[পর্বঃ২]
শয়তানের চার প্রতিশ্রুতি
আমাদেরকে ফিরতে হবে সমগ্র ইতিহাসের একদম শেকড়ে, যাতে করে সবকিছুর শুরু ও কারন ভালভাবে উপলব্ধি করা যায়। আপনারা জানেন ইবলিস[পূর্বনাম আযাযিল] ছিল জ্বীন সম্প্রদায়ের একজন, যাকে ফেরেশতাদের অনুরূপ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা হয়েছিল। যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা পিতা আদম আলাইহিসালামকে কাদামাটি দ্বারা তৈরি করলেন তখন ইবলিসের অন্তরে অহংকার তৈরি হলো। ইবলিস আগুনের তৈরি আর আদম মাটির তৈরি, একে এত মর্যাদাদানের বিষয়টি সে পছন্দ করলো না। এজন্য আল্লাহ তার অন্তরের ব্যাধিকে প্রকাশ করার জন্য পরীক্ষায় ফেললেন। নির্দেশ দেয়া হলো সবাই যেন আদমকে সিজদাহ করে। আগুনের তৈরি ইবলিস ব্যতিত সকল নূরের তৈরি মালাইকারা সিজদাহ করলো। ফলে ইবলিসের অহংকার প্রকাশিত ও আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করবার জন্য অভিশপ্ত ও বিতাড়িত হলো।ইবলিস বিতাড়িত হবার সময় আদম সন্তানদেরকে বিভিন্নভাবে পথভ্রষ্ট করার চেষ্টার কথা বলে যায়। আল্লাহ বলেন:
"আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির পত্তন করব।অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফঁুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো। তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল।কিন্তু ইবলীস-সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হল না।আল্লাহ বললেনঃ হে ইবলিস, তোমার কি হলো যে তুমি সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হলে না? বললঃ আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরী ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বললেনঃ তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত। এবং তোমার প্রতি ন্যায় বিচারের দিন পর্যন্ত অভিসম্পাত। সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।আল্লাহ বললেনঃ তোমাকে অবকাশ দেয়া হল।সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।সে বললঃ হে আমার পলনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করে দেব।"[সূরাঃ হিজর ২৮-৩৯]
শয়তান পথভ্রষ্ট করার চেষ্টার শুরুটা করে আদম ও হাওয়া [আঃ] কে দিয়ে। সে চারটি জিনিস অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়ঃ
১.অনন্ত জীবনপ্রদায়ী বৃক্ষ/সাজারাতুল খুলদ[Tree of life]
২.অমরত্বের[immortality]
৩.অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যের[Eternal utopian kingdom]
৪.ফেরেশতাদের অনুরূপ নূরের শরীরে[light beings]রূপান্তর[Angelic ascension]
আল্লাহ বলেন,
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَىٰ شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَا يَبْلَىٰ
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?
(সূরাঃ ত্বোয়া-হা, আয়াতঃ ১২০)
وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَٰذِهِ الشَّجَرَةِ إِلَّا أَنْ تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ
সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী।
(সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ২০)
অর্থাৎ শয়তানের আদি প্রতিশ্রুতি হচ্ছে সাজারাতুল খুলদের অর্থাৎ Tree of life এর, অমরত্বের, অসীমতার, অবিনশ্বর স্বর্গরাজ্যের, কাদামাটির দেহের কাঠামো থেকে আলোকোজ্জ্বল দ্যুতিময় উন্নততর শরীরে রূপান্তর বা উন্নীতকরন। শয়তান আল্লাহর বলে দেয়া নিষিদ্ধ বৃক্ষকে অনন্তজীবনপ্রদায়ী বৃক্ষ[tree of life] বলে উপস্থাপন করে। এই বৃক্ষ অমরত্বের সন্ধান দেবে বলে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। আদম ও হাওয়া [আঃ] এই মিথ্যা ফাঁদে পা দিয়ে জান্নাত থেকে অপসারিত হন। আল্লাহ বলেনঃ
قَالَ اهْبِطَا مِنْهَا جَمِيعًا ۖ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ ۖ فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ مِنِّي هُدًى فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَىٰ
বাংলা অনুবাদঃ তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।
(সূরাঃ ত্বোয়া-হা, আয়াতঃ ১২৩)
এরপরে শয়তান আদমের[আঃ] পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে কিছু ভাল লোকেদের মূর্তি/ভাস্কর্য স্মৃতি হিসেবে রাখতে উৎসাহিত করে,পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে এসব মূর্তিদেরকে পূজা[ancestry worship] করতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ বলেন,"তারা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে।"
(সূরাঃ নূহ, আয়াতঃ ২৩)
ফলে নূহের [আঃ] কওম এর উপর শাস্তি স্বরূপ মহাপ্লাবন হয়। পৃথিবীতে এরপরে সবকিছু নতুন করে শুরু হয়। নূহের[আঃ] পুত্র এবং তাদের সন্তানরা বাস করতে শুরু করে ব্যবিলনে। এ পর্যন্ত যা উল্লেখ করেছি তার বিশদ দলিলভিত্তিক আলোচনা কিতাবাদিতে আছে। এবং এর প্রায় অধিকাংশই মানুষের জানা, এজন্য এসবের বিস্তর দলিল সমূহ টেনে দীর্ঘ আলোচনাকে নিষ্প্রয়োজন মনে করি। বাবেলে নূহের পুত্র ও পুত্রসন্তানদের বসতি স্থাপন ও এর পরবর্তী ঘটনার ব্যপারে ধর্মনিরপেক্ষ তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে আলোচনা করব যা শয়তানের সেই আদি প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তির শুরুকে স্পষ্ট করবে। পরবর্তী পর্বগুলোয় বিভিন্ন বিষয়ে বার বার ব্যবিলনীয়ান অরিজিনকে খুঁজে পাবেন। এজন্য আজ সবকিছুর শুরুকে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
মহাপ্লাবনের পর বাবেলে বসবাসরত নূহ[আঃ] এর তিন সন্তানের মাধ্যমে মানবজাতির বংশ বিস্তার ঘটে, যাদের মধ্যে শামের বংশ থেকে অধিকাংশ নবী রাসূল এসেছেন। ইয়াফিসের থেকে আসা বংশধর হলো ইয়াজুজ-মাজুজ। হামের এক সন্তানের নাম কুশ, কুশের থেকেই যাবতীয় শিরক-কুফরের জন্ম হয়। অনেক বর্ননায় হামের পুত্র কেনান এবং কেনানের পুত্র কুশ বলা হয়েছে। অর্থাৎ কুশ হামের ইমিডিয়েট সন্তান না হয়ে নাতিও হতে পারে[আল্লাহ ভাল জানেন]। নন রিলিজিয়াস ডকুমেন্টস অনুযায়ী কুশ আল্লাহর অবাধ্য ছিল। তার স্ত্রীর দাবি ছিল সে জন্ম নেয় অলৌকিকভাবে, সে নিজেকে চন্দ্রদেবী দাবি করত। কুশ স্বপ্ন দেখতো সারাপৃথিবীর একছত্র আধিপত্যের। আসমানবাসীদেরকে দেখে নিতে সে উচু টাওয়ারের স্বপ্ন দেখত,তারা চিন্তা করত আরেকটা মহাপ্লাবন হলে এতে বাস করতে পারবে। তার ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডারে ভাষা, ধর্ম থাকবে কেবল একটি। এই ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্ট এর রাজধানী বাবেল শহর। বাবেলের টাওয়ার নির্মাণ কাজ শুরু করলে আল্লাহ ওদের একক ভাষার মধ্যে পরিবর্তন এনে দেন,সবাই এক ভাষায় কথা বলতে পারছিল না, ফলে কেউই কারও কথা বুঝতেছিল না। ফলশ্রুতিতে সবাই আলাদা হয়ে যেতে থাকে।
এরপর কুশের সন্তান নমরুদ ক্ষমতায় আসেন। নমরুদ ছিলেন শারীরিক ভাবে বলিষ্ঠ শক্তিধর শিকারী। অল্প সময়ের মধ্যে জন্তুজানোয়ার ও মানুষের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। নমরুদ তার পিতার স্বপ্ন সত্যি করেন বিশ্বের প্রথম ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। তিনি হন গোটা পৃথিবীর সিংহাসনের বাদশাহ। আনপ্যারালাল্ড সুপ্রীম মোনার্কি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা গোটা পৃথিবীর সিংহাসনে ৪ জনকে বসবার সুযোগ দেন। চারজনের দুজন কাফির, দুজন মুসলিম। কাফির দুজনের প্রথমজন বাবেল সম্রাট নমরুদ, দ্বিতীয় জন বাবেল সম্রাট নেবুচাদনেজার[বুখত নসর]। বাকি দুইবার ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভার্নমেন্ট গড়েন রাজা সুলাইমান[আঃ] এবং যুলকারনাঈন[আঃ]। বলা যায় কুফর ও তাওহীদ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দুই দুই গোলে ড্র অবস্থায় আছে, আরেকবার যেই দেবে তারাই বিজয়ী। আর আমরা খুব ভাল করেই জানি ফাইনাল ওয়েভে ঈসা রুহুল্লাহ গোটা পৃথিবীতে তাওহীদের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।তাওহীদ ও ইত্তেহাদের চূড়ান্ত যুদ্ধে ইহুদীদের মিথ্যা মসীহ[দাজ্জাল] শোচনীয়ভাবে পরাজিত হবে।
অতীতে ফেরা যাক, নমরুদের সাথে বিরোধীদল শামের গোত্রের সাথে প্রায়ই সংঘাত লেগে থাকত। নমরুদ নিজের ক্ষমতা প্রতিপত্তি দেখিয়ে নিজেকে উপাস্য দাবি করতো। সে নরবলি দিতো। সবাই তার ধর্মের অনুসরন করত। শয়তান তাদেরকে এ বিশ্বাসে আকৃষ্ট করে যে, মানুষের মৃত্যুর পর আত্মা নক্ষত্রে গিয়ে থাকে। নমরুদ কুশের স্বপ্ন পূরণ করেন বাবেল টাওয়ার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এদিকে কুশের স্ত্রী সেমেরামিস ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিজের পুত্র নমরুদকেই বিবাহ করে! নমরুদের শোচনীয় মৃত্যুর পর শামের বংশধররা বলতে থাকে নমরুদ কোনভাবেই উপাস্য নয়। জনগণও সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করে। কিন্তু এদিকে শয়তানের অনুগত সহচর সেমেরামিস একটা বুদ্ধি বের করলো। সে নমরুদের মৃত্যুর পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে প্রচার করে, নমরুদ মৃত্যুর পর সূর্যদেব হয়ে আকাশে আরোহন করেন। নমরুদের আত্মা তাকে অন্তঃসত্ত্বা করে ফেলে পুনর্জন্মলাভের জন্য। সেমেরামিসের সন্তানঃ তামুজ জন্মলাভের কিছুদিন পরই বন্য শূকরের আক্রমণে মারা যায়। ফলে সেমেরামিস বলা শুরু করে সূর্যদেব নমরুদের আত্মার পুনর্জন্মলাভের পর সেটা আবারো উৎসে ফিরে গেছে। এখানে নমরুদ হয়ে যায় সূর্যদেব, সেমেরামিস হয় চন্দ্রদেব এবং সন্তান তামুজ হয় son of god! সেমেরামিস নমরুদ ও তার সন্তানের মৃত্যুর পরেও তাদের অনুসারীদের নিয়ে পূজা, শয়তানের চ্যানেলিং, যাদু এবং যাবতীয় উৎসর্গ অব্যহত রাখে। নমরুদ ও তার পুত্র এবং সূর্যনক্ষত্রকে ঘিরে তারা তাদের প্যাগান ফিলোসফিকে [শয়তানের সাহায্য নিয়ে]আরো ভালভাবে নির্মাণ করে। কিন্তু শামের তোপের মুখে তারা দুর্বল হয়ে তাদের কাল্ট লুকিয়ে পালন শুরু করে। সেই থেকে তাদের চর্চাগুলো হয়ে যায় অকাল্ট[গুপ্ত/লুক্কায়িত বিদ্যা/চর্চা]। সেখান থেকে শুরু হয় সিক্রেট সোসাইটির। সেই সাথে সারাপৃথিবী একক শাসনের নিচে থাকার জন্য সহজেই বিভিন্ন দেশ মহাদেশে তাদের গুপ্তচর্চা ছড়িয়ে পড়ে। দেশ ও ভাষাভেদে বিভিন্ন শব্দে এই তিন দেবদেবীর বন্দনা করা হয়- সূর্যদেব-চন্দ্রদেব-সূর্যদেবের পুনর্জন্মপ্রাপ্ত পুত্র। মিশরে সূর্যদেব রা,চন্দ্রদেব আইসিস, পুত্র হোরাস। গ্রীসে সূর্যদেব জিউস, চন্দ্রদেবী আর্টেমিস এবং পুত্র এ্যাডোনিস। রোমে জুপিটার-ডিয়ানা-এ্যাপোলো। রোমান ক্যাথলিকদের ঈসা(আ) কে সন অব গড বানানোর চিন্তা এখান থেকেই এসেছে , নর্ডিক কাল্টে ওডিন-জর্ড-থর, হিন্দুদের মধ্যে বিষ্ণু-চন্দ্রা-কৃষ্ণ[বিষ্ণু অবতার]। সুতরাং বৈদিক ট্রেডিশন সহ আজকের যুগের সমস্ত অকাল্ট ট্রেডিশনের আদি উৎস গিয়ে মেলে বাবেল শহরে। বেদান্ত শাস্ত্র যেহেতু আর্যদের হাত ধরে ভারতের বাহির থেকে আসে, সুতরাং জন্ম-পুনর্জন্ম চক্রের আদি বিশ্বাসের শেকড় সেমেরামিসদের থেকে অর্থাৎ বাবেল শহরে গিয়ে মেলে। আপনি যদি এ্যাসিরিয়ান সম্রাটদের নাম গুলোকে লক্ষ্য করেন, তাহলে সে সব শব্দের সাথে হিন্দুয়ানী সাদৃশ্য খুঁজে পাবেন। এজন্যই গৌতম বুদ্ধ নিজেও বাবেলে গিয়েছিলেন জ্ঞানের অন্বেষণে। নমরুদের মৃত্যুর বহু শতাব্দী পরেও বাবেল শহর জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা সংস্কৃতের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ছিল[২১]।
শয়তান মূলত পিতা আদম[আঃ] কে দেয়া সেই প্রাচীন প্রতিশ্রুতিই সেমেরামিসদের থেকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। শয়তান শেখাচ্ছে জন্ম-পুনর্জন্মের ইটারনাল সাকসেসিভ সাইকেলকে যেখানে শেষ বলে কিছু নেই, সবাই অমর। প্রত্যেক জন্ম-পুনর্জন্ম চক্রে আগের জীবন অবস্থা থেকে উন্নততর হবার প্রতিশ্রুতিও দেয়, যেটা বিংশ শতাব্দীর সকল আধ্যাত্মবাদী সংগঠনগুলো প্রচার করে। এরা প্রচার করে মানুষ অবশেষে অতিমানবে রূপান্তর হবে। পরিনত হবে এ্যাঞ্জেলিক বিং এ। এটা সেই শয়তানের আদি প্রতিশ্রুতির রিপ্যাকেজড ভার্সন। এসবের পার্থিব গোড়া খুঁজলে ফিরে যেতে হবে কুশ-নমরুদদের কাছে।
ইমাম আবু জাফর মুহম্মদ ইবনে জারির তাবারি রহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেন, মুজাহিদ [রহঃ] বলেন,"নমরূদ ছিল Kan'aan এর পুত্র"। কাতাদাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন,"তার নাম ছিল নমরূদ, সে ছিল বাবেল টাওয়ারের নির্মাতা এবং যমীনের উপর প্রথম অত্যাচারী বাদশাহ এবং তিনি ইব্রাহীম [আ] এর সাথে আল্লাহর ব্যপারে বাকবিতণ্ডা করে।" আর রাবি (রহঃ), ইবনে জুরাইজও (রহ:) একই কথা বলেন। নমরূদের ব্যপারে আল্লাহ বলেন,"তুমি কি সে লোককে দেখনি, যে পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল ইব্রাহীমের সাথে এ কারণে যে, আল্লাহ সে ব্যাক্তিকে রাজ্য দান করেছিলেন? ইব্রাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমি জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইব্রাহীম বললেন, নিশ্চয়ই তিনি সুর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ সীমালংঘণকারী সম্প্রদায়কে সরল পথ প্রদর্শন করেন না।"
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৫৮)
মাসি বিন হিরান - 'আমর বিন হাম্মিদ আসবাত-আল-সুদ্দী-আবা সালিহ এবং আবু মালিক-ইবনে 'আব্বাস এবং মুররাহ আল-হামদানি-ইবনে মাসুদ এবং আরো কিছু সাহাবীদের[রাঃ] মতে পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত গোটা পৃথিবীকে শাসনকারী প্রথম রাজা হলেন নমরুদ বিন কেনান বিন কুশ বিন শাম বিন নূহ। এরকম মোট চার বাদশাহ, যারা সারাবিশ্ব শাসন করেছেন তারা হলেনঃ নমরুদ, সোলাইমান বিন দাউদ, যুলকারনাঈন এবং নেবুচাদনেজার - দুজন মু'মিন দুজন কাফির।
[ইবনে জারির তাবারির ইতিহাস]
Ibn Taymiyyah, Majmoo' al-Fataawaa (35/195) তে বলেন:"For Nimrod bin Kan'aan was the king of those (star and planet worshippers), and the
Scholars of the Sabeans were the astrologers and their likes. And have idols been worshipped overwhelmingly except on account of the viewpoint (teaching) of this vile faction who consume the wealth of people in falsehood and hinder (others) from the pathof Allaah."
