পর্ব-৬
-গম্বুজাকৃতির আসমান-
সুউচ্চ জমাট ঢেউ ও সুরক্ষিত মজবুত ছাদ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা পৃথিবীর উপর স্তম্ভবিহীন ছাদ হিসেবে আসমানকে সৃষ্টি করেছেন। আসমানের সংখ্যা ৭ টি। একটি অপরের উপর। অর্থাৎ মোট সাতটি স্তর। আল্লাহ পবিত্র কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেনঃ
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌতিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত।[সূরা বাকারা ২৯]وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًا شِدَادًا
নির্মান করেছি তোমাদের মাথার উপর মজবুত সপ্ত-আকাশ[নাবা ১২]
উপরিউক্ত হাদিসে ৫০০ বছরের দূরত্বের কথা উল্লেখ থাকলেও অপর এক হাদিসে ৭১, ৭২ বা ৭৩ বছরের দূরত্বের কথা বলা হয়েছে।
حدثنا محمد بن يحيى، حدثنا محمد بن الصباح، حدثنا الوليد بن أبي ثور الهمداني، عن سماك، عن عبد الله بن عميرة، عن الأحنف بن قيس، عن العباس بن عبد المطلب، قال كنت بالبطحاء في عصابة وفيهم رسول الله ـ صلى الله عليه وسلم ـ فمرت به سحابة فنظر إليها فقال " ما تسمون هذه " . قالوا السحاب . قال " والمزن " . قالوا والمزن . قال " والعنان " . قال أبو بكر قالوا والعنان . قال " كم ترون بينكم وبين السماء " . قالوا لا ندري . قال " فإن بينكم وبينها إما واحدا أو اثنين أو ثلاثا وسبعين سنة والسماء فوقها كذلك " . حتى عد سبع سماوات " ثم فوق السماء السابعة بحر بين أعلاه وأسفله كما بين سماء إلى سماء ثم فوق ذلك ثمانية أوعال بين أظلافهن وركبهن كما بين سماء إلى سماء ثم على ظهورهن العرش بين أعلاه وأسفله كما بين سماء إلى سماء ثم الله فوق ذلك تبارك وتعالى " .
আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:আমি বাতহা নামক স্থানে একদল লোকের সাথে ছিলাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও তাদের সাথে ছিলেন। তখন একখণ্ড মেঘ তাকে অতিক্রম করে। তিনি মেঘখণ্ডের দিকে তাকিয়ে বলেন, তোমরা এটাকে কী নামে অভিহিত করো? তারা বলেন, মেঘ। তিনি বলেন, এবং মুয্ন। তারা বলেন, মুয্নও বটে। তিনি বলেন, আনানও। আবু বাক্র (রাঃ) বলেন, তারা সবাই বললেন, আনানও বটে। তিনি বলেন, তোমাদের ও আস'মানের মাঝে তোমরা কত দূরত্ব মনে করো? তারা বলেন, আমরা অবগত নই। তিনি বলেন, তোমাদের ও আসমা'নের মাঝে ৭১ বা ৭২ বা ৭৩ বছরের দূরত্ব রয়েছে। এক আসমান থেকে তার ঊর্ধ্বের আস'মানের দূরত্বও তদ্রূপ। এভাবে তিনি সাত আস'মানের সংখ্যা গণনা করেন। অতঃপর সপ্তম আকাশের উপর একটি সমুদ্র আছে যার শীর্ষভাগ ও নিম্নভাগের মধ্যকার ব্যবধান (গভীরতা) দু' আস'মানের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তার উপর রয়েছেন আটজন ফেরেশ্তা, যাদের পায়ের পাতা ও হাঁটুর মধ্যকার ব্যবধান দু' আসমা'নের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তাদের পিঠের উপরে আল্লাহ্র আরশ অবস্থিত, যার উপর ও নিচের ব্যবধান (উচ্চতা) দু' আসমা'নের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তার উপরে রয়েছেন বরকতময় মহান আল্লাহ্। [১৯১]
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৯৩
আসমানের এই দূরত্বের ইউনিট কি অথবা কোন মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে বলা সে ব্যপারে কোন সুস্পষ্ট দলিল পাওয়া যায় না। হয়ত ভিন্ন ভিন্ন গতিতে উর্দ্ধোলোক গমনের গতির হিসাবে এরূপ ভিন্ন ভিন্ন সময়কাল ধরা হয়েছে, এসব ব্যপারে একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন।
Narrated Al-Abbas ibn AbdulMuttalib: I was sitting in al-Batha with a company among whom the Apostle of Allah (peace be upon him) was sitting, when a cloud passed above them. The Apostle of Allah (peace be upon him) looked at it and said: What do you call this?They said: Sahab.
He said: And muzn? They said: And muzn. He said: And anan? They said: And anan. AbuDawud said: I am not quite confident about the word anan. He asked: Do you know the distance between Heaven and Earth? They replied: We do not know. He then said: The distance between them is seventy-one, seventy-two, or seventy-three years. The heaven which is above it is at a similar distance (going on till he counted seven heavens). Above the seventh heaven there is a sea, the distance between whose surface and bottom is like that between one heaven and the next. Above that there are eight mountain goats the distance between whose hoofs and haunches is like the distance between one heaven and the next. Then Allah, the Blessed and the Exalted, is above that. আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এই সাত আসমানকে পৃথিবী সৃষ্টির পর সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেনঃ
قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِالَّذِي خَلَقَ الْأَرْضَ فِي يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُ أَندَادًا ذَلِكَ رَبُّ الْعَالَمِينَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ مِن فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَاء لِّلسَّائِلِينَ ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ اِئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاء أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِবলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা[হা-মীম সিজদাহ 9-12]
এ বিষয়ে আমরা প্রথম ও ২য় পর্বে বিশদ আলোচনা করেছি, যার জন্য পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন মনে করি। আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে এ বিষয়টি একদম সাংঘর্ষিক। কাফিরদের কথিত বিজ্ঞান অনুযায়ী বিগব্যাং এর অনেক পরে মহাশূন্য সৃষ্টির কোটি কোটি বিলিয়ন ট্রিলিয়ন বছর পর পৃথিবী সৃষ্টি হয়। এই দলিলই আধুনিক বৈজ্ঞানিক মিথ্যাচার এবং আল্লাহ প্রদত্ত হক্ক ইল্মের মাঝে পার্থক্য দ্বার করিয়ে দেয়। কাফিরদের কথা মহাশূন্য নামক আকাশ সৃষ্টি হয় সবার আগে, আর আল্লাহ বলেন, আকাশ সৃষ্টি হয় দুনিয়া সৃষ্টির পরে। এখানেই স্পষ্ট হয় উভয় পরস্পর সাংঘর্ষিক বৈপরীত্যপূর্ন স্বতন্ত্র সৃষ্টিতত্ত্ব।
২০১২ সাল, ক্রো৭৭৭ চ্যানেলের এডমিন তার ক্যামেরায় চাদের উপর অদ্ভুত তরঙ্গের প্রবহমানতা প্রত্যক্ষ করেন।।তিনিই সর্বপ্রথম বিষয়টি নিয়ে হইচই ফেলেন। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে তার ক্যামেরার ত্রুটি মনে করা হলেও অন্যান্য ক্যামেরাতেও একই ফলাফলের জন্য সে ধারনা পরিবর্তিত হয়। পরবর্তীকালে বিশ্বের হাজারো শার্প আইড লোকেরা একই ফেনোমেনা তাদের ক্যামেরাতে লক্ষ্য করেন। একে নাম দেওয়া হয় 'Lunar Wave'[১]। বিষয়টি এরূপ যে, চাদকে জুম করে স্থিরভাবে লক্ষ্য করলে একরকমের ঢেউয়ের প্রবহমানতাকে দেখা যায়। সেসব ঢেউ চাদের উপরে আড়াআড়িভাবে বহমান।দেখলে মনে হবে, সেখানে পানির একটি স্তরের উপরে চাদের অবস্থান। সেই লিকুইডের তরঙ্গের জন্য এবং চাদের মৃদুমন্দ শীতল আলোয় জমিনে দাঁড়িয়েই লুনার সার্ফেসে তরঙ্গ বইতে দেখা যায়। ঢেউ গুলো চাদের সার্কুলার স্ফেরয়েড আকৃতিকে বেষ্টন করে হচ্ছে না, অর্থাৎ এই সুক্ষ্ম ঢেউ গুলো বক্র নয়। বরং হোরাইজন্টাল। সুতরাং পুরো আকাশ জুড়েই এরূপ হচ্ছে, যা প্রখর দিবালোকে দর্শনযোগ্য নয়।
এই ফেনোমেনাকে কেন্দ্র করে 'হলোগ্রাম সান-মুন'সহ অনেকগুলো উদ্ভট এবং হাস্যকর কন্সপাইরেসি থিওরিও গজিয়েছিল। যাহোক, সেদিকে যাচ্ছিনা।
এ ব্যাপারে মেইনস্ট্রিম সাইন্স কমিউনিটি থেকে কোন রেস্পন্স নেই। অধিকাংশই এর অস্তিত্বেরই স্বীকৃতি দিতে চায় না।
শুধু এটাই না, রাতের আকাশে চাদকে জুম লেন্সড ক্যামেরা দ্বারা জুম করলে চাদকে মনে হয় যেন একটি পানির স্তরের ভেতর দিয়ে দেখা যায়। একইভাবে কথিত গ্রহ ও তারকারাজিদেরকে যখন ক্যামেরায় ও টেলিস্কোপে জুম করা হয়, দেখে মনে হয় যেন সেসব পানির স্তরের ভেতর দিয়ে দেখা যায়। সমুদ্রের পানির নিচে গিয়ে সূর্যকে যেভাবে কাঁপতে দেখা যায় ঠিক সেরকম। কথিত গ্রহের ব্যপারে যেসব কথা শেখানো হয় সেসব সুস্পষ্টভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়[১]। এ বিষয়গুলো এতটুকুন ধারনা দেয় যে, হয়ত আমাদেরকে আকাশ বলতে যা শেখানো হয়(ইনফিনিট ভ্যাকুয়াম স্পেস/মহাশূন্য) তা সত্য নয়। হয়ত আমাদের মাথার উপর সুবিশাল পানির স্তর আছে। এবং আকাশ আদৌ মহাশূন্য নয়, বরং সুরক্ষিত জমাট তরঙ্গায়িত মজবুত ছাদ। তারকারাজি, সেই পানির তরঙ্গে সন্তরনশীল।
এবার আসুন আসমানের ব্যপারে কুরআন সুন্নাহ কি বলে?
