জন্য। এজন্য অবশ্যই আত্মসমার্পন করতে হবে", "Silence your ego, and your power will rise"। এজন্য সাধারন কেউ কাফির না হয়ে হাজার ইন্টেনশান আর রিচুয়াল করলেই যাদু সফল হতে হবে না। কুফরি করতে হবে। আল্লাহকে অস্বীকার করতে হবে। হয়ত যাদুবিদ্যা কুফরি হবার পিছনে এটা অন্যতম একটা কারন।অধিকাংশ যাদুকররা নির্বোধ হয়, এরা বিশ্বাস করে না যে "আন্নাল কুয়্যাতা লিল্লাহি জামিয়্যা"। ওরা তো সবার আগেই আল্লাহকে অবিশ্বাস করে কেননা ওয়াহদাতুল উজুদ,হুলুল, ইত্তেহাদ এদের কোর টেনেট। এরা নিজেরাই তো নিজেদের এবং প্রকৃতির ইলাহ মনে করে, মা'বুদ মনে করে। এদের আকিদাই হচ্ছে 'আনা আল হাক্ক', নাউজুবিল্লাহ্। এজন্য এক কাব্বালিস্ট র‍্যাবাইকে বলতে দেখি কাব্বালার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে নিজেকে জায়ান্ট বা তার চেয়েও ক্ষমতাশালী ভাবা, আমরা নাকি ফুল পটেনশিয়ালিটির ব্যপারে অজ্ঞ, যাদুকররা এ ব্যপারে অজ্ঞ না। আমরা আসলে সুফি মরমীদের কথা ও বিশ্বাসের আন্ডারলেইং তাৎপর্য বুঝিনা তাই অনেকে এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়, কেউবা বিশ্বাস করে, কেউবা এদেরকে অন্ধভাবে সম্মান করে।

যাদুর ব্যপারে সত্য হচ্ছে কাফিররা যতকিছুই করুক না কেন, সব কিছুর পরিবর্তনকারী এবং সবকিছুর ক্ষমতা এক আল্লাহরই। যাদুও তারই নির্দেশ ব্যতিত কার্যকরী হয় না।

আজ মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও প্যাগানিজমের প্রতি বেশ আকর্ষন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে জ্ঞানী ভাব নেওয়ার জন্য কিংবা স্রেফ তাওহীদের অবিশ্বাসের দরুন ওয়াহদাতুল উজুদকে বেছে নিয়েছে। সুফিবাদের কথা না-ই বা বললাম। ওরা তো খাটি শয়তানি শিক্ষাকে আরবি শব্দে মুড়িয়ে শতশত বছর মুসলিমদের মধ্যে প্রচার করে চলছে। শয়তানের দেওয়া অনুভূতি অভিজ্ঞতাকে বানিয়েছে ফানাফিল্লাহ বাকাফিল্লাহ। শয়তানের সাথে সম্পর্ক, শয়তানের পরিচয়লাভের তরিকাকে বানিয়েছে ইল্মে মারিফাতুল্লাহ(মারেফাতের ইল্ম)। শয়তানের কাছে আত্মসমার্পনের জন্য এখন এসে গেছে কোয়ান্টাম ম্যাথড, যারা সরাসরি জানিয়ে শুনিয়েই অকাল্ট প্যাগান ফিলসফির প্রচার চালাচ্ছে। 'মুসলিম' শব্দের অর্থ আল্লাহর নিকট আত্মসমার্পনকারী। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ধ্যান/সাইকাডেলিক ড্রাগ প্রভৃতির দ্বারা সরাসরি শয়তানের নিকট আত্মসমার্পনের জন্য আহব্বান করা হয়। শয়তানের কাছে এবং সমস্ত প্রকৃতির কাছে আত্মসমার্পনের মাধ্যমে নিজেকে সৃষ্টিকর্তার অংশ মনে করাকে শেখানো হয়। অর্থাৎ এরা শুধু কাফিরই বানায় না, বরং সবচেয়ে নিকৃষ্টতম তাগুতে পরিনত করে। তাগুত হচ্ছে সে যে নিজেকে ইলাহ মনে করে, নিজেকে রবের আসনে বসায়।

وَعَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ : «إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنَ الْإِنْسَانِ مَجْرَى الدَّمِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : মানুষের মধ্যে শয়তান (তার) শিরা-উপশিরায় রক্তের মধ্যে বিচরণ করে থাকে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২০৩৮, মুসলিম ২১৭৪, আবূ দাঊদ ৪৭১৯, আহমাদ ১২১৮২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস





Ref:
১.
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/chakra-third-eye-yoga_10.html
২.
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_29.html

https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_10.html

https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_8.html
৩.
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html
৪.
https://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc
https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=wrfOo7m6wlo
৫.
https://m.youtube.com/watch?v=LtT6Xkk-kzk
৬.
https://m.youtube.com/watch?v=AYDgmpiE-U0
৭.
https://m.youtube.com/watch?v=Gqij_2kjJcg
https://m.youtube.com/watch?v=wDJIsscCoGE
৮.
https://m.youtube.com/watch?v=Xy9-AM6QE70

https://m.youtube.com/watch?v=3FqmVITeiwQ
১০.
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_41.html
১১.
https://steemit.com/life/@ericvancewalton/altered-states-of-conscious-my-fifth-float-in-the-sensory-deprivation-tank

https://journals.sagepub.com/doi/pdf/10.2190/IC.29.2.d

https://bigthink.com/21st-century-spirituality/the-altered-states-of-sensory-deprivation
১২.
https://m.youtube.com/watch?v=kRF9n7U1G3w
১৩.
https://m.youtube.com/watch?v=SQjd535lLx0
https://m.youtube.com/watch?v=kiAc408Yk78
১৪.
https://m.youtube.com/watch?v=Z1HJVA7BjDU
১৫.
https://m.youtube.com/watch?v=VCeNUH4RY0M
https://m.youtube.com/watch?v=np_to6OghXE
https://m.youtube.com/watch?v=WYQwYrUMnrI
https://m.youtube.com/watch?v=pgj_b_pW3Zw
https://m.youtube.com/watch?v=22vOkSWiNwQ
১৬.
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/hashem-al-ghaili-occult-worldview_28.html
১৭.
https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=5uGtTamBNUA
১৮.
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Altered_state_of_consciousness
১৯.
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/near-death-experiencende_10.html
২০.
https://smokeymirror.com/magic-mushrooms-or-ancient-aliens/

https://www.evolveandascend.com/2017/02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extraterrestrials/

https://patch.com/california/santacruz/can-psychedelic-drugs-help-us-speak-to-aliens

https://www.huckmag.com/perspectives/activism-2/psychonauts-drugs-aliens/

https://grahamhancock.com/51560-2/

https://qz.com/1196408/scientists-studying-psilocybin-accidentally-proved-the-self-is-an-illusion/

https://www.mcgilldaily.com/2017/10/as-above-so-below/


Friday, July 5, 2019

যাদুশাস্ত্রভিত্তিক বিজ্ঞান এবং দাজ্জালের অপেক্ষা

আমরা যে ভন্ড মসীহের আত্মপ্রকাশের কত নিকটে অবস্থান করছি, তা সম্ভবত অনুধাবন করতে পারিনা।

এ র‍্যবাঈ বললেন, "সমস্ত কাব্বালিস্ট র‍্যবাঈ এবং হেসিডিক মুভমেন্টের র‍্যাবাইগন এ ব্যপারে একমত যে, যখন সারাবিশ্ববাসী কাব্বালার দিকে ঝুকে পড়বে, কাব্বালার প্রতি তৃষ্ণা তৈরি হবে, কাব্বালিস্টিক ইনিসিয়েশনের প্রতি সবার ঝোক বাড়বে, তখনই মসীহ বের হবেন। আর আমরা এটাই আজ দেখছি, সমগ্র বিশ্ব এই জ্ঞানের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এ সময়টা ইহুদী ইতিহাসের সবচেয়ে ওয়াইল্ড পার্ট এবং সর্বশেষ মুহুর্ত ইহুদী ইতিহাসের।এটা মেসিয়ানিক যুগ। আর এটা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ যে আমাদের চোখের সামনে ইতিহাসের এ মহা অধ্যায় আনফোল্ড হতে যাচ্ছে। এটা সব কাব্বালিস্টের কথা যে মসিহের বের হবার সময় সর্বত্র কাব্বালার প্রতি প্রচন্ড তৃষ্ণা কাজ করবে। এবং সত্যিই আমরা আজ এটাকে সচক্ষে দেখছি...।"
[র‍্যাবাই ছাহেবের পিছনে হেক্সাগ্রামের মধ্যে এক চোখ খুব সুন্দরভাবে ফুটানো হয়েছে] 

সত্যিই কাব্বালিস্টিক অলটারনেটিভ নলেজ এখন সর্বত্র ছেয়ে আছে। বিজ্ঞান থেকে শুরু করে সকল স্প্রিচুয়াল প্যাগান ট্রেডিশনগুলো সর্বত্র। এমন কি টেকনোলজি এবং নতুন কিছু রৌবাস্ট টেকনোলজিক্যাল রিভাইভ্যালের প্রতীক্ষায় আছে এসোটেরিক মুভমেন্ট এবং ফিজিসিস্টরা যেটা টেকনোক্রেটিক ওয়ান ওয়ার্ল্ড ইউটোপিয়ার স্বপ্ন দেখায়, সব কিছুই কাব্বালিস্টিক কন্সেপ্টের উপর প্রতিষ্ঠিত। বছর খানেক আগে তো এর নমুনায় একটা ভিডিও কম্পাইল করে রেখেছিলাম, দেখেন নি? https://m.youtube.com/watch?v=rw17zNZIve0

আইরনিক্যাল ফ্যাক্ট হচ্ছে যে মালাউন বিজ্ঞানী কাব্বালার প্রশংসা করছিল তাকেই গ্লোরিফাই করেছিল আরিফ আজাদ সাহেব। কোথাকার জল কোথায় গিয়ে মিশেছে! এই লোকগুলোই দাজ্জালি ইল্মের ডিফেন্ড করে বুজুর্গের বেশে। [তাকে নিয়ে কড়া ভাষায় লেখা আর্টিকেলটা ডিলিট করে দেন,ওটা কয়েকটা কারনে নিজেই আনপাবলিশ করেছিলাম] 

আজকের গোটা মেইনস্ট্রিম সৃষ্টিতত্ত্ব এই কাব্বালিস্টিক কন্সেপ্টের উপরই প্রতিষ্ঠিত। ইজরাইলের ওয়ার্ল্ড কাব্বালা একাডেমির চেয়ারম্যানের ভাষায় পৃথিবীর সর্বত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাব্বালিস্টিক এ্যাসেন্সই শেখানো হয়। 

আজ তো সায়েন্টিফিক ডকুমেন্টারি প্রেজেন্টেশনগুলোয় সরাসরি কাব্বালাকে ডিকোড করা দেখায়। এসব অবস্থা খুব শীঘ্রই ওদের ত্রাণকর্তা মসীহের এ্যারাইভালের ইঙ্গিত দেয়। আল্লাহর কাছে ওই মুহুর্ত থেকে পানাহ চাই। কিন্তু এ অবস্থাতেও অনেক লোক নিজেদেরকে অনেক নিরাপদ মনে করে, ভাবে এখনো অনেক হাজার বছর বাকি,অথবা ওসব কিছুই হবেনা। অনেক আলিম তো এসব নিয়ে কথা বলার ব্যপারেও ডিস্কারেজ করে। এই তো উপরে যার নাম নিলাম তারই স্কুল অব থট এরকম। তাদের এই এ্যাপ্রোচ সত্যিই ভাবিয়ে তোলে...

