পর্ব-৪
যমীনের প্রান্তসীমা-মানচিত্রের বাইরের অদেখা জগৎ
জমিনের প্রান্তসীমা নিয়ে অনেক কৌতূহল। অনেকেই প্রশ্ন করেন জমিনের প্রান্তভাগে কই(?), সেখান থেকে পানি পড়ে যায় না কেন। এ বিষয়টি নিয়েই হলিউড অনেকবার ব্যাঙ্গ করে ফিল্ম তৈরি করেছে[৭]। মেইনস্ট্রিম পপুলার এফই মডেল অনুযায়ী জমিনের প্রান্তভাগে চারদিকে সুউচ্চ বরফের প্রাচীর আছে। জমিনের প্রান্তভাগকে কেন্দ্র করে আরো কয়েকটা মডেল তৈরি হয়েছে। যেমন পন্ড আর্থ হাইপোথেসিস, ইনফিনিট প্লেইন ইত্যাদি। পপুলার ম্যাপ(এ্যায্যিমুথ্যাল একুইডিস্ট্যান্ট প্রজেকশন) অনুযায়ী সাউথ পোলই সারা পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। আমরা পূর্ববর্তী আর্টিকেলগুলোয় দেখিয়েছি এটা ত্রুটিপূর্ণ মডেল।
১৯৪৭ সালে অপারেশন হাইজাম্পে এডমিরাল রিচার্ড বার্ড মেরু অঞ্চল থেকে ফিরে এসে বলেন[৮], সেখানে তিনি সুবিশাল বিস্তীর্ণ ভূমি দেখতে পান। তিনি যতদূর দেখেছেন সেটা নাকি প্রায় আরেকটি আমেরিকার সমান। অন্যান্য বিমানের সাথে তার বিমানটি রওনা করলেও হঠাৎ করে রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
এডমিরাল বার্ড বরফ ঢাকা এলাকা পেরিয়ে নতুন বিস্তৃত ভূমি,জঙ্গল দেখতে পান। সেখান থেকে সূর্যকে আর দেখা যাচ্ছিল না। তাপমাত্রা প্রায় ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস,অর্থাৎ মেরু অঞ্চলের শীতের প্রকোপ নেই। নিচে হাতির ন্যায় কিছু প্রানী তার চোখে পড়ে পরে প্লেনের এ্যালটিটিউড কমিয়ে দেখেন সেগুলো ম্যামথের(অতিকায় হস্তিবিশেষ) দল।
এরপরে আরো সামনে সুবিশাল 'সবুজ' রঙের পাহাড়ের সারি দেখতে পান। এরপরে হঠাৎ তিনি কিছু ডিস্ক এর মত আকৃতির এয়ারক্রাফটদের দেখতে পান, যারা তার সাথে চলছে। অর্থাৎ তিনি কথিত এলিয়েনদের[৯] কবলে পড়েন। এরমধ্যে সে তার বিমানের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। তারা সুবিশাল উন্নত শহরে প্রবেশ করে। তিনি ওদের মধ্যে স্বস্তিকা চিহ্নের ব্যবহার দেখেন। অবতরন করানোর পরে তাকে স্বর্ণকেশী একজন লোকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। উনি তাদের নেতা। তাকে নর্ডিক-জার্মাইক উচ্চারণে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তাকে বলা হয় তারা অনেক বছর যাবৎ মানবজাতিকে অবজার্ভ করছে।
তারা পারমানবিক বোমার ব্যবহার দেখে শঙ্কিত। এবং কিছু করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়। বার্ড তার সাথেই কেন সাক্ষাৎ করছে জিজ্ঞেসা করলে তারা বলে এখানে শুধু তাকেই পছন্দ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে বার্ড ছিলেন একজন ফ্রিম্যাসন। অতএব কথিত এলিয়েন(শয়তানদের) পছন্দের হওয়াটাই স্বাভাবিক। এরপরে, আলাপন শেষে বার্ডকে বিদায় দেওয়া হয়। তিনি বিমানসহ সুস্থভাবে ফিরে আসে। এদিকে বেজ থেকে রেস্কিউ মিশন পরিচালনা শুরু হয়, কারন অপারেশন হাই জাম্পে অনেকেই হারিয়ে যায়। বার্ড যখন সতীর্থদের তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে, তারা তাকে এ বিষয়টি গোপন রাখতে বলে। কিন্তু তিনি তার ব্যক্তিগত ডায়েরীতে এসব ঘটনা লিখে যান[2]। ১৯৯৬ সালে ডায়েরীটা প্রকাশিত হয়।
ঠিক একইভাবে তাকে এন্টার্কটিকায় অভিযানে প্রেরন করা হয়। তিনি জমিনের নিচের জগতে প্রবেশের কথা লেখেন। তার এই অভিজ্ঞতার বর্ননা 'হলো আর্থ থিওরির' সুবিশাল দলিলে পরিনত হয়। প্যাগান মিস্টিকরা একে আগার্থা, আগার্থি,সাম্বালা ইত্যাদি নাম দিয়েছে। উল্লেখ্য, কিছু হাদিসে নিচের জমিনগুলোয় জ্বীন জাতির বসবাসের বর্ননা পাওয়া যায়।বার্ডের এই অভিযান সবচেয়ে জনপ্রিয় সমতল জমিনের মডেলটির বিরুদ্ধে যায়। কেন না AE(Azimuthal Equidistant projection) অনুযায়ী নর্থপোল পৃথিবীর মাঝে অবস্থিত। অপরদিকে প্রতিষ্ঠিত গ্লোবিউলার আর্থ মডেলকেও ভুল প্রমান করে।
