Monday, March 18, 2019

২.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব

পর্ব-২



মুসলিম উম্মাহ আজ সৃষ্টির সূচনাকে কিভাবে বিশ্বাস করে?! তারা কাফির মুশরিকদের শেখানো কাল্পনিক শয়তানি তত্ত্ব-বিগব্যাং কে গ্রহন করে নিয়েছে। অবস্থাটা এরূপ দাড়িয়েছে যে, বিগব্যাং এর বিকল্প হিসেবে তারা আজ অন্য কিছুকে চিন্তা করতে পারে না। অথচ বিগব্যাং তত্ত্বটির আনুষ্ঠানিক প্রবক্তা একজন ক্যাথলিক পাদ্রী(লেমাইত্রে)।আপনাদেরকে পূর্বে দেখিয়েছি ক্যাথলিকরা কিরূপ রোমান পৌত্তলিকতা দ্বারা আচ্ছন্ন । যাহোক, বিগব্যাং এর গোড়া খুজলে বের দেখা যায় এর মূল উৎস হচ্ছে কাব্বালিস্টিক স্যাটানিক টেক্সট। বিভিন্ন অকাল্ট কমিউনিটিতে এই তত্ত্বটিকে(বিগব্যাং) তাদের প্রাচীন(শয়তানি) জ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। বৈদিক দর্শন এবং পিথাগোরিয়ান কুফরি দর্শন গুলোকে যৌক্তিক ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে বিগব্যাং অত্যন্ত শক্তিশালী ভিত্তি। ওদের কুফরি দর্শনের পূর্নতা দানের জন্য বিগব্যাং এর পাশাপাশি বিগক্রাঞ্চও আছে। অর্থাৎ একসময় সম্প্রসারনশীল মহাবিশ্ব সংকুচিত হয়ে আসা শুরু করবে। এবং একপর্যায়ে আবারো সেই এক বিন্দুতে চলে আসবে। শেষ যুগের অভিশপ্ত কাফিরদের শয়তানি আকিদাকে বৈজ্ঞানিকভাবে সাইক্লিক্যাল অসোটেলিং ইউনিভার্স থিওরিসহ বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। আমি কুফরি দর্শনগুলো বিস্তারিত এখানে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকছি। এগুলো নিয়ে "The occult origins of mainstream physics and astronomy" ডকুমেন্টারি আর্টিকেল সিরিজে বিস্তারিত নিয়ে আসব ইনশাআল্লাহ।


আজকে এই বিগব্যাং থিওরিকে অধিকাংশ মুসলিমরা গ্রহন করেছে। অগনিত আলিম এতে বিশ্বাস রাখে। তারা এই শয়তানি তত্ত্বটিকে যথাসম্ভব ইসলামাইজ করে নিয়েছে। আলিম, দাঈরা গর্বের সাথে এই কথাও বলছে ১৪০০ বছর আগে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বিগব্যাং এর কথা কুরআনেই বলে দিয়েছেন! দলিল দিচ্ছে সূরা আয যারিয়াতের ৪৭ নং আয়াত এবং ২১ঃ৩০। মা'আযাল্লাহ!!  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কি এই বিগব্যাং এর দ্বারাই আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন?! বিগব্যাং কস্মিক প্লুরালিজম, স্পেস বা মহাশূন্য,কোটি কোটি গোলাকৃতির গ্রহ, অভিকর্ষ, মহাকর্ষ, ছায়াপথ,নীহারিকার কাল্পনিক অস্তিত্বকে যৌক্তিকভাবে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আল্লাহর বলা সৃষ্টিতত্ত্বটি কি এইরূপ যেটা কাব্বালিস্টিক মেইনস্ট্রিম মহাকাশ বিজ্ঞান থেকে বলা হচ্ছে?
নাকি দুটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধারনা!?
এ নিয়েই আজকের পর্ব।

বস্তুত, উভয় বর্ননা সম্পূর্ন ভিন্ন এবং এইরূপ ভিন্নতা যে, যেন তা পরস্পর দুমেরুর। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা ছয়দিনে সাত আসমান ও সাত জমিনকে স্তরে স্তরে নির্মান করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা একদমই তা বলেন নি যা আজকের সায়েন্স নামের অপবিজ্ঞান বলছে। আল্লাহর সৃষ্ট আসমান বিগব্যাং এর ফলে হওয়া ইনফিনিট শূন্য(কথিত স্পেস) নয় বরং একটির উপর আরেকটি সাতটি গম্বুজাকৃতির সলিড স্তর, আদৌ অদৃশ্য বা অস্পৃশ্য নয়। আর জমিন বা পৃথিবী আদৌ মহাশূন্যে ছুটন্ত গোলক নয় বরং জমিন তথা পৃথিবী হচ্ছে একটির উপর আরেকটি(মোট ৭টি) সমতল দ্বীপ সদৃশ জমিন। আমাদের অবস্থান প্রথম জমিনে যার উপর সাতটি মজবুত আসমানের স্তর রয়েছে। আর আমাদের পায়ের নিচের দিকে আরো ছয়টি সমতল (পৃথিবী)জমিন সদৃশ স্তর বিদ্যমান। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সর্বপ্রথম পৃথিবীকে সৃষ্টি করেন এরপর সাত আসমান(বিগব্যাং থিওরির বিপরীত)। এটাই কুরআন সুন্নাহ, সাহাবীদের(রাঃ) শিক্ষা। এবং সুনিশ্চিতভাবে এটা আজকের দাজ্জালের অনুসারী বিজ্ঞানী তথা ন্যাচারাল ফিলসফারদের বিপরীত তত্ত্ব। অথচ আজ এই সম্পূর্ন বিপরীত মেরুর অপবিদ্যাকে ইসলামাইজ করে সবার সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত আকিদায় প্রবেশ করানো হয়েছে। কাফিররা চায়, দুনিয়ার সমস্ত লোকেরা ওদের ন্যায় কুফরি আকিদা গ্রহন করুক,সেটা যেভাবেই হোক। এই বিষয়গুলো প্রকাশ করার জন্য আজ অধিকাংশ মুসলিমই আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করছে। সুবহানআল্লাহ!


৬ দিনে সৃষ্টিঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেন।
আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّ رَبَّكُمُ اللّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ تَبَارَكَ اللّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক (আরাফঃ৫৪)

اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ مَا لَكُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا شَفِيعٍ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ

আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?(সিজদাহ ৪)

ছয়দিনে সৃষ্টির বিষয়টি শুধু কুরআনেই নয় তাওরাতেও ছিল। এখনো আছে, কিন্তু ওরা সামান্য পরিবর্তন করেছে। ওরা বলে আল্লাহ ছয়দিনের সৃষ্টির শেষে বিশ্রাম গ্রহন করেন! নাউজুবিল্লাহ!! এই কথা আল্লাহর রাসূল(সাঃ) সামনেও বলেছিল, যা শুনে তিনি প্রচন্ডভাবে রাগান্বিত হন। ওদের বানোয়াট মিথ্যাচারীতা খন্ডন করে নিচের আয়াতটিঃ
وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ

আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি (ক্কাফ ৩৮)


هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاء وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। [হাদীদঃ০৪]

ছয়দিনে সৃষ্টির ব্যপারে আরো দলিলঃ

إِنَّ رَبَّكُمُ اللّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الأَمْرَ مَا مِن شَفِيعٍ إِلاَّ مِن بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمُ اللّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلاَ تَذَكَّرُونَ

নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না ?  [ইউনুস ৩]

وَهُوَ الَّذِي خَلَق السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاء لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً وَلَئِن قُلْتَ إِنَّكُم مَّبْعُوثُونَ مِن بَعْدِ الْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَـذَا إِلاَّ سِحْرٌ مُّبِينٌ

তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে, তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, "নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবে, তখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো স্পষ্ট যাদু!(হুদঃ৭)

الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর(ফুরকানঃ৫৯)


এই ছয়দিনের সৃষ্টির বর্ননা আদৌ 'বিগব্যাং থিওরি' নয় যেটা আজকের মডারেট মুসলিম থেকে শুরু করে প্রায় সবাই সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করে। বরং এই সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পূর্ন ভিন্ন এবং বিগব্যাং তত্ত্বের বিপরীত। এই কথা আমরা বারবার বলছি। বিগব্যাং তত্ত্বানুযায়ী মহাবিস্ফোরণের দ্বারা ভ্যাকুয়াম মহাশূন্য(যেটাকে আকাশ বলা হয়) সৃষ্টি হয়, এই মহাকাশ সৃষ্টির বিলিয়ন ট্রিলিয়ন বছর পর বিলিয়ন মিলিয়ন পৃথিবীর মত গোলাকৃতি পাথুরে বা গ্যাসের দলা ঠান্ডা হয়ে গ্রহ নামের কিছু জিনিসের সৃষ্টি হয়, এরকম কোটিকোটি গ্রহের একটি হচ্ছে পৃথিবী। এই অপোজিট অল্টারনেটিভ সৃষ্টিতত্ত্বে আসমান মানে অনন্ত শূন্যস্থান। সলিড কিছু নয়। অপবৈজ্ঞানিক তত্ত্বানুযায়ী মহাকাশ সর্বপ্রথম একাএকা সৃষ্টি হয় মহাবিস্ফোরণের দ্বারা এরপর বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পর কোটি কোটি সূর্যের মত তারকা এবং এর চারপাশে অস্থিরভাবে ঘুর্নায়মান গ্রহ,উপগ্রহ। সেই সোলার সিস্টেমও দৌড়াচ্ছে,ছায়াপথ হচ্ছে গ্রহনক্ষত্রকে ধারনকারী। সেটাও ছুটে চলছে।

অথচ কুরআনিক কস্মোজেনেসিস একদম ভিন্ন কিছু। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সর্বপ্রথম পৃথিবী সৃষ্টি করেন।এরপর পৃথিবীর পর আসমানকে ছাদ হিসেবে সৃষ্টি করা হয়। যেমনটা অট্টালিকার ভিত্তি প্রস্তুতের পরে ছাদ নির্মান করা হয়। আল্লাহ বলেনঃ

هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত।(বাকারাঃ২৯)




নূনঃ
নূন হচ্ছে বিশালাকার মাছ, যার উপর যমীনকে বিস্তৃত করা হয়েছে।
Ibn 'Abbas told all of you by Wasil b. 'Abd al-A'la al-Asadi-Muhammad b. Fudayl-al-A'mash-Abu Zabyan-Ibn 'Abbas: The first thing created by God is the Pen. God then said to it: Write!, whereupon the Pen asked: What shall I write, my lord? God replied: Write what is predestined! He continued. And the Pen proceeded to (write) whatever is predestined and going to be to the Coming of the Hour. God then lifted up the water vapor and split the heavens off from it. Then God created the fish (nun), and the earth was spread out upon its back. The fish became agitated, with the result that the earth was shaken up. It was steadied by means of the mountains, for they indeed proudly (tower) over the
earth.352 

I was told about the same by Wasil-Waki'-al-A'mash-Abu Zabyan-Ibn 'Abbas.

According to Ibn al-Muthanna-Ibn Abi 'Adi-Shu'bah Sulayman (al-A'mash ?)-Abu Zabyan-Ibn 'Abbas: The first (thing) created by God is the Pen. It proceeded to (write) whatever is going to be. (God) then lifted up the water vapor, and the heavens were created from it. Then He created the fish, and the earth was spread out on its back. The fish moved, with the result that the earth was shaken up. It was steadied by means of the mountains, for the mountains indeed proudly (tower) over the earth. So he said, and he recited: "Nun. By the Pen and what they write."353

I was told the same by Tamim b. al-Muntasir-Ishaq (b. Ytzsuf)-Sharik (b.'Abdallah al-Nakha'i)-al-A'mash-Abu Zabyanor Mujahid
[History Of Tabari- Six Days Creation]

এ ব্যপারে আল্লাহই ভাল জানেন।




আসমানের আগে পৃথিবী সৃষ্টির বিষয়টি বিগব্যাং থিওরির মিথ্যাচারীতা এবং আধুনিক মুসলিমদের অপব্যাখ্যাকে  প্রকাশ করে দেয়। মাছের পিঠে যমীন ও আসমানকে রাখার বিষয়টিও অপবিজ্ঞান পরিপন্থী বিষয়। নাসার প্রকাশ করা পৃথিবীর (ভুয়া)ছবি গুলোতে এরকম কিছুই দেখা যায় না,কিন্তু হলিউডের Color of magic ফিল্মের শুরুতে ঠিকই ডিস্ক ওয়ার্ল্ড কচ্ছপের পিঠে দেখানো হয়। আমরা মুসলিমরা আজ এমন, যে স্টিফেন হকিং যখন বলে জগতসমূহ কচ্ছপের পিঠে আছে তখন সেটাকে খুব গভীর জ্ঞানগর্ভের বিষয় বলে মনে করি, অথচ যখন শার'ঈ দলিলে কাফিরদের কথার বিপরীত সত্যকে উল্লেখ দেখি তখন সেটার প্রতি অবিশ্বাসকে মুখে প্রকাশ না করলেও অন্তরে ঠিকই অবিশ্বাসবশত সংশ্লিষ্ট হাদিসটিকে জাল-জঈফ বানাতে সনদ তালাশ শুরু করি। এটাকে তখন কুসংস্কার কিংবা অতিরিক্ত ধর্মীয়গোড়ামিপূর্ন বিশ্বাস বলে মনে করি, কিন্তু ওদিকে হকিং কমিউনিটির ইউনিভার্স অন টার্টেল থিওরিকে শ্রদ্ধার সাথে দেখি। নিঃসন্দেহে এটা অন্তরের রোগসমূহের একটি।

 যারা কাফিরদের বিগব্যাং তত্ত্বকে ইসলামাইজ করেছে,তাদের নিকট প্রশ্ন, বিগব্যাং থিওরিতে কিভাবে পৃথিবীকে মহাশূন্য বা মহাকাশ ছাড়াই সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়েছে(যেহেতু কুরআন-হাদিস এ কথা বলছে), এটা তো বিগব্যাং এর সাথে বৈপরীত্যপূর্ন সাংঘর্ষিক বর্ননা!? তারা এখন কিরূপ অপব্যাখ্যার দ্বারা ইসলাম ও কুফরকে সমন্বয় করবে?!

ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ তার আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে বলেনঃ





   প্রথমাবস্থায় আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী কোনরূপ ফাকা স্থান ছিল না। পরস্পর ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। এমনকি আসমান-জমিনকে সাত স্তরেও বিভক্ত করা হয়নি। পরবর্তীতে আসমান ও জমিনকে পৃথক করে, আসমানকে সাত স্তরে বিভক্ত করা হয়। আল্লাহ বলেনঃ

أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاء كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ

কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মিশে(rat'q) ছিল ওতপ্রোতভাবে , অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক(fat'q) করে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?