পথের দিশা || সত্য সন্ধানীদের উদ্দেশ্যে উস্তায আহমাদ নাবীল হাফিজাহুল্লাহর দরস

আল আদিয়াত মিডিয়া পরিবেশিত,

সত্য সন্ধানীদের উদ্দেশ্যে উস্তায আহমাদ নাবীল হাফিজাহুল্লাহর দরস  “পথের দিশা”।






অনলাইনে শুনুন
https://soundcloud.com/user-190134135/sm-1

ডাউনলোড করুন
http://bit.ly/2kvNs1v

Wednesday, July 3, 2019

প্যারাডক্সিক্যাল আজাদ

 প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ নামের অত্যন্ত নিন্মমানের বইটির লেখক আরিফ আজাদ সাহেব তার এ বইটিতে কস্মলজির ব্যপারে কোন সাধারণ ভ্রান্তিকে প্রচার করেন নি। বরং তিনি এমনই কুফরবেজড শয়তানের কথনকে প্রমোট করেছেন যার শুরুই হয় ব্যবিলনে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কুরআনে কারীমে ওই ভ্রান্ত কস্মোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ডের শেকড়ের ব্যপারে ইরশাদ করেছেন। কয়েক শতক পূর্বে এই ব্যবিলনীয়ান অপবিদ্যার নাম দেওয়া হয় কাব্বালা। অর্থাৎ কুফরি যাদুবিদ্যা। আর ফ্রিম্যাসন সম্রাট এলবার্ট পাঈকের ভাষায় এই ব্যবিলনিয়ান পিথাগোরিয়ান এস্ট্রোনোমিকাল আইডিয়াকে এস্ট্রলজি বা জ্যোতিষ শাস্ত্র বলে।
আর জ্যোতিষশাস্ত্রের ব্যপারে ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেনঃ

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَنِ اقْتَبَسَ عِلْمًا مِنَ النُّجُومِ اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ ‏"‏ ‏.‏

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষ বিদ্যার কিছু শিক্ষা করলো, সে যেন যাদু বিদ্যার একটা শাখা আয়ত্ত করলো, এখন তা যত বাড়ায় বাড়াক। [৩০৫৮]

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৭২৬
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

অর্থাৎ আমরা দেখছি নেক সুরতে কিসের বীজ বপন করা হচ্ছে!

তিনি প্রতিষ্ঠিত যে এস্ট্রোনমির কথা বলেন, তার ঠিক বিপরীতটাই বলে কুরআন ও সুন্নাহ। কুফরি যাদুশাস্ত্র কাব্বালিস্টিক এস্ট্রনমিকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা অপব্যাখ্যা আর ভ্রান্ত মনগড়া ট্রোল দিয়ে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। তাকে এসব বিষয় প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ রচনার সময়েই জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি ছিলেন এসব ব্যপারে বেপরোয়া! অদ্ভুতভাবে তার বাতিল মতাদর্শটিই সাধারন মানুষের মধ্যে ভাইরাসের আকারে ছড়িয়ে পড়ে এমনকি তাওহীদবাদী সত্যিকারের দ্বীনদার ভাইয়েরাও বোধকরি ওনার খপ্পরে পড়েছিল। তারা আজও হয়ত কনফিউজড। তার শয়তানি কিতাবটির প্রশংসা করেন খোদ চরমনাই পীর ছাহেব। রতনে রতন চেনে প্রবাদটি সত্য ।

তিনি কাফেরদেরই সুডো সাইন্টিফিক বা ন্যাচারাল ফিলসফিক্যাল নোশনকে পরমভক্তির সাথে নিয়ে কুরআন-সুন্নাহর সাথে মিশিয়ে ব্যাখ্যা করেন।। তার চেষ্টাটি এরূপ ছিল যে, কোন ব্যক্তি স্যাটানিক ইনক্যান্টেশন উচ্চারণ করে বলছেন এসবই কুরআনে ১৪০০ বছর আগে বলা হয়েছে। এবং ভাইসভার্সা। লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ। এ বিষয়গুলোর ব্যপারে প্রথম থেকেই বলে আসছি এবং বরাবরের মত তার ফ্যানবয়দের রোষানলে পড়ছি। আজকে দেখাবো আরিফ আজাদ স্যারজি কাদের কিরূপ আকিদা কোন উপায়ে প্রমোট করেন, তার ছোট্ট প্রমান দেখাবো। আজ দেখবেন কিভাবে কুফফারদের কুফরি আকিদাগুলোকে এই নামজাদা সেলিব্রেটিগন ইসলামিক স্ট্যাণ্ডার্ডে পজিটিভলি প্রকাশ করে সাধারন লোকেদের ওদের মতই ব্যাধিগ্রস্ত মুরজিয়া বানায়।

কদিন আগে দেখলাম তিনি একটি লেখা প্রকাশ করেন। সেখানে থিওরি অব এভ্রিথিং/স্ট্রিং থিওরি নিয়ে দু'চার কলম লেখার খুব চেষ্টা চালান। এবং তিনি এর ব্যপারে বেশ ইতিবাচক। শয়তানের আনিত কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের অনুসারী ফিজিসিস্ট মিচিও কাকু'কে খুব প্রোমোট করতে চেষ্টা চালান। অন্যান্য নাস্তিক ফিজিসিস্টদের সাথে তুলনা করে তার প্রতি এমন ভক্তি দেখিয়েছেন যে শ্রদ্ধায় "ভদ্রলোক" শব্দটি লিখতে বাধ্য হন। দেখলে মনে হবে এই মুশরিকের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন অনেকটা লিখেছেন- "জাপানী বংশোদ্ভূত আমেরিকান এই ভদ্রলোক বিজ্ঞান জগতে উনার বিজ্ঞান ভিত্তিক কাজের জন্য খুব পরিচিত, সম্মানিত।
উনি 'সিটি কলেজ অফ নিউইয়র্ক' এর 'থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সের' একজন প্রফেসর।
থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সের উপরে লেখা উনার ৪ টি বই 'নিউইয়র্ক টাইমস' বেষ্ট সেলার হয়েছিলো।"
এক কথায় হিরো বানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি নাস্তিক অপবিজ্ঞানী কমিউনিটির সামনে তাকে অনেকটা হিরো হিসেবে উপস্থাপন করেন। তার বিভিন্ন সময়ে বলা কিছু কথাকে কোট আনকোট করে নিয়ে আসেন যার দ্বারা পাঠকদের বোঝাতে চান উনি এক মহান বিজ্ঞানী যিনি কিনা রহমান আল্লাহর অস্তিত্বের কথা বলছেন, তিনি অন্যান্য নাস্তিকদের মত নন, তিনি বিজ্ঞানবলে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব পেয়ে গেছেন,তিনি একজন আস্তিক বা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী।

তার লেখার আরও কিছু অংশ--
"সম্প্রতি ভদ্রলোক বিজ্ঞান জগতকে আরেকটু নড়েচড়ে বসালেন।
মহাজাগতিক কণা নিয়ে থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সে কাজ করতে গিয়ে উনি সবিস্ময়ে লক্ষ্য করলেন যে, আমাদের এই মহাবিশ্ব তৈরিতে একজন স্রষ্টা থাকা অনিবার্য।
তিনি বলেছেন, 'I have concluded that we are in a world made by rules created by an intelligence'
অর্থাৎ, 'আমরা এমন একটা জগতে আছি যেখানকার সকল নিয়ম একজন বুদ্ধিমান সত্ত্বা কর্তৃক সৃষ্ট।'
তিনি আরো বলেন, 'Believe me, everything that we call chance today won't make sense anymore'
অর্থাৎ, যেটাকে সেক্যুলার তথা নাস্তিকরা একসিডেন্টের ফলে 'বাই চান্স' তৈরি হয়ে গেছে বলে থাকে, বিজ্ঞানী Michio Kaku এটাকে বাতুলতা বলছেন। তিনি বলছেন এরকম একটা Fine-Tuned মহাবিশ্ব কখনোই বাই চান্স তৈরি হতে পারে না।
তিনি বলেন, “To me it is clear that we exist in a plan which is governed by rules that were created, shaped by a universal intelligence and not by chance.”
অর্থাৎ, 'আমার কাছে এটা পরিষ্কার যে, আমরা একটা পরিকল্পনার অংশ যেটা কিছু সুনির্দিষ্ট রুলসের আওতাধীন, যে রুলসগুলো তৈরি করেছেন এবং সাজিয়েছেন একজন বুদ্ধিমান সত্ত্বা।'
আমাদের মহাবিশ্ব এতোই ফাইন টিউনড, এতোই সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো যে, পদার্থবিজ্ঞানী Michio Kaku স্রষ্টাকে একজন 'ম্যাথমেটিশিয়ান' বলে উল্লেখ করতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, 'The final solution resolution could be that God is a mathematician'-"

আরিফ আজাদদের মত অপবিজ্ঞানপন্থী এবং ইরজা আক্রান্ত ইসলামিক লেখকের এই লেখা পড়ে সরল সোজা পাঠক সত্য সত্যই তাই ভাবছে যা ভাবিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন আসল ব্যপারটি বুঝলে, ধরতে পারবেন এ সকল ঠান্ডা মাথার ফিতনা সৃষ্টিকারী ইরজাগ্রস্ত 'ইসলামিক লেখকরা' কতটা ভয়ংকর।

আপনারা কেউ কি আন্দাজও করতে পারেন পদার্থবিদ মিচিও কাকু সাহেব তার উক্তিতে "mathematician God/ universal intelligence" বলতে কি বুঝিয়েছেন??! বস্তুত, তিনি বুঝিয়েছেন গড অব স্পিনৌজা কে। এটা তিনি তার অন্য যেকোন এ সম্পর্কিত লেকচারে আইনস্টাইনের রেফারেন্স দিয়ে বলেন। তাকে যখন প্রশ্ন করা হয় জীবন ও সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকার প্রশ্ন সম্পর্কিত, তখন তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "আমাকে বলতে দিন আমরা ফিজিসিস্টরা কিভাবে বিষয়টা দেখি, উদাহরনস্বরূপ, আইনস্টাইন বড় একটা প্রশ্ন করতেন, যে কোন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব আছে কিনা,সব(সৃষ্টিজগতের) কিছুর মানে আছে কিনা,আর এভাবেই আইন্সটাইন এ প্রশ্নের জবাব দিতেন যে, দুই ধরনের ঈশ্বর(গড) আছে। আমাদেরকে অনেক বৈজ্ঞানিক চিন্তার হতে হবে, আমাদেরকে ডিফাইন করতে হবে আপনি গড দ্বারা বোঝেন। যদি গড বলতে হস্তক্ষেপ করার ঈশ্বরকে বোঝানো হয়, ব্যক্তিক সত্ত্বাগত ঈশ্বরকে বোঝায়,প্রার্থনা শোনার God কে বোঝায়, তাহলে আপনাকে সেটাকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে যে সৃষ্টিকর্তা কি সত্যিই আমাদের সকল প্রার্থনা শোনেন(?) যেমন ক্রিসমাসে বাই-সাইকেল চাওয়া, তিনি(আইনস্টাইন) ঈশ্বরের ব্যপারে ধারনায় এরকমটা মানতেন না,তিনি(আইনস্টাইন) বিশ্বাস করতেন নিয়ম-নীতির গড,হার্মোনি, সৌন্দর্যের, সিমপ্লিসিটি এবং আভিজাত্যতার গড, দ্য গড অব স্পিনৌজা(প্যান্থেইস্টিক)। এই ধরনের গডে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন, কারন তিনি দেখতেন মহাবিশ্ব অত্যন্ত গর্জিয়াস, এসব ঐরকম থাকবার কথা নয়, এটা বরং হতে পারতো বিশৃঙ্খল, কদর্য, নোংরা।.."

