Friday, December 18, 2020

কিসের জন্য হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ?

আমি জানি এ পোস্ট পাঠ করার শুরুতে অনেক নির্বোধ মুশরিকলীগ বলতে শুরু করবে আমি পাকিস্থানের দালালি করে লিখছি... ইত্যাদি ইত্যাদি। কুকুরের মুখে ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনে চুপচাপ থাকাটা আসলে এক প্রকার ভীরুতা। 


মূলত আমাদের দেশের কথিত স্বাধীনতা আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ জ্বলে ওঠে ভাষা আন্দোলনের দ্বারা। এর কলকাঠি শুরু থেকেই ভারত নাড়ছিল। ভারতের মূল উদ্দেশ্যঃ পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো করে ফেলা। এ কথা শিবসেনাদের এক শপথেই ত্রিশূল উচিয়ে মালউনদেরকে বলতে দেখেছি। ভারতের মালউন[অভিশপ্ত] মুশরিকরা ইসলামিস্ট বলতে পাকিস্থানকেই রিপ্রেজেন্ট করে, এজন্য মুসলিমিদেরকে দুর্বল করতে হলে পাকিস্তানকে দুর্বল করতে হবে। এ লক্ষ্যে সর্বপ্রথম ভাষা আন্দোলনে নামে মালাউন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। পরবর্তীতে হুজুগে 'অসাম্প্রদায়িক' মুসলিম ইন্টেলেকচুয়ালদের সমর্থনে সাধারন মানুষও এতে যোগ দেয়। ফলে শক্ত আন্দোলনে রূপ নেয় ভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলনই পরে স্বাধীনতা আন্দোলনে ফুয়েল জোগায়। আসলে ভাষা পরিবর্তন খুব বেশি কিছু না। আট দশ বছরের চেষ্টায় যেকোন দেশের জনগন নতুন একটি ভাষায় সফল ভাবে শিফট করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ মিশর, মরক্কো,সোমালিয়া,সিরিয়াতে নিকট অতীতেই আরবি ভাষার প্রচলন ছিল না অথচ এখন সেখানে সবাই আরবিতে কথা বলে, আরবের
অন্তর্ভুক্ত করা হয় এদেরকে। যেহেতু ভাষা পরিবর্তনের প্রশ্ন উঠেছিলোই,বঙ্গদেশীয় উলামারা এক হয়ে এই দাবি করতেই পারত যে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি চাই। এতে দুই ভূখন্ডের উপর সমান সমান বিচার হত। এর বিরোধিতা পশ্চিম পাকি মুসলিমরা করত না কেননা এটা কুরআনেরই ভাষা। হয়ত ফলাফলে বাংলাকেই রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় যেত সব কিছুকে অপরিবর্তিত রেখে। কিন্তু ওই সময়ের আলিমদের কোন ভূমিকায় ছিলেন না। এরকারন এ অঞ্চলের আলেম উলামাগন বরাবরের মতই সুবিধাবাদি আপোষকারি। এরা সবসময় অসাম্প্রদায়িকতাকে প্রমোট করে এসেছে। ফলাফলস্বরূপ দ্বীন বিরোধী সংবিধান এবং স্বাধীনতার অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্রকে মেনে নিয়েছে নিরবে অন্য লাখো অসাম্প্রদায়িক বংগালের সাথে সাথে। ইংরেজপূর্ব মুসলিমদের শাসনামলেও এই অসাম্প্রদায়িকতার খল চেতনা বজায় ছিল। তাছাড়া হিন্দুত্ববাদি চেতনা থেকে অফিশিয়ালি বাংগালি মুসলিমরা সরে আসলেও আনঅফিশিয়ালি ঠিকই হিন্দুয়ানি কস্টিউম বলবৎ ছিল সংস্কৃতিতে। এমনকি এটা আজও চলছে মালুত্ববাদী পহেলা বৈশাখ,বিয়ে অনুষ্ঠান, পরিধেয় পোশাকে....। মূলত এ কারনেই পাকিস্তান বাংগালি আওয়াম মুসলিমদের জনগনকে হাফ-হিন্দু হিসেবে কনসিডার করত। এ সুযোগটা ভাল করেই নিয়েছিল ভারত। তাদের অখন্ড মহাভারতের স্বপ্ন পূরণে পাকিস্তানকে দূর্বল করে বাংলাকে আলাদা করে নিজেদের সাথে মিলিয়ে দিতে সবসময় প্রত্যক্ষভাবে পাশে ছিল ভারত। বোকা বাংগালি সো কল্ড মুসলিমদের জীবনকে ইউজ করে ওরা নয় মাসের যুদ্ধ বাধাঁয়। ওরা ভঙ্গবল্টুকে নেতা হিসেবে বেছে নেয়। এমনকি ভারতীয় মিলিটারি,প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দিয়েও যুদ্ধ করে মুসলিম ভূখন্ডকে আলাদা করে দেয়। এজন্যই পাকিস্তানের দ্বারা দেয়া বিজয়ের লিখিত স্বীকৃতির সময় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি ছিলেন ভারতের মালাউনবাহিনীর অরোরা। অর্থাৎ সহজ করে বললে যুদ্ধটা ছিল ভারত ভার্সেস পাকিস্তান। মাঝখানে মূর্খ অসাম্প্রদায়িক নির্বোধ বাঙ্গালি মুসলিমরা জীবন দেয় মুশরিকদের পক্ষে। এজন্যই স্বাধীনতার পর জাতীয় সংগীত রাখা হয় রবীন্দ্রনাথ শূকরের ওই গান, যেটা রচনা করেছিল ১৯১১ এর বঙ্গভঙ্গ রদে ভারত-বাংলা পূনঃসংযোগের আনন্দে। অর্থাৎ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের আলাদাকরন = ভারতের সাথে পুনর্মিলন। একই আনন্দে এই সঙ্গীতকে রাখা হয় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। হয়ত অফিশিয়ালি বাংলাকে ভারতের সাথে রিকানেক্ট করার আনফিনিশড জব সম্পন্ন হত যদি কিছু জাতীয়তাবাদি সেনা কর্মকর্তা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট বঙ্গবল্টুকে নকডাউন না করতেন। আল্লাহু আ'লাম। তবে এটা নিশ্চিতভাবে জানা উচিত যে আজকে বঙ্গবল্টু নামের খলনায়কটাকে নিয়ে যেভাবে যিকির করা হচ্ছে, দেবতা বানিয়ে পূজো দেয়া হচ্ছে, বাস্তবতা ছিল একদমই ভিন্ন যে ইতিহাসকে মুছে ফেলা হয়েছে। সত্যিকারের ইতিহাস কিছুটা জানতে পারবেন, "আমার ফাসী চাই" এবং "আমাদের স্বাধীনতা - পর্দার এপার ওপার" নামের দুটি নিষিদ্ধ গ্রন্থে। দুটিই পিডিএফ পাওয়া যায়। আমি দুটো বইয়ের লিংক নিচে দিয়ে দেব। যারা বাস্তব ইতিহাস জানে তারা এই বিড়িখোড় তাগুতকে জাতির পিতা বলতে লজ্জাবোধ করবে। 