ইমাম আহমদ(র) বর্ননা করেন যে,আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেন, "একদিন আমরা রাসূল(সাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এ সময়ে একখণ্ড মেঘ অতিক্রম করলে তিনি বললেনঃতোমরা কি জান এগুলো কি? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূল(সঃ)ই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ "এগুলো হচ্ছে মেঘমালা।পৃথিবীর দিক-দিগন্তপ থেকে এগুলোকে হাকিয়ে নেওয়া হয় অকৃতজ্ঞ আল্লাহর বান্দাদের নিকট যারা তাকে ডাকে না। " তোমরা কি জান তোমাদের উর্দ্ধদেশে এটা কি? " আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূল(সঃ) অধিকতর জ্ঞাত। এটি হচ্ছে সুউচ্চ জমাট ঢেঊ,এবং সুরক্ষিত ছাদ.... "*ইমাম তিরমিযী(রঃ) সহ একাধিক আলিম এ হাদিসটি বর্ননা করেছেন।(আল বিদায়া ওয়ান নিয়াহা,প্রথম খন্ড পৃঃ৭২-৭৩ দ্রষ্টব্য)
আকাশ সম্পর্কে এক হক্কপন্থী আলিমের অসাধারণ বক্তব্য-"অনেক বিজ্ঞানীরা বলে, আকাশ বলতে কি (?) মহাশূন্য,মহাশূন্য শূন্যের শূন্য। এই আসমান বলতে অন্য কিছু নাই। কিন্তু কুরআন কি বলছে শুনুন। কুরআন বলছেঃ وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًا شِدَادًا (আন নাবাঃ১২)-আমি তোমাদের মাথার উপরে সাতটা কঠিন আসমানের স্তর রেখেছি।সূরা মুলকের ৩নং আয়াতে আছেঃ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًاওসূরা নূহের ১৫ নং আয়াতে আছে, أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللَّهُ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا - তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।সাত আসমান, শুধু সাত আসমান আছে তা(ই) না, সাত আসমান কি কি দিয়ে তৈরি সেইগুলো পর্যন্ত তাফসীরের কিতাবে আছে। প্রত্যেকটা আসমান আল্লাহ কি দিয়ে তৈরি করেছেন, আল্লাহু আকবর। আল্লাহর রাসূল(সাঃ) হাদিসে সবগুলো পরিষ্কার করে দিয়েছেন। প্রথম আসমান সম্পর্কে দুই রকম রেওয়ায়ত আছে। আল্লাহর রাসূল(সঃ) বলছেন, প্রথম আসমানটা মওজুন মাগফুফুন। প্রথম আসমানটা হচ্ছে মওজুন মাগফুফুন,পানি দিয়ে তৈরি। পানি।। এজন্য পানি যখন দূরের থেকে দেখা যায় তখন কি দেখা যায়? নীল দেখা যায়। আমরা যখন প্লেনে চড়ি,সাগরের উপর দিয়ে যখন প্লেনগুলো যায়,নিচে কি দেখা যায়? নীল (রঙ) দেখা যায়। নীল আকাশের মতই দেখা যায়। এজন্য প্রথম আসমান পানি দিয়ে তৈরি, বরফ হতে পারে। আরেক রেওয়ায়ত আসছে, 'মিন জুজাজাতিন', কাচের তৈরি।প্রথম আসমানটা? কাচের তৈরি। এই প্রথম আসমান পর্যন্ত গিয়ে আল্লাহর রাসূল(সা) থামলেন।"[২]
শাইখুল হাদিস মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানি(হাফিঃ)
[উল্লেখ্য,শায়খ জসীমউদ্দিন রহমানি (হাফি) এর সাথে আর্টিকেলটির মূল বক্তব্য ও ননরিলিজিয়াস কোন ডকুমেন্ট এর ব্যপারে বিশ্বাসগত সংশ্লিষ্টতা নাও থাকতে পারে]
সুতরাং সুস্পষ্টভাবে দেখছেন বলা হচ্ছে আকাশ বলতে সীমাহীন শূন্যতা নয় বরং এক সমুন্নত তরঙ্গায়িত পানি/কাচের ছাদকে বোঝায়। আর লুনার ওয়েভ ফেনোমেনন এ সকল ইসলাম ভিত্তিক অদৃশ্যজগতের তথ্যকে সত্যায়ন করতঃ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
দুর্বল বর্ননার হাদিসগুলোতে আসমানের যে তরঙ্গ বা উর্মিমালার বর্ননা পাওয়া যাচ্ছে, সেটাকে আমরা রিয়েলিটিতেই স্পষ্টভাবে ক্যামেরার ফ্রেমে দেখছি।
হেনেসী কমার্শিয়ালে চমৎকার ভিডিওটির লিংক না দিলেই নয়,যেখানে আসমানকে পানিপূর্ন ছাদ হিসেবে দেখানো হয়েছে যা মেইনস্ট্রিম কস্মোলজি ও সাইন্টিফিক তথ্যের সম্পূর্ন বিপরীত। দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=30xqqjosCLQকাফেররা কুফরি করতেই পছন্দ করে। এজন্য তারা ভিডিও কমার্শিয়ালটির ০.৪৬ সেকেন্ডে দেখিয়েছে যে আকাশভেদ করে অন্যত্র বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব।
অথচ
আল্লাহ বলেন, "হে জিন ও মানবকূল, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের প্রান্ত অতিক্রম করা যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায়, তবে অতিক্রম কর। কিন্তু ছাড়পত্র ব্যতীত তোমরা তা অতিক্রম করতে পারবে না"(৫৫:৩৩)[আয়াতটি কিয়ামত পরবর্তী বিচার দিবসকে নির্দেশ করে, যার জন্য সন্দেহবাদী মোডারেট ইসলামিস্টরা বলে,' এরূপ এনক্লোজড ব্যবস্থাপনা বিচার দিবসের জন্য শুধু প্রযোজ্য' , এজন্য তারা আউটার স্পেস-হেলিওসেন্
ট্রিক বিলিফকে ইসলাম দ্বারা জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা বিজ্ঞানকে ঠিক রাখতে গিয়ে বস্তুত ভ্রান্তির জালে আটকা পড়ছেন।
যেহেতু
আল্লাহ বলেন,"
সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে"(২১:১০৪)। অর্থাৎ কিয়ামতে সব ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও বিচার দিবসে তিনি আবারো একইভাবে প্রথমবারের ন্যায় সৃষ্টি করবেন। যেহেতু সূরা আর রহমানের ৩৩ নং আয়াতে বিচার দিবসে পালিয়ে আসমান,যমীন ভেদ করে যাবার পথ নেই বলে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন,এবং এখানে সূরা ২১ এর ১০৪ নং আয়াতে পুনরায় কিয়ামত পূর্বের ন্যায় একইভাবে সৃষ্টি করবেন বলেছেন, সেহেতু এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে কিয়ামতপূর্বেও আসমানজমিন এনক্লোজড ছিল যার একই পুনরাবৃত্তি ঘটানো হবে বিচারদিবসে। অতএব বুঝতেই পারছেন, মোডারেট ইসলামিস্টরা মিথ্যাকে শুদ্ধ করতে গিয়ে আরো বড় গলদ করে বসছে!(আসমানের দরজা যে বন্ধ, তা নিয়ে সামনে বিস্তারিত আসছে)]
আমরা ইতোপূর্বে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি যে আসমান পানি বা স্ফটিকের ছাদ। নিচের আয়াতে চাঁদ সূর্যের ব্যপারে সাতার কাটার বিষয়টি পুরো ব্যাপারটির তথ্যশিকলকে আরো শক্তিশালী করে।
আল্লাহ বলেনঃ
"সূর্যের পক্ষে সম্ভব না চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটে"(৩৬:৪০)এরূপ হওয়াটা স্বাভাবিক যে, চাঁদ সূর্য পানিপূর্ন আসমানে সন্তরনরত। এ বিষয়ে অসংখ্য হাদিস রয়েছে,যা পরবর্তী পর্ব গুলোয় নিয়ে আসা হবে, ইনশাআল্লাহ।
এরূপ ধারনা করা হচ্ছে যে গোটা পৃথিবী-আসমানকে পানি ঘিরে রেখেছে[৩]। পূর্বোল্লিখিত পর্বে দেওয়া অনেক কুরআন সুন্নাহর দলিল এ কথাই বলে।
জনৈক প্রফেসর সাবমেরিনে করে সমুদ্রপৃষ্ঠে গিয়ে এক অদ্ভুত আন্ডারওয়াটার লেকের সন্ধ্যান পেয়েছেন, যা ভেদ করে নিচে যাওয়া যায় না।। উলটো সাবমেরিনকে ধাক্কা দিয়ে উপরের দিকে ঠেলে দেয়[৪]।
খুব সম্ভবত আসমানও ঠিক একই ভাবে জমাট পানির প্রাচীর স্বরূপ অর্থাৎ হাদিসে উল্লিখিত 'জমাট ঢেউ/তরঙ্গ'।
তারকারাজির মিটিমিটি প্রজ্বালনও বলে দেয়, আসমান পানি দ্বারা পরিপূর্ণ। ইতোপূর্বে বিস্তারিতভাবে
আর্টিকেল প্রকাশ করেছি এ বিষয়ে যে, নক্ষত্ররাজির মধ্যে গ্রহ বলতে যা বোঝায় তার অস্তিত্ব নেই। বরং সবই আসমানে গাঁথা বাতিস্বরূপ(তাফসির ইবনে কাসিরেও এরূপ এসেছে যে, আসমানের গায়ে নক্ষত্রসমূহ গাঁথা)।
ক্লোজআপ ফুটেজেও সবগুলোকে প্রবল কম্পনের সাথে মিটিমিটি জ্বলতে দেখা যায়, যেমনি আমরা খালি চোখেই প্রত্যক্ষ করে থাকি। কখনো পুকুরে বা নদীতে ডুব দিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? সূর্য ওই অবস্থায় ঐরূপ দেখতে যেমনটি তারকাদের দেখা যায়। অর্থাৎ অবশ্যই একটা পানির স্তরের নিচে থেকে আলোকে যেমনি দেখায় তারকারা ঐরূপ[৫]।
ক'দিন আগে নিচে প্রদত্ত লিংকের ফুটেজটি দেখে বিস্মিত হই। একটি রকেট আসমান পানে যেতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আকাশে প্রবল ঢেউ সৃষ্টিপূর্বক থেমে যায় অথবা রকেটটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ভিডিওটি দেখলে এরূপ মনে হবে যেন রকেটটি লিকুইড কোন স্তরে আছড়ে পড়েছে।
রিপল গুলোকে গভীরভাবে দেখলে বুঝবেন এটাকে বিস্ফোরন পরবর্তী শকওয়েভ বলা যায় না। কারন একটি বিস্ফোরণ পরবর্তী শকওয়েভ প্রধানত একটি হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু ভিডিওটিতে রকেটটির বিস্ফোরন পরবর্তীতে উদ্ভূত রিপল বা তরঙ্গ/ঢেউ শকওয়েভ থেকে একদম ভিন্ন। বরং এই ঢেউ একদম পানির ন্যায়। তবে অত্যন্ত ঘন লিকুইডের। পানিতে কিছুর পতনে যেমনি একাধিক রিপল তৈরি হয়।যেন সত্যিই পানিতে ভারী কিছু আছড়ে পড়েছে। হাত থেকে ছোট পাথর কনা স্থির জলাশয়ে ফেললে এরকম একাধিক রিপল ইফেক্ট তৈরি হয়। তবে আসমানের এই পানির সার্ফেসটেনশন অত্যন্ত শক্তিশালী অনেকটা দুর্ভেদ্য। আল্লাহু আ'লাম, হয়ত রকেটটি পানির তৈরি মজবুত সুউচ্চ ছাদেই আছড়ে পড়ে।[৬]