অনেক পাঠক 'গড অব স্পিনোজা' এর অর্থ বুঝতে পারছেন না। বারুচ স্পিনোজা নামের এক নিকৃষ্ট শ্রেণীর কাফের সর্বেশ্বরবাদকে(ওয়াহদাতুল উজুদ/মনিজম) ফিলসফিতে ইংরেজিতে অফিশিয়াল নাম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করেন। একে এরপরে থেকে প্যান্থেইজম নামে ইংরেজিতে সহজে বোঝানো হয়। যদিও এই আকিদা ব্যবিলনীয়ান এস্ট্রলজি থেকে এসেছে, ইতোপূর্বে এর অর্গানাইজড ফর্ম ছিল না।এই বিশ্বাস অনুযায়ী প্রকৃতিকেই গডে পার্সোনিফাই করে ডাকা হয়। একেই স্পিনোজা'স গড, স্পিনোজিজম বলে।
দেখুনঃ https/en.m.wikipedia.org/wiki/Spinozism


কাকু দাবি করেন তার জীবনের লক্ষ্যই আইনস্টাইনের অসম্পূর্ন স্বপ্নকে সম্পূর্ন করা। একটি থিওরি অব এভ্রিথিং প্রতিষ্ঠা করা। তাকে যখনই সৃষ্টিকর্তার কথা জিজ্ঞেসা করা হয় তিনি সব সময়েই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আইনস্টাইনের রেফারেন্স দিয়ে বলতেন, "ইসহাক(আ), ইউসুফ(আ), মূসা(আ) ইত্যাদি নবীদের 'পালনকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করা কঠিন"। কিন্তু বারুচ স্পিনোজার সর্বেশ্বরবাদের কুফরি অর্থে 'ঈশ্বর' বা গড শব্দটিতে বিশ্বাস করতেন আইনস্টাইন সাহেব এবং এটাই গ্রহণযোগ্য। তাকে অপর এক সাক্ষাতকারে এ ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, তিনি দুইটি ধর্মকে কাছে থেকে দেখেছেন। পরিবারকে বৌদ্ধধর্মে পেয়েছেন কিন্তু আমেরিকায় পেয়েছেন খ্রিষ্টান। এজন্য তিনি তার থিওরিতে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে ব্যাখ্যা করতে দুই ধর্মের তথ্যকে একাকার করে একটা কুফরি দর্শন বানিয়ে নিয়েছেন। পৃথিবীর মহাবিশ্বটা সৃষ্টির বিগব্যাং হবার আগে Nirvana পার হয়ে আসছে। এরপরে নাকি বিবলিক্যাল মহাবিশ্ব সৃষ্টি করছেন! ১১ ডাইমেনশনের হাইপার স্পেসের কস্মিক মিউজিকই নাকি "ঐশ্বরিক মন"(mind of God) । এটা ঠিক তাই-ই যা গড অব Spinoza। এই মন রিড করতেই থিওরি অব এভ্রিথিং এর প্রয়োজন ছিল, যা নিয়ে আজ কাকু কাজ করছেন।

আরেকবার তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি(মিচিও কাকু) সাইন্স ও (প্যাগান)ধর্মতত্ত্বের সংযোগকে কিভাবে দেখেন, তিনি বলেন, "আমার মাথায় দুইটি অংশ সবসময় যুদ্ধে লিপ্ত থাকে, বৌদ্ধধর্মে আমরা বিশ্বাস করি সময়হীন নির্বাণে যেথায় কোন শুরু শেষ বলে কিছু নেই, যখন আমি সানডে স্কুলে পড়ি তখন আমি জেনেসিস পাঠ করি, সেখানে আমি পাই সৃষ্টিজগতের একটি শুরুর(প্রক্রিয়া)কে এমনকি ধবংসেরও দিবসকে(কিয়ামত) যেটা বৌদ্ধমতের নির্বাণ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক,আমি আজ একজন পদার্থবিদ এবং আমাদের হাতে আছে মাল্টিভার্স এর ধারনা, আমরা সেটাকে দুইরকমের সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে মিশিয়ে নিতে পারি, মাল্টিভার্সের হায়ার ডাইমেনশনে একটা নির্বাণ অবস্থা রয়েছে যেখানে বাবল(bubble) মহাবিশ্ব গুলোর সংঘর্ষের মাধ্যমে অস্তিত্বে আসে, আর অজস্র বিগ ব্যাং হতে থাকে এবং অজস্র জেনেসিস ঘটতে থাকে যা বাবল ইউনিভার্সসমূহের সংঘর্ষে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হতে থাকে।... রিডাকশনিজম অনুযায়ী অটম গুলো ভাঙলে অজস্র পার্টিকেলের দেখা মেলে যার কোন মানে নেই। কিন্তু আমাদের এখন আরো বেশি হলিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে স্ট্রিং থিওরিতে। যা আমাদের বলে আমাদের দেখতে হবে গোটা মহাবিশ্ব কম্পনশীল স্ট্রিং এর ন্যায় এটা আমাদের বলে কেন পার্টিকেলগুলো মিউজিক্যাল নোটস এর ন্যায়। আমার মনে হয় অধিকাংশ ধর্মেরই কমন একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে idea of harmony, synthesis । যখন আপনি বিজ্ঞানের দিকে তাকাবেন সেখানেও পাবেন যে বিজ্ঞান প্রাচীন কিছু সমাজের মৌলিক দার্শনিক দিকনির্দেশনা মেনে চলে। হার্মোনির অনুসন্ধান, ঐক্যের(সৃষ্টি স্রষ্টার অস্তিত্বের ঐক্য-ওয়াহদাতুল উজুদ/মনিজম) অনুসন্ধান। এজন্য আইনস্টাইন বলেন তিনি স্পিনোজার(সর্বেশ্বরবাদী) গডে বিশ্বাসী। যেটা গড অব হার্মোনি।নয়ত মহাবিশ্ব এতটা হার্মোনিয়াস(গুছানো/নীতিবদ্ধ/সুশৃঙ্খল) হত না এখন যতটা। তিনি পার্সোনাল (ইব্রাহীম /ইসহাক/ইয়াকুব নবীদের) গডে বিশ্বাস করতেন না। যেটা প্রার্থনার ঈশ্বর। তিনি বিশ্বাস করতেন একজন নিয়মদাতা আছেন এটাই হচ্ছে হার্মোনির নীতি।"

অর্থাৎ মিচিও কাকু চমৎকারভাবে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে তার নিজ আকিদাকে প্রকাশ করেছেন। তিনি বৌদ্ধদের কুফরি সৃষ্টিতত্ত্বের দর্শনকে ইউনিভার্সের একদম ফান্ডামেন্টাল অরিজিন হিসেবে রেখেছেন। (তার কথানুযায়ী)খ্রিষ্টান থিওলজিকে যদি ক্যাথলিকদের মত কুফরি বিগব্যাং তত্ত্ব দ্বারাও খাপ খাইয়ে নেন এরপরেও নির্বানই সবকিছুর শুরু। অর্থাৎ তার মতে বিবলিক্যাল ঈশ্বর যদি থেকেও থাকে তবে তার উপরে আরো পূর্বে আছে বৌদ্ধমত অনুযায়ী নির্বান!!(নাউজুবিল্লাহ)


এখানেই কাব্বালিস্টিক এস্ট্রোফিজিক্সের অনুসারী মিচিও কাকু জানিয়ে দিলেন স্রষ্টার ব্যপারে কিরূপ আকিদা। এর পরে আরো সুচারুরূপে ক্ল্যারিফাই করে দিলেন- " আমাদের এখন আরো বেশি হলিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে স্ট্রিং থিওরিতে। যা আমাদের বলে আমাদের দেখতে হবে গোটা মহাবিশ্ব কম্পনশীল স্ট্রিং এর ন্যায় এটা আমাদের বলে কেন পার্টিকেলগুলো মিউজিক্যাল নোটস এর ন্যায়। আমার মনে হয় অধিকাংশ ধর্মেরই কমন একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে idea of harmony, synthesis । যখন আপনি বিজ্ঞানের দিকে তাকাবেন সেখানেও পাবেন যে বিজ্ঞান প্রাচীন কিছু সমাজের মৌলিক দার্শনিক দিকনির্দেশনা মেনে চলে। হার্মোনির অনুসন্ধান, ঐক্যের(সৃষ্টি স্রষ্টার অস্তিত্বের ঐক্য-ওয়াহদাতুল উজুদ/মনিজম) অনুসন্ধান। এজন্য আইনস্টাইন বলেন তিনি স্পিনোজার(সর্বেশ্বরবাদী) গডে বিশ্বাসী। যেটা গড অব হার্মোনি।নয়ত মহাবিশ্ব এতটা হার্মোনিয়াস(গুছানো/নীতিবদ্ধ/সুশৃঙ্খল) হত না এখন যতটা। তিনি পার্সোনাল (ইব্রাহীম /ইসহাক/ইয়াকুব নবীদের) গডে বিশ্বাস করতেন না। যেটা প্রার্থনার ঈশ্বর। তিনি বিশ্বাস করতেন একজন নিয়মদাতা আছেন এটাই হচ্ছে হার্মোনির নীতি।"

হ্যা অধিকাংশ (প্যাগান) ধর্মেরই কমন একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে "আইডিয়া অব হার্মোনি, সিন্থেসিজ",এটাই প্রাচীন ব্যবিলনীয়ান সমাজে গড়ে ওঠে এবং এই কুফরি দর্শনের দিকনির্দেশনাই প্রতিষ্ঠিত অপবিজ্ঞান মৌলিকভাবে মেনে চলে। এজন্য আইনস্টাইনও এই সর্বেশ্বরবাদেই বিশ্বাস করতেন 'গড' এর নামে। এই স্ট্রিং থিওরিও হার্মোনির বার্তা দেয়। এটা হাইপার স্পেসের কস্মিক মিউজিকের বার্তা দেয়, আর কস্মিক বাবল অবস্থার মাল্টিভার্স Nirvana'র বার্তা দেয়। অর্থাৎ আরিফ আজাদের দৃষ্টিতে 'ভদ্রলোক' মিচিও কাকু আইনস্টাইনিয়ান প্যান্থেইস্টিক বিশ্বাসের কথা বলেন। একেই তার স্ট্রিং থিওরির সহায়তায় বেশি লজ্যিক্যাল এবং গ্রহণযোগ্য বলে দাঁড় করাচ্ছেন। এই প্যান্থেইস্টিক Mind of God'ই ইউনিভারসাল ইন্টেলিজেন্স যার কারনে ইউনিভার্স এতটা হার্মোনিয়াস/পরিপাটি/সুশৃঙ্খল! লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!

