পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে আজকের বিজ্ঞান যা বলে তার শেকড় অনুসন্ধান করতে থাকলে অবশেষে প্রাচীন ব্যবিলনের নাম চলে আসে। আর সেখানে গজিয়ে ওঠা শাস্ত্রসমূহে কস্মোলজির ভিত্তিমূল পাওয়া যায়। সেটা পৃথিবীর স্ফেরসিটি বা গোলাকৃতির তত্ত্ব। এর সাথে বিগব্যাং, বিবর্তনবাদ,ইনফিনিটি,প্লুরালিটি প্রভৃতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। প্রাচীন বাবেল শহরের ইহুদীদের কাছে এ সকল শাস্ত্র গচ্ছিত ছিল।
ইজরাইলে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম কাব্বালা ইন্সটিটিউট এর চেয়ারম্যান র্যবাই মিকাঈল লেইটম্যানকে কাব্বালার অরিজিন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কাব্বালার জন্ম বাবেল শহরে। কাব্বালার ব্যপারে অনেক ভুল ধারনা প্রচলিত আছে, যেমনঃএটা যাদুশাস্ত্র। এটা ভুল ধারনা। অনেক বছর যাবৎ এটা লুকায়িত ছিল তাই এরূপ ধারনা হয়েছে। কাব্বালা হচ্ছে সাইন্স।....."
যাইহোক, পুনর্জন্মবাদী যাদুকর পিথাগোরাস ব্যবিলন সফরে গিয়ে গুপ্ত জ্ঞান লাভ করে ফেরেন। প্যাগান যাদুকর এবং ইহুদীদের থাকা পাওয়া অপবিদ্যা নিজের নামে দেশে ফিরে প্রচার শুরু করেন। ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাসও এমনকি একথা বলেন।
Hermippus পিথাগোরাস এর ব্যপারে বলতেন, "imitation of the doctrines of the Jews and the Thracians, which he transferred to his own philosophy."
Josephus একথা জোর দিয়ে বলেন, "For it is truly affirmed of Pythagoras that he took a great many of the laws of the Jews into his own philosophy."
এরিস্টটলের শিষ্য এরিস্টোক্সাস বলেন, পিথাগোরাস তার মৌলিক জ্ঞান লাভ করেন 'পূর্বদিক'(ইরাকের বাবেল শহর) থেকে।
এছাড়াও এরিস্টোবুলাসসহ অনেকেই অভিন্ন তথ্য প্রদান করেন।
পিথাগোরাসকেই সর্বপ্রথম পৃথিবীর গোলাকার তত্ত্বের কথক ও প্রচারক বলা হয়।
ফ্রিম্যাসনের মহাগুরু এলবার্ট পাঈক বলেনঃ"পিথাগোরাস যে মহাকাশবিজ্ঞান শিখিয়েছে তা মূলত জ্যোতিষশাস্ত্র(এস্ট্রোলজি): তার সংখ্যাতত্ত্বের বিজ্ঞান কাব্বালার নীতিমালার উপরে প্রতিষ্ঠিত। সবকিছুই সংখ্যার পর্দা দ্বারা ঢাকা।"
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُسَدَّدٌ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ اقْتَبَسَ عِلْمًا مِنَ النُّجُومِ اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
সুতরাং পিথাগোরাস বাবেল শহরের যাদুবিদ্যার একটি শাখাকে শিখিয়েছে astronomy এর নামে। অর্থাৎ পৃথিবীর আকার সংক্রান্ত বিষয়টি। এসব ছিল কাব্বালার নীতিমালার উপর প্রতিষ্ঠিত। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে বাবেল শহরে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র কাব্বালায় যে পৃথিবীর বিকৃত গোলাকৃতির ব্যপারটি ছিল। কাব্বালিস্টিক অরিজিনের সুস্পষ্ট দলিল আজও বিদ্যমান। কাব্বালা শিক্ষক র্যাবাই বিলি ফিলিপ্স বলেনঃ
'প্রাচীনকালে কাব্বালাকে বলা হত যাদুবিদ্যা।কাব্বালা এমন সব ধারনার ব্যপারে বলেছে যা শুধু কয়েক শতাব্দী বেশি এগিয়েই নয় বরং হাজার বছরের এগিয়ে, উদাহরণ স্বরূপ, জোহার(কাব্বালার কিতাব) ২০০০ বছর আগে বলেছে যা কিনা কলম্বাসের চেয়েও ১৫০০ বছর আগে, জোহার গোলাকৃতি(বর্তুলাকার) পৃথিবীর কথা বলেছেঃ
"গোটা দুনিয়াটা উদগত হয়েছে বলের ন্যায় গোলাকৃতিতে, এতে কিছু লোক উপরে এবং কিছু লোক নিচের দিকে রয়েছে।"
সরাসরি দলিলঃ
וּבְסִפְרָא דְּרַב הַמְנוּנָא סָבָא, פָּרִישׁ יַתִּיר, דְּהָא כָּל יִשׁוּבָא מִתְגַּלְגְּלָא בְּעִגוּלָא כַּכַּדּוּר, אִלֵּין לְתַתָּא, וְאִלֵּין לְעֵילָּא, וְכָל אִינּוּן בִּרְיָין מְשַׁנְיָין בְּחֶזְוַוְייהוּ מִשִׁנוּיָא דַּאֲוִירָא. כְּפוּם כָּל אֲתַר וַאֲתַר, וְקַיְימִין בְּקִיּוּמַיְיהוּ כִּשְׁאָר בְּנֵי נָשָׁא.
