ছোটবেলায় গ্রামে যখন স্লুইচ গেইটের নির্মাণকাজ চলছিল, ওদিকটায় যেতে চাইলে বড়দের মুখে অনেক নিষেধাজ্ঞা শুনতাম। তারা বলত, ওদিকে গেলে গলাকাটারা ধরে নিয়ে যাবে। শুনতাম, মাথা কেটে নাকি ঢালাইয়ের সাথে মেশানো হয়। এখন পদ্মাসেতুর মত অনেক বড় কাজ ধরেছে। স্বাভাবিকভাবেই এরকম কোন রিচুয়ালিস্টিক প্র্যাক্টিস থাকলে সেটার ডিম্যান্ড অনেক অনেক বেশি। যখন এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রচারণা, লেখালিখি, ট্রোল শুরু হয়, একেবারে গুজব বলে উড়িয়ে দেই নি। কারন এর বহু আগেই কোন এক দৈনিক পত্রিকায় বিদেশী নির্মানকারীদের মোরগ, ছাগল ইত্যাদি পশুর বলি দেওয়ার খবর ছেপেছিল, পড়েছিলাম।
এরপরে শুনলাম পদ্মা সেতুতেও নাকি গরু বলি দেওয়া হয়েছে। রক্ত নদীর পানিতে দেওয়া হয়েছে। যদি নরবলিদানের চাহিদা থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা প্রকাশ্যে প্রচার করা সরকারের জন্য ভাল হবেনা।তবে সরকার একাজে বেশ সফল যে বিরাট জনগোষ্ঠীর মুখে পুরো বিষয়টাকে একেবারে গুজব বলাতে পেরেছে। কায়সার হক এরশাদের দুঃশাসন নিয়ে কবিতায় লিখেছে, যখন সরকার কোন বড় কোন দুঃশাসন বা এরকম কিছুর মধ্যে দিয়ে যায়, তখন মিডিয়া গুলোতে সারাক্ষন বাজানো হয়,দেশের সব কিছু ঠিকঠাক আছে, আতঙ্কিত হবেন না, গুজবে কান দেবেন না(আজকের শাসন এরশাদের ডিক্টেটরশীপের চেয়েও জঘন্য)।
.
শয়তান জ্বীনদের একটা সম্প্রদায় পানিতে থাকে। কুরআনেও আল্লাহ এদের ব্যপারে বলেছেন। আল্লাহ বলেনঃ
এবং শাইতানদেরকে, যারা সবাই ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী।[ছোয়াদঃ৩
.
নির্মাণকাজে এরকম ব্লাড সেক্রিফাইসের রিচুয়ালের ব্যপারে জানা যায়, এটা না করলে নাকি নির্মাণ টেকে না। বার বার নষ্ট হয়। কাজের সময় অনেকরকমের প্রতিকূলতা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এরকম হতে পারে যে শয়তান নির্মাণের সময় সমস্যা তৈরি করে, স্রোতের দ্বারা প্রতিকূলতা তৈরি করে। এমতাবস্থায় ওদের সাথে আপোষ না করলে কাজ করা যায় না।
.
সুতরাং, এই প্রাণী বলিদানের মাধ্যমে শয়তানের সাথে প্যাক্ট হয়। যদি শয়তানের দাবি নরবলি বা হিউমান সেক্রিফাইস হয় তবে সেটার ব্যবস্থাই করা হয় যেকোন মূল্যে। এ কাজ তখন স্বাভাবিকভাবে কিছুটা সরকারী নিয়ন্ত্রন ও সহায়তায়ই করা হয়। এখানে প্রশাসনও উলটো কিছু বলতে চাইবে না নিজেদের চাকুরীতে সমস্যা হবার ভয়ে। কারন যে যাই বলবেন সেটাই এন্টি স্টেইট এ্যাক্টিভিটিজ(র
.