অপর এক বিতর্কে কাকু বলেন, "আমার এই দিকে যারা আছেন ১০০% নিশ্চিতভাবে তারা বিশ্বাস করে,যে কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই। আর এইদিকের গ্রুপ ১০০% বিশ্বাস করে যে জীবনের মানে আছে এবং একজন ঈশ্বর আছেন। একদিকের লোকেরা শুদ্ধ আরেকদিকের লোকেরা ভুল, তাই তো? আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে তারা উভয়েই ভুল।
বিজ্ঞান কি? বিজ্ঞান হচ্ছে ডিসাইডেবল স্টেইটমেন্ট, আমি যদি এখন সেলফোনটি নিচে ফেলে দেই, আমি জানি এটা ডিসাইডেবল, এটা নিচে পড়বে গ্রাভিটির জন্য। সাইন্স এমন সব স্টেটমেন্ট এর উপর প্রতিষ্ঠির যা পরীক্ষার যোগ্য, পুনঃপরীক্ষন যোগ্য, ডিসাইডেবল, ফলসিফাইয়েবল।
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব আছে কিনা এটা আনডিসাইডেবল(অনির্ধারনযোগ্য)। এটা বিজ্ঞানের অংশ নয়। এটা অনেকটা একটা (পৌরাণিক অলীক প্রানী)ইউনিকর্নের অস্তিত্বকে মিথ্যা প্রমান করার ন্যায়।... এখন, আমি একজন পদার্থবিজ্ঞানী, আমার জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে আইন্সটাইনের একটা ইক্যুয়েশনের স্বপ্নকে সম্পূর্ন করা যা কিনা এক ইঞ্চির বেশি বড় হবেনা,যেটা সকল বস্তুগত জ্ঞানের সারাংশ বের করবে। এবং আমাদেরকে "ঈশ্বরের মনকে পড়তে" অনুমতি দেবে। তো তার(আইন্সটাইনের) কি দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ঈশ্বরের প্রতি(?)। আইনস্টাইন বলেছেন দুই ধরনের ঈশ্বরের কথা। এটাই সকল কনফিউশন তৈরির কারন। প্রথম ধরনের ঈশ্বর হচ্ছে ব্যক্তিগতজীবন ঈশ্বর।এটা হচ্ছে প্রার্থনার ঈশ্বর, প্রতিশোধপ্রবন ঈশ্বর, ঐ ঈশ্বর যে প্রার্থনায় সাড়া দেয়, মূসা(আ), ইসহাক(আ),ইয়াকুব(আ) এর ঈশ্বর। আইনস্টাইন বলতেন আপনি এই ধরনের ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারতেন না।কিন্তু আরেক ধরনের ঈশ্বর আছে। এটা হচ্ছে বারুচ স্পিনোজার ঈশ্বর(সর্বেশ্বরবাদ-প্রকৃতিপূজা), হার্মোনি বিউটি,simplicity, elegance এর ঈশ্বর।
এগুলো থাকত না যদি ইউনিভার্স কোন এক্সিডেন্ট এর দ্বারা তৈরি হত।তাই আমি ঈশ্বরের অস্তিত্বের কোন এভিডেন্স(সাক্ষ্যপ্রমাণ) পাইনা। এর মানে এই নয় তার কোন অস্তিত্বই থাকবে না বা জীবনের কোন মানে বা অস্তিত্বই নেই। আমি শুধুমাত্র ফিজিক্সের ইক্যুয়েশনে এটা খুজে পাচ্ছিনা। তো, আমাদের নিকট 'ঈশ্বরের মনের' একজন ক্যান্ডিডেট আছে। ঐশ্বরিক মনের ক্যান্ডিডেট হচ্ছে এগারো ডাইমেনশনের হাইপার স্পেসের কস্মিক মিউজিক।"

এই হচ্ছে অবস্থা। মিচিও কাকু সুস্পষ্টভাবেই বলে দিলেন যে তিনি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের কোন এভিডেন্সই পান না। আর তার অস্তিত্বটি ইউনিকর্ন এর অস্তিত্বে বিশ্বাসের ন্যায়। এটা নাকি আনডিসাইডেবল! এজন্য তিনি আইনস্টাইনিয়ান প্যান্থেইস্টিক "মাইন্ড অব গডে" বিশ্বাস করেন, যা কি না পৃথিবীর সুশৃঙ্খলিত অবস্থার কারন, মনিস্টিক ঐশ্বরিক ঐ মনের জন্যই সবকিছু এত হার্মোনিয়াস এতটা ম্যাথম্যাটিক্যাল, ইউনিভার্স এক্সিডেন্ট এর কারনে তৈরি হলে এমন হত না!!


আশা করি এবার বুঝতে পারছেন আরিফ আজাদ সাহেবের ভন্ডামি। তিনি সুস্পষ্ট কুফরি আকিদাকে ইসলামিক স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে আসলেন। এমনকি মহান প্রতিপালকের উপর এটা আরোপ করলেন। তার ভন্ডামির সাফল্য বোঝা যায় তার ওই পোস্টেরই একটি মন্তব্যেঃ
"
Md Abdul Khalique Tapader
ভাই আযাদ এক বিশেষ সময়ে আপনি যে অসাদারন কাজটি করছেন সতিবলতে গেলে এঅল্প বয়সে আল্লাহ আপনাকে মনে হয় তার খাছ কোন বান্দা হিসাবে কবুল করেনিয়া ছেন। এত যুকতি পুরন আবিষ্কার আপনাকে অনেক উপরে নিয়ে যাবে। আপনার মাতাপিতার জন্ম দাতা হিসাবে তাদের সারতক হোক।

5 · Like · React · Reply · Report · Jan 19, 2017"


যাহোক,অবশেষে এই মুশরিকের প্রতি আরিফ আজাদের শ্রদ্ধা এত বেড়ে যায় যে বলেই ফেলেন-"
"বিজ্ঞানী Michio Kaku নিশ্চই কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন না। তার গবেষণা, তার উপলব্ধি, তার প্রমান তাকে এই কথাগুলো বলতে বাধ্য করেছে।"!!!!!!

প্রিয় পাঠক অবশ্যই লক্ষ্য করেছেন যে আমি বারবার আরিফ আজাদ সাহেবের এই কস্মোলজি এবং মিচিওকাকুকে 'কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি"র অনুসারী বলেছি। এ কথা আমার মনগড়া বানোয়াট কিছু নয়। স্বয়ং মিচিও কাকু-ই এই কস্মোলজিক্যাল আইডিয়াকে কাব্বালার প্রতিফলন বলেছেন। শুধু তাই নয় তার স্ট্রিং থিওরিটিও কব্বালিস্টিক টেক্সটের প্রতিফলন। ইন্না লিল্লাহ!!
তিনি বলেনঃ
"আমি একজন থিওরেটিকাল ফিজিসিস্ট এবং আমি বলতে পছন্দ করি, আমি এলবার্ট আইনস্টাইন, নিলস বোর এর মত জায়ান্টদের পদচিহ্ন অনুসরণ করি। আমি কোন দার্শনিক নই। যাহোক, আমি একটা বাস্তব বিষয়ের ব্যপারে বিমোহিত; স্ট্রিং থিওরি বা থিওরি অব এভরিথিং এর অনেক মৌলিক রহস্য কেমন যেন জোহার এবং কাব্বালারই প্রতিফলন। "


"এটা বরং বিস্ময়কর যে, বর্তমান যুগের কিছু অত্যাধুনিক মহাকাশবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু যা আমরা পাই স্যাটেলাইট থেকে,যা আমরা পাই এটম স্ম্যাশার থেকে, যা আমরা পাই আমাদের ব্ল্যাকবোর্ড থেকে, সেসব কেমন যেন জোহার এবং প্রাচীন কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের প্রতিফলন।"
কি ব্যপার বিশ্বাস হচ্ছে না? 😆 আচ্ছা তাহলে দেখে আসুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=rw17zNZIve0

এবার আপনিই বলুন, কোন বিষয়টি আরিফ আজাদকে নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে "বিজ্ঞানী Michio Kaku নিশ্চই কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন না""!!?
নাকি তারা উভয়েই অভিন্ন এজেন্ডার কর্মসম্পাদন করছেন!!যার কারনে, অপরিচিতদের থেকে ইল্ম নেওয়া যাবে না, তাওহীদ ও জিহাদের দাঈ'রা খারেজি!! আপনি তো দেখলেনই এই ফিজিসিস্ট সরাসরি শয়তানের শাস্ত্রের অনুসরন করছেন এবং আরিফ আজাদ এটাকেই কত সুন্দর লেখার মোড়কে মুড়িয়ে প্রচার করছেন! আজাদ সাহেব এই (মিচিও কাকুর ভাষায়) কাব্বালিস্টিক কস্মোলজিকেই চমৎকারভাবে ইসলামাইজড করে প্রচারের কাজ করেন। আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।

এই হচ্ছে আরিফ আজাদ সাহেবের "জ্ঞ্যানের" দৌড়। এবং তার প্রকাশ্য ভণ্ডামি দৃষ্টান্ত। এতদিন এসব আবর্জনা লিখে নাম কামিয়েছে। তার ওই পোস্টটির কন্টেন্ট যেরূপ সঠিক, ঠিক ততটাই শুদ্ধ তার অন্যান্য আর্টিকেলে কুফফারদের অপবিজ্ঞানকে ইসলামাইজড করার মনগড়া লজিক গুলো। এরা এমনই শাস্ত্রের অনুসরন করে যা বাবেল শহর থেকে চারদিকে ছড়িয়েছে,যা সুলাইমান(আ) এর শাসনামলে শয়তানরা আবৃত্তি করত।

একটা প্রশ্ন আসে, আরিফ আজাদ সাহেব কি তাহলে মিচিও কাকু/আইনস্টাইনের গড/'ইউনিভারসাল ইন্টেলিজেন্স' এর দিকে দাওয়াত দেন,তার সকল লেখার দ্বারা (?) যেখানে তামিম আল আদনানি(হাফিঃ), ইমাম আনোয়ার আল আওলাকিরা(র) খাওয়ারিজ তথা জাহান্নামের কুকুর?? তিনি তার লেখনীতে তো এটাই প্রকাশ করেন। এজন্যই কি তাওহীদের ঝাণ্ডাধারীদের প্রতি এতো বিদ্বেষ!!?