গত কয়েক বছর আগে একটি হাই অলটিটিউড হিলিয়াম বেলুনে ক্যামেরা লাগিয়ে উপরে পাঠানো হয়েছিল। সেটা হঠাৎ যেন শক্ত কিছুতে সশব্দে ধাক্কা খেয়ে ক্র্যাচিং এর শব্দ করছে। দেখে মনে হয় কিছু একটা এটাকে আর উপরে যেতে দিচ্ছে না।যেন ক্যামেরাসমেত বেলুন ইনভিজিবল কোন শিল্ডে বারবার ঘর্ষিত হচ্ছে।[৭]
এছাড়া, অপেশাদার বেসামরিক রকেট স্পেস এক্স সংগঠনটি একটি ড্রোন রকেট আসমান পানে সোজাসুজি প্রেরন করে। আপনারা জানেন যে রকেট গুলো ২০ মাইল পার হতে না হতেই নাক বাঁকিয়ে ধীরে ধীরে হোরাইজন্টালভাবে যেতে শুরু করে। অর্থাৎ কোন রকেটই সোজাসুজিভাবে আসমানে পাঠানো হয়না। স্পেস এক্সের এই রকেটটি ৭৩ মাইল পর্যন্ত উচুতে গিয়ে পৌছায়, এবং সলিড কোন কিছুতে সশব্দে আঘাত হেনে উর্দ্ধমুখী গতি শূন্যতে গিয়ে যমীনে ফিরে আসে[৮]।
এর পূর্বে ৭২ মাইলের উচ্চতায়ও কোন বিমান, বেলুন বা অন্যকিছু পৌছায়নি, উইকিপিডিয়ার হাইয়েস্ট এলিভেশন রেকর্ডের ডেটা অনুযায়ী। অর্থাৎ সেদিক দিয়ে বলা যায়, এই ড্রোন রকেট বিগত রেকর্ডসমূহ ভাঙ্গে। এই রকেট যাতে ধাক্কা খায়, সেটা আসমান কিনা, আল্লাহই ভাল জানেন। অনেকের কাছে এটা অবিশ্বাস্য লাগবে, কেননা হাদিসে ৫০০ বছর বা ৭৩ বছরের পথের উল্লেখ পাওয়া যায়। তাদের বক্তব্য এরূপ যে, কোন জিনিস সর্ব নিন্ম গতিতেও যদি সঞ্চালিত হয়, তবে সেটা ৫০০ বছর সময়ের অনেক পূর্বেই ৭৩ মাইলে গিয়ে পৌছবে। একটা বিষয় হচ্ছে, আসমান গম্বুজাকৃতির বা উল্টানো কনকেইভ শেইপড। এর কার্ভাচার আছে, সমতল যমীনের সব স্থান থেকেই আসমান একই দূরত্বে হবে না। যমীনের প্রান্তসীমার দিকে বা আসমানের শেষ সীমার দিকে যমীন থেকে এর দূরত্ব খুব কম হবে। আবার মাঝের দিকে আসমানের উচ্চতা বা দূরত্ব অনেক বেশি হবে।
Tanwir al Miqbas এর 50:41 আয়াতের ব্যাখ্যায় এসেছে,
(And listen on) O Muhammad, so that you can hear the description of it; it is also said that this means: strive, O Muhammad, for the day when the angel blows the Trumpet (the day when the crier crieth from a near place) close to heaven, from the dome of Jerusalem, which is the closest spot on earth to heaven by about 12 miles; and it is also said this means: from a close distance from which they can hear from beneath their feet.
অর্থাৎ জেরুজালেম থেকে আসমান সর্বাধিক নিকটতম, যার দূরত্ব যমীনের উপরে ১২ মাইল! [ওয়া আল্লাহু আ'লাম]। এর দ্বারা পৃথিবীর ম্যাপের ব্যপারে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়, এসবের সুস্পষ্ট উত্তর আল্লাহই ভাল জানেন। এর দ্বারা একটা বিষয় স্পষ্ট হয় যে, ৭৩ মাইল উপরেই এ্যামেচার দ্রোন রকেটের ধাক্কা লাগার বস্তু আসমান হতেই পারে। ১২ মাইলের তুলনায় ৭৩ মাইল অনেক বেশি। আমরা জানিনা ৭৩ বছরের পথ অথবা ৫০০ বছরের পথ কিসের ভিত্তিতে। এসবের ব্যপারে আল্লাহই ভাল জানেন।
উপোরোল্লিখিত শাইখের বর্নিত হাদিসে
দু রকম বর্ননা পাওয়া যাচ্ছে। ১. আসমান পানির তৈরি, ২.কাচের তৈরি। এমনটা হওয়া অসম্ভব নয় যে আসমানের প্রথম আবরনটি স্ফটিক কাচ জাতীয় কিছু দ্বারা নির্মিত,এবং উপরে পানি দ্বারা পূর্ন। যেমনটা কাফেররা বিদ্রুপ করে দেখিয়েছে সিম্পসন কার্টুনে[৯]।
অতএব দেখা যাচ্ছে হাদিস গুলোর মধ্যে সাংঘর্ষিকতা নেই, জ্ঞানগতসীমাবদ্ধ
তার জন্যই আমরা আপাতদৃষ্টিতে অনেক কিছুতে কন্ট্রাডিকশন খুজে পাই। বরং প্রতিটি হাদিস একটু আধটু অতিরিক্ত তথ্য দেয়।
এবার রিয়েলিটিতে আসুন। স্কাই স্টোনের নাম শুনেছেন? নীল বর্ণের রহস্যময় অদ্ভুত পাথর। এর নাম দেওয়া হয়েছে আসমানী পাথর বা স্কাই স্টোন।
আফ্রিকার একটি দেশে এর সর্বপ্রথম দেখা মেলে। কিছু গবেষক এটা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে গবেষনায়। তারা এ পাথর বা স্ফটিক বিশ্লেষনে ৭৭% অক্সিজেন পান! ৭৭ সংখ্যাটা ইন্টারেস্টিং বিশেষ কারনে। যাহোক, অন্য একটি অজানা পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে যা দুনিয়াতে কখনো পাওয়া যায় নি। গবেষকরা ওই পদার্থের ব্যপারে কিছুই জানেন না।[১০]
এসব অদ্ভুত তথ্য গলাধঃকরণের ক্ষেত্রে মূল সমস্যাটা অন্যখানে।
আমাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের মাথায় 'আউটার স্পেস,ইনফিনিট এভার এক্সপ্যান্ডিং ইউনিভার্স এবং মহাশূন্য- আসমান মানেই শূন্য' ইত্যাদি এমনভাবে মস্তিষ্কে জায়গা করে নিয়েছে যে, এর বিকল্প অন্য কিছু আমরা ভাবতেও অক্ষম। আমরা আজ এতটাই চিন্তাশক্তিহীন ব্রেইনওয়াশড যে কল্পনাই করতে পারি না আসমান ছাদের ন্যায় কিছু। এরূপ ব্রেইনওয়াশিং এর ক্রেডিট পাবার যোগ্য হলিউড আর টিভি। কেন সেটা ভাল করেই জানেন। বই পত্র যতটা না মনে দাগ কাটতে পারে, তার চেয়েও গভীর দাগ কাটে, মুভি আর ভিডিও। ওরা যা দেখায় তার কোন গ্রহণযোগ্য প্রমান নেই। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড
ের মহান প্রতিপালক তার প্রেরিত সর্বশেষ আসমানি কিতাবে স্পষ্টভাবে বলেনঃ
وَالسَّقْفِ الْمَرْفُوعِ
এবং[শপথ] সমুন্নত ছাদের,(আত ত্বূরঃ৫)আল্লাহ বলেনঃ
وَجَعَلْنَا السَّمَاء سَقْفًا مَّحْفُوظًا وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ
আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে[২১:৩২]সুতরাং,এটা স্পষ্ট যে আসমান অবশ্যই "শূন্য", "বায়ূমন্ডলের স্তর" বা এ জাতীয় কিছু নয়, বরং এটা সুবিশাল মজবুত ছাদ।
প্রচলিত এবং প্রতিষ্ঠিত অপবিজ্ঞান আমাদেরকে আকাশ বলতে উন্মুক্ত-অসীম ভ্যাকুয়াম স্পেসকে বোঝায় যার বিস্তার শুরু হয়েছে 'বিগব্যাঙ' নামের যাদুশাস্ত্রের অনুসারী, তথা কাব্বালিস্টদের স্ক্রিপচার(জোহা
র)থেকে নেওয়া কাল্পনিক কুফরভিত্তিক ঘটনা থেকে। এ বিজ্ঞানের ভাষায় আসমান বলতে আদৌ নিরেট কিছুকে বোঝায় না। বরং তাদের ভাষায় 'মহাশূন্যের' অসীম শূন্যতাই আসমান।।এ ব্যপারে পাঠকরা উত্তম জানেন।
অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা স্পষ্টভাবে একে যমীনের উপর ছাদ বলেছেন। এটা আদৌ শূন্য/স্পেস জাতীয় কিছু নয় বরং সলিড মজবুত ছাদ। বাস্তবিক পর্যবেক্ষনেও এটাই সত্য বলে দেখা যায়, যে ফেনোমেননগুলো উপরেই উল্লেখ করেছি।
আল্লাহ বলেনঃ
"যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে..."[2.22]وَجَعَلْنَا السَّمَاء سَقْفًا مَّحْفُوظًا وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ
আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে[২১:৩২]আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এর সৃষ্ট এই ফিজিক্যাল ডোম ফার্মামেন্ট(গম্বুজাকৃতির আকাশ) এর ফিজিক্যালিটির ব্যপারে কোন সন্দেহই থাকে না যখন আল্লাহ বলেনঃ
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀ ﻛُﺸِﻄَﺖْযখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে(৮১:১১)
প্রিকোপার্নিকান
কস্মোলজি অনুযায়ী বাস্তব আকাশ কোন শূন্য/অসীম কিছু নয় বরং তা ত্রুটি(ফাটল/
ছিদ্র)হীন সলিড স্তম্ভবিহীন ভেঙ্গেপড়বার যোগ্য মজবুত ছাদ।
আল্লাহ বলেন-
وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًا شِدَادًا
নির্মান করেছি তোমাদের মাথার উপর মজবুত সপ্ত-আকাশ। [সূরা নাবাঃ১২]আল্লাহ বলেনঃ
"তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।" (সূরা সাবা ৯)রহমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এখানে আকাশের খন্ডাংশের পতনের কথা এনে আরো ভালভাবে ক্ল্যারিফাই করেছেন। বস্তুত আসমান ছাদ বিশেষ, যদিও মোডারেট ও মর্ডানিস্ট মুসলিমরা কাফিরদের সাথে গলা মিলিয়ে উল্টোটা বলতেই পছন্দ করে। আল্লাহ যা বলেছেন, সেটা আধুনিক (অপ)বিজ্ঞানের সাথে অতিমাত্রায় সাংঘর্ষিক এবং একদমই বিপরীত। আপনি কি বিশ্বাস করেন, আপনার আশপাশের ফাকাস্থান বা শূন্যস্থান আপনার উপর ভেঙে পড়তে পারে!!? আপনি কি বিশ্বাস করেন, ভ্যাকুয়াম স্পেস বা কথিত মহাশূন্যের শূন্যস্থান ভেঙ্গে পড়ার মত অবান্তর কথা জগত সমূহের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলতে পারেন?! বরং সত্য হচ্ছে কাফিররা সম্পূর্ন বিপরীত ও অসত্য কস্মোলজি ও কস্মোজেনেসিসের কথা মানুষকে শেখায় যা আজ মুসলিমরাও আকড়ে ধরেছে, আফসোস!
আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির(রহঃ) বলেনঃ
আল্লাহ আসমানের ভঙ্গুরতার ব্যপারে আরো বলেনঃ
আকাশ উপর থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয় আর তখন ফেরেশতাগণ তাদের পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং পৃথিবীবাসীদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে। শুনে রাখ, আল্লাহই ক্ষমাশীল, পরম করুনাময়।(সূরা শূরা ০৫)একমাত্র আকাশ হিসেবে সলিড সিলিংই ভেঙ্গে পড়বার উপক্রম হতে পারে,শূন্য অসীম ভ্যাকুয়াম স্পেস নয়।
ইবনে কাসির রহঃ বলেনঃ
আল্লাহ বলেনঃ
تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا | 90 |
হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে।[১৯:৯০] |
আল্লাহ বলেনঃ
অথবা আপনি যেমন বলে থাকেন, তেমনিভাবে আমাদের উপর আসমানকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলে দেবেন অথবা আল্লাহ ও ফেরেশতাদেরকে আমাদের সামনে নিয়ে আসবেন।(সূরা বনী ইসরাইলঃ৯২)ইমাম ইবনে কাসির(রহঃ) এ আয়াতের ব্যখ্যায় বলেনঃ
فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِّنَ السَّمَاء إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَঅতএব, যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও(শু'আরাঃ ১৮৭)বিজ্ঞানপন্থী মোডারেট/মর্ডানিস্ট ফিতনাবাজরা এত শক্তিশালী কুরআনিক দলিল পেয়ে বলবে, ' হ্যা আমরা স্বীকার করি আসমান সলিড, কিন্তু উহা এখনো কেউ দেখেনি, বিজ্ঞানও আবিষ্কার করেনি, কারন ওটা ধরাছোঁয়ার সবার বাইরে।' ওরা হাদিসের দলিলও দেবে এই বলে যে আসমান ৫০০ বছরের পথ দূরে অবস্থিত,সেটা ধরাছোঁয়ার বাহিরে আছে দেখা তো দূরের কথা।কিন্তু আল্লাহ রহমানের আয়াতগুলো দ্ব্যর্থহীনভাবে বলে, ভূমিতে দাড়িয়েই যে কারও দ্বারা উপরিস্থিত আসমানকে দেখা সম্ভব। অর্থাৎ আমরা মাথার উপরে নীল যে আকাশকে দেখি। যা কুরআন সুন্নাহর বর্ণনানুযায়ী নিরেট এবং মজবুত। এর সাথে ইবনে কাসীর(রঃ) এবং ইবনে জারীর তাবারী(রঃ) সহ সাহাবীগনও(রাযি.
) একমত পোষন করেন। যদিও মোডারেটরা এটা মানতে চায় না।
মোডারেট ভন্ডরা যেহেতু বিজ্ঞানকে বাচানোর জন্য বলে যে এই ভঙ্গুর আসমান আমাদের দৃষ্টিসীমার বাহিরে এবং বিজ্ঞানীরাও এখনো আবিষ্কার করেনি, তাদের সেক্ষেত্রে জবাব কি হবে (?)যখন আল্লাহ বলছেন,তিনি আসমানকে স্থির রাখেন পৃথিবীর উপর যেন তার আদেশব্যতিত পতিত না হয়! অর্থাৎ আকাশ যেন শুধু জমিন বা বিস্তৃত শয্যাক্ষেত্রের উপরেই ছাদের ন্যায় রয়েছে।অর্থাৎ সম্পূর্ন পৃথিবীকেন্দ্রিক(জিওসেন্ট্রিক)
।
আল্লাহ বলেনঃ
"..তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান" (সূরা হাজ্জ্ব ৬৫)মানুষের প্রতি করুনাশীল সৃষ্টিকর্তা দুনিয়ার ছাদকে স্থির অবস্থায় রাখেন যেন তা পৃথিবীর উপরে ভেঙ্গে না পড়ে, একবার এটা হেলিওসেন্ট্রিক মেইনস্ট্রিম কস্মোলজির সাথে মিলিয়ে ভাবার চেষ্টা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সম্পূর্ন ভিন্ন আসমানের কথা বলেছেন, যা কাফিরদের গড়া মেইনস্ট্রিম কস্মোলজির বিপরীত । মেইনস্ট্রিম পার্স্পেক্টিভ থেকে এটা কিভাবে চিন্তা করা যায়? ধরুন কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের সুবিশাল আকাশকে বালির কনার সদৃশ পৃথিবীর উপর ভেঙ্গে পড়ে!! এরূপ বর্ননা একদমই মেইনস্ট্রিম এস্ট্রোনমির ক্ষেত্রে নিতান্তই হাস্যকর। নিশ্চয়ই এটা অকাট্য দলিল যে আকাশ সলীড/নিরেট জমিনের উপর ছাদবিশেষ। আল্লাহ বলেন, তিনি আসমানকে জমিনের উপর স্থির রাখেন। যদি এরূপ চিন্তা করেন যে আল্লাহ আমাদের আশপাশের ফাকা-শূন্যস্থান এবং ভ্যাকুয়াম আউটার স্পেসকে স্থির রাখেন যেন তা মানুষের উপর পতিত না হয়, তবে সেটা মেইনস্ট্রিম শয়তানি কস্মোলজিক্যাল থিওরির সাথেই সাংঘর্ষিক এবং অযৌক্তিক!
ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
মেইনস্টিম মিথ্যা এস্ট্রোনোমিকাল আইডিয়ার সাথে কুরআনের নিচের আয়াতটি কিভাবে কম্বাইন করে প্রচার করবেন?
তারা যদি আকাশের কোন খন্ডকে পতিত হতে দেখে, তবে বলে এটা তো পুঞ্জীভুত মেঘ।(সূরা আত ত্বূর ৪৪)মোডারেটরা ও মর্ডানিস্টরা যেহেতু কুফফারদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মেইনস্ট্রিম মহাকাশ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী,এবং যেহেতু তারা কুফফারদের বলা আকাশ ও কুরআনে বর্নিত আকাশের মধ্যে সমন্বয় করে দাবি করে যে, সলিড আসমান হয়ত আছে তবে তা ধরা ছোয়া ও দৃষ্টিসীমার বাইরে, সেহেতু উপরের আয়াতের উপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করলে, কিভাবে তূলনামূলকভাবে বালির কণার চেয়েও ক্ষুদ্র এবং মহাশূন্যে ভেসে বেরানো দুনিয়ার উপরে মিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের সুবিশাল আকাশের খণ্ডাংশ ভেঙ্গে পড়ে অথচ কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই কাফেররা ইহা দেখে বলে পুঞ্জিভূত মেঘ!/? ইমাম ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
সুতরাং সত্য হচ্ছে ভঙ্গুর আসমান, যা জমিনের উপরে দৃষ্টিসীমার মাঝেই স্তম্ভ ছাড়াই আল্লাহর আদেশে বিদ্যমান, যাকে আমরা মেঘমুক্ত আকাশে নীলবর্নের দেখতে পাই। আর এটা যে আমাদের
দৃষ্টিসীমার ভেতরেই,সেটা আল্লাহই স্বয়ং বলেছেনঃ
"তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি?"[সূরা মুলকঃ৩]
আয়াতের ব্যখ্যায় ইবনে কাসির (রহঃ) বলেনঃ
আল্লাহ বলেনঃ
আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ....(১৩:২)আল্লাহ বলেন:
"তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্রও নেই"[সূরা ক্কাফ ৬]ইবনে কাসির(রহঃ) বলেনঃ
তাছাড়া, Tanwir Al Miqbas এ আল আকসা থেকে প্রথম আসমানের দূরত্ব উল্লেখ আছে মাত্র ১২ মাইল(যমীনের সবচেয়ে নিকতম), এতে প্রমান হয় আসমান আমাদের দৃষ্টিসীমার মাঝেই রয়েছে। আমরা সেই ত্রুটিহীন নীল আসমানি মজবুত ছাদকেই খালি চোখে দেখি।
আকাশের কোন অংশ ভেঙ্গে পড়ার আয়াত জিওসেন্ট্রিক বিশ্ব ব্যবস্থাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে
প্রমান করে।
আকাশের physical solidn
ess এর প্রমান মেলে কিয়ামত সংক্রান্ত আয়াতেঃ
আল্লাহ বলেনঃ
يَوْمَ تَمُورُ السَّمَاء مَوْرًا
সেদিন আকাশ প্রকম্পিত হবে প্রবলভাবে।(সূরা ত্বূর ৯)ভূমিকম্পের ন্যায় আকাশের প্রকম্পন নিরেট আকাশের অস্তিত্বের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।
আল্লাহ বলেনঃ
وَإِذَا السَّمَاء فُرِجَتْ
যখন আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে(সূরা মুরসালাতঃ৯)আল্লাহ এখনকার নিশ্ছিদ্র ও ত্রুটিহীন আবদ্ধ আকাশকে কিয়ামতের সময়ে বিপরীতরূপ করবেন। যারা আজ কাফিরদের বৈপরীত্যপূর্ন আকিদাকে সত্য বলে অর্থাৎ যারা আকাশের নিরেট অস্তিত্ব অস্বীকার করে, তারা সে সময় উপস্থিত থাকলে সত্যিই বিস্মিত হবে।
জানি না, সে অবস্থায় তারা কোন লজিক দিত!
