বিজ্ঞান নাকি অপবিজ্ঞান?
The Occult Origins of Mainstream physics and Astronomy
[পর্বঃ১০]
গত পর্বে[১] দেখেছেন প্লেটোর মধ্যে যাদুকরদের সকল দর্শন গুলো মওজুদ ছিল। এর কারন শুধু পিথাগোরাসের অনুসরনই নয় বরং এর পাশাপাশি ছিল ইহুদীদের কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের অনুসরণ। তিনি কাব্বালার প্রাচীন ব্যাখ্যাকারী হিসেবে ইহুদিদের কাছেও সমাদৃত[২]। তাছাড়া তার গুরু পিথাগোরাস ব্যবিলনিয়ান ইহুদী ও ক্যালাডিয়ান ম্যাজাইদের থেকেই যাবতীয় বিদ্যা নিয়ে গ্রীসে আসেন। এ জন্য তাদের সকল দর্শন ও প্রচারিত মতবাদগুলো একই হওয়াটাই স্বাভাবিক।প্লেটো সেসকল ম্যাজিক্যাল টেক্সট এবং শয়তানি শাস্ত্রগুলো থেকে কিছু অপবিদ্যাকে আলাদাভাবে গুরুত্বের সাথে ব্যাখ্যাকারে প্রচার করা শুরু করে। এগুলো স্যাটানিক মেটাফিজিক্সের(Origin of existence) মূল ভিত্তিস্বরূপ। একেবারে ভিত্তিপ্রস্তর স্বরূপ। আজকের (সুডো)সায়েন্টিফিক কমিউনিটির মূল বক্তব্য এই প্লেটোনিক ডক্ট্রিন ছাড়া কিছু নয়। এরা এসব প্লেটোনিক বিদ্যাকে আড়ালে রেখেই এত বছর যাবৎ বিচিত্র থিওরি আর গণিতের জট পাকিয়ে এর দিকেই সমাধান হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। ফিরে যাচ্ছে ইন্দ্রজালের দিকে!
ইন্দ্রজালের বিষয়টি আদৌ রূপকার্থে বলিনি, পদার্থবিদগন প্লেটোনিক মতবাদের দিকে ফিরে এসে এসেছেন আরো প্রায় ৫ দশক আগে। এ বিষয় গুলোকে এই ডকুমেন্টারি আর্টিকেল সিরিজের শেষ দিকে সবিস্তারে প্রকাশ করব, ইনশাআল্লাহ। তখন আজকের এ পর্বটি ২য় বার পাঠের প্রয়োজনীয়তা পড়বে পুরো বিষয়টি সহজে বুঝবার জন্য।
কাব্বালিস্টিক বিদ্যাগুলো থেকে গ্রহণ করা প্লেটোর অন্যতম বড় শিক্ষা ছিল Theory of forms, Platonic Idealism এবং প্লেটোনিক সলিডস। থিওরি অব ফর্মের দ্বারা প্লেটো বলেছেন প্রকৃতির সমস্ত বস্তুর ফর্ম বা আকৃতির যে বৈচিত্র আমরা চোখে দেখি তা আসলে একই বস্তুর বিচিত্র রূপ। অর্থাৎ, সমস্ত বস্তুর মূলে এক ও অভিন্ন Energy, essence হিসেবে আছে। সব কিছু একক বস্তুর ভিন্ন ভিন্ন রূপ[৩]। আরো সহজ করে বললে প্রতিটি বস্তু একই substance দ্বারা তৈরি, অনেকটা এ্যানাক্সিম্যান্ডারের এপেইরনের মত কিছুটা। তার এই তত্ত্বের সাথে যুক্ত আছে আইডিয়ালিজম।এটা প্লেটোর একটি যুগান্তকারী শিক্ষা যা আজকের ফিজিক্স আঁকড়ে ধরেছে। এই মতবাদ মূলত পিথাগোরাসের দ্বারা বাবেল ও মিশর থেকে ধার করে আনা আকিদারই রিকন্সট্রাক্টেড ফর্ম। আর নিওপ্লেটনিজম আইডিয়ালিজম ভিত্তিক দর্শন। আইডিয়ালিজম অনুযায়ী Nous(মন/বুদ্ধি/চেতনা) হচ্ছে সকল ম্যাটারের মূল ভিত্তি। এই এনার্জির দ্বারাই সকল ম্যাটার গঠিত যা আমাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য করে তোলে।