এটা সত্য যে এন্টার্কটিকায় এন্টার্কটিক ট্রিইটি নামের সামরিক সংগঠনটি অবস্থান করছে। অনুমতি বিনা সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। কেউ গেলে গ্রেফতার হবার অনেক রিপোর্ট রয়েছে। তাছাড়া সেটা নোফ্লাইং জোনের আওতাভুক্ত। মেইনস্ট্রিম এফইমডেল পন্থীরা বলে এন্টার্কটিক ট্রিইটি আরো অনেক স্থলভাগের অস্তিত্ব ম্যাপ থেকে আড়াল করে রেখেছে। এটা বিশ্বকে অনেক ছোট এবং সীমাবদ্ধ বলে প্রচার করার কাজে সাহায্য করছে।
নিচের চিত্রের মত প্রাচীন বৌদ্ধ মুশরিকদের থেকে সহস্র বছরের পুরোনো একটা ম্যাপ পাওয়া যায় যেটা সাতটি মহাদেশের বাইরেও আরো অনেকগুলো মহাদেশ মানচিত্রেদেখা যায়।
বৌদ্ধ,হিন্দু,তাও ইত্যাদি প্যাগান দর্শনপন্থীরা সাধারনত শয়তানের কাছে থেকেই এসব তথ্য পায় যা সত্যমিথ্যা মিশ্রিত অথবা অধিকাংশ সময়েই পুরোপুরিভাবে মিথ্যা। এরকম আরো প্রমানহীন ম্যাপ রয়েছে। সেসবে সূর্য চন্দ্রকে একাধিক পাওয়া যায়, তাছাড়া এর কক্ষপথটিরও কুরআন হাদিসে কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। নিচের এই ছবিটির ব্যপারে একটা সত্য তথ্য হচ্ছে এটাকে ফেসবুক থেকে দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে রাখে। কেউই এডিট না করে সরাসরি আপলোড করতে পারতো না।
এটা সত্য যে এন্টার্কটিকায় এন্টার্কটিক ট্রিইটি নামের সামরিক সংগঠনটি অবস্থান করছে। অনুমতি বিনা সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। কেউ গেলে গ্রেফতার হবার অনেক রিপোর্ট রয়েছে। তাছাড়া সেটা নোফ্লাইং জোনের আওতাভুক্ত। মেইনস্ট্রিম এফইমডেল পন্থীরা বলে এন্টার্কটিক ট্রিইটি আরো অনেক স্থলভাগের অস্তিত্ব ম্যাপ থেকে আড়াল করে রেখেছে। এটা বিশ্বকে অনেক ছোট এবং সীমাবদ্ধ বলে প্রচার করার কাজে সাহায্য করছে।
নিচের চিত্রের মত প্রাচীন বৌদ্ধ মুশরিকদের থেকে সহস্র বছরের পুরোনো একটা ম্যাপ পাওয়া যায় যেটা সাতটি মহাদেশের বাইরেও আরো অনেকগুলো মহাদেশ মানচিত্রেদেখা যায়।
বৌদ্ধ,হিন্দু,তাও ইত্যাদি প্যাগান দর্শনপন্থীরা সাধারনত শয়তানের কাছে থেকেই এসব তথ্য পায় যা সত্যমিথ্যা মিশ্রিত অথবা অধিকাংশ সময়েই পুরোপুরিভাবে মিথ্যা। এরকম আরো প্রমানহীন ম্যাপ রয়েছে। সেসবে সূর্য চন্দ্রকে একাধিক পাওয়া যায়, তাছাড়া এর কক্ষপথটিরও কুরআন হাদিসে কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। নিচের এই ছবিটির ব্যপারে একটা সত্য তথ্য হচ্ছে এটাকে ফেসবুক থেকে দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে রাখে। কেউই এডিট না করে সরাসরি আপলোড করতে পারতো না।
ছয় মহাদেশ এর বাহিরে আরো অনেক ল্যান্ড ম্যাস আড়াল করে রাখার এই অভিযোগ আজকে অনেক বেশি আলোচিত। হয়ত এটা একদম অসত্য নয়। কেননা বাদশাহ যুলকারনাঈন উদয়াচল,অস্তাচলে পৌছেছিলেন। সেখানে তিনি অদ্ভুত কিছু মনুষ্য জাতির সাথে সাক্ষাতও করেছিলেন। এমনকি ইয়াজুজ ওয়া মাজুজ সম্প্রদায় অধ্যুষিত অঞ্চলের কাছেও পৌছেছিলেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা তার পবিত্র কালামে মাজীদে ইরশাদ করেন, "
وَيَسْأَلُونَكَ عَن ذِي الْقَرْنَيْنِ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُم مِّنْهُ ذِكْرًا
إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ فِي الْأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِن كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا
فَأَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا قُلْنَا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا
قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَى رَبِّهِ فَيُعَذِّبُهُ عَذَابًا نُّكْرًا
وَأَمَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُ جَزَاء الْحُسْنَى وَسَنَقُولُ لَهُ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًا
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَى قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
كَذَلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًا
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا
حَتَّى إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا
قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَى أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا
قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا
آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا
فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا
قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِّن رَّبِّي فَإِذَا جَاء وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاء وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا
وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا
"তারা আপনাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুনঃ আমি তোমাদের কাছে তাঁর কিছু অবস্থা বর্ণনা করব।আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম।
অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন। তিনি বললেনঃ যে কেউ সীমালঙ্ঘনকারী হবে আমি তাকে শাস্তি দেব। অতঃপর তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে ফিরে যাবেন। তিনি তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন।
এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেব। অতঃপর তিনি এক উপায় অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্নরক্ষার কোন আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। আবার তিনি এক পথ ধরলেন। অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রচীরের মধ্যস্থলে পৌছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না। তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন।
তিনি বললেনঃ আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থø দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেব। তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। অবশেষে যখন তা আগুনে পরিণত হল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা গলিত তামা নিয়ে এস, আমি তা এর উপরে ঢেলে দেই। অতঃপর ইয়াজুজ ও মাজুজ তার উপরে আরোহণ করতে পারল না এবং তা ভেদ করতে ও সক্ষম হল না। যুলকারনাইন বললেনঃ এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। যখন আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত সময় আসবে, তখন তিনি একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুতি সত্য। আমি সেদিন তাদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।" [সূরা কাহফঃ৮৩-৯৯]
১৮:৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা বলেন, "অবশেষে তিনি(যুলকারনাঈন) যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।"
কাব্বালিস্টিক বর্ননার পৃথিবীর গ্লোবিউলার মডেলে সূর্যের উদয়াচল অস্তাচলের চিন্তা একদমই অর্থহীন।
বরং সে অনুযায়ী সূর্য ৯৩ মিলিয়ন দূরে অবস্থান করছে যার চারদিকে দুনিয়া ঘুরপাক খায়!
