Saturday, April 25, 2020

রামাদানে অবসরের সঙ্গী হোক তাওহীদ সিরিজ

একে তো চলছে লকডাউন। কারও কোন কাজ নেই।এ সময়টা দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান অর্জনের একটা ভাল সুযোগ। শাইখ আহমদ মূসা জীব্রীলের(হাফিঃ) ধারাবাহিক অনুবাদিত তাওহীদ সিরিজ শুনে শেষ করা কঠিন কিছু নয়। নিচের লিংকগুলো থেকে সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন। শাইখ আহমদ মূসা জীব্রীলের কথার বিশুদ্ধতা নিয়ে চিন্তা না করলেও হবে। তাকে শাইখ বিন বাজ(রহঃ) ভালবেসে 'শাইখ' বলে ডাকতেন। সঠিক আকিদা ও মানহাজের পথে বেঁচে থাকা সামান্য কিছু আলিমদের মধ্যে তিনি একজন। বর্তমানে আমেরিকায় গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। আল্লাহ তার মুক্তি ত্বরান্বিত করুন। আমিন। 

ডাউনলোড লিংক 







ইল্মড্রাইভ
https://ilmdrive.com/mubashshireen-media/


আর্কাইভ.অর্গ 
https://archive.org/details/Tawheed_azharmea_gmail_eelm

ইউটিউব
https://m.youtube.com/playlist?list=PLn8jnw90Z2bBwGKgQtuJnqmL52Fu4DPLl






সৌজন্যে,
মুবাশশিরীন মিডিয়া

Wednesday, April 22, 2020

মুসলিমের রক্ত আজ সস্তা কেন?

মিডিয়ার অন্তহীন প্রপাগ্যান্ডা আমাদের মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে। আমাদের অজান্তেই। ম্যাস মিডিয়ার মায়াজালে আটকে পড়ে একসময় অবশ হয়ে আসে আমাদের অনুভূতিগুলো। আমরা অবচেতনভাবে ভাবতে শুরু করি মুসলিমদের রক্ত সস্তা। আর অন্যদের রক্ত দামি।

সিরিয়া, বার্মা, কাশ্মীর, ইরাক, আফগানিস্তান, মিসর, আরাকান, ফিলিস্তিন, পূর্ব তুর্কিস্তান—পৃথিবীর নানা প্রান্তে মুসলিমদের নিয়মমাফিক হত্যা করা হয় প্রতিদিন। অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে, ‘ডজনের বেশি নিহত’ কথাটার বিশেষ কোনো অর্থ আর আজ আমাদের কাছে নেই। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমরা অবশ হয়ে গেছি। আমাদের বিবেকের পাল্লায় কয়েক ডজন মুসলিম লাশ তেমন একটা ভারী মনে হয় না। কারণ, আমরা প্রতিদিন দেখি ম্যাস মিডিয়া ভাবলেশহীন মুখে মুসলিম নিধনের খবর দিয়ে যাচ্ছে। দিকে দিকে মুসলিমদের খুন করা হলেও, সবাই এটাকে ধরে নিয়েছে স্বাভাবিক হিসেবে। যেন এতে চিন্তিত হবার কিছু নেই। উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। এটাই রুটিন।

অন্যদিকে একজন কাফির মারা গেলে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে পুরো পৃথিবী। ইস্রাইলি সন্ত্রাসী বাহিনীর সৈনিক গিলাদ শালিত যখন বন্দী হয়েছিল তখন ইস্রাইল কী করেছিল? সেনাবাহিনী আর বিমানবাহিনীর পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল গাযার ওপর। হত্যা করেছিল এক হাজারের বেশি মুসলিমকে। কারাগারে বন্দী মুসলিমদের ওপর চালাচ্ছিল নতুন নতুন সব টর্চার। আর এই টর্চারগুলোর নাম দিয়েছিল, ‘শালিতের জন্য শাস্তি’। শালিতকে নিয়ে বন্দী-বিনিময় চুক্তি হবার আগে ফিলিস্তিনের শত শত মুসলিমদের বন্দী করেছিল ইহুদীরা। এই সবকিছু করা হয়েছিল, শুধু একজন ইহুদী সন্ত্রাসীর জন্য।

ওরা আসলে আমাদের একটা মেসেজ দিচ্ছিল। আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দিচ্ছিল একটা বার্তা—একজন ইহুদী বন্দীর দাম হাজারো মুসলিমের প্রাণের চেয়ে বেশি। তাদের একজন তো পত্রিকায় কলাম লিখে বলেওছিল, ‘অনস্বীকার্য সত্য হলো, আমাদের একজনের দাম ওদের হাজার জনের সমান।’

কোন মূর্খ সেক্যুলারিস্ট কিংবা ‘মুক্তমনা’ যখন ইসলামকে আক্রমণ করে, তখন সে পশ্চিমের চোখের মণি হয়ে যায়। ‘সত্যের মশালধারী’-কে নিয়ে শুরু হয়ে যায় আদিখ্যেতা। তার জন্য চলে আসে ইউরোপের ভিসা। রাতারাতি সে বনে যায় ‘বিজ্ঞানী’ কিংবা মহান চিন্তক। আজ যেকোনো আরব কিংবা বাদামি চামড়ার মুসলিমের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হয়ে ওঠার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইসলামকে আক্রমণ করা। এটা করে ফিরিঙ্গি বাবুর জাতে ওঠা যায় একেবারে শর্টকাটে।

ধরনের মানুষদের নিয়ে পশ্চিমাদের এত মাথাব্যথা কেন? তথাকথিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেন শুধু এদের নিরাপত্তা নিয়েই উদ্বিগ্ন হয়? অ্যামেরিকান সেনারা যখন আফগানিস্তানে আমাদের মুসলিমদের ভাইদের হাতের আঙুল কেটে নেয়, হত্যা করার পর তাঁদের মৃতদেহ জ্বালিয়ে দেয়, তাঁদের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে, তাঁদের শরীরের গোশত নিজেদের কুকুরদের খেতে দেয়, তখন তো টুঁ শব্দটা শোনা যায় না। তখন কেন পশ্চিমারা কথা বলতে ভুলে যায়? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তখন কোথায় থাকে? মানবতার গালভরা বুলি তখন কোথায় হারিয়ে যায়?

বরং এসব ব্যাপারে অ্যামেরিকান সেনাবাহিনীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা ভাবলেশহীন মুখে জবাব দেয়, ‘আমরা বিষয়টা তদন্ত করে দেখছি।‘ প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় অ্যামেরিকার তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ম্যাডেলিন অলব্রাইটকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ যুদ্ধে প্রায় ৫ লক্ষ ইরাকি শিশু প্রাণ হারিয়েছে। এই যে পাঁচ লক্ষ শিশুর জীবন দিতে হলো, যুদ্ধের লাভ-ক্ষতির হিসেবে তা কি উপযুক্ত মনে করেন?
জবাবে সে বলেছিল, ‘আমার মতে এটা বেশ কঠিন একটা সিদ্ধান্ত। তবে আমরা মনে করি যে, বিনিময়ে আমরা যা পাচ্ছি তার তুলনায় এই দাম ঠিকই আছে।’

অর্থাৎ অ্যামেরিকান সাম্রাজ্যের প্রসারের জন্য যদি ৫ লাখ মুসলিম শিশুকে হত্যা করতে হয়, তবে তাই সই। এতে ওদের কোনো সমস্যা নেই। কোনোরকম দ্বিধাদ্বনন্দ্ব ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত ওরা নিতে। এই হলো আমাদের শত্রুর নৈতিকতার অবস্থা। ওরা যুদ্ধ করে এমন নিয়মে। ওরা আমাদের রক্ত নিয়ে তামাশা করে। কারণ, মুসলিমদের রক্ত ওদের কাছে সস্তা। পানির চেয়েও সস্তা।

এ তো গেল ওদের কথা। কিন্তু আমাদের কী অবস্থা? আমাদের কাদেরকে নিয়ে চিন্তা করা উচিত? সিরিয়া, আরাকান, কাশ্মীর কিংবা পূর্ব তুর্কিস্থানে খুন হওয়া মুসলিম শিশু কিংবা ধর্ষিত মুসলিম নারী? নাকি ওইসব পশ্চিমা লোকজন, যাদের নিয়ে চিন্তিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আর মিডিয়া? কোন রক্তের মূল্য আমাদের কাছে বেশি?

আবু গ্বুরাইব আর গুয়ানতানামোর ছবিগুলো দেখিয়ে কাফিররা আসলে আমাদের বলছে -
‘ও মুসলিম, এই যে দেখো আমরা তোমাদের ন্যাংটো করে গলায় শেকল দিয়ে ঘোরাচ্ছি। আমাদের এক নারী সৈনিক শেকল ধরে টানছে। আর তোমরা তার পেছনে কুকুরের মতো হামাগুড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছ। এই হলো আমাদের সামনে তোমাদের অবস্থা। উলঙ্গ, অপমানিত। এই হলো আমাদের ক্ষমতা। তোমরা আমাদের কাছে কুকুরেরও অধম।
এখন কী করবে করো। যা পারো করে দেখাও। পারলে আমাদের ঠেকাও।’

দিনের পর দিন মিডিয়া থেকে আমরা যখন এই মেসেজগুলো পাই তখন এর ছাপ পড়ে আমাদের চিন্তার ওপর। দিনের পর দিন আমরা যখন মুসলিমনিধনকে স্বাভাবিক হিসেবে উপস্থাপিত হতে দেখি আর আগ্রাসনের প্রতিরোধকে সন্ত্রাস হিসেবে, তখন ধীরে ধীরে সেটা আমাদের মাথায় গেঁথে যায়। এ বিষয়গুলো আজ আমাদের এতটাই প্রভাবিত করেছে যে, মিসরে যখন শত শত মুসলিমকে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন আমাদের মধ্যে অনেকে সেটাকে সমর্থন করছিল। এর ফলে জনজীবন নাকি আবার ‘স্বাভাবিক’ হবে।

মিডিয়ার চতুর মেসেজিং আমাদের মনকে প্রভাবিত করে। অবচেতনভাবে আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি যে মুসলিমদের জান সস্তা। মুসলিমদের রক্ত মূল্যহীন। আর কাফিরদের জান-মাল-সম্মান খুব দামি কিছু একটা। আর এভাবে একসময় আমাদের পুরো চিন্তাভাবনা বদলে যায়। হিসেবনিকেশ উল্টো হয়ে যায়। মুসলিমদের রক্ত আমাদের কাছে সস্তা হয়ে যায়, আর কাফিরের রক্ত দামি। মুসলিমদের হত্যা করা হবে, আমাদের মা-বোন-স্ত্রী-কন্যারা ধর্ষিত হবে, আমাদের সন্তানরা পঙ্গু হবে, অনাথ হবে, নিহত হবে—এটাই স্বাভাবিক। কাফির মরলে সেটা অস্বাভাবিক। মুসলিম মার খাবে, এটা স্বাভাবিক। মুসলিম প্রতিরোধ করলে, পালটা আঘাত করলে, সেটা অস্বাভাবিক।

আমাদের নির্যাতিত মুসলিম ভাইবোনদের নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করে দিই আমরা। প্রতিরোধ আর প্রতিশোধের স্বপ্ন দেখতেও ভুলে যাই। কখন যেন অভিযোগের তির তাক হয় আমাদের দিকে—সব সময় আশঙ্কায় থাকি । যখন একজন কাফিরেরও কোনো ক্ষতি হয় তখন আমরা রক্ষণাত্মক হয়ে যাই। কাফিরের আগে আমরা ছুটে যাই ‘নিন্দা জানানোর’ মুখস্থ স্ক্রিপ্ট নেই। পাছে কাফির কিছু বলে!

আমার ভাই ও বোনেরা, এই মনস্তাত্ত্বিক আগ্রাসন থেকে নিজেদের বাঁচাতে হবে। এই মানসিক বিচ্যুতির ব্যাপার সতর্ক হতে হবে। সামরিক আগ্রাসনের চেয়েও মনস্তাত্ত্বিক এ আগ্রাসন বেশি ভয়ংকর।




মুসলিমের রক্ত আজ সস্তা কেন?

ড. ইয়াদ আল-কুনাইবি
প্রকাশিতব্য আয়নাঘর থেকে।

আসিফ আদনান ভাইয়ের টাইমলাইন থেকে।

কালাম শাস্ত্র এবং ইসলাম

কালাম শাস্ত্র বলতে দর্শনভিত্তিক ধর্মতত্ত্বকে বোঝায়, অর্থাৎ দর্শনকেন্দ্রিক আকিদা বা সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত বিশ্বাস। শাব্দিক অর্থে কালাম অর্থ বক্তৃতা, কথা,যুক্তি প্রভৃতিকে বোঝায়। বলা হয় প্লেটোনিক লোগোস থেকে কালাম শব্দটি এসেছে। দর্শনগুলো সাধারনত কোন মানুষের বুদ্ধি-বিচার ও যুক্তির নির্ভর করে মনগড়া কথা বা বক্তব্য। আরবিতে আলাদাভাবে গ্রীক দর্শনকে সরাসরি  ফালসাফাও বলা হয়।

এই ফালসাফা বা ফিলসফি যখন আরবে পৌছায় সেসবকে ইসলামের সাথে মেশানো হয়।  সেসব দ্বারা ইসলামের যাবতীয় আকিদাগত বিষয়কে ব্যাখ্যা করা হয়। কেউ কেউ ইসলামকে যৌক্তিক ধর্ম বানাতেও গ্রীক দর্শনের সাহায্য নিতে শুরু করে। এ সকল দর্শন আজকের বিজ্ঞানের প্রাচীন রূপ এবং আসল পরিচয় হচ্ছে অকাল্ট বা যাদু। গ্রীক ফিলসফির অরিজিন হলো ব্যাবিলনীয়ান মিস্টিসিজম সোজা কথায় শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র। তো, গ্রীক দর্শনকে ইসলামাইজ করে সম্মান দিয়ে ডাকা শুরু হয় ইল্মুল কালাম বা কালাম শাস্ত্র। কালামিরা দর্শনকে গ্রহনযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ভাল শব্দগুলোকে ব্যবহার করতো। যেমনঃ দর্শনকে ডাকা হত 'হিকমাহ','ইল্মে তাওহীদ' ইত্যাদি। ইবনে সিনা তার কিতাবগুলোর নামের শুরুতে হিকমাহ শব্দটি যোগ করতেন। এরা সবধরনের অকাল্ট ফিলসফির অনুসারী এবং চর্চাকারী। যাইহোক,হার্মেটিক/কাব্বালিস্টিক যাদুবিদ্যা[i.e: Alchemy] কালামশাস্ত্রেরই অন্তর্ভুক্ত বিষয়। প্রাচীন নামধারী মুসলিমগুলো যখন কালাম শাস্ত্র বা দর্শনকে গ্রহন করলো,  মু'তাযিলা, জাহমিয়্যাহসহ অনেক ফির্কার জন্ম হলো। হুলুল ইত্তেহাদ, ওয়াহদাতুল উজুদসহ সমস্ত কুফরি আকিদাগুলো ইসলামে প্রবিষ্টকরনে কালামীগন সক্রিয় ছিল। কালামি(মুতাকাল্লিমীন) বলতে গ্রীক দর্শনে বিশ্বাসী; ইসলামে কাফিরদের আকিদাগুলোর(প্যাগান ফিলসফি) সমন্বয় কারকদের বুঝায়। কালামিরা সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যাখ্যায় গ্রীক দর্শন ব্যবহার করত,এগুলো ব্যবহার করে কুরআন হাদিস এর বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান করত, দর্শনের বিশ্বাসগুলোকে ইসলামের সাথে সমন্বয় করত।মানব অস্তিত্ব রূহের প্রকৃতি এসবের আকিদায় প্লেটোর বিশ্বাসকে প্রাধান্য দিত। যা ইসলাম বলত না সেসবও গ্রীক দর্শন থেকে গ্রহন কর‍ত। গ্রীক দর্শন থেকে গ্রহনকরা সেরা উপহার ছিল 'ওয়াহদাতুল উজুদ, হুলুল ইত্তেহাদের ' আকিদাহ। কালামিরা দর্শনকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ইসলামের অখণ্ডনীয় বিষয় গুলোকেও অস্বীকার করা শুরু করে। আজকের অপবিজ্ঞানপন্থী মুসলিমরা যেভাবে অপবিজ্ঞান ও ইসলামের সমন্বয় করে মধ্যযুগীয় কালামীরাও দর্শনের বেলায় তাই করে। মূলত উভয় বিদ্যার গোড়া অভিন্ন। তেমনি আজকের অপবিজ্ঞানপন্থী মুসলিমরাও কালামিদের উত্তরসূরী যদিও তারা মুখে না স্বীকার করে।


আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের দাবিকারীরাও কালামশাস্ত্র তথা গ্রেসিয়ান-ব্যবিলনীয়ান অকাল্ট ফিলসফি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। তৈরি হলো আশআরি ও মাতুরিদি চিন্তাধারা। আল্লাহর সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার করুনা ছিল কিছু আলিমদের উপর যারা সালাফ আস সালেহীনদের আকিদাকে ধরে রাখতে চেষ্টা করেছেন। তারা নিজেদেরকে বাতিল আকিদা থেকে আলাদা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছেন, এদেরকে বলা হয় আসারি। আসারি স্কুল অব থট গায়েবি বিষয় 'শুনলাম এবং মানলাম' নীতি অনুসরন করে। সাহাবিয়্যাতের আকিদা সরাসরি ধারন করে। কোন ধরনের আকল খাটিয়ে বা দর্শনকে ব্যবহার করে সেসবকে ব্যাখ্যার দিকে যায় না। যাইহোক, সেসব আসারি আলিমদের ফিতনা মোকাবিলায় ভূমিকা ছিল অসামান্য। কালামশাস্ত্র তথা গ্রীক দর্শনের ইসলামিক রূপটাই যে কেবল একক এমনটা ভুল। ইহুদিদের মধ্যেও কালামি ছিল[10], তাদের গুরু মোজেস বেন মাইমন। মাইমনন্ডিসকে কাব্বালিস্টরা গুরুভক্তি করে। যাইহোক, কালামশাস্ত্র বা দর্শনের আসল উৎস হচ্ছে যাদুশাস্ত্র। কালামশাস্ত্রের একটা বড় কন্সেপ্ট হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব, সৃষ্টিতত্ত্ব, কস্মোলজিক্যাল আইডিয়া[11]। এসব কিছুতেই গ্রীক অকাল্ট দর্শনকে গ্রহন করা হয়। এসবকে যুক্তি দিয়ে দ্বীনের সাথে সমন্বয় করা।ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) ও তাঁর সহচরগণ ‘ইলমুল কালামৎ শিক্ষা করতে ঘোর আপত্তি করেছেন। ইলমুল কালামের প্রসার ঘটে মূলত দ্বিতীয় হিজরী শতকের প্রথমাংশে, বিশেষত ১৩২ হিজরী (৭৫০ খৃ) সালে আববাসী খিলাফতের প্রতিষ্ঠার পর। ইমাম আবূ হানীফা শিক্ষা জীবনে বা তাঁর জীবনের প্রথম ৩০ বৎসরে (৮০-১১০ হি) দর্শনভিত্তিক ইলমুল কালাম সমাজে তেমন পরিচয় লাভ করে নি। তবে দর্শনভিত্তিক বিভ্রান্ত মতবাদগুলো তখন কুফা, বসরা ইত্যাদি এলাকায় প্রচার হতে শুরু করেছে। গ্রীক-পারসিক দর্শন নির্ভর কাদারিয়া, জাবারিয়া, জাহমিয়া ইত্যাদি মতবাদ দ্বিতীয় হিজরী শতকের শুরু থেকেই জন্ম লাভ করে। এ সকল মতবাদ খন্ডন করতে মূলধারার কোনো কোনো আলিম দর্শন ও যুক্তিবিদ্যা নির্ভর যুক্তি-তর্কের আশ্রয় নিতে থাকেন।