নমরুদের জীবদ্দশায় থাকা নবী ইব্রাহীম [আঃ] এর পুত্র ইসহাক[আঃ] এবং তার পুত্র ইয়াকুবের ১২ সন্তানের একজন ইউসুফ [আঃ]।তার ঈর্ষান্বিত ১১ ভাই ইউসুফ আলাইহিসালামকে ফেলে এসে বাঘ নিয়ে গেছে বলে মিথ্যা কাহিনী বানিয়ে পিতাকে জানায়। তারা ইউসুফকে কূপের মধ্যে ফেলে এসে ইয়াকুব[আঃ] এর সামনে এসে মায়াকান্না করে। পরবর্তীতে ইউসুফকে[আঃ] একটি কাফেলা পানি তুলতে গিয়ে কূপের মধ্যে থেকে পেয়ে মিসর নিয়ে যায়। কয়েক দিনারে দাস হিসেবে বেচে দেয়। আল্লাহ বলেন,"যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি।তিনি বললেনঃ বৎস, তোমার ভাইদের সামনে এ স্বপ্ন বর্ণনা করো না। তাহলে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে। নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য।এমনিভাবে তোমার পালনকর্তা তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে বাণীসমূহের নিগুঢ় তত্ত্ব শিক্ষা দেবেন এবং পূর্ণ করবেন স্বীয় অনুগ্রহ তোমার প্রতি ও ইয়াকুব পরিবার-পরিজনের প্রতি; যেমন ইতিপূর্বে তোমার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম ও ইসহাকের প্রতি পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা অত্যন্ত জ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। যখন তারা বললঃ অবশ্যই ইউসুফ ও তাঁর ভাই আমাদের পিতার কাছে আমাদের চাইতে অধিক প্রিয় অথচ আমরা একটা সংহত শক্তি বিশেষ। নিশ্চয় আমাদের পিতা স্পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছেন। হত্যা কর ইউসুফকে কিংবা ফেলে আস তাকে অন্য কোন স্থানে। এতে শুধু তোমাদের প্রতিই তোমাদের পিতার মনোযোগ নিবিষ্ট হবে এবং এরপর তোমরা যোগ্য বিবেচিত হয়ে থাকবে। তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, তোমরা ইউসুফ কে হত্যা করো না, বরং ফেলে দাও তাকে অন্ধকূপে যাতে কোন পথিক তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়, যদি তোমাদের কিছু করতেই হয়। তারা বললঃ পিতাঃ ব্যাপার কি, আপনি ইউসুফের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশ্বাস করেন না ? আমরা তো তার হিতাকাংখী।আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন-তৃপ্তিসহ খাবে এবং খেলাধুলা করবে এবং আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষন করব। তিনি বললেনঃ আমার দুশ্চিন্তা হয় যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি আশঙ্কা করি যে, ব্যাঘ্র তাঁকে খেয়ে ফেলবে এবং তোমরা তার দিক থেকে গাফেল থাকবে। তারা বললঃ আমরা একটি ভারী দল থাকা সত্ত্বেও যদি ব্যাঘ্র তাকে খেয়ে ফেলে, তবে আমরা সবই হারালাম। অতঃপর তারা যখন তাকে নিয়ে চলল এবং অন্ধকূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল এবং আমি তাকে ইঙ্গিত করলাম যে, তুমি তাদেরকে তাদের এ কাজের কথা বলবে এমতাবস্থায় যে, তারা তোমাকে চিনবে না। তারা রাতের বেলায় কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে এল। তারা বললঃ পিতাঃ আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম এবং ইউসুফকে আসবাব-পত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। অতঃপর তাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। আপনি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী। এবং তারা তার জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে আনল। বললেনঃ এটা কখনই নয়; বরং তোমাদের মন তোমাদেরকে একটা কথা সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং এখন ছবর করাই শ্রেয়। তোমরা যা বর্ণনা করছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্য স্থল। এবং একটি কাফেলা এল। অতঃপর তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে বালতি ফেলল। বললঃ কি আনন্দের কথা। এ তো একটি কিশোর তারা তাকে পন্যদ্রব্য গণ্য করে গোপন করে ফেলল। আল্লাহ খুব জানেন যা কিছু তারা করেছিল। ওরা তাকে কম মূল্যে বিক্রি করে দিল গনাগুণতি কয়েক দেরহাম এবং তাঁর ব্যাপারে নিরাসক্ত ছিল। মিসরে যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করল, সে তার স্ত্রীকে বললঃ একে সম্মানে রাখ। সম্ভবতঃ সে আমাদের কাছে আসবে অথবা আমরা তাকে পুত্ররূপে গ্রহণ করে নেব। এমনিভাবে আমি ইউসুফকে এদেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম এবং এ জন্যে যে তাকে বাক্যাদির পূর্ণ মর্ম অনুধাবনের পদ্ধতি বিষয়ে শিক্ষা দেই। আল্লাহ নিজ কাজে প্রবল থাকেন, কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না। যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌছে গেল, তখন তাকে প্রজ্ঞা ও ব্যুৎপত্তি দান করলাম। এমননিভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দেই।"
[সূরা ইউসুফ]
যৌবনে উপনীত হলে তাকে চারিত্রিক অপবাদ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তার স্বপ্ন ব্যাখ্যা করবার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দেখে মিসরের বাদশাহ তার খুব কাছের পদে নিয়োগ করে। পরবর্তীতে তিনি মিসরে কর্তৃত্ব লাভ করেন।তখন তাকে ছেলেবেলায় কূপের মধ্যে ফেলে আসা ষড়যন্ত্রকারী ভাইয়েরা মিশরে আসে খাদ্য শষ্য আহরণের উদ্দেশ্যে। ইউসুফ[আ] তাদের খুব সহজেই চিনে ফেলেন। তিনি প্রথমেই পরিচয় দেন না। আগে কৌশলে চুরির ঘটনা সাজিয়ে নিজ সহোদরকে কাছে নেন, এরপরে বাকি ভাইয়েদেরকে পরিচয় দেন। তারা এতে ভীষণভাবে লজ্জিত হয়। ইউসুফ তাদেরকে না তাড়িয়ে ক্ষমা করে দেন। ইউসুফ[আঃ] তার বৃদ্ধ পিতা মাতাকে[সূর্য চন্দ্র] মিসরে নিয়ে আসেন, সিংহাসনে বসান। তখন বাকি ভাইয়েরা সম্মানে[১১টি নক্ষত্র] সিজদাবনত হয়। মিশরে ইয়াকুব[আঃ] ১২ পুত্র মহাপ্রতাপের সাথে বাস করতে থাকে। সেখানে বংশবিস্তার হতে থাকে। এরাই চিল্ড্রেন অব ইসরাইল[ইয়াকুব]।আল ইয়াহুদা। ইউসুফ আঃ এর মৃত্যুর শত বছর পরেও প্রতাপ ছিল। কিন্তু তখন স্থানীয় জনগন আর ইহুদী অভিবাসী দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আগে ইউসুফের জন্য কিছু বলা যায় নি, এরপরে স্থানীয় মিসরীয় রাজা ফেরাউন ক্ষমতায় আসে তখন তারা ইহুদীদের দমন করার কথা ভাবে , নাহলে হয়ত আবারো রাজ্য যাবে।ইহুদীদেরকে তারা সরাসরি আক্রমণও করতে যেত না, কারন ইয়াকুবের ১২ সন্তানের বংশটা বেশ ভারী। প্রায় ৪০০ বছরের মত মাথা নত করে সেখানে থাকতে হয় ইহুদিদের। এরপরে ইহুদীদের ভাগ্য বদলাতে আল্লাহ এক পরিবারে মূসা আলাইহিসালাম কে পাঠান। এরপরের ইতিহাস আপনারা জানেন। মূসা[আ] ইহুদীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। পিছনে ফেরাউন তার বাহিনী নিয়ে ধাওয়া করে।আল্লাহ সমুদ্রের মধ্যে পথ করে দিয়ে ইহুদীদের রক্ষা করেন। ফেরাউনরা ধ্বংস হয়। আমি যথাসম্ভব সংক্ষেপে লিখছি। ইহুদীদের নিয়ে আল্লাহ পবিত্রভূমি জেরুজালেমে প্রবেশ করতে বলেন। সেখানে থাকত দৈত্যাকার আমালিকা জাতি। ইহুদিদেরকে জিহাদের নির্দেশ দেয়া হলে তারা বেয়াদবের মত মূসা[আঃ] ও আল্লাহকে জিহাদ করতে বলে এবং ছাগলের মত খামি দিয়ে বসে। আল্লাহ বলেন," তারা বললঃ হে মূসা, আমরা জীবনেও কখনো সেখানে যাব না, যতক্ষণ তারা সেখানে থাকবে। অতএব, আপনি ও আপনার পালনকর্তাই যান এবং উভয়ে যুদ্ধ করে নিন। আমরা তো এখানেই বসলাম।
[সূরাঃ আল মায়িদাহ, আয়াতঃ ২৪]
আল্লাহ তাদের প্রতি সব সময়ই করুণা করে গিয়েছেন। The Golden Calf এর ঘটনা আপনারা জানেন, যখন মূসার[আঃ] অনুপস্থিতিতে তারা গোবৎস বানিয়ে পূজা দেয়া শুরু করে। এরপরেও ক্ষমা করেন। এতসব অবাধ্যতার পরেও আল্লাহ তাদেরকে বিনা পরিশ্রমে খাবারের[আল মান্না ওয়াস সালওয়া] ব্যবস্থা করেছিলেন। ইহুদীরা অবশেষে পবিত্রভূমিতে ঢুকতে পারে। সেখানে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়। আমালিকা দৈত্যাকার জাতি তাদের শত্রুতে পরিণত হয়। ইহুদীদের শিরক বিদআতের কারনে বার বার নবী প্রেরিত হতে থাকে। আমালিকা গোষ্ঠীর নেতা জালূতের অত্যাচার বারতে থাকে। এতে ইহুদীরা প্রতিহত করতে নবী শামুয়েল[স্যামুয়েল] এর কাছে বাদশাহ নির্ধারনের আবদার করে, যাতে করে জিহাদ করতে পারে। আল্লাহ বলেন,"মূসার পরে তুমি কি বনী ইসরাঈলের একটি দলকে দেখনি, যখন তারা বলেছে নিজেদের নবীর কাছে যে, আমাদের জন্য একজন বাদশাহ নির্ধারিত করে দিন যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। নবী বললেন, তোমাদের প্রতিও কি এমন ধারণা করা যায় যে, লড়াইর হুকুম যদি হয়, তাহলে তখন তোমরা লড়বে না? তারা বলল, আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর পথে লড়াই করব না। অথচ আমরা বিতাড়িত হয়েছি নিজেদের ঘর-বাড়ী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। অতঃপর যখন লড়াইয়ের নির্দেশ হলো, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তাদের সবাই ঘুরে দাঁড়ালো। আর আল্লাহ তা’আলা জালেমদের ভাল করেই জানেন।"
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৪৬)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা দরিদ্র তালূত[আঃ] কে মনোনীত করলেন। এরপরে ঐতিহাসিক তালূত ও জালূতের যুদ্ধ মাঠে গড়ালো। যুদ্ধে কিশোর দাউদ[আঃ] জালূতকে হত্যা করে ফেলে। দাউদ[আ] চরম সুখ্যাতি অর্জন করেন এবং অবশেষে রাজা মনোনীত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৯৭০ সালে দাউদের[আঃ] এর পুত্র সুলাইমান[আঃ] স্থলাভিষিক্ত হলেন। তিনি চারজন বাদশাহর একজন যিনি সারাবিশ্বব্যাপী রাজত্ব করলেন। আল্লাহ তার অধীনে করে দিয়েছিলেন বাতাসকে, সমস্ত প্রানীর ভাষা বুঝতেন। শয়তান জ্বীনরা তার বশীভূত হয়। এ নিয়ে তাফসীরের কিতাবগুলোয় সুদীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সুলাইমান[আঃ] সমস্ত শয়তান জ্বীনদের আবৃত্ত কুফরি কথা এবং যাদুবিদ্যাকে একত্রিত করে তার সিংহাসনের নিচে পুঁতে রাখেন যাতে সেসব কেউ না চর্চা করতে পারে। শয়তান জ্বীনরাও সেসব উদ্ধার করতে পারত না। তাই শয়তান সুলাইমানের মৃত্যুর পর ইহুদীদেরকে প্ররোচিত করতে থাকে নিষিদ্ধ গুপ্তজ্ঞান উদ্ধারের জন্য। ইহুদীরা সিংহাসন তলদেশ খুঁড়ে যাদুশাস্ত্রীয় জ্ঞান উদ্ধার করে বলতে শুরু করে, এই যাদুর বলেই সুলাইমান[আঃ] সব কাজ করত। এভাবে তারা যাদুচর্চাকে হালাল করে নিলো। কেউ কেউ এ নবীকে যাদুকর অপবাদ দিলো। তাদের অল্প সংখ্যকই এসব কাজের বিরোধীতা করত। এদিকে বাবেল শহরে হারুত ও মারুত নামের দুই ফেরেশতাকে পরীক্ষা হিসেবে যাদুবিদ্যা দিয়ে পাঠানো হলো,তারা যাদু শিক্ষা দেয়ার আগে সতর্ক করত যে এটা কুফরি কাজ। এরপরেও জেনেবুঝে মানুষ কুফর করত। আল্লাহ বলেন,
وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে। তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১০২)
আবারো ইতিহাসে ফেরা যাক, পবিত্রভূমিতে প্রতিষ্ঠিত ইহুদীরা তাদের অপকর্ম দুর্নীতি চালিয়ে যেতে লাগলো। সেই সাথে হাজার হাজার নবী পাঠানো অব্যাহত থাকলো। এরা নবীদেরকে দিনে দুপুরে হত্যা করে ফেলতো। নবীদের হত্যা করা ছিল তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা নবী হযরত ইরমিয়া(জেরেমায়াহ) [আঃ] এর মাধ্যমে ইহুদিদের কঠোরভাবে সতর্ক করলেন। তাদের উপর আযাবের সংবাদ দিলেন। তারা পাত্তাই দিচ্ছিলো না।
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ইমাম ইবনু কাসির আদ্ব দামেশকী রহিমাহুল্লাহ্]
এভাবেই আল্লাহ ইয়াফিসের সন্তানদেরকে পাঠালেন শামের সন্তানদেরকে শাস্তিদানের জন্য। এটা ছিল প্রতাপশালী বাবেল সম্রাট ২য় নেবুচাদনেজার[বুখত নাসর]। নেবুচাদনেজার বাহিনী ইহুদীদের উপর গনহত্যা চালায়। মসজিদের ভেতর শুকর জবাই করে। সবকিছু একদম ধ্বংস করে দিয়ে যায়। টোটালেটারিয়ান বাদশাহ নেবুচাদনেজার অল্প কিছু বছরে সারাবিশ্বের উপর কর্তৃত্ব লাভ করেন। নমরুদের পর তিনিই কাফিরদের মধ্যে ২য় এবং শেষ ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডার বাস্তবায়নকারী বাদশাহ। তিনি সমস্ত ইহুদিদেরকে বন্দী করে বাবেল শহরের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যান। বন্দীদের মধ্যে ছিল হযরত দানিয়েলের(ড্যানিয়েল) [আঃ] এর মত অনেক নবী। হযরত হিজকিল[ইজিকিয়েল] [আঃ] জেরুজালেমকে পুরো ধ্বংসস্তুপ হিসেবে দেখে আফসোস করেন এই চিন্তা করে এমন ধ্বংস স্তূপ আর কখনো আবাদ হবে কিনা! আল্লাহ বলেনঃ"তুমি কি সে লোককে দেখনি যে এমন এক জনপদ দিয়ে যাচ্ছিল যার বাড়ীঘরগুলো ভেঙ্গে ছাদের উপর পড়ে ছিল? বলল, কেমন করে আল্লাহ মরনের পর একে জীবিত করবেন? অতঃপর আল্লাহ তাকে মৃত অবস্থায় রাখলেন একশ বছর। তারপর তাকে উঠালেন। বললেন, কত কাল এভাবে ছিলে? বলল আমি ছিলাম, একদিন কংবা একদিনের কিছু কম সময়। বললেন, তা নয়; বরং তুমি তো একশ বছর ছিলে। এবার চেয়ে দেখ নিজের খাবার ও পানীয়ের দিকে-সেগুলো পচে যায় নি এবং দেখ নিজের গাধাটির দিকে। আর আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চেয়েছি। আর হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ যে, আমি এগুলোকে কেমন করে জুড়ে দেই এবং সেগুলোর উপর মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই। অতঃপর যখন তার উপর এ অবস্থা প্রকাশিত হল, তখন বলে উঠল-আমি জানি, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।"
[সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৫৯]
ইহুদীরা এভাবেই বাবেল শহরে শতবছর যাবৎ দাসত্ব বরণ করে। তারা একদিকে আল্লাহর বানীতে বিশ্বাসী ছিল না। এর উপর আল্লাহ প্রদত্ত শাস্তিতে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়লো। তারা শক্তির জন্য অলটারনেটিভ কিছুকে খুজছিল। বাবেলশহরে তারা পায় হারুত মারুত এবং নমরুদের উত্তরসূরি ক্যালডিয়ানদের এডভান্স এস্ট্রলজিক্যাল সায়েন্স এবং নমরুদের সময়কার সাবেঈন প্যাগানদের বিদ্যার অংশবিশেষ । সব মিলিয়ে র্যাবাঈগন কাব্বালাহ ডেভেলপ করেন। রচনা করে ফেলে ব্যবিলনীয়ান তালমূদ। তাওরাতকে ফেলে দিয়ে অনুসরন করা শুরু করে তালমূদ ও জোহারের মত যাদুশাস্ত্রীয় কিতাব। শয়তানের সাহচর্যে সুলাইমানের সময়কার শয়তানি শাস্ত্র এবং ব্যবিলনীয়ান ম্যাজাইদের জ্ঞানসমূহ সংকলন করে নিজেদেরকে অধিবিদ্যা সংক্রান্ত জ্ঞানের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ আসনে নিজেদেরকে নিয়ে যায়।তাদের দখলে আছে সাবএ্যাটোমিক তথা মাইক্রো রিয়ালিটি থেকে হাইপার ডাইমেনশনাল ম্যাক্রো রিয়ালিটির সমুদয় জ্ঞান। তারা এই শাস্ত্রকে ডাকে কাব্বালাহ[To receive] শব্দ দ্বারা। এর ওরাল ট্রেডিশন টাই আসল জ্ঞান, যেটা র্যাবাই থেকে র্যাবাই চলে আসছে। তাদের এসব শাস্ত্রে Cosmology - Cosmogony ও metaphysics এর ব্যপারে আছে সমস্ত আব্রাহামিক শিক্ষার বিপরীত শিক্ষা। অর্থাৎ চিন্তা- দর্শন- আকিদা/ বিশ্বাস সবকিছুর বিকল্পধারার তাওহীদের বিপরীত শিক্ষা আছে। শয়তান অদৃশ্য-অদেখা জগতের বিষয়গুলোকে আল্লাহর সৃষ্টির ঠিক বিপরীতভাবে উপস্থাপন করেছে তার অনুসারীদের কাছে। পিথাগোরাস বাবেল শহরে গিয়েই হেলিওসেন্ট্রিক এ্যাস্ট্রনমির কথা বলেছেন। ইহুদীদের কাব্বালায় এ সম্পর্কে অনেক স্পষ্ট বর্ননা আছে, যা সামনের পর্বগুলোয় দেখবেন। আপনি যদি ইহুদী কাব্বালিস্টদের সবচেয়ে বড় র্যাবাঈয়ের কাছে গিয়েও কাব্বালাহর বিদ্যার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞেসা করেন, সে অকপটে উত্তরে বলবে ব্যবিলন। তালমূদ কিতাবটি বাবেলে রচিত হয় যা নিয়ে উইকিপিডিয়াতেও আলাদা আর্টিকেল পাবেন[২২]। ইহুদীরা এই কুফরি বিদ্যার উপর ভিত্তি করেই আল্লাহর রাসূল[সাঃ] এর উপর যাদু করেছিল। Shaykh ul-Islam Ibn Taymiyyah বলেন,"The first of when this saying was manifested was from al-Ja'da bin Dirham, and al Jahm bin Safwan took it from him, and he proclaimed, and the saying of the Jahmiyyah was attributed to him [thereafter]. And it has been said that al-Ja'd took his saying from Abbaan bin Sam'aan, and Abbaan took it from Talut, the nephew of Labeed bin al-A'sam, and Talut took it from Labeed bin al-A'sam, the Jew sorcerer who put magic upon the Prophet (sallallaahu alayhi wasallam), and al-Ja'd bin Dirham - in what has been said -was from the land of Harraan, and there used to be amongst them a great portion of the Sabeans and Philosophers from the remmants of the religion of Nimrod, and the Kan'aanites, and some of the later ones authored [works] on the magic (sihr) of those people - and Nimrod is the King of the Chaldean Sabean Pagans."