Nous is the most critical component of idealism , Neoplatonism being a pure form of idealism. [note 3] The demiurge (the nous) is the energy, or ergon (does the work), which manifests or organises the material world into perceivability.(Wikipedia)
প্লেটোর Idealism[৪] দ্বারা বোঝানো হয় আমরা চোখে আশপাশের জগতকে যেরূপে দেখি এটাই সবটা নয়। এগুলো আদৌ বাস্তব রূপ নয়। বরং চারপাশের দৃশ্যমান সমস্ত বস্তু উপরের মাত্রাগুলোর ছায়া। আসল রিয়ালিটি বা বাস্তবতা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাহিরে। প্রকৃতির সমস্ত বস্তু একটি অপরটির অংশ, সবকিছু মিলিয়ে একটা কমপ্লেক্স জিওমেট্রিক শেইপ তৈরি করে। এই জটিল বাস্তবতার মাত্র ১% এর মত আমরা ত্রিমাত্রিক রিয়ালিটিতে দেখি। বিষয়টি বোঝাতে প্লেটো বিখ্যাত Allegory Of Cave[৫] ব্যবহার করেছেন।
এর দ্বারা বোঝানো হয়, বাহিরের পরিবেশে যায়নি এরকম কিছু লোককে প্রায় সারাজীবন গুহার মধ্যে দড়ি দ্বারা আটকে রেখে পিছনে মশাল ধরিয়ে আলোকিত করলে তারা তাদের ছায়াকে শুধু দেখতে পাবে, এক পর্যায়ে এই ছায়াকেই তারা নিজেদের বাস্তবতা মনে করবে। বাহিরের ত্রিমাত্রিক পৃথিবীর ব্যপারে তারা বেখবর। কখনো যদি তারা ওই বন্ধন ছিন্ন করে গুহা থেকে বের হয়, তবে তারা ত্রিমাত্রিক বাস্তবতাকে নিজেদের আসল বাস্তবতা বলে মেনে নিতে পারবে না, তাদের কাছে খুব অস্বস্তিকর মনে হবে। তাদের কেউ দৌড়ে গুহায় আবারো প্রবেশ করে ওই ছায়ামূর্তির জীবনে ফিরে যেতে চাইবে, খুব কমই পারবে সেটাকে মেনে নিতে। যারা সেই ছায়ার বাস্তবতা থেকে নিজেদের বের করে নিতে পারে, তারা বোঝে ওই ছায়ার বাস্তবতা সত্য নয়। প্লেটো বুঝিয়েছেন, মানুষও তেমনি ত্রিমাত্রিক এই বাস্তবতার শেকলে আবদ্ধ, অথচ আমরা যা চোখে দেখছি এটা সত্য নয়(reality is illusion), এটা আসল বাস্তবতার অনেকটা ছায়ার মত।আমাদের ইউক্লিডীয়ান ত্রিডি বাস্তবতা ছয় বা আটমাত্রার ছায়ার মত। আমরা সারাজীবন এই ত্রিমাত্রিক অভিজ্ঞতার মায়াজালেই আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করি, খুব কম লোকই এর উপরের মাত্রাসহ প্রকৃত রিয়ালিটির কথা জানতে এবং মানতে পারে। যারা মানতে পারে এরা Mystic বা Philosopher! এজন্যই উচ্চতর মাত্রার অভিজ্ঞতা পেতে অনেকেই চেতনার ওপারে[Altered State of Consciousness] বেড়াতে যায় hallucinogenic psychedelic drugs এর মাধ্যমে। সক্রেটিসও বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেন।
Socrates explains how the philosopher is like a prisoner who is freed from the cave and comes to understand that the shadows on the wall are not reality at all, for he can perceive the true form of reality rather than the manufactured reality that is the shadows seen by the prisoners. The inmates of this place do not even desire to leave their prison, for they know no better life. The prisoners manage to break their bonds one day, and discover that their reality was not what they thought it was.[Wikipedia]