কোনো কোনো জীবনীকার উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) প্রথম জীবনে এরূপ দর্শন ও যুক্তিবিদ্যা নির্ভর বিতর্ক বা ইলমুল কালামের চর্চা করেন। পরবর্তীতে তিনি তা বর্জন করেন এবং তা বর্জন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। ইলমুল কালামের প্রাথমিক অবস্থাতেই তিনি এর ক্ষতি ও ভয়াবহতা অনুধাবন করতে সক্ষম হন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন:

كنت أعطيت جدلا فى الكلام ... فلما مضى مدة عمري تفكرت وقلت السلف كانوا أعلم بالحقائق ولم ينتصبوا مجادلين بل أمسكوا عنه وخاضوا فى علم الشرائع ورغبوا فيه وتعلموا وعلموا وتناظروا عليه فتركت الكلام واشتغلت بالفقه ورأيت المشتغلين بالكلام ليس سيماهم سيماء الصالحين قاسية قلوبهم غليظة أفئدتهم لا يبالون بمخالفة الكتاب والسنة ولو كان خيرا لاشتغل به السلف الصالحون

‘‘কালাম বা দর্শনভিত্তিক বিতর্কে আমার পারদর্শিতা ছিল ... আমার জীবনের কিছু সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর আমি চিন্তা করলাম যে, পূর্ববর্তীগণ (সাহাবীগণ ও প্রথম যুগের তাবিয়ীগণ) দীন-ঈমানের প্রকৃত সত্য বিষয়ে অধিক অবগত ছিলেন। তাঁরা এ সকল বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন নি। বরং ঈমান-আকীদা বিষয়ক বিতর্ক তাঁরা পরিহার করতেন। তাঁরা শরীয়ত বা আহকাম বিষয়ে আলোচনা ও অধ্যয়নে লিপ্ত হতেন, এগুলোতে উৎসাহ দিতেন, শিক্ষা করতেন, শিক্ষা দিতেন এবং এ বিষয়ে বিতর্ক- আলোচনা করতেন। এজন্য আমি কালাম পরিত্যাগ করে ফিকহ চর্চায় মনোনিবেশ করি। আমি দেখলাম যে, কালাম বা দর্শনভিত্তিক আকীদা চর্চায় লিপ্ত মানুষগুলোর প্রকৃতি ও প্রকাশ নেককার মানুষদের মত নয়। তাদের হৃদয়গুলো কঠিন, মন ও প্রকৃতি কর্কশ এবং তারা কুরআন ও সুন্নাতের বিরোধিতা করার বিষয়ে বেপরোয়া। কালাম চর্চা যদি কল্যাণকর হতো তাহলে অবশ্যই পূর্ববর্তীগণ (সাহাবী-তাবিয়ীগণ) এর চর্চার করতেন।’’[1]

ইমাম যাহাবী উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম আবূ হানীফার শিক্ষা জীবনে ‘ইলমুল কালাম’-এর অস্তিত্বই ছিল না।[2] অর্থাৎ এ সময়ে দর্শন ভিত্তিক আকীদা চর্চা কোনো পৃথক ‘ইলম’ বা জ্ঞানে পরিণত হয় নি। কারণ ইমাম আবূ হানীফা ১০০ হিজরীর আগেই ফিকহ শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। ইমাম যাহাবী বলেন:

فأفقه أهل الكوفة علي وابن مسعود، وأفقه أصحابهما علقمة، وأفقه أصحابه إبراهيم، وأفقه أصحاب إبراهيم حماد، وأفقه أصحاب حماد أبو حنيفة،

‘‘কূফার সর্বশ্রেষ্ঠ ফকীহ আলী (রা) এবং ইবন মাসঊদ (রা)। তাঁদের ছাত্রদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফকীহ আলকামা। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফকীহ ইবরাহীম নাখয়ী (৯৬ হি)। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফকীহ হাম্মাদ ইবন আবী সুলাইমান (১২০ হি)। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফকীহ আবূ হানীফা।’’[3]

উল্লেখ্য যে, ১২০ হিজরীতে ইমাম হাম্মাদের ওফাতের পর ইমাম আবূ হানীফা তাঁর স্থলাভিষিক্ত বলে গণ্য হন। এতে প্রমাণ হয় যে, এ সময়ের অনেক পূর্বেই ইমাম আবূ হানীফা কুফার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফকীহ বলে গণ্য হয়েছেন। এতে সুস্পষ্ট যে, ১০০ হিজরীর পূর্ব থেকেই তিনি ফিকহ শিক্ষা ও চর্চায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। আর ১০০ হিজরীর পূর্বে মুসলিম বিশ্বে দর্শনভিত্তিক আকীদা চর্চা কোনো ‘ইলম’ বা শাস্ত্র হিসেবে প্রকাশ ও প্রসার লাভ করে নি। তাঁর পরিণত বয়সে (১১০-১৫০ হি) সমাজে ইলমুল কালাম চর্চা প্রসার লাভ করে এবং তিনি ইলমুল কালামের চর্চা থেকে তাঁর অনুসারীদেরকে নিষেধ করেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর পুত্র হাম্মাদ বলেন:

أخذ أبو حنيفة رضي الله عنه بيدي يوم الجمعة، فأدخلني المسجد، .... مَرَّ بقوم يتنازعون في الدين، فقال: يا بنيَّ! إذا مهر في هذا الأمر، قيل: زنديق ، وأُخرِج من حَدِّ الإسلام، فيصير بحال لا ينتفع به. .... قال حماد بن أبي حنيفة: وكنتُ معجَبا بالمنازعة، فتركتُ المنازعةَ بعد قول الشيخ

এক শুক্রবারে আবূ হানীফা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আমার হাত ধরে মসজিদে প্রবেশ করেন। .... তিনি দীন (আকীদা) বিষয়ে বিতর্কে (কালাম চর্চায়) লিপ্ত একদল মানুষদের নিকট দিয়ে গমন করেন এবং আমাকে বলেন: বেটা, যে ব্যক্তি এ শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করবে সে যিনদ্দীক (ধর্মত্যাগী ও ধর্ম অবমাননাকারী) বলে আখ্যায়িত হবে এবং ইসলামের পরিমন্ডল থেকে বহির্ভূত বলে গণ্য হবে। এভাবে সে এমন অবস্থায় পৌঁছাবে যে, তার দ্বারা কোনো কল্যাণ সাধিত হবে না। .... হাম্মাদ ইবন আবী হানীফা বলেন: আমি এরূপ বিতর্কের বিষয়ে খুবই আগ্রহী ছিলাম। শাইখ (রা)-এর এ কথার পরে আমি এ জাতীয় বিতর্ক পরিত্যাগ করি।’’[4]

ইমাম আবূ হানীফার ছাত্র নূহ ইবন আবী মরিয়ম বলেন:

قلت لأبي حنيفة رحمه الله ما تقول فيما أحدث الناس من كلام في الأعراض والأجسام فقال مقالات الفلاسفة عليك بالأثر وطريقة السلف وإياك وكل محدثة فإنها بدعة.

‘‘আমি আবূ হানীফা রাহিমাহুল্লাহকে বললাম: মানুষেরা ইলমুল কালামে (স্রষ্টার অস্তিত্ব, অনাদিত্ব ও বিশেষণ প্রমাণে) ‘আরায’ (অমৌল-পরনির্ভর: nonessential), ‘জিসম’ (দেহ: body) ইত্যাদি বিষয়ক আলোচনা উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর বিষয়ে আপনার মত কী? তিনি বলেন: এগুলো দার্শনিকদের কথাবার্তা। তোমার দায়িত্ব হাদীসের উপর নির্ভর করা এবং পূর্ববতীদের (সাহাবী-তাবিয়ীদের) তরীকা অনুসরণ করা। সাবধান! সকল নব-উদ্ভাবিত বিষয় বর্জন করবে; কারণ তা বিদআত।’’[5]

ইমাম আযমের ছাত্রগণও এভাবে ইলমুল কালাম চর্চা নিষেধ করতে থাকেন। ইমাম আবূ ইউসূফ রাহ. (১৮৯ হি) তাঁর ছাত্র ইলমুল কালামের বিশেষজ্ঞ ও মু’তাযিলী পণ্ডিত বিশ্র আল-মারীসী (২১৮ হি)- কে বলেন:

اَلْعِلْمُ بِالْكَلاَمِ هُوَ الْجَهْلُ وَالْجَهْلُ بِالْكَلاَمِ هُوَ الْعِلْمُ، وَإِذَا صَارَ الرَّجُلُ رَأْساً فِيْ الْكَلاَمِ قِيْلَ: زِنْدِيْقٌ.

‘‘কালামের জ্ঞানই হলো প্রকৃত অজ্ঞতা আর কালাম সম্পর্কে অজ্ঞতাই হলো প্রকৃত জ্ঞান। ইলমুল কালামে সুখ্যাতির অর্থ তাকে যীনদীক বা অবিশ্বাসী-ধর্মত্যাগী বলা হবে।’’[6]

ইমাম আবূ ইউসুফ (রাহ) আরো বলেন:

مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ بِالْكَلاَمِ تَزَنْدَقَ

‘‘যে ব্যক্তি ইলমু কালাম শিক্ষা করবে সে যিনদীকে পরিণত হবে।’’[7]

ইমাম শাফিয়ী রাহ. (২০৪ হি) বলেন,

حُكْمِيْ فِيْ أَهْلِ الْكَلاَمِ أَنْ يُضْرَبُوا بِالْجَرِيْدِ وَالنِّعَالِ وَيُطَافُ بِهِمْ فِيْ الْعَشَائِرِ وَالْقَبَائِلِ وَيُقَالُ: هَذَا جَزَاءُ مَنْ تَرَكَ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ وَأَقْبَلَ عَلَى الْكَلاَمِ.

‘‘যারা ইলমুল কালাম চর্চা করে তার বিষয়ে আমার বিধান এই যে, তাদেরকে খেজুরের ডাল ও জুতা দিয়ে পেটাতে হবে, এভাবে মহল্লায় মহল্লায় ও কবীলাসমূহের মধ্যে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে এবং বলতে হবে: যারা কিতাব ও সুন্নাত ছেডে ইলমুল কালামে মনোনিবেশ করে তাদের এ শাস্তি।’’[8]

এভাবে প্রসিদ্ধ চার মুজতাহিদ ইমাম এবং দ্বিতীয়-তৃতীয় হিজরী শতকের সকল প্রসিদ্ধ আলিম, ইমাম, ফকীহ ও মুহাদ্দিস অত্যন্ত কঠোর ভাষায় ইলমুল কালামের নিন্দা করেছেন।[9]


কালামিদের তৎপরতা কি থেমে যায় নি। বরং এখন আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী এবং আরও বেশি সমৃদ্ধ এবং সম্প্রসারিত। আরবি কালামশাস্ত্র রেনেঁসার সময় পশ্চিমে পৌছে শক্তিশালী হতে থাকে। কালামশাস্ত্রের যুক্তি নৈতিক দর্শনের পাশাপাশি একটি অংশ হচ্ছে ন্যাচারাল ফিলসফি। এই বিদ্যা মূলত যাদুবিদ্যা বা অকাল্ট কিন্তু আগে সামগ্রিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন দিয়ে ন্যাচারাল ফিলসফি বলে ডাকা হত। ১৯শতকে এসে গ্রীক দর্শন নির্ভর কালাম বিদ্যা গুলো আলাদা ডিসিপ্লিনে ভাগ হতে শুরু হয়। ন্যাচারাল ফিলসফিকে নাম দেওয়া হয় "বিজ্ঞান"। এ নিয়ে "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান" সিরিজে বিস্তারিত আলোচনা করছি।  হার্মেটিক আলকেমি হয়ে যায় আলকেমিস্ট্রি। দর্শন থেকে আলাদা করবার পর এর প্রচার প্রচারণা চরম বেড়ে যায়। মুসলিমরা আলকেমি থেকে আলকেমিস্ট্রি হবার ইতিহাস অজানা কারনে ভুলে যায়, যাদুবিদ্যা উৎসারিত ব্যবিলনীয়ান-গ্রেসিয়ান কস্মোলজিকে শতভাগ গ্রহন করে। মূলত এই কুফরি আকিদানির্ভর তত্ত্বগুলো মুসলিমদের দ্বারা গ্রহন শুরু হয় আরবে কালামশাস্ত্রের আবির্ভাবের সময় থেকে। আজ আসারি আকিদার দাবিদাররাও কালামশাস্ত্রের বর্ধিত পরিপূর্ণ রূপের ফিতনাহ থেকে মুক্ত নয়। ৮০% আসারিরা আজ কালামশাস্ত্র দ্বারা প্রভাবিত। কেউ মারাত্মক কেউ-বা অল্প মাত্রায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা আসারি আশআরি মাতুরিদি, কোনকিছুই বোঝে না, জেনারেলে পড়ুয়া উচ্চ বা অর্ধশিক্ষিত, এরা সবচেয়ে বেশি দর্শনশাস্ত্র বা কালামি চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাবিত। কালামশাস্ত্রের নব্য সংস্করণঃআধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে ভয়াবহ শাখা হচ্ছে পদার্থবিদ্যা এবং মহাকাশবিদ্যা। এটা সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে সাহাবিদের আকিদার বিপরীতে হাটিয়ে লজিক্যালি মানুষের আকিদাকে একদম পাল্টে ফেলছে।অভিশপ্ত যাদুকরদের আকিদায় ফিরিয়ে যিন্দিক করে ফেলছে। আধুনিক মহাকাশবিদ্যা ও পদার্থবিদ্যা পুরোপুরি গ্রীক-ব্যবিলনিয়ান অকাল্ট ফিলসফি থেকে উদ্ভূত। বিজ্ঞানের অন্যশাখা গুলো অল্পবিস্তর গ্রহনযোগ্যতা থাকলেও এই দুই শাখায় কোন কল্যান নেই।পদার্থবিজ্ঞানীরা গ্রীক ও ভারতীয় দর্শনে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি খোলাখুলি ভাবে বলে। তারা সরাসরি বলেন আধুনিক বিজ্ঞান আজ প্লেটোর দর্শনকে সত্যায়ন করে।  কিন্তু এরপরেও আজ ওইসব মুসলিমদের সংখ্যা বেশি যারা গ্রেসিয়ান দর্শন তথা ইল্মুল কালামের আধুনিক সংস্করণকে অমোঘ সত্য বানী হিসেবে গ্রহন করে। এরা আজ বিজ্ঞানকে কুরআন হাদিসের আগে রাখে। এদের চিন্তা, সবকিছুকে কেমন যেন বিজ্ঞানের চাকায় ঘোড়াতে হবে, কুরআন সুন্নাহকে বিজ্ঞান দ্বারা জাস্টিফাই করতে হবে। ইসলামের সবকিছুকে যুক্তি দ্বারা প্রমাণ করতে হবে। এরা নব্য-কালামী। নব্য মু'তাযিলা। এদের কাছে যাদুবিদ্যা বলে কিছু নেই সবই সায়েন্স। এজন্য যে পদার্থবিজ্ঞান আকাশবিজ্ঞান কাব্বালার কাছে ফিরে গেছে সেটা আধুনিক মুসলিমদের কাছে বিশুদ্ধ সায়েন্স। কাব্বালিস্ট নিউটন,ভগবতগীতার অনুসারী আইনস্টাইন, বেদান্তবাদের অনুসারী শ্রোডিঞ্জার, হাইজেনবার্গ সবাই মহান বিজ্ঞানী। নিঃসন্দেহে ইল্মুল কালাম ইসলামের বাহিরের বিদআতি ইল্ম। আসারি আলিমদের সাথে গলা মিলিয়ে বলব এই কুফরি দর্শনের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। এসব মানুষকে কুফর ও শিরকের দিকে চালিত করে। যে নির্বোধ কালামিরা আজ অপবিজ্ঞান তথা কালামশাস্ত্রের নতুন সংস্করণ ইসলামের সাথে সমন্বয় করে প্রচার প্রচারণা চালায়, যুক্তিনির্ভর কিতাব লেখে,  সবকিছুকে যুক্তি দিয়ে প্রমান করতে চায় এরা পরিত্যাজ্য।




টিকাঃ

[1] কুরাশী, তাবাকাতুল হানাফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা, ৪৬৮।

[2] যাহাবী, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৩৯৮।

[3] যাহাবী, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৩১-২৩৬।

[4] সায়িদ নাইসাপূরী হানাফী, আল-ই’তিকাদ, পৃষ্ঠা ১৭৭।

[5] হারাবী, আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ আনসারী, যাম্মুল কালাম ওয়া আহলিহী ৫/২০৬-২০৭।

[6] ইবন আবিল ইয্য হানাফী, শারহুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ৭৫

[7] ইবন আবিল ইয্য, শারহুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ৭৫

[8] ইবন আবিল ইয্য, শারহুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ৭৫

[9] গাযালী, ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ১/৩৩, ৫২-৫৩; ইবন আবিল ইয্য, শারহুল আকীদা আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ৭২-৭৭, ২০৪-২১০।

[10]
wikipedia.org/wiki/Kalam_cosmological_argument

[11]wikipedia.org/wiki/Jewish_Kalam

আরোও পড়ুনঃ https://i-onlinemedia.net/8125

Thursday, April 16, 2020

বিশেষ দ্রষ্টব্য - ০২

কিছু দ্বীনি ভাইয়েরা ব্লগের আর্টিকেল ব্যবহার করে নিজের নামে ভিডিও তৈরি করে প্রচার কপি পেস্ট করা নিয়ে আপত্তি করছেন। না চাইলেও আবারও 'মানহাজগত দাওয়াহ' এর স্বার্থে বলতে বাধ্য হচ্ছি। 