(al-Hamawiyyah p. 13, Dar ul-Kutub al-Ilmiyyah)
শয়তান আবারো ইহুদীদের কাছে সেই প্রাচীন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যেটা করেছিল আদম-হাওয়া[আঃ] এর সাথে। সে আবারো দেখিয়েছে সাজারাতুল খুলদকে[Tree of Life/Eternity]। তবে এখনকার এ্যাপ্রোচ একটু ভিন্ন। শয়তান অমরত্ব অসীমতার সন্ধান দিচ্ছে যাদুশাস্ত্রের মধ্যে। ট্রি অব লাইফ বা অনন্ত জীবন প্রদায়ী বৃক্ষের কন্সেপ্ট কাব্বালার খুবই বেসিক একটা জ্ঞান। কাব্বালিস্টরা এর দ্বারা অস্তিত্বের হায়ারার্কির একটা ডায়াগ্রাম এর শিক্ষা দেয় যার সাধনা অমরত্ব দান করবে, মানুষকে উচ্চমাত্রিক অতিমানবীয় ক্ষমতাসম্পন্ন আলোকময় শরীরের অতিমানবে[angelic being] রুপান্তরের প্রতিশ্রুতি দেয়। এটা রিয়ালিটির হাইপার স্পেসিয়াল মেকানিক্সের শিক্ষা দেয়, শিক্ষা দেয় এর সমস্ত নীতি সমূহের, যার উপর ভর করে বাস্তব জগত এবং সমগ্র অস্তিত্ব অপারেট করে, যার দ্বারা দেখায় এ্যাডভান্স টেকনলজির রাস্তা, যার দ্বারা পৃথিবীকে চির প্রাচুর্যময় স্বর্গরাজ্যের[ইউটোপিয়া] প্রতিশ্রুতি দেয়।তারা আপনাকে অমরত্বের সম্ভাবনা হিসেবে দেখাবে পুনর্জন্মের বিশ্বাসকে। প্রতিটা বস্তু অন্তহীন ফিডব্যাক লুপের মধ্যে থেকে চিরন্তন পুনরাবৃত্তি চক্রের মধ্যে আটকে আছে। সবকিছুই সীমাহীন অনন্ত অসীম।জন্ম-পুনর্জন্মের অন্তহীন চক্র কেবল মানুষের জীবন নয়, এটা কস্মোলজিক্যাল স্কেলে মহাবিশ্বের ক্ষেত্রেও অনবরত অন্তহীনভাবে হচ্ছে। এসব নিয়ে সামনের পর্বগুলোয় বিশদ আলোচনা পাবেন। প্রকৃত যাদুকরদের আকিদাহ এটাই। পূর্বাঞ্চলীয় কিংবা পাশ্চাত্যের সমগ্র হিন্দুয়ানি স্পিরিচুয়াল সোসাইটি সমূহও সেই অভিন্ন সুপ্রাচীন প্রতিশ্রুতি দেয়। এরা আরো শেখায় জন্ম-পুনর্জন্মের চক্রের প্রত্যেক successive cycle'এ সমস্ত কিছু ক্রমাগতভাবে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এটা মাইক্রো থেকে ম্যাক্রো সকল স্কেলে হচ্ছে। আধ্যাত্মবাদীরা আপনাকে এনলাইটমেন্টের[২৩]কথা বলবে।শয়তানের একান্ত অনুগত ভৃত্য হেলেনা পেত্রোভনা ব্লাভাস্তস্কির থিওসফিক্যাল সোসাইটি সরাসরি চার্ট একে বোঝায় কিভাবে মানুষ ক্রমাগত উন্নতির দিকে যেতে যেতে অবশেষে [ফেরেশতাদের অনুরূপ] এঞ্জেলিক বিং এ রূপান্তর হচ্ছে। অর্থাৎ এরা সকলেই শয়তানের প্রতিশ্রুতির অনুসারী। কাব্বালিস্টদের ইল্ম যখন রেনেসাঁর সময় পশ্চিমা বিশ্বে প্রবেশ করে তখন থেকে ক্রমাগত সবাই শয়তানের প্রতিশ্রুতি, শয়তানের আবৃত্ত শাস্ত্র সমূহকে জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎস করে নিল। এর উপরে গড়ে উঠেছে পদার্থবিজ্ঞান মহাকাশবিজ্ঞান। একথা আজ কাব্বালিস্টরাও বলে। আজকের এডভান্স ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরি সমূহকে পদার্থবিজ্ঞানীগন স্পষ্টভাষায় বলেন, এসব কাব্বালিস্টিক কুফরি শাস্ত্রেরই প্রতিফলন। এসমস্ত বিষয় নিয়ে সামনের পর্বগুলোয় সুবিস্তর আলোচনা পাবেন ইনশাআল্লাহ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন সমস্ত শয়তানি কুফরি আকিদার ভিত্তিপ্রস্তর গিয়ে মেলে নমরুদের বাবেল শহরে। শয়তানের প্রতিশ্রুতি কে পূর্নতা দিতে আসছেন ইহুদীদের মসীহ। তাকে ঘিরেই মূলত সকল আয়োজন। ইহুদীরা অপেক্ষায় আছে ৩য় মন্দির গড়বার অপেক্ষায়। সুতরাং, সোলাইমান [আ] এর রাজত্বের শয়তানের আবৃত্ত কথার অনুসরন এবং ইহুদীদের বাবেল শহরে বন্দী জীবনে ন্যাচারাল ফিলসফির কম্পাইলেশন-রিকন্সট্রাকশন এবং পরবর্তীকালে সেসব বিজ্ঞান বলে প্রতিষ্ঠালাভের ইতিহাস বোধকরি আর অস্পষ্ট নয়। আমরা এসব অকাল্ট ফিলসফি ও ম্যাজিককে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বে প্রতিষ্ঠালাভের সিকোয়েন্সের সুবিস্তর ইতিহাসভিত্তিক আলোচনায় প্রবেশ করার আগে পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে কিছু মৌলিক বিষয়ের আলোকপাত করা হবে। সম্ভবত আগামী ১০ পর্ব পর্যন্ত এ সংক্রান্ত আলোচনা চলবে। এরপর থেকে আশাকরি সবকিছু বুঝতে অনেক সহজ হবে।
চেতনার ওপারে - Altered State of consciousness
সারা পৃথিবীতে প্যাগান বিলিফ সিস্টেমের পুনর্জাগরন আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অবস্থা মূলত এ মুহূর্তে প্রয়োজন সাধারন মানুষকে কুফরে আকবরের দিকে নেওয়ার জন্য, শয়তানের আনুগত্য এমনকি পূজার জন্য। এজন্য আজকে প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির দিকে সারা পৃথিবীকে ঝুকে পড়তে দেখা যাচ্ছে। আমেরিকায় ওয়াননেসের(ওয়াহদাতুল উজুদ) আহব্বান/ইনফিনিট লাভ রিলিজিয়নের ছড়াছড়ি। এমনকি নায়ক-নায়িকা গায়ক-গায়িকারা থেকে শুরু করে ফিজিসিস্ট সকলেই এ পথে আহব্বান করে। তাদের বিশ্বাস ব্যবস্থার সত্যতার সবচেয়ে বড় দলিল হচ্ছে 'চেতনার ওপারের' অভিজ্ঞতা অথবা অল্টার্ড স্টেইট অব কনসাসনেস[১৮]। এটা সেই মিস্টিক্যাল অনুভূতি যার জন্য অনেক সংগঠন ধ্যান-যোগসাধনা এবং প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির দিকে আহব্বান করে।
চেতনার অপরদিকের অভিজ্ঞতা লাভের পর অজস্র হার্ডকোর নাস্তিকও থেইজমে ফিরে আসার নজির আছে। এটা এমন এক অভিজ্ঞতা যেটা অর্জনের পর প্যাগান স্পিরিচুয়ালিটির সত্যতাকে অস্বীকার করা কষ্টকর হয়ে যায়। এ অভিজ্ঞতা লাভের পথ অনেক। গভীর ধ্যান সবচেয়ে সস্তা পথ। একটু খরচার পথও খোলা আছে। বিভিন্ন সাইকাডেলিক ড্রাগ(এলএসডি/ফিলোসাইবিন/ডিএমটি/সাইকাডেলিক ম্যাজিক মাশরুম/আয়োহুয়াস্তকা ইত্যাদি) খুব সহজেই এই অভিজ্ঞতার দ্বারে নিয়ে যাবে। আরো ব্যায়বহুল পথও আছে। সেন্সরি ডিপ্রাইভেশন চেম্বার[১১] বা আইসোলেশন চেম্বার। ১২ ইঞ্চি লবন পানির স্তরের অন্ধকার চেম্বারে শুয়ে থাকলেই হবে। সাব্জেক্ট কয়েক মিনিটের মধ্যেই সমস্ত সচেতন অনুভূতিগুলো অচেতন হয়ে যাবে এবং অজানা জগতে প্রবেশ করবে। অনেকে বিষাক্ত প্রানীর বিষের(যেমন জেলিফিশ) প্রভাবেও ওই অনুভূতি লাভ করেছে শোনা যায়। এটা কাউকে NDE[১৯] এর অভিজ্ঞতা দান করে। পশ্চিমাদের মুখে Astral Projection,Outer body experience, clairvoyance ইত্যাদি যত শব্দই শোনেন না কেন, প্রায় তার সবই 'চেতনার ওপারের' ভিন্ন ভিন্নমাত্রার অভিজ্ঞতা। অল্টার্ড স্টেইট অব কনসাসনেসে সবাই যে একই রকম অভিজ্ঞতা লাভ করবে,তেমনি নয়। সবচেয়ে সাধারন(কমন) অভিজ্ঞতা হচ্ছে একটা স্বপ্নিল ঘোরে পৌঁছানো, যেটা আলো দ্বারা পরিপূর্ন। সমস্ত বস্তুর রঙ খুব উজ্জ্বল এবং মনে হয় সেসব থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে। সমস্ত বস্তুকে যেন ভেদ করে যাওয়া যায়। অর্থাৎ সমস্ত বস্তুই যেন ননসলিড পেনেট্রেবল এনার্জি।
অসংখ্য স্পাইরাল,ফ্র্যাক্টাল ইনফিনিট প্যাটার্ন,বিভিন্ন জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার ইত্যাদি। এই অভিজ্ঞতা লাভকারী সমস্ত বস্তু এবং নিজের ব্যক্তি স্বত্ত্বার মধ্যে একটা বন্ধন অনুভব করে, যেটা মহাবিশ্বের সর্বত্র বিস্তৃত। একধরনের অকৃত্রিম ভালবাসার যেন সমস্ত বস্তুকে ছেয়ে আছে। এরকম অবস্থায় গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্তকিছুকে সচেতন বলে মনে হয়। অর্থাৎ যেন সব কিছুর জীবন আছে। নিজেকে মহাবিশ্বের একপ্রাণ বা একস্বত্ত্বার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে হয়। এক পিউর ওয়াননেসের(ওয়াহদাতুল উজুদ) অনুভূতি। এ অনুভূতি ওই অভিজ্ঞতালাভকারী ব্যক্তি স্বত্ত্বাকে এই সৃষ্টিজগতের Co-Creator(সহযোগী স্রষ্টা) বা নিজেকে ডিভাইন বা সরাসরি সৃষ্টিকর্তা ভাবতে বাধ্যকরে। এজন্য এদের মুখে I Am অনুভূতির কথা শুনবেন।এমনও হয়েছে যে কোন সাইকাডেলিক ড্রাগ গ্রহণকারী এমন দেখেছে যে গাছপালা যেন তার সাথে কথা বলছে[১৭]। অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে আশির্বাদ করছে। মিস্টিক/অকাল্টিস্টদের ভাষায় এই অভিজ্ঞতার জগত হচ্ছে ইনার স্পেস বা স্পিরিচুয়াল রেল্ম। অনেকে এটাকে হায়ার ডাইমেনশনাল জার্নি, সাইক্যাডেলিট ট্রিপ বলে।
এ অভিজ্ঞতা গভীর প্রকৃতিবাদ এবং সর্বেশ্বরবাদের দিকে নিয়ে যায়। এ বিশ্বাস বা আকিদা হৃদয়ে গভীরভাবে প্রোথিত হয়। আব্রাহামিক ধর্মের কোন টিতে থাকলে সেটার উপর আর বিশ্বাস থাকে না। কারন তারা নিজেদের অভিজ্ঞতায় বিপরীত মতাদর্শের সত্যতাকে চোখে দেখে। এ অভিজ্ঞতা যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক মিথ্যা কুফরি আকিদাকে অনেক শক্ত করে। যাদুকররা এ অভিজ্ঞতা লাভের দরুন বলত, স্রষ্টার সাথে এক(সংযোগ/সান্নিধ্য) হতে কোন ধর্ম লাগে না। খ্রিষ্টান ইহুদী কিংবা মুসলিম হবার কোন প্রয়োজন নেই।
খ্রিষ্টান ডমিনেটেড শতকে খ্রিষ্টানরা যখন এরূপ ধর্মদ্রোহীতামূলক কথা যাদুকরদের থেকে শুনলো, তাদেরকে ধরে ধরে কচুকাটা করতে লাগলো। হাজারো ডাকিনী বিদ্যা চর্চাকারীদেরকে পুড়িয়ে মারারও ঘটনা বিগত হয়েছে।
এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতাকে গ্রীক সর্বেশ্বরবাদী দর্শন থেকে আসা সুফিবাদে ফানাফিল্লাহ বলা হয়। সুফিদের ভাষায় ওই মেডিটেটিভ স্তরে গিয়ে সুফিসাধক আল্লাহর সাথে একাকার(ফানা) হয়ে যায়। সালাফি অনেক আলিম বলেন ওটা ফানাফিল্লাহ নয় বরং ফানাফিশাইত্বন(অর্থাৎ শয়তানের সাথে একাকার হওয়া।) এ ব্যপারে সালাফি আলিমগনের অবস্থান শুদ্ধ। এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা আরবি শব্দানুসারে আল আকিদাতুল ওয়াহদাতুল উজুদ-হুলুল ওয়াল ইত্তেহাদের বিশ্বাস হৃদয়ে সৃষ্টি করে। আহমাদ রেজা বেরেলভী সাহেবের অনুসারী সকল বুজুর্গগন এজন্য মেডিটেইশনে গুরুত্বারোপ করেন। তাদের অভিধানে সমস্ত প্যাগান কার্যক্রমের আরবি ভার্শণ আছে। আছে ষড়চক্র বা লাতাইফের যিকির, প্রনয়ানম, দমের সাধনা,মোরাকাবা ইত্যাদি। এগুলো তারা মারেফাত এর ইল্মের স্তরে রেখেছে। অর্থাৎ ইল্মে মারেফাতুল্লাহর(আল্লাহর পরিচয়) নামে শয়তানের পরিচয়/দীদার লাভের শিক্ষা দিচ্ছে। বেরেলভী কারা যারা বোঝেন না তাদের বুঝতে সুবিধা হবে, যদি বলি মেইনস্ট্রিম পীর-মুরিদগনের নেটওয়ার্ক।
যাহোক, অর্ল্টার্ড স্টেইট অব কনসাস্নেস শুধু সুডোসায়েন্টেফিক পরিমণ্ডলেই ছেয়ে আছে এমনটি নয়। আইজ্যাক নিউটন থেকে আইনস্টাইন প্রত্যেকেই চেতনার এই স্তরে পৌছতেন, যাতে নতুন থিওরি প্রসব করতে পারেন। আইনস্টাইন চেতনার ওপারে যাবার প্রক্রিয়াকে নাম দিয়েছেন মাইন্ড এক্সারসাইজ! যখনই ওই স্তরে পৌছতেন, ফিরে আসতেন নতুন কোন থিওরি বা ইক্যুয়েশন নিয়ে। ম্যাটারকে ভাইব্রেটরি এনার্জেটিক ফিল্ডের তত্ত্বটিও এই হ্যালুসিনোজেনিক এক্সপেরিয়েন্স থেকেই এসেছে। এর প্রেক্ষাপটে আজ পদার্থবিজ্ঞানীগন বলছেন,Everything physical is really non physical!
এবার আসি,চেতনার ওপারে এমন কি হয় যার দরুন এরূপ মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়!?
ব্যপারটা বোঝা খুবই সহজ। এসকল ড্রাগের প্রভাবে অথবা মেডিটেটিভ স্তরের (অল্টার্ড)মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা শয়তান জ্বীনদের একটা দরজা তৈরি করে দেয় Enlightenment seeker'দের মস্তিষ্কের উপর[২০]। শয়তান চাইলে ওদের জগতের সাথে মানব চেতনার সংযোগ ঘটাতে পারে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রনহীনতার সময়ে শয়তান পুরোপুরি মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়।
তখন শয়তানের ইচ্ছেমত স্বপ্নীল ঘোর সৃষ্টি করে যা ইচ্ছা দেখায়, অকৃত্রিম অনুভূতি সৃষ্টি করে। শয়তান জ্বীনদের ফিজিক্যাল ডাইমেনশন যেরূপ দেখতে সেইরূপ প্রজেকশন তৈরি করে মাথায়, অথবা সরাসরি জ্বীনদের চোখে ওদের জগত যেরূপ, সেটাই মানব মস্তিষ্কে দেখায়। মেডিটেশনের মাধ্যমে একবারেই ওই পর্যায়ে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য। মেডিটেশন বা যোগ ধ্যানে এজন্য ধীরে ধীরে ওই অবস্থায় যাওয়া হয়। ইয়োগা প্র্যাক্টিশনাররা ধ্যানের এক এক ধাপকে চক্র বা এনার্জি এক্সেস পয়েন্ট সক্রিয় করা বলে।
তারা কুণ্ডলিনী এনার্জিও বলে যা কিনা মানুষের গোপনাঙ্গের দিকে সুপ্তাবস্থায় থাকে, সেই এনার্জিকে ধীরে ধীরে জাগ্রত করে পেট,এরপরে বুক এরপরে গলা এবং সবশেষে মাথা পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হয়। মস্তিষ্কে সে এনার্জি পৌছানো তথা তাদের ভাষায় ক্রাউন চক্রকে সক্রিয়করনের দ্বারা যোগী আত্মউপলব্ধি লাভ করে বা সিদ্ধিলাভ করে। অর্থাৎ সে 'চেতনার ওপারে' পৌছে ইনফিনিট ওয়াননেস অনুভব করে। ওয়াহদাতুল উজুদ বা Monism এর আকিদা হৃদয়ে প্রোথিত হয়। ইতোপূর্বে থার্ড আই, ধ্যান নিয়ে আলোচনা করেছিলাম তাই আবারো একই কথায় ফিরতে চাই না[১]। যাইহোক,পরিষ্কার দেখছেন ধ্যানযোগে চেতনার ওপারে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য বিষয় কিন্তু hallucinogenic drugs/সাউন্ড ওয়েভ বা বাইনিউরাল বিটস[১৫] দিয়ে খুব সহজেই পৌছানো যায়। ধ্যানের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের আসল অস্তিত্বের প্যান্থেইস্টিক স্বরূপ অনুভব করতে সক্ষম হয়, সেই লোক Know Thyself এর আসল হাকিকত বুঝতে পারলো। ঐ লোককে তখন এনলাইটেন্ড বলা হয়। আত্মসিদ্ধি লাভ করেছে।
সুফিদের এক গুরু ওই অনুভূতি লাভ করেই আনাল হাক্ক(আমিই সত্য/আল্লাহ্) বলত। একইভাবে হিন্দু যোগীরা নিজেকেই পরমাত্মা বলে। আমার কাছে একজন বাবা লোকনাথের ব্যপারে কিছু তথ্য দিয়ে তার কথার ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। তিনি খুব সম্ভবত ঈমানি ব্যপারে সন্দেহে নিপতিত হয়েছিলেন। লোকনাথ নিজেকে পরমাত্মা দাবি করত, তাছাড়া অনন্ত অসীম,সর্বত্রব্যাপী সৃষ্টিকর্তাও বলত এমনকি রনে বনে জঙ্গলে বিপদে পড়লে তাকে স্মরণ করার কথাও বলতেন(উইকিপিডিয়া)। তার এরূপ কথার ব্যাখ্যা আশা করি বুঝতে পারছেন। ওই চেতনার ওই স্তরে পৌছে তার মধ্যে প্যান্থেইস্টিক ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য নিজেকে পরমাত্মা, সর্বত্রবিরাজমান ঈশ্বর দাবি করে। তার এরূপ দাবি শুনে খুব বেশি অবাক হবার কিছু নেই।
আমাদের দেশের কোয়ান্টাম ম্যাথড চেতনার ওই স্তরে নিয়ে "গড রিয়েলাইজেশন" এর কোর্স করায় বলে জানিয়েছিল Law of attraction[২] এর প্রচার কারী এক শয়তান। যারা কোয়ান্টাম ম্যাথডের সাথে সম্পৃক্ত তারা "কমান্ড সেন্টার" টার্মের সাথে খুব পরিচিত। তিনি প্রথমে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে বলেন এক ব্যক্তিকে, পরবর্তীতে আপনাআপনিই ধ্যানের মধ্যে এক লোক হাজির হয় যাবতীয় দিক নির্দেশনার জন্য। হয়ত এটাই সক্রেটিসের বলা Daemon! এসব ব্যপারে ওদের অফিশিয়াল কিতাবেই বিস্তারিত আছে।
প্রাচীন জংলি শামানরা গাছগাছড়া এবং মাশরুম দিয়ে চেতনার ওপারে যেত ওদের পূর্বপুরুষদের কথিত আত্মাদের সাথে যোগাযোগ এর জন্য। এই বিষয়টিকেই সুন্দরভাবে দেখিয়েছে ব্ল্যাক প্যান্থার মুভিতে। ফিল্মের নায়ককে একরকমের লতানো উদ্ভিদ পিষে খাওয়ানো হয় ঐতিহ্যগত কারনে মৃত পূর্বপুরুষের সাথে দেখা করার জন্য। ম্যাট্রিক্স ফিল্মেও শামানদের চিন্তাধারার প্রতিফলন রয়েছে। থাকাটাই স্বাভাবিক, কারন নির্মাতার পিতা একজন শামানিস্ট।
আম্রিকান হিপ্পিদের মধ্যে প্যাগান আধ্যাত্মিকতার বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি কারন ওদের কাছে ড্রাগ ডালভাত। অনেক হতাশাগ্রস্ত বিষন্ন মাদকাসক্ত সাইকাডেলিক পান করে জীবনকে নতুন আঙ্গিকে দেখতে শুরু করে। এদের মধ্যেই এখন আধ্যাত্মিকতা বেশি। ওরা যে মেডিটেশনে যে থার্ড আই এ্যাক্টিভেশনের কথা বলে সে অবস্থায় পৌছবার আগেই 'চেতনার ওপারে' যেতে হয়। এ গোটা ব্যপারটি যে স্যাটানিক এতে কোন সন্দেহ নেই কারন বহু নিউএজার মেডিটেশন প্র্যাক্টিশনার ধ্যানের ঘোড়ে শয়তান জ্বীনদের ভয়ংকর চেহারাতেই দেখেছে। কেউ বা শয়তানের আক্রমনের স্বীকারও হয়েছে!