আল্লাহ বলেনঃ
"এবং আকাশ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে শক্তিহীন হয়ে পড়বে।"[সুরা হাককাহ্, আয়াত ১৬]"যেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে সেদিন ওটা লাল চামড়ার মত রক্তবর্ণ ধারণ করবে;"[সুরা রহমান, আয়াত ৩৭]
"সেদিন আকাশ হবে গলিত রুপার মত,"[সুরা মাআরিজ, আয়াত ০৮]
'সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে'(২১ঃ১০৪)আকাশ নিরেট ম্যাটেরিয়াল সলিড ছাদ বিশেষ যা অবশেষে কাগজের ন্যায় গুটিয়ে নেওয়া হবে। এটা অত্যন্ত স্পষ্ট প্রমান! অথচ ওরা এরপরেও মিথ্যাকে সত্য প্রমান করতে বিতর্ক করতে থাকবে।
এক হাদিসে এসেছেঃ
حدثنا مسدد، سمع يحيى بن سعيد، عن سفيان، حدثني منصور، وسليمان، عن إبراهيم، عن عبيدة، عن عبد الله، أن يهوديا، جاء إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال يا محمد إن الله يمسك السموات على إصبع والأرضين على إصبع، والجبال على إصبع، والشجر على إصبع، والخلائق على إصبع، ثم يقول أنا الملك. فضحك رسول الله صلى الله عليه وسلم حتى بدت نواجذه ثم قرأ {وما قدروا الله حق قدره}. قال يحيى بن سعيد وزاد فيه فضيل بن عياض عن منصور عن إبراهيم عن عبيدة عن عبد الله فضحك رسول الله صلى الله عليه وسلم تعجبا وتصديقا له.
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:যে, এক ইয়াহূদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মদ! আল্লাহ্ ক্বিয়ামাতের দিনে আসমানগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, যমীনগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, পর্বতগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, গাছগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং বাকী সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলের ওপর তুলে বলবেন, বাদশাহ্ একমাত্র আমিই। এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন। এমনকি তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশিত হল। তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ তারা আল্লাহ্ তা’আলার যথোচিত মর্যাদা উপলব্ধি দেয়নি।ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ বলেন, এ বর্ণনায় একটু যোগ করেছেন ফুদায়ল ইব্নু আয়ায... আবিদাহ (রহঃ) সূত্রে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে যে, এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিস্মিত হয়ে তার সমর্থনে হেসে দিলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯০৯)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৪১৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আল্লাহ এখানে কাগজের সাথে তুলনা করে গুটিয়ে নেওয়ার বিষয়টি দ্বারা সুস্পষ্ট করলেন এর ফিজিক্যাল সলিড এক্সিস্টেন্সের ব্যপারটি। তাহলে কি 'সজ্ঞানে' কাব্বালার অনুসরণকারী আজকের মুসলিমরা বলতে চায় ওদের বিশ্বস্ত কাফিরদের বলা অস্তিত্বহীন সীমাহীন 'শূন্যের শূন্য মহাশূন্য'কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কাগজের ন্যায় ভাঁজ করবেন!(?) নাকি বায়ুরস্তরকে ভাঁজ করবেন!? কত বড় উদ্ভট বিকৃত ধারনা! মনে রাখবেন ওরা তারা, যারা বিগব্যাং এর মত কুফরি(কাব্বালিস্টিক- tzim tzum) কস্মোজেনেসিসকেও ইসলামাইজড করে! ওরা এবার বলতে শুরু করবে যে আল্লাহর এসকল বর্ননা গুলো রূপক! অর্থাৎ আর যাই হোক কাব্বালিস্টিক এস্ট্রোলজিক্যাল কস্মোলজিকে ছাড়বে না। আমরা যতদিন আকাশকে গম্বুজাকৃতির ছাদ বলেছি, ততদিন ওদেরকে চরম বিরুদ্ধাচারন করতে দেখেছেন। ওদের লেখক গুরুজনেরাও রহমানের আয়াত ব্যবহার করে এতদিন কাফেরদের সাথে তাল মিলিয়ে ইনফিনিট এম্পটি স্পেসকে প্রমানের চেষ্টা করেছে, ওরা বলেছে উহা এটমোস্ফিয়ার, সলিড ফিজিক্যাল আসমান বা ছাদ কখনোই নয়।
প্রমানস্বরূপ এই লিংকে গিয়ে দেখুন, নাস্তিক মুর্তাদরা যখন কাফেরদের নৌকায়(allegory) ওঠা মুসলিমদের প্রশ্ন করে, 'তোমরা এই নৌকায় কেন?' এর উত্তরে কত সুন্দরভাবে কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি অবলম্বনের যুক্তি দেয় দেখুনঃ
http://islamicnewblogaddress.blogspot.com/2016/12/meaning-sky-as-tentdome-in-quran.htmlকিন্তু এখন সুর হালকা পালটেছে, কারন কাফেরদের সুরে চলতে হবে যে...!
পশ্চিমা কাফিরদের মধ্যে জিওসেন্ট্রিক মডেলে বিশ্বাসীদের মধ্যে এই কথা প্রচলিত আছে যে, অপারেশন হাই জাম্পের পরে, বিশ্বের অর্থ-রাজনৈতিক ও মতাদর্শ নিয়ন্ত্রণকারী কাফিররা যখন নিশ্চিত হয়েছে যে উপরে মজবুত ছাদ বিদ্যমান, তখন ওরা আকাশে নিউক্স ফাটিয়ে আকাশ ভাঙার চেষ্টাও চালায়। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও সত্য। এই অপারেশনের কোড নেমঃ Operation Fishbowl। এতে ওরা ব্যর্থ হয়। কিন্তু কল্পনা এবং কম্পিউটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ এই ভুয়া কস্মোলজির প্রোপাগান্ডা অব্যাহত রেখেছে কস্মোলজিক্যাল মিস্টিসিজমে ডুবিয়ে রাখার জন্য। চন্দ্র অভিযান সহ অনেক নাটক জনগনকে হজম করানো হয়েছে। ওরা এখন না স্বীকার করে পারছে না উপরের আচ্ছাদনের বাধাকে। একে নাম দিয়েছে ভ্যান এ্যালেন বেল্ট।
কি আর করা বলুন! কাব্বালিস্টিক কস্মোলজিতে বিশ্বাসী নবধারার মুসলিমগনের অদেখা জগতের ব্যপারে কাফিরদের উপর অগাধ বিশ্বাস আর আস্থা থেকে তো বেরোনো যাবে না। কাফের মুশরিকরা যা বলে সেগুলোকে যেকোনভাবেই ইসলামীকরন করতেই হবে। তাই না?! করেছেনও। একাজে নিয়োজিত নতুন ধারার মুসলিম ভাইবোনদের গুরুরা একাজে পিছিয়ে থাকেন না। গিয়ে দেখে আসুন, এতদিন এদেরকে দেখেছেন যে ২:২২ নং এর বর্ননায় আসা গম্বুজাকৃতি ছাদকে স্বীকারই করতে চাইত না। এমনকি সাহাবীদের(রাঃ) ব্যাখ্যার রেফারেন্স দিলেও অস্বীকার করত, অথচ আজ কাফেরদের ভ্যান এল্যেন বেল্টের বর্ননাকে সংগতিপূর্ণ করতে ডোম কন্সেপ্টকে এডমিট করে। কিন্তু 'খিচুড়ি কন্সেপ্ট' রেখেই। পড়ুনঃ
https://www.islamweb.net/en/article/193468/the-well-guarded-sky-a-miracle-of-the-quranএখন বলতেছে,ভ্যান এলেন বেল্টই গম্বুজাকৃতির ছাদ যা স্পেসের বিভিন্ন বস্তু প্রবেশে বাধা দেয়! আচ্ছা, স্ফেরিক্যাল পৃথিবীর চারপাশে তাহলে কয়টা গম্বুজাকৃতি ছাদ আছে যা স্ফেরিক্যাল শেপকে বেষ্টন করে?! এ প্রশ্ন এ জন্যই আসছে কেননা, গোলাকার বলকে একটি মাত্র গম্বুজাকৃতির বেষ্টনী দ্বারা চারদিক দিয়ে বেষ্টন করা সম্ভব না।
এরকমই প্যারাডক্সিক্যাল প্রশ্ন তৈরি হবে এবং হতে থাকবে যতক্ষন, অর্ধেক কাফিরদের বিদ্যা এবং অর্ধেক আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি শিক্ষার মাঝে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা চলবে।
এই আর্টিকেলেই সুরক্ষিত ছাদের নানান মনগড়া সুডোসাইন্স চাটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। এমনকি পবিত্র কুরআনের অলৌকিকতা সত্যায়নে Dr Hugh Ross এর মত কাফেরের কথার রেফারেন্স আনতেও ভুল করেনি। খানিকটা কপি করে দিলাম:
"
In fact, the Earth has the highest density of any of the planets in our Solar System. This large nickel-iron core is responsible for our large magnetic field. This magnetic field produces the Van-Allen radiation shield, which protects the Earth from radiation bombardment. If this shield were not present, life would not be possible on Earth. The only other rocky planet to have any magnetic field is Mercury—but its field strength is 100 times less than the Earth's. Even Venus, our sister planet, has no magnetic field. The Van-Allen radiation shield is a design unique to the Earth. (The Incredible Design of the Earth and our Solar System)"২২:৬৫ এরও মনগড়া অদ্ভুত ব্যাখ্যাও দিলো যার সাথে আয়াতের কোন সম্পর্কই নেই। আয়াতে আছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আকাশের পতন রোধ করেন আর ওরা বানিয়েছে উল্কা/ অন্যান্য পদার্থ পতন থেকে আল্লাহ দুনিয়াকে বাচায়!!! এদের অপব্যাখ্যা এতই নিন্মমানে পৌছেছে যে মানুষকে গাধা, আর গাধাকে মানুষ সাব্যস্ত করবার মতন অবস্থা তৈরি হয়েছে। আউজুবিল্লাহ!