আমি জানি আমিই প্রথম Astronomy, metaphysics, সৃষ্টিতত্ত্ব(cosmogony),Esoteric natural philosophy, mysticism এবং প্রচলিত বিজ্ঞান নিয়ে একদম ভিন্ন পার্স্পেক্টিভে বিশদভাবে লিখতে শুরু করেছি। এর সমতূল্য অনলাইনে কোন ভাষাতেই এত বিস্তারিত কিছু পাবেন না। জিনিসগুলো অনেকের কাছে খুব ইন্ট্রেস্টিং মনে হয়, অনেকে তেমন কিছু না জেনে-বুঝে ভিডিও তৈরি শুরু করেছে। বিশেষ করে ব্লগের আর্টিকেল গুলো কপি পেস্ট করছে বা ঘুরিয়ে নিজের মত উপস্থাপন করছে, যাদের অনেকেই বাংলা শব্দগুলোও শুদ্ধভাবে বলতে জানেন নাহ। অনেকে কপি পেস্ট করছেন নিজের নামে। প্রথমত, এটা আমার 'মানহাজগত দাওয়াহ' এর পথে প্রতিবন্ধকতা। এই স্বার্থটি না থাকলে কোন আপত্তি ছিল না। আমি বাতেনিয়্যাহ ফির্কা কিংবা মুরজিয়াদের মানহাজকে প্রচারের জন্য এসব কন্টেন্টস ব্যবহার করার অনুমতি দেই না। দ্বিতীয়ত, তাওহীদ-আকাঈদ এর ভিত্তিগত ইল্ম যদি না থাকে, এসবের ধারে কাছেও ঘিষতে বলিনা।তাদের কাছে আমার ব্লগের লিংকটিও পৌছাক সেটাতেও ভয় হয়। যে লোককে তাওহীদের আরকানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেই শুয়ে পড়ে, তার পক্ষে শিরক - কুফরের মহাসাগরের মধ্যে যাওয়া মহানির্বুদ্ধিতার কাজ। এজন্য আবারও বলছি যারা এমনটা করছেন তারা অন্যায় করছেন। সেটা কপিরাইট ইস্যুর দিকে চলে যায়। ওটা একধরনের চুরি। অধিকন্তু, আমাদের দ্বীনি ভাইয়েরা যে আপত্তিটা দিয়েছেন। আপনি আমাদের মানহাজ বা কর্মপদ্ধতির বিরুদ্ধে অবস্থান করে আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গকারী মহামানবদেরকে কাফিরদের প্রতিনিধি বলবেন(লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ), আর এদিকে সে পথেরই কারো দাওয়াহ ম্যাটেরিয়ালস চুরি করে নিজের নামে প্রচার করবেন সোর্স গোপন করে, এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমি যদি পূর্বে কাউকে ভিডিও বা কপি পেস্টের অনুমতিও দেই তবে তা কখনো ব্লগের লিংক গোপন করে নিজের নামে প্রচারের জন্য অনুমতি দেই নি।

অতএব,
★যদি আমাদের ব্লগ আর্টিকেল প্রচার বা কপি-পেস্ট করার কথা ভাবেন, অবশ্যই টেক্সট এর নিচে ব্লগের ঠিকানা/লিংক দিবেন।

★অনেকে ভিডিও বানাচ্ছে শুনেছি, আপত্তি করব না যদি ভিডিওর শুরুতে ও শেষে কন্টেন্ট এর সোর্স অর্থাৎ আমাদের ব্লগের ঠিকানা(লিংক) স্পষ্টভাবে বড় ফন্টে দেয়া হয়। তাতে অবশ্যই আমাদের পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপের এ্যাড্রেসও রাখতে হবে। ভিডিও নির্মাতা কোনভাবেই এসবের নিজের বলে চালানোর মত করে প্রচার করতে পারবে না।

★ভিডিও তৈরি করলে যতদূর জানি কিছু অর্থলাভ হয়। ইউটিউব/ব্লগের এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ যতদূর জানি হালাল নাহ। আমাদের কন্টেন্টস/টেক্সট ব্যবহার করা হলে অবশ্যই মনিটাইজ বন্ধ রাখবেন। যদি কোন কারনে অর্থ উপার্জিত হয় তবে তা সম্পূর্ন ফকির মিসকিনদের দান করতে হবে। অন্যথায় আল্লাহ তাদের কর্মকে যেন বিফল করেন। এ বিষয়ে সততা দেখবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা। وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

★যারা ব্লগ ডকুমেন্টস গুলো পিডিএফ বা সরাসরি প্রিন্ট করে হার্ডকপিতে রূপান্তর করতে চান, তাদের জন্যও একই শর্ত। কোনভাবেই এসব টেক্সট এর অরিজিন্স বা সোর্স(i.e: link) গোপন করে নিজের নামে চালানো যাবে না।

★যারা উপরের শর্তগুলো না মেনে আগে থেকে কাজ করেছেন, তারা বৈধতা আনতে অনুগ্রহ করে সেসব জিনিসগুলোর সংস্কার/এডিট করুন।

উপরের শর্তগুলো মেনে প্রচার প্রসারে আপত্তি নেই বা অনুমতি গ্রহনের প্রয়োজন নেই। আমি ফেসবুকে নিয়মিত নেই। আগামী ৪৮ ঘন্টা পর আবারো সাময়িকভাবে কিছু দিনের জন্য বিদায় নেব। ইনশাআল্লাহ।

যদি কেউ আমার নির্দেশনার কর্ণপাত না করে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা যেন তার এসকল কর্মকে দুনিয়া ও আখিরাতে নিস্ফল করে দেন। কেউ এরকমটা ভাববেন না যে আমি মোটেই পাব্লিসিটির জন্য এমনটা করছি, আগেই উল্লেখ করেছি যে এসব গোপন রাখাতেই শান্তি পাই। মানহাজের দাওয়াহ এর স্বার্থ এখানে জড়ানো, আমি এসব আর্টিকেল ডকুমেন্টস তৈরি করেছি দাওয়াহ এর ইন্সট্রুমেন্টস হিসেবে। আমি কোথাও কিছুর বিজ্ঞাপন দেই না, এর পরেও গুগল থেকেই ফেসবুকের তুলনায় বেশি ট্রাফিক। প্রতিদিন সহস্রাধিক ভিজিট হয়। আপনারা জানেন ব্লগে আমার কোন কমার্শিয়াল পারপাজ নেই। কোন টাকা পাইনা উল্টো অনেক সময় ব্যয় করি। এই সময়টা আমি আমার ভাই ও আলিমদের রক্তকে কাফিরদের পক্ষের বলনেওয়ালাদের জন্য দেই না। ওয়াল্লাহি কক্ষনো নাহ। আরেকটা বিষয়, আমি যা করছি সেটার পাঠকদের অধিকাংশই ওই মানের, 'যারা শেখায়'।আমি আওয়াম জনতার নিকট পরিচিতি বা শুহরাতকে ঘৃণা করি। তাই এই বিধিনিষেধের পিছনে ফ্যান ফলোয়ার বাড়ানোর মাকসাদ ভাবলে ভুল করবেন।

জাযাকআল্লাহ খাইর।

Thursday, April 2, 2020

১৬.বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?

পর্ব-১৬






সেই প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক ও যাদুহত্তপ্সর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত যাদুরবিদ্যা ও যাদুশাস্ত্রের বিবর্ধন এবং রূপান্তরের সুবিস্তৃত ইতিহাসকে কালানুক্রমে আজকের আলোচ্য বিষয় মহাকাশবিজ্ঞান। আপনি যেরূপ পৃথিবী ও আকাশের ব্যপারে জানছেন এবং সারাবিশ্বে এসংক্রান্ত তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত রূপে দেখছেন, মাত্র ৫০০ বছর আগেই এসবের কিছুই সাধারন মানুষের বিশ্বাসের জায়গায় ছিল না। ১৫০০ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজিক্যাল অর্ডারে পৃথিবী ছিল সমতল। আউটার স্পেস বলে কিছুর অস্তিত্ব কল্পনাতেই ছিল না জনসাধারনের। আজকের মহাবিশ্বের স্বরূপ প্রকৃতিগত ধারনা ও সৃষ্টিতত্ত্ব এর অস্তিত্ব হাজার বছর আগেও ছিল। কিন্তু সেটা ছিল শুধু যাদুশাস্ত্র এবং এর অনুসারী যাদুকর/দার্শনিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তারা গোপনে এই আকিদা রাখতো যে, পৃথিবী গোলাকার বলের ন্যায় যা শূন্যে ভেসে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাকাশ অনন্ত বিস্তৃত। ব্যবিলনীয়ান যাদুশাস্ত্রের অনুসারী  পিথাগোরাস- হাইপাথিয়াদের নিয়ে লেখা পর্বে এ নিয়ে উল্লেখ করেছিলাম। বাবেল শহরে জন্মানো ইহুদিদের যাদুশাস্ত্র কাব্বালায় তো হাজার হাজার বছর আগে পৃথিবীর বর্তুলাকারের ব্যপারে সরাসরি উল্লেখ আছে। মনে করতে সমস্যা হলে আপনাকে পুনরায় ২য় পর্বে ফিরে যেতে হবে।

গত ৫০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত বিকৃত শয়তানি আকিদা ছড়ায় নি এইজন্যে যে, তখন পর্যন্ত খ্রিস্টান এবং পরবর্তী মুসলিম শাসনের দ্বারা যাদুকররা নিষ্পেষিত ছিল। কিন্তু ৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে আরবে গ্রেসিয়-ব্যবিলনিয়ান অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউ ঢুকলে অনেক নামধারী মুসলিমরাই সেসবকে গ্রহন করতে শুরু করে। অনেক আলিম নবাগত কস্মোলজি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সেসবের পক্ষে ফতওয়া দিতে শুরু করেন। অনেক আলিম গ্রীক ফিলসফিরই বিরোধিতা করতেন! কিন্তু ironical ব্যপার হচ্ছে তাদের অনেকে গ্রীক কস্মোলজিক্যাল আইডিয়া গ্রহন করে নিয়েছিলেন। গ্রীক ফিলসফি আসার আগের  জিওসেন্ট্রিক সমতল বিশ্বব্যবস্থার ধারনায় ফাটল এখান থেকেই শুরু। এজন্য সাহাবীদের কস্মোলজিক্যাল আইডিয়া, তাদের থেকে আসা হাদিসসমূহ আজকের প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজির বিপরীত ধারনা দেয়। কুরআন সুন্নাহ আর মেইনস্ট্রিম মহাকাশ তত্ত্বের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। এজন্য অনেক দুর্বল বিশ্বাসীদের মনে কস্মোলজিক্যাল কনফ্লিক্ট এর বিষয়টি গভীরভাবে দাগ কাটে,অতঃপর দ্বীন ত্যাগের দিকে ধাবিত করে। আবার অনেক মুসলিম আজকের যুগে এসে দুই মেরুর(তাওহীদ ও ইত্তেহাদের) সাংঘর্ষিক  বিদ্যাকে একীভূত করতে চেষ্টা করেন আপোষ ও সমন্বয়ের দ্বারা। ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা ইতোপূর্বে শেষ হয়েছে[৫]। আরবের গ্রীক দর্শনকে গ্রহন অকাল্টিজমের(যাদুশাস্ত্রের) প্রসারের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়,কেননা ওই সময় গোটা বিশ্বের শাসনে মুসলিমদেরই সিংহভাগ কর্তৃত্ব ছিল। পরবর্তীতে আরবদের থেকে পাশ্চাত্যে অকাল্ট ফিলসফি পৌছায় এবং কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে সেসবই বিজ্ঞান নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।

রেনেসাঁ পিরিয়ডে আরব থেকে গ্রেসিয়-ব্যবিলনিয়ান আলকেমিক্যাল-কাব্বালিস্টিক কিতাবাদী পাশ্চাত্যে পৌছালে যাদুশাস্ত্রের এর নবজাগরণ ঘটে। মূলত এজন্যই ওই যুগকে রেনেসাঁ বা পূনর্জন্মের যুগ বলা হয়।অকাল্ট কস্মোলজিক্যাল ওয়ার্ল্ডভিউ তখনও রাতারাতি মেইনস্ট্রিমে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা(royal singular) বিগত পর্বে আলোচনা করেছি আইনস্টাইন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কদের অপবিদ্যার জ্ঞানগত প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের জন্য রয়্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে যাদুকরদের গুপ্তসংগঠন ফ্রিম্যাসন। আলকেমিস্ট নিউটন থেকে ফ্রান্সিস বেকন সকলেই ছিল ফ্রিম্যাসন এবং রয়্যাল সোসাইটির আদি প্রতিষ্ঠাতা। রাজনৈতিকভাবে সর্বময় কর্তৃত্ব তখনও তাদের হাতে ছিল না। রাজনৈতিকভাবে তাদের যাদুশাস্ত্রের অনুসরণকে রাষ্ট্রীয় এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার জন্য ১৫৪০ সালে ইগনেসিয়াস লয়োলা নামের এক crypto jew এর হাত ধরে গঠন করা হয় অর্ডার অব জেসুইট। জেসুইটরা ধর্মান্ধ খ্রিষ্টানদের মধ্যে কাব্বালিস্টিক অকাল্টিজম প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যাথলিকদের দ্বারা অর্ডার অব জেসুইট গঠিত হয় এবং সমগ্র পৃথিবীতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। এরাই সর্বপ্রথম এতকাল যাবৎ অকাল্টিস্টদের কাছে লুক্কায়িত হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি সারাবিশ্বব্যাপী প্রসার শুরু করে। এদিক দিয়ে দেখা যায়, আজ যারা হেলিওসেন্ট্রিক স্ফেরিক্যাল আর্থ বেজড কস্মোলজিতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এরা শুধু যাদুকরদের কুফরি আকিদাই গ্রহন করেনি, ক্যাথলিক মিশনারীর প্রচারণা দ্বারাও প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত। আইরনি হচ্ছে,নিজেরাই খ্রিস্টানদের প্রচারিত আকিদা বা বিশ্বাসের ফাঁদে পা দিয়ে উল্টো সমতল বিশ্বব্যবস্থার (জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি) কথাকে খ্রিস্টানদের চিন্তাধারা বলে নিন্দা করে! জেসুইটের মূল স্বপ্নই ছিল একটি অভিন্ন কস্মোলজিক্যাল আইডিয়ার উপর ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়নের প্রতিষ্ঠাকাজে সহায়তা করা,এবং সায়েন্টিফিক(ন্যাচারাল ফিলসফির) নলেজের প্রসারের মাধ্যমে যেকোন ডিভাইন বিলিভকে মুছে ফেলা। জেসুইট প্রিস্ট আলবের্তো রিভেরা অকপটে স্বীকার করেন। এ কাজে জেসুইট খুব সফল হয়, তাদের প্রচারনায় খুব দ্রুতই সমতল বিশ্বব্যবস্থার কস্মোলজিকে বিদায় জানানো হয়। চীন নাছোড়বান্দা হয়ে ১৭০০ সাল পর্যন্ত সমতল পৃথিবীর কস্মোলজি ধারন করলেও শেষ পর্যন্ত আর টিকে থাকতে পারেনি জেসুইটের চাপে। এভাবে মেইনস্ট্রিম থেকে জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিকে বিদায় দেওয়া হয়। সেই সাথে ধর্মবিমুখ  নাস্তিক্যবাদী চিন্তা দিনদিন বাড়তে থাকে। ফ্রিম্যাসন এবং হার্মেটিক ফিলসফার জোহানেস কেপলার ১৬৩৪ সালে চন্দ্রগমন নিয়ে সমনিয়ান(অর্থ স্বপ্ন) নামের একটি বই পাবলিশ করেন। সেই থেকে সাধারন জনগনের মধ্যে চন্দ্রগমনের ফ্যান্টাসি শুরু হয়। কেপলারের ব্যপারে বিগত পর্বে বিস্তারিত উল্লেখ করেছিলাম। কেপলার ছিল মিশরীয় হার্মেটিক যাদুশাস্ত্রের অনুসারী, তিনি তার বইয়ে হার্মিসের কথাকে সূর্যকেন্দ্রিক আকাশব্যবস্থায় বিশ্বাসের দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে আবারও সামনে উল্লেখ করব।

কোপার্নিকাসের চন্দ্র ভ্রমণের কল্পনা ও অকাল্ট বাসনাকে প্রকাশ করে লেখা বইয়ের পর ১৬৩৮ সালে ফ্রান্সিস গডউইন "দ্য ম্যান ইন দ্য মুন" প্রকাশ করেন। একই বছরে The discovery of a world in the moone নামের বইটি পাবলিশ করেন জন উইল্কান।এটি ইংল্যান্ডে নতুন এস্ট্রনমিক্যাল মডেলের ব্যপারে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর থেকে একে একে নতুন কস্মোলজিক্যাল অর্ডারের উপর লেখা বই বের হতে থাকে। মানুষও ব্রেইনওয়াশড হতে থাকে।
অতঃপর ১৯০২ সালে সর্বপ্রথম মুভি বের হয়,"A trip to the moon" । ব্যস এরপর থেকে একে একে ফিল্ম বের হওয়া শুরু হয় স্ফেরিক্যাল আর্থ/মুন ল্যান্ডিং নিয়ে। ১৯১২ সালে ইউনিভার্সাল পিকচার, নামের কোম্পানি ফিল্ম তৈরি শুরু করে যার শুরুতেই বর্তুলাকার পৃথিবীর এনিমেশন দেখানো হয়। পৃথিবীর আকৃতি কল্পিত স্পেসে গিয়ে ছবি তোলার কাহিনী বানিয়ে  অফিশিয়ালভাবে প্রকাশ করার প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে থেকেই তারা বর্তুলাকার(গ্লোব) পৃথিবীর প্রোপাগাণ্ডা শুরু করে। হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি ভিত্তিক ফিল্ম বার বার দেখানো হয়, এতে করে সবার অবচেতনে নতুন কস্মোলজি স্বাভাবিক হয়ে মাথায় গেঁথে যায়। এর ফলে যখন এই এজেন্ডার বৈজ্ঞানিক পরিষদ অফিশিয়ালভাবে ফিল্মে দেখানো ছবিকে বাস্তব বলে ঘোষণা দিলো, পুরোপুরি ব্রেইনওয়াশড হয়ে মেনে নিতে কারো আপত্তি থাকল না।  উপরন্তু সকলে আউটার স্পেস,চন্দ্র অভিযানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ১৯৩০ থেকে সাইন্সফিকশন কমিক বের হতে থাকে। এরপর ১৯৪৬ সালে এডমিরাল রিচার্ড ই বার্ডের নেতৃত্বে আমেরিকা এন্টার্কটিকায় অভিযান চালায় মিলিটারি বেজ স্থাপন করে গবেষণা ও তাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পরীক্ষানিরীক্ষার নাম করে। এর নাম দেয় অপারেশন হাইজাম্প। ফিরে এসে এডমিরাল বার্ড এক সাক্ষাৎকারে  বলেন, দক্ষিন মেরুতে আমেরিকার মত বিশাল অদেখা ভূখণ্ড আছে। সে ইন্টারভিউ এখনও অনলাইনে রয়েছে। ১৯৫৫ সালে আবারো একই উদ্দেশ্যে ২য় বারের মত দক্ষিনমেরুতে অভিযানে যায়, এর নাম দেয় 'অপারেশন ডিপফ্রিজ'। নাসা প্রতিষ্ঠিত হবার ঠিক তিন বছর আগেই ১৯৫৫ সালে Walt Disney স্পেস নিয়ে প্রপাগাণ্ডা ফিল্ম প্রকাশ করে Man in Space নামে[১]। এতে বলা একটি বাক্য এরূপ- স্পেসে অন্যান্য জগতে যাওয়া মানুষের প্রাচীনতম স্বপ্ন, যা কিছুদিন আগেও অসম্ভব মনে হত। কিন্তু নতুন আবিষ্কার স্পেস ট্রাভেলের নতুন ফ্রন্টিয়ারে পৌছে দিচ্ছে। সেই প্রোপাগাণ্ডা ফিল্মে হাতে রকেটের প্রতিকৃতি নিয়ে মানুষকে আরো কল্পনার সাগরে ভাসানো হয়। ঠিক তিন বছর পরে ১৯৫৮ সালে মহাকাশ সংস্থা নাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।ঠিক ঐ বছরেই ইউএস মিলিটারি, জেট প্রপালশন ল্যাব-JPL নাসায় নিয়ে আসে।জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক পার্সন্সকে নিয়ে লিখতে গেলে আইজ্যাক নিউটনের মত আলাদা আর্টিকেল করতে হয়।যাহোক,  খুব সংক্ষেপে লিখতে চাই। জেট প্রপালশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক পার্সন্স ছিলেন স্বঘোষিত শয়তানের পূজারী এবং এ্যালিস্টার ক্রোওলির ঘনিষ্ঠ সহচর। তিনি অর্ডো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস নামের আরেকটি অকাল্টিস্টদের সিক্রেট সোসাইটিতে যুক্ত ছিলেন। তার আসল পরিচয় হলো একজন স্যাটানিস্ট এবং উচুমানের অকাল্টিস্ট(যাদুকর)। তাকে শুধুমাত্র সাধারন মিস্টিক বা ফিলসফার বললে ভুল হবে।আকাশে রকেট চালনার প্রপালশন সিস্টেমের আবিষ্কারক তিনিই।যাদুচর্চা, শয়তানের আরাধনা ছিল জ্যাক পারসনের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার। জীবনের শুরু থেকেই তার যাদুবিদ্যা ও শয়তানের পূজার দিকে খুব ঝোক ছিল।১৯২৮ সালে তিনি সর্বপ্রথম নিজের বেডরুমে শয়তানকে আসার আহব্বান করে রিচুয়াল শুরু করেন। তিনি এতে সফল হন। তিনি শয়তানকে তার রুমে আসতে দেখে ঘাবড়ে যান, এরপর এ কাজ থেকে বিরত থাকেন। উইকিপিডিয়ায় এসেছেঃ"Parsons had also begun to investigate occultism, and performed a ritual intended to invoke the Devil into his bedroom; he worried that the invocation was successful and was frightened into ceasing these activities."[উইকিপিডিয়া]