অসাধারন একটি টেস্টিমোনি দেখুন, যেখানে এক স্পিরিচুয়ালিস্ট চেতনার ওপার ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বলছে সাইকাডেলিক ব্যবহারের পর,তিনি সেখানে অসংখ্য এলিয়েনদেরকে দেখে[৪]।তারা নাকি মানুষের উপকারী বন্ধু। এলিয়েন নিয়েও ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি[৩]।
DMT[৫] কে স্পিরিচুয়াল কমিউনিটিতে Spirit Molecule বলেও ডাকা হয়। ওরাই বলে এটা নাকি সহজে স্পিরিটদের জগতে যাবার দরজার মত[২০]। ডিএমটিকে বলা হয় Dimethyltryptamine। এটা সবচেয়ে শক্তিশালী ড্রাগ যেটা গভীরভাবে চেতনাকে আচ্ছন্ন করে। মানুষ,কিছু প্রানী এবং কিছু গাছপালায় এই উপাদান পাওয়া যায়। ডিএমটি অন্য যেকোন হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগের চেয়ে শক্তিশালী। এক ম্যাথম্যাটিশিয়ান তার ডিএমটি ট্রিপ নিয়ে বলেন, ডিএমটি পান করে তিনি মাতাল অবস্থায় এমন এক জগতে পৌছান যেখানে শুধুই ফ্র্যাক্টাল কম্পিউটার গ্র্যাফিক্সের মত কিছু দেখতে পান। সেগুলো খুবই দ্রুতগতির ছিল। অর্থাৎ তার অস্তিত্বগত চেতনা ওইরকম জগতে যায়। তার মনে হয়েছে কোন ইন্টেলিজেন্স এন্টিটির ধারাবাহিক স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সব হয়। অর্থাৎ হলোগ্রাফিক ভিজুয়ালাইজেশনের মত যা দেখেন তা যেন কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আশপাশটা জীবন্ত প্রানী জাতীয় কিছু দ্বারা পরিপূর্ন। এরপরে বললেন, ম্যাজিক মাশ্রুম খুব গভীর কিছু দেখায় না, সেগুলো আমাদের অর্ডিনারি রিয়ালিটিকেই স্বাভাবিকভাবে দেখায়, পার্থক্য হচ্ছে সমস্ত বস্তুকে ভাইব্রেটরি এনার্জি মনে হয়। এলএসডি ব্যবহারে তিনি অনেক জিওমেট্রিক প্যাটার্ন দেখেন, যেগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলো কিছুটা ইউক্লিডীয়ান জিওমেট্রি[৬]।
সুতরাং আজ আমরা যে ফ্রাক্টাল ম্যান্ডেলব্রটের ইনফিনিট এ্যানিমেশন/ম্যাথম্যাটিকস দেখতে পাই সেটা অরিজিন কি সেটা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে। সেদিন কম্পিউটারে লিনাক্স মিন্ট ইন্সটল করে অবাক হই, ওরা প্রোগ্রাম তালিকায় এটাকে ডিফল্টভাবে দিয়েছে।
ডাকোটা নামের জনৈক স্পিরিচুয়ালিস্ট(সাবেক নাস্তিক) সরাসরি ওই জগতে দেখা প্রানী বা ইন্টেলিজেন্ট বিংদেরকে সরাসরি Demon(শয়তান) বলেন। তার পরামর্শ হচ্ছে চেতনার ওই পর্যায়ে পৌছে তাদের কাছে নিজেকে সমার্পন করতে হবে, কমপ্লিট সাবমিশন অর্থাৎ পুরোপুরি আত্মসমার্পণ। ইগো বলে কোন কিছুই রাখা যাবেনা। তিনি বলেন, যারাই সাইকাডেলিক ট্রিপে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা লাভ করে তারা নিজেদেরকে সমার্পন করেনি ওই spirit being দের কাছে। তার এক বন্ধু আত্মসমার্পন না করায় মনে হয়েছে জাহান্নামের মধ্যে আটকে গেছে, পাজল্ড লুপের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। ডিএমটি পান করে ডাকোটা অজস্র এলিয়েন বিংদের দেখেছে, তিনি বলেন এই ডিএমটি বিংদের সাক্ষাৎ লাভ খুবই একটা সাধারন ব্যপার।
অনেকে এদেরকে স্পিরিট গাইড, এলিয়েন,elf, elves ইত্যাদি অনেক নামেই ডাকে। তিনি ওই অবস্থায় কিছু সর্পিল প্রানীদেরকে দেখেন যারা নাকি তার পেটেও প্রবেশ করে! তার মতে এই স্বত্ত্বারাই আমাদের ত্রিমাত্রিক জগতে ভূত বা শয়তান হিসেবে ম্যানিফেস্ট করে, শুধু মাত্র আমাদের ইগোর জন্য। এই বিং বা সত্ত্বা গুলো আমাদের অস্তিত্বের মতই সত্য। আমরা তাদের ভয় পাই বলে আমাদের নেগেটিভ ইন্টেনশন ওরা গ্রহন করে শক্তি পায় এবং পজেস করে। এদেরকে ভয় করা যাবে না, বরং গোটা রিয়ালিটি কিরূপ তা জানতে হবে নিজের অস্তিত্বের ব্যপারে আসলটা জানতে হবে, যখন নিজেদের ইগো থেকে সম্পূর্ন মুক্ত হওয়া যাবে তখন অশুভ বলে কোন কিছুই থাকবে না। তখন এই এলিয়েন বা স্পিরিট বিংদের কাছেও নিজেদের সমার্পনের মাধ্যমে তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার ধারনা থেকে বের হওয়া যাবে। আমরা যে ত্রিমাত্রিক সলিড রিয়ালিটি এবং বস্তু দেখি, সেসব আসলে মিথ্যা।
এগুলো শুধুই মেন্টাল প্রজেকশন। রিয়ালিটির এই স্ট্যান্ডার্ড শুধুই মানব মস্তিস্কের ট্রান্সলেশনের ফল।গাছপালা, পশুপাখি, জড়বস্তু সমস্তকিছুর থেকে নিজের সত্ত্বাকে আলাদা মনে হয় বাহির থেকে, কিন্তু আসলে সবকিছু এক। এক অস্তিত্ব(ওয়াহদাতুল উজুদ)। এই ডিএমটি বিংরাই হচ্ছে বাইবেলে উল্লিখিত ডিমন(শয়তান)। আমরাই এই পার্থক্য এবং ভাল মন্দের,ঘৃনা ভালবাসার পার্থক্য তৈরি করছি ইগোর কারনে। আসলে ওই এলিয়েন বা স্পিরিট বিং আমার আপনারই অংশ। তাদেরকে মন্দভাবে ধরলে তারা আপনার কাছে মন্দভাবেই ধরা দেবে। খ্রিষ্টান ধর্ম এই ইগোই জাগ্রত করে। এই ইগোর মৃত্যু সম্ভব আত্মসমার্পনের মাধ্যমে [৭]। রিয়ালিটি আমাদের চোখের দেখা দৃশ্যের মত সলিড না বরং সব কিছু নন ফিজিক্যাল এনার্জেটিক। এই ত্রিমাত্রিক ম্যাটেরিয়াল জগতে যেরূপ সবকিছু আলাদা,আসল জগতে সব কিছু ইন্টারকানেক্টেড, এর থেকে অদ্ভুত এক ওয়াননেসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। আমরা আছি একরকমের সিমুলেশনের মধ্যে[১৪]। তার মতে এই অভিজ্ঞতা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত কারন এটা সমস্ত ধর্মীয় মতবাদগত পার্থক্যকে ধবংস করে মানবতাকে এক করে। সবাইকে একক সত্যের(ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদার) দিকে নিয়ে যায়।[৮]
সুতরাং আশাকরি পাঠকরা বুঝতে পারছেন সায়েন্টিফিক, ফিলোসফিক্যাল ফাউন্ডেশন কোথা থেকে এসেছে, কোথা থেকে ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা এসেছে, যেটায় আজ দেওবন্দি/কওমী আলিমরা পর্যন্ত বিশ্বাস করে। একদম খাটি স্যাটানিক এক্সপেরিয়েন্স থেকে এসব আকিদা ও বিশ্বাসব্যবস্থার উন্মেষ।
ট্যারেন্স ম্যাকানার ডিএমটি ট্রিপে সার্পেন্ট/রেপ্টিলিয়ান এবং টিকটিকি সদৃশ কিছু প্রানীদেরও দেখা হয়, এদের কেউ কেউ অসমম্ভব উন্নত সভ্যতা/প্রযুক্তির ধারক।ভিডিওতে সরাসরি শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হয়েছে[৯]। ম্যাকান্না খুব হতাশ এ ব্যপারে যে মানুষ কোটিটাকা খরচ করে এলিয়েনদের দেখা পেতে বর্হিজগতে খুজছে, অথচ এই জগতে দাড়িয়েই এলিয়েনদের দেখা পাওয়া যায়। আউটার স্পেস বাদ দিয়ে ইনার হায়ার ডিমেনশনাল স্পেস নিয়ে গবেষনা করা উচিত।
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই আউটার স্পেস ও এলিয়েন কন্সেপ্ট হয়ত এই ইনার ডিমেনশনাল স্পেস থেকেই এসেছে। সাতটি ইউনিভারসাল হার্মেটিক প্রিন্সিপ্যাল এর একটি হচ্ছে As Above so below। অর্থাৎ ভেতর যা বাহির তাই, বাহির যা ভেতরও তাই। সে অনুযায়ী প্রাচীন প্যাগান ফিলসফাররা যখন এই স্পিরিচুয়াল রেল্ম ভ্রমন করে তখন তাদের মনে ম্যাক্রো পর্যায়েও একই কল্পনার অবতারণা ঘটায়। একইভাবে আউটার স্পেসে এলিয়েন ফ্যাণ্টাসিও একইভাবে আছে। ট্রান্সেনশন হাইপোথেসিস[১০] অনুযায়ী, এখন আর এলিয়েনদের খুজে না পাওয়ার কারন, তারা উন্নত হতে হতে এখন আউটার স্পেসে এক্সিস্ট করা বাদ দিয়ে ইনার স্পেসে চলে গেছে। সুতরাং সাইকাডেলিক[১২] জার্নিতে দেখা শয়তানদেরকে এলিয়েন বললেও সমস্যা নেই।
শয়তান এর থেকে আসা অভিজ্ঞতাই আজকের জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু এবং উৎস। হিন্দু বৌদ্ধ বৈষ্ণব(ধর্মচক্র) এবং সিক্রেট সোসাইটিগুলোর নিগূঢ় তত্ত্বের মূলভিত্তি[১৩]। সমগ্র বাতেনিয়্যাহ সম্প্রদায়গুলোর মূল ভিত্তি। আপনার কি মনে হয়, আজকে যে সিমুলেশন হাইপোথেসিস জেগে উঠেছে, হাশেম আল ঘাইলির মত সেলিব্রেটি বিজ্ঞানবোদ্ধারা ভিডিও ফিল্ম বানাচ্ছে, এসবের ভিত্তি কি[১৬]?
যাদুবিদ্যা,যাদুকরদের সাথে সাইকাডেলিক এক্সপেরিয়েন্সের গভীর সখ্যতা আছে। তাদের কুফরি দর্শন,বিশ্বাস এবং কর্মের ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী এবং যাদুবিদ্যার কার্যনীতি বোঝার জন্য এই অভিজ্ঞতা লাভের বিকল্প নেই। শামান,উইক্কানরা স্পিরিট মলিকিউল বিভিন্ন গাছগাছড়া থেকে নিয়ে এরূপ হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগ তৈরি করে। এক হলিউড ফিল্মে চমৎকারভাবে দেখিয়েছিল এক লোকের মৃত স্ত্রীকে ফিরে পাবার জন্য এক ডাইনীর কাছে গিয়ে এরকম হ্যালুসিনোজেণীক ড্রাগ সেবন করে। একইভাবে "এ ডার্ক সং" ফিল্মে কাব্বালার চেয়েও ইন্টেন্স ম্যাজিক্যাল আর্ট ওয়ার্কের শরণাপন্ন হয় এক এক সন্তানহারা মা, সন্তানকে ফিরে পেতে। অবশেষে চেতনার ওপারে গিয়ে শয়তানের কাছে নিজেকে সমার্পন করে। চেতনার ওপারে গিয়ে উইচক্র্যাফট প্র্যাক্টিশনার রিয়ালিটিকে জ্বীন শায়াত্বীনের চোখে দেখতে পায়। শয়তান জ্বীনজাতির কাছে ম্যাটারের সলিডিটি বলে কিছু নেই। এদের কাছে সবকিছুই এনার্জি। একজন উইচ বা সর্সারার চেতনার ওই ঘোরে গিয়ে বস্তু/মানুষ এবং প্রকৃতির সমস্তকিছুর মধ্যে ইন্টারকানেকশন দেখতে পায়, বায়ুমণ্ডলের যে ভ্যাকুয়াম আমরা আশপাশে দেখি, ওই অবস্থায় সেটার অনুপস্থিতি নিজেকে সৃষ্টিজগতের মধ্যে সচেতন একক অভিন্ন স্বত্ত্বা ভাবায়। যেহেতু ইগো আমিত্বের বিশ্বাসকে ভেঙ্গে ফেলতে হয় এবং নিজের চেতনাকে সমগ্র এনার্জেটিক প্যাটার্নে দেখা সৃষ্টির চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাবতে বাধ্য করে, তখন নিজের ইন্টেনশান বা অভিপ্রায় ব্যবহার করে প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটানোর বিশ্বাস জন্মায়, তারা ন্যাচারকে হাইলি প্রোগ্রামেবল মনে করে। নিজেকে তখন ন্যাচারের পার্টিসিপেন্ট না রেখে নিজেই প্রকৃতিকে চালনা বা ম্যানিফেস্ট করবার সম্ভাবনা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়। অর্থাৎ প্রকৃতিতে প্রোগ্রাম হয়ে না থেকে নিজেই প্রোগ্রামার হয়ে প্রকৃতির নীতিতে হস্তক্ষেপ করে নিজের স্বার্থানুযায়ী কাজ করার বিশ্বাস তৈরি করে। তবে এসব অভিজ্ঞতা/অনুভূতির সবার আগে নিজেকে প্রকৃতি এবং শয়তান জ্বীনদের(DMT plasma being) কাছে আত্মসমার্পন করতে হবে। আমিত্ব বলে কিছু রাখা যাবে না, কোন ধর্ম বিশ্বাসে আবদ্ধ থাকা যাবে না। অর্থাৎ কাফির হতেই হবে। মারভেলের ডক্টর স্ট্রেঞ্জ মুভিতে সর্সারার সুপ্রীম ডক্টর স্টিভেন স্ট্রেঞ্জকে যাদুবিদ্যার প্রথমেই বলে, "আপনি নদীর স্রোতকে কিছুতেই পরাস্ত করতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই ওর স্রোতকে ব্যবহার করতে হবে নিজের জন্য। এজন্য অবশ্যই আত্মসমার্পন করতে হবে", "Silence your ego, and your power will rise"। এজন্য সাধারন কেউ কাফির না হয়ে হাজার ইন্টেনশান আর রিচুয়াল করলেই যাদু সফল হতে হবে না। কুফরি করতে হবে। আল্লাহকে অস্বীকার করতে হবে। হয়ত যাদুবিদ্যা কুফরি হবার পিছনে এটা অন্যতম একটা কারন।অধিকাংশ যাদুকররা নির্বোধ হয়, এরা বিশ্বাস করে না যে "আন্নাল কুয়্যাতা লিল্লাহি জামিয়্যা"। ওরা তো সবার আগেই আল্লাহকে অবিশ্বাস করে কেননা ওয়াহদাতুল উজুদ,হুলুল, ইত্তেহাদ এদের কোর টেনেট। এরা নিজেরাই তো নিজেদের এবং প্রকৃতির ইলাহ মনে করে, মা'বুদ মনে করে। এদের আকিদাই হচ্ছে 'আনা আল হাক্ক', নাউজুবিল্লাহ্। এজন্য এক কাব্বালিস্ট র্যাবাইকে বলতে দেখি কাব্বালার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে নিজেকে জায়ান্ট বা তার চেয়েও ক্ষমতাশালী ভাবা, আমরা নাকি ফুল পটেনশিয়ালিটির ব্যপারে অজ্ঞ, যাদুকররা এ ব্যপারে অজ্ঞ না। আমরা আসলে সুফি মরমীদের কথা ও বিশ্বাসের আন্ডারলেইং তাৎপর্য বুঝিনা তাই অনেকে এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়, কেউবা বিশ্বাস করে, কেউবা এদেরকে অন্ধভাবে সম্মান করে।
যাদুর ব্যপারে সত্য হচ্ছে কাফিররা যতকিছুই করুক না কেন, সব কিছুর পরিবর্তনকারী এবং সবকিছুর ক্ষমতা এক আল্লাহরই। যাদুও তারই নির্দেশ ব্যতিত কার্যকরী হয় না।
আজ মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও প্যাগানিজমের প্রতি বেশ আকর্ষন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে জ্ঞানী ভাব নেওয়ার জন্য কিংবা স্রেফ তাওহীদের অবিশ্বাসের দরুন ওয়াহদাতুল উজুদকে বেছে নিয়েছে। সুফিবাদের কথা না-ই বা বললাম। ওরা তো খাটি শয়তানি শিক্ষাকে আরবি শব্দে মুড়িয়ে শতশত বছর মুসলিমদের মধ্যে প্রচার করে চলছে। শয়তানের দেওয়া অনুভূতি অভিজ্ঞতাকে বানিয়েছে ফানাফিল্লাহ বাকাফিল্লাহ। শয়তানের সাথে সম্পর্ক, শয়তানের পরিচয়লাভের তরিকাকে বানিয়েছে ইল্মে মারিফাতুল্লাহ(মারেফাতের ইল্ম)। শয়তানের কাছে আত্মসমার্পনের জন্য এখন এসে গেছে কোয়ান্টাম ম্যাথড, যারা সরাসরি জানিয়ে শুনিয়েই অকাল্ট প্যাগান ফিলসফির প্রচার চালাচ্ছে। 'মুসলিম' শব্দের অর্থ আল্লাহর নিকট আত্মসমার্পনকারী। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ধ্যান/সাইকাডেলিক ড্রাগ প্রভৃতির দ্বারা সরাসরি শয়তানের নিকট আত্মসমার্পনের জন্য আহব্বান করা হয়। শয়তানের কাছে এবং সমস্ত প্রকৃতির কাছে আত্মসমার্পনের মাধ্যমে নিজেকে সৃষ্টিকর্তার অংশ মনে করাকে শেখানো হয়। অর্থাৎ এরা শুধু কাফিরই বানায় না, বরং সবচেয়ে নিকৃষ্টতম তাগুতে পরিনত করে। তাগুত হচ্ছে সে যে নিজেকে ইলাহ মনে করে, নিজেকে রবের আসনে বসায়।
অসংখ্য স্পাইরাল,ফ্র্যাক্টাল ইনফিনিট প্যাটার্ন,বিভিন্ন জিওমেট্রিক স্ট্রাকচার ইত্যাদি। এই অভিজ্ঞতা লাভকারী সমস্ত বস্তু এবং নিজের ব্যক্তি স্বত্ত্বার মধ্যে একটা বন্ধন অনুভব করে, যেটা মহাবিশ্বের সর্বত্র বিস্তৃত। একধরনের অকৃত্রিম ভালবাসার যেন সমস্ত বস্তুকে ছেয়ে আছে। এরকম অবস্থায় গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্তকিছুকে সচেতন বলে মনে হয়। অর্থাৎ যেন সব কিছুর জীবন আছে। নিজেকে মহাবিশ্বের একপ্রাণ বা একস্বত্ত্বার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে হয়। এক পিউর ওয়াননেসের(ওয়াহদাতুল উজুদ) অনুভূতি। এ অনুভূতি ওই অভিজ্ঞতালাভকারী ব্যক্তি স্বত্ত্বাকে এই সৃষ্টিজগতের Co-Creator(সহযোগী স্রষ্টা) বা নিজেকে ডিভাইন বা সরাসরি সৃষ্টিকর্তা ভাবতে বাধ্যকরে। এজন্য এদের মুখে I Am অনুভূতির কথা শুনবেন।এমনও হয়েছে যে কোন সাইকাডেলিক ড্রাগ গ্রহণকারী এমন দেখেছে যে গাছপালা যেন তার সাথে কথা বলছে[১৭]। অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে আশির্বাদ করছে। মিস্টিক/অকাল্টিস্টদের ভাষায় এই অভিজ্ঞতার জগত হচ্ছে ইনার স্পেস বা স্পিরিচুয়াল রেল্ম। অনেকে এটাকে হায়ার ডাইমেনশনাল জার্নি, সাইক্যাডেলিট ট্রিপ বলে।
এ অভিজ্ঞতা গভীর প্রকৃতিবাদ এবং সর্বেশ্বরবাদের দিকে নিয়ে যায়। এ বিশ্বাস বা আকিদা হৃদয়ে গভীরভাবে প্রোথিত হয়। আব্রাহামিক ধর্মের কোন টিতে থাকলে সেটার উপর আর বিশ্বাস থাকে না। কারন তারা নিজেদের অভিজ্ঞতায় বিপরীত মতাদর্শের সত্যতাকে চোখে দেখে। এ অভিজ্ঞতা যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক মিথ্যা কুফরি আকিদাকে অনেক শক্ত করে। যাদুকররা এ অভিজ্ঞতা লাভের দরুন বলত, স্রষ্টার সাথে এক(সংযোগ/সান্নিধ্য) হতে কোন ধর্ম লাগে না। খ্রিষ্টান ইহুদী কিংবা মুসলিম হবার কোন প্রয়োজন নেই।
খ্রিষ্টান ডমিনেটেড শতকে খ্রিষ্টানরা যখন এরূপ ধর্মদ্রোহীতামূলক কথা যাদুকরদের থেকে শুনলো, তাদেরকে ধরে ধরে কচুকাটা করতে লাগলো। হাজারো ডাকিনী বিদ্যা চর্চাকারীদেরকে পুড়িয়ে মারারও ঘটনা বিগত হয়েছে।
এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতাকে গ্রীক সর্বেশ্বরবাদী দর্শন থেকে আসা সুফিবাদে ফানাফিল্লাহ বলা হয়। সুফিদের ভাষায় ওই মেডিটেটিভ স্তরে গিয়ে সুফিসাধক আল্লাহর সাথে একাকার(ফানা) হয়ে যায়। সালাফি অনেক আলিম বলেন ওটা ফানাফিল্লাহ নয় বরং ফানাফিশাইত্বন(অর্থাৎ শয়তানের সাথে একাকার হওয়া।) এ ব্যপারে সালাফি আলিমগনের অবস্থান শুদ্ধ। এই মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা আরবি শব্দানুসারে আল আকিদাতুল ওয়াহদাতুল উজুদ-হুলুল ওয়াল ইত্তেহাদের বিশ্বাস হৃদয়ে সৃষ্টি করে। আহমাদ রেজা বেরেলভী সাহেবের অনুসারী সকল বুজুর্গগন এজন্য মেডিটেইশনে গুরুত্বারোপ করেন। তাদের অভিধানে সমস্ত প্যাগান কার্যক্রমের আরবি ভার্শণ আছে। আছে ষড়চক্র বা লাতাইফের যিকির, প্রনয়ানম, দমের সাধনা,মোরাকাবা ইত্যাদি। এগুলো তারা মারেফাত এর ইল্মের স্তরে রেখেছে। অর্থাৎ ইল্মে মারেফাতুল্লাহর(আল্লাহর পরিচয়) নামে শয়তানের পরিচয়/দীদার লাভের শিক্ষা দিচ্ছে। বেরেলভী কারা যারা বোঝেন না তাদের বুঝতে সুবিধা হবে, যদি বলি মেইনস্ট্রিম পীর-মুরিদগনের নেটওয়ার্ক।
যাহোক, অর্ল্টার্ড স্টেইট অব কনসাস্নেস শুধু সুডোসায়েন্টেফিক পরিমণ্ডলেই ছেয়ে আছে এমনটি নয়। আইজ্যাক নিউটন থেকে আইনস্টাইন প্রত্যেকেই চেতনার এই স্তরে পৌছতেন, যাতে নতুন থিওরি প্রসব করতে পারেন। আইনস্টাইন চেতনার ওপারে যাবার প্রক্রিয়াকে নাম দিয়েছেন মাইন্ড এক্সারসাইজ! যখনই ওই স্তরে পৌছতেন, ফিরে আসতেন নতুন কোন থিওরি বা ইক্যুয়েশন নিয়ে। ম্যাটারকে ভাইব্রেটরি এনার্জেটিক ফিল্ডের তত্ত্বটিও এই হ্যালুসিনোজেনিক এক্সপেরিয়েন্স থেকেই এসেছে। এর প্রেক্ষাপটে আজ পদার্থবিজ্ঞানীগন বলছেন,Everything physical is really non physical!