English: Rav Hamnuna Saba (the elder) explains further in his book that the entire inhabited land rolls around like a ball, so that some are up and some are down. TO WIT, THE CREATURES AROUND THE GLOBE ARE OPPOSITE EACH OTHER AND THE SEVEN SECTIONS OF THE GLOBE ARE SEVEN LANDS. (The Seven Continents) All of the creatures OF SIX OF THE LANDS are different in their appearance according to the difference in the atmosphere in each place, and they live like any other man.
וְעַל דָּא אִית אֲתַר בְּיִשּׁוּבָא, כַּד נָהִיר לְאִלֵּין, חָשִׁיךְ לְאִלֵּין, לְאִלֵּין יְמָמָא, וּלְאִלֵּין לֵילְיָא. וְאִית אֲתַר דְּכוּלֵיהּ יְמָמָא, וְלָא אִשְׁתְּכַח בֵּיהּ לֵילְיָא, בַּר בְּשַׁעֲתָא חֲדָא זְעֵירָא. וְהַאי דְּאָמַר בְּסִפְרֵי קַדְמָאֵי, וּבְסִפְרָא דְּאָדָם הָרִאשׁוֹן הָכִי הוּא.
English: There is an inhabited place, so that when there is light on some - ON THAT SIDE OF THE GLOBE - it is dark for others ON THE OTHER SIDE OF THE WORLD. THUS when it is day for one group, it is night for the others. There is an inhabited place where there is day only and no night, save for a little while. (Antarctica)[১]
" The world is as round as a ball. When the sun comes out in the east, it goes in a circle until it reaches below the earth, and then it becomes evening. At that time, it gradually descends by circles of certain steps, descending and circling the whole earth and the whole world.
When the sun comes down and is covered by it, it grows dark upon us and lights up to those who are dwelling below us, those who are on the other side of the earth, below our feet. And so it grows dark on one side and shines on the other side, below it, following the world and circle of the earth, round and round.”[২]
“That the world is round, as it is said in the Jerusalem Talmud of Alexander of Macedon, who rose up and up until he saw the world as a ball and the sea as a bowl; ‘the sea’ is the ocean which surrounds the whole world.”[৩]
অতএব, এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে আজকের এস্ট্রোনমি/এস্ট্রোফিজিক্স শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের বিকৃত কথা ছাড়া আর কিছু নয়। শয়তান সবসময় ফিতরাতকে বিকৃত করতে পছন্দ করে। আল্লাহ যা বলেন তার বিপরীতটাই বলবে। রাসূল(সাঃ) ও তার সাহাবাগন তাওহীদের(একত্ববাদ) কথা বললে, শয়তান শেখাবে ইত্তেহাদের কুফরি কথা।ও এমন এক কস্মোলজি আবৃত্তি করবে যা থেকে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব এবং অবশেষে তার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা যায়। সেই কুফরি শাস্ত্রেরই অনুসরন করে ব্যবিলনের ইহুদীরা। আল্লাহ আযযা ওয়াযাল বলেনঃ
"তারা(ইহুদীরা) ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত,সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না.... ।"[২:১০২]