একজন লোক কতটা ব্যাধিগ্রস্ত হলে এভাবে সুস্পষ্ট কুফরি আইডিওলজি ও ডক্ট্রিনগুলোকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা কম্প্যাটিবল করে! জ্ঞানের এই দশা নিয়েই আজ এরা ইমাম আনোয়ার আল আওলাকি(রহ.) কে খাওয়ারিজ বলে! এদেরকে কি এমনিতেই মুরজিয়া বলা হয়?!!

আমার দুশ্চিন্তা হয়, কাল আবার ইজরাইলের কাব্বালা ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান র্যাবাঈ মিকাঈল লেইটম্যানের সাথে গলা মিলিয়ে না বলে যে "কাব্বালা হচ্ছে সাইন্স, যার উৎপত্তি প্রাচীন বাবেল শহরে। সাধারন মানুষের দ্বারা একে জাদুবিদ্যা সাব্যস্ত করার মিসকনসেপশন রয়েছে। ", এও না বলা শুরু করে ১৪০০ বছর আগে কুরআনেও.... নাউজুবিল্লাহ।
বস্তুত, সরাসরি না বললেও কিন্তু পরোক্ষভাবে এই কথাটিই বলেন।পড়ুনঃ
https://m.facebook.com/islamic.cognition/photos/a.291781357945730.1073741828.282165055574027/472996026490928/
এরা মিচিও কাকুর মতানুযায়ী কাব্বালার প্রতিফলন তথা মেইনস্ট্রিম কস্মোলজি/কস্মোজেনেসিসকে কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা মিশিয়ে এবং বানোয়াট যুক্তি দিয়ে সামঞ্জস্যশীল করে।

আরিফ আজাদ সাহেবের পোস্টটির লিংকঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=650978951739934&id=100004835040654


তথ্যসূত্রঃ
https://m.youtube.com/watch?v=mPmmLRR9wTI

https://m.youtube.com/watch?v=Hi6yPJvCFU0

https://m.youtube.com/watch?v=fniKbA2Ld88

https://m.youtube.com/watch?v=jremlZvNDuk

Thursday, June 6, 2019

১০.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[দিবা-রাত্রি]

পর্ব-১০




দিবা রাত্রি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার অনন্য এক নিদর্শন। আল্লাহ দিনকে কর্মের জন্য এবং রাত্রিকে করেছেন নিদ্রার সময়।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيْنِ فَمَحَوْنَا آيَةَ اللَّيْلِ وَجَعَلْنَا آيَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِتَبْتَغُواْ فَضْلاً مِّن رَّبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُواْ عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ وَكُلَّ شَيْءٍ فَصَّلْنَاهُ تَفْصِيلاً

আমি রাত্রি ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি। অতঃপর নিস্প্রভ করে দিয়েছি রাতের নিদর্শন এবং দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি, যাতে তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা স্থির করতে পার বছরসমূহের গণনা ও হিসাব এবং আমি সব বিষয়কে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছি
(১৭:১২)




وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا
যারা অনুসন্ধানপ্রিয় অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয় তাদের জন্যে তিনি রাত্রি ও দিবস সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে (২৫:৬১)

وَهُوَ الَّذِي مَدَّ الأَرْضَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْهَارًا وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ جَعَلَ فِيهَا زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
তিনিই ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড় পর্বত ও নদ-নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দু’দু প্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন। এতে তাদের জন্যে নিদর্শণ রয়েছে, যারা চিন্তা করে
(১৩:৩)


وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالْنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالْنُّجُومُ مُسَخَّرَاتٌ بِأَمْرِهِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
তিনিই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি, দিন, সূর্য এবং চন্দ্রকে। তারকাসমূহ তাঁরই বিধানের কর্মে নিয়োজিত রয়েছে। নিশ্চয়ই এতে বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে
(১৬:১২)


إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ
নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্যে
(৩:১৯০)


وَهُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ وَلَهُ اخْتِلَافُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রির বিবর্তন তাঁরই কাজ, তবু ও কি তোমরা বুঝবে না?
(২৩:৮০)

يُقَلِّبُ اللَّهُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُوْلِي الْأَبْصَارِ
আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে
(২৪:৪৪)

وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِبَاسًا وَالنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُورًا
তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন বাইরে গমনের জন্যে
(২৫:৪৭)

আল্লাহ রাত ও দিনের মধ্যে কোনটিকে আগে সৃষ্টি করেন তা নিয়ে আলিমদের মধ্যে মতানৈক্য আছে। একদল বলেন, দিনের সৃষ্টির পূর্বে রাত ছিল,অপর একদল আলিমদের মত সবার প্রথমে দিন বা রাত কোনটিই ছিল না,শুধু ছিল আল্লাহর নূরের আলো। তাদের কেউ কেউ বলেন আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হচ্ছে আলো এবং আঁধার। তাদের মতে পানি,আরশ,কলম সব কিছুর মধ্যে আল্লাহ আলো আঁধারকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেন।
আঁধারে পূর্বে আলো ছিল,
According to 'Ali b. Sahl-al-Hasan b. Bi1a1420 -Hammad b. Salamah -Abu 'Abd al-Salam al-Zubayr421-Ayyub b. 'Abdallah al-Fihri 22 -Ibn Masud: With your Lord there is neither night nor day. The light of the heavens comes from the light of His face. The measure of each of those days of yours is twelve hours with Him.
[History of Imam Tabari]

ইবনে আব্বাস(রাঃ) এবং কতিপয় প্রাচীন আলিমদের মতে সৃষ্টিজগতের প্রথমে রাত্রি বা আধার ছিল। কারন আসমান ও যমীনসমূহ ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল।


Ibn Bashshar-'Abd al-Rahman (b. Mahdi)-Sufyan (al-Thawri)- his father B -'Ikrimah-Ibn 'Abbas: Asked whether the night existed before the day, (Ibn 'Abbas?) replied: Don't you see! When the heavens and the earth weie compressed, 409 was there anything but darkness between them? This is meant for you to realize that the night existed before the day. 

According to al-Hasan b. Yahya410 -'Abd al-Razzag41 -(Sufyan) al-Thawri-his father-'Ikrimah-Ibn 'Abbas: The night is before the day. Then he said: "The two were compressed, and We then split them apart."412
[History Of Tabari Vol:1]


এটা মানতে কোন অসুবিধা নেই যে সর্বপ্রথম সৃষ্টিজগতে অন্ধকার বিদ্যমান ছিল। ইবনে আব্বাস(রাঃ) ও ইবনে মাসুদ(রাঃ) এর বর্ননার হাদিসটির মধ্যে কোন সাংঘর্ষিকতা নেই, কারন হয়ত  ইবনে আব্বাস(রাঃ) আসমান যমীনের মধ্যস্থিত অবস্থার প্রেক্ষাপটে এমনটা বলেছেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আসমান যমীনের মধ্যে জ্যোতি তথা দিবালোকের উন্মেষ ঘটান যমীন ও আসমানকে সৃষ্টির পর। অথচ তখনও যমীনকে সমতলে বিস্তৃত করা হয়নি, পাহাড়গুলোকেও স্থাপন করা হয়নি,চাঁদ-সূর্যকেও সৃষ্টি করা হয়নি। যেমনটা আল্লাহ বলেনঃ
أَأَنتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاء بَنَاهَا
তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন?
رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا
তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا
এবং তিনি ওর রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং ওর জ্যোতি বিনির্গত করেছেন।
وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهَا
পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন
أَخْرَجَ مِنْهَا مَاءهَا وَمَرْعَاهَا 
তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন, 
وَالْجِبَالَ أَرْسَاهَا 
পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন(৭৯:২৮-৩২)


এটা প্রমান করে, দিন চাঁদ ও সূর্যের থেকে স্বাধীন।আলো ও আধারের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহই। হয়ত আল্লাহ রাতকে দিনের পূর্বে সৃষ্টি করেছেন, অর্থাৎ দিনের আলোর পূর্বে রাত সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেনঃ
الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِم يَعْدِلُونَ
সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভব করেছেন। তথাপি কাফেররা স্বীয় পালনকর্তার সাথে অন্যান্যকে সমতুল্য স্থির করে।
(৬:১)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আসমানের নিচে জ্যোতি বিনির্গত করেন বুধবারে বা চতুর্থ দিনে। সেটা শুধুই আসমান ও যমীন সৃষ্টির পর। যমীনে পর্বত প্রোথিতকরন এবং সূর্য-চন্দ্র, নক্ষত্রমালা সৃষ্টির বহু আগেই দিবালোকের ব্যবস্থা করেন।
This we were told by Hannad b. al-Sari-Abu Bakr b. 'Ayyash-Abu Sa'd al-Baqqal-'Ikrimah Ibn 'Abbas-the Prophet. As transmitted by Abu Hurayrah, the Prophet said: God created light on Wednesday.426

 This I was told by al-Qasim b. Bishr and al-Husayn b. 'Ali-IIajjaj b. Muhammad-Ibn Jurayj Ismail b. Umayyah-Ayyub b. Khalid-'Abdallah b. Rafi'-Abu Hurayrah-the Prophet: God created light on Wednesday.

He created the light on Wednesday. I was told this by al-Qasim b. Bishr b. Ma'ruf and al-Husayn b. 'All al-Suda'i-Hajjaj-Ibn Surayj-Ismail b. Umayyah-Ayyub b. Khalid-Abdallah b. Rafi', the mawla of Umm Salamah-Abu Hurayrah-the Prophet.
[History of imam Tabari]


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বৃহস্পতিবার উপরে উত্থিত ধুম্রকুঞ্জ থেকে সলিড আসমানে পরিনত করে স্তরে স্তরে সজ্জিত করেন।
Thursday: He created on it the heavens, which were compressed but then were split,373 as I was told by Musa b. Harun- 'Amr b. Hammad-Asbat-al-Suddi-Abu Malik and Abu Salih Ibn 'Abbas. Also (al-Suddi)-Murrah al-Hamdani-'Abdallah b. Masud and some (other) companions of the Prophet (commenting on): "Then He stretched out straight toward heaven, which was smokei374 -that smoke came from the water 's breathing- and made it into one heaven . Then He split ( this one heaven) into seven heavens on two days, Thursday and Friday.

According to al-Muthanna-Abu Salih ('Abdallah b. Silih) -Abu Ma'shar-Sa'id b. Abi Said-'Abdallah b. Salim: God created the heavens on Thursday and Friday, and He finished in the last hour of Friday, in which He created Adam in haste. This is the hour in which the Hour will come.
[History of Imam Tabari]

যেহেতু বৃহস্পতিবার আসমানকে সাত স্তরে সুসজ্জিত করা হয় সেহেতু চাঁদ সূর্য নক্ষত্রদের অস্তিত্ব এর আগে কল্পনা করা যায় না। শুক্রবারের শেষ প্রহরে তিনঘন্টা বাকি থাকতে চাঁদ সূর্য নক্ষত্র সৃষ্টি করা হয়। সুতরাং ছয়দিনের প্রায় শেষ ৩ দিন অর্থাৎ বুধবার থেকে সূর্যোদয় ছাড়াই রাত দিন আবর্তিত হয়।
As transmitted on (Ibn 'Abbas') authority, (the Prophet) said: God created the sun, the moon, the stars, and the angels on Friday, until three hours remained of it.