গুহার দেয়ালের ছায়াকে দ্বারা রূপকার্থে ত্রিমাত্রিক দুনিয়াকে বোঝানো হয়েছে, শিকল বা দড়ি দ্বারা বাধা দ্বারা বোঝানো হয়েছে মানুষের সীমিত পারসেপশানকে। বাধা ছিন্ন করে বাহিরে যাওয়া দ্বারা বোঝানো হয়েছে Higher Realm বা আরো উচ্চতর plain of existence এর জ্ঞান এর সন্ধানে বের হওয়া। সেই নতুন সূর্যালোক, আকাশ, চাঁদ সূর্যকে মেনে নেওয়া দ্বারা বোঝানো হয়েছে হাইপার ডাইমেনশনাল রিয়ালিটিকে বিশ্বাস করা এবং আগের ত্রিমাত্রিক জগতের ধারনাকে মিথ্যা বা illusion বলে স্বীকৃতি দেওয়া।
The allegory contains many forms of symbolism used to instruct the reader in the nature of perception. The cave represents superficial physical reality. It also represents ignorance, as those in the cave live accepting what they see at face value. Ignorance is further represented by the darkness that engulfs them because they cannot know the true objects that form the shadows, leading them to believe the shadows are the true forms of the objects. The chains that prevent the prisoners from leaving the cave represent that they are trapped in ignorance, as the chains are stopping them from learning the truth. The shadows cast on the walls of the cave represent the superficial truth, which is the illusion that the prisoners see in the cave. The freed prisoner represents those who understand that the physical world is only a shadow of the truth, and the sun that is glaring the eyes of the prisoners represents the higher truth of ideas. The light further represents wisdom, as even the paltry light that makes it into the cave allows the prisoners to know shapes.(উইকিপিডিয়া)
অর্থাৎ ধারনা বা idea, perception অনুযায়ী পালটায়। Hollywood আইডিয়ালিজমের উপর ভিত্তি করে ফিল্ম তৈরি করেছে। The Conformist,The Matrix,Dark City,The Truman Show, Jordan Peele's,Us and City of Ember ইত্যাদিতে Plato's Allegory of the Cave কে মডেলরূপে দেখানো হয়েছে(উইকিপিডিয়া)
প্লেটোর মতাদর্শ প্রথম অবস্থায় প্লেটোনিজমে রূপ দেওয়া হয় যেটা ছিল প্রধানত গাণিতিক দর্শন,বলা যায় গণিতের ভিত্তিমূল রচনা সেখান থেকেই হয়।
Platonism is considered to be, in mathematics departments the world over, the predominant philosophy of mathematics, especially regarding the foundations of mathematics.[Wikipedia]