সুতরাং বুঝতেই পারছেন শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকেই আজ সাইন্স বলে শেখানো হয়। জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু বলেন,"আমি একজন পদার্থবিজ্ঞানী। আমি এটা বলতে পছন্দ করি যে,আমি এলবার্ট আইনস্টাইন, নিলস বোরের মত দানবের(মহাবিজ্ঞানীদের) পদচিহ্নে হাটি। আমি কোন দার্শনিক নই। এটা বরং আশ্চর্যজনক যে, আধুনিক মহাকাশ বিজ্ঞান, যা আমরা স্যাটেলাইট দ্বারা পাই তা যেন জোহার এবং প্রাচীন কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের ভুতুড়ে প্রতিফলন।"
মা'আযাল্লাহ!! কাফিররা শয়তানি কুফরি শাস্ত্রকে বিজ্ঞানের মোড়কে শেখাচ্ছে, এর সকল প্রাচীন শিক্ষকরাই ছিল শয়তানের একান্ত অনুগত গোলাম। এরপরে আজ সেটাকে নাম(কাব্বালা) ধরেও জানিয়ে দিচ্ছে। এরপরেও কিছু মুসলিম জেনেশুনেও এই শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের অনুসরন করেই পছন্দ করে। তারা এমনকি যুক্তি দিয়ে বৈধ করতেও চেষ্টা করে। এরা কাফেরদের কুফরি শাস্ত্রের কথা গুলোকে রহমানের আয়াতগুলোকে অপব্যবহার করে সত্যায়ন করতেও চেষ্টা করে। ইন্না লিল্লাহ। এভাবে(রূপকার্থে) মদ ও মধুকে মিলিয়ে দাওয়াতি কাজও চালায়। দুটিকে একাকার করে দেয়! আমরা যখন ওদের সতর্ক করি, তখন জঙ্গী, কাফেরদের দালাল ট্যাগ সহ অনেক কিছুই লাভ করি। আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও রিপোর্ট করা হয়।
ওরা আমাদের কাছে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের বিপক্ষে সুস্পষ্ট সহীহ হাদিস বা কুরআনের আয়াতের দলিল চায়, নতুবা তারা এই অপবিদ্যার শাস্ত্রকে আঁকড়ে ধরে থাকবে,যেমনি ইহুদীরা করেছে। কিবলাধারী ইহুদী ছাড়া এরূপ চিন্তা আর কাদের হতে পারে! অথচ সুস্পষ্ট শয়তানি কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের বিপক্ষে একটিও যদি দলিল কুরআন সুন্নাহ এ না থাকে, এরপরেও সে শাস্ত্রের কোন কিছুই কস্মিনকালেও মুসলিমদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ কুরআন ও হাদিসের সমস্ত বর্ননা কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি ও কস্মোজেনেসিসের বিপরীতে। এবং এ ব্যপারে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে।
হক্কের মাপকাঠি তথা সাহাবীদের (রাযি.) জামাতের আকিদা ও শিক্ষাও ছিল কাব্বালিস্টিক ওয়ার্ল্ডভিউ বিপরীত মেরুর। আর সেসব ঠিক তাই যার ব্যপারে আমরা বলি। কিছু অন্তরে রোগগ্রস্ত লোক, বরেণ্য আলিম ও উলামাদের রেফারেন্স নিয়ে আসে, এই আশায় যদি কাব্বালিস্টিক কস্মোলজিকে সত্যায়ন করা যায়। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলি, প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত যত আলিমগন অসচেতনভাবে এর সপক্ষে কিছু বলেছেন আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সত্যিকারের আলিমরা সাধারনত তাদের ব্যক্তিগত মত প্রকাশের সাথে সাহাবাদের জামাতের অনুসরনের দিকে রিডায়্রেক্ট করতেন। ইমাম আবু হানিফাও(রহঃ) এরূপ করেছিলেন। অপবিজ্ঞানের সপক্ষে যায় এরূপ কারও কথা যদি আল্লাহ ও তার রাসূল(ﷺ) এবং সাহাবী (রাযিঃ) এর কথা ও বিশ্বাসের সাথে সংঘর্ষ তৈরি করে, তবে তা অনুসরণযোগ্যতা হারায়। যারা এরূপ বলতেন, তারা অধিকাংশই এসব ব্যপারে গভীরভাবে না জেনেই কুরআন-সুন্নাহর বাহিরে গিয়ে যাদুশাস্ত্রের সপক্ষে বলেন। কেউবা তৎকালীন পরিস্থিতির স্বীকার। কেউবা দাওয়াতের স্বার্থে হিকমাহ অবলম্বন করতে গিয়ে....! আল্লাহ তাদের ব্যপারে সর্বোত্তম জানেন। অতএব তাদের কোন ঐরূপ কোন বক্তব্য বা মতামত কোন কিছুই প্রমান করে না।এজন্য