  وَجَعَلْنَا فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَن تَمِيدَ بِهِمْ وَجَعَلْنَا فِيهَا فِجَاجًا سُبُلًا لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ

আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুঁকে না পড়ে এবং তাতে প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয়।

  وَجَعَلْنَا السَّمَاء سَقْفًا مَّحْفُوظًا وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ

আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।

  وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ

তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।(আম্বিয়াঃ৩০-৩৩)


অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা এর বর্ননা খুবই স্পষ্ট।  আসমান এবং জমিন উভয়ই সলিড অবজেক্ট।  যা সর্বপ্রথম একত্রে মিশে ছিল, পরবর্তীতে আল্লাহ উভয়কে পৃথক করে উভয়ের মাঝে ফাকাস্থান সৃষ্টি করেন। এবং  আসমানকে ফেড়ে সাতটি স্তরে বিভক্ত করে পৃথিবীর ছাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
অতঃপর চাঁদ সূর্য নক্ষত্রমালা এবং দিন রাত্রিকে সৃষ্টি করেন যারা প্রত্যেকের নির্ধারিত ফালাকে আবর্তন করে।

যারা বিবর্তনবাদী শয়তানি বিজ্ঞানকে ইসলামের সাথে মিশ্রিত করছে, তারা কি করে এটা সমন্বয় করছে যে, (প্রচলিত তত্ত্বানুযায়ী) নন সলিড শূন্য আকাশ(ভ্যাকুয়াম)  জমিনের সাথে মিশে ছিল! এবং সেই ফাকা স্থান বা এম্পটি স্পেস আবার আলাদাও করা হল! যারা কুরআন আর অপবিজ্ঞানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করছে দাওয়ার নামে এরা শুধু অপব্যাখ্যাই করেনি,বরং কুরআনের আয়াত গুলোকে অর্থহীন করে তুলছে। কারন দুইটা ভিন্ন জিনিসকে এক করার চেষ্টা করে খিচুড়ি বানিয়ে ফেলেছে। আমরা যেরূপে সমস্ত দলিল গুলো একের পর এক প্রকাশ করছি, এরূপ করে যদি কুফর-ঈমানের মাঝে অবস্থানকারী মুসলিমরা অপব্যাখ্যা আর গোঁজামিল দিয়ে আধুনিক অপবিজ্ঞানকে সমন্বয় করতে চেষ্টা করত, তাহলে ওদের ভাঁওতাবাজি সহজেই প্রকাশ পেত। কিন্তু ওরা এটা কখনোই করবে না, বরং বিচ্ছিন্নভাবে আয়াত গুলোকে নিজের মত অনুবাদ করে অপব্যাখ্যা করবে।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে, যে আয়াত(২১:৩০) বিগব্যাং এর ভুয়া তত্ত্ব থেকে আল্লাহর সৃষ্টির পবিত্রতা ঘোষনা করে, সেই আয়াতকেই ওরা বিগব্যাং কে সত্যায়নের দলিল হিসেবে ব্যবহার করে। ইন্না লিল্লাহ। এজন্য যারা কুরআন হাদিসে বর্নিত কস্মোলজির সম্পর্কে জ্ঞানহীন তারা অপব্যাখ্যাকেই সত্য বলে ভাবতে শুরু করে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আসমান জমিনকে ঘোরাঘুরি বা আবর্তন উপযোগী করে সৃষ্টি করেন নি। বরং আসমান জমিন স্থির(এ ব্যপারে সামনে শরী'আতের আরো মজবুত দলিলের সম্মুখীন হব,বিইযনিল্লাহ) । আল্লাহ আসমানকে আমাদের উপরে গম্বুজাকৃতির ছাদ এবং জমিনকে বিছানার ন্যায় বিছিয়েছেন। পাহাড়কে স্থাপন করেছেন কীলকরূপে সমতল জমিন স্থির রাখার জন্য যাতে তা এদিক ওদিক কাত হয়। বড় আফসোসের বিষয় হচ্ছে কুরআন সুন্নাহর বিকৃত ব্যাখ্যাকারীরা সূরা আম্বিয়ার ৩৩ নং আয়াতকে ব্যবহার করে স্থির জমিনকে ঘূর্নয়মান চলমান প্রমানের জন্য। কারন তাদের নীতি অনুযায়ী, কাফিরদের প্রচলিত এ বিজ্ঞান অনুযায়ী দ্বীনকে খাপ খাওয়াতে হবে। তারা "সবাই" শব্দের ভেতর জমিনকেও অন্তর্ভুক্ত করে, অথচ স্পষ্টভাবে দেখছেন আল্লাহ এই "সবাই" বলতে দিন-রাত্রি, চন্দ্র-সূর্য এ চারটি জিনিসের কথা বলেছেন।

এবার আসুন, সূরা আম্বিয়ার এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির(রঃ),প্রাচীন আলিম,মুফাসসীরিন এবং সাহাবীরা(রাযি.) কি বলছেন সেটা দেখি- 




আশা করি এবার স্পষ্ট হয়েছে। সাহাবা(রাঃ), মুফাসসিরীন সবাই আসমান জমিনের ব্যপারে সেই অভিন্ন সত্য কথা বলছেন, যার বর্ননা আমরা করছি। মহাবিস্ফোরণের ন্যায় কিছুই ঘটে নি, যা কাফিররা বিশ্বাস করতে বলে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সবই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। সর্বপ্রথম আসমান ও জমিন একত্রিত ছিল। সাহাবীদের বর্ননানুযায়ী উভয়ই বস্তু একে অপরের সাথে সংযুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা পৃথক করে আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী ফাকাস্থান তৈরি করলেন।আসমানকে ফেড়ে সাত স্তরে বিভক্ত করলেন।

প্রথম আসমান থেকে জমিনের ফাকা স্থানটি ৫০০ বছরের পথের সমান দীর্ঘ। আল্লাহ আসমান ফেড়েঁ বর্ষন করলেন। বিষয়টি আলজেরীয় এক ভাই গ্রাফিক্যালি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। দেখুনঃ
https://youtu.be/RvTxxRwxQX0

 আজকের বিজ্ঞান বলে আসমান বলতে অন্তহীন 'শূন্য' অথচ আল্লাহ আসমান জমিনের মধ্যকার শূন্যস্থান সৃষ্টি করেছেন। আসমান যদি সত্যিই শূন্যস্থান হত তাহলে সাহাবীরা(রাঃ), প্রাচীন মুফাসসিরীন কখনোই আসমান জমিন পৃথক করে মাঝে শূন্যস্থান নির্মানের কথা বলতেন না। আসমানকে পৃথক করার প্রশ্নও আসতো না, কারন যেহেতু আসমান মানেই শূন্য। শূন্যতা বা ফাকাস্থানকে জমিন থেকে পৃথক করে আবারও ফাকাস্থান তৈরির চিন্তা একদমই অর্থহীন। তাফসিরেও একই কথা যে, পর্বতের দ্বারা যমীনকে স্থির করা হয়েছে। আসমানকে তাবু বা বেনার ন্যায় স্তম্ভ ছাড়াই স্থির রাখা হয়েছে। আসমান হচ্ছে তরঙ্গায়িত সুউচ্চ ছাদ যা আমাদের জন্য বন্ধ(যদিও থিয়েটারে/কম্পিউটারে বানানো চাদে মঙ্গলে যাওয়ার ভিডিও মানুষ সত্য বলে বিশ্বাস করে)। আর আম্বিয়ার ৩৩ নং আয়াতে উল্লিখিত ৪ টি জিনিস ছাড়া অন্যকিছুকে আবর্তনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। 

পৃথিবীকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি এবং এর পরবর্তীতে আসমানকে সপ্তস্তরে বিভক্তকরনের দলিল হিসেবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ

قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِالَّذِي خَلَقَ الْأَرْضَ فِي يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُ أَندَادًا ذَلِكَ رَبُّ الْعَالَمِينَ
বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।

  وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ مِن فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَاء لِّلسَّائِلِينَ
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।

  ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ اِئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।

  فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاء أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা [হা মীম সেজদাহঃ৯-১২]


এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসিরের(রহঃ) তাফসীরে এসেছেঃ






সুতরাং,এটা স্পষ্ট যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সর্বপ্রথম ২ দিনে জমিনকে(পৃথিবীকে) সৃষ্টি করেন। পরের দুইদিন আসমানকে সপ্তস্তরে সজ্জিত করেন। এরপর আরো দুইদিনে জমিনকে বিছানার ন্যায় সমতলে বিস্তৃত করেন, বসবাস উপযোগী করেন, পানি,গাছপালা, পর্বত স্থাপন করেন। নিকটতম (১ম)আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সুসজ্জিত করেন। এরমানে তারকারাজি প্রথম নিকটতম আসমানেই রয়েছে। কিন্তু বিবর্তনবাদী অপবিজ্ঞান আমাদের শোনায়, এই তারকারা সর্বত্র আর এরা সূর্যের মত আলো দান কারী। তারকা-চন্দ্র-সূর্য নিয়ে সামনে বিস্তারিত আসছে। ইবনে আব্বাস(রাঃ) এর কাছে আগত ব্যক্তির প্রশ্ন(আসমান আগে নাকি জমিন আগে) টি অবশ্যই ভাল করে পাঠ করেছেন। তার সাথে শতভাগ ঐক্যমত পোষন করি। আর তিনি যা বর্ননা করেছেন, তা সুস্পষ্টভাবে মেইনস্ট্রিম কস্মোলজিকে ভ্রান্ত প্রমান করে। উমার(রাঃ) সত্য বলেছেন, ইবনে আব্বাস(রাঃ) এর কুরআনের জ্ঞানই সর্বাধিক। বর্তমানে সাহাবিদের(রাঃ) ব্যাখ্যার বিপরীতে যে যাই বলুক সবই ভ্রান্ত এবং বর্জনীয়। 

ইবনু আব্বাস(রাঃ) যে ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন, তার নির্ভুলতার দলিল মেলে নিন্মোক্ত আয়াতেঃ

أَأَنتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاء بَنَاهَا
তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন? 

 رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا
তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।

  وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا
তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন।

  وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهَا
পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন। 

 أَخْرَجَ مِنْهَا مَاءهَا وَمَرْعَاهَا
তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন,

  وَالْجِبَالَ أَرْسَاهَا
পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন   [আন নাযিয়াতঃ ২৭-৩২]


অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা যমীনকে বিস্তৃতকরন বা সমতলায়নের কাজটি আসমানকে সপ্তস্তরে বিন্যাস্ত করবার পর করেন। আফসোসের বিষয় যে আয়াত দ্বারা রহমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা জমিনকে বিস্তৃত ও সমতলভাবে বিছানোর কথা বলেন, কাফিরদের মতাদর্শের সাথে মিল রাখার জন্য এই আয়াতকেই আজকের মুসলিমরা ব্যবহার করে। তারা কাল্পনিক "গোলাকার" পৃথিবীর দলিলরূপে আন নাযিয়াতের ৩০ নং আয়াতকে ব্যবহার করে। তারা دَحَاهَا শব্দটিকে অপব্যাখ্যা করে বলে পৃথিবী উটপাখির ডিমের ন্যায়। তারা এই ডিম্বতত্ত্বটি গ্রহন করে রাশাদ খলিফা নামের নবী দাবিকারী মুর্তাদের থেকে। এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর কি হতে পারে!


 দাহাহা শব্দটির অর্থ বিস্তৃত করা। দাহাহা শব্দটির দূরবর্তী শব্দের অর্থটিকেও যদি গ্রহন করা হয় তবে এর দ্বারা বোঝায় উটপাখি ডিমপাড়ার জন্য অসমতল ভূমি পা দিয়ে আঁচড়ে যেভাবে বিস্তৃত করে ঐরূপ। এর সাথে ডিমের কোন সম্পর্ক নেই। উটপাখির এই কাজটিকেও যদি আয়াতের অর্থের সাথে সংযোগ করা হয়, তবে অর্থ দাঁড়ায় পৃথিবী বিস্তৃত সমতল!


ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর তার তাফসিরে বলেনঃ




অর্থাৎ তিনি জমিনকে বিস্তৃত করেন এবং পর্বত স্থাপনের দ্বারা স্থির ও নিশ্চল করেন। আল্লাহ আসমানকে সপ্তস্তরে বিন্যাস্ত করেন এবং নিকটতম আসমানের গায়ে নক্ষত্রদের বসিয়ে দেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা জমিনের ন্যায় আসমানকেও স্থির রাখেন এবং সেটা ভূপৃষ্ঠে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاء أَن تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوفٌ رَّحِيمٌ

তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।(হাজ্জ্ব ৬৫)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা গম্বুজাকৃতির সমুন্নত ছাদকে স্বীয় অনুগ্রহে স্থির রাখেন, এবং যমীনের উপর পতন রোধ করেন। আশা করি, পাঠকদের আর কোন সন্দেহ নাই, আসমানের ব্যপারে। এই আয়াতটি আবারো বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত মিথ্যা কস্মোলজিকে মিথ্যা প্রমান করে। এই আসমান মানে মহাশূন্য নয়। মহাশূন্য বলে বস্তুত কিছুই নেই। সবই কল্পনা।  আসমান বলতে এটাই যেটা আমরা আমরা উর্ধ্বলোকে দেখতে পাই । যমীন বলতে এই আমাদের সমতলে বিছানো যমীনই, এর বাহিরে কিছু নেই। গ্রহ বলতে কল্পনা ব্যতিত কিছুই নেই।

আসমানি ছাদ যদি আল্লাহর ইচ্ছায় পতিত হয় তবে তা এই ভূপৃষ্ঠেই পড়বে। সৃষ্টির শুরুতে এটা মাটির সাথে লেগে ছিল, পরবর্তীকালে আসমানকে উর্ধ্বে স্তম্ভব্যতিত দ্বার করানোর দ্বারা মধ্যবর্তী ফাকাস্থান তৈরি করা হয়, যার ভেতর আমরা আছি। ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ

আজকের পর্বের দ্বারা সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে সম্পূর্নভাবে প্রকাশ হয়েছে। সেই সাথে স্পষ্ট হয়েছে যাবতীয় অপব্যাখ্যা এবং অপবিজ্ঞানের বিষয়গুলো। প্রকৃত সত্য এটাই যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আমাদেরকে জানিয়েছেন তার পবিত্র কালামের দ্বারা এবং যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা সাহাবীদের থেকে পাওয়া গেছে। প্রাচীন যুগের প্রকৃত জ্ঞানী আলিমগন সাহাবিদের থেকে ভিন্ন মনগড়া তাফসিরে যান নি,যেমনটা এ যুগের আলিমদের পাওয়া যায়। গ্রীক দর্শন আরবে প্রবেশের পরবর্তী সময় থেকে সব বদলে যেতে শুরু করে। যারা কুফরি দর্শনের ব্যপারে লেখালিখি করেছেন, তাদেরও অনেকে সৃষ্টিতত্ত্বে এসে গ্রীকচিন্তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। আলিমদের মধ্যে যে বা যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে সেসব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা বিদ্বেষ পোষন করিনা। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রেসীয়ান-পিথাগোরিয়ান কস্মোলজিকে গ্রহন করেছেন তাদের ব্যপারেও সুধারনা রাখার চেষ্টা করি, আমরা মনে করি তারা নেহাৎ নিরুপায় হয়ে এমনটা করেছেন, কেননা বিজ্ঞানকেন্দ্রিক ফিতনাহ ওই যুগ থেকেই শুরু। অপবিদ্যার আগমনে, হক্ক জ্ঞানকে পিছনে ঠেলে দেওয়া শুরু হয়, ভ্রান্ত-কুসংস্কারাচ্ছন্ন তত্ত্বের নাম দিয়ে। হতে পারে সমকালীন আলিম সম্প্রদায় তখন থেকেই নিরুপায় হয়ে ইল্মুল কালাম অনুযায়ী যুক্তিসিদ্ধতার দিকে লক্ষ্য রেখে জিনিস গুলোকে গ্রহন এবং ইসলামিকীকরনের চেষ্টা করেছেন। গত পর্বেই দেখেছেন, ইবনু কাসির(রহঃ) জ্যোতির্বিদদের কথা ইসলামের দলিল দ্বারা খন্ডন করেছেন, হয়ত আলিমদের একটা দল এভাবে খন্ডন করে টিকতে পারেন নি বরং ইসলামের সাথে সমন্বয়ের দিকে গিয়েছেন। অথবা নেহাৎ অন্তরের ব্যাধির দরন কাফিরদের মিথ্যা ইল্ম তাদের নিকট সুশোভিত মনে হয়েছে এবং গ্রহন করেছেন। এটা আজকের যামানায় খুব সাধারন দৃশ্য। যারা এরূপ করছে, তাদেরকে দেখবেন, এ সমস্ত দলিল সমূহ তাদের সামনে পেশ করা হলে এসব বর্ননা সহীহ কিনা তা যাচাইয়ের দিকে যাবে, কারন তারা অন্তর থেকে এগুলো মানে না। এরা তাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক নিঃসৃত যুক্তি দ্বারা সব কিছু বুঝতে চায় এবং মানতে চায়। অথচ মূল দলিল গুলো কুরআনেই আছে। তারা এসবকে রূপক বর্ননা বলে এড়িয়ে যায়, পাশে যুক্তিনির্ভর দূরবর্তী অপব্যাখ্যার বিদ্যা এদের ভালই জানা আছে।


ওয়াআল্লাহু আ'লাম।

বিগত পর্বগুলোঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/article-series_85.html

[চলবে ইনশাআল্লাহ ]