এবার আসি,চেতনার ওপারে এমন কি হয় যার দরুন এরূপ মিস্টিক্যাল অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়!?
ব্যপারটা বোঝা খুবই সহজ। এসকল ড্রাগের প্রভাবে অথবা মেডিটেটিভ স্তরের (অল্টার্ড)মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা শয়তান জ্বীনদের একটা দরজা তৈরি করে দেয় Enlightenment seeker'দের মস্তিষ্কের উপর[২০]। শয়তান চাইলে ওদের জগতের সাথে মানব চেতনার সংযোগ ঘটাতে পারে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রনহীনতার সময়ে শয়তান পুরোপুরি মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়।
তখন শয়তানের ইচ্ছেমত স্বপ্নীল ঘোর সৃষ্টি করে যা ইচ্ছা দেখায়, অকৃত্রিম অনুভূতি সৃষ্টি করে। শয়তান জ্বীনদের ফিজিক্যাল ডাইমেনশন যেরূপ দেখতে সেইরূপ প্রজেকশন তৈরি করে মাথায়, অথবা সরাসরি জ্বীনদের চোখে ওদের জগত যেরূপ, সেটাই মানব মস্তিষ্কে দেখায়। মেডিটেশনের মাধ্যমে একবারেই ওই পর্যায়ে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য। মেডিটেশন বা যোগ ধ্যানে এজন্য ধীরে ধীরে ওই অবস্থায় যাওয়া হয়। ইয়োগা প্র্যাক্টিশনাররা ধ্যানের এক এক ধাপকে চক্র বা এনার্জি এক্সেস পয়েন্ট সক্রিয় করা বলে।
তারা কুণ্ডলিনী এনার্জিও বলে যা কিনা মানুষের গোপনাঙ্গের দিকে সুপ্তাবস্থায় থাকে, সেই এনার্জিকে ধীরে ধীরে জাগ্রত করে পেট,এরপরে বুক এরপরে গলা এবং সবশেষে মাথা পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হয়। মস্তিষ্কে সে এনার্জি পৌছানো তথা তাদের ভাষায় ক্রাউন চক্রকে সক্রিয়করনের দ্বারা যোগী আত্মউপলব্ধি লাভ করে বা সিদ্ধিলাভ করে। অর্থাৎ সে 'চেতনার ওপারে' পৌছে ইনফিনিট ওয়াননেস অনুভব করে। ওয়াহদাতুল উজুদ বা Monism এর আকিদা হৃদয়ে প্রোথিত হয়। ইতোপূর্বে থার্ড আই, ধ্যান নিয়ে আলোচনা করেছিলাম তাই আবারো একই কথায় ফিরতে চাই না[১]। যাইহোক,পরিষ্কার দেখছেন ধ্যানযোগে চেতনার ওপারে পৌছানো একটু কষ্টসাধ্য বিষয় কিন্তু hallucinogenic drugs/সাউন্ড ওয়েভ বা বাইনিউরাল বিটস[১৫] দিয়ে খুব সহজেই পৌছানো যায়। ধ্যানের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের আসল অস্তিত্বের প্যান্থেইস্টিক স্বরূপ অনুভব করতে সক্ষম হয়, সেই লোক Know Thyself এর আসল হাকিকত বুঝতে পারলো। ঐ লোককে তখন এনলাইটেন্ড বলা হয়। আত্মসিদ্ধি লাভ করেছে।
সুফিদের এক গুরু ওই অনুভূতি লাভ করেই আনাল হাক্ক(আমিই সত্য/আল্লাহ্) বলত। একইভাবে হিন্দু যোগীরা নিজেকেই পরমাত্মা বলে। আমার কাছে একজন বাবা লোকনাথের ব্যপারে কিছু তথ্য দিয়ে তার কথার ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। তিনি খুব সম্ভবত ঈমানি ব্যপারে সন্দেহে নিপতিত হয়েছিলেন। লোকনাথ নিজেকে পরমাত্মা দাবি করত, তাছাড়া অনন্ত অসীম,সর্বত্রব্যাপী সৃষ্টিকর্তাও বলত এমনকি রনে বনে জঙ্গলে বিপদে পড়লে তাকে স্মরণ করার কথাও বলতেন(উইকিপিডিয়া)। তার এরূপ কথার ব্যাখ্যা আশা করি বুঝতে পারছেন। ওই চেতনার ওই স্তরে পৌছে তার মধ্যে প্যান্থেইস্টিক ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য নিজেকে পরমাত্মা, সর্বত্রবিরাজমান ঈশ্বর দাবি করে। তার এরূপ দাবি শুনে খুব বেশি অবাক হবার কিছু নেই।
আমাদের দেশের কোয়ান্টাম ম্যাথড চেতনার ওই স্তরে নিয়ে "গড রিয়েলাইজেশন" এর কোর্স করায় বলে জানিয়েছিল Law of attraction[২] এর প্রচার কারী এক শয়তান। যারা কোয়ান্টাম ম্যাথডের সাথে সম্পৃক্ত তারা "কমান্ড সেন্টার" টার্মের সাথে খুব পরিচিত। তিনি প্রথমে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে বলেন এক ব্যক্তিকে, পরবর্তীতে আপনাআপনিই ধ্যানের মধ্যে এক লোক হাজির হয় যাবতীয় দিক নির্দেশনার জন্য। হয়ত এটাই সক্রেটিসের বলা Daemon! এসব ব্যপারে ওদের অফিশিয়াল কিতাবেই বিস্তারিত আছে।
প্রাচীন জংলি শামানরা গাছগাছড়া এবং মাশরুম দিয়ে চেতনার ওপারে যেত ওদের পূর্বপুরুষদের কথিত আত্মাদের সাথে যোগাযোগ এর জন্য। এই বিষয়টিকেই সুন্দরভাবে দেখিয়েছে ব্ল্যাক প্যান্থার মুভিতে। ফিল্মের নায়ককে একরকমের লতানো উদ্ভিদ পিষে খাওয়ানো হয় ঐতিহ্যগত কারনে মৃত পূর্বপুরুষের সাথে দেখা করার জন্য। ম্যাট্রিক্স ফিল্মেও শামানদের চিন্তাধারার প্রতিফলন রয়েছে। থাকাটাই স্বাভাবিক, কারন নির্মাতার পিতা একজন শামানিস্ট।
আম্রিকান হিপ্পিদের মধ্যে প্যাগান আধ্যাত্মিকতার বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি কারন ওদের কাছে ড্রাগ ডালভাত। অনেক হতাশাগ্রস্ত বিষন্ন মাদকাসক্ত সাইকাডেলিক পান করে জীবনকে নতুন আঙ্গিকে দেখতে শুরু করে। এদের মধ্যেই এখন আধ্যাত্মিকতা বেশি। ওরা যে মেডিটেশনে যে থার্ড আই এ্যাক্টিভেশনের কথা বলে সে অবস্থায় পৌছবার আগেই 'চেতনার ওপারে' যেতে হয়। এ গোটা ব্যপারটি যে স্যাটানিক এতে কোন সন্দেহ নেই কারন বহু নিউএজার মেডিটেশন প্র্যাক্টিশনার ধ্যানের ঘোড়ে শয়তান জ্বীনদের ভয়ংকর চেহারাতেই দেখেছে। কেউ বা শয়তানের আক্রমনের স্বীকারও হয়েছে!
অসাধারন একটি টেস্টিমোনি দেখুন, যেখানে এক স্পিরিচুয়ালিস্ট চেতনার ওপার ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বলছে সাইকাডেলিক ব্যবহারের পর,তিনি সেখানে অসংখ্য এলিয়েনদেরকে দেখে[৪]।তারা নাকি মানুষের উপকারী বন্ধু। এলিয়েন নিয়েও ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি[৩]।
DMT[৫] কে স্পিরিচুয়াল কমিউনিটিতে Spirit Molecule বলেও ডাকা হয়। ওরাই বলে এটা নাকি সহজে স্পিরিটদের জগতে যাবার দরজার মত[২০]। ডিএমটিকে বলা হয় Dimethyltryptamine। এটা সবচেয়ে শক্তিশালী ড্রাগ যেটা গভীরভাবে চেতনাকে আচ্ছন্ন করে। মানুষ,কিছু প্রানী এবং কিছু গাছপালায় এই উপাদান পাওয়া যায়। ডিএমটি অন্য যেকোন হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগের চেয়ে শক্তিশালী। এক ম্যাথম্যাটিশিয়ান তার ডিএমটি ট্রিপ নিয়ে বলেন, ডিএমটি পান করে তিনি মাতাল অবস্থায় এমন এক জগতে পৌছান যেখানে শুধুই ফ্র্যাক্টাল কম্পিউটার গ্র্যাফিক্সের মত কিছু দেখতে পান। সেগুলো খুবই দ্রুতগতির ছিল। অর্থাৎ তার অস্তিত্বগত চেতনা ওইরকম জগতে যায়। তার মনে হয়েছে কোন ইন্টেলিজেন্স এন্টিটির ধারাবাহিক স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সব হয়। অর্থাৎ হলোগ্রাফিক ভিজুয়ালাইজেশনের মত যা দেখেন তা যেন কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আশপাশটা জীবন্ত প্রানী জাতীয় কিছু দ্বারা পরিপূর্ন। এরপরে বললেন, ম্যাজিক মাশ্রুম খুব গভীর কিছু দেখায় না, সেগুলো আমাদের অর্ডিনারি রিয়ালিটিকেই স্বাভাবিকভাবে দেখায়, পার্থক্য হচ্ছে সমস্ত বস্তুকে ভাইব্রেটরি এনার্জি মনে হয়। এলএসডি ব্যবহারে তিনি অনেক জিওমেট্রিক প্যাটার্ন দেখেন, যেগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলো কিছুটা ইউক্লিডীয়ান জিওমেট্রি[৬]।
সুতরাং আজ আমরা যে ফ্রাক্টাল ম্যান্ডেলব্রটের ইনফিনিট এ্যানিমেশন/ম্যাথম্যাটিকস দেখতে পাই সেটা অরিজিন কি সেটা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে। সেদিন কম্পিউটারে লিনাক্স মিন্ট ইন্সটল করে অবাক হই, ওরা প্রোগ্রাম তালিকায় এটাকে ডিফল্টভাবে দিয়েছে।
ডাকোটা নামের জনৈক স্পিরিচুয়ালিস্ট(সাবেক নাস্তিক) সরাসরি ওই জগতে দেখা প্রানী বা ইন্টেলিজেন্ট বিংদেরকে সরাসরি Demon(শয়তান) বলেন। তার পরামর্শ হচ্ছে চেতনার ওই পর্যায়ে পৌছে তাদের কাছে নিজেকে সমার্পন করতে হবে, কমপ্লিট সাবমিশন অর্থাৎ পুরোপুরি আত্মসমার্পণ। ইগো বলে কোন কিছুই রাখা যাবেনা। তিনি বলেন, যারাই সাইকাডেলিক ট্রিপে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা লাভ করে তারা নিজেদেরকে সমার্পন করেনি ওই spirit being দের কাছে। তার এক বন্ধু আত্মসমার্পন না করায় মনে হয়েছে জাহান্নামের মধ্যে আটকে গেছে, পাজল্ড লুপের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। ডিএমটি পান করে ডাকোটা অজস্র এলিয়েন বিংদের দেখেছে, তিনি বলেন এই ডিএমটি বিংদের সাক্ষাৎ লাভ খুবই একটা সাধারন ব্যপার।
অনেকে এদেরকে স্পিরিট গাইড, এলিয়েন,elf, elves ইত্যাদি অনেক নামেই ডাকে। তিনি ওই অবস্থায় কিছু সর্পিল প্রানীদেরকে দেখেন যারা নাকি তার পেটেও প্রবেশ করে! তার মতে এই স্বত্ত্বারাই আমাদের ত্রিমাত্রিক জগতে ভূত বা শয়তান হিসেবে ম্যানিফেস্ট করে, শুধু মাত্র আমাদের ইগোর জন্য। এই বিং বা সত্ত্বা গুলো আমাদের অস্তিত্বের মতই সত্য। আমরা তাদের ভয় পাই বলে আমাদের নেগেটিভ ইন্টেনশন ওরা গ্রহন করে শক্তি পায় এবং পজেস করে। এদেরকে ভয় করা যাবে না, বরং গোটা রিয়ালিটি কিরূপ তা জানতে হবে নিজের অস্তিত্বের ব্যপারে আসলটা জানতে হবে, যখন নিজেদের ইগো থেকে সম্পূর্ন মুক্ত হওয়া যাবে তখন অশুভ বলে কোন কিছুই থাকবে না। তখন এই এলিয়েন বা স্পিরিট বিংদের কাছেও নিজেদের সমার্পনের মাধ্যমে তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার ধারনা থেকে বের হওয়া যাবে। আমরা যে ত্রিমাত্রিক সলিড রিয়ালিটি এবং বস্তু দেখি, সেসব আসলে মিথ্যা।
এগুলো শুধুই মেন্টাল প্রজেকশন। রিয়ালিটির এই স্ট্যান্ডার্ড শুধুই মানব মস্তিস্কের ট্রান্সলেশনের ফল।গাছপালা, পশুপাখি, জড়বস্তু সমস্তকিছুর থেকে নিজের সত্ত্বাকে আলাদা মনে হয় বাহির থেকে, কিন্তু আসলে সবকিছু এক। এক অস্তিত্ব(ওয়াহদাতুল উজুদ)। এই ডিএমটি বিংরাই হচ্ছে বাইবেলে উল্লিখিত ডিমন(শয়তান)। আমরাই এই পার্থক্য এবং ভাল মন্দের,ঘৃনা ভালবাসার পার্থক্য তৈরি করছি ইগোর কারনে। আসলে ওই এলিয়েন বা স্পিরিট বিং আমার আপনারই অংশ। তাদেরকে মন্দভাবে ধরলে তারা আপনার কাছে মন্দভাবেই ধরা দেবে। খ্রিষ্টান ধর্ম এই ইগোই জাগ্রত করে। এই ইগোর মৃত্যু সম্ভব আত্মসমার্পনের মাধ্যমে [৭]। রিয়ালিটি আমাদের চোখের দেখা দৃশ্যের মত সলিড না বরং সব কিছু নন ফিজিক্যাল এনার্জেটিক। এই ত্রিমাত্রিক ম্যাটেরিয়াল জগতে যেরূপ সবকিছু আলাদা,আসল জগতে সব কিছু ইন্টারকানেক্টেড, এর থেকে অদ্ভুত এক ওয়াননেসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। আমরা আছি একরকমের সিমুলেশনের মধ্যে[১৪]। তার মতে এই অভিজ্ঞতা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত কারন এটা সমস্ত ধর্মীয় মতবাদগত পার্থক্যকে ধবংস করে মানবতাকে এক করে। সবাইকে একক সত্যের(ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদার) দিকে নিয়ে যায়।[৮]
সুতরাং আশাকরি পাঠকরা বুঝতে পারছেন সায়েন্টিফিক, ফিলোসফিক্যাল ফাউন্ডেশন কোথা থেকে এসেছে, কোথা থেকে ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা এসেছে, যেটায় আজ দেওবন্দি/কওমী আলিমরা পর্যন্ত বিশ্বাস করে। একদম খাটি স্যাটানিক এক্সপেরিয়েন্স থেকে এসব আকিদা ও বিশ্বাসব্যবস্থার উন্মেষ।
ট্যারেন্স ম্যাকানার ডিএমটি ট্রিপে সার্পেন্ট/রেপ্টিলিয়ান এবং টিকটিকি সদৃশ কিছু প্রানীদেরও দেখা হয়, এদের কেউ কেউ অসমম্ভব উন্নত সভ্যতা/প্রযুক্তির ধারক।ভিডিওতে সরাসরি শয়তান জ্বীনদেরকেই দেখানো হয়েছে[৯]। ম্যাকান্না খুব হতাশ এ ব্যপারে যে মানুষ কোটিটাকা খরচ করে এলিয়েনদের দেখা পেতে বর্হিজগতে খুজছে, অথচ এই জগতে দাড়িয়েই এলিয়েনদের দেখা পাওয়া যায়। আউটার স্পেস বাদ দিয়ে ইনার হায়ার ডিমেনশনাল স্পেস নিয়ে গবেষনা করা উচিত।
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই আউটার স্পেস ও এলিয়েন কন্সেপ্ট হয়ত এই ইনার ডিমেনশনাল স্পেস থেকেই এসেছে। সাতটি ইউনিভারসাল হার্মেটিক প্রিন্সিপ্যাল এর একটি হচ্ছে As Above so below। অর্থাৎ ভেতর যা বাহির তাই, বাহির যা ভেতরও তাই। সে অনুযায়ী প্রাচীন প্যাগান ফিলসফাররা যখন এই স্পিরিচুয়াল রেল্ম ভ্রমন করে তখন তাদের মনে ম্যাক্রো পর্যায়েও একই কল্পনার অবতারণা ঘটায়। একইভাবে আউটার স্পেসে এলিয়েন ফ্যাণ্টাসিও একইভাবে আছে। ট্রান্সেনশন হাইপোথেসিস[১০] অনুযায়ী, এখন আর এলিয়েনদের খুজে না পাওয়ার কারন, তারা উন্নত হতে হতে এখন আউটার স্পেসে এক্সিস্ট করা বাদ দিয়ে ইনার স্পেসে চলে গেছে। সুতরাং সাইকাডেলিক[১২] জার্নিতে দেখা শয়তানদেরকে এলিয়েন বললেও সমস্যা নেই।
শয়তান এর থেকে আসা অভিজ্ঞতাই আজকের জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু এবং উৎস। হিন্দু বৌদ্ধ বৈষ্ণব(ধর্মচক্র) এবং সিক্রেট সোসাইটিগুলোর নিগূঢ় তত্ত্বের মূলভিত্তি[১৩]। সমগ্র বাতেনিয়্যাহ সম্প্রদায়গুলোর মূল ভিত্তি। আপনার কি মনে হয়, আজকে যে সিমুলেশন হাইপোথেসিস জেগে উঠেছে, হাশেম আল ঘাইলির মত সেলিব্রেটি বিজ্ঞানবোদ্ধারা ভিডিও ফিল্ম বানাচ্ছে, এসবের ভিত্তি কি[১৬]?
যাদুবিদ্যা,যাদুকরদের সাথে সাইকাডেলিক এক্সপেরিয়েন্সের গভীর সখ্যতা আছে। তাদের কুফরি দর্শন,বিশ্বাস এবং কর্মের ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী এবং যাদুবিদ্যার কার্যনীতি বোঝার জন্য এই অভিজ্ঞতা লাভের বিকল্প নেই। শামান,উইক্কানরা স্পিরিট মলিকিউল বিভিন্ন গাছগাছড়া থেকে নিয়ে এরূপ হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগ তৈরি করে। এক হলিউড ফিল্মে চমৎকারভাবে দেখিয়েছিল এক লোকের মৃত স্ত্রীকে ফিরে পাবার জন্য এক ডাইনীর কাছে গিয়ে এরকম হ্যালুসিনোজেণীক ড্রাগ সেবন করে। একইভাবে "এ ডার্ক সং" ফিল্মে কাব্বালার চেয়েও ইন্টেন্স ম্যাজিক্যাল আর্ট ওয়ার্কের শরণাপন্ন হয় এক এক সন্তানহারা মা, সন্তানকে ফিরে পেতে। অবশেষে চেতনার ওপারে গিয়ে শয়তানের কাছে নিজেকে সমার্পন করে। চেতনার ওপারে গিয়ে উইচক্র্যাফট প্র্যাক্টিশনার রিয়ালিটিকে জ্বীন শায়াত্বীনের চোখে দেখতে পায়। শয়তান জ্বীনজাতির কাছে ম্যাটারের সলিডিটি বলে কিছু নেই। এদের কাছে সবকিছুই এনার্জি। একজন উইচ বা সর্সারার চেতনার ওই ঘোরে গিয়ে বস্তু/মানুষ এবং প্রকৃতির সমস্তকিছুর মধ্যে ইন্টারকানেকশন দেখতে পায়, বায়ুমণ্ডলের যে ভ্যাকুয়াম আমরা আশপাশে দেখি, ওই অবস্থায় সেটার অনুপস্থিতি নিজেকে সৃষ্টিজগতের মধ্যে সচেতন একক অভিন্ন স্বত্ত্বা ভাবায়। যেহেতু ইগো আমিত্বের বিশ্বাসকে ভেঙ্গে ফেলতে হয় এবং নিজের চেতনাকে সমগ্র এনার্জেটিক প্যাটার্নে দেখা সৃষ্টির চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাবতে বাধ্য করে, তখন নিজের ইন্টেনশান বা অভিপ্রায় ব্যবহার করে প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটানোর বিশ্বাস জন্মায়, তারা ন্যাচারকে হাইলি প্রোগ্রামেবল মনে করে। নিজেকে তখন ন্যাচারের পার্টিসিপেন্ট না রেখে নিজেই প্রকৃতিকে চালনা বা ম্যানিফেস্ট করবার সম্ভাবনা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়। অর্থাৎ প্রকৃতিতে প্রোগ্রাম হয়ে না থেকে নিজেই প্রোগ্রামার হয়ে প্রকৃতির নীতিতে হস্তক্ষেপ করে নিজের স্বার্থানুযায়ী কাজ করার বিশ্বাস তৈরি করে। তবে এসব অভিজ্ঞতা/অনুভূতির সবার আগে নিজেকে প্রকৃতি এবং শয়তান জ্বীনদের(DMT plasma being) কাছে আত্মসমার্পন করতে হবে। আমিত্ব বলে কিছু রাখা যাবে না, কোন ধর্ম বিশ্বাসে আবদ্ধ থাকা যাবে না। অর্থাৎ কাফির হতেই হবে। মারভেলের ডক্টর স্ট্রেঞ্জ মুভিতে সর্সারার সুপ্রীম ডক্টর স্টিভেন স্ট্রেঞ্জকে যাদুবিদ্যার প্রথমেই বলে, "আপনি নদীর স্রোতকে কিছুতেই পরাস্ত করতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই ওর স্রোতকে ব্যবহার করতে হবে নিজের জন্য। এজন্য অবশ্যই আত্মসমার্পন করতে হবে", "Silence your ego, and your power will rise"। এজন্য সাধারন কেউ কাফির না হয়ে হাজার ইন্টেনশান আর রিচুয়াল করলেই যাদু সফল হতে হবে না। কুফরি করতে হবে। আল্লাহকে অস্বীকার করতে হবে। হয়ত যাদুবিদ্যা কুফরি হবার পিছনে এটা অন্যতম একটা কারন।অধিকাংশ যাদুকররা নির্বোধ হয়, এরা বিশ্বাস করে না যে "আন্নাল কুয়্যাতা লিল্লাহি জামিয়্যা"। ওরা তো সবার আগেই আল্লাহকে অবিশ্বাস করে কেননা ওয়াহদাতুল উজুদ,হুলুল, ইত্তেহাদ এদের কোর টেনেট। এরা নিজেরাই তো নিজেদের এবং প্রকৃতির ইলাহ মনে করে, মা'বুদ মনে করে। এদের আকিদাই হচ্ছে 'আনা আল হাক্ক', নাউজুবিল্লাহ্। এজন্য এক কাব্বালিস্ট র্যাবাইকে বলতে দেখি কাব্বালার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে নিজেকে জায়ান্ট বা তার চেয়েও ক্ষমতাশালী ভাবা, আমরা নাকি ফুল পটেনশিয়ালিটির ব্যপারে অজ্ঞ, যাদুকররা এ ব্যপারে অজ্ঞ না। আমরা আসলে সুফি মরমীদের কথা ও বিশ্বাসের আন্ডারলেইং তাৎপর্য বুঝিনা তাই অনেকে এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়, কেউবা বিশ্বাস করে, কেউবা এদেরকে অন্ধভাবে সম্মান করে।
যাদুর ব্যপারে সত্য হচ্ছে কাফিররা যতকিছুই করুক না কেন, সব কিছুর পরিবর্তনকারী এবং সবকিছুর ক্ষমতা এক আল্লাহরই। যাদুও তারই নির্দেশ ব্যতিত কার্যকরী হয় না।
আজ মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও প্যাগানিজমের প্রতি বেশ আকর্ষন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে জ্ঞানী ভাব নেওয়ার জন্য কিংবা স্রেফ তাওহীদের অবিশ্বাসের দরুন ওয়াহদাতুল উজুদকে বেছে নিয়েছে। সুফিবাদের কথা না-ই বা বললাম। ওরা তো খাটি শয়তানি শিক্ষাকে আরবি শব্দে মুড়িয়ে শতশত বছর মুসলিমদের মধ্যে প্রচার করে চলছে। শয়তানের দেওয়া অনুভূতি অভিজ্ঞতাকে বানিয়েছে ফানাফিল্লাহ বাকাফিল্লাহ। শয়তানের সাথে সম্পর্ক, শয়তানের পরিচয়লাভের তরিকাকে বানিয়েছে ইল্মে মারিফাতুল্লাহ(মারেফাতের ইল্ম)। শয়তানের কাছে আত্মসমার্পনের জন্য এখন এসে গেছে কোয়ান্টাম ম্যাথড, যারা সরাসরি জানিয়ে শুনিয়েই অকাল্ট প্যাগান ফিলসফির প্রচার চালাচ্ছে। 'মুসলিম' শব্দের অর্থ আল্লাহর নিকট আত্মসমার্পনকারী। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ধ্যান/সাইকাডেলিক ড্রাগ প্রভৃতির দ্বারা সরাসরি শয়তানের নিকট আত্মসমার্পনের জন্য আহব্বান করা হয়। শয়তানের কাছে এবং সমস্ত প্রকৃতির কাছে আত্মসমার্পনের মাধ্যমে নিজেকে সৃষ্টিকর্তার অংশ মনে করাকে শেখানো হয়। অর্থাৎ এরা শুধু কাফিরই বানায় না, বরং সবচেয়ে নিকৃষ্টতম তাগুতে পরিনত করে। তাগুত হচ্ছে সে যে নিজেকে ইলাহ মনে করে, নিজেকে রবের আসনে বসায়।
وَعَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ : «إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنَ الْإِنْسَانِ مَجْرَى الدَّمِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : মানুষের মধ্যে শয়তান (তার) শিরা-উপশিরায় রক্তের মধ্যে বিচরণ করে থাকে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২০৩৮, মুসলিম ২১৭৪, আবূ দাঊদ ৪৭১৯, আহমাদ ১২১৮২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অকাল্টিজমের মধ্যে যাদুবিদ্যা/জিওম্যান্সি/ন্যাক্রোমেন্সি/এস্ট্রলজি/আলকেমি/ভাগ্যগণনা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত।
1871, book Primitive Culture, the anthropologist Edward Tylor used the term "occult science" as a synonym for "magic"(Wikipedia).
গত পর্বে অকাল্টিস্ট/মিস্টিকদের বিশ্বাস বা মতাদর্শ খানিকটা আলোচনা হয়েছিল। আজও তাদের মৌলিকই আকিদার বিষয়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা হবে,ইনশাআল্লাহ।
এস্ট্রোথিওলজি! প্রত্যেক স্বঘোষিত মিস্টিক/জাদুকররা যে যে মাজহাবেরই হোক না কেন, এস্ট্রথিওলজিক্যাল ডক্ট্রিন তাদের কমন গ্রাউন্ড। এটা থাকবেই। আল্লাহর রাসূল(স) এমনিই তো বলেননি যে এস্ট্রলজি কালোজাদুবিদ্যারই একটি শাখা।
It was narrated that Ibn ‘Abbaas (may Allaah be pleased with him) said: the Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “Whoever seeks knowledge from the stars is seeking one of the branches of witchcraft…” Narrated by Abu Dawood with a saheeh isnaad
ব্যবিলনে গজিয়ে ওঠা এই জ্যোতিষবিদ্যায় গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান মানুষের উপর প্রভাব ফেলে, বলা হয়। বলা হয়, ওরা নাকি মানুষের জীবনযাত্রা, মানসিকতা এবং ভাগ্য নিয়ন্ত্রন করে! এরূপ বিশ্বাসের কারন সকলে বলতে পারে না। এর গোপন কারন হচ্ছে সেই ওয়াননেসের আকিদা! অর্থাৎ Monism, গ্রহ নক্ষত্র এবং আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যদি একই উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয় এবং উভয়ের মধ্যে উপাদানগত এবং স্বত্ত্বাগত পার্থক্য না থাকে তবে একটি অপরটিতে ফিজিক্যাল প্রভাব ফেলতে পারবে। যেমনটি,পাশাপাশি দুটি চুম্বক একে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। আর যদি এর উপরে মহাবিশ্ব যদি 'ইউনিভার্সাল সি অব কনসাস্নেস' হয় তাহলে তো কথাই নেই।
একটি এনটিটির পরিবর্তন অন্যটিতে স্বাভাবিক পরিবর্তনই আনবে। সাবএটোমিক লেভেলে সব কিছুই এনার্জি ও ভাইব্রেশন, এটা সব অকাল্টিস্টরা জানে ও মানে। তাই যত দূরেই হোক না কেন একটি সেলেস্টিয়াল বস্তু অপরটিতে পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। এখানে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার চেষ্টা করেছে কেউ http://www.askamathematician.com/2012/11/q-how-much-of-a-direct-effect-do-planets-and-stars-have-on-us-is-astrology-reasonable-or-plausable/
আমাদের অস্তিত্বের সাথে তারকাগ্রহ একই উপাদানের সমন্বয়ে সৃষ্ট কথাটি কেমন! এর সরল ব্যাখ্যা এই যে, আমাদের অস্তিত্বের পূর্বে নক্ষত্র - গ্রহসমূহ ধীরে ধীরে গঠিত হয় অনেক বছর ধরে। এরপরে মহাকাশের গ্রহনক্ষত্রেরই কোন না কোন অংশ থেকে ধীরে ধীরে আমাদের অস্তিত্ব যাত্রা শুরু করে। সুতরাং তারকা-গ্রহরা মূলত আমাদেরই Ancestors! আমাদের বাপদাদা!! প্রাচীন এস্ট্রোল্যাট্রিতে প্যাগানরা এটাই বলতো যে আমরা তারকাদের খসে পড়া অংশ, মৃত্যুর পরে পূর্ন রূপে এনলাইটেন্ড হলে সেখানেই(Home)ফিরে যেতে হবে। অর্থাৎ তাদের কাছে পরকাল নেই।
পড়ে দেখুন এস্ট্রোলজাররা কি বলছেঃ http://starseedastrology.tumblr.com
অর্থাৎ উইটোল্ড পুরুসযকোস্কির 'ফলিং স্টারে' বর্নিত, আমাদের ফিজিক্যাল কারেন্ট ফর্মেশনের পূর্বে আমরা তারকারাজি সর্বপরি মহাবিশ্বে সাথে একাকার হয়ে ছিলাম। পরে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে যাই। ঠিক এ কথাটাই বর্নিত আছেঃ
"Before being granted a physical form, we were one with the universe, dissolved in its starry, scintillating waters. This is represented by the 12th house, where universal consciousness links all existing things together as if they were one and the same, despite physical attributions and tangible limits. In the 12th house, we were everything. We had nothing to separate us from everything else; no identity. We had no end — and no beginning....."।
এজন্য এখনো সেই পূর্বপুরুষ তারকাদের গতিবিধি আমাদের তনুমনে প্রভাব ফেলে। সুতরাং এরূপ বিশ্বাসযুক্ত কাফেরদের মধ্যে যারা ক্ষমতাধর এবং বিশ্বের কুফরি শক্তি গুলোর কর্ম ও চিন্তাব্যবস্থার দিকনির্দেশক,তাদের একান্ত চেষ্টা থাকবে এমনভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞানকে ঢেলে সাজানো, যাতে করে আপনাকে নামে এস্ট্রোনমি শিখলেও এস্ট্রলজিই শিখতে হয়(সামনের পর্বে এ বিষয়টি আবারো আসবে ইনশাআল্লাহ)!
এস্ট্রলজিতেও ক্লাসিক্যাল ইলিমেন্টস এর ব্যবহার আছে। এস্ট্রোলজাররা ১২ টি এস্ট্রোলজিক্যাল সাইনকে প্রতিটায় তিনটি করে ৪টি ক্লাসিকাল ইলিমেন্ট এ (পানি,বায়ু,আগুন,পৃথিবী) অন্তর্ভুক্ত করে। মূলত এর ব্যবহার জাদুবিদ্যায়।
একথা উইকিপিডিয়াতেও উল্লিখিত- "These associations are not given any great importance in modern astrology, although they are prominent in modern Western Ceremonial Magic, neopaganism, druidism and wicca"
বিস্তারিত দেখুনঃ https/en.m.wikipedia.org/wiki/Astrology_and_the_classical_elements
একটা বিষয় অবাক করে, আপনি উদয়াচল থেকে অস্তাচল, দক্ষিন থেকে উত্তরে যেদিকেই যান না কেন প্রত্যেক সভ্যতায় এস্ট্রলজির নীতিমালা একই। সুতরাং এক স্থান থেকে এ বিদ্যার জন্ম,অতঃপর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
তারকা ও আমাদের স্বত্ত্বাকে অভিন্ন করতে গেলে এর শুরুর দিকে যেতে হয়। আর সেটা অবশ্যই বস্তু/বিন্দু/উৎস হবার কথা।
যা থেকে সবকিছুর সৃষ্টি।
এখানেই মনিজমের(সৃষ্টি-স্রষ্টার অভিন্ন অস্তিত্বের) শুরু। একে Pandeism বা panentheism শব্দ দ্বারাও প্রকাশ করা হয়।
পড়ুনঃ
https://m.wikipedia.org/wiki/Pandeism
https://m.wikipedia.org/wiki/Panentheism
সুতরাং সৃষ্টি শুরু হয়েছে একক বস্তু/ঘনবিন্দু থেকে। হ্যা, sound like BigBang! ইহুদীদের কাব্বালা যেন বিগব্যাং এরই কথা বলে।
পড়ুনঃ https://m.wikipedia.org/wiki/Tzimtzum
http://www.kosmic-kabbalah.com/big-bang
কাব্বালিস্টরা শক্তভাবেই জাহির করে যে, বিগব্যাং এর কথা কাব্বালায় বলা হয়েছে। পড়ুনঃ http://www.levity.com/alchemy/luria.html
http://www.kabbalah.info/eng/content/view/frame/97305?/eng/content/view/full/97305&main
http://www.revealingscienceofgod.com/index.php?page=anticipations
এমুহূর্তে আলোচ্য বিষয় বিগব্যাং নয় বরং আলোচ্য বিষয় 'এক অস্তিত্ব ' থেকে শূন্য থেকে সৃষ্টি'র কল্পনা!
সৃষ্টির শুরুর পদ্ধতিকে রোজাক্রুশানিজম(Equivalent: Freemason/theistic Satanism/mysticism) 'Cosmic Egg' শব্দ দ্বারা প্রকাশ করে। রোজাক্রুশানিজমের সিক্রেট ডক্ট্রিনে উল্লেখ আছে:"The Germ within the Cosmic Egg takes unto itself Form. The Flame is re-kindled. Time begins. A Thing exists. Action begins. The Pairs of Opposites spring into being. The World Soul is born, and awakens into manifestation. The first rays of the new Cosmic Day break over the horizon.”
দেখুনঃ
http://www.sacred-texts.com/sro/sdr/sdr04.htm
'কস্মিক এগ' বিষয়টি মাথায় রাখুন। সামনে হয়ত আলোচনায় পুনরায় আসবে। ইনশাআল্লাহ।
একক অস্তিত্ব/বিন্দু' থেকে সৃষ্টি হলে বর্তমান সময়ে মহাবিশ্বের পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত এরূপ অবস্থার ব্যাখ্যাও অকাল্টিস্টদের কাছে আছে। আর সেটা হচ্ছে- ক্রমাগত বিবর্তন। আমি সরাসরি মেইনস্ট্রিম সাইন্সের বিবর্তনবাদের আলোচনা করছি না।
বরং এই মতবাদের শেকড়ে যাচ্ছি।
অকাল্টিজমে বিবর্তনবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রত্যেক প্যাগান অকাল্টিস্টরা হার্ডকোর বিবর্তনবাদী হয়। তাদের কাছে এর ব্যপারে জ্ঞান এত সমৃদ্ধ যে আপনার কাছে মনে হবে মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞান অর্ধেক বিবর্তনবাদের শিক্ষা দেয়! বাকিটা গোপন রাখে। থিওসফির প্রতিষ্ঠাতা H.P Blavatsky তার সিক্রেট ডক্ট্রিনে বিবর্তনের ধারাবাহিকতার বিশদ বিবরন দিয়েছেন। তিনি এই বিবর্তন প্রক্রিয়াকে "রুট রেস" শব্দ দ্বারা বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করেছেন। এরমধ্যে আছে লুমেরিয়ান, হাইপারবোরিয়ান, আটলান্টিয়ান, আরিয়ান(আর্য), সিক্সথ রেস ও সেভেন্থ রেস। এক কোষী এ্যামিবা থেকে শুরু করে বিপুল সাইকিক সুপারপাওয়ার সম্পন্ন এনলাইটেন্ড বিং পর্যন্ত সবগুলো ধাপই আছে!