প্রদত্ত প্রথম লিংকে দেখেছেন কিভাবে প্রগতিশীল মর্ডান ঘরানার মুসলিমগন গম্বুজাকৃতির আসমানকে অস্বীকার করেছে। এরপরে দেখেছেন কাফেরদের কথাকে ইসলামাইজড করতে গিয়ে কিরূপে ডোম ফার্মামেন্টেরই করাপ্টেড ব্যাখ্যা দিয়েছে ওই এটমোস্ফিয়রিক লেয়ারের এক্সপ্ল্যানেশনকে কেন্দ্র করেই। এবার দেখুন অভিশপ্ত শিয়াদের বিভ্রান্তি। । স্বয়ং এক কাফের ওদের ওয়েবে প্রশ্ন করে কোণঠাসা করে দিচ্ছে। একজন তো এম্পটি স্পেসকে কুরআন এর সাথে কম্প্যাটিবল করতে এক অভিনব যুক্তি দিল। বলল, সারা স্পেসই তো এটমিক উপাদান দ্বারা ভরা। সেসব তো সাবএটমিক লেভেলে ফিজিক্যাল এন্টিটিই, সে হিসেবে ভ্যাকুয়াম এম্পটি স্পেস বা আকাশ হচ্ছে সলিড ছাদ। মোটকথা বায়ুমন্ডলের স্তরই হচ্ছে আসমানগুলোর ৭ স্তর। পড়ুনঃ
https://www.shiachat.com/forum/topic/234968269-quran-thinks-the-sky-a-phyical-object/ইসলামিকবোর্ড[১৭] ওয়েবসাইটে প্রশ্ন করা হয় আসমান গম্বুজসদৃশ এবং নিকটবর্তী কিনা। উত্তরে হলিউডের সায়েন্স ফিকশন ফিল্ম, ওয়ার্মহোল, পোর্টাল, স্পেস টাইম কন্টিনিউয়াম ইত্যাদি নানা কুফফারদের তত্ত্ব আনা হয় কুরআন সুন্নাহর দলিলের ব্যাখ্যায়! আর গম্বুজাকৃতির আসমান কিনা সেটাকে অবজারভারের পার্স্পেক্টিভ হিসেবে বলা হয়।
এভাবেই নসের বিপরীতে কাফিরদের তত্ত্বের সাথে কম্প্যাটিবল চিন্তাকে গ্রহন করা হয়।
অর্থাৎ যেভাবেই হোক কাফেরদের প্রদর্শিত রাস্তায় চলতে হবে, এটাই তাদের কাছে sacred knowledge! কাফেরদের ট্রোল পরিবর্তিত হলে ওরাও সাথে সাথে এডাপ্ট করে নেয়,আর বলে 'বিজ্ঞানময় কুরআন'! লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ! ওদের একটা যুক্তি হচ্ছে বিজ্ঞান বিকশিত হচ্ছে, আর এটা যত দিনই যাবে কুরআনকেই সত্যায়ন করবে! কুরআনের দুর্বোধ্য ব্যখ্যাতীত বিষয়গুলোকেও ভবিষ্যতে ব্যাখ্যা করবে! এরা এ কথাও বলে, সাহাবীদের আসমান জমিন সংক্রান্ত বিশ্বাস প্রাচীন জিওসেন্ট্রিক, কেননা তাদের কাছে উন্নত প্রযুক্তি ছিল না, স্যাটেলাইট আবিষ্কৃত হয়নি,নবী(স) ছিলেন নিরক্ষর, এজন্য আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে দেখা মহাকাশ বিজ্ঞানের ব্যপারে তারা জ্ঞানহীন ছিল!! নাউজুবিল্লাহ!! আমরা নির্বোধদের কে বলি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কি আল্লাহর রাসূল(সাঃ) সপ্ত আসমান ছাড়িয়ে মিরাজে আল্লাহর কাছে নেন নি! তিনি কি তাকে অদেখা জগতের ব্যপারে কিছুই দেখান নি! তিনি কি সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে ভুল এবং মিথ্যা শিক্ষা দিয়েছিলেন রাসূল(সা) কে?! এবং আজ যা কাফিররা বলছে তা সত্য!!? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা নিজেই তো আসমান ভেঙ্গে পড়ার কথা কুরআন মাজীদেই ইরশাদ করেছেন। অন্তরে ব্যাধিগ্রস্ত এসকল মুসলিম কি বলবে; আল্লাহও ভুল করেছেন!? নাউজুবিল্লাহ।
আমরা হালকা
প্রদর্শন করেছি প্রতিষ্ঠিত সাইন্সের কোর টিচিং। আপনার কি মনে হয়, কিছু কুফরি দর্শন(Natural philosophy) ও আকিদা কুরআন এর পবিত্র আয়াতগুলোকে সত্যায়ন করবে!? এরূপ চিন্তাশীলরা কতটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি মূর্খ!! যেখানে কাফেররা চায় এমন কিছু, যা শুধু কুরআনই নয়, আগের কিতাবগুলোকেও অসত্য প্রমান করবে, সেখানে কি করে ওই আশা করতে পারে!! মা'আযাল্লাহ!!
আমরা এতক্ষন আসমান নামের সলিড ছাদের অস্তিত্বের ব্যপারে উল্লেখ করেছি। আমরা এও বলেছি যে, আসমান যমীনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ। এ কথার দলিল খুঁজতে, আমরা অবশ্যই সাহাবীদের(রাযি.
) দ্বারস্থ হব। তারা ছিলেন হক্কের মাপকাঠি। আল্লাহ বলেনঃ
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الأَرْضَ فِرَاشاً وَالسَّمَاء بِنَاء
অর্থাৎ, "
যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন"(২:২২)
সাহাবীগনের আসমানের ব্যপারে আকিদা বা বিশ্বাস হচ্ছে, আসমান যমীনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ।
"হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ), হযরত ইবনে মাসউদ(রাঃ) ও কয়েকজন সাহাবী থেকে বর্নিত আছে যে, তারা وَالسَّمَاء بِنَاء এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন, যমীনের উপর আকাশের ছাদ হচ্ছে গম্বুজের আকৃতি সাদৃশ্য। আর তা হচ্ছে যমীনের ছাদ বিশেষ।
কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্নিত আছে যে তিনি আল্লাহর বানী وَالسَّمَاء بِنَاء এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, অর্থাৎ আকাশকে তোমার জন্য ছাদ করেছেন।"
...................[তাফসীর ইবনে জারীর তাবারী ২:২২ দ্রষ্টব্য]
English:
حَدَّثَنِي مُوسَى بْن هَارُونَ , قَالَ : حَدَّثَنَا عَمْرو بْن حَمَّاد , قَالَ : حَدَّثَنَا أَسْبَاط , عَنْ السُّدِّيّ فِي خَبَر ذَكَرَهُ , عَنْ أَبِي مَالِك , وَعَنْ أَبِي صَالِح , عَنْ ابْن عَبَّاس , وَعَنْ مُرَّة , عَنْ ابْن مَسْعُود وَعَنْ نَاس مِنْ أَصْحَاب النَّبِيّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : { وَالسَّمَاء بِنَاء } , فَبِنَاء السَّمَاء عَلَى الْأَرْض كَهَيْئَةِ الْقُبَّة , وَهِيَ سَقْف عَلَى الْأَرْض .وَحَدَّثَنَا بِشْر بْن مُعَاذ , قَالَ : حَدَّثَنَا يَزِيد , عَنْ سَعِيد , عَنْ قَتَادَةَ فِي قَوْل اللَّه { وَالسَّمَاء بِنَاء } قَالَ : جَعَلَ السَّمَاء سَقْفًا لَك .Musa ibn Harun narrated and said that Amru ibn Hammad narrated and said that Asbath narrated from al-Suddi in the report mentioned, from Abu Malik, and from Abu Salih, from ibn 'Abbas and from Murrah, from ibn Masud and from people of the companions of the prophet (peace and blessings be upon him):
"...and the sky a canopy..." The canopy of the sky over the earth is in the form of a dome, and it is a roof over the earth. And Bishr bin Mu'az narrated and said from Yazid from Sa'id from Qatada in the words of Allah "...and the sky a canopy..." He says he makes the sky your roof.অর্থাৎ আমরা যে এই আসমানকে গম্বুজ সদৃশ বলছি, এটা আমাদের মনগড়া কিছু নয়, বরং সরাসরি সাহাবীদের(রাঃ) আকিদা(বিশ্বাস)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ
ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟَّﺬِﻯ ﺟَﻌَﻞَ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟْﺄَﺭْﺽَ ﻗَﺮَﺍﺭًﺍ ﻭَﭐﻟﺴَّﻤَﺎٓﺀَ ﺑِﻨَﺎٓﺀً ﻭَﺻَﻮَّﺭَﻛُﻢْ ﻓَﺄَﺣْﺴَﻦَ ﺻُﻮَﺭَﻛُﻢْ ﻭَﺭَﺯَﻗَﻜُﻢ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻄَّﻴِّﺒَٰﺖِۚ ﺫَٰﻟِﻜُﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺭَﺑُّﻜُﻢْۖ ﻓَﺘَﺒَﺎﺭَﻙَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺭَﺏُّ ﭐﻟْﻌَٰﻠَﻤِﻴﻦَ
It is Allah who has created the earth as a place for you to live and the sky as a dome above you. He has shaped you in the best form and provided you with pure sustenance . This is Allah, your Lord. Blessed is Allah, the Lord of the worlds.[40:64]
|
Tafsir Ibn kather 40:64
|
আল্লাহ বলেনঃ
"আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত।(রাদঃ২)স্তম্ভকে সাধারণত সলিড কিছুকে ধারন করতে ব্যবহার করা হয়, স্তম্ভের প্রশ্ন তখনই আসে যখন কোন মজবুত প্রকাণ্ড স্ট্রাকচারকে উপরে ধরে রাখার প্রয়োজন পরে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার গম্বুজাকৃতির আকাশকে স্তম্ভের সাহায্য ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন। মোডারেটদের এক যুক্তিওয়ালা 'মহাজ্ঞানী' বলেন,সমতল যমীনের উপর গম্বুজাকৃতির আসমান এ আয়াতে এসে সাংঘর্ষিক হয়! তার বক্তব্য, গম্বুজের সার্কুলার প্রান্তসীমা তো যমীনকে স্পর্শ করে,তাহলে স্তম্ভ বিনা কি করে হয়!! এজন্য তিনি সাহাবীদের ব্যাখ্যাটি বর্জন করেন। উপরন্তু হাদিসটির বর্ননার বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! তার উস্তাদ ন্যাক সাহেব বলেন, ইবনে জারীর(র) কোন মুফাসসির নন বরং উনি ইতিহাসবিদ! তিনি নাকি তার তাফসীরে(তাবারী)
সকল আয়াতের সম্পর্কে ভুল শুদ্ধ -সত্য মিথ্যা 'ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ' সব রকমের বক্তব্য এনেছেন!!![১১]
অথচ তাফসীর তাবারির বিশুদ্ধতা, নির্ভরযোগ্য সনদ,সন্দেহজনক- দুর্বল সোর্স বর্জন,সরাসরি সাহাবি,তাবেইন, তাবে তাবেঈনদের থেকে বর্ননা ও ব্যাখ্যা গ্রহন এবং বিদাতহীন তাফসীরের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া(র),ইবনে
খুজাইমা, ইমাম আত তাহাবী(র), ইবনে হাজার আল আস্কালানী(র),আল
্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী(র)সহ প্রমুখ উলামা, মুহাদ্দিসিন ও মুফাসসিরীন।
বিস্তারিত দেখুনঃ
https://islamqa.info/en/43778এ বিষয়টা মোডারেট/মর্ডানিস্টদের মুখোশ খুলে দেয়।
মোডারেটরা ইমাম ইবনু জারীর তাবারী(রঃ) এর জন্য একটু বিব্রত হয় কারন তিনি সরাসরি সাহাবীদের থেকে নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ হাদিসগুলো এনেছেন যা ভন্ডদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে যায় এবং উহা কুফফারদের কথার বিপরীতে থাকে। এজন্যই তাদের কাছে তিনি এলার্জিক।
গম্বুজাকৃতির আসমানের বিশ্বাসের বিষয়টি শুধু সাহাবীদেরই নয়। অতীতের জমহূর আলিম, মুফাসসীরগনও এটাই বিশ্বাস করতেন। তারা একেই কুরআন সুন্নাহর সাথে সঙ্গতিপূর্ন বলে উল্লেখ করেছেন। যারা বলতে চায়, গম্বুজাকৃতির আসমান স্তম্ভবিহীন আসমানের আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক(!) এরা বস্তুত, সাহাবী(রাঃ), মুফাসসীরীন ও গ্রীক দর্শন আরবে প্রবেশ পূর্ব জমহূর উলামাদের চেয়েও বেশি বোঝেন! আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।
"
আইয়াস ইবনু মুআ'বিয়া (রঃ) বলেন, আসমান যমীনের উপর গম্বুজের ন্যায় রয়েছে। অর্থাৎ তাতে কোন স্তম্ভ নেই। এই উক্তিটিই কুরআন কারীমের বাক্যরীতিরও যোগ্যও বটে এবং.... وَيُمْسِكُ السَّمَاء أَن تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ(২২:৬৫) এই আয়াত দ্বারাও এটাই প্রতীয়মান হয়।সুতরাংتَرَوْنَهَ এই কথা দ্বারা আকাশে স্তম্ভ না থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আসমান বিনা স্তম্ভে এই পরিমান উচুতে রয়েছে এবং তোমরা তা সচক্ষে অবলোকন করছ। এটা মহামহিমান্বিত আল্লাহর ব্যাপক ক্ষমতার একটি নিদর্শন। " [তাফসীর ইবনে কাসিরঃপারা ১৩। পৃঃ ২৫৬]অতএব, স্পষ্টত দেখছেন সাহাবীদের(রাঃ) থেকে আসা আয়াতের ব্যাখ্যা তথা হাদিস এবং পরবর্তী প্রাচীন আলেম উলামাগনের স্বীকৃতি। যার জন্য ইবনে কাসীরও(র) উল্লেখ করেন
"...আসমান যমীনের উপর গম্বুজের ন্যায় রয়েছে। অর্থাৎ তাতে কোন স্তম্ভ নেই। এই উক্তিটিই কুরআন কারীমের বাক্যরীতিরও যোগ্যও বটে "। অর্থাৎ ইবনে কাসির(রহঃ) গম্বুজাকৃতির আসমানের বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। সুতরাং দেখছেন মোডারেটরা কুরআনের আয়াতের ব্যাখ্যা যেন সাহাবী ও মুফাসসীরোনের চেয়েও বেশি বোঝে! মা'আযাল্লাহ! গম্বুজাকৃতির আসমান জমিনের প্রান্তসীমায় কিরূপ অবস্থায় আছে সেসম্পর্কে আমরা বেখবর, আর যেটা বিস্তারিত বলা হয়নি সেসম্পর্কে জানতেও খুব বেশি আগ্রহবোধ করিনা। আমরা শুনেছি এবং বিশ্বাস করেছি। ৪র্থ পর্বের শেষদিকে ক্কাফ পর্বত ও আসমানের ব্যপারে কিছু আলোচনা গত হয়েছে।
আসমান দুর্ভেদ্য সুরক্ষিত ছাদ, যার দরজা বন্ধঃএই মজবুত আসমানি গম্বুজাকৃতির ছাদটি সুরক্ষিত বেষ্টনী। কোন কিছুই আল্লাহর অনুমতিতে ফেরেশতাদের দুয়ার খোলা ছাড়া উপরে যেতে পারে না। এটা আমরা মিরাজের হাদিসগুলোয় ভালভাবেই দেখি।প্রত্যেক আসমানে প্রহরী ফেরেশতারা আল্লাহর অনুমতি নিয়ে আসমানের দুয়ার গুলো খোলে। আল্লাহ বলেনঃ
ﻭَﺟَﻌَﻠْﻦَﺍ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀ ﺳَﻘْﻔًﺎ ﻣَّﺤْﻔُﻮﻇًﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﻋَﻦْ ﺁﻳَﺎﺗِﻬَﺎ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ
"আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে" (আম্বিয়াঃ৩২)
21:32 (Y. Ali) And We have made the heavens as a canopy well guarded: yet do they turn away from the Signs which these things (point to)!শয়তান জ্বীনরাও এটা ভেদ করতে অক্ষম। তারা উপরে গিয়ে আসমানি বার্তা গ্রহন করতে গেলেও মহা সংকটে পড়ে। আল্লাহ ওদের সম্পর্কে বলেনঃ
ﻭَﺃَﻧَّﺎ ﻟَﻤَﺴْﻨَﺎ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀ ﻓَﻮَﺟَﺪْﻧَﺎﻫَﺎ ﻣُﻠِﺌَﺖْ ﺣَﺮَﺳًﺎ ﺷَﺪِﻳﺪًﺍ ﻭَﺷُﻬُﺒًﺎ
ﻭَﺃَﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﻘْﻌُﺪُ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻣَﻘَﺎﻋِﺪَ ﻟِﻠﺴَّﻤْﻊِ ﻓَﻤَﻦ ﻳَﺴْﺘَﻤِﻊِ ﺍﻟْﺂﻥَ ﻳَﺠِﺪْ ﻟَﻪُ ﺷِﻬَﺎﺑًﺎ ﺭَّﺻَﺪًﺍ
আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে(সূরা জ্বীনঃ৮-৯)আল্লাহ বলেনঃ
وَحَفِظْنَاهَا مِن كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি(হিজরঃ১৭)আসমানে দরজা বা পথের অস্তিত্বের দলিলঃ
وَالسَّمَاء ذَاتِ الْحُبُكِ
পথবিশিষ্ট আকাশের কসম[আয যারিয়াতঃ০৭]আসমানের দরজা উন্মুক্ত করা হবে হাশরের ময়দানে, যখন মালাইকাগন সারিবদ্ধ ভাবে যমীনে অবতরণ করবেন। আল্লাহ বলেনঃ
وَفُتِحَتِ السَّمَاء فَكَانَتْ أَبْوَابًا
আকাশ উন্মুক্ত করা হবে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে(সূরা নাবা ১৯)আকাশ উন্মুক্ত করা হবে, অর্থাৎ এখন তা বন্ধ। কিয়ামতের দিন বহু দরজাবিশিষ্ট হওয়া আসমানের নিরেটভাবকে সত্যায়ন করে।
আল্লাহ বলেন:
وَيَوْمَ تَشَقَّقُ السَّمَاء بِالْغَمَامِ وَنُزِّلَ الْمَلَائِكَةُ تَنزِيلًا
সেদিন আকাশ মেঘমালাসহ বিদীর্ণ হবে এবং সেদিন ফেরেশতাদের নামিয়ে দেয়া হবে,(ফুরকানঃ২৫)এর দ্বারা প্রমান হয় যে, আসমানের দুয়ার বন্ধ। কিয়ামতের দিন আসমানকে বিদীর্ণ করে বহু দরজার সৃষ্টি করা হবে, যার মাধ্যমে ফেরেশতাগন অবতরণ করবেন যমীনে। ইমাম ইবনে কাসির বলেনঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কাফিরদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি যদি আসমানের দুয়ারগুলো খুলেও দেন যাতে তারা আরোহন করতে পারে, এরপরেও ওরা কুফরি করবে। আল্লাহ বলেনঃ
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاء فَظَلُّواْ فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণ ও করতে থাকে [হিজরঃ১৪]সুতরাং আসমানের দুয়ার সমূহ বন্ধ।
আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُواْ عَنْهَا لاَ تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاء وَلاَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخِيَاطِ وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُجْرِمِينَ
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে, তাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি(আরাফঃ৪০)এবার আসুন দেখা যাক হাদিসে কি এসেছে...