মালদ্বীপে ইসলাম পৌছানোর অসাধারণ এক ঘটনা প্রচলিত আছে। সেখানে প্রতি বছর একটি করে মেয়েকে সুন্দর করে সাজিয়ে শয়তানের প্রতি উৎসর্গ করা হতো। এটা ছিল একটা আতংকের মত। কোন এক বছর এটা না করলে রাজ্যে কোন একটা ক্ষতি হতো। সে দেশে এক আরব মুসলিম উদ্বাস্তু যুবক কোনভাবে আশ্রয় নেয়। এক পরিবারের কন্যাবিসর্জনের পালা আসলে ঐ যুবক নারী সেজে অপেক্ষা করে, পরবর্তীতে কোনভাবে শয়তানকে পরাস্ত করে এই হিউমান সেক্রিফাইস প্রথা বিলুপ্ত হয়। ওই যুবক রাজ্যে অনেক সম্মানিত হয়। এভাবেই সেখানে ইসলাম প্রবেশ করে বলে শোনা যায়[৪]। মালদ্বীপের নিজস্ব ইতিহাসেও এ ঘটনা বর্নিত আছে।
.
আরেকটি প্রসিদ্ধ ঘটনা। অনেকেই হয়ত জানেন।
'নীল নদ' হল পৃথিবীর দীর্ঘতম নদ। দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৬৬৯ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর একমাত্র নদ, যা দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিকে প্রবাহিত।মিসরের
পরবর্তীকালে হযরত ওমর (রাঃ) এর আমলে মিসরে ইসলামের পতাকা উড্ডীন হয়। সেখানকার প্রাদেশিক শাসনকর্তা হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এ অবৈধ কার্যের প্রতি হস্তক্ষেপ করে তা বন্ধ করে দেন। ফলে প্রতি বছরের মত নীল নদের পানি শুকিয়ে যায়।এদিকে নও মুসলিম কৃষকরা সুন্দরী নারী বলি দানের রেওয়াজ চালু রাখবে কিনা, এ ব্যাপারে হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর অভিমত জানতে চাইলে তিনি খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর নিকট এক নাতিদীর্ঘ পত্র লেখেন।
পত্র পেয়ে হযরত ওমর (রাঃ) বিস্তারিত অবগত হলেন।নীল নদকে সম্বোধন করে চিঠির অপর পৃষ্ঠায় হযরত ওমর (রাঃ) উত্তর লিখলেনঃ ''ইন কুনতি তাজরী বিনাফসিকি, লা তাজরী। ওয়া ইন কুনতি তাজরী বি আমরিল্লাহ।'' অর্থাৎ '' (হে মিসরের নীল দরিয়া!) যদি তুমি নিজের ইচ্ছায় প্রবাহিত হও, তাহলে তোমার পানি আমাদের প্রয়োজন নেই। তুমি তোমার পানি বুকে ধরে রাখ। আর যদি মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম মোতাবেক প্রবাহিত হও, তবে পানি ধরে রাখার কোন অধিকার তোমার নেই।''
হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এ চিঠি নীল নদের বুকে নিক্ষেপ করা মাত্রই নীল নদ জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে গেল। আর সেই থেকে আজ পর্যন্ত নীল নদের পানি প্রবাহিত অবস্থায় বিদ্যমান'।
.
দুই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে শয়তানের সাথে আপোষে গিয়ে সমাধান করা হত, কিন্তু ইসলাম শয়তানের সুযোগকে বন্ধ করে দেয়। যদি সত্যিই এরকম নরবলি দেশের কোন নির্মাণকাজে করা হয় তবে সেটা সুস্পষ্ট শয়তানের আনুগত্য করা। অবশ্য মানবরচিত সংবিধানের অধীনে থাকা দেশের ক্ষেত্রে এসব কোন ব্যপার না। শয়তানেরও অধিকার আছে! শাসকই তো তাগুত।
.
বিদেশী নির্মাণের প্রজেক্ট নেওয়া সংস্থাগুলো এত ডিভাউট না যে তারা পরদেশে কোন কাজে হাত দেওয়ার জন্য দেবতার কাছে উৎসর্গ করবে খুশি হয়ে বা আশির্বাদ লাভের জন্য। তাছাড়া অহিন্দু প্যাগান ধর্মগুলো অধিকাংশই প্যান্থেইস্টিক,
.
আজ হঠাৎ খবর পেলাম নেত্রকোনায় এক ৬/৭ বছরের শিশুবালকের মস্তক ছিন্ন করে সাথে নিয়ে পালাবার সময় হাতেনাতে নরপিশাচকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়[১]। এতে প্রমাণ হয় যা রটে তার কিছু হলেও বটে। এতদিন যারা এ বিষয়টিকে গুজব বলতো তারাও অবাক। কিন্তু তারা বলতে চায় বিষয়টি ভিন্ন কিছু।
.