একটি বিষয় হলো পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার এই দূরত্বের হিসাবটি বিভিন্ন যুগে পরিবর্তন হয়েছে। এর দ্বারা প্রমান হয় হেলিওসেন্ট্রিক থিওরি অনুমান নির্ভর প্রমানহীন ধারনা বৈ কিছু নয়। অতএব, সত্য হচ্ছে সূর্য সত্যিই জমিনের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যায়[১], যেমনটা কুরআনেই আছে। ইবনে কাসির রহঃ বিশ্বাস করতেন সূর্য চতুর্থ আসমানে। এজন্য তার তাফসিরে গেলে সামান্য আপত্তি পেতে পারেন। কিন্তু তিনি তার আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে কুরআনের বর্ননানুযায়ী প্রথম আসমানে থাকবার সম্ভাবনাও উল্লেখ করেন। তাছাড়া সাহাবীদের কথা গুলো চতুর্থ আসমানে সূর্যের অবস্থানের মতামতের বিরুদ্ধে যায়। তারা স্পষ্টভাবে সূর্যের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তগমনের কথা বর্ননা করেছেন। আর এটা সমতল জমিন ছাড়া অসম্ভব।
অথচ আজকের অপবিজ্ঞান[১১] এবং অপবিদ্যা, যাদুশাস্ত্রের ভ্রান্ত মেটাফিজিক্স দ্বারা উম্মাহ এতটাই প্রভাবিত যে সেসবই আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে, এমনকি সেসবকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে। মা'আযাল্লাহ!নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন,আশা করি বুঝতে বাকি রইবে না যে ,এই পরিবর্তনশীল স্ফেরিক্যাল গ্লোব মডেলটি মূর্খ ছাড়া আর কারও বিশ্বাস করার কথা না। এটা কাফিরদের তামাশা আর ট্রোল ছাড়া কিছু না। ওদের গোলাকার পৃথিবী প্রতি বছর রূপ বদলায়।
অস্তাচলের নিকটে অবস্থানকারী সম্প্রদায়ের ব্যপারে ইবনে কাসির(রহ.) অসাধারণ কিছু আনেন যার অস্তিত্ব প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর ম্যাপ ও মডেলে অনুপস্থিত।বরং সে অনুযায়ী সূর্য ৯৩ মিলিয়ন দূরে অবস্থান করছে যার চারদিকে দুনিয়া ঘুরপাক খায়!
একটি বিষয় হলো পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার এই দূরত্বের হিসাবটি বিভিন্ন যুগে পরিবর্তন হয়েছে। এর দ্বারা প্রমান হয় হেলিওসেন্ট্রিক থিওরি অনুমান নির্ভর প্রমানহীন ধারনা বৈ কিছু নয়। অতএব, সত্য হচ্ছে সূর্য সত্যিই জমিনের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যায়[১], যেমনটা কুরআনেই আছে। ইবনে কাসির রহঃ বিশ্বাস করতেন সূর্য চতুর্থ আসমানে। এজন্য তার তাফসিরে গেলে সামান্য আপত্তি পেতে পারেন। কিন্তু তিনি তার আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে কুরআনের বর্ননানুযায়ী প্রথম আসমানে থাকবার সম্ভাবনাও উল্লেখ করেন। তাছাড়া সাহাবীদের কথা গুলো চতুর্থ আসমানে সূর্যের অবস্থানের মতামতের বিরুদ্ধে যায়। তারা স্পষ্টভাবে সূর্যের কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্তগমনের কথা বর্ননা করেছেন। আর এটা সমতল জমিন ছাড়া অসম্ভব।
অথচ আজকের অপবিজ্ঞান[১১] এবং অপবিদ্যা, যাদুশাস্ত্রের ভ্রান্ত মেটাফিজিক্স দ্বারা উম্মাহ এতটাই প্রভাবিত যে সেসবই আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে, এমনকি সেসবকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে। মা'আযাল্লাহ!নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন,আশা করি বুঝতে বাকি রইবে না যে ,এই পরিবর্তনশীল স্ফেরিক্যাল গ্লোব মডেলটি মূর্খ ছাড়া আর কারও বিশ্বাস করার কথা না। এটা কাফিরদের তামাশা আর ট্রোল ছাড়া কিছু না। ওদের গোলাকার পৃথিবী প্রতি বছর রূপ বদলায়।