ভারত শুধুমাত্র জাতীয়তাবাদি শক্তির জন্যই স্বার্থকে পূর্নভাবে হাসিল করতে পারেনি। ৭২ সালেই দেশকে ভারত নিজের স্বার্থে ব্যবহার শুরু করে। ৭২ সালে ভার‍তের অনূকুলে নদী গবেষণা কমিশন গঠন করে। ফারাক্কা বাধে কি করেছে সেটা আপনারা ভাল করেই জানেন। অসমাপ্ত লক্ষ্যকে পূর্নতা দিতে আজ বঙ্গবল্টুর কন্যা হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা হয়েছে,সারাদেশকে RAW এজেন্ট দ্বারা ভরে দেওয়া হয়েছে। এদেশের সামরিক বাহিনী গুলোও আজ র' এর নিয়ন্ত্রনে। ৯০% মুসলিম এর দেশে সরাসরি আলিম উলামা এবং খোদ ইসলামি চেতনাকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়া হয়। আওয়াম সাধারন আলিমদেরকে ঘাড় মটকে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আজ আওয়ামীলীগরা ঢাকায় বিজয় দিবসে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বাজায়। অন্যদিকে রাহুল গান্ধী ফেসবুকে ১৬ ডিসেম্বর পাক ভারত যুদ্ধে ভারতের বিজয়ের স্ট্যাটাস দেয়। আমার মনে পড়ে আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে ভারতীয় এক ফিল্মে বলেছিল, ৭১ এর যুদ্ধটা পাক বাংলার মধ্যে নয় বরং যুদ্ধটা পাক-ভারতের মধ্যে হয়। এবারের ১৬ই ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে দখলের আনন্দ উদযাপন করেছে। আরএসএস দল গুলো তো ২০২৫ এর মধ্যে দেশ দখলের হুমকি দিয়েছিল। এখনো আরো পাঁচ বছর হাতে আছে। তারা তাদের গতিতেই কাজ করে যাচ্ছে, আমরাই ওদের উঠানো ফলস ইডিওলজিতে গা ভাসাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে। 