Abu Bakr b. 'Ayyash-Abu Said (!) al-Baggal-`Ikrimah-Ibn 'Abbas-the Prophet: On Thursday He created heaven. On Friday He created the stars, the sun, the moon,[…]
[History of Imam Tabari]

ইমাম ইবনে জারির তাবারি রহিমাহুল্লাহ এ ব্যপারে আসা হাদিসের ব্যপারে বলেনঃ
Abu Ja'far (al-Tabari) says: Regarding this, the correct statement, in our opinion, is the one of those who said : God created the earth on Sunday. He created the heaven on Thursday, and He created the stars and the sun and the moon on Friday. (We consider it correct) because of the soundness of the report mentioned by us earlier on the authority of Ibn 'Abbas from the Messenger of God. The tradition transmitted to us on the authority of Ibn 'Abbas is not impossible .[……]
[History of Imam Tabari]

এই হাদিস গুলো প্রমান করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আসমান যমীনে সর্বপ্রথম অন্ধকারের সৃষ্টি করেন এবং এরপরে আলো সৃষ্টি করেন। চতুর্থদিনে এতে জ্যোতিবিনির্গত করেন। অতঃপর সৃষ্টিকার্য সমাপ্তের শেষ প্রহরে সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ সূর্যের সৃষ্টির পূর্বে প্রায় ৩০০০ বছরের মত সময় যাবৎ দিবারাত্রি আবর্তিত হত। এতে এটা সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় প্রভাত রশ্মির উন্মেষে সূর্যের ভূমিকা নেই, যেটা হেলিওসেন্ট্রিক প্যাগান কস্মোলজি শিক্ষা দেয়। দিবা-রাত্রি সূর্যের থেকে স্বাধীন। প্রায় ৩০০০ হাজার বছর এজন্যই বলছি যে আল্লাহর সৃষ্টিকার্যের ছয়দিনের একদিন=আমাদের হিসাবের ১০০০ বছর। সুতরাং বুধ থেকে শুক্র পর্যন্ত প্রায় ৩০০০ বছর।
According to Ibn Humayd-Hakkam392 -'Anbasah393 -Simak394 -'Ikrimah-Ibn 'Abbas, commenting on: God "created the heavens and the earth in six days"395 -of which each day is like "one thousand years of your counting."396
[History of Imam Tabari]

অতএব,দিনরাত্রি আল্লাহর স্বতন্ত্র বিস্ময়কর সৃষ্টি। দিবারাত্রি সূর্য-চন্দ্রের ন্যায় ফালাকে আবর্তন করে। চন্দ্র সূর্যের আগে যেতে পারে না, দিন রাত্রির আগে যেতে পারে না, প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সন্তরন করছে।আল্লাহ বলেনঃ
لَا الشَّمْسُ يَنبَغِي لَهَا أَن تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে(৩৬:৪০)

আল্লাহ অন্যত্র বলেনঃ
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।
(২১:৩৩)

আমরা গত পর্বে চন্দ্র সূর্যের সমান্তরাল অবস্থানে থেকে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ফালাকে আবর্তনের কথা উল্লেখ করেছিলাম। উপরের আয়াত দুটি এর কথাই বলে। বিষয়টা শুধু চাঁদ সূর্য নয় দিবা-রাত্রির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দিন রাত্রিও চাঁদ সূর্যের মত একে অন্যের পিছনে সন্তরণরত। আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّ رَبَّكُمُ اللّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ تَبَارَكَ اللّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।(৭:৫৪)

 আয়াতে উল্লিখিত চাঁদ সূর্য, দিন রাত্রিকে একে অন্যের উপর নির্ভরশীলতা প্রমানের অনেকে বৃথা চেষ্টা চালাবেন,তাদেরকে বলি, চাদের সাথে রাতের এবং সূর্যের উপর দিনের নির্ভরশীলতা বোঝানো হলে ক্রমধারা এরূপ হত যেঃ চাঁদ-সূর্য এবং রাত্রি-দিন অথবা দিন-রাত্রি এবং সূর্য-চন্দ্র। কিন্তু আল্লাহ ক্রমধারা বজায় রাখেন নি। অর্থাৎ এর মানে দাঁড়ায় সবগুলি একে অন্যের থেকে স্বাধীন। দিন-রাত্রির সমান্তরালে(একের পিছনে আরেকটির) আবর্তনের দৃশ্য পর্যবেক্ষণযোগ্য। দিন রাত্রির পাশাপাশি অবস্থানের দৃশ্য একটি সমুদ্রে অবস্থানকারী জাহাজ থেকে কেউ একজন ধারন করে। এতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় একদিকে দিনের গোধূলির আলো অন্যদিকে রাতের নিকষ আঁধারের চাদর। প্রচলিত বিজ্ঞানে এর ব্যাখ্যা নেই। তবে কুরআন সুন্নাহ ফেনোমেনার মূল কারন সম্পর্কে বলে। দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=xdBR3tDXyVw

আল্লাহই দিন ও রাত্রিকে একটিকে অন্যটির মধ্যে প্রবিষ্ট করেন। আল্লাহ বলেনঃ
تُولِجُ اللَّيْلَ فِي الْنَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الَمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَن تَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান কর
(৩:২৭)

يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَهُوَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে। তিনি অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত
(৫৭:৬)

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ
এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাত্রির মধ্য দাখিল করে দেন এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন, দেখেন
(২২:৬১)


يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِ مَا يَمْلِكُونَ مِن قِطْمِيرٍ
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। ইনি আল্লাহ; তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়
(৩৫:১৩)

وَآيَةٌ لَّهُمْ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُم مُّظْلِمُونَ
তাদের জন্যে এক নিদর্শন রাত্রি, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে থেকে যায়
(৩৬:৩৭)


أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى وَأَنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন?(৩১:২৯)


يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَهُوَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে। তিনি অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত(৫৭:৬)


خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى أَلَا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং তিনি সুর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিযুক্ত করেছেন প্রত্যেকেই বিচরণ করে নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত। জেনে রাখুন, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল(৩৯:৫)

এটা সেই আয়াত যেটা দ্বারা আলিমদের একদল কাফিরদের বলা গোলাকৃতি পৃথিবীর অসত্য ধারনাকে সত্যায়ন করতে দলিল বানিয়ে নিয়েছে। অথচ এই আয়াতে পৃথিবীর আকৃতির ব্যপারে কিছুই বলে না। যেটা বলে সেটা দিবা রাত্রির আবর্তন।
শাইখ ইবনে উসাইমীন(রহঃ) বলেনঃ
The earth is round, based on the evidence of the Qur’an, reality, and scientific views. The evidence of the Qur’an is the verse in which Allah, may He be exalted, says (interpretation of the meaning):
“He created the heavens and earth for a true purpose; He wraps the night around [yukawwir] the day and the day around the night”[az-Zumar 39:5].
The word yukawwir (translated here as “wraps around” means to make something round, like a turban. It is well-known that night and day follow one another on earth, which implies that the Earth is round, because if you wrap one thing around another thing, and the thing that it is wrapped around is the Earth, then Earth must be round.

Fataawa Noor ‘ala ad-Darb

ইবনে উসাইমীন (রহঃ) যে সাইন্সের অনুসরন করেছেন সেটা তিনি প্রথমেই স্পষ্ট করেই বলেছেন। এই বিজ্ঞান ঘেষা বিশ্বাসকে ভ্যালিড করতে কুরআনের সূরা যুমারের ৫ নং আয়াতকে ব্যবহার করেছেন। তার যুক্তি হচ্ছে Yukawwir শব্দটি দ্বারা কোনরূপ বর্তুলাকৃতিকে(sphericity) নির্দেশ করে। যদিও এখানে যমীনের ব্যপারে কিছুই বলা হচ্ছে না, তিনি জোড় করে যমীনের দিকে চাপিয়ে দিচ্ছেন।
আমরা উপরে দলিলগুলোকে উল্লেখ করেছি যে দিবারাত্রি আসমানের ফালাকে সন্তরনশীল(21:33)। হাদিসে যে আধাঁরের পর্দা সঞ্চালনের কথা এসেছে সেটাও আসমানের তরঙ্গের সাথে সংশ্লিষ্ট। অর্থাৎ দিবারাত্রির আলো আঁধার আসমানের সাথে সম্পর্কিত। আমরা বিগত পর্বগুলোয় আসমানের গম্বুজাকৃতির ব্যপারে আসা শারঈ দলিল গুলো উল্লেখ করেছি। গম্বুজাকৃতি বা ডোম স্ট্রাকচার একটি সেমি স্ফেরিক্যাল স্ট্র‍্যাকচার। অর্থাৎ অর্ধবর্তুলাকার। এই অর্ধবর্তুলাকার ছাদে দিন রাত্রির আলো-আঁধারি একে অপরকে মুড়িয়ে(wrapping) দেয় বা আচ্ছাদিত করে। Vaulted Dome shaped আসমানের কার্ভাচারের উপরে দিন রাত্রির আচ্ছাদনের বর্ননার জন্য সবচেয়ে যথার্থ শব্দ Yukawwir(Wrap), যেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এ আয়াতে ব্যবহার করেছেন। এখানে যমীনের সাথে কোনরূপ সম্পর্কই নেই। এজন্য এই আয়াতকে পৃথিবী গোলাকার হবার সম্ভাব্য দলিল হিসেবেও গ্রহন করার বিষয়টি খুব অবাক করে। তারা আসমান বাদ দিয়ে যমীনকে মনে করেছে, যদিও যমীনের সাথে এর দূরতম সম্পর্কও নেই। এই আয়াতটিকে দলিল হিসেবে শুধু উসাইমীন(রহঃ) একা নন, তার পূর্বে ইবনে হাযমও নিয়েছেন। বিস্তারিতঃ