প্লেটো ছিল বাবেল ও মিশর থেকে যাদুশাস্ত্রে পাণ্ডিত্য নিয়ে আসা পিথাগোরাসের মতাদর্শের অনুসারী। পিথাগোরাস ছিলেন নিউমেরলজি, গানিতিক অধিবিদ্যার আদি শিক্ষক। পিথাগোরাস বাস্তবতা এবং সমগ্র জগতকে সংখ্যা দ্বারা গঠিত মনে করত। একইরকমের এ্যাবস্ট্রাক্ট বিশ্বাস তার অনুসরনে প্লেটোর মধ্যেও ছিল। প্লেটোর আইডিয়ালিস্টিক রিয়ালিটির তত্ত্ব সে কথাই বলে। পিথাগোরাসকে নিয়ে করা আলোচিত পর্বে বলেছিলাম পিথাগোরাস ক্ল্যাসিক্যাল ইলিমেন্টসের কথা বলে গিয়েছেন। প্লেটোও এ পথ থেকে সরে নি।
তিনি আরো গভীরভাবে ৫ পদার্থ এবং তাদের জিওম্যাট্রিক শেইপ নিয়ে বিস্তারিত কাজ করে গেছেন। এগুলোকে বলা হয় Platonic Solids। প্লেটোনিক সলিডস হচ্ছে কিছু জিওমেট্রিক শেইপ যেগুলোকে কল্পনা করা হয় রিয়ালিটির ফান্ডামেন্টাল বিল্ডিং ব্লক। এটাই প্রাচীন যাদুকররা বিশ্বাস করত। এজন্য যাদুবিদ্যায় এসকল জিওমেট্রি এবং এর সাথে করেস্পন্ড করা ইলিমেন্টস(পানি,আগুন,বায়ু,পৃথিবী) ব্যবহার করে। প্লেটোর আগের যাদুকর বিজ্ঞানী/দার্শনিকদের(ন্যাচারাল ফিলসফার) মধ্যেও ক্লাসিক্যাল ইলিমেন্টস এবং প্লেটোনিক সলিডগুলোর অস্তিত্ব ছিল। প্লেটনিক সলিড হচ্ছে পাঁচটি।
১.অক্টাহিড্রন(বায়ু)
২.টেট্রাহিড্রন(আগুন)
৩.ডোডেকাহিড্রন(ইথার)
৪.আইকোসোহিড্রন(পানি)
৫.হেক্সাহিড্রন(পৃথিবী)।
নিওপ্লেটোনিক চিন্তাধারা এবং প্রাচীন গ্রেসীয়ান-ব্যবিলনিয়ান যাদুকরদের ভাষায় এই জিনিসগুলো দ্বারাই সমস্ত সৃষ্টি গঠিত। আর প্রত্যেক বস্তুর মৌলিক অবস্থায় প্লেটনিক সলিডের এই পাঁচ ধরনের জিওমেট্রিক আকারে অবস্থান করে। বোঝার সুবিধার্ধে ধরুন অনু-পরমানুর সাথে ওই মৌলিক পাচ বস্তু এবং ওই বস্তুগুলো ঐরূপ পাচ প্লেটনিক সলিডের মত দেখতে হয়। এগুলোকে বলা হত fundamental building blocks of nature। এসকল প্লেটোনিক সলিডগুলো দ্বারা পৃথিবীর সব ধরনের কমপ্লেক্স জিওমেট্রিক আকার দেওয়া যায়। ওই পাচ প্রকার হচ্ছে একদম ভিত্তিগত।
যেমন ধরুন মেটাট্রন কিউব, তাতে পাচ সলিডের প্রত্যেকটিই আছে। সবগুলো মিলে একটা জটিল জিওমেট্রি তৈরি করেছে। সমস্ত জিওমেট্রির একদম মৌলিক আকৃতি হচ্ছে টেট্রাহিড্রন(Tetrahedron)। এই টেট্রাহিড্রনের সমন্বয়ে সকল শেইপ গঠিত। সকল জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার যে জিওমেট্রিতে ফেলে করা যায় তাকে নাম দেওয়া হয়েছে, Flower of life। ফ্লাওয়ার অব লাইফ এর উপর যেকোন জিওমেট্রি তৈরি সম্ভব। এজন্য প্রাচীন ন্যাচারাল ফিলসফার বা বিজ্ঞানীদের ধারনা ছিল, বস্তু জগতের সমস্ত কিছু যার উপর দাঁড়িয়ে আছে, যার উপর নির্মিত সেটার শেইপ 'ফ্লাওয়ার অব লাইফের' অনুরূপ বলে কল্পনা করা হয়। এটাই সেই ইন্দ্রের মায়াজাল।
Flower Of Life |
flower of life এর চেয়েও আরো ফান্ডামেন্টাল হচ্ছে Tree of life এরপরে fruit of life এবং আরো মৌলিক হচ্ছে seed of life। সমস্ত মৌলিক স্ট্রাকচার এবং জিওমেট্রি ফ্লাওয়ার অব লাইফের ভেতরে খাপে খাপে বসতে পারে। ট্রি অব লাইফের সিম্বলও ফ্লাওয়ার অব লাইফের অন্তর্গত বিষয়। এই ফ্লাওয়ার অব লাইফ নতুন কিছু নয়, সেটাও অত্যন্ত পুরোনো।
