শয়তানের প্রতিশ্রুতি কি সত্য?
২য় পর্বে শয়তানের চার প্রতিশ্রতি নিয়ে লিখেছিলাম। সর্বপ্রথম পিতা আদম(আ) ও মা হাওয়া(আ) কে শয়তান নিষিদ্ধ বৃক্ষের ব্যপারে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। সে আদমকে(আ) বলে,আমি কি তোমাকে বলে দিব (Tree of life)চিরঞ্জীব হবার বৃক্ষের (شَجَرَةِ الْخُلْدِ) কথা(?)। সে তাদের প্ররোচিত করে এই বলে যে, তারা যদি এই সাজারাতুল খুলদের(Tree of life) ফল গ্রহন করে তাহলে তারা চিরঞ্জীব(immortal) হয়ে যাবে, Angelic being এ ascend করবে এবং এক চিরস্থায়ী স্বর্গরাজ্য(utopia) লাভ করবে যেখান থেকে কখনো বের হতে হবে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেনঃ
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?
[আত ত্বোয়া হা ১২০]
فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَاتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَـذِهِ الشَّجَرَةِ إِلاَّ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী
[আরাফ: ২০]
এর পরবর্তী ঘটনা জানেন। আদম-হাওয়াকে(আ) জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। শয়তান ওই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সে আদম সন্তানদেরকে পথভ্রষ্ট করার পিছনে লেগে আছে। সে গোটা সৃষ্টিতত্ত্ব, মেটাফিজিক্স (Origins of existence) এমনভাবে সাজিয়েছে যাতে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ধারনাকেই একদম বাদ দেওয়া যায়। যাতে আদম-হাওয়া(আ) এর ঘটনাকে রূপক পৌরাণিক কল্পকথায় স্থান দেওয়া যায়। ইবলিস ও তার সহযোগীদের বানানো এই বিকল্প তত্ত্ব ও বিদ্যাকে প্রাচীনকাল থেকেই একদল লোক অনুসরন করত। এদের মধ্যে যারা মূর্খ তারা সরাসরি পৌত্তলিকতাকে(idolatry) বেছে নেয়। আর বিদ্বান বা ধূর্তরা সরাসরি প্রকৃতিপূজা, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং যাদুবিদ্যাকে দ্বীন রূপে গ্রহন করে। এরা তারা,যারা সব সময় নবী-রাসূলগনের(আঃ) দাওয়াত অস্বীকার করত। ইবলিস জান্নাতুল আদনের সেই পুরোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে দুনিয়াতে এ সকল নিকৃষ্ট কাফিরদের মধ্যে মেটাফোরিক্যালি চালিত রেখেছে[৯]। Tree of life এর সেই সুস্পষ্ট ধোঁকার জাল সে যাদুবিদ্যার মধ্যে বিছিয়ে দিয়েছে। প্রাচীন ব্যবিলনের[নেবুচাদনেজারের শাসনামলে বন্দী] ইহুদীদের কাছে শয়তান সাজারাতুল খুলদের প্রতিশ্রুতিকে যাদুবিদ্যার ভেতর রূপকভাবে ঢুকিয়ে প্রকাশ করে। আজকে ইহুদীরা একে কাব্বালাহ নাম দিয়েছে।আপনারা জানেন, কাব্বালিস্টিক অকাল্ট ট্রেডিশনে Tree of life(شَجَرَةِ الْخُلْدِ) একদমই প্রাথমিক ও মৌলিক বিদ্যা।
Tree of life এ বিভিন্ন প্লেইন অব এক্সিস্টেন্স কুফরি শিক্ষা রয়েছে। এ কুফরি জ্ঞান লাভ করার মাধ্যমে কাব্বালিস্টরা শয়তানের প্রতিশ্রুত immortality(অনন্ত জীবন) এর বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে পারে। তাদেরকে শেখানো হয় মানুষের আত্মার মৃত্যু নেই। এটা বার বার রিইনকারনেট(পুনঃজন্ম) লাভ করতে থাকে।কাব্বালার ট্রি অব লাইফ শেখায় কিভাবে এই মৃত্যুহীন আত্মাকে বিকশিত(evolve) করতে করতে রক্তমাংসের শরীরসহ এঞ্জেলিক লাইট বিং এ রূপান্তর করে Rebirth বিহীন স্থির Eternal life পেতে পারে চিরস্থায়ী হায়ার ডাইমেনশনের স্বর্গরাজ্যে। হায়ার ডাইমেনশনাল সেই স্বর্গরাজ্যে প্রত্যেকেই হবে অমর আর উজ্জ্বল আলোকময় শরীরের এনলাইটেন্ড বিং। সে এক অবিনশ্বর জীবন ও রাজত্বের প্রতিশ্রুতি। সেখানে কাব্বালিস্টরা নাকি সৃষ্টিকর্তার সাথে তাদের অস্তিত্বগত পার্থক্যহীনতা অনুভব করবে[১০]! এ কাব্বালিস্টিক এ্যাপ্রোচ পূর্বে বাহ্যিক পৃথিবীতে আলকেমিক্যাল প্র্যাক্টিসের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কথিত অপবিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও অমরত্বের সন্ধানে জীবনটাকে আলকেমিক্যাল-কাব্বালিস্টিক স্ক্রিপচারগুলো ঘাটাঘাটি করে জীবন পার করেন। এমন কি তার মৃত্যুর পরে মৃতদেহে মাত্রাতিরিক্ত সীসা পাওয়া যায়, যা ছিল অমরত্বের সন্ধানে নিজের উপর করা আলকেমিক্যাল পরীক্ষার ফল। পদার্থবিদ মিচিও কাকুও নিউটনের কাব্বালার মধ্যে ডুবে থাকার বিষয়টির স্বীকৃতি দেন। যাদুবিদ্যার অস্তিত্ব ব্যবিলনিয়ান সভ্যতা পূর্বে থাকলেও, নমরুদের যুগ থেকে ব্যবিলন থেকে এর রিভাইভ্যাল ঘটে। সেখান থেকে যাদুবিদ্যা পৃথিবীর চার দিকে ছড়িয়ে শুরু করে।সে অঞ্চল হয়ে যায় - ল্যান্ড অব ম্যাজাই। যাদুকর পিথাগোরাস এখান থেকেই যাবতীয় বিদ্যা নিয়ে গ্রিসে ফিরে নিজস্ব মিস্ট্রিস্কুল খোলেন। এরপরে প্লেটো তার শয়তানি বিদ্যাগুলোকে গভীরভাবে গ্রহন করে এবং আরো এক্সপাউন্ড করে প্রচার শুরু করেন। প্লেটোনিক অকাল্ট ফিলসফি, জুডিও ব্যবিলনিয়ান মিস্টিসিজমের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত[৮]। প্লেটো সরাসরি ইহুদীদের থেকে কাব্বালিস্টিক শাস্ত্র নিয়ে সেগুলোকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। এজন্য তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা ইহুদী কাব্বালিস্টরাও সম্মানের সাথে স্মরন করে। তার নামে (কাব্বালিস্টিক) অকাল্টিজম যেভাবে সারা পৃথিবীতে সমাদৃত এরূপ ২য় দার্শনিক পাওয়া যায় না। তার মেটাফিজিক্সই আজকের ফিজিক্সের ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরির অনিবার্য ভবিষ্যৎ। আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন যে আজকের জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীগন বলছেন আজকের ফিজিক্স ও এস্ট্রনমি কাব্বালাহ এরই প্রতিফলন। এসব বিষয় বিগত পর্বগুলোয় বিস্তারিত আলোচনা পাবেন[১]। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এইসকল এডভান্স অকাল্ট ন্যাচারাল ফিলসফির[অপবিজ্ঞান] উদ্দেশ্য কি? সহজ উত্তর হচ্ছে শয়তানের সেই প্রতিশ্রুতিকে পূরন যেখানে সে Tree of life বা সাজারাতুল খুলদের দ্বারা এক অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।