আমাদের দ্বারা কাব্বালিস্টিক 'এস্ট্রলজি'কে প্রমোট করে এমন কোন কিছুরই নূন্যতম মূল্যায়নও করা হয়না।
কাব্বালিস্টিক এস্ট্রনমির পক্ষে তাদের কোন প্রকার যুক্তির কোনরূপ গ্রহণযোগ্যতা নেই। অধিকন্তু, গোল পৃথিবীবসহ অন্য সকল এস্ট্রোনমির নামে যা কাফেররা দেখায়, সেসবের অধিকাংশই মিথ্যা। অধিকাংশই কম্পিউটার জেনারেটেড এনিমেশন এবং ফটোশপ দ্বারা বানানো ছবি। সত্য তো ঠিক তাই যা আল্লাহ ও তার রাসূল(সাঃ) বলেছেন।
আল্লাহ আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। জমিনকে করেছেন শয্যাক্ষেত্র স্বরূপ এবং আসমানকে করেছেন জমিনের উপর গম্বুজের ন্যায় সুউচ্চ ছাদ।
Cosmological distortion কোন superficial ব্যপার নয়। বরং এর সাথে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। ওরা কুফফারদের কথা গুলো দ্বারা রহমানের আয়াতের সত্যায়নের হীন অপচেষ্টা চালায়। রহমানের পবিত্র আয়াতগুলো দ্বারা শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে সত্যায়ন করার হীন অপচেষ্টা চালায়। খুব শীঘ্রই অপবিজ্ঞানের কোন গ্রহণযোগ্যতাই থাকবে না(ইনশাআল্লাহ)। সত্য ও মিথ্যার মাঝামাঝি বলে কোন কিছু রাখা হবে না। বিইযনিল্লাহ। শুধু অপেক্ষা করুন।
পরিশেষে প্রশ্ন থাকলো,আপনি কি বাবেল শহরের শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে পছন্দ করেন, নাকি আল্লাহ ও রাসূল(ﷺ) এর নিদর্শন ও নির্দেশনাবলী সম্বলিত শাস্ত্রকে?
রেফাঃ
[১]https://kabbalah.com/en/master-kabbalists/the-land-is-a-ball
[২]http://www.kabbalah.info/eng/content/view/frame/86376?/eng/content/view/full/86376&main
[৩]http://daatemet.org.il/en/torah-science-ethics/scientific-errors-in-torah/what-the-sages-knew-about-the-shape-of-the-earth/
ইজরাইলে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম কাব্বালা ইন্সটিটিউট এর চেয়ারম্যান র্যবাই মিকাঈল লেইটম্যানকে কাব্বালার অরিজিন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কাব্বালার জন্ম বাবেল শহরে। কাব্বালার ব্যপারে অনেক ভুল ধারনা প্রচলিত আছে, যেমনঃএটা যাদুশাস্ত্র। এটা ভুল ধারনা। অনেক বছর যাবৎ এটা লুকায়িত ছিল তাই এরূপ ধারনা হয়েছে। কাব্বালা হচ্ছে সাইন্স।....."
যাইহোক, পুনর্জন্মবাদী যাদুকর পিথাগোরাস ব্যবিলন সফরে গিয়ে গুপ্ত জ্ঞান লাভ করে ফেরেন। প্যাগান যাদুকর এবং ইহুদীদের থাকা পাওয়া অপবিদ্যা নিজের নামে দেশে ফিরে প্রচার শুরু করেন। ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাসও এমনকি একথা বলেন।
Hermippus পিথাগোরাস এর ব্যপারে বলতেন, "imitation of the doctrines of the Jews and the Thracians, which he transferred to his own philosophy."
Josephus একথা জোর দিয়ে বলেন, "For it is truly affirmed of Pythagoras that he took a great many of the laws of the Jews into his own philosophy."