আল্লাহ যেরূপে আলোকে ভিন্নভাবে সৃষ্টি করেছেন তদ্রুপ অন্ধকারকেও। সুদীর্ঘ এক হাদিসে রাত্রি আবর্তনের ব্যপারে বর্ননা এসেছে। ফেরেশতারা একটা সুবিশাল আধারের পর্দাকে আসমানের তরঙ্গের ভেতরের কক্ষপথে টেনে নিয়ে যায়। অতঃপর যার উপর দিয়ে সেটা অতিক্রম করে তাকে সে আচ্ছন্ন করে। ফেরেশতারা সেই পর্দাকে যমীনের উপর দুই প্রান্তে গিয়ে টেনে পূর্ব থেকে পশ্চিমে নিয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন রাত হয়। কিয়ামত পর্যন্ত নির্ধারিত সংখ্যক আধারের চাদর পশ্চিমে পৌছানোর কাজে রত থাকবে। হাদিসটিঃ
Ibn 'Abbas said that 'Ali b. Abi Talib said to the Messenger of God: You are like my father and my mother! [………] He continued. In the east, God places a veil of darkness on the
seventh ocean according to the number of nights from the day God created this world until the day when this world will be cut off.At sunset, an angel entrusted with the night comes and grabs a handful of the veil's darkness. He then moves toward the west,all the time gradually releasing some of the darkness through the interstices of his fingers, watching out for the twilight. When the twilight has disappeared, the angel releases all the darkness. He then spreads out his two wings. They reach the two sides of the earth and the two rims of heaven and pass outside in the air as far as God wishes. The angel drives the darkness of the night with his wings, praising and sanctifying God with prayer, until he reaches the west. When he has reached the west, morning dawns from the east. The angel puts together his wings, then puts together the parts of the darkness one by one in his palms, then grabs in one palm as much of the darkness as he had taken from the veil (of darkness) in the east, and places it in the west on the seventh ocean. From there comes the darkness of the night. When the veil is transported (completely) from east to west, [70] the Trumpet is blown, and this world comes to its end. The luminosity of the day comes from the east, and the darkness of the night comes from that veil . The sun and the moon always continue this way from rising to setting, and on to their being raised to the highest, seventh heaven and their being held underneath the Throne[……]
[History of Imam Tabari]

অতএব এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে রাত্রির আধাঁর আল্লাহরই স্বতন্ত্র সৃষ্টি। হয়ত এজন্যই বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা রাতকে আচ্ছন্নকারী আবরণ বলেছেন। আল্লাহ বলেনঃ
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ لِبَاسًا
রাত্রিকে করেছি আবরণ।(৭৮:১০)

আল্লাহ অন্যত্র বলেনঃ
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى
শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে,
وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّى
শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয় (৯২:১-২)
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَاهَا
শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে,[৯১:৩-৪]

অন্ধকারকে যেরূপে আল্লাহ যমীনের উপর ছড়িয়ে দেন। হয়ত আলোর ক্ষেত্রেও তদ্রুপ কিছু একটা ঘটে। আল্লাহ ভাল জানেন। পশ্চিমের অর্থোডক্স ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের স্বল্পসংখ্যক বিশ্বাস করে দিনের আলো তৈরি হয় একটি বিশেষ গ্যাসের কারনে।দেখুনঃ https://m.youtube.com/watch?v=3GZhj9BbIXc

ওদের কাছে এ বিশ্বাসের দলিল হচ্ছে বিকৃত তাওরাতের প্রথম দিকের কিছু ভার্স। এগুলো হচ্ছে  ইহুদীদের নিকট আসা সৃষ্টিতত্ত্বের জ্ঞানের উৎস যা তারা আল্লাহর রাসূল(সাঃ) এর জীবদ্দশায় তার নব্যুয়তের সত্যয়নের পরীক্ষায় ব্যবহার করত। তারা আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বর্ননার সাথে সাদৃশ্যতা পেয়ে আল্লাহর রাসূল(সাঃ) এর কথার সত্যতার স্বীকৃতি দিত। এখান থেকেই কিতাব বিকৃত করে ওরা sabbath এর প্রথা চালু করে।


 ইহুদীদের তাওরাতে উল্লিখিত এ ভার্সগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে প্রায় শতভাগ সঙ্গতিপূর্ণ। এটা এরূপ যেন গোটা বিষয়টার সারমর্ম একত্রে দেওয়া। সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে আসা কুরআন ও সুন্নাহর সকল দলিল সামনে রাখলে দেখলে মনে হবে, এটা যেন তাওরাতে আসা সৃষ্টিতত্ত্বের কথাই পুনরায় বলছে। আমরা বিগত পর্বগুলোয় যার আলোচনা বিশদভাবে করছি, সেটাই যেন ওখানে আছে। তাওরাতে এই ভার্সগুলো নিন্মরূপঃ

א  בְּרֵאשִׁית, בָּרָא אֱלֹהִים, אֵת
הַשָּׁמַיִם, וְאֵת הָאָרֶץ.
1 In the beginning God created the heaven and the earth.
ב  וְהָאָרֶץ, הָיְתָה תֹהוּ וָבֹהוּ, וְחֹשֶׁךְ, עַל-פְּנֵי תְהוֹם; וְרוּחַ אֱלֹהִים, מְרַחֶפֶת עַל-פְּנֵי
הַמָּיִם.
2 Now the earth was unformed and void, and darkness was upon the face of the deep; and the spirit of God hovered over the face of the waters.
ג  וַיֹּאמֶר אֱלֹהִים, יְהִי
אוֹר; וַיְהִי-אוֹר.
3 And God said: 'Let there be light.' And there was light.
ד  וַיַּרְא אֱלֹהִים אֶת-הָאוֹר, כִּי-טוֹב; וַיַּבְדֵּל אֱלֹהִים, בֵּין
הָאוֹר וּבֵין הַחֹשֶׁךְ.
4 And God saw the light, that it was good; and God divided the light from the darkness.
ה  וַיִּקְרָא אֱלֹהִים לָאוֹר יוֹם, וְלַחֹשֶׁךְ קָרָא לָיְלָה; וַיְהִי-עֶרֶב וַיְהִי-בֹקֶר, יוֹם אֶחָד. 
{פ}
5 And God called the light Day, and the darkness He called Night. And there was evening and there was morning, one day. {P}
ו  וַיֹּאמֶר אֱלֹהִים, יְהִי רָקִיעַ בְּתוֹךְ הַמָּיִם, וִיהִי מַבְדִּיל, בֵּין מַיִם
לָמָיִם.
6 And God said: 'Let there be a firmament in the midst of the waters, and let it divide the waters from the waters.'
ז  וַיַּעַשׂ אֱלֹהִים, אֶת-הָרָקִיעַ, וַיַּבְדֵּל בֵּין הַמַּיִם אֲשֶׁר מִתַּחַת לָרָקִיעַ, וּבֵין הַמַּיִם אֲשֶׁר מֵעַל לָרָקִיעַ;
וַיְהִי-כֵן.
7 And God made the firmament, and divided the waters which were under the firmament from the waters which were above the firmament; and it was so.
ח  וַיִּקְרָא אֱלֹהִים לָרָקִיעַ, שָׁמָיִם; וַיְהִי-עֶרֶב וַיְהִי-בֹקֶר, יוֹם
שֵׁנִי.  {פ}
8 And God called the firmament Heaven. And there was evening and there was morning, a second day. {P}
ט  וַיֹּאמֶר אֱלֹהִים, יִקָּווּ הַמַּיִם מִתַּחַת הַשָּׁמַיִם אֶל-מָקוֹם אֶחָד, וְתֵרָאֶה, הַיַּבָּשָׁה;
וַיְהִי-כֵן.
9 And God said: 'Let the waters under the heaven be gathered together unto one place, and let the dry land appear.' And it was so.
י  וַיִּקְרָא אֱלֹהִים לַיַּבָּשָׁה אֶרֶץ, וּלְמִקְוֵה הַמַּיִם קָרָא יַמִּים; וַיַּרְא
אֱלֹהִים, כִּי-טוֹב.
10 And God called the dry land Earth, and the gathering together of the waters called He Seas; and God saw that it was good.
יא  וַיֹּאמֶר אֱלֹהִים, תַּדְשֵׁא הָאָרֶץ דֶּשֶׁא עֵשֶׂב מַזְרִיעַ זֶרַע, עֵץ פְּרִי עֹשֶׂה פְּרִי לְמִינוֹ, אֲשֶׁר זַרְעוֹ-בוֹ
עַל-הָאָרֶץ; וַיְהִי-כֵן.
11 And God said: 'Let the earth put forth grass, herb yielding seed, and fruit-tree bearing fruit after its kind, wherein is the seed thereof, upon the earth.' And it was so.
יב  וַתּוֹצֵא הָאָרֶץ דֶּשֶׁא עֵשֶׂב מַזְרִיעַ זֶרַע, לְמִינֵהוּ, וְעֵץ עֹשֶׂה-פְּרִי אֲשֶׁר זַרְעוֹ-בוֹ, לְמִינֵהוּ;
וַיַּרְא אֱלֹהִים, כִּי-טוֹב.
12 And the earth brought forth grass, herb yielding seed after its kind, and tree bearing fruit, wherein is the seed thereof, after its kind; and God saw that it was good.
יג  וַיְהִי-עֶרֶב וַיְהִי-בֹקֶר,
יוֹם שְׁלִישִׁי.  {פ}
13 And there was evening and there was morning, a third day. {P}
יד  וַיֹּאמֶר אֱלֹהִים, יְהִי מְאֹרֹת בִּרְקִיעַ הַשָּׁמַיִם, לְהַבְדִּיל, בֵּין הַיּוֹם וּבֵין הַלָּיְלָה; וְהָיוּ לְאֹתֹת וּלְמוֹעֲדִים,
וּלְיָמִים וְשָׁנִים.
14 And God said: 'Let there be lights in the firmament of the heaven to divide the day from the night; and let them be for signs, and for seasons, and for days and years;
טו  וְהָיוּ לִמְאוֹרֹת בִּרְקִיעַ הַשָּׁמַיִם, לְהָאִיר עַל-הָאָרֶץ;
וַיְהִי-כֵן.
15 and let them be for lights in the firmament of the heaven to give light upon the earth.' And it was so.
טז  וַיַּעַשׂ אֱלֹהִים, אֶת-שְׁנֵי הַמְּאֹרֹת הַגְּדֹלִים:  אֶת-הַמָּאוֹר הַגָּדֹל, לְמֶמְשֶׁלֶת הַיּוֹם, וְאֶת-הַמָּאוֹר הַקָּטֹן לְמֶמְשֶׁלֶת
הַלַּיְלָה, וְאֵת הַכּוֹכָבִים.
16 And God made the two great lights: the greater light to rule the day, and the lesser light to rule the night; and the stars.
יז  וַיִּתֵּן אֹתָם אֱלֹהִים, בִּרְקִיעַ הַשָּׁמָיִם,
לְהָאִיר, עַל-הָאָרֶץ.
17 And God set them in the firmament of the heaven to give light upon the earth,
יח  וְלִמְשֹׁל, בַּיּוֹם וּבַלַּיְלָה, וּלְהַבְדִּיל, בֵּין הָאוֹר וּבֵין הַחֹשֶׁךְ; וַיַּרְא
אֱלֹהִים, כִּי-טוֹב.
18 and to rule over the day and over the night, and to divide the light from the darkness; and God saw that it was good.
יט  וַיְהִי-עֶרֶב וַיְהִי-בֹקֶר, יוֹם רְבִיעִי. 
{פ}
19 And there was evening and there was morning, a fourth day. {P}

בְּרֵאשִׁית[Bereshit:1-19]