প্রায় ২৪০০ বছর আগে প্লেটো কাব্বালিস্টিক শাস্ত্র পাঠ করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থার(রিপাব্লিক) কথা উল্লেখ করেন। যে কিতাবে এ বিষয়ে বর্ননা করেন সেখানে সবার আগে কুফরি মেটাফিজিক্স(থিওরি অব ফর্ম),পুনর্জন্মবাদ ও আত্মার অমরত্বের(immortality of soul) ব্যপারে উল্লেখ করেন।তার বর্নিত পলিটিকাল থিওরিটি অনেকটা কম্যুনিজম ভিত্তিক টোটালেটেরিয়ান ওয়ানওয়ার্ল্ড ইউটোপিয়া। শাসক হবে চুজেন পিপলস যাদেরকে গার্ডিয়ান বলা হয়(ইহুদীরা?)। সেখানে একজন ফিলসফার রাজা[ইহুদীদের মসীহ?] থাকবেন। অঞ্চলগুলোকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করা হবে, সেখানে ধর্ম,বিয়েশাদি,পরিবার কোন কিছুই থাকবেনা। বংশবিস্তার পদ্ধতি স্টেট কর্তৃক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নির্ধারনকৃত নির্দিষ্ট সময়ে শারীরিকভাবে সুস্থ ও বলিষ্ঠ নারী পুরুষদেরকে ইচ্ছেমত ফিজিক্যাল ইন্টিমেসির সুযোগ দেওয়া হবে। আর সন্তনদের কোন পিতৃপরিচয় থাকবে না। শারীরিক ত্রুটিপূর্ণ সন্তানদেরকে হত্যা করা হবে। সকল মানুষকে পেশা অনুযায়ী কতগুলো শ্রেনীতে ভাগে বিভক্ত করা হবে। পেশাগত স্বাধীনতা থাকবে না। হিসেবে সাধারন মানুষগুলো অনেকটা ভেড়ার পালের মত দেখা হবে। তার এ বইয়ে চারটি অকেজো শাসন ব্যবস্থার নাম উল্লেখ করেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে গনতন্ত্র।[১১] গত দু হাজার বছর ধরে প্লেটোর এই পলিটিক্যাল থিওরি পাঠ করে যুগে যুগে বহু দার্শনিক, সমালোচক, সাহিত্যিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রোমাঞ্চিত হয়েছেন। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের Earth summit এ ৪০ টি চ্যাপ্টারে বিভক্ত ৩৫০ টি পেইজের হলুদ রঙের একটা বই উপস্থাপন করে Agenda 21[২] নামে। এটা ইউএন এর Sustainable development এর এ্যাকশন প্ল্যান! এতে বর্ননা আছে কিভাবে পৃথিবীকে দারিদ্র্য, ক্ষুধা, জনসংখ্যা সমস্যা,বৃক্ষনিধন নিরসন এবং উন্নত প্রযুক্তি, ক্লিন ও চিপ এনার্জি(পরিবেশবান্ধব পাওয়ার-ইলেক্ট্রিসিটি),শিক্ষা,নারী পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে একটা সাজানো গোছানো বিশ্বব্যবস্থা নির্মাণ(শুনতে খুব ভাল মনে হচ্ছে, তাই না?) করা যায়। ইউএন[United Nation] ইহুদীদের কথিত মসীহের নেতৃত্বে ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট সৃষ্টির জন্য শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের এই সাস্টেইনেবিলিটির স্বরূপ বোঝা যায় ইউএন এর পরিবেশ সংক্রান্ত পরবর্তী অফিশিয়াল ডকুমেন্ট গুলোয়। এগুলোয় টোটালেটেরিয়ান টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়ার মহাপরিকল্পনা বিস্তারিত আছে। এরা সাস্টেইনেবল গৌলে পৌছতে জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে ফেলার পরিকল্পনাও করেছে। বেশ কিছু অদ্ভুতুড়ে শর্ট প্রোপাগান্ডা ভিডিও নির্মান করেছে[৩]। এজন্য ভ্যাকসিন,ইউজেনিক্স, জিএমও ফুডের কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তো ভ্যাকসিনকে স্বাস্থ্যরক্ষার বিশাল উপাদান বলে দেখি। আর জিএমও ফুডকে এখন পুষ্টি চাল নামে বাংলাদেশেই চলে এসেছে। অনেক পুষ্টি ওতে!!
হলিউডের ডিস্টোপিয়ান ফিল্ম Allegiant ভ্যাকসিনেশনের উদ্দেশ্যকে সুন্দরভাবে দেখিয়েছে। ওরা দরিদ্র একটা অঞ্চল থেকে বাচ্চাদেরকে কিডন্যাপ করত। স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলত। কিন্তু পরবর্তীতে আসল উদ্দেশ্য দেখায়, ভ্যাকসিন দিলে শিশুটা তার অতীতের স্মৃতি ভুলে যায়, ফলে তাকে জন্তুজানোয়ারের মত নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ওদের চিন্তাধারায় বড় করা যায়। UN এর প্রকাশিত আরেকটি বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে বিশ্ব ব্যবস্থার ধরন। তাতে বলা হয়, পৃথিবীর অধিকাংশ স্থলভাগই কোর উইল্ডারনেস এরিয়ায় পরিনত করা হবে। উত্তর আমেরিকার ৫০% অঞ্চলজুড়েই কৃত্রিম বনভূমি সৃষ্টি করা হবে। এভাবে পৃথিবীর সকল স্থলভাগ গুলোর অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে কৃত্রিম উপবন তৈরি করা হবে যেগুলো একটি অন্যটির সাথে কোরিডোর দ্বারা সংযুক্ত থাকবে। আর এর চারদিকে buffer Zone থাকবে, যেখানে বাচিয়ে রাখা অবশিষ্ট নির্বাচিত মানুষের নিয়ন্ত্রিত বসতির ব্যবস্থা করা হবে। বিস্তারিত দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=0d5H6-M1kx
২০১৫ সালে ১৭ টি লক্ষ্য তৈরি করে ইউএন 'এজেন্ডা ৩০'[২০] নামে আরেকটি প্রজেক্ট হাতে নেয়। এদের নিয়ন্ত্রনে বিশ্বের সকল দেশগুলোয় স্টেট ও ননস্টেট(এনজিও) অর্গানাইজেশন গুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে ভিশন ২১ এর নাম শুনেছেন(?)। প্রায় এক যুগ আগে এজেন্ডা ২১ ; দেশের গুটিকয়েক উচ্চপদস্থ প্রথম শ্রেনীর সরকারী আমলাদের নিয়ে তাদের লক্ষ্যে কাজ করানোর জন্য সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় প্রশিক্ষণ দিতো,সভা সেমিনার আয়োজন করত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই কর্মকর্তাদের একজন হলেন আমার পিতা। আমাদের দেশের যাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাদের আসল পরিচয়ও জানেনা। অজ্ঞতার কারনে তারা শুধুই ধর্মনিরপেক্ষতার দৃষ্টিতে বাহ্যত শুনতে কল্যাণমূলক কথা ও নির্দেশগুলোকে গভীর চিন্তা ছাড়াই গ্রহন করে।
১৭ জুলাই ২০১৬ সালে জ্যাক ফ্রেস্কো নামের এক বৃদ্ধ জাতিসংঘ থেকে বিশেষ এওয়ার্ড লাভ করেন "ভেনাস প্রজেক্ট" নামের ইউটোপিয়ান ফিউচারিস্টিক এ্যাবান্ডেন্ট বিশ্বব্যবস্থার ডিজাইন করার জন্য।তাকে ইউনাইটেড ন্যাশনের জেনারেল এসেম্বলি হল থেকেই সম্মাননা দেওয়া হয়।সম্মেলনের নাম ছিল 'নোভাস'। শব্দটাকে ওরা ডলার বিলের উপরেও রাখে[নোভাস অর্ডো সেকলোরাম],সেটার অর্থও ইউটোপিয়ান স্বপ্ন কেন্দ্রিক। মূলত, গোটা বিশ্বকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দ্বারা সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এ ট্রান্সফর্মেশনের পথ দেখানোর জন্য ফ্রেস্কোকে এওয়ার্ড দেওয়া হয়[৪]। জোসেফের এ ইউটোপিয়ান প্রকল্পটিকে Arthur C. clerk সাহেবও প্রশংসা করেন।
ভেনাস প্রজেক্টই হচ্ছে সেই আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নরাজ্যের ব্লু্প্রিন্ট। ফ্রেস্কো জীবনের প্রথম দিকে কম্যুনিস্ট ছিলেন। তার এ চিন্তাধারা আসে সেই জুডিও-ব্যবিলনিয়ান অপবিদ্যার ধারক প্লেটো। তার Beyond Utopia বইতে তিনি প্লেটোর রিপাবলিকের প্রশংসা করেন,এছাড়া কার্ল মার্ক্স,এইচ জি ওয়েলস, এমনকি ফ্রিম্যাসনারিরও প্রশংসা করতে দেখা যায়। তার এ প্রজেক্টটি জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর প্ল্যানকে আরো স্পষ্টভাবে তুলে ধরে[৫]। তার সিটি ডিজাইনগুলো দেখলে হলিউডের তৈরি দ্যা গিভার, হাঙ্গার গেমস, ঈয়ন ফ্লাক্স, ইকুইলিব্রিয়াম,টুমোরোল্যান্ড, ডাইভারজেন্ট, ইনসারজেন্ট ইত্যাদি অসংখ্য টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়ান ফিল্ম গুলোকে মনে পড়ে যাবে। নিচের ভেনাস প্রজেক্টের শহরের ডিজাইনের ছবিতে ইজরাইলের পতাকার কথিত স্টার অব ডেভিডের প্রতিকটা বেশ স্পষ্ট!