Thursday, March 14, 2019

১.ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব

সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বকে বর্জন করা হয়েছে। গ্রহন করা হয়েছে যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক দর্শন উৎসারিত মিথ্যা সৃষ্টিতত্ত্ব। মুসলিম আলিমগন এসব গ্রহন করে নিয়েছেন। সেই সাথে ইসলামাইজ করা হয়েছে। এই বিকৃতির শুরু যেদিন থেকে গ্রীক দর্শন আরবে প্রবেশ করে, সেদিন থেকে। ওই যুগের আলিমগনও সেসব দ্বারা ধীরে ধীরে প্রভাবিত হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে এখন আর অধিকাংশ মুসলিম সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত বিষয়ে সাহাবীদের(রাঃ) আকিদা রাখে না। বরং এমন কিছুতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং ইসলামের সাথে মিশ্রন ঘটিয়েছে যার উৎস শয়তান এবং যাদুবিদ্যার কুফরি শাস্ত্র। তারা 'প্রাকৃতিক দর্শন'কে গ্রহন করে কুরআন সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করে, সেসবকে দ্বীনের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। তারা কুফর ও শিরকে ভরা বানোয়াট আকিদা গুলোর প্রচার করার সময় গ্রহনযোগ্য করবার জন্য কুরআনের পবিত্র আয়াতগুলোকে ব্যবহার করছে এই বলে যে "কুরআনে ১৪০০ বছর আগে অমুক অমুক বিষয় গুলো বলেছে", যা অপবিজ্ঞানী, দার্শনিকরা বলছে! নাউজুবিল্লাহ!! এভাবে সুস্পষ্ট বৈপরীত্যপূর্ন কুফরকে কুরআন এর দলিল দ্বারা সত্যায়ন এবং বিপরীত দিক দিয়ে, কুরআনের বর্ননার সাথে ওই সব শয়তানি আকিদার মেলবন্ধনের অপচেষ্টা চলছে।

অথচ বর্তমান অপবিজ্ঞানী,প্রাচীন যাদুকররা যা বলে তা তাদের অনুমান এবং শয়তানের বক্তব্য ছাড়া কিছুই নয়। ওদের কথা বাস্তব জগতের সাথেও কোনরূপ সাদৃশ্যতা রাখে না। বাস্তব জগতে বরং সেটাকেই সত্যরূপে দেখা যায়, যা রহমান আল্লাহ সুবহানাল্লাহু ওয়া তা'য়ালা কুরআনে এবং সাহাবিদের(রাঃ) বর্ননাগুলোয় পাওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায়, অপবিদ্যার ধারক এবং শয়তানের আউলিয়ারা ১% সত্যের সাথে অনুমান নির্ভর ৯৯% কুফরি দর্শন মিশ্রিত করে প্রচার করে, মূর্খরা এতেই ফাঁদে পড়ে। তারা শয়তানের এবং তার অনুসারীদের অনুসরন করতে শুরু করে।

আজকের সময়ে হাজারো ফিতনার মধ্যে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত আকিদাগত ভ্রষ্টতার ফিতনায় উম্মাহ নিমজ্জিত। এজন্য সত্য মিথ্যাকে স্পষ্ট করতে এবং সতর্ক করতে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে কুরআন সুন্নাহর দলিলভিত্তিক ধারাবাহিক আর্টিকেল প্রকাশ করবার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমি এখানে নিজস্ব কোন নবউদ্ভাবিত আকিদা বা চিন্তাধারাকে উপস্থাপন করছি না, বরং এটা কুরআন সুন্নাহর দালিলিক সুবিশাল সংকলন বৈ আর কিছু নয়। এটা ১৪০০ বছর আগের সাহাবীদের সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে আকিদা,জ্ঞানকেই পুনরুজ্জীবন করার প্রয়াস মাত্র। এ লক্ষ্যে cosmogony এর ব্যপারে আসা কুরআন,অজস্র সহীহ ও দুর্বল হাদিস এবং প্রাচীন সুপ্রসিদ্ধ আলিমদের মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাফসীর নিয়ে আসা হবে, ইনশাআল্লাহ। আমাদের কাছে কাফির মুশরিকদের মনগড়া এবং যাদুশাস্ত্র নির্ভর কুফরি বিশ্বাসের চেয়ে 'প্রাচীন বরেন্য আলিম ও সাহাবীদের(রাঃ)  দ্বারা গৃহীত' কুরআন সুন্নাহর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইসরাইলীয় বর্ননাও শত সহস্রগুন উত্তম।
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া
কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে বর্তমান সময়ে বিচিত্র অপব্যাখ্যার চিত্রও তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার কাছে এ ব্যপারে সাহায্য চাই এবং ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।

আশাকরি এসমস্ত বিষয়ে চলমান বিতর্ক মতানৈক্য অবসান ঘটবে। কিন্তু তাদের ব্যপারে আশাহীন যারা কুরআন সুন্নাহর দলিলকে যথেষ্ট মনে করে না। যাদের হৃদয়ে ব্যধির দরুন সজ্ঞানে কাফিরদের কুফরি আকিদাকে গ্রহন করে এবং সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিকতা দেখা স্বত্ত্বেও সেগুলোকে দ্বীনের সাথে মেশাতে চায়। আল্লাহর কাছে মু'তাযিলা, মুরজিয়া এবং তাদের ন্যায় অন্যান্য পথভ্রষ্ট ফের্কার ফিতনা থেকে পানাহ চাই।



পর্ব -১



১.সৃষ্টি জগতের সূচনাঃ
আলিমদের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্ট জিনিসের ব্যপারে মতানৈক্য রয়েছে। প্রথম সৃষ্টি পানি,আরশ,কলম,আলো আধার প্রভৃতির কোনটি সেটা আল্লাহই ভাল জানেন।

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া 

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবী উবাদাহ বিন সামেতের ছেলে ওয়ালীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘মৃত্যুর সময় আপনার আব্বার অসিয়ত কী ছিল?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমাকে আমার আব্বা ডেকে বললেন, বেটা! তুমি আল্লাহকে ভয় কর। আর জেনে রেখো, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর ভয় রাখতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতি এবং তকদীরের ভালো-মন্দ সব কিছুর প্রতি ঈমান এনেছ। এ ঈমান ছাড়া মারা গেলে তুমি জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বপ্রথম যা সৃষ্টি করেন, তা হল কলম। অতঃপর তাকে বলেন, ‘লিখো’। কলম বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি কী লিখব?’ তিনি বললেন, ‘তকদীর এবং অনন্তকাল ধরে যা ঘটবে তা লিখো।’ (আহমাদ ২৩০৮১, তিরমিযী ২১৫৫, ৩৩১৯নং)

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১১৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



সৃষ্টির প্রথমে কি ছিল এরূপ ভাবতে থাকলে শয়তান অনেকের ক্ষেত্রে এরূপ প্রশ্ন তৈরি করে, যেমনঃ "আল্লাহর পূর্বে কি ছিল"।
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)তিনি বলেন,
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لَنْ يَبْرَحَ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتَّى يَقُولُوا هَذَا اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَىْءٍ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ ‏"‏‏.‏

 রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা একে অপরকে প্রশ্ন করতে থাকবে যে, এ আল্লাহ সব কিছুরই স্রষ্টা, তবে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করল?[মুসলিম ১/৬০, হাঃ ১৩৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৮)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭২৯৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، - وَاللَّفْظُ لِهَارُونَ - قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتَّى يُقَالَ هَذَا خَلَقَ اللَّهُ الْخَلْقَ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَلْيَقُلْ آمَنْتُ بِاللَّهِ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মানুষের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে এমন প্রশ্নেরও সৃষ্টি হয় যে, এ সৃষ্টিজগত তো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে আল্লাহকে সৃষ্টি করল কে? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যার অন্তরে এমন প্রশ্নের উদয় হয় সে যেন বলে, ‘আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি’। [৪৭] (ই.ফা. ২৪৩; ই.সে. ২৫১)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৪১

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com



আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
একদা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! মানুষ তোমাকে প্রশ্ন করতে থাকবে। এমন কি এ প্রশ্নও করবে, আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন; তাহলে আল্লাহকে সৃষ্টি করল কে? আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, পরবর্তীকালে একদিন আমি মাসজিদে (নাবাবীতে) উপস্থিত ছিলাম। এমন সময়ে কতিপয় বেদুঈন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, হে আবূ হুরায়রা! এ তো আল্লাহ তা’আলা। তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? বর্ণনাকারী বলেন, তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) হাতে কিছু কংকর নিয়ে তাদের প্রতি তা নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, আমার বন্ধু (রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সত্য কথাই বলে গেছেন। (ই.ফা. ২৪৮; ই.সে. ২৫৭)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৪৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com


حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَامِرِ بْنِ زُرَارَةَ الْحَضْرَمِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ يَزَالُونَ يَقُولُونَ مَا كَذَا مَا كَذَا حَتَّى يَقُولُوا هَذَا اللَّهُ خَلَقَ الْخَلْقَ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ ‏"‏ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ আপনার উম্মাত সর্বদা এটা কে সৃষ্টি করল। এ ধরনের প্রশ্ন করতে থাকবে। এমনকি এ প্রশ্নও করবে যে, সকল সৃষ্টিই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তা হলে আল্লাহকে সৃষ্টি করল কে? (ই.ফা. ২৫০; ই.সে. ২৫৯)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৪৮

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com




وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ ﷺ قَالَ : «لَا يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتّى يُقَالَ هذَا خَلَقَ اللّهُ الْخَلْقَ فَمَنْ خَلَقَ اللهَ؟ فَإِذَا قَالُوا ذلِكَ فَقُولُوا اللّهُ أَحَدٌ اللّهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَه كُفُوًا أَحَدٌ ثُمَّ لْيَتْفُلْ عَنْ يَسَارِه ثَلَاثًا وَلْيَسْتَعِذْ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ». رَوَاهُ أَبُوْ دَاوٗدَ وَسَنَذْكُرُ حَدِيْثَ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ فِيْ بَابِ خُطْبَةِ يَوْمِ النَّحْرِ إِنْ شَآءَ اللهُ تَعَالى

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : মানুষেরা তো (প্রথম সৃষ্টি জগত ইত্যাদি সম্পর্কে) পরস্পরের প্রতি প্রশ্ন করতে থাকবে, এমনটি সর্বশেষে এ প্রশ্নও করবে, সমস্ত মাখলূক্বাতকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তবে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখন তারা এ প্রশ্ন উত্থাপন করে তখন তোমরা বলবে : আল্লাহ এক, তিনি অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি আর কেউ তাকে জন্ম দেননি। তাঁর সমকক্ষও কেউ নেই। অতঃপর (শাইত্বনের উদ্দেশে) তিনবার নিজের বাম দিকে থু থু ফেলবে এবং বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাবে। [১] (মিশকাতের লেখক বলেন) ‘উমার ইবনু আহ্‌ওয়াস-এর হাদীস ‘খুতবাতু ইয়াওমিন্‌ নাহ্‌র’ অধ্যায়ে বর্ণনা করবে ইন্‌শাআল্লাহ তা’আলা।

মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৭৫

হাদিসের মান: হাসান হাদিস


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জন্ম মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন মাখলুকের জন্য। তিনি জীবন মৃত্যুর ধারনারও সৃষ্টিকর্তা। তিনি নিজে জন্ম মৃত্যু থেকে পবিত্র। তিনি কারও থেকে জন্ম নেননি এবং কাউকে জন্ম দেননি। এসব তার মাখলুকদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ এসব ধারনা থেকেও পবিত্র।
আল্লাহ বলেনঃ
الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ

যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়(সূরা মুলক-০২)



لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি [সূরা ইখলাস ৩]


সুতরাং এরূপ প্রশ্ন একদমই অবান্তর। অনেক যিন্দিক এরূপ প্রশ্নও করে 'সব কিছুর শুরু থাকে আল্লাহর পূর্বে কি ছিল? '। এই প্রশ্নটিতে 'পূর্বে' বা 'আগে' শব্দটি সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ : ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻳﺆﺫﻳﻨﻲ ﺍﺑﻦ ﺍۤﺩﻡ ﻳﺴﺐ ﺍﻟﺪﻫﺮ ﻭﺃﻧﺎ ﺍﻟﺪﻫﺮ ﺑﻴﺪﻱ ﺍﻷﻣﺮ ﺃﻗﻠﺐ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﻭﺍﻟﻨﻬﺎﺭ . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, আদাম সন্তান আমাকে কষ্ট দিয়ে থাকে, তারা যুগ বা কালকে গালি দেয়, অথচ আমিই দাহ'র অর্থাৎ যুগ বা কাল। আমার হাতেই (কালের পরিবর্তনের) ক্ষমতা। দিন-রাত্রির পরিবর্তন আমিই করে থাকি। [১]
ফুটনোটঃ
[১] সহীহ : বুখারী ৪৮২৬, মুসলিম ২২৪৬, আবূ দাঊদ ৫২৭৪, আহমাদ ৭২৪৫, সহীহাহ্ ৫৩১, সহীহ আল জামি‘ ৪৩৪৩।
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

এই হাদিসের মানে এই নয় যে, আল্লাহই সময়। বরং
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সময়ের সৃষ্টিকর্তা। তার হাতেই এর নিয়ন্ত্রন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কুরআনের বহু আয়াতে তার সৃষ্ট মাখলুকের শপথ করেছেন। কিন্তু মাখলুকের জন্য আল্লাহ ব্যতিত কারো নামে শপথ শিরক। আল্লাহ বলেনঃ
وَالْعَصْرِ
কসম যুগের (সময়ের),[আসর-১]

অতএব, সময়ের নিয়ন্ত্রন ও সৃষ্টি আল্লাহরই। আল্লাহ সময়ের যেকোন সীমাবদ্ধতার উর্ধ্বে। যেখানে আল্লাহই সময়ের স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক সেখানে আল্লাহর সত্ত্বার ব্যপারে সময়কেন্দ্রিক প্রশ্ন নিতান্তই মূর্খলোকের কাজ ছাড়া কিছু নয়। এজন্য কাফির, যিন্দিক, মুশরিকরা মূলত নির্বোধ, যদিও তারা নিজেদের মহাজ্ঞানী মনে করে।
আল্লাহ বলেনঃ
لَأَنتُمْ أَشَدُّ رَهْبَةً فِي صُدُورِهِم مِّنَ اللَّهِ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ
13
নিশ্চয় তোমরা তাদের অন্তরে আল্লাহ তা’আলা অপেক্ষা অধিকতর ভয়াবহ। এটা এ কারণে যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।[সূরা হাশর ১৩]


দেখুনঃ
https://islamqa.info/en/answers/9571/what-is-the-meaning-of-the-hadeeth-do-not-inveigh-against-time-waqt-for-allaah-is-time-waqt


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার অস্তিত্বের ব্যপারে পাঠের সময় শয়তান অনেকের মনে আল্লাহর আকৃতি কিরূপ এ সংক্রান্ত বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। মানুষ তার সীমাবদ্ধ চিন্তাচেতনার দ্বারা আল্লাহকে কল্পনা করতে চেষ্টা করে। আর মানুষের কল্পনার সীমাবদ্ধতায় আল্লাহকে ফেলা অনেক বড় রকমের গোমরাহি। এ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিতর্ক আছে, আল্লাহর সাকার বা নৈরাকার নিয়ে। চরম জাহেরী ও বাতেনিপন্থী দুই দল আল্লাহর আকার এবং নিরাকার কট্টরভাবে সাব্যস্ত করে। যেমনটা মুশাব্বিহা,সুফিদের মধ্যে দেখা যায়। আল্লাহর হাত,চক্ষু, পায়ের ব্যপারে অনেক গুলো আয়াতে এসেছে। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকিদা হচ্ছে সেসবকে শুধুই পড়ে যাওয়া। সাহাবিদের(রাঃ) কেউই এসবের কোন রূপ জাহেরি বা বাতেনি ব্যাখ্যা করেননি। কোনরূপ মনগড়া ব্যাখ্যা করাই বিদআত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা হাত,চক্ষু,পা প্রভৃতির ব্যপারে যা বলেছেন তাতে আমরা বিশ্বাস করি, এবং এর সাথে কোন কিছুর সাদৃশ্যতা যোগ করিনা। আল্লাহ, মানুষের যেকোন ধরনের কাল্পনিক সীমাবদ্ধতা থেকে পবিত্র। আল্লাহর সাদৃশ্য সৃষ্টির কোন কিছুই নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেন,

وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
(ইখলাস-০৪)


কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন(শূরা  ১১)


 ‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন সাদৃশ্য স্থির করো না’ (নাহল ১৬/৭৪)


আল্লাহর সত্ত্বাগত বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তা গবেষণা নিষিদ্ধ। এটা শয়তানকে বিভ্রান্ত করতে সুযোগ দেয়।
Ibn Abbas reported: The Messenger of Allah, peace and blessings be upon him, said, “Reflect deeply upon the creation, but do not reflect upon the essence of the Creator. Verily, his essence cannot be known other than to believe in it.”
Source: Musnad al-Rabī’ 742

"একদা নবী কারীম (সা.) সাহাবাদের চুপচাপ বসে থাকা একটি দলের নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছ? তারা বললেন, আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কে চিন্তা করছি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হ্যাঁ আল্লাহর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা কর; কিন্তু তার সত্তা সম্বন্ধে চিন্তা করো না। যেহেতু তিনি ধারণার অতীত[তাফসীর ইবনে কাসির]।"
নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের বাহ্যিক ও কাল্পনিক সকল দৃষ্টির উর্ধ্বে। সকল প্রকার কল্পনা থেকে পবিত্র। আল্লাহ বলেনঃ

لاَّ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ(আনআম ১০৩)

আজ কাফিররা অনেক রকম কাল্পনিক ফিলসফি তৈরি করে নিয়েছে। সেখানে তারা আল্লাহর ব্যপারে বিচিত্র কথা বলে। এমনকি বিশ্বজগতকেও সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অংশীদার সাব্যস্ত করে, এমনকি প্রকৃতিকেও সৃষ্টিকর্তা সাব্যস্ত করে(ন্যাচারালিজম/প্যান্থেইজম/ননডুয়ালিজম)।ব্যবিলনিয়ান শয়তানি প্রকৃতি পূজার শিরকি যে আকিদা(monism/gnostic non Dualism/pantheism) ইবনে আরাবি, মানসুর হাল্লাজ প্রমুখ ইসলামের মধ্যে সঞ্চালিত করেছে, এবং সুফি/পীরদের মাঝে (ওয়াহদাতুল উজুদ,হুলুল ওয়াল ইত্তেহাদ- ইউনিটি অব এক্সিস্টেন্স/ননডুয়ালিজম বা মনিজম বা প্যান্থেইজম) এখনো মওজুদ আছে, তার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। সালাফের মধ্যে এ আকিদা ছিল না। বরং, এ আকিদার গোড়া তালাশ করলে বাবেল শহর ও এর আশপাশের মালাউন যাদুকর এবং শয়তানদের মিলবে। এটা তো সেই শয়তানের গড়া বিকল্প  মেটাফিজিক্স, যা সম্পূর্নভাবে আল্লাহ ও তার রাসূলের শিক্ষার বিপরীত। এসব কুফরি আকিদাধারীরা আল্লাহর ব্যপারে মনগড়া যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।
আল্লাহ বলেনঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা’ আলা তা থেকে পবিত্র[হাশরঃ২৩]


সেই সৃষ্টির শুরু থেকে আল্লাহ যতকিছুর খরচ করেছেন,এতে তার ভান্ডার থেকে কোন কিছুই কমে নি।

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَدُ اللَّهِ مَلأَى لاَ يَغِيضُهَا نَفَقَةٌ، سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ ـ وَقَالَ ـ أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَدِهِ ـ وَقَالَ ـ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَبِيَدِهِ الأُخْرَى الْمِيزَانُ يَخْفِضُ وَيَرْفَعُ ‏"‏‏.‏

আবু হুরায়রাহ (রাঃ)
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র হাত পূর্ণ, রাতদিন খরচ করলেও তাতে কমতি আসে না। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা কি দেখেছ? আসমান যমীন সৃষ্টি করার পর থেকে তিনি যে কত খরচ করেছেন, তা সত্ত্বেও তাঁর হাতে যা আছে, তাতে এতটুকু কমেনি। এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তখন তাঁর আরশ পানির উপর ছিল। তাঁর অন্য হাতে আছে দাঁড়িপাল্লা, যা কখনও তিনি নিচে নামান আবার কখনও উপরে উঠান। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯০৭)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৪১১

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


আরশ-কুরসি-লাওহে মাহফূজঃ


حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الرِّبَاطِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، - قَالَ أَحْمَدُ كَتَبْنَاهُ مِنْ نُسْخَتِهِ وَهَذَا لَفْظُهُ - قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْحَاقَ يُحَدِّثُ عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ جُهِدَتِ الأَنْفُسُ وَضَاعَتِ الْعِيَالُ وَنُهِكَتِ الأَمْوَالُ وَهَلَكَتِ الأَنْعَامُ فَاسْتَسْقِ اللَّهَ لَنَا فَإِنَّا نَسْتَشْفِعُ بِكَ عَلَى اللَّهِ وَنَسْتَشْفِعُ بِاللَّهِ عَلَيْكَ ‏.‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ وَيْحَكَ أَتَدْرِي مَا تَقُولُ ‏"‏ وَسَبَّحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا زَالَ يُسَبِّحُ حَتَّى عُرِفَ ذَلِكَ فِي وُجُوهِ أَصْحَابِهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ وَيْحَكَ إِنَّهُ لاَ يُسْتَشْفَعُ بِاللَّهِ عَلَى أَحَدٍ مِنْ خَلْقِهِ شَأْنُ اللَّهِ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ وَيْحَكَ أَتَدْرِي مَا اللَّهُ إِنَّ عَرْشَهُ عَلَى سَمَوَاتِهِ لَهَكَذَا ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ بِأَصَابِعِهِ مِثْلَ الْقُبَّةِ عَلَيْهِ ‏"‏ وَإِنَّهُ لَيَئِطُّ بِهِ أَطِيطَ الرَّحْلِ بِالرَّاكِبِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ بَشَّارٍ فِي حَدِيثِهِ ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ فَوْقَ عَرْشِهِ وَعَرْشُهُ فَوْقَ سَمَوَاتِهِ ‏"‏ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ وَقَالَ عَبْدُ الأَعْلَى وَابْنُ الْمُثَنَّى وَابْنُ بَشَّارٍ عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ وَجُبَيْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَالْحَدِيثُ بِإِسْنَادِ أَحْمَدَ بْنِ سَعِيدٍ هُوَ الصَّحِيحُ وَافَقَهُ عَلَيْهِ جَمَاعَةٌ مِنْهُمْ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ وَعَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ وَرَوَاهُ جَمَاعَةٌ عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ كَمَا قَالَ أَحْمَدُ أَيْضًا وَكَانَ سَمَاعُ عَبْدِ الأَعْلَى وَابْنِ الْمُثَنَّى وَابْنِ بَشَّارٍ مِنْ نُسْخَةٍ وَاحِدَةٍ فِيمَا بَلَغَنِي ‏.

জুবাইর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু জুবাইর ইবনু মুত্বঈম তার পিতা হতে তার দাদা সূত্র
তিনি বলেন, এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! লোকজন খুবই কষ্ট করছে, পরিবার-পরিজন, ঘরবাড়ি ধ্বংস  হয়ে যাচ্ছে, ধন-সম্পদ হ্রাস পাচ্ছে এবং জীবজন্তু মরে যাচ্ছে। সুতরাং, আপনি আমাদের জন্য মহান আল্লাহ্‌র নিকট বৃষ্টি প্রার্থনা করুন। কেননা, আমরা আপনার সুপারিশ নিয়ে আল্লাহ্‌র নিকট যাই এবং আল্লাহ্‌র সুপারিশ নিয়ে আপনার নিকট আসি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি কি জানো! তুমি কি বলছো? অতঃপর তিনি তাসবীহ পড়তে থাকলেন, এমনকি তাঁর সাহাবীদের মধ্যেও এর (অসন্তুষ্টির) চিহ্ন পরিলক্ষিত হলো। তিনি আবার বললেন, তোমার জন্য দুঃখ হয়! আল্লাহ্‌র সুপারিশ নিয়ে তাঁর কোনো সৃষ্টির নিকট যাওয়া যায় না। আল্লাহ্‌র মর্যাদা এর চেয়ে অনেক ঊর্ধে, অনেক মহান। তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি কি জানো আল্লাহ কে? তাঁর আরশ আসমানের উপর এভাবে আছে। তিনি আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললেন, তাঁর উপর রয়েছে গম্বুজ সদৃশ ছাঁদ। তা সত্ত্বেও তা (আরশ) তাঁকে নিয়ে গোঙ্গানীর মত শব্দ করে, যেমনটি করে আরোহীর কারণে জিনপোষ। ইবনু বাশ্শার তার হাদীসে বলেন, মহান আল্লাহ তাঁর আরশের উপরে এবং তার আরশ আসমানসমূহের উপরে। অতঃপর হাদীসটি এভাবেই বর্ণিত হয়েছে। [৪৭২৫]

দূর্বলঃ মিশকাত হা/৫৭২৭।


সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭২৬

হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস







কালাম শাস্ত্র হচ্ছে ওই সমস্ত গ্রেসিয়ান-ব্যবিলনিয়ান শয়তানি দর্শন এবং আকিদা যার শাখা প্রশাখা আজ সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। আরবে প্রবিষ্ট গ্রীক দর্শন তথা কালাম শাস্ত্রের ব্যপারে ইবনে কাসির(রহঃ) এর দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছেন? তিনি ওদের কাল্পনিক দর্শনকেন্দ্রিক আসমানজমিনের বর্ননা গ্রহন তো করেনই নি বরং কুরআন সুন্নাহর দলিল দ্বারা শক্তভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন। আজকের আলিমদের সাথে পূর্ববর্তী এসকল আলিমদের পার্থক্যটা এখানেই। আজকের দিনে কাফির মুশরিকদের কাল্পনিক দর্শনকেন্দ্রিক তত্ত্বকে আলিমরা ওয়াজ-বায়ানে রেফারেন্স হিসেবে গ্রহন করতেও ছাড়ে না। অথচ সত্যিকারের জ্ঞানী আলিমরা এসবকে শরীয়াতের দলিল দ্বারা বাতিল সাব্যস্ত করেছেন। এই কালাম শাস্ত্র হচ্ছে সেসমস্ত শয়তানের আকিদার উৎস যা মু'তাযিলাদের যুক্তিচর্চায় জ্বালানি হিসেবে কাজ করত। অনেক লোক মুর্তাদ হয়ে গেছে।




১৬ শতক পর্যন্ত জ্যোতির্বিদ্যা আর আর এস্ট্রলজির(যেটাকে আল্লাহর রাসূল(সা) যাদুবিদ্যার শাখা হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন) মধ্যে কোন পার্থক্য ছিল না। জ্যোতিষীরাই মহাকাশবিজ্ঞানী হিসেবে ছিলেন। ১৯ শতকে এসে অল্প কিছু দিনের জন্য জ্যোতিষশাস্ত্রকে আলাদা করা হয়েছে, সবার মধ্যে এর শাখাপ্রশাখাকে প্রবেশ করানোর জন্য। এখন হাইপার ডাইমেনশনাল ফিজিক্স সেই পুরাতন যাদুশাস্ত্রকেই আবারো পুনরুজ্জীবিত করছে। মেইনস্ট্রিম ফিজিক্স থেকে ওই  থিওরি গুলো খুব শীঘ্রই প্রকাশ পাবে যখন বলা হবে, তারকারাজি মানুষের কর্ম-ভাগ্যে প্রভাব ফেলে। অমুক তারকার অমুক স্থানে আসার জন্য এটা হয়। আজ  ইতোমধ্যে পদার্থবিদগন জ্যোতিষ শাস্ত্রের গুহ্যতত্ত্বানুসারে বলছেন, আমরা সবাই স্টার ডাস্ট,স্টার সিড...। ইবনে কাসির(রহঃ) তার যুগে কাফিরদের থেকে আসা  জ্যোতিবিদ্যাকে গ্রহন করেননি। এমনকি ওদের নিজেদের মাঝেই তত্ত্বগত সাংঘর্ষিকতার কথা বলেছেন, যেমনটা আজও বিদ্যমান। আফসোস হচ্ছে আজকে উম্মাহ কুফরি সৃষ্টিতত্ত্বকে দ্বীনের সাথে মেশাতে ব্যস্ত। সবকিছুকে ইসলামাইজ করে নিয়েছে এবং নিচ্ছে। এরা শুধু ওইসমস্ত বিষয়গুলোকে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানায় যা গ্রহন করলে এদের ভ্রষ্টতা আর শয়তানি সম্পূর্নরুপে প্রকাশ পেয়ে যাবে। যেমন বাবেল শহরের কবি গিলগেমিশের  বিবর্তনবাদের আকিদা। তবে মর্ডানিস্ট মুসলিমদের অনেকে এটাকেও ইসলামাইজ করতে ছাড়ে নি। ইন্নালিল্লাহ। অথচ সত্য হচ্ছে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তা বলেননি যা আজ কাফিররা কল্পনা এবং শয়তানের সহযোগিতায় বলছে। আল্লাহ যা বলেছেন তা কুরআন সুন্নাহর দ্বারা আমাদেরকে জানানো হয়েছে যা মুশরিকদের কল্পনা এবং শয়তানের কথার সম্পূর্ন বিপরীত এবং সত্য।






সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে মিথ্যাচারীতা,অপব্যাখ্যা এবং কাফিরদের আকিদাগুলোকে ইসলামাইজড করার মত জঘন্য কাজগুলো দেখে এবং অধিকাংশ লোকের নিশ্চুপ ভূমিকা দেখে শরী'আর দলিলকেন্দ্রিক কম্পাইল্ড আর্টিকেল সিরিজ প্রকাশ করা শুরু করেছি। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ এতে করে কুরআন সুন্নাহ থেকে আসা সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে বিস্তারিত বর্ননা প্রকাশের মাধ্যমে ঐ বিভ্রান্তি এবং অস্পষ্টতা দূর হবে, যে সত্য মিথ্যার অস্পষ্টতা এবং বিভ্রান্তি প্রাচীন ও এ যুগের মুরজিয়া-মু'তাযিলারা তৈরি করেছে। খুব শীঘ্রই শয়তানী অসত্য সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে আকিদাগুলো স্পষ্ট হবে। এবং কুরআন সুন্নাহর দলিলের দ্বারা উৎপাটিত হবে। বিইযনিল্লাহ। 

চলবে ইনশাআল্লাহ.. 