আমার এখানে কিছু লোক মাইকিং করে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলছে। বিষয়টাকে সিরিয়াসভাবে নিয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ। যারা এসব বিষয় পুরোপুরি গুজব/মিথ্যা ভাবেন তারা খুবই সংকীর্ণ এক জগতে বাস করেন। তারা জানেনা জাপানে এই শয়তানি রিচুয়াল চালু ছিল[২]। তারা জানেনা পাশের দেশ ভারতেও নির্মাণ কাজের সময় এরকম আতঙ্ক বিরাজ করে [৩]। ইন্দোনেশিয়াতে নির্মাণ কাজে সেক্রিফাইস খুব সাধারন ব্যপার। শয়তানের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় উৎসর্গ হচ্ছে ইনফ্যান্ট পুত্রসন্তান। এটা তার কাছে most precious blood! আপনারা জানেন, নবজাতক দুধেরশিশুপুত্র সন্তানের প্রস্রাব লঘু নাপাক। সামান্য পানির ছিটাই সেটা থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। সুতরাং, শয়তান ভাল করেই পবিত্রতম শিকারকে চেনে। নবজাতককে হেডহান্টাররা সহজে নাগালে পায় না, তাই একটু বড় বাচ্চাদের টার্গেট করে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পদ্মার জন্য মাথা কালেক্ট করেই নেবে যে করেই হোক, এখন পোস্ট মর্ডানিস্টদের মত এই অবস্থাকে মেনে নিয়ে যতটা পারা যায়, আপন আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবদের পরিবার পরিজনদের যতটা সতর্ক করা যায়।
*বাচ্চা ছেলেমেয়েদের একা দূরে পাঠাবেন না।
*স্কুলে বাবা মা বা বড় কারো সাথে করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়া উচিত। নারায়নগঞ্জের এক ভাই দেখলাম তার সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করেছেন সাময়িকভাবে, তার অঞ্চলেও কয়দিন আগে ক'জন ছেলেধরাদের আটক হয়েছে।
*বাচ্চারা যেন খেলতে গিয়ে দূরে কোথাও না যায়।
*বাড়ির মেইনগেইট আটকে রাখুন।
*এলাকায় প্রভাব থাকলে সন্দেহজনক নতুন মুখের আনাগোনা হলে ভদ্রতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করুন। প্রথমেই প্রমাণ ছাড়া মারধর করা অনুচিত। ক'দিন আগে এক নিরীহ ডাব বিক্রেতার হাতে কাচিঁ আর বস্তা দেখে মানুষ ছেলেধরা ভেবে গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলে। এমনটা যেন না হয়। অপরাধী নিশ্চিত হয়েও তথ্য নেওয়ার জন্য কিছুক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত।
*শিশুসন্তানরা যাতে কোন প্রলোভনে না পটে অচেনা লোকের কাছে না যায়, সেটা শেখানো উচিত।
.
আমার এলাকাতেও বেশ কিছু শিশু মিসিং। নেত্রকোনায় ঘটা বিহেড শিশুর নিষ্পাপ চেহারা দেখে এত গুলো কথা লিখলাম। এ বিষয়টাতে সরকারী আন্ডারকভার ইন্টারভেনশান থাকলে থানা পুলিশের উপর নির্ভর করে লাভ নেই।
prevention is better than cure
.
এবার গত কয়েক মাসের কিছু নিউজ লিংক:
- বাগেরহাটে শিশু উদ্ধার, পাচারকারী আটক [tinyurl.com/
- বস্তায় ভরার সময় চিৎকার, পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেল দুই শিশু [tinyurl.com/
- কমলাপুর রেলস্টেশনে হঠাৎই শিশু পাচারকারী চক্র সক্রিয় [tinyurl.com/
- নেত্রকোনায় আজ ছেলেধরাকে পিটিয়ে হত্যা; ব্যাগ থেকে শিশুর মাথা উদ্ধার [tinyurl.com/
- নেত্রকোনার ঘটনার ভিডিও লিংক: tinyurl.com/
.
রেফাঃ
_____
১] https://
[পোস্টের কমেন্টে ভিডিও]
.
২]https://
https://
.
https://
https://
https://
.
৩] https://
.
http://
.
৪] http://
https://
0 Comments:
Post a Comment