মিশরের ওরিসিসের আবিদো মন্দিরের নিচে খোদাই করা বহু প্রাচীন এ জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার এখনো রয়েছে। একইসাথে হিন্দু-বৌদ্ধদের বহু মন্দিরেও এই জ্যামিতিক প্যাটার্ন খুজে পাওয়া যায়। সমস্ত অকাল্ট ট্রেডিশনে এই সমস্ত সেক্রিড জিওম্যাট্রিক স্ট্রাকচারের শিক্ষার প্রচলন আছে।
ফ্লাওয়ার অব লাইফ, ট্রি অব লাইফ(সাজারাতুল খুলুদ), ফ্রুট অব লাইফ(নিষিদ্ধ ফল) প্রভৃতিতে আদম ও হাওয়া (আ) এর ঘটনা এবং নিষিদ্ধ জ্ঞানের implication রয়েছে। প্রত্যেকটি জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার একটির সাথে আরেকটি যুক্ত। একটির মধ্যে আরেকটি চমৎকারভাবে মিশে যায়। এসমস্ত জিওমেট্রিক শেইপ যাদুশাস্ত্রের অনুসারীদের ত্রিমাত্রিক এবং বহুমাত্রিক জগতের ব্যপারে ধারনা দেয়। বিভিন্ন রহস্যময় শক্তির(seductive force of nature) ব্যবহারের বিদ্যা শিখতে সাহায্য করে। অকাল্ট স্কুল গুলো বলে থাকে সমস্ত স্যাক্রিড জিওমেট্রির ধারক ও বিদ্যা এসেছে "Lord Melchizedek" নামের এক মহাগুরুর থেকে। তিনি পৃথিবীতেই আছেন তবে যেকেউই তার সাথে দেখা করতে পারে না।
সুতরাং প্লেটোর মূল শিক্ষাগুলো ছিল আইডিয়ালিস্টিক হাইপার ডাইমেনশনাল রিয়ালিটির(বাস্তবতার), যে বাস্তবতা অত্যন্ত জটিল জিওমেট্রিক কন্সট্রাকশনের উপর প্রতিষ্ঠিত। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে প্লেটো এইসব বিদ্যা কোথা থেকে পেয়েছে। প্রথমত আমরা পিথাগোরাসের ব্যপারে জানি যে সে ব্যবিলনিয়ান ম্যাজাইদের থেকে সব শিক্ষা নিয়ে গ্রীসে প্রচার করেছে কিন্তু প্লেটো এতসব complex geometric knowledge কোথা থেকে পেল?
উত্তর হচ্ছে ইহুদীদের যাদুশাস্ত্র বা Jewish Mysticism। ইহুদীদের গুহ্যবাদী অধিবিদ্যাগত শাখা গুলোর একটি হচ্ছে Merkabah[৬]। এটা ঈসা(আ) আগমনের ১০০ বছর আগেও ছিল। বর্তমানে মার্কাভা নামে ইজরাইল একটি ট্যাংক বের করেছে যেটা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ট্যাঙ্কগুলোর একটি। Merkabah mysticism এর ব্যবহৃত সিম্বলটা লক্ষ্য করলে দুইটা star tetrahedron দেখবেন।
এটা গভীর তাৎপর্যবাহী অকাল্ট সিম্বল। এটাকে মার্কাভাও বলে ডাকা হয়। এর দ্বারা বোঝানো হয় পার্থিব এনার্জি ফিল্ডকে আসমানের দিকে এবং আসমানের শক্তিকে পৃথিবীর দিকে চালিত করা। এটাকে Light body vehicle বলেও ডাকা হয়। এর দ্বারা স্পিরিচুয়াল এন্টিটির দুয়ার খুলে দেওয়া হয়। Higher Dimension এ transcend এবং ascended masters(শয়তানের) এর সাথে যোগাযোগের দ্বার খুলে দেয়। Platonic solids গুলোর সমন্বয়ে আরেকটি জটিল জিওমেট্রিক শেইপ হচ্ছে Metatron Cube। এর মধ্যেও পাঁচটি প্লেটোনিক সলিড আছে। ফ্লাওয়ার অব লাইফের মাঝেও এটা মিশে যায়। ফ্রুট অব লাইফের প্রতিটি পয়েন্টকে এটা স্পর্শ করে। মেটাট্রন কিউবের অরিজিনও ইহুদীরা।