Sunday, March 10, 2019

আল ইল্ম ওয়াল জিহাদ

কয়েক দিন পূর্বে এক ভাই (গণহত্যা) শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি কয়েকটা আয়াত ও হাদিস এনে দেখাতে চেষ্টা করেছেন- আরাকান, কাশ্মির সহ অন্যান্য মুসলিম ভূখণ্ডে চলমান গণহত্যার মূল কারণ- জিহাদ ছেড়ে দেয়া। আমরাও যদি জিহাদ ছেড়ে বসে থাকি, তাহলে আমাদের উপরও এই গণহত্যা আপতিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।


আরেক ভাই এ লেখাটাকে একটু তাহকীক ও পরিমার্জন করে দেয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। এর ভিত্তিতেই আমার এ লেখা। মূল কথা ভাইয়ের লেখায় এসে গেছে। আমি আরেকটু তাহকীকের সাথে বিষয়টা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আল্লাহ তাআলা সবাইকে কবুল করুন।
কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট বিধৃত হয়েছে যে, জিহাদ ছেড়ে দিলে মুসলমানদের উপর আযাব-গজব, শাস্তি-অপমান আর লাঞ্চনা নেমে আসবে। আখেরাতের আযাব তো আছেই, দুনিয়াতেই তাদের উপর এগুলো আপতিত হবে। তাদের শত্রুরা তাদের উপর বিজয়ী হয়ে যাবে। আর কাফেররা যদি কখনো মুসলমানদের বাগে পায়, তাহলে তাদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাবে। তাদেরকে অপদস্ত, অপমানিত ও লাঞ্চিত করবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
{كَيْفَ وَإِنْ يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ لَا يَرْقُبُوا فِيكُمْ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً يُرْضُونَكُمْ بِأَفْوَاهِهِمْ وَتَأْبَى قُلُوبُهُمْ وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ (8) اشْتَرَوْا بِآيَاتِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا فَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِهِ إِنَّهُمْ سَاءَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ (9) لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ (10)}
“কিভাবে (তোমরা তাদের বিশ্বাস করবে)? এরা যদি কখনো তোমাদের উপর জয় লাভ করতে পারে, তাহলে তারা (যেমনি) আত্মীয়তার বন্ধনের তোয়াক্কা করবে না, (তেমনি) চুক্তির মর্যাদাও তারা দেবে না। তারা (শুধু) মুখ দিয়ে তোমাদের খুশি রাখার চেষ্টা করে, কিন্তু তাদের অন্তরগুলো সেসব কথা (কিছুতেই) মেনে নেয় না। মূলত এদের অধিকাংশ ব্যক্তিই অবাধ্য। এরা আল্লাহ তাআলার আয়াতসমূহ সামান্য (বৈষয়িক) মূল্যের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে এবং মানুষকে তাঁর পথ থেকে দূরে রেখেছে। তারা যা করছে, নিশ্চয়ই তা বড় জঘন্য কাজ। (কোনো) ঈমানদার লোকের ব্যাপারে এরা (যেমন) আত্মীয়তার ধার ধারে না, (তেমনি) কোন অঙ্গীকারের মর্যাদাও এরা রক্ষা করে না। মূলত এরাই সীমালঙ্গনকারী।” (তাওবা: ৮-১০)

অন্যত্র ইরশাদ করেন-
{إِنْ يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُوا لَكُمْ أَعْدَاءً وَيَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُمْ بِالسُّوءِ وَوَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ}
“(তাদের চরিত্র হচ্ছে এই যে) যদি এরা তোমাদের কাবু করতে পারে, তাহলে এরা তোমাদের মারাত্মক শত্রুতে পরিণত হবে। (শুধু তাই নয়) নিজেদের হাত ও কথা দিয়ে তোমাদের তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে। (আসলে) এরা এটাই চায় যে, তোমরাও তাদের মতো কাফের হয়ে যাও।” (মুমতাহিনা: ২)

এ ছাড়াও আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা কাফেরদের এ হীন চরিত্রের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।



এই সীমালঙ্গনকারী, অবাধ্য, পাপাচারি ও হীন চরিত্রের কাফেরদের দমানোর জন্য আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের উপর জিহাদ ফরয করেছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
{وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّه لِلّهِ}
“আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে কিতাল কর, যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দ্বীন-আনুগত্য পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়।” (আনফাল: ৩৯)

{فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ}
“অত:পর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা করা এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে তারা যদি তাওবা করে – মুসলমান হয়ে যায় – এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয়: তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (তাওবা: ৫)

{قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ}
“তোমরা কিতাল কর আহলে কিতাবের সেসব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তার রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম করে না এবং সত্য দ্বীন গ্রহণ করে না, যতক্ষণ না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিযিয়া প্রদান করে।” (তাওবা: ২৯)


এখন যদি মুসলমানরা আল্লাহর আদেশের মূল্য না দিয়ে জিহাদ ছেড়ে দুনিয়ার সুখ-শান্তি আর আরাম-আয়েশে লিপ্ত হয়, তাহলেই দেখা দেবে বিপত্তি। তাদের দুশমনরা তাদের উপর চেপে বসবে। তাদের উপর নির্মম নির্যাতন চালাবে। তাদেরকে অপদস্থ ও লাঞ্চিত করবে। তাদেরকে ব্যাপকভাবে হত্যা করবে। এ ব্যাপারে অনেক আয়াত ও হাদিসে সতর্কবাণী এসেছে। এখানে আমি কয়েকটা আয়াত ও হাদিস উল্লেখ করছি:


আয়াত
আয়াত-১:
{يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ. إِلَّا تَنْفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ}
“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কী হল, যখন তোমাদের বলা হয়, আল্লাহর রাস্তায় (যুদ্ধে) বের হও, তখন তোমরা যমীনের প্রতি প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়? তবে কি তোমরা আখিরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে সন্তুষ্ট হলে? অথচ দুনিয়ার জীবনের ভোগ-সামগ্রী আখিরাতের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। যদি তোমরা (যুদ্ধে) বের না হও, তাহলে তিনি তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক আযাব দেবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক কওম আনয়ন করবেন। তোমরা তাঁর কিছুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (তাওবা: ৩৮-৩৯)
এ আয়াতে হুঁশিয়ার করা হয়েছে, যদি তোমরা প্রয়োজনের সময় জিহাদে বের না হও, তাহলে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মর্মন্তুদ শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে। এ শাস্তি আখেরাতে যেমন আসবে, দুনিয়াতেও আসবে।
আল্লামা সা’দী রহ. (মৃত্যু: ১৩৭৬হি.) বলেন,
{إلا تنفروا يعذبكم عذابا أليما} في الدنيا والآخرة. اهـ
“যদি তোমরা (যুদ্ধে) বের না হও, তাহলে তিনি দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক আযাব দেবেন।” (তাফসীরে সা’দী: ৩৩৭
আল্লামা নাসাফী রহ. (মৃত্যু: ৭১০হি.) বলেন,
أوعدهم بعذاب أليم مطلق يتناول عذاب الدراين وأنه يهلكهم ويستبدل بهم قوما آخرين خير منهم وأطوع. اهـ
“আল্লাহ তাআলা (দুনিয়া বা আখেরাত- এর কোন একটার মাঝে সীমাবদ্ধ করণ ব্যতীত) নিঃশর্ত আযাবের ধমকি দিয়েছেন, যার মাঝে দুনিয়া-আখেরাত উভয় আযাবই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি (এও জানিয়েছেন যে, তিনি) তাদেরকে ধ্বংস করে দেবেন। তাদের স্থলে অন্য জাতি আনয়ন করবেন, যারা তাদের চেয়ে উত্তম এবং তাদের চেয়ে আল্লাহ তাআলার অধিক আনুগত্যশীল হবে।” (তাফসীরে নাসাফী: ১/৬৮০)
ইবনে আশূর রহ. (মৃত্যু: ১৩৯৩হি.) মত ব্যক্ত করেছেন, এ আয়াতে বিশেষভাবে দুনিয়াবি শাস্তির কথাই বলা হয়েছে। কারণ, এ আয়াতে জিহাদ ছেড়ে দেয়ার দুটি পরিণতির কথা বলেছেন-
১. আল্লাহর আযাব আপতিত হবে।
২. তাদের স্থলে অন্য জাতি সৃষ্টি করবেন।
এ দুটি পরিণতির কথা একই আয়াতে একই সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। আর অন্য জাতি সৃষ্টি যেহেতু দুনিয়াতেই হবে, তাই তার সাথে উল্লেখিত আযাবও দুনিয়াতেই আসবে। আর এ আযাব হবে- কাফেরদের বিজয় এবং মুসলমানদের গণহত্যা।
ইবনে আশূর রহ. (মৃত্যু: ১৩৯৩হি.) বলেন,
وقيل: المراد بالعذاب الأليم عذاب الدنيا كقوله: أن يصيبكم الله بعذاب من عنده أو بأيدينا [التوبة: 52] ... وقد يرجح هذا الوجه بأنه قرن بعواقب دنيوية في قوله: ويستبدل قوما غيركم ... فالمقصود تهديدهم بأنهم إن تقاعدوا عن النفير هاجمهم العدو في ديارهم فاستأصلوهم وأتى الله بقوم غيرهم. اهـ
“বলা হয়, আয়াতে ‘যন্ত্রণাদায়ক আযাব’ দ্বারা উদ্দেশ্য- দুনিয়াতেই শাস্তি আপতিত হবে, যেমন- আল্লাহ তাআলার এ বাণীতে দুনিয়াবি শাস্তি উদ্দেশ্য:
{أن يصيبكم الله بعذاب من عنده أو بأيدينا}
‘তোমাদের ব্যাপারে আমরা প্রতিক্ষায় আছি: আল্লাহ তাআলা হয়তো নিজ হাতে তোমাদের শাস্তি দেবেন, নতুবা আমাদের হাত দিয়ে (তোমাদের উপর শাস্তি পৌঁছাবেন)। (তাওবা: ৫২)
এ ব্যাখ্যাটি এ দিক থেকে অগ্রাধিকার পায় যে, আল্লাহ তাআলার বাণী- ‘তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক কওম আনয়ন করবেন’ এর মাধ্যমে দুনিয়াবি যে শাস্তির কথা বিধৃত করেছেন, এরই সাথে একে উল্লেখ করেছেন। … উদ্দেশ্য- যদি তারা জিহাদে বের না হয়ে বসে থাকে, তাহলে তাদের শত্রুরা তাদের দেশে আক্রমণ করে তাদেরকে সমূলে হত্যা করবে। তখন আল্লাহ তাআলা (দ্বীনের নুসরত ও কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য) অন্য এক জাতি আনয়ন করেবেন।” (আত-তাহরিরু ওয়াত-তানভীর: ১০/১৯৯)

আয়াত-২:
{قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ}
“বলুন (হে নবী!) তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর সে ব্যবসা যার মন্দা হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করছ এবং সে বাসস্থান যা তোমরা পছন্দ করছ- যদি (এগুলো) তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে, তবে তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাআলার (পক্ষ থেকে তাঁর আযাবের) ঘোষণা আসা পর্যন্ত। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।” (তাওবা: ২৪)
এসব জিনিস জিহাদের চেয়ে প্রিয় হওয়ার অর্থ- এগুলোর কারণে জিহাদ ছেড়ে দেয়া। আর যখন জিহাদ ছেড়ে দেবে, তখনই আল্লাহ তাআলার আযাব আপতিত হবে। আযাব বিভিন্নভাবে আসতে পারে: আসমানী মুসিবতও হতে পারে, আবার কাফেরদের হাতে নিষ্পেষিত হওয়ার মাধ্যমেও হতে পারে, যেমনটা ১ নং আয়াতে আলোচিত হয়েছে।
আল্লামা আলূসি রহ. (মৃত্যু: ১২৭০হি.) বলেন,
فَتَرَبَّصُوا أي انتظروا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ أي بعقوبته سبحانه لكم عاجلا أو آجلا على ما روي عن الحسن. اهـ آ:2\409
“হাসান বসরী রহ. থেকে বর্ণিত (আয়াতের অর্থ): তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাআলার শাস্তির, দুনিয়াতে কিংবা আখিরাতে।” (রুহুল মাআনী: ২/৪০৯)
হাফেয ইবনে কাসীর রহ. (মৃত্যু: ৭৭৪হি.) বলেন,
أمر تعالى رسوله أن يتوعد من آثر أهله وقرابته وعشيرته على الله وعلى رسوله وجهاد في سبيله ... أي: إن كانت هذه الأشياء (أحب إليكم من الله ورسوله وجهاد في سبيله فتربصوا) أي: فانتظروا ماذا يحل بكم من عقابه ونكاله بكم؛ ...
وروى الإمام أحمد، وأبو داود –واللفظ له –من حديث أبي عبد الرحمن الخراساني، عن عطاء الخراساني، عن نافع، عن ابن عمر قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "إذا تبايعتم بالعينة، وأخذتم بأذناب البقر، ورضيتم بالزرع، وتركتم الجهاد، سلط الله عليكم ذلا لا ينزعه حتى ترجعوا إلى دينكم" . اهـ
“যারা নিজেদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর রাস্তায় জিহাদের উপর অগ্রাধিকার দেবে, তাদেরকে শাস্তির হুঁশিয়ারি শুনাতে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে আদেশ দিয়েছেন। … অর্থাৎ যদি এ সকল বিষয় তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে, তাহলে তোমরা অপেক্ষা কর ঐ মর্মন্তুদ আযাব ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির, যা তোমাদের উপর আপতিত হবে। ...
ইমাম আহমদ রহ. এবং আবু দাউদ রহ. হযরত ইবনে উমার রাদি. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- ‘যখন তোমরা সুদি কারবারে লিপ্ত হবে, গরুর লেজ ধরে পড়ে থাকবে, কৃষি কাজেই সন্তুষ্ট থাকবে এবং জিহাদ ছেড়ে দেবে- তখন আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন লাঞ্চনা। যতক্ষণ তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে না আসবে, ততক্ষণ তোমাদের থেকে তা দূর করবেন না।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৪/১২৪)

আয়াত-৩:
{وَأَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ}
“তোমরা (অকাতরে) আল্লাহর রাস্তায় (অর্থ-সম্পদ) ব্যয় কর। (অর্থ-সম্পদ আঁকড়ে ধরে) নিজ হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের অতলে নিক্ষেপ করো না। আর ইহসান (সুকর্ম) কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহসিন(সুকর্মশীল)দেরকে ভালোবাসেন।” (বাক্বারা: ১৯৫)
অর্থাৎ তোমরা যদি অর্থ-সম্পদ অর্জনের দিকে মনোনিবেশ কর, সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখ, কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদে তা ব্যয় না কর, তাহলে কাফেররা তোমাদের উপর বিজয়ী হয়ে তোমাদের ধ্বংস করে দেবে। কাজেই জিহাদ ছেড়ে অর্থ-সম্পদের দিকে মনোনিবেশ করে নিজ হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এই ব্যাখ্যাই বর্ণিত আছে।
ইমাম তিরমিযি রহ. বর্ণনা করেন-
عن أبي عمران التجيبي قال: "غزونا من المدينة نريد القسطنطينية , وعلى أهل مصر عقبة بن عامر - رضي الله عنه - وعلى الجماعة عبد الرحمن بن خالد بن الوليد فأخرج الروم إلينا صفا عظيما منهم وألصقوا ظهورهم بحائط المدينة فخرج إليهم من المسلمين مثلهم أو أكثر , فحمل رجل من المسلمين على صف الروم حتى دخل فيهم , فصاح الناس وقالوا: مه , مه؟ , لا إله إلا الله , يلقي بيديه إلى التهلكة فقام أبو أيوب الأنصاري - رضي الله عنه - فقال: يا أيها الناس , إنكم تتأولون هذه الآية هذا التأويل , وإنما أنزلت هذه الآية فينا معشر الأنصار , لما أعز الله الإسلام وكثر ناصروه , قال بعضنا لبعض - سرا دون رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: إن أموالنا قد ضاعت , وإن الله قد أعز الإسلام , وكثر ناصروه , فلو أقمنا في أموالنا , فأصلحنا ما ضاع منها , فأنزل الله على نبيه - صلى الله عليه وسلم - يرد علينا ما قلنا: {وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة} فكانت التهلكة أن نقيم في أموالنا ونصلحها , وندع الجهاد. قال أبو عمران: فلم يزل أبو أيوب شاخصا يجاهد في سبيل الله حتى دفن بالقسطنطينية" [جامع الترمذي: 2972]
“আবু ইমরান আত-তুজিবি রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা কুসতুনতুনিয়ার জিহাদের উদ্দেশ্যে মদীনা থেকে বের হলাম। তখন মিশরের গভর্নর ছিলেন হযরত উকবা ইবনে আমের রাদি.। আমাদের জামাতের আমির ছিলেন আব্দুর রহমান ইবনে খালেদ ইবনে ওয়ালিদ রহ.। রোমবাসী আমাদের বিরুদ্ধে তাদের বিশাল এক বাহিনী পাঠাল। তারা তাদের শহরের দেয়ালের দিকে পশ্চাত করে তাদের সারি সাজালো। তাদের মোকাবেলায় মুসলমানদের থেকে তেমনই কিংবা তার চেয়েও বড় এক বাহিনী বের হল। তখন মুসলমানদের এক ব্যক্তি রোমানদের বিশাল সারিতে একাই হামলা করে বসল এবং তাদের সারির একেবারে ভেতরে প্রবেশ করে গেল (যার ফলে তার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল)। তখন লোকজন চিৎকার করে বলতে লাগলো- ‘(কি কর?) থাম! থাম! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! এ ব্যক্তি নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করছে।’ তখন আবু আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে গেলেন। বললেন, ‘ওহে লোক সকল! তোমরা এ আয়াতের এই ব্যাখ্যা করছো। (তোমাদের ব্যাখ্যা সঠিক নয়।) এ আয়াত তো আমরা আনসারদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা যখন ইসলামকে শক্তিশালী করলেন, তার সাহায্যকারীও অনেক হয়ে গেল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অগোচরে আমাদের একে অপরকে বললো- আমাদের ধন-সম্পদ তো নষ্ট হয়ে গেল। এদিকে আল্লাহ তাআলা ইসলামকে শক্তিশালী করেছেন। তার সাহায্যকারীও তৈয়ার হয়েছে অনেক। কাজেই আমরা যদি (কিছু দিন জিহাদ বন্ধ রেখে) আমাদের ধন-সম্পদের কাছে অবস্থান করে সেগুলোর পরিচর্যা করতাম! তখন আমাদের এই মতামতকে প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহ তাআলা তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ আয়াত নাযিল করলেন-
{وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة}
“তোমরা (অকাতরে) আল্লাহর রাস্তায় (অর্থ-সম্পদ) ব্যয় কর। (অর্থ-সম্পদ আঁকড়ে ধরে) নিজ হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের অতলে নিক্ষেপ করো না।”
অতএব, ধ্বংসে নিক্ষেপ করার অর্থ- জিহাদ ছেড়ে আমাদের ধন-সম্পদের পরিচর্যায় লিপ্ত হওয়া।’
আবু ইমরান রহ. বলেন, এরপর থেকে আবু আইয়ূব আনসারি রাদি. সর্বদা জিহাদেই লিপ্ত থাকেন। অবশেষে যখন শহীদ হলেন, তখন কুসতুনতুনিয়াতে তাকে দাফন করা হয়।” (জামে তিরমিযি: হাদিস নং ২৯৭২)