এরিস্টটলের শিষ্য এরিস্টোক্সাস বলেন, পিথাগোরাস তার মৌলিক জ্ঞান লাভ করেন 'পূর্বদিক'(ইরাকের বাবেল শহর) থেকে।
এছাড়াও এরিস্টোবুলাসসহ অনেকেই অভিন্ন তথ্য প্রদান করেন।
পিথাগোরাসকেই সর্বপ্রথম পৃথিবীর গোলাকার তত্ত্বের কথক ও প্রচারক বলা হয়।
ফ্রিম্যাসনের মহাগুরু এলবার্ট পাঈক বলেনঃ"পিথাগোরাস যে মহাকাশবিজ্ঞান শিখিয়েছে তা মূলত জ্যোতিষশাস্ত্র(এস্ট্রোলজি): তার সংখ্যাতত্ত্বের বিজ্ঞান কাব্বালার নীতিমালার উপরে প্রতিষ্ঠিত। সবকিছুই সংখ্যার পর্দা দ্বারা ঢাকা।"
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُسَدَّدٌ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ اقْتَبَسَ عِلْمًا مِنَ النُّجُومِ اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর জ্ঞান শিক্ষা করলো সে যাদু বিদ্যার একটা শাখা শিক্ষা করলো। তা যতো বৃদ্ধি পাবে যাদুবিদ্যাও ততো বাড়বে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯০৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
সুতরাং পিথাগোরাস বাবেল শহরের যাদুবিদ্যার একটি শাখাকে শিখিয়েছে astronomy এর নামে। অর্থাৎ পৃথিবীর আকার সংক্রান্ত বিষয়টি। এসব ছিল কাব্বালার নীতিমালার উপর প্রতিষ্ঠিত। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে বাবেল শহরে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র কাব্বালায় যে পৃথিবীর বিকৃত গোলাকৃতির ব্যপারটি ছিল। কাব্বালিস্টিক অরিজিনের সুস্পষ্ট দলিল আজও বিদ্যমান। কাব্বালা শিক্ষক র্যাবাই বিলি ফিলিপ্স বলেনঃ
'প্রাচীনকালে কাব্বালাকে বলা হত যাদুবিদ্যা।কাব্বালা এমন সব ধারনার ব্যপারে বলেছে যা শুধু কয়েক শতাব্দী বেশি এগিয়েই নয় বরং হাজার বছরের এগিয়ে, উদাহরণ স্বরূপ, জোহার(কাব্বালার কিতাব) ২০০০ বছর আগে বলেছে যা কিনা কলম্বাসের চেয়েও ১৫০০ বছর আগে, জোহার গোলাকৃতি(বর্তুলাকার) পৃথিবীর কথা বলেছেঃ
"গোটা দুনিয়াটা উদগত হয়েছে বলের ন্যায় গোলাকৃতিতে, এতে কিছু লোক উপরে এবং কিছু লোক নিচের দিকে রয়েছে।"
_জোহার
(কাব্বালা)'!!!
সরাসরি দলিলঃ
וּבְסִפְרָא דְּרַב הַמְנוּנָא סָבָא, פָּרִישׁ יַתִּיר, דְּהָא כָּל יִשׁוּבָא מִתְגַּלְגְּלָא בְּעִגוּלָא כַּכַּדּוּר, אִלֵּין לְתַתָּא, וְאִלֵּין לְעֵילָּא, וְכָל אִינּוּן בִּרְיָין מְשַׁנְיָין בְּחֶזְוַוְייהוּ מִשִׁנוּיָא דַּאֲוִירָא. כְּפוּם כָּל אֲתַר וַאֲתַר, וְקַיְימִין בְּקִיּוּמַיְיהוּ כִּשְׁאָר בְּנֵי נָשָׁא.
English: Rav Hamnuna Saba (the elder) explains further in his book that the entire inhabited land rolls around like a ball, so that some are up and some are down. TO WIT, THE CREATURES AROUND THE GLOBE ARE OPPOSITE EACH OTHER AND THE SEVEN SECTIONS OF THE GLOBE ARE SEVEN LANDS. (The Seven Continents) All of the creatures OF SIX OF THE LANDS are different in their appearance according to the difference in the atmosphere in each place, and they live like any other man.
[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 141]
וְעַל דָּא אִית אֲתַר בְּיִשּׁוּבָא, כַּד נָהִיר לְאִלֵּין, חָשִׁיךְ לְאִלֵּין, לְאִלֵּין יְמָמָא, וּלְאִלֵּין לֵילְיָא. וְאִית אֲתַר דְּכוּלֵיהּ יְמָמָא, וְלָא אִשְׁתְּכַח בֵּיהּ לֵילְיָא, בַּר בְּשַׁעֲתָא חֲדָא זְעֵירָא. וְהַאי דְּאָמַר בְּסִפְרֵי קַדְמָאֵי, וּבְסִפְרָא דְּאָדָם הָרִאשׁוֹן הָכִי הוּא.
English: There is an inhabited place, so that when there is light on some - ON THAT SIDE OF THE GLOBE - it is dark for others ON THE OTHER SIDE OF THE WORLD. THUS when it is day for one group, it is night for the others. There is an inhabited place where there is day only and no night, save for a little while. (Antarctica)[১]
[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 142]
" The world is as round as a ball. When the sun comes out in the east, it goes in a circle until it reaches below the earth, and then it becomes evening. At that time, it gradually descends by circles of certain steps, descending and circling the whole earth and the whole world.
When the sun comes down and is covered by it, it grows dark upon us and lights up to those who are dwelling below us, those who are on the other side of the earth, below our feet. And so it grows dark on one side and shines on the other side, below it, following the world and circle of the earth, round and round.”[২]
[New zohar, beresheet:619-620]
“That the world is round, as it is said in the Jerusalem Talmud of Alexander of Macedon, who rose up and up until he saw the world as a ball and the sea as a bowl; ‘the sea’ is the ocean which surrounds the whole world.”[৩]
[Tosafot on tractate Avodah Zarah 41a, s.v.k’kadur]
"তারা(ইহুদীরা) ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত,সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না.... ।"[২:১০২]
সুতরাং বুঝতেই পারছেন শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকেই আজ সাইন্স বলে শেখানো হয়। জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু বলেন,"আমি একজন পদার্থবিজ্ঞানী। আমি এটা বলতে পছন্দ করি যে,আমি এলবার্ট আইনস্টাইন, নিলস বোরের মত দানবের(মহাবিজ্ঞানীদের) পদচিহ্নে হাটি। আমি কোন দার্শনিক নই। এটা বরং আশ্চর্যজনক যে, আধুনিক মহাকাশ বিজ্ঞান, যা আমরা স্যাটেলাইট দ্বারা পাই তা যেন জোহার এবং প্রাচীন কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের ভুতুড়ে প্রতিফলন।"
মা'আযাল্লাহ!! কাফিররা শয়তানি কুফরি শাস্ত্রকে বিজ্ঞানের মোড়কে শেখাচ্ছে, এর সকল প্রাচীন শিক্ষকরাই ছিল শয়তানের একান্ত অনুগত গোলাম। এরপরে আজ সেটাকে নাম(কাব্বালা) ধরেও জানিয়ে দিচ্ছে। এরপরেও কিছু মুসলিম জেনেশুনেও এই শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের অনুসরন করেই পছন্দ করে। তারা এমনকি যুক্তি দিয়ে বৈধ করতেও চেষ্টা করে। এরা কাফেরদের কুফরি শাস্ত্রের কথা গুলোকে রহমানের আয়াতগুলোকে অপব্যবহার করে সত্যায়ন করতেও চেষ্টা করে। ইন্না লিল্লাহ। এভাবে(রূপকার্থে) মদ ও মধুকে মিলিয়ে দাওয়াতি কাজও চালায়। দুটিকে একাকার করে দেয়! আমরা যখন ওদের সতর্ক করি, তখন জঙ্গী, কাফেরদের দালাল ট্যাগ সহ অনেক কিছুই লাভ করি। আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও রিপোর্ট করা হয়।