আপনার কখনো মনে হয়, কেন হলিউড এই ধরনের ইউটোপিয়ান/ডিস্টোপিয়ান থিম দিয়ে ফিল্ম তৈরি করে(?)। এটা শুধুই আপনার কাছে ইবলিস অরিজিনেটেড অবিনশ্বর রাজ্যের কন্সেপ্টটিকে সহজ(নর্মালাইজ) করার জন্য। Aeon flux ফিল্মের অফিসিয়াল পোস্টারে Eye of providence এর ছবিটা অসাধারণ।
নিচে Allegiant film এ দেখানো ফিউচারিস্টিক ইউটোপিয়ার স্ক্রিনশট দেওয়া হলোঃ
Tomorrowland:
Aeon Flux:
The Giver[2014]
Equilibrium
Cloud Atlas:
জ্যাক ফ্রেস্কোর সাথে ফ্রিম্যাসনিক নেটওয়ার্ক এর সম্পর্ক নিয়ে Ernst Fischer বলেনঃ "the Venus Project's "solution is Communism re-packaged to rope in the 21st century truth seeker." Here is a detailed comparison of the Zeitgeist philosophy and Communism.Fischer Continues: "Fresco spoke at the 10th anniversary of the UN's Earth charter last year and subsequently attended Mikael Gorbachevs congress, which you will find on thevenusproject.com hidden away in the Netherlands section. Hell even if for some reason you think rubbing shoulders with those mid level elites is okay, what about frescos co-speaker Ervin Laszlo, (who he "spent time with") who FOUNDED the Club of Budapest, with Aurelio Peccei, founder of the CLUB OF ROME, full of lovely Illuminati globalists, who want a one world order, unified, worshiping the earth, under a new age religion. What about him being invited to dinner in the Dutch queen's palace? As in Queen Beatrix.... of Bilderberg. Fresco, former member of the Communist party, wrote a book with Ken Keyes a while back. You don't just write a book with someone you barely know, so I might go so far as to say his good friend and colleague Keyes wrote a charming book called Planethood, go look it up. The book speaks not only of how the UN will fix the planet, but how they will install a One World Government "for the earth" Um, no thanks, what about the people? Or does Skynet just see us as more resources in the resource management program?"
এরপরে ২০০৭ সালে পিটার জোসেফ(ছদ্মনাম) নামের এক লোক হঠাৎ ইউটিউবে Zeitgeist addendum নামের ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রকাশ করে। এতে সকল কন্সপাইরেসি থিওরিস্টদের আকর্ষন করবার মত করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ধর্মগুলোর ব্যপারে কম্যুনিস্টদের ধারনা প্রচার করতে গিয়ে বলে ঈসা(আ) বলে কেউ ছিলই না! সবই মানুষের মনগড়া মিথ! এরাও আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা দেখাতে গিয়ে টেকনোলোজি বেজড আর্থ প্যারাডাইসের(টেকনোক্রেটিক ইউটোপিয়া) রূপরেখা উপস্থাপন করে। নানান যুক্তি দিয়ে ওদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তাকে ম্যাগ্নিফাই করা হয়। ফিল্মটা ব্যাপক সাড়া ফেলে। সেটা লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখে। সমর্থকদের নিয়ে পিটার জোসেফ zeitgeist movement নামের অর্গানাইজেশন তৈরি করে। এরপরে ২০১১ সাল পর্যন্ত মুভিং ফরওয়ার্ডসহ আরো একাধিক ফিল্ম তৈরি করে[১৩]। zeitgeist নামের অর্থটাও শয়তানী। জার্মান zeit= সময়, geist= ভূত/জ্বীন/শয়তান অর্থাৎ শয়তানের যুগ, সুন্দরভাবে বললে এজ অব স্পিরিট এন্টিটি। পিটার জোসেফ বলেন,
“Zeitgeist is the activist arm of the Venus Project"। তার প্রব্লেম রিয়্যাকশন সল্যুশন দেওয়া ফিল্মে জ্যাক ফ্রেস্কোকেও সল্যুশন এর স্থানে নিয়ে আসেন। অর্থাৎ zeitgeist এর পিছনে ভেনাস প্রজেক্ট, আর ভেনাস প্রজেক্টের পিছনে ইউএন, ইউএন এর পিছনে ক্ষমতার হায়ারার্কির শীর্ষে আছেন ইয়াহুদা মসীহ আদ্ দাজ্জাল যিনি আসছেন শয়তানের অবিনশ্বর স্বর্গ বা জান্নাতের প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবায়নের আশা নিয়ে । ভেনাস প্রজেক্ট আর zeitgeist মুভমেন্টই শেষ নয়। মিকাইল টেলিঙ্গারের উবুন্টু প্লানেট[১৪] এবং পরবর্তীতে আসা ফস্টার গ্যাম্বেলের থ্রাইভ মুভমেন্টটাও এই অভিন্ন লক্ষ্যের প্রচারক। থ্রাইভ তো পুরোপুরি অকাল্ট সায়েন্সের প্রচারক। সকল নিউএজ মিস্টিকদের প্রমোট করে। তাদের ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রায় 1 বিলিয়ন মানুষ দেখেছে। এই সংগঠন কাজ করছে কাব্বালাহ এর উপর গড়া নাসিম হারামাইনের ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরি নিয়ে, যে অকাল্ট বিদ্যা দ্বারা পৃথিবীকে আলোকিত(অন্ধকার) করার স্বপ্ন দেখে। এর ফেসবুক পেজের প্রোফাইল ছবিটার ডান চক্ষু ঢাকা[১৫]।অর্থাৎ এরা একচোখওয়ালা আপকামিং তাগুতেরই প্রতিনিধি। এরা সকলেই টেকনোলোজি বেজড স্বর্গরাজ্য বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে। সেখানে মুদ্রা ব্যবস্থাকে রহিত করা হবে। তৈরি হবে রিসোর্স বেজড ইকোনমি। সবকিছুই হবে এডভান্স এআই ভিত্তিক। আর ট্র্যান্সহিউম্যানিস্টিক প্রচেষ্টার দ্বারা অর্জন করা হবে বহু আকাঙ্ক্ষিত ইম্মর্টালিটি। অর্থাৎ শয়তানের শাস্ত্রের[যাদুবিদ্যা কাব্বালাহ] ট্রি অব লাইফের দ্বারা অবিনশ্বর রাজত্ব এবং অমরত্ব উভয় প্রতিশ্রুতিই কাফিররা অর্জনের আশা করে। নিউটন বিফল হলেও এরা আজ বেশ আত্মবিশ্বাসী। আজকে ট্রানসহিউম্যানিস্টিক এজেন্ডা খুবই সক্রিয়। হিউমেই, হিউম্যান ২.০ সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সহিউম্যানিজমের সপক্ষে কাজ করছে। সেদিন দেখলাম স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মিডিয়া প্লাটিপাস ইন্সটিটিউটের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার Amy Kruse এর হিউম্যান ২.০ এর ব্যপারে বলা প্রেজেন্টেশন প্রচার করছে। তিনি বলছেন তারা এমন ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে যেটা বর্তমান হিউম্যান ১.০ ভার্সন থেকে ২.০ তে ট্রান্সফর্ম করবে[২৩]। তাদের ভ্যাকসিন বায়োলজিক্যাল মিউটেশন ঘটাবে। শুনতে অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত লাগছে, তাই না [?]। হলিউডও থেমে নেই। Beyond ফিল্মটিতে হিউম্যান ২.০ কে স্পেসে পাঠাতে সক্ষম হয়েছে দেখিয়েছিল। ট্রান্সহিউম্যান[১২] হচ্ছে মানব শরীরের সাথে রোবটিক্স এর ইন্টিগ্রেশন,মানব ব্রেইনকে পুরোপুরি রোবটিক শরীরে প্রতিস্থাপন এমনকি Mind uploading এর দ্বারা মনকে ডিজিটাল ডিভাইসে আপলোড করা। ট্রান্সেন্ডেন্স ফিল্মে দেখেন নি[?], জনি ডিপ তার চেতনাকে কম্পিউটারে আপলোড করে কত কিছু করে! এখন পর্যন্ত বাস্তবজীবনে এ কাজে আংশিক সফল এবং অধিকাংশ চিন্তাই শুধুই সায়েন্স ফিকশন[পূর্ন সফলতা কখনোই আসবেনা,বিইযনিল্লাহ]। এরপরেও ট্রান্সহিউম্যনিস্ট অপবিজ্ঞানীরা খুব কনফিডেন্সের সাথেই অমরত্ব অর্জনের সম্ভাবনার কথা বলছেন। সেটা আবার বিবিসি প্রচার করছে। অথচ সামান্য কয়েক বছর আগে এসব শুধু কন্সপাইরেসি থিওরির আওতায় ছিল! দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=STsTUEOqP-g দেখলেন[?], সায়েন্টিস্টদের কাছে এজিং এবং ডেথ হচ্ছে একপ্রকার রোগ! এটার কিওর খুব শীঘ্রই পাবার আশা করেন।