পরে দীর্ঘ সময় পর এলিস্টার ক্রোওলির সাথে সম্পর্ক হয়।  শয়তানের পূজারী এলিস্টার ক্রোওলি মিশর গিয়ে আইওয়াশ নামের এক শয়তানের থেকে দীক্ষা লাভ করে লিখে ফেলেন বুক অব 'ল। সেটা থেকেই ১৯০৪ সালে থেলেমা নামের শয়তানের পূজা এবং যাদুবিদ্যার ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে। জ্যাক পার্সন্স এলিস্টার ক্রোওলির শয়তানি ধর্মকে গ্রহন করে সবসময় পাশে থাকতে শুরু করেন। থেলেমাইক অর্দো টেম্পলি ওরিয়েন্টিস গঠন করা হলে পার্সন্স তার স্ত্রী হেলেনকেও যাদুবিদ্যা শয়তানের অর্চনায় উৎসাহ করতে থাকে। তারা থেলেমাইক লজে যেতেন। পার্সন্সের পরকীয়ার জন্য তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে যায়। এরপর পার্সন্স নিয়মিত ব্যভিচার, কোকেন, মারিজুয়ানার মধ্যে ডুবে যান। পারসন্স তার আয়ের প্রায় সবটাই ক্রোওলিকে দিতে শুরু করেন। দুজন মিলে সবধরনের যাদুবিদ্যার চর্চা করতেন। এতে থাকতো বিচিত্র রিচুয়াল। যেমন সেক্স রিচুয়াল। একবার এক ১৬ বছর বয়সী কিশোর অভিযোগ করে যে তার সাথে O.T.O লজের সবাই জোরপূর্বক সমকামিতায় লিপ্ত হয়। এক গর্ভবর্তী  মহিলাকে নগ্নাবস্থায় আগুনে ফেলার অভিযোগে পুলিশি ঝামেলায় জড়ান। পার্সন্স বিশ্বাস করতেন থেলেমাইক যাদুবিদ্যাকে কোয়ান্টাম ফিজিক্স দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব[৪০]।তার এ চিন্তা আসলে মোটেও অমূলক নয়, কেননা কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিজেই সরাসরি অকাল্টের বৈজ্ঞানিক সংস্করণ,বিস্তারিত ১৭ ও ১৮নং পর্বে আলোচনা হয়েছে। পার্সন্স থেলেমার সব ধরনের শয়তানি অর্চনার পাশাপাশি কাব্বালার সংখ্যাতত্ত্বেরও চর্চা করতেন।

জ্যাক এবং এ্যালিস্টার ক্রোওলি মিলে "অমলন্ত্র রিচুয়ালের" মাধ্যমে ইন্টারডাইমেনশনাল পোর্টাল খুলবার শক্ত দাবি পাওয়া যায়। অর্থাৎ ত্রিমাত্রিক জগতে শয়তানের অবাধ বিচরনের জন্য কথিত আছে যে, দুই জগতের মধ্যবর্তী দুয়ার খুলে দেওয়া হয়, পরবর্তীতে  ইউএফও/ফ্লাইং সসারের আনাগোনা ব্যপক হারে বৃদ্ধি পায়। এ দাবি Kenneth Grant থেকেও আছে। কথিত এ দুই ডাইমেনশনের দুয়ার উন্মুক্ত করার স্যাটানিক অর্চনার রিচুয়ালকে তারা নাম দেয় "ব্যাবিলন ওয়ার্কিং[৪২]"! ক্রোওলি এবং পার্সন্স প্যান ও ল্যাম নামের দুই শয়তান জ্বীনের সাথে যোগাযোগ করে। এই শয়তানি রিচুয়াল তথা শয়তানদেরকে ত্রিমাত্রিক জগতে আহব্বানের কাজে পাশে ছিলেন চার্চ অব সায়েন্টলজির প্রতিষ্ঠাতা এল.রন হাবার্ড। যদিও এগুলো শয়তানের পূজা,যাদুবিদ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট দেখা যাচ্ছে তবুও এই মহান বিজ্ঞানীদের সম্মানে আমাদেরকে তাদের কাজকে সায়েন্টিফিক এক্সপেরিমেন্ট হিসেবেই দেখা উচিত। তার ব্যপারে জ্যাক পার্সন্স ক্রোওলিকে লেখেন,"যদিও হাব্বার্ডের যাদুবিদ্যায় কোন ফর্মাল প্রশিক্ষণ নেই তার এ ক্ষেত্রে অসাধারণ রকমের অভিজ্ঞতা এবং বোধ রয়েছে।তার কিছু অভিজ্ঞায় আমি অনুমান করছি তিনি হায়ার ইন্টেলিজেন্স সম্ভবত গার্ডিয়ান এঞ্জেল দ্বারা সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। তিনিই হলেন সবচেয়ে বড় থেলেমাইক লোক যাকে সবচেয়ে আমাদের নীতিতে নিষ্ঠাবান হিসেবে পেয়েছি।"

পার্সন্স রাজনৈতিক দিক দিয়ে মার্ক্সবাদী ছিলেন। এলিস্টার ক্রোওলির সাথে যোগ দেয়ার আগে প্রথমদিকে হেলেনা ব্লাভাস্তস্কির থিওসফিক্যাল সোসাইটির বেশ সখ্যতা ছিল। প্রায়ই জিদ্দুকৃষ্ণমূর্তির বক্তৃতা শুনতে থিওসফিক্যাল সোসাইটিতে যেতেন। এরপরেই এগ্যাপি নামের নিউইয়র্কের একটি থেলেমা ধর্মের লজে যোগ দেন। তিনি এত বেশি যাদুচর্চা করতেন যে, তাতে লজে জ্বীন শয়তানদের উপদ্রব বাড়তে থাকে। সেসব শয়তান অন্য সদস্যদের ক্ষতি করে কিনা এই আশংকায় ছিল তারা।Jane Wolfe নামের এক O.T.O মেম্বার ক্রোওলিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন,"আমাদের জ্যাক Witchcraft,  houmfort, voodoo প্রভৃতি চর্চায় মোহিত হয়ে আছে।শুরু থেকেই তিনি কিছু একটাকে আহব্বান(ডাকছেন) করছেন- সেটা যাই হোক, আমি ততদিন পর্যন্ত চিন্তিত হয়ে থাকব যতদিন না তিনি কোন ফলাফল পান।"[৩৯]।জ্যাক পার্সন্সের অন্য এক সতীর্থ ক্যামেরন বলেছেন যে তিনি পার্সন্সের কাছে ইউএফও দেখেছেন[৪১]। এলিয়েন নিয়ে সামনে বিস্তারিত আসছে।

পার্সন্স যখন এক সময় বৈজ্ঞানিক ক্যারিয়ার গড়তে একটু অসুবিধায় পড়লেন এবং দাম্পত্যের টানাপোড়েনে পড়লেন, তিনি আবারো অকাল্টিজমে ফিরে গেলেন। এবার তিনি sex ritual পালন করতে শুরু করলেন থেলেমাইক মিস্টিসিজমে তথা সকল যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক দর্শনে উল্লিখিত ব্রহ্মচৈতন্যে বিলীন হবার জন্য। এ চেষ্টাকে তিনি বলেছেন, the Crossing of the Abyss"। এ কথা উইকিপিডিয়াতেও এসেছেঃUnable to pursue his scientific career, without his wife and devoid of friendship, Parsons decided to return to occultism and embarked on sexually based magical operations with prostitutes. He was intent, informally following the ritualistic practice of Thelemite organization the A∴A∴, on performing "the Crossing of the Abyss", attaining union with the universal consciousness, or "All" as understood in Thelemic mysticism, and becoming the "Master of the Temple".
[উইকিপিডিয়া]

জ্যাক পার্সন্স স্বপ্নে এক মহাশক্তিধর ব্যক্তিকে দেখেন; যিনি তাকে অনুপ্রাণিত করছিলেন তার উদ্ভাবনী চেতনাকে,যিনি তাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন অপবিজ্ঞান ও যাদুবিদ্যাকে মিলিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য। এই মহান ব্যক্তির কথা তিনি তার লিখিত কিতাবেও উল্লেখ করেন। তিনি তাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তার নাম উল্লেখ করেন "বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল"। পার্সন্স ছিলেন আব্রাহামিক ধর্মগুলোর চরম বিদ্বেষী। দাজ্জাল নামের পাশাপাশি বাবালন নামের আরেক শক্তিধর সত্তার কথা তিনি একটি বইয়ে উল্লেখ করেন যে তিনি পৃথিবীতে এসে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর কর্তৃত্ব রহিত করার পিছনে কাজ করবে । উইকিপিডিয়া যা সরাসরি উল্লিখিতঃAccompanying Parsons' "Oath of the Abyss" was his own "Oath of the AntiChrist", which was witnessed by Wilfred Talbot Smith. In this oath, Parsons professed to embody an entity named Belarion Armillus Al Dajjal, the Antichrist "who am come to fulfill the law of the Beast 666 [Aleister Crowley]".[131] Viewing these oaths as the completion of the Babalon Working, Parsons wrote an illeist autobiography titled Analysis by a Master of the Temple and an occult text titled The Book of AntiChrist. In the latter work, Parsons (writing as Belarion) prophesied that within nine years Babalon would manifest on Earth and supersede the dominance of the Abrahamic religions.
[উইকিপিডিয়া]

তিনিই সর্বপ্রথম রকেটসায়েন্টিস্ট। তার কথায় বোঝা যায় 'dajjal' নামের কারো অনুপ্রেরণা ও শিক্ষার দ্বারা রকেট আবিষ্কার করেন এবং কথিত মহাকাশ বিজয়ের পথ উন্মোচন করে ফাদার অব স্পেস এজ খেতাব অর্জন করেন।পার্সন্স পরবর্তীতে ইজরায়েলের রকেট রিসার্চ প্রোগ্রামে কাজ করতেন। পার্সন্স মাত্র ৩৭ বছর বয়সে রহস্যজনকভাবে মারা যায়। বিজ্ঞান তার ঋণ শোধ করতে পারবে না। তার সম্মানে চাঁদের একটি খাদের নাম তার নামে রাখা হয়েছে।

[তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া]

বিস্তারিতঃ
wikipedia.org/wiki/Jack_Parsons_(rocket_engineer)


মহান বিজ্ঞানীগন যাই করেন সেটাই সাইন্স! হোক সেটা যাদুচর্চা কিংবা শয়তান বা দাজ্জাল পূজা। পার্সন্সের স্পেস এইজ এর পিতা না বলে দাজ্জালি যুগের অন্যতম পিতা বললে বোধহয় সবচেয়ে ভাল হয়। বস্তুত, আউটার স্পেস এবং সর্বোপরি গোটা হেলিওসেন্ট্রিক  সৃষ্টিতত্ত্বই বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জালের জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যাইহোক, এবার সামনে যাওয়া যাক।    নাসা প্রতিষ্ঠার পরের বছর ১৯৫৯ সালে অ্যান্টার্কটিক ট্রিইটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়, ১৯৬১ সালে কার্যকর হয়। এই ট্রিইটির মূল উদ্দেশ্য ছিল, সাধারন জনগন যাতে অজানা কারনে কোন গাইড ছাড়া ওই স্থান না অতিক্রম করতে পারে। গাইড নিয়ে গেলেও যাতে তাদের ভ্রমন নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ এলাকার মধ্যে থাকে। ১৯৬২ সালে "অপারেশন ফিশবৌল" শুরু করে। হঠাৎ করে নিউক্লিয়ার অস্ত্রগুলো আকাশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। একই বছর জেএফকে ঘোষণা করেন,"We choose go to the moon"।জ্যাক পারসনস পৃথিবীর বাহিরে যাওয়া তথা কথিত স্পেস ট্রাভেলের সম্ভাবনার দরজা খুলে দেন রকেটের প্রপালশন সিস্টেম আবিষ্কার এর দ্বারা,এজন্য তাকে father of space Age বলে ডাকা হয়।
১৯৬৬ সালে "লুনার অর্বিটার ১" সর্বপ্রথম স্পেস থেকে পৃথিবীর প্রথম অফিশিয়াল ছবি প্রকাশ হয়(ডানের চারটি ছবির প্রথমটি)। এরপর ১৯৬৮ সালে এ্যাপোলো ৮ ২য় ছবিটি প্রকাশ করে। এরপরই ১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মত চন্দ্রগমনের নাটকটি করে। নাটক বলবার কারন শীঘ্রই বুঝবেন। এ্যাপোলো ১১ নভোযানে প্রথম চাঁদে মানুষের অবতরণের নাটকেও পৃথিবীর ছবি(৩য়টি) প্রকাশ হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, তাদের নাটকের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল গোলক পৃথিবীর বিশ্বাসকে প্রমাণ করা। সেই সাথে হেলিওসেন্ট্রিজম, আউটার স্পেসের চিন্তাকেও সত্য বলে প্রমাণ করা। অবশেষে, ১৯৭২ সালের শেষ চন্দ্রযাত্রায় নাসা চার নং ছবির blue marble টি প্রকাশ করে। ব্যস, পৃথিবী সমতল নয় বরং গোলাকার(প্রমাণিত)। যদিও দুঃখজনক সত্য যে আজ পর্যন্ত যমীনে কার্ভাচারের অস্তিত্বের প্রমাণ খুজে পাওয়া যায় নি। এর দ্বারা ১৯০০ সালের শুরু দিয়ে চলা ইউনিভার্সাল পিকচার ফিল্মের শুরুতে দেখানো ছবির অনুমানই সত্য,সমস্ত যাদুকরদের আকিদাগত অবস্থান সঠিক। বরং আসমানী কিতাবসমূহের অনুসারীদের অবস্থান ভুল। বিবর্তনবাদের বিরোধীদের বিশ্বাস ভুল। এরপর থেকে চাদে যাওয়া নিয়ে একে একে গল্পের বই বের হতে থাকে। মিউজিক ভিডিও গুলোতে স্পেস ট্রাভেল,চাদে গমন নিয়ে গান বাজতে থাকে। পত্র পত্রিকা, প্রাতিষ্ঠানিক বইপুস্তকে সায়েন্টিফিক নিউ ডিস্কোভারি সদর্পে প্রচার চলতে থাকে। এভাবেই পঞ্চাশ বছর যাবৎ চলছে। আজ আরো জটিল অবস্থা। হলিউডের অধিকাংশ ফিল্মের প্লট এলিয়েন ইনভ্যাশন আর স্পেস ট্রাভেল নিয়ে। মার্ভেল কমিকের সুপারহিরোদের ফিল্মগুলোও স্পেসবেজড।এভাবেই চলছে। আজ সকলের প্রশ্নাতীত বিশ্বাস- দুনিয়া বর্তুলাকার এবং সূর্যের চারপাশে সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার গতিতে ঘুরছে!!! মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল। এখনো সব কিছু অনন্তে ছুটে চলছে, এসব শুরু হয়েছিল বিগব্যাং এর পর দিয়ে। ওরাই তখন থেকে টিভিশোতে হাজার বার বলত,"Math, science , history, unraveling the mystery . That all started  with the big bang !"

ক্যাথলিক প্রিস্ট লেমাইত্রের বিগব্যাং থিওরিটি আরো বড় কুফরি আকিদার ভিত্তিমাত্র।এর উপরেই গোটা আউটার স্পেসবেজড বিবর্তনবাদী কস্মোলজিক্যাল মিস্টিসিজমের সূত্রপাত।আজকের প্রজন্ম শুধুমাত্র এজন্যই এসব বিশ্বাস করে যে, তারা শৈশব থেকে চোখের সামনে টিভি,পত্রিকা,বইপত্রে এসব দেখে ও পড়েই বড় হয়েছে। প্রকৃত সত্য এখন তাদের কানে পাগলাটে এবং উদ্ভট শোনায়। অর্থাৎ তারা ব্রেইনওয়াশড। যদিও ওরা যা বলে তার পর্যবেক্ষণযোগ্য প্রমান নেই এবং সেসব শয়তানি রিচুয়ালিস্টিক কাল্টের ফসল, এরপরেও তাতেই অধিকাংশ অন্ধ বিশ্বাস করে। যে আউটার স্পেস(অনন্ত মহাশূন্য) শব্দ ও ধারনাটি ১৮৭৫ সালের পূর্বে ছিলই না, সেটা আজকে চিন্তা গবেষণা,চিত্তবিনোদন ও শিক্ষার বিষয়! অথচ আপনি কি জানেন, ভ্যাকুয়াম আউটার স্পেস বা মহাশূন্যে রকেট আদৌ চলতে সক্ষম কিনা?
জ্বিনা,একদমই না। ভ্যাকুয়ামে রকেটের প্রপালশন সিস্টেম কাজ করে না। সুতরাং ওরা আজ যাই দেখায় সবই হাস্যকর পর্যায়ের মিথ্যাচার এবং ধোকা ছাড়া আর কিছুই না[৬]।সবচেয়ে অদ্ভুত এবং হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, আজকের দিনে এসে নাসার একাধিক এস্ট্রনমার বলছেন, তারা আজ পর্যন্ত লো আর্থ অর্বিটই অতিক্রম করেন নি! এক এ্যাস্ট্রনমার স্পেস স্টেশন(হলিউডের বেজমেন্ট) থেকে বলছিল, "এই মুহূর্তে আমরা শুধুমাত্র পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করতে পারি, এটাই সর্বোচ্চ সীমা যে পর্যন্ত আমরা যেতে পারি!" অপর আরেক এস্ট্রনমার তথা স্পেস অভিনেতা বলেন," বর্তমানে আমরা স্পেস স্টেশনে বসে যেসব প্রযুক্তির উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছি সেসব আমাদেরকে ভবিষ্যতে 'লো আর্থ অরবিট' অতিক্রমের লক্ষ্যকে পূরণ করবে। এবং আমি মনে করি এটা হবে মানবজাতির জন্য এক মহাসূচনা যে তারা লোআর্থ অর্বিট অতিক্রম করবে।"[৭]

এর মানে কি!!? অর্থাৎ, তারা কখনোই low earth orbit অতিক্রম করেনি! চাঁদে যেতে হলে অবশ্যই লো আর্ত অর্বিট অতিক্রম করতে হবে। তাহলে চন্দ্র অভিযানের নামে যা দেখানো হলো সেসব কি??
সোজা উত্তর হচ্ছে, নাটক! এ কথা রেখেই তারা সরাসরি গান বানিয়েছে আমজনতার এই হাস্যকর বিশ্বাসকে বিদ্রুপ করেঃ"Space may be the final frontier but it's made in a Hollywood basement .. "[৪]
অর্থাৎ এই স্পেস হয়ত (ধোকাঁর) শেষ সীমান্ত যা কিনা হলিউড বেইজমেন্টে তৈরি!
তার মানে চন্দ্র অভিযান ছিল শুধুই কেপলার,কোপার্নিকাস ও যাদুকরদের প্রাচীন স্বপ্নের উপর করা নাটক!এজন্যই এতক্ষন একে নাটক বলছি।আরেক নাসা এস্ট্রোনমার (ডন পেটিট) বলেন, তাদের কাছে অর্ধশতাধিক বছরের পুরোনো চাদে যাওয়ার প্রযুক্তি এখন আর নেই। আর এ যুগে সেটা পুনঃনির্মাণ খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়! আরেকজন বলছেন, চাদে গমনের কোন প্রকার তথ্য প্রমানই তাদের হাতে নেই!!! অ্যাস্ট্রোনমার ডন পেটিট বলেনঃ"আমি চাঁদে কয়েক ন্যানো সেকেন্ডে যেতে পারতাম, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের হাতে আর সেই প্রযুক্তি নেই যেটা আগে ছিল। আমরা সেটাকে ধ্বংস করে ফেলেছি।এবং এটা খুবই কঠিন কাজ পুনরায় তৈরি করা।"
নাসার হেডকোয়ার্টারের অপর এক এস্ট্রনমার বলেনঃ"আমি এখন আর ওই প্রযুক্তির কোন ডাটা খুজে পাই না, যা আগে ছিল। ওই যন্ত্রগুলো আর নেই, পুরনায় কাজ করার জন্য।"

আরেকজন বলেন, "আমি জানি না ওইসব নথি গুলো কই। এবং এও বলতে পারি না সেসব আদৌ আছে কিনা।"[৭]
এবার বুঝুন, এরা বলছে ৬০ -৭০ বছর আগের প্রযুক্তি আরো উন্নত ছিল যা এখন নেই!!!! সে যন্ত্রাংশ সংক্রান্ত কোন তথ্যই নাকি নেই। এগুলা পুনরায় তৈরি নাকি খুবই কষ্টের! আজ আমরা ২০২০ সালে দাড়িয়ে এ কথাগুলো শুনছি। তারা ওই সময়ের প্রযুক্তিকে আরো উন্নত বলছে যখন মোবাইল ফোনই ছিল না!! আমরা দেখছি দিন যতই সামনে আগাচ্ছে প্রযুক্তি ততই উন্নততর হচ্ছে। কিন্তু এরা বলছে উল্টোটা! এই উল্টো কথার ব্যাখ্যা হচ্ছে কেউই  কখনো লো আর্থ অর্বিটই অতিক্রম করেনি, যেমনটা নাসার এস্ট্রনমারগনকে বলতে দেখলেন, চাঁদে যাওয়া তো বহু দূরের হিসাব। নাসার এ্যাপোলো ১২ এর এ্যাস্ট্রোনট এ্যালান বিনকে ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট অতিক্রমের বিষয় প্রশ্ন করা হয়েছিল, যেহেতু চাঁদে যেতে সেটাকে অবশ্যই অতিক্রম করতে হয়ঃ
"প্রশ্নকর্তাঃ কোন ধরনের বাজে অনুভূতি হয়েছিল ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট অতিক্রমের সময়?
এ্যালান বিনঃ না, আমি নিশ্চিত নই যে আমরা অত দূর পর্যন্ত গিয়েছি যার জন্য ভ্যান এ্যালেন বেল্টকে অতিক্রম করতে হবে। হয়ত আমরা অতদূরই যাইনি। আমি এও জানিনা ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট এর দূরত্ব কোথায়।
প্রশ্নকর্তাঃ ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট পৃথিবীর উপরে ১০০০-২৫০০০ মাইল দূরত্বব্যাপী বিস্তৃত।
এ্যালেন বিনঃ (হেসে) ও আচ্ছা তাহলে আমরা এটাকে ভেদ করে গিয়েছি,কিন্তু কোনধরনের রেডিয়েশন টের পাইনি। কেউ হয়ত বলবে আমরা ভেতরে ছিলাম অথচ টের পাইনি কি করে! আমরা ভেতর থেকে রেডিয়েশন জাতীয় কিছুই টের পাইনি। আসলে আমাদের মিশনের সময় ভ্যান এ্যালেন রেডিয়েশন বেল্টের অস্তিত্ব আবিষ্কৃতই হয়নি।"[৭]

দেখলেন, কিরূপ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য! একবার বলছে, আমরা অতদূর যাইইনি। তারা জানেই না ওরকম কোন রেডিয়েশনের অস্তিত্ব ওখানে ছিল। এরপর ডিস্টেন্স জেনে বলছে গিয়েছি কিন্তু কিছুই অনুভব হয়নি। তাদের সময় এসবের ব্যপারে কিছুই জানত না। হাস্যকর ব্যপার হচ্ছে নাসা এখনো ভ্যান এ্যালেন বেল্টকে ভেদ করতে সক্ষম নভোযান তৈরি করতে পারেনি, এখনো অরিয়ন নামের মহাকাশযান তৈরির কাজ চলছে, সেখানে ভাঙ্গাচোরা এ্যানালগ প্রযুক্তির যুগে তাদের নভোযান সেই রেডিয়েশন বেল্ট ভেদ করে গিয়েছিল,কেউ টেরও পায়নি!! তার দাবি অনেকটা এরকমঃ ধরুন, কেউ পাতলা টিন দিয়ে একটা গাড়ি তৈরি করলো,সেটায় কিছু যাত্রী এমন এক অন্ধকার পথে যাবে যার সামনে কি আছে বা না আছে কেউ কিছু জানে না। ওই পথে মোটা লোহার সুউচ্চ ব্যারিকেড ছিল। সেটাও গাড়ির নির্মাতা,চালক কেউই জানত না। এরপর তারা ওই অন্ধকার পথে রওনা করে, কিছু দিন পর ফিরে এসে দাবি করে, তারা গন্তব্য থেকে ঘুরে এসেছে কোন কিছুতে ধাক্কাও লাগেনি। কেউ কিছু অনুভব করে নি!! তখন জানানো হয় ওখানে লোহার মজবুত বেষ্টনী ছিল!

এবার বলুন, কেউ কি তাদের গন্তব্যে যাবার দাবি মেনে নেবে? চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় তারা কেউই যায়নি। যদি ভিডিও বা ছবিও দেখায় তবে তা বানোয়াট। এজন্যই এখন নাসা বলছে তাদের ওই বাহনের প্রযুক্তির কিছুই এখন নেই, নাসার নথিতে কোন তথ্যও নেই সেটার ব্যপারে! না থাকাটাই স্বাভাবিক, এল্যুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে লোহালক্কড় মুড়িয়ে, 'হলিউডের বেজমেন্টে' ভিডিও বানিয়ে প্রচার করলে সে যন্ত্র বা প্রযুক্তির কিছুরই ডকুমেন্টস থাকবে না। Outer space বা চন্দ্রভ্রমণের মিথ্যাচারীতা নিয়ে অনেক রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আছে, হাজারো প্রমাণ আছে, যেহেতু পৃথিবী ত্যাগের বা  আকাশের দরজাভেদের কথাই প্রমাণ করতে পারছে না, তাই সেসব হাজারো তথ্যপ্রমাণ উল্লেখের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।আসল বিষয় হলো আউটার স্পেস, চাদে-গ্রহে ভ্রমন শুধু হলিউড আর কল্পনাতেই সম্ভব, কেননা এসবের বাস্তব অস্তিত্ব আদৌ নেই। আউটার স্পেস,গ্র‍্যাভিটি, হেলিওসেন্ট্রিজম একদম মিথ্যা।  সত্যিকারের সৃষ্টি যাদুকরদের কল্পনার মত নয়। বরং ঐরূপ, যেমনটি আসমানি কিতাব সমূহে আছে।যাইহোক, এত সব নাটকের দ্বারা ওদের এক বড় উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে- সেটা হচ্ছে, Outer space, Heliocentric Astronomy এবং spherical earth(বর্তুলাকার পৃথিবী) তত্ত্বে সবাইকে কঠিনভাবে ব্রেইনওয়াশ। এখন আর কেউই সন্দেহ করেনা। অনেক অল্প খরচেই ছবি আর ভিডিও বানিয়েই এটা করতে সক্ষম হয়েছে।

যাইহোক, আপনি যদি একজন মেইনস্ট্রিম কস্মোলজিতে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তবে এটা অবশ্যই অপ্রিয় সত্য যে,আপনার এরূপ বিশ্বাসের দলিল হচ্ছে হলিউডের কিছু মুভি,যাদুকরদের প্রাচীন দর্শন, কেপলারের চাদে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে লেখা উপন্যাস এবং স্পেস নিয়ে লেখা অন্যান্যদের সায়েন্স ফিকশন গল্প,কমিক, মিউজিক ভিডিও, এনিমেশন এবং ফটোশপে তৈরি কিছু ছবি ইত্যাদি। কতটা হাস্যকর 'বিশ্বাস'!আজকে এই বিশ্বাসগত দীনতা নিয়ে মানুষ নিজেদের স্মার্ট ভাবে। অনেক জ্ঞানী মনে করে। অন্যদিকে অবজ্ঞা করে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার বলা সৃষ্টিতত্ত্বে।এরা আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে বিকৃত ধারনা রাখে। এরা যাদেরকে(স্পেস এজেন্সি) বিশ্বাস করে এরা মূলত ফ্রিম্যাসনিক অকাল্ট এজেন্সি! এসবের প্রত্যেক প্রবক্তারা ছিলেন যাদুকর, গুপ্তসংগঠনের শয়তান কিংবা দাজ্জালের উপাসক! স্পেস এজের জনক জ্যাক পার্সন্সই ছিলেন একজন শয়তানের উপাসক, যাদুকর। পৃথিবীর সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত এলিস্টার ক্রৌলির সতীর্থ। এরা যা বলে বা দেখায় তা বিজ্ঞান নয় বরং অপবিজ্ঞান।

আজকের মহাকাশতত্ত্ব প্রাচীন প্যাগান দ্বীনগুলোর একরকমের রূপক এম্বডিমেন্ট,যেগুলোয় সূর্যকে দেবতার আসনে রেখে পূজা করা হয়। এজন্যই আজ পাঠ্যপুস্তকে সমস্ত শক্তির মূল বা উৎস হিসেবে সূর্যকে লেখা হয়।'হেলিওসেন্ট্রিক' শব্দটাই মুশরিকদের আকিদা নির্ভর। যেখানে সানগড হেলিওর[২] অর্চনা করা হয়। বিভিন্ন রিলিজিয়াস ও স্পিরিচুয়াল ট্রেডিশনে সূর্যদেবের অবস্থান খুবই তাৎপর্যপূর্ন। প্রাচীন মিশরীয় পৌত্তলিকদের সানগড ছিল হোরাস। এসবের সাথে আজকের মাসূনীদের সংযোগ পাওয়া যায়। অর্থাৎ এগুলো পরিশেষে দাজ্জাল বা আসন্ন মিথ্যা মসীহের কাছে গিয়ে শেষ হয়। আপনি কি জানেন হেলিওসেন্ট্রিক মডেলের অন্যতম পথিকৃৎ কোপার্নিকাস সূর্যের ব্যাপারে কি ধারনা রাখতো? তিনি যাদুশাস্ত্রের হার্মেটিক ট্রেডিশনের অনুসারী ছিলেন।এজন্য তিনি সূর্যের অবস্থানের যথার্থতা আরোপের জন্য হার্মিস ট্রিস্মেজিস্টাসের রেফারেন্স দেন। তিনি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত তার এক গ্রন্থে বলেন, "সবার ঠিক মাঝখানে সিংহাসনে উপবিষ্ট সূর্য। সবচেয়ে সুন্দরতম মন্দিরে উপবিষ্ট সূর্যকে কি আমরা এরচেয়ে ভাল কোন স্থানে বসাতে পারি, যেখান থেকে সর্বদিকে আলো ছড়াবে? তাকে 'আলো,মন,মহাবিশ্বের শাসক' নাম গুলো দ্বারা সঠিকভাবেই ডাকা হয়। হার্মিস ট্রিসমাজিস্টাস সূর্যকে বলতেন 'দৃশ্যমান ঈশ্বর' সফোক্লিস -ইলেক্ট্রা একে বলতেন সর্বদ্রষ্টা'। তাই সূর্য তার রাজকীয় সিংহাসনে বসেন, সেখান থেকে তার সকল সন্তানঃ গ্রহদের শাসন করেন যারা তাকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে।"

আশা করি, মুশরিকদের হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিক্যাল আকিদা এখন আরো স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করছেন। 'হেলিও'সেন্ট্রিক স্ফেরিক্যাল আর্থ বেজড কস্মোলজি স্বতন্ত্র প্যাগান ধর্মেরই আংশিক বিশ্বাস। আজকে ওসব মুশরিক যাদুকর ও পৌত্তলিকদের বিশ্বাসটিই প্রতিষ্ঠিত কস্মোলজি। এরা যে অসত্য শিরকি বিশ্বাসকেই জোর করে সত্য বলে প্রচারণা চালায়, এর প্রমান হচ্ছে ওদের নিজেদের প্রচারিত তত্ত্বগুলোর শুদ্ধতার প্রশ্নে বেপরোয়া ভাব। কোপার্নিকাস বলেন,"এই হাইপোথিসিস গুলো সত্য হতে হবে এমনকোন প্রয়োজনীয়তা নেই, প্রকৃতপক্ষে এমনকি সম্ভাব্য সত্য হবারও প্রয়োজন নেই "!

আচ্ছা! ভুয়াই যেহেতু, তাহলে এই ফিলোসফিক্যাল বিলিফ কি উদ্দেশ্যে বানানো!? পৌত্তলিকতার দিকে ধাবিত করার জন্য!? কুফরি মেটাফিজিক্স তৈরি করে কাফির ও মুশরিক বানানোর জন্য!?
নিঃসন্দেহে, হার্মেটিক কিংবা কাব্বালিস্টিক বিদ্যা যাদের থেকে এসেছে তাদের অধিকাংশই এটাই চায়।
কোপার্নিকাসদের কথা অনেকটা এরূপ যে, আমাদের তত্ত্ব সত্য হোক বা না হোক, সেদিকে কোন পরোয়া করিনা, বরং যেভাবেই হোক, সৃষ্টিতত্ত্বেও এটা প্রতিষ্ঠা করতে হবে যে সূর্যদেব জগৎ সমূহের মধ্যভাগে সিংহাসনে সমাসীন,যার চারদিকে সমস্তকিছু আবর্তিত হয়ে পূজা করে। আর সানগড হেলিও সবাইকে আলোকিত করেন এবং জীবনীশক্তি প্রদান করেন।


জেসুইট মিশনারী কেন হেলিও পূজার এ মতবাদ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছিল! আপনারা অনেকেই জানেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মটা প্রাচীন রোমান-গ্রীক পৌত্তলিকতা দ্বারা অনেক প্রভাবিত। ওদের ক্রিসমাস, ত্রিতত্ত্ব প্রভৃতি গ্রেসিয়ান-রোমান পৌত্তলিকদের থেকে গ্রহন করেছে। অর্থাৎ আজকের ক্যাথলিক মিশনারীরা প্রাচীন রোমান পৌত্তলিকদের আধুনিক ভার্সন।আপনারা কি প্যাগান ফিলসফার হাইপাথিয়াকে ভুলে গেছেন? তিনি কোপার্নিকাসেরও বহু আগে হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজির কথা বলে গেছেন। তারও আগে ঈসা আলাইহিসালাম এর জন্মের ৪'শ বছর পূর্বে যাদুকর অভিশপ্ত পিথাগোরিয়ানরা (এ্যারিস্টোরকাস, ফিলোলাউজ)। তারা পেয়েছেন ব্যবিলনিয়ান এস্ট্রলজি ও যাদুশাস্ত্র থেকে।
বর্তুলাকার পৃথিবীর বর্ননাও বাবেলে জন্মানো কাব্বালাতে সুস্পষ্টভাবে আছে(বিগত পর্বগুলোয় উল্লেখ করেছি)। সেখানে এই অপবিদ্যার ধারা কোথা এসেছে, তা বর্নিত আছে সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতে। সুতরাং সূর্য উপাসকদের ট্রেডিশনাল বিশ্বাসকে খুব সহজেই অন্যান্য কাল্ট রিচুয়ালের সাথে ক্যাথলিকরা গ্রহন করেছে। প্রাচীন প্যাগানিজম সারা বিশ্বে সুক্ষ্মভাবে ছড়ানোর জন্য জেসুইট মিশনারী অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছিল।এজন্যই জেসুইটের প্রতীকেই সূর্যদেব হেলিওর প্রতীক খচিত। খ্রিস্টান নামধারী মুশরিকগুলো পরোক্ষভাবে এরই উপাসনা করে। মুসলিমদের মধ্যেও এই কস্মোলজিক্যাল প্যাগানিজম সফলভাবে সঞ্চালিত। আজ অধিকাংশ মুসলিমদের অবস্থা এরকম যে, যখন এ ব্যপারে সতর্কও করা হয়, তারা মুশরিকদের এই শিরকযুক্ত বিশ্বাসকে রক্ষা করার জন্য যুক্তি উপস্থাপন করে। এরা কুরআন থেকেই রেফারেন্স দেয়। এমনকি সতর্ককারীকে তাকফির পর্যন্ত করে! ইন্না-লিল্লাহ!! হয়ত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা জ্ঞান ধীরে ধীরে উঠিয়ে নিচ্ছেন। অজ্ঞতা সর্বত্র গ্রাস করছে।

আপনি Neil DeGrasse Tyson কে দেখেছেন?  এর পরনের কাপড়েই সূর্যদেবের প্রতীক খচিত। এরাই আজকের মহান সায়েন্টিস্ট। এরা অবশ্যই সূর্যদেব হেলিও/এ্যাপোলো/হোরাস/জিউসের ব্যপারে ভালভাবেই জানেন। তাদের বলা মহাকাশ সংক্রান্ত সকল তথ্যেই কোন না কোন রিচুয়ালিস্টিক অকাল্ট ম্যাসেজ এনকোড করা। আলোর গতি 299 792 458 m / s। এটা জিপিএস কোঅর্ডিনেশনে পিরামিডের লোকেশন[৩]! সূর্যকে প্রদক্ষিনে পৃথিবীর গতি ৬৬৬,০০ mph!, প্রতি বর্গমাইলে . ৬৬৬ ফুট, পৃথিবী তীর্যকভাবে কাত হয়ে আছে ৬৬.৬ ডিগ্রিতে। দেখে মনে হয় ইচ্ছেকরেই স্যাটানিস্টদের প্রিয় ডিজিটের সাথে মিল রেখে প্রত্যেক জিনিসের হিসাব রাখা হয়েছে। সবকিছুই কেমন যেন এনকোডেড রিচুয়াল। এটা অসম্ভব নাহ।
ফ্রিম্যাসনের মত গুপ্ত সংগঠনগুলোর কর্মী-সদস্যদের কর্মপদ্ধতির একটি হচ্ছে সমস্তকিছুতে ওদের বিশেষ চিহ্নকে প্রকাশ্যে রাখা যার তাৎপর্য শুধুমাত্র অন্য সদস্যরাই জানবে। এটা তাদের ব্যবহৃত এক ধরনের ভাষা।কোপার্নিকাস,নিউটন, কেপলাররা খুবই সমাদৃত ফ্রিম্যাসন। এদিকে দাজ্জ্বালের স্বঘোষিত অনুসারী জ্যাক পারসনস এর চিন্তা ও বিদ্যাভিত্তিক গবেষণার বদৌলতে গজানো এই কস্মোলজিটিকে তারা অবশ্যই শয়তানের ইনভোকেশনে আনুকূল্যতা রেখেই ডিজাইন করবে, এমনটাই প্রত্যাশিত ।এজন্যই প্রত্যেক দেশের মহাকাশ সংস্থা তাদের অফিশিয়াল সিম্বলে ভেক্টর সিম্বল রেখেছে। আশ্চর্যজনক হলেও 7 এর ন্যায় প্রতীকটি প্রত্যেক স্পেস এজেন্সি যার যার প্রতীকরূপে রেখেছে[৮]। আপনি দেখলে অবাক হবেন যে, আমেরিকা, চায়না দেশগুলো বাহ্যত মাটির উপরে দা কুমড়া সম্পর্ক দেখালেও স্পেস স্টেশনে দহরমমহরম আন্তরিকতা! এটা প্রমান করে প্রত্যেক স্পেস এজেন্সি একে অপরের সাথে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এজন্য এরূপ চিন্তা করা একদমই অর্থহীন যে, 'মার্কিন নাসা মিথ্যাচার করলেও তো অন্যান্য সবাই মিথ্যাচার করবেনা'। বস্তুত, আজকের ইউএন এর গ্লোবাল গভার্মেন্টের আওতাধীন মানবরচিত সংবিধানে পরিচালিত দেশগুলোর ভেতরকার যে বাহ্যিক দ্বন্দ্ব আমরা দেখি, সেটা শুধুই বাহ্যিক। কাফিররা এক মিল্লাত।

প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের বিগব্যাং→ইনফিনিট স্পেস→ প্লানেটারি মোশন→ হেলিওসেন্ট্রিজম→বিবর্তনবাদ→ বিগক্রাঞ্চ ইত্যাদি সবই একই সুতোয় গাথাঁ স্বতন্ত্র বিশ্বাস ব্যবস্থা। একটি স্বতন্ত্র ধর্ম। এ ফিলোসফিক্যাল ধর্মের অনুসারীরা যদিও বাহ্যত হেলিওসেন্ট্রিক প্যাগানিজমের প্রচার করে, বিভিন্ন মিডিয়া প্রোগ্রামে লুক্কায়িত সত্যিকারের কস্মোলজিক্যাল অর্ডারকে বিদ্রুপ করে উপস্থাপন করে। এজন্য আজ পর্যন্ত অসংখ্য ফিল্ম,এ্যনিমেটেড শো,গান গুলোয় জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যাবস্থাকে তুলে ধরেছে, হয়ত এটা দর্শকদের জন্য একরকমের স্যাটায়ার বা বিদ্রুপ,এটা এজন্য যে তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য জানে[৯]।

একইভাবে চন্দ্র অভিযানের নাটক নিয়েও এরূপ satirical message ফিল্ম/কার্টুনগুলোয় অসংখ্যবার দেখানো হয়েছে[১০]।এরা একদিকে যেমন করে মেইনস্ট্রিমে হেলিওর প্যান্থিয়ন(সূর্যদেবের মন্দির) নির্মান করছে, তেমনিভাবে অন্যদিকে ওদের গোপন নথিগুলোয় সত্যিকারের কস্মোলজির উল্লেখ করে গোপন রাখছে। ওরা এমনকি বিমানের ডিজাইনের ডেটায় পৃথিবীকে ননরোটেটিং ফ্ল্যাট ফিক্সড আর্থ হিসেবে লিখছে! অর্থাৎ দুনিয়ার সবকিছুকেই সত্যিকারের কস্মোলজিতে কম্প্যাটিবল করে তৈরি করছে, অথচ মেইনস্ট্রিমে প্রচার করছে ভুয়া সূর্যপূজার কস্মোলজি। নিচের নাসার অফিশিয়াল ডকুমেন্টটি দেখুনঃ

শুধু নাসা নয়, ইউএস আর্মি ও সিআইএর অসংখ্য ডকুমেন্টে (নিচের কিছু ছবিতে দেওয়া হলো) সমতল পৃথিবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। অর্থাৎ ওদের সমস্ত রিসার্চ সমতল জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজিকে ঘিরে যদিও উলটো অফিশিয়ালভাবে উল্টোটা প্রচার করে। ওরা খুব ভাল করেই জানে যে বিপদ বিপরীতটাই সত্য। সমতল জিওসেন্ট্রিক জিওস্টেশনারী বিশ্বব্যবস্থা যদি ভুলই হয়,তবে এটা নিয়ে তাদের এত মাথাঘামানো কেন! বছর দুয়েক আগের কথা। লিডিং মহাকাশ সংস্থা নাসার অফিশিয়াল পেইজে এমন কিছু লিখি, যার ফলে নাসার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার এলবার্ট কফ্রিন আমার কথার জবাব দিতে হাজির হন। এরপরে শুরু হলো লম্বা বিতর্ক। কিছুক্ষন পর দেখি, আরো অনেক আম্রিকান হাজির। এদেরকে দেখে পেইড মনে হলো, অধিকাংশই স্পেস এজেন্সির সাথে সম্পৃক্ত, কারও বা আইডির বন্ধুতালিকা শূন্য, কোন ব্যক্তিগত কিছুই নেই। অর্থাৎ কিছুলোককে প্রশ্নের জবাব /বিতর্কের জন্য ভাড়া করা। এরা অনেক যুক্তি দিয়ে দমাতে চেষ্টা করে বিফল হলো, অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছায় সবগুলোকে পালাতে বাধ্য করলাম। আর কেউ প্রশ্ন করা বা জবাব দেওয়ার জন্য আসলো না,সব গুলো নিশ্চুপ। কিন্তু দু মাস পরে সেই লিংকে গিয়ে দেখি আমার লেখাগুলি এবং গোটা তর্কবিতর্কের কমেন্টবক্স রিমুভ করে দেওয়া হয়েছে! টেক জায়ান্ট গুগলও জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিষয়টি সহ্য করতে পারে না। এজন্য তারা ইউটিউবে সার্চ কুয়েরি থেকে জিওসেন্ট্রিসিটির সমস্ত ডকুমেন্ট মুছে দিয়েছে, এবং বিপরীতে  রেখেছে এর বিরুদ্ধ যুক্তি এবং বিদ্রুপাত্মক ভিডিও। কেউ এখন জিওসেন্ট্রিক অ্যাস্ট্রোনমির কিছু লিখে সার্চ দিলে,রেজাল্টে আসবে এটাকে নিয়ে করা সবধরনের ট্রোল ভিডিও।এসব প্রমাণ করে কিছু একটাকে লুকিয়ে বা চেপে রাখার প্রচেষ্টা।

মূলত, এই এস্ট্রনমিক্যাল করাপশন ডিভাইন ডমিনিয়নের(আল্লাহর সর্বময় কর্তৃত্ব) ভয় থেকে সাধারন মানুষকে নিস্কৃতি দিয়েছে, এখন অধিকাংশ বিশ্বাস করে, সে অনন্ত মহাশূন্যের তুলনায় কোন এক ক্ষুদ্র এক প্ল্যানেটের উপর ধূলিকণার চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আর কিছু নয়। এরা আসমানবাসীদের রিলিজিয়াস পার্স্পেক্টিভে দেখছে না,বরং র্যাশোনাল পার্স্পেক্টিভে এলিয়েন তালাশ করছে। তারা একরকমের প্লুরালিস্টিক মিস্টিসিজমে ডুবে আছে। ধর্মীয় স্ক্রিপচারের কস্মোলজিক্যাল কন্সেপ্ট যেহেতু প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং ইনকম্প্যাটিবল সেহেতু, এগুলোকে তারা ত্রুটিপূর্ণ এবং মনগড়া বানোয়াট মনে করছে। যেহেতু পরস্পর সাংঘর্ষিক দুটি ভিন্ন স্ট্রিমের মেটাফিজিক্যাল - কস্মোলজিক্যাল বর্ননা দেখছে,সেহেতু তারা এ্যাগনস্টিক এবং পরবর্তীতে নাস্তিক-যিন্দিকে পরিনত হচ্ছে। এজন্য দেশবিদেশে এথিজম ও প্যান্থেইজমের দিকে মানুষ খুব বেশি ঝুকছে। এটা আসলে Satanic Cosmogony এরই স্বাভাবিক Consequence। যাদের(পিথাগোরিয়ান) থেকে এ ডক্ট্রিন এসেছে এরাও তো একই আকিদা বা বিশ্বাস হৃদয়ে ধারন করত। স্বাভাবিকভাবেই ওদের প্রবর্তিত চিন্তাধারা ওদের বিশ্বাসের দিকেই ধাবিত করবে। প্রাচীন কালের সাধারন কাফিররা আল্লাহর অস্তিত্বকে মানত, কিন্তু এরা পুনরুত্থান দিবসকে অবিশ্বাস করত। অন্যদিকে শুধুমাত্র  জ্যোতিষী-যাদুকরদের সিংহভাগ আল্লাহর সত্তাগত অস্তিত্বে অবিশ্বাস করত,যাদের হাতে আজকের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো লুক্কায়িত ছিল। আজকে সেই কস্মোলজিক্যাল প্যাগানিজম বিজ্ঞানের নামে প্রতিষ্ঠিত হবার পর যাদুকর-জ্যোতীষীদের অনূরূপ সাধারন মানুষও আল্লাহর অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা শুরু করে। মূলত এ কারনেই নিচের চিত্রের নাস্তিক আজ আমাদের দেশে তৈরি হয়েছে[এটা জাহিরি কারন,আসল কারন আল্লাহ তাদের থেকে হিদায়াতের আলো তুলে নিয়েছেন]। একটু ভাল করে দেখুন চিত্রে দেওয়া পোস্টগুলো কস্মোলজি/কস্মোজেনেসিস(সৃষ্টিতত্ত্ব)/মেটাফিজিক্স নিয়ে:

আজ এদের প্রতিরোধ করতে একদল তরুন দাঁড়িয়ে গেছে, যারা এদের মুখ বন্ধ করতে এদেরই শয়তানি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়ত বিতর্ক করতে থাকে, সেই সাথে "প্যারাডক্সিকাল সাজিদ" নামে সুডোসায়েন্টিফিক মিস্টিসিজম এর ইসলামাইজড ভার্সন প্রকাশ হতে থাকে। কিন্তু এর ফলাফল অস্থায়ী।কিছুদিনের মধ্যেই নাস্তিক কমিউনিটি থেকে সেসব কিতাবের "খন্ডন" বের হয়:


 

 এভাবেই ফিতনা চলতে থাকে। অনেক সাধারন মুসলিমরা এসব কিতাবাদি পড়ে কাফির হয়ে যাবার কথা শোনা যায়।


কাফিরদেরকে যুক্তি দিলেই তারা তা মান্য করবে না। তারা সেটাকে খন্ডন করতে চাইবে, প্রাচীন যুগগুলোয় কাফিররা অনেক অলৌকিক নিদর্শন চোখের সামনে দেখেও অস্বীকার করত। এরা মূলত জানলেও দ্বীন পালনের ব্যপারে কুফর করে যাবে। এরা এমন না যে দলিল প্রমান পেলেই মেনে নেবে। আর এই কুরআন যুক্তি প্রমান দেখে ঈমান আনয়নকারীদের প্রতিও নাযিল হয়নি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
" ﺍﻟﻢ
ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏُ ﻻَ ﺭَﻳْﺐَ ﻓِﻴﻪِ ﻫُﺪًﻯ ﻟِّﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟْﻐَﻴْﺐِ ﻭَﻳُﻘِﻴﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﻣِﻤَّﺎ ﺭَﺯَﻗْﻨَﺎﻫُﻢْ ﻳُﻨﻔِﻘُﻮﻥَ
ﻭﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﻭَﺑِﺎﻵﺧِﺮَﺓِ ﻫُﻢْ ﻳُﻮﻗِﻨُﻮﻥَ
ﺃُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻫُﺪًﻯ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻬِﻢْ ﻭَﺃُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﻔْﻠِﺤُﻮﻥَ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﺳَﻮَﺍﺀٌ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺃَﺃَﻧﺬَﺭْﺗَﻬُﻢْ ﺃَﻡْ ﻟَﻢْ ﺗُﻨﺬِﺭْﻫُﻢْ ﻻَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
ﺧَﺘَﻢَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬﻢْ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺳَﻤْﻌِﻬِﻢْ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻢْ ﻏِﺸَﺎﻭَﺓٌ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﻋﻈِﻴﻢٌ
ﻭَﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻣَﻦ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﺑِﺎﻟﻠّﻪِ ﻭَﺑِﺎﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻵﺧِﺮِ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻢ ﺑِﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ
ﻳُﺨَﺎﺩِﻋُﻮﻥَ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺨْﺪَﻋُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧﻔُﺴَﻬُﻢ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ
ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻢ ﻣَّﺮَﺽٌ ﻓَﺰَﺍﺩَﻫُﻢُ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻣَﺮَﺿﺎً ﻭَﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻜْﺬِﺑُﻮﻥَ

"আলিফ লাম মীম। এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখিরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম।নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদের কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না । আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়। তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না। তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন।[সূরা বাকারাঃ১-১০]

যারা আল্লাহ ও তার রাসূল(স) কে কটাক্ষ করে, তাদের শাস্তি একটাই, হত্যা। নিশ্চয়ই আল্লাহ নির্দিষ্ট সংখ্যক জ্বীন ও মানবকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এদের জন্য আজেবাজে যুক্তি দিয়ে শয়তানি অপবিজ্ঞানকে ইসলামাইজ করে মু'তাযিলাদের মত তর্ক করা বা সহিষ্ণুতা প্রদর্শন নির্বুদ্ধিতা এবং প্রহসন বৈ আর কিছু নয়।আমরা জানি, এমন কিছুর কথা আমরা বলছি, যা সত্যিই এ যুগে গ্রহন করা কষ্টসাধ্য। কিন্তু আমরাও অখন্ডনীয় দলিলের উপর প্রতিষ্ঠিত যার ব্যপারে বিরুদ্ধবাদীরা সত্যিই বিব্রত। আমরা দ্বীনের সাথে শয়তানি ন্যাচারাল ফিলোসফির সমন্বয় সাধনে বা আপোষে বিশ্বাসী নই, বরং যতটুকু মেশানো হয়েছে ততটুকু বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি মনযোগী। এজন্য কারো তিরস্কার, কটাক্ষের ব্যপারে একেবারেই বেপরোয়া। আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যা মূলত প্রাচীন জ্যোতিষবিদ্যারই আধুনিক সংস্করণ যেটা প্রাচীন পিথাগোরাস থেকে সর্বপ্রথম অফিশিয়ালি প্রচার শুরু হয়। ফ্রিম্যাসন সম্রাট অ্যালবার্ট পাইক বলেন,"পাইথাগোরাস ঋষির উপাধি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, যার(ঋষির) অর্থ যারা জানেন। তিনি আবিষ্কার করেছেন এবং নিজেকে দার্শনিক হিসাবে প্রয়োগ করেছেন, যিনি পছন্দ করেন গুপ্ত এবং অকাল্ট বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি যে জ্যোতির্বিদ্যার(মহাকাশতত্ত্ব) শিক্ষা দিয়েছিলেন তা ছিল জ্যোতিষশাস্ত্র: তাঁর সংখ্যার বিজ্ঞান কাব্বালার নীতিগুলির ভিত্তিতে ছিল। সমস্ত কিছু সংখ্যার পর্দা দ্বারা ঢাকা। "
[Morals and Dogma]

এবার চলুন দেখা যাক জ্যোতিষবিদ্যার ব্যপারে ইসলাম কি বলে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

সুতরাং আশা করি বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না যে, এই মহাকাশবিজ্ঞান যা বলে সেসব যাদুবিদ্যারই শাখাগত বিদ্যা বা যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক চিন্তাধারা।


এবার আসা যাক এলিয়েন প্রসঙ্গে।  যখন থেকে যাদুকরদের অকাল্ট ফিলসফির অন্তর্গত বিষয়ঃআউটার স্পেস তথা "মহাশূন্য"কে বিজ্ঞানে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, মানুষ কল্পনা প্রবণ হয় এতে ভ্রমণের ব্যপারে। পৃথিবীকে মহাশূন্যের অতিক্ষুদ্র কণার মত ঘুর্নায়মান বর্তুলাকার 'গ্রহ' হিসেবে প্রচার করা হয় এবং বলা হয় কোটি কোটি গ্রহ আছে, হাজারো গ্রহ হতে পারে বাসযোগ্য, অন্য গ্রহগুলোয় জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে রহস্যঘন কল্পনায় ডুবিয়ে রাখতে শুরু করে কথিত বিজ্ঞানী নামধারী অপবিজ্ঞানীরা। শুরু হয় ভীনগ্রহীদের নিয়ে কল্পনা জল্পনা। এখন শুধু পাশ্চাত্যে সীমাবদ্ধ নয়,সারা বিশ্বের মানুষদের এসব নিয়ে কল্পনায় ভাসানো হয়। বিজ্ঞানীরা বলতে শুরু করেন উন্নত বুদ্ধির প্রানীদের। শুরু হয় মানুষের চেয়েও উন্নত কোন সভ্যতার কল্পনা। শুরু হয় এলিয়েন ফ্যান্টাসি। বিজ্ঞানী থেকে রাজনীতি সবজায়গায়ই এলিয়েন রহস্য। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান মানুষকে এলিয়েন থ্রেটের কথা শোনায়। তিনি সরাসরি বলেন, এলিয়েনদের আগ্রাসন হয়ত ভবিষ্যতে মানবজাতির ধর্মবর্ণের বিভেদ ভুলে একজাতিতে পরিনত করবে।এরপর থেকে ঠিকই নিয়মিত অচেনা বিচিত্র আকৃতির নভোযান পৃথিবীর আকাশে ভাসতে দেখা যায়। সারাপৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এলিয়েনদের দ্বারা মানুষ অপহরণের ঘটনা ঘটতে শোনা যায়। এই এলিয়েনদের আসল পরিচয় কি??

ইনফিনিট স্পেস আর অগণিত গ্রহ,গ্যালাক্সি,নিহারিকার কনসেপ্টটি যাদুকর-দার্শনিক এন্যাক্সিম্যান্ডার, ডেমোক্রিটাস, এপিকিউরাস এবং ব্রুনোর কস্মিক প্লুরালিজমের প্রাচীন ধারনাকে নতুন করে জাগিয়ে দেয়[১১]। এরপরে শুরু হয় বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীদের নিয়ে ফ্যান্টাসি। অজস্র বই,গল্প,উপন্যাস
,পত্রিকা ম্যাগাজিন এই প্লটের উপর লেখা হয়। পাঠকদের অধিকাংশই এসকল সায়েন্স ফিকশনকে উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা/কল্পনা মনে করে সমর্থন দিতে শুরু করে। টেলিভিশন ছড়িয়ে পড়বার পর ব্রেইনওয়াশিং এবং মাইন্ডকন্ট্রোল এর আওতা আরো বেড়ে গেল। সেই নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে আজ পর্যন্ত ম্যাসনিক হলিউড; স্পেস আর এলিয়েন প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। যতগুলো সায়েন্সফিকশন সিনেমা নির্মান করছে তার সবই আউটারস্পেস এর কন্সেপ্ট ভিত্তিক। আর স্পেস থাকা মানেই স্পেস ট্রাভেল,এলিয়েন থাকবে। এরপরে যে সিনেমা গুলো বের হতে শুরু করে তার অধিকাংশ হয় এলিয়েন ইনভ্যাশন নিয়ে। বহির্জগতের বুদ্ধিমান প্রানীরা উন্নত প্রযুক্তিসমেত পৃথিবীতে হামলা করেছে, সমস্ত দেশগুলো এক হয়ে প্রতিরোধ করছে ইত্যাদি, ইত্যাদি।[১২] এখনকার ফিল্মগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, মেটাফিজিক্যাল(origins of existence) ব্যপার গুলোয় এলিয়েন হস্তক্ষেপ দেখিয়ে। ওরা দেখাচ্ছে মানুষের অস্তিত্বটাই এলিয়েনদের দান। মানুষের ডিএনএ'তে এলিয়েন ডিএনএ মিশে আছে। ওরা আমাদের ইঞ্জিনিয়ার। প্রমিথিউজ,ট্রান্সসফরমার এই ম্যাসেজগুলোই দিচ্ছে। অন্যদিকে এসবে আছে সায়েন্টিফিক কমিউনিটির সমর্থন [১৩]। মিডিয়ায় হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি ও এলিয়েনের অস্তিত্বের প্রমোশন পাবার সাথে সাথে মানুষও Unidentified flying object(UFO) এবং Unidentified submerged object(USO) দেখা শুরু করে। মেক্সিকো আমেরিকায় বিষয়টা এমন স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে ওটা খুবই সাধারন বিষয়। এ বিষয়গুলোর সূত্রপাত খুজতে গিয়ে মেলে জগদ্বিখ্যাত যাদুকর এ্যালিস্টার ক্রোওলির ১৯১৮ সালে করা 'অমলন্ত্র' রিচুয়াল(amalantra working)[১৪]। ক্রোওলি Lam নামের এক এলিয়েন এন্টিন্টির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত। তিব্বতীয় ল্যাম শব্দের অর্থ পথ অথবা পথদাতা। ল্যাম দেখতে অনেকটা গ্রে এলিয়েন যেমনি দেখতে, তেমনি। অধিকন্তু, ল্যাম হচ্ছে মূলচক্রের একটি মন্ত্র(যোগসাধনায় ষড়চক্রের একদম নিন্মে অবস্থিত)। বলা হয় ক্রোওলির এই রিচুয়ালের উদ্দেশ্য ছিল এলিয়েন এন্টিটির জন্য ইন্টারডাইমেনশনাল পোর্টাল[৩২] খুলে দেওয়া যাতে তারা ইচ্ছেমত আমাদের ডাইমেনশনে প্রবেশ করতে পারে। এরপরে ১৯৪৬ সালে আরেকটি বড় পরিসরের ম্যাজিক্যাল রিচুয়াল পালিত হয়। এর নাম দেওয়া হয় "Babalon Working"[৩৬]। এতে ক্রোওলির সাথে যোগ দেয় বর্তমান স্পেস এজেন্সি নাসা এবং সাইন্টোলজি কমিউনিটির ফোরফাদারগন। সেটাতেও সিরিমোনিয়াল এবং সেক্স রিচুয়াল পালিত হয় অমলন্ত্রের মত। সমস্ত অকাল্ট কমিউনিটির মধ্যে এ কথা প্রচলিত আছে যে এ রিচুয়াল দ্বারা আগের ডাইমেনশনাল গেইটওয়ে এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল এন্টিটির জন্য আরো প্রশস্ত করা হয়। এ ঘটনার পর দিয়ে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ইউএফও সাইটিং শুরু হয় ব্যাপকহারে। এলিয়েনদের দ্বারা অপহরণ, এমনকি সেনাবাহিনীরাও আক্রান্ত হবার ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছিল।

এ্যালিস্টার ক্রোওলির সাথে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং সাইন্টোলজির প্রতিষ্ঠাতার ল্যাম বা গ্রে এলিয়েন বিংদের আহব্বান এবং পরবর্তীতে অগনিত ইউএফও/ইউএপির উপদ্রব, সেই সাথে জেট প্রপালশান ল্যাবের রকেট আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের মনে একটা ধারনাকে গেঁথে দেওয়া হয়। সেটা হচ্ছে Outer Space(মহাশূন্য)! অর্থাৎ উপর থেকে বহির্জাগতিক প্রানীরা আসতে পারে আর আমরাও উপরে(আসমানে) যানবাহন বহির্বিশ্বে পাঠাতে পারি। "মহাশূন্যের" ধারনাকে মানুষ ইয়াক্বিন করে নেয়।যাহোক, হঠাৎ করে ইউএস প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘে বললেন, "হয়ত আমাদের কোন একটা সার্বজনীন বহির্জাগতিক হুমকির প্রয়োজন যা আমাদের মধ্যকার সাধারন ঐক্যকে জাগ্রত করবে, আমি মাঝেমধ্যে ভাবি কতটা দ্রুত আমাদের মধ্যকার এই (জাতিগত) ভেদাভেদ চলে হয়ে যাবে, যদি আমরা কোন ধরনের এলিয়েনদের হুমকির মুখোমুখি হই।" [১৫]

১৯৯৪ সালে জার্নালিস্ট এবং কন্সপিরেসি থিওরিস্ট সার্জ মোনাস্ত নাসার প্রজেক্ট ব্লুবিম[১৬] নিয়ে কথা তোলেন। এ নিয়ে একটি বইও পাব্লিশ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। এতে দাবি করা হয় নাসা বিশ্বের মোড়লদের পাশে দাঁড়িয়ে একটা ফেইক এলিয়েন ইনভ্যাশন ঘটাতে চায় যার মাধ্যমে গোটা বিশ্বের জাতি,ধর্ম,বর্নের ভেদাভেদ ভেঙে এক সরকারবিশিষ্ট বিশ্বব্যবস্থা গঠন করা যায়।
মোনাস্তের কথা অনেকে একদম কন্সপাইরেসি থিওরি বলে উড়িয়ে দিতে চায়, কিন্তু স্যাটানিস্ট ক্রোওলির ল্যামের সাথে কন্টাক, ইনভোকেশন এবং ম্যাজিক্যাল ডাইমেনশনাল রিফট তৈরি, হঠাৎ ইউএফও সাইটিং শুরু এবং আশংকাজনক বৃদ্ধি, রোনাল্ড রিগ্যানের আশংকার কথা, এবং হলিউডের প্রোপাগান্ডা মেলালে সেই কন্সপিরেসি থিওরিস্টের কথা সত্য হবার আশংকা চলে আসে। এটা আরো প্রগাঢ় হয় আজকের সাইন্টিফিক কমিউনিটি থেকে সমর্থন পাওয়া যায়।পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের এলিয়েন থ্রেট দিয়ে ন্যাশনাল ব্যারিয়ার ভেঙ্গে সমগ্র দেশ গুলো এক করার বক্তব্যকে পূর্ন সমর্থন দিয়ে তিনি এলিয়েন ইনভ্যাশনের আশংকা করেন[১৭]।

এলিয়েন নিয়ে ফ্যান্টাসি এখানেই সমাপ্ত না, বেশ কিছু ধর্মও তৈরি হয়েছে[৩১]। যেমন রায়েলিজম, হ্যাভেন্স গেইট,ব্রহ্মকুমারী ইত্যাদি আরো অনেক। এসকল নতুন ধর্মগুলো এলিয়েনের হস্তক্ষেপকে হলিউডের ফিল্মের ন্যায় মানবজাতির সৃষ্টি ও ক্রমবিকাশ এবং বিবর্তনের কারন হিসেবে মানে। আমাদের দেশেও রায়েলিজমের অনুসারী রয়েছে অনেক। এরা এলিয়েনদেরকে 'এলোহিম' শব্দ দ্বারা বোঝায়, যার জন্য ইজরাইলের টেম্পল তৈরির জন্যও তাগিদ দিয়েছে।তারা শীঘ্রই আসছেন! রায়েলিজমের শাখা বাংলাদেশেও আছে। উইকিপিডিয়া অনুসারে: "Raëlians believe that scientifically advanced extraterrestrials, known as theElohim, created life on Earth through genetic engineering, and that a combination of human cloning and "mind transfer" can ultimately provide eternal life."(উইকিপিডিয়া)

আরেকটি এলিয়েনবাদি ধর্ম, ইথারিয়াস। এর প্রতিষ্ঠাতা, ইথারিয়াস নামের এক এলিয়েনের সাথে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের পরে প্রতিষ্ঠা করেন। উইকিপিডিয়া অনুসারে: The Aetherius Society was founded in theUnited Kingdom in 1955. Its founder, George King, claimed to have been contacted telepathically by an alien intelligence called Aetherius, who represented an "Interplanetary Parliament. (উইকিপিডিয়া)

ব্যবিলন প্রজেক্টের পরের বছরেই রাজওয়েলে ইউএফওর ক্রাশ ঘটে ; যার ধ্বংসবশেষ এরিয়া ৫১ তে পাঠানো হয়। এভাবে হাজারো ফ্লাইং ডিস্ক এবং বিচিত্র মডেলের আকাশযানের ছবি ও ভিডিও পৃথিবী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাইরাল হতে লাগলো। হাজারো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হতে লাগলো। ৫০০ বছর আগে যখন জিওসেন্ট্রিক ফ্ল্যাট ষ্টেশনারী পৃথিবীর মডেলটি ভ্যালিড ছিল, তখন এই ইউএফওর উপদ্রব একদম অচেনা ছিল। সাধারণ কেউ এসব ফ্ল্যাইং ডিস্ক কল্পনাও করতে পারতো না। কেউ এলিয়েনদের দ্বারা অপহরনের স্বীকারও হত না। কিন্তু তখন জ্বীনদের দ্বারা কাউকে লুকিয়ে ফেলা বা নিয়ে যাবার ঘটনা জানাশোনা ছিল। ব্যবিলন ওয়ার্কিং এর দ্বারা আহব্বান করা ল্যামের গ্রে এলিয়েন বাহিনীর আসল পরিচয় অনেকেই বুঝে গেছেন। এরপরেও আরো স্বচ্ছ ধারনা প্রয়োজন।

ইউএফওলজিস্ট জ্যাকুয়েস ভ্যালি সর্বপ্রথম ইউএফও ফেনোমেননগুলোকে ইন্টারডাইমেনশনাল এন্টিটির কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। পরে এর সপক্ষে John Ankerberg এবং John Weldon এরও বক্তব্য রয়েছে। তারা বলেনঃ"the UFO phenomenon simply does not behave like extraterrestrial visitors." অর্থাৎ কথিত স্পেসক্রাফট ও এলিয়েনগন এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের মত আচরণ করে না। অন্যান্য যুক্তির দিক দিয়ে ইউএফও ফেনোমেনন এর ব্যাখ্যা Interdimensional hypothesis এর দিকেই যায়। একারনে অনেক ইউএফলজিস্টরা ETH এর চেয়ে IDH কে বেশি যুক্তিযুক্ত মনে করেন।তাদের কেউ কেউ এগুলোকেই প্রাচীনকাল থেকে প্যারানরমাল/সুপারন্যাচারাল ঘটনাগুলোর ভিন্নধর্মী ম্যানিফেস্টেশন বলে মনে করেন। যেমন ইউএফওলজিস্ট জন কিল UFO গুলোকে Ghost/spirit/demon এর ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করেন।[২১]

২১ শতকে জিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমির বিপ্লব সৃষ্টিকারী প্রকৃতিপূজারী প্যাগান এরিক দুবেঈ বলেন, "আজকে যেমনি বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্লাইং সসার দেখা যায় যাকে আমরা ইউএফও বলে অভিহিত করি, একই জিনিস সেই হাজার বছর আগে থেকে আজ পর্যন্ত আমাজন জঙ্গলের মানুষগুলো যারা আইয়োহুয়াস্কা, পাইয়োডি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সাইকাডেলিক উপাদান গুলো সেবন করে, তারাও ঠিক একই জিনিসের ব্যপারে বলে এবং যেগুলো দেখতে এলিয়েন ও ফ্লাইং সসারগুলোর মত। যারা সেসব ক্র্যাফট থেকে বের হয়ে তাদেরকে বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দেয়। এরা মূলত ইন্টারডাইমেনশনাল জীব। আর সবচেয়ে শক্তিশালী সাইকাডেলিক উৎপন্ন করে আমাদের ঘুমন্ত মস্তিষ্কের পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড যাকে থার্ড আই বলা হয়। এজন্য স্বপ্ন হচ্ছে এরই একটা প্রোডাক্ট।ঘুমন্ত অবস্থায় অনেকে এমন এলিয়েন এবডাকশনের স্বপ্ন দেখে যা তাদের কাছে খুবই সত্য বলে মনে হয়। হয়ত তখন তার মস্তিষ্কে অন্ডিজেনাস ডিএমটি সাইকাডেলিক ড্রাগের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সাইকাডেলিক ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করত মিথ্রাইক কাল্টে। আদিম সভ্যতাগুলো নিজেদেরকে নক্ষত্রের বংশোদ্ভূত বলত। তারা মূলত ইন্টার ডাইমেনশনাল রেল্মে ঘুরে বেড়াতো , অথচ আজকে ফেইক কস্মোলজি শেখানো হয়, এলিয়েনদের অস্তিত্বের জন্য ভ্রান্ত আউটার স্পেস কন্সেপ্ট নিয়ে আসা হয়েছে।"

বিখ্যাত স্পিরিচুয়ালিস্ট ট্যারেন্স ম্যাকেনা বলেন, "আমি মনে করি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালদের সাথে যোগাযোগের চেয়ে আসল কাজ হচ্ছে এটা জানা যে আপনার সাথেই একজন রয়েছে। এটা একদমই বোকামি যে একটা রেডিও ব্যবহারকারী সভ্যতাকে খুজতে রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে ছায়াপথে খুজে বেড়ানো।" তিনি মনে করে সাইকাডেলিক মাশরুম গুলোই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ এর একটা মাধ্যম[২৩]। তাছাড়া ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহার করে হাজারো কথিত এলিয়েনদের[২৭] সাথে যোগাযোগ এর রিপোর্ট পাওয়া যায়। অবশ্য প্রাচীনকাল থেকে জঙ্গলের বিভিন্ন প্যাগান সভ্যতার মাঝে এই জিনিস ব্যবহার চলত। তারা অবশ্য স্পিরিট/এ্যান্সেস্টর ইত্যাদি শব্দ দ্বারা অভিহিত করতো [২২]। ইউএফও সাইটিং এর পাশাপাশি আরেকটা বিষয় হঠাৎ খুব বেড়ে যায়। সেটা হচ্ছে, ক্রপ সার্কেল। অনেকে হয়ত এ ঘটনার সাথে পরিচিত নন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ক্রপসার্কেল হচ্ছে বিচিত্র জটিল জ্যামিতিক নকশা বা প্রতীক যা মাঝেমধ্যে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশগুলোর গ্রামগুলোর শস্যক্ষেতে দেখা যায়। হঠাৎ কৃষক জমিতে গিয়ে দেখেন ক্ষেতের মাঝে বিশাল অঞ্চল জুড়ে ফসল উপড়ে কিছু একটা করা হয়েছে। মাটিতে দাড়িয়ে কিছু বোঝা যায়না। কিন্তু উচু স্থান থেকে, বিমান বা হেলিকপ্টার থেকে পূর্নরূপ দৃশ্যমান হয়। ১৯৭০ সালের পর দিয়ে ক্রপসার্কেল এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এসবের কিছু মানবসৃষ্ট, কিছু আবার এক রাতে হয়ে যায়। অনেকে ক্রপসার্কেলের সাথে ইউএফওর সংশ্লিষ্টতা প্রত্যক্ষ করেছে। এজন্য সবার বদ্ধমূল ধারনা,এসব এলিয়েনদের স্পেসশিপ দিয়ে তৈরি। এটা সত্য যে অনেক জটিল জ্যামিতিক নকশা তৈরি করা রাতারাতি নিখুঁতভাবে মানুষের দ্বারা করা কঠিন। অধিকাংশই অকাল্টিস্টদের স্যাক্রিড জিওমেট্রিক নকশা! কখনো, কাব্বালার সাজারাতুল খুলদের নকশা,কখনো বা ফ্লাওয়ার অব লাইফ,কখনো গ্রে এলিয়েনদের ছবি, কখনো বা ডলারের উপরের পিরামিডের উপর এক চোখের নকশা। ১৯৯৭ সালের মে মাসে Barbury Castle এর শস্যক্ষেতে কাব্বালার ট্রি অব লাইফের ক্রপ সার্কেল পাওয়া যায়। বাবেল শহরের এই বিদ্যার নকশা কোন ধরনের বুদ্ধিমান প্রানীরা দেখাতে পারে? এরাই নিজেদের রূপকে(গ্রে এলিয়েন) ক্রপসার্কেলে দেখায়। বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ রাক্কী বিন হালিমা আব্দুর রউফ এক রুকইয়ার সময় রোগীর সাথের শয়তান জ্বীন তাকে জানায় এই ক্রপসার্কেল গুলো তাদের কাজ। একারনেই এলিস্টার ক্রোওলির শয়তান পূজার ধর্ম থেলেমার সিম্বল ক্রপসার্কেলে কথিত এলিয়েনগন অঙ্কন করে। 

আশাকরি এবার বুঝতে পারছেন, 'এলিয়েন' শুধুই একটা নতুন শব্দ। নতুন কস্মোলজি দিয়ে ভিন্ন নামে নতুন চেহারায়[গ্রে এলিয়েন(২৬)]শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হচ্ছে। প্রাচীন মিশরীয় হাইরোগ্লিফিকে যে আনুনাকিদের দেখা যায় এরা এই একই ইন্টারডাইমেনশনাল এলিয়েন(কথিত) রেস[২৫]। এরা যে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নয় মোটেই সেটা তারা নিজেরাই স্বীকার করে। হিস্টোরি চ্যানেলের এক ডকুমেন্টারিতে বলছিল ওরা ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি/ডাইমেনশনে হাজার হাজার বছর ধরে আমাদেরই সহবস্থানে আছে।[২৪]
আজকে যারা মিস্টিসিজম/ প্যাগান এস্ট্রোথিওলজিতে বিশ্বাস করে এরা আজ বিচিত্র পদ্ধতি শেখায় এই হায়ার ডাইমেনশনাল রেস তথা শয়তানের সাথে যোগাযোগের।[২৮]। বৈদিক এস্ট্রলজির বিদ্যা দিয়েও নাকি এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব[৩০]। এক ডিএমটি সেবকের ডিএমটি গ্রহনের পরে কথিত এলিয়েনদের সাথে দেখা করার বর্ননাটি শুনুন। সহজেই বুঝবেন, সে কাদের কথা বলছেঃhttps://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc

সকল থিওসফিস্ট(প্যাগান) বিশ্বাস করেন পৃথিবীর দায়িত্বে থাকা সকল স্পিরিচুয়াল এন্টিটির রাজা সনৎ কুমার হচ্ছে এলিয়েন বিং। আর বেঞ্জামিন ক্রিম বিশ্বাস করতেন সনৎ কুমারের আদি নিবাস-শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহের সাথে তার দুনিয়ার রাজ্য শাম্বালায় ফ্লাইং সসারের ট্রাফিক রয়েছে। ক্রিমও বিশ্বাস করতেন যে ইউএফও-ই ক্রপসার্কেল গুলোর জন্য দায়ী। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী, "It is also believed by the Theosophists in general as well as Creme in particular that the governing deity of Earth, Sanat Kumara (who is believed to live in a city called Shamballa located above the Gobi desert on the etheric plane of Earth), is a Nordic alien who originally came from Venus 18,500,000 years ago.[20] The followers of Benjamin Creme believe there is regular flying saucer traffic between Venus and Shamballah and that crop circles are mostly caused by flying saucers." 

(উইকিপিডিয়া)

সনৎ কুমারকে 'Satan kumar' বলতে শুনি কিছু খ্রিষ্টান প্রিস্টদের। কুম্বেইর যুক্তি, সনৎ কুমার যেহেতু ভেনাসের চির কুমার, সেহেতু শুক্রের আদি গ্রীক নাম লুফিফারই হচ্ছে এই সনৎ কুমার। অর্থাৎ sanat kumar=satan kumar!

"Bailey goes on to explain that Sanat Kumara is the "life and the forming intelligence", presiding over the Council of Shamballa [the Heaven of Earth according to New Age doctrine]. (The New Age Dictionary, p. 172) Further, Sanat Kumara is "the eternal youth from the Planet Venus". The name Lucifer is one of the ancient Greek names for Venus. Therefore, according to Cumbey, Sanat Kumara is merely another name for Satan or Lucifer. (Cumbey, Hidden Dangers of the Rainbow) "[Wikipedia]

এদিকে কল্কি অবতারের অপেক্ষায় থাকা হিন্দুর কল্কিঅবতারের সাথে এলিয়েন ও ইউএফওর মেলবন্ধনটা ছিল দেখার মতনঃ https://m.youtube.com/watch?v=OfhxEYb2XQk
তার মানে বুঝতে পারছেন(?) এই এলিয়েন শব্দ দিয়ে যাদেরকে বোঝানো হয় তারা এ দুনিয়ায় ১৯,২০ শতকের নতুন আগন্তুক কেউ নয় বরং মানব সভ্যতারও আগে থেকেই এখানে আছে। থিওসফিস্ট, যারা কিনা শয়তানেরই থেইস্টিক পূজারী এদের সাথেও এদের সম্পৃক্ততা রয়েছে! প্রাচীন বৈদিক যুগের 'বিমান'গুলো এদেরই। সর্বশেষ অবতার কল্কি কে তার ব্যপারে আগেই একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম[৩৩]। এর সাথে শয়তানজ্বীনদের অন্তর্ভুক্তি খুবই স্বাভাবিক। এ বিষয়টা প্রজেক্ট ব্লুবিম এর সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয় যার ইঙ্গিত রোনাল্ড রিগ্যান, মিচিও কাকু দিয়েছিলেন। আমরা জানি দাজ্জাল ব্যাপকভাবে শয়তান জ্বীনদের সাহায্য নিয়ে মানুষকে কুফরের দিকে আহব্বান করবে। শয়তান জ্বীনরা এমনকি মৃত মানুষের আকৃতি ধারন করে সাধারণ মানুষকে কুফরের দিকে ধাবিত করবে।

এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আজ ওপেন সিক্রেট ; যে শয়তানের সাথে মানুষ এক হয়ে এরিয়া ৫১ তে কাজ করছে। এফবিআইও এখন এ কথা স্বীকার[২৯]। সুতরাং আন্দাজ করুন, কতটা ভয়াবহ বিষয়গুলোকে আজকে স্বাভাবিক করা হয়েছে। আজকের শেখানো কস্মোলজি ওই ডায়াবোলিক্যাল এন্টিটিদেরই শেখানো[৩৫]। এই মহাকাশতত্ত্ব শয়তানদের জন্য মানুষের জগতে সহজ এবং গ্রহণযোগ্য প্রবেশাধিকার তৈরির জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। সৃষ্টিতত্ত্বকে পালটে ওদের উপর বিশ্বাসকে একটা স্বতন্ত্র দ্বীনের পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য গড়া হয়েছে[৩৭]। আজ এই শয়তান জ্বীনদের এলিয়েন সাজিয়ে হাজার মুভি তৈরি করা হচ্ছে মনোরঞ্জনের জন্য। বিজ্ঞ সাইন্টিস্টগন এদেরই অস্তিত্ব এবং এ্যারাইভালের সম্ভাবনা জোড় দিয়ে বলেন। ক্রোওলির সাথে মিলে বিচিত্র শয়তানি রিচুয়াল পালন করে এদেরকেই আহব্বান করে রকেটের আবিষ্কারক এবং space age এর পিতা জ্যাক পার্সন্স। আজকের নাসার কার্যক্রম কতটা বিস্তৃত, অথচ এদের গোটা প্লটটাই শয়তানের পরিকল্পনার উপর দাঁড়িয়ে। স্বপ্নযোগে স্পেস এজের পিতাকে যাদুশাস্ত্র উদ্ভূত   শয়তানি অপবিজ্ঞানকে আরো বিস্তৃত করার জন্য সরাসরি উৎসাহ দিয়েছিলেন দাজ্জ্বাল নামের ওই মহান এন্টিটি। এরই ধারাবাহিকতায় তার হাতে জেট প্রপালশান ল্যাব এবং পরে নাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং গোটা আউটার স্পেস/হেলিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি(প্যান্থিয়ন)/স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেটারি নোশন /বিগব্যাং/এলিয়েন প্রভৃতি সকল তত্ত্বের মূলে আছেন বেলেরিয়ন আর্মিলাস আল দাজ্জ্বাল[৩৮]। তার জন্যই যতসব প্রস্তুতি।

আজকের মোডারেট মুসলিম এবং মু'তাযিলারা এই দাজ্জালি সাইন্টোলজি দ্বারা একদম অন্ধ। এদের কাছে সব কিছু তুলে ধরলেও তাদের কাছে দাজ্জালের বিদ্যাকেই পছন্দনীয় মনে হয়। আর আমাদের আলিমগন? তাদের অনেকেই এই এলিয়েন কন্সেপ্টকেও সবুজ বাতি দেখিয়ে গ্রহন করেছে অনেক আগেই। কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি গ্রহনে যেখানে সমস্যা নেই, সেখানে এলিয়েনদের অস্তিত্ব গ্রহনে কিসের সমস্যা!? কুরআনের আয়াত ব্যবহার করেই অনেককে দেখি; এদের অস্তিত্বের বিষয়টিকে ইতিবাচক উপস্থাপন করে ইসলামিক বই,প্রবন্ধ, নিবন্ধ লেখে! সেদিন মার্সিফুল সার্ভেন্ট চ্যানেলটিকেও দেখলাম সরাসরি না বললেও ইউএফও, এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়ালের ব্যপারে ইতিবাচক ভিডিও বানিয়েছে। মা'আযাল্লাহ! ওটা দেখলে যে কেউ এদের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে শুরু করবে।

কুরআন সুন্নাহর নির্ভর জিওসেন্ট্রিক এনক্লোজড কস্মোলজিতে মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান এলিয়েনদের দ্বারা যা বোঝায় সে ধারনাটি সম্পূর্ন বাতিল[৩৪]। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউই দুর্ভেদ্য আসমান ভেদ করতে সক্ষম নয়। এমতাবস্থায় যদি রোনাল্ড রিগ্যানের আশংকা সত্য করে সত্যিই ফেইক এলিয়েন ইনভ্যাশনের অবস্থা তৈরি করতে হয়, তবে শয়তান জ্বীন এবং হলোগ্র্যাফিক প্রজেকশন, ইএলএফ সাউন্ড ব্যবহারের বিকল্প নেই। ইসলামে পৃথিবীর বাহিরে প্রানীর অস্তিত্বের ব্যপারে নিশ্চিত দলিল আছে কিন্তু এর দ্বারা কখনোই লাগামহীন যত্রতত্র বিচরন করে বেড়ানো এলিয়েন আর তাদের স্পেসশিপদের বোঝায় না যা আজকে দাজ্জালের অনুপ্রেরণায় সর্বত্র শেখানো হচ্ছে। এরা মূলত শয়তানের দিকে মানুষকে আহব্বান করছে। সূরা তালাক্কের শেষ আয়াত, সাত জমিনসংক্রান্ত হাদিস, আসমান সংক্রান্ত হাদিস গুলো পৃথিবীর বাহিরের অজস্র প্রানীর অস্তিত্বের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু সেসব আদৌ গ্রেএলিয়েন নয়। সেসব প্রানী বা মাখলুক কুরসির ভেতরে থাকা যার যার জন্য নির্ধারিত জগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আদৌ এন্যাক্সিম্যান্ডারের প্লুরালিজম, ইনফিনিট ভ্যাকুয়াম স্পেসে ফ্লোটিং স্ফেরিক্যাল প্ল্যানেট এর মত কিছুতে নয়। রিগ্যান-কাকুদের কথার মত তারা কখনো আমাদের এ জগতে আসবে না। সেটা সাধ্যেরও অতীত। অন্যদিকে এদেরকে ক্রোওলি,জ্যাক পার্সন, হাব্বার্ডের শয়তানি রিচুয়াল দ্বারা ডাকলে শুধু শয়তান জ্বীনেরাই সাড়া দেবে, অন্য কেউ নয়। এভাবেই আধুনিক বিজ্ঞান আধুনিক শব্দে পুরোনো জাতি শয়তানকে উপস্থাপন করছে। এরা আজ শেখাচ্ছে মানব জাতির ডিএনএ/আরএনএ ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন বটে তবে তা আল্লাহর সৃষ্টি নয় বরং সৃষ্টি ওইসব এলিয়েনদের। অর্থাৎ বলতে চাইছে শয়তানই আমাদের স্রষ্টা। মানব সৃষ্টির শুরু ব্যাখ্যায় বিখ্যাত পদার্থবিদ রিচার্ড ডকিন্সকে একবার প্রশ্ন করা হলো,"কে আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন?" উত্তরে তিনি রেগে গিয়ে বলেন,"আপনি এটা কেন জিজ্ঞেস করছেন যে, 'কে করেছে'!? না, আপনি প্রশ্নটিই করেছেন 'কে' শব্দটি দিয়ে।" প্রশ্নকর্তা নিজেকে সামলে বলেন,"আচ্ছা ঠিক আছে,সৃষ্টির শুরুটা কিভাবে হলো?" উত্তরে বলেন,"একটা ধীর প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি শুরু হয়,আমরা জানি না সেটা কিভাবে হয়েছিল, কিন্তু জানি কোন ধরনের প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছিল।এটা ছিল প্রথম স্বয়ংক্রিয় আত্ম পুনরাবৃত্তিকারী মলিকিউল দ্বারা।....হতে পারে যে এই মহাবিশ্বের একদম শুরুর দিকে কোন একটা সভ্যতা ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের অনুসারে বিবর্তিত হয়ে খুবই উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতায় পৌছায়, এবং হয়ত এই পৃথিবীতে এক ধরনের প্রাণের ডিজাইন করে যার মাঝে তাদের বীজ বপন করে। এটা(মানব সৃষ্টির ইতিহাসের) একটা ইনট্রিগিং সম্ভাবনা,  এবং আমি মনে করি এটা সত্যিই সম্ভাব্য ঘটনা কারন আপনি এর সপক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাবেন যদি আপনি বায়ো-ক্যামিস্ট্রি, মলিকিউলার বায়োলজিতে গভীরভাবে দেখেন, আপনি এক রকমের ডিজাইনারের সিগ্নেচার পাবেন। এবং এই ডিজাইনাররা হতে পারে মহাবিশ্বের অন্যকোন জগতের হায়ার ইন্টেলিজেন্স। এই উন্নত বুদ্ধিমত্তার প্রানীরা নিজেদের প্রকাশের একটি প্রক্রিয়া বজায় রাখে।এটা স্বতস্ফুর্তভাবে দ্রুততার সাথে নিজেদেরকে অস্তিত্বে নিয়ে আসে না।"

প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত কখনোই মানব জাতির বৃহত্তর জনগোষ্ঠী প্রকাশ্যে শয়তানকে ইলাহরূপে উপাসনা করেনি। পূজা করত অচল মূর্তির। কখনোই সৃষ্টিকর্তা বা মা'বুদ বলে শয়তান স্বীকৃতি পায়নি। কিন্তু আজকের কথিত বিজ্ঞানের কল্যানে সেটাই হতে যাচ্ছে। মানুষ যে উন্নত বুদ্ধিমত্তার সত্তা দ্বারা সৃষ্টি; সেটা মানতে বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্সের কোন আপত্তি নেই, ওই সত্তার স্থানে আল্লাহকে বসানোয় যত তার আপত্তি। এজন্য 'কে' শব্দটি দ্বারা আল্লাহকে নির্দেশ করে প্রশ্ন করায় রেগে যান। আল্লাহর স্থানে তিনি শয়তানদেরকে বসিয়েছেন। শয়তানদেরকে ইলাহ ভাবতে ভালবাসেন, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এরা আপাতত পদার্থবিজ্ঞানী,ফিল্মগুলোর মাধ্যমে দেখাচ্ছে এলিয়েন তথা শয়তানই মানুষের ইলাহ। মানুষের ডিজাইনার। ট্রান্সফরমার, প্রমিথিউজ ইত্যাদি ফিল্মের মূল বক্তব্য এটাই। এটাই science!! আধুনিক মহাকাশবিদ্যাটির সূচনা হয়েছিল শয়তানের বন্ধু যাদুকরদের হাতে,এর পরে সেই একই ব্যক্তিদের হাত ধরে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। নাসার অধিকাংশ কর্মচারী,নভোচারীরাই মাসূনী। এই শয়তানি মহাকাশতত্ত্বকে সত্যায়নে দেওয়া প্রযুক্তিগত সাপোর্টও আসে জ্যাক পার্সন্সের মত যাদুকর এবং শয়তানের পূজারীদের থেকে। অত:পর অবশেষে তাদের থেকে আসা সমস্ত গায়েবের জগতের ব্যপারে আসা তত্ত্বগুলোও শয়তানের নতুন নাম তথা এলিয়েনদেরকে মা'বুদের স্বীকৃতির দিকে নিয়ে গেছে। এবার বলুন এই কথিত বিদ্যা ও তত্ত্বগুলো কি আদৌ বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান!? এই মহাকাশবিদ্যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কতটা ইসলামসম্মত যেমনটা আধুনিক দায়ীরা বলে থাকেন!?

আজ দেখে অবাক হচ্ছেন; কিভাবে শয়তানকে ইলাহ বানিয়ে নেওয়া হচ্ছে,সামনের পর্বে দেখবেন পদার্থবিদগন বলছেন গোটা মহাবিশ্বটিও শয়তানের সৃষ্টি। লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!!






[চলবে ইনশাআল্লাহ...] 






বিগত পর্বগুলোঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html


টিকাঃ
১)https://m.youtube.com/watch?v=omWRxonewL4
https://m.youtube.com/watch?v=eXIDFx74aSY
https://m.youtube.com/watch?v=beofFQ
২)https://en.m.wikipedia.org/wiki/হেলিওস
৩)https://www.express.co.uk/news/science/960740/ancient-egypt-great-pyramid-giza-speed-of-light
৪)https://m.youtube.com/watch?v=zFuIEjX1oeM
৫)http://www.mediafire.com/file/rwc2xi5wn3uhbno/Islamer_dristite_sristitatta_2nd_Edition.pdf/file
৬)https://m.youtube.com/watch?v=S9i97_K9Sx8
৭)https://m.youtube.com/watch?v=FmoiwjXepHM
https://m.youtube.com/watch?v=ss7QT6uCZdU
৮)https://m.youtube.com/watch?v=379sQbvUg5kk
৯)https://m.youtube.com/watch?v=9jnseSHhEWQ
https://m.youtube.com/watch?v=3LxND8m9lDU
১০)https://m.youtube.com/watch?v=QM7ebcR3-xE
১১)https://m.facebook.com/story.php?story_
fbid=465081517282379&substory_
index=0&id=282165055574027
১২)https://www.youtube.com/watch?time_conti
nue=333&v=ss7QT6uCZdU
১৩)https://www.express.co.uk/news/science/
777627/alien-dna-message-human
https://www.gaia.com/article/are-humans-actually-aliens-on-earth
https://www.sciencemag.org/news/2016/03/
our-ancestors-may-have-mated-more-once-mysterious-ancient-humans
১৪)http://www.boudillion.com/lam/lam.htm
https://www.vice.com/amp/en_us/article/mvpvyn/magickal-stories-lam
https://m.youtube.com/watch?v=yUs0KF2Q
TaU
১৫)https://m.youtube.com/watch?v=iQxzWpy7
PKg
https://m.youtube.com/watch?v=nYi5h5Gvdz8
১৬)https://m.youtube.com/watch?v=peUkPNx9
DSU
https://m.youtube.com/watch?v=k-Gr7-RQ4-U
১৭)https://m.youtube.com/watch?v=-NOZWlmG
rsY
১৮)https://m.youtube.com/watch?v=FmoiwjXe
pHM
১৯)https://m.youtube.com/watch?v=16MMZJlp
_0Y
২০)https://en.m.wikipedia.org/wiki/
Interdimensional_hypothesis
২১)https://en.m.wikipedia.org/wiki/
Interdimensional_hypothesis
২২)http://www.evolveandascend.com/2017/
02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extrate
rrestrials/
২৩)https://m.youtube.com/watch?v=ljy3TH1T0jk
২৪)https://m.youtube.com/watch?v=jjFYo-mLn08
২৫)https://m.youtube.com/watch?v=K3MM3vu9
hOc
২৬)https://m.youtube.com/watch?v=slYRx3vk
6OM
২৭)https://m.youtube.com/watch?v=pL1QI0_3HiI
২৮)https://m.youtube.com/watch?v=uMPyI08J
WvQ
২৯)https://m.youtube.com/watch?v=WFRwvXEX
Oxo
৩০)https://m.youtube.com/watch?v=aM8P6f-m
3Xg
৩১)https/en.m.wikipedia.org/wiki/UFO_religion
৩২)https://m.youtube.com/watch?v=q1Y3pVy8
HME
৩৩)https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_20.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_73.html
৩৪)https://m.youtube.com/watch?v=aFFM3YJA
s4Q
৩৫)https://m.facebook.com/story.php?story_
fbid=564102404046956&id=282165055574027
৩৬) https/en.m.wikipedia.org/wiki/
Babalon_Working
৩৭)https://m.youtube.com/watch?v=HBDNZpnY
vts
৩৮)https://www.bibliotecapleyades.net/bb/
babalon004.htm
https://www.classifiedufo.com/jack-parsons-jpl.html
www.sacred-magick.com/dictionary/
magdic17.html
৩৯)Pendle 2005, pp. 257–262
৪০)Pendle 2005, p. 152
৪১)Carter 2004, p. 135
৪২)Carter 2004, pp. 107–108, 116–117, 119–128; Pendle 2005, pp. 259–260.