হাদিস

হাদিস-১:
عن أبي بكر الصديق - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: "ما ترك قوم الجهاد , إلا عمهم الله بالعذاب" [المعجم الأوسط للطبراني: 3839؛ الترغيب والترهيب: 2158، قال المنذري: رواه الطبراني بإسناد حسن]
“হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যে জাতিই জিহাদ ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ব্যাপকভাবে তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন।” (মু’জামে ত্ববরানী: ৩৮৩৯)
এই ব্যাপক আযাব গণহত্যার সূরতেও হতে পারে।


হাদিস-২:
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عيه وسلم قال: "إذا تبايعتم بالعينة، وأخذتم أذناب البقر، ورضيتم بالزرع، وتركتم الجهاد؛ سلط الله عليكم ذلاً لا ينزعه حتى ترجعوا إلى دينكم" [ابو داوود: 3464]
“হযরত ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমার সূত্রে বর্ণিত যে, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘যখন তোমরা সুদি কারবারে লিপ্ত হবে, গরুর লেজ ধরে পড়ে থাকবে, কৃষি কাজেই সন্তুষ্ট থাকবে এবং জিহাদ ছেড়ে দেবে- তখন আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন লাঞ্চনা। যতক্ষণ তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে না আসবে, ততক্ষণ তোমাদের থেকে তা দূর করবেন না।” (সুনানে আবু দাউদ: ৩৪৬৪)
কৃষি কাজে সন্তুষ্ট থাকার অর্থ- কৃষি কাজসহ অন্যান্য দুনিয়াবি কাজ-কর্মে লিপ্ত হয়ে জিহাদ ছেড়ে দেয়া। তখনই তা লাঞ্চনার কারণ হবে। যেমন, বুখারী শরীফের হাদিসে এসেছে-


হাদিস-৩:
عن أبي أمامة الباهلي – رضي الله عنه – قال – ورأى سكة وشيئا من آلة الحرث – فقال: سمعت النبي – صلى الله عليه وسلم – يقول: " لا يدخل هذا بيت قوم إلا أدخله الله الذل " [صحيح البخاري: 2321]
“হযরত আবু উমামা বাহিলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি একদা একটা লাঙ্গলের ফলা এবং আরো কয়েকটা কৃষি-যন্ত্র দেখে বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, এগুলো যে ঘরেই প্রবেশ করবে, আল্লাহ তাআলা সেখানেই লাঞ্চনা ঢুকিয়ে দেবেন।” (সহীহ বুখারী: ২৩২১)
২ নং হাদিসে দ্বীনে ফিরে আসার দ্বারা উদ্দেশ্য- সুদি কারবার বর্জন করা এবং জিহাদের পথে বাধা এমন সব দুনিয়াবি পেশা-কর্ম বাদ দিয়ে আবার জিহাদে ফিরে আসা। যেমন, মুসনাদে আহমদের এক হাদিসে এসেছে-


হাদিস-৪:
عن ابن عمر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "لئن تركتم الجهاد وأخذتم بأذناب البقر وتبايعتم بالعينة ليلزمنكم الله مذلة في رقابكم لا تنفك عنكم حتى تتوبوا إلى الله وترجعوا على ما كنتم عليه" [المسند للإمام أحمد: 5007]
“যদি তোমরা জিহাদ ছেড়ে দিয়ে গরুর লেজ ধরে পড়ে থাক এবং সুদি কারবারে লিপ্ত হও, তাহলে আল্লাহ তাআলা তোমাদের ঘাড়ে এমন এক লাঞ্চনা চাপিয়ে দেবেন, যা তোমাদের থেকে দূর হবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের পূর্বের অবস্থায় ফিরে আস।” (মুসনাদে আহমদ: ৫০০৭)
হাদিস-৫:
عن أبي أمامة الباهلي – رضي الله عنه – قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -: " من لم يغز , أو يجهز غازيا , أو يخلف غازيا في أهله بخير , أصابه الله بقارعة قبل يوم القيامة " [ابو داود: 2505، ابن ماجه: 2762]
“হযরত আবু উমামা বাহিলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নিজেও যুদ্ধ করেনি, কোন যুদ্ধাকে জিহাদের সরঞ্জাম প্রস্তুত করেও দেয়নি এবং উত্তমভাবে কোন মুজাহিদের পরিবারের দেখাশুনাও করেনি, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের পূর্বেই তাকে কোন ধ্বংসাত্মক বিপদে নিপতিত করবেন। (আবু দাউদ: ২৫০৫)

হাদিস-৬:
عن أبي عمران التجيبي قال: "غزونا من المدينة نريد القسطنطينية , وعلى أهل مصر عقبة بن عامر - رضي الله عنه - وعلى الجماعة عبد الرحمن بن خالد بن الوليد فأخرج الروم إلينا صفا عظيما منهم وألصقوا ظهورهم بحائط المدينة فخرج إليهم من المسلمين مثلهم أو أكثر , فحمل رجل من المسلمين على صف الروم حتى دخل فيهم , فصاح الناس وقالوا: مه , مه؟ , لا إله إلا الله , يلقي بيديه إلى التهلكة فقام أبو أيوب الأنصاري - رضي الله عنه - فقال: يا أيها الناس , إنكم تتأولون هذه الآية هذا التأويل , وإنما أنزلت هذه الآية فينا معشر الأنصار , لما أعز الله الإسلام وكثر ناصروه , قال بعضنا لبعض - سرا دون رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: إن أموالنا قد ضاعت , وإن الله قد أعز الإسلام , وكثر ناصروه , فلو أقمنا في أموالنا , فأصلحنا ما ضاع منها , فأنزل الله على نبيه - صلى الله عليه وسلم - يرد علينا ما قلنا: {وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة} فكانت التهلكة أن نقيم في أموالنا ونصلحها , وندع الجهاد. قال أبو عمران: فلم يزل أبو أيوب شاخصا يجاهد في سبيل الله حتى دفن بالقسطنطينية" [جامع الترمذي: 2972]
“আবু ইমরান আত-তুজিবি রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা কুসতুনতুনিয়ার জিহাদের উদ্দেশ্যে মদীনা থেকে বের হলাম। তখন মিশরের গভর্নর ছিলেন হযরত উকবা ইবনে আমের রাদি.। আমাদের জামাতের আমির ছিলেন আব্দুর রহমান ইবনে খালেদ ইবনে ওয়ালিদ রহ.। রোমবাসী আমাদের বিরুদ্ধে তাদের বিশাল এক বাহিনী পাঠাল। তারা তাদের শহরের দেয়ালের দিকে পশ্চাত করে তাদের সারি সাজালো। তাদের মোকাবেলায় মুসলমানদের থেকে তেমনই কিংবা তার চেয়েও বড় এক বাহিনী বের হল। তখন মুসলমানদের এক ব্যক্তি রোমানদের বিশাল সারিতে একাই হামলা করে বসল এবং তাদের সারির একেবারে ভেতরে প্রবেশ করে গেল (যার ফলে তার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল)। তখন লোকজন চিৎকার করে বলতে লাগলো- ‘(কি কর?) থাম! থাম! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! এ ব্যক্তি নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করছে।’ তখন আবু আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে গেলেন। বললেন, ‘ওহে লোক সকল! তোমরা এ আয়াতের এই ব্যাখ্যা করছো। (তোমাদের ব্যাখ্যা সঠিক নয়।) এ আয়াত তো আমরা আনসারদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা যখন ইসলামকে শক্তিশালী করলেন, তার সাহায্যকারীও অনেক হয়ে গেল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অগোচরে আমাদের একে অপরকে বললো- আমাদের ধন-সম্পদ তো নষ্ট হয়ে গেল। এদিকে আল্লাহ তাআলা ইসলামকে শক্তিশালী করেছেন। তার সাহায্যকারীও তৈয়ার হয়েছে অনেক। কাজেই আমরা যদি (কিছু দিন জিহাদ বন্ধ রেখে) আমাদের ধন-সম্পদের কাছে অবস্থান করে সেগুলোর পরিচর্যা করতাম! তখন আমাদের এই মতামতকে প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহ তাআলা তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ আয়াত নাযিল করলেন-
{وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة}
“তোমরা (অকাতরে) আল্লাহর রাস্তায় (অর্থ-সম্পদ) ব্যয় কর। (অর্থ-সম্পদ আঁকড়ে ধরে) নিজ হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের অতলে নিক্ষেপ করো না।”
অতএব, ধ্বংসে নিক্ষেপ করার অর্থ- জিহাদ ছেড়ে আমাদের ধন-সম্পদের পরিচর্যায় লিপ্ত হওয়া।’
আবু ইমরান রহ. বলেন, এরপর থেকে আবু আইয়ূব আনসারি রাদি. সর্বদা জিহাদেই লিপ্ত থাকেন। অবশেষে যখন শহীদ হলেন, তখন কুসতুনতুনিয়াতে তাকে দাফন করা হয়।” (জামে তিরমিযি: হাদিস নং ২৯৭২)


হাদিস-৭:

عن ثوبان قال: قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- : "يوشك الأمم أن تداعى عليكم كما تداعى الأكلة إلى قصعتها. فقال قائل: ومن قلة نحن يومئذ؟ قال: بل أنتم يومئذ كثير ولكنكم غثاء كغثاء السيل ولينزعن الله من صدور عدوكم المهابة منكم وليقذفن الله فى قلوبكم الوهن. فقال قائل: يا رسول الله! وما الوهن؟ قال: حب الدنيا وكراهية الموت" [ابو داود: 4299]
“হযরত সাওবান রাদি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- অচিরেই এমন সময় আসবে, যখন অন্য জাতি-গোষ্ঠীগুলো তোমাদের বিরুদ্ধে একে অপরকে আহ্বান করবে, যেমন খাবার পাত্র সামনে নিয়ে একে অপরকে ডাকাডাকি করতে থাকে। এক জন জিজ্ঞেস করল, তখন আমাদের সংখ্যার স্বল্পতার কারণে কি এমনটা হবে? তিনি উত্তর দিলেন, (না) বরং তোমরা তখন সংখ্যায় থাকবে অনেক। কিন্তু তোমরা তখন স্রোতে ভাসমান খর-কুটার মতো হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা তোমাদের শত্রুর অন্তর থেকে তোমাদের ভয় দূর করে দেবেন। আর তোমাদের অন্তরে আল্লাহ ঢেলে দেবেন ‘ওয়াহান’। এক জন জিজ্ঞেস করল, ‘ওয়াহান’ কি ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি *উত্তর দিলেন, দুনিয়ার মহব্বত এবং মরণের ভয়।” (আবু দাউদ: ৪২৯৯)
অন্য বর্ণনায় এসেছে-
"يوشك أن تداعى عليكم الأمم من كل أفق" [المسند للامام أحمد: 22397]
“অচিরেই এমন সময় আসবে, যখন পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে অন্য জাতি-গোষ্ঠীগুলো তোমাদের বিরুদ্ধে একে অপরকে আহ্বান করবে।” (মুসনাদে আহমদ: ২২৩৯৭)

মরণের ভয় দ্বারা যুদ্ধ-জিহাদে অনিহা এবং শহীদি মরণের ভীতি উদ্দেশ্য। যেমন, মুসনাদে আহমদের এক বর্ণনায় এসেছে-
"قالوا: وما الوهن يا رسول الله؟ قال: حبكم الدنيا وكراهيتكم القتال" [المسند للامام أحمد: 8713]
“সাহাবগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘ওয়াহান’ কি ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি *উত্তর দিলেন, দুনিয়ার মহব্বত এবং যুদ্ধের প্রতি অনিহা।” (মুসনাদে আহমদ: ৮৭১৩)

اللهم احفظنا من كلّ بلاء في الدنيا وعذاب في الآخرة، وجنِّبنا مكائد الشيطان والظلم والخيانة والكيد والحسد وغيرها من الآفات برحمتك يا أرحم الراحمين.


ডক:
https://mega.nz/#!ciYGULLb!JR-lCgGPncTOoo-EUPkDzk7ss73uPAwBou3U2YUSLwY

পিডিএফ:
https://mega.nz/#!Z6oQHTSI!G7Zunk_TTWPaOExNENUOFHrcW36z52JiL66gCXU কচভী


[দাওয়া-ইলাল্লাহ ওয়েব থেকে কপিকৃত]




কিছুদিন আগে জনৈক বন্ধু ম্যাসেজ করে। একটি ফেসবুক লিংক দেয়। আর অভিযোগের সুরে বলে, যেন গিয়ে দেখি সেখানে কিভাবে নবী(স) কে অপমান করছে।
তো সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ওটা মুসলিম নামধারী আইডি। পোস্টটিতে বলা এরূপ বলা হচ্ছে "জঙ্গি নবী মুহাম্মদ"। কমেন্টে ইসলামী অনুভূতিযুক্ত ফাসেকরা আইডিটিকে অকথ্য গালি দিয়ে তার গোষ্ঠী উদ্ধার করছে। শীতল চোখে দেখছিলাম আর মনে মনে বলছিলাম, কাফেররা মাঝেমধ্যে ওদের কাছে অপছন্দনীয় সত্যটা বুঝতে পেরে সেটার বিরুদ্ধে বিদ্রুপাত্বক লেখনী লেখে।


'জঙ্গি' শব্দটি এমন একটি নেতিবাচক শব্দে রুপান্তর করা হয়েছে যার ব্যবহারগত ভাবার্থ এখন আক্ষরিক শাব্দিক অর্থের চেয়েও বেশি কিছু বোঝানো হয়। কাফেরগোষ্ঠী শব্দটা একটি বিশেষ আদর্শের মানুষদেরকে এমনভাবে 'জঙ্গী' শব্দদিয়ে ট্যাগ দিয়েছে যেন তারা সাধারন মানুষের পর্যায়ভুক্ত নয়। এমনভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালায় যেন (জঙ্গীরা)তারা হিউম্যানয়েড জন্তুজানোয়ার সদৃশ কিছু অথবা ক্যানিব্যালিস্টিক হিলবিলি জংলি(মানুষখেকো জংলি বা জম্বি ঘরানার কিছু), যাদেরকে দেখা মাত্র হত্যা করতে হয়। আর একাজে সহায়তা করাও পূন্যের কাজ! ভাবগত অর্থে জঙ্গি বলতে ওদের মিডিয়া তাদেরকে দেশদ্রোহী, অরাজকতা-অশান্তি সৃষ্টিকারী, দুধর্ষ সন্ত্রাসী বলে প্রচার করে। এছাড়া তাদের আদর্শ ও লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নিয়েও বিদ্রুপ তাচ্ছিল্য এবং অচল বলে হেয় করে প্রচার করে। এসব মিডিয়া কখনোই তাদের ব্যপারে নিরপেক্ষ তথ্য দেবে না। সামরিক ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাহীন দুটি ভিন্ন আদর্শবাদীপক্ষের মধ্যে একটি আদর্শগত দ্বন্দ্ব সবসময়ই চলমান আছে।