ওরা আমাদের কাছে শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রের বিপক্ষে সুস্পষ্ট সহীহ হাদিস বা কুরআনের আয়াতের দলিল চায়, নতুবা তারা এই অপবিদ্যার শাস্ত্রকে আঁকড়ে ধরে থাকবে,যেমনি ইহুদীরা করেছে। কিবলাধারী ইহুদী ছাড়া এরূপ চিন্তা আর কাদের হতে পারে! অথচ সুস্পষ্ট শয়তানি কাব্বালিস্টিক শাস্ত্রের বিপক্ষে একটিও যদি দলিল কুরআন সুন্নাহ এ না থাকে, এরপরেও সে শাস্ত্রের কোন কিছুই কস্মিনকালেও মুসলিমদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ কুরআন ও হাদিসের সমস্ত বর্ননা কাব্বালিস্টিক কস্মোলজি ও কস্মোজেনেসিসের বিপরীতে। এবং এ ব্যপারে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে।
হক্কের মাপকাঠি তথা সাহাবীদের (রাযি.) জামাতের আকিদা ও শিক্ষাও ছিল কাব্বালিস্টিক ওয়ার্ল্ডভিউ বিপরীত মেরুর। আর সেসব ঠিক তাই যার ব্যপারে আমরা বলি। কিছু অন্তরে রোগগ্রস্ত লোক, বরেণ্য আলিম ও উলামাদের রেফারেন্স নিয়ে আসে, এই আশায় যদি কাব্বালিস্টিক কস্মোলজিকে সত্যায়ন করা যায়। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলি, প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত যত আলিমগন অসচেতনভাবে এর সপক্ষে কিছু বলেছেন আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সত্যিকারের আলিমরা সাধারনত তাদের ব্যক্তিগত মত প্রকাশের সাথে সাহাবাদের জামাতের অনুসরনের দিকে রিডায়্রেক্ট করতেন। ইমাম আবু হানিফাও(রহঃ) এরূপ করেছিলেন। অপবিজ্ঞানের সপক্ষে যায় এরূপ কারও কথা যদি আল্লাহ ও তার রাসূল(ﷺ) এবং সাহাবী (রাযিঃ) এর কথা ও বিশ্বাসের সাথে সংঘর্ষ তৈরি করে, তবে তা অনুসরণযোগ্যতা হারায়। যারা এরূপ বলতেন, তারা অধিকাংশই এসব ব্যপারে গভীরভাবে না জেনেই কুরআন-সুন্নাহর বাহিরে গিয়ে যাদুশাস্ত্রের সপক্ষে বলেন। কেউবা তৎকালীন পরিস্থিতির স্বীকার। কেউবা দাওয়াতের স্বার্থে হিকমাহ অবলম্বন করতে গিয়ে....! আল্লাহ তাদের ব্যপারে সর্বোত্তম জানেন। অতএব তাদের কোন ঐরূপ কোন বক্তব্য বা মতামত কোন কিছুই প্রমান করে না।এজন্য
আমাদের দ্বারা কাব্বালিস্টিক 'এস্ট্রলজি'কে প্রমোট করে এমন কোন কিছুরই নূন্যতম মূল্যায়নও করা হয়না।
কাব্বালিস্টিক এস্ট্রনমির পক্ষে তাদের কোন প্রকার যুক্তির কোনরূপ গ্রহণযোগ্যতা নেই। অধিকন্তু, গোল পৃথিবীবসহ অন্য সকল এস্ট্রোনমির নামে যা কাফেররা দেখায়, সেসবের অধিকাংশই মিথ্যা। অধিকাংশই কম্পিউটার জেনারেটেড এনিমেশন এবং ফটোশপ দ্বারা বানানো ছবি। সত্য তো ঠিক তাই যা আল্লাহ ও তার রাসূল(সাঃ) বলেছেন।
আল্লাহ আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। জমিনকে করেছেন শয্যাক্ষেত্র স্বরূপ এবং আসমানকে করেছেন জমিনের উপর গম্বুজের ন্যায় সুউচ্চ ছাদ।
Cosmological distortion কোন superficial ব্যপার নয়। বরং এর সাথে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। ওরা কুফফারদের কথা গুলো দ্বারা রহমানের আয়াতের সত্যায়নের হীন অপচেষ্টা চালায়। রহমানের পবিত্র আয়াতগুলো দ্বারা শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে সত্যায়ন করার হীন অপচেষ্টা চালায়। খুব শীঘ্রই অপবিজ্ঞানের কোন গ্রহণযোগ্যতাই থাকবে না(ইনশাআল্লাহ)। সত্য ও মিথ্যার মাঝামাঝি বলে কোন কিছু রাখা হবে না। বিইযনিল্লাহ। শুধু অপেক্ষা করুন।
পরিশেষে প্রশ্ন থাকলো,আপনি কি বাবেল শহরের শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্রকে পছন্দ করেন, নাকি আল্লাহ ও রাসূল(ﷺ) এর নিদর্শন ও নির্দেশনাবলী সম্বলিত শাস্ত্রকে?
রেফাঃ
[১]https://kabbalah.com/en/master-kabbalists/the-land-is-a-ball
[২]http://www.kabbalah.info/eng/content/view/frame/86376?/eng/content/view/full/86376&main
[৩]http://daatemet.org.il/en/torah-science-ethics/scientific-errors-in-torah/what-the-sages-knew-about-the-shape-of-the-earth/