১৮:৯০,৯১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, "অবশেষে তিনি(যুলকারনাইন) যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্নরক্ষার কোন আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি"
প্রকৃত ঘটনা যে এমনই সেটা আমরা বিশ্বাস করি, কিন্তু আফসোস, আজকের মর্ডানিস্ট মুসলিমরা তা বিশ্বাস করে না। আজ এরা কাফিরদের মনগড়া ও যাদুশাস্ত্রের কুফরি কথা সমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আজ ওরা বিশ্বাস করে না জমিন সমতল এবং আসমান জমিনের উপর গম্বুজাকৃতির ছাদ, যাদেরকে ছয় দিনে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর তাফসিরে কিছু অদ্ভুত মনুষ্যজাতির বর্ননা এসেছে যারা সূর্যের উদয়াচলে বাস করে। এদের শারীরিক গড়নের অস্বাভাবিকতার বর্ননা শুনে অনেকের কাছেই কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। আপনি এখনি গুগলে Ostrich people[১২] লিখে সার্চ দিন। এরা এখনো বসবাস করে।পা তিন আংগুল বিশিষ্ট উটপাখির মত। এছাড়া প্রাচীন ইতিহাসের অনেক জায়গায় কুকুরের মাথাবিশিষ্ট মানুষের বর্ননা পাওয়া যায় যাদেরকে Cynocephaly [১৩] বলা হয়। এছাড়া পিগমি বিশ্বের সবচেয়ে খর্বকায় জাতি। এসব আল্লাহরই বৈচিত্রময় সৃষ্টি। সুতরাং নিচের বর্ননা খুব বেশি অস্বাভাবিক লাগার কথা না।
আজকের কথিত বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগে বলা হয় স্ফেরিক্যাল(গোলাকৃতি) পৃথিবীর সর্বত্রই আজ হাতের মুঠোয়। গোটা পৃথিবীর ম্যাপ দেখানো হয়। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশাল জিওগ্রাফিক্যাল ম্যাপ টাঙানো হয়। ওদের দেখানো 'আংশিক' ম্যাপে উদয়াচল, অস্তাচলের অস্তিত্ব নেই। ইয়াজুজ ওয়া মাজুজদের দেশটাকেও পাওয়া যায় না, এজন্য কখনো ইহুদীদেরকে কখনো খ্রিষ্টানদেরকে,কখনো মোঙ্গলদেরকে ইয়াজুজ মাজুজ বানিয়ে ফেলা হয়। আর এডমিরাল বার্ডের দেখা আর্কটিকের ওপারে আমেরিকার চেয়েও বড় স্থলভাগ এবং সবুজ পর্বতসারি?!যেখানে সূর্যের উদয়াচল ও অস্তাচলেরই ম্যাপ নেই সেখানে ওটার প্রশ্ন করা অমূলক। সূরা তালাক্কের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু কাসির বিস্ময়কর এক হাদিস উল্লেখ করেনঃ
এবার বলুন পশ্চিমের ওই শুভ্র স্থলভাগের ম্যাপটি কি প্রতিষ্ঠিত ভ্রান্ত স্ফেরিক্যাল আর্থের দেখানো সীমাবদ্ধ ম্যাপ অনুযায়ী কোথাও রয়েছে যেখানে সূর্যের পথ চল্লিশ দিনের? এটা প্রমান করে আমাদের চেনাজানা প্রচলিত ম্যাপের বাইরে উত্তর, দক্ষিন, পূর্ব,পশ্চিমে আরো অনেক কিছুই আছে যার অনেককিছুই আল্লাহ যুলকারনাঈনকে দেখিয়েছিলেন।
জনপ্রিয় এ্যাযিমুথাল এক্যুইডিস্ট্যান্ট ম্যাপ অনুযায়ী চারদিকে বরফের সুউচ্চ দেওয়াল দিয়ে পৃথিবী ঘেরা। তাদের ম্যাপ অনুযায়ী জমিনের প্রান্তসীমার ব্যপারে স্পষ্ট কিছু পাওয়া যায় না। জমিনের প্রান্তভাগের বিষয়টিকে বিদ্রুপ করে অনেক ছবি ভিডিও অনলাইনে রয়েছে। আগে একটা সময়ে গুগলে সার্চ দিলে নিচের ছবির মত অনেক বিদ্রুপাত্মক ছবি আসতো।
ইমাম ইবনে জারীর তাবারি(রহ.) এ সম্পর্কে উল্লেখ করেন,