♦ ফার্সী শব্দ 'জঙ্গি' এর অর্থ 'যোদ্ধা'। আর 'জঙ্গ' অর্থ যুদ্ধ।'জঙ্গিবিমান' বোধকরি সুপরিচিত শব্দ। ইসলামি আদর্শের উপরে থাকা যুদ্ধকে শার'য়ী পরিভাষায় জিহাদ বলা হয়, তেমনি জিহাদকারী 'যোদ্ধা'দের কে ইসলামী পরিভাষায় মুজাহিদ বলে। সে অনুযায়ী নবী(সাঃ) সাহাবা এবং সালাফগন সকলেই সুপার পাওয়ার জঙ্গিবাহিনীর অন্তর্গত। এর প্রধান নেতা হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) সর্বযুগে শ্রেষ্ঠ হয়ে আছেন। আর সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন জঙ্গের মূল নির্দেশদাতা। তাছাড়া তিনিই সবচেয়ে বড় উৎসাহদানকারী। তিনি পবিত্র কুরআনে মূল লক্ষ্য হিসেবে তার বিধান বাস্তবায়নে আমরণ জঙ্গিবাদে তথা কিত্বালে(যুদ্ধে) লিপ্ত থাকার জন্য উৎসাহিত করেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কুরআন মূলত একটি শ্রেষ্ঠ সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী কিত্বালপন্থী(জঙ্গিবাদী) কিতাব (আমি বুঝতে পারছি 'জঙ্গি' শব্দগুলোর এরূপ ব্যবহার আপনাকে বিব্রত করছে আপনার ব্রেইনওয়াসড হবার এর মাত্রা অনুযায়ী।
কিন্তু বিষয়টি নর্মালাইজেশনে নিয়ে আসবার সময় এসেছে, নতুবা কুফর আর হক্ক এর মধ্যে ধোয়াশা কাটবেনা)।যাকে ঘিরে সমস্ত দ্বীনি কিতাব রচিত। এজন্যই সালমান রুশদীর মত ইসলামবিদ্বেষী কাফেরদের যারা কুরআন পড়ে তারা বলে কুরআন শ্রেষ্ঠ জঙ্গিবাদী গ্রন্থ।
এই কাফেরগুলো কুরআনের সারবস্তু হালকা হলেও ধরতে পারে বলেই, ইসলাম ধবংসের জন্য ঐক্যবদ্ধ।
তারা ভাল করেই জানে, হক্ক ও বাতিলের সহাবস্থান বেশিক্ষণ চলেনা। সত্য অসত্যকে দূরীভূত করে।




শুধু নবী(স) একাই জঙ্গি ছিলেন না বরং অন্যান্য পূর্বসূরি নবীগনও এ জঙ্গিবাদের নির্দেশ পেয়েছিলেন। জাতির পিতা ইব্রাহীম আলাইহিসালাম একাই মালাউনদের মূর্তিগুলোতে একাই দুধর্ষ জঙ্গিহামলা পরিচালনা করেন।এবং মূর্তিগুলোকে লাঞ্ছিত অবস্থায় ফেলে আসেন যা মূর্তিপূজকদের অপদস্থ করে। এটাই মিল্লাতে ইব্রাহীম এর আদর্শ। আর মহান রব ইসমাঈল(আ) এর সন্তানদেরকে ঐ মহান উদ্দেশ্য পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রেরন করেছেন, যেটা থেকে আজ উম্মাহর অধিকাংশই অনেক অনেক দূরে।




মূসা কালিমুল্লাহ (আ) বনী ইসরাইলদের নিয়ে জঙ্গিতৎপরতা চালিয়ে গিয়েছেন কুফফারদের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে তারা জঙ্গিবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তাদের কথাও কুরআনে বর্ননা দিয়েছেন,যেটা আমাদেরকে জিহাদে আল্লাহর আদেশ পালনে অটলতার শিক্ষা দেয়।
এভাবে ঈসা(আ),দাঊদ(আ),সুলাইমান(আ),তালূত(আ) প্রত্যেকেই কাফেরদের বিরুদ্ধে উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিতৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন।যার বর্ননা কুরআনেও উল্লেখ এসেছে যেন আমরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারি।অথচ সেগুলো এখন মজার কিচ্ছাকাহিনীতে রূপান্তর করা হয়েছে।আমরাই নবীগনের সুন্নাহ থেকে ফিরে এসেছি।
পুরো কুরআনের সূরাগুলোতে শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীনের শ্রেষ্ঠত্ব ও একে বিজয় করবার নির্দেশের ছত্রছায়ায় অন্যান্য ইসলামী আদর্শ বজায়ের নির্দেশ, আদেশ ও উপদেশ ও পূর্ববতী কওম ও নবীগনের ঘটনা এসেছে। তবে মুখ্য লক্ষ্য মহান প্রতিপালকের দ্বীনের শ্রেষ্ঠত্বকে বাস্তবায়ন এর নির্দেশ এসেছে,যে লক্ষ্যে দুনিয়াতে তিনি মানুষকে তার প্রতিনিধিরূপে পাঠিয়েছিলেন।এজন্য সাধারণ বর্ননার মাঝে মাঝেই হঠাৎ করেই জিহাদের নির্দেশ,অথচ আমরা সেসব নিয়ে চিন্তা করিনা। এমনকি আল্লাহ বনী ইসরাইলের অবাধ্যতার ঘটনা ও পরিণাম উল্লেখ করেও জিহাদে উদ্দীপিত করেছেন।আমরা আজমী হওয়ায় আরবি না বোঝায় কুরআনের নির্দেশ অন্তঃকরণে পৌছায় না,আর অনুবাদের জানবার প্রতিও আগ্রহ কম, এজন্য উপমহাদেশীয় অধিকাংশ মুসলিমই কুরআনের অনুবাদে কি আছে বা আল্লাহ কি নির্দেশ দিয়েছেন সে ব্যাপারে ইচ্ছাকৃত গাফেল হয়ে আছে। আরবি দেখে তিলাওয়াত আর বিদাতী সুবিধাবাদী পেটপূজারী আলেমদের ওয়াজের এর বাইরে আমাদের অঞ্চলের মানুষ বেশি দূর যায় না। মোডারেটগনের অধিকাংশই আয়াত বাছাই করে অনুবাদটা কোথাও দেখে। ধারাবাহিকভাবে যদি অর্থটা পড়েও তবে সেটা তাদের মতে 'রাসূল (স) এর জীবদ্দশায় শুধু প্রযোজ্য ছিল'! কেউ বলে এযুগে কোন কিত্বাল নেই,কেউ বানিয়ে নিয়েছে নফসের জিহাদ,কেউ বা বানিয়েছে গণতান্ত্রিক জিহাদ। বস্তুত আল্লাহই সত্য বলেছেন-


"তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।২:২১৬)"


আমরা যদি তলোয়ার হাতে নেওয়াটা পাপের মনে করি, তবে সুনিশ্চিতভাবে আমরা নবী(স) এর সুন্নাহ এর উপরে নেই।তিনি কি বলেননি যে "আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য তরবারি দিয়ে প্রেরন করা হয়েছে"!!


মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু দাওয়াত ওয়ালা নবী নন, তিনি তো "নবীউস সাইফ তথা তরবারি ওয়ালা নবী।"
[দলিল- আস শিফা, পৃষ্ঠা ১৪৮; ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৭৪, আহমদ ২/১৪৭]


তিনি শুধু তরবারিওয়ালা নবীই নন, জঙ্গি(যোদ্ধা) নবীও।
তিনি তো "নবীউল মালাহিম তথা যুদ্ধসমূহের নবী।"
[দলিল- শরহুশ সুন্নাহ, ১৩/২১৩; শামায়েলে তিরমিযী, পৃষ্ঠা ২৫]


বর্তমানে ইসলামি আদর্শের উপরে থাকা কথিত সন্ত্রাসীদের তথা মুজাহিদকেই বাংলাভাষায় 'জঙ্গি' ট্যাগ দিয়ে সর্বত্র প্রচার প্রচারনা চলছে। ইংরেজিতে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড 'টেররিস্ট' হিসেবে পরিচিত। এটা একটি দল বা মতবাদ কে সমাজ থেকে আইসোলেট করবার বুদ্ধিদীপ্ত প্রসেস।শাসকগোষ্ঠীরা সাধারনত জনগণের উপর বিভিন্নভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করে তাদের ইচ্ছামত পরিচালনার জন্য,এর সপক্ষে অসংখ্য থিঙ্ক ট্যাংক তাদের জন্য কাজ করে। এটিও সেরূপ প্রোপাগান্ডার অন্তর্গত বিষয়।
কিছু দরবারী নামধারী ইরজাগ্রস্ত ফন্দিবাজ ব্যাধিগ্রস্ত আলেমগন সাফল্যের সাথে ইসলামে যুদ্ধটাকে সন্ত্রাসবাদ তথা জঙ্গিবাদ ও জিহাদ শব্দগুলোকে ভাবগত ও আক্ষরিক অর্থেই আলাদা করে দিয়েছে, যার দরুন এই কাদিয়ানীপন্থী নামে মাত্র মহানবী (স) এর কথিত অনুসারী আলেমগন জিহাদের নতুন ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে হক্ক ও বাতিলের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকরে জনগনকে বানাচ্ছে জাহেলে মোরাক্কাব!


যদিও ইসলামপন্থীদের নিন্দার্থে 'জঙ্গি' খেতাব দেওয়া হয়েছে,এটা নিয়ে হীনমন্যতার কিছু নেই। বরং এটা সম্মান সূচক শব্দও যেটা ব্যক্তিবিশেষের স্বীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও তার ব্যক্তিক গ্রহণযোগ্যতার উপর নির্ভর করে।জঙ্গিশব্দটিই সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ূবী রহিমাহুল্লাহর শিক্ষক সুলতান 'নুরুদ্দীন জঙ্গি' রহিমাহুল্লাহর নামেরই অংশ। যাকে মহান প্রতিপালক পছন্দ করেছিলেন নবী (স) এর দেহ মোবারককে কুফফারদের দ্বারা চুরি থেকে হেফাজতের জন্য। তিনিই সেই জঙ্গি যাকে আল্লাহ এজন্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন অতঃপর তিনি নবী (স) রওজামোবারক এর চারপাশে খনন করে সিসা গালা সুদৃঢ় বেষ্টনী নির্মান করে দেন। অতঃপর দুষ্কৃতকারীদের পাকড়াও করেন। অতএব নন্দিত জাতি নিন্দুক কর্তৃক নিন্দিত হলেও সেটা পরওয়া করা একেবারেই উচিৎ নয়।
আল্লাহ বলেছেন___ "হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী"
(৫:৫৪)


তাদের দ্বারা প্রদত্ত এ সন্ত্রাসী লেবেলটির ব্যবহার মূলত আপেক্ষিক। কোন দেশের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী, আবার স্বাধীনতাকামীদের কাছে 'ভ্যালিয়েন্ট ফ্রিডম ফাইটার'।বীর যোদ্ধা। যারা এদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে তারা এখন বীরশ্রেষ্ঠ বীর উত্তম খেতাব পায়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানী সরকার তাদের সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী অপশক্তি হিসেবেই দেখত। মুজিব নিজেও এক ধরনের সশস্ত্র গুপ্ত রেবেল ফোর্সের ফান্ডিং এ যুক্ত ছিল। আগরতলা মামলা খেয়েছিল কেন! কিন্তু এখন ওটা হিরোইক চেষ্টা হিসেবেই দেখানো হয়। পাকিস্তানি বাহিনীদের কাছে ছিল দেশদ্রোহী ষঢ়যন্ত্রকারী,দেশ ও জাতির শত্রু। বর্তমানের মত মিডিয়া ব্যবস্থা এতটা শক্তিশালী ছিল না তাই, পাকিস্তানের স্বাধীনতা বিরোধী প্রচারনা জনমনে তেমন দাগ কাটে নি। এখন তো হলুদ মিডিয়াই বড় সন্ত্রাসীর কাজ করে দেয়। এরূপ ইন্টেলেকচুয়াল মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ দুটি পরস্পরবিরোধী আদর্শ ও চেতনার মাঝে সব ক্ষেত্রেই থাকবে। কিন্তু বর্তমান টেররিস্ট-সন্ত্রাসী খ্যাত জঙ্গি বা মুজাহিদদের ব্যপারটা কাফেরদের কাছে একটু ভারী এবং চিন্তনীয় বিষয়।এজন্যই তারা এখন গ্লোবাল টেররিস্ট। সমস্ত কাফেরশক্তি ইসলামিক টেররিস্টদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে এক হয়ে সকল মিডিয়ায় কুফরের পক্ষাবলম্বনের 'দাওয়াত' চালায়। এবং এখন পর্যন্ত খুবই সফল! রাসূল (স) সত্যই বলেছিলেন - "আল কুফরূ মিল্লাতুন ওয়াহেদা"! এই সংঘাত ১৪০০ বছর ধরেই চলছে। এখন কাফেরদের শেকড় সর্বত্র সর্বক্ষেত্রে গত ১৪০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পোক্ত এজন্য এত জোড়ে শোড়ে জঙ্গিবিরোধি প্রচারনা প্রকাশ্যে সফলতার সাথে চলছে। আর সেসব আমাদের কানে আসছে,টিভিতেও ভাসছে ,পত্রিকাতেও আসছে! এখানে যে আদর্শিক সংঘর্ষ চলছে
সেটা সৃষ্টিকর্তারপক্ষাবলম্বী ও শয়তানেরপক্ষাবলম্বীদের মধ্যে অর্থাৎ হিজবুল্লাহ ও হিজবুশ শায়াত্বীন এর মধ্যে।যুগে যুগে সবসময়ই সংখ্যালঘিষ্ঠরা আল্লাহর পক্ষাবলম্বী ছিল। আর অধিকাংশই শয়তানের পক্ষাবলম্বী।
আল্লাহ তা'য়ালা তার পক্ষের স্বল্প দুর্বলদেরকে সবল কুফফারদের উপরে বিজয়ী করেছেন।এটা ভাবনার অবকাশ নেই যে আপনি নিরপেক্ষ। যারা নিরবে কুফরের বিরুদ্ধে চুপ করে আছে ও মেনে নিয়েছে তারাও শয়তানের পক্ষাবলম্বী,যেহেতু তারা অপকর্ম ও অসৎকর্মে বাধা দেয় নি। এ অবস্থান সামূদ গোত্রের ও বনী ইসরাইলের আয়লাবাসীদের নীরব দর্শকদের সাথে মিলিয়ে দেয় যারা আযাবে নিপতিত হয়েছিল, যেটা থেকে শিক্ষার নেওয়ার বিষয় বিদ্যমান। সাদা ও কালোর মধ্যে মাঝামাঝি গ্রে এরিয়া বলে কিছু নেই। হয় আপনি কাফেরদের পক্ষে নতুবা মুজাহিদদের পক্ষে। এ বিষয়টি জর্জ বুশ নিজেও পরিষ্কার করে দিয়েছিল। আমেরিকান হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ মেম্বার স্টিভ কিং একদম সমূলে স্পষ্ট করেই বলেছে কিসের সাথে তাদের শত্রুটা ব্যপারে দেখুন ___
https://youtu.be/E0Wrzld9oJ4


সন্ত্রাসী জঙ্গি খেতাব পেয়ে হীনমন্যতায় ভোগবার কিছুই নেই। মহাবিশ্বপ্রতিপালক স্বয়ং আপনাকে কাফেরদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টির আদেশ করেছেন। ওদের সাথে যুদ্ধের জন্য সাধ্যমত সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে বলেছেন।ত্রাস সৃষ্টিকারীরাই সন্ত্রাসী!
আল্লাহ বলেছেন __
আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।"(৮:৬০)