হযরত ইবনু আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে একটি লোক জিজ্ঞেস যে, "হে আল্লাহর রাসূল(সঃ)! এই আকাশ কি?" তিনি উত্তরে বলেন,"এটা হচ্ছে ঢেউ, যা তোমাদের হতে বন্ধ রাখা হয়েছে।"
হাদিসটি মুসানাদে ইবনে আবি হাতিমে বর্নিত হয়েছে।
(তাফসীর ইবনে কাসীর-পারা ১৭-সূরা আম্বিয়া এর তাফসীর দ্রষ্টব্য)সুতরাং স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন, এটা আদৌ আমাদের মনগড়া উক্তি নয়। বরং হাদিসেও এ কথাই আছে।
নূহ (আ) এর সময় মহাপ্লাবন সৃষ্টির সময় আসমানের দরজা খুলে দিয়ে ছিলেন, এতে আসমানি সমুদ্রের পানি দ্বারা যমীনে মহাপ্লাবনের সৃষ্টি হয়েছিল। আল্লাহ বলেনঃ
فَفَتَحْنَا أَبْوَابَ السَّمَاء بِمَاء مُّنْهَمِرٍ
তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারিবর্ষণের মাধ্যমে[৫৪:১১] আসমানের দুয়ার যেখানে বন্ধ, সেখানে কাফিররা রকেটের মাধ্যমে কথিত মহাশূন্যে যাওয়াকে কিভাবে দেখায়?
উত্তর হচ্ছে, হলিউডের বেইজমেন্টে। কম্পিউটারের গ্রাফিক্স ও থিয়েটারে। এগুলো সবই নাটক। আমরা তো জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজির
শেষ পর্বে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছিলাম, এই রকেটের আবিষ্কারকের আকিদা-বিশ্বাস এবং কর্মকাণ্ড গুলোকে। বস্তুত, ওরা কাল্পনিক মহাকাশে যাবার কথা ছড়িয়ে আল্লাহর সৃষ্ট কনফাইন্ডমেন্টকে ভার্চুয়ালি ডিফাই করতে চায়। অর্থাৎ আল্লাহ যে ক্ষমতা দেন নি, সেটা করে দেখাবার দৃষ্টতা। আমরা আজ ওদের কার্যকলাপে বিশ্বাস করি এবং দ্বীনের সাথে সমন্বয়সাধন ঘটাই!
একাধিকবার শীর্ষস্থানীয় স্পেস এজেন্সিঃনাসার কর্মচারীদের মুখ থেকে বের হয়ে গেছে যে তারা এখন পর্যন্ত 'লো আর্থ অরবিট'ই অতিক্রম করতে পারেনি[১২]। লো আর্থ অরবিট কাফেরদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী পৃথিবী উপর ৯৯ মাইল থেকে ১২০০ মাইল রেঞ্জের আওতায়। ওরা যদি দুনিয়া ছেড়েই বের হতে না পারে, তাহলে চন্দ্রবিজয়(ওদের হিসাবে চাঁদ ২৩৮০০০ মাইল দূরে) কি করে হলো! তাও একবার না, ছয় বার!! জি, হলিউড বেজমেন্টে সবকিছুই হয়! ওদের হলিউডের অভিনয়কে সত্য শেখাতে মুসলিমদের মধ্যেও সার্কুলেট করা হয় নেইল আর্মস্ট্রং চাদকে দ্বিখণ্ডিত করার নিদর্শন প্রত্যক্ষ করেন! এও শোনা যায়, তিনি নাকি ইসলামও গ্রহন করেন!!
যখন চন্দ্রগমনকারীদের বসিয়ে সাক্ষাতকার নেওয়া হচ্ছিল, তখন অলড্রিন, আর্মস্ট্রংদের মুখের অবস্থা দেখেছেন?
এদের কাছে একদল খ্রিষ্টান গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে গস্পেল ছুয়ে চাদে যাবার সত্যতাকে শপথ করে বলতে বলে, তখন তো একজন ভোঁ দৌড় দিয়ে পলায়ন করে, আরেকজন ক্যামেরা বন্ধ করতে বলে। আরেকজন ঝগড়া করে কিল ঘুষি শুরু করে দেয়। ভণ্ডামি কাহাকে বলে! এই দৃশ্যগুলো সবই ধারন করা হয়েছে।[১৩]
ওদের বিশেষঅজ্ঞরা বলছেন, তারা ভ্যান এলেন বেল্টে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এই বেল্ট অতিক্রম করতে তারা অরিয়ন নামের মহাকাশযান তৈরি করছে। চন্দ্রাভিযানে নাকি মহাকাশযানে ফয়েল জাতীয় শিল্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। এরা আজকে ২০১৮ তে এসে বলছে, আমাদের হাতে ওই প্রযুক্তি নেই যা দিয়ে চাদে যাওয়া হয়েছিল। আমরা উহা ধ্বংস করে দিয়েছি।[১৪]
আজকে যেমন কস্মিক প্লুরালিজমের ফসল এলিয়েনদের অস্তিত্বে বিশ্বাস আনার জন্য সিনেমা,গল্প,ম্যাগাজিন তৈরি হয়, তেমনি চাদে যাবার নাটক তৈরির সময়েও মানুষের মনে এর সম্ভাবনার বিশ্বাস আনতে মিডিয়াতে অনেক কিছু দেখানো হয়।[১৫]
আজকে 'মঙ্গল নক্ষত্রে' মানুষ যাবার ভুয়া কন্সেপ্টের উপরে হলিউড অনেক ব্যস্ত আছে।অথচ আসমানি তরঙ্গায়িত ছাদ মানুষের জন্য বন্ধ। যদি একদম সোজা আসমান পানে কোন রকেট বা ড্রোন পাঠানো হয়, সেটার ক্ষেত্রে ঐরূপ ফলাফলই হবে যেরূপ সিভিলিয়ান স্পেস এক্স এর রকেটের ক্ষেত্রে হয়েছিল।
অথচ কাফিররা প্রচার করে ওরা চাঁদ মঙ্গল এবং আসমানের সর্বত্র জয় করে নিয়েছে। ওদের রোবট সর্বত্র গমন করে! বস্তুত, ওরা মিথ্যাবাদী বৈ আর কিছু নয়। উপরিউক্ত দলিলসমূহ ওদের সকল শয়তানি কর্মকান্ডের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাস যোগ্যতা শূন্য বিন্দুতে নিয়ে যায়।
আসমানে যেহেতু ওদের কোনই কর্তৃত্ব নেই সেহেতু রহমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
أَمْ لَهُم مُّلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَلْيَرْتَقُوا فِي الْأَسْبَابِ
নাকি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর উপর তাদের সাম্রাজ্য রয়েছে? থাকলে তাদের আকাশে আরোহণ করা উচিত রশি ঝুলিয়ে[ছোয়াদঃ১০]কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে তৈরি অসাধারন গ্র্যাফিক্যাল ডেপিকশান তৈরি করেছিলেন আব্দুল্লাহ নামের এক আলজেরীয় ভাই। লিংকঃ
https://m.youtube.com/channel/UCN_2XY-OXjwhwaYKKrFhdwgএত কিছু জানবার পরেও একদল লোক থাকবেই, যারা রহমানের কালামের সরল অর্থ এবং সমগ্র নসের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে কাফিরদের কল্পনা,শয়তানের কথা ও কম্পিউটারে বানানো ইমেজ/এনিমেশনে বিশ্বাস করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।
বিভ্রান্তি এবং ফিতনা সেখান থেকেই হয় যেখানে নসের তুলনায় আকল আর নফসকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আরবে গ্রীক এস্ট্রোনমি পৌছানোর পরবর্তীতে আলিমদের মধ্যে যারাই জ্যোতির্বিবিদের সাথে ইসলামিক সৃষ্টিব্যবস্থাকে মেলাতে গেছেন তাদেরকে দেখবেন বিনা দলিলে নিজের যুক্তিনির্ভর আকলকে প্রাধান্য দিয়ে নসের বিপরীতার্থক অর্থকে নিয়ে ভিন্ন মতাদর্শের প্রতিষ্ঠা এমনকি ইজমায় রূপায়ন পর্যন্ত করেছেন। ইবনে হাজম, ইবনুল মুনীর প্রমুখ আলিমগন বলেন, আলিমগনের মধ্যে ঐক্যমত্য রয়েছে যে আসমান গোল বলের ন্যায়![১৬] তাদের দলিল হচ্ছেঃ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ।
অর্থাৎ তারা ফালাক্কের কথা উল্লেখ পেয়ে আসমানের বর্তুলাকারের কল্পনা করেছেন। সেটাকেই প্রাধান্য এবং প্রচার করেছেন। তাদের কয়েকজন একই কাজ পৃথিবীর ক্ষেত্রেও করেছেন।
অথচ অন্যদিকে কাতাদা(রঃ),মুজাহিদ(রঃ), মুয়াবিয়্যাহ(রঃ) প্রমুখ জমহূর আলিম উলামাগন আসমানকে বলেছেন যমীনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ। একই কথা পাওয়া যায় একাধিক সাহাবীদের(রাঃ) থেকে। এমতাবস্থায় আমরা নসের দিকে প্রত্যাবর্তনে উৎসাহিত করি।
কাফিররা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। ওরা আল্লাহর ব্যপারে বিচিত্র কুফরি দর্শনকেন্দ্রিক কথা বলে। Monism, Naturalism এর Pantheistic আকিদায় সৃষ্টিকর্তার ব্যপারে কুফরি কথা বলে। ওরা এতেই ক্ষান্ত নয়, ওরা আসমান যমীনের ব্যপারে বিকৃত ধারনা প্রচার করে। ওরা আসমান বলতে মহাশূন্য/ভ্যাকুয়ামকে বোঝায়, অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কেয়ামতের দিন মাথার উপরের আসমানকে কাগজের ন্যায় ভাঁজ করে ডান হাতে রাখবেন। বস্তুত, কাফিররা মহান সৃষ্টিকর্তা এবং তার সৃষ্টির ব্যপারে যে বিকৃত কথা বলে তা থেকে রহমান আল্লাহ ও তার সৃষ্টি পবিত্র। আজকের পথহারা উম্মাহর অধিকাংশই এই সহজ বিষয়টা বোঝেনা, বুঝতেও চায় না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেন,
"তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে"।(সূরা যুমার ৬৭)
ওয়া আল্লাহু আ'লাম
[চলবে ইনশাআল্লাহ …]
টিকাঃ[১]
https://m.youtube.com/watch?v=33fuxFI6rJg[২]
https://m.youtube.com/watch?v=0NRKFrzD1aA[৩]
https://m.youtube.com/watch?v=Q-SlysdKk7Yhttps://m.youtube.com/watch?v=xMp49IYBhO4[৪]
https://m.youtube.com/watch?v=NEVW_9EVjFE[৫]
https://m.youtube.com/watch?v=kmO2IKFiN_Q[৬]
https://m.youtube.com/watch?v=rp7lYL-4PfE[৭]
https://m.youtube.com/watch?v=lF3aTc95PFE[৮]
https://m.youtube.com/watch?v=IAcp3BFBYw4[৯]
https://m.youtube.com/watch?v=s1hD8c--BKo[১০]
https://m.youtube.com/watch?v=S2UU1ozBmm0