দেখুনঃ https://m.wikipedia.org/wiki/Root_race
https://en.m.wikipedia.org/wiki/The_Secret_Doctrine
ছবিতে যে বিবর্তনবাদী ছবি দেখছেন সেটা এই প্যাগান মিস্টিকদেরই তৈরি। তারা পূর্নবিবর্তন প্রক্রিয়াকে দেখিয়েছে। এবং সর্বোচ্চ চূড়ায় দেখিয়েছে অরোবোরাস বা Self eating snake যার দ্বারা ওরা ইনফিনিট চক্রকে বোঝায়। অর্থাৎ স্টার ডাস্ট থেকে বিবর্তিত হতে হতে মানবে রুপান্তর, অতঃপর সুপারহিউম্যান..Complete Enlightened! এটা শুধু বিশ্বাসই না। অকাল্টিস্টদের অকাল্ট টিচিংয়েও যুক্তিপ্রমান দিয়ে বিবর্তনের প্রমানও বুঝিয়ে দিচ্ছে। এমনকি কনফিডেন্সের সাথে বলছে আমরা এখনো পরিবর্তিত হচ্ছি!
সরাসরি ভিডিও দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=ha_9Omn9obk
সুতরাং, এবার বুঝতে পারছেন Occult knowledge এর কমপ্লেক্স মেকানিক্স এবং বিলিফ! সেক্রিড জিওম্যাট্রি দ্বারা বিবর্তনকে বুঝিয়ে দিল! আর সেই সাথে ব্যাকআপ হিসেবে এ্যালাইড বৈজ্ঞানিক তথ্য তো ছিলোই। আমাদের ডিএনএ'র স্ট্রেইন প্যাটার্ন নাকি ডাবল হেলিক্স থেকে ট্রিপল হেলিক্সে যাচ্ছে। আমরা নাকি অদূর ভবিষ্যতে হলিউডের ফ্যান্টাসটিক ফোরের ন্যায় সুপার হিউম্যানে রুপান্তরিত হতে যাচ্ছি,😆 অনেক অতিমানবিক ক্ষমতাও নাকি এজন্য দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।
বিবর্তনবাদের চিন্তা অতিপ্রাচীন। প্রাচীন ব্যবিলনের ইতিহাসে এর গোড়া পাওয়া যায়। ব্যবিলনের গিলগামেশের মহাকাব্যে বিবর্তনবাদী চিন্তার উল্লেখ পাওয়া যায়। এরপরে পিথাগোরিয়ান স্কুল অব থট দ্বারা ইনফ্লুয়েন্সড বিখ্যাত অকাল্টিস্ট/দার্শনিক Anaximander কে
সর্বপ্রথম সুস্পষ্টভাবে বিবর্তনকে বর্ননা করতে দেখা যায়। এনাক্সিম্যান্ডার ছিলেন যাদুবিদ্যার ক্ল্যাসিক্যাল চার ইলিমেন্টের(পানি,বায়ু, আগুন, পৃথিবী) একজন অন্যতম প্রবক্তা। তার সময়টাতে তিনি একে ফিজিক্স বলতেন।তিনিই প্রথম বলেছিলেন যে, পৃথিবী মহাশূন্যে ভাসছে! তিনি অলৌকিকতামুক্ত মেকানিক্যাল আকাশ ব্যবস্থার বিশদ বর্ননা দেন। সেই সাথে আংশিকভাবে পানিচক্রেরও বর্ননা দিয়েছেন। বিবর্তনবাদের কথক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। তিনি বলতেন সকল প্রাণীজগৎ এর পূর্বাবস্থা হচ্ছে মাছ।
৩য় শতাব্দীর রোমান লেখক Censorinus তার ব্যপারে বলেন:
"Anaximander of Miletus considered that from warmed up water and earth emerged either fish or entirely fishlike animals. Inside these animals, men took form and embryos were held prisoners until puberty; only then, after these animals burst open, could men and women come out, now able to feed themselves". [সূত্র:উইকিপিডিয়া]
পিথাগোরিয়ান অকাল্টিজমে বিশ্বাসী Empedocles একই বিবর্তনবাদের কথা বলে গেছেন। তিনিই ন্যাচারাল সিলেকশনের প্রথম প্রবক্তা।কস্মোজনী সেকশন পড়ুনঃ https/en.m.wikipedia.org/wiki/Empedocles
লুক্রেটিয়াস নামের আরেক গ্রীক দার্শনিক ঈসা(আ) এর জন্মের ৯৯ বছর পূর্বে আসেন তিনিও বিবর্তনের জ্ঞান বিতরন করে গেছেন।
সুতরাং বুঝতে পারছেন বিবর্তনবাদের গপ্প কোথা থেকে এসেছে।
চারটি ক্লাসিকাল ইলিমেন্ট বা প্লেটোনিক সলিড বা ফান্ডামেন্টাল বিল্ডিং ব্লক তথা যাদুকরদের চারটি উপাদান ও 'অপবিত্র জিওমেট্রি এবং বিবর্তনবাদ এর কম্বিনেশন আরো ভাল করে বুঝতে চাইলে পড়ুনঃ
https://buddyhuggins.blogspot.in/2012/08/spirit-science-18-four-elements.html?m=1
অপবিদ্যার জ্ঞানে 'জ্ঞানী' যাদুকরদের অপর এক বিশ্বাস- মহাবিশ্ব সম্পূর্ন নাম্বার এবং কমপ্লেক্স জিওমেট্রিক প্যাটার্ন দ্বারা তৈরি। আর এসবের বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে চারটি প্লেটোনিক সলিড তথা পানি, বায়ু,আগুন ও পৃথিবী। একদম সস্তা তান্ত্রিক-যাদুকররাও এর সাথে ভালভাবেই পরিচিত।
আগের পর্বেই বলেছিলাম অকাল্ট নলেজ অনুযায়ী এই রিয়েলিটি ইল্যুশন। ফিজিক্যাল সকল ম্যাটারই কালেক্টিভ কনসাসনেসের অংশ। ইউনিভারসাল কালেক্টিভ কনসাসনেসের ড্রিম(বা হলোগ্রাফিক সিমুলেশন) বা কল্পনাই হচ্ছে আমাদের রিয়েলিটি। ওরা এও বলে যে, এই ইল্যুশন-রিয়েলিটির ম্যাটারের ক্ষুদ্রতম স্তরটি ইনফরমেশন দ্বারা পরিপূর্ণ। এদের কেউ বলে, একদম বাইনারী ডিজিট দ্বারা পরিপূর্ণ। সেক্রিড জিওমেট্রি, ফিবোনাক্কি সিকোয়েন্স, গোল্ডেন রেশিও ইত্যাদির কমপ্লেক্স স্ট্রাকচারের সমন্বয়ে সুসংগঠিত! বাইনারী ডিজিটে ভরা রিয়েলিটির উদাহরণ ম্যাট্রিক্স মুভি।
না বুঝতে পারলে চিত্রটি দেখুনঃ
দ্য ম্যাট্রিক্স একটি pure Occult movie! যারা দেখেছে অধিকাংশ মানুষই সেটার ম্যাসেজ বুঝতে পারেনা,কেননা তাদের কাছে Occult Belief এর ব্যপারে কোন জ্ঞান নেই। একারনে শুধু একশ্যনগুলোই ইঞ্জয় করে কিন্তু এতে কি ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে, তা ডিকোড করতে পারেনা।
পড়ুনঃ
http://disinfo.com/2015/08/esoteric-symbolism-hidden-meaning-uncovered-matrix-film/
আজ হলিউডের সিংহভাগ চলচ্চিত্র নির্মাতারাই বিভিন্ন বামপন্থার পথিক। ৯৫% ফিল্মেই এসোটেরিক ইনিসিয়েশন আছে। কখনো স্যাটানিজম, কখনো অকাল্ট ম্যাসনিক সিম্বলিজম, কখনো অন্যান্য Mystical belief কে প্রমোট করে। যাহোক, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ।
ম্যাট্রিক্স মুভির পরিচালক লিলি ও লানা ওয়াচোস্কি। দুজনই ট্র্যান্সজেন্ডার! ওদের পিতা একজন কট্টর নাস্তিক। মা এক্স ক্যাথলিক এবং বর্তমানে শামানিস্ট 😆! এজন্যই 'দ্য ম্যাট্রিক্স' এরকম শামানিস্টিক অকাল্ট বিলিভবেজড ফিল্ম!
https://en.m.wikipedia.org/wiki/The_Wachowskis
New Age গুরু দীপক চোপরা ইনফরমেশন বেজড কনসাস সিমুলেটেড রিয়েলিটির ব্যপারে কিছু বলছেন। দেখুনঃ
http://youtube.com/watch?v=cf_x5Vz-bRo
আগের পর্বে উল্লেখ করেছিলাম কেন অকাল্টিস্টদের মতে 'ল অব এট্রাকশন কাজ করবে। এ বিষয়ে অবশ্য আলাদা আর্টিকেলও আছে। আরো দেখুন, সিমুলেটেড ইল্যুশন রিয়েলিটি বা ম্যাট্রিক্স বা কালেক্টিভ কনসাসনেসে আকর্ষনের নীতি কিভাবে কাজ করে।
https://m.youtube.com/watch?v=795NcKABpUM
.
যাদুবিদ্যা ও এস্ট্রলজির থিওলজিকাল শিক্ষার বিখ্যাত চ্যানেল 'কই ফ্রেস্কো' কি বলছে দেখুন...! সত্যি সত্যি Red পিল গ্রহন করবেন না আবার। সাবধান!
https://m.youtube.com/watch?v=OxsLVwM9ewQ
এ ব্যপারে আরেকটি মিস্টিকদের চ্যানেলে(এস্ট্রো সোল সিন) দেখুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=FKhtzRT6Pdg
Reality= illusion(মায়া)/consciousness। এই ধারনা সবার প্রথম আসে ইস্টার্ন অকাল্টিজম থেকে। বৌদ্ধ ও হিন্দুদের কিছু গ্রন্থে এর ব্যপারে উল্লেখ আছে। https/en.m.wikipedia.org/wiki/Maya_(illusion)
Monier William এর মতে মায়া হলো- "wisdom and extraordinary power" in an earlier older language, but from the Vedic period onwards, the word came to mean "illusion, unreality, deception, fraud, trick, sorcery, witchcraft and magic".
একই (ব্যবহারিক)অর্থ তান্ত্রিক বৌদ্ধদের মতেও।(Wikipedia)
আর এটার উপর ভিত্তি করে অকাল্টিস্ট HP. Blavatsky তার সিক্রেট ডক্ট্রিন(১৮৮৮) কিতাবে রিয়েলিটির অভিন্ন ব্যাখ্যা দেন, যা আজ সকল এসোটেরিস্টদের মধ্যে কমন।
দেখুনঃ https://en.m.wikipedia.org/wiki/The_Secret_Doctrine এর "Cosmic evolution: Items of cosmogony" সেকশনে ৪ ও ৫ নং।
কাব্বালাঃ
__________
বাবেল শহরে হারুত মারুত ফেরেশতারা আল্লাহ নির্দেশে পরীক্ষাসরূপ যে যাদুবিদ্যা নিয়ে এসেছিলো এবং শয়তানরা যে যাদুবিদ্যার কিতাব রচনা করে হযরত সুলাইমান আলাইহিসালাম এর চাপিয়েছিলো, তা তৎকালীন ইহুদীরা গ্রহন করে চর্চা করা শুরু করে। সে এক লম্বা ঘটনা। তাদের একটা অংশ বলতো, যে সুলাইমান (আ) কুফরি করেছিল এবং তার শক্তিই হচ্ছে এই গুপ্তবিদ্যা অপর এক অংশ বলত সুলাইমান (আ) আল্লাহর নবী ঠিকই এবং তার ক্ষমতার উৎস হচ্ছে এই গুপ্তবিদ্যা। অতএব, ইহুদীরা খুব আগ্রহের সাথেই সেসব গ্রহন করে চর্চা করত। তারা তাওরাতের অনুসরণ না করে যাদুবিদ্যার অনুগামী হয়ে পড়ে।
ইহুদীদের যাদুবিদ্যা চর্চার বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ
"তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে। তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত"। (২:১০২)
[তাফসীর বিস্তারিত জানুন তাফসীর ইবনে কাসীর বা তাফসীর আত্ব তাবারী থেকে]
বাবেল শহরে যে কাব্বালা বিদ্যার অরিজিন সেটা পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম কাব্বালা গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 'Bnei Baruch kabbalah institute' এর founder র্যাবাই মিকাঈল লেইটম্যানের মুখ থেকেই শুনুনঃ
https://m.youtube.com/watch?v=pCXAvRoE2OY
মজার একটি বিষয় হচ্ছে, উনি নিষেধ করছেন প্রাচীন বাবেল শহর থেকে আসা এই বিদ্যাকে যাদুবিদ্যা বলতে। এটা নাকি 'সাইন্স'! যা অনেক বছর গোপন অবস্থায় ছিল।এই কাব্বালিস্টিক সাইন্সের পার্স্পেক্টিভে গবেষনার জন্য অনেক ফিজিসিস্ট/মেডিসিন/সাইকোলজিস্টরা নিয়োজিত আছেন! তিনি বলেন, "এখন এই (যাদু)বিদ্যার ইভলভড হচ্ছে কারন, এটা আমাদের দরকার। এই কাব্বালায় আছে প্রকৃতির নীতি গুলো,আমরা কিভাবে সেটা কাজে লাগাতে পারি এবং মানুষের জীবনের সাথে প্রকৃতির হার্মোনি তৈরি করতে পারি"।
উনি আরো বলেন, আমাদের প্রয়োজন নতুন ধরনের অর্ডার বা আইন যা হবে গ্লোবাল ইন্টিগ্রাল! তিনি বলেন," কাব্বালায় সংযুক্ত হবার সাথে সাথে আমরা দেখছি মহাবিশ্বের সকল বস্তুই ট্রান্সপারেন্ট বা স্বচ্ছ, এবং আমরা দেখছি ওই শক্তিকে যা মহাবিশ্বের চালিকাশক্তি, সেটা কি করে মহাবিশ্বে চালিকাশক্তিরূপে কাজ করছে। এটা অনেকটা একটি এমব্রয়ডারি করা কাপড়ের ন্যায় যার একদিক দিয়ে আপনি ছবির ন্যায় দেখছেন, অপর দিক দিয়ে দেখা যায় এর সুতার বুনন। এখানে কাব্বালা যেটা করে সেটা হলো,কাব্বালা আমাদেরকে ওই বুনন সমূহ যা পৃথিবীর ছবি(রিয়েলিটি) তৈরি করছে তা জানতে সাহায্য করে এবং কিভাবে আমরা এই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সঠিক ভাবে ছবিকে(রিয়েলিটিকে) আটকে(নিয়ন্ত্রন করতে) দিতে পারি।...."!