আগেই বলেছিলাম বিষয়টির দৃষ্টিভঙ্গি দিক দিয়ে পক্ষভেদে আপেক্ষিক অবস্থানের, হক্ক ও বাতিলের মধ্যে একজন নিহত কারও কাছে শহীদ, কারো কাছে সন্ত্রাসী ও শত্রু। এর গ্রহণযোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্বের মানদণ্ড গ্রহণযোগ্য একমাত্র সেটাই যেটা মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক নির্দিষ্ট। বস্তুত মহান রব সরল পথ ও পথভ্রষ্টতার মানদণ্ড বাতলে দিয়েছেন। এমতাবস্থায় পুরো পৃথিবীর মানুষ একদিকে হলেও সরলপথে একা হলেও চলতে হবে।



"আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। "(২:১৯৩)





"তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।"(৩:১৪২)





"যতদিন আকাশ থেকে বৃষ্টির ফোঁটা পড়বে, ততদিন জিহাদ সুমিষ্ট সবুজ থাকবে। শীঘ্র মানুষের ওপর এমন এক কাল আসবে, যখন তাদের একদল আলিম বলবে, এখন তো জিহাদের সময় নয়। তোমাদের মধ্যে যে সেই সময়কাল লাভ করবে, (তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন। কারণ,) জিহাদের জন্য তা বড়ই উত্তম সময়! সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, কেউ কি এমনটা বলতে পারে! তিনি বললেন, হাঁ, যার ওপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সকল মানুষের অভিশাপ রয়েছে, সে বলতে পারে।"
{আস-সুনানুল ওয়ারিদাহ ফিল ফিতান, দানি : ৩৭১। }

Thursday, March 7, 2019

বিগত আর্টিকেলগুলোর সন্নিবেশিত URL লিংক [Click Here]

আল আদিয়াত ব্লগ- ﺍﻟﻌﺎﺩﻳﺎﺕ بلوق






#PSEUDO_SCIENCE(অপবিজ্ঞান)
_______________________________
_______________________________
#বিজ্ঞান_নাকি_অপবিজ্ঞান?
[#Occult_Origin_of_Mainstream_Physics_and_Astronomy]
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html


ফিজিক্স অব ব্যবিলনঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/physics-of-babylon_10.html

আজকের বিজ্ঞান হচ্ছে রিপ্যাকেজড ব্যবিলনিয়ান অকাল্টিজম
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_93.html


ইন্দ্রজালের দিকে প্রত্যাবর্তন
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_91.html


বিজ্ঞানীগন আজ এক প্রাচীন ধর্মের দিকে আহব্বান করছেন
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_77.html

Hegelian architect: ম্যাটেরিয়ালিজম নাকি আইডিয়ালিজম?
https://aadiaat.blogspot.com/2019/01/hegelian-architect_11.html


ভারতীয় দর্শনের সাথে বর্তমান বিজ্ঞানের এত সখ্যতা কেন!
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_50.html


সারাবিশ্বে Occult worldview প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেলিব্রেটি মুর্তাদদের অনন্য প্রয়াস
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/hashem-al-ghaili-occult-worldview_28.html


এ্যাডভান্স হাইপারডাইমেনশনাল ফিজিক্সে এ্যাস্ট্রোলজিক্যাল ইমপ্লিকেশন
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_18.html


যাদুশাস্ত্রভিত্তিক বিজ্ঞান এবং দাজ্জালের অপেক্ষা
https://aadiaat.blogspot.com/2019/07/blog-post_61.html

প্যারাডক্সিক্যাল আজাদ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/07/blog-post.html




#কুরআন-সুন্নাহ এ জিওসেন্ট্রিক_কস্মোলজি,#গম্বুজাকৃতির আসমান,#সমতল-স্থির_পৃথিবীঃ

ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[PDF Link]
https://aadiaat.blogspot.com/2019/08/pdf.html

ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্ব[Article Series]
https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/article-series_85.html


ওরা(তারকারা) আসমানি সমুদ্রে সন্তরণরত: আসমান জমিন স্থির:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_76.html


এভার এক্সপ্যান্ডিং ইউনিভার্স, ইসলাম ও বাস্তবতা(Ever Expanding Universe, Islam And Reality):
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_97.html


আপনি কি শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রে বিশ্বাসী?
https://aadiaat.blogspot.com/2018/06/blog-post_28.html


ওরা কি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান মিশনারিদের দ্বারা প্রভাবিত?
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_21.html


আমাদের_অস্তিত্ব_ও_উদ্দেশ্য
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_36.html

বিশ্বাস-অবিশ্বাস
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_99.html

পৃথিবী স্থির এবং সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘূর্ণয়মান
ফতওয়া আরকানুল ইসলাম by Allama uthaymeen(rh):
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_5.html

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=334931086964090&id=282165055574027


মোডারেট ফিতনাঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/03/blog-post_76.html


আকাশ, তারকারাজি ও পৃথিবী (বাস্তবতা এবং কুরআনের আলোকে)
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_7.html


Wandering Stars
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/wandering-stars_10.html

মেইনস্ট্রিম প্যারাডক্সিক্যাল সায়েন্সঃ
(তারকারা প্রথম আসমানে আর হাজার বছরে অপরিবর্তিত)
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_29.html


বায়তুল্লাহর স্যাটেলাইট থেকে ধারন করা ছবি
https://aadiaat.blogspot.com/2017/12/blog-post_1.html


সমতল জমিনের বিপ্লব কি সাম্প্রদায়িকতা?
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_6.html








#সত্যিকারের_সৃষ্টিতত্ত্ব, #মহাকাশতত্ত্ব,  #স্থির_পৃথিবী_কেন্দ্রিক_মহাবিশ্বব্যবস্থা
#Cosmology, #True_Cosmogony, #Astronomical_Distortion, #Flat_Earth_and_Dome_Firmament
_________________________________________
_________________________________________
জিওসেন্ট্রিক কস্মোলজি(Documentary):
https://aadiaat.blogspot.com/2019/01/documentary-article-series_16.html


পিথাগোরিয়ান-কোপার্নিকান হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি প্রতিষ্ঠিত করেছে যারা, তাদের লাভ কি?
****************************************
****************************************

সমতল জমিন ও গোল জমিনের ম্যাপের মধ্যে তফাৎ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_33.html

Flat earth mysticism এবং নব্য শয়তানের পূজারীরা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/flat-earth-mysticism_8.html



সমতল পৃথিবীর বিষয়টি অনেকের কাছেই আনএক্সেপ্টেবল...
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_48.html



চন্দ্র অভিযান নিয়ে আবারো বিতর্ক
https://aadiaat.blogspot.com/2017/11/blog-post_78.html













#যাদুবিদ্যা,#কোয়ান্টাম_ম্যাথড,#ধ্যান,#Monism,#NonDualism,#স্পিরিচুয়ালিজম,#থিওসফিক্যাল_সোসাইটি:নিউএজ,#প্যাগান_আধ্যাত্মবাদ,#প্যাগানিজম,#বাতেনিয়্যাহ,#সুফিবাদ,#সুফি_মারেফাত,#বাউল_ধর্মমত,#দেহতত্ত্ব,#আল_ইল্ম_আল_লাদুনি(Esotecic knowledge),#Mysticism(রহস্যবাদ),#Occultism(গুহ্যবাদ),#Occult_philosophy,#Spiritual_satanism,#Gnosticism, #ওয়াহদাতুল_উজুদ #কল্কি #মৈত্রেয়_বুদ্ধ, #সর্বেশ্বরবাদ,#Mystery_Schools,#pagan_philosophy  প্রভৃতি:



কাব্বালা শিক্ষার প্রতি তৃষ্ণা দাজ্জাল আসার একটা লক্ষণ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/10/thirst-for-kabbalah-sign-of-his-arrival.html

চেতনার ওপারে-Altered State of Consciousness
https://aadiaat.blogspot.com/2019/07/altered-state-of-consciousness.html

কোয়ান্টাম ম্যাথড
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_899.html

কোয়ান্টাম ম্যাথড এবং দাজ্জালের স্বঘোষিত অনুসারীরা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_86.html

Worldwide occult resurgence:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_14.html

অকাল্ট প্যাগান থিওলজি এবং সুফিবাদ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_36.html

Occultism:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/occultism_10.html

law of attraction:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_29.html

law of attraction বাংলাদেশে
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_10.html

কোয়ান্টাম ম্যাথড এবং ল অব এট্রাকশন
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_8.html

কোয়ান্টাম ম্যাথড ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_90.html

কোয়ান্টাম ম্যাথড:ধ্যান
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_96.html

কোয়ান্টাম ম্যাথডকে যারা স্বীয় দ্বীন হিসেবে গ্রহন করেছে
https://aadiaat.blogspot.com/2019/01/blog-post_85.html

ডিস্কোভারী চ্যানেলে স্পিরিচুয়ালিজম
******************************
******************************

Psychic Ability :
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/psychic-ability_10.html

এসোটেরিক এজেন্ডা বাংলাদেশে -১:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_55.html

এসোটেরিক এজেন্ডা বাংলাদেশেও -২ঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_39.html

দাজ্জালের অনুসারীরা আপনার পাশেই অপেক্ষা করছেঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_20.html

শিখ ধর্মে মাহদী ও তাগুত কল্কিঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_73.html

কল্কি বিভ্রান্তিঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_85.html

ইল্যুমিনাতি আপনার আমার পাশেইঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_4.html

সুফিবাদ ও কোয়ান্টাম স্পিরিচুয়ালিটিঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_32.html

Bio energy card:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/03/bio-energy-card_21.html

ট্যারট কার্ড রিডিংঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_31.html

দেওবন্দ এবং ওয়াহদাতুল উজুদ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_83.html

মনিজমঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_72.html

Chakra, Third Eye এবং Yoga মেডিটেশন (যোগধ্যান)-
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/chakra-third-eye-yoga_10.html

বাংলাদেশে One World Religion এর প্রসারে যোগসাধনায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/one-world-religion_10.html


যাদুবিদ্যা ও নব্য মু'তাযিলা চিন্তাধারাঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_24.html

https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_68.html


যাদুবিদ্যায় শয়তান জ্বীনের ভূমিকাঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/01/blog-post_50.html

https://aadiaat.blogspot.com/2019/01/blog-post_33.html



একের ভেতর সবঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/02/paganism_7.html









ইসলাম:
কুরআনিয়্যাহ/আহলে কুরআন/কুরানিস্ট/ কুরআন অনলি/সাবমিটার্স/কালো কাতোঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_94.html

গনতন্ত্রের একটি পলিথেইস্টিক দ্বীন
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_58.html

Moderate & liberal Apologetics: মুরজিয়াঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/moderate-liberal-apologetics_10.html

Digital Painting(?):
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/digital-painting_10.html

প্যারাডক্সিক্যাল আজাদ
**********************
**********************

আল্লাহ ও তার রাসূলকে(সাঃ) সাহায্যের ব্যপারে অন্তরের পবিত্রতা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_29.html

নাস্তিকতা ও চিন্তার বিকৃতিঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_38.html

নাস্তিকতা - বিজ্ঞান এবং এদের সাথে বিতর্ককারীদের চিন্তার বিকৃতিঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_54.html

দাজ্জ্বালের আত্মপ্রকাশের পর '৪০ দিন' এর অপব্যাখ্যা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_7.html

আল ইল্ম ওয়াল জিহাদ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/blog-post_21.html

এক হক্কপন্থী আলিমের পরিচয়
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_53.html

সঠিক আকিদা ও মানহাজের প্রকাশনার লিংকঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_4.html

মাজহাবি ইখতেলাফ- শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_90.html

অমূল্য কিছু কিতাবের ঠিকানা
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_96.html

সঙ্গত কারনে বিভিন্ন বিষয়ে লেখা অসংখ্য ইসলামিক আর্টিকেল ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।












অন্যান‌্য:
_______
_______
এলিয়েন(শয়তানজ্বীন) এবং ফেইক আউটার স্পেস
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html


Crop circle :
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/crop-circle_10.html

NDE(Near death experience):
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/near-death-experiencende_10.html

মেডিকেল ও বানিজ্যে কাডুসিয়াসঃ
missing link

United for peace কিছু কথা
missing link

প্ল্যানেট এক্স/নিবিরু/সেকেন্ড সান/কমেট আইওসন/polar shifting/পশ্চিমে সূর্যোদয়/
https://aadiaat.blogspot.com/2018/03/blog-post_93.html


ট্র‍্যান্সেনশন হাইপোথেসিসঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_41.html

বিনোদনের বিষয়গুলি যখন ব্রেইনওয়াশের হাতিয়ার
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_65.html


লিনাক্স
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_35.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/linux-os-installation-process_10.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_67.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/mx-linux_10.html


প্রভাত দিয়ে লেখার টিউটোরিয়াল
https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/blog-post_80.html

ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_27.html


শয়তানের প্রতিশ্রুতি কি সত্য?
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_25.html


অখন্ড মহাভারতের স্বপ্নঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2019/07/blog-post_24.html


নির্মাণকাজে পশু ও নরবলি প্রথা-Pact with Devils
https://aadiaat.blogspot.com/2019/07/pact-with-devil.html





Friday, March 1, 2019

মেডিকেল ও বানিজ্যে কাডুসিয়াস

যখন বলি আমাদের সমাজ ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে কুফরের ছাপ রয়েছে। তখন বিষয়টি কেউ তেমন আমলে নেয় না।আমরা সত্যিই ব্যাপার গুলোকে গুরুত্বের সাথে নেই না। আজ আসুন একটা অস্বস্তিকর বিষয় বলব। উপরের ছবিটি বা প্রতিকটিকে বলা হয় "কাডুসিয়াস",যা হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের মেইনস্ট্রিম মেডিকেল ও বানিজ্যের সিম্বল। এ প্রতীকটি নেওয়া হয়েছে গ্রীক পৌত্তলিক দেবতা হার্মিস ট্রিস্মেজিস্টাসের থেকে। হার্মিসের এক হাতে এই সিম্বল আছে। অন্য হাতে মার্কারি গ্রহ। হারমেটিক কাডুসিয়াস এস্ট্রলজির বেসিক ভিত্তিগত বিষয়কে রিপ্রেজেন্ট করে। সেই সাথে আলকেমির তাৎপর্যও বহন করে। আমরা ইতোমধ্যে জানি যে___রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি জ্যোতিষ বিদ্যার কিছু অংশ শিক্ষা করল, সে আসলে যাদু বিদ্যার একটি অংশ শিক্ষা করল। বিধায় জ্যোতিষ বিদ্যা যত বেশী পরিমাণে শিক্ষা করবে, অত বেশী পরিমাণে তার যাদু বিদ্যা বেড়ে যাবে।’’
[আবূ দাঊদ বিশুদ্ধ সূত্রে] [1]
[1] আবূ দাউদ ৩৯০৫, ইবনু মাজাহ ৩৭২৬, আহমাদ ২০০১, ২৮৩৬
 হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আর ওই গ্রীক প্যাগান দেবতা হার্মিস হচ্ছে জুয়া,চুরি,মিথ্যাবাদী এবং ব্যবসায়ীদের দেবতা। হার্মিসের আগে এ সিম্বল ঈসা(আ) এর জন্মের ৩০০০ বছর আগের মেসোপটেমীয় এক দেবতার সিম্বল হিসেবে পাওয়া যায়। আরেকটু ভেতরে যাই...। সার্পেন্ট সিম্বল দ্বারা খ্রিষ্টানরা শয়তানকে নির্দেশ করে আর ওদের বিকৃত কিতাবে এরূপ বর্ননাও আছে। চলুন এ সিম্বল কাদের তার আদ্যোপান্ত একবারেই বুঝে নি।
একটু কষ্ট করে নিজেই ঘুরে আসুন
https://m.facebook.com/1705167179758575/photos/a.1710670349208258.1073741826.1705167179758575/1714272982181328/?type=3&source=45&refid=17
আশা করি শয়তানী চিকিৎসা বিজ্ঞান আর সুদি বানিজ্যিক সিস্টেমকে ধরতে পেরেছেন।(আংশিক তথ্যসূত্রঃউইকিপিডিয়া)