১.https://archive.org/download/IslamiBoi/Amader_shadhinota_pordar_epar_opar.pdf

২.https://mazams.weebly.com/uploads/4/8/2/6/48260335/amar_fashi_chai_bangla.pdf


5 Comments:

  1. একেবারে নিরেট সত্য তুলে ধরেছেন ভাই।
    এই অধম ফেসবুকে লিখালিখি করে, উপরোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরায় যাচ্ছেতাই শুনতে হয়েছে, যাহোক, দ্বীনের খাতিরে এসব স্বাভাবিক ।
    তবে ভাই আপনার থেকে একটু সাহায্য প্রয়োজন ছিল , অধমের বিভিন্ন গবেষণা গুলো আপনার ন্যায় ব্লগে ছাড়ব বলে ঠিক করেছি ,ঠিক এইভাবেই হক্ব কথাগুলো যেন নির্দ্বিধায় লিখতে পারি, কিন্তু নিরাপত্তার ব্যাপার আছে৷
    যদি কষ্ট করে অধমকে জানাতেন যে কি কি করলে ব্লগস্পটে নিরাপদে ব্লগিং করা যাবে ,খুবই উপকার হত ভাই , আপাতত আমি জাস্ট টর ব্রাউজার ব্যবহার করছি ব্লগ এর জন্য ৷
    আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালবাসি ভাই, পূর্বে কথা হয়েছিল, ব্লগিং পুরোদমে শুরু করলে পরিচয় দিব ইনশাআল্লাহ৷
    অনুগ্রহপূর্বক সাহায্যটা করেন৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান৷

    ReplyDelete
    Replies
    1. আখ্যি নিরাপত্তার ব্যপারে আমি আল্লাহর উপর মাত্রাতিরিক্ত তাওয়াককুল করি। তাকদীরে কিছু হবার থাকলে আরো ৫ বছর আগে হতে পারত। প্রযুক্তিগত তেমন কোন কৌশলই আমি ব্যবহার করিনা।

      টর ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ। ব্রাউজারকে লোকেশন এ্যাক্সেস দিবেন না। লিনাক্স বেজড ওএস ব্যবহার আবশ্যক। টু স্টেপ অথেনটিকেশন ধরনের কিছু নিরাপত্তার সেটিং আছে যাতে জিমেইল হ্যাক না হয়। হ্যাক না হলে ইনশাআল্লাহ ওরা সহজে কিছু করতে পারবেনা।

      Delete
    2. দ্বীনের পথে যেকোনো কাজে তাওয়াক্কুল তো আবশ্যক ভাই ,তবু জিন্দেগীর একটা নিয়ত আছে, উম্মতের খেদমত করতে গিয়ে তা যেন ফিকে হয়ে কারাগারে না ঠেকে তাই আর কি ।
      আমি আপাতত ফোনেই কাজ করছি ,যখন পিসি নিব তখন ইনশাআল্লাহ লিনাক্সই রাখব ।
      আর ফোনে ততদিন ব্লগিং এর জন্য তাহলে টরই এনাফ হবে বলে মনে করেন কি? অনুগ্রহপূর্বক জানায়েন৷

      আর ফেসবুক আইডির লোকেশন হাইড করার কোনো উপায় জানা থাকলে বলিয়েন ভাই (ফ্রি/পেইড ভিপিএনের বিষয়টা মাথায় আছে)

      জাযাকাল্লাহু খাইরান

      Delete
    3. আখ্যি কেউ নিরাপত্তার জন্য পরামর্শ চাইলে সরাসরি টর ব্যবহারের জন্যই বলি। কিন্তু বাস্তবে আমি নিজে কোন কিছুই ব্যবহার করিনা। ভিপিএন আমার অন্যান্য কাজে সমস্যা তৈরি করে।

      ফেসবুক এ্যাপ্লিকেশনের সেটিং তথা এ্যাপ ইনফো তে গেলে লোকেশন পারমিশন দেখবেন। পারমিশন দেয়া থাকলে তুলে ফেলবেন। ফেসবুকের ভেতরে প্রবেশ করলে সেটিংএ লোকেশন পারমিশন পাবেন ওটাকে ডিজএ্যাবল অবস্থায় রাখবেন। আমি এতটুকুকেই যথেষ্ট মনে করি। আসলে ডিপিআই বা ডিপ প্যাকেট ইন্সপেকশন এর সামনে কোন কিছুই অধরা না। তাই পুরোপুরি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে নিরাপত্তার জন্য তেমন কিছুই করিনা। আমার জানা মতে বাংলাদেশে ডিপিআই চলছে।

      Delete
    4. ভাইজান, এ নিয়ে কিছুদিন চিন্তিত ছিলাম কিন্তু রবের দয়ায় কল্পনাতীত ভাবে এ বিষয়ক দারুণ এক পিডিএফ বই হাতে চলে আসে নিজ থেকেই ,আলহামদুলিল্লাহ ,নাম "নিরাপদ প্রযুক্তি" ,৬৬পৃষ্ঠার।
      ওটায় আসলে টেকনোলজিক্যাল বিষয়ে নিরাপদ থাকার ব্যাপারগুলো পার্ট বাই পার্ট দেয়া ।তবে আমার মূলত দরকার ফেসবুক ও ব্লগ থেকে যেন আমাকে খুজে বের করতে না পারে ৷
      যাহোক, রবের উপর ভরসায় রইলাম ,ইহাই একমাত্র শক্তি যা আমাদের মূল নিরাপত্তা ।
      জাযাকাল্লাহু খাইরান ভাই ,দুআ ও ভালবাসা রইল।

      Delete