তাওরাতের সাথে সৃষ্টিতত্ত্বের এই সাদৃশ্যতা খুবই স্বাভাবিক,ইহুদীরা যখন আল্লাহর রাসূল(সাঃ) কে এ ব্যপারে প্রশ্ন করছিল,তখন তারা তাদের কিতাবের সাথে সাদৃশ্যতা পেয়ে সত্যতার স্বীকৃতি দিচ্ছিল। আমরা বিকৃত তাওরাতেও দেখতে পাচ্ছি যে , আল্লাহ আসমান যমীন সৃষ্টির পরই আলো আধারের সৃষ্টি করেন এবং পরবর্তীতে বুধবার(চতুর্থদিনে) আবারো দিনরাত্রিকে সৃষ্টি করেন। এটা দিবালোককে সূর্যের থেকে স্বাধীন সাব্যস্ত করে।আল্লাহ আলো আধার, দিন রাত্রি আসমানে সূর্যের সৃষ্টির আগেই সৃষ্টি করেছিলেন। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।

আসমানে প্রভাতের(দিবালোকের শুরু) গোধূলির আলো আল্লাহর স্বতন্ত্র সৃষ্টি। বিষয়টা পর্যবেক্ষনযোগ্য।প্রত্যুষের আলোকপ্রভা পুরা আকাশের হোরাইজনে বিস্তৃত থাকে। শুধু পূর্বেই না পশ্চিম দিকের দৃষ্টিসীমার শেষ পর্যন্ত সেটা লক্ষ্য করা যায়,যদিও এ অবস্থার প্রায় আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা পর সূর্য উদিত হয়।দিবালোকের স্বাতন্ত্র্য অনুভব করা যায় সূর্যগ্রহনের সময় এবং ঘন মেঘাচ্ছন্ন বৃষ্টিমুখর দিনে। সূর্য সম্পূর্ণভাবে ঢাকা পড়ে, এমনকি আসমানের যে অংশে সূর্যের অবস্থান, সেখানের সাথে বিপরীত দিকের আলোকজ্জলতা একই রকমের থাকে।এটা প্রমান করে দিবালোকের স্বতন্ত্র আলো সূর্যের চেয়ে অধিক বিস্তৃত। সূর্য তো সামান্য মেঘের আড়ালেই ঢাকা পড়ে যায়। অধিকন্তু সূর্যের আলো লোকাল।এরকম অনেক প্রমান আছে যে সূর্যের ঠিক নিচের মেঘের উপর সার্কুলার হটস্পট দেখা যায়(এসব নিয়ে 'জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিতে' আলোচনা গত হয়েছে)। সূর্যের ন্যায় চাঁদও মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে আলোসহ হারিয়ে যায়।তখন ঘুটঘুটে অন্ধকারে চাদের সামান্য আলোও মেঘের আশপাশ থেকে দেখা  দেখা যায় না।যেন চাঁদ ওঠেই নি। পূর্নিমার চাঁদের আলোকেও মেঘলা আকাশ ঢেকে দিয়ে অন্ধকার করে দেয়,তখন অন্ধকার ছাড়া কিছুই থাকেনা কারন রাত্রির আবরন সর্বত্র বিরাজ করে কিন্তু দিনের বেলায় ঘন মেঘের আড়ালে প্রখর সূর্য ঢাকা পড়লেও দিবসের আলো রাত্রির ন্যায় অন্ধকার হতে দেয় না,নূন্যতম গোধূলি/সুবহে সাদিকের ন্যায় আলো টিকে থাকে।  সূর্যকে আল্লাহ মূলত হিসাবের জন্য সৃষ্টি করেছেন। দিন সৃষ্টি এর কাজ নয়, তবে দিবালোক আরো প্রখর এবং উজ্জ্বল করে সূর্যরশ্মি। আল্লাহ বলেনঃ
فَالِقُ الإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক। তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটি পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানীর নির্ধারণ(৬:৯৬)


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বিভিন্ন স্থানে দিন ও রাত্রির শপথ করেছেন, যেগুলো দিবারাত্রিকে স্বতন্ত্র সৃষ্টি হিসেবে নির্দেশ করে। আল্লাহ বলেনঃ
وَالضُّحَى
শপথ পূর্বাহ্নের,
وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَى
শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়(৯৩:১-২),
وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ
শপথ নিশাবসান ও
وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ
প্রভাত আগমন কালের(৮১:১৭-১৮)
وَاللَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ
শপথ রাত্রির যখন তার অবসান হয়,
وَالصُّبْحِ إِذَا أَسْفَرَ
শপথ প্রভাতকালের যখন তা আলোকোদ্ভাসিত হয়
(৭৪:৩৩-৩৪)

আল্লাহ চাইলেই এই দিন বা রাত্রিকে কিয়ামত পর্যন্ত বর্ধিত করতে পারেন। রাতকে এরূপ কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করলে নরওয়ে, সাইবেরিয়ার মত মধ্যরাতে সূর্য দেখার ঘটনা ঘটতে পারে। তেমনি দিনকে কিয়ামত পর্যন্ত লম্বা করলে হয় চাঁদ সূর্যকে নিয়মিত আবর্তিত হতে দেখা যাবে কিন্তু সূর্যাস্তের পরেও গোধূলির আলো বিদ্যমান থাকবে। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।আল্লাহ বলেনঃ
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِن جَعَلَ اللَّهُ عَلَيْكُمُ اللَّيْلَ سَرْمَدًا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَنْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ يَأْتِيكُم بِضِيَاء أَفَلَا تَسْمَعُونَ
বলুন, ভেবে দেখ তো, আল্লাহ যদি রাত্রিকে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে, যে তোমাদেরকে আলোক দান করতে পারে? তোমরা কি তবুও কর্ণপাত করবে না?
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِن جَعَلَ اللَّهُ عَلَيْكُمُ النَّهَارَ سَرْمَدًا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَنْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ يَأْتِيكُم بِلَيْلٍ تَسْكُنُونَ فِيهِ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
বলুন, ভেবে দেখ তো, আল্লাহ যদি দিনকে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে যে, তোমাদেরকে রাত্রি দান করতে পারে, যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে ? তোমরা কি তবুও ভেবে দেখবে না ?
وَمِن رَّحْمَتِهِ جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ لِتَسْكُنُوا فِيهِ وَلِتَبْتَغُوا مِن فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
তিনিই স্বীয় রহমতে তোমাদের জন্যে রাত ও দিন করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ কর ও তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর(২৮:৭১-৭৩)

আমাদের নিচেও আরো ছয়টি আমাদের পৃথিবীর ন্যায় ছয়টি সমতলে বিস্তৃত স্তর আছে। প্রত্যেকটিতে মাখলুক রয়েছে। সেখানে হয়ত চাঁদ সূর্য নেই, যেহেতু এমন কোন দলিল পাওয়া যায় না যেটা চাঁদ সূর্যকে একাধিক বলে। হয়ত নিচের যমীনগুলোতেও দিবারাত্রির আবর্তন ঘটে অথবা সেখানে আল্লাহ স্থায়ী গোধূলির আলোর(twilight) ব্যবস্থা রেখেছেন। ওয়া আল্লাহু আ'লাম।

আজকের সৌরজগত ভিত্তিক বিবর্তনবাদী সৃষ্টিতত্ত্ব আমাদেরকে শেখায় দিনরাত্রি পৃথিবীর ঘূর্ননের কারনে সূর্যের আড়ালে চলে যাবার দরুন ঘটছে। এ কারনে অনেক মুসলিম অপবিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিকতা দেখতে পেয়ে প্রশ্ন করে। কিন্তু তাদের প্রশ্নের জবাব সেইভাবেই সায়েন্টিফিক স্ট্যান্ডার্ড ঠিক রেখে দেওয়া হয়। কোন এক মুসলিম প্রশ্ন করে,'কেন কুরআনে রাতকে পর্দার ন্যায় টানার কথা আল্লাহ বলেছেন , যেখানে  রাত্রিকে পৃথিবীর ঘূর্ননের দরুন হওয়া স্পেসের অন্ধকার বলা হয়?'
সেখানে অনেক মুসলিম বিচিত্র সায়েন্টিফিক উত্তর দিয়েছে। আপনারা দেখতে ভুলবেন না।
https://www.quora.com/Why-does-Quran-say-that-night-is-a-veil-pulled-over-day-by-Allah-when-night-is-just-the-darkness-of-space-as-seen-from-the-earth-due-its-rotation


আমি জানি আজকের এই পর্ব এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখা যেটার সপক্ষে স্পষ্টভাবে সুদ্দি রহিমাহুল্লাহসহ আরো দু একজন আলিম/মুফাসসীরিন ছাড়া আর কেউ তেমন কিছু বলেন নি। কিন্তু আমাদের কাছে কুরআন সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলিল আছে যা উপরে উল্লেখ করেছি। আমরা ঐ সমস্ত সম্মানিত আলিমদের ব্যপারে সচেতন যারা কিছু বিষয়ে অনুমান নির্ভর সামান্য ভিন্নমত পোষন করেছেন। এসব তথ্য সম্পূর্ন গায়েবের বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট, এর ব্যপারে আল্লাহই উত্তম জানেন। আল্লাহ যা আমাদের জানিয়েছেন এখানে তাই প্রকাশের চেষ্টা মাত্র। তাই এ বিষয়ে যেকোনরূপ ভুল ত্রুটির জন্য আল্লাহ আযযা ওয়াযালের নিকট বিনীত ক্ষমা প্রার্থনা করি।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে এ যুগের মানুষ আল্লাহ, যিনি আসমান ও যমীন এবং সমস্ত আলামের মালিক সেই মহান প্রতিপালকের বলা সত্যিকারে সৃষ্টিতত্ত্বকে অবিশ্বাস করে। এ অবস্থা আজ অধিকাংশই কালেমা পড়া মুসলিমদেরও অবস্থা। এই সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত দলিলভিত্তিক আর্টিকেল সিরিজ ব্যাধিহীন পবিত্র হৃদয়ের মুত্তাকী বান্দার জ্ঞানের জন্য উপকারী যারা রহমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার সৃষ্টি নিয়ে তাদাব্বুর করে। কলুষিত হৃদয়ের বান্দাদের জন্য এটা ক্ষতির কারনও হতে পারে যেহেতু তারা অপবৈজ্ঞানিক চিন্তাধারাকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে এবং কাফিরদের কথায় অন্ধভাবে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এখন হক্ক বিষয়ও ফিতনার কারন হতে পারে। কুরআন-সুন্নাহর কস্মোলজিক্যাল বিষয় এ পর্যন্ত অনেক মুসলিমের(ফাসিক/মুনাফিকের) এ্যাপোস্টেসির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। এরকম অজস্র মুর্তাদ ঘুরছে যারা শুধুমাত্র অপবিজ্ঞানের সাথে সত্যিকারের জ্ঞানের রশ্মি কুরআনের বৈসাদৃশ্যতা দেখে কাফির হয়ে গেছে। এজন্য এসব আমভাবে যার তার কাছে প্রচার এবং এর কোন কিছুকে রেফারেন্স করে অহেতুক তর্ক বিতর্ক এড়ানোর জন্য সকলের কাছে অনুরোধ করি।







ওয়া আল্লাহু আ'লাম


[চলবে ইনশাআল্লাহ…]




বিগত পর্বগুলোর লিংকঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/article-series_85.html