ইহুদীদের মতে কাব্বালিস্টিক এ্যাঞ্জেল মেটাট্রন তার রূহ দ্বারা এই ফর্ম সৃষ্টি করে। প্রাচীন Jewish Alchemical Tradition এ Metatron cube এর ব্যবহার ছিল। এছাড়াও ইহুদীদের কাব্বালিস্টিক মিস্টিক্যাল ট্রেডিশনের 'অনন্ত জীবন প্রদায়ী বৃক্ষ'(Tree of life), Sacred Geometry এর অংশ। Flower of life এরই অংশ সেটা। ৬ টি tree of life এর জিওমেট্রিকে একত্রিত করলে ৬৪ Star Tetrahedron তৈরি হয়। প্রতিটি ট্রি অব লাইফ মেটাট্রন কিউবের অংশবিশেষ। কাব্বালার সাজারাতুল খুলদ বা tree of life এর জিওমেট্রিক শেইপ বাস্তবতাকে ১০ মাত্রার বলে। কাব্বালা মাত্রাগুলোকে বর্ননা করে, এবং রিয়ালিটির মৌলিক এনার্জি ও শক্তির পরিচয় এবং সেসবকে ব্যবহার করার শিক্ষা দেয়[৭]।
ইহুদী র্যবাঈ বিলি ফিলিপ্স বলেনঃ
"কাব্বালা এমন সব জ্ঞানের কথা বলে যা শুধু শতাব্দীর দ্বারাই এগিয়ে নয় বরং সেই সময়কার চেয়ে হাজার বছর এগিয়ে। (কাব্বালার)জোহার কিতাবটি ২০০০ বছর আগে আমাদেরকে বলে সত্যিকারের reality(বাস্তবতা) ১০ টি মাত্রার(যেটা tree of life) দেখেব। আপনি কল্পনা করতে পারেন হাজার বছর আগে আমাদেরকে এই কথা বলা হয়েছে। এটা এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ যে কাব্বালা বলে আমরা পঞ্চেন্দ্রিয় দ্বারা মাত্র ১% রিয়ালিটিকে দেখতে পারি, অবশিষ্ট ৯৯% বাস্তবতা আমাদের চোখে অদৃশ্য।"
সুতরাং দেখতেই পাচ্ছেন প্লেটোনিক শিক্ষাগুলো কোথা থেকে এসেছে। প্লেটোনিক সলিডস/স্যাক্রিড জিওম্যাট্রি থেকে শুরু করে আইডিয়ালিস্টিক হাইপার ডাইমেনশনাল রিয়ালিটির সবটাই ইহুদীদের যাদুশাস্ত্রের থেকে আসা। এখন আমি যদি শুধু সাদৃশ্য পেয়েই কাব্বালিস্টিক ডক্ট্রিন থেকে প্লেটোর জ্ঞান আরোপ করি,তাহলে সেটা সত্য হয়ে যাবে না। চলুন এবার দেখি ইহুদী র্যবাঈরা কি বলছে। আমরা গত পর্বেই সামান্য আলোচনা করেছি। আবারো সামান্য কিছু উল্লেখের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি।
Leone Ebreo ছিলেন খুবই বড় মাপের কাব্বালিস্ট। তিনি প্লেটোকে প্রাচীন কাব্বালিস্টদের শিষ্য হিসেবে দেখতেন। ইহুদি র্যাবাই Yehudah messer leon প্লেটোনিজম এবং কাব্বালার সাদৃশ্যতা নিয়ে অনেক সমালোচনা করেন। তার পুত্র প্লেটোকে দেবোপম মহাগুরু হিসেবে দেখত।
গ্রীক দর্শন এবং কাব্বালার মধ্যে সাদৃশ্যতার ব্যপারে র্যাবাঈ আব্রাহাম ঈয়াগেল বলেন, "এটা খুব সুস্পষ্ট, যারা ডেমোক্রিটাস এবং বিশেষ করে প্লেটোর দর্শন এবং মতবাদ গুলোকে পড়বে, যেগুলো দেখে একদমই মনে হবে সেই মতাদর্শ একদমই ইজরাইলের ঋষিদের অনুরূপ এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়ে বলা বক্তব্য যেন তাদের নিজেদের ভাষায় কাব্বালিস্টদেরই কথা। এবং কেনই বা আমরা তাদের চিন্তা গুলোকে ধারন করব না