2006 সালের The Fountain নামের পুনর্জন্মবাদ কেন্দ্রিক শয়তানি ফিল্মটিতে নায়ক হিউ জ্যাকম্যান একই কথা বলেঃ
"মৃত্যু হলো একটি রোগ, অন্য সব রোগের ন্যায়,এবং এর একটি ওষুধ, আমি সেই পথ্য খুঁজে বের করব"[২৪]। ফিল্মটি শুরু হয় জেনেসিসের ৩:২৪ নম্বর ভার্স দেখিয়ে। মাথায় শিং ওয়ালা(symbolized Satan) এক লোককে দেখা যায় ধ্যানরত হিউ জ্যাকম্যানকে সিজদা করে। এরপরে আসমানে অর্গানিক স্পেস শীপে রওনা দেয় সাজারাতুল খুলদের সন্ধানে[৬]।
দ্য ফাউন্টেন মূলত কাব্বালিস্টিক তাৎপর্যে ভরা gnostic ফিল্ম। উইকিপিডিয়াতে আছে, In The Fountain, the Tree of Life was a central design and part of the film's three periods. The tree was based on Kabbalah's Sefirot, which depicts a "map" of creation to understand the nature of God [উইকিপিডিয়া] ট্র্যান্সহিউম্যানিজম,সাইবর্গ এজেন্ডাকে বাহ্যিকভাবে সলিড ইনোসেন্ট সায়েন্স ও টেকনোলোজির কারসাজি মনে হলেও এগুলো সেই স্যাটানিক নস্টিক ডিরাইভড কন্সেপ্ট। আগের রাসায়নিক আলকেমিক্যাল প্রসেস ছেড়ে এই পদ্ধতিতে হাত বদল হয়েছে মাত্র। অনেক সেকুলার সমালোচক এটাকে নিও নস্টিসিজম(কাব্বালিস্টিক প্র্যাক্টিস) হিসেবে অভিহিত করেন[21]। এটা উইকিপিডিয়াতেও আছে:
Transhumanism and its presumed intellectual progenitors have also been described as neo-gnostic by non-Christian and secular commentators.[78][79]
(উইকিপিডিয়া)
এক ইহুদী কাব্বালিস্টকে দেখলাম মৃত্যুকে ট্রান্সেন্ড করে অমরত্বের শিক্ষা দিচ্ছে কাব্বালার রেফারেন্সে। শেষ দিকে অমরত্বের বাহ্যত প্রায়োগিক দিক বোঝাতে সে বলল, "আজকের সায়েন্স এই প্রিন্সিপ্যাল গুলো ধরেই আগাচ্ছে। আজ থেকে আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিজ্ঞানীরা মৃত্যু এবং রোগকে অতিক্রম করতে পারবে। এ নিয়ে সামনের (কাব্বালিস্টিক এ্যানালোজির)পর্বে আরো গভীর আলোচনা হবে" [৭]। আপনার কি মনে হয়, Advance AI(artificial intelligence) এর গবেষণাগুলোতে ওদের কোন হাত নেই? AI কে স্বাধীন চেতনা দেওয়ার জন্য আজকে Science & NonDuality নাম দিয়েই বাতেনি শয়তানি বিদ্যাকে মেকানিক্যাল টেকনোলোজিতে রূপায়নের কাজ প্রকাশ্যেই চলছে। কর্মরত সায়েন্টিস্টগন সরাসরি নিজেদের মিস্টিক বলে পরিচয় দেন[২২]।
এটা বস্তুত প্রত্যাশিত, কারন আধুনিক মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের থিওরেটিকাল নলেজের সিংহভাগই কাব্বালাহর প্রতিফলন। আমার কথা নয়, বিজ্ঞানীদেরই কথা। আর ইহুদীরা বলেন এই কাব্বালাহ অর্জন হয়েছে বাবেল শহর থেকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা ইহুদী যাদুবিদ্যার উৎস সমূহকেও স্পষ্ট করে দিয়েছেনঃ"তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। … তারা মানুষকে যাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।…"
[সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১০২]
দুনিয়ায় সেই সুস্পষ্ট শয়তানি বিদ্যাকে জেনেবুঝে একমাত্র কাফির যাদুকর এবং তাদের দর্শনে(ওয়ার্ল্ডভিউ) বিশ্বাসী ছাড়া আর কেউই গ্রহন করে না। সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত। আপনার কি মনে হয়, জ্যাক ফ্রেস্কো, মিকাঈল টেলিঙ্গার, পিটার জোসেফেরা নিজেরাই হঠাৎ করে এসকল আইডিয়া প্রজেক্ট করছে আর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাচ্ছে, এমনিতেই বড় বড় মুভমেন্ট তৈরি হয়ে যাচ্ছে?! একদমই না, এদের পিছনেও গ্লোবাল গভার্মেন্ট[ইউএন], এজেন্ডা২১,৩০ রয়েছে। ওরাই এদেরকে ব্যবহার করছে মিডিয়া হিসেবে এবং বিষয় গুলোকে জনসাধারণের মধ্যে গ্রহণযোগ্য করবার জন্য। এই লোকগুলো প্রত্যেকেই টোটালেটেরিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্টের স্বপ্ন দেখে। যেখানে Religion কে উৎখাত করা হবে উবুন্টুর(ইউনাইটিং হিউম্যানিটি) জন্য। অন্য দিকে প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটিকে প্রোমোট করবে। ওদের পরিকল্পনা- এই স্বর্গরাজ্যের রাজা করা হবে কাব্বালিস্ট ইহুদীদের প্রতীক্ষিত মিথ্যা মসীহকে। ওদের স্বপ্ন, সেখানে কাব্বালিস্টিক ট্রি অব লাইফের বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে সর্সারিকে মেকানাইজেশনের(টেকনোলোজি) দ্বারা করে অনন্ত জীবন[ট্রান্সহিউম্যান] লাভ করবে। সেই ব্যবিলনিয়ান কবি গিলগেমিশের মহাকাব্যের নায়কের অনন্ত জীবনের খোজা থেকে ২০০৬ এর দ্যা ফাউন্টেন ফিল্মের নায়ক হিউ জ্যাকম্যানের "মৃত্যুরোগের কিওর অন্বেষণ"! এ সব চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে স্বয়ং ইবলিস। সে এখন এ অনুযায়ী কাজও করাচ্ছে অনুসারীদের দিয়ে। একদল লোকতো অমরত্বের আশায় নিজেদের শরীরকে সেচ্ছায় নাইট্রোজেন গ্যাসে ফ্রিজড অবস্থায় রাখছে[১৬]। ওরা আশা করে কোন একদিন তাদের মৃতদেহকে কেউ জাগিয়ে তুলতে পারবে। ইবলিস প্রদত্ত অপবিদ্যার(নস্টিসিজম/কাব্বালা) আনএ্যাপোলোজেটিক অনুসারীদেরকে[mystic/spiritualists] ইবলিস আজ আরো বড় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। যারাই (রূপকার্থে) কাব্বালিস্টিক ট্রি অব লাইফের ফল(অপবিদ্যা) খাবে, তাদেরকে খুব দ্রুত এঞ্জেলিক লাইট বিং[নূর দ্বারা তৈরি দেহে] এ ফিজিক্যালি ট্রান্সফর্ম হয়ে উচ্চতর ডাইমেনশনের রিয়ালিটিতে[4D/5D] শিফট করবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সে স্বর্গরাজ্যে তারা অনন্তকাল
থাকবে। এই একই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শয়তান আমাদের পিতামাতাকেও(আ) দিয়েছিল। আজকে বলা হচ্ছে সেই ইটারনাল লাইফ ও ইউটোপিয়ান কিংডমে শিফট হবার মাহেন্দ্রক্ষণ খুব নিকটে। খুব শীঘ্রই 5D এর নতুন পার্থিব স্বর্গে Ascend করার সময় আসছে। এজন্য স্বাম্ভালার রাজা আসছেন যার জন্য অনেকে হাতের রক্ত কাগজে ফেলে শপথও[blood over intent ritual] করছে অনেকে[১৭]। উনিই হয়ত অনুসারীদেরকে স্বর্গে প্রবেশ করাবেন। ওদের মতে আমরা আছি 3D তে। চতুর্থ মাত্রা হচ্ছে সময়। ওরা এরকমও বলে থাকে কাব্বালিস্টিক ও তান্ত্রিক বিদ্যার অনুসরনে আপনিও আত্নউন্নয়নের দ্বারা evolve হতে হতে উচ্চতর ডাইমেনশনে ফিজিক্যাল[light body] পরিবর্তনসহ ascend করতে পারবেন! আপনি ইউটিউব বা গুগলে 5D new earth ascension লিখে সার্চ দিলে হাজারো ডকুমেন্ট পাবেন। কাব্বালিস্টিক মিস্টিসিজমের অনুসারী প্যাগান স্পিরিচুয়ালিস্টরা এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে। ওদের অনেকে বলছে তাদের অনেকে নাকি ৫ডি তে স্বপ্নে ভ্রমন করেও এসেছে। অনেকে সাইকাডেলিক ড্রাগ নিয়ে, চেতনার ওপারে[২য় পর্বে বিস্তারিত] গিয়ে সেই (শয়তানের) জগৎ দিয়ে ঘুরে আসে। সাম্বালার রাজা কল্কি অবতার খুব নিকটে। ওনাকে Lord Melchizedek নামেও ডাকা হয়।উনি নাকি আসমান জমিন,আলোর জগতের প্রভু! দাঊদ আলাইহিসালাম এর বংশের বলে ওরা দাবি করে[১৮]। ইহুদীরাও Davidic king এরই প্রতীক্ষায়...।[১৯] তাগুত দাজ্জালের ব্যপারে আসা সে হাদিসের কথা কি মনে আছে(?), সে হাতে জান্নাত জাহান্নাম দেখিয়ে তাতে লোকেদের আহব্বান করবে? আমরা নিশ্চিত জানি না, এটাই কি দাজ্জালের দেখানো জান্নাত কিনা। কিন্তু সেটার সাথে অনেক সাদৃশ্যতা রয়েছে। তবে এতটুকুন নিশ্চিত যে এটা ইবলিসেরই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। ইবলিস আদম-হাওয়া(আ) দেরকে ট্রি অব লাইফের দিকে হাতছানি দিয়ে ডেকে সত্যিকারের জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছিল। আজ তাদের সন্তানদেরকেও একইভাবে ট্রি অব লাইফের দিকে ডেকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে ডাকছে।
কাফিরদের প্রতি ইবলিসের প্রতিশ্রুত স্বর্গলোকঃ
ইবলিসের দেওয়া আরেক প্রতিশ্রুতিঃ
Light Being এ transformation:
আমরা Tree of life এর দিকে শয়তানের (UN কর্তৃক) মেকানিক্যাল ও (অকাল্ট ফিলসফিক্যাল)স্পিরিচুয়াল আহব্বানের উভয় প্রচেষ্টা কে দেখতে পাচ্ছি। যে বৈদিক - কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে আজকের অপবিজ্ঞান নির্মিত হয়েছে সেটা মূলত শয়তানের প্রতিশ্রুতি পূরণের পথেরই পাথেয়। যাদুশাস্ত্র ভিত্তিক এসমস্ত ফিজিক্যাল/মেটাফিজিক্যাল ও কস্মোলজিক্যাল তত্ত্বগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে সেটা অনিবার্যভাবে আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করিয়ে বিকল্প সৃষ্টিতত্ত্বকে দেখিয়ে দেয়। আল্লাহর অস্তিত্বকে যৌক্তিকভাবে নিষ্প্রয়োজন করে, সৃষ্টিজগতকে আপনাআপনি অস্তিত্বে আসার কুফরি আকিদার শিক্ষা দেয়। কুফরের কিতাব কুফরের দিকেই চালিত করবে এটাই স্বাভাবিক। আধুনিক [অপ]বিজ্ঞান তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহর আকিদাকে ধ্বংস করার জন্য নির্মিত। এমতাবস্থায় একে গুরুত্ব না দিয়ে তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ কিংবা হাকিমিয়্যাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকার উদাহরণ অনেকটা এরকম যে তিনতলাবিশিষ্ট একটি জাহাজের নিচের তলায় ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকছে,অথচ সমস্ত লোকগুলো সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে দ্বিতীয় ও ৩য় তলায় যার যার কাজে ব্যস্ত আছে।তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহর আকিদাকে ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র উলুহিয়্যাহ নিয়ে পড়ে থাকলে কোন লাভ নেই, রব হিসেবে আল্লাহর অস্তিত্বের স্বীকৃতির তথা ঈমানের জরুরত সবকিছুর চেয়ে বেশি। সর্বাধিক মৌলিক। তাওহীদূর রুবুবিয়্যাত হচ্ছে রব হিসেবে আল্লাহর অস্তিত্বগত মৌলিক স্বীকৃতির বিশ্বাস। এটা ঈমানের একদম মৌলিক বিশ্বাস। এতে বিশ্বাস রাখা এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, এটায় অবিশ্বাস করে যত আমল করা হোক না কেন কোন লাভ নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তার পবিত্র কালামে মাজীদে আসমান জমিন সৃষ্টির ব্যপারে বার বার বর্ননা করেছেন, এগুলো আল্লাহর ওয়াহদানিয়াতের সাক্ষ্য দেয়। এগুলো আল্লাহর অস্তিত্ব এবং রুবুবিয়্যাতের সাক্ষী দেয়। এজন্য মক্কার মুশরিকদেরকে আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যপারে বলতে গিয়ে আসমান যমীনের স্রষ্টা কে প্রশ্ন করেছেন, প্রশ্ন করেছেন বৃষ্টিধারা নাযিলকারী কে প্রশ্ন করেছেন। আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে অনেক আয়াতে চাঁদ সূর্য নক্ষত্র আসমান ও যমীনকে তার নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন। এগুলো আপনারাও জানেন।
নমরুদের ধর্মযাজক দার্শনিক পুরোহিতদের থেকে আজ থেকে আনুমানিক চার থেকে পাচ হাজার বছর আগে বাবেল শহরে যাদুবিদ্যার একটি শাখা গড়ে ওঠে যাকে আমরা আজ জ্যোতিষশাস্ত্র বলে চিনি। এর উপর ভিত্তি করে যাদুকর এবং শয়তানের সহযোগীতায় গড়ে ওঠে Alternative Cosmogony যেটা এমন আসমান ও যমীন এবং সর্বোপরি সৃষ্টিতত্ত্বের ধারনা দেয় যা আল্লাহর অস্তিত্বের নূন্যতম স্বীকৃতি দেওয়ার বিপরীত দিকে চালিত করবার জন্য নির্মিত। এটা ব্যাখ্যা করে কিভাবে সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই এমনি এমনিতেই সৃষ্টিজগৎ বিবর্তিত বিবর্ধিত(cosmological evolution) হয়েছে। এটা শিক্ষা দেয় প্রতিটি অনুপরমানুই self-sufficient, প্রত্যেকেই নিজেই নিজের ইলাহ(ওয়াহদাতুল উজুদ/আল ইত্তেহাদ/monism)। শুধু জ্যোতিষশাস্ত্র না, এই অল্টারনেটিভ বিশ্বাসব্যবস্থাকে আরো বেশি পোলিশ করেছে হার্মেটিক,কাব্বালা,বৈদিকসহ বিভিন্ন অকাল্ট(যাদুবিদ্যার) ট্রেডিশান। দীর্ঘকাল লুকিয়ে রাখা এ বিদ্যা এবং বিশ্বাসগুলোকে শয়তানের সহযোগীতায় দাজ্জালের আগমনের পূর্বে আজ পূর্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাব্বালিস্ট ইহাহুদীরা তো গর্বের সাথে বলে এটা মসীহের আগমনের লক্ষণ, যেহেতু তাদের বাতেনি ইল্ম আজ আজ জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অন্যদিকে আল্লাহ কুরআনে আমাদেরকে জানিয়েই দিয়েছিলেন ইহুদীদের আবৃত্ত শাস্ত্রের যাদুবিদ্যাসংক্রান্ত অরিজিন্স(২:১০২)। তারাও অস্বীকার করে না, গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে বলে তাদের এই ইল্মের উৎস প্রাচীন ব্যাবিলনীয়া। আমরা ইজরাইলের সবচেয়ে বড় কাব্বালার ইন্সটিটিউট বেনেঈ বারুচের চেয়ারম্যানের মুখেই একথা শুনেছি। তিনি সেই সাথে তাদের এই বিদ্যাকে গর্বের সাথে সায়েন্স বলছিলেন।
*প্রথমত, এই কস্মোলজি[মহাকাশবিজ্ঞান]এবং কস্মোজেনেসিসের[সৃষ্টিতত্ত্ব] উৎস হচ্ছে অকাল্ট স্ক্রিপচার, খাটিবাংলায় উচ্চমার্গীয় যাদু শিক্ষার কিতাব। এগুলো প্রচলিত তাবিজ কবচ আর জ্বীন চালনার সোকল্ড যাদু না।
*দ্বিতীয়ত, একে প্রতিষ্ঠা করা হয় তাওহিদুর রুবুবিয়্যাতের কন্সেপ্টটির বিকল্প কিছুকে প্রতিষ্ঠার জন্য। সেটাকে কুফর করবার জন্য। সহজ ভাষায়, উদ্দেশ্য তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহকে ধ্বংস করার জন্য।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে উম্মাহ আজ এই ফিতনাতেই ভালভাবে গ্রহন করেছে। একে দ্বীনের সাথে সমন্বয় করেছে, যতভাবে করা যায়। আজ সতর্ক করা হলে মূর্খের মত বলছে এসব নিয়ে আলোচনা ফিতনাহ, অমুক আলিমও বিশ্বাস করত, এগুলো আকিদার বিষয় নয়, এগুলোয় ইয়াক্বিন করলে আল্লাহ আপনাকে কিছুই বলবে না। মা'আযাল্লাহ!
যে বিষয় আকিদার 'আ'কেও মুছে দেয় সেটা আকিদা পরিপন্থী বিষয় নয়(!), সেগুলো গ্রহন করলে আল্লাহ কিছুই বলবে না, অমুক আলিম এই ভুল করেছে তাই আমার করতে দোষ নেই, এগুলো মোটেও ম্যাটার অব কনসার্ন নয়! (আল্লাহর সৃষ্টির ব্যপারে বিকৃত ধারনার অপরাধটি নাহয় বাদই দিলাম)যাদুবিদ্যা তো কুফর কিন্তু কুফর ভিত্তিক বিশ্বাসব্যবস্থাকে কুফর সাব্যস্ত করা যাবে নাহ!!?
এই যদি হয় বিশ্বাসের অবস্থা, তাহলে বানর থেকে মানুষ হবার গল্পকে গ্রহন করে নিতে কি দোষ ছিল?
এই সাধারন উপলব্ধি বা বোধ যদি আমাদের না থাকে, তাহলে আমরা কি ধরনের আল্লাহ আযযা ওয়াযালের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বকারী জাতি হলাম!? এরকম জাহালতের জন্য উম্মাহর দিনকেদিন অধঃপতন, এজন্যই আজ আমরা সুদ খেয়ে সেটাকে বৈধতা দিতে সুদ স্বীকৃতি দিতে চাই না। সুদকে নাম দেই "মুনাফা"! ইহুদীরা এই কাজ গুলো করে অভিশপ্ত। আমরা কেন ওদের অনুসরন করছি! এসব বলে লাভ নেই। আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বহু আগেই কিবলাধারী ইয়াহুদীদের কথা বলে গেছেন, পদে পদে ওদের অনুসরণের কথা বলেছেন। আজ সবক্ষেত্রে সেটা প্রতিভাত হচ্ছে।
আজকের দৃশ্যমান অধিকাংশ দ্বীনি ব্যক্তিত্ব, দাঈগনদের অবস্থা এরকমঃ
★সর্সারি, উইচক্র্যাফট হারাম.. কুফর, কিন্তু সর্সারির উপর তৈরি ওয়ার্ল্ডভিউ,Cosmogony এবং যাবতীয় ইল্ম ১০০% হালাল!
★তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ না মানলে কাফির কিন্তু তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত কে ধ্বংসকারী ইল্ম আহরণ এবং এর উপর ইয়াক্বীন করা ১০০% হালাল!!
একটা বিষয় অবশ্যই স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, আমরা বিগত পর্বে আলোচিত ফিজিক্সের অনেক বিষয়বস্তুকে যাদুসাব্যস্তকরনের অর্থ এই নয় যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যা বা জ্ঞানটি মিথ্যা, অস্তিত্বহীন কিংবা ভুল। আমি কখনোই এমনটা বলি না যে অনু পরমাণুর অস্তিত্ব নেই বা মিথ্যা। বরং মিথ্যা এই সমস্ত প্রমাণযোগ্য ফিজিক্যাল বিষয় আশ্রিত গায়েবী মেটাফিজিক্যাল ব্যাখ্যাসমূহ, অদেখা জগতের স্বরূপ প্রকৃতি নিয়ে বলা কথাসমূহ, সমগ্র অস্তিত্বের ধরন ও উৎস সংক্রান্ত আকিদা সমূহ। শয়তান মানুষকে সামান্য কিছু সত্যের সাথে অনেকগুলো মিথ্যা যোগ করে বিপথগামী করে। একই কাজ গনক-জ্যোতিষীদের সাথেও করে বলে হাদিসে উল্লেখ পাবেন। নিঃসন্দেহে জ্বীন জাতি ত্রিমাত্রিক জগতের উর্দ্ধে বাস করে। শয়তান বহুমাত্রিক জগতের[হাইপারডাইমেনশন] বিষয় মানুষকে শেখায়, সে নিজেদেরকে মনুষ্যজাতির বসবাসের রেল্মের তুলনায় উচ্চতর অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে পায়, প্রত্যেক পদার্থ যে এনার্জি ফ্রিকোয়েন্সির সমন্বয়ে তৈরি; সেটা আমাদের জ্ঞান ও অনুধাবনের বাহিরে হলেও জ্বীন জাতি অনবরত এই বিষয়গুলোর সাথে ইন্টার্যাক্ট করে। তারা এসব অদেখা জগত নিজেদের চোখেই দেখতে পায়। এদের মধ্যে শয়তানের অনুসারী কাফিররা নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে সমন্বয় করে আল্লাহকে অস্বীকারে সহায়ক বিশ্বাসব্যবস্থা বা অলটারনেটিভ মেটাফিজিক্স নির্মাণ করে, যা মানুষের মধ্যেও চালিত করে। সুতরাং এডভান্স আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্স আজ যে কুফরি আকিদার শিক্ষা দেয় সেসব মূলত ভিত্তিহীন শয়তানের মনগড়া শয়তানি চিন্তা।
আমরা পদার্থবিজ্ঞানের পরিক্ষিত সকল সিদ্ধান্তকে মিথ্যা বা অসত্য দাবি করিনা।কেননা যাদুবিদ্যার অস্তিত্ব সত্য। আধুনিক বিজ্ঞানী নামের অকাল্ট ফিলসফারগন বাস্তবজগত অপারেট হবার কার্যনীতি - প্রকৃতির কথা বলে তার অনেক কিছুই সঠিক হওয়াটা স্বাভাবিক। ধরুন কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুযায়ী সৃষ্টিজগতের সবকিছু আনঅব্জার্ভড অবস্থায় ননলোকাল কোয়ান্টাম এনার্জি ফিল্ড। বাস্তবতা এরূকম কিছু হওয়া অসম্ভব কিছু না, কারন এর উপর ভিত্তি করেই অকাল্টিস্টরা কাজ করে। এটা যাদুর কজ এ্যান্ড ইফেক্টের হিডেন মেকানিক্স। যাদুর মূল টেকনিক্যাল সংজ্ঞা এটাই যে, এমন কোন কার্য সম্পাদন, যার কারন এর গুপ্ত অবস্থায় থাকে। এই মেকানিক্সের অস্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ এবং স্বীয় স্বার্থে ব্যবহারের মাধ্যমেই যাদু সংঘটিত হয়। এজন্য এ সমস্ত বিদ্যা বা জ্ঞান নিষিদ্ধ বিদ্যার শ্রেনীতে পড়ে। ধরুন, জ্যোতিষশাস্ত্র বা এ্যাস্ট্রলজি, এটা একটা বিশেষ বিদ্যা বা প্রাচীন সায়েন্স। আল্লাহর রাসূল[সাঃ] এই সায়েন্সকে সরাসরি যাদুবিদ্যার অংশ বলে আখ্যায়িত করেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি জ্যোতিষ বিদ্যার কিছু অংশ শিক্ষা করল, সে আসলে যাদু বিদ্যার একটি অংশ শিক্ষা করল। বিধায় জ্যোতিষ বিদ্যা যত বেশী পরিমাণে শিক্ষা করবে, অত বেশী পরিমাণে তার যাদু বিদ্যা বেড়ে যাবে।’’
[আবূ দাঊদ বিশুদ্ধ সূত্রে] (আবূ দাউদ ৩৯০৫,
ইবনু মাজাহ ৩৭২৬, আহমাদ ২০০১, ২৮৩৬)
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৬৮০
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
সুতরাং যাদুবিদ্যা বলতে শুধু এমন কিছুকে বোঝায় না যে, শয়তানকে পূজা দিয়ে সন্তুষ্ট করে কাজ করিয়ে নেয়া,বরং এটা একটা বিশেষ বিদ্যা, মেকানিক্স। সেহেতু, কাব্বালাহ এবং এর ভিত্তিতে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠিত সায়েন্টিফিক মতবাদ তত্ত্বসমূহ[i.e: Quantum mechanics, Unified Field theory] যাদুশাস্ত্রীয় শাখা। আমরা বলিনা যে এসবের অস্তিত্ব নেই, এসব মিথ্যা.. বরং মিথ্যা বলি এসব বিদ্যা আশ্রিত আল্টিমেট মেটাফিজিক্যাল কনক্লুশন। উদাহরণ স্বরূপ মহাবিশ্ব সম্পর্কে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, শ্রোডিঞ্জার, বোর আইডিয়ালিস্টিক ফিজিক্স ভিত্তিক যে আকিদার কথা বলে, তা মিথ্যা। যদি ধরা হয় শয়তান রিয়ালিটির মেকানিক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সত্য শিক্ষা এনেছে, এরপরেও তারা বিকল্প কুফরি বিশ্বাস ব্যবস্থাকে নির্মাণের জন্য তাদের চোখে দেখা প্রকৃতির নীতি প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আল্টিমেট মেটাফিজিক্যাল রিয়ালিটি বা সমস্ত অস্তিত্বের অরিজিনের ব্যপারে আল্লাহর ওয়াহদানিয়্যাতের সাথে সাংঘর্ষিক কুফরি বিশ্বাসের জন্ম দেয়। এসব বস্তুত শয়তানের প্রতিশ্রুতির অন্তর্গত বিষয়।
আধুনিক মুসলিম-ইমাম-দাঈ-রাক্কী এদের মূল সমস্যা হচ্ছে অকাল্ট কি সেটাই না বোঝা। এদের কাছে যাদু মানেই শয়তানের অর্চনা। তবে আলহামদুলিল্লাহ, এই নিও-মুতাজিলাইট চিন্তাধারার বিরুদ্ধে লেখা শুরু করবার পর দেখি ; অধিকাংশই এ সংক্রান্ত বিষয় শুধরে নেয়ার চেষ্টা করেছে। আপনি যদি যাদুবিদ্যাকে শুধুই জ্বীনের সাহায্যে বিরক্ত করাকে বোঝান এবং সুপারন্যাচারাল সর্সারিকে রিজেক্ট করেন, তাহলে যাবতীয় অকাল্ট স্ক্রিপচার তথা শাস্ত্র সমূহ হালাল বিদ্যার কাতারে ফেলতে পারবেন। এ বিষয়টিই ঘটেছে প্রচলিত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। এখন আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি পদার্থবিজ্ঞানীদের বৈদিক কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের অভিমুখিতা। এরা স্পষ্টভাষায় বিজ্ঞানকে বলছে কাব্বালার ফসল। কিন্তু মুসলিম কমিউনিটিতে এসবে কোন ইম্প্যাক্ট নেই। কারন এরা উইচক্র্যাফটের ব্যপারে সাহাবিয়্যাতের মানহাজ অনুসরন করছেনা। এগুলো তাদের কাছে সায়েন্স!
আমাদেরকে অনেক নিন্মমানের সংকীর্ণচেতা লোকেরা বিদ্রুপ করে বলে, আমরা নাকি আধুনিক প্রযুক্তির সবকিছুকে উইচক্র্যাফট বলি! আমার মনে হয় না গত ২২ পর্বে প্রযুক্তি নিয়ে কোন কিছু লিখেছি কিনা। আমি সামগ্রিকভাবে বিজ্ঞানের অন্তর্গত ফিজিক্স এ্যাস্ট্রনমি শাখাদ্বয়ের থিওরেটিকাল বিষয়গুলোকে সমস্ত আলোচনা করেছি। প্রযুক্তি সংক্রান্ত যে জিনিসের মেকানিজম অবজারভেবল। বস্তুটি কিভাবে অপারেট হচ্ছে সে বিষয়টা পর্যবেক্ষণযোগ্য, এমন নয় যে তা বোধগম্যতার বাহিরে, এজন্য তাকে অকাল্টের আওতায় ফেলি না। উদাহরণস্বরূপঃ মোবাইলফোন, একটি নষ্ট
ফোনকে অশিক্ষিত লোককেও মেরামত করতে দেখা যায়। যন্ত্রটার কার্যনীতি অপ্রকাশিত, দুর্বোধ্য নয়। কিন্তু যে বস্তুকে সিহরের শাস্ত্র সমূহের ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে এবং যার কার্যনীতি গুপ্ত বা কেউ সঠিকভাবে জানে না, সেটা সিহর, সেটা টেকনোলজি তথ্যা প্রযুক্তিগত জিনিস হলেও তা যাদুর অন্তর্ভূক্ত। উদাহরণস্বরূপ আসন্ন কোয়ান্টাম প্রসেসরগুলো সিহরের আওতায় পড়ে যায়। প্রথমত, কোয়ান্টাম প্রসেসর গুলো কাজ করবে কোয়ান্টাম মেকানিক্স তথা বেদান্তমেকানিক্সের উপর ভিত্তি করে। দ্বিতীয়ত,এর কার্যনীতির ব্যপারে এর নির্মাতারাও রহস্যের বেড়াজালে আটকে আছে। কারন কোয়ান্টাম তত্ত্বের ব্যপারে পদার্থবিজ্ঞানীরাও কনফিউজড। এটা বুঝতে বেদান্তশাস্ত্রকে আয়ত্ত করবার পরামর্শ তারা দেয়। তেমনি আর্ক নামের আরেকটি হলিস্টিক যন্ত্র নির্মাণ করেছেন কাব্বালার অনুসারী পদার্থবিজ্ঞানী নাসিম হারামাইন। এটিও যাদু। সুতরাং বুঝতেই পারছেন সিহরের ডেফিনিশন আন্ডারস্ট্যান্ডিং এই মূল সমস্যাটা। এ নিয়ে ২য় পর্বে ইবনু কাসিরের রেফারেন্সে বিস্তারিত পাবেন।
মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা সমূহ অত বেশি কলুষিত না হলেও শয়তানের আধিপত্যের বাহিরে নয়। অন্যান্য ডিসিপ্লিনেও এমন অনেক বিষয়ের চর্চা হয় যা মূলত শয়তানের কাজ। যেমন ধরুন, এখন জেনেটিক্স এর মডিফিকেশনের মাধ্যমে কোন প্রাণী বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য পালটে ফেলা হচ্ছে। বংশবিস্তারের স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতিকে পালটে ফেলা হচ্ছে। মানুষের উপরেও এই বিষয়গুলো এ্যাপ্লাই করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাছাড়া জেন্ডার ট্রান্সফর্মেশনের মাধ্যমে পুরষ থেকে নারী এবং নারী থেকে পুরুষে রূপান্তরের কাজগুলোও সুস্পষ্ট শয়তানের কাজ। শয়তান মানুষকে সৃষ্টিকে পরিবর্তনের আদেশ দেয়। আল্লাহ বলেনঃ"যার প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। শয়তান বললঃ আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট অংশ গ্রহন করব। তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব;তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়।
(আন নিসা ১১৮-১১৯)
যাদুশাস্ত্রেরও মূল শিক্ষা হলো আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টিকে ম্যানিপুলেট করা, প্রকৃতির কার্যনীতির ব্যপারে জ্ঞান লাভ করে তার উপর প্রভাব বিস্তার ও পালটে ফেলার চেষ্টা। এরা অদেখা জগতের ব্যপারে ফিলসফিক্যাল এবং ফিজিক্যাল রিয়ালিটিতে মেকানিক্যাল পরিবর্তন সাধনের শিক্ষা দেয়। এগুলো সবই মূলত শয়তানের অবিনশ্বর রাজ্যের প্রতিশ্রুতি পূরণের উপাদান। এই "বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?" আর্টিকেল সিরিজে আলোচ্য সমস্ত বিষয়গুলো শয়তানের প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাসকে সত্য করবার প্রয়াসেরই অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। নিশ্চয়ই শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা মরীচিকা। আল্লাহ বলেন,
يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيهِمْ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلاَّ غُرُورًا
সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদেরকে আশ্বাস দেয়। শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সব প্রতারণা বৈ নয়।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ১২০)
তুই সত্যচ্যুত করে তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস স্বীয় আওয়াজ দ্বারা, স্বীয় অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে তাদেরকে আক্রমণ কর, তাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যা এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দে। ছলনা ছাড়া শয়তান তাদেরকে কোন প্রতিশ্রুতি দেয় না।
(সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ৬৪)
নিশ্চয় যারা সোজা পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তৎপ্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, শয়তান তাদের জন্যে তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়।
(সূরাঃ মুহাম্মদ, আয়াতঃ ২৫)
শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে আহবান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৬)
وَقَالَ الشَّيْطَانُ لَمَّا قُضِيَ الأَمْرُ إِنَّ اللّهَ وَعَدَكُمْ وَعْدَ الْحَقِّ وَوَعَدتُّكُمْ فَأَخْلَفْتُكُمْ وَمَا كَانَ لِيَ عَلَيْكُم مِّن سُلْطَانٍ إِلاَّ أَن دَعَوْتُكُمْ فَاسْتَجَبْتُمْ لِي فَلاَ تَلُومُونِي وَلُومُواْ أَنفُسَكُم مَّا أَنَاْ بِمُصْرِخِكُمْ وَمَا أَنتُمْ بِمُصْرِخِيَّ إِنِّي كَفَرْتُ بِمَآ أَشْرَكْتُمُونِ مِن قَبْلُ إِنَّ الظَّالِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।[১৪:২২]
আজ বিশ্বের সমস্ত কাফির শক্তি শয়তানের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে তা প্রতিষ্ঠার জন্য একযোগে কাজ করছে। ওদের সমগ্র জ্ঞান-বিজ্ঞান-বিদ্যা এই প্রতিশ্রুতি পূরণের হাতিয়ার। ওরা শয়তানের প্রতিনিধি[খলিফা]। সকলেই ইহুদীদের যাদুশাস্ত্রের[কাব্বালাহ] সাজারাতুল খুলদের ফল[জ্ঞান] আহরণ করে অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যে ফেরেশতাদের অনুরূপ উন্নততর দেহরূপ লাভ করে অমর হয়ে বেচে থাকার আশায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করছে। এর শেষ হবে ইহুদী [মিথ্যা]মসিহের আগমনের মাধ্যমে। অন্যদিকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা মুসলিমদেরকে তার প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মুসলিমরা আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করবে। এ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,"আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি...."
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৩০)
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদের কে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু।
(সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১৬৫)
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি করেছেন। অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৩৯)
প্রতিনিধি বা খলিফা থেকেই খিলাফত/খিলাফা শব্দ এসেছে। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়ন মনুষ্যজাতিকে সৃষ্টির পেছনের উদ্দেশ্য। এটা অন্য সকল ব্যক্তিগত আমলের চেয়েও মৌলিক কার্য।সাহাবীগন(রাযিঃ) ও তাদের পরবর্তীতে লম্বা একটা সময় পর্যন্ত সে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করা হয়। কিন্তু আজ? আজকে একদমই উলটো চিত্র। আজকে উম্মাহকে নিশ্চিহ্ন করার মিশনে কাফিররা থাকলেও,মুসলিমদের ভূমির যে অংশ এখনো আক্রান্ত হয়নি সে অংশের মুসলিমরা বড্ড নিশ্চিন্ত। যেন কিছুই হয় নি। ভাবখানা এমন, যেন দ্বীন প্রতিষ্ঠিত আছে। দুনিয়াতে প্রতিনিধিত্ব কায়েম করে ফেলেছে মুসলিমরা। যেন ভবিষ্যতেও তাদের কিছুই হবে না। সবাই যার যার দুনিয়াবি ক্যারিয়ার গড়ায় ব্যস্ত। আজকে অধিকাংশ আলিমসমাজও কেমন যেন কাফিরদের সাথে আপোষ করে চলতে আগ্রহী। এদের কেউ কেউ আবার কথিত সহীহ আকিদা প্রচার করে। কাফিরদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তারা এত রাগান্বিত হন যে, তাদের থেকে
খাওয়ারিজ ঘোষনা শোনা যায়! এত কিছুর পরেও কাফিরদের এসব হীন প্রচেষ্টাকে একদল মানুষ কোনভাবে মান্য করে না। এরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা কর্তৃক নির্বাচিত বান্দা। শয়তানের এজেন্ডাগুলোর তাদের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এরা সকল তাগুত এজেন্ট - শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত, এমনকি যুদ্ধ করে,মারে এবং মরে। এদের একমাত্র লক্ষ্য: আল্লাহর দ্বীনকে যমীনে প্রতিষ্ঠা করা। এদেরকে সেই মহাপরিকল্পনাকারী এজেন্ডা এবং সেটাকে বাস্তবায়নে সহায়ক সকল অনুচরবৃন্দ পথভ্রষ্ট(Divergent) মনে করে। আজ ওরা তাদেরকে সন্ত্রাসী, জঙ্গি ইত্যাদি শব্দে আখ্যায়িত করে জিরো টলারেন্সের আওতায় রাখে। যখনই তাদেরকে হাতের নাগালে পায়, ক্রসফায়ারে হত্যা ছাড়া ভিন্ন কিছু সহজে ভাবে না। কারন তাগুতের পক্ষাবলম্বীরা ভাল করেই জানে তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার সৈনিক। এরাও টোটালেটেরিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্টের
স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সেটা হবে খিলাফা আ'লা মিনহাজিন নাব্যুওয়াহ। সেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার নির্দেশিত শরী'আর শাসন। সুতরাং, সুনিশ্চিত সম্ভাবনা থাকেই যে, কথিত পথভ্রষ্ট সন্ত্রাসী জঙ্গিরা সবার প্রথমে ইবলিসের ট্রি অব লাইফের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি অনুসারী ও প্রতিনিধিদেরকে সমূলে উৎপাটন করবে। এজন্য পথের কাঁটা কোন ক্রমেই বাচিয়ে রাখা যায় না। এদেরকে বাধা দেওয়ার জন্য দ্বীনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনকারী মোডারেট ও নিও মুতাযিলা আলিমও তৈরি করে নিচ্ছে। কাফিরগোষ্ঠীর প্রস্তুতকৃত এই আলিমদের এজেন্ট আমাদের দেশে মহাসম্মানজনক নাম দিয়ে দল তৈরি করে প্রচারকার্য চালাচ্ছে। সেটাই নাকি আজ সহীহ আকিদা! মা'আযাল্লাহ!! তাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র বিপ্লব সন্ত্রাসবাদ-জংগীবাদ,এজন্য তারা সেসকল কথিত সন্ত্রাসীদেরকে খারেজি বলে ডাকে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তারা এই তিরস্কারকারীর তিরস্কারের পরোয়া করে না। আল্লাহ বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ يَخَافُونَ لَوْمَةَ لآئِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ''হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।
(সূরা মায়িদাহঃ৫৪)
তারা আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা কখনোই সমগ্র জমিনে শয়তানের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না। এরা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে। তাদের পথই আমাদের পথ। নিশ্চয়ই শয়তানের পরিকল্পনা একান্তই দুর্বল। আল্লাহ বলেন:
الَّذِينَ آمَنُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُواْ أَوْلِيَاء الشَّيْطَانِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا '
'যারা ঈমানদার তারা যে, যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা যুদ্ধ করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল''। [আন নিসাঃ৭৬]
নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদাহ সত্য এবং শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা। আল্লাহ বলেন,"যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।"
(সূরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ৮-৯)
হে মানুষ, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে প্রতারণা না করে। এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে।
(সূরাঃ ফাতির, আয়াতঃ ৫)
"জান্নাতীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের সাথে আমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আমরা সত্য পেয়েছি? অতএব, তোমরাও কি তোমাদের প্রতিপালকের ওয়াদা সত্য পেয়েছ? তারা বলবেঃ হ্যাঁ। অতঃপর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবেঃ আল্লাহর অভিসম্পাত জালেমদের উপর।
(সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ৪৪)
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوٰلَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِى التَّوْرٰىةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْءَانِ ۚ وَمَنْ أَوْفٰى بِعَهْدِهِۦ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِى بَايَعْتُمْ بِهِۦ ۚ وَذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
"নিশ্চয় আল্লাহ মু’মিনদের কাছ থেকে তাদের জান আর মাল কিনে নিয়েছেন কারণ তাদের জন্য (বিনিময়ে) আছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। অতঃপর (দুশমনদের) হত্যা করে এবং (নিজেরা) নিহত হয়। এ ওয়া‘দা তাঁর উপর অবশ্যই পালনীয় যা আছে তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে। আল্লাহর চেয়ে আর কে বেশী নিজ ওয়া‘দা পালনকারী? কাজেই তোমরা যে ক্রয় বিক্রয় সম্পন্ন করেছ তার জন্য আনন্দিত হও, আর এটাই হল মহান সফলতা।"
(At-Tawbah 9: Verse 111)
ওয়া আল্লাহু আ'লাম
وما توفيقي الا بالله
Sources:
২)https//en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_21
https/en.m.wikipedia.org/wiki/The_Venus_Project
১১)https/en.m.wikipedia.org/wiki/Republic_(Plato)
https/en.m.wikipedia.org/wiki/Immortality
https/en.m.wikipedia.org/wiki/Transhumanism
২০)https/en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_2030
বিগত পর্বগুলোর লিংক:
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html
সমাপ্ত