তিনি শেষাংশতে বিভিন্ন সমস্যার সাথে সাথে 'গ্লোবাল টেররিজম' যা প্রকৃতি চায় না সেটার ব্যপারে ব্যবস্থা নিয়ে ন্যাচারের সাথে হার্মোনি আনতেই কাব্বালার উত্থান। গ্লোবাল টেররিজম বলতে এই ইহুদী কি বুঝিয়েছে সেটা বুঝদারদের জন্য ইশারাই কাফি।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bnei_Baruch
এই প্রথম পর্যায়ে ইহুদীদের মধ্যে যাদুবিদ্যা খুব গোপণীয়ভাবে প্রচলিত ছিল। বলা হয় প্রাচীন সময়কার যাদুবিদ্যার ট্রেডিশনের নাম মার্কাভা।ঈসা(আ) এর জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি ইহুদীরা প্রকাশ্যে যাদুবিদ্যার জ্ঞান চর্চা করত। অল্প কিছু খুবই উচুমানের র্যাবাইদের কাছে এই রহস্যময় যাদুবিদ্যার জ্ঞান থাকত। সেসব ওরাল ট্রেডিশনে এক গুরুর থেকে শিষ্যের কাছে পৌছতো। ওদের ভাষায় কাব্বালাকে 'হোয়াইট ম্যাজিক'ও বলা হতো। "Practical Kabbalah properly involved white-magical acts, and was censored by kabbalists for only those completely pure of intent. "[Wikipedia]
সুতরাং ওদের কাছে এই যাদুবিদ্যাটি বৈধরূপে ছিল। ওদের যাদুচর্চা ইহুদী কমিউনিটির মধ্যে থাকার অবস্থা ১৩ শতক পর্যন্ত ছিল। এর পরেই তাদের গুপ্তবিদ্যা প্রকাশ্যে চলে আসতে শুরু করে। মোসেস ডেলিওন নামের এক র্যাবাই 'জোহার' নামের একটা বই ১৫ শতকে রচনা করেন। জোহার শব্দের অর্থ Radiance! এটা এরামেইক ভাষায় লেখা হয় যাতে কাব্বালার বেশ কিছু কুফরি মতাদর্শ লিপিবদ্ধ হয়। এতে পৃথিবী গোলাকৃতি,বিগব্যাং ও বিবর্তনবাদের ব্যপারেও উল্লেখ আছে। পরবর্তীকালে এটাই কাব্বালার একটি বেসিক কিতাবে রুপান্তরিত হয়।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Zohar
রেনেসাঁ বিপ্লবের সময় থেকে কাব্বালা ইহুদীদের বাহিরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। নস্টিক খ্রিষ্টান ও হার্মেটিক যাদুবিদ্যার্থীরা কাব্বালিস্টিক টেক্সট গুলো হিব্রু থেকে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ শুরু করে। সকল অকাল্টিস্টরা একে "Universal Ancient Wisdom" বলে ঝাপিয়ে পড়ে কাব্বালার মধ্যে। তৈরি হয় 'হার্মেটিক ক্কাবালা'! যাদুবিদ্যা,আলকেমি আরো ব্রড স্কেলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। মানুষের মধ্যে ইহুদীদের যাদুবিদ্যার জ্ঞানকে এত বছর চেপে রাখার বিষয়টা নেতিবাচক ধারনা দেয়। মানুষ জানতে শুরু করে Golem এর মত বিষয় গুলো। কাব্বালার প্রভাব ইহুদীদের তালমূদেও ব্যাপক হারে রয়েছে।
কাব্বালা তৎকালীন জ্ঞান- বিজ্ঞান ও দর্শনে চরম প্রভাব ফেলতে শুরু করে। বর্তমানের স্বীকৃত অনেক বিজ্ঞানীও কাব্বালার অন্ধকার জ্ঞানের সমুদ্রে ডুব দিয়েছিলেন।সেসব সামনে আলোচনায় আসবে। কাব্বালার ব্যপারে দাবী ওঠে যে এটার সূচনা হয় 'জান্নাতুল আদন' থেকে। "When read by later generations of Kabbalists, the Torah's description of the creation in the Book of Genesis reveals mysteries about God himself, the true nature of Adam and Eve, the Garden of Eden(Hebrew: גַּן עֵדֶן), the Tree of Knowledge of Good and Evil (Hebrew: עֵץ הַדַּעַת שֶׁל טוֹב וְרַע), and the Tree of Life (Hebrew: עֵץ חַיִּים)"[Wikipedia]
কাব্বালায় 'ট্রি অব লাইফের' কনসেপ্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়। কাব্বালায় কেউ প্রবেশ করতে চাইলে সর্বপ্রথম তাকে এই শিক্ষা দ্বারাই শুরু করা হয়। দেখুনঃ https://en.m.wikipedia.org/wiki/Tree_of_life_(Kabbalah)
'সাজারাতুল খুলদ' বা 'Tree of Life'(অনন্ত জীবন প্রদায়ী বৃক্ষ)। আল্লাহ বলেনঃ
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা? [২০:১২০]
সুতরাং আশা করি বুঝতে পারছেন মেটাফোরিক্যালি ইহুদীদের এই কাব্বালা কোথাকার কথা বলছে। অর্থাৎ কাব্বালা এমনই জ্ঞান যা মানুষকে অনন্ত জীবনের এবং ভালমন্দের আকল সৃষ্টিকারী বিদ্যা দেয়। যার রাস্তা জান্নাতে আমাদের আদি পিতামাতাদের কাছেও শয়তান বাতলে দিয়েছিল। সেটা কতখানি সত্য ছিল, তা আপনারা ভালকরেই জানেন। একই রকমেরই জিনিস কাব্বালাতেও দিচ্ছে কিন্তু ভিন্নভাবে।। বস্তুত, শয়তান মানুষকে মিথ্যা ওয়াদাই দেয়।
কাব্বালিস্ট র্যাবাইরাও জনসাধারনকে ইবলিসের মতই বলে এই ট্রি অব লাইফের জ্ঞান অর্জন করলে লাভ করবে এঞ্জেলিক সাইকিক এবেলিটি,এই জ্ঞান পেলেই জানতে পারবে কিভাবে evolve হয়ে complete Enlightenment অর্জন করবে! Be god of yourself! ছবিতে mysticism এর বিবর্তনের চিত্র দেখছেন। পূর্বেই উল্লেখ করেছিলাম র্যাবাই লেইটম্যান এর কথা। তিনি এটাও বলেছিলেন, কাব্বালা একটি গ্লোবাল ইকোনমিক পলিসির কথাও শেখায়, আরো দেয় নতুন গ্লোবাল আইন বা সংবিধান (নিউ অর্ডার)। হয়ত আপনারা জানেন সকল মিস্টিক, জায়োনিস্টরা একটি Utopia(New World Order) এর স্বপ্ন দেখে। অর্থাৎ একটি অনন্ত রাজত্বের।
কমপ্লিট এনলাইটমেন্ট/এঞ্জেলিক বিং এ ট্রান্সফর্মেশন,অনন্ত রাজ্যের আশা প্রভৃতি সকল প্যাগান যাদুবিদ্যা অন্বেষী কাফেরদের এক অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা । এজন্যই মিকাইল লেইটম্যান অন্যান্য স্পিরিচুয়ালিস্ট কমিউনিটির মত ইএসপি(এক্সট্রাসেন্সরি পার্সেপশন),সাইকিক এবিলিটির(অতিমানবীয় ক্ষমতার) প্রমোট করছেন বিভিন্ন যুক্তি তর্কের দ্বারা। দেখুনঃ http://youtube.com/watch?v=vOOBNFwVZUs
শয়তানও একই প্রতিশ্রুতি প্রথম মানব মানবীদের দিয়েছিল। আল্লাহ বলেনঃ
فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَاتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَاكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَـذِهِ الشَّجَرَةِ إِلاَّ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ الْخَالِدِينَ
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী (7:20)
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা? [২০:১২০]
দেখুনঃ https://www.rabbidavidcooper.com/cooper-print-index/2010/11/7/2364-the-mystical-garden-of-eden.html
কাব্বালায় আকিদাগত সেসব শিক্ষাই দেওয়া হয়, যা পূর্বে সংক্ষেপে আলোচনা করেছি। ওরাও সর্বেশ্বরবাদ (ওয়াহদাতুল উজুদ) পূর্নজন্মবাদে(রিইনকারনেশন) বিশ্বাসী। ওদের মধ্যেও ধ্যানচর্চা ব্যাপকভাবে রয়েছে।ওরা ধ্যানকে ওদের ভাষায় হিতবোনেতুত বলে। দেখুনঃ https/en.m.wikipedia.org/wiki/Hitbonenut
ওয়াহদাতুল উজুদকে যারা প্রমোট করে এবং বিশ্বাস করে, তাদের উচিৎ এই কাব্বালিস্টের কাছে থেকে তাদের কুফরি আকিদা আরো গভীরভাবে শেখা এবং নিকৃষ্টতম কাফের হয়ে জাহান্নামে যাওয়া অথবা তওবা করে ফিরে আসা। সত্যিই 'এক অস্তিত্বের' ব্যপারে ব্যাখ্যা আমি কাব্বালিস্ট ইহুদীদের চেয়ে প্রফাউন্ড আর কোথাও পাইনি।দেখুনঃ http://youtube.com/watch?v=vPP0Mt-RO8M
ওরা সাধারন সকল অকাল্টিস্টদের ন্যায় বলে, যে কেউ যেকোন ধর্মে থেকে বা ধর্ম পালন না করে সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযুক্ত হতে পারে। এর কারন সেই মনিজম বা ওয়াহদাতুল উজুদ। অর্থাৎ সে যে ধর্মেরই হোক না কেন সৃষ্টিগতভাবে সে স্রষ্টার সাথেই যুক্ত আছে(নাউজুবিল্লাহ)।
কাব্বালা নন জিউইশ কমিউনিটিতেও অকাল্টিজমের সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন অকাল্ট কমিউনিটির সুবিধার্থে কাব্বালার র্যাবাই গুরুদের মধ্যে ইউনিভার্সালিস্টরা বিভিন্ন দেশে কার্যালয় খুলেছে। এখনো ইহুদীদের কিছু গ্রুপ ৪০ বছরের নিচের কাউকে কাব্বালার অপবিদ্যার কাছে ঘেষতে দেয় না। কিন্তু অধিকাংশ র্যাবাইরা এখন বলছে, সব বয়সীদের জন্য এটা উন্মুক্ত করা প্রয়োজন। অ-ইহুদী সংগঠনের মধ্যে বিভিন্ন রহস্যবাদী আধ্যাত্মিক দল, ফ্রিম্যাসন, রোজাক্রুশানিজম, গোল্ডেন ডন, নিউএজ ইত্যাদির কাছে কাব্বালা সহায়ক জ্ঞানের উৎস।
"A third way are non-Jewish organisations, mystery schools, initiation bodies, fraternities and secret societies, the most popular of which are Freemasonry, Rosicrucianism and the Golden Dawn, although hundreds of similar societies claim a kabbalistic lineage."[Wikipedia]
কাব্বালা আমাদেরকে পূর্বোল্লিখিত রিয়েলিটির ব্যপারে অভিন্ন অকাল্ট ধারনা দেয় যে, এটা একটা ইল্যুশনাল ম্যাট্রিক্স। তাছাড়া প্যারালাল ইউনিভার্স, ম্যাটারের এটমিক নোশন এরও ধারনা দেয়। এর বিখ্যাত গ্রন্থ জোহারে উল্লিখিতঃ "The Whole world roll around like a ball,so that some people are above and some are below"[Zohar]।
וּבְסִפְרָא דְּרַב הַמְנוּנָא סָבָא, פָּרִישׁ יַתִּיר, דְּהָא כָּל יִשׁוּבָא מִתְגַּלְגְּלָא בְּעִגוּלָא כַּכַּדּוּר, אִלֵּין לְתַתָּא, וְאִלֵּין לְעֵילָּא, וְכָל אִינּוּן בִּרְיָין מְשַׁנְיָין בְּחֶזְוַוְייהוּ מִשִׁנוּיָא דַּאֲוִירָא. כְּפוּם כָּל אֲתַר וַאֲתַר, וְקַיְימִין בְּקִיּוּמַיְיהוּ כִּשְׁאָר בְּנֵי נָשָׁא.
English: Rav Hamnuna Saba (the elder) explains further in his book that the entire inhabited land rolls around like a ball, so that some are up and some are down. TO WIT, THE CREATURES AROUND THE GLOBE ARE OPPOSITE EACH OTHER AND THE SEVEN SECTIONS OF THE GLOBE ARE SEVEN LANDS. (The Seven Continents) All of the creatures OF SIX OF THE LANDS are different in their appearance according to the difference in the atmosphere in each place, and they live like any other man.
[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 141]
וְעַל דָּא אִית אֲתַר בְּיִשּׁוּבָא, כַּד נָהִיר לְאִלֵּין, חָשִׁיךְ לְאִלֵּין, לְאִלֵּין יְמָמָא, וּלְאִלֵּין לֵילְיָא. וְאִית אֲתַר דְּכוּלֵיהּ יְמָמָא, וְלָא אִשְׁתְּכַח בֵּיהּ לֵילְיָא, בַּר בְּשַׁעֲתָא חֲדָא זְעֵירָא. וְהַאי דְּאָמַר בְּסִפְרֵי קַדְמָאֵי, וּבְסִפְרָא דְּאָדָם הָרִאשׁוֹן הָכִי הוּא.
English: There is an inhabited place, so that when there is light on some - ON THAT SIDE OF THE GLOBE - it is dark for others ON THE OTHER SIDE OF THE WORLD. THUS when it is day for one group, it is night for the others. There is an inhabited place where there is day only and no night, save for a little while. (Antarctica)
[English Zohar Vayikra Volume 14 vs. 142]
" The world is as round as a ball. When the sun comes out in the east, it goes in a circle until it reaches below the earth, and then it becomes evening. At that time, it gradually descends by circles of certain steps, descending and circling the whole earth and the whole world.
When the sun comes down and is covered by it, it grows dark upon us and lights up to those who are dwelling below us, those who are on the other side of the earth, below our feet. And so it grows dark on one side and shines on the other side, below it, following the world and circle of the earth, round and round.”
[New zohar, beresheet:619-620]
“That the world is round, as it is said in the Jerusalem Talmud of Alexander of Macedon, who rose up and up until he saw the world as a ball and the sea as a bowl; ‘the sea’ is the ocean which surrounds the whole world.”
[Tosafot on tractate Avodah Zarah 41a, s.v.k’kadur]
কাব্বালা শিক্ষক বিলি ফিলিপ্স বলেন, "জোহার আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে রিয়েলিটি ১০টি ডাইমেনশন দ্বারা তৈরি। একপার্সেন্ট আমরা দেখছি এবং ৯৯%ই আমাদের থেকে গোপন।" কাব্বালার ডাইমেনশনের শিক্ষা ট্রি অব লাইফের চার্টেই রয়েছে।
বিস্তারিত দেখুনঃ http://www.kabbalah.info/eng/content/view/frame/86657?/eng/content/view/full/86657&main
http://www.zohar.com/article/10-dimensions-reality
http://youtube.com/watch?v=4mlKd1BA6BM
http://youtube.com/watch?v=0drT_L4G8w8
সরাসরি যাদুবিদ্যার ক্ষেত্রে কাব্বালা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় 'নজর'ভিত্তিক যাদু। ওরা গতানুগতিক সকল প্যাগান অকাল্টিস্টদের মত রিয়েলিটিকে অবজারভারকেন্দ্রিক তথা নিউথটের 'ল অব এট্রাকশন'কে মানে। অর্থাৎ রিয়েলিটিতে ম্যাটারের পরিবর্তনে অবজারভার দায়ী থাকে বলে বিশ্বাস করে।এ নিয়ে প্রথম পর্বে বিস্তারিত ভেঙ্গে আলোচনা হয়েছিল।কয়েক লাইনে আবারো উল্লেখ করি, প্যাগান যাদুকররা বিশ্বাস করে, প্রকৃতির সবকিছুই বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি ও ভাইব্রেশনের এনার্জি। সলিডিটি বলে কিছু নেই।
সাবএটমিক পর্যায়ে সবই এনার্জি। আর ইউনিভার্সের গোটা এনার্জি ফিল্ডকে একত্রে বলা হয় কালেক্টিভ কনসাসনেস। এই ইউনিভার্সাল কনসাসনেসের ইল্যুশন হচ্ছে রিয়েলিটি যা প্রকৃতিকে বিভিন্ন ম্যাটারে আলাদাভাবে রেখেছে। সাবএটমিক পর্যায়ে মানুষের চিন্তা বা Thoughtও এনার্জি। তাই Human Consciousness এর thought Energy(অবজারভার) , universal unified energy field এর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য রিয়েলিটি একদম ভিত্তিগত পর্যায়ে অবজারভার দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।
https://kabbalah.com/en/concepts/consciousness-creates-reality
https://kabbalah.com/en/concepts/476-creating-our-reality
এমতাবস্থায় নিয়ন্ত্রনকরতে সক্ষম যারা তারা সিদ্ধিলাভকারী(এনলাইটেন্ড)। কাব্বালিস্টরা অবজারভারের শুধু নযরকে ব্যবহার করে হত্যা করার বিদ্যাও শেখায় এবং ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রন করা শেখায়। ইসলামে আমরা নযর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে 'বদনযর'(Evil Eye) বলে থাকি।[ওদের নিষিদ্ধ কুফরি আকিদা দ্বারা বদনযরের মেকানিক্সকে বুঝতে চাইলে কুফরের দিকে ধাবিত হবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে,যা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করি]
কাব্বালার(হার্মেটিক ট্রেডিশন) ব্যপারে স্পিরিট সাইন্স চ্যানেলঃ
https://m.youtube.com/watch?v=DZnUXa4CIa4
https://m.youtube.com/watch?v=7D-W9XyJ_BA
https://m.youtube.com/watch?v=eQx4q9nBonE
কাব্বালার ইতিহাসের ব্যপারে বিস্তারিতঃ
en.m.wikipedia.org/wiki/Kabbalah
https://m.youtube.com/watch?v=ibuSPtXG5dg
http://www.conspiracyschool.com/kabbalah
http://www.howardnema.com/…/secrets-of-the-kabbalah-ancien…/
https://m.youtube.com/watch?v=mtslmfYg3bI
https://m.youtube.com/watch?v=DQ3ByjMtmx4
বিঃদ্রঃ সঙ্গত কারনে কাব্বালার ভেতরের এসোটেরিক অপবিদ্যার স্বরূপ বিস্তারিত বা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা বিরত থাকছি। উপরে অনেক তথ্যের ওয়েব লিংক, ডকুমেন্টারি ভিডিও ইত্যাদি উল্লেখ করেছি। সাধারনকে কৌতূহল প্রশমনের অনুরোধ করি। যারা তাওহীদের গভীর জ্ঞান রাখে না তাদের জন্য এই ইত্তেহাদের জগৎ নিয়ে ঘাটাঘাটি করাটা মহাবিপদের। এসব ইল্ম কাফের করে দিতে সমূহ সম্ভাবনা রাখে। মনে রাখা উচিৎ মধ্যযুগে অনেক মুসলিম নামধারীরা এসব বিদ্যার চর্চা করেই 'বিজ্ঞানী' নাম কামিয়েছিল, কিন্তু তারা ভেতরে ছিল কাফের।
অনেকে এখনো বুঝতে পারছেন না কেন এই বামপন্থী আধ্যাত্মবাদ ও যাদুবিদ্যার আলোচনা গুলো বার বার আসছে। অতিসত্বর বুঝতে পারবেন। যখন কোন মানুষ মদ ও অন্য সাধারন পানীয় এর মধ্যে তফাৎ করতে না পারে, তখন সে উভয়কেই হালাল মনে করে গ্রহন করে। এমতাবস্থায় তাকে আচমকা এলকোহলিক পানীয় বর্জন করতে বললে সে উলটো বেপরোয়া হয়ে যায় এবং তা উলটো আঁকড়ে ধরতে সংকল্প করে। প্রচলিত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এসব আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। এই পর্ব ও ১ম পর্ব সামনে আসন্ন বিষয়গুলো বুঝতে ও সংযোগ করতে সাহায্য করবে।
এখন যারা দম্ভের সাথে বিজ্ঞানকে স্বতঃসিদ্ধ গ্রহনযোগ্য সত্যরূপে মানে,বিশেষ করে এদের মধ্যে যারা নিজেদের 'মুসলিম' দাবি করে, তাদের মুখের অবস্থা ভাবছি যখন হক্ক ও গোমরাহি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই অধিকাংশ মানুষই পথভ্রষ্টতা ও শয়তানের ফাঁদেই আটকে আছে, অথচ ভাবে তাদের অবস্থানই শুদ্ধ। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
Sources:
১.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/chakra-third-eye-yoga_10.html
২.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_29.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_10.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_8.html
৩.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html
৪.https://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc
https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=wrfOo7m6wlo
৫.https://m.youtube.com/watch?v=LtT6Xkk-kzk
৬.https://m.youtube.com/watch?v=AYDgmpiE-U0
৭.https://m.youtube.com/watch?v=Gqij_2kjJcg
https://m.youtube.com/watch?v=wDJIsscCoGE
৮.https://m.youtube.com/watch?v=Xy9-AM6QE70
৯.https://m.youtube.com/watch?v=3FqmVITeiwQ
১০.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_41.html
১১.https://steemit.com/life/@ericvancewalton/altered-states-of-conscious-my-fifth-float-in-the-sensory-deprivation-tank
https://journals.sagepub.com/doi/pdf/10.2190/IC.29.2.d
২.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_29.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/law-of-attraction_10.html
https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_8.html
৩.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_30.html
৪.https://m.youtube.com/watch?v=qb-PgFwPwhc
https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=wrfOo7m6wlo
৫.https://m.youtube.com/watch?v=LtT6Xkk-kzk
৬.https://m.youtube.com/watch?v=AYDgmpiE-U0
৭.https://m.youtube.com/watch?v=Gqij_2kjJcg
https://m.youtube.com/watch?v=wDJIsscCoGE
৮.https://m.youtube.com/watch?v=Xy9-AM6QE70
৯.https://m.youtube.com/watch?v=3FqmVITeiwQ
১০.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/blog-post_41.html
১১.https://steemit.com/life/@ericvancewalton/altered-states-of-conscious-my-fifth-float-in-the-sensory-deprivation-tank
https://journals.sagepub.com/doi/pdf/10.2190/IC.29.2.d
https://bigthink.com/21st-century-spirituality/the-altered-states-of-sensory-deprivation
১২.https://m.youtube.com/watch?v=kRF9n7U1G3w
১৩.https://m.youtube.com/watch?v=SQjd535lLx0
https://m.youtube.com/watch?v=kiAc408Yk78
১৪.https://m.youtube.com/watch?v=Z1HJVA7BjDU
১৫.https://m.youtube.com/watch?v=VCeNUH4RY0M
https://m.youtube.com/watch?v=np_to6OghXE
https://m.youtube.com/watch?v=WYQwYrUMnrI
https://m.youtube.com/watch?v=pgj_b_pW3Zw
https://m.youtube.com/watch?v=22vOkSWiNwQ
১৬.https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/hashem-al-ghaili-occult-worldview_28.html
১৭.https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=5uGtTamBNUA
১৮.https://en.m.wikipedia.org/wiki/Altered_state_of_consciousness
১৯.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/near-death-experiencende_10.html
২০.https://smokeymirror.com/magic-mushrooms-or-ancient-aliens/
https://www.evolveandascend.com/2017/02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extraterrestrials/
https://patch.com/california/santacruz/can-psychedelic-drugs-help-us-speak-to-aliens
https://www.huckmag.com/perspectives/activism-2/psychonauts-drugs-aliens/
https://grahamhancock.com/51560-2/
https://qz.com/1196408/scientists-studying-psilocybin-accidentally-proved-the-self-is-an-illusion/
https://www.mcgilldaily.com/2017/10/as-above-so-below
১২.https://m.youtube.com/watch?v=kRF9n7U1G3w
১৩.https://m.youtube.com/watch?v=SQjd535lLx0
https://m.youtube.com/watch?v=kiAc408Yk78
১৪.https://m.youtube.com/watch?v=Z1HJVA7BjDU
১৫.https://m.youtube.com/watch?v=VCeNUH4RY0M
https://m.youtube.com/watch?v=np_to6OghXE
https://m.youtube.com/watch?v=WYQwYrUMnrI
https://m.youtube.com/watch?v=pgj_b_pW3Zw
https://m.youtube.com/watch?v=22vOkSWiNwQ
১৬.https://aadiaat.blogspot.com/2019/05/hashem-al-ghaili-occult-worldview_28.html
১৭.https://m.youtube.com/watch?v=jgxu3GBhnSk
https://m.youtube.com/watch?v=5uGtTamBNUA
১৮.https://en.m.wikipedia.org/wiki/Altered_state_of_consciousness
১৯.https://aadiaat.blogspot.com/2018/12/near-death-experiencende_10.html
২০.https://smokeymirror.com/magic-mushrooms-or-ancient-aliens/
https://www.evolveandascend.com/2017/02/21/are-magic-mushrooms-a-gateway-to-a-different-world-elves-spirits-and-extraterrestrials/
https://patch.com/california/santacruz/can-psychedelic-drugs-help-us-speak-to-aliens
https://www.huckmag.com/perspectives/activism-2/psychonauts-drugs-aliens/
https://grahamhancock.com/51560-2/
https://qz.com/1196408/scientists-studying-psilocybin-accidentally-proved-the-self-is-an-illusion/
https://www.mcgilldaily.com/2017/10/as-above-so-below
[২১]Book of Jasher Compendium of World History Vol 1. By Herman Hoeh
History of Freemasonry by Albert Mackey
The Rise and Fall of King Nimrod by Dudley Cates Athena and Kain
The True Meaning of Greek Myth by Robert Bowie Johnson, Jr Semiramis,
Queen of Babylon, 2 Bryce Self (http://www.ldolphin.org/semir.html) Nimrod and Babylon, Lesson Four: Nimrod and Babylon: The Birth of Idolatry
.............................................….………[চলবে বিইযনিল্লাহ]
Assalamualikum.
ReplyDeleteApnar article ta onek giyan orjoner bishoy chilo.Shaitan er boiye big bang,expanding,subatomic level e shobkicho energy, globe earth,gravity oigula pothbroshter jonno.Kintu sun rises in the east and sets in the west.oita je bola ache oita ki fake.
ওয়ালাইকুম আসসালাম। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বিষয়ে কুরআন হাদিসেই আছে, সুতরাং এটাকে ফেইক ভাববার কোন সুযোগ নেই। এ নিয়ে বিস্তারিত "ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টিতত্ত্বে" আর্টিকেলগুলোয় পাবেন।
Delete