যেখানে তারা আমাদেরই, এবং (যেখানে)আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকেই গ্রীকরা জ্ঞান গ্রহন করেছে! এই দিন পর্যন্ত অনেক অনেক বড় বড় ঋষিগন প্লেটোর ওই মতাদর্শকে লালন করত এবং অনেক ছাত্ররা তাদের অনুসরন করত, এটা তাদের কাছে খুবই জানা ঘটনা যারা ঋষিগনের সেবায় নিয়োজিত ছিল, তাদের প্রদত্ত শিক্ষায় দীক্ষিত হয়েছে,যে শিক্ষা প্রত্যেক ভূমিতে পাওয়া গিয়েছে।"
History of Western Philosophy তে Bertrand Russell বলেন, "পিথাগোরাসের মাধ্যমে অর্ফিক (বিশ্বাস) জিনিসগুলো প্লেটোর দর্শনে প্রবেশ করেছে এবং প্লেটো থেকে পরবর্তী দর্শন গুলোয় এগুলো কিছুটা ধর্মীয় মর্যাদা লাভ করে।"
খ্রিষ্ট পূর্ব ৩য় শতকের ইহুদী দার্শনিক Aristobulus বলেন, "এটা প্রমাণিত যে প্লেটো আমাদের (দর্শনগত)নীতিমালা গুলোকে অনুকরন করে যা সে খুব গভীরভাবে অন্বেষণ করেছিলেন। এগুলো আলেকজান্ডার ও পারসিয়ানদের জবড় দখলের আগে Demetrius, Phalereus এর পূর্বেও অনুবাদ হয়েছিল। যেমন হিব্রু Exodus, আমাদের গোত্রীয় ভাই,এবং তাদের ভূমির জবরদখল এবং সমস্ত আইন-কানুন অনুবাদিত হয়। তাই এটা খুবই পরিষ্কার বিষয় যে যে দার্শনিককে নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি আমাদের থেকে অনেক কিছু নিয়েছেন।তিনি পিথাগোরাসের মত অনেক বেশি জ্ঞানঅর্জন করেছিলেন, যিনি আমাদেরই অনেক মতবাদ গ্রহন করেছেন এবং নিজের বিশ্বাসের সাথে মিশিয়েছেন।"
যাহোক, গ্রীক ভাষায় সবচেয়ে বড় কাব্বালিস্টিক মতাদর্শের উপর লেখা গ্রন্থ হচ্ছে প্লেটোর Timaeus। এটাতে প্লেটো সময়, সর্বেশ্বরবাদ, পুনর্জন্মবাদ, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং চার ইলিমেন্টস গুলোর উপর গুরুত্ব দিয়ে লিখেছেন। তিনি মহাবিশ্বের আত্মা বা চেতনার কথা বলেছেন। বলেছেন সবকিছুতেই চেতনা বিদ্যমান। তিনি একে World Soul বলেছেন। তারকা চাঁদ সূর্য পৃথিবী সব কিছুই জীবন্ত দেবতা সদৃশ। তার মতে আত্মা সমূহ তারকা থেকে সৃষ্টি। মৃত্যুর পর সেখানেই ফিরে যেতে হবে। যারা ভালভাবে জীবন যাপন করেছে তারা যেতে পারবে যারা করেনি তারা পুনর্জন্মলাভ করবে হয় কোন প্রানী,জন্তু হয়ে অথবা মহিলা হিসেবে। তিনি মানব জীবন ও প্রকৃতির সাথে হার্মোনি তৈরি করে সমৃদ্ধ জীবন ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তার মতে অসুস্থতা আসে ক্ল্যাসিক্যাল ইলিমেন্টস এবং আত্মার অথবা বস্তু জগতের মধ্যে ঘটা দূষনের জন্য। তার মতে মানুষের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত কাব্বালিস্টিক মতাদর্শ জানা এবং ধারন, তিনি Timaeus এ শান্তি ও সমৃদ্ধি কল্পনা করে একটি ইউটোপিয়ান টোটালেটেরিয়ান রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলেছেন। এর রাজা হবে একজন দার্শনিক এবং এর এলিটরা অবশ্যই কাব্বালার শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে[৮]। এই প্লেটোর কাব্বালিস্টিক স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠায় কাফিরদের মহাপরিকল্পনা নিয়ে অবশ্যই শেষ পর্বগুলোয় বিস্তারিত আলোচনা হবে, ইনশাআল্লাহ।
সুতরাং আপনারা ভালভাবে দেখতে পারছেন প্লেটো এবং প্লেটনিজম/নিওপ্লেটোনিজমের বিশ্বাস এবং শিক্ষা এবং এসবের উৎস সমূহ। ইউক্লিডিয়ান ত্রিমাত্রিক জগতের বাহিরের মাত্রার বিদ্যা এবং fundamental building blocks of reality এর যাবতীয় শিক্ষা সমূহের মূল উৎপত্তিস্থল সেই বাবেল শহর। এ্যাডভান্স হাইপার ডাইমেনশনাল ক্রিস্টালাইন রিয়ালিটির শিক্ষা কাব্বালা থেকেই আসা। সমস্ত Sacred Geometry, Numerology, astrotheology ইহুদীদের যাদুশাস্ত্র থেকেই আসা। এসব হচ্ছে ফিজিক্স অব ব্যবিলন! যদি এসবের দিকেই আজকের এ্যাডভান্স ফিজিক্স ফিরে যায়, যদি দেখেন আজকের ফিজিসিস্টরা ফিরে যায় এসব অকাল্ট ওয়ার্ল্ডভিউ এবং এ সকল শিক্ষার দিকে,খুব অবাক হবেন!? অবাক হবার তো কিছুই নেই। কারন এটাই তো বিজ্ঞান!! উকসিমু বিল্লাহিল আজিম, অবশ্যই আমি দেখাবো আজ ফিজিসিস্টগন ইজরাইলের কাব্বালিস্ট র্যাবাইদের সাথে এক টেবিলে বৈঠক করছেন তাদের এই মহা(অপ)বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে। গালে গাল মিলিয়ে ছবি তুলছে অকৃত্রিম সৌহার্দ্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সায়েন্টিফিক ডকুমেন্টারিতে কাব্বালা এবং এর শিক্ষাকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সবই দেখবেন। বিইযনিল্লাহি তা'য়ালা।
Ref:
[১]
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_16.html
[২]
http://grahamhancock.com/phorum/read.php?6,876793,876862
[৩]
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Theory_of_forms
https://course.ccs.neu.edu/com3118/Plato.html
[৪]
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Platonic_idealism
[৫]
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Allegory_of_the_Cave
[৬]
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Merkabah_mysticism
http://www.patinkas.co.uk/Merkaba_Feature_Article/merkaba_feature_article.html
[৭]
https://hermetic.com/caduceus/articles/2/4/the-tree-of-life-projected-in-the-third-dimension
https://freemason90xy.wixsite.com/quantume8/single-post/2018/01/20/10-dimensions-of-energy-light-consciousnesstree-of-life-kabbalah
[৮]
https://saxonmessenger.christogenea.org/article/plato-and-kabbalah
https://snowconenyc.com/2014/08/27/sacred-geometry-in-platos-timaeus/
বিগত পর্বসমূহের লিংকঃ
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/documentary-article-series_10.html
চলবে ইনশাআল্লাহ...
0 Comments:
Post a Comment