"Allah created the mountain Qaf all around the Earth. It is called stake of the Earth, asit is said in the Quran, 'And the mountains as pegs?' This world is in the middle of the mountain of Qaf as the finger is in the middle of the ring. No man can reach there, for he needs to spend four months in the darkness, In this mountain there is no sun, no moon no stars and it is so blue that the azure colour of the sky is the brightness of the mountain Qaf that reflects on the sky, and it appears this colour, If this was not so, the sky would not be blue. All the mountains that are seen in this world are from the mountain Qaf. ..."[৪]
ইমাম ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ তার তাফসিরে সর্বত্র সমতল জমিনের সপক্ষে অবস্থান করলেও ক্কাফ পর্বতের বিষয়টিতে আসা হাদিসের মতনে তার সন্দেহ তৈরি হয়। এ ব্যপারের বর্ননাটি তার জ্ঞান ও বিবেক বিরোধী মনে হয়, এজন্য তার পূর্ববর্তী আলিমগন এ ব্যপারে আসা এ হাদিস ও ব্যাখ্যাকে গ্রহন করলেও তিনি সন্দেহ করেছেন। আমার কাছে এ হাদিস ও ব্যাখ্যাটিকে বর্তমান সময়ে সমতল জমিনের পক্ষে বলা কাফিরদের বরফের বেষ্টনীর ব্যাখ্যার চেয়ে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য,যৌক্তিক এবং নির্ভরযোগ্য মনে হয়। পূর্ববর্তী অসংখ্য আলিম,মুফাসসীরীন এর সপক্ষে বলেছেন।
ইবনে আবি আল দুনিয়া এবং আবু আল শাইখ, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেনঃ
“Allah has created a mountain called Qaf which surrounds the world, and whose roots stem from the rock on which the earth rests. Whenever Allah wants to shake a town He orders that mountain to shake the root that belongs to that town. That is why earthquakes occur in some places exclusively of others.”
আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা থেকে ইবনে মুনাযির, আবু আল শাইখ, আজহামা,আল হাকিম, ইবনে মারদুআহ প্রত্যেকেই সূরাতুল ক্কাফের প্রথম(৫০:১) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ
“It is a mountain of emerald surrounding the world, on which rest the two sides of the sky.”
ইমাম সুয়ূতি(রহঃ) al-Durr al-Manthur এ বলেন মুজাহিদ(রঃ) থেকে আব্দুর রাজ্জাক বর্ননা করেন যে, “Qaf is a mountain surrounding the world.”
ইমাম বাগাভী(র) তার তাফসির মা'আলিম আল তানজিলে ইকরিমা ও যাহহাক (রঃ) থেকে বর্ননা করেন,
“Qaf is a mountain of green emerald surrounding the world the way a wall surrounds a garden. The sky’s sides rest over it, hence its blue color.”[৫]
অর্থাৎ, যেভাবে দেওয়াল বাগানকে চারদিকে ঘিরে রাখে, তেমনি ক্কাফ নামের সবুজ পর্বতসারি পৃথিবীর প্রান্তভাগকে ঘিরে রেখেছে। গম্বুজাকৃতির আসমানের দুই প্রান্তভাগ এর উপরিভাগে স্পর্শ করেছে। সুতরাং এই enclosed system থেকে বের হবার পথ নেই।
এত কিছু দেখবার পরেও আজকের মুসলিমরা অদেখা সৃষ্টির ব্যপারে কাফিরদের চিন্তাধারার ইত্তেবা করে। ওরা এ বিষয়গুলোকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে। জিওসেন্ট্রিক বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে বিদ্রুপ করতে ভোলে না কিন্তু এদিকে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র[১০] নিঃসৃত অপবিদ্যায় নির্ভর করতে মোটেও লজ্জাবোধ করে না। এদের কতক আবার অনলাইনে বাহ্যত অনেক দ্বীনদার। কিন্তু এমন সব কথাও বলে ফেলে যেটা রাসূল(সাঃ) ও সাহাবীদের পর্যন্তও গড়ায়। বস্তুত, এই প্রবণতা মু'তাযিলা ও নিকৃষ্টতম মুরজিয়াদের মাঝেই পাওয়া যায়।
ওয়া আল্লাহু আ’লাম
রেফা: